নির্দেশ পর্ব
তাঁর বক্তব্য ছিল খুবই শর্ট কার্ট। খুবই ইংগিত ময়। কয়েকটি মাত্র শব্দঃ
‘হে মদন, উৎসর্গ কর, তোমার প্রিয় বস্তুকে’।
ব্যাস। আর কিছু নেই। কিসের উৎসর্গ, কোথায় উৎসর্গ, কিভাবে উৎসর্গ, কোন ডিটেইলস নেই। ভুতেশ্বরকে নিয়ে এই এক ঝামেলা। ক্লিয়ারকাট কিছু বলে না। কখনও আবার একই কথা বার বার বলে। কখনও একেবারে খাপছাড়া কী যে বলে বসে কিছুই বোঝা যায় না। রূপক। খালী রূপক। যে বুঝবে না সে মদনা!
উৎসর্গ তো বুঝলাম। কিন্তু কোন বস্তু? কিভাবে উৎসর্গ? কোথায়? কোন ঘোড়ার ডিম ভুতেস্বরের পছন্দ কে জানে? সে সোজাসুজি কিছু বলে না। খালী ত্যানা পেচায়। ভুতেশ্বর তেনা প্যাচানোর মাস্টার!
বউরে বললাম। বললাম- তোর গয়নাগাটিগুলান দে। ভুতেশ্বরের আদেশ। প্রিয় জিনিস উৎসর্গ করতে হবে। তাঁর কথার নড়চড় করা যাবে না। করলে মহা বিপদ। তবে কী বিপদ জানিনা।
খুবই বে-দ্বীন টাইপের মেয়ে সে। গয়নাগাটি জড় করে নিয়ে বাপের বাড়ী চলে গেল। যাবার আগে বলে গেলঃ বাসায়ই থেক। বড় ভাইয়াকে খবর দিয়েছি। তোমাকে পাবনায় নিয়ে যাবে।
বউ চলে গেল। তাঁর বড় ভাই এল। আমাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নানা প্রশ্ন করল। বিশেষ করে আমার বংশে কেউ পাগল ছিল কিনা সেটাই তাঁর মুখ্য জিজ্ঞাস্য। বললাম- না। আমার বাবা অত্যধিক জ্ঞানী মানুষ ছিলেন।
-কেমন জ্ঞানী মানুষ? –তাঁর চোখে মুখে স্পষ্ট বিরক্তি।
– তিনি পীর ছিলেন। তাঁর দেয়া পানি পড়া খেয়ে পোয়াতি হয়নি এমন নারী আমাদের অঞ্চলে নাই।
-তাই নাকি! তো তিনি তোমাকে পানি পড়ার তরিকা শিখিয়ে দেননি?
– জি না। উনার কাছে জ্বীন ছিল। আমার নেই।
-উনার পানি পড়ায় পাগল ভাল হত না? খোয়াব দেখা পাগল?
বুঝলাম তিনি আমার উপর খুব রেগে আছেন। ভুতেশ্বরে তাঁর বিন্দু মাত্র বিশ্বাস নেই। বেটা ঘোর নাস্তিক। আস্তে আস্তে বললাম- ভাইয়া, আসলে তিন দিন একই স্বপ্ন দেখাছি। তিনি খালী বলেন- হে মদন, উৎসর্গ কর, তোমার প্রিয় বস্তুকে। কিন্তু কী যে উৎসর্গ করব তা বলেন না। ভীষণ বিপদে আছি।
আমার কথা তাঁর বিশ্বাস হল বলে মনে হল না। কিছুক্ষন এক দৃষ্টে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। মনে হল তিনি এক আজব চিরিয়া দেখছেন। শেষে বল্লেন-রাতে ভাল ঘুম হয়?
বললাম- জ্বী না। খালী স্বপ্ন দেখি। তারপর ঘুম ভেঙ্গে যায়। তখন ঘামতে থাকি।
-স্বপ্নে কি খালী ভুতই দেখ? নাকি অন্য কিছুও দেখা যায়?
