আশির দশকের শেষ কিংবা নব্বই দশকের শুরুর দিকের কথা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তখন অপরাধ প্রবণতা খুব প্রকট আকার ধারণ করেছিল। এর চাইতেও ভয়ের ব্যাপার ছিল যে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছিলেন যে এই ক্রাইম রেট কমার কোনই সম্ভাবনা তো নেই-ই, বরং কত টুকু বাড়বে এইটা নিয়েই যা দ্বিধা দ্বন্দ্ব ছিল। ১৯৯৫ সালে বোস্টনের নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনলজিস্ট জেমস অ্যালান ফক্স অনুমান করেছিলেন কমপক্ষে ১৫ শতাংশ অপরাধ বাড়বে পরের দশকে, তবে সেই সাথে এই বলেও সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে অপরাধের মাত্রা পুরোপুরি দ্বিগুণও হয়ে যেতে পারে। তার সাথে সুর মিলিয়ে অন্যরাও তাল মিলিয়েছিল যে আসলেই আমেরিকানদের সামনে অপেক্ষা করছে এক সংঘাতময় সময়। কিন্তু সব বিশেষজ্ঞকে অবাক করে দিয়ে নব্বই দশকের শেষের দিকে ক্রাইম রেট আসলে কমা শুরু করলো, কমতে কমতে ৫ বছরের মধ্যেই অপরাধ একেবারে ৫০ শতাংশ কমে গেল। ২০০০ সালে মার্ডার বা হত্যার ঘটনা গত ৩৫ বছরের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ছিল। কি এমন ঘটেছিল যে দুম করে সবাইকে অবাক করে আমেরিকায় ক্রাইম হঠাৎ করে ধাই ধাই করে কমতে থাকলো?
এরকম একটা ইন্টেরেস্টিং বিষয় নিয়ে পড়ছিলাম স্টিভেন লেভিট আর স্টিফেন ডাবনার-এর ফ্রিকোনমিক্স বইতে। এই বই বেশ বিখ্যাতই বলা যায়, একটা মুভিও নির্মিত হয়েছে এই বইয়ের উপর ভিত্তি করে, একটা ওয়েবসাইটও আছে এই নামে। অনেকেই হয়ত বইটা পড়ে ফেলেছেন, কিন্তু তারপরও আমার কাছে এই ক্রাইম রেট কমানোর কারণ হিসেবে যা বলা হয়েছে এই বইয়ে তা বেশ অভিনবই লেগেছে, তাই এই গল্প বলার লোভ সামলাইতে পারলাম না। 🙂 অবশ্য মূল বইয়ে শুধু এইটা নয়, আরও অনেক বিষয় নিয়েই লেভিট লিখেছেন, আমি শুধু ক্রাইম রেট নিয়ে যে একটি অনুচ্ছেদ আছে, সেই গল্পটাই বলছি।
যাই হোক, হঠাৎ করে এই ক্রাইম রেট হ্রাস করার পিছনে আবার একেক বিশেষজ্ঞ একেক রকম যুক্তি দেখানো শুরু করলো। এই যুক্তি গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ
- অপরাধ দমনে পুলিশের নিত্যনতুন অভিনব কৌশল
- জেলের উপর নির্ভরতা বৃদ্ধি
- পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি
- মাদক দমনে কঠোর আইনকানুন
- জনসংখ্যার গড় বয়স বেড়ে যাওয়া
- আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন
- শক্তিশালী অর্থনীতি
লেভিটের মতে উপরের যুক্তি গুলোর মধ্যে মাত্র তিনটি ক্রাইম রেট কমার ব্যাপারে আসলেই ভূমিকা রেখেছে, বাকি গুলোর কোনই ভূমিকা নেই। তবে একটি যুক্তির কথা কেউ উল্লেখ করেনাই, মুলত সেই যুক্তিটি নিয়েই আলোচনা করব, তবে তার আগে উপরের যুক্তি গুলো নিয়েও কিছু কথা বলা দরকার বলে মনে করি।
নব্বইের দশকে আমেরিকার অর্থনীতির ‘বুমিং’ অবস্থা ক্রাইম কমাতে বিরাট ভূমিকা রেখেছে বলে অনেকে মনে করেন। শক্তিশালী অর্থনীতি অবশ্য ভায়লেন্ট ক্রাইম যেমন খুন, ধর্ষণ কমানোর ব্যাপারে ভালো যুক্তি হতে পারেনা, তবে অর্থনীতি শক্তিশালী হলে বেকারত্ব কমে, আর বেকারত্ব কমলে নন-ভায়লেন্ট ক্রাইম যেমন ছিনতাই, ডাকাতি’র মত অপরাধ কমতেই পারে। গবেষণাতেও দেখা গেছে যে বেকারত্বের হার ১% কমলে নন-ভায়লেন্ট ক্রাইমও ১% কমে। নব্বয়ের দশকে বেকারত্বের হার ২% কমলেও নন-ভায়লেন্ট ক্রাইম কমেছে ৪০%! সেই সাথে এইটাও মনে রাখুন ৬০’এর দশকে অর্থনীতির খুব ভালো অবস্থা থাকলেও ক্রাইমও তখন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। সুতরাং শক্তিশালী অর্থনীতির যুক্তি মনে হয় ধোপে টিকে না।
জেলের উপর নির্ভরতা বৃদ্ধি পাবার ফলে ক্রাইম যে হ্রাস পেয়েছে এইটা ৬০’এর দশকের কথা চিন্তা করলে ভালো ভাবে বুঝা যায়। ৬০’এর দশকের দিকে আমেরিকায় বিচার ব্যবস্থা কিছুটা ঢিলে ঢালা ছিল। সেই সাথে যারা শাস্তি পেতও, তারাও এখনকার তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম বছর শাস্তি ভোগ করত। কিন্তু আশির দশকের শেষের দিকে এই অবস্থা পাল্টাতে থাকে। ড্রাগ সম্পর্কিত কোন মামলায় আগের তুলনায় শাস্তি আরও কঠোর করা হয়। ফলশ্রুতিতে ১৯৮০ থেকে ২০০০ সাল এই ২০ বছরের মধ্যে মাদক সম্পর্কিত আসামি ১৫ গুণ বৃদ্ধি পায়। ভায়লেন্ট ক্রাইমের জন্য শাস্তির মেয়াদও বাড়ানো হয়। আর ফলাফলও হাতেনাতে পাওয়া যায়। ২০০০ সালের মধ্যেই ২০ লাখের মত মানুষকে জেলে ঢুকানো হয়, যা প্রায় ১৯৭২ সালের চার গুণ এবং এই বৃদ্ধির প্রায় অর্ধেকই হয়েছে নব্বয়ের দশকে। অবশ্য এই জেলবন্দী মানুষের সংখ্যা হঠাৎ এত বৃদ্ধি পাবার জন্য অনেকেই সমালোচনাও করেছেন, প্রতিটি জেলবন্দীর পিছনে বছরে প্রায় ২৫ হাজার ডলার ব্যয় করতে হয় সরকারকে। কিন্তু সব মিলিয়ে দেখা গেছে, আইনকানুন আরও কঠোর করার ফলে আদতে লাভই হয়েছে, ক্রাইম রেট যে হ্রাস পেয়েছে তার এক-তৃতীয়াংশ কৃতিত্বই তাই এই যুক্তিকে দেয়া যায় বলে মনে করেন লেভিট।
