All that is necessary for the triumph of evil is that good men do nothing.
-Edmund Burke
মানুষের নৃশংসতার নগ্ন একটি উদাহরণ হল নানকিং-এর গণহত্যা।
১৩ ডিসেম্বর, ১৯৩৭ সালে চীন প্রজাতন্ত্রের রাজধানী নানকিং-এর পতন ঘটে আগ্রাসী জাপানী রাজকীয় বাহিনীর কাছে। নানকিং-এর পতনের পর ডিসেম্বর, ১৯৩৭ থেকে মে, ১৯৩৮ পর্যন্ত চলে নানকিং-এর অধিবাসীদের উপর জাপানী সৈন্যদের নিমর্ম গণহত্যা, ধর্ষণ ও নিপীড়ণ। এসময় শিশু, নারী, সাধারণ জনতা, সৈন্যসহ প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ হত্যা করা হয়। ধর্ষণ করা হয় প্রায় বিশ হাজার নারী-কিশোরী ও শিশুকে।
১৯৩৭ সালের আগস্টে জাপানী সেনারা চীনের সাংহাই আক্রমন করে। নভেম্বরে জাপানীরা সাংহাই দখল করে নিল কিন্তু প্রচুর জাপানী সৈন্য হতাহত হয়। ডিসেম্বরে জাপানী হেড কোয়াটার হতে তৎকালীন চীনা রাজধানী নানকিং দখল করে নেয়ার আদেশ দেয়া হয়।
ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ জাপানী সৈন্যরা নানকিং দখল করে নেয়; শুরু হয় নানকিংয়ের ইতিহাসের ভয়ংকর এক অধ্যায়। জাপানী সৈন্যদের আদেশ দেয়া ছিল: ‘কোন যুদ্ধবন্দী নেয়া হবে’।
১৯৩৭ সালের ডিসেম্বরে জাপানী সৈন্যরা নানকিংয়ে প্রবেশের পর ছয় সপ্তাহ ধরে প্রায় তিন লক্ষ মানুষ (নানকিং-এর তৎকালীন মোট জনসংখ্যার অর্ধেক) হত্যা করে। গণধর্ষণের শিকার হয় অসংখ্য নারী। নিমর্মভাবে হত্যা করা হয় হাজারো শিশু।
বন্দী চীনা সৈন্যদের হত্যা:
নানকিং দখল করার সময় প্রায় নব্বই হাজার চীনা সৈন্য জাপানীদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। জাপানী হেড কোয়াটার থেকে বলা হয়েছিল, কোন যুদ্ধবন্দী গ্রহণ না করতে। ভবিষ্যতের যুদ্ধগুলোতে চীনা সৈন্যদের মনে ভয় সৃষ্টির জন্য জাপানী কর্তৃপক্ষ বন্দী সব চীনা সৈন্যদের হত্যার আদেশ দেয়।
ট্রাকে করে চীনা সৈন্যদের আনা হয় নানকিং শহরের বাইরে। সাহস বাড়ানোর জন্য (নাকি অমানুষিকতা বের করে আনার জন্য?) জুনিয়র/নতুন জাপানী সৈন্যদের দিয়ে হত্যা করা হয় নব্বই হাজার চীনা সৈন্যকে। হত্যার কাজে ব্যবহার করা জাপানী সৈন্যদের বলা হয় যত বেশি সম্ভব কষ্ট দিয়ে চীনা সৈন্যদের হত্যা করার জন্য।
বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে, গুলি করে, ধারালো তলোয়ার দিয়ে শিরশ্ছেদ করে, আগুনে পুড়িয়ে, জীবন্ত কবর দিয়ে নিমর্মভাবে হত্যা করা হয় প্রায় নব্বই হাজার মানুষকে।
গণহত্যা:
নানকিং শহরে প্রবেশের পর চাইনীজদের পাইকারীভাবে ভয়ংকরভাবে হত্যা করা শুরু করে জাপানীরা। চাইনীজদের দেখা মাত্রই গুলি করে, বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে, ছুরি দিয়ে জবাই করে, তলোয়ার দিয়ে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করে জাপানীরা। নানকিং-এর কয়েক জায়গায় সাধারণ চাইনীজদের একটি বাড়িতে ঢুকিয়ে সব দরজা-জানালা বন্ধ করে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। অনেককে উঁচু তলা হতে ফেলে দেয়া হয়। শিশুদের দু’পা ধরে চিরে ফেলে জাপানী বর্বর সৈন্যরা। গায়ে আগুন ধরিয়ে হত্যা করা হয় অসংখ্য চাইনীজকে।
