প্রায় দেড়শ বছর আগে চার্লস ডারউইন যে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে জৈব বিবর্তনের পক্ষে শক্ত প্রমাণ পেশ করেছিলেন তা মানুষের সাধারণ জ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে অনেক আগেই। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে বিশেষ জ্ঞান বা বিজ্ঞান যত দ্রুত নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে পুরনোকে সংশোধন করতে পারে সাধারণ জ্ঞান ততোটা পারে না। বিশ্বের অনেক সমাজেই তাই বিবর্তন পুরনো ধ্যান ধারণার বাঁধা ডিঙিয়ে সাধারণের অন্দরে প্রবেশ করতে অনেক সময় নিচ্ছে। ডারউইনের নাম জানলেও তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে না অধিকাংশ মানুষ, বিবর্তনের সত্যতাকে অস্বীকার করাকেই খুব স্বাভাবিক মনে করছে তারা। আমাদের সমাজও তার ব্যতিক্রম নয়। হোমো রুডলফেনসিস প্রজাতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমরা সাধারণ আর বিশেষের এই কথিত দ্বন্দ্বেরই মুখোমুখি হব।
এই দ্বন্দ্বের একটি বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ২০১২ সালের ৮ই আগস্ট রুডলফেনসিস প্রজাতির তিনটি নতুন ফসিল আবিষ্কারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে। এই আবিষ্কারের ঘটনা নিয়ে একই তারিখে ‘প্রথম আলো’ পত্রিকা বিবিসি-র সংবাদটি অনুবাদ করে ছাপে। কিন্তু অনুবাদের কিছু দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণে মন্তব্যকারীদের অনেকেই জড়িয়ে পড়েন সেই পুরাতন একঘেয়ে দ্বন্দ্বে। বিবিসি তাদের খবরের এক জায়গায় লিখেছিল, “The research adds to a growing body of evidence that runs counter to the popular perception that there was a linear evolution from early primates to modern humans.” প্রথম আলো যার অনুবাদ করে এভাবে, “বিজ্ঞানীরা বলেছেন, আদিম যুগের বানরের সরাসরি বিবর্তনের ফলে মানুষ এসেছে বলে যে প্রচলিত ধারণা রয়েছে, এর বিপরীতে যুক্তি তুলে ধরার মতো জোরালো প্রমাণ হাতে এল তাঁদের।” লেখার একেবারে প্রথম দিকে এহেন বাক্য দেখে তো “সাধারণ-জ্ঞানীরা” আনন্দে আত্মহারা, তাদের খুশী যেন আর ধরে না। খুশিতে ধেই ধেই করে নাচতে গিয়ে তারা এতোটাই কাবু হলেন যে ইন্টারনেটে আরেকটু “গবেষণা” করা তো দূরের কথা বাকি লেখাটাও পড়ে দেখার কথা ভুলে গেলেন। এই বাক্যের কোন অংশটাতে জোড় দিতে হবে সেটা অধিকাংশ পাঠক তো বুঝতে পারেইনি, লেখক নিজে কতোটা বুঝেছেন তা নিয়েও সন্দেহের অবকাশ আছে।
বিবিসি-র বাক্যটার দিকে মনোযোগ দেয়া যাক, এখানে জোড় দিতে হবে “linear evolution” শব্দ দুটিতে। জিনতত্ত্ব এবং জীবাশ্মবিজ্ঞান বলছে আজ থেকে ৬০-৭০ লক্ষ বছর পূর্বে প্রাণবৃক্ষে মানুষের শাখা এবং শিম্পাঞ্জিদের শাখা আলাদা হয়ে গিয়েছিল। প্রথম প্রাইমেটদের উৎপত্তি কিন্তু আরও অনেক আগের ঘটনা, ৬-৭ কোটি বছর পূর্বের। গত ৬০ লক্ষ বছরের বিবর্তনের মাধ্যমে আধুনিক মানুষের জন্ম কিভাবে হয়েছে সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুকল্প হচ্ছে, অনেকটা রৈখিকভাবেই এক প্রজাতি বিবর্তিত হয়ে আরেক প্রজাতিতে রূপান্তরিত হয়ে চলেছে যার শেষ পরিণতি আমরা। যেমন, হয়তো প্রায় ৪৫ লক্ষ বছর পূর্বে আর্ডিপিথেকাস ড়্যামিডাসরা বিবর্তিত হয়েছে অস্ট্রালোপিথেকাস আনামেনসিস প্রজাতিতে, তারপর আনামেনসিস থেকে আফারেনসিস হয়ে হোমো হ্যাবিলিসের জন্ম হয়েছে যে হ্যাবিলিসরা জন্ম দিয়েছে হোমো ইরেক্টাস প্রজাতির, এবং এই ইরেক্টরাই পরবর্তী সব হোমো প্রজাতির জনক। এমনটি ভেবে নেয়ার কারণ ছিল একই সময়ে হোমো গণের একাধিক প্রজাতির ফসিলের নিশ্চিত প্রমাণ না পাওয়া। অবশেষে ১৯৭২ সালে কেনিয়ার টুরকানা হ্রদের পূর্ব উপকূলের কুবি ফোরা নামক স্থানে প্রায় ১৯ লক্ষ বছরের পুরনো একটি প্রজাতির ফসিল পাওয়া যায় পরবর্তীতে যার নাম হয় হোমো রুডলফেনসিস। কিন্তু এ নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়ে গিয়েছিল। ২০১২ সালে নতুন যে তিনটি ফসিল নিয়ে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হল তাদেরকেও রুডলফেনসিস প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে ১৯৭২ সালের আবিষ্কারটি অনেকটাই সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