পুলিশের অভিনব সব কৌশলের কারণেই অপরাধ কমছে- এই ধারণাটি নিউইয়র্কে বেশ হালে পানি পেয়েছিল, বিশেষ করে রুডি গিলিয়ানি(১৯৯৪-২০০১) মেয়র হবার পর থেকে তিনি এবং তৎকালীন পুলিশ কমিশনার উইলিয়াম ব্র্যাটন অপরাধ কমানোর জন্য আসলেই বেশ কিছু অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছিল। এছাড়া ব্রোকেন উইন্ডো থিওরি’র কথা মাথায় রেখে ছোটখাটো অপরাধীকে শায়েস্তা করার ব্যাপারেও তারা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল। নিউইয়র্ক আসলেই আপাতদৃষ্টিতে এর ফলাফল হাতেনাতেই পেয়েছে, আমেরিকার সবগুলো বড় শহরের মধ্যে নিউইয়র্কেই ক্রাইম রেট সবচেয়ে কমেছে। হোমিসাইড রেট(প্রতি ১০০,০০০ জনে) ৩০.৭(১৯৯০) থেকে কমে ৮.৪(২০০০) হয়েছে অর্থাৎ প্রায় ৭৩ শতাংশ হোমিসাইড হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু লেভিট এই জনপ্রিয় ধারণার বেশ কিছু ফাঁক ফোঁকর বের করেছেন। তাঁর যুক্তি হচ্ছে, ’৯৩ সালের মধ্যেই অর্থাৎ রুডি মেয়র হবার আগেই ক্রাইম রেট ২০ শতাংশ কমে গিয়েছে এবং পুলিশের নিত্যনতুন কৌশলের সাথে সাথে এই দশ বছরে পুলিশের সংখ্যাও ৪৫ শতাংশ(পুরো দেশের গড়ের চাইতে যা তিনগুণ) বেড়েছে। পুলিশের সংখ্যা বাড়লে গবেষণায় দেখা গেছে ক্রাইম রেটও কমে, এবং দেখা গেছে এই বিপুল সংখ্যক পুলিশের বৃদ্ধি অন্যান্য শহরের তুলনায় নিউইয়র্ক শহরের ১৮ শতাংশ অপরাধ কমাতে সাহায্য করেছে। পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধির অনুঘটক বাদ দিলে নিউইয়র্ক আর ক্রাইম রেট কমার লিস্টে সবার উপরে থাকেনা, বরং নিউইয়র্ক এর অবস্থান হয় সবগুলো স্টেটের মধ্যে মাঝামাঝির দিকে। তবে সবচেয়ে লক্ষণীয় হল, এই সময়টায় পুরো আমেরিকা জুড়েই ক্রাইম কমেছে, এমনকি যেসব স্টেটে পুলিশের অবস্থা খুব একটা সুবিধাজনক না, সেখানেও অপরাধ কমেছে।
অনেকে আবার ’৯৩ সালে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘ব্র্যাডি অ্যাক্ট’ এর ভূমিকার কথা বলেন। এইটা সত্য যে অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় আমেরিকায় অস্ত্র কিছুটা সহজলভ্য। কিন্তু এর বিপরীতে সুইজারল্যান্ডের কথাও বলা যায়, সে দেশে প্রায় প্রতিটি পরিবারে একটা করে ‘গান’ বা অস্ত্র আছে, তারপরও পৃথিবীর অন্যতম নিরাপদ জায়গা হচ্ছে সুইজারল্যান্ড। কিন্তু এই যুক্তির অসাড়তা টের পাবেন যখন চিন্তা করবেন যে অপরাধীরা অধিকাংশ সময়েই আসলে অস্ত্র কিনেই ব্ল্যাক মার্কেট থেকে। ব্র্যাডি অ্যাক্ট অনুসারে অস্ত্র কেনার আগে ক্রিমিনাল চেকের পরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হতো, কিন্তু আদতে অপরাধীরা এত ঝামেলায় যেতই না, অস্ত্রের ব্ল্যাক মার্কেট বেশ শক্তিশালী হবার ফলে খুব সহজেই এসব ঝামেলা তারা চাইলেই এড়াতে পারত। এছাড়া ওয়াশিংটন আর শিকাগো’তে এই ক্রাইম রেট কমতে শুরু করার আগেই কঠোর ‘গান কন্ট্রোল’ আইন ছিল, কিন্তু এই দুইটা শহরেই দেখা গেছে ক্রাইম কমা শুরু করছে সবার পরে।
এই পরিচিত যুক্তিগুলো বিশ্লেষণের পর লেভিট নিজে একটি যুক্তি বিশদ আকারে দেখিয়েছেন যা কিনা তার আগে কোন বিশেষজ্ঞই ভুলেও উচ্চারণ করেনি। লেভিট বলছেন, আমেরিকায় যে হঠাৎ করে হু হু অপরাধ কমা শুরু করল, এর অন্যতম কারণ হচ্ছে একজন মহিলা যার নাম নরমা ম্যাককরভি(উনি অবশ্য জেন রো নামেই বেশি পরিচিত), তো কি করেছিলেন উনি? ১৯৬৯ সালে ২১ বছর বয়সে তৃতীয় বারের মত প্রেগন্যান্ট হবার পর এই মহিলা অ্যাবরশন লিগাল করার জন্য মামলা ঠুকে দিয়েছিলেন এবং জিতেও গিয়েছিলেন। আর লেভিট বলছেন আমেরিকা জুড়ে অ্যাবরশন লিগাল করার একটা বড় ভুমিকাই আছে এই অপরাধ কমার পিছনে।
