বিবর্তন প্রতিষ্ঠার পথে আরো একধাপ এগিয়ে গেলো বিজ্ঞান। প্রথমবারের মত বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে বিবর্তনের রসায়ন পর্যায়ের পরীক্ষা চালিয়েছেন এবং আবিষ্কার করেছেন যে, রাসায়নিক ভাবেই বিবর্তন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এই গবেষণার মাধ্যমে বোঝা গেলো মহাবিশ্বের অন্যকোথায় প্রাণের বিকাশ ঘটলে সেখানেও স্বাভাবিক রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় প্রাণের বংশবৃদ্ধি এবং বিবর্তন ঘটবে এবং তার জন্য পৃথিবীর অনুরূপ ডিএনএ বা আরএনএ-র দরকার হবে না। এই সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি অতিসম্প্রতি ‘সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছেন ক্যমব্রিজের MRC Laboratory of Molecular Biology এর গবেষক ফিলিপ হলিগার।
DNA এবং RNA হচ্ছে পৃথিবীতে জীবের বংশবিস্তার এবং শারীরবৃত্তীয় কাজের মূল ভিত্তি। জীবের বংশগতীয় যাবতীয় বৈশিষ্ট্য DNA তে কোডের মাধ্যমে লিপিবদ্ধ করা থাকে। DNA-এর এই কোড RNA এর মাধ্যমে বংশধরের বৈশিষ্ট্যে প্রকাশ পায়। যেকোন জীবের বংশধরের সূচনা হয় একটি মাত্র কোষ থেকে। সেই একটি মাত্র কোষে পিতা-মাতা উভয়ের অর্ধেকটা করে বৈশিষ্ট্য DNA এর মাধ্যমে মাঝে প্রবিষ্ট থাকে। সেই কোষটি ক্রমে বিভাজিত হয়ে একটি থেকে দুটিকোষ, দুটি থেকে চারটি কোষ এভাবে বৃদ্ধি পেতে পেতে একসময় পূর্ণাঙ্গ জীবের সৃষ্টি করে। DNA আসলে একটি বিশালাকার অনু এবং এই অনুটির গঠন মইয়ের মত। এই মইটি লম্বায় দুই তিন মিটার পর্যন্ত হতে পারে। তবে এই মইয়ের আকারটি সরলভাবে থাকে না, থাকে পাকানো অবস্থায়। নিচের ছবিটি এবং তিন মিনিটের ভিডিওটি দেখলে ব্যাপারটি পরিষ্কার হবে।
httpv://www.youtube.com/watch?v=E8NHcQesYl8&feature=BFa&list=PL40A6C1FF95C70259
মইয়ের ধাপগুলো তৈরি হয় কিছু নাইট্রোজেন বেজ (nitrogen base: এক ধরনের ক্ষারীয় পদার্থ) দ্বারা। একটি ধাপ তৈরি করতে মইয়ের কাঠামোর দুই পাশ থেকে দুটি ক্ষারীয় গ্রুপ এসে যুক্ত হয়। এই ক্ষারীয় গ্রুপগুলোর কম্বিনেশনই বৈশিষ্ট্যের কোড হিসেবে কাজ করে। আর মইয়ের দুইপাশের কাঠামো তৈরি হয় রাইবোজ (RNA) বা ডিঅক্সিরাইবোজ(DNA) নামক চিনির অনু দিয়ে। এই চিনির অনুগুলো ফসফেট গ্রুপের মাধ্যমে পরপর যুক্ত হয়ে মইয়ের দুপাশের কাঠামো তৈরি করে। নিচের ছবিটি দ্রষ্টব্য।
এখন, এই গবেষকবৃন্দ যা করেছেন তা হল তাঁরা চিনির অনুগুলোকে বদলে দিয়েছেন। এই কাজে তাঁরা ৬টি ভিন্ন ধরনের চিনির অনু ব্যবহার করেছেন এবং এই পরিবর্তিত DNA এর নাম দিয়েছেন XNA (Xenonucleic acid)।
