আবুল কাশেম
নানা কারণে এই ধারাবাহিক রচনাটি কিছুদিনের জন্য স্থগিত ছিল। বাকী অংশ এখন নিয়মিত প্রকাশের আশা রাখছি।
[রচনাটি এম, এ, খানের ইংরেজি বই থেকে অনুবাদিত “জিহাদঃ জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তরকরণ, সাম্রাজ্যবাদ ও ক্রীতদাসত্বের উত্তরাধিকার” গ্রন্থের ‘ইসলামি ক্রীতদাসত্ব’ অধ্যায়ের অংশ এবং লেখক ও ব-দ্বীপ প্রকাশনের অনুমতিক্রমে প্রকাশিত হলো।]
ইসলামি ক্রীতদাসত্ব, খণ্ড ২৬
লেখক: এম, এ, খান
মার্কিন সংগ্রাম ও পাল্টা আক্রমণ
উত্তর আফ্রিকায় মার্কিন বাণিজ্য-জাহাজও বার্বারি জলদস্যু কর্তৃক লুণ্ঠনের শিকার হয়। ১৬৪৬ সালে মার্কিন জাহাজ ও তার কর্মচারিরা প্রথমবারের মতো সালে’র জলদস্যুদের হাতে আটক হয়। ১৭৭৬ সালে আমেরিকা স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত উত্তর আফ্রিকায় আমেরিকান জাহাজ ছিল ব্রিটিশ প্রতিরক্ষাধীন। উত্তর আফ্রিকার গুপ্ত খোয়াড়গুলো থেকে ব্রিটিশ বন্দিদের মুক্তির সাথে আমেরিকান বন্দিরাও মুক্তি পেতো। ১৭৭৬ সালে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা প্রত্যাহার করা হলে মার্কিন জাহাজগুলো বার্বারি জলদসুদের সরাসরি হামলার লক্ষ্য হয়। ১৭৮৪ সালে মরক্কো ও আলজিয়ার্সের মুসলিম জলদস্যুরা তিনটি মার্কিন বাণিজ্য-জাহাজ আটক করে কর্মচারিদেরকে ক্রীতদাস বানায়। দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার পর ৬০,০০০ ডলার মুক্তিপণ দিয়ে বন্দিদেরকে মুক্ত করা হয়। কিন্তু আলজিরীয় জলদস্যুরা যাদেরকে আটক করেছিল, তাদের ছিল দুর্ভাগ্য; তাদেরকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল ক্রীতদাসরূপে।
এরূপ বেআইনি কর্মকাণ্ডে বিরক্ত ও ক্রুদ্ধ মার্কিন কূটনীতিক টমাস জেফারসন ও জন এডাম্স এ বিষয়টি আলোচনার জন্য ১৭৮৫ সালে লন্ডনে ত্রিপোলির রাষ্ট্রদূত আবদ আল-রহমানের সাথে সাক্ষাত করেন। তারা জানতে চান কোন্ অধিকারে বার্বারি রাষ্ট্রগুলো আমেরিকার জাহাজে হামলা করে যাত্রী ও কর্মচারিদেরকে ক্রীতদাস বানাচ্ছে? আল-রহমান তাদেরকে জানান: ‘কোরানে লেখা রয়েছে যে, মুসলিমদের কর্তৃত্ব অস্বীকারকারী সকল জাতিই পাপী; এ রকম লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ও যুদ্ধে বন্দিদেরকে ক্রীতদাস বানানো মুসলিমদের ধর্মীয় অধিকার ও দায়িত্ব। এবং এরূপ যুদ্ধে নিহত প্রত্যেক মুসলমানই নিশ্চিত স্বর্গে প্রবেশ করবে।’২৫৩ আক্রমণ এড়াতে রাষ্ট্রদূত আল-রহমান আনুগত্য কর দাবি করেন এবং নিজের কমিশন বা ঘুষ চান।
সে মুহূর্ত থেকেই টমাস জেফারসন ক্রীতদাসকরণের এ বর্বর কর্মকাণ্ড চিরতরে নির্মূল এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সমুদ্রপথ নিরাপদ করতে যুদ্ধের অঙ্গীকার করেন। প্যারিসে তার কূটনৈতিক দায়িত্বে অবস্থানকালে ইউরোপীয় ও আমেরিকার বাণিজ্য-জাহাজে বার্বারি লুণ্ঠনের অবসানকল্পে একটি আমেরিকান-ইউরোপীয় নৌ-শক্তি গড়ে তোলার প্রয়াস করে ব্যর্থ হন। তিনি নিজ দেশ থেকেও এ প্রস্তাবে বিরোধিতার সম্মুখীন হয়েছিলেন; জন এডামসও তার প্রস্তাবের বিরোধী ছিলেন। অন্যদের মত এডামস ওসব নাছোরবান্দা দস্যু-যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘসূত্রী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার চেয়ে কর দিয়ে তাদেরকে ঠাণ্ডা করে রাখার পক্ষপাতী ছিলেন। বাণিজ্য-জাহাজ আক্রান্ত হওয়া ইউরোপীয় দেশগুলোর সমন্বয়ে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের ব্যাপারে এডামসের মতামত চাওয়া হলে তিনি জেফারসনকে লিখেন: ‘ধারণাটা অতি সাহসী ও পুরোপুরি সম্মানজনক, তবে চিরদিনের জন্য তাদের সাথে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে, আদৌ তাদের সাথে যুদ্ধে জড়াতে পারি না আমরা।’২৫৪
