১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরে ৯ মাসের মহান মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের এক স্বাধীন রাষ্ট্র আত্মপ্রকাশ করে।মুক্তিযুদ্ধের সময়কাল ৯ মাস বলা হলেও আসলে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে আমাদের এই সংগ্রাম কিন্তু মাত্র ৯ মাসের নয়।ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম মুসলিম রাষ্ট্রের জন্মে কোথায় পূর্ববাংলার মুসলিমরা একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচবে,তাতো নয়ই বরং কিছুদিন পর থেকে আবার তাদের নতুন করে ভাবতে শিখতে হয়।
চাকুরি,শিক্ষা,ব্যাবসা,অর্থনীতি,রাজনীতি ইত্যাদি প্রতিটা ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙ্গালীদের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্য চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেবার মত।এগুলো হজম করতে না করতেই ১৯৫২ সালে বাঙ্গালিদের জোর করে উর্দু ভাষা গিলে খাওয়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা করল জিন্নাহ।বাংলা নাকি হিন্দুদের ভাষা,মালুদের ভাষা।এই ভাষায় কথা বলা যাবেনা।রবীন্দ্র চর্চা করা যাবেনা।আইয়ুব খান অবশ্য অতটা নির্দয় ছিলেননা বাঙ্গালীদের প্রতি।তিনি বললেন,কেন রবীন্দ্র চর্চা করা যাবেনা?নিশ্চই যাবে।কিন্তু একটা শর্ত আছে।অবশ্যই কোন মুসলিমকে রবীন্দ্র সঙ্গীত লিখতে হবে।
মাতৃভাষার দাবিতে ২১শে ফেব্রুয়ারিতে রফিক,সালাম,বরকতদের মহান আত্মত্যাগ তো আজ আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত।২১শে ফেব্রুয়ারী আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে আমরাই একমাত্র জাতি যাদের মাতৃভাষার দাবিতে প্রাণ দিতে হয়েছে।আর সাথে এটাও বলে রাখি পাকিস্তানিরাই একমাত্র জাতি যারা নিজেদের ভাষা অন্যের উপর জোর করে চাপিয়ে দিতে হত্যা করেছিল বাঙালি সন্তানদের।
এরপর ১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নিরঙ্কুশ জয়লাভের পরেও ক্ষমতা ছাড়তে রাজি হলনা পাকিস্তানিরা।২৫শে মার্চ কাল রাত্রিতে নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের উপর ঝাপিয়ে পরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরে এদেশের সন্তানেরা।শুরু হয় আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ।
অবশেষে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের লাল-সবুজের বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আমাদের প্রতি পাকিস্তানিদের এই বৈষম্য কিন্তু পাকিস্তানি জনগণের অজানা ছিলনা।২৫শে মার্চে কাল রাত্রিতে যখন হানাদার বাহিনী বাঙালি নিধনে নেমেছিল তখন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জিন্নাহ তৎকালীন পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাইদ আহমেদকে বলেন,আলহামদুলিল্লাহ্।পাকিস্তানকে আমরা রক্ষা করতে পেরেছি।
আজকে রাজনীতিতে এসে পাকিস্তানের ক্রিকেট নায়ক ইমরান খান ৭১ এর ঘটনায় বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত মনে করেন।কিন্তু ১৯৭১ সালে কোথায় ছিলেন এই ইমরান খান?নিজ কানে নাকি তিনি বাঙ্গালীদের হত্যা করার নির্দেশ শুনেছিলেন।একজন আন্তর্জাতিক সেলিব্রেটি হয়ে তার কি তখন কিছুই করার ছিলনা?তখনতো এককান দিয়ে শুনে আরেক কান দিয়ে বের করে দিয়েছিলেন।তাহলে এখন কেন?বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে রাজনৈতিক ব্যবসা করবেন এই আশায়?
ঠিক সেই সময়ে এপ্রিলের দিকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সাবেক এমপি মাইকেল বার্ন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বর্বর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের ব্রিটেনে আসা আটকে দেন।
পরবর্তীতে জুলাইয়ের দিকে পাকিস্তান এই সফর করতে পারে।ব্রিটেন তখনো বাংলাদেশের এই স্বাধীনতা যুদ্ধকে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকৃতি প্রদান করেনি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ত ৎ কালীন উপাচার্য ও বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী তখন লন্ডনে।দেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে বিশ্বজনমত গঠন করতে তিনি তখন অগ্রাণী ভুমিকা পালন করেন।বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ও প্রবাসী নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিল, যে দেশের সেনাবাহিনী নির্বিচারে নিজ দেশের মানুষের ওপরই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে, সে দেশের কোনো ক্রীড়াদলের বিদেশের মাটিতে নির্বিবাদে খেলাধুলায় অংশ নিতে দেওয়া যেকোনো বিবেকবান মানুষের পক্ষেই অনুচিত। তারা প্রতিটি ভেন্যুতেই পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের কালো পতাকা প্রদর্শনের কর্মসূচি ঘোষণা করলেন।সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লন্ডনের বিখ্যাত লর্ডস, ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ড, লন্ডনেরই আরেক বিখ্যাত ক্রিকেট ভেন্যু দ্য ওভাল, বার্মিংহামের ট্রেন্টব্রিজ প্রভৃতি সব জায়গাতেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করলেন ব্রিটেন প্রবাসী বাঙালিরা। বিব্রত হলেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। ব্রিটিশরা জানল, পাকিস্তানে স্বাভাবিক পরিস্থিতি নেই। কোনো হাঙ্গামা নয়, চি ৎ কার করে প্রতিবাদ নয়, হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে টেস্ট ম্যাচগুলোর সময় কেবল বাঙালিরা জানিয়ে দিল, ওরা (পাকিস্তানিরা) আমাদের এমন একটি পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে, যেখানে দাঁড়িয়ে আমরা বাঙালিরা এখন আর পাকিস্তানকে নিজের দেশ হিসেবে কিছুতেই ভাবতে পারি না।
এসব ছাড়াও পাকিস্তানিরা আমাদের মনে করতো ভারতের দালাল।মনে করতো এবং এখনো মনে করে এদেশের মুসলিমরা সাচ্চা মুসলিম নয়।এখনও তাদের ইতিহাসে লেখা আছে ৭১ সালে পূর্বপাকিস্তানের মানুষেরা ভারতের সাথে এক হয়ে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল বলে পাকিস্তানিরা নাকি বাংলাদেশকে ভারতের কাছে ছেড়ে দিয়েছিল!তারা এখনো তাদের ইতিহাস বইতে পড়ছে ৭১ সালের আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ নাকি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ!এখনো তাদের শিক্ষার্থীদের পড়ান হচ্ছে ভুল ইতিহাস।
ঘটনা ১ :
গত ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশ যৌথ আয়োজক ছিল ভারত এবং শ্রীলংকার সাথে।পাকিস্তানের আয়োজক হবার কথা থাকলেও অন্যান্য দেশগুলোর আপত্তিতে পাকিস্তানের আয়োজক হিসেবে অংশগ্রহণ বাতিল করা হয়।কারন পাকিস্তানের মাটি তালেবানের ঘাটি হিসেবেই পরিচিত সবার কাছে।
২৩শে মার্চ ঢাকার মিরপুরে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনাল দেখতে যাই আমি।ম্যাচটি ছিল পাকিস্তান ও ওয়েস্টইন্ডিজের।বিশ্বকাপের নিয়মানুসারে শুরুতে দুই দলের জাতীয় সংগীত হবে। জাতীয় সঙ্গীতের সময়ে দাড়িয়ে সম্মান প্রদর্শনের নিয়ম থাকলেও ঠিক করলাম পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীতের সময় দাড়াবনা।যে জাতি আমাদের অস্তিত্ত চায়নি তাদের জাতীয় সঙ্গীতে সম্মান প্রদর্শন?
আমি বসে থাকলাম।শুধু আমি না,আমাদের গ্যালারির আরও অনেকেই আমার মত বসে আছে।খুব সম্ভব ৯/১০ বছরের একটা ছেলেকে দেখলাম থু ফেলাতে।চোখে মুখে রাজ্যের ঘৃণা!পাক সার জামিন সাদ বাদ শুরু হল।কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে পুরো স্টেডিয়ামের বেশীরভাগ মানুষই দারিয়ে গলা মেলাল পাকিস্তানী খেলোয়াড়দের সাথে!রাজ্যের বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থেকে ওদের পাক সার জামিন সাদ বাদ শুনলাম।
পাকিস্তানের পর ওয়েস্টইন্ডিজের পালা।এবার আর কারো হুশ জ্ঞান নেই।বেশীরভাগ দর্শকই বসে পড়েছে।গ্যালারির শোরগোলের মধ্যেই ওয়েস্টইন্ডিজের সঙ্গীত শেষ হল।
খুব ভাল খেলছিল পাকিস্তান।কিন্তু কে জানি চিৎকার করে বলল,পাকিস্তান ভুয়া!মুহূর্তের মধ্যেই পাকিস্তানের এক সমর্থক চিৎকার করে বলে উঠল,ইন্ডিয়া ভুয়া!!টেন্ডূলকার ভুয়া!!তার সাথে গলা মেলাল অনেকেই!বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়ানো উমর গুল বারবার তাকিয়ে ঘটনা বুঝতে চেষ্টা করছিলেন।
ভাল করে খেয়াল করলাম পুরো গ্যালারি।পাকিস্তানের পতাকা উড়ছে।কারো হাতে কারো মুখে।এক বাচ্চার মুখের এক পাশে পাকিস্তানের পতাকা আঁকা।আরেক পাশে বুম বুম আফ্রিদি।অনেক তরুন-তরুণী পাকিস্তানের জার্সি পড়ে এসেছে খেলা দেখতে।একজন আবার পাকিস্তানের পতাকা হাতে গ্যালারির এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত দৌড়াচ্ছিলেন যার পিঠে লেখা প্রজন্ম একাত্তুর!কয়েকদিন পরেই খুব সম্ভব প্রথম আলোতে পড়েছিলাম এই ম্যাচে পাকিস্তানের এতো সমর্থন দেখে পাকিস্তানের বিভিন্ন দৈনিকে লেখা হয়েছে বাংলাদেশের মুসলিম ভাইয়েরা ৭১ এ তাদের(আমাদের) ভুল বুঝতে পেরে পাকিস্তানি ভাইদের বুকে টেনে নিয়েছে।তারা আশা করছে অনেকদিন পর হলেও আবার দুই পাকিস্তান এক হবে!
ঘটনা ২:
গত বছরের ২৪শে নভেম্বরে মিরপুর ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম আমার এক বন্ধুর সাথে।যাওয়ার সময় বুঝতে পারছিলাম এখানে আজ কোন ক্রিকেট ম্যাচ হচ্ছে।আগে থেকেই জানতাম আইসিসি মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচ গুলো বাংলাদেশে হচ্ছে।কিন্তু আজকে কার ম্যাচ জানা ছিলনা।ম্যাচ দেখতে কোন টিকিট লাগবেনা।শ্রীলংকা দলের অলরাউন্ডার শশীকলা আমার অনেক দিনের বন্ধু।ওর খেলা কখনো সরাসরি দেখা হয়নি।ভাবলাম যদি শ্রীলংকা অথবা সালমাদের ম্যাচ থাকে তাহলে বেশ ভাল হয়।স্টেডিয়ামের ভিতরে ঢুকে বুঝলাম এটা পাকিস্তান-দক্ষিনআফ্রিকার ম্যাচ।কিন্তু কিছুতেই বুঝতে পারলামনা স্টেডিয়ামে এতো পাকিস্তানের সমর্থন কেন?পাকিস্তানের মহিলা টিমের খেলা নিশ্চই উপস্থিত দর্শকদের অদেখা।খুব বেশি হলে অধিনায়ক সানা মিরকে চিনতে পারে।তাহলে তারপরেও এতো সমর্থন কেন?প্রত্যেকটা বলে পাকিস্তানি ব্যাটারদের উৎসাহ দিচ্ছিল উপস্থিত দর্শকেরা।পাকিস্তানের মহিলা টিমে তো আর শোয়েব-আফ্রিদিরা নেই।তাহলে?
ক্রিকেটে বাংলাদেশিদের পাকিস্তান সমর্থন প্রসঙ্গে:
১.বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচে পাকিস্তান সমর্থন:
এবার আসি বহুদিনের বিতর্কিত একটি প্রসঙ্গে।বাংলাদেশে পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের যে সমর্থন তা যথেষ্টই চোখে পড়ার মত।পৃথিবীতে আর কোন দেশের মানুষই নিজের দেশের দলকে রেখে অন্য দলকে সমর্থন করেনা।বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ হচ্ছে অথচ আমাদের দেশের অনেক মানুষ আছেন যারা বাংলাদেশকে সাপোর্ট না করে পাকিস্তানকে সাপোর্ট করে।তাদের বক্তব্য খেলা হচ্ছে খেলা।এর মধ্যে রাজনীতি নিয়ে আসা উচিত নয়। খেলা শুধুমাত্র খেলাই থাকে যখন তা পাড়ার মাঠের খেলা থাকে।কিন্তু যখন তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হয় তখন তা আর শুধুমাত্র খেলা থাকেনা।একটি দেশের জাতীয় দল সেই দেশের প্রতিনিধিত্ত করে।দেশের জাতীয় পতাকা বহন করে।দেশের জাতীয় দল যেখানে যাবে,দেশের পতাকা তুলে ধরবে।এই দলের সাফল্য-ব্যর্থতার সাথে পুরো জাতির হাসি কান্না জড়িয়ে থাকে।এইকারনে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কোন ম্যাচ জিতলে আমাদের পুরো জাতি জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে।হারলে দলের খেলোয়াড়দের মত পুরো জাতি শোকাচ্ছন্ন থাকে।দলের খেলোয়াড়েরাও যখন জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নামে তখন আর সে শুধুই একজন খেলোয়াড় থাকেনা,হয়ে যায় নিজ দেশের রাষ্ট্রদূত।নিজের দেশের জাতীয় দলের বিরুদ্ধে,জাতীয় পতাকার বিরদ্ধে,পুরো জাতির বিরদ্ধে যে সমর্থন করে সে কি রাজাকার নয়?
নিজ দেশে খেললে দর্শকরা তাদের দলকে সমর্থন দেবেন এটাই স্বাভাবিক। আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আমাদের খেলা হলেও গ্যালারি থেকে আমাদের পতাকা উড়িয়ে উৎসাহ দেওয়া হয়।‘ এ বক্তব্য পাকিস্তানি ক্রিকেটার আব্দুর রাজ্জাকের।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত পাকিস্তান যতবার খেলতে এসেছে (বিশেষ করে ২১শে ফেব্রুয়ারি,২৬শে মার্চ অথবা ১৬ই ডিসেম্বর)প্রতিবারই পাকিস্তান অধিনায়ক অথবা ম্যানেজারকে ৭১ নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখিন করেছেন এদেশের কিছু সাংবাদিক।আর প্রতিবারই এসব প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন তারা কখনো বা বিরক্তি ভাব নিয়ে,কখনো বা নো কমেন্ট বলে কখনো বা বলেছেন,আমরা এখানে শুধুমাত্র ক্রিকেট খেলতে এসেছি।যেমনটা গতবার এসে বলে গেছেন পাকিস্তানি অধিনায়ক আর তাদের দলীয় ম্যানেজার।
অনেকে আবার বলেন সবকিছুতে ৭১ আনা ঠিক নয়।তাহলে ৭১ কি শুধুই ইতিহাসের পাতায় থাকবে?
২.পাকিস্তান-ভারত ম্যাচে পাকিস্তান সমর্থন:
আমাদের দেশে এই ধরনের মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশী।এরা বাংলাদেশ পাকিস্তান ম্যাচে বাংলাদেশ সমর্থন করলেও অন্য দেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ম্যাচ থাকলে পাকিস্তানের সমর্থন করে আর থাকে ভারতের বিরুদ্ধে।
এদেরকে যদি বলি ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে পাকিস্তানকে কেন সমর্থন কর?এরা বলবে ক্রিকেটের সাথে রাজনীতি মিলাবেননা।খেলা হছে খেলাই।ভারত আমাদের ৭১ এ সাহায্য করেছিল ঠিক আছে কিন্তু খেলার মদ্ধে রাজনীতি মিলাবেননা প্লিজ।এখন যদি বলি বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচে তাহলে কাকে সাপোর্ট কর?এদের উত্তর দিতে একমুহূর্তও দেরি হয়না।সাথে সাথে বলে বসে,কেন?বাংলাদেশকে সাপোর্ট করি।এটা আমার দেশ।নিজের দেশকে সাপোর্ট করবোনা,আমি কি রাজাকার নাকি?