এর পরের ধাপটি অত্যন্ত চমকপ্রদ। এই কৃত্রিম বা পরিবর্তিত নিউক্লিক এসিডটিকে প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে দিয়ে তাঁরা দেখতে পেলেন কৃত্রিম XNA টি কোষস্থিত অন্য DNA ও RNA এর সাথে স্বাভাবিক interaction ঘটাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এর পরপরই গবেষকবৃন্দ একটি অনন্যসাধারন ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন। শুরুর দিকে যদিও কৃত্রিম XNA টির সক্রিয়তা কম থাকে কিন্তু বংশবিস্তারের সাথে সাথে এর সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। এই সক্রিয়তা বৃদ্ধির কারন হল বিবর্তন। গবেষকবৃন্দ পর্যবেক্ষণ করেন যে, অনুলিপির মাধ্যমে সংখ্যাবৃদ্ধির সাথে সাথে কৃত্রিম XNA টি বিবর্তিত হতে থাকে যা তাকে কোষস্থিত অন্যান্য উপাদানের সাথে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে। এই ঘটনাটি প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘটা বিবর্তনের অনুরূপ।
এই গবেষণাটিকে টিকে চিকিৎসা শাস্ত্রে একটি গুরুত্বপূর্ন অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে রোগ নিরাময় আরো সহজ সাধ্য হবে বলে গবেষকগণ মনে করছেন। সেই সাথে বর্হি:জগতে প্রাণের উদ্ভব ও বিকাশের সম্ভবনাও এর মাধ্যমে আরো একটু বেড়ে গেল।
বিবর্তন প্রতিষ্ঠার কিছু বাকি আচ্ছে কি? যারা মানবে না, তারা “বিশেষ” বইয়ে লেখা না থাকলে মানবে না
@রাব্বানী, বিবর্তন তত্ত্ব আর সেটা থেকে তৈরি হওয়া ডগমা বিবর্তনবাদ এক জিনিস না। অনেকে আছেন না জেনেই বিবর্তন পড়ে যাচ্ছেন। আর সেটার তাত্ত্বিক দিক নিয়ে কথা বলছেন কিছু ঠিকমত না জেনেই শুধু পরীক্ষা পাশের জন্য। আবার বিবর্তনবাদ যেটা কিনা ১৯২০ থেকে ৮০ পর্যন্ত ছিল যেটা থেকে ইউজেনিক্স এর মত বিদ্যা এর উৎপত্তি ঘটেছিল।আজও অনেক মানুষ শুধু এর জন্যই বিবর্তন এর বিরোধিতা করে যাচ্ছে।(এটা আমার নিজস্ব অভিমত) যে বিবর্তন আর ধর্ম একেবারেই বিপরীত জিনিস।ধর্ম দার্শনিক আলোচনা আর বিবর্তন বৈজ্ঞানিক। বিবর্তন যেমন দর্শনের জায়গা নিতে গেলে সেটা ঠিক হবে না ঠিক তেমনি ভাবে ধর্মও বিজ্ঞান এর জায়গা নিতে যাওয়া টাও ঠিক হবে না।(ব্যাক্তিগত মতবাদ এই জন্য ভুল থাকতে পারে)
@ইমরান হাসান,
হ্যাঁ, এই ব্যাপারে একটা উদাহরন খুবই প্রাসঙ্গিক হবে। উচ্চমাধ্যমিকে গাজী আজমলের প্রাণিবিদ্যা এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান দুটি পাঠ্যবই প্রচলিত আছে। এই বই দুটোতে তিনি কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিবর্তন উপেক্ষা করে যেতে পারেন নি (সেটা সম্ভবও নয়); বিবর্তনের সমর্থনেই তাঁকে লিখতে হয়েছে, কিন্তু শ্রেনী কক্ষে তিনি বিবর্তনতত্ত্ব এবং ডারউইনকে নিয়ে যথেষ্টই উপহাস করে থাকেন (ব্যক্তিজীবনে তিনি একজন ধার্মিক)।
কাজটা ল্যাবের নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে করা হয়েছে । পরিবর্তিত এইচআইভি – ভাইরাসটিকে প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে দিয়ে করা হয় নি ।
