পৃথিবীর যে কোন উন্নত দেশে কোন একটা সিস্টেম ঠিকঠাক চললে তা বদলানোর কথা কেউ ভাবেও না। যে সব সিস্টেমে গলদ আছে – সেগুলোকেই খোলনলচে পাল্টে দিয়ে ঠিক করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশে হয় উল্টোটা। এখানে যেসব রাস্তা ভাঙাচোরা – সেগুলো সারাবছর ভাঙাচোরাই থাকে। সেসব রাস্তা মোটামুটি চলনসই – সেগুলোতে শুরু হয় খোঁড়াখুড়ি। এ অবস্থা যেমন আক্ষরিক অর্থে সত্যি – তেমনি প্রায়োগিক অর্থেও। যেমন – দেশের হাজারো সমস্যার সমাধান যেখানে জরুরিভিত্তিতে করা দরকার সেখানে সরকার উঠেপড়ে লেগেছে গ্রামীণ ব্যাংক ও প্রফেসর ইউনূসকে নিয়ে। যেন ওটাই প্রধান সমস্যা এবং তার সমাধান করতে পারলেই বাংলাদেশের আর কোথাও কোন সমস্যা থাকবে না।
এরকম কাজের সাম্প্রতিকতম সংযোজন – মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য পরীক্ষা না নেবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মন্ত্রী ও সচিব মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষদের সাথে একটা মিটিং করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন – এস-এস-সি ও এইচ-এস-সি’র রেজাল্টের ভিত্তিতে মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে। ঠিক কীভাবে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে যেখানে প্রায় লাখ খানেক ছাত্রছাত্রী সর্বোচ্চ গ্রেড পেয়েছে? বলা হচ্ছে এখনো সে ব্যাপারে কোন নীতিমালাই তৈরি করা হয়নি। তবে ‘কারো প্রতি অবিচার করা হবে না’ জাতীয় গালভরা বুলি আছে। দেশের বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের নম্বর ও জি-পি-এ’র যে সমন্বয় নেই তার কী হবে? তার জন্য নাকি জেলা-কোটাই যথেষ্ট। সে যাই হোক – কেন হঠাৎ এরকম একটা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার দরকার হলো হাজার হাজার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের উপর? এতদিন যে পদ্ধতিতে ভর্তি চলছিলো তাতে কি ত্রুটি ছিল?
অনেক বছর ধরে একটু একটু সংস্কার ও সমন্বয় করতে করতে মেডিকেল কলেজে ভর্তির যে ব্যবস্থাটা অর্জিত হয়েছিল তা সর্বজনগ্রাহ্য একটা কার্যকরী ব্যবস্থায় উন্নীত হয়েছিল। অনেক আগে একেক মেডিকেল কলেজে একেক সময় ভর্তি পরীক্ষা হতো। তাতে যেসব সমস্যা ছিল সব কলেজে এক সাথে পরীক্ষা নিয়ে সে সব সমস্যার কিছুটা সমাধান করা হলো। তখন লিখিত পরীক্ষার পর মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হতো। দেখা গেলো মৌখিক পরীক্ষায় কিছুটা দুনীর্তির সুযোগ রয়ে যায়। পরে মৌখিক পরীক্ষা উঠে গেল। তারপর লিখিত পরীক্ষা বদলে গিয়ে এম-সি-কিউ পদ্ধতি চালু হলো। সেখানেও যেন না জেনে আন্দাজে উত্তর দিয়ে ‘ভাগ্যের জোরে’ কেউ সুযোগ পেয়ে না যেতে পারে – সেজন্য চালু হলো ভুল উত্তরের জন্য নেগেটিভ মার্কিং। ফলে পরীক্ষা পদ্ধতি হয়ে উঠলো আরো আধুনিক এবং যুক্তিপূর্ণ। বেসরকারি মেডিকেল কলেজ চালু হবার পর থেকে সারাদেশের অর্ধ-শত বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির কোন সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি ছিল না। গতবছর বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকেও নিয়ে আসা হয় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার অধীনে। ফলে সারাদেশে একটা নির্দিষ্ট নিয়মে সমন্বিত মেডিকেল ভর্তি ব্যবস্থা চালু হয়ে গেছে। তাহলে এ সুন্দর ব্যবস্থাকে একেবারে বন্ধ করে দেয়ার পেছনে যুক্তি কী?
