যৌন অবিশ্বস্ততা সম্পর্কিত খবরের প্রতি মানুষের আগ্রহের পরিমাণ বোধহয় সবচাইতে বেশী। কোথাও কোন পরকীয়া, সেক্স ভিডিওর খবর আসলেই সবাই সেটার উপর ঝাপিয়ে পরে। এ ধরণের ঘটনাকে মনে মনে ঘৃণার চোখে দেখলেও আবার এর খুটিনাটি না জানা পর্যন্ত কারও শান্তি হয় বলে মনে হয় না। কারও কারও এসকল ঘটনার প্রতি রীতিমত দুর্নীবার আকর্ষণ (obsessed) থাকে। আর সে কারণেই ব্লগে ব্লগে, সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রভার বিয়ে, প্রভার সেক্স ভিডিও, রুমানা-তাহিরের ছবি সম্বলিত খবরের এত ছড়াছড়ি দেখা যায়। একই খবর নিয়ে ২০টা পোস্ট আসলেও সবগুলো পোস্ট হিটের ভারে নুহ্য হয়ে পরে। আগ্রহটা যে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের অনেক বেশী থাকে সেটা মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন সংস্কৃতির পুরুষ এবং নারীদের মধ্যে চালানো তুলনামূলক সমীক্ষা থেকে একটি জিনিষ খুব পরিষ্কার ভাবে প্রতীয়মান হয় যে নারীদের তুলনায় পুরুষরা বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্কের ( EMS – Extra Marital Sex) ক্ষেত্রে অধিক মাত্রায় আগ্রহী। শুধুমাত্র বৈচিত্রের কারণেই ভিন্ন ভিন্ন সম্পর্কে জড়িয়ে পরার আগ্রহ নারীদের তুলনায় পুরুষদের মাঝেই বেশী দেখা যায়। EMS এ জড়িয়ে পরার কারণ হিসাবে নারীদের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই বৈবাহিক জীবনে অশান্তি কিংবা একটি দীর্ঘস্হায়ী স্হিতিশীল সম্পর্ক স্হাপনের ইচ্ছার প্রাধান্য লক্ষনীয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে অস্হায়ী (casual) সঙ্গিনী বেছে নেবার ক্ষেত্রে খুব একটা বাছ-বিচার করতে দেখা যায় না যেটা নারীরা করে থাকেন তাদের সঙ্গী নির্বাচনের সময়। উদাহরণ হিসাবে লেখক-গবেষক জ্যারেড ডায়ামন্ড উল্লেখ করেন যে তিনি নিউ গিনির যে সমস্ত পাহাড়ি অধিবাসীদের সাথে কাজ করতেন তাদের মধ্যে একজন পুরুষের EMS খোঁজার পেছনের কারণ হিসাবে প্রায়ই দেখা যেত যে সে তার স্ত্রী বা স্ত্রীদের সাথে সেক্স করতে একঘেয়ে বোধ করত। অন্যদিকে যে সমস্ত নারীরা EMS এ জড়িয়ে পরত তাদের প্রধান কারণ ছিলো যে তাদের স্বামীরা তাদের যৌন চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম ছিলো না। অনেক সময়ই স্বামীদের বেশী বয়স ছিলো এর অন্যতম প্রধান কারণ।
একটি অনলাইন ডেটিং সার্ভিসের জন্য পূরণ করা সমীক্ষায় প্রশ্নপত্রে শত শত আমেরিকান তরুণ তরুণী দেয়া উত্তর থেকে জানা যায় যে প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রেই মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় প্রায় সবক্ষেত্রেই একজন অধিক যোগ্য সঙ্গী পেতে চায় যেমন বুদ্ধিমত্তা, সামাজিক অবস্হান, নাচের সঙ্গী, ধর্ম, গোত্র ইত্যাদী। একমাত্র যে ক্ষেত্রটিতে মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা বেশী খুঁতখুঁতে ছিলো সেটি হলো দৈহিক সৌন্দর্য্য। ডেটিং শেষে তথ্য সংগ্রহের জন্য চালানো আরেকটি সমীক্ষার উত্তর থেকে দেখা যায় যে মেয়েদের তুলনায় প্রায় আড়াই গুণ বেশী ছেলে তাদের কম্পিউটার কতৃক নির্বাচিত সঙ্গিনীর প্রতি রোমান্টিক্যালি আকর্ষণ বোধ করেছে। এথেকে বোঝা যায় যে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনেক বেশী খুঁতখুঁতে আর ছেলেদের মধ্যে বাছবিচার করার প্রবনতা কম।
