লিখেছেনঃ মেহেদী তুহিন
আশীফ এন্তাজ রবি। পরিচয় দেয়ার মতো তেমন কোন পরিচয় আমি তার জানি না। তবে আমি কেন তার নাম দিয়ে শুরু করলাম। বলছি। গত ১৮ জানুয়ারি ২০১২ আমি তার একটি লেখা পড়েছিলাম। “আমি হুমায়ূন আহমেদ হতে চেয়েছিলাম” শিরোনামের লেখা। লেখাটি থেকে একটা অংশ তুলে দিচ্ছি। নিতান্ত অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে হতে পারে তারপরেও দিচ্ছি।
সাহিত্যসভায় কালজয়ী সাহিত্যিক হওয়া সম্ভব, কবি সম্মেলনে নিভৃতিচারী কবি হওয়া সম্ভব, সাহিত্যপত্রিকার জীবনঘনিষ্ট লেখক হওয়াও অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু পাঠকের হুমায়ূন আহমেদ, বইমেলার হুমায়ূন আহমেদ হওয়া সম্ভব নয়। এটিই তিতকুটে সত্য, নির্জলা বাস্তবতা।
এখন আসে মূল প্রসঙ্গে। গত বেশ কিছু দিন ধরে ভার্চুয়াল জগতে হুমায়ূন আহমেদের তীব্র সমালোচনা হয়েছে, যার শুরুটা হয় মূলত দৈনিক “প্রথম আলো” তে ৩০ জানুয়ারি ২০১২ তে প্রকাশিত “সুপার হিরো” শিরোনামের একটি লেখার মাধ্যমে। একজন লেখকের সমালোচনা হতেই পারে। এটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমালোচনার তীব্রতার মাত্রা বিস্ময়কর ভাবে সহজ স্বাভাবিক শালীনতাকে ও ছাড়িয়ে গেছে; সেই সাথে যুক্ত হয়েছে ভ্রান্ত কিছু তথ্যাদি । আমি এ বিষয়ে একটু বলার চেষ্টা করব।
“পৃথিবীর কোথাও আমি ছাত্রদের এবং শিক্ষকদের রাজনৈতিক দল করতে দেখিনি। এই অর্থহীন মূর্খামি বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাপার। এই মূর্খদের মধ্যে আমিও ছিলাম। ড. আহমদ শরীফ এবং অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী অতি শ্রদ্ধেয় দুজন। তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সাদা দলে ইলেকশন করেছি। এখন নিজেকে ক্ষুদ্র মনে হয়। মূর্খ মনে হয়।”
– তার এই বক্তব্যতে অনেকে আপত্তিকর একটি বিষয় খুঁজে পেয়েছে তা হল উনি ড. আহমদ শরীফ এবং অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী কে তার এই লেখার মাধ্যমে মূর্খ বলতে চেয়েছেন। এই বেপারটি অবশ্যই নিন্দনীয় কারণ হুমায়ূনের ভাষাতেই বলবো, ড. আহমদ শরীফ এবং অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী অতি শ্রদ্ধেয় দুজন, শুধু তাই নয় তারা যথেষ্ট জ্ঞানী ও বটে; এদেশের শিক্ষিত মানুষ মাত্রই এটা জানে।
এখন আসি “জোছনা ও জননীর গল্প” প্রসঙ্গে। আমার পড়া মুক্তিযুদ্ধের উপর সবচেয়ে সুখপাঠ্য বই এটি। মূলত এটি একটা উপন্যাস। কথাটায় জোর দিচ্ছি আমি “জোছনা ও জননীর গল্প” একটি উপন্যাস। অনেকে তার সমালোচনা করতে গিয়ে “জোছনা ও জননীর গল্প” কে ইতিহাস বই মনে করে তার সমালোচনা করে ফেলেছেন (যদি ও আমার মনে হয় অনেক ক্ষেত্রে এই বইটি কে ইতিহাস গ্রন্থ বললে খুব একটা ভুল হবে না কারণ হুমায়ূন তার বইটিতে যথেষ্ট তথ্যসূত্র ব্যবহার করেছেন।), যেমন, সুপরিচিত ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন তার হুমায়ুন আহমেদঃ একজন পুস্তক ব্যাবসায়ী পতিত বুদ্ধিজীবী! লেখায় সমালোচনা করতে গিয়ে লিখেছেন,
