:: নিউইয়র্ক (প্রথমার্ধ) :: নিউইয়র্ক (দ্বিতীয়ার্ধ) :: পোর্টল্যান্ড (ওরিগন) :: সিলিকন ভ্যালি (ক্যালিফোর্নিয়া) :: ওয়াশিংটন ডিসি ::
ডেট্রয়েট! ‘রোবোকপ’ এর শহর ডেট্রয়েট। একসময় বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘রোবোকপ’ ড্রামা সিরিজের সুবাদে ডেট্রয়েট হয়ে উঠেছে আমাদের পরিচিত শহরগুলোর মধ্যে একটি। শহরের পা দেয়ার সাথে সাথে মনে মনে কল্পনা করছিলাম, একটু পরেই বুঝি রাস্তায় গাড়ী থামিয়ে আস্তে করে বের হবে রোবোকপ। কিন্তু, ড্রামা আর ম্যুভির জীবনের সাথে বাস্তবের জীবন আলাদা। তাই রোবোকপের বদলে রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে যে বের হলো সে আমার বিশ্ববিদ্যালয়কালীন বন্ধু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা এক সাথে পড়েছি। সে এখন ডেট্রয়েটে অবস্থিত ওয়েইন স্টেইট ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করছে।
ভিডিওঃ এক ঝলক ‘রোবোকপ’
ডেট্রয়েট শহরের নামকরণ করা হয়েছে ‘ডেট্রয়েট রিভার’ এর নামানুসারে। তবে, ‘মোটর সিটি’ নামেও অনেকে ডেকে থাকে এই শহরকে। এই শহর আমেরিকার সবচেয়ে বড় তিন অটোমোবাইল কোম্পানি ‘জেনারেল মটরস্’, ‘ফোর্ড’ এবং ‘ক্রাইসলার’- এর হোম টাউন । মিশিগান স্টেইট এর সবচেয়ে বড় ও সুপরিচিত শহর হলেও ডেট্রয়েট মিশিগানের রাজধানী নয়, মিশিগানের রাজধানী ল্যান্সিং। তবে, মিশিগানের রাজধানী না হলে কি হবে, এটিকে বলা হয়ে থাকে সমস্ত বিশ্বের ‘পটেটো চিপস্’ এর রাজধানী। ডেট্রয়েটের মানুষ সারা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পটেটো চিপস্ খেয়ে থাকে। কারা কখন কিভাবে যে এই জরিপ চালালো কিংবা ডেট্রয়েটের মানুষেরই-বা এত পটেটো চিপস্ খাওয়ার কি কারণ, সেটা আর খুঁজে দেখার চেষ্টা করিনি। মাঝখান থেকে ‘পটেটো চিপস্’ যে একটা শহরের পরিচয় বহন করতে পারে, সেটা জেনে পটেটো চিপস্’র প্রতি সন্মান বেড়ে গেলো।
ঢাকা শহরকে বুঝানোর জন্য যেমনি শাপলা চত্বর, তেমনি ডেট্রয়েট শহরকে বুঝানোর জন্য দেখানো হয় ‘স্পিরিট অব ডেট্রয়েট’ ভাস্কর্যটি। আটান্ন হাজার ডলারে ব্রোঞ্জ নির্মিত ভাস্কর্যটি বসানো আছে শহরের মিউনিসিপ্যাল সেন্টারে। ভাস্কর্যটার দেখে মনে হলো, সেটার মধ্যে কেমন জানি একটা মাসল্ ম্যান জাতীয় ভাব। তবে, এই মাসল্ ম্যান প্রতীক ব্যবহার করেও শহরের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। যে প্রকারেরি র্যাংকিং করা হোক না কেন, যে প্রতিষ্ঠান-ই র্যাঙ্কিং করুক না কেন, ডেট্রয়েট অপরাধী শহরের তালিকা করলে এক, দুই, তিনের মধ্যেই থাকবে। শিকাগোতে রাতের বেলা দল বেঁধে চলার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। আর ডেট্রয়েটে দিনের বেলাতেও মানুষ গাড়ির দরজা খুলে বের হতে সতর্ক থাকে।
