শচীন সেঞ্চুরি করলেই ইন্ডিয়া হারে, এরকম একটা ধারণা ক্রিকেট এর দর্শক দের মধ্যে রীতিমত প্রবাদ বাক্যে পরিণত হয়েছে। আমি নিজেও বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া খেলার দিন ফেসবুক এ একটা স্ট্যাটাস আপডেট করেছিলাম, “লিটল মাস্টার কে জানাই শ্রদ্ধা আর শুভেচ্ছা। সেই সাথে চাই লোক মুখে যে গল্প শোনা যায় যে টেনডুলকার সেঞ্চুরি করলে ইন্ডিয়া হেরে যায়, এইটা আজ সত্যি হোক।”
গত ১৫ বছর ধরে ক্রিকেট খেলাটা দেখছি বলে আমার জীবনে ক্রিকেট একটা বড় অংশ। এই দীর্ঘ সময়ে ইন্ডিয়া কে কখনই সমর্থন করেছি বলে মনে পরেনা। এর অন্যতম কারণ বোধ হয় আমার বড় ভাই। বড় ভাই ঘোর ইন্ডিয়ান সমর্থক হবার কারণে ইচ্ছে করেই সব সময় ভারত বিরোধিতা করতাম। কিন্তু এই টুকু অনেক আগে থেকেই বুঝে গেছি, যে দল ই সমর্থন করিনা কেন, শচিন এর ব্যাটিং ভালো না লাগলে, মানুষ শচিন কে শ্রদ্ধা করতে না পারা ভালো লক্ষণ নয়। কিন্তু এত বড় মাপের ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করলেই দল হেরে যাবে, এইটা কেমন কথা? কত টুকুই বা সত্য এই কথা?
বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করল লিটল মাস্টার, এর মধ্যে ৫১ টি টেস্ট সেঞ্চুরি, আর ৪৯ টি ওয়ানডে সেঞ্চুরি। শচীন সেঞ্চুরি করলেই হারবে ইন্ডিয়া, এইটা এতটাই জনপ্রিয় তত্ত্ব, আমি ভেবেছিলাম কমপক্ষে ৭০ ম্যাচেই বোধ হয় ইন্ডিয়া হেরেছে। নেট ঘাটাঘাটি করে দেখলাম সংখ্যা টা এর ধারে কাছেও নেই। ওয়ানডে তে ৪৯ সেঞ্চুরি এর মধ্যে ইন্ডিয়া হেরেছে ১৪ টি তে, ৩৩ টি জিতেছে, ১ টি তে কোন ফলাফল আসেনি আর বাকি ১ টি টাই। টেস্ট এ ইন্ডিয়া ৫১ সেঞ্চুরি এর মধ্যে ইন্ডিয়া জিতেছে ২৩ টি, হেরেছে ৮ টি, ড্র করেছে ২০ টি। আর একটু সহজ করে বললে,শচীন সেঞ্চুরি করলে ৭৩ ভাগ সময়ে ইন্ডিয়া ওয়ানডে জিতে।
তবে এইটা সত্য, অন্যান্য গ্রেট ব্যাটসম্যানদের সাথে তুলনা করলে এই পরিসংখ্যান একটু ম্লান হয়ে যায়। নিচে অন্য গ্রেট ব্যাটসম্যান দের সেঞ্চুরি সংখ্যা এবং তাদের ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরির সংখ্যা দেয়া হলঃ (শুধু ওয়ানডে)
নাম | সেঞ্চুরি সংখ্যা | ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি সংখ্যা |
সানাথ জায়াসুরিয়া | ২৮ | ২৪ |
রিকি পন্টিং | ২৯ | ২৫ |
সৌরভ গাঙ্গুলি | ২২ | ১৮ |
ব্রায়ান লারা | ১৯ | ১৬ |
অ্যাডাম গিলক্রিসট | ১৬ | ১৬ |
হারশেল গিবস | ২১ | ১৫ |
