কোয়ালিয়াকে (Qualia) বোঝানোর জন্য অনেকগুলো উপায় অবলম্বন করা হয়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে জিন্দা লাশ যুক্তি (zombie argument)। ব্যাপারটা নিজের মতো বর্ণনা করি।
ধরুন আপনার হুবহু কপি, একটি সচল (মানে চলাফেরা করে এমন) শরীর আপনার সামনে উপস্থিত। আপনার অনুভূতি আছে। কিন্তু আপনার কপির বিন্দুমাত্র কোনো অনুভব অভিজ্ঞতা নেই। আপনি প্রতি মুহূর্তে বর্ণ গন্ধ অনুভব করেন। আপনার চোখের সামনে বর্ণিল পৃথিবী। তার চোখের সামনে একটা কালো পর্দা। আপনি নিজের সত্তার সচেনতা উপলব্ধি করেন। আপনার কপিটির কোনো আত্মসচেতনতা বোধ নেই। তার নিজস্ব সত্তা বোধ বলে কিছুই নেই। কিন্তু তাতে তার আচরণে বা তার শারীরিক ফাংশনে বিন্দুমাত্র কোনো পরিবর্তন নেই। তার সচল শরীরটি যেহেতু আপনার কপি, তার শরীরেও আপনার সচল শরীরের প্যাটার্ন, সিগন্যালগুলোই উপস্থিত। মস্তিষ্কে একই উপায়ে নিউরন ফায়ার হচ্ছে। ইন্দ্রিয় দিয়ে তথ্য ঢুকছে, মস্তিষ্কে বিশ্লেষণ হচ্ছে। হাত পা নড়ছে। কথাও সে বলছে।
তার সামনে লাল রঙ উপস্থাপন করলে তার চোখ সেই রঙের দিকে নিবিষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে। তারপর সে বলছে ‘টকটকে লাল।’ কিন্তু এটা বলার জন্যে কিন্তু সে তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় কোনো লাল রঙ দেখতে পাচ্ছে না। অনুভব করছে না। কারণ তার কোনো সত্তাবোধই নেই। কিন্তু রঙটার যে আলোক তরঙ্গ, সেটা তার চোখে দিয়ে ঢুকেছে। সেটা তার চোখের নিউরনগুলো দিয়ে বিশ্লিষ্ট হয়েছে। সেখান থেকে নিউরনের ফায়ারিং ছড়িয়ে পড়েছে মস্তিষ্কের অন্যান্য অংশে। এই একই আলোক তরঙ্গের সাথে ‘টকটকে লাল’ শব্দটির একটি সম্পর্ক তার মস্তিষ্ক খুঁজে পেয়েছে, কারণ তার মস্তিষ্ক আপনারটিরই কপি। সেখান থেকে তার বাকসঞ্চালন অংশে তথ্য চলে গেছে, ও তার মুখ থেকে গুনে গুনে বের হয়েছে শব্দ দুটি – ‘টকটকে লাল।’ মস্তিষ্কের এই গণনাটি কোথাও কোনো অংশে কিন্তু কোনো প্রকার সচেতন অভিজ্ঞতা বা অনুভূতির উপর নির্ভর করে নি।
তাহলে কী দাঁড়ালো? আপনি ও আপনার হুবহু ভৌত কপি, দুজনই মানুষ। একজনের সচেতন অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি আছে। আরেকজনের তেমন কিছুই নেই, স্রেফ জিন্দা লাশ সে। কিন্তু দুজনের আচরণের প্যাটার্নে, মস্তিষ্কের সিগন্যালে বা কোনো প্রকার কোনো ভৌত পরিমাপে আপনাদের দুজনের বিন্দুমাত্র কোনো পার্থক্য করা সম্ভব হচ্ছে না। তাহলে ঠিক কোন জাগতিক বস্তুটির কারণে আপনার সচেতন অভিজ্ঞতা আছে কিন্তু আপনার কপি জিন্দা লাশটির নেই? উত্তর হচ্ছে – কোনো জাগতিক বস্তুতে পার্থক্যটি অবস্থান করে না। কারণ সংজ্ঞামতেই আপনার কপিটি আপনার হুবহু ‘জাগতিক’ কপি।
এই যুক্তিটি এটাই উপস্থাপন করে যে আমাদের ফার্স্ট পার্সন অভিজ্ঞতা-অনুভবের ভৌত বা জাগতিক কোনো প্রকাশ বা ব্যাখ্যা নেই। কারণ আমাদের অস্তিত্বের কোনো পর্যবেক্ষণসাধ্য অংশই আমাদের ফার্স্ট পার্সন অভিজ্ঞতা-অনুভবের উপর নির্ভর করতে বাধ্য না। যেমন একটা রোবটকে মানুষের মতো আচরণ করার জন্যে তার সত্যি সত্যি মানুষের মতো অনুভব করার বাধ্যবাধকতা নেই। মানুষের মতো আচরণ করা রোবটটি সত্যি সত্যি মানুষের মতো অনুভব করলেও সে মানুষের মতো আচরণ করবে, না করলেও সে মানুষের মতোই আচরণ করে যাবে। ফলে কোনো প্রকার জাগতিক বা পর্যবেক্ষণগত বিচারে বলা সম্ভব হবে না যে রোবটটি সত্যি সত্যি আমাদের মতো অনুভব করে কিনা। অর্থাৎ ‘ফার্স্ট পার্সন অভিজ্ঞতা-অনুভব’ ব্যাপারটা সকল প্রকার ভৌত প্রকাশ ঊর্দ্ধ। আমাদের অভিজ্ঞতার এই অভৌত অংশটিরই নাম কোয়ালিয়া। আপনার এটা আছে। জিন্দা লাশের এটা নেই।