নানকিং শহরের চারপাশে চাইনীজদের দিয়ে বিশাল গর্ত খুঁড়ে জাপানীরা। চাইনীজ মৃতদেহগুলো সেই গর্তগুলোতে ফেলে মাটি চাপা দেয়া হয়। কিন্তু নানকিং-এর গণহত্যা এত বেশি আকারে ছিল যে, নানকিংয়ের প্রতিটি জায়গা, রাস্তা, মাঠ ধরে শুধু ভাগ্যহত চাইনীজদের লাশ। ডিসেম্বর, ১৯৩৭ সাল হতে ফেব্রুয়ারী, ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত প্রায় তিন লক্ষ চাইনীজকে নিমর্মভাবে হত্যা করে জাপানীরা।
ধর্ষণ, হত্যা ও যৌন দাসত্ব:
চীনা সৈন্যদের হত্যা করার পর নানকিং শহরবাসীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে জাপানীরা। পাঁচ-ছয় বছরের ছোট মেয়ে শিশু হতে শুরু করে সত্তরোর্ধ্ব বয়স্ক নারীদের গণধষর্ণ করে জাপানীরা। বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রায় বিশ হাজার থেকে আশি হাজার শিশু-নারী-বৃদ্ধাকে গণধর্ষণ করা হয়।
ধর্ষণের পর প্রায় সব ভিক্টিমকে উঁচু বাড়িঘরের ছাদ হতে ফেলে দিয়ে এবং বেয়নেট/ছুরি/তলোয়ার দিয়ে যৌনিতে খুঁচিয়ে হত্যা করে জাপানী সৈন্যরা। এমনকি গর্ভবর্তী নারীদের কোন দয়া দেখায়নি জাপানীরা। গর্ভবতী চাইনীজ নারীদের গণধর্ষণের পর ছুরি বা, বেয়নেট দিয়ে পেট চিরে দেয়া হয়। ধর্ষণ করার সময় পরিবারের সদস্যদের বাধ্য করা হয় তা দেখার জন্য।
এক হুই চাইনীজ কিশোরীকে ধর্ষণ করছে জাপানী সৈন্যরা
বেঁচে থাকা অবশিষ্ট নানকিং নারীদের জন্য আরো ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছিল। জাপানী সৈন্যদের দখলকৃত জনপদের নারীদের যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করার প্রথা ছিল। অসংখ্য চাইনীজ যুবতীকে যৌনদাসী হিসেবে ধর্ষিত হতে হত প্রতিনিয়ত।
আর্ন্তজাতিক প্রতিক্রিয়া:
নানকিং-এর গণহত্যার বিষয়টি কয়েকদিনের মাঝেই সারা বিশ্বের পত্রিকাগুলোতে প্রথম পাতার খবরে পরিণত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইর্য়ক টাইমস, টাইম ম্যাগাজিন, রিডার্স ডাইজেস্টে নানকিংয়ের খবর ছাপা হয়। ইউরোপ, যুক্তরাজ্যেও নানকিংয়ের বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি হয় কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো বলতে গেলে এ ব্যাপারে সে সময় সবাই প্রায় নীরব ভূমিকা পালন করে।
জাপানী পত্রিকাগুলোতেও এর খবর প্রকাশ করা হয় কিন্তু তাদের সুর ছিল ভিন্ন; জাপান সাম্রাজ্যে নতুন অংশ সংজোযিত হয়েছে এটাই ছিল মূখ্য বিষয়।
তারপরও মনুষ্যত্বের জয়:
বিংশ শতাব্দীর চল্লিশের দশকে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান মানুষরা যদিও চুপ করে ছিল কিন্তু মনুষ্যত্বের সবকিছু তখনও হারিয়ে যায়নি। নানকিং জাপানীদের হস্তগত হবার পর প্রায় সকল বিদেশী নাগরিক নানকিং ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু বিশ পঁচিশ জন পাশ্চাত্য ও আমেরিকান ডাক্তার, ব্যবসায়ী, প্রকৌশলী, যাজক তখনও নানকিং-এ থেকে গিয়েছিলেন। এঁরা একত্রিত হয়ে নিজেদের জীবন বাজি রেখে নানকিংয়ে রেড ক্রসের পতাকা ব্যবহার করে প্রায় দশ কিলোমিটারের একটি আন্তর্জাতিক নিরাপদ এলাকা প্রতিষ্ঠা করেন। এই নিরাপদ এলাকা প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন জার্মান ব্যবসায়ী ও নাজি পার্টির সদস্য জন র্যাবে।