ডেট্রয়েট শহরের বাংলাদেশী কমিউনিটি তুলনামূলকভাবে বেশ বড়ই বলতে হবে। বাংলাদেশীরা দল বেঁধে একজায়গায় বসবাস করতে পছন্দ করে। বাংলাদেশী শুধু কেন, যে কোনো দেশীরাই সেটা পছন্দ করে। ইউএসএ’র শহরগুলোতে খুঁজলেই পাওয়া যায় গ্রিক টাউন, চায়না টাউন, ইটালিয়ান ভিলেজ, জার্মান ভিলেজ। বাংলাদেশীদের এলাকায় গিয়ে বাংলাদেশী বেশ কিছু ঘর-দোকান দেখতে পেলাম। সুন্দর করে বাংলায় সাইন বোর্ড লাগানো। তবে বাংলাদেশী নয়, ডেট্রয়েট বিখ্যাত আরবীয়দের জন্য। প্রায় চারলক্ষ আরবীয়ের বসবয়াস এই শহরে। ডেট্রয়েটের ‘ডিয়ারবর্ন’ যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি আরব অধ্যুষিত এলাকা। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে মোটর সিটি ডেট্রয়েটের মোটর কারাখানায় কাজের জন্য সর্বপ্রথম আরবীয়রা বিশেষ করে লেবানীজরা পাড়ি জমায় এ-শহরে। এখানে অবস্থিত ‘ইসলামিক সেন্টার অব আমেরিকা’ যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় বারোশটি মসজিদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মসজিদ এবং বয়সের দিক থেকে সবচেয়ে প্রাচীণ শিয়া মসজিদ।
আরবরা থাকলে থাকলো, তাই বলে বাংলাদেশিরাও কম যায় না-কি! সৌদি আরবে না-হয় মানুষ হজ্জ্ব করতে যায়, কিন্তু বাংলাদেশেওতো মানুষ ইজতেমায় যায়। হজ্জ্বের পর মুসলিমদের সবচেয়ে বড় সন্মেলন বিশ্ব ইজতেমা। অতএব, বাংলাদেশিদের নিজেদের করা একটা মসজিদ না থাকলে এই বিদেশের মাটিতে সেটা হবে অত্যন্ত লজ্জার একটা ব্যাপার। ফলে অত্যন্ত যৌক্তিক কারণে এখানেও বাংলাদেশীদের করা একটি মসজিদ আছে। সেটার নাম ‘বায়তুল মোকাররম মসজিদ’। সারা জীবন বাংলাদেশের মাটিতে দেখে এসেছি, প্রায় সমস্ত মসজিদের পাশে বাক্স নিয়ে পাঞ্জাবী পরা একজন মানুষ বসে আছে। মসজিদের জন্য সাহায্য চায়। একতলা মসজিদ হয়ে গেলে দুই তলা করার জন্য সাহায্য চায়, দুই তিন। আর উপরে বাড়ানোর ক্ষমতা না থাকলে, পুরাতন ভেঙ্গে নতুন মসজিদের করার জন্য সাহায্য চায়। বিদ্যুৎ না থাকলে তেল কেনার জন্য, বিদ্যুৎ থাকলে ফ্যান কেনার জন্য সাহায্য চায়। ডেট্রয়টের বায়তুল মোকাররম মসজিদের ওয়েবসাইটে-এ গিয়ে দেখতে পেলাম সংস্কৃতি মানুষকে সহজে ছাড়ে না।
