জেনেটিক যুদ্ধাস্ত্র : একটি ধারাবাহিক পর্যালোচনা (১)
কৃত্রিম সংশ্লেষণ
প্রথমেই বলে নেয়া দরকার যে, এখন আমি যা আলোচনা করতে চাইছি তা কোন কল্প বিজ্ঞান নয় বরং খুব সহজ এবং সরল প্রাণান্তকর বাস্তবতা। বিজ্ঞানের অপব্যবহারে কি করে অকস্মাৎ কিছু অনুজীব সাক্ষাৎ মৃত্যুদূত হয়ে আবির্ভূত হয়ে একটি প্রাণচঞ্চল জনপদকে মৃত্যু উপত্যকায় পরিনত করতে পারে – তা আপনাদের সামনে তুলে ধরার এক ক্ষুদ্র প্রয়াস আমার এই লেখা। গত পর্বে , আমি প্রচলিত জৈব অস্ত্রের উপর সাধারণ কিছু ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। সেসব ধারণা কেবলমাত্র আমাদের বর্তমান এবং অতীতের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞাননির্ভর যার বাহিরে রয়েছে আরো বিস্তর এবং বিধ্বংসী বাস্তবতা যা হয়তোবা আমাদের দৃষ্টিসীমার অপর প্রান্তে অবস্থান করছে। আনবিক জীববিজ্ঞান (Molecular Biology) এবং বায়োমেডিক্যাল গবেষণার দ্রুত উন্নতি আমাদের সামনে কল্যাণকর জীবনের দুয়ার উন্মোচন করার পাশাপাশি সৃষ্টি করেছে নিত্য নতুন ভু-রাজনৈতিক ও সামরিক চ্যালেঞ্জ এবং জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি। জেনিভায় ৭ই ডিসেম্বর , ২০১১ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারী ক্লিনটন জৈব অস্ত্র কনভেনশনের উপর অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন :
“The emerging gene-synthesis industry is making genetic material widely available. This obviously has many benefits for research, but it could also potentially be used to assemble the components of a deadly organism.”
“A crude but effective terrorist weapon can be made by using a small sample of any number of widely available pathogens, inexpensive equipment, and college-level chemistry and biology,”
“Less than a year ago, al Qaeda in the Arabian Peninsula made a call to arms for, and I quote, ‘brothers with degrees in microbiology or chemistry to develop a weapon of mass destruction.'”
Remarks at the 7th Biological and Toxin Weapons Convention Review Conference
অর্থাৎ সামান্য কলেজ পর্যায়ের ছাত্রের রসায়ণ ও জীব বিজ্ঞানের জ্ঞান দিয়েই সাধারণ গবেষণাগারে কার্যকর জৈব অস্ত্র উৎপাদন করা সম্ভব। কিন্তু মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী যা বলেননি তা হলো, যুক্তরাষ্ট্র , রুশ প্রজাতন্ত্র , বৃটেন এবং জার্মানীর মত রাষ্ট্রের বিলিয়ন ডলার মূল্যের সরকারী সামরিক গবেষণাগার সমূহে কর্মরত পোস্ট ডক্টোরাল গবেষকেরা তাহলে কি উৎপাদন করতে সক্ষম ? কিছু উদাহরন দেয়া যাক যাতে পাঠকেরা হয়তোবা নিজেরাই এর উত্তর খুঁজে নিতে সক্ষম হবেন।
আমরা জানি যে , অত্যন্ত মরণঘাতী ও সংক্রামক অনুজীব সহজলভ্য নয়। এসব অনুজীবের পরিবহন এবং গবেষণার ব্যপারে নানা রকম সরকারী বিধি নিষেধ বলবৎ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে গুটি বসন্তের জীবাণু ভারিওলা ভাইরাসের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৮০ সালে গুটি বসন্ত পৃথিবী হতে নির্মূল হয়েছে বলে ঘোষণা দেয় এবং সারা পৃথিবীতে কেবলমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রুশ প্রজাতন্ত্রের দুটি গবেষণাগারে এই ভারিওলা ভাইরাস উচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সংরক্ষিত আছে। বলাই বাহুল্য যে, এমতাবস্থায় অন্য কারো পক্ষে গুটি বসন্তের ভাইরাসের মজুদ হস্তগত করা এক রকম অসম্ভবই বটে। কিন্তু সমসাময়িককালে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং তথা আনবিক জীব বিজ্ঞানের ব্যপক অগ্রগতির ফলে , এ ধরনের অনুজীবের কৃত্রিম সংশ্লেষন কিংবা নতুন কম্বিনেশনের অনুজীবের উৎপাদন খুবই সম্ভব। কেন নয় ?
