আমরা সবাই কোন না কোন পরিবার থেকেই এসেছি। বাবা মা আমাদের জন্ম দিয়েছেন। আমাদের ভরণপোষণ করেন একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। আমরা সেই পরিবারে থেকে পড়ালেখার সূচনা করি। আবার আমরা বড় হয়ে বিয়ে করে পরিবার গঠন করি। এই প্রক্রিয়া যুগ যুগ ধরে চলে এসেছে।
পরিবারের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি না। কারন সেই সুবিধা অসুবিধা আমরা বিভিন্ন সামাজিক বই থেকেই পাই যারা পড়ালেখা করেছি স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে তারা কোন না কোন ক্লাসের বইয়েই পেয়েছি। তাই সেটা আলোচনার বিষয়কে উহ্য রাখা হয়েছে।
আমাদের দেশে সাধারণত যৌথ পরিবারকেই সাপোর্ট করে। এর কারন ছেলে মেয়েরা পরিবারের বাইরে কোন সিন্ধান্ত নিতে পারে না বা চায় না, এবং এক পরিবার বা গোত্রের সম্পদ অন্য গোত্র বা পরিবারের কাছে না যায়। সে জন্য বিয়ের বিষয় গুলো অনেক কঠোর ভাবে মানা হয়। এজন্য পারিবারিক বিয়েটাতে আত্মীয়-স্বজনদের সম্মতি থাকে এতে বর বা কনের অবস্থা বা শিক্ষাগত যোগ্যতা যেমনি হোক। হা আমরা হয়তো বলতে পারি যারা শহরে আছি বা কলেজ ইউনিভার্সিটে পড়ালেখা করে বড় হয়েছি তারা দুই একজন প্রেম করে বিয়ে করতেছি, কিন্তু সেই বিয়েতে আদৌ পারিবারিক সমর্থন থাকে না।
আমরা পড়ালেখা করে পরিবর্তন হয়েছি, এবং করেছি অনেক কিছুই কিন্তু সমাজের এই বিষয়টিকে আমরা আজো পরিবর্তন করতে পারিনি।
আমরা পরিবারের থেকে বের হতে পারি নি। এখনো শিক্ষিত ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা পরিবারের কথা না শুনলে পরিবার কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হন। এর ফলে পরিবারের বাইরে কোন ছেলে মেয়ে সিন্ধান্ত নিতে চান না। কিন্তু মানুষের বৈশিষ্ট্য আদৌ এমন না। সে জন্ম নেয় স্বাধীন ভাবে, কিন্তু জন্মের পর পরই বন্দি হয়ে যায় পরিবারতন্ত্রে।
মানুষ যদি তার নিজের স্বভাবকে প্রতিহত করতে চায়, এবং তা করতে গিয়ে নিজেই বিপদে পড়ে মানসিক নিঃপেষনে।
আমরা একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পরিবারের কাছে ভরণ পোষনের দাবি করতে পারি। কারন আমরা কেহই নিজের ইচ্ছায় জন্ম নেই না। আমাদেরকে বাবা মায়েরা তাদের নিজেদের স্বার্থে জন্ম দেয় (বিশেষ করে যৌনস্বার্থে)। এটা তো আমাদের দোষ হতে পারে না। বাবা-মায়েরা যৌন-স্বাদ পেতে গিয়ে যদি আমাদের জন্ম দেন, তো এই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ভরণ পোষণের দায়িত্ব তাদেরই। কিন্তু এই ভরণ-পোষণ অজুহাতে তারা ছেলে-মেয়ের উপর একটা কর্তৃত্বারোপ করেন। সেটা উচিত না। কারন এই সন্তান তো নিজে থেকেই আসেনি, এসেছে বাবা-মায়েদের কর্মের ফলে, এটার অন্য কোন নিয়ন্তা থাকতে পারে না। নিয়ন্তা বলতে বুঝিয়েছি ঈশ্বরের হাত। বাবা-মায়ের যৌনকর্ম ব্যতিত আজ পর্যন্ত এমন কোন সন্তান পৃথিবীতে জন্ম নেয় নি, আর নিতেও পারে না এটা আমরা সবাই বুঝি।
এখন কথা হলো বাবা মায়েরা কেন ছেলে সন্তানের প্রতি ডিপেন্ডেবল হবে? এর কারণ খুজে পাচ্ছি না। তারা যখন ইয়াং ছিল তখন কি তারা বুঝে নি যে তারা কত দিন পর্যন্ত বাঁচবে বা বাঁচার আশা করে সেই অনুযায়ী তারা তাদের কর্ম করবেন, যাতে খাওয়া পরার কষ্ট না হয়। যদি তারা নিজের ভরণ-পোষণ না করতে পারেন, তাহলে কেনই বা সন্তান নেন??? বিয়ে করলেই কি সন্তান নিতেই হবে এমন কোন কি আইন আছে? তবে সন্তান নিলে ভরণ-পোষণের দায়িত্ব তাদেরই। তবে এখানে ধর্ম ভুল ব্যাখা দেন। বিয়ে করলে সন্তান নেওয়া বাধ্যবাধকতার ব্যাপারটা। ধর্ম একটা দর্শন মাত্র। এটা বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে, এটা কখনোই বাস্তব হতে পারে না। কারন সব বিশ্বাসই বাস্তব হতে পারে না। এটা আমরা সবাই জানি।
আসল কথায় আসি, আমাদের দেশে ২১ ও ১৮ বছর বয়সে একজন ছেলে-মেয়েকে সাবালক ভাবা হয়। অবশ্য এই নির্দিষ্ট বয়সে সবাই যে সাবালক হয় তা নয়, অনেকে এই বয়সের আগেই, অনেকে আরো অনেক পরে। যাই হোক কথা হলো সাবালকত্ব নিয়ে। আমরা যখন সাবালক হই, বুঝতে শিখি বাস্তবতাকে, কর্মে নিযুক্ত হই, তখনি আমরা বিয়ে করার সাধারণত সিন্ধান্ত নেই। যারা নিজে দুর্বল, পরিবারের কাছে তারা পরিবারকে চাপ দেয় বিয়ে করার জন্য, আর যারা নিজেরাই ভাবে আমার সিন্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব আমার নিজের, কারন জীবনটা তারই এবং ভাল-মন্দ এবং সুখ স্বাচ্ছন্দের ব্যাপার সে নিজে বুঝে সে পরিবারের কথার তোয়াক্কা না করেই বিয়ে নামক কাজটা করে নিজের পছন্দের পাত্র-পাত্রিকে।
কিন্তু কথা বল এই ধরণের সাহসী ছেলে-মেয়ের সংখ্যা কত জন??? খুবই সামান্য। খুব সামান্য এই জন্য যে আমারা যাদের দেখি শুধু তাদের উপর বিচার করে বলতেছি না, টোটাল জনসংখ্যার কথা বলতেছি।
আবার যারা এই ধরণের সিন্ধান্ত নেন, তারা পরিবার কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হন। সেটা হয় ছেলের পরিবার থেকে, নয়তো মেয়ের পরিবার থেকে। এই নির্যাতনে অনেকে টিকতেও পারেন না। যারা টিকে তাদের মধ্যে যারা পরিবারের মধ্যে থাকে তারা জীবনভর নির্যাতনের স্বীকার হন। জীবনভর এই কারনে বলতেছি যে, আমার শোনা এক হিন্দু ভদ্রমহিলার কাছ থেকে গত পরশু যে এক বয়স্ক বুড়ি ছিল শাঁখা সিঁদুর পরা, তাই উনি নমস্কার করতে যান, কিন্তু কিছুক্ষন পরে উনি শুনেন যে এই বয়স্ক মহিলার মা বাবা মুসলিম, তখন যে নমস্কারটা আন্তরিকভাবে দিয়েছিল, তা ফিরার সময় ফিরিয়ে নেন। এটাও তো একধরণের নির্যাতন। ফলে এই কারনে নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি আজকের শিক্ষিত সমাজ বেশী পছন্দ করে, বিশেষ করে যারা নিজের প্রতি নির্ভরশীল।
আমাদের মুক্তমনারা যদি তাদের পরিবারে ফেরত যায়, যদি সেই পরিবার মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী না হয়, তাহলে তাকে আর মুক্তচিন্তা করতে হবে না যদি না সে নিজেই তার পরিবারের কর্তা হয়।