এই যুক্তির গভীরে যাওয়ার আগে উনি রুমানিয়ার একটা উদাহরণ দিয়েছেন। ১৯৬৬ সালের দিকে রুমানিয়া’তে তৎকালীন কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি নিকোলাই চাছেসি(Nicolae Ceaușescu) গর্ভপাত বেআইনি ঘোষণা করেন। নিকোলাই-এর শাসনকাল নিয়ে অনেক সমালোচনা আছে, সেদিকে না যাই। যাই হোক, এর আগ পর্যন্ত রুমানিয়ার অ্যাবরশন পলিসি বেশ লিবেরাল ছিল, এতটাই যে একজন শিশুর জন্মের বিপরীতে চারটা করে গর্ভপাত হতো, বুঝতেই পারছেন, সেখানে গর্ভপাতই ছিল অন্যতম প্রধান জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এবং রুমানিয়ার জনসংখ্যা বাড়ানোর জন্য গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা হয়। শুধু গর্ভপাত নিষিদ্ধই নয়, যে কোন ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি এবং যৌন শিক্ষাও নিষিদ্ধ করা হয়। হাস্যকর শোনালেও সত্য যে কোন মহিলা যদি প্রেগন্যান্ট না হতে পারতেন, তাকে সেলিব্যাসি ট্যাক্স(আয়ের ১০ ভাগ) দিতে হতো। তো ফলাফল কি ছিল? এক বছরের মধ্যেই জন্মহার দ্বিগুণ হয়ে যায় এবং এই জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে সমাজে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া যেমন, অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়। কারণটা খুব সহজ, যে বাচ্চা গুলোকে হয়ত বাধ্য হয়ে তার বাবা-মা পৃথিবীতে আনছে, তার প্রতি আদর-যত্নের যথেষ্ট অবহেলাই করা হয় এবং অনেক সময় হয়ত তার বাবা-মা’র ইচ্ছে থাকলেও তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা সুবিধাজনক থাকেনা। ফলে এই রকম অবহেলায় বড় হওয়া বাচ্চারাই অনেকেই পরবর্তীতে ক্রিমিনাল হবার সম্ভাবনা অনেক অনেক বেড়ে যায়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ১৯৮৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর যখন নিকোলাইকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, তখন সেই আন্দোলনের পিছে কিশোর-তরুণরা, যাদের অনেকেরই হয়ত অ্যাবরশন লিগাল থাকলে জন্মই হতো না, বেশ অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছিল।
রুমানিয়া’য় যে ঘটনা ঘটেছে, তার ঠিক উল্টোটা আসলে ঘটেছে আমেরিকায়। আমেরিকায় অ্যাবরশন এর ইতিহাস নিয়ে একটু বলি। আমেরিকায় প্রথম দিকে প্রেগন্যান্ট হবার ১৬ থেকে ১৮ সপ্তাহের মধ্যে অ্যাবরশন বৈধ ছিল। ১৮২৮ সালে নিউইয়র্ক প্রথম অ্যাবরশন নিয়ে টালবাহানা শুরু করে এবং ১৯০০ সালের মধ্যে পুরো আমেরিকা জুড়েই অ্যাবরশন নিষিদ্ধ করা হয়। অ্যাবরশন তখন অবশ্য এমনিতেই বেশ ব্যয়বহুল আর ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। গত শতাব্দীর ’৬০ এর দশকের শেষের দিকে অনেকগুলো স্টেট অ্যাবরশন বিশেষ পরিস্থিতিতে যেমন-ধর্ষণ, ইন্সেস্ট বা মা’র শরীরের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ হলে অ্যাবরশনের অনুমতি দেয়। ১৯৭০ সালের মধ্যে নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, ওয়াশিংটন, আলাস্কা এবং হাওয়াই অ্যাবরশন কোন শর্ত ছাড়াই পুরোপুরি আইনসম্মত বলে ঘোষণা দেয়। ১৯৭৩ সালের ২২ জানুয়ারি আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট ‘রো ভার্সেস ওয়েড’ এর রায়ের মাধ্যমে পুরো দেশেই অ্যাবরশন লিগাল করার সিদ্ধান্ত দেয়। কোর্ট তার রায়ে জানায়, যখন একজন মা তার সন্তান জন্মদানে অনিচ্ছুক থাকে, প্রায় সবসময়ই তার পিছে বেশ ভালো যুক্তিই থাকে। হয়ত সে খুব তার বৈবাহিক জীবনে খুব খারাপ সময় অতিবাহিত করছে, কিংবা হয়ত বাচ্চা ঠিকঠাক মানুষ করার মত অর্থনৈতিক অবস্থায় সে নেই, সে নিজেই হতে পারে মাদকাসক্ত যা হয়ত তার বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতিকর হবে। সে হয়ত আরও কিছুদিন পর নিজেকে মা হবার উপযুক্ত বলে গণ্য করবে, কিন্তু একটি ঠিক এই মুহূর্তে হাজারটা যুক্তিযুক্ত কারণেই তার পক্ষে হয়ত মা হওয়া সমীচীন হবেনা। তাই এই সিদ্ধান্ত কোর্ট মা’র হাতেই ছেড়ে দেবার পক্ষে রায় দিয়েছিল।
‘রো বনাম ওয়েড’ এর রায়ের পর এক বছরের মধ্যে ৭৫০,০০০ মহিলা অ্যাবরশন করায়, যা প্রতি চারটি শিশুর জন্মদানের বিপক্ষে একটি অ্যাবরশন। ১৯৮০ সালের মধ্যে অ্যাবরশন ১.৬ মিলিয়নে পৌঁছায়। ২২৫ মিলিয়নের দেশে ১.৬ মিলিয়ন অ্যাবরশন অর্থাৎ প্রতি ১৪০ জন অ্যামেরিকান এর বিপরীতে একটি করে অ্যাবরশন! রুমানিয়াতে অবশ্য অ্যাবরশন পুনরায় লিগাল করার পর প্রতি ২২ জন রুমানিয়ানের বিপরীতে একটি করে অ্যাবরশন হতো!