ইন্টারনেটের বদৌলতে কিছু ব্যতিক্রম ব্যতীত বেশীরভাগ জীবের জিনোম সিকোয়েন্স এখন মুহুর্তের মধ্যে সংগ্রহ করা যায়। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে ২০০২ সালে একদল গবেষক কৃত্রিম সংশ্লেষণের মাধ্যমে কৃত্রিম পোলিও ভাইরাস উৎপন্ন করেন (১) [চিত্র -১]। তারা পোলিও ভাইরাসের জেনেটিক সিকোয়েন্স ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করেন এবং সেই সাথে ৭,৫০০ বেইজ পেয়ারের ক্লোনকৃত ডিএনএ (cDNA) নমুনা অনলাইনে ক্রয় করে মেইল ওর্ডারে সংগ্রহ করেন এবং তারপর ধাপে ধাপে পোলিও ভাইরাসের সম্পূর্ণ জিনোম পুনঃনির্মাণ করেন। এর পর সেই সংশ্লেষিত ডিএনএ থেকে পুরোমাত্রার প্যাথোজেনিক গুনসম্পন্ন পোলিও ভাইরাস উৎপন্ন করা হয় । একই ভাবে ক্ষুদ্র ডিএনএ সিকোয়েন্সের নমুনা ব্যবহার করে অন্তত পাঁচ রকমের ভাইরাসের কৃত্রিম সংশ্লেষন সম্ভব যেগুলো জৈব অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারযোগ্য। এর মধ্যে রয়েছে , ইবোলা ভাইরাস, মারবুর্গ(Marburg) ভাইরাস এবং ভেনেজুয়েলান একিনা এনসেফালিতিস ভাইরাস (Equine Encephalitis) ।
চিত্র ১ : পোলিও ভাইরাসের কৃত্রিম সংশ্লেষণ।
এখন সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে পোলিও ভাইরাস যদিও জৈব অস্ত্র হিসেবে তেমন কার্যকর নয়, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির এই পরীক্ষা থেকে অন্তত অনুমান করা যায় যে, জেনেটিক ইনঞ্জিনিয়ারিং ব্যবহার করে কি রকম ফলাফল অর্জন করা সম্ভব। কৃত্রিম সংশ্লেষণ পদ্ধতি ব্যবহার করে গুটি বসন্তের জীবাণু ভারিওলা ভাইরাস তৈরী সম্ভব হলে দৃশ্যপট বদলে যাবে কেননা আদর্শ জৈব অস্ত্রের সব রকম গুনাগুন গুটি বসন্তের মাঝে বিদ্যমান । এটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে এবং এর কার্যকর প্রতিষেধক এখনও তৈরী হয় নি। এরকম কাজে খরচ কত হতে পারে বলে অনুমান করুন ! মাত্র এক মার্কিন ডলার খরচ করে ২০,০০০ বেইজ পেয়ারের একটা ডিএনএ অনু সংশ্লেষণ করা সম্ভব। হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে খরচ পড়বে কয়েক সেন্ট এবং ইবোলা ভাইরাস সংশ্লেষণে খরচ হবে মাত্র কয়েক ডলার। কিন্তু গুটি বসন্তের ভারিওলা ভাইরাসের জিনোমে রয়েছে প্রায় দুই লক্ষাধিক (২০০,০০০+ ) বেজ পেয়ার যা সংশ্লেষণ করা বেশ সমস্যা সংকুলই বটে ! তবে এর সমাধানও আছে যা আগামী পর্বের জন্য তুলে রাখলাম। (চলবে)
তথ্যসূত্র :
(১) Cello, J., Paul, A.V. & Wimmer, E. (2002) Chemical synthesis of poliovirus cDNA: generation of
infectious virus in the absence of natural template.