“জোছনা এবং জননীর গল্পে তিনি লিখেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের সেই ভাষণটা শেষ করেছিলেন “জয় বাংলা, জিয়ে পাকিস্তান” বলে। অথচ ৭ মার্চের ভাষণকে আমরা জানি আমাদের স্বাধীনতার ঘোষিত সনদ হিসেবে। অন্যান্য আরো কয়েকটা জায়গায় এই কথাটা বলা আছে(শামসুর রাহমান, নির্মল সেনের জীবনীতে), তবে এটা কতটা অথেন্টিক, তা জানা যায় না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাষণটির সাথে ‘জিয়ে পাকিস্তান’ কোনভাবেই উচ্চারিত হতে পারে বলে মনে হয় না।”
এরকম কোনভাবেই উচ্চারিত হতে পারে বলে মনে হয় না না বলে আসুন দেখি হুমায়ূন আসলে কি বলেছিলেন। হুমায়ূন আহমেদ বইটির পূর্বকথা অংশে বলেছেন,
“জাস্টিস মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সাহেবের বিখ্যাত গ্রন্থ বাংলাদেশের তারিখ প্রথম সংস্করণে তিনি উল্লেখ করেছেন ভাষণের শেষে শেখ মুজিবুর রহমান বললেন, ‘জয় বাংলা। জিয়ে পাকিস্তান।’ দ্বিতীয় সংস্করণে তিনি ‘জিয়ে পাকিস্তান’ অংশটি বাদ দিলেন। কবি শামসুর রাহমানের লেখা আত্মজীবনী যা দৈনিক জনকণ্ঠে ‘কালের ধুলোয় লেখা’ শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে সেখানেও তিনি বলেছেন শেখ মুজিবুর রহমানের শেষ কথা ছিল ‘জিয়ে পাকিস্তান’।.আরো অনেকের কাছে আমি এ ধরনের শুনেছি, যারা আওয়ামী ভাব ধারার মানুষ। সমস্যা হলো আমি নিজে ৮ এবং ৯ মার্চের সমস্ত পত্রিকা খুঁজে এরকম কোনো তথ্য পাইনি। তাহলে একটি ভুল ধারণা কেন প্রবাহিত হচ্ছে?”
আসিফ মহিউদ্দিন আরো লিখেছেন,
“একজন সেক্টর কমান্ডারের নাম এসেছে তার “জোছনা এবং জননীর গল্পে”; অবাক হয়ে দেখতে হচ্ছে, শুধুমাত্র মেজর জিয়া এবং তার স্ত্রীর নাম। অন্য আরো অনেক জন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, তাদেরও স্ত্রী পুত্র ছিল। অথচ তারা হুমায়ুনের বইতে স্থান পাওয়ার মত যোগ্য হয়ে ওঠেন নি, কারণ মেজর জিয়ার নাম দেয়া হলে একটা রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকের সহানুভূতি পাওয়া যাবে, সেই দলের সমর্থকদের কাছে বইটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে।”
এই অংশটুকু পড়ে আমার খুব অবাক লেগেছে আসিফ মহিউদ্দিন এর মতো একজন প্রগতিশীল ব্লগার কিভাবে একজন সাহিত্যিকের সমালোচনা করতে বসে এধরনের তথ্য ব্যবহার করতে পারেন। সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি বইটিতে আরো সেক্টর কমান্ডারদের কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু লেখা অতিরিক্ত পরিমাণে বড় হয়ে যাবে দেখে বিস্তারিত লিখছি না। আরেকটু যোগ করে দেই হুমায়ূন আহমেদ বইয়ের “পরিশিষ্ট” অংশে খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি তালিকাও সংযোজন করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় আসিফ মহিউদ্দিন এও লিখেছেন,
শহীদ জননী জাহানারা ইমাম দেশদ্রোহিতার মামলা নিয়ে দিনের পর দিন ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ প্রসঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের অমৃতবচন,