কিন্তু মশাই,এখনকি আপনি ক্রিকেটের মদ্ধে রাজনীতি আনছেননা!আপনি রাজনীতি আনতে পারলে আমি কেন ৭১,৩০ লাখ,২লাখ এসব সংখ্যা আনতে পারবোনা?এগুলোকি শুধুই সংখ্যা আমাদের জন্য?
আবার অনেকে ভারতীয় বিএসএফের কথা তুলে ধরেন।যে বিএসএফ সীমান্তে যেভাবে বাংলাদেশী মানুষ হত্যা করছে তাদের দেশকে কিভাবে আমরা সাপোর্ট করি?এখানেও কি রাজনীতি চলে আসেনা?বিএসএফের এই সীমান্ত হত্যা অনেকে পাকিস্তানিদের ৭১ এর গনহত্যার সাথেও তুলনা করে থাকেন।বিএসএফের কোন অধিকার নেই এভাবে সীমান্তে হত্যা করা।কেউ অন্যায় করলে আইন অনুযায়ী তার বিচার করা উচিত কিন্তু তাই বলে হত্যা-নির্যাতন তারা করতে পারেনা।কিন্তু আমাদেরও নিশ্চই উচিত নয় বেআইনি ভাবে ওদের দেশে প্রবেশ করা।ট্যাক্সের টাকা বাঁচাতে আমাদের দেশের অসহায় মানুষদের ওদের দেশে প্রবেশ করতে হয় আর এর জন্য বিএসএফের গুলিতে তারকাটায় ঝুলে থাকতে হয়।দীর্ঘদিন ধরে এই ঘটনা ঘটলেও আমাদের সরকার কোন ব্যবস্থাই নেয়নি মাঝে মাঝে প্রতিবাদ করা ছাড়া।এই সীমান্ত হত্যার দায় তাহলে কি শুধুই বিএসএফের?আমাদের সরকারের নয়?
কিন্তু বিএসএফের এই সীমান্ত হত্যার জন্য ভারতকে ঘৃণা করা কতটা যুক্তিযুক্ত?৭১সালে ওদের সরকারের থেকে কোন অংশে কম ছিলনা ভারতীয় সাধারণ জনগনের ভুমিকা।যেখানে ভারতেই প্রতি বছর অনেক মানুষ না খেয়ে মারা যায় সেখানে আমাদের ১ কোটি শরণার্থীর খাদ্য-বস্ত্র-চিকিৎসা ইত্যাদি ওরাই দিয়েছিল।আমাদের পাশে ওদের সাধারণ জনগণই দারিয়েছিল।সীমান্তে হত্যার কোথাও ওরা লুকিয়ে রাখেনি যা পাকিস্তান করেছিল ৭১এ।কিন্তু ৪৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত আমাদের প্রতি যে অন্যায় অবিচার পাকিস্তানিরা করেছিল তা কি পাকিস্তানের সাধারণ জনগণের অজানা ছিল?সারা পৃথিবীর মানুষ যেখানে জানত সেখানে নিজের দেশের মানুষের কথা ওরা জানতোনা এমন যুক্তি রীতিমত হাস্যকর।২৩ বছরের বৈষম্যের কথা জানতোনা এখনো জানেনা আবার না জেনে ক্ষমা চাওয়ার কথাও বলে!
চীন-ভারত সীমান্তে কম যুদ্ধ হয়নি।কম মানুষ মারা যায়নি।কিন্তু কখনো শুনেছেন ভারতীয়রা চীনাদের ঘৃণা করে অথবা চীনারা ভারতীয়দের ঘৃণা করে?
পকেট খরচ বাঁচাতে ভারতের টাটা-মাহেন্দ্র লোকাল বাসে চড়েই দিন শুরু হয় আমাদের।ভারতীয় পিয়াজ-আদা দিয়ে তৈরি করা হয় খাবার।কুরবানির সময়ে ভারতীয় গরু না আসলে কুরবানি হয়না আমাদের।কসমেটিকস থেকে শুরু করে বিনোদনের জন্য ক্যাবল চ্যানেল ভারতীয়।আমাদের ঘরে শোভা পায় শাহরুখ-সালমানদের পোস্টার।কিন্তু তারপরেও আমরা যেভাবে ভারত শব্দটাকেই ঘৃণা করি পাকিস্তানিরাও হয়তো করেনা!দৈনন্দিন ভারতীয় জিনিষের উপর আমাদের এলারজি না থাকলেও ভারতীয় ক্রিকেটারদের বিষয়ে আমাদের মারাত্মক এলারজি।এর কারন কি জানেন?এর সবচেয়ে বড় কারন ওরা ভারতীয়।
৩.পাকিস্তান মুসলিম দেশ তাই পাকিস্তান সাপোর্টঃ
পাকিস্তান মুসলিম দেশ তাই পাকিস্তানের সমর্থন করি।এই ডায়ালগটাও যথেষ্ট জনপ্রিয়।কিন্তু আসুন একটু ভালভাবে চিন্তা করে দেখি।
বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় সারাদেশ আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের পতাকায় ছেয়ে যায়।কেন পয়গম্বরের দেশ সৌদি আরব-সেনেগাল কি মুসলিম দেশ না?আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের সাথে সৌদি-সেনেগালের ম্যাচে আমাদের দেশের কয়জন মানুষ সৌদি-সেনেগালের পক্ষ নেয়?কয়টা পতাকা উড়ে বাড়ির ছাদে?তখন তো ঐ শূকর খাওয়া মেসি-কাকাদেরই নাম জপা হয়!
অর্থাৎ মুসলিম দেশ বলে পাকিস্তান সমর্থন করি এটা কখনই গ্রহণযোগ্য উত্তর নয়।পাকিস্তান সমর্থন করা হয় কারন তারা পাকিস্তানি।আর এদেশের মানুষেরা এখনো পাকিস্তানের প্রতি টান অনুভব করে।
৪.পাকিস্তান ভাল খেলে তাই পাকিস্তানের সমর্থন:
এই যুক্তিও যথেষ্ট প্রচলিত।কিন্তু ভাল কি শুধু পাকিস্তানই খেলে?ভাল খেলার কথাই যদি ধরা হয় তাহলে সবার আগে আসবে অস্ট্রেলিয়ার নাম।৪ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অসিরা।টেস্ট অথবা ওয়ানডে ক্রিকেট দুই ধরনের ক্রিকেটেই ওদের রেকর্ড যথেষ্ট সমৃদ্ধ।
আর এশিয়ান টিমের কথা বললে আরও আগে আসবে ভারত-শ্রীলংকার নাম।দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারতের রয়েছে বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপ।সর্বচ্চ ৫ বার এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন ভারত যেখানে পাকিস্তান এশিয়া কাপ জিতেছে মাত্র ১ বার।এশিয়ার টিম গুলোর মদ্ধে একমাত্র ভারতই টেস্ট ক্রিকেটের গদা হাতে নিতে পেরেছে।শ্রীলংকা পাকিস্তানের মত ১ বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেও এশিয়া কাপ জিতেছে ৩ বার।বিশ্বকাপের সর্বশেষ ৫ আসরে ফাইনাল খেলেছে তিন বার,একবার সেমিফাইনাল।সবচেয়ে বেশি রান সেঞ্চুরি ভারতের শচিন টেন্ডুলকারের,সবচেয়ে বেশি উইকেট শ্রীলংকার অফস্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরনের।
সুতরাং নিঃসন্দেহে বলা যায় অস্ট্রেলিয়া অথবা এশিয়ার ভারত-শ্রীলংকা পাকিস্তানের থেকে ভাল খেলে।তাহলে কেন পাকিস্তান সমর্থন?এর কারন ওরা পাকিস্তানি।
৫.আমাদের ক্রিকেট সম্পর্কে পাকিস্তান:
অনেকে বলেন ভারত আমাদের চিরশত্রু।ওরা কখনোই চায়না আমরা ক্রিকেট খেলি।ভারতীয় ব্যাটসম্যান বিরেন্দ্র শেওয়াগ তো আমাদের জাতীয় শত্রু।শেওয়াগ বলেছিলেন তিনি মনে করেননা বাংলাদেশের এই বোলিং অ্যাটাক টেস্টে ভারতের ২০ উইকেট তুলে নেবার ক্ষমতা রাখেন।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং বাংলাদেশের টেস্ট খেলার যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন।আমাদের টেস্ট স্ট্যাটাস পাবার সময় সবচেয়ে বিরোধিতা করেছিল নিউজিল্যান্ড।প্রশ্ন তুলেছিলেন জিওফ বয়কট ও।কিন্তু দোষ হবার সময় শুধু ভারতীয়দেরই হয়।
পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক এবং উইকেট রক্ষক রশিদ লতিফের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায় সেই মুলতান টেস্টে আমাদের অলক কাপালির ক্যাচ ধরে।এরপরে আফগানিস্তানের কোচ হবার পর তিনি মন্তব্য করেন আফগানিস্তান নাকি বাংলাদেশের থেকে ভাল দল।
পাকিস্তানিরা আমাদের ক্রিকেট ও আমাদের সম্পর্কে কি মনে করে তার জন্য এই লেখার সেরা আকর্ষণ নিচের এই ভিডিও।যেখানে তারা স্পষ্ট ভাবে বলেছে তারা আমাদের দেশের বাঙ্গালীদের মুসলিম মনে করেনা।
[youtube=http://www.youtube.com/watch?v=gInDVDk_PIk&feature=player_embedded]
এমন আরও কিছু ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
[youtube=http://www.youtube.com/watch?v=41Oa5zMMbJg&feature=related]
এবং
[youtube=http://www.youtube.com/watch?v=QmQ4nNC38uA&feature=related]
৬.পাকিস্তানী খেলোয়াড়দের চরিত্র:
পাকিস্তানি খেলোয়াড়েরা আমাদের দেশের অনেকের কাছেই স্বপ্নপুরুষ।তাহলে আসুন দেখে নেই এসব সপ্নপুরুষদের স্বপ্নের চরিত্র।প্রথমেই দেখি ‘ড্যাশিং’ খেলোয়াড় শহিদ আফ্রিদির চরিত্র।
বছর কয়েক আগে এই শহিদ খান আফ্রিদি অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট মাঠে সবার সামনে আপেলের মত করে বল কামড়ে বলের আকৃতি বিকৃত করে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন কয়েক ম্যাচ।মুখে দাড়ি রেখে বর্তমানে ধার্মিকের বেশ ধরা আফ্রিদি ২০০০ সালে সিঙ্গাপুরে কি যেন করে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে!
এরপরে আসি রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস খ্যাত স্পীড স্টার শোয়েব আক্তারের কথায়।বিতর্ক আর শোয়েব যেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ।ক্যারিয়ারে যে কতবার বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন শোয়েব তা হয়তো তার নিজেরও জানা নেই।ইতিহাসের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে বল টেম্পারিং করে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ২০০৩ সালে শ্রীলংকাতে অনুষ্ঠিত একটি ট্রায়াঙ্গুলার টুর্নামেন্টে।এছাড়াও সতীর্থ আসিফকে ব্যাট দিয়ে পিটান,ইনজুরির নাম করে অস্ট্রেলিয়ার লিগে ম্যাচ খেলা,ড্রাগ কেলেঙ্কারিতে জড়ানো শোয়েবের বিতর্কের কোন শেষ নেই।
২০০০ সালের দিকে ম্যাচ ফিক্সিং এ ধরা পরে ফাইন দিয়েছিলেন ওয়াসিম আকরাম,ওয়াকার ইউনুস,মুশতাক আহমেদ এবং বর্তমানে অনেকের আদর্শ সাঈদ আনোয়ার।আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সেলিম মালিক এবং আতাউর রহমান।
২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে পাকিস্তানি কয়েকজন খেলোয়াড় যা করেছে তা ক্রিকেট ইতিহাসেরই সবচেয়ে বড় কলঙ্কের জন্ম দিয়েছে।স্পট ফিক্সিং করে জেল খাটছেন সালমান বাট,মোহাম্মদ আসিফ এবং মোহাম্মাদ আমির।জুয়াড়ি মাজহার মাজিদের ভাষায় দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটার টাকা নারী খাবার ছাড়া কিছুই বোঝেনা।
ঘটনা ৩:
১৭ই ডিসেম্বের,২০১১ ঢাকার মিরপুর স্টেডিয়ামে আমরা তিন বন্ধু(আমি,ব্রাত্য,ফারদিন) খেলা দেখতে গিয়েছিলাম বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার টেস্ট ম্যাচ।মুখের এক পাশে পাকিস্তানের পতাকা আরেক পাশে আফ্রিদি লিখে একছেলে পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের সমর্থন করে যাচ্ছিল।বাংলাদেশি খেলোয়াড় আউট হলেই আনন্দে লাফাচ্ছিল।সাকিব ব্যাটিং এ নামার সময় শিয়ালের ডাক দিচ্ছিল।আমরা তিন বন্ধু ঐ ছেলেকে বুঝাই।পাকিস্তানের পতাকা মুছতে তাকে বাধ্য করি।আমরা যখন তাকে দিয়ে পাকিস্তানের পতাকা মুছাচ্ছিলাম তখন গ্যালারির অন্যান্য দর্শকেরা তার গালের আফ্রিদিও মুছাতে বাধ্য করে।সেই পাকি ভক্তের অবস্থা দেখুন।
পরিশেষেঃ
যে জাতি আমাদের অস্তিত্ত চায়নি সেই জাতির সাফল্যে আনন্দিত হওয়া,ব্যর্থতায় কষ্ট পাবার কোন অধিকার কি আমাদের আছে?স্বাধীনতার ৪০ বছরেও ক্ষমা চায়না,ক্ষমা যদি চেয়েও থাকে ১৪ই ডিসেম্বর,১৯৭১ এ যে আমাদের জাতিগত ভাবে পঙ্গু করে দিয়ে গেল তার কি কোন ক্ষমা আছে?থাকতে পারে?
আজকে অনেকেই বলবেন বাবা অপরাধ করলে তার ঘৃণা তার সন্তান কেন পাবে?অবশ্যই পাবে যদি সে মনে করে তার বাবা যা করেছিল ঠিকই করেছিল।
৭১ সালে যদি আপনার সামনে আপনার বাবাকে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে মেরে ফেলত,আপনার মা-বোনকে ধর্ষণ করত পারতেন কোনভাবে পাকিস্তানকে ভালবাসতে?ওদের সমর্থন করতে?
খেলার মাঠে দেখা যায় আমাদের দেশের মানুষেরা ভারত-পাকিস্তানের জার্সি পড়ছে-পতাকা উরাচ্ছে।এই ভারত-পাকিস্তানের পতাকা কি আমাদের?ওদের জার্সি কি আমাদের?একবার আমাদের পতাকা-জার্সির দিকে তাকিয়ে দেখুনতো।আমাদের লাল-সবুজ কি কম সুন্দর?
ভাই, পাকি খেলোয়ারের চেহারার কারনে এদেশের অনেক মেয়ে তাদের সাপোট করে- এ কথাটা ঠিক। আমার বউ কিশোর বয়সে পাকি দলের সাফল্যের জন্য রোজা রাখত।
@আব্রাহাম,
চেহারা কি রাহুল দ্রাবিড়,যুবরাজ সিং,বিরাট কোহলি,ইরফান পাঠান,ধোনিদের নেই?শুধুমাত্র চেহারায় নয়।ব্যাট হাতেও এরা যথেষ্টই পারদর্শী।কিন্তু এদের চেহারা বা সাঙ্গাকারা,মাহেলাদের চেহারা পাকি ভক্তদের নজরে আসেনা।দল হিসেবে যেমন পাকি সমর্থন করে প্রিয় খেলোয়াড় বাছাই করার সময়েও পাকি দলের থেকেই সুন্দর চেহারা দেখে পছন্দ করা হয়।হাজার হইলেও তো পাকিস্তানের সিল মারা আছে এদের!!
(quote)আমার কাছে তো মনে হইতাছে না। আপনার কাছে কেন হইতাছে বুঝাইয়া কন।(/quote)
”৪৭এই বাঙালি স্বাধীন হয়েছে” আর ”উপদেশবর্শনকারীরা নিজ জাতি সত্তার জন্য একটা আলাদা দেশও গঠন করতে পারে নি” এর মাঝে আপনি দুরকম দেখতে পাচ্ছেন না? এক জায়গায় বললেন স্বাধীন হয়ে গেছে; আর এক জায়গায় বললেন, আলাদা দেশও গঠন করতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা। স্বাধীন মানে কি? আলাদা দেশ গঠন অর্থ কি? বুঝিয়ে বলবেন?