যুক্তি যা দেখানো হচ্ছে তাতে পনের কোটি মানুষের একটা বিশাল দেশ যাঁরা চালান তাঁদের লজ্জা হওয়া উচিত। কিছু কোচিং সেন্টার নাকি ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে এবং আরো বিভিন্ন উপায়ে নাকি ভর্তি-পদ্ধতিকে কলুষিত করে। তাই ভর্তি-পরীক্ষা উঠিয়ে দিলে তাদের উচিত শাস্তি হবে। বাঃ কী সুন্দর সমাধান আমাদের স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের এবং জ্বি-হুজুর মার্কা মেডিকেল-অধ্যক্ষদের। পৃথিবীর সবদেশে যে IELTS, TOEFL, GRE, GMAT ইত্যাদি আন্তর্জাতিক পরীক্ষাগুলো হয় – তাতেও তো কিছু কিছু দেশের ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে কথা ওঠে। কৈ সে কারণে তো পরীক্ষা বন্ধ করে দেয়ার কথা তো কখনো শোনা যায় না। বরং পরীক্ষা ব্যবস্থাটাকে কীভাবে আরো নিশ্ছিদ্র করা যায় তার ব্যবস্থা করা হয়। ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ না করে যেসব কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে সেগুলো বন্ধ করে দেয়া যায় না?
সারা পৃথিবীতে মেডিকেল কলেজে ভর্তির ব্যাপারটাকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। আমাদের দেশের কিছু কিছু ‘উচ্চশিক্ষিত’ আমলা বলেই ফেলেছেন যে পৃথিবীর কোন উন্নত দেশেই নাকি ভর্তি-পরীক্ষা নেয়া হয় না। আমি জানি না তাঁদের কাছে উন্নত দেশের সংজ্ঞা কী। আমেরিকা নিশ্চয় একটি উন্নত দেশ। সেখানে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে গেলে MCAT – বা Medical College Admission Test স্কোর লাগে। এই টেস্ট পরিচালনা করে এসোসিয়েশান অব আমেরিকান মেডিকেল কলেজ বা AAMC। MCAT স্কোর ছাড়া আমেরিকায় মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া যায় না। ইংল্যান্ডে UKCAT বা UK Clinical Aptitude Test দিতে হয়। অস্ট্রেলিয়ায় স্নাতক পর্যায়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য দিতে হয় UMAT বা Undergraduate Medical Admission Test, স্নাতকোত্তর পর্যায়ের মেডিকেল কোর্সে ভর্তির জন্য দিতে হয় Graduate Medical School Admission Test (GMSAT). Australian Council for Educational Research (ACER) এর তত্ত্বাবধানে এই টেস্ট এখন ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডেও প্রচলিত হয়েছে।
আমেরিকা, ইংল্যান্ড, বা অস্ট্রেলিয়ার স্কুল কলেজের নিয়মিত পরীক্ষাগুলোর ফলাফল তো প্রশ্নবিদ্ধ নয়। তবুও সেসব দেশে মেডিকেলে ভর্তির জন্য ভর্তি-পরীক্ষা দিতে হয়। আর আমাদের দেশে এক শ্রেণীর আমলা হঠাৎ বলতে শুরু করেছেন বোর্ডের পরীক্ষার চেয়ে ‘এক ঘন্টার ভর্তি পরীক্ষা বেশি কার্যকরী নয়’। এমন তো নয় যে বোর্ডের পরীক্ষার কোন গুরুত্বই দেয়া হচ্ছে না। এস-এস-সি ও এইচ-এস-সি’র নম্বর থেকে একটা অংশ তো প্রচলিত ভর্তি পদ্ধতিতেই সংযুক্ত আছে। যদি বেশি সংখ্যক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে সরকারের সমস্যা হয় বুয়েটের মত উচ্চ-মাধ্যমিকের গ্রেডের ভিত্তিতে মেধানুসারে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। কিন্তু ভর্তি-পরীক্ষাহীন ভর্তির সিদ্ধান্ত হবে ভীষণ গোলমেলে এবং তৈরি হবে আরো অনেক নতুন দুর্নীতির সুযোগ, এবং ভর্তি-বাণিজ্য। এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত এখনি ত্যাগ করা দরকার।
প্রশ্নপত্র ফাস হয়ে যাওয়া সরকারের ব্যর্থতা। কিন্তু তার জন্য পরীক্ষা ব্যাতিত শুধু জিপিএ এর ভিত্তিতে মেডিকেল এ ভর্তি করার মত অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে অভাগা দেশের ঝুলিতে আরও নতুন কিছু সমস্যার সংজোযন হবে।খুব অসহায় লাগে যখন দেখি দেশের সিদ্ধান্তগুলো এ ধরনের নীতিনির্ধারক রা নেন যাদের দূরদর্শী চোখ নেই।
সম্প্রতি মেডিকেল ভর্তি নিয়ে সরকারের যে চিন্তাধারা- আমি তাতে সত্যিই বিরক্ত। একজন অভিবাবক হিসেবে এটা মেনে নিতে পারছি না যে- কেবল কোচিং বন্ধ করতে গিয়ে এরা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষাই উঠিয়ে দিচ্ছে।
লেজে গোবরে বলছেন কেন? যারা এ প্লাস পেয়েছে, তাদের মধ্য থেকে যাদের সামর্থ আছে তারা লক্ষ লক্ষ টাকা যায়গা মতো দিয়ে মেডিকেলে ভর্তি হবে।
এ বছরের মতো হয়তো আগের সিসটেম চলতে পারে, কিন্তু আসলে সরকার যে নতুন সিসটেম করতে চাচ্ছে সেটাই হওয়া উচিত। মুশকিল হচ্ছে, এরপর দেখা যাবে আমলাদের সন্তানরা হেভি হেভি নম্বর পেতে থাকবে!