ইতিমধ্যে আমেরিকান জাহাজ লুণ্ঠন ও কর্মচারিদেরকে ক্রীতদাসকরণ যথারীতি চলে আসছিল অব্যাহতভাবে। ১৭৮৫ থেকে ১৭৯৩ সালের মধ্যে ১৩০ জন মার্কিন নাবিককে আটক করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কূটনীতিক জোয়েল বার্লো, যোশেফ ডোনাল্ডসন ও রিচার্ড ও’ব্রায়ানকে ১৭৯৫ সালে উত্তর আফ্রিকায় প্রেরণ করেন, যারা আমেরিকার জাহাজের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করার জন্য কর দিতে সম্মত হয়ে আলজিয়ার্স, তিউনিস ও ত্রিপোলির সাথে চুক্তি স্বাক্ষরে সফল হন। আলজিয়ার্স সেখানে আটককৃত ৮৩ জন আমেরিকার নাবিককেও মুক্ত করে দেয়। জন এডামসের রাষ্ট্রপতিত্বকালেও (১৭৯৭-১৮০১) আমেরিকা কর দেওয়া অব্যাহত রাখে, যা বাড়তে বাড়তে জাতীয় বাজেটের শতকরা ১০ ভাগে পৌঁছে।
অমর্যাদাকর বশ্যতা কর প্রদান ও সে সঙ্গে উত্তর আফ্রিকার গুপ্ত-খোয়াড়গুলোতে শ্বেতাঙ্গ ক্রীতদাসদের শিহরণমূলক দুর্ভোগের কাহিনীর প্রকাশ ধীরে ধীরে অবমাননাকর মুক্তিপণ প্রদানের বিরুদ্ধে ও সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের পক্ষে জনমত জোরদার করতে থাকে। ১৮০১ সালে জেফারসন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ত্রিপোলির পাশা ইউসুফ কারমানলি বশ্যতা কর দিতে বিলম্বের অজুহাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দুটো মার্কিন জাহাজ আটক করে বাড়তি কর দাবি করেন। একে অনুসরণ করে অন্যান্য বার্বারি রাষ্ট্রও বাড়তি করের দাবি তোলে। জেফারসন বার্বারি রাষ্ট্রগুলোকে এভাবে অমর্যাদাকর কর প্রদানের বিরোধী ছিলেন আগা-গোড়া। ১৭৮৪ সালের প্রথম দিকে তিনি কংগ্রেসম্যান (পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ১৮১৭-২৫) জেমস্ মনরো’কে বলেছিলেন: ‘একটা সমতাভিত্তিক চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া কি ভাল নয়? যদি তারা অস্বীকার করে, তাহলে কেন আমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবো না? যদি আমাদের নিজস্ব ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যেতে হয়, তাহলে আমাদের নৌশক্তিকে শক্তিশালী করতে হবে।’২৫৫
১৬ বছর পূর্বের ত্রিপোলির রাষ্ট্রদূতের কথা না-ভুলা নতুন প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসকে না জানিয়েই বার্বারি উত্তর আফ্রিকায় নৌবহর প্রেরণ করেন। প্রতিক্রিয়া স্বরূপ ত্রিপোলি ১৮০১ সালের মে মাসে আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে; পরের বছর মরক্কোও সে পথে অগ্রসর হয়। সংঘর্ষে অচিরেই আমেরিকা একটা বড় ধাক্কা খায়, যখন ত্রিপোলি মার্কিন ফ্রিগেট ‘ফিলাডেলফিয়া’ আটক করে। কিন্তু এডোয়ার্ড প্রেবল ও স্টিফেন ডেকাতুর ত্রিপোলি বন্দরের উপর এক বীরত্বপূর্ণ হামলা চালিয়ে আটককৃত জাহাজটি ধ্বংস করে ফেলেন এবং নগরীর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেন। এ খবর ইউরোপ ও আমেরিকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয় ও উত্তেজনা সৃষ্টি করে যে: বিশ্বমঞ্চে নতুন এক শক্তির আবির্ভাব ঘটেছে।
ইতিমধ্যে তিউনিসে আমেরিকার কনসুল ইউলিয়াম ইটন ত্রিপোলীর পাশা ইউসুফ কারমানলির নির্বাসিত ভাই হাদিম’কে ত্রিপোলির ক্ষমতায় আমেরিকার মনোনয়নের