মুক্তমনারা অনেকে সাহসী তারা নিজের সিন্ধান্ত নিজেই নিতে পারে, তাদের কারো উপর নির্ভরশীল হতে হয় না। যারা এখন সংশয়ের মধ্যে আছে, তারা কিছুটা হলেও পরিবারের উপর নির্ভরশীল তাদের দ্বারা সাহসীকতার কাজ হতেও পারে, আবার নাও পারে। কারন তারা ঈশ্বরকে স্বীকার করেন পরিবারের চাপে, আবার অস্বীকার করেন মুক্তমনা বন্ধুর যুক্তির চাপে। এই দ্বন্দ্বে থাকার পর সে যদি নিজের প্রতি নির্ভরশীল না হন, তাহলে শেষমেষ ঈশ্বর আছেন, ধর্ম নেই, এই ধরনের মানসিকতা নিয়ে পরিবারে ফেরত যান।
আমরা বলি যে নিজের উপর আস্থা না হলে মুক্তমনা বা নাস্তিক হতে পারে না। কিন্তু আমাদের পরিবার যদি মুক্তমনা না হয়, তাহলে কি সে নিধার্মিক হিসাবে বিয়ে করতে পারবে?? কখনোই না। আর্থিক দিকটা কম-বেশী আমরা সবাই ভাবি, এই ভাবনার উপর চলে আমাদের স্বাধীন বা পরাধীন হওয়া। আজো যারা পড়ালেখার সাথে আছেন, এবং কর্ম সংস্থানেই নেই, তারা যদি সত্যিকার অর্থেই সাহসী না তাহলে অন্তত তারা মুক্তমনা হতে পারেন না। কারন এই মুক্তিচিন্তা প্রতিফলিত করতে হবে পরিবারের বাইরে এসে। তাই এদেরকে সাহসী বলি।
যৌথপরিবার বা পরিবার থেকে অনেকটা দুর্নীতির সূচনা হয়। হয়তো দূর্নীতির একটা কারন হতে পারে। এই যৌথ/পরিবার থেকে আমরা একটা জিনিস পাই সেটা সম্বিলিত ব্যক্তিস্বার্থ থেকে যৌথ-পারিবারিকস্বার্থ। এই যৌথ-পারিবারিকস্বার্থ সার্বিকভাবে একটা রাষ্ট্রের মানবতার উন্নয়ন সাধিত হয় না। অনেকটা গ্লোবালাইজেশন এর মত। একদল না খেয়ে মরবে আরেক দল খেয়ে মরবে। যাই হোক, কোন পরিবারে একজন যদি সরকারী বড় কোন অফিসার, তাহলে দেখা যায় ঐ পরিবারের বা গোষ্ঠির মধ্যে অন্যরা তেমন কিছু করার যোগ্যতা থাক বা না থাক ঐ একজনের জোড়ে সবাই অযোগ্যরা যোগ্যতম আসনে বসে পরে। এতে পরিবারের প্রতি নির্ভরশীলতা বাড়ে তাদের। এভাবে অযোগ্যরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত আছেন, এরা আছেন বলে নিজেরা যেমন পারিবারিক সুত্রে চাকরী পাওয়া (মামা-চাচা) তেমনি এদের পরবর্তী সন্তানদেরও একইভাবে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। তবে সব যোগ্যরাই যে চাকরী পাচ্ছেন না, তা নয়, তারা সংখ্যা নগণ্য। ফলে, তারা কোন অফিসে বা দপ্তরে কোন ভাল সিন্ধান্ত নিতে পারে না সার্বিকভাবে। ফলে রাষ্ট্রের তথা সার্বিক জনগণের ক্ষতি হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে মুক্তচিন্তার।
এভাবে যারা গোত্রের বা পরিবারে আবদ্ধ থাকে তাদের পক্ষে পরিবার থেকে বের হয়ে এসে মুক্তমনা হওয়াতে তাদের অনেকটা নির্যাতন এর স্বীকার হতে হয়।
যদি কর্মসংস্থানের এই সিস্টেমটা না থাকতো আজ মুক্তমনা এবং মুক্তচিন্তকদের জয়জয়কার অবস্থা থাকতো। দেশের তথা সমাজের পরিবর্তন হতে সময় লাগতো না। ফলে কুসংস্কারও দুর হতো ।
আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই প্রথম আলো পত্রিকার পাতা উল্টাতে উল্টাতে যে নিউজটা পেলাম তা পড়তে পারেন এই লিংক-এ। এখানে যেটা প্রকাশ পেয়েছে তার হেডলাইনটা “পারিবারিক নির্যাতনে শিকার এক ছেলে”
আমরা এতদিন নারী ও শিশু নির্যাতন এর কথাই জেনেছি। ছেলে নির্যাতন যে আগে থেকে হয় না, তা নয়। তবে সে খবর গুলো প্রকাশ হয় না। তবে আমি নিজেও কম শিকার হচ্ছি না। যারা মুক্তমনা তারা কম বেশী সব ছেলেরা পারিবারিক নির্যাতনে শিকার হচ্ছি। যেমন কিছুদিন আগে ব্রাত্য সাজ হয়েছিল, তবে তার বিপদ এখনো কাটেনি। সে পরিবারের সাথে সমঝোতা করে চলতেছে।
আমার মনে হয়েছে আপনি বাবা-মায়ের প্রতি যে মোনভাব পোষন করে আছেন বা তাঁদের বিরুদ্ধে যে অবস্থান নিয়েছেন সেটাকে একটা যোক্তিক রুপ-রেখা দিয়ে নিজের অবস্থানকে জাস্টিফাই করার প্রচেস্টা স্বরুপ এই লেখাটি লিখেছেন। যেমন আপনার মতে, মা-বাবা তাদের নিজের ইচ্ছায় সন্তান জন্ম দেন, আর একবার যখন জন্ম দিয়েই ফেলেন তখন সন্তানকে লালন-পালন করার দায়িত্ব তাদেরকে পালন করে যেতে হয়। কিন্ত সেই ভুমিকা পালন করার সুবাদে কখনও তারা জোর করে স্বার্থপরের মতো সন্তানের উপর সন্তানের ইচ্ছার বিরুদ্ধ মতামতগুলোকে চাপিয়ে দিয়ে সন্তানের জীবন দুর্বিষহ করে ফেলেন। মা-বাবাকে আমরা সবসময় নিঃস্বার্থের প্রতিক হিসাবেই জানি, কিন্তু পরিস্থিতি আপনাকে উল্টো ভাবাতে সাহায্য করছে।
ছেলে বা মেয়ে যে কেউ পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হতে পারে। তবে আমাদের সমাজের প্রেক্ষাপটে পরিবারে ছেলেদের ভুমিকা মেয়েদের চেয়ে বেশী জোরদার বলে ছেলেদের এসব মোকাবেলায় মেয়েদের মতো এতোটা দুর্যোগ সামাল দিতে হয়না যেটা আপনার ক্ষেত্রে হয়েছে। আপনি আপনার মা-বাবা বা পরিবার থেকে হয়তো এমন কোন অনাকাঙ্খিত ব্যবহার পাচ্ছেন যা আপনাকে তাঁদের সম্পর্কে এমন হতাশ মনোভাব পোষন করাতে বাধ্য করাচ্ছে। আপনি আপনার তিক্ত অভিজ্ঞতার কারনে মা-বাবা সম্পর্কে যে ধারনা পোষন করে আছেন সেগুলো বেশীরভাগ আমাদের মনে মা-বাবা নিয়ে যে ইমেজ কাজ করে তার সম্পুর্ন বিপরীত, আর তাই আপনার মতামতের গ্রহনযোগ্যতা লাভে আপনাকে বেশীরভাগ সময়ই হতাশ হতে হচ্ছে।
কিন্তু এটাও ঠিক যে, মা-বাবা নিজের মতামতকে অযৌক্তিকভাবে অগ্রাধীকার দিতে যেয়ে সন্তানের জীবনকে বিষময় করে তোলার ঘটনা আমাদের পরিবারে বিরল নয়। আর সেই সব ভুক্তভোগী লোকদের মা-বাবা বা পরিবারের সম্পর্কে ধারনা আপনার ধারনার মতো এতোটা হতাশাজনক আর একপেশে হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। সবটাই নির্ভর করে লোকটির দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিবেশ পরিস্থিতির উপর। আমার মতে পরিবারতন্ত্র বজায় রাখতে যেয়ে নিজের স্বাধীন স্বত্তাকে বিকেয়ে দিয়ে নিজের মুল্যবোধকে অসম্মান করার ফলে মানুষের আত্নগ্লানীতে ভোগার সম্ভাবনা থাকে প্রচুর।
আশা করছি এইসব ভাবনা এবং দুঃসময় আপনি অচিরেই কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন।
আমার মনে হয় ” প্রত্যেকটি সন্তান নিজের জন্মের জন্য নিজেই দায়ী” ।
আপনার লেখাটা স্ববিরোধিতায় ভরপুর বলেই মনে করি।ব্যক্তিগত পছন্দ মূল্যায়িত হয় নি বা বর্তমান সমাজে বা পরিবারে হচ্ছে না কে হাইলাইট করতে য়েয় যূথবদ্ধতা প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেললেন।সন্তান খালি দুজন মানুষের যৌন ইচ্ছার ফলকে মাথায় রেখে কথা বলেছেন কিন্তু যুদ্ধ শিশু বা সিংগল মাদারের মত বিষয়গুলাতে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কি ?