Science, 297, 1016–1018.
@সংশপ্তক,
স্মল পক্স ভাইরাসটি ইরাডিকেটেড হয়েছে, সুতরাং রুটিন কোন ভ্যাক্সিনেশন এর কারনই নেই। যারা এই ভ্যাক্সিন নিয়েছে তারা জানে কি যন্ত্রনার এই ভ্যাক্সিনটি। স্টক পাইল করা আছে, সিডিসিতে।
এছাড়া ইনকিউবেশন পিরিওডে স্মল পক্স কিন্তু ছোয়াচে না:
স্মল পক্স ইরাডিকেশন হয়েছে ১৯৭৭ সালেই, ১৯৮০ সালে WHO যা ঘোষনা দেয়। আপাতত এটাই একমাত্র সংক্রামক ব্যাধি যার বিরুদ্ধে মানুষ জিতেছে (এই তালিকায় এখন নাম লেখানোর অপেক্ষায় আছে পোলিও এবং মীজলস) ; এই জয়ের কারন কিন্তু ভাইরাসটির কিছু বৈশিষ্ট আর আমাদের কিছু বৈশিষ্ট, প্রথমত, এর বিরুদ্ধে খুবই স্টেবল একটি ভ্যাক্সিন ছিল, সারা পৃথিবীব্যাপী রাজনৈতিক সদিচ্ছা আর ফান্ড ছিল; আর ভ্যারিওলা যে বৈশিষ্টগুলো আমাদের সাহায্য করেছে তা হলো মানুষ ছাড়া এর আর কোন হোষ্ট নেই, এটি কোন সুপ্ত বা লেটেন্ট ইনফেকশন করেনা এবং এর যে ইনকিউবেশন পিরিওড সেই সময় এটি ছোয়াচে না ( এই ১০ থেকে ১৪ দিন); এই রোগ ছড়ায় না। এই বৈশিষ্টটা এই ভাইরাসকে ইরাডিকেট করতে সহজ করেছে আমাদের জন্য। এটি খানিকটা ছোয়াচে হয় যখন উপসর্গ শুরু হয় ( ২-৪ দিন) আর সবচেয়ে বেশী ছোয়াচে হয় যখন রোগীর গায়ে গুটি বা র্যাশ বের হয়; ভাইরাসটি ছড়াতে বেশ দীর্ঘ সময় ফেস টু ফেস কনটাক্টের প্রয়োজন হয়; রোগটি এই বৈশিষ্টটিও আমাদের ভাইরাসটিকে হারাতে সাহায্য করেছে, কারন উপসর্গ শুরু হলে রোগী শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে, সুতরাং রোগ ছড়ানোটা ঘটে খুব কাছাকাছি (হাউসহোল্ড কন্টাক্ট); মানুষদের মধ্যে, সাধারনত ড্রপলেট এর মাধ্যমে শ্বাসনালী দিয়ে, এছাড়া ডাইরেক্ট কনট্যাক্টও ঘটে।
আর এর মৃত্যুর হার ২০ থেকে ৩০ শতাংশ (Variola major) আর ১ শতাংশ (Variola minor);
স্মল পক্স ইরাডিকেশ ক্যাম্পেইনের সময় একটা স্ট্রাটেজী ছিল, যখনই কোন খরর আসতো কোনখানে একজন গুটি ওঠা বসন্তে রোগী দেখা গেছে, তখনই সেই রোগীকে ঘিরে এর চারপাশের সবাইকে একটা বলয় করে টীকা দেয়া হতো। এদের মধ্যে যদি কেউ ইনক্যুবেশনে থাকতো তারাও পেত, কারন এই টীকা দেখা হয়েছে রোগের তীব্রতাও কমিয়ে দিত।
বেস সিকোয়েন্স বদলে তৈরী করা হয়তো সম্ভব তাত্ত্বিকভাবে, কিন্তু প্র্যাকটিক্যালী ভাইরাসের প্যাকেজিং অনেক জটিল ( Variola major তো বটেই) , প্যাথোজেনিক জীন ইনকর্পেোরেট করেই কোন ভাইরাসকে ইনফেকশাস করে তোলাটা প্র্যাকটিক্যাল । (যেমন যেটার মাধ্যমে ভেক্টর ভাইরাসে টার্গেট ভাইরাস নির্দিষ্ট প্রোটিন তৈরী জীণ ইনকরপোরেট করে ভ্যাক্সিন বানানো হয়।)বার্ড ফ্লুর জন্য প্রথমত একটা রিসেপ্টর জীন লাগবে সেটা আমাদের মিউকোসাল রিসেপ্টরের সাথে ভালোভাবে যুক্ত হবার জন্য। এর পর যদি কোন কো ইনফেকটিং ফ্লু ভাইরাস থাকে, তাহলে তো কথাই নেই। এখানে পুরো জীন সোয়াপিং এর কোন প্রয়োজন নেই।