“ওনাকে কেউ তো খুন করেনি। উনিতো ক্যান্সারে মারা গিয়েছেন। ওনাকে দেশদ্রোহী কখনোই বলা হয়নি। দেশদ্রোহী কথাটা ভুল ইনফরমেশন। তার বিরুদ্ধে কখনোই দেশদ্রোহীর মামলা হয়নি। তাছাড়া পুরো ব্যাপারটিই ছিল এত তুচ্ছ, আমরা জানি যে, পুরোটাই ছিল একটা সাজানো খেলা।… বাংলাদেশে মৌলবাদের সমস্যা- বড় কোনো সমস্যা এখনো হয়নি। জনগণ যদি ভোট দিয়ে মৌলবাদীদের নির্বাচন করে, তাহলে গণতান্ত্রিকভাবে কি তাদের বাদ দেওয়া যায়? হোক না তারা মৌলবাদী।”
এ অংশটুকু পড়ে আমার একটা জিনিস মনে পরে গেলো। গতবার চার দলীয় ঐক্যজোট ক্ষমতায় থাকা কালিন সময় বিটিভি তে একটা ভিডিও ক্লিপ প্রায় প্রচার করা হত; যেখানে দেখানো হতো শেখ হাসিনা বলছেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ বিরোধীদলে গেলেও কোনদিন হরতাল করবে না। কিন্তু এ ভাষণের আগে পরে ও যে কিছু অংশ ছিল তা স্বেচ্ছাচারিতার কবলে পরে বেমালুম উধাও হয়ে গিয়েছিল। এখানেও ব্যাপারটা অনেকটা ঐ রকম। আসুন মূল ঘটনাটি দেখি। ১৮ জুলাই, ২০০৮ সালে “দৈনিক সমকাল” কে দেয়া সাক্ষাৎকারে হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন,
“ওনাকে তো কেউ খুন করেনি। উনি তো ক্যান্সারে মারা গিয়েছেন। ওনাকে দেশদ্রোহী কখনোই বলা হয়নি। দেশদ্রোহী কথাটা ভুল ইনফরমেশন। তার বিরুদ্ধে কখনোই দেশদ্রোহীর মামলা করা হয়নি। তাছাড়া পুরো ব্যাপারটাই ছিল এত তুচ্ছ, আমরা জানি যে, পুরোটাই ছিল একটা সাজানো খেলা। এটা নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই। মৌলবাদীরা তো কতবার আমাকে মুরতাদ বলেছে, তাতে কি আমি মাথা ঘামিয়েছি কখনো? কখনো না।”
.
আসিফ মহিউদ্দিন লিখেছেন,
“মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় তরুণ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া হুমায়ুন আহমেদ সাহেব শর্ষিনার রাজাকার পীর সাহেবের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন”
এই মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় তরুণ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া হুমায়ুন আহমেদ সাহেব শর্ষিনার রাজাকার পীর সাহেবের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তথ্যটা কোথায় পেয়েছে আমার জানা নেই। আমার জানা মতে হুমায়ূনের পুলিশ অফিসার বাবাকে মেরে ফেলার পর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই ভাইকে যখন মিলিটারিরা খুঁজছে এমন অবস্থায় একদিন তাদের এক শুভাকাঙ্ক্ষী দুই ভাইকে শর্ষিনার রাজাকার পীর সাহেবের মাদ্রাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু পীর সাহেব তাদের আশ্রয় দেন নি।
.
আরো দেখুন আসিফ মহিউদ্দিন লিখেছেন,
“মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক তার সাহিত্য বা চলচিত্র একটু বুদ্ধিমান পাঠক বা দর্শক অনেকের মনেই দ্বিধা দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে। খুবই আশ্চর্যের সাথে লক্ষ্য করতে হয়, তার উপন্যাস বা চলচিত্রে ‘রাজাকার’ বলে কোন চরিত্র নেই।”
.