প্রস্তাব দেন। তার প্রস্তাবটি আমেরিকাতে রাজনৈতিক পর্যায়ে সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়, কিন্তু ইটন তার সে পরিকল্পনা চালিয়ে যান। ১৮০৫ সালে তিনি নৌ-সেনাদের ছোট একটা দল ও অনিয়মিত একটি বাহিনী নিয়ে মরুভূমির মধ্য দিয়ে মিশর থেকে ত্রিপোলিতে পাড়ি জমান। তারা দারনা নগরীর বিরাট সামরিক ঘাঁটিটির উপর আকস্মিক হানা দিয়ে গ্যারিসন নগরীটিকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করে। পাশার বাহিনীর বিরুদ্ধে ইটনের যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটে যুদ্ধটি বন্ধের লক্ষ্যে জেফারসন ও কারমানলি এক সমঝোতায় পৌঁছেন। যুদ্ধ বিরতির শর্ত হিসেবে মুক্তিপণ প্রদানের বিনিময়ে ত্রিপোলী ‘ফিলাডেলফিয়া’র কর্মচারিদেরকে মুক্ত করবে, তবে ভবিষ্যতে আমেরিকা আর কখনো মুক্তিপণ প্রদান করবে না। এ চুক্তিটি স্বাক্ষরে ইটনের দুঃসাহসিক কাজ একটা বড় ভূমিকা রেখেছিল বলে জানান জেফারসন। কিন্তু দুঃসাহসী ও আপোষহীন ইটন চুক্তিটিকে আমেরিকাকে বেচে দেওয়ার সমতুল্য বলে নিন্দা করেন।
১৮১২ সালে ব্রিটেন ও আমেরিকার মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ অ্যাংলো-আমেরিকান বৈরিতার সুযোগ নিয়ে আলজিয়ার্সের নতুন পাশা হাজ্বী আলী ১৭৯৫ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তিটিকে অপর্যাপ্ত আখ্যায়িত করে আমেরিকার কর প্রদান প্রত্যাখ্যান করেন। আলজিরীয় জলদস্যুরা আবার আমেরিকার জাহাজ আটক করা শুরু করে। ‘ঘেণ্ট চুক্তি’ স্বাক্ষরের মাধ্যমে ব্রিটেন ও আমেরিকার মধ্যকার সংঘর্ষ শেষ হলে প্রেসিডেন্ট জেমস্ ম্যাডিসন কংগ্রেসকে আলজিয়ার্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার আহ্বান জানান। জলদস্যুতা সমস্যার চির-সমাপ্তি ঘটানোর লক্ষ্যে ম্যাডিসন ১৮১৫ সালের ৩রা মার্চ আবারো স্টিফেন ডেকাতুরের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী উত্তর আফ্রিকায় প্রেরণ করেন। মার্কিন বাহিনী তৎকালীন শাসক দেই ওমর পাশার নৌবহরকে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত করে তার বিশাল পোতাশ্রয় আমেরিকার সশস্ত্র নৌবহর দিয়ে ভরে ফেলে এবং হাজার হাজার লোককে বন্দি করে। দেই ওমর আত্মসমর্পণ করেন এবং অনিচ্ছুকভাবে ডেকাতুর-নির্দেশিত শর্তের এক চুক্তি মেনে নিতে বাধ্য হন। চুক্তিটির শর্ত অনুযায়ী আলজিরিয়া ও মার্কিন বন্দি বিনিময় করা হবে, এবং বশ্যতাকর ও মুক্তিপণ দাবি চিরতরে বন্ধ করা হবে। সবচেয়ে শক্তিশালী এ বার্বারি রাষ্ট্রটিকে পরাজিত করে ডেকাতুর তার বাহিনী নিয়ে পাড়ি জমান তিউনিস ও ত্রিপোলিতে এবং সেখানকার শাসকদেরকেও একই রকমের চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য করেন। ডেকাতুর ত্রিপোলিতে পাশা কারমানলির গুপ্ত কক্ষে আটক সকল ইউরোপীয় বন্দিকেও মুক্ত করেন। উত্তর আফ্রিকায় নৌবাহিনী প্রেরণের প্রাক্কালে প্রেসিডেন্ট ম্যাডিসনের বক্তব্য ছিল: ‘আমেরিকার নীতি হলো, যুদ্ধের চেয়ে শান্তি শ্রেয়; বশ্যতাকরের চেয়ে যুদ্ধ শ্রেয়; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেমন কারো সাথে যুদ্ধ চায় না, তেমনি কারো নিকট থেকে শান্তিও কিনবে না’ − যা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে এক নতুন পন্থার উদ্বোধনী ঘোষণা।২৫৬
[আগামী পর্বে আলোচিত হবেঃ ব্রিটিশ নেতৃত্বে ইউরোপীয় পাল্টা আক্রমণ]
সূত্রঃ
253. Berube CG and Rodgaard JA (2005) A Call to the Sea: Captain Charles Stewart of the USS Constitution, Potomac Books Inc., Dulles, p. 22
254. Ibid.
255.Ibid.