ডেট্রয়েট শহরের পাশ ঘেঁষে চলে গেছে ডেট্রয়েট রিভার। রিভারের একপাশে ডেট্রয়েট অন্যপাশে ‘কানাডা’। নদীই এখানে সীমানা নির্ধারণ করেছে। সীমান্ত আছে, তবে তাই বলে সীমান্ত্ররক্ষীরা সবসময় গুলিভর্তি রাইফেল নিয়ে বসে থাকছে না; একদেশে বসে অন্যদেশের দিকে চোখ তুলে তাকালো কেন, সেই অপরাধে শার্টের কলার চেপে ধরে নিয়ে যাচ্ছে না। সীমান্ত ব্যাপারটা খুব অদ্ভূত। এটা প্রকৃতি তৈরী করে না, আমরা মানুষরা তৈরী করি। সারা পৃথিবীতে সীমান্ত নির্ধারণ করার জন্য দুইটা ভূখণ্ডকে কাল্পনিক একটা রেখা দিয়ে বিভক্ত করা হয়। তারপরও যখনই কোনো দেশের সীমান্তে যাই, কেমন জানি একটা অনুভূতি হয়। কাল্পনিক একটা রেখার অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করার শক্তি দেখে অবাক হই।
ডেট্রয়েট রিভারের অপর পাশে কানাডা, যদিও সেখানে যাওয়ার অনুমতি নেই। আসলে অনুমতি নেই বললে ভুল হবে। আমার যে বন্ধু ড্রাইভ করছে সে কানাডার রেসিডেন্ট, আমরা যে গাড়ীতে আছি তার নাম্বার প্লেট পর্যন্ত কানাডার। গাড়ীর মালিক, তার ফ্যামিলি, এমন কি গাড়ীরও কানাডা যাবার অনুমতি আছে; নেই শুধু গাড়ীর যাত্রীদের।
ওপারে চকচকে আলোয় উদ্ভাসিত কানাডা, এপারে আলো ঝলমলে ডেট্রয়েট শহর। এ-শহরে ক্যাসিনোর আলোই মনে হয় সবচেয়ে উজ্জ্বল। আমার নিজ শহর শিকাগো-তে ক্যাসিনো নিষিদ্ধ। শহর থেকে একটু দূরে যদিও আছে, শহরের মাঝখানটাতে নেই। শহরে কিংবা স্টেইট অনুযায়ী নিয়মগুলো ভিন্ন। যেমন, লাস ভেগাসে এয়ারপোর্ট এর ভিতরেই স্লট মেশিন বসানো। বিমানের উঠার আগে, কিছু টাকা খরচ করে উঠার ব্যবস্থা করে রেখেছে। নিউইয়র্কেও শহর থেকে কিছুটা দূরে ক্যাসিনো আছে। একেবারে শহরের মাঝখানটাতে আছে কি-না জানা হয়নি। সেখানকার ‘এম্পায়ার সিটি’ ক্যাসিনোতে গিয়ে দেখেছিলাম বেশ কিছু বাঙ্গালি মহিলা বোরখা পরে ডলারের পর ডলার দিয়ে খেলেই যাচ্ছে, টাকা হারছে আর একজনের গায়ে আরেকজন হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে। দেখে মনে হলো টাকা হারানো বড়ই আনন্দের ব্যাপার। অথচ, ক্যাসিনোতে খরচ করার জন্য আমার সর্বোচ্চ বাজেট বিশ ডলার। স্টুডেন্ট বলে কথা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কম পারিশ্রমিকে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করা শ্রমিক।
ডেট্রয়েটের যে ক্যাসিনোটাতে গেলাম সেটা আবার বহুতল। একটা ফ্লোর ঘুরে দেখতেই টায়ার্ড হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা। আবার প্রথম ফ্লোরেরই পেছনের দিকে গিয়ে দেখি স্টেজে চলছে মিউজিক্যাল প্রোগ্রাম। সুর উপেক্ষা করা আমার পক্ষে অসম্ভব, তা-সে যেই সুরেরই হোক না কেন। অবশেষে ক্যাসিনো বাদ দিয়ে গান শুনতে লেগে