আবার আসিফ মহিউদ্দিনই তার লেখাটির প্রথম প্যারায় লিখেছেন,
“তার ‘তুই রাজাকার’ গালিটাতে বাঙালী শিখেছিল রাজাকার আলবদরদের ঘৃণা করার কথা, যে সময়ে রাজাকার আলবদরদের কথা বলতেও মানুষ ভয় শিউরে উঠতো।”
এই বিষয়টা আমার কাছে স্ববিরোধী মনে হয়েছে।
এরকম অনেক জায়গায় দেখলাম হুমায়ূন আহমেদের সমালোচনার নামে তাকে নিয়ে রঙ তামাশা করা হচ্ছে। গালি গালাজ ব্যবহার করা হচ্ছে দেদারছে যাদের অনেকেরই আবার ব্লগার এবং লেখক হিসেবে যথেষ্ট সুনাম আছে। এটা ঠিক কেউই সমালোচনার ঊর্ধ্বে না। বিশেষ করে হুমায়ূন আজাদ সম্পর্কে হুমায়ূন আহমেদের বক্তব্যের সমালোচনা করা হচ্ছে সব চেয়ে বেশি, সেখানে বলা হচ্ছে একজন লেখক হয়ে আরেকজন লেখক সম্পর্কে এরকম মন্তব্য খুবই আপত্তিকর। বিষয়টা যৌক্তিক। কিন্তু কথা হল আমিই আবার লেখক হয়ে যখন লেখন হুমায়ূন আহমেদের নগ্ন সমালোচনা এবং মিথ্যাচারিতা করছি তা কি আপত্তিকর নয়? একবার ভেবে দেখা দরকার। তাই আসুন আসিফ মহিউদ্দিন এর ঐ লেখা থেকেই বলি, “লেখার বিরুদ্ধে লেখনীকেই শক্তিশালী করতে হবে। যুক্তির বিপক্ষে যুক্তি আর কথার বিরুদ্ধে কথা।”
পার্থক্য একটাই হুমায়ূন আহমেদ এখোনো জীবিত, আমেরিকাতে বসে কইয়ের তেলে কই ভাজছেন।
আর হুমায়ূন আজাদ স্যারকে আমরা হারিয়েছি সময়ের আগে, তাও আবার দু:খ জনকভাবে, লজ্জাজনক ভাবে।
হুমায়ূন আহমেদ তার লেখার মাধ্যমে অনেক ভাবেই অনেক মানুষকে নিয়ে রসিকতা করেছেন। যেটা মটেও শোভন নয়। সেটা সবারই জানা । তার লেখায় মুক্তিযুদ্ধ সহ বিভিন্ন বিষয়ে বেশ বড় বড় কথা বললেও নিজে ব্যাক্তিগত জীবনে তেমন কোনো স্বাক্ষর রেখে যেতে পারেননি। এইতো গত বছর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়েও মিথ্যাচার করেছেন (কালের কন্ঠ ৮ মে, ২০১১)। এমন ভাবে লিখেছেন যেনো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সহপাঠি ছিলেন । কোথাও একবারের জন্যও তিনি শ্রদ্ধেয় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্ন নাম ব্যাবহারের প্রয়োজন বোধ করেনি।
একে নিয়ে এত সাফাই আবার। ধীক আমাদের!