লেখাটা খুব একটা ভাল লাগলো না দাদা। আপনার লেখার মূলভাবটা বুঝতে পেরেছি। আপনি বোঝাতে চেয়েছেন যে আমাদের সমাজে ব্যাক্তিগত পছন্দের মূল্য কম এবং নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকা কঠিন। এজন্য মুক্তমনাদেরও অনেক ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। কথা ঠিক তবে অনেক জায়গায়ই অতি সরলীকরণ হয়ে গেছে। কিছু কিছু অংশ অনেক দৃষ্টিকটুও লেগেছে। উপরে অনেকেই সেটা উল্লেখ করেছেন। আপনি যে জিনিষটা বোঝাতে চেয়েছেন তা আরও সুন্দরভাবে বোঝানো যেত যদি ভাষা এবং প্রকাশভঙ্গির দিকে খেয়াল রাখতেন। বাবা মা যে আদরে আমাদের বড় করেন তাতে আমাদের অনেক বিষয়েই তাদের মতামতের বিশাল গুরুত্ব আছে তবে অবশ্যই তার মানে এই নয় যে তারা আমাদের উপর তাদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবেন। একটা ছোট্ট পরামর্শ হিসেবে মন্তব্যটি করলাম। ভাল থাকুন।
@আলোকের অভিযাত্রী,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আসলে আমি ভাল লিখতে পারি না। এটা আমি নিজেও জানি। তবে শিখতেছি। বাস্তব জিনিসগুলো যে অনেক মশলা দিয়ে লিখতে হয়, তা বুঝতে পারছি।
হা কিছু লেখায় দৃষ্টি কটু লেগেছে এটা আমি চিন্তা করেছি। যেমন আমরা চিন্তা করি মানুষ মরবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু অপঘাতে মরবে এটা আমরা কেহই চাই না। এখানে মরাটা আমাদের কাছে খোচা দেয় আমাদের জানা সত্ত্বেও যে মানূষ মরবে। আমার লেখাটা ঠিক এমনটাই হয়েছে।
বেশী বাস্তববাদী হতে গিয়ে আপনি (লেখক) একটু গুবলেট করে ফেলেছেন ভাই। বাবা মা এখন ইচ্ছে করলে সন্তান জন্ম না দিয়েও যৌন আনন্দ লাভ করতে পারে। জন্ম নিয়ন্ত্রন ত আছেই এ ছাড়াও আছে গর্ভপাত। কেন বাবা মা সন্তান জন্ম দেন তা বুঝার জন্য একটু বাড়তি চিন্তা বা পড়াশুনা করা যেতেই পারে। আইন বা সমাজের চোখে বাবা মা সন্তানের ভরন পোষণ করতে বাধ্য তাদের সামর্থ্য অনুযায়ি।বাজারদর অনুযায়ী কিন্তু নয়। উন্নত বিশ্বে সন্তান লালন পালন এর জন্য সরকার অর্থ দেয়,কিন্তু বাবা মার আয় বেশী হলে কমিয়ে দেয় বা দেয় না। বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের ওপর নির্ভরশীল না হওয়া ভাল,কেউ ইচ্ছে করে হতেও চায় না। আমাদের দেশে সাধারন মানুষের আয় ইঙ্কামের যা অবস্থা তাতে সন্তান মানুষ করতেই অনেক বাবা মা ফতুর হয়ে যান।ভবিশ্যতের জন্য কিছু রাখতে পারেন না। এটা তাদের ব্যর্থতা আপনি বলতেই পারেন,কিন্তু আমাদের দেশের বেশিরভাগ সন্তানই কিন্তু বাবা মা র হাতে কিছু দিতে পারলে তৃপ্তিই বোধ করে,কারন সন্তান জানে বাবা মা তার জন্য কি করেছে। ব্যতিক্রম আছে।যদি কোণ সন্তান বাবা মার দ্বারা অহেতুক নির্যাতন ভোগ করে থাকে বা যেকন কারনে করে থাকে তাহলে ক্ষোভ থাকাটা স্বাভাবিক। তারপরেও খেয়াল করবেন যত যাই হোক না কেন,সন্তান চেষ্টা করে বাবা মা র হাতে কিছু দিতে। এর কারন টা বুঝার জন্যও একটু ভাবা যেতে পারে বা পড়া যেতে পারে। আর বিয়ে শাদি,পড়াশনা,চাকরী ইত্যাদী ব্যপারে সন্তানের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত হয়া উচিৎ। বাবা মা তাদের মতামত দিতে পারেন।কিন্তু শেষ সিদ্ধান্ত সন্তানের। চাপিয়ে দিলে অন্যায় এটা ঠিক আছে। তবে আঠার বছরের নীচে পৃথিবীর সব দেশেই বাবা মা র অধীনতা মেনেই চলতে হয়,সেখানেও কথা আআছে,মানসিক বা শারীরিক নির্যাতন মারাত্মক অপরাধ হিসেবে ধরা হয়, এ কারনে সরকার ইচ্ছে করলে সন্তানকে বাবা মার কাছ থেকে নিয়ে যাবার অধিকার সংরক্ষণ করে। কাজেই ব্যপারটাকে এতটা সরলীকরন করাটা বোকামি।
@সপ্তক, আপনার প্রথম লাইনটার বেশ লাগলো। যাই হোক আপনার সমস্ত মন্তব্যটাই ভাল লাগলো। তারপরেও আপনার মনে বেশ কিছু কিন্তু রয়ে গেছে। সময়ের অভাবে হয়তো গুছিয়ে লেখা হয়নি। তাই বাস্তবতার চেয়ে বেশী বাস্তবতা পেয়েছে এই পোস্টে। কম যেমন আমাদের কিছু ক্ষতি করে, তেমন বেশীও। তবে আমার মনে হয় যারা খাওয়া পড়ার কষ্ট গুলো প্রতিনিয়ত পায়, তাদের হাতে যদি ফেসবুক বা ইন্টানেট থাকতো এবং লিখতে পারতো, তাহলে এই কঠিন বাস্তবতা গুলো ভাল লাগতো সবার। আসলে কঠিন বাস্তবতা যে কারোই ভাল লাগে না। তা স্পস্ট বুঝলাম। কারন কঠিন বাস্তবতার মধ্যে আমাদের মনে কিন্তু কাজ করে সফট কর্ণার হিসাবে। আপনাকে ধন্যবাদ।
@রঞ্জন বর্মন,
তো স্বাধীন ভাবে জন্ম নিয়ে স্বাধীন ভাবেই চলে যাক না জঙ্গলে বা বৃন্দাবনে। গোপীর কি অভাবে আছে? মা বাবার কী দরকার ছিল শিশুর গু-মুত সাফ করে, নিজের দেহের শত কষ্ট অবজ্ঞা করে, আপন বুকের দুধ দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার? সুতিকালয়ে মেরে ফেলার জন্যে দুই আঙ্গুলই যথেষ্ট ছিল।
আপনি মুক্তমনা শব্দের বিকৃত অর্থ বুঝেছেন। আপনার এই লেখা সমাজে ক্ষতিকর ধারণার জন্ম দিতে পারে। সমাজ ও পরিবার কাকে বলে, কীভাবে সমাজ ও পরিবার গড়ে উঠে, তাদের চালিকাশক্তি কী, কী ভাবে পরিবর্তন আসে আর কেন পরিবর্তন হয়না, মা বাবার দায়ীত্ব আর অধিকার, এ সবের উপর আপনার সম্যক ধারণা থাকলে লেখাটা এই ভাবে লিখতেন না। প্রথম আলোর লেখাটাও পড়েছি, অস্বাভাবিক নাটকীয়তা আছে ঘটনায়। আমি দুঃখিত দ্বীমত পোষণ করতে গিয়ে কথাগুলো একটু রুক্ষ হয়েই গেল বোধ হয়।
@আকাশ মালিক,
আপনার প্রথম দুই চরণ এর উত্তর হলো ওটাই সামাজিকতা। একজন মানুষ আরেকজনে দেখে দেখে এটাই শিখেছে যে সন্তান হলে তাকে কি কি করতে হবে। ইচ্ছা করলেই সন্তানকে ফেলে দিতে পারে না।
গত দশ দিন আগের একটা ঘটনা শুনুন। এক মা তার ৫ দিনের সন্তানকে নিজের কাছে না রাখার জন্য ব্যকুল হয়ে উঠেছেন কোন না কোন কারনে। এটা আমার এক কলিগ (নিঃসন্তান) সেই বাচ্চাটে নিবে। আমার কাছে বলতে এসেছে যে বাচ্চাটাকে নিলে কেমন হয়। আমি কিছু প্রশ্ন করার পর তাকে ফাইনালি নিতে বললাম , তবে সেটা যেন আইনগত হয়। যাক উনি নোটারীর মাধ্যমে বাবা-মায়ের কাছে অনুমতি নিয়েই নেন।
আমাদের দেশে অন্যান্য দেশের মত ব্যবস্থা নেই যে যে সন্তান মানুষ করতে চায় না, সেই সন্তানকে সরকার মানুষ করে, হয়তো সরকারী এতিমখানা আছে। সাধারণত বাবা মা আছে এমন সন্তানদের সহজে নিতে চায় না।