‘রো বনাম ওয়েড’ এর আগে মধ্য বা উচ্চবিত্ত পরিবারের মেয়েরাই অবৈধ উপায়ে ব্যয়বহুল ভাবে অ্যাবরশন করাতো। কিন্তু আইনসম্মত করার পর যে কেউই অনেক কম খরচে করাতে পারতো। এই আইনের সুবিধা আসলে কারা পেয়েছিল? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে এই আইনের সুবিধা মূলত পেয়েছে তারাই যারা কিনা অবিবাহিত, টিনএজার বা নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে এসেছে। তো এই মেয়েদের যদি বাচ্চা নিতেই হতো অর্থাৎ অ্যাবরশন লিগাল না হতো, তাহলে এই বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ কিরকম হতো? গবেষণা বলছে একজন গড়পড়তা শিশু যে অ্যাবরশন লিগালাইজ করার ফলে জন্মাতে পারেনি তার একজন অ্যাভারেজ অ্যামেরিকান শিশুর তুলনায় দারিদ্রের মধ্যে শৈশব কাটানোর সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ বেশি এবং সিঙ্গেল প্যারেন্ট পরিবারে বেড়ে উঠার সম্ভাবনা ৬০ শতাংশ বেশি। গবেষণা আরও বলছে, এই দুটি প্রধান ফ্যাক্টর ছাড়াও টিনেজ মা এবং মা’র শিক্ষার অভাবও অবশ্য ভালো ধারণা দিতে পারে একজন শিশু ভবিষ্যতে ক্রিমিনাল হবে কিনা। মোট কথা, যে কারণগুলোর জন্য একজন মেয়ে অ্যাবরশনে হয়ত উৎসাহিত হয়, সেই বৈশিষ্ট্য গুলোই সন্তানদের ক্রিমিনাল হবার পিছনে ভালো ভূমিকা রাখে।
’৭৩ সালে আইন পাস করার পর নব্বয়ের দশকের শুরু থেকেই অপরাধ কমতে শুরু করে। চিন্তা করে দেখুন, অ্যাবরশন যদি নিষিদ্ধই থাকত এবং অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত শিশুর তখন জন্ম হতো, তাহলে তারা নব্বয়ের দশকের শুরুতে তারা তাদের টিন এজের শেষের দিকে পৌঁছাত, যে সময়টাতেই আসলে অপরাধ প্রবণতা অন্যান্য বয়সের তুলনায় একটু বেশিই থাকে। লেভিট বলছেন যে এই ভবিষ্যৎ অপরাধপ্রবণ শিশুদের জন্মই না হওয়াতে ক্রাইম কমা শুরু করেছে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই যে কেউ প্রশ্ন করতে পারে, এমনও তো হতে পারে, এইটা সিম্পল করেলেশন, কোন Causal রিলেশন নেই( এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য দেখুন)।
একটা উপায় হতে পারে, যদি দেখা যায় যেসব স্টেটে পুরো দেশে করার আগেই অ্যাবরশন লিগালাইজ করা ছিল, সেই সব স্টেটে ক্রাইম আগে কমা শুরু করেছিল কিনা। নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, ওয়াশিংটন, আলাস্কা, হাওয়াই-এই স্টেট গুলোতে ‘রো বনাম ওয়েড’-এর দুই বছর আগে থেকেই অ্যাবরশন লিগালাইজ ছিল। ডাটা বলছে সত্যি সত্যিই এই স্টেট গুলোতে ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে ক্রাইম অন্যান্য ৪৫ স্টেটের তুলনায় ১৩% বেশি কমেছে, ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সালের মধ্যে অন্যান্যর তুলনায় ক্রাইম কমেছে ২৩%।
আরও প্রমাণ হিসেবে লেভিট দেখিয়েছেন, ১৯৭০ থেকে ’৯০ সালের মধ্যে যে স্টেটগুলোতে অ্যাবরশন রেট অন্যান্য স্টেটের চাইতে কম ছিল, সেই স্টেট গুলোতে ক্রাইম কমার হারও ছিল কম। মোট কথা, লেভিট সব শেষে বলতে চেয়েছেন, যখন একজন নারীর হাতে যথেষ্ট অধিকার থাকে, সে অধিকাংশ সময়ই খুব ভালো মতই বুঝতে পারে সে সেই অনাগত বাচ্চাকে উপযুক্ত পরিবেশে বড় করে তুলতে পারবে কিনা, তার পছন্দসই পরিস্থিতি না থাকলেই কেবল সে অ্যাবরশন করে।
অ্যাবরশন ঠিক না ভুল, মোরালি এইটা ঠিক কিনা সেই প্রশ্নের জবাব আসলে সরাসরি দেয়া হয়নি। কিন্তু মজার ব্যাপার কি জানেন, এই রো বা নরমান ম্যাককরভি যার কারণেই এত কেচ্ছা কাহিনী হল, সে নিজেই পরবর্তীতে অ্যাবরশন বিরোধিতায় নামে, প্রো-লাইফ ব্যানারে রিপাবলিকানদের হয়ে আন্দোলনও করেছেন। তবে অ্যাবরশন কাহিনী আসলে এখানেই শেষ হওয়ারও কোন লক্ষণ নেই। সামনের নির্বাচনেও এইটা নিয়ে ভালোই বিতর্ক হবে বলেই মনে করছে অনেকে।
এই তর্কে-বিতর্কের মারপ্যাঁচে যদি ‘রো বনাম ওয়েড’ আর বলবৎ না থাকে, প্রশ্ন হচ্ছে ক্রাইম কি আবার সত্তর-আশি ‘র দশকের মত বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করবে?
দেরিতে লেখাটি পড়লাম। বইটি পড়িনি। আপনার লেখা পড়েই বইটি পড়ার উদ্যোগ নিলাম। সেজন্য উষ্ণ অভিনন্দনটুকু জানতে ভুলবেন না যেনো।
@শনিবারের চিঠি, পড়ে ফেলুন, এটি ছাড়াও আরও ইন্টেরেস্টিং বিষয় নিয়েও লেভিট ফ্রিকোনমিক্স বইতে লিখেছেন। ভালো থাকবেন। 🙂
কৌতূহলোদ্দীপক লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ, রিজওয়ান ভাই।
ছিনতাই, ডাকাতি নন-ভায়োলেন্ট ক্রাইম? ধর্ষণ, খুনের তুলনায় লো-ভায়াোলেন্ট হতে পারে, কিন্তু নন-ভায়োলেন্ট?
উরেব্বাপস, এ দেখি জিজিয়া করকেও হার মানিয়েছে!
মনে পড়ছে, জন ক্যারি ও বুশ জুনিয়রের প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটের কথা, গর্ভপাত বিষয়ে তুমুল বিতর্ক হয়েছিল। বিতর্কে জিতলেও নির্বাচন জিততে পারেননি জন ক্যারি।
সবশেষে একটা প্রশ্ন: আমাদের দেশে অপরাধ কমাতে আপনার উল্লেখিত পদ্ধতিগুলোর কোনটা সবচেয়ে কার্যকরী হতে পারে বলে মনে করেন?