জিন্দা লাশ যুক্তির সবচেয়ে বড় দুর্বলতাটা হচ্ছে এটা অনুমান করা যে ফার্স্ট পার্সন অভিজ্ঞতা-অনুভব ব্যতিরেকেই একটি শরীরে স্বাভাবিক মানুষের কর্মকাণ্ড সংঘটন সম্ভব। তবে এটা মারাত্মক দুর্বলতা না, যদি আমরা ধরে নেই যে শরীর একটি যন্ত্রই কেবল, মস্তিষ্ক একটি কম্পিউটারের মতো গণনাই করছে কেবল। এক্ষেত্রে এটা আর মারাত্মক দুর্বলতা থাকে না এ কারণে যে আমরা একটা যন্ত্রের কাছে বা কম্পিউটারের কাছে ফার্স্ট পার্সন অভিজ্ঞতা-অনুভূতি ‘নেসেসারিলি’ আশা করি না।
এখন যদি এই আর্গুমেন্টে কোয়ালিয়াকে মেনে নেই, তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে কোয়ালিয়া ভৌত ফাংশনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে কিনা। উত্তর হচ্ছে না। কারণ সংজ্ঞামতেই ধরে নেয়া হয়েছে যে কোয়ালিয়া ছাড়াও জিন্দা লাশ হুবহু আপনার মতো ভৌত সকল শারীরিক ক্রিয়া সহকারে সচল। ফলে কোয়ালিয়া শুধু অভৌতই নয়। এটা বাড়তি। এপিফেনোমেনন। এটা ভৌত ফেনোমেননের বাইরে উদ্ভূত ও বাইরেই সীমাবদ্ধ। ভৌত ফেনোমেননকে এটা কোনোভাবে পরিবর্তিত করে দিতে পারে না। অর্থাৎ আমাদের ফার্স্ট পার্সন অভিজ্ঞতা সেই অর্থে এক ধরনের থিয়েটারের মতো যেখানে দর্শক নাটককে পরিবর্তিত করে দিতে পারে না, কেবল দেখে যেতে থাকে। ফলে কোয়ালিয়াকে অস্বীকার করলেও বিজ্ঞানের কোনো কিছুই আসছে না বা যাচ্ছে না। বিজ্ঞান আরামসেই তার ভৌত অনুসন্ধান চালিয়ে যেতে পারে এটার কোনো প্রকার অনুমান ব্যতিরেকে। যারা এটাকে একটা বৈধ ভৌত সমস্যা হিসেবে উপস্থাপন করবে, তাদেরকে এটাকে যাচাইযোগ্যভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
জিন্দা লাশ যুক্তির একটি কার্টুন
Image from: http://chaospet.com/2007/08/09/28-philosophical-zombies/
তার মানে আপনি কি স্বীকার করে নিচ্ছেন পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষের দুইটি করে সত্ত্বা বিদ্যমান? আরও একটু পরিস্কার করে বললে হয়ত বুঝতাম।
এটাকে কী অন্যভাবে প্রতিপাদন করা যায়? (উপরে বন্যা আহমেদের এটাকে ছাড়া ‘মানুষ’ এর কথা ভাবতে কষ্ট হয়। এই মন্তব্যেরও জবাব হতে পারে। ) যেমন পোষ্টমর্ডানিজমে বলছে, “মানব” অর্থাৎ প্রত্যেকটি ইন্ডিভিজুয়ালের অস্তিত্ব একটি ধারণামাত্র। যে ধারণার পার্থক্য ব্যাপক, আমার কাছে আমার ও আপনার কাছে আমার অস্তিত্ব নিয়ে ক্যাচালে; কারণ সেখানে ভৌত পর্যবেক্ষন পর্যবেক্ষণ, অতীত জ্ঞ্যান ইত্যাদি ইত্যাদি জড়িয়ে আছে। একই ভাবে আমার সামনেই আমার জিন্দালাশ রাখলে সেই একই ফ্যাক্টরগুলো কাজ করছে যা আপনার আর আমার মাঝে পর্যবেক্ষনগত পার্থক্য সৃষ্টি করছে আমার অস্তিত্বের প্রশ্নে।
@টেকি সাফি,
হুম! আরেকটু বিস্তারিত বললে ভালো হতো।
আপনার এই লেখাটিতে বার বার চেষ্টা করেও ঢুকতে পারিনি; আজ পারলাম এবং যথারীতি ঝাঁকুনি খেলাম।
আপনার লেখা পড়ে যতটুকু বুঝতে পারছি, কোয়ালিয়া অস্তিত্বহীন নয়, যদিও ভৌত ফাংশনে প্রভাব ফেলতে পারে না অথবা অপর্যবেক্ষণসাধ্য অথবা অপ্রমানযোগ্য। আর তাই বিজ্ঞান একে নিয়ে মাতে না। কিন্তু কথা হচ্ছে, অপ্রমানিয় হলেই তা বাড়তি হয়ে যাবে?