– নানান জিনিস দেখি। একদিন দেখলাম-আমি ছাগলে চড়ে আকাশে উড়ে বেরাচ্ছি। হটাত তাঁর পিঠ থকে পড়ে যাচ্ছি। নীচে একটা অজগর সাপ হা করে আছে। সোজাসুজি তাঁর মুখে গিয়ে পরছি।
-তারপর? সাপ তোমাকে গিলে ফেলল?
– তক্ষুনি ঘুম ভেঙ্গে গেল। উঠে শ্লোক ইউনুস পড়লাম। এই শ্লোক পড়ে মাছের পেট থেকেও বের হওয়া যায়। ভুতেশ্বর বলেছে।
-ঘুমের ওষুধ খাও। আজে বাজে চিন্তা কম কর। ভাল মুভি দেখ।বই পড়। দেখবে ভাল লাগছে।
আরও অনেক উপদেশ দিলেন। এবং ইংগিতে বেশ বুঝিয়ে দিলেন-দরকার পড়লে আমাকে পাবনায় পাঠাবেন।
অনেক অনুনয় বিনয় করলাম। বললাম- বাচ্চাদের স্কুল খোলা। এমন সময় বউয়ের বাসায় থাকা দরকার।
তাঁর পাষাণ মন গলল না। বললেন- চিন্তা কর না। বাচ্চারা আপাতত আমার কাছেই থাক। সেখান থেকেই স্কুলে যাবে। সমস্যা নেই।
সেই রাত্রে আবার ভুতেশ্বরের দেখা। সেই একই নির্দেশ- হে মদন, উৎসর্গ কর, তোমার প্রিয় বস্তুকে।
বললাম- হে মহান ভুত্ব্বেশ্বর- আমার বে-দ্বীন বউ সব গয়নাগাটি নিয়ে বাপের বাড়ী গেছে। তবে কী উৎসর্গ করি?
-মূর্খ কোথাকার? হে মদন, উৎসর্গ কর, তোমার প্রিয় বস্তুকে।
তারপর আর ঘুম হল না। সারারাত এপাশ ওপাশ করলাম।
তিনি খুব প্রিয় জিনিস চেয়েছেন। কার প্রিয়? তাঁর না আমার? আমার প্রিয় জিনিস দিয়ে তিনি কী করবেন? খাবেন? ভুতেশের কী খান? কী খেতে তাঁর সবচাইতে ভাল লাগে? কী খেতে দিলে তিনি হাপুস হুপুস করে খাবেন?
তাঁর কী খুব খিদে পেয়েছে? হতেও পারে। আজকাল মানুষেরা ভীষণ নাস্তিক প্রকৃতির হয়ে গেছে। কেউ কিছু আর উৎসর্গ করে না। মসজিদে, মাজারে, মঠে, মন্দিরে যা কিছু ভক্তরা দিয়ে যায়, পুরুতেরা তা লুটেপুটে খায়। কে ভাবে ভুতেশ্বরের কথা?
আহারে, বেচারা না জানি কত দিন অভুক্ত আছেন? মুখ ফুটে তিনি চেয়েছেন? আমি, এই পাপী মদন কি না দিয়ে পারি?