@সংশপ্তক,
দুঃখিত। প্রাকৃতিক পরিবেশ বলতে কোষীয় পরিবেশ বোঝাতে চেয়েছিলাম।
এখানে কি C.S.T মেথড ব্যবহার করা হয়েছে? আমি যতদুর জানি এটা অনেকটা ক্লাস মেট এরকাছে থেকে পেন ধার করে লেখার মত। এখানে পলিমারেজ এই পেন এর মত ক্রিয়া করে তবে আমরা জানি যে এই পেন হুবুহু অন্য যেকারো নোট কপি করতে পারে ( পলিমারেজ)
তাহলে আমি একটু C.S.T সমন্ধে বলি। আচ্ছা ভালো কথা এখানে তো ফিলিপ হলিগার এর সাথে ভিক্টর পিনহেরোও ছিল(তার ব্যাপারে বলা উচিত ছিল) এখানে পিনহেরো তার এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কিছু কৃত্রিম X.N.A তৈরি করেন(পদ্ধতি পরে বলছি) এই কৃত্রিম D.N.A বা X.N.A এর ডি-অক্সি রাইবোজ আর রাইবোজ এর গঠন ধার করে বদলে দেয়া হয় । তবে এক্ষেত্রে পরিপূর্ণ D.N.A গঠন পরিবর্তিত হয়নি। তবে এরপরে যেটা হয় সেটা এখানে বলা হয়েছে কিছুটা আমি এটার উপর একটু বলছি এটা নিঃসন্দেহে একটা বড় অগ্রগতি বিজ্ঞান এর জন্য
তবে এক্ষেত্রে পিনহেরোর কিছু কথা না বললেই নয় “Any polymer can store information,” এখানে তিনি যেকোনো পলিমার এর তথ্য ধারন ক্ষমতার কথা বলেছেন তবে এর পরে তিনিই আবার বলেন যে “is that the information encoded in them [in the form of genes, for example] can be accessed and copied এখানে এটা সুস্পষ্ট যে এটা মূলত সিনথেটিক D.N.A এবং সেল বা কোষ তৈরির একটা প্রকরণ মাত্র(ভুল হলে ক্ষমা করবেন)
তবে এরপরের যে ঘটনা টা ঘটেছে সেটাকে আপনি ম্যাক্র ইভ্যুলুশন এর খাতায় কেমন ভাবে ফেললেন সেটা পরিস্কার না।
এক্ষেত্রে পলিমারেজ এর ব্যাপক কোন পরিবর্তন ঘটেনি যেটা ঘটেছে সেটা হচ্ছে হাইব্রিড ডি ,এন,এ উৎপন্ন করার মত একটা বিষয়? (W)
তো এর ক্ষেত্রে ম্যাক্রইভ্যুলুশান এর ক্ষেত্র টা কি খালি দ্বি- বিভাজন এর মধ্যে সীমাবদ্ধ?
নাকি এটা কপি বা সি এস টি হওয়া মডিফায়েড ডি এন এ এর অধিক অভিযোজন আর পলিমারেজ এর তথ্যসমূহের কমপ্লেক্সিটির উপরে যে এদের একটা Resistance বা কৃত্রিম মিউটেশান এর উদাহারন? এবং এই ক্ষেত্রে ম্যাক্রইভ্যলুশান এর কি সম্পর্ক সেটা পরিস্কার ভাবে বললে খুশি হতাম 🙁
তবে এইক্ষেত্রে Synthetic` D.N.A বা কৃত্রিম ডি এন এ এর ক্ষেত্রে যে Stimulation এর প্রসেস টা ব্যাবহার করা হয় সেটা ব্যবহার করা হয়েছিল কিনা সেটাও কিন্তু উল্লেখ নেই এক্ষেত্রে
এই প্রবন্ধটা একটু ধোঁয়াটে মনে হয়েছে আমারকাছে (যদি আলোচনা করতে চান তাহলে এর পরে কৃত্রিম ডি এন এ নিয়ে কথা বলতে পারি) তবে হলিগার এর পেটেন্ট এর কপি(লেটেসট কিনা জানি না) এরকম কিছুই কিন্তু বলে না :-s 😕
@ইমরান হাসান,
আমি খুব বিস্তারিত তথ্য ছাড়াই এই প্রবন্ধটি লিখেছি। খুব শিঘ্রই (কয়েকঘন্টার মধ্যে) আপনার সাথে বিস্তারিত আলোচনা করতে পারব বলে আশা করছি।