(quote)এইহানে লেখক কইছে, নামের মাদকতাতেই ভালোবাসা, মানে ঐশ্বরিয়ার নাম ঐশ্বরিয়া এই জন্যই তারে ভালোবাসা যাইব, ভালোবাসার থিকা নামের মাদকতা না।(/quote)
ভুল করছেন। লেখক যখন বলেন, ” মেয়েদের সাপোর্টের ব্যাপারে বলব,দলের নাম পাকিস্তান এই কারনেই ওদের সমর্থন করে।”, তখন উনি আসলে বোঝাতে চান যে, পাকিস্তান নামটা মেয়েদের মনে কাঁপুনি ধরায় এইজন্য যে, পাকিস্তান আগে থেকেই খেলা ব্যতিত অন্য কারণে ঐ মেয়েগুলোর মনে জায়গা করে নিয়েছে। একটু ভেবে দেখেন, লেখক এটাই বোঝাতে চেয়েছেন বলে মনে হয়।
(quote)আমি পরিষ্কারভাবেই আত্নসমালোচনায় বিশ্বাসী পাবলিক।(/quote)
এখন পর্যন্ত নমুনা দেখিনি। অবশ্য আপনি গত বিজয় দিবসের প্রাক্কালে বাংলাদেশীদের লোক দেখানো দেশপ্রেমের সমালোচনায় মুখর ছিলেন। আর এখানেই সমস্যা। আমরা সবাই যদি নিজেদের সমালোচনা করতাম, তাইলে জাতির গায়ে বড় বড় সমালোচনার বোঝা চাপাইয়া দেওন দরকার হইত না; জাতি আপনাআপনি ঠিক হইয়া যাইত! (আমি ডরে আছি ভাই; আমারে রতিক্রিয়ার গালিডা দিয়েন না; মুখ ফস্কে কিছু কথা বাইরায় গ্যাছে!)
@কাজি মামুন,
ললজ কাজিদা…!!আমিও ভয়ে আছি :-Y
@সাইফুল ইসলাম,
[quote]পশ্চিমবঙ্গ বাঙলাদেশ, দুদেশের মানুষকে বাঙালি মনে হয় দেখেই বলেছি ৪৭এই বাঙালি স্বাধীন হয়েছে।[/quote]
অথচ আপনি অচেনাকে কি বলেছেন দেখুনঃ
[quote]কিন্তু যেটা ভেবে দুঃখ করি তাহল উপদেশবর্শনকারীরা নিজ জাতি সত্তার জন্য একটা আলাদা দেশও গঠন করতে পারে নি। যদিও তারজন্য উপদেশ বিলোতে কোন সমস্যা তার হচ্ছে না।[/quote]
দু’রকম মনে হচ্ছে! বিষয়টা বুঝিয়ে বলবেন?
[quote]নামের মধ্যে কি এমন মাদকতা থাকতে পারে যে শুধু পাকিস্তান নামের মাধ্যমেই পাকিস্তানের খেলোয়াররা বাঙলাদেশের যুবতীদের মন হৃদয় সব কেড়ে নিল?[/quote]
আপনি যাকে ভালবাসেন, তার নামের মাঝেও আপনি মাদকতা খুঁজে পাবেন।
[quote]বাঙালি উপদেশ দিয়ে রতিক্রিয়ার চেয়েও বেশি আনন্দ পায়।[/quote]
কেন যে কিছুদিন ধরে নিজেকেই গাল দিচ্ছেন!
@কাজি মামুন,
আমার কাছে তো মনে হইতাছে না। আপনার কাছে কেন হইতাছে বুঝাইয়া কন।
আমি পাই না। আমি হয়ত আপনেগোর মতন জ্ঞ্যানী অইতে পারলাম না এহনও।
সবচাইয়া বড় কতা, এইহানে আপনার দেওয়া সূত্রানুযায়ী কিন্তু কাম হইতেছে না, এইহানে লেখক কইছে, নামের মাদকতাতেই ভালোবাসা, মানে ঐশ্বরিয়ার নাম ঐশ্বরিয়া এই জন্যই তারে ভালোবাসা যাইব, ভালোবাসার থিকা নামের মাদকতা না। দুইটা আলদা দুই জিনিস।
এইখানে গালাগালির কিছু হয় নাই। সহজ-সরল একটা সত্য কথা বলা হইছে। আমি পরিষ্কারভাবেই আত্নসমালোচনায় বিশ্বাসী পাবলিক। গালাগালির ডরে তো আর নিশিকুটুম্বরে পুলিশ কইতে পারি না কী কন?
@নাস্তিক দীপ-
লেখাটির বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আমার বিতর্ক আছে, আপাতত অল্পতেই কিছু জিনিস তুলে আনছি।
১. বাংলাদেশের বাঙালিরা ছাড়াও ভাষার জন্য, স্বাধীনতার জন্য মানুষের জীবনদানের ইতিহাস কম নেই। শুধু বাঙ্গালিরাই ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে, এটা সর্বৈব একটা উগ্র জাতীয়তাবাদী মিথ্যা প্রচারণা।
২. ভাষা, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, রাজনীতি, অর্থনীতি- এ সবকিছুর মাঝেই আন্তঃসম্পর্ক বিদ্যমান। চাইলেও অস্বীকার করতে পারা যাবে না। কিন্তু এই সম্পর্কগুলো সবাই একইভাবে বুঝবে বা স্বীকার করবে সেটাকে ভাবা বোধ হয় অনুচিত। এটাই মানুষের বৈশিষ্ট্য। কাজেই একটা ছেলে/ মেয়ে যদি ক্রিকেট বা অন্য কোনো খেলাকে নিছক খেলাই ভাবে, এর সাথে অপরাপ বিষয়গুলোর সম্পর্ক না বুঝে; তবে তাকে এককভাবে দায়ী করা কতটা সঠিক? যে রাষ্ট্রে স্বাধীনতার ৪০ বছরেও সত্যিকার ইতিহাস রচনা করা সম্ভব হয় নি, ইতিহাস হয়েছে দলীয় প্রচারণা আর স্ট্যান্টবাজির মাধ্যম, গণমানুষকে যে ইতিহাসে সঠিকভাবে ধারণ করতে পারে নি, সেখানে, সেই দেশে বেড়ে ওঠা একজন ছেলে/মেয়ে খেলাকে যদি বিচ্ছিন্ন একটা বিষয় হিসেবে দেখতে চেষ্টা করে, তার দায় কতখানি? তার এই বিচ্ছিন্নতার বোধ তো এই রাষ্ট্র আর সমাজ ব্যবস্থাই তৈরি করে দিয়েছে! যেখানে বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে রাজনিতিকে কুক্ষীগত বিষয় করে রাখা হয়েছে, বিরাজনীতিকরণের বিষ যখন এই সমাজের প্রতিটি জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তখন সেখানে একজন মানুষকে আপনি এসব অপপ্রচারের প্রভাব থেকে মুক্ত হিসেবে চিন্তা করবেন কি করে? এই দায় তখন ঐ পাকিস্তানের সমর্থক ছেলে/মেয়েটির চাইতে অনেক বেশি এই রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের। যারা বুঝেন বিষয়গুলো, তখন তাদের উচিৎ ঐসকল ছেলে/মেয়েদের বিষয়গুলো, এই আন্তঃসম্পর্কগুলো ধরিয়ে দেওয়া, বুঝিয়ে দেওয়া যুক্তির মাধ্যমে, ঐ ছেলেমেয়েগুলোর প্রতি কোনো রকম বিদ্বেষ বা অর্থহীন ঘৃণা প্রদর্শন নয়।
৩. ভাষা সৈনিকদের একটি সংগঠন আছে, নাম- “একুশের চেতনা পরিষদ”। সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিক, সাধারন সম্পাদক- কামাল লোহানী। সম্ভব হলে তাদের সাথে একদিন জিজ্ঞেস করবেন, আমাদের ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলন- এসকল ক্ষেত্রে উর্দু ভাষী কোনো মানুষের অংশগ্রহন ছিলো কিনা আমাদের পক্ষে! আশা করছি, অনেক নতুন ইতিহাসও আপনি জানতে পারবেন। আপনাকে এটুকু জানাতে পারি, স্বাধীনতা পদক এর জন্য সরকার মুক্তিযুদ্ধে আমাদের প্রতি সমর্থনদানকারি বিদেশী নাগরিকদের নাম লিস্ট করছে। অনেক বিদেশীই আছেন সে তালিকায়; আমার জানামতে সেই তালিকায় কয়েকজন পাকিস্তানের নাগরিকের নামও আছে। যতদূর জানতে পেরেছি, এ বছর চারজন বিদেশীকে দেওয়া হবে এই সম্মাননা, তবে সেখানে পাকিস্তানের সেই নাগরিকরা এবার থাকছেন না।
ইমরান খানকে আমি মোটেই পছন্দ করি না, রাজনৈতিকভাবে একজন সুবিধাবাদী চরিত্র, কিন্তু তাকে উদাহরণ হিসেবে নিয়ে এসে পাকিস্তানী সাধারণ মানুষের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনের যে যুক্তি আপনি বিভিন্নভাবে উপস্তাহপন করেছেন, তার সাথে আমি একমত নই।
একটা বিষয় স্পষ্ট হওয়া জরুরী যে, পাকিস্তানের শাসকশ্রেণী ও তার সামরিক বাহিনীর ৭১ এর ভূমিকার জন্য যদি এর সাধারণ জনগণকেও একই অপরাধে সংযুক্ত বা দোষী করা হয়, তবে তো আজকে বাংলাদেশে পাহাড়ী ও আদিবাসীদের উপর এখানকার সরকার ও তার সামরিক জান্তার যে নিষ্পেষণ ও অত্যাচার, তার জন্য সমগ্র বাঙালি জাতিকেও দায়ী করতে হয়। এটা ইতিহাসের নির্মমতা। শাসক গোষ্ঠীর সকল খারাপ কাজের ভাগীদার তার জনগণকেও করা হয়, যেই কাজে হয়তো সেই জনগোষ্ঠীর অনেকেই একমত প্রকাশ করে না। ইতিহাসের এইসকল একমাত্রিক বিশ্লেষণের সুযোগ সুযোগসন্ধানী মৌলবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলো নেয় স্বীয় স্বার্থে। তাই, শাসক গোষ্টীর অপরাধের দায় আমি নিরীহ সাধারণ মানুষের উপর দিতে নারাজ ভায়া। বাংলাদেশের একজন খেটে খাওয়া শ্রমিকের সাথে আমি পৃথিবীর কোনো দেশের শ্রমিকের পার্থক্য দেখি না, এমনকি পাকিস্তানের শ্রমিকটিরও না।
পাকিস্তানের চেয়ে কোনো অংশে ইংরেজরা কম ছিলো শোষণ আর অত্যাচারে? মেয়াদকালও তো বেশি ছিলো অনেক। ইংরেজরা কি পূর্বসূরীদের অত্যাচারের জন্য, শোষণ নিপীড়ণের জন্য এদেশবাসী বা ভারতবাসীর কাছে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চেয়েছে? কেনো চায় নি? এই বিষয়গুলোকে আবেগীয় জায়গা দিয়ে বিশ্লেষণ করলে অনেক জনপ্রিয় বুলি ছাড়া যাবে, বাজারে লোক তা খাবেও, কিন্তু মূল সংকটটাকে এড়িয়ে যাওয়া হবে। ইংরেজদের হাত থেকে ভারতবর্ষ স্বাধীন, এরপরে পাকিস্তানের হাত থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন করা- এসবই এক এক ধরনের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ফলাফল, দুইটার মাত্রা দুই রকম। উভয়ক্ষেত্রেই যে দেশটি স্বাধীন হলো- ভারত উপমাহদেশের এবং বাংলাদেশ- উভয় ক্ষেত্রেই বিষয়টা তাদের জন্য স্বাধীনতার সংগ্রাম হলেও বিজিত রাষ্ট্র তো সেভাবে দেখে না বিষয়টাকে, সে দেখে এটাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের ফসল হিসেবে। সেখানকার শাসকশ্রেণী তাদের জনগণের সামনে বিষয়টাকে ফুটিয়ে তুলে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের একটা ঘটনা হিসেবে এবং সেভাবেই তাদের জনগণ ও বিশ্ববাসীর সামনে প্রচার করে।
আজকে বাংলাদেশের শাসকশ্রেণী এদেশের পাহাড়ী ও আদিবাসী জনগণের প্রতি যে চরম নিষ্পেষণ্মূলক দমননীতি চালাচ্ছে, তার দায়ভার নিতে তো এর রাষ্ট্রের বাঙালি জনগোষ্টীর একজন হিসেবে আমি রাজী না। আমি তো সরকারের এই পলিসির সাথে একমত পোষণ করি না, তবে কেনো আমাকে এর দায় নিতে হবে? কিন্তু এই বিষয়গুলোকে নিয়ে যদি আমরা সচেতনভাবে চিন্তা করতে না পারি, তবে সামনের দিন ঐ আদিবাসী জনগোষ্ঠীও বাঙ্গালিদের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রাম নৈতিক বিবেচনা করে চালিয়ে যাবে এবং এই শাসকগোষ্ঠীকে শুধু ঘৃণা না করে তার পক্ষে যেই বাঙালি আমি, তাকেও সে ঘৃণা করবে।
পাকিস্তান রাষ্ট্রটির প্রতি অপরিসীম ঘৃণাবোধ থাকাটাকে আমি স্বাভাবিক বলেই মনে করি। এটা নিয়ে আমার কোনো দ্বিমত নাই। দ্বিমত এই সকল জায়গায় যে, পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণাটা হওয়া উচিৎ পাকিস্তান রাষ্ট্রকাঠামো, তার সরকার, শাসক শ্রেণীর প্রতিনিধিত্বশীল অংশের প্রতি, কিন্তু তা যেনো পাকিস্তানের একদম প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ, যারা নিজেরাই প্রতিনিয়ত রাষ্ট্র কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত হচ্ছে, সেই মানুষগুলোর প্রতি না হয়, এই সাধারণীকরণটা আমার কাছে অযৌক্তিক ও অন্যায়। আমি ভাই পৃথিবীর সকল কিছুতেই শাসক ও শোষিতের দ্বন্দ্বগত সম্পর্ক দেখি, সেভাবেই বিশ্লেষণ করি, এই বিশ্লেষণেই আস্থাশীল; আর তাই বুঝি ইতিহাসে সবসময় শাসকগণ ও তাদের সংস্কৃতিচর্চা তাদের নিজস্ব অপরাধের সাথে সাধারণ, নিরীহ জনগণকে অন্যায়ভাবে সংশ্লিষ্ট করে নেয়, যাতে ঐ জনগোষ্টির প্রতি অপর জনগোষ্টির অপরিমেয় ক্ষোভ প্রতিশোধস্পৃহা তৈরি হয়। এতে শাসকগোষ্ঠীর নিজেকে বাঁচায়ে চলতে বেশ সুবিধার হয়। আমি শাসক গোষ্ঠীকে এই সুযোগ দিতে নারাজ।
পাকিস্তানকে বাংলাদেশের মানুষ ঘৃণা করে এটা মোটেও অন্যায় না, বরং অনেক বেশি ন্যায্য; কিন্তু আমার কথা হলো ঘৃণা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে পাকিস্তান সমার্থক হবে তার শাসক গোষ্ঠীর, তার রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের, তার সামরিক ও আমলাতন্ত্রের; কিন্তু বিস্মিত হই যখন দেখি ঘৃণাবোধটা অনেকেই লেজ টেনে নিয়ে গিয়ে যুক্ত করে পাকিস্তানের সেই সকল মানুষের প্রতিও যারা প্রতিনিয়তই পাকিস্তানের অভ্যন্তরে নিজ রাষ্ট্র কর্তৃক শোষিত, নিপীড়িত হচ্ছে, লাঞ্ছিত হচ্ছে। শাসক আর শোষিতের প্রতি এই সুস্পষ্ট পার্থক্য করার প্রয়োজনীয়তা পর্যাপ্ত বিবেক বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে আমি সবসময়ই অনুভব করি অন্তর থেকে, আমার বিশ্লেষন প্রকৃয়ার মধ্য দিয়ে। এর সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতেও পারে, কিন্তু পৃথিবীর সকল দেশের নিপীড়িত মানুষের প্রতি (হোক সেটা পাকিস্তান) আমার এই অনুভূতির পরিবর্তন হবে না বলেই আমি আস্থাশীল।
লড়াই হতে হবে মতাদর্শিক প্রশ্নে, একটি ভুল মতাদর্শের বিপরীতে আরেকটি সঠিক দাবিদার মতাদর্শের, সেখানে সঠিক মতাদর্শকে প্রতিষ্ঠিত ও শক্তিশালী করার জন্য এর সাথে সংশ্লিষ্ট যুক্তি ও আবেগ যুক্ত হবে পরম মমতায়; কিন্তু মতাদর্শ আর যুক্তিবোধকে পাশে সরিয়ে রেখে শুধু আবেগ দ্বারা বশীভূত হলে (সেটা হওয়া সহজ) বিপক্ষকেই আসলে তাদের মূল এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ ও রাস্তা কর
বুঝলাম না শেষ অংশটুকু কিভাবে গায়েব হয়ে গেলো!!!
