এই গল্পটি আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ও প্রিয় দুজন ব্যক্তি; ফরিদ দাদা এবং অভিজিৎ দাদাকে উৎসর্গ করলাম।

১৯৭১ সন। হানাদারদের উৎপীড়ন চলছে তামাম বাংলাজুড়ে। কামান, গোলাবারুদের দামামা বাজছে, বিষাক্ত ধোঁয়া উড়ছে বাংলার আকাশে-বাতাসে। গ্রাম বাংলার সবুজ শাড়িতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিচ্ছে পিশাচীরা। শহরের পিচঢালা কালোরাস্তা মানবরক্তে রাঙাচ্ছে ওরা বিষম উল্লাসে। গ্রামে,শহরে বাড়িঘর সবকিছু ধ্বংস করে চলেছে খেলা ভেবে। হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট তো চলছেই নিত্যনৈমিত্তিক। এখানে সেখানে বাঙালির গণনাহীন লাশ ও বধ্যভূমি। বাংলার মাটি তারই সন্তানদের মরণকূপ। বর্বরতার এই চরম বীভৎসতা দেখে, মাতৃভূমির, মায়ের, বোনের অপমান দেখে প্রতিবাদমূখর হয়ে উঠেছিল বাংলার দামাল ছেলেরা। এমনই একটি দামাল ছেলে দীপু। ১৬-১৭ বছর বয়স। বাবা ইশকুল মাস্টার। দুটি ভাইবোন ওরা, দীপু আর নীলা। নীলার বয়স ১৪। কিছুদিন থেকে দীপুর পরিচিত অনেকেই যুদ্ধে যাচ্ছে। কেউ কেউ বাবা-মায়ের অনুমতিতে আর কেউ কেউ অনুমতি না পেয়ে পালিয়ে। দীপুর কিশোরমনেও উঠেছিল প্রতিবাদের তীব্র ঝড়। দীপু বাবা-মাকে একদিন এসে বলল, আমি যুদ্ধে যেতে চাই। বাবা-মা তো দিশেহারা, ব্যাকুল। কী বলছিস খোকা! কেঁদে কেটে চিৎকার চেঁচামেচি করে একাকার। কোথায় যাবি, কী খাবি, কোথায় ঘুমাবি, আমাদের কী হবে, তুই কি অস্ত্র চালাতে জানিস, ওরা তো তোকে মেরে ফেলবে; আমরা কী নিয়ে বাঁচবো। প্রশ্ন ও কান্নাকাটির ঝড়-তুফান বেহাল কাণ্ড।

দীপু বলল, যুদ্ধে না গেলেও তো মেরে ফেলবে। দেখছনা আমাদের আশেপাশের কতজনকে ওরা ধরে নিয়ে গেল, তারা তো আর ফিরে এলোনা। কতজনের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিল,কতগুলো মেয়েকে ধরে নিয়ে গেল। পাশের বাড়ির মিনু আপাকেও তো ধরে নিয়ে গেল। এভাবে কাপুরুষের মত না মরে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে মরা অনেক ভাল না! মা কান্নায় ভেঙে গিয়ে বললেন,খোকা তোর সতের বছর এখনো মাঝে মাঝে তোকে আমি মুখে তুলে খাওয়াই, তোর পরনের কাপড় আমি নিজের হাতে ধুই, তোর সব জিনিসপত্র আমার হাতে গুছিয়ে রাখি। যুদ্ধে গিয়ে তুই না খেয়ে,না নেয়ে,ময়লা কাপড়ে বনে-বাদাড়ে ঘুরে বেড়াবি। কখন যে শত্রুরা তোকে মেরে ফেলে দেবে। তোর লাশটাও হয়ত দেখতে পাবোনা। তুই যুদ্ধে গেলে আমার মুখে খাবার রুচবে কীকরে। আমি বাঁচবো কেমন করে। ওরা যদি আমাদের সবাইকে মেরে ফেলে,ফেলুক। সবাই একসাথে মরবো।তুই যাসনে বাবা। দীপু বলল, মা তুমি আমার জন্মদাত্রী মা। তাই আমাকে আটকে রাখতে চাইছ। আমাদের জন্মভূমিও তো আমাদের সবার মা। দেশমাতার এতবড় দুর্দিনে তুমি তোমার ছেলেকে স্বার্থপরের মত ঘরে বেঁধে রাখবে!এতটা আত্মকেন্দ্রিক আমরা কী করে হই বল? মা-বাবা ছলছল নয়নে বললেন, তোকে আর বাধা দেবনা। যা, যুদ্ধে যা। মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত কর। একবিন্দু রক্ত,একবিন্দু নিশ্বাস থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ করবি। সেই রাতেই দীপু সবার বুকভাঙা কান্নায় বিদায় নিল যুদ্ধের উদ্দেশ্যে। যাবার বেলায় বাবা-মা জিজ্ঞেস করলেন,কোথায় থাকবি বাবা; কি করে তোর খবরা-খবর পাবো। দীপু বলল, এখন কিছুই বলা যাবেনা। পরে যদি পারি খবর পাঠাবো। সেই দুরন্ত কিশোর মা-বাবা ও বোনের কলিজা ছিঁড়ে গভীর রাতের অন্ধকারে মূর্ছিত মায়ের বুক থেকে এক ঝটকায় বেরিয়ে গেল। রাতের আঁধারে মিশে গেল। উৎকণ্ঠায়, দুশ্চিন্তায় দিনরাত কাটছে বাবা মা ও বোনের। দীপুর জন্য চিন্তা তো আছেই, সাথে নিজেদের জন্যও। কখন হানাদারেরা এসে হানা দেয়! এক মাস পরে দীপুর এক বন্ধু এসে খবর দিলো দীপু ইন্ডিয়ায় আছে, যুদ্ধের ট্রেনিং নিচ্ছে। যাক কিছুটা স্বস্তি অন্তত পাওয়া গেল।

