শুধু বাতাস আর বাতাস চারিদিকে, তারপরেও প্রচন্ড কষ্টের উপচে পড়া ব্যথা… মনে হচ্ছে পৃথিবীর সব বোঝা যেন শুধুই আমার বুকের উপর চেপে বসেছে। গভীর রাতের কোন এক সময়ে ঘুম জড়ানো চোখে বুকের উপর হাত বুলোতে প্রতি রাতের মতনই ডান কাধের নিচে গভীর ঘুমে হারিয়ে যাওয়া বাচ্চাটাকে খুজে পাওয়া… এত ব্যথার মাঝেও ঠোটের কোনে বাকা একটা হাসি নিয়ে ওকে দুহাতের মাঝখানে নিতে নিতে আবার ঘুমের রাজ্যে উথাল পাথাল ঢেউ।
ভোরের মিষ্টি আলোয় চোখ মেলতেই দেখি এলোমেলো হয়ে শুয়ে থাকা পিচ্চি একটা বাবু। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকা এই অদ্ভুত সুন্দর জীবনের দিকে, তুমি, আমার পূর্নতা, বীভৎস নগ্ন এই পৃথিবীতে সৎ হয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধের সৈনিক হবার প্রেরনা। নিজের স্বপ্নগুলোকে আরো গাড় করে ভাবার শক্তি তুমি, তোমার কপালে চুমি একে আমার দিন শুরু করা।
আস্তে করে বিছানা ছেড়ে উঠে একগ্লাস দুধ নিয়ে আবার ফিরে আসা, আমার কোলে মাথাটা উঠিয়ে গালে হাত বুলাতে বুলাতে আলতো করে ঘুম ভাঙানো, “ বাবুজান, ও আমার বাবুজান, উঠতে হবে যে এখন”। দুহাতে জড়িয়ে কোলে মাথা ঘষতে ঘষতে সে কি তার আকুতি!! “আরেকটু ঘুমাবো বাবি, অল্প একটু”। সুখের জ্বালায় অস্থির আমি কখন যে নিজের চোখ ভেজাই টেরই পাই না, কত গড়িমসি যে দুধটুকুন খেতে! অদ্ভুত এক তৃপ্তির লিলুয়া হাওয়া আমার চারিপাশে, গালে আদর করি চুলে হাত বুলাই, তাও ভাঙতে চায় না তার ঘুম।
বাস্তবতার যুদ্ধে আবার ও আদরের জয়, দিনের শুরুটা কোলে না নিলে কি চলে! মুখ ধুইয়ে দেয়া, গোসলের পর সারা গায়ে পাউডার ছড়িয়ে আদর করতে করতে কাপড় পড়িয়ে দেয়া। একটু খুনসুটি করে ছেড়ে দেই তোমাকে তোমার মতন নতূন একটা দিন কাটাতে….
স্বপ্নটা এতটাই সুন্দর ছিল যে আমি সহ্য করতে পারিনি তা ছাড়া থাকতে, স্বপ্ন জেনেও না, কোনোদিন হবেনা জেনেও না। একটা ছোট্ট জ়ান যখন কাদতো, তখন আমি নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারতাম না, আমি দূরে থাকতে চাইতাম না জ়েনেও যে কান্না থামানোর পর বাচ্চাটা আর আমার দিকে ফিরেও তাকাবে না।
ক্ষমা কর আমাকে, আমি বুঝতে পারিনি তুমি আমার সেই বাবু নও, ক্ষমা কর আমাকে আমি মানতে চাইনি তুমি তা হতে চাওনা। ক্ষমা কর, আমার আদর করার অধিকার চাইবার ধৃষ্টতার জন্য। খেলনা আমি কি আর সব হতে পারি!
আমি যোগ্য নই তোমার, বারবার, প্রতিটা মূহুর্ত বুঝানোর পরও আমি বুঝতে চাইনি তা, ক্ষমা কর আমাকে। আমি বুঝতে পারিনা ডাকলে কিভাবে সাড়া না দিয়ে থাকা যায় এটা জ়েনেও যে চোখের পানি আমার হাতে মুছে মুখ ঘষা হবে আরেকজ়নের বুকে।
আমি আর অধিকার চাইতে আসব না কোনো দিন, তুমি ভয় পেওনা। মুখ ফুটে তেমন কিছুই চাওনি আমার কাছে। আমায় দরকার বলেছিলে, ছিলাম, শুধু তোমার জন্যই ছিলাম, সবার অগোচরেই ছিলাম। আজ় যখন চিৎকার করে মুক্তি চেয়েছ, আমি কি আর না দিয়ে পারি!!!!! আমি তোমার কিছুই না, তবে তুমিই আমার সব, বাবি…….
এমন অসাধারণ আর সপ্নাতুর ভাষার ব্যবহার লেখাটিকে অন্য এক মাত্রা দিয়েছে! পাশাপাশি, লেখাটার হাহাকারও সমানভাবে হৃদয়কে ছুঁয়ে গেছে! লেখকে অসংখ্য ধন্যবাদ!
মূল ঘটনা টা কি?
কষ্টটা অব্যাক্ত ই রয়ে গেছে। এ কস্ট সঠিকভাবে প্রকাশ করতে লেখককে মনে হয় আরো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।