**** লড়াই হতে হবে মতাদর্শিক প্রশ্নে, একটি ভুল মতাদর্শের বিপরীতে আরেকটি সঠিক দাবিদার মতাদর্শের, সেখানে সঠিক মতাদর্শকে প্রতিষ্ঠিত ও শক্তিশালী করার জন্য এর সাথে সংশ্লিষ্ট যুক্তি ও আবেগ যুক্ত হবে পরম মমতায়; কিন্তু মতাদর্শ আর যুক্তিবোধকে পাশে সরিয়ে রেখে শুধু আবেগ দ্বারা বশীভূত হলে (সেটা হওয়া সহজ) বিপক্ষকেই আসলে তাদের মূল এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ ও রাস্তা করে দেওয়া হবে বলে মনে করি। আর যুক্তিকে যথেষ্ট শক্তিশালী করার প্রয়োজন অনুভব না করে শুধু আবেগের উপর নির্ভর করাটা জাতীয়তাবাদী চিন্তার একটা বড় ধরনের সংকট। তাই আবেগকে সস্তা না করে, সুযোগসন্ধানীর জন্য উপযোগী না করে তুলে, বরং অনেক বেশি যুক্তিসিদ্ধ ও মতাদর্শকেন্দ্রিক করার পক্ষে আমি।
৪. আর ভারতকে আপনি যেভাবে সাপোর্ট দিলেন, কখনো পাকিস্তানকে, কখনো মুক্তিযুদ্ধকে ঢাল করে, সেটা একটু অবাক করলো। রাষ্ট্র যতদিন থাকবে, ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘাত তখন থাকবেই। আজকে যে বন্ধু রাষ্ট্র, কাল সে সহজেই আপন স্বার্থের বিবেচনায় শত্রু রাষ্ট্র হয়ে উঠতে পারে, এটা আশচর্যের কিছু না। স্বার্থগত কারণ বিশ্লেষণে, আজকে ভারতের যে অবস্থান বিভিন্ন প্রশ্নে সেটা সম্পূর্ণই রাষ্ট্রিয় স্বার্থকেন্দ্রিক। তাই আজ ভারত বিরোধিতার যথেষ্ট যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে। আজকের ভারতের যে আধিপত্যবাদী চরিত্র তার সাথে ৭১ পর্যন্ত পাকিস্তানের আর ৪৭ পর্যন্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রের যে চরিত্র তার সাথে কোনো পার্থক্য আছে কি? এখানেও ভারতকে তার শাসকগোষ্ঠীর প্রতিভূ হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে, তার সাধারণ জনগণকে এর জন্য দায়ী করা ঠিক হবে না। ফলে, ৭১ এ সহায়তা করেছিলো, এটা বিবেচনা করে আজকে ভারতকে কোনো ছাড় দেওয়া উচিৎ হবে না।
পৃথিবীতে দুইটি শ্রেণী শুধু- শাসক আর শোষিত… আর সকল শ্রেণীবিভাজন শাসকগোষ্ঠীর তৈরিকৃত হেজিমনি যা দিয়ে সে জনগণের মাঝে তার শাসন ও শোষণের নৈতিকতাকে হাজির করে। এটা মাথাতে রেখেই আমাদের সকল বিষয়কে বিশ্লেষণ করা উচিৎ।
আপাতত এই পর্যন্ত। পরবর্তীতে আরো আলোচনা হতে পারে। শুভরাত্রি।
অসাধারন লিখেছেন। কিন্তু মনে হয় না যে বাংলাদেশি ওইসব পাকি দালালদের মনে কোন প্রতিক্রিয়া হবে। আসলে বাংলাদেশ তো মানসিক স্বাধীনতা লাভ করতে পারেনি। এরা মানসিক ভাবে পাকিস্তানী যেমন রয়ে গেছে, তেমনি সবচাইতে যুক্তিবিবর্জিত মুসলিম সম্প্রদায় অবশ্যই বাংলাদেশী মুসলিম সম্প্রদায়। আর ৭১ এ ৩০ লাখ শহীদের কথা বলবেন?আমি আজকাল গুগল হাতড়ে বেড়াচ্ছি, আপনারাও দেখতে পারেন। অই ৩০ লাখের মধ্য সঠিক করে বলা না থাকলেও হিন্দুর সংখ্যা মুসলিম থেকে অনেক বেশি। আর যে ১ কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নেয় তাদের মধ্যে নাকি প্রায় ৭৫% ই হিন্দু। তা হিন্দুরা আবার মানুষ নাকি/মুসলিম ছাড়া সবাই ত জানোয়ার, আর নাস্তিক রা তো রীতিমতো হরিজন, কাজেই এদের জবাই করা সওয়াবের কাজ কাজেই সমস্যা কি তালিয়া বাজানো হোক। হিন্দু মরছে ৭১ এ তাই এর বিচার হবার দরকার কি? সেইজন্যই তো ৪০ বছরেও বিচার হয় নি। আর এখন ত হুজুরে পাক ( গোলাম আজম) ঘোষণাই করে দিয়েছেন যে উনাকে মৃত্যু দণ্ড দিলে উনার লাভ, কারন উনি শহীদের দরজা পাবেন। ( বলুন সুবহানাল্লাহ :-s )। তাহলে সমস্যা কি? মুসলিম ভাইরা তাদের প্রিয় রাজাকার ভাইদের বিচার করেন নি। আর এখন যদি বিড়ালের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে মানে বিচার হয়েও যায় সমসসা কি? সজা বেহেশতে দাখিল হয়ে ৭০ জন হুরের সাথে মৌজমাস্তি।৮৯ বছর তো বাঁচলাম, শেশ কালে না হয় কাফেরদের হাতে পরে শহীদ হয়ে জান্নাত লাভ। যাহোক বাংলাদেশে যে পবিত্র আত্মারা পাকিস্তানের সমর্থক, একজনকে জানি জিনি সুরা পানে অভ্যস্ত( আলহামদুলিল্লাহ কন পাপ নেই, পাকিস্তানের সমর্থন করলে সব পাপ মাফ। আর সেই সাথে ” আই লাভ পাকিস্তান” ধ্বনি, একেবারে মদিরায় মত্ত হয়ে।বেহেশতে তো মদ হালাল, কাজেই দুনিয়াতেই মহড়া হয়ে যাচ্ছে এর।
সব শেষে এটুকুই বলতে চাই যে যদি ৭১ এর গনহত্যার বিচার হত,যদি গনহারে হিন্দুরা মারা না পড়ত। মুসলিম নামক এই জাতি হিন্দু হত্যার বিচার করবে, এটা আশাও করি না। তবে হ্যাঁ মানুষ হিসাবে আমি অনেকটা ইসলামি কায়দায় বলতে চাই যে ৩০ লাখের বিনিময় ৩০ লাখ পাকিস্তানি বা তাদের সমর্থক বাংলাদেশি বেঈমান কে মেরে ফেলতে পারলেই ন্যায় বিচার হয়। চোখের বদলে চোখ। সোজা হিসাব। কিন্তু তাতো হবার নয়।
বেশি ভাব প্রবণ হয়ে পড়েছি আসলে। অনেক ঝগড়াঝাঁটি হয়েছে কারন আমার আশেপাশে সব পরিচিত রাই এমন দালাল।ইচ্ছে করে এদের মাথাগুলো ফাটাতে, কিন্তু পারছি কই?আর আমি হলাম মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া কুলাঙ্গার নাস্তিক,কাজেই বেশি বাড়াবাড়ি করলে কপালে ধোলাই জুটে যেতে পারে। হা বাংলাদেশ আজ সত্যি এমন পর্যায় চলে গেছে।
@অচেনা, ধন্যবাদ দাদা
@নাস্তিক দীপ, আপনাকেও ধন্যবাদ আর শুভেচ্ছা দাদা। ক্রিকেটে পাকিস্তান কে সমর্থন করা না করা নিয়ে আরও কিছু লিখুন।এগুলো বন্ধ করা না যাক, জোরাল ভাষায় প্রতিবাদ টা খুব জরুরী। আমি তো ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি যে, শুধু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে না,কোন দেশের সাথেই পাকিস্তানের খেলা হলে ওদের সমর্থন করা মানে বাংলাদেশকে বিরোধিতা করা। ইহুদীরা কি কোনদিন নাৎসিদের সমর্থন করতে পারবে? হা পাকিস্তানের পাপ মোচন হতে পারে আমাদের কাছে যদি ৭১এ ওদের দেশের খুনিদের বিচার করতে পারে আর ওদের পাকিস্তানের নাগরিক হিসাবে অস্বীকার, করে, না হলে অন্তত ওদের যদি নিজের দেশেই চিরকালের জন্য কালোতালিকা ভুক্ত করে অফিসিয়ালি, তবেই শুধু ওদের পাপমোচন হবে, যেমন নাৎসিদের কালোতালিকা ভুক্ত করে জার্মানি পাপ স্খালন করেছে। এভাবেই মানবতার বিজয় সম্ভব। তার আগে অমানুষ পশুদের সমর্থন কেবল আরেকদল অমানুষ আর পশুই করতে পারে। তবে হ্যাঁ এটা আমি জানি যে বিভীষণের অভাব কোনকালেই ছিলনা। আর আজতো আমাদের দেশে আছে অসংখ্য বিভীষণ।
ভাই আমি বুঝিনাই আপনি আসলে কি বোঝাতে চাচ্ছেন। আমাদের দেশে দুইটা সমার্থক গোষ্ঠী আছে, যারা পাকিস্থান ও ভারতের সমার্থক। আপনি যে দৃষ্টিকোণ থেকে বলছেন, সে অনুযায়ী আমি বলবো, সাধারণত অনেক মুসলমানরা পাকিস্থানের সমার্থক এবং সকল হিন্দুরা ভারতের সমার্থক। কিন্তু ভাই, একথা সত্য যে পাকিস্থান ও ভারত আমাদের কাছে মরীচিকা মাত্র। এর বেশি কিছু নয়। সব-ই “যে লাউ সেই কদু”।
@শাওন,
সবাই না হলেও বেশীর ভাগই মনে হয়। আপনার এই কথাটা এসে ভালো হয়েছে। ধন্যবাদ। এই সমস্ত ভাদা দের নিয়েও সমস্যা। শুধু খেলা ভালো হলে সমস্যা নাই। কিন্তু শুধু ইন্ডিয়া বলেই সমর্থন করার জন্যেই বিরক্ত লাগে আসলে।
@সাইফুল ইসলাম,
একটু ব্যাখ্যা করেন।
পাকিস্তান আমাদের থেকে শিক্ষা দীক্ষায় অনেক পিছিয়ে থেকেও শুধুমাত্র ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে ১৯৪৭ সালে আমাদেরকে তাদের কলোনী বানাতে পেরেছিল। ১৯৭১ সালের পর আমরা আবার সেটা ভুলে গেছি। বাঙ্গালীর মত ভুলোমনা ও আবেগপ্রবন জাতি দুনিয়াতে বিরল। খেয়াল করুন, আফগানিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে হাজার বছর পিছিয়ে। অথচ এই বাংলাদেশেরই এক শ্রেনীর মানুষ এদেশকে আফগানিস্তান বানাতে চায়, সমস্বরে শ্লোগান তোলে- আমরা হবো তালেবান, বাংলা হবে আফগান। আমরা যতদিন না আমাদের মূল সমস্যা ধরতে না পারব, আমাদের উন্নতির কোন সম্ভাবনা নেই।
@ভবঘুরে,ভাই দয়া করে এই নিউজ টা পড়বেন।জানি না আফগান নারীদের ভাগ্যে আবার কোন বিপর্যয় নেমে আসতে যাচ্ছে। আমেরিকার কীর্তিকলাপ আজও বুঝলাম না। তালেবানের সাথে আলোচনা কিসের, আর করার দরকার টাই বা কি?
@ভবঘুরে, সরি আগে লিঙ্ক পোষ্ট হয় নি
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-02-13/news/224185
@ভবঘুরে,
আশা রাখেন দাদা!এমন খারাপ দিন আমাদের আসবেনা…
পাকিস্থান নয় বলো পাপীস্থান। লেখাটা খুব ভালো লাগল। বিশ্লেষণাত্মক লেখাটার জন্য লেখককে ধন্যবাদ। (F) :clap
@সবুজ বডুয়া, ধন্যবাদ দাদা।
ভাল বলেছেন :lotpot:
লেখাটা আগে কোথাও একবার পড়েছিলাম বলে মনে পরে। যাই হোক, উপরের কিছু ইনফো এর সাথে আমারও দ্বিমত।
সর্বোপরি লেখা পড়ে ভালো লাগলো। অনেকগুলো ভ্রান্ত ধারনা খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন।
@সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড,
ধন্যবাদ দাদা।কোথাও পড়ে থাকলে লিঙ্ক দেবেন একটু কষ্টকরে।ভাল থাকবেন
আন্তর্জাতিক পরিসরে খেলার সময় প্রতিটি দল তার দলের চিহ্ন হিসেবে তার নিজ দেশের পতাকা ব্যবহার করে, দেশের পতাকা ব্যতিরিকে তার নিজ কোনো অফিসিয়াল পতাকা নেই। আপনি খেলাধূলা ভালবাসতে পারেন, যেমন টি করে একজন সংগীত ভালোবাসেন, একজন খেলোয়াড়ের ছবি সম্বলিত টি- শার্ট গায়ে দিতে পারেন, কিন্তু তার দেশের পতাকা উড়াতেও পারেন,কিন্তু পতাকাটা আকাশের উড়াবার আগে একটু চিন্তা করবেন পতাকাটি শুধু ওই দলের না ঐ দেশের ও, এর মাধ্যমে শুধু ঐ দলের প্রতি না, দেশেটির প্রতি আপনার সমর্থন, ভালবাসা ও আপনার মনোভাব প্রকাশ পায়। আপনি হয়ত সচেতনভাবে শুধু ঐ দলটির কথা চিন্তা করে তা করছেন, কিন্তু তার অর্থ এমন কিছু হয়ে যায় যে আপনি টা চান নি। শুধু একটা কথা মনে রাখা দরকার, পতাকাটার পরিসর অনেক বড়, খেলার জন্য মানুষ যুদ্ধে যায় না, কিন্তু পতাকার জন্য যায়।
@জুয়েল দাশ লেনিন,
অসাধারণ বলেছেন দাদা।সহমত।
চমত্কার বিষয় নিয়ে লেখা ।আমার অভিজ্ঞতার কথাটাও বলি।@নাস্তিক দ্বীপ, যে বিশ্বকাপ কোয়াটার ফাইনাল খেলাটার কথা বলছেন ওটা দেখতে আমিও গিয়েছিলাম । আসলে ওটাই ছিল আমার নিজ দেশের মাটিতে কোন international ম্যাচ দেখা ।যে আনন্দ নিয়ে খেলাটা দেথতে গিয়েছিলাম তার দ্বিগুন বিরক্তি নিয়ে ফিরলাম ।গ্যালারিতে যতক্ষণ ছিলাম “পাকিস্তান জিন্দাবাদ” “সাবেক সন্তান জিন্দাবাদ” এগুলো শুনতে শুনতে কাটালাম।ওরা যখন পাকিস্তান পাকিস্তান করে চেচাচ্ছিল তখন আমিও তাল মিলিয়েছিলাম পাপিস্তান পাপিস্তান করে।
@অভ্র ব্যাণার্জী, ধন্যবাদ দাদা
মেইন বক্তব্য ঠিক আছে। কিন্তু ভুল তথ্য আর যুক্তির অভাব আছে লেখায়।
এইটা আইয়ুবের কতা না। এইটা মোনায়েমের কতা।
ভুল। আসামেও বাঙলা ভাষার জন্য মানুষ প্রান দিছে।
ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের বাঙলাদেশ হয়ত ১৬ই ডিসেম্বরেই হইছিল কিন্তু বাঙালি স্বাধীনতা পায় ১৯৪৭-এই। কারন পাকিস্তান বানাইতে বাঙালির কোন সমস্যা আছিল না। বরঞ্চ ইতিহাস কয় বাঙালিরাই বেশী দাপাদাপি করছে পাকিস্তানের লিজ্ঞা।
ক্রিকেটে পাইক্কাগো সাপোর্ট করার কারন হিসাবে যা কইছেন ঐডা পুরাই বালখিল্যতা। হুদা পাইক্কাগুলার প্রতি ভালোবাসা থিকাই পাইক্কা ক্রিকেট সাপোর্ট কেউ করে না। এইডা কোন যুক্তি অইল না। পাইক্কাগুলারে সাপোর্ট করার কয়েকটা বড় কারন আছে, তার মধ্যে দুইডা সবচাইয়া উল্লেখযোগ্য।
নাম্বার এক. ওরা মুসলমান।
নাম্বার দুই। ওরা দেখতে ভালো।
ইসলামের কারনে পাইক্কারা সাপোর্ট পায় সবচাইয়া বেশী,আর হাস্যকর হুনাইলেও এইডা হাচা কতা যে, মাইয়ারা পাইক্কা খেলোয়ারগুলারে চেহারা দেইখ্যা সাপোর্ট করে।
আফনে যেই যুক্তি দিছেন মুসলমানের প্রেক্ষাপটে ঐডাও ধোপে টিকব না, এই কারনে যে, সৌদি আরব বা অন্যান্য মুসলমান দ্যাশ গুলা এইহান থিকা অনেক দূরে। সুতরাং ওগোর খেলা লইয়া যে বাঙালি লাফাইব না এইডা স্বাভাবিক। আরকটা কারন কয়ন যায় যে, পাইক্কাগুলার ক্রিকেটে অহংকার করার লাহান অর্জন আছে যেইডা অন্যান্য মুসলমান দ্যাশের ফুটবল বা অন্য খেলায় নাই। সুতরাং পাইক্কাগুলারে সাপোর্ট করাডা সহজ অয়। আগামী বিশ্বকাপ ফুটবলে সৌদী আরব কাপ নিলে আস্তে আস্তে দেখবেন ফুটবলে সৌদীগুলারেই সাপোর্ট করা শুরু করব।
@সাইফুল ইসলাম,
ভাই, এই ইতিহাসের রেফারেন্সটুকু দিবেন দয়া করে? আমি তো অদ্যবধি জাইনা আসছি, বাঙালি জাতি তার ইতিহাসে প্রথমবারের মত সত্যিকারের স্বাধীনতা পায় ১৯৭১ সনে। ২৬ মার্চ ঘোষনা হয় এবং ১৬ই ডিসেম্বর তা অর্জিত হয়।
না ভাই, আমার অভিজ্ঞতা সামান্য ভিন্ন। এটা ঠিক অনেকেই ‘ধর্মের মিল’ থেকে সাপোর্ট করে। কিন্তু আমি আবার অনেককে দেখেছি যারা পাকিস্তানের খেলার স্টাইল খুব পছন্দ করে। বরেন্য কবি শামসুর রহমান পাকিস্তানের ক্রিকেটের ভক্ত ছিলেন, কারণ তার কাছে পাকিস্তানের খেলার স্টাইল ভাল লাগত। আপনি মনে হয় শামসুর রহমানের ”পাকিস্তান ক্রিকেট” ভক্তিকে ধর্ম দিয়ে ব্যাখ্যা করতে চাইবেন না!