এই আবিষ্কার সত্য হলে বলতে হবে আনুমানিক ১৮ লক্ষ বছর পূর্বে আফ্রিকাতে হোমো গণের তিনটি প্রজাতি একই সাথে বসবাস করছিল: হ্যাবিলিস, ইরেক্টাস এবং রুডলফেনসিস। তাই রৈখিক বিবর্তন অর্থাৎ অস্ট্রালোপিথেকাস থেকে হ্যাবিলিস এবং তারপর ইরেক্টাস- এই ধারণাটি আর আগের মত গ্রহণযোগ্য থাকছে না। বরং দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন পথ ধরে একাধিক হোমো প্রজাতির জন্ম হয়েছিল যাদের মধ্যে কেবল একটিই, অর্থাৎ আমরা টিকে থাকতে পেরেছি, বাকিরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। রৈখিকভাবে এক প্রজাতি থেকে আরেক প্রজাতির বিবর্তনের পরিবর্তে তাই বিজ্ঞানীরা এখন সমান্তরালভাবে একাধিক প্রজাতির উৎপত্তির ধারণার দিকে ঝুঁকে যেতে পারেন। এজন্যই বিবিসি-র সংবাদে বলা হয়েছে লিনিয়ার এভল্যুশনের বিরুদ্ধে যেসব প্রমাণ ছিল এই আবিষ্কারের মাধ্যমে তার সাথে আরেকটি যোগ হল। কিন্তু প্রথম আলোর উপর্যুক্ত বাক্যটি পড়লে মনে হয়, আদিম যুগের প্রাইমেটদের থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে যে মানুষের উৎপত্তি ঘটেছে এটাই বোধহয় প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। এটা নিয়ে সাধারণ্যে কম ত্যানা প্যাঁচানো হয়নি। বিজ্ঞানীরা বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, বিবর্তন যে একটা বাস্তবতা তা নিয়ে চুল পরিমাণ সন্দেহও নেই এবং কোন বিতর্কও নেই, সেই বিবর্তন কিভাবে ঘটেছে তা নিয়েও বর্তমানে কার্যকরী বেশ কিছু তত্ত্ব আছে; কিন্তু কোন তত্ত্ব বেশি উপযোগী, কোন প্রজাতি থেকে কোন প্রজাতির বিবর্তন ঘটেছে, কোন প্রজাতির জন্মের ক্ষেত্রে প্রকৃতির কোন পরিবর্তনটি বেশি কাজ করেছে কেবল এমন কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্ক আছে। কিন্তু কার কথা কে শোনে, বিতর্ক আছে এটা শোনার পর চোখ-কান বন্ধ করে অনেকেই গলাবাজি শুরু করে দেন, ঠিক যেমন প্রথম আলোর সংবাদের কেবল কয়েকটা বাক্য পড়ে অনেকে মন্তব্যের বন্যা বইয়ে দিতে শুরু করেছিলেন।
প্রথম আলোর সংবাদটি আরেকটু সতর্কভাবে লিখলেই এমন ভুল বোঝার আর কোন অবকাশ থাকতো না। চলুন ঐ একটি বাক্য কিছুটা কাটছাটের চেষ্টা করা যাক। প্রথমত, আদিম যুগের বানরের সরাসরি বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষ এসেছে- এই অংশটা অনেককে ভুল পথে নিয়ে যেতে পারে। কথা হচ্ছে আদিম যুগের প্রাইমেটদের বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের জন্ম হয়েছে। সেই প্রাইমেট বলতে বানর ছাড়াও আরও অনেককে বোঝায়। বর্তমানের সকল বানর, বেবুন, গরিলা, শিম্পাঞ্জি, মানুষ ইত্যাদি অনেক প্রজাতি প্রাইমেট বর্গের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আদিম যুগের প্রাইমেট বলতে এদের কাউকেই বোঝানো হচ্ছে না। বর্তমানের সকল প্রাইমেটের একটা সাধারণ পূর্বপুরুষ ছিল যা থেকে অনেক সময়ের বিবর্তনে বর্তমানের প্রজাতিগুলোর জন্ম হয়েছে। বানর তেমনি একটি প্রজাতি। গাছে চড়ে বলেই যাকে তাকে বানর বলে দেয়ার ধৃষ্ঠতা আমাদের দেখানো উচিত না। বানর বলতে জীববিজ্ঞানে একটি বিশেষ প্রাণীকে বোঝানো হয়। তাই বলতে হবে, বর্তমানের বানর, গরিলা, শিম্পাঞ্জি, মানুষ ইত্যাদি অনেকে একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে, কিন্তু একজন মোটেই আরেকজন থেকে বিবর্তিত হয়নি। বানর থেকে মানুষ এসেছে না বলে প্রথম আলো আদিম যুগের বানর থেকে মানুষ এসেছে বলে কিছুটা লাইনে থাকতে চেয়েছিল, কিন্তু সেটাও পুরোপুরি ঠিক নয়, বলতে হবে আদিম যুগের প্রাইমেট থেকে মানুষ এসেছে। দ্বিতীয়ত, প্রথম যুগের প্রাইমেট থেকে মানুষের বিবর্তন সরলরৈখিকভাবে ঘটেছে নাকি সমান্তরালভাবে অনেকগুলো শাখায় ঘটেছে সে সম্পর্কে ২০১২ সালের এই আবিষ্কার কিছুই বলতে পারে না। এটা বলতে পারে প্রাইমেটদের একটি ছোট্ট অংশের বিবর্তনের ইতিহাস সম্পর্কে। অস্ট্রালোপিথেকাস গণ থেকে হোমো গণের উৎপত্তি সরলরেখায় ঘটেছে নাকি একইসাথে হোমো গণের একাধিক প্রজাতির উৎপত্তি ঘটেছে কেবল সেটুকুই এই আবিষ্কারের আলোচ্য বিষয়। এজন্যই খেয়াল করলে দেখা যাবে, বিবিসি বলেছে আদিম প্রাইমেট থেকে মানুষের সরলরৈখিক (লিনিয়ার) বিবর্তনের বিরুদ্ধে যেসব প্রমাণ আছে এই আবিষ্কার তার সাথে আরেকটি নতুন প্রমাণ যোগ করল কেবল। এই আবিষ্কার একা কিন্তু রৈখিক বিবর্তনের পুরো ইতিহাস সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারে না। এটাই প্রথম আলোর এক ভুল, আরেক ভুল হচ্ছে লিনিয়ারের বাংলা করা হয়েছে “সরাসরি” যা মানুষকে বিপথে চালিত করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। সরাসরি শব্দটি কিছুই বোঝাতে পারে না। সার্বিকভাবে এই বাক্যটি তাই প্রথমে মানুষকে বিবর্তন সম্পর্কে ভুল ধারণা দেয়া, এবং তারপর সেই ভুল ধারণাকে আবার ভুল প্রমাণের চেষ্টা করে। প্রথমে বলা হয় প্রাচীন বানরের বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের জন্ম হয়েছে বলে একটা ধারণা প্রচলিত আছে, তারপর বলা হয় সেই ধারণা নাকি বিজ্ঞানীরা ভুল প্রমাণ করতে চলেছেন। আগাগোড়াই বিভ্রান্তিকর।