256.Hitchens, op cit
————–
ইসলামি ক্রীতদাসত্ব, খণ্ড ২৭
লেখক: এম, এ, খান
ব্রিটিশ নেতৃত্বে ইউরোপীয় পাল্টা আক্রমণ
১৮১৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বার্বারি রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে তার হিসাব-নিকাশের নিষ্পত্তি ঘটায় − যে বছরে ইউরোপীয় দেশগুলো যৌথভাবে দাস-ব্যবসা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু ইউরোপীয় জাহাজগুলোতে বার্বারি জলদস্যুদের লুণ্ঠন-কর্ম অব্যাহত তাকে। উত্তর আফ্রিকায় আমেরিকার দুঃসাহসিক ও সফল অভিযানে (১৮০১-০৫, ১৮১৫) ইউরোপে, বিশেষ করে ব্রিটেনে, একই পন্থা অবলম্বনের ব্যাপক ডাক উঠে। নেপোলিয়নের যুদ্ধের অবসান হওয়ার পর ১৮১৪ সালে একটা শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য যখন ভিয়েনা কংগ্রেসে ইউরোপীয় রাজা ও মন্ত্রীরা মিলিত হন, তখন বার্বারি জলদস্যু সঙ্কটের সামরিক সমাধানের ঘোর-পক্ষপাতী ব্রিটেনের স্যার সিডনী স্মিথ উত্তর আফ্রিকার শাসকদের সঙ্গে সামরিক মুকাবিলার আবেদন জানান। তিনি সে কংগ্রেসটিকে বলেন: ‘এ লজ্জাজনক দাসত্ব শুধুমাত্র মানবতার জন্যই গর্হিত নয়, তা ব্যবসা-বাণিজ্যকেও চরমভাবে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে।’
স্যার স্মিথের জোরালো নিবেদন কয়েক শতাব্দী ধরে চলমান অবমাননাকর ও বাণিজ্যিকভাবে পঙ্গুকারী এ সমস্যাটির প্রতি সবার দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে সমর্থ হয়। ব্রিটেন ‘ইউরোপিয়ান ট্রিটি’তে দাসপ্রথা ও দাস-বাণিজ্য নিষিদ্ধ করার শর্ত সংযোজন করতে সমর্থ হয়। ভিয়েনা কংগ্রেস সকল প্রকার ও আকারের দাসপ্রথা চর্চাকে নিন্দা করে একটা প্রস্তাব পাস করে। কিন্তু বার্বারি রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তবে শীঘ্রই স্যার স্মিথের সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আকুল আহ্বানের সমর্থন আসতে থাকে ইউরোপের সবখান থেকে, যারা সবাই এ ঘৃণ্য শত্রুর দ্বারা ভয়ঙ্কর দুর্ভোগের শিকার হয়েছিল অতীতে এবং তখনো হচ্ছিল। মাত্র কয়েক মাস আগে ঘটিত আলজিয়ার্সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সফলতা থেকে তারা ইঙ্গিত ও অনুপ্রেরণা নিচ্ছিল। ব্রিটেন উত্তর আফ্রিকায় দুর্ভোগের খুব বড় শিকার ছিল না মাঝে মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদন ও ব্রিটিশ বন্দিদেরকে মুক্ত করে আনতে পারার কারণে। সে সূত্রে ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলো ব্রিটেনের সমালোচনা করে ‘জলদস্যুদের বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকার জন্য, কেননা তার বাণিজ্যিক প্রতিদ্বন্দ্বিরা আক্রান্ত হলে, তা ব্রিটিনের জন্য ফায়দা লাভের সুযোগ করে দিতো।’২৫৭
এরূপ সমালোচনায় বিদ্ধ হয়ে কৃষ্ণাঙ্গ ক্রীতদাসপ্রথা বিলুপ্তকরণের প্রবক্তা ব্রিটেন এখন শ্বেতাঙ্গ ক্রীতদাসত্বের সমাপ্তি টানারও সিদ্ধান্ত নেয়। ১৮১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার স্যার এডোয়ার্ড পেলোর নেতৃত্বে ইউরোপীয় জাহাজ ও নাগরিকদেরকে আটককরণ বন্ধে বার্বারি রাষ্ট্রগুলোকে বাধ্য করার লক্ষ্যে এক বিশাল নৌবহর উত্তর আফ্রিকায় প্রেরণ করে। বশ্যতাকর দেওয়ার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ব্রিটিশ সরকার বলে: ‘যদি শক্তি প্রয়োগই অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠে, তবে আমরা এটা জেনে সান্ত্বনা পাব যে, আমরা মানবতার জন্য পবিত্র দায়িত্বে যুদ্ধ করছি।’২৫৮