বউকে দিয়ে হবে না। মধুমালার কাছে যেতে হবে। হ্যা মধুমালাই সমাধান দিতে পারে। হতে পারে সে বে-ধর্মী, কিন্তু সে মদনের অন্তপ্রান। মদনের জন্য সে সব কিছু উজার করে দেয়। সে মদনের প্রানেশ্বরী। সে মধুমালা।
প্রস্তুতি পর্ব
মধুর হাসিতে পদ্ম ফোটে। তাঁর দেহে নিপুন ঢেউ জাগে, আবার তা ভেঙ্গে পড়ে শাহবাগ মোড়ের কাঁচ ভাঙ্গার উদ্দামতায়। নিস্তরঙ্গ চন্দ্রিমা লেকেও কোথায় যেন আলোড়ন হয়। গাছালীর ছায়া কাঁপতে থাকে অসীম শুন্যতা বুকে নিয়ে। আমি একটানা তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতে পারিনা। চোখ নামিয়ে নেই তাঁর গ্রীবায়। গ্রীবার অনাবৃত অংশে একটা কাল তিল আছে। সেই তিল- যার বিনিময় মুল্য দিতে হলে পুরো ঢাকা শহর নিলামে তুলতে হবে।
আমি তাঁর হাত ধরে বলি- মধুমালা। এই চন্দ্রিমা মাঠের প্রতিটি পদপিষ্ট ঘাস তাঁর অসীম ধুলিকনার বুকে মুখ লুকিয়ে ছিল বহুকাল। তোমাকে স্যালুট করে জেগে উঠেছে তৃণদল।
মধু হাসে। পদ্ম ফোটানো সেই হাসি। বলল- ‘ইতারমী বন্ধ কর, শয়তান। এত জরুরী তলব? বিষয়টা কী? তাড়াতাড়ি বল’। মধু তুইতুকারী তে কথা বলছে। এটা ভাল লক্ষ্মণ। তাঁর মন ভাল আছে।
ভুতেশ্বরের আর্জি তাঁর কাছে পেশ করলাম।
-তোর ভুত বাবা কে জুতা দিয়ে পেটা। তাঁর এত উৎসর্গ পাবার শখ ক্যান? তাঁর কীসের অভাব পড়ল? আর যদি কিছু পেতেই ইচ্ছে করে, তো সোজাসুজি বললেই পারে। এমন ঢাক গুড়গুড়ের মানে কি?
ঢোক গিললাম। বললাম- তিনি হলেন পরম রহস্যময়। রহস্য করা তাঁর স্বাভাব। তবে একটা ক্লু অবশ্য দিয়েছেন। আমার প্রিয় বস্তু হতে হবে।
– তো দিয়ে দে তোর প্রিয় বস্তু। কী দিবি ঠিক করলি?
– সেটাই তো পরম সমস্য? কি প্রিয়? আমার প্রিয় কী- আমিই তা জানি না।
মধু অবাক হল। তোর প্রিয় কী জিনিস- সেটা কি অন্য কেউ বলে দেবে? তুই জানিস না?
– না জানি না। আমি নিজেই তো আমার নিজের খুবই আপ্রিয়। আমার বেঁচে থাকতে যত ভাল লাগে, তাঁর চাইতে বেশী ভাল লাগে মরে যেতে।
– তো মরে যা। কখন মরবি? – মধুমালা চোখ ঘুরিয়ে নেয়। আমি তাকে কোনদিন কাঁদতে দেখিনি। আজও দেখলাম না। মধুমালাকে কাঁদতে দেখলে আমার ভাল লাগত না।
-আপাতত মরবার ইচ্ছে নেই। মৃত্যু তো আর পালিয়ে যাচ্ছে না। বেচারা ভুতেশ্বর ছাড়া সকলেই মরে বাঁচবে। শুধু বেঁচে মরে থাকবে ভুত।
একটু থেমে বললাম- তোর বর কবে আসবে?
– আগামী সপ্তায়। খুব ঝামেলায় আছিরে, মদন। পোলারে সে মানবে না। বলেছে বিচার বসাবে।
বললাম – তাঁর দরকার নেই। কাল থেকে সে আমার কাছেই থাক। আপাতত আমার বাড়ী খালী আছে। চিন্তা নেই। তোর জামাই না ফেরা পর্যন্ত আমার বউয়ের ফেরার আশা নেই। বোধন আমার কাছেই থাক।
প্রতিপালন পর্ব
ভুতেশ্বরের কৃপায় বোধনের জন্ম। যে রাত্রে মধুর ঘর থেকে ভুতেশ্বরের পবিত্র দর্শন যাত্রা করলাম, সে রাত্রেই বিস্ময়করভবে মধুর পেটে বোধনের আবির্ভাব হল। আমি বলি- সেটা ভুত বাবার বিরাট মোজেজা। কিন্তু মধু কিছু বলে না। শুধু হাসে। কাঁচ ভাঙ্গা হাসি। বুকের ভেতরটা শাহবাগ হয়ে যায়।
ভাল করে একবার বোধনের দিকে তাকালাম। চমকে উঠলাম। অবিকল মধুমালা। সেই চোখ, সেই নাক, গ্রীবায় একটা কাল তীল। আর ঠোটে সারাক্ষণ লেগে আছে কাঁচ ভাঙ্গা হাসি। তিন বছর বয়সে মধুও কী ঠিক এমনই ছিল? মধুকে কেন সারাজীবন ধরে দেখিনি? এইভাবেই মধু কথা বলতে বলতে হাসে। আর হাসতে হাসতে কথা বলে।
-‘অমন করে তাকাচ্ছ কেন মদন?’- বোধনের চোখে মুখে কৌতূহল।
-‘ তোকে আজ জবাই করব’-কথাটা বেশ শান্ত ভাবে বললাম, যাতে সে রসিকতা না ভাবে। কিন্তু ফল হল না। বোধনের মুখে ভয়ের ছায়া নেই। বরং বিষয়টা বেশ উপভোগ করছে বলেই মনে হল।
-মুরগীর মত কাটবা?