এভাবে ভাবতে পারলে মন্দ হত না; তবে ভাবতে কষ্ট হয় বইকি! আপনি মানুষকে ‘একটি যন্ত্রই কেবল’ বলছেন, কিন্তু এর ফলে মানুষের ‘নির্বাচন করার স্বাধীনতাকে’ কি অস্বীকার করা হচ্ছে না? আপনি হয়ত বলবেন, জিন্দা লাশটাও তো বাইরে নির্বাচন করবে, স্বাধীনভাবে কাজ করবে (যদিও ভিতরে লাশ ছাড়া কিছু নয়); তাছাড়া, জিন্দা লাশটার যে ফ্রি উইল/ কনশাসনেস আছে, সে প্রশ্ন কি আমরা করি অথবা বুঝতে পারি? সুতরাং, মানুষের ক্ষেত্রেও তো একই কথা। কিন্তু ভাইয়া, আমি তো জিন্দা লাশের পূর্বগামী , যেহেতু বলেই নিয়েছি জিন্দা আমার কপি। তাহলে আমার কিঞ্চিৎ স্বাধীনতা রয়েছে মনে হয় জিন্দাকে আমার মত করার!
@কাজি মামুন,
একটু দেরীতে মন্তব্যটা চোখে পড়লো।
আসলে ‘বাড়তি’ এই লেবেলটা সাধারণত কোনো পারপাস সার্ভ করে না এমন বিষয়ের উপর প্রযোজ্য হয়। যেমন অ্যাপেন্ডিক্স নিয়ে বাড়তি শব্দটা ব্যবহৃত হয়। (যদিও অ্যাপেন্ডিক্সের বাড়তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন আছে।) এখানে প্রশ্ন হচ্ছে কোয়ালিয়া কী পারপাস সার্ভ করছে? যদি কোনো একটাও পারপাস দেখানো যায়, তাহলে একে আর বাড়তি বলতাম না, ব্যাপারটা এমন আরকি!
আমি অস্বীকার না করলেই কি জিনিসটা অস্তিত্ববান থাকে? 😉
আমাদের ল্যাবের একটা লার্নিং রোবটকে হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীর সামনে হাজির করা হয়। রোবটটা ধীরে ধীরে তার নানারকম মোটর ফাংশন নাড়াচাড়া করে মানুষের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করছিলো। অনেকের কাছে মনে হচ্ছিলো রোবটটা স্বাধীনভাবে মানুষের কাছে আসা বেছে নিচ্ছে। কিন্তু আমরা তো জানতাম যে রোবটটা কেবলই একটা লার্নিং অ্যালগরিদম ফলো করছিলো। মানুষের স্বাধীন ইচ্ছার ব্যাপারটাও এরকম। এটার অস্তিত্ব দ্রষ্টার চোখে বিরাজ করে। চাইলে ভাবতে পারেন যে আপনি স্বাধীন ইচ্ছায় বাছাই করছেন। আবার চাইলে ভাবতে পারেন যে আপনার সকল ক্রিয়ার কিছু অণুপরমাণুর বিক্রিয়ার সম্মিলিত ফল। দ্বিতীয়ভাবে ভাবাটাতো গর্হিত না। কিংবা ত্রুটিপূর্ণও না। কিন্তু সেখানে স্বাধীন ইচ্ছা কোথায়? এটা পড়তে পারেন।
ব্যাপারটা বুঝতে চেস্টা করতেসি
আপনি বলছেন, দুজনের আচরণের প্যাটার্নে, মস্তিষ্কের সিগন্যালে বা কোনো প্রকার কোনো ভৌত পরিমাপে বিন্দুমাত্র কোনো পার্থক্য করা সম্ভব হচ্ছে না। মস্তিস্কের সিগন্যাল,তথা ব্রেইন সেল সিগ্নালে একটা কথা আছে, Cells that fire together, wire together. আর এটা তো রাতারাতি হয় না, বহু সময় ধরে, বহু বছর ধরে একজনের সেল গ্রুপ ফায়ার হতে হতেই কিন্তু মেমোরি তৈরী হয়, আর এই wiring মানুষ ভেদে বিভিন্ন হবে, কারন আমরা সবাই একি ভাবে একি হারে একি কন্ডিশনে চারপাশ থেকে তথ্য নেই না। যুক্তির খাতিরে ধরে নিলাম, মানুষ ও তার কপি উভয়ের wiring এক, যেটা আপনি বললেন, মস্তিস্কের সিগন্যাল এক। যদি তা হয়, তাহলে, মেমরি তথা অভিজ্ঞতা এক। এই মেমরিই অভিজ্ঞতা ও অনুভতি দুইজনের ক্ষেত্রেই এক করবে। তাহলে মানুষ আর কপি ২ জনি এক হবে, কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠবে এই এক করার মাপকাঠি কি।