চেহারা কি খালি পাইক্কা খেলোয়ারগোই আছে?
আপনি ব্যক্তির রুচি বা পছন্দের ভিন্নতাকে কোন গুরুত্বই দিতে চাচ্ছেন না। জার্মানি তো অনেকবার চ্যাম্পিয়ন হইছে; ব্রাজিল সবচেয়ে বেশীবার কাপ নিছে; তারপরও বাংলাদেশীর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ আর্জেন্টিনা সাপোর্ট করে ক্যান? কি মনে হয় আপনার?
আবারও বিতর্কে জড়াইলাম। কিন্তু আবারো বলতেছি, কোন বিদ্বেষ থেকে না। ভাল থাইকেন।
@কাজি মামুন,
ব্যাপারটা ইতিহাসেরই, তয় আলাদা কইরা কোন জায়গায় লেহা থাকব না। এইডা চক্ষু দিয়া দেইখ্যা, মস্তিষ্ক দিয়া বিবেচনা করার জিনিস। আমারে কন ৪৭-এ বাঙালি কি আছিল নাকি আছিল না? থাকলে হেরা কি পাকিস্তানের লগে একদ্যাশে থাকতে চাইছিল নাকি চায় নাই? যদি না চাইয়া থাকে তাইলে বাঙালিরা ৪৭ এরপর পাইক্কাগো লগে কী করছিল? লটরপটর?
আর যদি চাইয়াই থাকে তাইলে ৪৭ এর পরে ৭১এর আগপর্যন্ত বাঙালিরে আফনে পরাধীন কন কোন যুক্তিতে? আফনের ইচ্ছায়??
যারা খালি খেলার স্টাইলের লিজ্ঞাই পাইক্কাগো পছন্দ করে হেগোর উপযুক্ত জবাব পোষ্টেই আছে, আমি নতুন কইরা দিতাছি না। আর শামসুর রাহমানের ব্যাপারডা আমি জানি না। কইতেও পারমু না। কিন্তু যদি এইডাই অয় তাইলে কমু হের মস্তিষ্কে সাংঘাতিক গন্ডগোল আছিল।
আমারও একই প্রশ্ন, চেহারা কি খাই পাইক্কাগুলারই আছে??
আমার অনেক কিছুই মনে অয়। ফুটবলের লগে ক্রিকেটের সাপোর্টের ব্যাপার অন্তত বাঙলাদেশে মিলানো যাইব না। কারন পাইক্কাগোর কতা যহন বিচার করুম তহন যুক্তির থিক্কা আবেগটাই বেশী কাম করে(যদিও যথেষ্ট যুক্তি আছে)। ব্যক্তিগত রুচির ব্যাপার অবশ্যই আছে এবং ঐহানে কোন যুক্তি খাটে না এইডাও অবশ্যই সত্য কতা।
আর্জেন্টিনা ব্রাজিলের খেলার মান ফুটবল বিশ্বে সবচাইয়া উপ্রের দিকে। তারপরেও কিন্তু আর্জেন্টিনা ব্রাজিলরে সাপোর্ট না করা অনেক মানুষ আছে এই দ্যাশেই। আর ব্রাজিল জানি কয় বার কাপ নিছে ভাই?
ফুটবলে ব্রাজিল আর্জেন্টিনার ম্যচের লাহান টানটান উত্তজনার ম্যাচ আর আছে?
ফুটবল দুনিয়ার দুই মহীরুর, ম্যারাডোনা আর পেলে কিন্তু আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলেরই আছিল। হুদা এই দুইজনের লিজ্ঞাই অন্তত ৩০ভাগ মানুষ এই দুই দ্যাশরে সাপোর্ট করে।
আফনের পরিচিত মাইয়াগো জিগাইয়া দেইখ্যেন মেসিরে পছন্দ করার কারন কী? জবাবটা এইহানেই পোষ্টাইয়েন। আমার নিজের অভিজ্ঞতা আছে এই ব্যাপারে। মাইয়ারা যতনা খেলা দেহে হের তে বেশী সাপোর্ট করে না জাইন্যা, চেহারা মাইপ্যা।
আমি আফনের কোন কুটুম্ব লাগি না যে আফনে আমার লগে বিদ্বেষপ্রসূত ঝগরা করবেন, এইডা আমি জানি। সুতরাং বার বার এইডা কয়নের দরকার নাই।
@সাইফুল ইসলাম,
আমি ক্যাডা, যে আমার ইচ্ছায় বাঙালি পরাধীন হইয়া যাইব? তয় ইতিহাসবেত্তারা কিন্তু কয়, বাঙালি পাকিস্তান পিরিয়ডে পরাধীন আছিল!
একদম হাছা কতা! আর মস্তিষ্ক দিয়া বিবেচনা কইরাই কইতাছি, বাঙালি পাকিস্তানের লগে একদ্যাশে যে থাকতে চাইছিল, তা আছিল মরিচিকার পাছে দৌড়ানি! ধরেন, একটি গ্রামের সহজ-সরল মাইয়ারে ফুসলাইয়া পাচার করা হইল; ঐ মাইয়াডা কিন্তু স্বাধীন ও সুখের জীবন ও ভাল চাকরি আশা করতাছিল; এখন আপনি কি কইবেন, মাইয়াডা স্বাধীনতা পাইছিল?
না, বাঙালি স্বাধীনতা পায় নাই। হয়ত তারা স্বাধীনতা চাইছিল, কিন্তু পায় নাই। না রাজনৈতিক না অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। পাকিস্তানের লগে গলা মিলাইয়া স্বাধীনতার সুরা পানের যে খায়েস বাঙালিগো জাগছিল, তা ছিল ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক ও নৃতাত্বিক সব বিবেচনাতেই ভুল, যে ভুলের মাসুল দিছে এক সাগর রক্ত ঝরাইয়া ১৯৭১ সনে। এখনো অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পায় নাই;কিন্তু বাঙালি ১৯৭১ এ প্রথমবারের মত তার হাজার বছরের প্রাচীন ইতিহাসে প্রথমবারের মত সত্যিকারের রাজনৈতিক স্বাধীনতা পাইছে।
কই পোস্টে উপযুক্ত জবাব পাই নাই। পোস্টে খালি ভাল খেলার কারনে পাকিস্তান পছন্দের কথা কওয়া হইছে। কিন্তু ভাল খেলা তো অনেক দ্যাশই খেইলা থাকে; তারপরও কেউ করে পাকিস্তান, কেউ করে অস্ট্রেলিয়া; ক্যান করে? আসলে ভাল খেলারও স্টাইল আছে! কারো পাকিস্তানের স্টাইল ভাল লাগে; কারো অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের অনেকে রাজাকারি দৃষ্টিভংগি পোষন কইরা পাকিস্তান করে এইডা আমিও মানি; কিন্তু অনেকে আবার শুধু স্টাইলের কারনেই পাকিস্তান পছন্দ করে, এইডা আপনি মানতেছেন না; আর এইখানেই সমস্যা! আপনি সবখানেই খালি ‘জেনারেলাইজেশন’ করেন। হেই লাইগা শামসুর রহমানের মাথার গন্ডগোল আবিস্কার করতেও আফনে টাইম নেন না এক ফোডা!
আফনে এহন প্রশ্ন করা শুরু করলেন; কিন্তু মুল মন্তব্যে তো উত্তর দিয়া দিছেন, মাইয়ারা পাকিগো পুত পবিত্র সুন্দর চেহারা দেইখাই পইটা যায়! আমি হেই লাইগাই জিগাইছিলাম আফনেরে যে, চেহারা তো অস্ট্রেলিয়ারও আছে, তাইলে মাইয়াগুলার সেইডাতে মন ধরে না ক্যান? খেলার স্টাইলেরও মনে হয় কিঞ্চিত ভূমিকা আছে এইহানে, কি কন?
এই তো পথে আইছেন!
হেই লাইগাই তো কইতাছি, ধর্মের মিল, রাজাকারি ভাব ইত্যাদি ছাড়াও আরও কারন আছে, একটা দল সাপোর্ট করার পাছে! সবাই তো আর টানটান উত্তেজনাকর রগরগে মজার আপিল দিতে পারে না, কি কন?
আফনে না জাতীয়তাবাদী? তয় আফনে নিজের দ্যাশের, নিজের শহরের, নিজের ভার্সিটির, নিজের ব্লগের একটা মানুষরে কুটুম্ব ভাবতে পারেন না ক্যান? আফনের ব্লগ ঝড় খালি চায়ের কাপে ঝড় তোলার লাইগাই তাইলে?
বালা থাইকেন! কুটুম না হইয়াও এইডু কওন যায়, কি কন? 🙂
@কাজি মামুন,
ইতিহাসবীদরা অনেক কিছুই কয়। যেমন আফনের ইতিহাসবেত্তা প্রজাতির নিজেগোর মইধ্যে স্বাধীনতার ঘোষক ক্যাডা এইডা লইয়া সমস্যা আছে, তো এই ক্ষেত্রে আফনের মতামত কী? এইহানে কী ইতিহাসের আশ্রয় লইবেন নাকি যুক্তি দিয়া বুইঝ্যা লইবেন আসলে কেসটা কী?
বাঙালিরে ফুসলাইয়া পাকিস্তানে নেওয়া অইছে????????? এই গবেষনাডা ইতিহাস প্রিয় মামুন ভাই কোন ইতিহাস থিকা পাইছেন জাতিরে একটু জানান তো। জাইন্যা ধইন্যা অই। পাকিস্তানের পাইক্কা, সাচ্চা মুসলমান অয়ণের লিজ্ঞা অই সময় ব্যাপক গণজোয়ার শুরু অইছিল। সমস্ত বাঙালি সেচ্ছায় পাকিস্তান বানাইছে। এইডা আমার কতা না ইতিহাস প্রিয় মামুন ভাই। এইডা আফনের উল্লেখকরা ইতিহাসবেত্তা প্রজাতির নিজেগোর হাতে লেহা ইতিহাস। যদি অন্য ইতিহাস পান এইহানে দেহান না! তাইলেই তো ল্যাটা চুইক্যা যায়।
তাইলে এহন আফনেরে কইতে অইব স্বাধীনতা কইতে আফনে আসলে বোঝেন ডা কী? এই অধমরে একটু জানান আসলে স্বাধীনতা কইতে কী বোঝেন তাইলে বুঝতাম কেন আফনে ৪৭ সালরে বাঙালির স্বাধীনতার বছর কইতে চান না, যেইহানে বাঙালি ইচ্ছা কইরা পাকিস্তানে আইছে।
তাইলে আজকের বাঙলাদেশে নিশ্চই সবাই স্বাধীন কী কন ভাই? অর্ধেক মানুষ থাহে না খাইয়া, সরকারের বিরুদ্ধে কতা কইলে জেল হাজতে পইচ্চা মরন লাগে, হাচা কতা লেখলে হুমায়ূন আজাদ আর তসলিমার ইতিহাস পয়দা অয়। এই যদি আফনের স্বাধীনতা অয় তাইলে ভাই আফনের লগে বাৎচিত না করাই শ্রেয়। আগেই কইছিলাম এহনও কই, এই স্বাধীনতার উপ্রে আমি ছ্যাড়ছ্যাড় কইরা মুতি।
এইত্ত স্বীকার করলেন বাঙালি সাইধ্যাই গেছিল পাইক্কাগো লগে। তাইলে হুগাই আগে প্যাচাইলেন ক্যা?
আর ভুল? হেইডা আফনে এহন কইতেই পারেন। কারন আফনে এহন ২০১২সালে ৬৫ বছর পরে সমস্ত ইতিহাস পাতিহাস ঘুইড়া, রেজাল্ট দেইখ্যা রেজাল্ট কইতাছেন। কালকে বিকাল ৪টায় কী ঘটব ঐডা আমি বিকাল ৪টা ১এ কইতে পারমু। কিন্তু তাইলে আমার ক্রেডিটটা কই? আফনে ৬৫ বছর পর ৬৫ বছর আগের জিনিসের ভুল দেহাইতাছেন। কিন্তু ঐ৬৫ বছর আগে যারা আছিল হেরা কিন্তু আফনের সুযোগটা পায় নাই যে মুক্তমনায় ব্লগিং কইরা কইরা রেজাল্ট দেইখ্যা কইয়া দিব যে পাইক্কাগো লগে যাওনডা ভুল অইব। ঐসময় হেরা ঐডারে সঠিক মনে করছিল। তারমানে হেরা কোনপ্রকার বাহ্যিক চাপ ছাড়াই পাইক্কা অইছিল। তাইলে কেমনে আফনে হেগোরে পরাধীন কন এইডাতো আমার বুঝে আহে না ভাইডু!
ঐটাই কইলাম, আগে ঠিক করেন আফনে স্বাধীনতা কইতে আসলে বোঝেন ডা কী। হেরপরে এইডা লইয়া আলোচনায় নামমু। নাইলে অহন কইবেন, রাজনৈতিক স্বাধীনতা অইলেই স্বাধীনতা, আবার কইবেন অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পায় নাই। তারমানে কী? বাইগুন? বিচি আছে হাড্ডি নাই?