আমার কাছে মনে হয়- পাবলিক পরীক্ষাগুলোর যে পদ্ধতি তার সাথে উচ্চশিক্ষার সামঞ্জস্যতা খুব সামান্য। ফলে যে যে বিষয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে চায়, তাকে সে বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে। ধরা যাক, যারা প্রকৌশলবিদ্যায় পড়তে চান- নিঃসন্দেহে গণিতে তাদের ভালো দখল থাকতে হবে, পদার্থবিজ্ঞানে থাকতে; তিনি উচ্চমাধ্যমিকে বায়োলজিতে এ প্লাস পেয়েছিলেন কি না, সেটা বিবেচ্য নয়। অন্যদিকে, ডাক্তারি বিদ্যায় যারা পড়বেন- তাদের ক্ষেত্রে বায়োরজি ও ক্যামিস্ট্রি ভালোভাবে জানা থাকতে হবে। এখন আমি উচ্চমাধ্যমিকে বহু কষ্টে বায়োলজি উতরে গেছি, তখন সেটা আমি নিতেও চাইনি, কিন্তু পারিবারিক চাপে নিতে হয়েছে। কিন্তু আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এক বায়োমেডিক্যাল ফিজিক্স ছাড়া আমি এর আর কোনো উপযোগিতা দেখিনি, অন্তত আমার সাবজেক্টে। আমাদের পরিবারের ধারণা- কমপ্লিট সায়েন্স মানেই বায়োলজি থাকতে হবে, ইঞ্জিনিয়ারিঙ ড্রইঙ কিঙবা স্ট্যাটিসটিকস নিলে হবে না। এখন এই যদি হয় পাবলিক পরীক্ষার অবস্থা- তবে আশা করা বাতুলতা যে, এই মানদণ্ডে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হলে সেটা খুব সুখকর চিত্র দেবে।
কোচিঙ সেন্টার বন্ধ করতে সরকারের সদিচ্ছাই যথেষ্ট। অবশ্য আমি বুঝতেছি না, কোচিঙ ওয়ালাদের পয়সায় এখন ‘স্বাচিপ’ওয়ালাদের চোখ পড়লো কি না।
@শনিবারের চিঠি,
সহমত। আমার ছোটভাই এবার এইচএসসি দিয়ে গোল্ডেন এ+ পেলো। যে প্রশ্ন হয়েছে, তা দেখলাম বিগত কয়েকবছরের একই বোর্ডে (হ্যাঁ, একই বোর্ডে) আসা প্রশ্নেরই predictable পুনরাবৃত্তি। এখানে মেধার কিছু নাই, আছে ঐ প্রশ্নগুলোর উত্তর মুখস্ত করে পরীক্ষার হলে উগরে দিয়ে আসার ক্ষমতা। সারা বাংলাদেশে এইচএসসিতে ১৮,০০০এরও বেশি গোল্ডেন এ+ এসেছে। একটা দেশে সর্বোচ্চ পর্যায়ের এত মেধাবী কি থাকে?