১৮১৫ সালের শেষ দিকে আলজিয়ার্সের সাগরে তার নৌবহর নিয়ে উপস্থিত হয়ে স্যার পেলো ওমর পাশার নিকট এক আপোষহীন বার্তা পাঠান এক ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণ, সকল ইউরোপীয় ক্রীতদাসদের মুক্তি এবং চিরতরে ইউরোপীয় জাহাজ ও ক্রীতদাস আটক পরিত্যাগের শর্তে। এর আগের মার্কিন আক্রমণের পর সম্ভাব্য ইউরোপীয় আক্রমণ প্রতিহত করার লক্ষ্যে ওমর পাশা তার প্রতিরক্ষা-ব্যবস্থাকে জোরদার ও সবল যোদ্ধাদের নিয়োগ করে তার বাহিনীকে শক্তিশালী করেছিলেন। পাশার তরফ থেকে কোনো উত্তর না এলে স্যার পেলো যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ব্রিটিশ বহরের পাশে ৬টি ডাচ জাহাজের এক বহর যোগ দিয়েছিল। যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় আলজিয়ার্সের উপর প্রচণ্ড বোমা নিক্ষেপের মাধ্যমে। ফলে শহরটি ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। ওমর পাশার বাহিনী জোর প্রতিরোধ প্রদর্শন করে পাল্টা আক্রমণ করে। এতে ব্রিটিশ পক্ষেও যথেষ্ট হতাহত ও ক্ষতিসাধন হয়। স্যার পেলো এবার নজর দেন বন্দরে নোঙ্গর করা জলদস্যুতার জন্য ব্যবহৃত জাহাজগুলোর দিকে। ওসব জাহাজে অগ্নিবোমা ও ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করে সবগুলোকে জ্বালিয়ে দেন। পরদিন সকালের মধ্যে নগরী ও জলদস্যু জাহাজগুলো একেবারে বিদ্ধস্ত হয়ে যায়। ব্রিটিশ পক্ষে ১৪১ জন যোদ্ধা নিহত ও ৭৮ জন আহত হয়; শত্রুপক্ষে নিহত হয়েছিল ২,০০০। পরদিন ভোরে ওমর পাশা ধ্বংসের দৃশ্য জরিপ করে ব্রিটিশ সেনাধ্যক্ষের সব শর্ত মেনে নিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। চুক্তির শর্তের মধ্যে ছিল: সমস্ত ইউরোপীয় বন্দির মুক্তি ও ইউরোপীয়দেরকে ক্রীতদাসকরণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের হাতে মারাত্মকরূপে মার খাওয়া বার্বারি রাষ্ট্রগুলো ব্রিটিশ ও মার্কিন জাহাজ আক্রমণ বন্ধ রাখলেও অন্যান্য দেশগুলোর জাহাজের উপর আক্রমণ অব্যাহত রাখে; যেমন ফরাসি জাহাজ এরপরও লাগাতার আক্রমণের শিকার হতে থাকে। ফলে ফরাসি সরকারও নিজস্ব সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেয়। বার্বারি বন্দরসমূহ ধ্বংস করার জন্য ১৮১৯ সালে একটা যৌথ অ্যাংলো-ফরাসি নৌবাহিনী বার্বারি উপকূলে আসে। বার্বারি জলদস্যুদের লুণ্ঠন চিরতরে খতম করে দেওয়ার লক্ষ্যে ও উত্তর আফ্রিকায় নির্মম নির্যাতনের শিকার খ্রিষ্টানদের মুক্ত করতে ফ্রান্স ১৮৩০ সালে আলজিয়ার্স দখল করে নিয়ে বার্বারি ক্রীতদাস শিকারের চির-সমাপ্তি ঘটায়।
[আগামী পর্বে আলোচিত হবেঃ অটোমান দাসপ্রথা নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে মুসলিম প্রতিরোধ]
সূত্রঃ
257. Milton, p. 272
258. Ibid
————–
ইসলামি ক্রীতদাসত্ব, খণ্ড ২৮
লেখক: এম, এ, খান
অটোমান দাসপ্রথা নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে মুসলিম প্রতিরোধ