গেলাম। গায়িকা হেলে-দুলে নানা অঙ্গভঙ্গি করে চমৎকার গেয়ে যাচ্ছে। ঢাকার রাস্তায় ফার্মগেট, যাত্রাবাড়ীতে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে আমি গান শুনতাম। সাধারণ গলার সাধারণ বাজনার গানও ভালো লাগতো। বাংলাদেশে একটা অদ্ভূত দেশ। সত্যিকারের দামী সব জিনিসই সেখানে ফ্রি। আমাদের দেশে শিল্পীরা টিএসসি’তে যেভাবে ফ্রি মিউজিক শোনায়, সে-জিনিসটা এখানকার শিল্পীরা করে না। এখানে বড় বড় শিল্পীর কনসার্টগুলোতে যাওয়া অনেক ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। টিকিটের মূল্য গড়ে একশো ডলার বা তারও বেশি। ছোটো শিল্পীদের গানও ফ্রি নয়। ফ্রি’তো নয়ই, বরং এখানকার চলতি কথাগুলোর মধ্যে একটি হলো, ‘দেয়ার অ্যাইন্ট নো সাচ্ থিং অ্যাজ অ্যা ফ্রি লাঞ্চ’, সুযোগ পেলেই তারা সেটা শুনিয়ে দেবে।
রাতের ডেট্রয়েট দেখে পরদিন যেতে শুরু করলাম ইউনিভার্সিটি অব মেশিগান। সুন্দর ক্যাম্পাসের জন্য এই ইউনিভার্সিটির সুখ্যাতি আছে। আমরা ড্রাইভ করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু, কিছুক্ষণ পর এত বেশি তুষারপাত শুরু হলো যে রাস্তায় গাড়ী নিয়ে এগোনোই মুশকিল হয়ে গেলো। ওদিকে, ইউনিভার্সিটি না দেখেও আমরা ফিরে যাওয়ার মানুষ না। অবশেষে, সিদ্ধান্ত হলো, রাস্তায় যেতে যেতে যে-কোনো একটা ইউনিভার্সিটির সাইনবোর্ড হলেও দেখে, তবেই বাসায় ফিরবো, ইউনিভার্সিটি না দেখে বাসায় যাবো না। তুষারপাতের কাছে পরাজয় স্বীকার করার মানে হয় না। যুক্তরাষ্ট্রে তিন হাজারের মত ইউনিভার্সিটি। রাস্তায় তাদের সাইনবোর্ড থাকে, তাদের ক্যাম্পাসে যাওয়ার নির্দেশনা থাকে। মনে মনে আশা ছিলো, একটা না একটা ঠিকই পেয়ে যাবো। অবশেষে, এমন এক ইউনিভার্সিটির সাইন বোর্ড খুঁজে পেলাম, বাসায় শুধু ফিরেই আসলাম না, বরং নাচতে নাচতে ফিরে আসলাম। রাস্তায় খুঁজে পাওয়া আমাদের সেই ইউনিভার্সিটির নাম ‘ম্যাডোনা ইউনিভার্সিটি’।
শহরে অবস্থানের শেষ দিন চলে গেলাম বেল্ আইল্যান্ড-এ। এ আইল্যান্ডের একটি বিশেষত্ব আছে। এটি আমেরিকার সবচাইতে বড় আইল্যান্ড, যেটি কি-না শহরের মধ্যে অবস্থিত একটি সিটি পার্ক।
একপাশে আমেরিকা এবং অন্যপাশে কানাডাকে রেখে ডেট্রয়েট নদীর মাঝখানে চুপটি করে বসে আছে দ্বীপটি। গাড়ি চালিয়েই ব্রিজ পার হয়ে চলে যাওয়া যায় ছোট্ট দ্বীপটিতে, আর সেখানে বসে চোখ জুড়ে তাকিয়ে দেখা যায় নজরকাড়া ডেট্রয়েট শহর।
মইনুল রাজু (ওয়েবসাইট)
[email protected]
অনেক দিন মুক্তমনায় ভালমতো ঢুকতে পারিনি; যাই হোক, আপনার লেখা যথারীতি ভাল লেগেছে!