বিভ্রান্তিতে হারিয়ে না গিয়ে আমরা একটু গভীর আলোচনায় প্রবেশ করি, দেখার চেষ্টা করি রুডলফেনসিস প্রজাতিটি প্রথম কবে আবিষ্কৃত হয়েছিল, কেন তাদেরকে আলাদা প্রজাতির মর্যাদা দিতেই হল এবং ২০১২ সালের নতুন আবিষ্কারগুলো কিভাবে তাদেরকে আরও শক্ত ভিত্তি দিল। নিচের ছবিটা দেখলে প্রেক্ষাপটটা বোঝা যাবে। ছবিতে গত প্রায় ৪৫ লক্ষ বছরে মানুষের পূর্বপুরুষদের যত ফসিল পাওয়া গেছে তাদের দেখানো হয়েছে, কোন প্রজাতি কতদিন জীবিত ছিল তাও বোঝা যাচ্ছে ছবিটি থেকে। ৪০ লক্ষ বছরেরও আগে হয়তোবা আর্ডিপিথেকাস ড়্যামিডাস থেকে অস্ট্রালোপিথেকাস আনামেনসিস প্রজাতির জন্ম হয়েছিল। দুটো প্রজাতিকে ছবিতে ডট রেখা দিয়ে যুক্ত করা হয়েছে যার অর্থ- তাদের সম্পর্ক পুরোপুরি প্রমাণিত নয়, এজন্যই হয়তো বললাম। যাহোক দেখা যাচ্ছে অস্ট্রালোপিথেসাইনদের থেকে আদিম হোমোদের জন্ম প্রায় ২৪ লক্ষ বছর পূর্বেই হয়ে যাওয়ার কথা। হোমো গণের প্রথম সদস্যদের থেকে হোমো হ্যাবিলিস এবং হ্যাবিলিসদের থেকে এরগ্যাস্টার প্রজাতির বিবর্তন হয়ে থাকতে পারে। উল্লেখ্য, এরগ্যাস্টার এবং ইরেক্টাস আসলে একই প্রজাতি, আফ্রিকার ইরেক্টদেরকে অনেকে এরগ্যাস্ট বলেন, আমরা সবাইকেই ইরেক্ট বলব। ছবিতে আরও দেখা যাচ্ছে গোমো রুডলফেনসিস প্রজাতিটি একেবারে নিঃসঙ্গ, তার সাথে কোন ধরণের রেখা দিয়েই অন্য কোন প্রজাতি যুক্ত করা হয়নি। বোঝাই যাচ্ছে এদের নিয়ে গবেষণা খুব কম হয়েছে, কারণ এদের ফসিল পাওয়া গেছে খুবই কম।
রুডলফেনসিস আবিষ্কারের মাধ্যমে এই ছবিতে একটা সমান্তরাল রেখা টানার সুযোগ তৈরি হয়েছে, আগেই বলেছি, ১৯৭২ সালে। ঘটনাস্থল কেনিয়ার উত্তরাঞ্চলের একটি হ্রদ যার বর্তমান নাম টুরকানা। তখন অবশ্য নাম আলাদা ছিল। ১৮৮৮ সালে হাঙ্গেরি এবং অস্ট্রিয়ার দু’জন অভিযাত্রী পূর্ব আফ্রিকায় অভিযান শেষে হ্রদটি খুঁজে পান। সেটাই ছিল ইউরোপের কারও প্রথম টুরকানা দর্শন। তখনকার অনেক অভিযাত্রীর মতো তারাও স্থানীয়দেরে তোয়াক্কা না করে হ্রদটির নাম রেখে ফেলেন অস্ট্রিয়ার রাজা রুডলফের সম্মানে। ১৯৭২ সালে হ্রদের পূর্ব উপকূলের কুবি ফোরা-তে যখন নতুন একটি হোমিনিড প্রজাতির করোটিকা আবিষ্কৃত হয় তখনও একে রুডলফ হ্রদই ডাকা হচ্ছিল। আবিষ্কার করেছিলেন কেনিয়ার জীবাশ্মবিদ Bernard Ngeneo, যিনি প্রখ্যাত জীবাশ্মবিদ রিচার্ড লিকির নেতৃত্বে পরিচালিত একটি দলের সদস্য ছিলেন। সেটি ছিল একটি অদ্ভুত প্রজাতির মাথার খুলি অর্থাৎ করোটিকার জীবাশ্ম, সংরক্ষণের জন্য যার নাম রাখা হয় KNM-ER 1470, আমরা সংক্ষেপে শুধু ১৪৭০ বলে ডাকব। রিচার্ড লিকির বাবা লুইস লিকি মৃত্যুর মাত্র কয়েক দিন আগে ফসিলটি দেখেছিলেন, অনেক পুরনো ভেবে তিনি একে ডেকেছিলেন অনির্ণীত হোমো প্রজাতি। কিন্তু তিনি জেনে যেতে পারেননি যে ফসিলটি তার ধারণার তুলনায় অনেক নবীন, ১৯৭২ সালেরই ১লা অক্টোবর তিনি মারা যান। ওদিকে রিচার্ডের স্ত্রী মিভ লিকি ফসিলটির মস্তিষ্কের ধারণক্ষমতা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে সমর্থ হন, যার পরিমাণ পাওয়া যায় ৭৭৫ ঘনসেন্টিমিটার। এতোক্ষণে নিশ্চয়ই লিকি পরিবারের বংশীয় সংস্কৃতি বুঝতে বাকি নেই। লুইস লিকির ব্রিটিশ বাবা-মা কেনিয়াতে খ্রিস্টান মিশনারি হিসেবে কাজ করতেন। আফ্রিকার প্রাগৈতিহাসিক হাওয়াই হয়তো লুইসের মনে জীবাশ্ম আবিষ্কারের নেশা চাপিয়ে দিয়েছিল। ডারউইনের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসরণ করে তিনি আফ্রিকাতে মানুষের ভিত্তি প্রমাণের জন্য জীবন উৎসর্গ করেন, তার জিনগত উত্তরসূরীরাও তার চেতনা ধরে রাখে। টুরকানা বেসিনের প্রায় সব আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেয়া যায় লিকি পরিবারকে, ২০১২ সালের আবিষ্কারও তার ব্যতিক্রম নয়।
জীবাশ্মটি পাওয়া গিয়েছিল প্রাগৈতিহাসিক অগ্ন্যুৎপাতের কারণে সৃষ্ট একটি চুনময় পাথরের স্তরের ঠিক নিচে, তার মানে স্তরটি যত পুরনো জীবাশ্মের বয়স হবে তার খুব কাছাকাছি। এভাবেই ১৪৭০-এর বয়স পাওয়া যায় প্রায় ১৯ লক্ষ বছর। আরও সঠিক করে বললে ১৮ থেকে ১৯ লক্ষ বছরের মধ্যে। বয়স দেখে প্রথমে ভাবা হয়েছিল এটা হোমো হ্যাবিলিস হতে পারে। হোমো হ্যাবিলিসের একটি বৈশিষ্ট্যমূলক ফসিল ১৮১৩-এর সাথে এটাকে তুলনা করা হয়েছিল। দেখা গেল ১৪৭০-এর মুখমণ্ডল ও মস্তিষ্কের আকার তুলনামূলকভাবে বড়, ১৮১৩-র মস্তিষ্কের আকার মাত্র ৫০০ ঘনসেন্টিমিটার। অনেকে ব্যাখ্যা দিলেন, হয়তো ১৪৭০ পুরুষ হ্যাবিলিস এবং ১৮১৩ নারী, এবং এখানকার হ্যাবিলিসদের মধ্যে হয়তো নারী-পুরুষের ব্যবধান