পশ্চিমাদের চাপে অটোমান সরকার ১৮৫৫ সালে তার সাম্রাজ্যে দাস-বাণিজ্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। স্বর্গীয় প্রথার এ নিষিদ্ধকরণ প্রচণ্ড গণ-প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়, বিশেষ করে হেজাজ ও সুদানে। আল্লাহ অনুমোদিত এ প্রথা পশ্চিমাদের নির্দেশে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে — এ অভিযোগের অস্ত্র ধারণ করে সৌদি অঞ্চলের ইসলামের কেন্দ্রস্থল হেজাজের জনগণ অটোমানদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে উঠে। হেজাজের উলেমা প্রধান শেখ জামাল অটোমানদের দাস-বাণিজ্য নিষিদ্ধকরণ এবং তাদের দ্বারা গৃহীত অন্যান্য খ্রিষ্টান-অনুপ্রাণিত অনৈসলামিক সংস্কারের বিরুদ্ধে এক ‘ফতোয়া’ জারি করেন। ফতোয়ায় বলা হয়: ‘দাসপ্রথা নিষিদ্ধ করা শরীয়তি আইনের বিরোধী। ওসব প্রস্তাবনার কারণে তুর্কিরা নাস্তিক হয়ে গেছে। সুতরাং তাদের রক্ত বাজেয়াপ্ত ও তাদের সন্তানদেরকে ক্রীতদাস করা বৈধ।’২৫৯
হেজাজে উদ্ভূত এ জিহাদি বিদ্রোহ এক বছরের মধ্যে দমন করতে সমর্থ হয় অটোমানরা। তবে বিদ্রোহটি ও তার প্রেক্ষিতে প্রদত্ত ফতোয়াটি কাক্সিক্ষত ফল লাভে সমর্থ হয়। অটোমান সরকার ইসলামের এ কেন্দ্রস্থলটিকে আল্লাহ-অনুমোদিত দাসপ্রথা নিষিদ্ধের বাইরে রেখে এক ছাড়পত্র ঘোষণা করে। এ ব্যাপারে অটোমান সুলতানের প্রধান মুফতি আরেফ ইফেন্দি মক্কার কাজি, মুফতি, উলেমা, শরীফ, ইমাম ও প্রচারকদের নিকট লিখিত এক পত্রে দাসপ্রথা নিষিদ্ধকরণ ও অন্যান্য অটোমান সংস্কারকে ‘কলঙ্ক-রটনাকারী গুজব’ বলে আখ্যায়িত করে লিখেন: ‘আমাদের কানে এসেছে এবং আমাদের কাছ নিশ্চিত বলে প্রতীয়মান হয়েছে যে, ইহকালের জন্য লালায়িত কিছু ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যক্তি অদ্ভুত মিথ্যার জন্ম দিয়ে প্রচার করছে যে, সর্বোচ্চ অটোমান রাষ্ট্র (সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন) নারী ও পুরুষের ক্রীতদাসত্ব নিষিদ্ধ করেছে, যা সর্বৈব কুৎসামূলক মিথ্যা রটনা ছাড়া আর কিছুই নয়।’২৬০
দাস-ব্যবসা নিষিদ্ধকরণে অটোমান মিশরীয় প্রয়াসও বাঁধার সম্মুখীন হয় সুদানে, যে অঞ্চলটি যুগের পর যুগ মুসলিম ক্রীতদাস শিকারি ও ব্যবসায়ীদের উর্বরক্ষেত্ররূপে কাজ করে এসেছে। রুডলফ পিটার্স জানান: ‘ক্রীতদাস-ব্যবসা দমনের জন্য ইউরোপীয় শক্তি মিশর সরকারকে বাধ্য করলে সুদানিদের মাঝে অসন্তোষ বেড়ে যায়’ — যে অসন্তোষ কেবলমাত্র বস্তুগত কারণে ছিল না, ধর্মীয় কারণেও। ‘ইসলাম যেহেতু দাসপ্রথাকে অনুমোদন করে, সেহেতু অধিকাংশ মুসলিম এতে ক্ষতির কিছু দেখেনি। বিশেষত ইউরোপীয়দের কথায় মিশর সরকারের দাসপ্রথা দমনের চেষ্টাকে তারা ইসলামের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সমতুল্য হিসেবে দেখে,’ লিখেছেন পিটার্স।২৬১ এর ফলে সুফি নেতা মোহাম্মদ আহম্মদ (মৃত্যু ১৮৮৫) অটোমান ও মিশরীয় প্রশাসন এবং তাদের পশ্চিমা মিত্রদের বিরুদ্ধে জিহাদ শুরু করে দেন। সংক্ষুব্ধ দাস-ব্যবসায়ী ও সুফি-সাধকরা তাদের নিজ-নিজ বাহিনী নিয়ে সে জিহাদী আন্দোলনে যোগ দেয়।২৬২
হেজাজে দাসপ্রথা নিষিদ্ধকরণে অটোমান ব্যর্থতায় সৌদি আরবে আরো ১০৭ বছর দাসপ্রথা ও দাস-ব্যবসা বৈধ থাকে। ১৯৬০ সালে লর্ড শ্যাকল্টন ব্রিটেনের হাউস অব লর্ডস’কে জানান: আফ্রিকার মুসলিম হজ্ব-যাত্রীরা ‘ক্রীতদাসদেরকে জীবন্ত ট্রাভেলার চেক’ হিসেবে নিয়ে যাচ্ছে মক্কায় বিক্রি করার জন্য।২৬৩ সৌদি আরব ও ইয়েমেন দাস-ব্যবসা নিষিদ্ধ করে ১৯৬২ সালে, ব্রিটেন-কর্তৃক দাস-ব্যবসা নিষিদ্ধ ঘোষণার ১৫৫ বছর পর। আর মৌরিতানিয়া দাস-ব্যবসা নিষিদ্ধ করে ১৯৮০ সালে। আর এ নিষিদ্ধকরণ সম্ভবপর হয় আন্তর্জাতিক চাপের মুখে, প্রধানত পশ্চিমা চাপে, যদিও সে নিষেধাজ্ঞা আংশিক সফল হয়েছে মাত্র।