খুব সঙ্গত কারনেই মানুষের কাছে EMS সম্পর্কে তাদের নিজস্ব মনোভাব জানতে চাইলে সৎ উত্তর আশা করাটা সমিচীন হবে না। কিন্তু পরোক্ষভাবে সেটা খুব সহজেই বুঝতে পারব যদি আমরা সমাজে প্রচলিত (EMS সম্পর্কিত) মানুষের আচার এবং আইনের-কানুনের প্রতি তাদের মনোভাবের প্রতি দৃষ্টি নিবেশ করি। নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে সমাজের কিছু অতি প্রচলিত কপটাচারী এবং ধর্ষকামী রীতিনীতির উৎপত্তি হয় EMS খোজার লক্ষ্যে মানুষ যে দুটি মৌলিক সমস্যার সম্মুখীন হয় তা থেকে। প্রথমতঃ একজন পুরুষ যখন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে আগ্রহী হয় তখন সে দুটি জিনিষ নিশ্চিত করতে চেষ্টা করে। এক, অন্য নারীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের চেস্টা এবং নিজের স্ত্রীকে অন্য পুরুষদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ রহিত করা। দ্বিতীয়তঃ পুরুষদের জন্য একটা যুক্তিসঙ্গত জৈব বিবর্তনিক মানসিক-ভীতি (paranoia) যাতে করে তাকে কোকিলের মত করে কেউ যেন তাকে বোকা বানাতে না পারে।
একটি লক্ষনীয় বিষয় হলো পুরুষেরা যত বেশীদিন বাঁচে তাদের মধ্যে EMS এর প্রবণতা তত বেশী বাড়তে থাকে। ১৯৯২ সালের আমেরিকার Health and Social life কতৃক চালানো এক গবেষণায় দেখা যায় ১৮-২৯ বছর বয়সী ছেলেদের তুলনায় ৫০-৫৯ বছর বয়সী পুরুষদের মধ্যে EMS এ জড়িয়ে পরার পরিমাণ প্রায় পাঁচগুণ বেশী। ছেলেদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই প্রবণতা বাড়তে থাকে। অন্যদিকে মেয়েদের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা সব বয়স গ্রুপেই মোটামুটি একই পর্যায়ে থাকে যা কিনা সাধারণতঃ ছেলেদের তুলনায় বেশ কম।
সমাজে প্রচলিত বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক সম্বন্ধিত আইনগুলা আমাদের একটা পরিস্কার ধারণা দেয় পুরুষরা কিভাবে এই দোদুল্যমান অনিশ্চিয়তার সমাধান করার চেস্টা করে থাকে। খুব সাম্প্রতিক অতীত ছাড়া ইতিহাসের পাতায় নজর দিলে হিব্রু, মিশরীয়, রোমান, এজটেক, আরবীয়, আফ্রিকান, চাইনীজ, জাপানীজ, এবং অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক সম্পর্কিত আইনগুলা বস্তুতপক্ষে সামঞ্জস্যহীণ। এই সমস্ত আইনের অস্তিত্বের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে বিবাহিত পুরুষের পিতৃ পরিচয় সুনিশ্চিত করা। এগুলোর আর কোনই উদ্দেশ্য নেই। ফলশ্রুতিতে এ সমস্ত আইন অনুযায়ী ব্যভিচারের সংজ্ঞা নির্ধারিত হয় EMS এ অংশগ্রহণকারী মেয়েটির বৈবাহিক স্ট্যাটাসের উপরে। একই সম্পর্কে অংশগ্রহণকারী পুরুষটির স্ট্যাটাস এখানে গুরুত্বহীণ। একজন মহিলা কতৃক EMS করাকে তার স্বামীর বিরুদ্ধে অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হয়। স্বামী এক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার রাখে। যার মধ্যে অনেক সময়ই সহিংস প্রতিশোধ অথবা অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণ সহ তালাক দেবার ব্যবস্থা থাকে। একজন বিবাহিত পুরুষ কতৃক EMS তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অপরাধ হিসাবে গৃহীত হয় না। বরঞ্চ সে সম্পর্কের নারীটি যদি বিবাহিত হয় তবে সেই নারীর স্বামীর বিরুদ্ধে নারীটি অপরাধ করেছে বলে গণ্য করা হয়। আর সে যদি অবিবাহিত হয় তবে অপরাধটি তার পিতা কিংবা ভাইয়ের বিরুদ্ধে করা হয়েছে বলে গণ্য করা হয়। এর কারণ বিয়ের বাজারে পাত্রী হিসাবে মেয়েটির মূল্য কমে যাওয়া।