অনেক বেশি। তবে পার্থক্য আরও ছিল। ১৪৭০-এর দাঁতের গোড়া দেখে বোঝা গিয়েছিল তাদের দাঁত অনেক বড় এবং পেষণদন্ত প্রশস্ত, ওদিকে ১৮১৩-র উপরের চোয়াল অপেক্ষাকৃত ছোট এবং দাঁত অপেক্ষাকৃত আধুনিক। উপরন্তু ১৪৭০-এর উপরের চোয়াল বর্গাকার, কিন্তু ১৮১৩-র উপরের চোয়াল গোলাকার; ১৪৭০-এর ভুরুর হাড় অতো উঁচু নয়, কিন্তু ১৮১৩-র ক্ষেত্রে অনেক উঁচু এবং প্রকট। এতো সব পার্থক্যের কারণেই ১৪৭০ কে হোমো হ্যাবিলিস প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত করা গেল না। ১৯৭৮ সালে রুশ নৃবিজ্ঞানী ভালেরি পাভলোভিচ আলেক্সেইভ একে পিথেকানথ্রোপাস রুডলফেনসিস নাম দেন, তবে বার্নার্ড উড পরবর্তীতে তাকে হোমো গণের মধ্যে নিয়ে আসেন, নতুন নাম হয় হোমো রুডলফেনসিস। দেখা গেল ফাঁকতালে কেবল রাজার ঘরে জন্ম হওয়ার কারণে অস্ট্রিয়ার রাজা রুডলফের নামে একটা মানব প্রজাতির নাম হয়ে গেল।
রাজার নামে নাম হলেও রুডলফেনসিসকে নিয়ে সমস্যা থেকেই গেল। সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল করোটিকার নিচের কোন অংশের জীবাশ্মই নেই। তাই মস্তিষ্কের এতো বড় আকারের কারণ ঠিক কি সেটা নিয়ে গবেষণার কোন সুযোগ ছিল না। আগেই বলেছি অনেকে দাবী করছিলেন, এরা হোমো হ্যাবিলিস প্রজাতির পুরুষ, দেহের আকার অনেক বড় হওয়ার কারণে এদের মস্তিষ্কের আকারও স্বভাবতই বড়। করোটিকার নিচের কোন হাড় খুঁজে না পেলে এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া প্রায় অসম্ভব। বিতর্কে যারা রুডলফেনসিসের পক্ষে ছিলেন তাদের জন্যই সুখবর বয়ে নিয়ে এল ২০১২ সালের ৯ই আগস্টের নেচার জার্নাল। এদিন মিভ লিকি বিশ্ববাসীকে জানালেন তারা এমন তিনটি নতুন ফসিল খুঁজে পেয়েছেন যাদের রুডলফেনসিস প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। এখানেও যথারীতি লিকি পরিবারের জয়জয়কার, গবেষণাপত্রের লেখকদের নামগুলোর প্রথমটি মা মিভ লিকি-র এবং শেষটি কন্যা লুঈস এন লিকি-র। লুঈসের নেতৃত্বে পরিচালিত দলটিই ফসিল তিনটি খুঁজে পেয়েছে, ১৯৭২ সালের ফসিলটি যে স্থানে পাওয়া গিয়েছিল সেখান থেকেই। এখানে আরেকটা বিষয় না বললেই নয়, হোমো হ্যাবিলিস প্রজাতির জীবাশ্মও আবিষ্কার করেছিল লিকি পরিবার- লুঈস এন লিকির দাদা-দাদী লুইস ও মেরি লিকি। বলা যায়, রুডলফেনসিস প্রজাতির নতুন ফসিল আবিষ্কারের মাধ্যমে লিকি পরিবারের তিন তিনটি প্রজন্মের অবদানে ধন্য হল জীবাশ্ম-নৃবিজ্ঞান।
[১৯৭২ সালের হোমো রুডলফেনসিস ফসিলের মাথার খুলির সাথে ২০১২ সালের একটি রুডলফেনসিস ফসিলের নিচের চোয়াল যুক্ত করা হয়েছে। © Photo by Fred Spoor]
নতুন ফসিলগুলোর একটির নাম দেয়া হয়েছে KNM-ER 62000 যা একটি কিশোরের মুখমণ্ডল। আকারে ১৪৭০-এর চেয়ে অনেক ছোট হলেও আকৃতি ও বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে দুটি ফসিল প্রায় একই রকম। এ থেকে প্রমাণিত হয় রুডলফেনসিস আসলেই একটি আলাদা প্রজাতি, হ্যাবিলিসের একটি বিশেষ প্রকরণ নয়। অন্য দুটি ফসিল নিচের চোয়ালের, ৬০০০০ নম্বরটি একটি পরিপূর্ণ ম্যান্ডিবল এবং ৬২০০৩ ম্যান্ডিবলের খণ্ডাংশ। উল্লেখ্য ম্যান্ডিবল নিম্ন চোয়ালের হাড়। দুটি চোয়ালের গঠন ও বৈশিষ্ট্যই ১৪৭০-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এমনকি তারা এতো সুন্দরভাবে একে অপরের সাথে মিলে যায় যে বিজ্ঞানীরা ১৪৭০-এর মাথার খুলি, যাতে উপরের চোয়ালও ছিল, তার সাথে নতুন ফসিলের নিম্ন চোয়াল জোড়া লাগিয়ে একটি পরিপূর্ণ মুখমণ্ডলের ফসিল পেয়েছেন। কিন্তু এরা আবার হ্যাবিলিসদের চোয়াল থেকে আলাদা, হ্যাবিলিসদের চোয়াল আরও ছোট এবং আয়তাকার। হ্যাবিলিস থেকে এদের আলাদা করা যাচ্ছিল না করোটিকার নিচের ফসিলের অভাবে। এই নতুন ফসিল তিনটি সেই সমস্যারই সমাধান করেছে, আধুনিক মানুষের ভবিষ্যৎ ইতিহাসে তাই রুডলফেনসিসদের একটা চিরস্থায়ী স্থান বোধহয় হয়েই গেল।
তবে সম্রাট রুডলফের বংশধরদের এখনও খুশীতে আত্মহারা হয়ে যাওয়ার সময় আসেনি। কারণ গবেষণাপত্রে মিভ লিকি আরেকটা বিষয়ের দিকেও দৃষ্টিপাত করেছেন। এখনও ১৪৭০, ৬২০০০, ৬২০০৩ ও ৬০০০০ ফসিল চারটিকে স্থায়ীভাবে রুডলফেনসিস ডাকার সময় আসেনি। কারণ তানজানিয়ার উত্তরাঞ্চলের ওলডুভাই গিরিসঙ্কটে পাওয়া আরেকটি ফসিল যার নাম OH 7, যেটা আবার হোমো হ্যাবিলিসের টাইপ স্পেসিমেন, অর্থাৎ ওএইচ৭ এর মাধ্যমেই হ্যাবিলিস প্রজাতিকে সংজ্ঞায়িত করা হয়। কিন্তু এই ফসিলটি খুবই বিকৃত বলে ঠিকভাবে পরীক্ষা করা যায়নি। ভবিষ্যতে যদি দেখা যায় নতুন আবিষ্কৃত ফসিলগুলো ওএইচ৭ এর মত তাহলে এদেরকেও হোমো হ্যাবিলিস নামে ডাকতে হবে, কারণ টাইপ স্পেসিমেনের নাম পরিবর্তন করে রুডলফেনসিস রাখা সম্ভব না। সেক্ষেত্রে বর্তমান রুডলফেনসিসের নাম হয়ে যাবে হোমো হ্যাবিলিস, আর বর্তমান হ্যাবিলিসদের জন্য তখন নতুন নাম খুঁজতে হবে। তেমনটা হলে হোমো গণের পুরো ইতিহাসটাই গুবলেট হয়ে যাবে, তাই সেটা না হওয়াই ভাল। কিন্তু হয়ে গেলে শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যার নিয়ম মেনে সম্রাট রুডলফকে জীবাশ্ম-নৃবিজ্ঞানের জগৎ থেকে বিদায় নিতেই হবে।