স্মল পক্সের বিরুদ্ধে কার্যকরী ভ্যাক্সিন আছে। প্রথম বিশ্বের অনেক দেশই তাদের নাগরিকদের সবার জন্য ডোজ স্টকপাইল করা আছে ( যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে নিশ্চিৎ); কৃত্রিম সংশ্লেষনের মাধ্যমে পুরো ভ্যারিওলা ভাইরাস তৈরী করা লাগবে না, শুধু কিছু নির্দিষ্ট জীন তৈরী করে সেটা অন্য পক্স ভাইরাসে ইনসার্ট করে দিয়ে কাজটা করা সম্ভব। এ কারনে স্মল পক্স খুবই হাইলী রেগুলেটেড।
বড় ক্ষতি করতে পারে এমন অনেক ভাইরাসই পিএল ৩/৪ ল্যাব ছাড়া হ্যান্ডল করা যায়না, এটা একটা বড় বাধা এ ধরনের কোন অশুভ উদ্যোগের। আরো বেশ কিছু রেগুলেশন এটা ঠেকাতে পারে। এর আগে ল্যাবে এধরনের পোটেনশিয়াল ভাইরাস যেটা তৈরী করা হয়েছিল সেটা ১৯১৮/১৯ এর স্প্যানিশ ফ্লুর সেই ভয়ঙ্কর ইনফ্লুয়েন্জা ভাইরাস (H1N1); এর প্যাথজেনিক জীনটা সাধারন ফ্লু ভাইরাসের মধ্যে ট্রান্সফার করার মাধ্যমে এটি আরো ভয়ানক হয়ে উঠেছিল।
এ কারনেই বর্তমানে (২০১১/১২ সালে) দুটো টীমের আরেকটি পোটেনশিয়াল ফ্লু ভাইরাস (বার্ড ফ্লু) নিয়ে গবেষনা প্রকাশ থেকে আটকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট সরকার। কারন এই মুহুর্তে বার্ড ফ্লু (H5N1)মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানোর মত ক্ষমতা অর্জন করেনি। এই গবেষকরা শুধু কিছু জীন সিকোয়েন্স যোগ করার পরই সেটা এক্সপেরিমেন্টাল স্তন্যপায়ীদের মধ্যে সহজে বিস্তার লাভ করেছে, এই সিকোয়েন্সটা প্রকাশ করার উপর এমবার্গো দেয়া আছে, আপাতত, কারন এটার অপব্যবহার হতে পারে, কৃত্রিম সংশ্লেষন প্রক্রিয়ায় (অবশ্য বিষয়টা তর্কসাপেক্ষ); আপাতত H5N1 এশিয়ায় ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক উপায়ে এই মিউটেশনগুলো সংগ্রহ করছে, পরবর্তী প্যানডেমিকের অপেক্ষায়। আর এই সুযোগে এটাকে কন্ট্রোলে রাখার চেষ্টা হচ্ছে যতদিন না কার্যকরী ভ্যাক্সিন রেডী না হয়। প্রাচীন কাল যদি বাদ দেই (তখন জীবানু অস্ত্র ব্যবহারের নজির আছে বড় স্কেলে) আধুনিক সময়ে বায়োলজীক্যাল উইপন গ্রেড জীবানু অনেক কাজ করেছিল একসময়ে বর্ণবাদী দক্ষিন আফ্রিকার কিছু বিজ্ঞানী, তাদের এগুলো টেষ্ট করার পরীক্ষা শুনলে শিউরে উঠতে হয়।