সাইদ আনোয়ার | ২০ | ১৬ |
কিন্তু মনে রাখতে হবে, লারা আর গাঙ্গুলি বাদ দিলে এই সব গ্রেট ই আসলে এমন দলে খেলত, যাদের বোলিং আক্রমণ বেশ দুর্ধর্ষই বলা যায়। গাঙ্গুলি এমন সময়ে খেলেছে, যে সময় ইন্ডিয়া দলে শ্রীনাথ, কুম্বলে, জাহির খানরা খেলেছে। কিন্তু গত ২ বছরে জাহির খান বাদে আর এমন কেউ কি আছে যার কথা ভেবে ব্যাটসম্যানের ভয় লাগতে পারে? এমন একটা দলের হয়ে সেঞ্চুরি কেন, ডাবল সেঞ্চুরি করেও নিশ্চিত হওয়া মুশকিল জয়ের ব্যাপারে।
আর পরিসংখ্যান যা বলবেনা তা হল, কি রকম ভয়াবহ চাপ নিতে হয় শচীন কে। সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করার পর ও দেখলাম ইন্ডিয়ার মানুষ গালাগালি করছে শচীন কে। কারণ আর কিছুই না, শচীন অনেক বল খেলে ফেলেছে সেঞ্চুরি করতে গিয়ে। কিন্তু অন্য রা কি করেছে দেখেন? কহলি ও তো অনেক ধীরে সুস্থে খেলল। আসল কথা হচ্ছে বাংলাদেশ অপেক্ষাক্রীত ভালো বল করেছে, এই সত্য ইন্ডিয়ার মানুষের হজম করতে একটু সমস্যা হচ্ছে মনে হয়। তবে ৮০ রান করার পর শচীন বাকি ২০ রান করতে দৃষ্টিকটু রকমের সময় নিয়েছে, এইটা সত্য। এত বড় মাপের ব্যাটসম্যান হয়েও তাকে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরি করার চাপ শামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। এই চাপ যতটা না তার নিজের সৃষ্টি, তার চেয়েও বেশি মিডিয়া বা দর্শকদের সৃষ্টি। আর আসল কথা হল, ইন্ডিয়া তো শেষ মেষ ২৯০ টার্গেট দিল। বাংলাদেশ যদি জিমবাবুয়ের সাথে ২৮৯ না সামলাইতে পারত, দোষ কি আমাদের ব্যাটসম্যান দের হত? যে দল এ একটাও স্ট্রাইক বোলার নাই, সেই টিমের পরাজয়ে শচীন একটা উছিলা মাত্র। ইন্ডিয়ার পরাজয়ের কারণ অবশই বোলাররা। ৩১০ টার্গেট দিলেও আমাদের ব্যাটসম্যান দের অ্যাপরচ ও অন্য রকম হত।
শচীনের কথা শেষ করি শচীন কে নিয়ে টাইম্স ম্যাগাজিন এর একটি উক্তি দিয়ে-“শচীন যখন প্রথম বারের মত পাকিস্তানের দুর্ধর্ষ বোলিং মোকাবিলা করতে সে পাকিস্তান সফরে গেল, তখন ও মাইকেল শুমেখার তার প্রথম পেশাদার রেস শুরু করেন নি, ল্যানস আর্মস্ট্রং তখন ও টুর ডি ফ্রান্স এ যাননি, ম্যারাডোনা তখন ও আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের অধিনায়ক, পিট সাম্প্রাস তখন পর্যন্ত কোন গ্র্যান্ড স্লাম জিতেন নি।