নতুন ফসিলগুলোর বয়স ১৭.৮ থেকে ১৯.৫ লক্ষ বছরের মধ্যে। এই বয়স মাথায় রেখে মানুষের পূর্বপুরুষদের আবিষ্কৃত ফসিলগুলোর রেখাচিত্রের দিকে আবার নজর দেয়া যাক। এখানে রুডলফেনসিসদের বক্সটাকে আরও দীর্ঘ করতে হবে, ডানে-বামে তা আরেকটু বিস্তৃত হবে। তারপরও এখন স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে ২০ লক্ষ বছর পূর্ব থেকে শুরু করে আফ্রিকাতে হোমো গণের দুটি প্রজাতি বাস করতো- হ্যাবিলিস ও রুডলফেনসিস। এরপর আনুমানিক ১৮.৯ লক্ষ বছর পূর্বে যোগ দেয় হোমো ইরেক্টাস বা এরগ্যাস্টার। এছাড়া দেখা যাচ্ছে অস্ট্রালোপিথেকাস গণের দুটি প্রজাতিও এ সময় জীবিত ছিল- বোইসেই ও রোবাস্টাস। তবে অস্ট্রালোপিথেকাস যেহেতু আরও প্রাচীন ধরণের সুতরাং বোইসেই ও রোবাস্টাস থেকে সরাসরি হোমো গণের উৎপত্তি ঘটার সম্ভাবনা খুব কম। মানব বিবর্তনের ইতিহাসে হোমো গণের গুরুত্ব খুবই বেশি, এবং সত্যি বলতে অস্ট্রালোপিথেকাস এবং আর্ডিপিথেকাসের তুলনায় হোমো নিয়ে গবেষণা কম হয়েছে কারণ তাদের পূর্ণাঙ্গ ফসিল পাওয়া যায়নি বললেই চলে। লিকি পরিবার হয়তো ব্যাপারটা খুব ভাল বুঝতে পেরেছে, হয়তোবা পরিবারটির সবাই তাদের সন্তানদেরকে ছোটবেলায় হোমো গণের বিশেষ মন্ত্র দীক্ষা দেয়।
লিকিদের কল্যাণে মানব বিবর্তনের ইতিহাসের অনেকটাই এখন আমাদের কাছে পরিষ্কার। তবে যেতে হবে আরও অনেক দূর। কারণ একেবারে সত্যি কথা বললে বলতে হয়, ফসিলের আলোকে মানব বিবর্তনের শতকরা ১ ভাগও হয়তো আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। যাত্রা সবে শুরু হয়েছে। ফসিল খুব বিরল হওয়ার কারণে যাত্রা কতদূর এগোবে তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব না। কিন্তু চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। রুডলফেনসিসদের এই নতুন আবিষ্কার ইতিমধ্যেই মানব বিবর্তন গবেষণায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- হ্যাবিলিস ও রুডলফেনসিস দুটোই কি চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে গেছে? কেবল ইরেক্টাসই টিকে থেকে আমাদের জন্ম দিয়েছে? ইরেক্টাসদের জন্ম কি হ্যাবিলিস বা রুডলফেনসিস থেকে হয়েছে? নাকি আমাদের বিবর্তনের ইতিহাসের গূঢ় তত্ত্ব বুঝতে হলে অপেক্ষা করতে হবে হোমো গণের আরও নতুন কোন প্রজাতি আবিষ্কার পর্যন্ত? আশাকরি লিকি পরিবার আমাদের হতাশ করবে না। করার কথাও না, কারণ তারা কাজ করছে বিবর্তনের পথে অনেক আগে অর্জিত একটি বৈশিষ্ট্যের তাড়নায়- এক প্রজন্মের শিক্ষা অন্য প্রজন্মকে শিখিয়ে যাওয়া। মহাবিশ্বের জড় চেতনা হয়তো অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল এমন একটা সময়ের জন্য যখন কেবল রাসায়নিক পদার্থ ও স্বজ্ঞা নয় বরং জ্ঞানকেও বংশ পরম্পরায় ছড়িয়ে দেয়া যাবে। কারণ হয়তো সে অনুভব করতে পারে, মহা বিস্ফোরণ বা অতিনবতারা বিস্ফোরণের মত হাজারটা দানবীয় কর্ম সম্পাদন করেও লাভ নেই যদি না সে কোন ছোট্ট ভঙ্গুর প্রাণীর মধ্যে হলেও পরম্পরার বীজ বুনে দিতে পারে। সক্রেটিস একটি গ্রিক প্রবাদ খুব ব্যবহার করতেন- “নিজেকে জান”, এটা মহাবিশ্বের চেয়ে ভালভাবে আর কেউ পালন করছে বলে আমার জানা নেই। মহাবিশ্বের এই মহান তীর্থযাত্রায় যখন প্রথম আলোর সেই মন্তব্যকারীদের মত ব্যক্তিরা অনধিকার প্রবেশ করে তখন কার না মেজাজ খারাপ হয় বলুন।
তথ্যসূত্র:
১। New fossils from Koobi Fora in northern Kenya confirm taxonomic diversity in early Homo, Nature
২। New human species identified from Kenya fossils, BBC
৩। Homo rudolfensis, Smithsonian Institute’s Human Origins Program
৪। Multiple Species of Early Homo Lived in Africa, Smithsonian.com blog
৫। নতুন প্রজাতির মানুষ! (ভিডিও), প্রথম আলো
@তারেক অণু,তারেক অণু আস্ত একটা ফ্লাইং সসার। এত সুন্দর লেখেন, এত দুনিয়াদারি ঘুরেন–হিংসে হয়। আপনার সুন্দর লেখার অপেক্ষায় রইলাম। সচলের চাইতে মুক্তমনায় আরো ভালো লেখা পাবো আশাকরি। ভালো থাকবেন।
চমৎকার লিখেছেন, ধন্যবাদ। আশা করি আরো বিশদ জানা যাবে শীঘ্রই।
আর রিপোর্টারের কথা ছাড়ান দেন, ব্যাটা না জানলে চুপ থাক, এত কথা বলার দরকার কি!