@আকাশ চৌধুরী, আমি আপনার সাথে একমত, আসল সমস্যা এটাই ভাই। আমাদের সময়ে বাংলা আর ইংরেজিতে লেটার মার্কস তোলা ছিল রীতিমত দুঃসাধ্য একটি ব্যাপার আর এখন এই গোল্ডেন এ+ এর বন্যা দেখলে তো আমাদের সময়কার বোর্ড স্ট্যান্ড করা স্টুডেন্ট দের গাধা আর গরু মনে হবে। আজকাল যারা মুখস্ত করে এ+ পাচ্ছে তাদের আসল ভবিষ্যৎ কি? বিদেশের কাছে হয়ত নাম নেয়া হচ্ছে যে আমাদের কত মেধাবী আছে, অথচ দেখবেন যে আসল ক্ষেত্রে তারা কি রকম মার খেয়ে যায়।একটা জাতিকে মেধাহীন করতে হলে যা যা করা দরকার সব এইদেশে বেশ কিছুদিন আগ থেকে বেশ সাফল্যের সাথে করা হচ্ছে।
@আকাশ চৌধুরী,
আপনার কথার সূত্র ধরে আরেকটা পয়েন্ট যোগ করি। ২০১০ সালে যদি পিথাগোরাসের উপপাদ্য আসে,২০১১ সালে প্রায় ৯৯% নিশ্চিত ভাবে সেটা আসবেনা। কিছু প্রশ্ন আবার “জোড়” বছরের জন্য ইম্পরটেন্ট,কিছু “বিজোড়”। এই সিস্টেমটা কেনো চলতেসে আমার মাথায় ঢুকেনা। ২০১২ তে ছেলেমেয়েরা সমুদ্রের পানি থেকে খাদ্য লবণ প্রস্তুতি শিখলে কি পরের বছরের ছেলেমেয়েদের সেটা শেখার কোনো দরকার নাই?? সত্যিই অদ্ভূত।
@শনিবারের চিঠি,
আমি আপনার সাথে একমত। আমাদের দেশের অনেক বড়ো বড়ো সমস্যা সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপে ও সামাজিক সচেতনতার কারণে বন্ধ হয়েছে। যেমন পলিথিন ব্যবহার। কোচিং সেন্টারও বন্ধ করা যায়। আর একটি বিষয় মনে হয়- আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় এখনও ব্যক্তিত্ববোধের বিষয়টি গড়ে ওঠেনি। না পাবলিক পরীক্ষায়, না উচ্চশিক্ষায়। বিষয়টি সচেতনতার সাথে ভাবা দরকার।
পরীক্ষা নেওয়া আর না নেওয়ার মধ্যে আমি খুব একটা পার্থক্য দেখিনা। এক লাখ শিক্ষার্থীর জন্য যেখানে মাত্র পাঁচ হাজার আসন, সেখানে পরীক্ষা নিয়ে আপনি মেধার কী মূল্যায়ন করবেন? এটা তো শেষ পর্যন্ত সেই লটারি ই থাকছে।
@নাদিম আহমেদ,
পার্থক্য আছে। এটা ঠিক যে একটা ১ঘন্টার পরীক্ষায় কখনোই মেধার মূল্যায়ন হয়না কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পাবলিক পরীক্ষার রেজাল্ট দেখাটা ভয়াবহ। ৮ বোর্ডে ৮ প্রশ্নে পরীক্ষা হয়,সাথে আছে ইংরেজী মাধ্যম আর মাদ্রাসা,কিভাবে সমন্বয় সম্ভব এগুলোর? জিপিএ সমান হলে মার্কস দেখে ভর্তি করবে অথচ রেজাল্টের সময় ছেলেমেয়েরা মার্কস জানতে পারবেনা এটা অন্যায় নয়কি?