শচীন যখন প্রথম বারের মত ইমরান খান & কো . কে সামলাচ্ছিল, আমরা কেউ ই তখন ও রজার ফেদেরার এর নাম ও শুনিনি, মেসি তখন ও তার ডায়াপার ছাড়েননি, উসাইন বোল্ট ছিলেন জ্যামাইকার এক অপিরিচিত বালক। তখন ও এই পৃথিবী তে বার্লিন ওয়াল বলবত ছিল, সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল এক বিশাল দেশ।”
শচীনের নামে কিছু বলার আগে আমি এই উক্তি টি মনে রাখার চেষ্টা করি। চিন্তা করে দেখুন, পৃথিবীর কত কিছুই পরিবর্তন হয়েছে, বদলায়নি শুধু শচীনের নিয়মিত রান করে যাওয়া।
অনেক্ষন শচীন শচীন করলাম, এখন একটু আমাদের সাকিব, মুশফিক দের নিয়ে কথা বলি। আজ আমরা সবাই সাকিব সাকিব করে পাগল হয়ে যাচ্ছি, কিন্তু আমার বেশ মনে আছে এই সাকিবের আচরণ নিয়েই অনেক মানুষ কে চিন্তিত হতে দেখেছিলাম। যাই হোক, উপমহাদেশে খেলাধুলার এই বিষয় টা আমি বুঝিনাই, সবাই দেখি খেলোয়াড় দের আচরণ নিয়ে চিন্তায় হয়রান। যতক্ষণ একটা প্লেয়ার এর পারফরম্যানস আছে, এই সব আচরণের ধুয়া তুলে কাও কে বাদ দেয়ার প্রশ্নই আসেনা। ক্যাপ্টেন আর কোচ এর আসল কাজ খেলোয়াড় দের খেলা শেখানো না, বরং তাদের মানেজ করাই এক নম্বর কাজ। একজন প্লেয়ার এর কাছে থেকে কিভাবে শত ভাগ বের করে আনা যায়, সেই টাই তাদের কাজ। বয়সে খুব এ তরুন এসব প্লেয়ার রা তো ছোট খাটো ভুল ২-১ টা করবেই, তাই বলে আমরা যেমন গেল গেল, সব গেল ভাব ধরি, সেইটা কত টুকু যুক্তিযুক্ত? আপনি চিন্তা করুন, আপনি নিজে সাকিব, তারপর নিজের প্রতি খুব সৎ হয়ে একটা প্রশ্নের উত্তর দিন, ‘আপনি কি সাকিবের চাইতে আর ও ভালো ভাবে এত খ্যাতি সামলাইতে পারতেন?’ ক্রিকেট মাঠে আমি সাকিব এর মত এত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বাংলাদেশের খেলোয়াড় খুব কম ই দেখেছি। এই দেশের সবাই যদি যে যে পেশা তে আছে, সবাই যদি সেই পেশা তে সাকিব এর মত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হত, তাইলে এই দেশের অধিকাংশ সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।
সব শেষে বলি, লোটাস কামালের কথা। আমাদের দেশে দেশ ইন্ডিয়া/পাকিস্তান এর কাছে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে, এই তত্ত্ব সাধারণ মহলে জনপ্রিয় হইলেও, লোটাস কামাল সত্যি সত্যিই ক্রিকেট এর ক্ষেত্রে পিসিবি কে অনুসরণ করার চেষ্টা করছে। সাকিব কে প্রায় বিনা কারণে অধিনায়ক থেকে বাদ দেয়ার পর এই কয়দিন আগে মুশফিক কেও বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র করছিল। নিতান্তই কোন বিকল্প না থাকায় আর