‘কালের কন্ঠ’ এখানে লিংক :
@বন্য,
লিঙ্ক আসে নাই তো
@কাজী রহমান, দু:খিত।
@বন্যা আপা,
কালের কন্ঠের লিংকটা আসেনি। আমি খুঁজে পেলাম এখানে।
লেখাটা পত্রিকাতেই পড়েছিলাম এবং পড়ে একটা বিস্বাদ অনুভূতি হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবার্ষিকিতে রবীন্দ্রনাথের এ্যাটম বোমা বিষয়ক চিঠি ও উর্দু কথনের বর্ণনা দিয়ে তিনি কি বোঝাতে চেয়েছিলেন, তা বোধগম্য নয়। অনেকেই কিন্তু এর ভিতর তির্যক উদ্দেশ্য বের করে ফেলতে পারে। এমনকি দেখুন, লেখা শেষে রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুদিবস নিয়ে যে কৌতুকটি দেয়া হয়, তাতেও রবীন্দ্রনাথের অন্ধ ভক্তদের বিদ্রূপ করার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত পাওয়া যায়। মোট কথা, পুরো লেখাটাই তেতো লেগেছিল। আমি হুমায়ুন আহমেদের কয়েকটা বইয়ের অন্ধ ভক্ত হলেও হুমায়ুন আজাদকে নিয়ে তার অমার্জিত ও বিপদজনক মন্তব্য কখনোই মেনে নিতে পারিনি।
@কাজি মামুন,আপনার দেয়া লিঙ্ক অনুযায়ী কালের কন্ঠের লেখাটি পড়লাম। কোন মিথ্যাচার চোখে পড়ল না বা ধিক বলার মতো কিছু খুজে পেলাম না। বিদ্বেষে অন্ধ হওয়া বা যারে দেখতে নারি , তার চলন বেকা বোধহয় একেই বলে।
@কাজি মামুন, ধন্যবাদ , আপনার সাথে সহমত।
বন্য
@কাজি মামুন,
বন্য নামে যে কমেন্ট করছে, সে আপনার বন্যা আপা না। উনি বন্য!
আর হ্যা, রবীন্দ্রনাথকে হুমায়ূন আহমেদ অশ্রদ্ধা করেছেন বলে আমিও সেখানে দেখলাম না, তবে একবার কালের কন্ঠে একটা লেখা লিখেছিলেন যেটাতে বিশ্বপরিচয় নামটাও ভুল লিখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন ‘বিজ্ঞানের কথা’। এ নামে রবিঠাকুরের কোন বই নাই।
@অভিজিৎ,
!
তাই ত বলি! আমি ত ভড়কে গিয়েছিলাম। আমি সবসময় অভিজিত,ফরিদ,বন্যা বলে সম্বোধন করি ভাই আপু,সাহেব কিছুই বলি না। ভাবলুম ফেসে গেলুম নাকি?। স্বস্তি পেলুম এখন আবার।
@অভিজিৎদা,
আমার অমার্জনীয় ভুলের জন্য প্রথমেই করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমি ভয়ানক লজ্জিত। বন্যা আপার কাছেও আমি ক্ষমা-প্রার্থী। সঙ্গে ”বন্য” নামে যিনি কমেন্ট করেছেন, তার কাছেও।
অভিজিৎদা, পর্যবেক্ষণে ভিন্নতা থাকতেই পারে। আবার আমার ভুলও হতে পারে। তবে তখন কালের কণ্ঠের পাঠক হিসাবে হুমায়ুন আহমেদের লেখাটা প্রকাশের দিনই পড়ার সুযোগ হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবার্ষিকিতে আমি রবীন্দ্রনাথের অবদান নিয়ে কিছু প্রত্যাশা করছিলাম। এটা ঠিক যে, হুমায়ুন আহমেদের লেখাটায় সরাসরি কোন বিদ্রূপ করা হয়নি। কিন্তু তবু পুরো লেখাটা আমার কাছে তেতো লেগেছিল। এইটার জন্য আপনি আমাকে দোষ দিতে পারেন; কিন্তু আমি একবর্ণ বানিয়ে বলছি না। আমার সকালটা বিস্বাদ হয়ে গিয়েছিল। কেন হুমায়ুন আহমেদের লেখাটা পড়ে এমন হয়েছিল আমার, যদি তাতে আপত্তিকর কিছু নাই থাকে?