১৮১০ সালে প্রচলিত একটি ফরাসী আইনের আগে পুরুষ কতৃক EMS এর বিরুদ্ধে কোন অপরাধ আইন ছিলো না। এবং সেই আইনেও শুধুমাত্র স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে কোন বিবাহিত লোক স্ত্রীর সাথে বসবাসরত একই বাসায় কোন রক্ষিতাকে রাখতে পারবে না বলে নিশ্চিত করা হয়। মানব জাতির ইতিহাসের দৃষ্টিকোন থেকে প্রায় একই রকমের আধুনিক পশ্চিমা ব্যভিচার আইনের উৎপত্তি হয়েছে মাত্র গত দেড়শ বছরে। এমনকি বর্তমান সময়েও আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডের মত দেশেও আইনবিদ, বিচারক, এবং জুরীরা EMS এ অংশগ্রহণকারী কোন স্ত্রী বা তার সঙ্গীটিকে যদি স্বামী হত্যা করে তবে তাকে খুনের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি না দিয়ে সর্বনিম্ন শাস্তি দিয়ে থাকে। কখনও কখনও সে নির্দোষ হিসাবে ছাড়াও পেয়ে যায়।
পিতৃত্ব নিশ্চিত করা এবং পুরুষটির আত্মবিশ্বাস বজায় রাখার জন্য সবচাইতে জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেত চীনের ট্যাং সাম্রাজ্যের সম্রাটরা। সম্রাটের শত শত স্ত্রী এবং রক্ষিতাদের মাসিকের হিসাবে নিয়মিত রাখত একদল রাজ কর্মচারী যাতে সম্রাটের সাথে তার স্ত্রীর মিলনের পর তার স্ত্রী সন্তান সম্ভবা হতে পারে। যৌন মিলনের তারিখের হিসাবও রাখা হত। এর সাথে সাথে সম্পূরক হিসাব রাখার জন্য স্ত্রীটির বাহুতে একটি অমোছনীয় উল্কিও এঁকে দেয়া হত। সেই সাথে বা-পায়ে পরিয়ে দেয়া হত একটি রুপোর বালা। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে সম্রাট ছাড়া অন্য পুরুষদের হারেম থেকে দূরে রাখার জন্য প্রায় একই রকমের জটিল ব্যবস্থা নেয়া হত । অন্যান্য সংস্কৃতির পুরুষদের মধ্যে এর চেয়ে কম জটিল কিন্তু আরও বেশী বিবমিষা সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমে স্ত্রীদের সতীত্ব নিশ্চিত করার চেষ্টার উদাহরণ পাওয়া যায়। স্ত্রী, কন্যা কিংবা বোনরা যাতে কোনরকম সুযোগ না পায় এরকম ব্যবস্থা নেয়ার উদাহরণ খুব সাধারণ। উদ্দেশ্য অবিবাহিত মেয়েদের কুমারিত্বের নিশ্চিত করণের মাধ্যমে বিয়ের বাজারে তাদের মূল্য বজায় রাখা। এর মধ্যে তুলনামূলক ভাবে কম আপত্তিকর এবং উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হলো মেয়েদের সারাক্ষনই অভিভাবকের সাথে চলাফেরা করা কিংবা আক্ষরিক অর্থেই বন্দী দশার মধ্যে জীবন যাপন করা। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলাতে এই ধরণের উদ্দেশ্য মেটানোর জন্য আছে বহুল প্রচলিত ‘Honour and Shame’ কোড। যার সহজভাষায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায় EMS হলো আমার জন্য কিন্তু তোমার জন্য না। আর তুমি যদি সেটা কর তবে সেটা আমার জন্য সন্মানহানির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
কঠোর পদক্ষেপের মধ্যে ঊল্লেখযোগ্য হলো “মেয়েদের খৎনা” যা কিনা একটি সুশীল কিন্তু ভুল অর্থে ব্যবহৃত শাব্দিক পরিভাষা । এই প্রক্রিয়ায় মেয়েদের যৌনাঙ্গের ক্লিটরিস অথবা যৌনাঙ্গের বাইরের অংশের (Labia Majora) বেশিরভাগটাই কেটে ফেলে দেয়া হয় যাতে করে মেয়েদের সেক্সের ব্যাপারে (বৈবাহিক কিংবা অবৈবাহিক) আগ্রহ কমে যায়। পুরুষরা মেয়েদের সতিত্ব নিশ্চয়তার জন্য এতটাই মরিয়া যে তারা মেয়েদের যৌনাঙ্গের কিছু অংশ সেলাই করে বন্ধ করার (Infibulation) মত ভয়াবহ পদ্ধতির আবিস্কার করেছে যাতে সেক্স করা সম্ভব না হয়। সেলাই করে বন্ধ করে দেয়া যৌনাঙ্গ প্রয়োজন অনুযায়ী সন্তান প্রসবের সময়ে বা অন্যান্য প্রয়োজনের সময়ে আবার খুলে দেয়া সম্ভব। স্বামী যখন লম্বা সময়ের জন্য দূরে কোথাও কাজে কিংবা ভ্রমনে যায় তখন সাধারণতঃ সেলাই করে বন্ধ করে দেয়ার কাজটি করা হয়। মেয়েদের খৎনা এবং সেলাই করে যৌনাঙ্গ বন্ধ করে দেয়ার এই প্রচলন এখনও আফ্রিকা, সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়া সহ পৃথিবীর ২৩টি দেশের অনেক গোত্রের মাঝে চালু আছে।