আসল স্বাধীনতাডা কী জিনিস? রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক? কোনডা? আগে ঠিক কইরা আলোচনায় নামেন। হুদাই ফালাইয়া লাভ নাই।
আমি মানলামনা কুনহানে? আমি তো কইলামই ব্যক্তিগত রুচির ব্যাপার আছেই। রূপম ভাইরে একখান উদাহরন দিছিলাম, আফনেরেও দেইঃ ধরেন ইরাকের আর আমেরিকার মইধে খেলা অইতাছে। এহন কোন কোন ইরাকি আমেরিকারে সমর্থন করতাছে। ঐ ইরাকিগুলারে যদি অন্য ইরাকিরা আত্নসম্মানহীন কয় আফনের কোন আপত্তি আছে? নাকি কতাডা অযৌক্তিক? এইডার উত্তর দেন তাইলে অইব।
তৃতীয় শ্রেণীর প্রশ্ন কইরা অনার্সের উত্তর আশা করেন কেন? পাইক্কাগোরে যেই সাপোর্ট করুক না কেন, তার মস্তিষ্কে পরিষ্কার গন্ডগোল আছে। কারন আত্নসম্মানহীনতারে আমি মস্তিষ্কে গন্ডগোল হিসাবেই দেহি। এহন আফনের যদি আত্নসম্মানের অভাবজনিত রোগে ভোগেন তাইলে এই রোগে আক্রান্ত অন্য রোগীরেও আফনের সাধারন মানুষ মনে অইব। যেমন শামসুর রাহমানরে আফনের মনে অইতাছে। বাঙলাদেশে বসবাস করা কোন বাঙালি যদি পাইক্কাগো প্রতি নুন্যতম সহানুভুতি দেহায় তার মাতাতেই গন্ডগোল আছে। এইডা চিরন্তন সত্য কতা। দুঃখজনক অইলেও সত্য এই গন্ডগোলে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ভীতিকর রকম বিরাট।
আমি জানতাম আফনের মস্তিষ্কে আমি কি কইছি অইডা ঢুকব না। আমি এই প্রশ্ন দিয়া আফনেরঃ”চেহারা তো অস্ট্রেলিয়ারও আছে, তাইলে মাইয়াগুলার সেইডাতে মন ধরে না ক্যান?” এইডাই বুঝাইছি। আর বুঝাইয়া দুঃখ প্রকাশ করছি যে কেন করে না। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই আফনে অত্যন্ত সক্ষমতার সাথে বুঝতে অক্ষম অইছেন।
খাইছে আফনে তো অনেক বুঝেন দেহা যায়!!!! কিন্তু আমি কি খেলা পছন্দের কারনে পাইক্কাগোরে সাপোর্ট করে এই যুক্তি একবারও অস্বীকার করছি?? আমি খালি কইতাছি পাইক্কা-বাঙলাদেশ সম্পর্কের কারনেই আসলে পাইক্কা সাপোর্ট নিয়া সমস্যা। নাইলে কে পাইক্কাগো সাপোর্ট করে আর কে ইন্ডিয়া সাপোর্ট করে এইডা নিয়া চিন্তা কইরা কেশ ঝড়ানের কোন কারন আছে বইলা আফনের মনে অয়?
আমার কোন কতা দেইখ্যা আফনের মনে অইছে আমি জাতীয়তাবাদী একটু দেহাইয়া দেন। আমিও জানি যে আমি জাতীয়তাবাদী। কত অজানারে!!!!
@সাইফুল ইসলাম,
শেষ থেকেই শুরু করলাম; কারণ এরপর আপনার লেখা থেকে যতগুলো কোট করব, তার শেষেরগুলোতে আপনার জাতীয়তাবাদী চেতনা অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য-ভাবে ফুটে উঠবে। আর আপনি জাতীয়তাবাদী হওয়াতেও আমি তেমন সমস্যা দেখি না; যেহেতু অপার্থিব ভাই খুব পরিষ্কার করে দেখিয়েছেন, জাতীয়তাবাদও দরকারি জিনিস বিবর্তনের নিয়ম-কানুন ঠিকঠাক রাখার জন্য। সুতরাং, সেই দায়িত্ব যদি আপনি পালন করেন, তো দেশ-দশ-বিশ সবার জন্যই তো মঙ্গল, তাই না? 🙂
এই ছড়াটা মনে হয় পড়েছেন:
তেলের শিশি ভাংলো বলে খুকুর প’রে রাগ কর
তোমরা যে সব ধেড়ে খোকা, বাংলা ভেংগে ভাগ কর
নীচের উদ্ধৃতাংশটুকু পড়লে বুঝবেন, কিভাবে ‘ফুসলানো’ হয়েছিল:
বাঙালি হিন্দুরা প্রথম দিকে দেন-দরবারের রাজনীতি শুরু করলেও, ১৯০০ সাল নাগাদ একটা বড়ো রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হন। বিশেষ করে ইন্ডিয়ান কংগ্রেসকে ঘিরে তাঁদের মধ্যে স্বাধীনতার ধারনা দানা বাঁধছিলো।….এসব দেখে ইংরেজরা নতুন এক কৌশল নিলেন। তারা ঠিক করলেন, বাঙালি হিন্দুদের রাজনৈতিক ক্ষমতা খর্ব করতে হবে। এর জন্যে তাঁরা তখনকার বৃহত্তর বঙ্গদেশকে ভেঙ্গে দু ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিলেন। পশ্চিম অংশের নাম দেওয়া হলোঃ ”বেঙ্গল”। এই প্রদেশ গঠিত হলো পশ্চিমবঙ্গ, বিহার আর ওড়িষ্যা নিয়ে। এই অংশে বাঙালি হিন্দুদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩২ ভাগ। পূর্ববাংলা আর আসাম নিয়ে গঠিত হলো আর-একটি প্রদেশ।…..আর এতে মুসলমানদের সংখ্যা দাঁড়ালো শতকরা ৫৮ ভাগে। ফলে দুই প্রদেশেই হিন্দুরা হলেন সংখ্যালঘু।….বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন এমন প্রবল হয়ে উঠেছিলো যে, ইংরেজরা বঙ্গদেশকে জোড়া দিতে বাধ্য হন, ১৯১২ সালে।।….. দুই বঙ্গকে জোড়া দিলেও, হিন্দুদের রাজনৈতিক ক্ষমতা কমানোর সূক্ষ পরিকল্পনা বহাল রাখলেন ইংরেজরা। কিন্তু আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে ইংরেজ সরকার ধীরে ধীরে হিন্দুদের দুর্বল করে দেয় আর মুসলমানদের শক্তিশালী করে তোলে।….দেখা যাচ্ছে, ১৯১৯ সালে আইন সভায় মুসলমানদের আসন ১৯০৯ সালের তুলনায় আট গুণ বেড়ে যায়। ১৯৩৫ সালে বেড়ে যায় আরও তিন গুণ। অন্যদিকে, হিন্দুদের আসন না-বেড়ে বরং অনেক কমে যায়।।……এর আগে সংখ্যা নয়, গুণগত মান ছিলো রাজনৈতিক প্রাধান্যের মানদ্বন্ড। কিন্তু গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে মানদন্ড হলো সংখ্যা।……হিন্দু নেতারা তখন আর অখন্ড বঙ্গদেশের মধ্যে থাকতে চাইলেন না। (তথ্যসূত্রঃ মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর, গোলাম মুরশিদ, পৃষ্ঠা ২২-২৬)
স্বাধীনতা হল মুক্তি; রূপম ভাইয়ের ‘মানুষের মুক্তিকামিতার ইতিহাস’ সময় পেলে পড়ে দেখবেন। স্বাধীনতা হল রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ সব ধরনের মুক্তি, যার পূর্নাংগ রূপ আমরা হয়ত কখনই পাব না, যা Utopia তে পাওয়া যায় ; কিন্তু কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে আর ১৯৭১ এর রাজনৈতিক স্বাধীনতা তার শুরু। আমাদের দেশের মানুষের সত্যিকার মুক্তি পেতে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে এখনো। রবার্ট ফ্রস্টের নীচের লাইন দুটি আপনি অবশ্যই পড়েছেনঃ
And miles to go before I sleep,
And miles to go before I sleep.
জাতীয়তাবাদের স্বরূপ বোঝার জন্য আপনার এই লাইনখানি ‘বানি-চিরন্তনী’ হবারই যোগ্য।
আসলে সব দেশের সাথেই সম্পর্ক নানাভাবেই অম্ল-মধুর! সম্পর্কেরও রকম ফের আছে- সাদা-কালো দাগে চিহ্নিত করা সম্ভব না! আপনার কথা যদি মেনে নেই, তাহলে বাংলাদেশকে একটা চরমভাবে Isolated Country হয়ে যেতে হয় যে! কারণ পাকিস্তান, ইন্ডিয়া, চায়না, মায়ানমার, আমেরিকা, ইউরোপ- সব দেশের সাথেই আপনি ”সম্পর্ক খারাপের” নমুনা বের করতে পারবেন, কঠিন কাজ হবে না মোটেও।
সবশেষে, (আপনার জাতীয়তাবোধের চেতনায় খানিক উদ্বুদ্ধ হয়েই) আমার স্বজাতির, স্বএলাকার,স্বশিক্ষাংনের, স্বব্লগের এক ভাইকে অন্তরের ভালবাসা জানাচ্ছি। (F)
@কাজি মামুন,
আমি কিছুই বুঝালাম না আসলে। কিন্তু আপনার কতাও যদি হাচা হয় তাইতেও তো আমার কতা বলবত থাকে। আপনারে ফুসলানো হইতে পারে কিন্তু আপনি ইচ্ছায় তো গেছেন। আপনি যদি লক্ষ লক্ষ লোকের একটা জাতির কাছ থিকা, জাতির নেতাগোর কাছ থিকা কোনটা ফুসলানো আর কোনটা না এইটা না বোঝার আশা করেন তাইলে আর কী কওনের থাকতে পারে আমার কন। আপনে বরঞ্চ আমার প্রাচীন বাণী, বাঙালি সব গাধা এইটারেই প্রমান করলেন।
থাউক রূপম ভাইয়ের পড়া লেখাটা আবার নতুন কইরা পরতে গেলাম না। শোনেন, বই পুস্তকের কতা বাদ দিয়া সাধারন মানুষের কতা কন। আপনি যেইগুলা কইছেন ঐগুলা অবশ্যই মানুষের স্বাধীনতার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। কিন্তু যদি আরো সহজভবাবে কই তাইলে মনে হয় এইভাবে কয়ন যায় যে, স্বাধীনতা অইল মানুষের অনুভবের ব্যাপার। আপনি যদি মনে করেন আপনি স্বাধীন, তাইলে আপনি স্বাধীন। আর কিছুর দরকার নাই। ৪৭এ যহন বাঙালি আর পাকিস্তান মিল্লা পাকিস্তান করে তহন কিন্তু হেরা এইটা মনে কইরাই করছিল যে, হিন্দুগো লগে হেরা স্বাধীনতা মানে প্রকৃত ক্ষেত্র পাইতাছিল না। যার জন্যই খালি মুসলমানরা একসাথে হইয়া একটা দ্যশ গঠন করছিল। তারমানে পাকিস্তান অইলে পরেই নিজেরা স্বাধীন অইব এই ধারনা কাজ করতাছিল। এর পরবর্তীতে কী হইছে, নির্যাতিত, পর্যদুস্থ, এইটা কিছু পরের কথা। আর পাকিস্তানের ভালোবাসার জইন্যেই কিন্তু অত মানুষ ঐসময় বাঙলাদেশ গঠনের বিরোধীতা করছিল। আজকেও যাগোর সংখ্যা অনেক।
আর যদি পাইক্কাগোরে দিয়া নির্যাতনের কতাই কন তাইলে আজকের বাঙলাদেশের এই অবস্থা কেন? তারাতো আজকে অন্য কোন দ্যাশের পরাধীন না আপনার কথা মতে। আজকে কেন এই অবস্থা জনগনের? আজকে কেন হুমায়ূন আজাদকে প্রান দেয়ন লাগে, তসলিমারে দ্যাশ ছাড়ন লাগে? আজকে কোন দ্যাশের চাপে পইরা এই কাম অইতাছে? আপনার থিউরী অনুযায়ী তো তাইলে আজকেও বাঙালি স্বাধীন না। তাইলে নিজেরে স্বাধীন দাবী করেন কোন যুক্তিতে?
এই জন্যেই আপনার লগে ভারী আলোচনায় মজা নাই। ইরাকে অবস্থান করা কোন ইরাকির আমেরিকান প্রীতি থাকলে তার মাতায় গন্ডগোল আছে। তারমানে কি আমি ইরাকি জাতীয়তাবাদী? এইটাই বাইর করছেন এত গবেষনা কইরা? :-Y
পাকিস্তান যা করছে তার সাথে মিলানোর মতন কোন দ্যাশ আপনে পাইবেন না। পাইলে দেহান।
আর অম্ল মধুর সম্পর্ক থাকবই। যেহেতু থাকব সেহেতু নরমের সময় নরম, আর গরমের সময় দিতে হইব। থাকবই এই চিন্তায় প্যান্ট খোলা যাইব না।
পাকিস্তানী ছাড়া যেকোন মানুষের ভালোবাসা নিতেই আমার কোন আপত্তি নাই। এমন কি জাতীয়তাবাদী অইলেও না। আপনার ভালোবাসা গৃহিত অইল।
@কাজি মামুন,
আপনার আর সাইফুল সাহেবের মধ্যকার তর্ক থেকে ইতিবাচক কোন সমাধান পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। বরং আফনে, তুফনে, দেহাইয়া, কুটুম্ব জাতীয় ক্রমাগত আঞ্চলিক ভাষা (যা সকলের বোধগম্য নয়) ব্যবহার করে বিষয়টাকে ব্যক্তিগত খোঁচাখুঁচি, কাঁদা ছোঁড়াছুড়ির ক্ষেত্র বানিয়ে নেয়া হচ্ছে। উভয়ের কাছে বিনীত অনুরোধ, এ ধারা ত্যাগ করে গঠনমূলক আলোচনায় ফিরে আসু্ন, যে আলোচনা অন্যান্য পাঠকদের উপভোগ্য হয়, যেখান থেকে পাঠকের শেখার, নেয়ার, দেয়ার কিছু থাকে।
@আকাশ মালিক,
আঞ্চলিক ভাষায় আমি কোন সমস্যা তো দেখতেছি না। যৌক্তিক দূর্বলতা থাকলে দেখিয়ে দিন। যৌক্তিক কোন দূর্বলতা না থাকলে শুধুশুধু ভাষা নিয়ে অবসেশন রেখে তো লাভ নাই। আছে কি? ক্রমাগত শুদ্ধ ভাষায় আবুলিয় কথাবার্তা বলে গেলে লাভ আছে কোন? 🙂
@সাইফুল ইসলাম, আপনি এখানে নিজের আঞ্চলিক ভাষা ছাড়তে পারছেন না! এইবার বুঝেন, পাক-সরকার বাঙ্গালিদের যখন বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও নিজ উপার্জনের ভাগ ছাড়তে বলেছিল তখন কেমন লেগেছিল!! :guli:
@আকাশ মালিক,
ভাইয়া, আপনার পরামর্শ মানার চেষ্টা করেছি। ভাল থাকবেন। আপনাকে অন্তরের ভালবাসা জানাচ্ছি। (F)
@কাজি মামুন,
ভাল খেলার স্টাইল আছে মানলাম।কিন্তু এই ভাল খেলার স্টাইল কি অপরিবর্তনীয়?আমির সোহেল-সাইদ আনোয়ার যখন একসাথে ওপেন করতেন রান তোলার গতি কম থাকত আফ্রিদি-আনোয়ার অথবা আফ্রিদি-নাজিরের রান তোলার গতি থেকে।একই ভাবে টেলর-মার্ক ওয়াহ কখনই গিলক্রিস্ট-হেইডেনের গতিতে রান তুলতে পারেনি।
মিডল অর্ডারে ডি সিলভা-রানাতুঙ্গা যেভাবে খেলতেন সেভাবে এখন নিশ্চই খেলেননা সাঙ্গাকারা-মাহেলারা।
গিল্ক্রিস্ট তো উইকেট কিপিং এর সংজ্ঞাই পালটে দিয়েছেন।ধোনি-হাডিন-সাঙ্গাকারারা অবশ্যই সেই মানের না হলেও অবশ্যই কামরান আকমলের মানের নয়।জানিনা হয়তো এই স্টাইলই সাপোর্টাররা পছন্দ করেন!