মাঝখানে কালো কোট পরিহিত জন র্যাবে
জাপানীরা নানকিং দখল করার পর যে সব চাইনীজ নানকিং ছেড়ে পালাতে পারেনি, তাদের একটা অংশ ওই নিরাপদ এলাকায় আশ্রয় নেয়, যারা সংখ্যায় প্রায় তিন লক্ষ। আর যে সব নানকিংবাসী চাইনীজ নিরাপদ এলাকায় আশ্রয় নিতে পারেনি, তারা প্রায় সবাই জাপানী সৈন্যদের বর্বরতার শিকার হয়।
আন্তর্জাতিক নিরাপদ এলাকায় আশ্রিত চাইনীজ
……….. ১৯৩৮ সালের ফেব্রুয়ারী হতে নানকিংয়ের চাইনীজদের উপর জাপানী সৈন্যদের অত্যাচার কমে আসে। কারণ, যৌনদাসী আর কাজ করার জন্য বন্দী চাইনীজ বাদে হত্যা-ধর্ষণ-নিপীড়ণ করার জন্য আর কোন চাইনীজ নানকিংয়ে অবশিষ্ট ছিল না।
যুদ্ধাপরাধ ও বিচার:
১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট জাপান আত্মসমর্পন করে। এরপর শুরু হয় নানকিং গণহত্যার বিচার। বিভিন্ন ওয়ার ক্রাইম ট্রাইবুনালে নানকিং গণহত্যার জন্য প্রিন্স কোতোহিতো কানিন, প্রিন্স আসাকা, জাপানী পররাষ্ট্র মন্ত্রী কোকি হিরাতো, জেনারেল হেইসুকে ইয়ানাগাওয়া, জেনারেল ইওয়ানে মাতসুই, জেনারেল ইয়াসুজি ওকামুরা, লেফট্যান্ট জেনারেল ইসামো চো, লেফট্যান্ট জেনারেল হাইসাও তানি, লেফট্যান্ট জেনারেল কেসাগো নাকাজিমা, ক্যাপ্টেন গানকিচি তানাকা, সেকেন্ড লেফট্যান্ট তোশিয়াকি মুকাই, সেকেন্ড লেফট্যান্ট তশোয়োশী নোডাকে অভিযুক্ত করা হয়।
১০ মার্চ, ১৯৪৭-এ ফায়ারিং স্কোয়াডে লেফট্যান্ট জেনারেল হাইসাও তানির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।
২৩ ডিসেম্বর, ১৯৪৮-এ জাপানী পররাষ্ট্র মন্ত্রী কোকি হিরাতো ও জেনারেল ইওয়ানে মাতসুইয়ের সুগামো কারাগারে ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।
প্রায় শ’খানেক জাপানী সামরিক অফিসার, সৈন্য, কর্মকর্তা-কর্মচারী নানান মেয়াদের শাস্তি হয়।
জাপানী রাজ পরিবারের অভিযুক্ত সদস্যরা ও কিছু উচ্চ পদস্থ জাপানী কর্মকর্তারা চাইনীজ ও পশ্চিমা নানান ক্ষমতাবান ব্যাক্তির আশ্রয় ও প্রতিরক্ষার অধীন বিচারদন্ড হতে বেঁচে যায়।
সভ্যতার শুরু হতে আজ পর্যন্ত অল্প কিছু সংখ্যক মানুষের জন্য কোটি কোটি মানুষকে বর্বরতার শিকার হতে হয়েছে। নানকিং গণহত্যাও এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সৃষ্টি।
নানকিং গণহত্যা পৃথিবীর মনুষ্য নির্যাতনের ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বর-নিমর্ম-নৃশংস ঘটনাগুলোর একটি। নানকিংয়ের গণহত্যা হয়েছে আজ পঁচাত্তর (৭৫) বছর হল।
এই পঁচাত্তর বছরে আমাদের মনুষ্য সভ্যতার মানবিকতার উন্নতি হয়েছে কি?
তথ্য ও ছবি সহায়িকা:
বই:
The Rape of Nanking: The Forgotten Holocaust of World War II by Iris Chang.
Nanking: Anatomy of an Atrocity by Masahiro Yamamoto.
The Comfort Women: Japan’s Brutal Regime of Enforced Prostitution in the Second World War by George Hicks.
Nanking 1937: Memory and Healing by Fei Fei Li, Robert Sabella, David Liu.
The Nanjing Massacre in History and Historiography by Joshua A. Fogel.