ব্যভিচার সম্পর্কিত আইন এবং বলপূর্বক নিব্রত রাখার প্রচেষ্টা সত্বেও পুরুষটি যদি নিশ্চয়তা পেতে ব্যর্থ হয় শেষ উপায় হিসাবে বেছে নেয় হত্যার পথ। আমেরিকা সহ পৃথিবীর বহু শহরে চালানো সমীক্ষা থেকে জানা যায় যৌনতা সম্পর্কিত ঈর্ষা খুনের পিছনের খুবই কমন একটি কারণ। সাধারনতঃ খুনী হয় স্বামী এবং খুন হয় স্ত্রী অথবা তার প্রেমিক। অথবা প্রেমিক খুন করে স্বামীকে। নিচের টেবিলে ১৯৭২ সালে আমেরিকার ডেট্রয়েট শহরে সংঘটিত কিছু খুনের বিশ্লেষন দেখানো হয়েছে।
BREAKDOWN OF MURDERS CAUSED BY SEXUAL JEALOUSY IN THE US CITY OF DETROIT IN 1972
Total 58 murders
47 Murders precipitated by jealous man
Jealous man killed the unfaithful woman: 16
Jealous man killed the rival man: 17
Jealous man was killed by the accused woman: 9
Jealous man was killed by the accused woman’s relatives: 2
Jealous man killed unfaithful homosexual male lover: 2
Jealous man killed innocent bystander accidentally: 1
11 Murders precipitated by jealous woman
Jealous woman killed the unfaithful man: 6
Jealous woman killed the rival woman: 3
Jealous woman was killed by the accused man: 2
রাজনৈতিক রাস্ট্র ব্যবস্হা গড়ে ওঠার আগে যৌনতা সম্পর্কিত ঈর্ষার কারণে মানব ইতিহাসে অনেক বড় বড় যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে প্যারিস কতৃক মেনেলসের স্ত্রী হেলেনকে অপহরণনের জন্য সংঘটিত ট্রয়ের যুদ্ধ বিশেষভাবে উল্লেখ যোগ্য। আধুনিক নিউগিনিতে শূকরের মালিকানা সম্পর্কিত সংঘর্ষের পরেই যৌনতা সম্পর্কিত ঈর্ষার কারণে বিভিন্ন গোত্রের মাঝে সবচাইতে বেশী যুদ্ধ হতে দেখা যায়।
জীববিজ্ঞানীদের মতে অসামঞ্জস্যপূর্ন আইন, স্ত্রীদের হাতে উল্কি এঁকে দেয়া, আক্ষরিক অর্থেই গৃহবন্দী করে রাখা, মেয়েদের যৌনাঙ্গ কর্তনের মত পদক্ষেপের পিছনে জৈব-বিবর্তনিক ব্যাখা পাওয়া যায়। উদ্দেশ্য একটাই বেশী বেশী উত্তরসূরী রেখে যাওয়ার প্রতিযোগীতায় জিতে যাওয়া। কিন্তু একটা জিনিষ মনে রাখা প্রয়োজন আমরা আমাদের জন্যে নৈতিক মানদন্ড এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করতে সক্ষম যা কিনা অনেক সময়ই বিবর্তনীয় লক্ষ্যের অন্তরায়। আমি জানি এই পর্যায়ে এসে অনেকই ভাবতে শুরু করেছেন আমি বোধহয় মানুষের এই সমস্ত ব্যবহারের যৌক্তিকতা নির্ধারণ করার চেষ্টা করছি। আসলে ব্যাপারটা মোটেও সেরকম নয়। কোন একটি জিনিষ ঘৃণিত কিংবা প্রশংসিত হোক না কেন কিভাবে উদ্ভব হল সেটা জানাটা আমাদের জন্য জরুরী। আমরা যখন কোন একটা অপরাধের মোটিভ খোঁজার চেষ্টা করি তার মানে এই না যে আমরা সেটাকে যৌক্তিকতা দেয়ার চেষ্টা করছি। বরং কারণটা জানতে পারলে তা রোধ করা অনেক সময় অনেক সহজ হয়ে যায়। আর তাছাড়া আমরা আমাদের বিবর্তনে প্রাপ্ত বৈশিষ্ট্যের দ্বারাও সবসময় নিয়ন্ত্রিত নই। যে কারণে মেয়েদের যৌনাঙ্গ সেলাই করে বন্ধ করে দেয়াটা বিবর্তনের দৃষ্টিতে লাভজনক হলেও আমরা সেটাকে যে কারণে প্রত্যাখ্যান করি সেটা হচ্ছে একজন মানুষ কতৃক আরেকজন মানুষের অঙ্গহানী করা নৈতিকভাবে কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সূত্র: Jared Diamond এর The third Chimpanzee বইটি এবং মেডিসিন্নেট ডট কম।
নারী মহান সবসময়ই এই বার্তা নারী সকলেই সম্মিলিত উদ্যোগে বিশ্ববাসীকে মূর্হুমুহু করতালির মাধ্যমে জানিয়ে দিন।
@একেএম আসাদুজ্জামান,
@একেএম আসাদুজ্জামান,জানালে অসুবিধা কোথায়? আপনার মনে হয় তাতে সমস্যা আছে?