@বন্যা আপা,
একটা ভুল হয়ে গেল। আমিও আমার মন্তব্যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্ণ নাম ব্যবহার করতে ভুলে গিয়েছিলাম। সেজন্য দুঃখিত। তবে একটা কথা, প্রিয় মানুষের পূর্ণ নাম বলতে অনেকেই ভুলে যান, এমনকি সে মানুষ খ্যাতিমান হলেও; প্রিয়জনদের সাথে ‘ফর্মাল’ কিছু বোধহয় তেমন যায় না। 🙂 তবে হুমায়ুন আহমেদের এই লেখাটিতে রবীন্দ্রনাথকে সূক্ষ্ণ খোঁচা দেয়ার প্রবণতা রয়েছে, যদিও অন্যত্র উনাকেই ‘রবীন্দ্রনাথ’ বিষয়ে গদগদ থাকতে দেখা যায়। হুমায়ুন আহমেদের স্ববিরোধীতা নিয়েও অভিজিৎদা চাইলে ঢাউস একখানা আলোচনা লিখে ফেলতে পারবেন বলে মনে হয়।
@কাজি মামুন, এলোক কোথায় কী বলে তার ঠিক নেই 🙂
@কাজি মামুন,
বন্য কে বন্যা ধরে ছিচ্ছেন কেন? 🙂
@অভিজিৎ,
লুল হ্যাজ বিন আইডেন্টিফায়েড :lotpot: :lotpot: :lotpot: :lotpot:
@শুভজিৎ ভৌমিক,
:-X
@কাজি মামুন,
ঐটারে রবিগুরু কবীন্দ্রনাথ/নইলে বুইড়া রবি কইলেই সমস্যা কোন জায়গায় এইডাতো বুঝতাছি না। মানুষখান বুইরা আছিল, ঐটাও কয়ন যাইব না?
@সাইফুল ইসলাম,
আমি কি কোথাও লিখছি যে, তাকে এইটা বলা যাবে না বা ঐটা বলা যাবে না? আমি তো বরং বললাম যে, আপন মানুষকে সব বলা যায়! তবে ‘বন্য’-এর সাথে আমি এখনো একমত; সেদিন হুমায়ুন আহমেদের লেখাটা পড়ে আমার মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল।
ব্যাপারটা আসলে ব্যক্তিগত শ্রদ্ধার উপর,নাস্তিকেরা যখন ধর্মকে ব্যঙ্গ করে তখন আস্তিকদের লাগে।ড.আহমদ শরীফ,সিরাজুল ইসলাম চৌধুরি সর্বজনশ্রদ্ধেয় ব্যক্তি,আবার অনেকের কাছে জাকির নায়েক 😉
আহমদ শরীফকে কারো পছন্দ না-ই হতে পারে,তাই বলে কেউ যদি তাঁর সমালোচনা করে,তাকে ধর-মার-কাট করতে হবে,এটা কেমন কথা?আর হুমায়ুন আহমেদ সরাসরি তাঁদের মূর্খ বলেননি,নিজেকে জড়িয়ে বলেছেন।
আমার পছন্দের মানুষের সমালোচনা করছ,তুমি খ্রাপ।
সহনশীলতা এতটুকু হলে মৌলবাদীর সাথে আমার পার্থক্য কোথায়?
আরো সেক্টর কমান্ডারদের কথা আছে,কিন্তু মেজর জিয়ার কথা স্পেশালি এসেছে।একাধিকবার,আলাদা অনুচ্ছেদে। মুক্তিযুদ্ধে বাকি দশজন সেক্টর কমান্ডারের অবদান মেজর জিয়ার চেয়ে কোন অংশে কম নয়।তাই মেজর জিয়ার কথা বললে ‘বিশেষ মহলের’ প্রতি আনুগত্যই প্রকাশ পায় না কী!
আর এটা ঠিক,আমরা হুজুগে জাতিতো, কোন কিছু পেলে মাথায় তুলে নাচতে যেমন দেরি করিনা,আবার ছুঁড়তেও চিন্তা করিনা।
যাহোক,হুমায়ূন আহমেদের জন্য শুভকামনা।
জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক। 🙂
হ্যা, আমিও কমেন্ট করেছিলাম বোধ হয়। বলেছিলাম আমিও কিন্তু হুমায়ুন আহমেদের গদ্যরীতির অসম্ভব ভক্ত। কিন্তু তার মানে এইটা তো না যে তার কোন কিছু সমালোচনা করা যাবে না। জাহানারা ইমামের মত ব্যক্তিত্বকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছিলেন। এমনকি তুহিন জাহানারা ইমামকে নিয়ে পূর্নাঙ্গ কোটেশনটি ব্যবহার করার পরেও আমার মত বদলাচ্ছে না। উনি বলেছেন,
দেশদ্রোহী কথাটা ভুল ইনফরমেশন। তার বিরুদ্ধে কখনোই দেশদ্রোহীর মামলা করা হয়নি। তাছাড়া পুরো ব্যাপারটাই ছিল এত তুচ্ছ, আমরা জানি যে, পুরোটাই ছিল একটা সাজানো খেলা।
জাহানারা ইমামের দেশোদ্রোহীর ব্যাপারটা তুচ্ছ? সাজানো খেলা?