মানুষের ধর্মপরায়ণতা ও ইন্দ্রিয়পরায়ণতার এই দ্বন্দ্ব-বৈপরীত্য আমাদের দেশেও দেখেছি।
এই কয়েকদিন আগেও অনেক আরামপ্রদ আর সুন্দর একটা টিশার্ট কিনলাম মাত্র একশো টাকায়। পুরো রবীন্দ্রনাথ পড়া যায়, এমন একটি সিডি কিনলাম মাত্র একশো টাকায়। তবে আপনি ফ্রি বলতে কি বুঝিয়েছেন জানি না। অবশ্য মানুষের জীবনই মনে হয় আমাদের দেশে সবচাইতে কম দামী বা একেবারে ফ্রি!
আপনার নিজ শহর শিকাগোতে কাসিনো নেই কেন? শিকাগোবাসী ক্যাসিনো পছন্দ করে না?
ভাল থাকবেন, মইনুল ভাই! (F)
@কাজি মামুন,
মামুন ভাই, ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
ক্যাসিনোর কথাটা আগে একটু বলে নেই। শহরের মাঝখানে ক্যাসিনো হওয়া নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। এই লিঙ্কটাতে একটু দেখতে পারেন।
আর ফ্রি বলতে আসলে যেটা বলতে চেয়েছিলাম- আমি এখানে এসে দেখেছি আপনাকে টাকা দিয়ে আনন্দ কিনতে হয়। এরা যেটাকে ফান বলে সেটার দাম অনেক। কিন্তু, বাংলাদেশে আনন্দ অর্থাৎ আমাদের কাছে যে আনন্দ বৈশাখ, বসন্ত উৎসব, রাস্তার ধারে গান, জারি সারি গান, মেলা এ-সবইতো ফ্রি। তবে, সাথে এটা খুব ভালো বলছেন যে, সবচেয়ে দামী মানুষের জীবনই বাংলাদেশে ফ্রি।
ভালো থাকবেন।
ভ্রমন ব্যাপারটাই আনন্দের।আর আপনার লেখা পড়ে যেন ভ্রমন না করেও তার আনন্দ পেয়ে যাই।ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি লেখা উপহার দেয়ার জন্যে।এরকম আরো লেখা আশা করছি। 🙂
@সপ্ন,
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আরো বেশ কিছু পর্ব লেখার ইচ্ছে আছে। ভালো থাকবেন। 🙂
@ আফরোজা আলম,
ঈশ্বর তো জানবেই। আচ্ছা, শুনেছি আখেরাতে বেহেস্তিরা হুক্কা-তামাক সহ যা কিছুর নাম মুখ থেকে বের করবে বা চাইবে সবকিছুই নাকি পাওয়া যাবে। কোন বেহেস্তি যদি ক্যাসিনো খেলতে চায়, কিংবা রবীন্দ্র সঙ্গীত?
@ মইনুল রাজু ,
‘চাঁদ তারা সাদা আর সবুজ নিশান’ মার্কা বায়তুল মোকাররাম মসজিদটার ব্যাপারে একটু খোঁজ খবর নিয়ে যা দেখলাম, আমেরিকায় এতো মসজিদ আছে আগে তো জানতাম না। আচ্ছা, আমেরিকায় মসজিদের দেয়ালের বাহিরে অর্থাৎ মিনারে মাইক লাগিয়ে আজান দেয়ার অনুমতি আছে?