@কাজি মামুন, আপনার বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। 🙂
ব্যাপারটা মনে হয় আরেকটু ব্যাখ্যা করা উচিত ছিল লেখার মধ্যেই। নন-ভায়লেন্ট বলেছি কারণ চিন্তা করে দেখুন, কেউ আপনার ছিনতাই বা ডাকাতি করলে আপনার উপর ব্যক্তিগত ভাবে কোন আক্রোশ নেই, আপনার সম্পদের উপরই যা লোভ। তাদেরকে ভালোয় ভালোয় ছিনতাই বা ডাকাতি করতে দিলে তারা হয়ত ভদ্রলোকের মত আপনার সম্পদ লুট করে চলে যাবে, আপনাকে শারীরিক ভাবে কোন আক্রমণ করবেনা। এই দিক বিবেচনায় এনেই নন-ভায়লেন্ট বলা হয়েছে।
আমাদের দেশে অ্যাবরশনের মত এক্সট্রিম পদ্ধতি খুব বেশি কাজে দিবেনা, এর চাইতে অন্যান্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিই বেশি কার্যকর হবে অনাহুত শিশুকে এই পৃথিবীতে না আনার জন্য। বাংলাদেশের মানুষের আইনের উপর আস্থাই কম, এখানে অপরাধীরা অপরাধ করেও শাস্তি পাচ্ছেনা , সুতরাং যারা অপরাধপ্রবণ মানুষ, তাদের অপরাধ না করার পিছনে যথেষ্ট ইন্সেন্টিভ নাই। মানুষের মাঝে যখন আস্থা আসবে, এই বিশ্বাস যদি দৃঢ করা যায় যে অপরাধের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে পুলিশ আসলেই কিছু করতে পারে, তাইলে সেইটা অনেক বড় ব্যাপার হবে। আমাদের দেশের মানুষ তো থানায় হয়রানি হবার ভয়ে থানার আশেপাশেও যেতে চায়না, এরকম পরিস্থিতি বজায় রাখলে আসলে অপরাধ কমানো কঠিন।
[img]http://madeinamericathebook.files.wordpress.com/2010/05/violence-stylized2.png?w=430&h=295[/img]
সারা পৃথিবীতেই অপরাধ হার অনেক কমে গেছে। আমাদের ৫০০ বছর আগের পূর্ব পুরুষদের তুলনায় আমরা অনেক শান্ত-সভ্য সমাজে বাস করছি। অবশ্য দোজাহানের বাসিন্দারা মনে করেন ইমান কমে যেতে যেতে সমাজ দোজখে পরিনত হচ্ছে।
@সফিক, বেশ প্রাসঙ্গিক একটা গ্রাফ দিয়েছেন আপনি, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂 আর আসলেই আমরা যে যাই মনে করিনা কেন, আজকের বিশ্ব অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় বেশি শান্তিপ্রিয়। এই কথা অবশ্য কোন ইরাকি, ফিলিস্তিনি বা সিরিয়া’র কাউকে বললে লাঠি হাতে তাড়া করতে পারে। 😛
ফ্রিকোনমিক্স পড়া হয়নি, তবে স্টিফেন পিঙ্কারের বইটার উপর তাঁর নিজের একটা প্রেজেন্টেশন দেখেছিলাম, যেখানে উনি দাবি করছেন গোটা দুনিয়াতেই ভায়োলেন্স ক্রমে কমছে। আপনার লেখা খুব সহজবোধ্য হয়েছে।
@কৌস্তুভ, পড়ার জন্য ধন্যবাদ। 🙂 ফেসবুকে এক বন্ধুর কাছে জানলাম, স্টিফেন পিঙ্কার লেভিটের এই অ্যাবরশন থিওরি’র একজন কট্টর সমালোচক এবং তার কথাতেও যথেষ্ট যুক্তি আছে। তার যুক্তি গুলো আগে পড়লে লেখা আরও পরিণত হতো বলেই আমার বিশ্বাস।
কিছুক্ষণ আগেই একটা প্রাসঙ্গিক নিবন্ধ পড়লাম 🙂
@পৃথ্বী, অনেক ধন্যবাদ আমাদের সাথে লিঙ্কটি শেয়ার করার জন্য, ব্যাপারগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে পারলাম। 🙂
বাংলাদেশে অপরাধের বাড়া/কমার পরিসংখ্যান নিয়েও একটি লেখা আশা করছি। কোন সহৃদয় লেখক কি সাড়া দেবেন?
@ভক্ত, উন্নত দেশ বিশেষ করে আমেরিকা’র একটা উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে তাদের কাছে প্রাসঙ্গিক ডাটা আছে। আমাদের এখানে ডাটা যেমন অপ্রতুল, ঠিক তেমনি ডাটা অ্যাকসেসও খুব সুবিধাজনক না, তাই আমাদের দেশের অপরাধ বিষয়ক কোন লেখা লিখতে যে কোন সহৃদয় লেখককেই অনেক বেগ পেতে হবে বলে আমার মনে হয়।
অপরাধকে সার্বিকভাবে দুভাগে ভাগ করা যায়। সহিংস এবং অহিংস। ডাকাতি, হত্যা , ধর্ষণ , শারীরিক আক্রমন ইত্যদি সহিংস অপরাধ এবং অন্যদিকে ব্যাংকিং ও অন্যান্য আর্থিক অপরাধসমুহ সহ মাদক দ্রব্য বিক্রয় , পরিবহন ও সেবন অহিংস অপরাধের মধ্যে পড়ে। এখন আমরিকায় ঠিক কোন ধরনের অপরাধ কমেছে কিংবা বেড়েছে সেটা দেখতে হবে। এছাড়া অপরাধ সংঘটন এক জিনিষ আর সংঘটিত অপরাধের রিপোর্টিং দেয়া আরেক জিনিষ। অনেক অপরাধেরই খবর পুলিশ পর্যন্ত যায় না যার মধ্যে রাহাজানি থকে শুরু করে ধর্ষন পর্যন্ত রয়েছে। এটাও ভাবার মত বিষয়।
সুইজারল্যান্ডে সরকারী মিলিশিয়াতে অংশগ্রহন বাধ্যতামুলক যেহেতু তাদের পেশাদার সেনা কোর অত্যন্ত নগন্য। একটা করে অাগ্নেয়াস্ত্র এবং কিছু গুলি কড়া হিসাব রক্ষন পদ্ধিতির আওতায় বাড়ীতে রাখার নিয়ম আছে। এর মানে এই নয় যে সুইসে অপরাধ নেই। রাশান এবং পূর্ব ইউরোপীয় মাফিয়ারা সুইসের মাদক এবং পতিতা বাজার নিয়ন্ত্রন করে এবং তারা স্হানীয় রংবাজদের বরদাশত করে না।
@সংশপ্তক,
– এটা খুবই গুরুত্বপূর্ন বিষয়, তবে এই ফ্যাক্টর মনে হয় উন্নত দেশগুলির জন্য অতটা খাটে না যতটা না খাটে আমাদের দেশের জন্য। এ কারনেই কিছু কিছু ষ্ট্যাট দেখায় যে আমাদের দেশের অপরাধের হার আমেরিকা কানাডার মত দেশের থেকে কম। আমেরিকায় আগে ক্রাইম রিপোর্ট বেশী হত আর এখন হচ্ছে না এমন ভাবনার খুব যুক্তিসংগত কারন আছে বলে এখনো শুনিনি। আমেরিকায় অপরাধের হার আসলেই কমছে এতে মনে হয় তেমন সন্দেহের কিছু নেই, আন রিপোর্টেড ক্রাইম মনে হয় না এখানে তেমন ভূমিকা রাখছে বলে। অন্য সব ক্রাইমের কথা তেমন জানি না, তবে ভায়োলেন্ট ক্রাইম কমছে এটা ঠিক।