-না, যেভাবে গরু কুরবানী দেয়, কিম্বা পাঠা বলি দেয় সেভাবেই। ভুতেশ্বর যেটা পছন্দ করে।
-তিনি কোনটা পছন্দ করেন? বলি না কুরবানী?
-জানিনা। তুই ভুত বাবার সন্তান। ভুত বাবাকে দিয়ে দেব। ভুতের নামে তুই উৎসর্গ হবি। তোর বিরাট ভাগ্য।
– উৎসর্গ কি মদন?
– উৎসর্গ হল ভুত বাবার খানা খাদ্য। তিনি থাকেন আকাশের উপড়ে। সেইখানে মাটি নেই। জল নেই। মেঘ বৃষ্টি নেই। তাই কিছু ফলে না। ভুত বাবা তাই উৎসর্গ খেয়ে বেঁচে থাকেন। উনি খুব শখ করেছেন তোকে খাবেন।
– বেশ তো তাহলে পাঠিয়ে দাও। তাজাই পাঠাও। কাঁটাকুটি করার দরকার কী?
-না, তাজা পাঠালে উনার সমাস্য। উনি জবেহ করতে পারবেন না। জবেহ করার মন্ত্র সেখানে নেই।
-মানে?
-এই ধর আমরা কোন পশু জবেহ করার সময় মন্ত্র বলি- জয় বাবা ভুতেশ্বর সর্বশ্রেষ্ঠ। সৌদিরা মানুষের মাথা কাটবার সময়ও এমন মন্ত্র বলে। কিত্নু তিনি কী বলবেন? তিনি তো নাস্তিক।
-ভুত বাবা নাস্তিক? – কথাটা বোধনের বিশ্বাস হয় না।
-হ্যাঁ নাস্তিক। তিনি তাঁর স্রষ্টার অস্তিত্ত্ব মানেন না।
– পরকালে যে ব্যাটার কেমন শাস্তি হবে।
বললাম- ছি বোধন। ওভাবে বলতে হয় না। তিনি তোমার বাবা হন। বাপকে ব্যাটা বলতে নেই। তাকে সম্মান করে কথা বল।
-ঠিক আছে। এখন কাট। কীভাবে কাটবা? বলি না কুরবানী?
বললাম -বুঝতে পারছি না। স্বপ্নে ডিটেইলস বলা নেই।
– তারপরে আমার মাংসগুলা কী করবা? ভুত বাবা খেতে আসবেন?
-না। তিনি আসেন না। নিয়ম হল উৎসর্গের মাংসগুলা ভক্তেরা খায়। ভক্তের খাওয়া হলে আপনা আপনি ভুতের পেট ঢুকে যায়।
-তাইলে তুমি আমারে খাবা?
আমি একা খেলে হবে না। সমান তিন ভাগ হবে। একভাগ আমি, তুই আর তোর মা, একভাগ আত্মীয় পরিজন আর এক ভাগ ফকির মিসকিন। কোন ফাকির সুযোগ নেই। চামড়াটা দান করব ভুত মন্দিরে।
-ওহ। তাহলে তুমি আমার মাংস খাবা?
-না খেতে পারব না।
– মা খাবে?
