হে মেয়ে, তুমি হাতে পরো শুভ্র শাখা
সিঁথিতে তোমার রক্তাভ সিঁদুর আঁকা।
তুমি পরিণয়ের চিহ্ন বহনকারী
গর্বিতা বিবাহিতা নারী।

তোমার জীবনের দোসর
বিবাহিত পতি পরমেশ্বর।
তবে কোথায় তার পরিণয়ের চিহ্ন
কোথায় শাখা-সিঁদুর!

দুজনার বিবাহের বন্ধন
পতি-পত্নী দুজনার জীবন
মিলে হয় একটি জীবন।
একজনের অঙ্গে অঙ্গে,
কাজে কর্মে চিহ্নের ছড়াছড়ি।
চিহ্নহীন কেন আরেকজন?

তুমি যখন স্বামীর দীর্ঘায়ুর তরে
একাদশী পালন কর অনাহারে
তখন স্বামীজি অতি আনন্দেই
কাটান দিন আহারে-বিহারে।

তুমি কেন চারজন অথবা
বহুজনের একজন,
কেন তোমার পরমপতি
চারজন বা বহুজনের
একচ্ছত্র গর্বিত অধিপতি!
চার পত্নীতেও যদি তার না ভরে মন
অপূর্ণ থাকে রমণ,
তার তরে আরো আছে নেয়ামত
নূরানি রহমত
অগণিত দাসী ও যুদ্ধের গণিমত।
তাতে তোমার কী-ইবা আছে মতামত?

নীরবে নিঃশব্দে তুমি শুধু সেবা করে যাও
নিজে না খেয়ে সবারে খাওয়াও।
পরের তরে নিজেরে অকাতরে
উৎসর্গ করে দাও।
কতটুকু স্বীকৃতি, কতটুকু প্রতিদান
তুমি তার পাও?

তোমায় আটা-ময়দার মত
বস্তাবন্দি করা হয়।
যাতে তোমার প্রতি পরপুরুষের
প্রলুব্ধ দৃষ্টি না যায়।
ওরা কেন তবে বস্তাবন্দি নয়
পরনারীর কুদৃষ্টি যদি
কভু ওদের পরে প’ড়ে যায়!

পত্নীটি বিধবা হলে তাকে
ইদ্দত পালন করতে হয় নির্ধারিত দিনের।
অথবা মাথা ন্যাড়া ক’রে
বিদঘুটে সাজতে হয়।
রঙিন বস্ত্র পরিহার ক’রে
শুভ্রবসনা সাজতে হয় আজীবন,
একাহারী হতে হয় আমরণ,
বইতে হয় একটি বিরস বিস্বাদ জীবন।
কিন্তু পতিজি যখন বিপত্নীক হন
তিনি কি এসব অদ্ভুত কাণ্ড করেন?

পরিণয় ও বৈধব্যের সকল বিড়ম্বিত চিহ্ন
কেবল নারীকে কেন একা বহন করতে হয়,
যার সাথে নারীর পরিণয় ও বৈধব্য ঘটে
তাকে কেন নয়?