@বেঙ্গলেনসিস, আশা করি আমিও অনেক কিছু শিখতে পারব আপনার সাথে আলোচনা করে :thanks:
@বেঙ্গলেনসিস, বিজ্ঞানের লেখাগুলো আসলে যথেষ্ট তথ্য ছাড়া লেখা ঠিক না :-), আপনার কাছ থেকে একটা উত্তর আশা করছি কিন্তু। কয়েকদিন আগেই সংশপ্তকের সাথে এই এক্সএনএ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হচ্ছিল। আশা করছি, উনি হয়তো এ নিয়ে একটা বিস্তারিত পোষ্ট দেবেন।
@বন্যা আহমেদ,
বলছেন যখন পো্স্ট দেয়া যাবে । তার আগে হয়তো উপস্থিত বিজ্ঞজনেরা কিছু যোগ করতে চাইবেন যা থেকে আমরা সবাই কিচু না কিছু উপকৃত হব ।
বিজ্ঞান তেমন না বুঝলেও এ লাইনটিতে শিহরন অনুভব করলাম, যেমনটা হয়েছিল, জেনেটিক ম্যাপ আবিষ্কারের খবরে বা প্রথম কৃত্রিম প্রাণ তৈরির খবরে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে বিজ্ঞানের এই রোমাঞ্চকর আবিষ্কারটি আমাদের জানানোর জন্য।
আমাদের উৎপত্তির রহস্যের সাথে আবিষ্কারটার যোগসূত্র ধরতে পারলেও, বুঝতে পারছি না রোগ নিরাময়ে কি ভূমিকা রাখতে পারে তা? আমি আগেই বলেছি, আমি বিজ্ঞান তেমন বুঝি না। তাই হয়ত এমন প্রশ্ন!
@কাজি মামুন,
আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সাধারণত কোষস্থ বিশেষ বিশেষ এনজাইমগুলো বহিরাগত প্রাকৃতিক DNA এবং RNA গুলোকে নষ্ট করে দিয়ে রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। কাজেই টিকা জাতীয় প্রতিসেধকগুলোতে এই কৃত্রিম XNA ব্যবহার করাটা অধিক কার্যকর হবে বলে চিকিৎসকেরা আশা করছেন। যেহেতু এই XNA গুলো প্রাকৃতিক এনজাইমের কাছে পরিচিত নয় তাই এগুলোকে কোষে অধিকমাত্রায় স্থিতিশীল রাখা সম্ভব।
অনেক ধন্যবাদ এই বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য। কয়েক সপ্তাহ আগে সাইন্সে মূল গবেষণাটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই ভাবছিলাম যে এ নিয়ে কারও লেখা উচিত। তত্ত্বগতভাবে চিন্তা করলে, অনেক পলিমারেরই আরএনএ এবং ডিএনএর মত কাজ করতে পারার কথা। কিন্তু প্রকৃতিতে কেন শুধু এ দুটো অণুই টিকে গেল সেটাও খুব ইন্টারেস্টিং একটা বিষয়। এখানে কী শুধুই চান্স কাজ করেছিল নাকি আর কোন সীমাবদ্ধতা ছিল! যদিও এই XNAগুলো এখনও ডিএনএর থেকে খুব বেশী আলাদা কিছু নয়, তবে এই গবেষণাগুলোই হয়তো একদিন আমাদের উৎপত্তির রহস্যের উত্তরগুলো পেতে সহযোগীতা করবে। বংশগতি এবং বিবর্তন,এই দুটোই যে ডিএনএ এবং আরএনএ ছাড়া অন্য অণুর মধ্যেও সম্ভব তারই প্রমাণ পেলাম এই গবেষণার মধ্য দিয়ে।
তবে লেখাটা আরেকটু বিস্তৃত হলে ভালো লাগতো। বিজ্ঞানের লেখা লিখতে যে কী পরিমাণ কষ্ট করতে হয় তা ভুক্তভোগী মাত্রেই জানেন 🙁 । লেখাটার জন্য আপনাকে আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
.