আপনি দ্বিতীয় প্যারায় যা বলেছেন আমার সম্যক ধারণা নেই সমাজ ও পরিবার সম্পর্কে। মনে হয় আমরা সবাই সমাজ ও পরিবারে একই ভাবে বড় হই না। এটা হয়তো বললে ভাল হতো।
দুটো পাশা পাশি পরিবার একটা গরিব মানে বাবা মা গরিব ও অন্যটার বাবা মা ধনী। একই সমাজে পাশা-পাশি দুইটি পরিবার সন্তান কিন্তু একই উপায়ে মানূষ হচ্ছে না, অন্তত পরিবারে আর্থিক তারতম্যের কারণে।
বুঝাতে চেয়েছেন পরিবারের একে অপরের ভালবাসার কথা। হা সেটা হয়। তাতে আমার সন্দেহ নেই। কিন্তু আপনি যদি পরিবারের অমতে কখনো কোন কাজ করে থাকেন, সেটাতে সাপোর্ট না পাওয়াতে আপনি বার বার মনে মনে ভাবতে থাকেন সেই কাজটা আপনি কেন করলেন… এভাবে আপনি একদিকে হয়তো আপরনার প্রিয়জনের ভালাবাসার কারনে আপসোস করতেন, আবার কাজটা যে সঠিক করেছেন সেটাও ঠিক। এবার হয়তো আপনি আপনার প্রিয়জনদের মানাতে চাইবেন যে আপনি ঠিক। কিন্তু তা আর পারতেছেন না। তখন আপনি কি করবেন সেটা আপনি জানেন। হয় আপনি তাদের কথা মত চলবেন, নয়তো তাদের উপেক্ষা করবেন। এইতো।
আপনি বুঝাতে চাইছেন তারপরও পরিবারের এই সীমাবদ্ধতাকে উপেক্ষা করা উচিত না। কিন্তু অনেকেই আছে এই ধ্রনের পরিবারকে উপেক্ষা করেছে। নিজের মত করে জীবন চালিয়েছেন।
আমি সব সময় জানতে চাই আপনাদের দ্বিমতে কারণ গুলো। সেগুলো জানলে হয়তো আমার ভুল ধারণা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারবো। কিন্তু সেটা হয় না।
আপনি লেখার মধ্যে বেশ কয়েকবার মুক্তমনা শব্দটা ব্যবহার করেছেন। কিন্তু আমার ধারণা শব্দটির মানে আপনি জানেন না। মুক্ত মন মানে পরিবারের অনিচ্ছায় বিয়ে করা নয়, নাস্তিক হওয়া নয়, বাবা মা কেন তাদের সন্তানদের জন্ম দিয়েছেন, তার কারণ হিসেবে তাদের যৌনস্বার্থ বলা নয়, বাবা মায়ের প্রতি সন্তানের দ্বায়িত্বকে অস্বীকার করা নয়। পারিবারিক নির্যাতন অবশ্যই খারাপ, সন্তাদের উপর নিজেদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার রিতী সন্দেহাতীতভাবে বদলাতে হবে, কিন্তু তার অর্থ এই নয়, বাবা মায়ের ভালোবাসাকে অবজ্ঞা করতে হবে।
আপনার বাবা মা আপনাকে জন্ম দিয়ে কাইন্ড অফ অপরাধ করেছেন, কারণ আপনার ইচ্ছায় আপনি জন্মান নি, জন্মেছেন তাদের যৌন ইচ্ছা পরিপূর্ণ করতে গিয়ে, সেই অপরাধের কারণে তারা আপনাকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ভরণ-পোষন করা তাদের কর্তব্য ছিল। এটা যদি আপনার মনের কথা হয়ে থাকে, আমি এই লেখায় আমার খারাপ লাগা জানিয়ে গেলাম।
মানুষ ভালোবাসতে শেখে কোথা থেকে জানেন? পরিবার থেকে। শৈশবে আপনার মা আপনাকে ভালোবেসে করে যতগুলো মায়ার ভরা চুমু দিয়েছিল, আপনাকে বুকের মধ্যে নিয়ে ঘুম পাড়ানী গান শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিল, সেগুলো তার দ্বায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। কিন্তু সেগুলো সে বিনা প্রশ্নেই করেছে… কেন করেছেন, পারলে সেটা বুঝে ওঠার চেষ্টা করেন একবার।
@নীল রোদ্দুর,
আপনার কাছে জানতে চাই মুক্তমনা কাকে বলে। স্বাভাবিক কথায় মুক্তভাবে যেমন চিন্তাকরে তা প্রতিফলিত করতে পারে। তারাই মুক্ত মনা।
কিন্তু আপনি চিন্তা করলে মনে মনে , কিন্তু আপনার কাজ আপনার চিন্তা অনুযায়ী হলো না। তাকেও কি আপনি মুক্তমনা বলে জানবেন।
অপেক্ষায় রইলাম মুক্তমনা কাকে বলে জানার জন্য। এটাতে আমি উপকৃত হওয়া মনে করি। এতে আমার সংকির্ণ মন থেকে মুক্তমান হবো।
আমার মা বাবা যে অপরাধা করেছেন তা আপনার খারাপ লাগা থেকে বুঝা যাচ্ছে। আমার মত ছেলের জন্ম দিয়ে যে সামাজিক ও বাবা মা কে স্রেফ যৌন খেলা বলে???? এই তো আপনার ধারণা। আমি কিন্তু কোন অপরাধের কথা বলিনি। বাবা মা সন্তান নেন অন্যের ইচ্ছায় না নিজের ইচ্ছায়। এখনতো সন্তান নিতে অনিচ্ছা থাকলে গর্ভপাত করা যায়। তার মানে এখন একটা সন্তান নেন বাবা মা সম্পূর্ণ তাদের নিজের ইচ্ছায় যে সন্তান তারা বড় করতে পারবে কি না এটা হিসাব নিকাশ করে। অবশ্য ধার্মিকেরা সেটা করেন না। তারা বলে জন্ম মৃত্যু সৃষ্টি কর্তার হাতে। আপনার কাছে অনুরোধ রইলো ইশ্বর/আল্লাহ জাতীয় কারো কথা বাদ দিয়ে আপনার মন্তব্য জানান আমাকে যুক্তি দিয়ে যে আমাই ভুল করতেছি যাতে আমার জন্য আরো দশ জনের ভুল না হয়।
মানুষ ভালবাসতে শেখে বাবা মা এর কাছে বা পরিবারের কাছে এটা বুঝাতে চেয়েছেন এই তো। আমি কি পরিবারকে অস্বীকার করেছি। করেছি তাদের মুক্তচিন্তার কথা যা না থাকাতে তাদের একোটা পারিবারিক স্বার্থের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। পরিবারের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে যারা চলে, তারা নির্যাতিত হয়। কেন হয়? সেটা বলুন। আর ঘুমপাড়ানি গান সবার কপালে জুটে না, এটা আপনার মনে রাখা উচিত। হয়তো আপনি পেয়েছেন, তাই বলতেছন। স্বার্বিকভাবে চিন্তা করুন। ঘড়ে যখন খাবার থাকে না, মা বার বার সন্তান কে চুমু দিয়ে শান্তনা দিলেও একসময় সন্তান খুধার চোটে সেই চুমুকে ভালবাসার চুমু না বলে চলনার চুমু বলবে। হয়তো এটা ভেবে দেখেন নি।
@রঞ্জন বর্মন,
স্বার্বিক ভাবে চিন্তা করছি…
১. একজন মানুষ জন্মেছে পরিবারে, কিন্তু তার বাবা-মা তার ভরণ-পোষন করেনি। সন্তানটি কেবলই যৌস্বার্থে জন্মেছে, বাবা মা স্বার্থপরের মত তাকে জন্ম দিয়েছে, বড় করার কথা ভাবেও নি। অর্থাৎ শিশুটি ভালোবাসা বঞ্চিত। এক্ষেত্রে দুটো ব্যাপার ঘটতে পারে,
ক. শিশুটি জন্মের কিছুক্ষণের মধ্যে ক্ষুধায় তৃষ্ণায় মারা যাবে। এই শিশু কোনদিন বাবা মায়ের স্বার্থপরতার অভিযোগ জানাতে পারবে না। বাবা-মা স্বার্থপর, এই সিদ্দান্তে উপনীত হতে পারেন।
খ. পরিত্যাক্ত অবস্থায় শিশুটির দেহ পাওয়া গেল। সাথে শিশুটির কান্নাও শোনা গেলো। কেউ দয়ার বশবর্তী হয়ে তাকে এতিমখানায় রেখে গেলো। সেখানে সে বড় হল। এখানে শিশুটি বা অন্য কেউ জানে না, বাবা মা ইচ্ছা করে এভাবে ফেলে রেখে গেছে নাকি কোন নিষ্ঠুর বাস্তবতার কারণে জন্মদাত্রী মা তাকে ত্যাগ করেছে, বা জন্মদাত্রী মা আদৌ বেঁচে আছে কিনা!
