শুরু হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত বইমেলা ২০১২ গত ১ ফেব্রুয়ারী থেকে। ২০১১ আমার বিরক্তিকর অভিজ্ঞতার কারনে এবার বইমেলায় প্রথম দিন আসিনি। সেই দিন মন্ত্রী-মিনিস্টারদের ভীড়ে পিষ্ট হতে চাইনি। তাই প্রথম দিন গেলাম না মেলায়। তাছাড়া এইবার মেলায় কেমন এক দলছুট-দলছুট ভাব। গেলবার মেলায় আমাদের গীতা’দি এবং প্রধান উদ্যেগী মামুন ভাই ছিলেন। এইবার গীতা’দি কিছু ব্যস্ত আছেন তাঁর কর্মক্ষেত্র নিয়ে। আগামী কাল কথা দিয়েছেন যাবেন বইমেলায়। সুতরাং আমার ও যাবার সম্ভবনা আছে।
আজ মেলার ত্রিতীয় দিন। আগেই শ্রদ্ধেয় রনদীপম দাদার সাথে কথা হয়েছিল তিনি যাবেন। আমিও যাবো।
অতএব গেলাম। অনেক মানুষের ভীড় ঠেলে সাতরাতে সাতরাতে হাঁপাতে হাঁপাতে উপস্থিত হলাম। এ দিকে সেই সূদুর রাজশাহী থেকে মুজাফফর আমার খবর নিচ্ছে। আমি একা যাচ্ছি। কেমন লাগবে। ও জানে আমি বেশীক্ষণ হাটতে পারিনা। অবাক হলাম সত্যি অবাক হলাম,
এইটুকূ ছেলে আমার মত সাধারণ মানুষের কত খেয়াল রাখল। ও তার বন্ধু মেহেদি’কে বলে দিয়েছে যেনো অবশ্যই আমার খেয়াল রাখে। এবং বসবার ব্যবস্থা করে দেয়। আজকাল এমন মানুষ পাওয়া সত্যি দুস্কর।
ভীড় ঠেলতে ঠেলতে মামুন ভাইকে খুব মনে পড়ছিল। গেলোবার তিনি ছিলেন মধ্যমনি। আজ তিনি উপস্থিত নেই।
ইচ্ছে থাকা সত্বেও বাংলাদেশ এসেও তড়ি ঘড়ি চলে যেতে হল। শীত শীত ভাবটা মেলায় গিয়ে কিছুটা স্তিমিত হয়ে গেল। হয়তো বা ভীড়ের কারনে।
রনদীপমদার সাথে দেখা হবার পরে এগুলাম আমাদের প্রিয় শুদ্ধস্বর প্রকাশনীতে যাবো বলে।
এইবার শুদ্ধস্বর প্রকাশনী বেশ বড় পরিসরে জায়গা করে নিয়েছে। চমৎকার সাজিয়েছে।
সামনেই চোখে পড়ল মুক্তমনার প্রিয় লেখক অভিজিত আর রায়হান আবীরের লেখা “অবিশ্বাসের দর্শণ” বইটা।
সুন্দর ঝক-ঝকে মলাটে সাজানো। বেশ ভালো লাগলো।
শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর টুটুল ভাইয়ের সাথে কুশল বিনিময়ের পরে গেলাম “লিটিল মাগাজিন” চত্তরে।
একটা সু-খবর আছে। আমাদের প্রিয় মুজাফফর একটা স্টল বরাদ্দ পেয়ছে বাংলা একাডেমীর তরফ থেকে। লিটিল মায়াজিন চত্তরে উষ্ণ আহবান পেলাম মেহেদির কাছ থেকে। মেহেদি শাশ্বতিকীর ঢাকার পরিচালক(ভুল হলে ক্ষমা চেয়ে নিলাম) । ওখানে পরিচয় হল মিষ্ট ভাষী মেহেদির বান্ধবীর সাথে।
অতঃপর রণদীপম দা, মেহেদি, আর মুজাফফরের ভাই সহ গেলাম চা খেতে। একটা বিষয় লক্ষনীয়। মেলা বেশ ভালোই জমে ঊঠেছে। বোধ করি ঢাকার মানুষের মনোরঞ্জনের তেমন স্থান নাই বললে চলে। এ ছাড়াও সারা বছর
সাহিত্যঅনূরাগীরা এই বিশেষ মেলা ফেব্রুয়ারীর মেলার অপেক্ষায় বসে থাকে। তাদের জন্যে ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বইমেলা আকর্ষনীয় হবে বৈকি।
নিজকে ভীষন একা লাগছিল। ভালো লাগার সাথে এক নিঃসঙ্গতা বোধ কাজ করছিল। মুক্তমনার আর কোনো সদস্যকে দেখতে পেলাম না। তারা কেউ গিয়েছিলেন কিনা জানিনা। আগে তো শুদ্ধস্বরের সামনেই সবাই জমায়েত হতাম। এইবার অনেকের অনুপস্থিতি চোখে পড়ার মত।
ঘন্টা দুয়েকের মত ঘোরা-ফেরা করে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সন্ধ্যা হবার আগেই ফিরে এলাম বাড়িতে।
এইভাবে প্রথম দিনের বইমেলা দেখা শেষ করলাম।
আগামীদিন যাবার ইচ্ছে আছে। এর পরে কী হয় ধারাবাহিক ভাবে জানিয়ে যাবো মুক্তমনার পাঠকরা যদি জানতে ইচ্ছুক হন। ছবি পরে আপলোড করা হবে। আমার কাছে ক্যামেরা ছিলনা। রণদীপমদার কাছে ছিল। তিনি আবার আগামী কাল রওয়ানা দিবেন দেশের বাড়ির দিকে। এক বিবাহ অনুষ্ঠান আছে। দিন দশেক পরে আবার ফিরবেন বলেছেন।
এইভাবে ম্যাড়-মেড়ে মন নিয়ে পড়ন্ত সূর্য হেলে পড়ার আগেই বাড়ির দিকে পা বাড়ালাম।