তামিম ইকবাল ইস্যু তে অনেক ঝামেলা হওয়াতে আর সাহস হয়নি এসব করার। এমন এক কারণে মুশফিক কে বাদ দেয়ার চিন্তা করছিল যে হাসতেও কষ্ট হয়। বিপিএল এর বাজে বেবস্থাপনা নিয়ে মন্তব্য করার কারণে, সেমি ফাইনাল এর দল গুলো নিয়ে নাটকের পর যেইটা আসলে বলা আর না বলা এক ই কথা, একজন ক্যাপ্টেন কে কিভাবে সরিয়ে দেবার দুঃসাহস দেখাইতে পারে এইটাই আমি ভেবে পাইনা। আমার প্রশ্ন হল, এই একটা খেলা, যেইটা নিয়ে আমরা একটু উল্লাস করতে পারি, সবাই মিলে আনন্দ মিছিল করতে পারি, সেই খেলা টি কি রাজনীতি মুক্ত রাখা যায়না? বাংলাদেশের কোন সরকার এর কাছে থেকেই এই আশা করা হয়ত দুরাশা, তাই শেষ আশা বোধ হয় আইসিসি। খুব করে চাই, আইসিসি এমন কোন নিয়ম করে দিক যাতে আমরা বাধ্য হই ক্রিকেট বোর্ড কে রাজনীতি মুক্ত রাখতে।
আর এত সীমাবদ্ধতা আর ষড়যন্ত্রের মধ্যেও তাদের আসল লক্ষ্য ভুলে না গিয়ে এরকম অবিস্মরণীয় জয় উপহার দেয়ার জন্য চিরকৃতজ্ঞ থেকে যাব আমাদের সাকিব, তামিম, নাসির, মুশফিক দের কাছে। আশা করছি শ্রীলঙ্কা কে হারিয়ে ফাইনাল খেলবে বাংলাদেশ।
ফাইনালটা মাত্র ২রানে হেরে গেলাম,উত্তেজনায় হার্ট অ্যাটাকের অবস্থা হয়েছিলো। তবে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে এত সমীহ আর প্রশংসা মনে হয় বাংলাদেশ কখনো পায়নি। ২০০৭ এ যখন ভারত আর আফ্রিকাকে হারালো তখনও মনে হয়নি বাংলাদেশ টিম ম্যাচিউরড হয়েছে,আগের জয়গুলোতে ম্যাচিউরিটির থেকে হঠাত আশরাফুল বা কোনো একজনের খুব ভালো খেলে ফেলাটাই প্রধান কারণ ছিলো। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে বাংলাদেশের cricketing sense অনেক বেড়েছে,মাথা ঠান্ডা হয়েছে,আর self-belief টা এসেছে। বাউন্সি উইকেটে ভালো করতে এখনো আমাদের সময় লাগবে তবে দেশের মাটিতে এখন আমরা নিয়মিত জিতবো আশাই করা যায়।
@রামগড়ুড়ের ছানা, তোমার কথার সাথে একমত। তারপর ও আমি আর একটি সিরিজ দেখতে চাই। নিউজিল্যান্ড কে বাংলাওয়াশ করার পর ও অনেক কেই আশাবাদী হতে দেখেছিলাম। কিন্তু সেই অনুপাতে বাংলাদেশ আবার মোটামুটি খেই হারিয়ে ফেলেছিল। তার মধ্যে আবার পরবর্তী সিরিজের আগে বেশ বড় একটা গ্যাপ। পাকিস্তানের মাটিতে না গেলে পরবর্তী খেলা টি২০ বিশ্বকাপ। যাই হোক, মনে প্রানে চাই গত ১ সপ্তাহ আমাদের দল যা খেলল, এটাই হবে আগামী দিনের স্বাভাবিক খেলা।
দেশের মাটি তে বাংলাদেশের পরবর্তী সিরিজ কার বিপক্ষে, বলতে পারো?