– মনে হয় খাবে না।
-আত্মীয় পরিজন ফকির মিসকিন- তারা খাবেন?
– না খাবে না।
-চামড়া কী নেবে মন্দিরের লোকজন? মানুসের চামড়া?
-না, তোর চামড়া নিয়ে গেলে তারা আমারে পুলিশে দেবে।
-তাইলে আমারে কীভাবে কাটবা? ক্যান কাটবা?
বোধনের গা থেকে মধুমালার গন্ধ আসে। সে পদ্মফুলের হাসিতে আমাকে পাগল করে দেয়। আমি তাকে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরি।
মদন কাঁদতে জানে না। তাই সে এক ফোটাও কাঁদে না।
বললাম- তোকে কাটব নারে সোনা। পশুই কাটব। পশুর জন্যে পশুই উত্তম উৎসর্গ।
“ভুতেশ্বর তেনা প্যাচানোর মাস্টার!”
লেখা ভালু পাইলাম।
:lotpot: :lotpot: (Y)
দুর্দান্ত লেখা।
:guru:
@প্রতিফলন, বিষয়টা আসলে মোটেই হাসির না। দেখুন ঈশ্বর তো আর মানুষ না। ঈশ্বর ভক্তরাও ঈশ্বরকে মানুষ বলে দাবী করে না। তিনি অবশ্যই অমানুষ।
আর মানুষ ব্যাতিত সকল প্রানীকেই পশু বলে।
আশা করি ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন।
@মুরশেদ,
একটা ব্যাপার আসলেই বুঝিনি, আপনি আসলে কী বুঝাতে চেয়েছেন এই মন্তব্যে। আমি চিন্তিত, আমার মন্তব্য কি কোনভাবে আপনার লেখাকে বা এর কোন অংশকে কিংবা বা লেখার থিমকে ‘হাসির কিছু’ বুঝিয়েছে?
@প্রতিফলন, নাহ, আপনি ঠিকই বুঝেছেন। আমি শুধু মাত্র ফান করেছি।
পড়ার জন্যে ধন্যবাদ।
এ রম্যরচনাটি পড়ে, একটা গল্প জাগলো অধমের মনে, “এক লোক চুরি কর্মে লিপ্ত থাকে, হঠাৎ তার মনে উদয় হল পাপ-পন্যের বা নেকি বদের ধান্ধা। তখন ছিল ইদুল আযহার “কোরবানির” সময়কাল। প্রতি বছর তো ঈদের গরু চুরি করে বিক্রি করি, এবার না হয় পাপ-পন্যের করি কাটা-কাটি!সে এবার চুরি করা গরু বিক্রি না করে কোরবানি দিল! তারপর মৌ-লোভী সাহেবকে বাসায় দাওয়াত করে খাওয়ালো এবং জিজ্ঞাসা করিল, আচ্ছা হুজুর! আমি এবার কোরবানি দিলাম। মৌ-লোভী বল্ল,” সুবাহানাল্লাহ”! সে বল্ল,”আমি তো চুরি করা গরু কোরবানি দিয়েছে”! মৌ-লোভী বল্ল,”নাওজুবিল্লাহ!” সে এবার বল্ল,” পাপ-পন্যের হল কাটাকাটি গুস্ত খেয়েছি ফাউ!”