এই রকম অবস্থায় শিশুটি ভালোবাসায় বঞ্চিত, এতিম খানার সহায়তায় বড় হয়েছে, তার সাথে বাবা মায়ের কোন সংযোগ নেই, পারিবারিক নির্যাতনের প্রসঙ্গও উঠবে না কখনও।
২. সন্তান জন্মেছে, সন্তানের ভরণ পোষন করেছেন তার বাবা মা, সন্তান বড়ও হয়েছে। এমন ক্ষেত্রেও বড় করার দুটো পরিবেশ থাকতে পারে,
ক. বাবা মা সন্তানকে বড় করতে সামর্থ্যবান।
খ. বাবা মা সন্তানকে বড় করতে সামর্থ্যবান নয়।
এরকম অবস্থায়, আপনি আমাকে একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ দিন, সন্তানকে না খাইয়ে বাবা মা খেয়েছে। সন্তানকে কেবল খাওয়া পরাই দিয়েছে, জামা কাপড় দিয়েছে, কখনও ভালোবেসে একটা চুমুও খায়নি। সন্তানের জন্য বাবা মায়ের হৃদয়ে বিন্দুমাত্র মায়া ভালোবাসা নেই। কেবল জন্ম দিয়েছে বলে বড় করে দ্বায়িত্ব পালন করেছে।
আপনি যাকে ছলনার চুমু বলেছেন, যে মা ঘরে খাবার নেই বলে সন্তানকে খেতে না দিয়ে খালি চুমুই দিয়েছে, সেই মা কি নিজে খেয়েছে? এটুকু নিশ্চিত থাকুন, ঘরে যদি সামান্য খাবারো থাকে, তাহলে মা নিজে খাবার আগে সন্তানকে খাওয়াবেন। মানুষ তো স্বভাবতই স্বার্থপর, উপরে আপনিই বলেছেন। বলবেন কেন নিজে না খেয়ে আগে সন্তানকে খাওয়াবে?
৩. সন্তানকে জন্মই শুধু দেননি, বড় করে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু সেই সাথে সন্তানের উপর নিজের মতামত জোর করে চাপিয়ে দিয়েছেন। সন্তানকে কোন প্রকার স্বাধীনতা না দিয়ে নির্যাতন করেছেন। আমি স্পষ্ট করে বলেছি, পারিবারিক নির্যাতন অবশ্যই খারাপ, তা বন্ধ করতে হবে নিঃসন্দেহে।
আপনার আমার মধ্যে পার্থক্য এখানে, আমি স্বীকার করছি, বলছি, বাবা মা আমাকে জন্ম দিয়েছেন নিজেদের একটি সন্তান পাবার আকাঙ্খা থেকে, আমাকে কেবল বড় করেননি, আমাকে ভালোভাবে বড় করার জন্য যতটুকু স্বাচ্ছন্দ্য তাদের দেবার সামর্থ্য ছিল, তা তারা করেছেন এবং শুধু জন্ম দিয়েছেন বলে বড় করেই সটকে পড়েননি, আমাকে তারা খুব ভালোবাসেন, তাতে কোন খাদ নেই।
আপনি বলছেন, যৌনস্বার্থে জন্ম দিয়েছেন, ভরণ পোষন করেছেন জন্মটা দিয়ে ফেলেছেন বলে, তারা যে ভালোবেসেছেন, তার কোন স্বীকৃতি দেননি, তার কোন মূল্যও নেই আপনার কাছে। (জানিনা, হয়ত বলবেন ছলনার ভালোবাসা।)
এতো বিশাল লেকচার দিলাম, এইবার একটা সত্যি কথা বলি, বাংলাদেশের ধর্মপ্রবণ সমাজ ব্যবস্থা এমনি, যুগযুগ বড়রা তাদের মতামত ছেলেমেয়ে বা ছোটদের উপর চাপিয়ে এসেছে, তারা কোনদিন এটা ভাবেই নি, এটা ঠিক নয়, ছেলে মেয়েদের নিজেদের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নেবে। আমিও এই লৌহ কঠিন সামাজিক পরিবেশেই বড় হয়েছি, আমার জন্য আলাদা কোন সমাজ কেউ দেয় নি, যেখানে বড় হয়েছি বলে আমি বলতে পারি, আমার জীবন চলার পথ ফুল দিয়ে মোড়া ছিল। আমিও আমার পথ নিজেই বেছে নিয়েছি, সেখানে অনেক জায়গাতেই আমার জীবনের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ এসেছে, বাধা এসেছে, এবং আসবে। এবং আমি তা আমার মত করেই সামাল দেব।
বাবা মা বড় করেছে বলে অহেতুক কতৃত্ব আরোপ করছে, তা নয় কিন্তু, বড় করেছে, তাই ট্যাক্স চাইছে না, বলছে না, তোমার জন্য যা যা করেছি, তা পাই পাই করে ফিরিয়ে দিতে হবে, বরং, তাদের ভাষায় তারা যেটা আমার জন্য ভালো ভাবছে, তাই বলছে, তাদের সাথে যে আমার মত পার্থক্য হচ্ছে, সেটা তারা মানতে পারছে না। তারা আমার চিন্তাকে ভুল ভাবছে, তাই আমাকে জোর করে হোক আর যেভাবে হোক, তাদের চিন্তা ধারায় চলি সেটা চাচ্ছে। এর পিছনে মূল কারণ তাদের বড় হবার পরিবেশ, শিক্ষা, মানসিকতা বিকাশ, ধর্মের বেড়াজাল সংকীর্নতায় মোড়া। আমি আমার চিন্তাকে ঠিক ভাবছি। আমি যা করতে পারি, আমার জীবনের সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারি, আমার বাবা মা বোঝানোর চেষ্টা করতে পারি, আমার সন্তানদেরকে একটা উদার পরিবেশে বড় হবার সুযোগ দিতে পারি, যাতে তারাও আমার মত মানসিক, পারিবারিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে না গিয়ে একটা সুন্দর পরিবেশ গরে তুলতে পারে।
ভাই কারোর জীবন ফুলে ফুলে ছাওয়া নয়, সবাইকে জীবনের কোন না কোন সময়ে কষ্টের মুখোমুখি হতে হয়। সেটা পরিবার থেকে আসলে আমাকে কেন সংকীর্ণমনা হয়ে তাদেরকে স্বার্থপর বলতে হবে? কেন বলব আমি, তারা যৌনস্বার্থে জন্ম দিয়েছে! এতটুকু সম্মান যদি আমার বাবা মাকে আমি না করতে পারি, তাহলে আমার সন্তানেরাও আমাকে সম্মান করবে না, কারণ আমি তাদের সম্মান করতে শেখায় নি।
@রঞ্জন বর্মন,
ওকে, ধরুন, আমি চিন্তা করলাম, রাস্তা দিয়ে মহিন যাচ্ছে, তাকে আমার একটা চড় মারতে ইচ্ছা করছে, আমি চড়টা মেরে আসলাম। আপনার ভাষায় আমি মুক্তমনা হয়ে যাবো? হাসালেন ভাই 🙂
কোন যুক্তিতে বা কোন কারণে আমি চড়টা মারব? যা ইচ্ছা তাই করতে পারলেই হল?
মুক্তমনা সেই যে সঠিক যুক্তি ও বোধের আলোয় নিজেকে আলোকিত করতে পারে… যার মন ধর্ম, সমাজ, রিতী, প্রথা দিয়ে বন্দী নয়। মুক্তমনার মনটা মুক্ত, কেউ ভুল করলে ভুলটা কেন করছে, সেটা বোঝার চেষ্টা করতে পারে, সে নিজে সেই ভুলটা না করে থাকতে পারে, অথবা তাকে ভুলটা বুঝিয়ে দিয়ে ভুলের পথ থেকে ফেরাতে পারে। অন্যের মতামতের প্রতি সহনশীলতা, মনের মধ্যে একটা উদার মানসিকতা গড়ে তুলতে পারলেই তবে মুক্ত-মনা হওয়া যায়। আমিই ঠিক ভাবি, অন্যরা সব ভুল, এমনটা নয় ভাই।
ভালো থাকবেন। আপনার মন অশান্ত। শান্ত হোন, তখন এসব নিয়ে আলোচনা করা যাবে আবার। 🙂
পুরো লেখাটিতে যুক্তি খুবই নড়বড়ে মনে হয়েছে এবং বেশ কিছু মতামত খুবই আপত্তিকর। যেকোন গ্রহণযোগ্য লেখাতে লেখককে অনেক বেশি নিরপেক্ষ থাকতে হয়।
কিছু মনে করবেন না, এর মানে কি এই দাঁড়ালো যে, সন্তান জন্ম দিয়ে বাবা-মা এক ধরনের দোষ (বা অপরাধ) করে, যার শাস্তিস্বরূপ তাকে সন্তানের ভরণ-পোষণ করতে হবে? সন্তান তো নিরপরাধ, তার জন্মের কারণে সে এই ভরণ-পোষণ দাবি করতে পারে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে? অদ্ভুত না?!