@তারেক অণু,
মুক্তমনায় স্বাগতম, তারেক অণু! আপনার লেখার জন্য অপেক্ষা শুরু হল। 🙂
@তারেক অণু, মুক্তমনায় স্বাগতম। আপনার ভ্রমণকাহিনিগুলো পড়লে বুঝতে পারি এখনো কত ‘ঘোরা’ বাকি! আশা করি অচিরেই মুক্তমনায় আপনার আরও এক্সটিক ভ্রমণ কাহিনিগুলো পড়ে আরও বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলতে পারবো :-)।
@তারেক অণু,
মুক্তমনায় আপনাকে দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগলো,মূলত আপনার লেখা পড়তেই সচলে যাই মাঝে মাঝে। মুক্তমনায় আপনার লেখা দেখতে পেলে খুবই খুশি হবো। (F) (F)
আপনি আপনার লেখায় বলেছেন যে বিবর্তনবাদ নাকি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমানিত এবং এতে চুল পরিমান সন্দেহ নেই। এই কথা আপনি কোথায় পেলেন? বহু নামিদামী বিজ্ঞানী আছেন যাঁরা বিবর্তনবাদ বিশ্বাস করেন না। আর এর অকাট্য প্রমাণ নেই বলেই এটাকে “Theory of Evolution” বলা হয়, “Fact of Evolution” বলা হয় না। “Theory” আর “Fact” এর পার্থক্য নিশ্চই বোঝেন। বিবর্তনবাদ মতবাদের পক্ষে যেমন অনেক যুক্তি দেখানো সম্ভব, তেমনি বিবর্তনবাদের বিপক্ষেও অনেক যুক্তি দেখানো সম্ভব। সুতরাং এটাকে সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বাস করা যায় এমন কোন প্রমাণ নেই।
@Human, বিবর্তন কোন বিশ্বাসের জিনিস না, ঠিক যেমন বিশ্বাসের জিনিস না যে সূর্য একটি নক্ষত্র বা পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্র। আমরা সাত বিলিয়ন সূর্যকে ঈশ্বর বলে যতই বন্দনা করি না কেন এটি একটি মাঝারি আকারের নক্ষত্র আবার আমরা সবাই যতই বিশ্বাস স্থাপন করি বা না করি পৃথিবী এক মহাবিশ্বের কেন্দ্র নয়।
বিবর্তন ঘটছে , আমরা মানুষেরা বিশ্বাস করি বা না করি। এটি যে ঘটছে তার পক্ষে আমি আপনাকে কয়েক মিলিয়ন প্রমাণ দেখাতে পারব, কিন্তু আপনি আমাদের একটা উদাহরণ দেখান যার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে বিবর্তন ঘটছে না !
@Human,
আমার মনে হয় লেখক এ ব্যাপারটা ভালই বোঝেন। আপনিই সম্ভবত: ঘোলা পানিতে আছেন।
সহজ করে বলি। গ্র্যাভিটি একটা ফ্যাক্ট। সেজন্যই গাছ থেকে আপেল মাটিতে পড়ে। এখন নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব দিয়ে আমরা ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করি। ঠিক তেমনি বিবর্তনও একটা ফ্যাক্ট। মাইক্রোবিবর্তন এবং ম্যাক্রোবিবর্তনের হাজারো প্রমাণ আমরা ফসিল-রেকর্ড, জেনেটিক্স, জিনোমিক্স, ডিএনএ রেকর্ড এবং তুলনামূলক বংশগতীয় বিশ্লেষণ থেকে সন্দেহাতীতভাবে বিবর্তনের একই সাক্ষ্যপ্রমাণ আমরা পাই যে বিবর্তন একটি ফ্যাক্ট। গাছ থেকে আপেল পড়ার মতই বিবর্তন ফ্যাক্ট বলেই আমাজনে সার্চ দিলে ‘The Fact of Evolution’ নামে বই পাবেন (কিন্তু জোকার নায়েকের লেকচার শুনলে অবশ্য পাবেন না) –
এখন নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ তত্ত্ব (কিংবা আরো বড় স্কেলে আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব) দিয়ে যেমন গ্র্যাভিটির মত ফ্যাক্টকে ব্যাখ্যা করা হয়, ঠিক তেমনি (প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে ঘটা) ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব ব্যাখ্যা করে বিবর্তনগত ফ্যাক্টকে। দুইটা দুই জিনিস। থিউরি এক্সপ্লেইন্স ফ্যাক্ট। বাট নট নেসেসারিলি থিউরি বিকামস এ ফ্যাক্ট। আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব কখনই ‘ফ্যাক্ট’ হয়ে যাবে না, কিন্তু সেটা মাধ্যাকর্ষণকে ব্যাখ্যা করতে পারে সফলভাবেই।
তাও না বুঝলে এই লেখাটা দেখতে পারেন।
এখানে দেখুন, এবং এখানে।
আপনি এক কাজ করতে পারেন। আমাদের বিবর্তন আর্কাইভটা ভাল মত পড়ে নিতে পারেন। আপনার সব অভিযোগেরই উত্তর দেয়া আছে ওখানে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
@Human, ‘মানুষ’ ভাই, একই প্যাচাল আর কত ! এরকম প্রশ্নের উত্তর যে কত হাজারবার দেওয়া হয়েছে মুক্তমনায় সেটা তো আর হিসেব করে বের করা যাবে না। দেখেন মানুষতো ঠেকেই শেখে, আমরাও শিখেছি। এ ধরণের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার জন্য (এবং নিজেদেরকে বোর্ডমজনিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য) আপনাদের জন্য মুক্তমনায় একটা আস্ত বিবর্তনের আর্কাইভ তৈরি করা হয়েছে। একটা অনুরোধ করি, এত কষ্ট করে এই কঠিন কঠিন ‘উঁচু ক্লাশের’ লেখাগুলো পড়ার আগে ১০০ লেভেলের এই আর্কাইভটা একবার পড়ে ফেলুন, তারপর যদি কোন নির্দিষ্ট প্রশ্ন থাকে করুন। গ্যারান্টি দিতে পারি যে, এখানে সেগুলোর উত্তর দেওয়ার লোকের অভাব হবে না।