@আদিল মাহমুদ,
শুধু আমেরিকায় নয় , আমাদের ইউরোপেও পরিসংখ্যানগত দিক থেকে সহিংস অপরাধ কমে গেছে। বিপুল সংখ্যক থানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। পুলিশে নতুন নিয়োগ হিমারাগারে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় সাইবার অপরাধ বেড়েছে বহুগুন। বিলিয়ন ডলারের অপরাধ জগৎ সেটা। আমার তো মনে হয় যে , পশ্চিমা বিশ্বে ইন্টারনেটের ( এবং মোবাইল ইন্টারনেট) ব্যাপক প্রচলন মানুষকে ক্রমশঃ অন্তর্মুখী করে তুলছে। অন্তর্মুখী মানুষেরাও অবশ্য সহিংসতা করে একটা চরম পর্যায়ে পৌছানোর পর , যেমন গনসমাগমে গুলি চালিয়ে বহু বছরের ক্ষোভের আচানক বিষ্ফোরন ঘটানো। অপরাধ সংস্কৃতিরই অংশ। সেখানে বিবর্তন ঘটাটাই স্বাভাবিক। তবে, শক্তির মতই অপরাধের রূপ বদলায় কেবল , বিবর্তন ঘটে ,শুধু বিনাশ নেই।
@সংশপ্তক,
এটা অবশ্য হতে পারে, আমি এভাবে আগে ভাবিনি। আপনার তত্ত্ব তো পুরোপুরি শক্তির অবিনাশিতা তত্ত্বের মতই লাগছে। অপরাধ তাহলে পরম অর্থে কোনদিনই কমবে না? এটা মনে হয় সমাজ বিজ্ঞান থেকে ফিলোসপির দিকে চলে যাচ্ছে।
তবে যাইই বলেন, বাড়ি বয়ে এসে বা রাস্তাঘাটে খুনাখুনী ধর্ষন এসব না করে যদি ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি বা পর্ন ব্যাবসা এসব চালিয়ে অপরাধীরা বিবর্তনের সূত্র অক্ষুন্ন রাখেন তাতে আমি অন্তত স্বস্থির নিশ্বাসই ফেলব।
আমেরিকায় হতাশা বা এমন ধরনের মানসিক সমস্যা থেকে পাবলিক প্লেসে গুলি চালিয়ে হত্যা করার ট্রেন্ড কিন্তু সাইবার যুগেরও অনেক আগ থেকেই আছে। তবে সম্প্রতি গত ক’মাসে বেশ কটি দেখা গেছে। যদিও মূল ক্রাইম রেটের হিসেবে এদের হিসেব কোন ছায়াপাত করার কথা না।
@আদিল মাহমুদ,
মেক্সিকোতে যা কি না সীমান্তের ওপারে , সেখানে সহিংসতার মাত্রা ইরাক এবং আফগানিস্তানের চেয়ে বেশী। প্রতিদিন যতলোক সংঘবদ্ধ অপরাধীদের হাতে মারা পড়ছে তা হিসেব করে শেষ করা যাবে না। যে কোন এক দিনের একটা মেক্সিকান দৈনিক খুললেই দেখতে পাবেন। ড্রাগ মাফিয়াদের দলে আয় অনেক বেশী হওয়ায় , আর্মির কম্যান্ডোরা চাকরি ছেড়ে দিয়ে , ‘জেটা’ বাহিনী Z (zeta) force গঠন করেছে সেখানে। ভেনেজুয়েলায় খুনের মাত্রা বেড়ে গেছে। জ্যামাইকার খুনের হার বৃদ্ধি দেখলে গা শিউরে ওঠে। ডেমিনিকান প্রজাতন্ত্রেও একই অবস্হা। কলম্বিয়ার কথা নাই বা বল্লাম। আমেরিকা মহাদেশে ‘অরাজনৈতিক সহিংসতা’ অতীতের যে কেন সময়ের চেয়ে এখন বেশী।
এই প্রবন্ধটি সহিংসতাকে অপরাধের সমার্থক হিসেবে দেখছে , যেটা একটা দুর্বলতা। অপরাধ বলতে শুধু সহিংসতাকে বোঝায় না। হায় হায় কোম্পানী বা পিরামিড স্কীমের পাল্লায় পড়ে একজনের সারা জীবনের সঞ্চয় চুরি হওয়াটা কম বেদনাদায়ক নয়। অনেকে এ কারনে আত্মহত্যাও করেছে, যার ভুরু ভুরি উদাহরন পাওয়া যাবে। ড্রয়িং রুমে বসে অপরাধের মত হাতে নাতে পর্যবেক্ষনযোগ্য একটা ব্যপারকে পপুলার সমাজ বিজ্ঞানের বেস্ট সেলার দিয়ে যাচাই করা বড় রকমের ভূল – এ জাতীয় প্রবন্ধের।
@সংশপ্তক,
ভূল সব ই ভূল। ক্রাইম কমেছে একথা আমি কেমন করে বলি?
সঞ্চয় এর কথাই যখন বল্লেন তখন দু’কলি শোনাই?
গত ক’সপ্তাহ আগে কে যেনো আমার এক বছরের পুরোন, দোকানের পার্কিং লটে বসে থাকা গোবেচারা গাড়ীটার একদিকটা বসিয়ে দিয়েছে। হা হুতাশ না করে ভাবলাম আমারি ভূল , কেনো এই ধ্যারধ্যারা গোবিন্দপুর দোকানের সামনে পার্ক করলাম। জনবহুল জায়গায় করলে এটা হোত না। বিজ্ঞ জনেরা বল্লেন এটা গাড়ীর ধাক্কা নয়, শপিং কার্টেরও নয়। কে , কেনো ই বা পরশ বুলিয়ে গেলো জানলামও না।
এর দুদিন পর গেলাম বার্নস এন্ড নোবেলস এ বই কিনতে, বই নিয়ে ক্রেডিট কার্ড বাড়িয়ে দিতেই কাউন্টারের ভদ্রলোক চোয়াল শক্ত করে, ভুরু টন করে, আর্ধেক চোখ চশমা থেকে বার করে বল্লেন ” card is not working”. আমি লজ্জায় লাল (ঠিক লাল নয় আমার কালো গাত্র বর্নের সাথে লাল মিশিয়ে বেগুণী আর কি) হয়ে বাসায় এলাম।
রাতে ক্রেডিট কার্ড কম্পানীকে ফোন করতেই জানলাম গতকাল যখন আমি একটা মিটিংএ ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশনের ঝান্ডা ওড়াচ্ছিলাম ঠিক তখনি ২ টো ৩৬ মিনিটে আরেক কেয়া রোজারিও বেস্ট বাই থেকে ১৫০০ ডলারের জিনিশ কিনতে আমার ক্রেডিট কার্ড গুতোগুতি করছিলো, কম্পানী নাকি আমায় কল ও করেছিলো, অধুনা সেল ফোন তাও গিলে খেয়েছে। যাহোক, সেই আরেক আমি কার্ড কাজ না করায় ক্লান্ত হয়ে পোলো ট্রপিকালে মুরগী্র ঠাং চিবিয়েছে ২ টো ৫০ এ। মন কে বোঝালাম , আর যাই হোক আরেক কেয়ার রূচী ভালো গ্রীল্ড চেকেন খেয়েছে আমার মত তেল জবজবে কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন তো খায় নি!