মস্তিস্কের সিগন্যাল যদি এক বলেন, তাহলে কপির বিন্দুমাত্র কোনো অনুভব অভিজ্ঞতা নেই এটা দাবী করা যাবে না। আর যদি wiring এক না হয়, তাহলে সে বাইরে দিয়ে এক, genotype এক phenotype এক না।
আপনার উদাহরণ,আমার মন্তব্য খুবই সোজাভাবে লেখা, যদিও মস্তিস্ক এত সোজা জিনিস না। আর আমি ওর পুরা কার্যপ্রণালী জানিও না। তাও একটু অংশগ্রহণ করলাম।আমি শুধু প্রথম চারটা প্যারা পড়েছি ভাল করে। বাকিগুলো কাল পড়তে হবে। আপনি আমার অনেকগুলো ঘুমন্ত ব্রেইন সেল জাগিয়ে দিলেন। মন্তব্যগুলো দেখছিলাম, আপনি আরটিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করছেন। খুবই আগ্রহ জাগানো বিষয়। আরো পড়তে চাই।
আচ্ছা “ফার্স্ট পার্সন অভিজ্ঞতা-অনুভব” ও “স্বত্তা” বলতে কি বুঝাচ্ছেন বলবেন কি।
@নির্মিতব্য,
এগুলোই তো কোয়ালিয়া ধারণার মূল শব্দমালা। বিজ্ঞানী ড্যানিয়েল ডেনেট বলেছেন, কোয়ালিয়া ধারণাটা অনুচ্চারণযোগ্য। এর তুলনা হতে পারে – যখন লুইস আর্মস্ট্রংকে জিজ্ঞেস করা হলো জ্যাজ কী বস্তু, তখন তিনি বললেন
🙂 একারণে এটা বোঝাতে এতোগুলো শব্দ খরচ করা লাগে। অনেক থট এক্সপেরিমেন্টের সাহায্য নিতে হয়। শব্দগুলোকে আভিধানিক ও আক্ষরিক অর্থে ধরে নিয়ে দেখতে পারেন সাহায্য হয় কিনা।
তবে বেশি দরকার ধারণাটা বোঝা। শব্দ দিয়ে ধারণাটা বোঝার চেয়ে বেশি আশা আছে যে ধারণাটা বুঝলে শব্দগুলো সেটাকে পোক্ত করবে।
আসুন এই ধাঁধাটি সমাধান করি। কীভাবে প্রমাণ করবেন যে আপনার যেমন অনুভূতি আছে, আমারও ঠিক তেমন অনুভূতি আছে বা আমি আদৌ অনুভূতিশীল?
@রূপম (ধ্রুব),
আপনার বদৌলতে কিছু দর্শনের শব্দমালার সাথে পরিচিত হলাম। আমি wiki পেইজ এ গিয়ে পড়তে গিয়ে অনেক মাথা ব্যথা হল। কিন্তু Mary’s Room এর wiki পেইজটা অনেক সহায়ক ছিল। যেহেতু থট এক্সপেরিমেন্ট আমার জন্য নতুন আপনার ধাঁধার উত্তর দর্শনের সাথে মিলিয়ে দিতে পারব না। কিন্তু আমি আপনার অনুভূতি আছে কিনা এটা নিউরন সিগন্যাল রিডার দিয়ে বলব। আপনার অনুভূতি হলে সিগন্যাল ফ্লাকচুয়েট করবে। আমাদের একি জিনিস অনুভব করে সমান সিগন্যাল হবে না, কিন্তু কাছা কাছি রেইনজ এ থাকবে। এটা কি আপনার ধাঁধার উত্তর দেয়?
আমি দুই পেজে এখন পর্যন্ত যা পড়লাম, তাতে মনে হল ফিজিক্যালিজম আমার জন্য বোধযোগ্য। কিন্তু মনে অনেক প্রশ্ন জেগেছে। এর পরে যখন কোন দর্শনের expertise অথবা কোন নিউরোলজিস্ট এর সাথে দেখা হবে, অনেক প্রশ্ন থাকবে আমার। 🙂 আপাতত শেষ প্রশ্ন আমি যদি ফিজিক্যালিজম ধারণাতে আস্থা রাখি, তাহলে কোয়ালিয়া ধারণা আমি অগ্রাহ্য করতে পারব কি?
(দর্শন প্রথম বারের মত পড়ে অনেক মজা পেলাম, কিন্তু আপাতত কয়েক মাস দর্শনের আন্ডারে কোন পোস্ট থাকলে আর পড়ব না, পরের জন্য জমা রাখব। অনেক অনেক সময় নিয়ে নিল আজকে। :-s )
@নির্মিতব্য,
তাই? 🙂
আপাতত আপনার উত্তরটা সঠিক ধরে নেই। এবার বলুন, একটা রোবট বা ধরুন যন্ত্রই তৈয়ার করা হলো, যার ইলেক্ট্রিক সিগন্যালগুলো আমার নিউরন সিগন্যালের হুবহু সমান ডেটা উৎপন্ন করছে। ওই যন্ত্রটাও কি অনুভব করছে? যদি উত্তর না হয় তাহলে আমার নিউরন সিগন্যাল আর যন্ত্রের ইলেক্ট্রিক সিগন্যালের মধ্যে ঠিক কোন পার্থক্যটার কারণে মনে করেন অনুভূতি থাকা না থাকার এই পার্থক্য হচ্ছে?