THE GOOD MAN OF NANKING: The Diaries of John Rabe by John Rabe.
The Woman Who Could Not Forget: Iris Chang Before and Beyond the Rape of Nanking- A Memoir by Ying-Ying Chang.
Documents on the Rape of Nanking by Timothy Brook.
ডকুমেন্টারী ফিল্ম:
The Rape of Nanking, Sex Slaves & Comfort Women, Japanese War Time Atrocities, Tiananmen Massacre.
Director: Rhawn Joseph.
আগের পোস্ট: শিশু নিপীড়ণ: সিন্ডারেলা প্রভাব
লেখায় (Y)
(Y)
@রাফু,
পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
মানুষের মানবিকতা বিকশিত হোক।
লেখায় থাম্বস আপ দিলাম। এক ্বাসে পড়ে নিলাম। নানকিঙ্গ এর গনহত্যার কথা শুনেছি। এতোটা পাশবিক বিবরণ এই প্রথম শোনা হলো। মর্মান্তিক। এখন কিছু বিরিঞ্চিবাবা কিন্তু রয়েছে যাদের কাছে কিনা হিরোশিমা-নাগাসাকিতে পারমানবিক বোমা মেরে ২০০,০০০ ক্যাজুয়াল্টি ঘটানো নিয়ে প্রব্লেম আছে। এদেরকে কিছু পাটীগণিত শেখানো দরকার যাতে কিনা এরা গননা করতে পারে জাপানকে রিক্যাপিচুলেট করতে বাধ্য করার জন্য ২০০,০০০ মানুষের ৃত্যু ঘটানো বনাম একটি এলাইড ইনভেইশনে (যেটার পরিকল্পনা করা হয়েছিলো) দেড় মিলিয়ন জাপানী, ব্রিটিশ এবং আমেরিকানের ৃত্যুর মধ্যে কোনটার বডিকাউন্ট বেশী। একটি দেশ জাতীয়তাবাদের মদ গিলে সর্বোচ্চ ইফোর্ট নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ছে সারা বিশ্বের উপর, হত্যা করছে লক্ষ লক্ষ মানুষ এইটা নিয়ে এদের কোন প্রব্লেম নাই, অথচ এদের প্রব্লেম হিরোসিমা-নাগাসাকি নিয়ে, নির্বোধ।।
কিছু কিছু রামছাগলের বাচ্চা আছে এরা বলে জাপানে পারমানবিক বোমা মারা উচিত হয়নি। অথচ জাপানে বোমা মেরে হত্যা করা হয়েছে ২০০,০০০ মানুষ সর্বমোট। জাপান ছিলো রিক্যাপিচুলেট না করতে ১০০% প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এলাইড সেনাবাহিনী তাদের নেভি ধ্বংস করে গুয়াডালকানাল যুদ্ধে এবং ধ্বংস করে তাদের এয়ারফোর্স তথাপিও তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। এবং প্রতিদিন যুদ্ধে
@আল্লাচালাইনা,
পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমিও আসলে এরকম রামছাগলের বাচ্চাদের মাঝে পড়ি। কারণে, অহিংসাই মূল পাথেয়।
জাপানে হিরোসিমা-নাগাসাগিতে বোম্বিংয়ের বিকল্প কি ছিল না? আমার তো মনে হয় ছিল।
অহিংসতা দিয়ে সব সময় শান্তি বা, ন্যায় অর্জন হয় না, এটা ঠিক। তবে, শান্তি বা, ন্যায় অর্জনে সহিংস প্রয়াসে মিতব্যায়ী হওয়াটাই যৌক্তিক।
‘আমি তোমার চেয়ে কম নৃশংস’ বলে কিছু নেই, নৃশংসতা নৃশংসতাই।
@সবুজ পাহাড়ের রাজা, আমি দুঃখিত ‘রামছাগলের বাচ্চা’ রিমার্কটা একটা লাউড রিমার্ক হয়ে গিয়েছে। বস্তুত এইটা আমি কমেন্ট লিখতে লিখতেই রিয়েলাইস করেছিলাম, ফলে ঐ কমেন্টটি পরিত্যাগ করে উপরে একদম নতুন করে লিখি (সেইখানে ছাগলের বাচ্চা নেই, বিরিঞ্চিবাবা আছে যদিও) কিন্তু ভুলক্রমে নীচেরটা মুছে দেওয়া হয়নি। মানুষের উপর পারমানবিক বোমার বিষ্ফোরণের বিরোধীতাকারীকে অবশ্যই ছাগলের বাচ্চা বলা যায়না, তবে ১৯৪৫ সালে জাপানে এটোম বোম ফাটানোর বিরোধীতা যে করে খুব সম্ভবত সে ঐ সময়কার ইতিহাস সম্পর্কে অনবগত, হাইপারস্বপ্নজীবি এবং অনুপাতবোধ ও বাস্তবতাবোধ বিবর্জিত একজন ব্যক্তি।