অনেক আগে Oprah Winfrey এর টক শো তে female genital mutilation/cutting (FGM/FGC) বা মেয়েদের খৎনার সম্পর্কে প্রথম শুনেছিলাম। অনেকদিন পর এই লেখাটি পড়ে আবার এই ভয়াবহ প্রথা এর কথা মনে পরলো। আমি একটু নেট-এ এই বিষয়ে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান দেখতে গিয়ে কয়েকটি প্রবন্ধের সাথে পরিচিত হই। পরে আরো সময় নিয়ে গভীরভাবে সেগুলো পড়বো। কিন্তু একটি আলোচনার একটি অংশ আমার মনে নতুন প্রশ্ন জাগিয়েছে,
আমার কাছে কোনো হাদিস-এরই কোনো কপি নাই। তাই কেউ যদি এই মেয়েদের খৎনার উপর কোনো হাদিস বা রেফারেন্স জেনে থাকেন, দয়া করে একটু জানাবেন।
আরেকটি তথ্যবহুল প্রকাশনা পেলাম, Fact Sheet No.23, Harmful Traditional Practices Affecting the Health of Women and Children।
লিংক এখানে।
(উপরের লিংকে গিয়ে বাংলাদেশ লিখে সার্চ করতে পারেন। রেজাল্ট দেখে হয়তো আপনার মুখে একটু হাসি আসতে পারে)।
@নির্মিতব্য,
মাত্র কিছুদিন আগেই এখানে কোন একজনকে দিয়েছিলাম, যাক এই নিন-
(Sunan Abu-Dawud: Book 41, Number 5251)
Narrated Umm Atiyyah al-Ansariyyah:
A woman used to perform circumcision in Medina. The Prophet (peace_be_upon_him) said to her: Do not cut severely as that is better for a woman and more desirable for a husband.
আরো জানতে এখানে একটু গুঁতো মারুন-
তারপর এখানেও দেখতে পারেন-
httpv://www.youtube.com/watch?v=r74dvMkNjqE
@আকাশ মালিক,
খুবই ভীতিকর! যারা বাংলাদেশে জন্মিয়েছেন বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তাদের খুশি হওয়া উচিত যে এই সুদান, সোমালিয়া এই দেশগুলোতে জন্ম হয় নি! ইরানে মেয়েদের পাথর মেরে হত্যার সময় বুক পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখে আর ছেলেদের কোমড় পর্যন্ত; আফ্রিকা এর মুসলিম অধ্যুষিত দেশ এ এখনো মেয়েদের খৎনা হয়- আর এগুলো ইসলাম oppose ও করে (ভিডিও তে ১:১৭) আবার support ও করে (ভিডিও তে ১:৪৯)!!! “FGM has been documented in individuals from many religions, including Christians, Muslims, and Jews. – American Academy of Pediatrics.”
@আকাশ মালিক,
ইসলামে পুরুষের খৎনার উৎপত্তি কিভাবে? সময় করে নিরপেক্ষ তথ্য উৎস (লিংক-টিংক) পাঠালে একটু জানতে পারতাম। ধন্যবাদ।
@কিশোর,
ইসলামের তথা কোরানের উৎপত্তি ও উৎস যদি হয় তাওরাত, জবুর, ইঞ্জিল তাহলে খৎনার উৎপত্তিটা সেখানেই খুঁজতে হবে। সেই সকল ধর্মগ্রন্থে বর্ণীত কাহিনির সবগুলো চরিত্র কাল্পনিক। পাতালপূরী রাজকন্যা, রাক্ষস-খোক্কস, সুয়োরাণী দুয়োরাণী, আলী বাবা চল্লিশ ডাকাত, সিন্ড্রেলা বা হ্যারি পটার এর কাহিনি আর ঐ ধর্মগ্রন্থ সমুহের কাহিনি একই।