লেখাটা নিয়ে কিছু কথা বলার ছিলো। তবে সময় হাতে নিয়ে বলতে হবে।
কোয়ালিয়া নিয়ে দীপেনদার (দীপেন ভট্টাচার্যের) চমৎকার একটা লেখা ছিলো মুক্তমনায় , দেখতে পারেন এখানে।
তবে ডেনিয়েল ডেনেট এই কোয়ালিয়া সংক্রান্ত নানা মিথকে খন্ডন করেছেন তার Consciousness Explained বইয়ে। হয়ত পড়েছেন।
@অভিজিৎ দা,
লিংকটাতো কাজ করছে না।
@রনবীর সরকার,
আমার এখানে তো কাজ করছে। আপনি www অংশটা বাদ দিয়ে ট্রাই করেন – এখানে।
@অভিজিৎ,
ড্যানিয়েল ডেনেটের খণ্ডনগুলোকে ভৌত অনুসন্ধানের জন্য প্রকৃত উপায় বলে মনে করি। অনেকে কোয়ালিয়ার উপর ভর করে আত্মাফাত্মার কাসুন্দি ফেঁদে বসে। অনেকে আবার কোয়ান্টাম ফোয়ান্টাম নিয়ে এসে বলে যে টিউরিং মেশিন (সনাতন কম্পিউটেশান) দিয়ে মনকে বোঝা যাবে না। লিংকটার জন্য ধন্যবাদ। কিছু কথা জানার অপেক্ষায়।
আচ্ছা ভৌত ফাংশনগুলো কি তাদের মান যথেচ্ছ এবং যৌক্তিক উভয়ভাবেই নির্ণয় করছে নাকি শুধু যৌক্তিক ভাবেই নির্ণয় করছে।
অর্থাৎ আমি যে এই ব্লগে এখন আপনার পোস্টের মন্তব্য দিচ্ছি এটা কি বিগ-ব্যাং ঘটার সময়ই নির্ধারিত হয়ে গেছে।(যেহেতু বিগ-ব্যাং এর সময়ই ভৌত সকল ফাংশনের আবির্ভাব হয়েছে) নাকি ভৌত ফাংশন গুলো তার ধরন প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করছে।
যদি একটা রোবটকে এমনভাবে প্রোগ্রাম করা হয় যাতে সে পুরো একজন মানুষের মতো আচরন করবে তাহলে কিন্তু পারিপার্শ্বিকতার প্রেক্ষিতে তার আচরণগুলো পুরোপুরি পূর্বনির্ধারিত হয়ে যায়। random ফাংশন ব্যবহার করলেও প্রকৃতঅর্থে তো random ফাংশনগুলো random না। যদি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে এমন কোন মেকানিজম তৈরী করা যায় যাতে প্রকৃত randomness পাওয়া যায় তবে অবশ্য আলাদা কথা।
আসলে এই ব্যপারটা নিয়ে কিছুদিন হল খুব ভাবছি। মানুষের random চিন্তাভাবনা কি বিগ-ব্যাং থেকেই পুরোপুরি পূর্বনির্ধারিত। নাকি কোয়ান্টাম লেভেলে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের ফলে এর উদ্ভব নাকি সত্যিই কোন এক self এর কারনে এটা ঘটছে(মারফতি চিন্তা ভাবন চলে আসছে দেখছি :))।
@রনবীর সরকার,
বলা মুশকিল।
আমাদের “random” চিন্তাভাবনা কি আসলেই random নাকি এতোটা জটিল যে random মনে হয়।
তা সে যেটাই হোক, বৈজ্ঞানিক বস্তুবাদী দৃষ্টিকোণ থেকে কতোটুকু কি করা সম্ভব সেটাই আসলে আমাদের মাথা ব্যাথা। যেটা মেটাফিজিক্যাল প্রশ্ন, যেমন “কোন এক self এর কারনে এটা ঘটছে” সেটা নিয়ে তো আসলে বৈজ্ঞানিক মীমাংসা সম্ভব না। কিন্তু যদি বস্তুবাদী দৃষ্টিকোণ থেকেই এ সংক্রান্ত ভৌত পর্যবেক্ষণগুলোর ব্যাখ্যা পাওয়ার সুযোগ থাকে, তাহলে আর অন্য চিন্তা করার প্রশ্নই বা কেনো? ইতিহাস বলছে, বিজ্ঞান সফল। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় মানুষের আচরণকে কোনো মারফতি বা মেটাফিজিক্যাল self পরিবর্তন করে দিচ্ছে বা দিচ্ছে না, এমন অনুমানের কোনো প্রসঙ্গ নেই। যেটা ঘটবে, বৈজ্ঞানিক গবেষণা পেঁয়াজের খোসার মতো ভৌত mysteryগুলোকে ছাড়িয়ে নাই করে দিতে থাকবে।
তাহলে বলছেন আমাদের আচরণের মধ্যে অনুভবের কোন প্রভাব নেই? মনে হয়, বুঝতে পারছি কী বলতে চাইছেন, কিন্তু কেমন যেন মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। মানুষের সব কর্মকান্ড, আচার-আচরণের সাথেই তার আবেগ-অনুভূতি এভাবে জড়িয়ে থাকে যে এটাকে ছাড়া ‘মানুষ’ এর কথা ভাবতে কষ্ট হয়।
@বন্যা আহমেদ,