@রিজওয়ান,
ক্রিকইনফোর schedule এ টি২০ সার্কাসের পর আর কিছু দেয়া নাই,মনে হয় অনেকদিন কোনো সিরিজ নাই :(। নিউজিল্যান্ডের সিরিজের থেকে এটা কঠিন ছিলো এবং অনেক বেশি ভালো খেলেছে তাই আশাবাদী আমরা হতেই পারি। তবে টেস্টে ভালো না করতে পারলে সত্যিকারের ক্রিকেট শক্তি হয়ে উঠতে পারবেনা বাংলাদেশ,এদিকেও নজর দেয়া দরকার। নাসিরের খেলা দেখে মনে হলো টেস্টে ভালো করবে ও।
@রামগড়ুড়ের ছানা, ঠিক ই বলছো, নাসির টেস্ট এ ভালো করার কথা। আর অনেকেই দেখি এশিয়া কাপে বাংলাদেশের পারফরমান্স কে বিপিএল এর ফলাফল বলছে। জানিনা কত টুকু সত্য এই কথা, কিন্তু অতিরিক্ত টি২০ টেস্ট ক্রিকেট এ বারোটা বাজাতে পারে, আমি এই ভয় পাচ্ছি। বিপিএল আছে, থাক, সেই সাথে বাংলাদেশের ঘরোয়া ৪-দিনের ম্যাচ গুলোতে আরও বেশি জোর দেয়া উচিত। আর টেস্ট ক্রিকেট এর শিডিউল ও খুব বাজে, সেই কত দিন পর পর বাংলাদেশ টেস্ট খেলে, ভালো কিছু আশা করাটাই তাই বাড়াবাড়ি মনে হয়। 🙁
শচীন সম্পর্কে মূল্যায়নটা একশতভাগ সঠিক।
আর সাকিব আল আল হাসানের মতন প্লেয়ার বাঙলাদেশের ক্রিকেট আকাশে এখনও আসেনি। ভবিষ্যতের কথা তো আর বলা যায় না। 🙂
@সাইফুল ইসলাম, ঠিক ই বলেছেন, সাকিব এর মত ক্রিকেটার বাংলাদেশে এখনও আসেনি।
১৯৮৪ এর বিশবকাপ হচ্ছিলো অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে । এই প্রথম বিটিভি সরাসরি প্রচার করছিল কিছু খেলা, আমি কলেজের ছাত্র তখন। আজহারউদ্দীনের প্রথম ওয়ার্ল্ড কাপ কোমর সোজা করেও দাঁড়াতে পারে না ঠিকমত্,দুর্দান্ত ফরমে কপিল,রবি শাস্রির অমৃতা সিংহের সাথে প্রেমের রমরমা প্রচার। ইম্রান,আব্দুল কাদিরের আর রিচারডদের প্রতাপ। খুব সংগোপনে মনের গভীরে একবার ভেবেছিলাম,আহ যদি আমার বাংলাদেশ থাকত এই আসরে,তখন রকিবুল রা ইংল্যান্ডের এম।সি,সি ক্লাবের সাথে খেলত। এম,সি,সি একটি শখের ক্লাব যার সদস্যরা ভুড়ির জন্য বল নীচু হয়ে তুলতে পারত না কিন্তু রকিবুল রা গো হারা হারত।কাজেই আমার ভাবনা লজ্জায় মনের গভীরেই হারিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু… কিন্তু সেই ১৯৮৪ তে বাঁ তার পরে যাদের জন্ম সেই তামিম,সাকিব রা আজ ভারত,স্রিলঙ্কাকে হারাল। সময় লাগে। এক যাত্রায় দুই ফল হয় না। আমরা বাংলাদেশের মানুষ আমাদের বিশ্বাস কে হত্যা করি। আমাদের আস্থাকে হত্যা করি।আমাদের আদর্শকে হত্যা করি। যেভাবে আমরা হত্যা করেছিলাম আমাদের জাতির জনককে। ফলে যা হবার তা হয়েছে আমরা পঙ্গু জাতিতে পরিনত হয়েছি। আমাদের দিকে আঙ্গুল উচু করে বিশ্ববাসী করুনা করে,বলে এরা পিত্রিঘাতক জাতি।