@নাস্তিক দীপ, ++++ :guru: :guru:
@সাইফুল ইসলাম,
একটা সম্পুর্ন তথ্য- প্রমান ভিত্তিক বই হল- বিখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী ডঃ অনুপম সেন এর “বাংলাদেশঃ রাষ্ট্র ও সমাজ, সামাজিক অর্থনীতির স্বরূপ” ৪৭ এর পর থেকে কিভাবে বাঙালি পরাধীন ছিল, তার অর্থনৈতিক সামজিক প্রেক্ষাপট কিভাবে পাকিস্তানের কলোনিতে পরিনত হয়েছিল বোধকরি তার প্রমানের অভাব পাবেন না। ধন্যবাদ
@আভিজিত রায়,
আমার তো প্রমানের দরকার নাই! আমিতো জানিই বাঙালির অবস্থা কেমন ছিল পাকিস্তান পিরিয়ডে। বরঞ্চ আপনি আমাকে বলুন কলোনি কি কলনাইজডদের সমর্থন নিয়ে হয় নাকি জোর করে নিতে হয়। আপনি ইচ্ছা করলে ঐ বিখ্যাত লেখকের সাথে মিটিং করেও আমাকে উত্তর দিতে পারেন। কোন সমস্যা নাই। 🙂
@সাইফুল ইসলাম,
আপনি জানেন শুনে খুশি হলাম। কিন্তু খুব ভাল ভাবে জানেন এটাতে আমার সন্দেহ আছে বৈকি। আর আপনি হয়ত ভুলে গেছেন অথবা জানেন না কোলনাইজেশন এর সংগাটাতে পরিবর্তন আসতে শুরু করে সে সময় থেকেই। মাইন্ড কোলনাইজেশন কন্সেপ্ট টার সাথে হয়ত আপনি পরিচিত না। পরিপূর্ন ভাবে মাইন্ড কোলনাইজড হয়ে গেলে তা বন্দুকের নল দিয়েও ডিকোলনাজড হয় না। দেশ বিভাগের সময়টাতে ধর্ম দিয়েই কিন্তু এখানে মাইন্ড কোলনাইজেশন এর শুরুটা হয়। কিন্তু পরিপূর্নতা পাবার আগেই বাঙালি ধান্দাবাজিটা বুঝে যায়। আর সে সময়টা থেকেই এই কন্সেপ্টটাতে পরিবর্ত্ন আস্তে শুরু করে। আর বর্তমানে তার রুপ্টা অনেক বেশিই পাল্টেছে। বর্তমানের পরিবর্তিত রুপ্টা, নিচের উদাহরনটা পরলেই এই কন্সেপ্টটা বুঝবেন- ইন্ডিয়ান টিভি চ্যানেলে গুলা, MNc গুলা বাংলাদেশে বর্তমানে কি করছে… একটু চিন্তা করবেন। বন্দুকের নল ধরে কোলনির সংগা অনেক আগেই পাল্টে গেছে। এর সারমর্ম সম্পদ পাচার।
এই লাইন টা পড়ে মনে হল বর্তমানে বাংলাদেশে হাতে গুনা যে দুই-তিন জন জীবিত সমাজবিবিজ্ঞানী আছে তাদের প্রথম জনের নামই আপনি শুনেন নি। ধন্যবাদ।
@আভিজিত রায়,
আমি এই কথাটাই মামুনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, সে আসলে স্বাধীনতা বলতে কী বোঝে। সে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কথা এনেছিল। যেটা অত্যন্ত যৌক্তিক। কিন্তু আপনার কাছে কি মনে হয় না আরো সহজ সরল একটা ব্যখ্যা দেওয়া সম্ভব? স্বাধীনতা কি তাই ন
@আভিজিত রায়,
সম্পূর্ণ উত্তরটা আসেনি। আবার দিলাম।
মুক্তমনার সার্ভারে সমস্যার কারনে মনে হয় আগে দেওয়া উত্তর আসে নি। তৃতীয়বারের মতন দিচ্ছি।
আমি এই কথাটাই মামুনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, সে আসলে স্বাধীনতা বলতে কী বোঝে। সে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কথা এনেছিল। যেটা অত্যন্ত যৌক্তিক। কিন্তু আপনার কাছে কি মনে হয় না এটা আসলে স্বাধীনতার সংজ্ঞা হিসেবে একটু দূর্বল, যদিও এখানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার উঠে এসেছে। আমার মতে স্বাধীনতা হল আমি যেটা ফিল করি। মানে স্বাধীনতা আসলে অনুভব করার ব্যাপার। আপনি যদি আজকের বাঙলাদেশে মনে করেন আপনি স্বাধীন, তাহলে আপনি স্বাধীন।
একটি জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগ জনগন যদি আপনার বলা মাইন্ড কলোনাইজেশনে ভোগে তাহলে আপনি আমি তাকে পরাধীন, কলোনাইজড বললেও আসলে তাদের কিছু আসে যায় না। কেননা তারা সেখানেই স্বাধীনতার স্বাধ পাচ্ছে। যেটা ৪৭ হয়েছে। বেশীরভাগ মানুষ পাকিস্তান চেয়েছিল। তারা তাদের চাওয়া পূরন করেছিল।
আজকে আপনি, আমি ফলাফল দেখে বলতে পারছি তাদের সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল(যদিও ব্যাপারটা এমন না যে তখন কেউ টের পায় নি। অনেকেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল)। কিন্তু আজকে যদি পাকিস্তানই থাকত তাহলে কিন্তু পরাধীনতার কথা আসত না। যদি তারা আজকে যা চেয়েছিল তাই তাদের স্বাধের পাকিস্তানে পেত তাহলে কিন্তু আজকে এই প্রসংগই উঠত না।
আপনার বক্তব্য সহজ করার জন্য আমি একটা উদাহরন দেই। তাহলে আপনি উত্তর দিতে সুবিধা পাবেন। আজকের নর্দার্ন আয়ারল্যন্ড আর রিপাবলিক অব আয়ারল্যন্ড কোনটাকে আপনি স্বাধীন বলবেন? দুটোকেই নাকি একটিকে? নাকি দুটোই পরাধীন? যদি একটি স্বাধীন আর অন্যটি পরাধীন হয় তাহলে কোনটি স্বাধীন আর কোনটি পরাধীন? এবং এর পেছনে আপনার যুক্তি কী?
সঠিক।
@সাইফুল ইসলাম,
পাকিস্তানের পতাকা বাধ্য করে মুছানোর ব্যাপারটা বুঝলাম না। ভালই তো স্ট্রিট জাস্টিস চলছে। আপনি আরেক জায়গায় বলেছেন একটা মানুষ ন্যাঙটা হেঁটে গেলেও কারও কোনো ক্ষতি হয় না, ফলে উচিত অনুচিতের ব্যাপার নাই। আমি সেটাকে একদম সঠিক কথা মনে করি। তো পাকিস্তানের পতাকা গালে আঁকাটাকে কীভাবে ক্ষতির কারণ হিসাবে দেখেন আপনার কাছ থেকে জানলে ভালো লাগতো।
@রূপম (ধ্রুব),
এইটা রূপম ভাই লেখকের করা কাজ। আমি এই কাজ সমর্থন করি না। যার যার নিজের পছন্দের দলের সাপোর্ট করার অধিকার আছে। কিন্তু আমার কাছে যদি আমার মতামত জানতে চান তাইলে কইতে পারি। সবার যেমন নিজের দলের বা নিজের আইডিওলজির সমর্থনের অধিকার আছে ঠিক তেমনে কিন্তু আমার আপনার ঐটারে সমালোচনা করার অধিকারও আছে।
একটা ছোট্ট উদাহরন দিলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার অইব। ধরেন আজকে ইরাক আর আমেরিকার যে অবস্থা। যদি এমন হয় যে ইরাক আর আমেরিকার মইধ্যে কোন খেলা হইতেছে। এহন কোন ইরাকি যদি আমেরিকারে সাপোর্ট করে তাইলে আমি হেরে যাইয়া পিডাইয়া কমু না যে কেন আমেরিকারে সাপোর্ট করে। কিন্তু হেরে আত্নসম্মানহীন কইলে নিশ্চই আমার জাত যাইব না, কী কন রূপম ভাই?
@সাইফুল ইসলাম,
সমালোচনা করার অধিকার তো আছে আলবৎই। সেইটা না থাকলে তো আরো বড় সমস্যা। পাকি পতাকাধারীর লগে আমি আনটিল ডেথ তর্ক করতে রাজি আছি যে সে একটা আত্মসম্মানহীন ছাওয়াল। সেই পয়েন্টে তো তাই আমার দ্বিমত নাই। বাট বাধ্য করা তো গায়ের জোর। আর গায়ের জোর হইলো যুক্তিবুদ্ধির নৈতিক পরাজয়। এখানে কমনসেন্স বলে যে ক্ষতি না হইলে অন্যের উপর জোর করার অধিকার আমার নাই। পাকি পতাকা গালে আঁকা ফৌজদারি অপরাধ হইলে মামলা কইরা আসতে পারি। আইন আদালত আছে। কিন্তু আমার অন্যের উপর গায়ের জোর প্রয়োগ করার অধিকার কোনো উপায়তেই নাই। তাই আপনার সাথে মতটা যাচাই কইরা নিলাম। নৈতিক অবস্থান ঠিক আছে আপনার। উত্তরের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
@রূপম (ধ্রুব),
একমত! আপনার চিন্তাভাবনার স্বচ্ছতা আমাকে সবসময় মুগ্ধ করে! (F)
@রূপম (ধ্রুব),
@রূপম (ধ্রুব),
সত্যি বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার জ্ঞান দেখে আমি মুগ্ধ।বাংলাদেশে কি আসলেই আইন আদালত আছে?ন্যায় বিচার বলে কিছু এদেশে থাকলে ধর্ষিতা মেয়েদের কে বেশ্যা অপবাদ মাথায় নিয়ে আত্মহত্যা করতে হত না।
@অচেনা,
তো আপনার নৈতিক আদর্শের বহর তাইলে এমন যে বাংলাদেশে যেহেতু আইন আদালত নাই, তাই চোর ডাকাত পাইলে রাস্তাতেই পিটিয়ে মেরে ফেলি নাকি? ছেড়ে দিলে তো বিচার হবে না কখনো নাকি?
বিচার দীর্ঘকালীন প্রক্রিয়া। সেটাই স্বাভাবিক। নিজের চোখে খুন হতে দেখলেও খুন হবার পর খুনিকে ধরে বিচার / মৃত্যুদণ্ড নিজ হাতে করার এখতিয়ার নাই। আট দশ বছর অপেক্ষা করতে হবে। মানুষ আইন আদালত বিচার এগুলো তৈরিই করেছে এটাকে মেনে নিয়ে। ‘আইন আদালত, বিচার নাই,’ এগুলো সেল্ফফুলফিলিং প্রফেসি। অধৈর্য্য মানসিকতার পরিচায়ক। বিচারের উপর সামষ্টিক অনাস্থা একটা বিচার ব্যবস্থাকে অটোমেটিক অকার্যকর করে। বিস্তর লিখেছি সে নিয়ে।
বিচার নিয়ে আমাদের করণীয়
পা গেছে তো কী হয়েছে, লিমন?
ইরান থেকে বাংলাদেশঃ আমাদের বিচার-অবিচারবোধের পাঠ
আইন কেবল তখন আপনাকে বলপ্রয়োগের অধিকার দেয়, যখন অন্যে বেআইনিভাবে বলপ্রয়োগ করে কারও তাৎক্ষণিক শারীরিক বা সম্পত্তিগত ক্ষয়ক্ষতি ঘটাচ্ছে ও সেই ক্ষতি কমাবার আপনার সুযোগ আছে। তবে এটা বুঝতে তো আইনজ্ঞ হওয়া লাগে না, কমনসেন্সই যথেষ্ট। গালে পাকি পতাকা আঁকলে কার কোন তাৎক্ষণিক ক্ষতিটা হচ্ছে যে আপনার বল প্রয়োগ করার অধিকার জন্মেছে?
@রূপম (ধ্রুব),
বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে?যেখানে বিচার ব্যাবস্থা নিয়ে কথা বললেই রাজনৈতিক চালে সেটা হয়ে যায় আদালত অবমাননা?আপনি এ নিয়ে লিখেছেন খুব ভাল কথা।
কিন্তু ধর্ষিতা মেয়েগুলো মরে যাবার পরে পত্রিকায় অনেক ফাঁকাবুলি পড়ি।কাজের কাজ কিছুই হয় না। থিওরি সব জায়গায় খাটে না, এটা আশা করি ভাল করেই জানেন। চোর ডাকাতের আর ধর্ষকের ব্যাপার টা একটু আলাদা, যেখানে বাংলাদেশের প্রায় সব মুসলিম মনে করে যে ধর্ষনের দোষটা ধর্ষিতার।
@অচেনা,
“চোর ডাকাতের আর ধর্ষকের ব্যাপার টা একটু আলাদা” ভালো কথা, তো গালে পতাকা আঁকা নিয়ে আইন আদালতের কথাটা বলেছিলাম দেখে আপনি একেবারে ধর্ষণ নিয়ে আসলেন। এখন বলছেন ধর্ষক আর চোর ডাকাতই আলাদা। তো গালে পতাকা আঁকিয়ের ক্ষেত্রের সাথে ধর্ষকের মিলটা কতোটুকু? ওখানে বল প্রয়োগ করার পক্ষের যুক্তিগুলো কী কী? গালে পাকি পতাকা আঁকলে কার কোন তাৎক্ষণিক ক্ষতিটা হচ্ছে যে আপনার বল প্রয়োগ করার অধিকার জন্মেছে?
@রূপম (ধ্রুব), গালে পতাকা আঁকলে তাৎক্ষনিক কেন, কোন ক্ষতিই হয় না।
কিন্তু সেন্টিমেন্ট এর তাৎক্ষনিক ক্ষতি হয়, কারন ওটা পাকি পতাকা। দেখুন বাকি উত্তর টা নিচে আছে। ধন্যবাদ।
@অচেনা,
সেন্টিমেন্টের আঘাত বল প্রয়োগের অধিকার জন্মানোর কেইসগুলোর মধ্যে পড়ে না। এমন কেইসে বল প্রয়োগ বেআইনি। আর বল প্রয়োগ করে নিজের ‘সেন্টিমেন্ট’ রক্ষা অবশ্যই নৈতিক বা যৌক্তিক কর্ম নয়। একই কথা বার বার বলাচ্ছেন। তার চেয়ে বলে দেন যে আপনি মনে করেন এখন থেকে সেন্টিমেন্ট এর তাৎক্ষনিক ক্ষতি হলেও বল প্রয়োগের আইনি অধিকার থাকা উচিত বলে মনে করেন, এর জন্যে কোর্টে যাবেন। অথবা বলেন যে আপনার অনুভূতি নিয়ে আলাপেই আপনি কেবল আগ্রহী, আইন নিয়ে না। তাহলে আর আপনার সাথে আমার কোনো আলাপ বা তর্ক থাকে না।
@রূপম (ধ্রুব),
আসলে আমার ইন্টারনেট খুব স্লো। আপনার ২.৩৫ pm ( বাংলাদেশ সময়) এ করা মন্তব্য দেখার আগেই আমি এই কমেন্ট করেছি।ওটা আমার কাছে আগে চলে আসলে এমন হতনা।দুঃখিত আপনাকে দিয়ে একই কথা বার বার বলানর উদ্দেশ্য আমার ছিল না। আপনার আগের মন্তব্য আমি দুর্ভাগ্যজনক ভাবে অনেক পরে দেখেছি আমার খুব ধীর গতির ইন্টারনেট এর কারনে ।আশা করি আমার সমস্যা টা আপনি উপলব্ধি করেছেন।ধন্যবাদ।
আর একটা কথা বলতে ভুলে গেছি, তা হল ৮/১০ বছর কেন?৮/১০ দিনেই বিচার প্রার্থী রা মামলা তুলে না নিলে হুমকির শিকার হয়, আর সেই বিচার প্রার্থী রা ৮/১০ সপ্তাহেই এক ঘরে হয়ে যায়, উকিলের পেছনে টাকা ঢেলে নিঃস্ব হয়ে যায়। তবু তারা নায্য বিচার পায় না। তাই ত বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ধর্ষিতার পরিবারি অসহায় মেয়েটির মৃত্যু কামনা করে, এ নিয়ে খোটা মারে তাকে, পরিবারও তাকে সন্দেহ করে, না করলেও তথাকথিত সামাজিক মর্যাদার জন্য এমনকি পরিবারেই সে লাঞ্ছিত আর অপমানিত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়, তখন থিওরি প্রদান কারিরা কোথায় থাকেন?
@অচেনা,
তখন থিওরি প্রদানকারীদের খুঁজবেন কেনো? তখন তো ন্যায়বিচার দেয়ার মালিক আপনাদের মহান ডার্ক জাস্টিস র্যাব, পুলিশ, ক্রসফায়ার, অথবা সেগুলা জোগাড় করতে না পারলে রাস্তায় পিটায়ে মারার সুযোগ তো আপনার আছেই, নাকি? বিচার নাই দেখে রাস্তায় পিটায়ে মারা উচিত, এটাই শুনতে চাচ্ছেন আমার থেকে?