[আগামী পর্বে আলোচিত হবেঃ মুসলিম দেশে দাসপ্রথার অব্যাহত চর্চা ও পুনর্জাগরণ]
সূত্রঃ
259. Lewis, p. 102-3
260. Ibid, p. 103
261. Peters, p. 64
262. Ibid, p. 64-65
263. Lal (1994), p. 176
————–
চলবে—
আবুল কাশেম ভাই
আপনাকে অসংখ্য
ধন্যবাদ। ইসলামের
বাস্তব সত্য ঘটনা গুলো
বাংলায় পাঠকদের
মাঝে তুলে ধরার জন্য।
আমি ছোট বেলা
থেকে যখনি ভাল মন্দ
বুঝতে শিখেছি তখনই
বিধর্মীদের প্রতি
মুসলিমদের খারাপ
আচারন দেখে মনে
মনে খুজতে সুরু করেছি
কিকরে ইসলামের প্রকৃত
ইতিহাসটা জানতে
চেষ্টা করেছি। রড়
হয়ে কিনে কোরান
পড়েছি। আমার কাছে
আজও কোরান আছে।
হাদিস চর্চা
করেতেছি। তবে
এগুলো পড়ে কখনও
পূর্নতা পাইনি তারপরও
মনের মধ্যে না
পাওয়ার একটা খুদা সব
সময় থেকেইগেছে।
আপনের প্রচেষ্টায়
দুইটি বিষয়ে পড়তে
পরে আমার সেই না
পাওয়া বেদনাটা
কিছুটা হলেও লাঘব
হয়েছে। ইসলামের
দাসত্ব প্রথা ও নারীর
মর্যাদা। কি বিভধস্য
ইসলামের ইতিহাস।
ইসলামের এগুলো
বাস্তব ইতিহাস হওয়া
সত্যেও আজ ইসলামকে
মহৎ করার জন্য অর্থাৎ
নবিজী মহান করার
জন্য তারই মুমিনরা কতই
না অবাস্তব যুক্তি
উপস্থাপন করে চলছে।
যতই পড়ি আর মনে মনে
ভাবি কি করে আল্লাহ
জিনি কিনা
ইসলামের ঈশ্বর হয়েও
বিধর্মীদের ধংসের
সকল বিধান
দিয়েগেছে মুমিনদের
হতে। না কি নবিজী
নিরাকার আল্লাহকে
উপস্থাপন করে নিজের
সার্থে ইসলাম নামের
একটি জাতি সৃষ্টি
করেছেন। তানাহলে
আল্লাহর কাছ থেকে
নিজের সুবিধা মত
আয়াত আনলেন
কিকরে? ঈশ্বর
নিরেপেক্ষ হবে
এটাইতো সাভাবিক।
কিন্তু নবিজী কখনো
আল্লাহকে
নিরেপেক্ষ করে
দেখাননি। সবখানেই
আল্লাহ মুসলিমদের
সুবিধার কথা
বলেগেছেন।
বির্ধমীদের প্রতি
আল্লাহর যদি এতই রাগ
তাহলে তিনি
বিধর্মীদের সৃষ্টি
করলেন কেন? আপনের
কাছে অনুরোধ । আমার
অনেক দিনের একটি সখ
আছে তাহলো
নবিজীর প্রকৃত
জিবনীটা যদি প্রকাশ
করতেন তাহলে
আপনের সুভাকাঙ্খী
পাঠক কুল প্রকৃত সত্যটা
যেন উপকৃত হতো তার
জন্য আপনাকে
আশির্বাদও করতেন।
যদি সম্ভব হয় নবি
মুহম্মদের 23 বছর বইটি
প্রকাশ করবেন। বইটি
পড়ার ইচ্ছে ছিলো।
আপনের কাছে আমার
শেষ প্রশ্ন যদি সম্ভব হয়
উপযুক্ত যুক্তি দিয়ে
বুঝাবেন শিয়া ও সুন্নি
মুসলিমদের মধ্যে এত
কেন সহিংসতা কেন
হয়? নবিজী বা আল্লাহ
কেউই মুসলি হয়ে
মুসলিমদের হত্যার
বিধান দেননি।
একমাত্র ইসলামের
সমলচনা করলেই মুসলি
হয়েও মুসলিমকে হত্যা
করতে বিধান
দিয়েগেছেন। নাকি
নবিজী বা আল্লাহ
শিয়া ও সুন্নির মধ্যে
মিল করে আয়াত বা
বিধান করে যেতে
পারেনি? কোরানে
নবিজী বা আল্লাহ
ইসলামের সুন্দর বিধান
দিয়েগেছেন সকল
বিধর্মীরা কাফের
হত্যার যোগ্য কিন্তু এই
কাফেরদের যদি
মুসলিমরা জোরকরে
মুসলিম তৈরি করতে
পারে তাহলে ঐ
বিধর্মীরা হবে মহৎ
মুসলিম। কি চমৎকার
ইসলাম ধর্ম ইহাই না কি
একমাত্র শান্তির ধর্ম।
সর্বপরি একটি বাস্তব
সত্য কথা বলি ইসলাম
আজও টিকে আছে
সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও
চাপাবাজির উপরে
নির্ভর করে সম্পূর্ণ
মিথ্যা উপর।যতই পড়ছি
তাতই চোখের জল
মুছতে মুছতে
ভাবতেছি নবিজী কি
বর্বরোচিত আয়াত
তৈরি করে
বিধর্মীদের জোরকরে
ইসলাম ধর্মে
ধর্মান্তরিত করে
সারা পৃথিবীকে
ইসলামের আয়ত্তে
আনলেন। মুমিনরা
নবিজী এধরনের নর
পৈশাচিক কাজকে
ইসলামের সায়তল
আক্ষা দিয়েছে।
আজকের দিনে নবিজী
বেঁচে থাকলে তার
মুমিনরা তাকে
এধরনের মহৎ কাজ করার
জন্য নোবেল দিতেন।
@আবুল কাশেম,
আচ্ছা আপনার লেখা কি অন্য ব্লগে শেয়ার করা যাবে ??