@আকাশ মালিক,
২০১০ এর হিসেব অনুযায়ী আমেরিকায় ১২০৯ টা রেজিস্টার্ড মসজিদ আছে। আজান দিতে আমি কখনো শুনিনি। কিন্তু, তাতে কি! গির্জার ঘণ্টা বাজিয়ে বিরক্ত করে মারে। আমি ভাবতাম, আমাদের দেশেই খালি রমজানের সময় সাইরেন বাজিয়ে সবার ঘুম ভাঙ্গানোর মত কাজটি করে। কিন্তু, এখানে এরাতো আরো রক্ষণশীল আরো ধর্মান্ধ। নাগরিক অধিকার নিয়ে চিৎকার করে গলা ফাটায় কিন্তু প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় সবার ডিস্টার্ব করে ঘণ্টা বাজানোর কি মানে। আমার বাসার পাশে একটা আছে, দিনের বেলায় ১১ টার সময় ১১টা, ১২ টার সময় ১২টা ঘণ্টা বাজায়।কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে ১টার সময় কোনো ঘণ্টা বাজায় না। :))
সেখানকার ‘এম্পায়ার সিটি’ ক্যাসিনোতে গিয়ে দেখেছিলাম বেশ কিছু বাঙ্গালি মহিলা বোরখা পরে ডলারের পর ডলার দিয়ে খেলেই যাচ্ছে, টাকা হারছে আর একজনের গায়ে আরেকজন হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে।
হায় হায়! বাঙ্গালি নারী–বোরখা পরিহিতা মুসলিমা–ক্যাসিনতে জুয়া খেলছে–এ যে কী দৃশ্য!
@আবুল কাশেম,
বিরাট দৃশ্য মিস্ করলেন, আমি কিন্তু ঠিকই দেখে ফেললাম। :))
@মইনুল রাজু,
বিরল দৃশ্যটার একটা ছবি তুললে পারতেন…… 😛
@দীপ্র,
ক্যাসিনোর ভেতরে ছবি তোলা নিষেধ। কিন্তু…(বাকিটা অপ্রকাশিতই থাকুক)। 🙂
@মইনুল রাজু,
এটা একটা ইনসাফের কথা হলো, আপনি একাই দেখলেন? আমরা দেখবো না? দৃশ্যটা কি এ রকম ছিল?
ছবিটি সরিয়ে নেয়া হল – মডারেটর
@আকাশ মালিক,
আপনার কাছে একটা নিবেদন, যদিও সারা ফেসবুকে এই ছবি ভরে গেছে, আমরা এখানে এই ছবি না রাখি। আমি ব্যক্তি হিসেবে মেয়েটির কথা চিন্তা করছি, আর এই ছবি এখানে দেখে তার হয়ে কষ্ট পাচ্ছি। সরিয়ে দিলে খুশি হই।
@নির্মিতব্য,
সহমত।
@আকাশ মালিক,
ছবিটা না দিলেই ভালো করতেন। অনেকদিন আপনার লেখা দেখি না। ছবি বাদ দিয়ে এবার বরং চমৎকার একটা লেখা দেন। 🙂
@মইনুল রাজু,
স্যরি স্যার। কীভাবে সরাতে হয়, মন্তব্য এডিট করার সুযোগ যে নাই। এডমিনকে অনুরোধ, প্লিজ ছবিটা সরিয়ে দিন।
@মইনুল রাজু,
আপনার এমন লেখা বড্ড মনোরম। যদিও আপনাদের সেই সব দেশে যাবার সৌভাগ্য হয়নি। কিন্তু, নেপালের ক্যাসিনোতে গিয়েছিলাম। কেননা যে হোটেল এ ঊঠেছিলাম তাদেরই ক্যাসিনো ছিল।
খেলেছিও , যদিও হোটেলের এক দোকানি আমাকে আগেই সাবধান করেছিল যেন ক্যাসিনোতে না খেলি। তথাপি একটু টেস্ট করার লোভ সামলাতে পারিনি। শেষ মেষ ফলাফল হেরে যাওয়া 🙁