১-২ বছর সময় নিয়ে সিদ্বান্তটা নিলেও নাহয় মানা যেতো,সবথেকে বড় সমস্যা এখানেই হয়েছে,যারা ২য় বার পরীক্ষা দিবে অথবা জিপিএ কমধারী যারা অলরেডি মেডিকেলের জন্য প্রিপারেশন নিয়ে ফেলসে তারা এখন এই কম সময় কিভাবে লক্ষ্য পরিবর্তন করবে? তাদের উপর অবিশ্বাস্য রকম অন্যায় করা হলো।
২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য এই পদ্ধতিটা খুবই হতাশাজনক। এবং দুঃখজনক যারা এবছর মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী, তাদের জন্য। কারণ ইতিমধ্যেই তারা ভর্তির সমস্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। সরকারের কোনোক্রমেই উচিৎ হয় নি এই মুহূর্তে এ সিদ্ধান্ত জারি করার। তবে ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টিকে এভাবে নিচ্ছি-
অনেক শিক্ষার্থী আছে, যারা শুধুমাত্র মেডিকেলে ভর্তির জন্য কোচিং করে; এবং দুর্ভাগ্যবশত যদি মেডিকেলে চান্স না হয়, তাহলে অন্য কোথাও চান্স পাওয়াও তাদের জন্য কষ্টকর হয়। এর কারণ হতাশাগ্রস্থতা ও অন্যান্য। পরিশেষে দেখা যায়, তার থেকে কম মেধাবী ছাত্ররা ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পায়, কিন্তু তাকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ বা প্রাইভেটে পড়া ছাড়া উপায় থাকে না। সেক্ষেত্রে সরকারের এই প্রক্রিয়াটা ভালো; যদি তা সঠিকভাবে কার্যকর হয় (!) আরেকটি বিষয় হলো- বর্তমানে সৃজনশীল পরীক্ষায় সবসাবজেক্টের সাথে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। এবং তুলনামূলক বিচারে সেগুলো মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের মতই কঠিন। ফলে এই কঠিনতম সৃজনশীল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী মেধাহীন হবে, এটা ভাবা উচিৎ নয়।
সামগ্রিকভাবে সরকারের বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করাটা যুক্তিহীন হবে। তবে এ বছরে সরকারের কোনোক্রমেই উচিৎ হয় নি এই নিয়ম চালু করার।
@মাজ্হার,
আমি এতে এতটা নিশ্চিত নই। যদিও মানতে হচ্ছে আমি দেশের বর্তমানে প্রচলিত জিপিএ পদ্ধুতির সাথে তেমন পরিচিত নই। কিছু তথ্য দিচ্ছি, শুধু জিপিএ-৫ দিয়ে মেধার যাচাই কিভাবে করা হবে তা নিয়ে গভীর সংশয় কেন থাকে তা হয়ত বোঝা যাবে।
দেশে মেধাবী ছাত্রছাত্রী এত বিপুল সংখ্যায় বেড়ে গেলে দেশের জন্য অবশ্যই সুসংবাদ। সে প্রশ্ন নাহয় বাদই থাকল। কথা হল যে মেডিকেলে ভর্তির মোট আসন সংখ্যা কত? সেখানে কতজন সমমেধার জিপিএ-৫ কে কিসের ভিত্তিতে সুযোগ দেওয়া হবে?
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-08-08/news/280086
আমি যেটা বুঝি যে আমাদের দেশে বিপুল পরিমান অসাম্যের জন্য সীমিত সংখ্যক আসনে নির্বাচনের জন্য বোর্ডের পরীক্ষার বাইরেও কোন না কোন রকমের ফিল্টার অবশ্যই লাগবে।
আমি জানি না কেন, তবে সরকার মনে হয় পণ করেছে যে শেষকালে বেহুদা বেহুদা লোকজন খেপিয়ে নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের হাতে একের পর এক বল তুলে দেবে। অর্থহীন সব কাজকর্ম করে চলেছে যেগুলির নেই কোন প্রায়োরিটি,নেই কোন চিন্তাযুক্ত সমাধান।
দেশ নিয়ে এই জাতীয় অনেক দূঃখ, হতাশা ব্যাঞ্জক খবরে হাসিও চেপে রাখা মাঝে মাঝে দায় হয়। যে দেশে মন্ত্রীরা গরু ছাগল আর মানুষ চিনতে পারলেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে দেবার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন সে দেশে এমন সমাধান খুবই স্বাভাবিক। ঊপরি হিসেবে এই পদ্ধুতিতে জুটবে খাতিরে আর চাপে ভর্তি এককালে যেমন ভাইভার মাধ্যমে করা হত। অনেক যায়গায় চাকরির প্রশ্নপত্রও তো ঘন ঘন কাগজে দেখি ফাঁস হচ্ছে, সহসা কি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাল্ট দেখে চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু হবে? আমাদের থানা পুলিশ ঘুষ খেয়ে অন্য দেশী নাগরিকদের পাসপোর্ট দিয়ে দেয় তাই আমরা বিপন্ন মানুষদের আশ্রয় দিতে অসমর্থ, কিন্তু দূর্নীতি বন্ধ করার উদ্যোগ নেবার বেলায় নেই। দেশের জনগন আসলে নিজেরা কতটা অসহায় সেটাও টের পায় না, এর চেয়ে হতাশার আর কি হতে পারে।
আপনার কথা ঠিক আছে, উন্নত দেশগুলতে ভর্তি পরিক্ষা হয়। কিন্তু ইউ, এস, এ অথবা ইউ, কে তে নিশ্চই বাংলাদেশের মত এমন কোচিং বানিজ্য নেই। আর এই কোচিং বানিজ্য উঠিয়ে দিতে হলে বাংলাদেশে এ ছারা আর কোন বিকল্প আছে কি?