গ্রামে হায়েনাদের অত্যাচার দিনদিন বেড়ে চলেছে। প্রতিদিনই কারো না কারো বাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে। পুরুষদেরকে হত্যা করছে, যুবতী কিশোরী মেয়েদেরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সব মানুষের অবস্থা যেন গুলিবিদ্ধ পাখির মত। ছটফট ছটফট করছে সবাই দিনেরাতে। কখন কার উপর হামলা হবে কেউ জানেনা।দিকেদিকে মৃত্যু, রক্ত, লাশের স্তূপ, ধ্বংস আর ধ্বংস, সর্বনাশের কালো হাতছানি। দেশমাতৃকার এই মহাদুর্দিনেও কিছু মানুষের উল্লাস ধরেনা।ওরা হানাদারদের খাতির-যত্ন করে,বাড়িতে এনে খাওয়ায়। তরুণী মেয়েদের সন্ধান দেয়। প্রাণভয়ে অনেকেই নিজ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। এই সামগ্রিক বিপদের দিনে সবারই তো মহাবিপদ। কারো উপর গিয়ে তাদের বিপদের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়া ঠিক হবেনা ভেবে দীপুর বাবা-মা আর কোথাও গেলেন না। একরাতে হানাদারের গাড়ি এসে থামলো দীপুদের বাড়ির সামনে। ভয়ে যেন প্রাণ বেরিয়ে যাচ্ছিল। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকলো। নীলা বাবা মা তিনজনে জড়াজড়ি করে সেঁটিয়ে ছিল ঘরের কোণে। বাবা-মা দুজনেই প্রাণ দিয়ে ঢেকে রাখতে চাইলেন নীলাকে। কিন্তু হায়েনাদের শিকারী চোখকে ফাঁকি দিতে পারলেন না। বাবা-মা ওদের পায়ের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়লেন। বললেন, মেরে ফেল আমাদের সবাইকে। হায়েনাগুলো ওদের কাউকেই মারধোর করল না। বেশ মাজি, বাবাজি করে কথা বলল। আর নীলাকে নিয়ে চলে গেল। যারার সময় বলে গেল, তোমাদের মেয়ে আমাদের কাছে অতি আদর-সোহাগেই থাকবে। মা-বাবা আর্তনাদ করে বললেন,বাবারা আমাদের সবাইকে মেরে ফেল;ওকেও মেরে ফেল, তবুও ওকে নিয়ে যেওনা। নীলা আকুল হয়ে বলল; বাবাগো, মাগো আমায় বাঁচাও। নীলার আকুতি শুনে হায়েনাগুলো তাদের বিষ-দাঁত কেলিয়ে অট্টহাসি হাসতে লাগলো। বাবা-মা যগপৎ ভূমিসাৎ হলেন। গগনবিদারী আহাজারিতে বলতে লাগলেন; মানিকরে, বাছারে তোকে রক্ষা করতে পারলাম না। হায়েনার দল এসব কথায় কর্ণপাত না করে আনন্দিত চিত্তে চলে গেল শিকার নিয়ে। মা-বাবা পড়ে রইলেন অজ্ঞান হয়ে। কৃষ্ণপক্ষীয় সময় যেন থেমে রইল। কেমন করে যে কাটলো কয়েকটি মাস ব্যক্ত করার কোনো উপায় নেই।