নির্ভর করে কোয়ালিয়া ব্যাপারটা এপিফেনোমেনন – মানে ভৌতকে পরিবর্তিত করতে পারেনা এমন - নাকি ভৌতকে তার পরিবর্তন করে দেবার ক্ষমতা আছে তার ওপর। আসলে নিশ্চয়তার সাথে এ নিয়ে আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। আমার ধারণাটা বলতে পারি। আমি মনে করি কোয়ালিয়া এপিফেনোমেনন। আমাদের আচরণের পেছনে মস্তিষ্ক ও অন্যান্য শরীরবৃত্তীয় ফাংশনের গণনা, তার কোনোটারই সত্তার ব্যক্তিক অভিজ্ঞতা-অনুভূতি লাভের উপর নির্ভর করার কোনো কারণ ভাবা যায় না। আমরা তো যন্ত্রই। আমাদের যন্ত্রের কর্মকাণ্ডে ব্যক্তিক অভিজ্ঞতা থাকা না থাকার সম্পর্ক কোথায়? একটা রোবট যখন তার কর্মকাণ্ড গণনা করে, তখন তো আমরা ভাবি না যে রোবটটি এগুলো অনুভব করে করছে, নাকি না?
এখন এই ধাঁধাটা দেই। তবে আরো কনফিউজ করার জন্যে না, ধারণাটা পরিষ্কার করার জন্যে। আপনি জানেন আপনার ব্যক্তিক অভিজ্ঞতা-অনুভূতি আছে। বলুন তো কীভাবে প্রমাণ করবেন যে আমার ব্যক্তিক অভিজ্ঞতা অনুভূতি আছে? আমার সকল আচার আচরণ ক্রিয়া কলাপ, এর কোনটার জন্যে শরীরবৃত্তীয় ফাংশনগুলোর গণনার বেশি কিছু এই ব্যক্তিক অভিজ্ঞতা থাকাটা প্রয়োজন? হয়তো আমার কোনো সত্তা বোধ নেই। আমি আমার শরীরবৃত্তীয় ফাংশনগুলোর গণনানুসারে এই লেখাগুলো লিখছি। এমন ভাবতে দ্বন্দ্বটা কোথায়?
দ্বন্দ্ব নেই। কারণ আমি সত্যি সত্যি আপনার মতো ব্যক্তিক অভিজ্ঞতা অনুভব করি নাকি করি না এই প্রকল্প বৈজ্ঞানিকই (নৈর্ব্যক্তিকভাবে যাচাইযোগ্য) না।
সেক্ষেত্রে এখন যদি ভাবেন যে ব্যক্তিক অভিজ্ঞতা অনুভবের প্রভাব আছে আচরণে, তার মানে কিন্তু আমরা বিপদে আছি। বৈজ্ঞানিক বা ভৌত অনুসন্ধানের বিষয় না এমন জিনিস ভৌতকে পরিবর্তন করে দিচ্ছে বলে ভাবছি। এই ভাবনাটাই বরং কষ্টকর হওয়া উচিত। ব্যক্তিক অভিজ্ঞতা অনুভব একটা বাড়তি বস্তু হিসেবে থাকাই কাম্য। আমার ধারণা, ব্যাপারটা তেমনই।
@রূপম (ধ্রুব),
তাহলে ব্যাপারটা এমন দাড়ালো যে আমাদের মস্তিষ্ক ও অন্যান্য শরীরবৃত্তীয় ফাংশনের গণনাই আমাদের মধ্যে একটা self এর illusion জন্ম দিয়েছে।
@রনবীর সরকার,
এমনভাবে ভাবতে পারেন। সমস্যা হচ্ছে এমন ভাবে নাও ভাবতে পারেন। কারণ এ সংক্রান্ত প্রকল্পগুলো যাচাই-অযোগ্য।
@বন্যা আহমেদ,
আপনি চাইলে কিন্তু মানুষের “আচার-আচরণের সাথে তার আবেগ-অনুভূতি”র যেসব মস্তিষ্কগত ছায়া জড়িত, তার সবটাই উদ্ধার করতে পারবেন। যেমন মানুষের অনেক (হেডোনিস্ট) আচরণ ডোপামিনকেন্দ্রিক। রিওয়ার্ড বর্ধক। অর্থাৎ ভাবা যায় মানুষ তার রিওয়ার্ড (বা ডোপামিনের নিঃসরণ) বর্ধনের জন্যে ওই কাজগুলো করে। এখন সেই ঘটনাকে কিন্তু অনেক আগে থেকেই মডেলের চেষ্টা করা হয়েছে। এর মধ্যে টেম্পোরাল ডিফারেন্স লার্নিং নামক অ্যালগরিদম উল্লেখযোগ্য। বানরের ডোপামিন নিঃসরণের প্যাটার্নের সাথে এই অ্যালগরিদমের একটা প্যারামিটারের বেশ ভালো সামাঞ্জস্য পাওয়া গেছে। এখন রোবটে টেম্পোরাল ডিফারেন্স লার্নিং ভিত্তিক অ্যালগরিদম প্রদান করে শেখার ও আনন্দবর্ধনের আচরণ পাওয়াও যাচ্ছে। অর্থাৎ আমরা যে আবেগ অনুভূতির উপর ভিত্তি করে আচরণ করি, সেটার ভৌত পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত তত্ত্বটাকে বা ধারণাটাকে ব্যবহার করে কিন্তু আপনি একইধরনের আচরণ উৎসারণের গণনা করতে পারবেন এমন উদাহরণ রয়েছে। তাহলে টেম্পোরাল ডিফারেন্স লার্নিং অ্যালগরিদম চালানো রোবটটা রিওয়ার্ড বর্ধনের সময় – আমরা সত্যি সত্যি ডোপামিন নিঃসরণে যেমন ব্যক্তিক আনন্দ অনুভব করি – তেমনটা করছে কিনা সেই প্রশ্ন কি আর তেমন কাজে আসছে? মেটাফিজিক্যাল ইন্টারেস্ট ছাড়া?