হয়ত বলবেন ভর্তি পরিক্ষা ছারা খারাপ ছাত্র মেডিকেলে পরার সুযোগ পাবে। এস এস সি & এইচ এস সি তে গোলডেন পাওয়া ছাত্রদের যদি আপনি খারাপ ছাত্র বলেন তবে অবশ্য ভিন্ন কথা। এটাও ঠিক যে এই সিস্টেম চালু হওয়ায় অনেক মেধাবি (কোন কারনে বোর্ডের পরীক্ষায় খারাপ করা) ছাত্রের আর সু্যোগ থাকলনা। আরেকটা কথা, যারা চান্স পায় তাদের কেউ কি নিজে একা পড়ে চান্স পায়?
আসলে ভর্তি পরিক্ষাটা পুরটাই কোচিং ব্যবসা । আর বাংলাদেশ ইউরোপ বা আমেরিকা নয় যে তারা যা করবে তাদের ফলো করতে হবে। যে দিন বাংলাদেশ তাদের মত হতে পারবে সেদিন তাদের অনুসরন করলে সমস্যা নেই।
(আমি রিকশাওলা হয়ে যদি পাজেরো গাড়ীর মালিকের মতো আচরণ করি, তাহলেতো হবে না)
@নকিম,
ভাইজান,সরকার কত সূচারূভাবে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকার দালাল ডক্টর ইউনু্সের মত ভয়াবহ ক্রিমিনালকে কাত করে ফেলছে আর এইদিকে কয়টা কোচিং সেন্টার কিভাবে কার সহায়তায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করছে বার করতে পারছে না এটা বিশ্বাস করতে বলেন??? এ কি বেশম্ভব কথা রে ভাই।
কোচিং বানিজ্যতেই সমস্যাটা হলে প্রাইভেট কোচিং জিনিসটাই তুলে দেওয়া হোক না কেন? সেটা কেন করা হবে না, সেটাই কি বেশী যুক্তিসংগত নয়? স্কুল কলেজ থাকতে আবার প্রাইভেট কোচিং কেন লাগে?
আমেরিকা/ইউরোপে কোচিং ব্যাবসা নেই বলতে চান? সরাসরি আমাদের দেশের মাত্রায় নেই, তবে যারা ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাল বিভাগে পড়তে চায় তাদের অনেকে ঠিকই হাইস্কুল পর্যায় থেকেই কোচিং করে।
বোর্ড পরীক্ষায় এখন দেখি গন্ডায় গন্ডায় জিপিএ ৫ পাচ্ছে। এদের মাঝে ঠিক ভাবে নির্ধারন করা হবে কে কে চান্স পাবে, কিংবা কে ঢাকা মেডিক্যাল আর কে রংপুর মেডিক্যালে পড়বে?
@আদিল মাহমুদ,
কোচিংয়ের ব্যাপারে আমার অভিমত হল- এটাকে অপশনাল রাখলে সমস্যা নাই, কিন্তু কিছু দুঃচরিত্র শিক্ষক যখন কোচিং করতে বাধ্য করে তখনই সমস্যা শুরু হয়। স্কুল-কলেজে টানা পাঁচ ঘন্টা মনযোগ দিয়ে সব বিষয়বস্তু ভালমত বুঝতে পারা অসম্ভব, সেক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ের সহায়তা নিতেই পারে। কিন্তু সব শিক্ষার্থীকে যখন নম্বর কম দিয়ে কোচিংয়ে যেতে বাধ্য করা হয়, তখন সেটা অত্যন্ত আপত্তিকর হয়ে যায়।
স্কুল-কলেজে কোচিং করতে বাধ্য করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সময় কোচিং করতে কিন্তু কাউকে বাধ্য করা হয় না। কেউ যদি মনে করে বাসায় ইন্টেনসিভ পড়াশোনা করেই সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দের বিষয় পেতে পারবে, সে বাসায় বসে নিজের মত করে পড়ালেখা করার স্বাধীনতা সংরক্ষণ করে। কিন্তু বাস্তবতা হল, ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের মান আর বোর্ড পরীক্ষার প্রশ্নের মানের সাথে আকাশ-পাতাল তফাৎ আছে। উচ্চমাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান আর গণিতের অংকগুলো সরাসরি সূত্র বসিয়ে মান বের করার অংক। এত সহজ অংক করে পঠিত বিষয়বস্তুর কিছুই বোঝা যায় না, একারণে একই অধ্যায়ের একই কনসেপ্টের অংক যখন একটু ঘুরিয়ে পেচিয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে আসে, তখন শিক্ষার্থীরা অথৈ জলে পড়ে। ভর্তি কোচিং ও বুয়েটের প্রশ্ন দেখে আমার মনে হয়েছে গত দু’ বছরে আমি আসলে কিছুই শিখিনি, নিজের অজান্তেই সব কিছু মুখস্থ করে বসে আছি।