অতঃপর ওখানকার মেয়েদের নাচ দেখলাম সত্যি ভালো লাগল। কিন্তু, পুরো ক্যাসিনো ঘিরে অসংখ্য জুয়াড়ীদের আড্ডা দেখেছি। কারা যে জিতে ইশ্বর জানেন- :-s
@আফরোজা আলম,
আসলে লোকজন ভালোই জেতে মনে হয়। আমি নিউ ইয়র্কে যখন গিয়েছিলাম। আমার সাথে থাকা বন্ধুর ছোট ভাই বিশ ডলার নিয়ে খেলতে বসলো, কিছুক্ষণের পরেই হঠাৎ সাতশ ডলার জিতে গেলো। তবে, এখানে অনেক ট্যাক্স কেটে রেখে দেয়।
আর আমরাতো শখের বশে যাই, দেখতে, ঘুরতে। প্রফেশনালরাতো হাজার হাজার ডলার নিয়ে বসে। ম্যাট ডেইমন আর ব্র্যাড পিট্ এর ‘ওশান ১৩’ মুভ্যিটা দেখতে পারেন। ক্যাসিনোকেন্দ্রিক, অনেক কিছু বুঝা যায়।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। 🙂
@আকাশ মালিক, মেয়েটার ছবিটার মধ্যে কি অশালীন কিছু দেখতে পাচ্ছেন? মেয়ে বলেই কী? একটা মেয়ে হিজাব পরে বা পরে না বলেই তাকে এধরণের স্ক্রুটিনির স্বীকার হতে হবে সেটা মেনে নেওয়া আমার পক্ষে একটু কষ্টকর। আশা করছি, ছবিটা সরিয়ে নেবেন এই ব্লগ থেকে।
@বন্যা আহমেদ,
দুঃখিত দিদি, সেভাবে মোটেই চিন্তা করিনি। এডমিনকে অনুরোধ করেছি ছবিটা সরিয়ে দিতে।
@আকাশ মালিক, ধন্যবাদ। দেখি মুক্তমনার কোন মডারেটরকে খুঁজে পাওয়া যায় কিনা ছবিটা সরিয়ে দেওয়ার জন্য।
পাঠকদেরর অনুরোধে ছবিটি সরিয়ে নেয়া হল। দয়া করে ভবিষ্যতে এ ধরনের ছবি মুক্তমনায় ব্যবহার করবেন না।
জনসংখ্যার দিক থেকে ডেট্রয়েট আমেরিকার ১৮তম বড় শহর। ১৩৮ বর্গমাইলের শহরে মাত্র সাড়ে সাত লাখ মানুষের বাস। ওহাইয়োতে থাকার সময় ডেট্রয়েট দেখেছিলাম কয়েকবার। মইনুল রাজুর চোখ দিয়ে আবার দেখার সুযোগ হলো। ধন্যবাদ মইনুল। ছবিগুলো চমৎকার। তবে বড় বড় শহরগুলোর ডাউন টাউনের স্কাইলাইন দেখতে প্রায় একই রকম লাগে।
@প্রদীপ দেব,
প্রদীপ’দা,
স্কাই লাইনের কথা যেহেতু বললেন, নিজের ক্যামেরায় তোলা শিকাগো শহরের এই স্কাইলাইনটা দেখানোর লোভ সামলাতে পারলাম না। এখানে ক্লিক করলেই পাবেন।
নেক্সট পর্ব ওহাইয়োর কলাম্বাস শহরকে নিয়ে লেখার ইচ্ছা আছে। 🙂
এহ কি সুন্দর। আম্রিকা জামু। জামুই জামু। আইচ্ছা মসজিদের সিম্বলের ব্যাপারটা ধরতেপারলাম্না।
কেমন একটা পাকিস্তানী পতাকা পতাকা আমেজ।
সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ। আম্রিকা আইলে অবশ্যই আপ্নের আতিথেয়তা গ্রহন করমু।
@সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড,
আমেরিকা আসলে শিকাগো আসতে ভুলবেন না, অবশ্যই চলে আসবেন।
আপনি বলার পর ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম। কেন যে পাকিস্তানি পতাকা পতাকা আমেজ সেটা আসলে ডেট্রয়েটের কেউ ভালো বলতে পারতেন। আমার জানা নেই আসলে। 🙂