@Human, পুরনো কথাই আবার বলছি, বিবর্তন কিভাবে কাজ করে সেটা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে এবং হবে, এ নিয়ে যথারীতি বিতর্ক আছেই। কিন্তু বিবর্তন যে ঘটেছে এবং ঘটছে এই ফ্যাক্ট নিয়ে জীববিজ্ঞানে কোন বিতর্ক নেই। নামীদামী বিজ্ঞানী বিবর্তন বিশ্বাস না করলে বিবর্তনের কিছু আসে যায় না, এটা ব্যক্তি বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল নয়। বিবর্তনের সত্যতার সাক্ষর দেয় বৈজ্ঞানিক জার্নালগুলো, সেগুলোতে চোখ বুলিয়ে দয়া করে নিজের জানার পরিমাণটা বাড়িয়ে নিন।
@Human, [img]http://3.bp.blogspot.com/-ZFsZI_3N38A/T7-6tDwmO2I/AAAAAAAAGu8/tPT2bNvSaXU/s1600/participation-is-mandatory-atheism-gnu-new-funny-lol-positive-strong-agnosticism-theism-religion.jpg[/img]
প্রথম আলোর লেখার প্রথম লাইন দেখে ধাক্কা খেয়েছিলাম,ভাবলাম বন্যা আপুর দিন মনে হয় ফুরালো :)) ,কিন্তু বিবিসিতে ঢুকে দেখি কাহিনী উল্টা। লেখায় প্লাস (Y) ,তবে শিরোনামে মাইনাস ।
অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লিখছ শিক্ষানবিস। আমার মনে হয় না তুমি ছাড়া মানব বিবর্তন নিয়ে এত ডিটেল লেভেলে কেউ বাংলায় লিখছে। তুমি যে কত বড় কাজ করে চলেছ হয়তো তুমিও জানো না।
কিছু সমালোচনা আছে লেখাটার যদিও। প্রথমত শিরোনাম। এই ধরনের শিরোনামের লেখা চইলতো ন! 🙂 এই শিরোনাম দেখেই হয়তো অর্ধেক লোক পড়া ছেড়ে দেবে।
কিছু বাক্যের গঠন সরল হতে পারত। বোধগম্যতা বাড়াতে বাক্য ছোট ছোট করে ভেঙে দিলে ভাল হয়। যেমন এটা –
বোল্ড করা অংশটা বোধয় হয় সঠিকভাবে লেখা হয়নি। আরেকটু সরল করে ভেঙ্গে লিখতে পার।
তারপর…
টুরকানা বেসিন জিনিসটা কি? এটা সম্বন্ধে কি আগে বলা হয়েছে? 🙂
এইটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে এখন কথা হচ্ছে তোমার প্রাণ-বৃক্ষের ছবিটা কীরকম হবে?
[img]http://biborton.wikispaces.com/file/view/family_tree.png/288585042/family_tree.png[/img]
এই ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না। এটা কেন হতে হবে?
আরেকটা ব্যাপারে কনফিউশন আছে। প্রাণ-বৃক্ষে প্যারানথ্রোপাস বলে আরেকটা দল (গণ) ছিল না? প্যারানথ্রোপাস রোবাস্টাস, প্যারানথ্রোপাস বইসেই, আর প্যারানথ্রোপাস ইথিওপিকাস … এইগুলা কী সব! এদের নিয়ে তো এবারে কিছু বলা হল না। যতদূর জানি এরা ১২ থেকে ২৭ লক্ষ বছর আগের পরিসীমায় থাকার কথা। এদের হাওয়া করে দেওয়ার কারণ কি? 🙂
দুঃখিত অভিজিৎদা, মন্তব্যের জবাব দিতে দেরি হয়ে গেল। আমি বাসা বদলানো নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, আর ভিডিও করতে খুব পাচ্ছিলাম দেখে এদিকে খুব একটা সময় দেয়া হয়নি। এখন মানব বিবর্তনের পরের লেখাটা লিখতে বসেছি।
– বাক্যের আরও সরলীকরণের চেষ্টা করব
– আর ভবিষ্যতে অবশ্যই এমন শিরোনাম দেব না
– টুরকানা বেসিন সম্পর্কে কিছু কথা যোগ করব
– সম্ভবত প্যারানথ্রোপাস গণকে উধাও করে এখানে অস্ট্রালোপিথেকাসের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমান ছবিটা সায়েন্টিফিক অ্যামেরিকানের মাত্র ২ মাস আগের সংখ্যা থেকে নেয়া, ওদের নিবন্ধটা পড়ে দেখব কাহিনী আসলেই এমন কিনা।
– আর নামকরণের ব্যাপারে: রুডলফেনসিসের তিনটা নতুন ফসিল যদি হ্যাবিলিসের টাইপ স্পেসিমেনের সাথে মিলে যায় তাহলে রুডলফেনসিসকেও হ্যাবিলিসের মধ্যে ফেলতে হবে। কিন্তু অন্যান্য ফসিল থেকে আমরা জানি হ্যাবিলিস আলাদা। টাইপ স্পেসিমেনের নাম পরিবর্তন করা যায় না। তাই তখন রুডলফেনসিসকে হ্যাবিলিস ডাকা হবে, হ্যাবিলিসের টাইপ স্পেসিমেনের নাম পরিবর্তন করে রুডলফেনসিস করা হবে না। সেক্ষেত্রে হ্যাবিলিসের অন্যান্য ফসিলগুলোর জন্য একটা আলাদা নাম রাখতে হবে। স্মিথসোনিয়ানের ব্লগে আমি এমনটাই পড়লাম। আরও চেক করতে হবে।
চমৎকার লেখা ! ধন্যবাদ শিক্ষানবিসকে ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটির জন্য…
[img]http://www.smbc-comics.com/comics/20090830.gif[/img]
[img]http://www.phdcomics.com/comics/archive/phd051809s.gif[/img]
@কৌস্তুভ,
:lotpot:
লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
আসলে বিবর্তনের মৌলিক প্রিন্সিপাল মানলে, কোন বিবর্তনই রৈখিক হতে পা রে না। একাধিক শাখা প্রশাখার সৃষ্টি এবং তাদের মৃত্যু হইয়ে একটি শাখা এগোবে এটাই স্বাভাবিক। নিচের ডকুমেন্টারিটা র বাংলা করলেই সবাই বুঝতে পারত কেন একাধিক মানব সাদৃশ প্রজাতির উৎপত্তি বিবর্তনের সমর্থনেই প্রমান। রৈখিক চিত্রটা এসেছিল কিছু বৃটিশ বিজ্ঞানীদের ফসিলের নামে হাত সাফাই এর জন্য।
এই ডকুটা দেখলে, আশাকরি বিবর্তন বিরোধিরা মানব বিবর্তনের গবেষণার ইতিহাস নিয়ে ভাল করে জানতে পারবে।
http://movies.netflix.com/WiMovie/Becoming_Human_Nova/70243172?locale=en-US