@অগ্নি,
মুক্তমনার নীতি অনুযায়ী–মুক্তমনায় প্রথম প্রকাশ করতে হয়। তার পরের অবস্থা কি জানি না। মনে হয় এর পর অন্য কোথাও শেয়ার করা যেতে পারে।
আমি মুক্তমনার নীতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই লিখলাম। এই নীতি ভাল না মন্দ তা জানি না।
হাঁ, ভবঘুরের অভাব অনুভব করছি।
অবশ্য ভবঘুরে মাঝে মাঝে নিখোঁজ হয়ে যান। এর পর এটম বোমা নিয়ে আবির্ভূত হন। আমার মনে হয় উনি কোন পারমানবিক বোমা তৈরিতে ব্যস্ত। উনার আগের বোমার আঘাতে মৌলবাদিরা কুপোকাত হয়ে গেছে।
@আবুল কাশেম,
ভবঘুরে পরবর্তি প্রজন্মের আবুল কাশেম, সৈয়দ কামরান মির্জা, মোহাম্মদ আসগর, আলী সিনা, এম এ খান। পরবর্তি প্রজন্মের WMD!
সিরিজটা অনেক ভাল হয়েছে।তবে অনেকদিন হলো ভবঘুরের কোন লেখা পাচ্ছিনা।না জানি কি হইল মৌলবাদীদের কোপানলে পড়লনাটো আবার???
লেখককে ধন্যবাদ কষ্টকর অনুবাদকর্মের জন্য। লেখাটা আগামী সংখ্যাতে শেষ হবার পর সম্পূর্ণ লেখাটা ই-বুক (পিডিএফ) হিসেবে প্রকাশ করা যেতে পারে। তাহলে আমরা অফলাইনে অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারব।
@মুক্ত,
হাঁ, আপনার প্রস্তাবটা ভাল। আশা করি মুক্তমনা কতৃপক্ষ এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করবেন।
আপনাকে ধন্যবাদ ধৈর্য নিয়ে পর্বগুলো পড়েছেন।
মনে হছে আকাশের ওনটোরালে কেউ আছেন
আবুল কাসেম এর লেখার বাপারে এটাই বলা যায়
আর মাত্র একটা পর্ব। এই লেখাটার কষ্টকর অনুবাদকর্ম শেষ করে ফেলবেন। আগাম অভিনন্দন।
@কাজী রহমান,
অনেক ধন্যবাদ, ধৈর্য ধরে প্রতিটি পর্ব পড়েছেন।
সমস্ত প্রশংসা এম খানের, যিনি প্রচুর পরিশ্রম করে ইসলামে দাসত্বের এই বিরাট তথ্য খুঁড়ে বের করেছেন।
ইতিহাসের কালো অংশ গুলো অপ্রচারিত রয়ে গেল চিরকাল কোন যাদু বলে!
@রাজেশ তালুকদার,
একটা কারণ হতে পারে ইতিহাস ক্ষমতাসীনরা বিজেতারা লিখে। তবে এখন আর তা গোপন থাকছেনা, এখানে কিছুটা দেখুন-
httpv://www.youtube.com/watch?v=8zM_MzkLKPY&NR=1
httpv://www.youtube.com/watch?v=Jd-kDTFXgEo&feature=related
@আকাশ মালিক,
বিজেতা মানে কি?
@কাজী রহমান
শব্দটা এখানে ভুল বশত এসেছে। বাক্যটি হবে ইতিহাস বিজেতারা নয়, ক্ষমতাসীনরা লিখে।
@আকাশ মালিক,
এই ভিডিও দু’টি সত্যিই এও রচনার প্রামাণ্য চিত্র।
অনেক ধ্নন্যবাদ কষ্ট করে এই ভিডিও সংগ্রহ করেছেন।
@রাজেশ তালুকদার,
এই জনেই এই রচনার দরকার আছে।
পাঠকদের ধৈর্যের জন্য ধন্যবাদ।
আগামী পর্ব (পর্ব-১৭) হবে শেষ পর্ব।