@কাজী মাহবুব হাসান,
নেইটোভুক্ত দেশগুলোতে এখন পর্যন্ত গুটি বসন্তের কোন রূটিন ভ্যাক্সিনেশন প্রোগ্রাম (সামরিক অথবা বেসামরিক) নেই। এর কারন স্বাভাবিক এক্সপোজার নেই। এখন ভারিওলা মেজরের ইনকিউবিশন পিরিয়ড প্রায় দু সপ্তাহ পর্যন্ত স্হায়ী হতে পারে কোন রকম সিমটম ছাড়াই , যে কারনে চিহ্নিতকরণ ছাড়াই এই সময়ের মধ্যে বিশাল জনগোষ্টী আক্রান্ত হতে পারে। ভ্যাক্সিনবিহীন জনগোষ্টিতে মৃত্যুর হার প্রায় ৫০% যা ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ঘটে। এছাড়া সামরিক গবেষণাগারে গুটিবসন্তের স্ট্রেইন তৈরীর কাজের নজীর আছে যা প্রক্সি মিলিশিয়াদের দিয়ে ব্যবহার করা সম্ভব।
পশু বসন্তের ভাইরাসে বাইরের জিন ইনসার্ট না করে যে বেইজ এবং সিকোয়েন্স সমূহ মানব গুটিবসন্ত থেকে ভিন্ন , সেগুলো বদলে দিয়ে স্ট্রেইন তৈরী করা যায়। বার্ড ফ্লুর ব্যপারেও একই কথা খাটে। আসল সমস্যা হচ্ছে যে , এসবে কোন সরকার জড়িয়ে পড়ে কি না !
যথারীতি ‘মুক্তো মানিক্য’ লেখা! আর বন্যা আপার সাথে একমত। পরবর্তী পর্ব আনতে খুব বেশি দেরী না করার অনুরোধ থাকল সংশপ্তক ভাইকে। (F)
@কাজি মামুন,
সময় ব্যয় করে পাঠের জন্য ধন্যবাদ। পরবর্তী পর্ব প্রকাশের ক্ষণে ‘সময় ভ্রমন’ প্রযুক্তি ব্যবহার করব যাতে করে অতি শীঘ্র আপনারা পাঠ করতে পারেন। (O)
খুব কম জানি বা জানাটা ভাসা ভাসা বলে; কুন্ঠা। আপনার লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে, সমাজ-জীবনে যে মতাদর্শগত লড়াইটা চলছে; তাকে তার মত চলতে না দিয়ে বিজ্ঞানের ব্রহ্মাস্ত্রগুলো প্রয়োগের মাধ্যমে তার সমাধান অর্থাৎ মানুষকেই হাওয়া করে দেয়া।
কয়েকদিন আগে পত্রিকায় পড়লাম, রাশিয়া এমন অস্ত্র বানিয়েছে, যা দিয়ে মানুষের বুদ্ধি-নাশ করে দেয়া সম্ভব।
তা’হলে তো প্রাণঘাতী অস্ত্রের প্রয়োজন নেই। রাষ্ট্রের পছন্দ হলো না, বুদ্ধি-নাশ ছেড়ে দিলেই হলো।
সম্ভাব্য, কি কি হতে পারে, আর কি কি হচ্ছে; অল্পকথায় বলেছেন।
সম্ভাব্য একদিনের রাতের ঘুম মাটি, তাই মন্তব্যে নিরব। দিবাভাগে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত, আশা করছি রাতের অন্ধকারে নিশ্চিন্ত মনে ঘুমুতে পারবো।
বুঝা যাচ্ছে চারদিকে নানান রকম ঘুম পাড়ানি মাসী-পিসীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে, বেড়ে যাচ্ছে প্রতিযোগিতা।
@স্বপন মাঝি,