আমার মনে হয় না এটা জানা এমন কিছু কঠিন-আমার ছবছরের ছেলেও এই ডকুমেন্টারীটা দেখার পর শিখেগেছে একাধিক হোমিনিড প্রজাতি কেন অতীতে ছিল।
মানুষের সবটাই হচ্ছে কন্ডিশনিং। বিবর্তন বোঝা খুবই সহজ যদি ছোট বেলায় ধর্মের চাপে ব্রেইন ড্যামেজ না হয়। আমার ছেলে এই বয়সেই দেখছি বিবর্তনের ওপর অজস্র ডকুমেন্টারি দেখে দেখে, বেসিক ব্যাপারটা ঠিকই বুঝছে। ফলে ও নিজের বুদ্ধিতেই শিখে গেছে, গড ইজ মেক বিলিফ স্টোরি ( না, আমি একবারো বলি নি বা চাপ দিই নি-বরং আমার ক্যাথোলিক প্রতিবেশীদের সৌজন্যে সে গড শব্দটার সাথেই বেশী পরিচিত। ) অর্থাৎ এই ছোট বয়সেই একজন যদি বিবর্তন বিজ্ঞানটা গল্পের ছলেও শেখে, সেও বুঝে যাবে ধর্ম হচ্ছে আষাঢ়ে গল্প।
নোভা এর বিবর্তন, ভূগোলের ডকুমেন্টারি গুলো শিশুদের জন্যেই তৈরী-এগুলোর যদি বাংলা ভয়েস জুরে দেশে দেখানো যেত, পরের প্রজন্মের অধিকাংশই নিশ্চিত ভাবেই ঈশ্বরকে বর্জন করত। ছোটবেলায় ধর্মের এবং ঈশ্বরের চাপে ব্রেইন ড্যামেজ না হয়ে যদি বৈজ্ঞানিক মনন তৈরী হয়, খুব সহজেই ভবিষয়তে এক ধর্মমুক্ত বিশ্বাস মুক্ত পৃথিবী সম্ভব।
এর জন্যে বাচ্চাদের মধ্যে বিজ্ঞানকে নোভার মতন ভিডিওর মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে হবে। এই সামার ভ্যাকেশনে আমি আমার ছেলের সাথে অনেকগুলো বিবর্তন, ভূগোল, ইঞ্জিনিয়ারিং এর ডকুমেন্টারী দেখলাম-এবং দেখলাম, কিছুদিন বাদে আমার পুত্র স্পাইডারম্যান কাটিয়ে এগুলোই সে বারবার করে দেখছে এবং বোঝার চেষ্টা করছে। কারন বোঝার ইচ্ছাটা আমার মনে হয় বিবর্তনজাত-নইলে মানুষের পক্ষে এককালে বেঁচে থাকা কঠিন হত। ছোটবেলাতে আমাদের কৌতুহলগুলো কাটিয়ে যেভাবে একজন মানুষকে হিন্দু, মুসলমান, ভারতীয় বাংলাদেশী ইত্যাদি ভাবে বড় করা হয় তা বিপজ্জ্বনক।
@বিপ্লব দা, আপনার লিংকে ক্লিক করার পর কী বলে দেখেন !
Sorry, Netflix is not available in your country… yet (এখানে বুড়ো আঙুল চোষার ইমো হবে ! )
গতকাল চায়ের টেবিলে এটা পড়েছিলাম। সত্যি বলছি, আপনার আর বন্যা আহমেদের লেখা পড়ে পড়ে সবকিছুই বিবর্তনের আলোকে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠা – এই আমি কিছুটা রাগান্বিত হয়ে পড়েছিলাম। ভাবছি, আজকে হয়তঃ আভিজিৎদার লেখায় এর সমাধান সূচক উত্তর আর প্রতিবাদ পাবো। ভাগ্য ভালো, আপনার হাত দিয়ে পেয়ে গেলাম।
”প্রথম আলো” খুব সুচারুভাবে এসব কাজ করে যাচ্ছে। আমার এক স্যার প্রায় ৭-৮ বছর আগে বলেছিলেন, এ পত্রিকাটি নাকি প্রগতির কথা বলে প্রগতির গতিকে রুদ্ধ করে দিচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া খুব দরকার। (F)
ঠিক!! প্রথমআলো তার পাঠকদেরকে খুব চতুরতার সাথে ম্যানিপুলেট করে। তবে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল,অনেক পাঠক তা ধরতে পারে,যদিও তারা সংখ্যায় কম। উদ্বেগের বিষয় হল,তাদের প্রচুর পাঠক। প্রথমআলো যদি তাদের বিশাল পাঠক গোষ্ঠীর দুই শতাংসকেও কোন একটি বিষয়ে ইচ্ছেমত প্রভাবিত করতে পারে তাহলেও সেটা সংখ্যায় কম না।
@শিক্ষানবিস, লেখাটির জন্য ধন্যবাদ। প্রথমআলোর ঐ রিপোর্টটা পড়ে সেদিন মনেহয়েছিল,রিপোর্টারটা হয় নেচার ম্যাগাজিনের লেখাটা বুঝেনি,অথবা বুঝলেও না বুঝার ভান করেছে, আর নিজের ধারনা মিশিয়ে একটা জগা খিচুরি টাইপ রিপোর্ট লিখেছে। ব্যাপারটা নিয়ে ওদের কমেন্ট সেকশনে লিখেছিলাম। প্রথমদিন কমেন্টটা গ্রহন করেছিল,পরেরদিন দেখলাম,কমেন্ট মুছে ফেলেছে। 😀 রিপোর্টারটা বোধহয় ক্ষেপছিল ওর বিরুদ্ধে লিখছিলাম বলে!! :-s
অন্তত মহাবিশ্বের যে হয় না সেটা বলতে পারি। তার কাছে হয়তো আপনার মেজাজ খারাপ করাও সমান অনধিকার/অধিকার প্রবেশ :))
@রূপম (ধ্রুব), মহাবিশ্বের সাইকো অ্যানালিসিস শুধু আপনার আর শিক্ষানবিসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা কেন, টলেমি, কোপার্নিকাস আর সেগানরেও ‘মহাবার্তা’ পাঠাইলাম, দেখি ওনারা কোন সাইড নেন! ওনাদের কাছে ক্লাসিফাইড ইনফরমেশন থাকার কথা …
বিবর্তন নিয়ে প্রথম আলোর রিপোর্ট টা পড়ে আমার মনে একটা সন্দেহ কাজ করছিল “ডাল মে কুচ কালা হে” আপার লেখাটা পড়ে সে সন্দেহ সত্যি হল।
রুডলফেনসিস ফসিলের মাথার খুলি নিয়ে সৃষ্ট ধুম্রজাল দূর করার আপনাকে অভিনন্দন। অবশ্য আপনার লেখা বরাবরি বিশ্লেষণ ধর্মী। জানার থাকে অনেক কিছু। (F)
প্রথম আলোর এই অশিক্ষিত গন্ডমূর্খ রিপোর্টিং এর একটা উত্তর দেওয়া খুব দরকার ছিল, ধন্যবাদ এই লেখায় সেটা ব্যাখ্যা করার জন্য। লেখাটার নামটা কী একটু খটমটে হয়ে গেল? নামটার মহত্ম বুঝলাম কীনা ঠিকমত তাও বুঝতারছিনা 🙁 ।
হ্যা নামটা খুব ফাইজলামি টাইপের হয়ে গেছে, এটা পরিবর্তন করতে হবে। কিছু কিছু পাচ্ছিলাম না পড়ে দিয়ে দিলাম একটা।