মুসাকে ঈশ্বর হুকুম দিলেন তার ছেলের নুনুর আগা কেটে ফেলার। মুসা রাজী হলেন না। ঈশ্বর রাগে গোস্বায় তলোয়ার ছুরি চাকু নিয়ে স্বশরীরে মুসার সামনে হাজির, তাকে খুন করবেন। নুনুর রক্তপাগল ঈশ্বরকে খুশী করতে আর মুসাকে বাঁচাতে তার স্ত্রী ধারালো পাথরের টুকরো দিয়ে নিজের ছেলের নুনুর মাথার চামড়া কাটলেন। ঈশ্বর খুশী হলেন, মুসাকে ছেড়ে দিলেন। ইব্রাহিমের বেলায়ও প্রায় একই ঘটনা। This is my covenant with you and your descendants after you, the covenant you are to keep: Every male among you shall be circumcised. You are to undergo circumcision, and it will be the sign of the covenant between me and you. For the generations to come every male among you who is eight days old must be circumcised, including those born in your household or bought with money from a foreigner–those who are not your offspring. He that is born in thy house, and he that is bought with thy money, must needs be circumcised: and my covenant shall be in your flesh for an everlasting covenant. (জেনেসিস ১৭, ১১-১৩) ইসমাইলের জন্মের পরে ইব্রাহিম নিজের নুনুর মাথার চামড়া কাটেন। আজিকার দিনে খৎনা বিহীন মুসলমান কল্পনা করা যায় না, মুহাম্মদের সময়ে একরম ছিলনা। এ নিয়ে ইতিহাসবিদ, তাফসিরকারক, ইমাম ও ইসলামী শাসকদের মধ্যে হাজার প্রকার কন্ট্রাডিকসন, মতবিরোধ ঝগড়া ঝাটি হয়েছে। আহমেদ ইবনে হাম্বল ও তাবারী দেখে নিবেন। মুহাম্মদ নিজে খৎনা করান নাই। শুনা যায় তিনি নাকি নুনুর মাথা কাটা নিয়েই জন্মেছিলেন। কে তার নুনুর সাক্ষী আল্লায়ই জানে। আমার মনে হয়না এসব ছোটখাটো বিষয়, পুরোনো ধর্মীয়-সামাজিক প্রথা বা ইবাদত বন্দেগী নিয়ে মুহাম্মদ মাথা ঘামাতেন, তার সেই সময়ও ছিলনা। (ঈশ্বর ভুলভাবে নুনু তৈরী না করলেও পারতেন। তার ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশার্থে নুনু শব্দটা ব্যবহার করলাম)
@আকাশ মালিক,
🙂 অনেক ধন্যবাদ।
:lotpot:
@কিশোর,
যদিও আকাশ মালিক উত্তর দিয়েছেন, ভাবলাম আরেকটু অন্যভাবে বলি। সব আব্রাহামিক ধর্মেই ছেলেদের খৎনা এর কথা কম বেশী আছে। তবে এর উৎপত্তিস্থল এখনো পরিস্কার নয়। ইহুদি ধর্মে ইশ্বরের মুখের নির্দেশে, ৬১৩ টি commandment এ, সরাসরি ছেলেদের খৎনা-এর কথা আছে।
সেই হিসাবে যখন যিশু-এর জন্ম হয় তখন তিনি ইহুদি হওয়ায় তাকেও শিশুকালে খৎনা এর মধ্যদিয়ে যেতে হয়। কিন্তু খ্রিস্টান ধর্মের প্রথম দিকে খৎনা করতে বা না করতে কোনো কিছু বলে নি। অনেক আফ্রিকান দেশে খ্রিস্টানরা খৎনা করে কারন যিশু এর খৎনা ছিল তাই। কিন্তু খ্রিস্টান চার্চ এটাকে ভাল চোখে দেখে না।
এরই ধারাবাহিকতায় ইসলাম ধর্মে খৎনা আসে। কোরানের কোনোখানে খৎনা করার কথা নেই। কিন্তু হাদিসে খৎনার কথা আছে, আর মুসলিমরা এটা সুন্নত হিসেবে পালন করে।
আকাশ মালিকের কাছে থেকে জানলাম মোহাম্মদের খৎনা ছিল না। তাহলে এটা হাদিসে এলো কি করে, যদি একটু বলতেন। 🙂
“হে মুক্তমনারা, তোমরা google করো, যদি তা করতে না চাও তাহলে অন্য মুক্তমনাদের প্রশ্ন করো। নিশ্চয়ই তোমাদের মাঝে এমন আছে যে তোমার প্রশ্নের উত্তর জানে।”
@নির্মিতব্য,
হাহাহা, ধন্যবাদ। আসলে এখানকার মুক্তমনাদের কাছে কোনকিছু জিজ্ঞাসা করলে নিরপেক্ষ এবং গোছানো উত্তর বাংলা ভাষাতেই পাওয়া যায়। তাই google করার কথা পরে ভাবি 😉 । আরেকটা ছোট প্রশ্ন : ঐসব ধর্মগ্রন্থের কোথাও কি খৎনার পক্ষে কোন যুক্তি/কারণ (যেমন: পরিচ্ছন্নতা, লিঙ্গের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ইত্যাদি ) উল্লেখ করা আছে?