শুধু তাই নয়, আবার হুমায়ুন আজাদকে দোষ দিয়েছেন তার লেখার জন্যই। তার দৃষ্টিতে বইটা ছিলো কুৎসিৎ। এর মানে কি কেউ কুৎসিত বই লিখলে তাকে মরতে হবে? লেখকের স্বাধীনতা এখানে কোথায়? শোনেন, হুমায়ুন আহমেদের নাটক, গল্প কিংবা লেখার ভক্ত আমরা কমবেশি সবাই। কিন্তু তার সমস্যাগুলো বস্তুনিষ্ঠভাবে তুলে ধরা কোন অপরাধ নয়। এটা আমাদের এগিয়ে যাবার পাথেয়ই।
সেজান মাহমুদের এই সাক্ষাৎকারের লিঙ্কটা এ প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ
http://www.facebook.com/note.php?note_id=10150207591399769
@অভিজিৎ, আমি আসলে মুক্ত মনার একজন পাঠক। তো আসিফ মহিউদ্দীন লেখাটা মুক্তমনায় পড়ে আমি লেখাটা লিখি কিন্তু মুক্তমনায় দিতে দেরী হয়ে যায়। আর দেয়ার পরে মুক্ত মনাও কিছুটা দেরী করে পাবলিশ করল। আমি ভেবেছিলাম হয়তো পাবলিশ করবে না। তাই তখন ফেসবুকে নোট আকারে দিয়ে দিয়েছিলাম এবং টা নিয়ে অনেক তর্ক বিতর্ক ও হয়ে গেছে। একই জিনিস আবার উঠে আসাটা বিব্রতকর। ধন্যবাদ।
এই বিষয়ে ইতিমধ্যে ফেসবুকে দীর্ঘ বিতর্ক হয়ে যাবার পরে আবার একই জিনিস এখানে লিখতে পারছি না। ফেসবুকের লিঙ্কটা দিয়ে যাচ্ছিঃ http://tinyurl.com/75nbzcw
@আসিফ মহিউদ্দীন, আসলে এখানে একটা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়ে গেছে। আমি আসলে মুক্ত মনার একজন পাঠক। তো আপনার লেখাটা মুক্তমনায় পড়ে আমি লেখাটা লিখি কিন্তু মুক্তমনায় দিতে দেরী হয়ে যায়। আর দেয়ার পরে মুক্ত মনাও কিছুটা দেরী করে পাবলিশ করল। আমি ভেবেছিলাম হয়তো পাবলিশ করবে না। তাই তখন ফেসবুকে নোট আকারে দিয়ে দিয়েছিলাম। এই লেখা নিয়ে যথেষ্ট তর্ক হয়েছে আমি ও চাই না আর তর্ক হোক। আপনাকে ধন্যবাদ ফেসবুকের লিঙ্কটা দিয়ে দেয়ার জন্য। পাঠক প্রয়োজন মনে করলে আপনার বিবৃতি ওখান থেকে পড়ে নিবে।
(Y) (Y)
চমৎকার হয়েছে। হু.আর বিরুদ্ধে একমাত্র যৌক্তিক কিছু পয়েন্ট তুলেছিলেন আসিফ। ব্লগ গুলোতে এই নিয়ে যত লেখা এসেছে তার বেশির ভাগই ব্যক্তি আক্রমন।
আমি ভেবেছিলাম আসিফ এর ব্লগের সব তথ্যই সঠিক। একজন ব্লগার নিশ্চিত না হয়েই তথ্য দেবে এটা প্রথমে বিশ্বাস হয়নি।
ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার এই লেখাটি দেয়ার জন্য। (F)
@আসরাফ, আপনাকে ও ধন্যবাদ।