বাবা-মা বিশেষ করে যৌনস্বার্থে সন্তান জন্ম দেয় – এর বিরুদ্ধে তীব্রভাবে দ্বিমত প্রকাশ করছি। সন্তান জন্ম দেয়ার পিছনে এক ধরনের ভালবাসা কাজ করে। ভালবাসা শুধু বিপরীত লিঙ্গের প্রতি হয় এমন নয়, ভালবাসার রূপ হরেক। দেখার চেষ্টা করলেই দেখা যায়।
মানুষের স্বভাব বলতে তাহলে কি বুঝাচ্ছেন বুঝিয়ে বললে ভাল হয়। প্রতিটা মানুষের মধ্যে কিছু আদিম ইচ্ছা থাকে। নিজের স্বভাব প্রতিহত না করে সেই আদিমতার অনুসারী হওয়া কি বিশেষ ভাল কিছু? সভ্যতার বিকাশ কি তাহলে আপনি চান না? কারণ, সভ্য মানুষ অনেক ইচ্ছাই প্রতিহত করে।
জন্মের পর মানুষ তার আশেপাশের পরিবেশ থেকে, পরিবার থেকে অনেক কিছু শিখে। এই শিক্ষাগুলো তার পরবর্তী জীবন গড়ে তোলে। পরিবারের মানুষ একে-অপরকে ভালবাসে, ভালবাসতে শিখায়। একে পরিবারতন্ত্রে বন্দী হয়ে যাওয়া বলে থাকলে সেটার প্রতি নিতান্তই অবিচার হয়ে যায়।
অদ্ভুত প্রতিদান। অদ্ভুত চিন্তা। আপনার ডিকশনারিতে পারস্পরিক ভালবাসার গুরুত্ব কতখানি খুব জানতে ইচ্ছে করছে।
আরো অনেক কিছুই লিখবো বলে ভেবেছিলাম, কিন্ত এখন ইচ্ছে হচ্ছে না। আপনার প্রতি পরামর্শ থাকবে, ভালবাসা কী জিনিস সেটা উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন। আর, আপনি নিজে যখন সন্তানের বাবা হবেন ও তার লালন-পালন করবেন, তখন এ বিষয়ে আপনার কাছ থেকে আরেকটা লেখা আশা করছি। ভাল থাকবেন।
@প্রতিফলন, “সন্তান তো নিরপরাধ, তার জন্মের কারণে সে এই ভরণ-পোষণ দাবি করতে পারে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে? অদ্ভুত না?!”
সন্তান তো মুখের খাবার নিয়ে জন্মে না।
“ভালবাসা শুধু বিপরীত লিঙ্গের প্রতি হয় এমন নয়, ভালবাসার রূপ হরেক। দেখার চেষ্টা করলেই দেখা যায়।”
যৌনতা ছাড়া নারী পুরুষ কখনো একে অপরকে ভালবেসেছে? সন্তান জন্ম না দেওয়ার ব্যাপারটা অন্য বিষয়। এমন কোন নারী পুরুষ পেয়েছেন, যারা এমন আছে?
“মানুষের স্বভাব বলতে তাহলে কি বুঝাচ্ছেন বুঝিয়ে বললে ভাল হয়। প্রতিটা মানুষের মধ্যে কিছু আদিম ইচ্ছা থাকে। নিজের স্বভাব প্রতিহত না করে সেই আদিমতার অনুসারী হওয়া কি বিশেষ ভাল কিছু? সভ্যতার বিকাশ কি তাহলে আপনি চান না? কারণ, সভ্য মানুষ অনেক ইচ্ছাই প্রতিহত করে।”
মানুষ স্বভাবতই স্বার্থপর। তাই নিজের পেট আগে ভরাতে চায়। এটার বিপরীত মনে হয় কেউ নেই। আর সব সময় নতুন স্বাদ চায়, পরিবর্তনশীল। এবং সে যদি ধর্ম বা অন্য কোন বাধা পেয়ে নিজের মনকে মানে এই স্বভাব থেকে বঞ্চিত করতে চায় তাতে, তার মানসিকতা খারাপ বই ভাল থাকবে না।
পরিবারতন্ত্রে বন্দী হয়ে যাওয়া বলতে বুঝিয়েছি আপনি আপনার পরিবার এর বাইরে এসে ভাবতে পারেন না। কারন আপনার পরিবারের লোকজন যদি আপনাকে ভুলভাবে চালনাও করে, তারপরও আপনি সেভাবেই চলবেন তাদের প্রতি আবেগ থাকার কারনে।
ভালবাসা কী জিনিস সেটা উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন>> ভালবাসা দিয়ে পেট ভরে না নিশ্চই। ভালবাসুন। সমস্যা নেই। ভালবাসা আমি বুঝি। কিন্তু অভাব অনটনে সেই ভালবাসা যে টিকে না সেটা কোন ভালবাসা বুঝবেন যখন এক বাবা তার মেয়ে সন্তানকে সমাজের নিম্নকাজে ঠেলে দেয় জাস্ট পেট ভরানোর জন্য। তখন সেই বাবা কি তার মেয়েকে ভালবাসে না নিজের জীবনকে বেশী ভালবাসে?
@রঞ্জন বর্মন,
চমৎকার! এগিয়ে যান ভাই, এগিয়ে যান।
কিছু মনে করবেন না, আপনার মা-বাবা-স্ত্রী-আত্মীয়স্বজনেরর জন্য মায়া হচ্ছে। মুক্তমনার রেজিস্টার্ড লেখকের কাছ থেকে এমন সব চিন্তার প্রকাশ দেখে বড়ই মর্মাহত হলাম। (N) (N) (N)
@প্রতিফলন, aআপনার উত্তর পেলে ভাল লাগতো। শুধু চমৎকার বলে লাভ কি। আপনার কোন লজিক থাকলে বলতে পারেন। কোন সমস্যা নেই।
@রঞ্জন বর্মন,
আপনার মন্তব্যে অন্যের যুক্তি (লজিক) শুনার ও তা উপলব্ধি করার সদিচ্ছা প্রকাশ পেলে খুশি হতাম। তারপরেও, আপনি যখন শুনতে চাইছেন তখন বলি।
এর উত্তর আমার আগের মন্তব্যে আছে – বুঝেননি মনে হয়।
মা-বাবা যে সন্তানকে ভালবাসে সেটা যৌনতা থেকে নয়। এই সাধারণ সত্যটুকু যে কেন আপনার দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না, তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। মাতৃপ্রেম, পিতৃপ্রেম, ভ্রাতৃপ্রেম, মানবপ্রেম এই শব্দগুলো শুনে থাকলে ও বুঝে থাকলে আপনি এ ধরনের প্রশ্ন করতে পারতেন না। আর স্বামী-স্ত্রী বা গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড এরকম যেসব ভালবাসা আছে সেগুলোতে যৌনতা ভালবাসারই একটা অংশ। তবে এ কথার মধ্য দিয়ে এটাও প্রমাণ হয়না যে, বাবা-মায়েরা বিশেষ করে যৌনস্বার্থে সন্তান জন্ম দিয়ে থাকে। আর, আপনার এই দাবি যে ভুল সেটা বিভিন্নজন মন্তব্য করে যুক্তি দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন। আপনি বুঝেছেন কিনা জানালে খুশি হবো।
এর খুব ভাল উত্তর সপ্তক দিয়েছেন (অবশ্যই যুক্তি সহকারে)। তবে সেখানে আপনার প্রত্যুত্তর দেখে আমি অধম বুঝতে পারেনি যে, আপনি তা উপলব্ধি করতে পেরেছেন।
জানেন তো, প্রাণ থাকলেই প্রাণী হয়, মন না থাকলে মানুষ হওয়া যায় না। ভালবাসা হল মনের খোরাক, এতে মনের পেট ঠিকই ভরে, প্রাণী থেকে মানুষ হতে গেলে যেটা অত্যাবশ্যক।
@প্রতিফলন,
মাতৃপ্রেম, পিতৃপ্রেম, ভ্রাতৃপ্রেম, মানবপ্রেম আমি না শুনলেও আপনি শুনেছেন নিশ্চই। মাতৃপ্রেম এর একটা রুপ শুনুন এখন। এক মুসলিম মেয়ে হিন্দু ছেলেকে বিয়ে করেছে, তাই মেয়ের পরিবার তাকে ত্যাগ না করলেও মা ছাড়া পরিবারের অন্য কেউ যোগাযোগ করে না। এবার তার মা মেয়ে কে বলে সেই হিন্দু ছেলেকে মুসলিম হতে তার মেয়ের মাধ্যমে। যাই হোক। মেয়ের শাশুরি পিঠা বানিয়েছে এবং তা ছেলের হাতে দিয়েছে এবং বলেছে পিঠা গুলো তুই খাস কিন্তু (এখানে ঈঙ্গিতে বলা হচ্ছে তোর বউকে দিসনা) । এবার মেয়ের মা যখন জানতে পেরেছে তখন বলেছে সেই পিঠা খাস না তুই । মেয়ে কারন জিজ্ঞাসা করাতে বলে পিঠাটা হিন্দু বানিয়েছে, তাই। এখানে ছেলের ও মেয়ের মায়ের শুধু মাত্র নিজের ছেলে ও মেয়েকেই ভালবাসে এটাই মাতৃপ্রেম, এই তো? এরা এখনো নিজকে ছাড়া আর কাউকে মানুষ ভাবতে পারেনি। বাকি প্রেম গুলো আর কি বলবো এটা দিয়ে বলা যায় মাতৃপ্রেম, পিতৃপ্রেম, ভ্রাতৃপ্রেম, মানবপ্রেম বলতে যত সহজ, বাস্তবতা তত না।
ধর্মের কারণে মানুষ মানুষ হলেও অমানুষই রয়েগেছে এটা বুঝতে আপনার সমস্যা হয় নি মনে হয়।
আমাকে যেমন বলেছে একজন মুসলিম যে হিন্দুরা মানূষ না, এরা এই দেশের নাগরিক হতেই পারে না।
প্রাণ থাকলেই প্রাণী হয়, মন না থাকলে মানুষ হওয়া যায় না।” আপনার এ কথাটা মানবপ্রেমে আসে। একজন মানূষ যখন অন্য মানুষ হিসাবে শ্রদ্ধা কবে করতে শিখবে? শুধু মাত্র ধর্মীয় দর্শন গত দিক দিয়ে বৈষম্য করে রাখা হচ্ছে সেখানে মানবপ্রেম কোথায় যায়?