না! এবারে শোক কে শক্তিতে রুপান্তরিত করতে হবে এই দিক্ষায় ব্রত হয়ে তার দুদিন পর মনের আনন্দে পা্ংগাস মাছ রাধতে বসলাম। রেধে বেড়ে মায়ের বাসায় গেলাম ।
“ভোগ একা করা যায়, উপভোগ করতে সংগী দরকার”
পাংগাসের “গুড ফ্যট” গলা দিয়ে নামতে শুরু করলো এর মাঝেই এডিটি সিক্যুরিটির কল, বাসায় বার্গলার এলার্ম বাজছে। এটো হাতে ছুটলাম। দেখি দুই ঠোলা ( এটা ঢাকা ইউনিভার্সিটি সামনে বলা যায় এখানে না) মানে দুই সুদর্শন পুলিশ দাড়ানো। দেখলাম মাত্র দু’মিনিটে আমার ল্যা্পটপ, বসার ঘরের একখানা এলসিডি টিভি, কিছু গয়না নিয়ে অতিথি রা চলে গেছেন। শোবার ঘর গুলোতে গেলে আরো কিছু টিভি, ইলেক্ট্রনিক্স নিতেন , হয়্ত এলার্ম এ কান ঝালাপালা হয়ে গিয়েছিল। পুলিশ দুজন কি এক মহাকাব্য লিখতে ব্যাস্ত, আধ ঘন্টা পর জানতে চাইলো আমার ঘরে স্ক্রু ড্রাইভার আছে কিনা, কি করি তা’ দিয়ে, জানালো স্ক্রু ড্রাইভার দিয়েই ফ্রেঞ্ছ দরজার কাচ ভাংগা হয়েছে। মুখে বল্লাম ‘ ছোট একটা আছে, আমি আর আমার ছেলে ওটা দিয়ে খেলনার স্ক্রু লাগাই, মনে মনে বল্লাম আসলে তোমাদের মত অলস লোকজনকে যাতে সহ্য করতে পারি তার জন্যে নিজেই নিজের মাথার স্ক্রু মাঝে মাঝে আলগা করি, উল্টো প্যাচ দিয়ে।
লম্বা গল্প বল্লাম। আসলে ক্রাইম কি কমেছে নাকি আমাদের সহ্য শক্তি বেড়েছে তা ও দেখার ব্যাপার। নারকটিক ডিসফাংশান নয় তো? আর সব উপাত্তই যে ম্যানুউপুলেশন ছাড়া হয় সে কথাই বা বলি কি করে?
ইন্টারেষ্টিং, তবে এ জাতীয় ফলাফল খুব একটা অবাক করার মত নয়।
কিছু কিছু ষ্টাডি দেখায় যে লিগালাইজড প্রষ্টিটিউশনও ক্রাইম রেট কমাতে পারে, এ নিয়ে উত্তর আমেরিকায় বিতর্ক আছে ইউরোপের বিপরীতে।
আমেরিকায় কেন হঠাত লোকে খেপে উঠে বেমক্কা পাবলিক প্লেসে গুলি চালিয়ে গনহত্যা ঘটায় এ নিয়ে কোন ভাবনা আছে? এ জাতীয় ঘটনা সব সময়ই ঘটলেও সাম্প্রতিক সময়ে এসব ঘটনা আশংকাজনক হারে দেখা যাচ্ছে। আগ্নেয়াস্ত্রের সহজলভ্যতাই কি বড় কারন যা আপত চোখে মনে হয়? একই রকমের সমাজ ব্যাবস্থার অন্য দেশগুলিতে কেন এই প্রবনতা তেমন দেখা যায় না?
@আদিল মাহমুদ, আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। লিগালাইজড প্রস্টিটিউশনের সাথে ক্রাইম রেট কমানোর ব্যাপারটাও বেশ অভিনবই লাগছে। পারলে ২-১ টা লিঙ্ক দিয়েন তো, দেখে নিব। 🙂
আর আমেরিকা আমার কাছে খুব বিভক্ত একটা দেশ মনে হয়। প্রায় অধিকাংশ ইস্যুতেই তারা দেখি বেশ বিভক্ত। যাই হোক, লেখাতেই বলেছি, আগ্নেয়াস্ত্র যে আমেরিকায় অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় সহজলভ্য তা সত্যি। কিন্তু লেখার মধ্যেও বলেছি, সুইজারল্যান্ডেও কিন্তু এর চাইতেও সহজে অস্ত্র পাওয়া যায়, কিন্তু তারপরও পৃথিবীতে বসবাসের জন্য অন্যতম নিরাপদ দেশ হচ্ছে এই সুইজারল্যান্ড। আসলে ক্রাইমের পিছনে এত এত ফ্যাক্টর কাজ করে যে নির্দিষ্ট একটা ফ্যাক্টরকে নির্ণয় করা খুব কঠিন।
@রিজওয়ান,
লিগালাইজড প্রষ্টিটিউশন নিয়ে আসলে বেশ পুরনো বিতর্ক আছে। একটা ষ্টাডি এখানে দেখতে পারেন।
আরেকটা দেখতে পারেনঃ
“When data from countries that ban prostitution is compared with data from countries that do not, many startling discoveries can be observed. Countries without anti-prostitution laws have less murders, less rapes, and prosecute/imprison less people. HIV/AIDS is less of a problem; suicide rates are lower as are divorce rates, too”
তবে উল্টো বা, নিরপেক্ষ (কোন ভূমিকা নেই) ধরনের ফল পাওয়া ষ্টাডিও আছে। যেমন নেভাডার ওপর করা এ ষ্টাডির গবেষকরা মনে করেন যে লিগালাইজড প্রষ্টিটিউশন ক্রাইম কমাতে পারে এমন প্রমান পাওয়া যাচ্ছে না।
আমার মনে হয় এ ব্যাপারে আপনি যা বলেছেন তাই, “আসলে ক্রাইমের পিছনে এত এত ফ্যাক্টর কাজ করে যে নির্দিষ্ট একটা ফ্যাক্টরকে নির্ণয় করা খুব কঠিন।” প্রষ্টিটিউশন বা লিগালাইজড এবরশন এক দেশে ক্রাইম কমাতে সহায়ক হলেই অন্য দেশেও হবে এমন ধরাবাধা কথা মনে হয় বলা যায় না। সমাজের অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। উলটো ফলও হতে পারে।