@রূপম (ধ্রুব),
আটকে তো গেলাম প্রথম প্যারাগ্রাফেই-
তার সচল শরীরটি যেহেতু আপনার কপি, তার শরীরেও আপনার সচল শরীরের প্যাটার্ন, সিগন্যালগুলোই উপস্থিত। মস্তিষ্কে একই উপায়ে নিউরন ফায়ার হচ্ছে। ইন্দ্রিয় দিয়ে তথ্য ঢুকছে, মস্তিষ্কে বিশ্লেষণ হচ্ছে। হাত পা নড়ছে। কথাও সে বলছে, কিন্তু তার মাঝে আমার মতো অনুভুতি নাই! ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করেছেন বন্যাদির মন্তব্যের উত্তরে। কিন্তু যে সকল কঠিন কঠিন ইংলিশ শব্দাবলি ব্যবহার করলেন, এদের বাংলা নাই? ইংরেজি শব্দগুলো যদি ইংরেজিতেই লিখতেন, উইকি, গুগল তালাশ করে না হয় বোঝার চেষ্টা করতে পারতাম। আমার মতো পাঠকের কথা মনে রেখে একটু সহজ ভাষায় লিখার অনুরোধ রইলো।
@আকাশ মালিক,
ভালো কথা বলছেন। 🙂
হেডোনিস্ট – hedonist – আনন্দবাদী
ডোপামিন – dopamine
রিওয়ার্ড – reward – পুরস্কার
অ্যালগরিদম – algorithm – কার্য প্রণালী?
প্যারামিটার – parameter – ?
মেটাফিজিক্যাল – metaphysical – অধিবিদ্যক ?
আর কিছু? লেখায় কি সেরকম কিছু আছে?
চেষ্টা করবো বাংলা করতে অথবা অন্তত ইংরেজিটাও দিয়ে দিতে।
@আকাশ মালিক,
এপিফেনোমেনন – epiphenomenon – পরিভৌত ঘটনা?
কোয়ালিয়া – Qualia –
@রূপম (ধ্রুব),
গুগল মিয়া পীর-ফকির নাকি? কেমন করে দুনিয়া তন্ন তন্ন করে শব্দভান্ডার চোখের সামনে নিয়ে আসে। সুন্দর উপমা, উদাহরণ সহকারে প্রত্যেকটা শব্দের অর্থ ব্যাখ্যা নিয়ে হাজির। যে সকল শব্দের বাংলা নেই, সেই সকল ইংরেজি শব্দের সাথে লিংক জুড়ে দিলে অনেকেরই বোঝতে সুবিধে হবে। Qualia – নিয়ে এই লেখাটি পড়ার পর এখন অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে গেছে। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ এমন একটি মা’রেফতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্যে।
@আকাশ মালিক,
(Y)
@রূপম (ধ্রুব) ভাই,
পরিভৌত ঘটনা, আনন্দবাদী, অধিবিদ্যক – এগুলোর মানে কি, ভাইয়া? 🙂
লেখাটা ভাল লেগেছে। কোয়ালিয়া একটা প্রশ্ন মনে জেগেছে, যদি রোবটে বা এ আই-তে কোয়ালিয়া সন্বিবেশ করা সম্ভব না হয় তবে রোবট অনেক চাহিদা মেটাতে পারবে না। যেমন মানুষ কে সঙ্গ দিতে পারবে না। এব্যপারে একটু বলবেন কি। ধন্যবাদ।
@শাখা নির্ভানা,
ব্যাপারটা ঠিক এমন না। উপরে কাজী রহমানকে করা মন্তব্যটা দেখুন। আপনার জিন্দা লাশ কপিটা যদি কোয়ালিয়া ছাড়াই হুবহু আমার মতো আচরণ করতে পারে (এবং ফলে আমার মতো সঙ্গও দিতে পারে), তাহলে রোবটের সেটা দিতে বাধা কোথায়? জিন্দা লাশ যুক্তি অনুযায়ীই ভৌত কোনো পর্যবেক্ষণে কোয়ালিয়া ম্যাটার করে না। এটা কেবল একটা ব্যক্তিক সচেতন অভিজ্ঞতা অনুভূতি। আপনি ঠিক কেমন অনুভব করেন সেটা অন্যের পক্ষে হুবহু জানা কি সম্ভব? (মস্তিষ্কের প্যাটার্ন দেখে ছায়া ধারণা পাওয়া যদিও সম্ভব।) আমাদের ব্যক্তিসত্তাবোধটা, অস্তিত্ববোধটার একটা অংশ অন্তপ্রকৃতিগতভাবে অপর্যবেক্ষণসাধ্য, কোয়ালিয়া ধারণাটা এমনটাই বলে।
তাহলে মানুষ তো মানুষই রইলো, রহস্যময়। ব্যাপক ভাবে এখনো প্রায় অনাবিষ্কৃত। কবিদেরও ভাব কবিতা লেখার ব্যাপারে রোবটদের সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে হোল না। মজা তো। চিন্তা কিসের?