বাস্তবতাকে ভাবুন। অনেক ভাল কিছুই আছে যা বলিএ লিখা আর বুলি ছোড়ার জন্য বাস্তবে আসলে কত টুকু সেটাই ভাবার বিষয়।
@রঞ্জন বর্মন,
নীল রোদ্দুরের মতোই বলি…
ভাল থাকবেন। 🙂
@রঞ্জন বর্মন,
“মানুষ স্বভাবতই স্বার্থপর। তাই নিজের পেট আগে ভরাতে চায়। এটার বিপরীত মনে হয় কেউ নেই। আর সব সময় নতুন স্বাদ চায়, পরিবর্তনশীল। এবং সে যদি ধর্ম বা অন্য কোন বাধা পেয়ে নিজের মনকে মানে এই স্বভাব থেকে বঞ্চিত করতে চায় তাতে, তার মানসিকতা খারাপ বই ভাল থাকবে না।”
ম্যকাভেলিজম!।এটা ঠিক না । মা নিজে না খেয়ে সন্তানকে খাওয়ায় এটা আমি অনেক দেখেছি। যদি এখন এই মুহূর্তে ভুমিকম্প হয় তাহলে আমার কথা না হয় বাদি দিলাম আমার স্ত্রী যে আমার সন্তানদের সাথে না নিয়ে শুধু নিজের প্রান বাঁচানোর চেষ্টা করবে না এ বিষয়ে আমি অতি-নিশ্চিত বরং সন্তানদের প্রান বাচাবে নিজের প্রান এর বিনিময়ে। আমার মা’র উদাহরন দিলাম না।এখানে সমাজের চোখ রাঙ্গানির কথা বলা অবান্তরই শুধু নয়,মানুস হিসেবে নিজেকে ইতর প্রাণীর সামিল করা হয়,বিবরতনের মাধ্যমে ,নিজের চেস্টার মাধ্যমে মানুষ নিজেকে ইতর প্রানীর উরধে তুলেছে তা অস্বীকার করা হয়। মানুষ আগে মানুষ পরে প্রাণী,এটা একজন মানুষ মনে করতে না পারলে সে আগে প্রাণী পরে মানুষ হয়ে যায়।
@সপ্তক,
নিজে না বাচঁতে পারলে, আপনি নিজের স্ত্রী ও সন্তানের কথা ভাববেন কিভাবে? যখন দেখে কোন দুর্যোগে আপনার বাঁচার সম্ভবনা নেই। তখন তাদের বাঁচানোর চেষ্টাটাই উত্তম। এখানে একটা চিন্তা আছে সবার মধ্যে, তা হলো সন্তান বাচলে বংশ বা জেনারেশন টা বাচবে। সন্তান কে বাচিয়ে রেখে বাবা তার মৃত্যুপরবর্তী নিজেকে বাচিয়ে রাখতে চায়।
মানুষ ইতর প্রাণী থেকে দূরে এসে মানুষ হয়েছে। এটা ঠিক। কিন্তু আসলেই কি ইতর প্রাণীর সব গুণ থেকে বেড় হতে পেরেছে?
@রঞ্জন বর্মন,
“যখন দেখে কোন দুর্যোগে আপনার বাঁচার সম্ভবনা নেই। তখন তাদের বাঁচানোর চেষ্টাটাই উত্তম।”– আপনার একথার সাথে আপনারই একথা মেলে,”মানুষ ইতর প্রাণী থেকে দূরে এসে মানুষ হয়েছে। এটা ঠিক।”
আবার আপনার ই একথার,”এখানে একটা চিন্তা আছে সবার মধ্যে, তা হলো সন্তান বাচলে বংশ বা জেনারেশন টা বাচবে।”…সাথে মিলে যায় আপনারই কথা,” কিন্তু আসলেই কি ইতর প্রাণীর সব গুণ থেকে বেড় হতে পেরেছে?”
এখন ভাবে দেখুন আপনি কোণ দলে আছেন।
@সপ্তক,
আমি কোন দলে আছি। আপনি বলেছেই আগের কমেন্টে আমি বেশী বস্তুবাদীর দলের। এখন এটা আমাকে নতুন করে প্রশ্ন করে লাভ কি।
একটা জিনিস আপনার বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে। ”কিন্তু আসলেই কি ইতর প্রাণীর সব গুণ থেকে বেড় হতে পেরেছে?” এটা বলার কারন “এখন ভাবে দেখুন আপনি কোণ দলে আছেন।” এটা আপনি বুঝতে পারবেন যখন একজন বাবা তার ছেলেকে বলে “তোকে মানুষ করতে পারলাম না” এ ধরনের কথায়।
মানে খুব সহজ কেউ তার মতে বিপক্ষে কাজ করলে অমানুষ (সাধারণ প্রাণী) হয়ে যায়। এই যা।
@রঞ্জন বর্মন,
দেখেন ভাই আপনি যেভাবে চিন্তা করছেন তাতে মানুষকে শুধুমাত্র একদলা রাসায়নিক পদার্থের মণ্ড ভাবা ছাড়া উপায় নেই।মানুস হয়ত আসলেই তাই,এই কিছুদিন আগ পর্যন্ত ফ্রয়েডের আগ পর্যন্ত মানুষের মনের স্বীকৃতি চিকিৎসা বিজ্ঞান দেয় নাই।এখন সব দেশেই মানুষের মানসিক সাস্থ শারিরিক সাস্থের মতই মুল্যবান । এখন আপনার মত চিন্তা করলে মানুষের মনোজগৎ এবং মানসিক সাস্থ কে ত অস্বীকার করতে হবে,যা আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান এ আর সম্ভব নয়।এখন কি করা?।আপ্নিই বলেন। তবে আপনার চিন্তা থেকে অনেকেই চিন্তার খোরাক পাবে এবং এখানেই আপনার এই লেখার গুরুত্তও আছে,এমন কি যারা আপনার লেখা পরে মার-বিল্লা খেপা খেপেছে তাদেরও।
ধন্যবাদ।আরও লিখুন।
আমাদের জন্মের বিষয়ে আপনার কথার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি। কারন নারী সব সময়ে গর্ভবতী হবার ক্ষমতা রাখেনা ।আর গর্ভধারণ ইচ্ছে করলেই এড়ানো যায়।
@তাওসীফ হামিম,
হা ভাই। আপনার দ্বিমতের কারণ জানতে পারলে আমার কিছু জানা হতো।
হা সব নারী গর্ভবতী হওয়ার ক্ষমতা রাখেন না। কিন্তু সব সময় তা ইচ্ছা পোষণ করেন সমাজে যাতে তাকে আটকুড়ে বা অন্য কোন ভাবে নেগলেট না করা হয়।
অনেক মাকে দেখেছি। কোন না কোন কারণে গর্ভপাত করিয়েছে, এর মধ্যে অনেকেই আছে যে যৌন জীবন টা সন্তান হীন ভাবে মানে ঝামেলাহীন ভবে থাকতে চায়, তাই দেড়িতে সন্তান নেন।
এখানে জন্মটা তো একজন মা এর ইচ্ছা অনিচ্ছাতেই হচ্ছে, তাই না?