স্কুল-কলেজের শিক্ষাপদ্ধতি আমাদেরকে প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করছে না বলেই আমরা কোচিংয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছি। কোচিং ব্যবসা বন্ধ করতে চাইলে আগে আমাদের পাবলিক পরীক্ষা পদ্ধতি আর পাঠ্যবইগুলো ঢেলে সাজাতে হবে, পাঠ্যবইয়ের কনটেন্ট এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে আমি কোন একটা তত্ত্ব পড়ে নিজে চিন্তা করে বের করতে পারি তত্ত্বটি কোন কোন সিনারিওতে ব্যবহার করা যাবে, এর বাস্তব প্রয়োগ কোথায়। পাবলিক পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন না করে ভর্তি পরীক্ষার উপর মনোনিবেশ করলে সমস্যার মূলে আঘাত করা হবে না।
@পৃথ্বী,
আপনার মূল কথায় দ্বি-মত নেই। বেশ বাস্তব ভিত্তিক যুক্তিপূর্ন কথা বলেছেন। এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে আসলে অনেক কিছুই আসবে।
মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিং এ এডমিশন বিষয়ে কিন্তু দুটি বিষয় মন রাখতে হবে। এক হল প্রকৃত মেধা যাচাই, আরেকটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় যা মনে হয় অনেকেই মিস করছেন তা হল সীমিত সংখ্যক আসনের বিপরীতে বিপুল সংখ্যক আবেদনকারী যাদের মেধা একই মানের, এর জন্য অবশ্যই কোন না কোন ফিল্টার দরকার হবেই। পশ্চীমের দেশগুলিতে এই দ্বিতীয় সমস্যা আমাদের মত নেই, তবে তারপরেও স্যাট জাতীয় পরীক্ষা আছে যেগুলি ছাড়া ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়া যায় না। আর আমাদের দেশে তো কথাই নেই, এখানে জিপিএ বা বোর্ড পরীক্ষা দিয়ে মেধা যাচাই করা যায় কিনা এই বিতর্ক বাদ দিলেও সমসংখ্যক মেধাবীদের তুলনায় আসন সংখ্যার সুযোগ সীমিত হওয়ার কারনে বোর্ড পরীক্ষার পরেও কোন না কোন সাবজেক্ট রিলেটেড পরীক্ষা দরকার হবেই।
কেউ কেউ দাবী করছেন যে জিপিএ পদ্ধুতির প্রচলন শুরু হবার পর শুধু এই পরীক্ষা দিয়েই নাকি মেধা যাচাই হয়ে যাচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলছেন যে এটা সঠিক নয়। কতটা মেধা যাচাই এই পদ্ধুতিতে হতে পারে আমি বলতে পারি না, তবে এটা পরিষ্কার মনে হচ্ছে যে সরকার ও জনগন এখানে মিউচ্যুয়াল আন্ডারষ্ট্যান্ডিং এর মাধ্যমে এক বিপদজনক খেলা খেলছে। মুড়ি মিশ্রীর দরে জিপিএ-৫ বিলিয়ে দিয়ে, পাশের হার যেভাবেই নম্বর বাড়িয়ে বাড়িয়ে বা প্রশ্ন সহজ করেই হোক বাড়াতে হবে এমন মনোভাব দিয়ে সাময়িক আত্মপ্রসাদ লাভ করা যাচ্ছে, জনগনও খুশী; ছেলেমেয়ে ভাল ফল করল। সরকারও খুশী পাশের হার বাড়লো, মানে দেশের শিক্ষার মান বাড়ছে। এই মনোভাব আসলে টাকশাল থেকে দেদারসে টাকা ছাপিয়ে দারিদ্রতা দূরীকরনের বুদ্ধির সমতূল্য। শুধুমাত্র বোর্ড পরীক্ষার ভিত্তিতে এডমিশন হতে হলে আগে অবশ্যই বোর্ড পরীক্ষার মান, ফল মূল্যায়নের বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন আনতে হবে। সেটা করতে গেলে দেখা যাবে যে পাশের হার কমে গেছে, জিপিএ-৫ কমে গেছে, সেটাও আবার সরকার জনতা কেউই চাইবে না। তাই পাবলিক পরীক্ষার মান উন্নয়নে আপনার বলা পদ্ধুতিগুলি বাস্তব সম্মত হলেও আমাদের দেশের লোকে খেপে উঠবে। পাশের হাত ৩০% এ নেমে এলে সরকারেরই গদি নিয়ে টানাটানি পড়বে।