আমাদের দেশ ইসলামি ভাবধারার (অন্তত মুখে মুখে) হয়েও কিভাবে পতিতালয় ওপেন সিক্রেটের মত চলে এর জবাব অনেকে বলেন যে আসলে সরকারও জানে যে এসব পুরো নিষিদ্ধ করে দিলে সমাজে ক্রাইম বেড়ে যাবে।
আমেরিকানরা মনে হয় সুখে থাকলে ভূতে কিলায় রোগে বেশী ভোগে। কথা নাই বার্তা নাই পাবলিক প্লেসে গিয়ে ঠাস ঠাস মানুষ মেরে নিজেও মারা গেল, পাগলামির সীমা থাকা দরকার। এ ক্ষেত্রে না হয়ত না হলেও আমি মনে করি যে গান কন্ট্রোল কঠিন করলে আমেরিকার ভায়োলেন্ট ক্রাইম রেট কমবে, বিশেষ করে অ-পেশাদার ক্রাইম যেগুলি হয়, যেমন হাই স্কুলের ছেলেপিলে নিজেদের মধ্যে খুনাখুনী করে এসব অনেক কমে আসবে। প্রতিবেশী কানাডাতেও গান কন্ট্রোল অনেক বেশী, এমনকি শাস্তিও আমেরিকার তূলনায় অনেক নমনীয়, কিন্তু ভায়োলেন্ট ক্রাইম রেট অনেক কম।
@আদিল মাহমুদ,
একমত। যারা গান কন্ট্রোলের বিরূদ্ধাচরণ করেন তারা প্রায়ই বলেন যে বন্দুকের সহজলভ্যতা কমালে কোন পরিবর্তন হবে না, এটা যুক্তিযুক্ত নয়। গান কন্ট্রোলের বিরূদ্ধাচরণ করলে সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট এর ভিত্তিতেই করা উচিত।
@রৌরব,
আসলে এটা সবাই বুঝলেও না বোঝার ভান করেন। এমনকি ওবামা সাহেবও এ নিয়ে কোন কথা বলতে নারাজ। আমেরিকানরা জাতিগতভাবেই বন্দুক পিস্তলের বেজায় ভক্ত, এটা মনে হয় সেই ওয়াইল্ড ওয়েষ্ট যুগের জের (আমার নিজের ধারনা)। বহু আমেরিকানের নিজ বাসা বাড়িতেই ছোট খাট যাদুঘর খোলার মত অস্ত্রপাতির সমাহার আছে। একবার এক আমেরিকানের বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে তেপায়া মেশিনগানও দেখেছিলাম। বড় সংখ্যক আমেরিকানই বন্দুক পিস্তলের অবাধ মালিকানা যে এসব সমস্যা বাড়াচ্ছে তা মানতে মানসিকভাবে প্রস্তুত না। রাজনীতিবিদরাও যথারীতি ভোটের রাজনীতির কারনে এ নিয়ে ঘাটাতে চায় না। Romney, Obama fear gun control could backfire
আরো কত নিরীহ অর্থহীন রক্ত ঝরবে কে জানে।
@আদিল মাহমুদ,
এক্ষেত্রে ওবামা ও রমণী ( :)) ) জনগণের মতামতকেই প্রতিফলিত করছেন বলেই মনে হয় অবশ্য।
@রৌরব,
কেনো নয়, সেটা যুক্তিযুক্তভাবে বোঝা গেলো না কিন্তু।
@রৌরব, সমস্যা হচ্ছে আমেরিকায় আগ্নেয়াস্ত্রের বেশ বড় এবং সহজলভ্য ব্ল্যাক মার্কেট আছে। সুতরাং দেখা গেছে, অধিকাংশ অপরাধীরাই আসলে আগ্নেয়াস্ত্র মেইনস্ট্রিম মার্কেট থেকে কিনছে না। আর এজন্যই ব্র্যাডি অ্যাক্ট গান কন্ট্রোল এর জন্য আপাত দৃষ্টিতে বড় ভূমিকা রাখবে মনে করা হলেও প্রকৃত পক্ষে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারেনাই।
সবগুলো যুক্তির ভিতরে এবর্শনটাই বেশী যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে অপরাধ কমার পেছনে। এর সাথে ভলান্টারী প্লানিং হিসাবে জন্মনিয়ন্ত্রন যোগ করা আরও বেশী জরুরী। তথ্যমূলক লেখাটার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
@শাখা নির্ভানা, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। অ্যাবরশন তো জন্ম নিয়ন্ত্রণের বেশ এক্সট্রিম একটা পদ্ধতি, এইটাকে তাই কখনোই ঠিক ওইভাবে উৎসাহিত করা যায়না। জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্যান্য পদ্ধতিই যতটুকু সম্ভব মেনে চলা উচিত। পড়ার জন্য আবারও ধন্যবাদ। 🙂
@রিজওয়ান,
শাখা নির্ভানার মন্তব্যটা এই প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে — এই থিয়োরি যদি সঠিক হয় তাহলে পিল যখন বহুল প্রচলিত হয়েছিল, তার পর পরও অপরাধের হার কমার কথা। তা হয়েছিল কি?
@রৌরব, অনেক দেরিতে মন্তব্যের উত্তর দিচ্ছি দেখে ক্ষমা করবেন। এই অ্যাবরশন তত্তকে ঠিক মানলে আসলে যেকোন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিকেই অপরাধ কমার পিছনে কারণ হিসেবে দেখানো যায়। তবে অ্যাবরশন তো একেবারে শেষ এবং আলটিমেট পদ্ধতি জন্মনিয়ন্ত্রণের, আর সেজন্যই হয়ত এইটা নিয়ে আগ্রহও বেশি এবং অন্যান্য পদ্ধতি গুলোকে আমার মনে হয় কুয়ান্টিফাই করাও একটু কঠিন।
গুগল করে দেখলাম, ‘৬০ এর দশকে পিল আমেরিকায় প্রচলিত হয়। কিন্তু লেখাতেই বলেছি, ওই সময়ে ক্রাইম কমেনাই। সুতরাং আপনার প্রশ্ন বেশ যৌক্তিকই বলা যায়।
ভাল লাগল, যুক্তি সম্মত একটি লেখা , অনেক ধন্যবাদ ।
@আস্তরিন, পড়ার জন্য ধন্যবাদ। 🙂