বানানের দিকে একটু নজর দিলে পড়াটা আরো মসৃণভাবে এগোত।
@নিটোল, হুম ঠিক বলেছেন আমার কয়েকবার রিভিশন দেওয়া উচিত ছিল।
লেখাটা এক পেশে এবং কিছু কিছু অংশ আপত্তিকর মনে হল যেমন,
জন্ম রহস্যই হচ্ছে উভয়ের মিলন। পশূ, পাখি, কীট, পতঙ্গ সব কিছুর জন্ম প্রকার একরকম। ভবিষ্যত প্রজন্ম না রেখে গেলে পৃথিবী একদিন মানবশূণ্য হয়ে পড়ত। আর প্রাথমিক ভাবে সন্তাকে শিক্ষা দেয়া তো মা বাবারই কর্তব্য। জীবন যাপনের প্রক্রিয়া, সভ্যতা এই তো মা, বাবা শিক্ষা দিয়ে থাকেন। পরবর্তিতে আসে শিক্ষাজীবনের পালা। সেখানে শিক্ষকেরা শিক্ষা, দীক্ষা দিয়ে থাকেন। তবে সন্তানের উপরে নির্যাতন বা জোর করে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া অবশ্যই উচিত নয়। যখন কিনা সে নিজ সিদ্ধান্ত নেবার মত বয়স হয়ে যায়। যাক সে কথা-
কিন্তু, আপনি বলেছেন বাবা, মায়েরা নিজ স্বার্থে জন্ম দেন। একটু বুঝিয়ে বলবেন এই স্বার্থটা কী?
বাবা, মায়ের কর্তব্য জানলাম, সন্তানের কী কী কর্তব্য তাও কিছু বুঝিয়ে বলবেন কি?
আপনার অনেক বক্তব্য ধোঁয়াটে লাগছে বলেই প্রশ্ন। কিছু মনে নিবেন না অনূগ্রহ করে।
@আফরোজা আলম,
বাবা মা (মানে একজন পুরুষ ও মহিলা) তাদের একসাথে থাকার দরকার কি। এটা বায়োলজিক্যাল ফ্যাক্ট আপনি বুঝাতে চেয়েছেন। হা আমিও সেটাই বলেছি। কিন্তু সন্তান এর কাছে কিছু চাওয়ার আশায় কি বাবা মায়েরা সন্তান নেন?
বাবা মা সন্তান জন্ম দিয়েছেন সন্তানের কাছে কি কিছু পাওয়ার আশায়? যদি তাই হয়, তাহলে তো অনেক কর্তব্যই আছে। আর যদি না থাকে তাহলে মা বাবার প্রতি সন্তান স্ব-ইচ্ছায় যা করবে তাই, এখানে বাবা মায়েরা সন্তানের কাছে জোড় করে কোন কিছু আদায় করতে পারে না। এটাই বলেছি।
@রঞ্জন বর্মন,
আপনার জবাবে দারূণ ভাবে হতাশ হলাম। কোনো ব্যক্তিগত আক্রোশই কেবল প্রতিফলিত হচ্ছে আপনার কথায়। মুক্তমনা কথার মানে আপনি এক্কবারেই বুঝতে চাইছেন না , নাকি বুঝেও না বুঝার ভান করছেন জানিনা।
তবে মা, বাবা তথা জন্মদাতা জন্মদাত্রিকে নিয়ে আপনার রচনাটা আসলেই ক্ষতিকর বলে মনে হচ্ছে।
এই বিষয়ে আমি আকাশ মালিকের সাথে একমত।
আদিম যুগ, পরিবারতন্ত্র , সমাজ এসব কিছুই নেই লেখাটায়। খুবই বাজে লাগল লেখাটা।
মুক্তমনায় বোধকরি এতো নিম্নমানের লেখা আর পড়িনি।
@আফরোজা আলম,
আদিম যুগ, পরিবারতন্ত্র , সমাজ এসব কিছুই নেই লেখাটায়। খুবই বাজে লাগল লেখাটা। এগুলো আপনার আমার জানা, তাই বার বার লেখার প্রয়োজন নেই।
আপনি হতাশ হলেন কিন্তু আপনার মন্তব্য বিশ্লেষণও করেন নি যা ভুল হয়েছে এবং কিভাবে তা ভুল হয়েছে। হয়তো লেখাটা নিম্ন মানের হয়েছে। তা হয়তো ঠিক। নিম্ন থেকে উচ্চ হবে। স্বাভাবিক। লেখাতে আদিম যুগ, পরিবারতন্ত্র , সমাজ ভাল হতো। তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু আমরা কিছু সত্যকে সবসময় অস্বীকার করি এটাই আমাদের ওজন বুঝে চলা। বাবা মা কে নিয়ে লেখা গুলো সবারই খারাপ লেগেছে। লাগাটা স্বাভাবিক। আমার একটা প্রশ্ন ছিল (সন্তান এর কাছে কিছু চাওয়ার আশায় কি বাবা মায়েরা সন্তান নেন?) আপনার কাছে তার উত্তর দিলে আমি উপকৃত হতাম। তাতে হয়তো আমার চিন্তাশক্তি আরো অনুন্নত থেকে কিছুটা উন্নত হবে।
যখন বাবা মায়েরা সন্তানের কাছে চাপ প্রয়োগ করেন কোন কিছু চাওয়ার আশায়, সেটা সন্তাদের দেওয়ার ক্ষমতা না থাকলে অনেক বাবা মা বলেন তোকে মানুষ করতে পারলাম না।
আমরা প্রায় বলি কথার কথা। কিন্তু একটা কথা কি খেয়াল করেছেন কথার কথা কন কথা থাকতে পারেনা যদি না আপনার মনে সেটা আসে। অনেক সন্তান বাবার কাছে কোন কিছু চেয়ে না পাওয়াতে ‘কুত্তার বাচ্চা’ বলে গালি দেয়। তাদের এই গালিটা কিছুক্ষণের জন্য মনে মধ্যে আসলেও আসলে গালিটা যে দিয়েছে তাতে তো অস্বীকার করা যাবে না, তার মনে এটা এসেছিল তার বাবা একজন নিকৃষ্ট প্রাণী ছাড়া আর কিছুই না। বাবা যেই সন্তাদের মুখে এমন গালি শোনার পর ঠিক থাকতে পারবেন না আশা করি। কিন্তু এর জন্য দায়ী কে? বাবা, না সন্তান? যদি বাবার হয়, তাহলে বাবা তাকে তার অবস্থা বুঝায়ে সন্তানকে বড় করতে পারেন নি এটাই তার অপরাধ। আর সন্তানের হলে বলবেন সন্তান খারাপ ছেলেদের সাথে মিলে মিশে এমন হয়েছে।
আপনার সোজা কথা যে আপনার এই দৃষ্টি ভঙ্গিটা ভাল লাগে নি। তাই নিম্ন মানের লেখা বলেছেন। এর পিঠে যদি আপনাকে জানতে চাওয়া হয় কেন। এতে আপনার সহযোগিতা করার মানসিকতা থাকলে ভুল গুলো ধরিয়ে দেওয়ার সাথে সাথে শুদ্ধ গুলো বলে দিন। তেমন টা হয় নি। ধন্যবাদ।
মাঝে মাঝে সত্যি কথাটাই আমরা অনেকে সহজভাবে নিতে পারিনা।নিজেরা যদি মুক্তচিন্তাই না করতে পারি তাহলে কিভাবে আমরা নিজেদের মুক্তমনা মনে করতে পারি।ঘরের ভিতর থেকে জানালার বাইরে যা দেখবো তাই যদি আমরা গোটা পৃথিবী ধরে নেই তাহলে কিভাবে হবে?
আমার কাছে লেখাটা যথেষ্টই যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছে।লেখকের কাছ থেকে এমন আরও লেখা আশা করছি।
বিষয়টি আমার কাছে পরিস্কার নয়।
@গীতা দাস,
এখানে ঐ হিন্দু ভদ্র মহিলা বুঝাতে চেয়েছে যে, যে আদর্শ নিয়ে প্রথমে প্রণাম করেছিল, অতীতে মুসলিম থাকার কারনে সে আদর্শ আর টেকেনি তার মনের ভিতরে এবং মন কষ্ট নিয়ে ধিক্কার দিয়ে বেড় হয়ে এসেছে সে। এবং বিদায় নেওয়ার সময় সে দেখাও করেনি।
সে মুসলিম থেকে হিন্দু হয়েছে এটাই তার অপরাধ।