এমন অস্ত্র অতীতে অনেক বানানো হয়েছে যার প্রভাব হাজার হাজার বছর পরেও আমাদের চতুর্পাশে বিদ্যমান। যুক্তিহীন মতাদর্শে আসক্তির মারাত্মক অস্ত্র আর কি হতে পারে ? জাপানীরা জাতীয়তাবাদে বুদ হয়ে কামিকাজে করেছে , তামিলরাও তাই।
সোভিয়েত নেতা ইয়োসেফ স্তালিন যেমন তার শত্রুদের বুর্জোয়া নাম দিয়ে গণহত্যা চালিয়েছে , তেমনি ইন্দোনেশীয়ার জেনারেল সুহার্তো তার শত্রুদের সমাজবাদী বিপ্লবী নাম দিয়ে শ্বেত হত্যাযজ্ঞে বলিদান করেছে। এরকম উদাহরন আরো আছে। সমসাময়িক আল- কায়দার সন্ত্রাসীরা এসবেরই ধারাবাহিকতা।
ধর্ম এবং রাজনৈতিক মতাদর্শ তাই স্থান এবং কালভেদে যে কোন অস্ত্রের চেয়ে অধিকতর মরণঘাতী হওয়ার ক্ষমতা রাখে। এজন্য বিশ্ব শান্তি এবং মানব অস্তিত্ব রক্ষাকল্পে যুক্তিবাদী চেতনার উন্মেষ প্রয়োজন।
@স্বপন মাঝি,
এই সব অস্ত্র তো হাজার বছর আগেই আবিস্কার হয়েছে। এতে রাশিয়ানদের কোন কৃতিত্ব নেই। কৃতিত্ব দিতে হয় বেদ, বাইবেল, মনুসংহিতা, কোরান লেখকদের। এই সবের চাইতে মারাত্মক বুদ্ধিনাশক অস্ত্র আজ পর্যন্ত কেউ আবিষ্কার করেনি…করতে পারবে না।
এই সব ধর্মগ্রন্থই যে কোটি কোটি মানুষের বুদ্ধি, কাণ্ডজ্ঞান, মানবিক চিন্তা লোপ করেছে। জৈবিক, আনবিক অস্ত্রের চাইতেও যে এইসব অস্ত্রগুলো অধিক সাফল্য লাভ করেছে তা স্বীকার করতেই হবে। এই সব অস্ত্র তৈরী করতে, ল্যাবরেটরী, বিজ্ঞানাগার, সামরিক কারখানা, টাকা পয়সা কিছুই লাগে না।
এতদিন পর দ্বিতীয় পর্ব লিখলেন!!!!! আর এত্ত ছোট। যাইহোক আবার লিখেছেন এইজন্য ধন্যবাদ।
পরের পর্ব একটু তাড়াতাড়ি দিয়েন।
@নিঃসঙ্গ,
ধন্যবাদ। পাঠক কূলের বিরক্ত সীমার নীচে থাকার মানসে অংক কষতে ভুল হওয়ায় অতি সংক্ষিপ্তাকার করে ফেলেছি। পরের পর্ব সুপরিসরাকারে নামিয়ে দেব এই লেখাটা নীড় পাতা থেকে প্রস্থান করলেই।
খুবই প্রয়োজনিয় লিখাটা আমাদের হতাশ করলো আকারে ।হতাশা দূর করুন যত তরাতরি সম্ভব ।
@মাসুদ,
কথা দিলাম আগামী পর্বে বড় ক্যানভাস নিয়ে উপস্থিত হব। পাঠের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
এটা পড়েই খূব উৎসাহে পড়া শুরু করলাম। কিন্তু এত ছোট লেখা পড়ে আশাহত হলাম।
পরের পর্ব তাড়াতাড়ি ছাড়েন।
@রনবীর সরকার,
আপনাদের আশাহত হওয়া আমার অধিক তৎপরতার চাবিকাঠি। আগামী পর্বে পুষিয়ে দেব বলে সংকল্পবদ্ধ হলাম।
পঞ্চাশ হাজার বছর পর আসলেন দারুন একখানা বিজ্ঞান লেখা নিয়ে। ভয় দেখানোর জন্য আর এই রকম একটা লেখা পড়বার জন্য সুযোগ করে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
ভয়ের কথা, খুবই ভয়ঙ্কর ব্যাপার। জিহাদীরা এইগুলার ল্যাঞ্জা না পাইলেই হয়।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম (O)