@বন্যা আহমেদ,
মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। লেখাটি কেন এত ছোট হল তার উত্তর প্রথম কমেন্টে দিয়েছি। গবেষণাপত্রটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে এটা নিয়ে লেখা শুরু করে এটুকু লিখতে পেরেছি। আমি পিএইচডির ছাত্র। লেখা-লেখির পিছনে খুব বেশী সময়ও দিতে পারি না।
একটা অফ টপিক: আপনার “বিবর্তনের পথ ধরে” বইটি পড়েছি। পুরো বইটি খুব ভালো লেগেছে তবে বইটিতে টেকনিক্যাল তথ্যের কিছুটা অভাব বোধ করেছি। আমি রসায়নের ছাত্র এবং বিবর্তন বিষয়ে খুবই আগ্রহী। তাই বিবর্তনের কোষ পর্যায়ের তথা রাসায়নিক দিকটি নিয়ে একটি সিরিজ রচনা লেখার ইচ্ছে আছে। সেটা শুরুও করেছি কিন্তু এগোতে পারছি না। এসব বিষয়ে সম্পূর্ণ নিশ্চিত না হয়ে কিছু লেখাটা ঝুঁকিপূর্ণ। তবে আপনাদের কাছ থেকে যেমন উৎসাহ পাচ্ছি আশা করি সময় বের করে লিখে ফেলব।
@বেঙ্গলেনসিস, এইরে এবার তো নিজেই নিজেকে বিপদে ফেলে দিলেন! আপনি রষায়নের পিএইচডির ছাত্র জানলে তো এক্কেবারে অন্যভাবে মন্তব্যটা করতাম, আপনার কাছ থেকে এই প্রক্রিয়াটার আরও রাষায়নিক এবং শারীরতত্ত্বীয় ব্যাখ্যা দাবী করতাম 🙂 । সময়ের অভাব দিয়ে এখন তো আর পার পেতে পারবেন না।
আর আপনার বিবর্তনের পথ ধরে বইটাতে টেকনিক্যাল তথ্যের অভাব তো বোধ করারই কথা। সেটা না করলেই বরং অবাক হোতাম। এটা লিখেছিলাম ইন্টারমিডিয়েট পড়া ছেলেমেয়েদের কথা মাথায় রেখে, তারা যদি বিবর্তনের বিষয়ে জানতে আগ্রহী হয় তাহলে এখান থেকে বেসিক্সগুলো জেনে নিয়ে আরও ডিটেইলড কোন বইয়ের দিকে হাত বাড়াতে পারবে, বেশী টেকনিকাল তথ্য দেখে তারা ভয় পেয়ে মুখ ফিরিয়ে নিক এটা চাইনি। তারপরও কিন্তু অনেকে অনুযোগ করেছেন যে বেশী টেকনিকাল হয়ে গেছে কোন কোন অধ্যায়। তবে মানব বিবর্তনের বইটাতে জেনেটিক্সের আরও গভীরে ঢোকার ইচ্ছে আছে।
আপনি লেখা শুরু করুন আরও টেকনিকাল বিষয় নিয়ে, আমরা তো আছিই চিয়ারলীড করার জন্য…
@বন্যা আহমেদ,
🙂
@বন্যা আহমেদ,
এই গবেষনাটিতে এইচআইভি ভাইরাস নিয়ে কাজ করা হয়েছে। ডিএনএ-র মিউটেটেট পলিমারিস ব্যবহার করে এক্সএনএ তৈরী করা হয় এবং রিভার্স ট্রান্সক্রিপট করে আবার এক্সএনএ থেকে ডিএনএ। তবে মনে রাখতে হবে যে , এখনও প্রাকৃতিক ডিএনএ ছাড়া এক্সএনএ স্বয়ংসম্পূর্নভাবে কাজ করতে পারে না এবং এক্সএনএ , আরএনএ পর্যন্ত তৈরী করতে পারে না ।
তাহলে কি দাঁড়াল এক কথায় ? এই গবেষকেরা শুধুমাত্র এক্সএনএ -র অনুলিপি করতে পেরেছেন যা আগে সম্ভব ছিল না। আগে এক্সএনএ বানানো গেলেও অনুলিপি তৈরী সম্ভব ছিল না।
@সংশপ্তক, ডিএনএ-র মিউটেটেট পলিমারিস ব্যবহার করে এক্সএনএ তৈরী করার ব্যাপারটা বুঝলাম। এটা প্রাকৃতিক উপাইয়ে করা সম্ভব। কিন্তু যতদূর জানি কোন প্রাকৃতিক এনজাইমের পক্ষে বোধ হয় এক্সএনএ থেকে ডিএনএ তৈরি করতে পারার কথা না। সেটা কীভাবে করা হল জানেন কী?