@সপ্তক, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আশা করি এশিয়া কাপের মধ্য দিয়ে এক নতুন দিনের সূচনা হবে। অবশ্য বেক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, টেস্ট ক্রিকেট এ বাংলাদেশ কে, বিশেষ করে দেশের বাইরে অনেক দিন ভুগতে হবে। নিউজিল্যান্ড এর সাথে ৪-০ তে জেতার পর ও এরকম কিছু মনে হয়েছিল, আশা করছি ওয়ানডে তে, কমপক্ষে দেশের মাটি তে বাংলাদেশ একটা পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে। তার আগে কামনা করি পাকিস্তান কে হারিয়ে এবারের কাপ টা আমাদের ঘরেই থাকবে।
@সপ্তক, আপ্নি মনে হয় ১৯৯২’র বিশ্বকাপের কথা বলছেন যেটা অস্ট্রেলিয়া-নিঊজিল্যান্ডে হয়েছিলো। ১৯৮৩’র বিশ্বকাপ (৮৪’র নয়) হয়েছিলো ইংল্যান্ডে, ভারত ছিলো চ্যাম্পিয়ন। ১৯৮৭’র বিশ্বকাপ ভারত-পাকিস্তানে হয়েছিলো, অস্ট্রেলিয়া ছিলো চ্যাম্পিয়ন।
@ রিজওয়ান, পোস্টের সাথে পুরাপুরি সহমত। ভারতের বোলিং এটাক কপিল-মদনলালদের পরে কখনই সমীহ জাগানো ছি্লো না। ভারতের বেশিরভাগ জয়ের পিছনেই বোলারদের চেয়ে ব্যাটসম্যান্দের অবদান বেশী। শচীনের সাথে খেলা বোলারদের মধ্যে কুম্বলেই একমাত্র ব্যতিক্রম।
@হোরাস,
হাঁ ওটার কথাই বলতে চেয়েছিলাম। ভুলটা ঠিক করে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
শতভাগ একমত
@আমি কোন অভ্যাগত নই, ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরিতে যাদের নাম দিলেন, সেখানে একটা জিনিস খেয়াল করে দেখলাম। যাদের নাম আছে ওখানে এদের অনেকেই ওপেনিং ব্যাটস্ম্যান। ওপেনিং ব্যাটস্ম্যান সেঞ্চুরি করলে অন্যদের জন্য ম্যাচ জেতানো খানিকটা সহজ হয়ে পড়ে। শচীন সবসময় ওপেনিং ব্যাটসম্যান ছিলো না। অতএব, সেঞ্চুরি করেও সবসময় হয়তো দলকে জেতানো সম্ভব হয়নি।তবে, যেভাবেই বলা হোক না কেন, যে সূত্রই প্রয়োগ করা হোক না কেন, সে একজন অবিশ্বাস্য প্লেয়ার।
আরেকটা জিনিস না বললেই নয়, শচীনের ছেলে বলেছে, সে ভবিষ্যতে শচীনের মতো হতে চায় না, ইন্ডিয়াতে ব্যাটস্ম্যান অনেক আছে। সে হতে চায় সাকিব আল হাসান এর মতো। শুনে খুব ভালো লাগলো। 🙂
@মইনুল রাজু, ভালো বলেছেন, ভাবতেই ভালো লাগে এরকম গ্রেট প্লেয়ার এর ছেলে আমাদের সাকিবের মত হতে চায়। বুঝতেই পারছেন, সাকিব কোন উচ্চতায় পৌঁছে গেছেন। এরকম আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় বাংলাদেশে খুব কম ই চোখে পড়েছে। যাই হোক, ওপেনিং ব্যাটসম্যান দের নিয়ে যে মন্তব্য করলেন তা পুরোপুরি ই সঠিক। ব্যক্তিগত ভাবে আমি বর্তমানে এ বি ডি ভিলিইয়ার্স কে ওয়ানডের বর্তমান সেরা ব্যাটসম্যান মনে করি। কিন্ত আমি নিশ্চিত ও যখন অবসর নিবে, গ্রেট ব্যাটসম্যান এর আলোচনায় তার নাম খুব কম ই উচ্চারিত হবে কারণ সে নামে ৪-৫ নাম্বার এ। এত পরে নেমে ২৫-৩০ টা সেঞ্চুরি হাঁকানো মুশকিল।
”তবে, যেভাবেই বলা হোক না কেন, যে সূত্রই প্রয়োগ করা হোক না কেন, সে একজন অবিশ্বাস্য প্লেয়ার।”
সহমত। 🙂