একদিন যুদ্ধের দামামা থেমে গেল। দেশ স্বাধীন হলো। দীপু ফিরে এলো। ওর পায়ে গুলি লেগেছিল।একটি পা খোঁড়া হয়ে গেছে। তবুও দুঃখ নেই। দেশ তো স্বাধীন হলো। বীর মুক্তিযোদ্ধা ছেলেও ফিরে এলো বুকে। অনেক লোকজন দেখতে আসে দীপুকে, সবাই গর্ব করে এক কিশোর মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে। এলোনা শুধু নীলা। কিছুদিন পরে নীলার ১টা চিঠি এলো। সে ঢাকায় নারী পুনর্বাসন কেন্দ্রে আছে। বাবা, মা, ভাই কেউ যদি বেঁচে থাকে তাকে যেন বাড়ি আনতে যায়। সে খুবই অসুস্থ,শরীর খুবই দুর্বল তাই একা আসতে পারবেনা। যেন জন্মান্তর পেরিয়ে গেছে পরিবারের কারো সাথে দেখা নেই,খবরাখবর নেই। চিঠি পেয়ে বাবা গেলেন নীলাকে দেখতে। বাবা তো নীলাকে প্রথমে দেখে চিনতেই পারেননি। সেই ফুলের মত ফুটফুটে মেয়ের এ-কী হাল!চেনার কোনো উপায় নেই। কোথায় তার দিঘলকালো আজানুলম্বিত চুল? কোথায় সে ফুলের হাসি? কোথায় সে জোছনার মত গায়ের রঙ? কোথায় সেই টানা টানা ছলছলে চোখ?ন্যাড়া মাথা। সারা গায়ে ফোসকার মত কালো কালো দাগ। চোখের চারপাশে কালো। আপাদমস্তক বিধ্বস্ত, এ যেন বেদনার ভাণ্ডার!বাবা-মেয়েতে জড়াজড়ি করে সে-কি কান্নার ঢল! যেন পৃথিবীর সমস্ত কান্না ভেঙে পড়েছে ওদের মাঝে। অনেকক্ষণ কান্নাকাটির পর নীলা জিজ্ঞেস করলো মা ও ভাইয়ের কথা। বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাই দেশ স্বাধীন করে ফিরে এসেছে জেনে নিজের অনেক দুঃখ যেন নিমেষে ভুলে গেল। বাবাকে বলল নিজের অন্ধকার কয়েকটি মাসের কথা।

নীলাকে হায়েনাগুলো কোথায় নিয়ে রেখেছিল সেটা নীলা জানেনা। একটা চির-অন্ধকার বাঙ্কারে বন্দি ছিল ওরা ২৫-৩০ জন মেয়ে। ১০ বছর থেকে ৪০ বছর বয়েসের নারীরে ভর্তি ছিল কুঠুরিটি। দিনেরাতে হায়েনারা ওদের ওপর হামলা করতো। নীলা তার লম্বা চুল গলায় বেঁধে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। সেজন্য পেয়েছিল কঠোর শাস্তি,১০০ বুটের আঘাত। এরপর অনেকেরই মাথা ন্যাড়া করে দেয় নেকড়েগুলো। যাতে ফাঁস দিতে না পারে সেজন্য ওদের শাড়ি পরতে দেয়া হতনা। ছোট একটা লুঙ্গি আর একটা গেঞ্জিই ছিল ওদের বসন। অনেক মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল। হায়েনারা জানতে পেরে ওদের মেরে ফেলেছিল। সেই মেয়েদের জায়গায় এনেছিল নতুন মেয়ে। এভাবে নরকের কীটের মত কাটছিল কৃষ্ণপক্ষীয় সময়। সেখান থেকে বের হবার আশা কারুরই ছিলনা। কী বীভৎস ছিল সেইসব দিনগুলি!মনে হচ্ছিল জন্ম-জন্মান্তর কেটে যাবে পিশাচখানায়। কেউ কেউ বলত ওরা বোধ হয় মৃত্যুর পরে দোযখে এসেছে। ওরা মনেপ্রাণে মৃত্যু কামনা করত। মৃত্যুও পালিয়ে গিয়েছিল পিশাচীদের ভয়ে।