@বন্যা আহমেদ,
এখানে দুটো কাজ করা হয়েছে :
১। এক্সএনএ ডিঅক্সিরাইবোজ বদলে মোনোসাকারাইড – এ রূপান্তরিত করেছে।
২। ডিএনএ -র পলিমারিস(এনজাইম) কে এমনভাবে মিউটেট করা হয়েছে যাতে সে মোনোসাকারাইডকে গ্রহন করে।
কিন্তু এই এক্সএনএ -কে পুরোপুরি সিন্থেটিক বলা যাবে না কেননা প্রাকৃতিক ডিএনএকে ম্যানিপুলেট করে একাজ করা হয়েছে।
@সংশপ্তক,
আপনার উত্তরগুলোর জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু একটা ব্যাপার, ডিঅক্সিরাইবোজ তো একটা মনোস্যাকারাইড। তাহলে “ডিঅক্সিরাইবোজ বদলে মোনোসাকারাইড – এ রূপান্তরিত করেছে।” কিভাবে?
@বেঙ্গলেনসিস,
এই গবেষণায় ব্যবহৃত অন্যতম ANA -এর আরাবিনোস একটা মোনাসাকারাইড কিন্তু প্রকৃতিদত্ত নয়।
@সংশপ্তক, ১ নাম্বার পয়েন্টে আপনি বললেন যে এক্স,এন,এ ডিঅক্সিরাইবোজ থেকে ডি এন এ কে মনস্যাকারাইড এ রুপান্তরিত করেছে?
আমি যতদূর জানি যে কৃত্রিম ডি, এন,এ সংশ্লেষণ এর ক্ষেত্রে পেন্টোজ সুগারকে টেট্রজ সুগারে পরিণত করা হয়। এবং β-hexopyranosyl আর যেখানে হেক্সোপাইরোনোসিল C-6 এবং C-4 কার্বন
সমূহকে অলিগোনিউক্লিয়টাইড এর সাহায্যে(5′→3′) বন্ধনে আবদ্ধ করা হয়। তো এর সাথে সাথে
4′→2′), (4′→3′) এর সাহায্যেও এদের বন্ধন সৃষ্টি করা হয় তো এখানে বেস পেয়ার দের বন্ধন তো দেখাচ্ছে চারটা এর মত তো পিনহেরো এর এই পদ্ধতি কি কোন নতুন পদ্ধতি যেখানে এক-বন্ধন বা মনস্যাকারাইড এ এটাকে রুপান্তরিত করা হচ্ছে?
আবার দুই নম্বরে যতদূর জানি এটা করা হয় R.N.A এর ক্ষেত্রে। তো এক্ষেত্রে D.N.A কে টেনে আনাটা ঠিক বুঝলাম না :thanks:
@ইমরান হাসান,
দেখুন তো নতুন মনে হয় কি না ?
[img]http://i48.tinypic.com/28cocyh.jpg[/img]
আর এন এ কেন ?
[img]http://i49.tinypic.com/15mzj94.jpg [/img]
@সংশপ্তক, ধন্যবাদ আপনাকে এখানে আপনি C.S.T এর একটা ভালো উদাহারণ দেখিয়েছেন । এটা আমার জানা ছিলনা
@অভিজিৎ,
ভিডিও যোগ করার মূল্যবান তথ্যটির জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু অনেক খুঁজেও এই মুহূর্তে সম্পদনার বাটন খুঁজে পাচ্ছি না। তাই এই মন্তব্যের সাথে জুড়ে দিলাম।
httpv://www.youtube.com/watch?v=E8NHcQesYl8&feature=BFa&list=PL40A6C1FF95C70259
@বেঙ্গলেনসিস,
আপনার পোস্টে ভিডিও এমবেড করে দিলাম।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
অসংখ্য ধন্যবাদ।
চমৎকার এই খবরটি নিয়ে লেখাটি লেখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
কোন ভিডিও কিন্তু দেখলাম না।
বাই দ্য ওয়ে, ইউটিউব থেকে ভিডিও সংযোগের জন্য ভিডিওর লিঙ্কটি পোস্ট করার সময় http:// র বদলে httpv:// লিখলেই ( ‘v’ characterটি লক্ষ্য করুন।) ভিডিও সরাসরি এম্বেডেড হয়ে যায়।
@বেঙ্গলেনসিস,
খুব উৎসাহ নিয়ে পড়া শুরু করেই দেখি শেষ হয়ে গেল। এত দারুণ একটা টপিক নিয়ে এত ছোট সাইজে লিখলে কি চলে?
