আমাদের সময়ের একদল নায়ক
কবিতা
আদনান আদনান


কোন-আইস্ক্রিমটির অর্ধেক প্রায় শেষ করে ফেলেছিলাম। এমন সময় আমারই বয়সের (ছয়/সাত) একটি ছেলে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে হাত পাতে। আমি দু’পা এগিয়ে যাই, আরো দুটো কামড় লাগাই। তার হাত আমার দিকে পাতাই থাকে। আমি দ্রুত শেষ করতে চেষ্টা করি, কিন্তু সে আমার দিকে তাকিয়েই থাকে। শালা গরিবদের তাকানোর ধরনই আলাদা। চোখ দিয়ে বুকে কোঁচ মারে। আমি তার হাতে শেষের এক ইঞ্চি আইস্ক্রিম রাখি। সে গাড়লের মতো তা মেরে দেয় প্রায় সাথে সাথেই। প্রায়ই আমার ঘটনাটি মনে পড়ে। তাকে ঐ এক ইঞ্চি আইস্ক্রিম না দিয়ে, গালে টেনে একটা চড় মারলে ভাল হতো। এখনও আফসোস হয় চড়টা না মারার জন্য।


অন্য অনেকের মতো আমারও একটা বউ আছে। শুধু থাকতে হয় তাই আছে। যেমন আছে গাড়ি, খাট, আর ফকির খ্যাঁদানো লাঠি। বউ থাকলে বদমায়েশি করতে সুবিধা হয় তাই আছে। বিবাহিত পুরুষের মতো লম্পট আর কে আছে? এখানে ওখানে যাই, এর ওর সাথে শুই, আর বাড়ি ফিরে বউয়ের কোলে মাথা রাখি। এর ওর সাথে যা করা যাই, বউয়ের সাথে তার এক আনাও করা যায়না। যা তা করতে না পারা কি সুখের? বউ থাকতে হয়, তাই থাকে। আমারও আছে, আমার বাপেরও ছিলো, থাকবে আমার ছেলেরও। বউতো শতবার ব্যবহৃত পুরনো ন্যাঁকড়া। যখন বউয়ের সাথে শুই, তখনো আসলে অন্য নারীদের সাথেই শুই।


মুজিবের কথা বলেছি। জিয়ার কথা বলেছি। বাম ও ধর্মের রাজনীতিও করেছি। হাসিনার কথা বলেছি। খালেদার কথা বলেছি। এমনকি এরশাদের কথাও বলেছি। যখন যাঁর সময় এসেছে তাঁর পূজার জন্য ঘর ভরে তুলেছি মোটা মোটা আবোল-তাবোল বইয়ে। রাস্তাঘাটে তাদের নিয়ে তর্কে মেতেছি। সুবিধামতো কিছু কবিতাও লিখেছি। আমিও বুঝেছি যে তাঁরা চোর, তাঁরাও বুঝেছে যে আমি চোর। চোরে চোরে একে অন্যকে রক্ষা করেছি। সামনে আবার কঠিন সময় আসছে বলে মনে হচ্ছে। রক্তের গন্ধ পাচ্ছি। হাসিনা-খালেদার লাশ দেখতে পাচ্ছি। একটি নতুন দেবতা খুঁজছি।  আমি নির্লজ্জ, আমি সব পারি।

চলবে – – –