আপনি কি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে খুব বেশী ভাবছেন।
আশরাফের মত বলতে ইচ্ছে হচ্ছে, ‘বুঝি নাইক্কা’। হাল্কার মইদ্দ্যে আট্টু কইলে কি অস্সুবিদা আসিলো? যাউজ্ঞা, মজা পাইসি (C)
@কাজী রহমান,
আপনার মজায় পানি ঢালি। ধরুন আপনার সামনে আমি আর আমার জিন্দা লাশ দাঁড়িয়ে। কীভাবে সনাক্ত করবেন কোনজনের সচেতন অভিজ্ঞতা-অনুভূতি আছে আর কোনজনের নেই? যেহেতু ভৌত সকল আচরণে আমার জিন্দা লাশ আমার হুবহু সমান, আপনার কাছে আমাদের এই সচেতন অভিজ্ঞতায় পার্থক্য থাকাটা ম্যাটার করে না। আপনি পার্থক্য করতে পারবেন না।
ফলে রোবটদের সচেতন অভিজ্ঞতা-অনুভূতি না থাকলেও সেটা আছে কি নাই কবিরা সনাক্ত করতে পারবে না। আর অনুভূতি ছাড়া কবিতা লেখা যায় না কে বললো? রোবটদের কবিতা লেখাতেও কোনো বাধা নাই। রোবটটা যেহেতু মুখে দাবি করবে যে তার সচেতন অভিজ্ঞতা আছে (কারণ তার কম্পিউটার তেমন উত্তর করার প্রয়োজনীয় গণনাটা করবে) ফলে কবিদের মাঝে অন্তত ইল্যুশন তৈরি হবে যে রোবটের সচেতন অভিজ্ঞতা আছে।
জ্বি। আমার গবেষণার বিষয় কিনা! (C)
@রূপম (ধ্রুব),
শোনেন, আরো ক কাপ কফি খাবার ইচ্ছা ছিল, এক্ষুনি। অথচ একটু বেরুচ্ছি, আশা করছি ফিরে এসে বসবো আবার। ইতিমধ্যে আরো কিছু বলুন। বাংলাতে আপনার গবেষণা ভাবনাগুলো যতটুকু শুনতে পারি ততটুকুই লাভ। দারুন দারুন, প্লিজ আরো বিস্তারিত লিখুন। (C) (C) (C)
@কাজী রহমান,
এতো কফি! পোস্ট দেবোনে তাইলে।
কিছুটা লিখেছিলাম এইখানে।
@রূপম (ধ্রুব),
প্রাথমিক লেখাটার লিঙ্ক দিয়ে খুব ভালো করেছেন। ঐ পর্যায়ে যারা দেখতে চান তারা চট করে দেখে নিতে পারবেন।
সময় পেলে বলবেন, এই এআই এর নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি নিয়ে কোন কোন বিজ্ঞানী চিন্তিত কি না?
@কাজী রহমান,
আমার গত লেখাটাও দেখতে পারেন।
আরেকটু ব্যাখ্যা করলে ভালো হয়।
@রূপম (ধ্রুব),
এ আই মানুষের বুদ্ধিমত্তায় হুমকি হতে পারবে কিনা সেটাই জানতে চাইছিলাম। বিজ্ঞানী Prof Hugo De Garis, এই হুমকির সমর্থনে বেশ কথাবার্তা বলেছে। একটা ইউ টিউব লিঙ্ক দিলামঃ
httpv://www.youtube.com/watch?v=jnKbwwEOwwc
@কাজী রহমান,
বুঝতে পেরেছি এখন। অনেক দার্শনিক চিন্তিত। বিজ্ঞানীরা বানাতেই তো পারছেন না, চিন্তা করবেন কী? এআই দিয়ে মানুষের নিজের বুদ্ধি বর্ধন করার সুযোগও কিন্তু আছে। সবচেয়ে বড় কথা, এআই যদি সম্ভব হয়, সেটা ঘটবেই।
বুঝি নাইক্কা।
আর একবার চেষ্টা করে দেখবো।