@শামিম মিঠু, দুঃখিত! ভুল বানানের জন্য, “পাপ-পন্যের নয় হবে “পাপ-পুণ্যের”।”গুস্ত” নয় হবে ‘গোশত ‘।
ধন্যবাদ।
@শামিম মিঠু,
ধর্ম গুলি পাপ কাটানোর পথ করে দেয় বলেই, ধার্মিক নিশ্চিন্তে পাপ করে যায়। সারা জীবন পাপ করে শেষে মক্কা বা গয়া কাশী ঘুরে এলেই হল। গোস্ত তো ফাউ মারা হয়েই গ্যাছে।
@মুরশেদ,
ঠিক তাই, সমাজের ধর্মগুলির এহেন পরিণতি দেখে স্বভাব কবি লালনের মত করে গাইতে হয়, “পাপ-পুণ্যের কথা আমি কারে বা শুধাই।
এই দেশে যা পাপ গণ্য অন্য দেশে পুণ্য তাই।।
…………দেশ সমস্যা অনুসারে ভিন্ন বিধান হতে পারে
সূক্ষ্ম জ্ঞানের বিচার করে পাপ-পুণ্যের নাই বালাই”।।
মিথ্যার ধারক-বাহক অন্ধ-ধার্মিক সমাজ মানুষকে কাল্পনিক স্বর্গে পাঠায় এবং তাদেরকে না মানলে কাল্পনিক নরকে পাঠায়।অথচ এ অন্ধ, মূর্খ ধার্মিক সমাজ স্বর্গ বা নরকের চিহ্ন মাত্র দেখল না……।।
(F) (C)
যেটা ইচ্ছা নিতে পারেন
আবার আর একটা জব্বর রম্য রচনা। গুল্লি হইসে। পরেরটা জলদি নামান :))
@কাজী রহমান, জিহাদিরা গুল্লি চালানোর আগ পর্যন্ত নামাতেই থাকমু! :guli:
@মুরশেদ,
হ ফাটায়া নামান ব্যাবাক,
-সরগ্মউদ্দিন
:))
@কাজী রহমান,
ব্যাপক আনন্দ পেলাম।
খুব হাসতে হলো। চমৎকার বুনন। রম্য-রসে ভরা সার্থক ছোট গল্প। শাহবাগ শব্দটার ব্যবহার দু’বার, আর আমার মন খারাপ হলো অনেকবার। কত আড্ডা ছিল এই শাহবাগে, ছবি হয়ে আছে, সব।
@স্বপন মাঝি, এদেশে মুক্ত মানুষদের দেশ খুব কমই আছে। শাহবাগ, আজিজ সুপার মার্কেট মার্কেট মুক্ত মানুষদের দেশ। শাহবাগের আড্ডা গুলো যদি আবার ফিরে পেতাম!
খুব সুন্দর লিখেছেন।
অনেকদিন পর আবার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন জেনে আনন্দিত হলাম।
@আবুল কাশেম, আবুল কাশেমের সার্টিফিকেট পাওয়া যে কোন বিচারে বিরাট কিছু। পড়ার জন্যে অনেক কৃতজ্ঞ থাকলাম।
অ-স-সা-ধ-র-ণ!! চরম লেখছেন। আপনার এই সিরিজটি পড়েছিলাম তন্ময় হয়ে-
বাঙলা রজনীর গল্পঃ মধুমালার দেশে
সকলকে তা পড়ার অনুরোধ।
@সৈকত চৌধুরী, যেভাবে আমার বিজ্ঞাপন করছেন- খুবই লজ্জা পেয়ে যাচ্ছি।
মুক্তমনার টিকিট আপনার কাছ থেকেই পেয়েছি। আশা করি মদনবাজী চালু থাকবে।
অসাধারণ আপনার কল্পনা শক্তি। রম্য রচনা সৃষ্টিতে আপনার হাত বেশ পটু। আগেও আপনার মধুবালার সিরিজটি পড়েছিলাম বেশ মজা পেয়েছি। এই লেখাটাও তার ব্যতিক্রম নয়।
হা হা হা বেশ বলেছেন। :lotpot:
@রাজেশ তালুকদার, আপনি প্রথম থেকেই আমাকে খুব উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের প্রবল উৎসাহে মাথা খারাপ হবার যোগার। আরও আবর্জনা লেখার ইচ্ছে আছে।
অন্য জায়গায়ও আপনার লেখা পড়েছি। এক কথায় অসাধারণ। আশা করি এই লেখাটা সিরিজ আকারে নিয়মিত চালিয়ে যাবেন। (Y) (D)
@আকাশ মালিক, চালিয়ে যাবার চেষ্টা করব। আপনার নতুন লেখার অপেক্ষায় আছি।
লেখাটি পড়ার জন্যে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
পশুর জন্যে পশুই উত্তম উৎসর্গ।
শেষের বাক্যটা দারুন।
@অ বিষ শ্বাসী, পড়ার জন্যে ধন্যবাদ।