@কিশোর,
আমার জ্ঞান উইকি পর্যন্তই। আমি ওখান থেকে লিংক থেকে লিংক-এ যাই। ধর্মীয় বিষয় ধর্মীয় গুরুদের ব্যখ্যা আমার পড়ার ধৈর্য্য এখনো হয় নি। কিন্তু ভবিষ্যতে আরো পড়ব। এই মুহুর্তে আপনাকে একটা উল্লেখযোগ্য তথ্য দিতে পারি যেটা আমাকে একটু ধাঁধায় ফেলেছে। ছেলে ও মেয়ে উভয়ের খৎনা একটি আফ্রিকান আদিবাসী জাতির মধ্যে দেখা যায়, যারা মাসাই নামে পরিচিত। এরা খৎনা হলেই কেবলমাত্র একটি ছেলে বা মেয়েকে পূর্ণবয়স্ক পুরুষ বা নারী হিসেবে দেখবে। ছেলেদের খৎনা হবার সময় কোনো রকম আওয়াজ, ব্যথা পাওয়ার লক্ষণ মানেই সে দূর্বলচিত্তের পুরুষ। এখন এরা মেয়েদের খৎনা করে কিছু কুসংস্কার বা ভুল ধারণা থেকে, যেমন মেয়েদের যৌনাংশের বাইরের দিক ছেলেদের জন্য ক্ষতিকর, প্রসবরত বাচ্চার মাথায় বাইরের অংশ লেগে গেলে বাচ্চার ক্ষতি। এমনকি, খৎনা না হওয়া মেয়ে যদি মা হয় তাকে মাতৃতের স্বীকৃতি দেয় না। মাসাই ছেলেরা খতনা না হওয়া মেয়েকে বিয়ে করতে চায় না। আবার মাসাই সমাজ খুবই পুরুষতান্ত্রিক। মেয়েরা গরুর দুধ সংগ্রহ করে, রান্নার কাঠ জোগার করে, রান্না করে সব মেয়েদের কাজ। গর্ভবতী মা-এর কাজ করতে হয় না, আবার তার ঐ অবস্থায় sex করাও নিষেধ।
এই পর্যন্ত সব ঠিক আছে, হয়তো এমনি একটি জাতি থেকে আব্রাহামিক ধর্মগুলো খৎনা এর সামাজিকতা বেছে নিয়েছে। যেখানে মেয়েদের যন্ত্রণা দেবার যত নিয়ম আছে তা কমিয়ে বাড়িয়ে ধর্মের রীতি-নীতিতে যোগ করেছে। কিন্তু মাসাই জাতি আবার বহুগামী, ছেলে মেয়ে উভয়ি। শুধু তাই না, মেয়েরা বহুস্বামী রাখতে পারে। মেয়েদের যখন বিয়ে হয় তখন তারা তাদের স্বামী এবং স্বামীর বয়সি সকল ছেলেকে বিয়ে করে। যদি স্বামীর বয়সি অন্য লোক বাড়িতে বেড়াতে আসে, তাহলে স্বামীকে অতিথির জন্য তার বিছানার জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। এখন যদি স্ত্রী চাই, সে ঐ লোকের সাথে রাত যাপন করতে পারে। যদি ঐ সংগম থেকে শিশু জন্মায় তা স্বামীর সন্তান হিসেবে পরিচিত হবে। এখন এর একটা কারণই আমার আমার কাছে পুরো বিষয়টা গ্রহনযোগ্য করে, তা হলো, মাসাইদের শিশু জন্মহার খুব কম। এতো কম যে এরা জন্মানোর তিন চাঁদ না পার হলে নবজাতককে recognize করে না। আর খৎনা টা এদের নিজেদের সামাজিক বিষয়।
এখন কেনিয়া, তানজানিয়া, যেখানে মাসাইরা বেশী থাকে সেখানে মেয়েদের খৎনা আইনত নিষেধ। এটা বন্ধ করার জন্য অনেক সংগঠন কাজ করছে। খুবই recently মাসাইদের Female genital Cutting এর পরিবর্তে “Cutting with Words” এর জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। কত কি যে পড়ার আছে। আমার জানতে ইচ্ছা করে, কোন রীতি আগে আসছে, মাসাইদের খৎনা নাকি আব্রাহামিক ধর্মের, বিশেষ করে ইহুদীদের খৎনা।
– যদি অন্য কেউ জবাব দিত, ভালো লাগতো।
@নির্মিতব্য,
অতি চমকপ্রদ তথ্য। বিভিন্ন লিংক থেকে পড়ে, বুঝে বাংলায় অনুবাদ করে গুছিয়ে লেখাটা খুব কাজ সহজ নয়। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আসলেই জানার আছে অনেক কিছু 🙂
@আকাশ মালিক, আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ কস্টকরে তথ্য এবং রেফারেন্সগুলি কমেন্টে যোগ করার জন্য। (F) (F) (F) (F)
@হোরাস,
আপনার এই অসাধারণ লেখাটা আজ চোখে পড়ল। কী করে পড়ল সে কথায় না গিয়ে বলছি অপূর্ব ব্যাখ্যা
দিয়েছেন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক এবং পুরুষ আধিপত্যবাদ নিয়ে। আবার ও পড়ার ইচ্ছে থাকল। আপনার লেখাটা রেফারেন্স হিসাবে কাজ করতে পারে।
তারিখ দেখলাম ২৮ ডিসেম্বর ২০১১।
অঃটঃ-সেই সময় আমাদের পরিবারের উপরে ঝড় বয়ে চলেছে। ছোট বোনের ক্যান্সার নিয়ে-
থাক সে সব। যদিও সেই ঝড় এখনও থামেনি। তাই তখন মুক্তমনা কেন মনে হয় সারা জগতের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন ছিল। তাই পড়া হয়ে ওঠেনি। আজ পড়লাম। দারূণ লাগল। সত্য এবং সুন্দর সব সময় শ্বাশত।
জানিনা ভুল বলেছি কিনা।
দুর্দান্ত লেখার জন্য- (F) (F) (F)
@আফরোজা আলম,
আশা করি আপনার বোন এখন ভাল আছেন?