সোজা কথা হল যে পাবলিক পরীক্ষাগুলির ভূমিকা হল একটি অতি সাধারন মাপকাঠিতে সামগ্রিকভাবে মেধা যাচাই, যা দিয়ে বৃত্তিমূলক বিষয়ভিত্তিক বিষয়ে পড়ার যোগ্যতা যাচাই ব্যাবহারিকভাবে করা যায় না।
আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থাই শুধু নয়, সামগ্রিক ভিত্তিই হল মুখস্তবিদ্যা উতসাহিত করা, সৃজনশীলতার যথাযথ মূল্যায়ন না করা। ডিগ্রী অর্জন এখানে জ্ঞানার্জন নয়, জীবিকা, সামাজিক প্রতিষ্ঠার জন্য একটি সীল হিসেবে কাজ করে। এ কারনে উচ্চ শিক্ষিত লোকজনেও কর্মক্ষেত্রে কার্যত কলমপেষা কেরানীর মতই কাজ করে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অন্যতম মূল কাজ যা অর্থাৎ গবেষনা তার হার বলতে গেলে শুন্য হবার একটা কারন এটা।
তবে এডমিশন কোচিং এর জন্য তেমন যুক্তি আমি এখনো পাই না। পাবলিক পরীক্ষার মানের সাথে এর মানের তফাত অবশ্যই আছে, তবে সেই তফাতটা সব ছাত্রছাত্রীর সামনে একইভাবেই আসা উচিত না? কারো টাকা আছে বলে সে খরচ করে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবে আর কারো টাকা নেই বলে সে সুযোগ পাবে না এমন ব্যাবস্থা করে রাখা বৈষম্যমূলক। আমাদের সময়ে দেখেছিলাম বুয়েট মেডিকেলের এক বড় সংখ্যক ছাত্রছাত্রী ঢাকা শহরের। সোজা কারন হল এরা কোচিং সেন্টারের সুযোগ নিয়েছে। এমনকই ভর্তি হওয়া মফস্বলেরও অনেক ছেলেমেয়ে কাগজে কলমে মফস্বলের হলেও পরীক্ষার আগে ঢাকায় থেকে কোচিং করেছে। আমার মতে এডমিশন কোচিং বন্ধ করলে তেমন সমস্যা দেখি না। ছাত্রছাত্রীদের মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়রিং থেকে কেবল গত কয়েক বছরের প্রশ্নপত্র দেওয়া যেতে পারে যাতে তারা ধারনা পায়, এরপর যে যার মত প্রস্তুতি নেবে।
কোচিং পুরো সমর্থনীয় না হলেও দূর্বল ছাত্রদের জন্য দরকার হতেই পারে, সেটা রীতিমত মারদাংগা বানিজ্যিকভাবে না করে নিয়ন্ত্রিত ভাবে সূলভে হয়ত করা যেতে পারে, যেমন স্কুল কলেজেই শিক্ষকদের দিয়ে অতিরিক্ত বেতনের বিনিময়ে কাজটি করানো যেতে পারে। এটাও আসলে হবে না কারন অনেকেরই কায়েমি স্বার্থে আঘাত লেগে যাবে। আর কেউ কারো বাড়ি গিয়ে পড়ালে বা পড়তে চাইলে সেটা বন্ধ করার কোন উপায় নেই, থাকা উচিতও নয়। কোচিং দুনিয়ার সব দেশেই আছে, আমাদের মত এত মেধাবী আর কেউ নেই যারা একে পুঁজি করে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন বার করার চক্র বানিয়ে রীতিমত শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে বা কোচিং না করলে পরীক্ষায় খারাপ করাতে পারে। আসলে আমাদের সব সমস্যাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চুড়ান্তভাবে একই যায়গায় আসে।
চালকের স্কিল ভাল না হলে তার হাতে গরুর গাড়ির দায়িত্ব দেওয়া আর জেট প্লেনের দায়িত্ব দেওয়া একই কথা। ব্যাবস্থা যাইই করা হোক ঠিকই কোন না কোন ফাঁক বার করে অপব্যাবহার করা শুরু হবেই। স্বাধীনতা, গনতন্ত্রের বড় বড় বুলি থেকে শুরু করে নিত্য নৈমিত্তিক ছোটখাট সব ব্যাপারেও একই চিত্রই বারে বারেই আসে।