@কাজী রহমান,
‘বিজ্ঞান’ নিয়ে লিখতেই এত দেরী হয়ে গেল। ভালো লেগেছে জেনে আমিও আনন্দিত। 🙂
মানুষের নিরাপত্তা সত্যি এখন বেশ হুমকির মুখে। কিভাবে এই সব নিয়ন্ত্রিত হতে পারে কেউ জানে না। লেখটা পড়ে অনেক তথ্য সমৃদ্ধ হলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
@শাখা নির্ভানা,
নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন। যে জ্ঞান দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচানো হয়, সে জ্ঞানকে নিয়ন্ত্রণ করার আগে অনেক ভাবনা চিন্তার অবকাশ রয়েছে।
@সংশপ্তক,
যখন বিজ্ঞান বিষয়ে তোড়ে লিখতে থাকেন অনেকেই , সমাজবিজ্ঞানের , মনোজগতের উপস্থিতি কে বড় কাঙ্গাল মনে হয় কেননা অনেকেই এর অস্তিত্ত্ব মানতে কার্পন্য করেন। অথচ দেখুন বেলা শেষে আমরা কিন্তু সবাই নতজানু বোধের কাছেই।
@কেয়া রোজারিও,
বিজ্ঞানের জন্ম মহাদেশীয় দর্শনের গর্ভ হতে যার অন্যতম ভিত্তি স্তম্ভ যুক্তিবিদ্যা । বিজ্ঞানের দর্শন সামাজিক কল্যানবোধকে অস্বীকার করা নয় বরং যুক্তির আলোকে সামাজিক কাঠামোর পুনর্বিন্যাস সাধন করাকে উৎসাহিত করে । যে বিজ্ঞান মানব অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয় তাকে ‘কৃষ্ণ বিজ্ঞান’ বলাই শ্রেয়। সময় ব্যয় করে এই লেখা পাঠের জন্য ধন্যবাদ।
@সংশপ্তক, উৎসাহি পাঠকদের এভাবে ঠাকানোটা কি ঠিক? জমে উঠতে শুরু করার সাথে সাথেই মনে হল ফ্ট করে শেষ হয়ে গেল, এরকম কিপ্টেমি করে লেখা উচিত না। খুবই মজার একটা বিষয়, আশা করি আগামী পর্বের জন্য আবার ৭ মাস বসে থাকতে হবে না।
এক ডলার খরচের হিসেবটা ঠিক বুঝলাম না, অনলাইনে ক্রয় করতে কি এক ডলার লেগেছিল? কিন্তু জিনোম পুনঃনির্মাণ করতে যে শ্রম এবং মেধা ব্যয় করতে হয়েছে সেটারও তো একটা মূল্য আছে।
@বন্যা আহমেদ,
অনলাইনে এটা বিনা পয়সাও পাওয়া যাবে ‘পরিস্হিতি ভেদে’।এক ডলার খরচ হয়েছে একটা ডিএনএ অনু তৈরী করতে যার ক্লোনিং থেকে মাস প্রডাকশন সম্ভব। শ্রম মেধার অবশ্যই মূল্য আছে তবে নগদ টাকা খরচ হয়েছে ঐ এক ডলারই। চুরি করে সবার অগোচরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে কোন জীব বিজ্ঞানের ছাত্রের ঐ এক ডলারই খরচ পড়বে। :))
@বন্যা আহমেদ, আমি আপনার সাথে একমত।পাঠকদের এভাবে বসিয়ে রাখা ঠিক হবেনা। শীগগিরই পরের পর্ব দেখতে চাই ।
@মাসুদ রানা,
শীঘ্রই পরের পর্ব আরাম করে আপনার ‘আই প্যাডে’ পড়তে পারবেন- এই প্রতিশ্রুতি দিলাম।