একদিন নেকড়েগুলো আর এলোনা। বাইরে থেকে আলো দেখা গেল। কোমলকণ্ঠে মাতৃ-সম্বোধন ভেসে এলো,” মায়েরা তোমরা বেরিয়ে এসো। তোমাদের আর কোনো ভয় নেই। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, তোমরাও স্বাধীন।“ বন্দি মেয়েদের কারো কারো গায়ে স্বল্প বস্ত্র ছিল। কারো গায়ে তাও ছিলনা। দুই একজন ভীরুপায়ে আস্তে আস্তে সামনে এগিয়ে গেল। দেখলো ইন্ডিয়ান সৈন্যবাহিনীর কয়েকজন সেনা হাতে কিছু কাপড়-চোপড় নিয়ে ওদের জন্য অপেক্ষা করছে। কয়েকজন শিক সেনা নিজেদের মাথার পাগড়ি খুলে বিবস্ত্রাদের দিকে এগিয়ে দিয়ে নিজের গায়ের আড়াল করে দাঁড়ালো। ওদেরকে গাড়িতে তুলে নিয়ে ঢাকায় নারী পুনর্বাসন কেন্দ্রে পৌঁছে দিল। সেখান থেকে সবাই যার যার আপনজনদের সাথে যোগাযোগ করে বাড়ি ফিরতে পারবে। সেদিন মেয়েরা মুক্তি পেয়েও কেঁদেছিল। সে কান্না ছিল আনন্দের এবং অজানা ভবিষ্যতের চিন্তায়। পরিবার ওদেরকে গ্রহণ করবে তো? সমাজ ওদের ঘৃণা করবে না তো?কী-ই বা হবে ওদের ভবিষ্যৎ? নিজেদের নানান প্রশ্নে বিদ্ধ হচ্ছিলো নিজেরা। নারী পুনর্বাসন কেন্দ্রে আসার পরে সবার চিকিৎসা হচ্ছে। সকলের শরীর ভীষণ দুর্বল। গায়ে ঘা, পাঁচরা। সারা গায়ে উকুন। কেউ কেউ মানসিক বিকারগ্রস্ত। কেউ কেউ অন্তঃসত্ত্বা। বিভিন্ন দেশ থেকে ডাক্তার ও সাহায্যকারী টিম এসেছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ও মানুষকে সাহায্য করতে। অন্তঃসত্ত্বাদের অনুমতিক্রমে তাদের গর্ভপাত করানো হচ্ছে। নীলাও অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল। ওর গর্ভপাত করানো অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কারণ ওর গর্ভাবস্থা ৭মাস পেরিয়ে গিয়েছিল আর ওর শারীরও বেশ দুর্বল ছিল। তাই প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও ওকে শত্রুর বীজটি জন্ম দিতে হয়েছিল। একটি কন্যা হয়েছিল তার। এক ড্যানিস দম্পতি নবজাত কন্যাটিকে দত্তক নেয়। ওদের কাছে শিশুকন্যাকে হস্তান্তরের সময় নীলার সে কী কান্না! নীলা চিৎকার করে কেঁদে বলেছিল, তোর কলঙ্কিনী, অভাগিনী মাকে ছেড়ে কোথায় যাচ্ছিস? কী আশ্চর্য! যে শত্রুর ভ্রূণের প্রতি তার তীব্র ঘৃণা ছিল, জঘন্যতম উৎসবের মধ্য দিয়ে যার জন্ম তার উপর নীলার মাতৃত্বের মায়া জন্মালো কী ভাবে?

সব কথা বলা হলো নীলার। নীলা বললো,বাবা দুঃখ দুর্দশা তো অনেক গেল এবার বাড়ি যাবো। মায়ের হাতে পেট পুরে ভাত খাবো। কতকাল যেন শান্তিতে ঘুমাই না। বাড়ি গিয়ে শান্তিতে একটু ঘুমবো। বাবা বললেন, তা কী করে হয়, তুই এখানেই থাক। আমরা তোকে চিঠি দেব, মাঝেমাঝে এসে তোকে দেখে যাবো। নীলা আকুল হয়ে বললো, কেন বাবা, কেন আমি এখানে থেকে যাবো? আমায় তুমি বাড়ি নেবেনা? বাবা বললেন, সমাজ তোকে মন্দ বলবে; সবাই ঘৃণা করবে। আমাদেরকে ঘৃণা করবে,একঘরে করবে। কেন বাবা আমার কী অপরাধ? আমি কি স্বেচ্ছায় গিয়েছিলাম? ভাইও তো যুদ্ধে গিয়েছিল, সে তো ফিরে এসেছে ঘরে। ওকে তো কেউ মন্দ বলেনা, আমায় কেন বলবে! ভাই দেশের জন্য যুদ্ধ করেছে, নিজের পা দিয়েছে। আমিও তো নিজের সম্ভ্রম দিয়েছি। ভাইয়ের জন্য তো আমারও গর্ব হয় তোমাদের মত। বীর ছেলে তোমাদের গর্ব আর বীরাঙ্গনা মেয়ে কেন তোমাদের লজ্জা?বাবা নীলার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে হাউ মাউ ক’রে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গেলেন। নীলা আর্তনাদ করে বলল, আমাকে তোমরা ভুলে যেও বাবা। মনে ক’রো আমি ম’রে গেছি অথবা নীলা নামের তোমাদের কোনো সন্তান ছিলনা কোনদিন। কখনো আমার খোঁজখবর নিওনা।

সহায়িকা;
১। আমি বীরাঙ্গনা বলছি—নীলিমা ইব্রাহিম
২। পূর্ব পশ্চিম—সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
৩। আমাদের বীরাঙ্গনা ও যুদ্ধশিশুরা ঃ পাপমোচনের সময় এখনই—ফরিদ আহমেদ