@রূপম (ধ্রুব), যেটা খুশি বলার অধিকার আপনার আছে,তবে থিওরি প্রদান কারীদের প্রতি অনুরোধ থাকবে ওই ৮/১০ বছরের বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন সময় যে সমস্যা গুলি উল্লেখ করলাম সেগুলো practically সামাল দিতে victim দের পাশে দাঁড়াবেন প্লিজ, তবেই আর ডার্ক জাস্টিস দের দরকার পড়বে না। আর সেগুলোর সমর্থনে কেউ কথাও বলবে না।
@রূপম (ধ্রুব),
পাকি পতাকাকে বিদায় করতেই ৩০ লাখ বাংলাদেশি মারা গেছেন, আর ৩/৪ লাখ মেয়ে সম্ভ্রম হারিয়েছেন। সেই অধিকারের বলেই বলছি, এই দেশে সব দেশের পতাকা উড়তে পারবে খেলার মাঠে, কিন্তু পাকি পতাকা না।ওটা বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত।
@অচেনা,
মানে আইনগতভাবে? এখানে আইনি অধিকারের কথা বলছি। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়েছে ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্যে। এখন অর্ধেক যুদ্ধ অর্ধেক ন্যায়-আইন এরকম ব্যাপার নেই। যদি ওটা বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত হয়, তাহলে সেটা আইন দ্বারাই নির্বাসিত হতে হবে। আইনের তর্ক করছি। বল প্রয়োগের আইনি অধিকার নিয়ে কথা বলছি। নৈতিক ও যৌক্তিক অবস্থানের কথা বলছি। অন্য আলাপ করছি না। আইন-বহির্ভূত অনুভূতিপ্রবণ দাবির ব্যাপারে আমি তর্ক করছি না। আইন দ্বারা যদি পাকি পতাকা নির্বাসিত হয়ে থাকে, তার মানে এই না যে সেটা লঙ্ঘনকারীর উপর বল প্রয়োগ করার আইনি অধিকার কারো জন্মে। তাছাড়া আমার মতে বলপ্রয়োগে যুক্তিবুদ্ধির নৈতিক পরাজয় ঘটে। বিশেষ করে যেটা কারো তাৎক্ষণিক শারীরিক বা সম্পত্তিগত ক্ষতি করছে না। সেটা যেকোনো মুক্তমনারও নৈতিক অবস্থান বলে আশা রাখি। আমার কথাখানি এইটুকুই ছিলো।
@অচেনা, একমত।আমাদের নিজেদেরই পতাকা রয়েছে।তারপরেও বিশেষ উপলক্ষে যদি অন্যদেশের পতাকা নিতেই হয় নেওয়া যেতে পারে।কিন্তু পাকি পতাকা নয়
@নাস্তিক দীপ, ধন্যবাদ আপনাকে একমত হবার জন্য। অথচ কি দুর্ভাগ্য দেখেন, আজ বাংলাদেশের চেয়ে পাকিস্তানের পতাকাই যেন ওড়ে বেশি। এগুলোকে জানিনা কিভাবে আইন করে থামানো যায়, আর নিজেদের ভুলে যাওয়া এই জাতি তেমন কোন আইন করা ত দুরের কথা,, বেশিরভাগ মানুষই করবে বিরোধিতা। কাজেই ওই আইন প্রণয়নও কোনদিন হবে না, মুক্তমনের অধিকারি হলে বলও প্রয়োগ করা যাবেনা। মানে কি হল? সাত মন ঘিও জুটবে না, রাধাও নাচবে না।
গণতন্ত্রকে ব্যাবহার করেই আজ দেখেন তুরুস্ক তার সেকুলার গৌরব হারানোর পথে, মিশরও সেদিকেই যাবে। যেমন গেছে ইরান, যা আমরা জেনেছি ইতিহাস পড়ে।বাংলাদেশও যাবে তাড়াতাড়িই।
@অচেনা,আপনি নিজেও নিশ্চই জানেন এদেশে পাকিস্তানের ম্যাচ থাকলে কি করে পাকি সমর্থকেরা!সেদিন প্রথমে আমরা কিছুই বলিনি।কিন্তু সহ্যেরও সীমা থাকে।বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান আউট হলে বিকৃত উল্লাস,সাকিব নামার সময় শিয়ালের ডাক এসব দেখে সহ্য করা কঠিন।
@নাস্তিক দীপ, হা দাদা, জানি বলেই বলছি। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে আপনার পদক্ষেপকে সমর্থন করেছি, আর এতে কে কি ভাবল, আমি এতে খুব বেশি একটা মাথা ঘামাচ্ছিনা কারন, আপনার যায়গাতে আমি হলে আমিও ওই কাজ টাই করতাম।আমি স্টেডিয়ামে না, সাধারনত যদি খেলা দেখি টিভিতেই দেখি।তবে ভাগ্য ভাল যে চারপাশে পাকি সমর্থক গিজ গিজ করলেও, বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের খেলায় পাকিস্তানের সমর্থকের সাথে পরিচয় নেই। এমন কাউকে সামনাসামনি ওই নোংরামি করতে দেখলে মনে হয় না নিজেকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারব।
@রূপম (ধ্রুব),
হা অবশ্যই বাধ্য করা হবে।করতে হবে।নয়তো আমার অনেক ছোট ভাই-বোন আছে যারা এসব দেখবে শিখবে এবং এক সময় এরকম পাকি পতাকা গালে লাগিয়ে ঘুরবে।৭১ এর পর পাকি পতাকা কোন সুস্থ মস্তিষ্কের বাংলাদেশি নিশ্চই গালে লাগাবেনা।যেখানে আমাদের নিজেদের পতাকা রয়েছে সেখানে অন্যদেশ বিশেষ করে পাকি পতাকা গালে লাগানোর কোন যৌক্তিকতা দেখিনা।
আরেকটা কথা।মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলছেন?তাহলেতো আমাদের সাকা-গোলাম আজমদেরও দেশ বিরোধী মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে।তখন যদি ওদের গালে কেউ থাপ্পর মারে তখন নিশ্চই বলবেন খুব ভাল কাজ করেছে ছেলেটা।নাকি বলবেননা?
@নাস্তিক দীপ,
আপনার কাছে যা অযৌক্তিক, সেটা বল প্রয়োগে বন্ধ করার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে? রাষ্ট্র? গণিত? বিজ্ঞান? গালে পাকি পতাকা আঁকা ফৌজদারি অপরাধও যদি হয়, এতে যেহেতু কারও শারীরিক বা সম্পত্তিগত ক্ষতি তৎক্ষণাৎ হচ্ছে না, আপনার বল প্রয়োগ এখানে বেআইনি, আরেকটি ফৌজদারি অপরাধ। আপনি বড় জোর হয়তো থানায় মামলা করে আসতে পারেন।
জ্বি না। যুক্তিবুদ্ধির চর্চার জন্যে মুক্তমনায় আসি। আপনার এসব গুণ্ডামিকে পিঠ চাপড়ে দেয়ার জন্য নয়। আপনার এই গুণ্ডামি সর্বৈব অবৈধ, অন্যায়, অ-মুক্তমনা সুলভ। ন্যায়নীতিপূর্ণ সমাজ ও রাষ্ট্রে অপরাধীকে শারীরিক আঘাতের অধিকার কারো জন্মে না। মুক্তিযুদ্ধে আমরা জয়লাভ করে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করেছি। তাই আমরা গোলাম আজমের বিচার করছি। তবে আপনি নিশ্চয়ই থাপ্পর মারা হলে বলতেন যে খুব ভালো কাজ হয়েছে? কিল মারলে বলতেন খুব ভালো কাজ হয়েছে? লাথি মারলে? বুকে ছুরি বসিয়ে দিলে? রাস্তায় শুইয়ে পিটিয়ে মারলে তখন বলতেন না যে খুব ভালো কাজ হয়েছে? কিন্তু আমাদের মধ্যে যারা মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকারের চেতনাবহনকারী, তারা জানি যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না করে স্ট্রিট জাস্টিস করলে সেটাই হবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার, নৈতিকতার, আদর্শের সর্বোচ্চ মানহানি, অপমান। তাই আমরা গোলাম আজমকে ধরে পিটিয়েও মারছি না, চর থাপ্পরও দিচ্ছি না। বিচার করছি।
আপনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধরার নাম করে বলপ্রয়োগ করে আইনের শাসন নষ্ট করে নিজের গুণ্ডামির ঝাণ্ডাটা খাঁড়া করতে আগ্রহী। এই গুণ্ডামিতে কোনো মুক্তিযুদ্ধ নেই। আপনার এই চেতনা সম্পূর্ণই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধি এবং এমন ধ্যান ধারণা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জন্যে ক্ষতিকর। তবে আপনাকে এসব বলা হয়তো দুরাশা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধি গুণ্ডামিপূর্ণ মানুষ অনেক দেখেছি। মুক্তিযুদ্ধের নামে এখানে সেখানে গুণ্ডামি, স্টান্টবাজি করে বেড়ায় আর ভান করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত করছে। যুক্তিতর্কে, নৈতিক অবস্থানে ফাঁকা।
@রূপম (ধ্রুব),
যুক্তিবাদী!!!ভালই বলেছেন…!শুধু ঐ ধর্মের ক্ষেত্রে যুক্তিবাদী হলেই মানুষ যুক্তিবাদী হয়ে যায়না দাদা।একজন যুক্তিবাদী প্রত্যেকটা ক্ষেত্র যুক্তি দিয়ে বিচার করে।আমি আমার জীবনে নাস্তিক বহুত দেখেছি কিন্তু যুক্তিবাদী একটাও দেখিনি।কেউ ধর্মের বেলায় যুক্তিবাদী ঠিকই কিন্তু পড়াশুনার সময় আর কোন যুক্তি মানেনা।আবার যখন মাঠে ক্রিকেট খেলতে যায় তখন যুক্তিবাদী হলেও বাসায় অযৌক্তিক কাজ কম করেনা।
আমি নিজেও সবক্ষেত্রে যুক্তিবাদী নই।আমার দেশ আমার পতাকার বিরুদ্ধে কোন বাংলাদেশির অবস্থান আমি কখনই মেনে নেবনা।আপনার ভাষায় এটা গুণ্ডামি হলে আমার কিছুই যায় আসেনা।আমার কাছে এটা আমার দেশপ্রেম।
আরেকটা কথা খুব জানতে ইচ্ছা করছে দাদা।সমস্যা না থাকলে জানাবেন।আপনি কি দেশে থাকেন না দেশের বাইরে থাকেন?
@নাস্তিক দীপ,
আপনার জন্যে এটা জানাটাই সম্ভবত যথেষ্ট যে আমি ঢাকার ধুলাবালিগুণ্ডামাখা রাস্তাতে বড় হয়েছি। গুণ্ডাদের অনেক চোখ রাঙানি দেখেছি। অস্ত্রের, মৃত্যুর হুমকি দেখেছি। প্রতিবার এটাই জেনেছি যে নিরস্ত্র যখন অস্ত্রধারীর, বলপ্রয়োগেচ্ছুর, গুণ্ডার চোখে চোখ রেখে কথা বলে তখন নিরস্ত্রজন থাকে সবচেয়ে শক্তিশালী আর বলপ্রয়োগকারী থাকে সবচেয়ে বড় নপুংসক।
@রূপম (ধ্রুব),
হায়রে দাদা!!নপুংসক সপুংসকের কথা জানতে চাইনি।জানতে চেয়েছিলাম এখন কোথায় আছেন!যাই হোক ভাল থাকবেন।
@নাস্তিক দীপ,
“Freedom is always the freedom of the one who thinks differently” — Rosa Luxemburg.
@সাইফুল ইসলাম, অসাধারণ বলেছেন ভাই :lotpot: (Y)
আসলে বাঙ্গালীরাই পাকিস্তান আন্দোলনে বেশি নেচেছে, এটা আমিও মনে করি আর আপনার এই কথার সাথেই আমি একমত সাইফুল ভাই 🙂
@সাইফুল ইসলাম,
রেফারেন্স দেন।
মানে কি?পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীদেরই শুধু বাঙালি লাগে আপনার?নাকি নিজেরে বাঙালি মনে করেননা?
না হেসে পারলামনা।ওরা দেখতে সুন্দর?আর অন্যান্য দেশের খেলোয়াড়েরা দেখতে খারাপ?মেয়েদের সাপোর্টের ব্যাপারে বলব,দলের নাম পাকিস্তান এই কারনেই ওদের সমর্থন করে।আর খেলোয়াড় চুজ করার সময় চেহারা দেখে করে।
সব শেষে আপনাকে বলব,দাদা আপনি কি খোঁচা না মেরে ভাল করে কথা বলতে পারেননা?আমি অথবা এখানকার অন্য কেউ নিশ্চয়ই আপনার বন্ধু নই যে এই ভাষায় কথা বলবেন।
আরেকটা অনুরোধ মুক্তমনায় অথবা অন্য কোথাও ভাল করে মন্তব্য করে থাকলে একটু কষ্ট করে লিঙ্ক দেবেন দাদা।ভাল থাকবেন
@নাস্তিক দীপ,
এখানে একটা মন্তব্য আমি করেছিলাম। কোথায় গেল বুজতে পারছি না। 🙁
সমস্যা নাই আবার করছি।
আপনি যেহেতু দাবী করছেন আইয়ুব বলেছে তাহলে বরঞ্চ রেফারেন্সটা আপনিই দিন। তারপরে না হয় আমি দেব।
ভাষা আন্দোলনের দাবীটা যেহেতু আমার করা, সেজন্য এটার রেফারেন্স আমিই দিচ্ছি।
আপনাকে কষ্ট করতে হবে না। শুধু “আসাম ভাষা আন্দোলন” লিখে গুগল করুন। রেফারেন্সের মোটেই অভাব হবে না।
পশ্চিমবঙ্গ বাঙলাদেশ, দুদেশের মানুষকে বাঙালি মনে হয় দেখেই বলেছি ৪৭এই বাঙালি স্বাধীন হয়েছে।
আপনি রসিক মানুষ। যুক্তিবোধও প্রখর, নইলে শুধু মাত্র পাকিস্তান নামের কারনেই কেউ পাকিস্তানকে সাপোর্ট করবে এটা ভেবে নেওয়াটা একটু কেমন না? তারচেয়ে আমার কথাটাই কি বেশি যৌক্তিক না? নামের মধ্যে কি এমন মাদকতা থাকতে পারে যে শুধু পাকিস্তান নামের মাধ্যমেই পাকিস্তানের খেলোয়াররা বাঙলাদেশের যুবতীদের মন হৃদয় সব কেড়ে নিল?
আপনার মেজর যে দুটো দাবী, আইয়ুব খানের বক্তব্য আর বাঙলাদেশেই শুধু ভাষার জন্য সংগ্রাম হয়েছে, এর কোন রেফারেন্স বা লিঙ্ক আপনি দেন নি। কিন্তু অন্য সবার কাছে লিঙ্ক নিঃশর্তে লিঙ্ক দেবার জন্য উদাত্ত আহবান জানালেন। কিছুটা উপদেশের মতন শোনায় বই কি। আর উপদেশ শুনলে আমার আবার বাঙালি সম্পর্কে একটা কথা মনে পড়ে যায়। বাঙালি উপদেশ দিয়ে রতিক্রিয়ার চেয়েও বেশি আনন্দ পায়। :-X
@সাইফুল ইসলাম,
আমি কোন দাবি করিনি।রেফারেন্স থাকলে আমি ট্যাগ করেই দিতাম।আপনি রেফারেন্স দেন।ভুল হলে আমি সংশোধন করব।
হ্যাঁ,পেয়েছি।ধন্যবাদ।আমার জানা ছিলনা।
কিন্তু আমরা তো ৪৭ এ স্বাধীনতা পাইনি।তাহলে আপনি কাদের কথা বলছেন?সবকিছুতেই বৈষম্যকে স্বাধীনতা বলেনা।আর ইতিহাস বলবে আমরা ৭১ এ স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
হ্যাঁ করে।কারন জন্মসুত্রে বাংলাদেশি হলেও মনের দিক থেকে পাকিস্তানের প্রতি এখনো ভালবাসা আছে।নিজের দেশের মত করে টান অনুভব করে।এইকারনে পাকিস্তানিরা যেমন ভারতীয়দের ঘৃণা করে বাংলাদেশিরাও করে।
জী না দাদা।ভুল বললেন।অনুরোধ করেছিলাম।সম্ভব হলে দেবেন।ভাল থাকবেন।
চমৎকার লেখা।
@পৃথ্বী, ধন্যবাদ দাদা