এখানে ক্ষারীয় গ্রুপ দুটোই কি নাইট্রোজেন বেজ? আরেকটু বিস্তারিত জানাবেন কি?
অসংখ্য ধন্যবাদ দারুণ লেখাটার জন্য। (Y)
@আমি আমার,
আপনাকেও ধন্যবাদ। এই ধরনের লেখা লিখতে প্রচুর সময় লাগে। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, এই গবেষণাটি প্রকাশের পর থেকে এটা নিয়ে লেখার চেষ্টা করে এটুকু লিখতে পেরেছি!
ক্ষারীয়গ্রুপ সবগুলোই নাইট্রোজেন বেস। DNA তে মোট চার ধরনের নাইট্রোজেন বেস থাকে। এডেনিন, থাইমিন, সাইটোসিন, গুয়ানিন। এদের যথাক্রমে A, T, C, G দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এই বেসগুলোর কম্বিনেশনই কোড হিসেবে কাজ করে। এগুলোকে জেনেটিক অক্ষর বলা যায়। অনেকগুলো অক্ষর মিলে একটি পুর্নাঙ্গ বাক্য তৈরি করে। অর্থাৎ একটি বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে। A সর্বদা T এর সাথে এবং C সর্বদা G এর সাথে যুক্ত হয়। কাজেই DNA এর এক সাইডে যদি AACGATCCGCCCTATT…… এই ধারা থাকে অপর পাশে অবশ্যই TTGCTAGGCGGGATAA…… এই ধারা থাকবে। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে দুটি সুত্রকের মধ্যে একটির কোডই অপরটির কোড নির্ধারন করে। DNA থেকে এই কোডের যখন পাঠোদ্ধার করা হয় তখন একটি সুতার কোডই কাজ করে।
@আমি আমার,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। এই গবেষণাটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই এটা নিয়ে লেখা শুরু করে এতদিনে এটুকু লিখতে পেরেছি!
ক্ষারীয় গ্রুপ সবগুলোই নাইট্রোজেন বেস। DNA তে মোট চারধরনের নাইট্রোজেন বেস রয়েছে। এডেনিন, থাইমিন, সাইটোসিন এবং গুয়ানিন। এগুলোকে যথাক্রমে A, T, C, G দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এই চারটি বেস DNA কোডের অক্ষর হিসেবে কাজ করে। আমরা যেমন অনেকগুলো অক্ষর বিশেষভাবে সাজিয়ে একটি অর্থবোধক বাধ্য তৈরি করি DNA তে এই চারটি বেস বিশেষক্রমে পর পর সজ্জিত থেকে (মইয়ের একেকটি ধাপ হিসেবে) একটি অর্থপূর্ন বৈশিষ্ট্য ধারন করে। A সর্বদা T এর সাথে এবং C সর্বদা G এর সাথে যুক্ত হয়। ফলে একটি সূত্রকে যদি বেসগুলোর order হয় AACTCCGCGGGTTAG…… অপর সূত্রকে অর্ডারটি হবে TTGAGGCGCCCAATC…….। অর্থাৎ একটি সুতায় নাইট্রোজেন বেসের ক্রম অপর সুতার ক্রম নির্ধারন করে দেবে। কাজেই কোডিংএর জন্য শুধুমাত্র একটি মাত্র সুতাই যথেষ্ট। কোষেও এই ঘটনাটিই ঘটে। ডিএনএর কোড অনুযায়ী যখন জীবে কোন প্রোটিন তৈরি হয় তখন ডিএনএর প্যাঁচ খুলে যায় এবং একটি মাত্র সুত্রকের কোডটি RNA তে কপি হয়। এই RNA থেকে কোডটি আরেক RNA তে হস্তান্তরিত হয় এবং সেখানে প্রোটিন তৈরি হয়।
DNA’র সিঁড়ি গুলি বেশ ভাল, অনেক উপরে যাওয়া যায়! 😛 সাত আসমান ভেদ করে চলে যাবে বলেই মনে হচ্ছে!!
@অরণ্য,
🙂