প্রথমত এইটা যদি আমি সম্পুর্ণই ইগ্নোর করি যে- আমেরিকা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হতে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয়টার সময় সম্পুর্ণই নিউট্রাল থাকার চেষ্টা করেছে; এবং আমেরিকার পায়ে পারা দিয়ে যুদ্ধ বাজিয়েছে জাপান ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতিসাধন করেছে, এবং আমেরিকার উপর জাপানের হামলা (পার্ল হার্বারে) ছিলো ১০০% বিনা প্রভোকেশনে, নির্মম এবং কাপুরুষসুলভ তথাপিও আমি মনে করি জাপানের অন্তত তিন থেকে চারটা এটম বোম খাওয়া খুবই জাস্টিফাইএবল কেননা জাপান ছিলো এমন একটা দেশ যুদ্ধে যেটা জেনেভা কনভেনশনের ‘জ’ও মানে নাই, সারেন্ডার করা অস্ট্রেলিয়ান সৈন্যদের তলোয়ার দিয়ে শিরচ্ছেদ করেছে (যার ফোটোগ্রাফিক এভিডেন্স রয়েছে), চাইনীজদের সাবজেক্ট হিসেবে ব্যাবহার করে ভাইরোলজিকাল ও ব্যাক্টেরিয়োলজিকাল এক্সপেরিমেন্ট চালিয়েছে, নির্বিচারে হত্যা করেছে সিভিলিয়ান, শিশুও এমনকি। আপনি যেহেতু অহিংসা করেন বলছেন, তাই একটা প্রশ্ন আপনার কাছে রাখছি- ইনোসেন্ট মানুষকে শুইয়ে জবাই করা দেখে কি আপনার মনে হয়না যে এরা পাগল, উন্মাদ, পশু, এদের নিবৃত্ত করা উচিত, এইভাবে এদেরকে রক্তগঙ্গা বওয়াতে দেওয়া উচিত না?
@আল্লাচালাইনা,
তাহলে, বর্বর আর সভ্যর মাঝে পার্থক্য কোথায় থাকছে?
নানকিং-এর গণহত্যার ব্যাপারটা জানতামই না। ধন্যবাদ কষ্ট করে লেখা এই পোস্টের জন্য।
@অরুণ নাথ,
পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
মানুষের মানবিকতা বিকশিত হোক।
সত্যিই অজানা ছিল নানকিংয়ের গণহত্যার ইতিহাস। তথ্য বহুল লেখার জন্য ধন্যবাদ !
@আমিনুল,
পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
মানুষের মানবিকতা বিকশিত হোক।
(Y)
তথ্য সমৃদ্ধ লেখাG।
@সভ্য,
পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
মানুষের মানবিকতা বিকশিত হোক।
আমরা কত কম জেনে, কত বেশি কথা বলি। এত এত গণহত্যা নিয়ে, এত এত কথা হয় অথচ নানকিং এর গণহত্যার কথা জানাই ছিল না। কারো কারো হয়তো ছিল। কিন্তু বিনিয়োগ যোগ্য ছিল না বলেই হয়তো আমাদের মত পাঠকদের জানান দে’য়া হয়নি। যারা টুকটাক পড়াশুনা করে কাজ চালিয়ে নেয়, তাদের মুশকিলে পড়তে হয়।
ইতিহাসের অন্ধকার ঘর থেকে অনেক অনেক কষ্ট করে যে সব তথ্য-উপাত্ত উপস্থিত করেছেন, ধন্যবাদ।
আপনার এই খনন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকুক।
@স্বপন মাঝি,
পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
মানুষের মানবিকতা বিকশিত হোক।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিংক যেগুলো পোস্ট হতে বাদ পড়ে গেছে:
০১। নানকিংয়ের আন্তর্জাতিক নিরাপদ এলাকা
০২। জাপানী সৈন্যদের যৌনদাসী
০৩। জন র্যাবে
০৪। হুই চাইনীজ
নানকিং সম্পর্কে প্রথম জানতে পারি “জন রেবে ” মুভি টা দেখার পর, লেখা খুবই তথ্য সমৃদ্ধ
@প্রত্যয়,
পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
মানুষের মানবিকতা বিকশিত হোক।