@আফরোজা আলম, ধন্যবাদ, দেরী করে হলেও পড়ার জন্য এবং আপনার ভাললাগাটুকু জানিয়ে যাবার জন্য। আপনার পরিবারের দুঃসময় পুরোপুরি কেটে যাল সেই আশাবাদ রইল।
বিশ্বস্ততা ভঙ্গ করা সব কালেই ছিল, এখনো আছে। এখন এর আদ্যপান্ত ও বিজ্ঞানমনস্ক ব্যাখ্যা পেয়ে ভালো লাগলো। পরকীয়া বন্ধে মধ্যযুগীয় বর্বরতার ইতিকথা জেনে শিউড়ে উঠেছি।
ধন্যবাদ হোরাস। চলুক। (Y)
@বিপ্লব রহমান, ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।
এ যুগেও আছে। যদিও আপনি জানেন তবুও স্মরণ করিয়ে দেয়ার চান্সটা মিস করলাম না। পাথর ছুড়ে মারার ভিডিওতো হরহামেশাই পাওয়া যায়। কানাডায় এখন একটা চলমান মামলা বেশ আলোচিত হচ্ছে। এখ আফগানী তার বড় মেয়ে এক ভেনেযুয়েলানের সাথে প্রেম করায় শুধু সেই মেয়েকে না তার ছোট আরও দুই বোনকে খুন করেছে। যাতে ভবিষ্যতে ছোট দুটি বড়টার রাস্তা ধরতে না পারে। মেয়েদের বয়স কত ছিলো জানেন। ১৯, ১৭ আর ১৩।
অনার কিলিং। হায়রে অনার।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে এই জীবনে নারীদের পরিত্রানের কোন উপায় নাই। :-Y যাক লেখাটি পড়ে অনেক কিছুই জানা গেলো। ধন্যবাদ।
@ব্রাইট স্মাইল্,
প্রথমে বলতে চেয়েছিলাম কোন জনগোষ্টির শিক্ষার এবং মাথাপিছু আয়ের হার বাড়ানো হয়ত পরিত্রাণের উপায় হতে পারে। তার পরে সৌদি বর্বর গুলার কথা মনে পরায় সে আশাও বাদ দিলাম।
🙁
@হোরাস
লেখাটি পড়ে ভালো লাগল।
হ্যাঁ, থাং রাজবংশের আমলে (Tang Dynasty, 618 –907) প্রাসাদ-নারীদের EMS মুক্ত রাখতে প্রাসাদে কর্মরত পুরুষ কর্মচারীদেরকেও খোঁজা (castrating) করে দেওয়া হত। অবশ্য বুড়ো বৈদ্যরা মাফ পেয়ে যেত কোনভাবে। আহা, সম্রাটের কী অপার মহানুভবতা :guru:
সত্যিই মর্মান্তিক। তবে সেলাই করার এবং তা নিজে নিজেই খুলে ফেলার ব্যপারটাতে কেমন খটকা লাগছে। এই প্রসঙ্গে আমার একটি চুটকি (নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে “চটকৌ” == চটি কৌতুক) মনে পড়ে গেল। “ইহা” খুব একটা শ্লীল না হলেও চটকৌতে উত্থাপিত একটি প্রশ্ন আমার কাছে প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে।
এইচ এম লুলশাদ সাহেব একদা বিদেশ ভ্রমনের প্রাক্কালে তাঁর অন্যতমা প্রিয়তমার সাথে মিলিত হলেন। স্বভাব চরিত্রে প্রেয়সী তাঁর সমকক্ষা এবং “লুলত্বের” হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে পিছপা হতে নিতান্তই নারাজ। যথারীতি রসকেলী সমাপিয়া তাই তাঁর সন্দিহান বাণী: ওগো,
“দূরত্বে আমায় তুমি না যেও ভুলে,
পর-লিঙ্গে কাম-তোড়ে না বসো শূলে।”
এই বলে লুল সাহেব প্রেয়সীর গুপ্ত-দ্বার সেলাই না করে দ্বারের বাম পাশে একটা হংসের ছবি এঁকে দিলেন। যাতে পর-লিঙ্গ দ্বারস্থ হলে হংস-বিম্ব মুছে গিয়ে ব্যভিচারের প্রমাণ হয়ে ফুটে থাকে। মহীয়সী প্রেয়সীও কম যান না। তিনি লুল সাহেবের তৃপ্তি-ক্লান্ত তখনো দণ্ডায়মান বিষবৃক্ষের গোঁড়ায়, সেনানী কায়দায় কাটছাঁট করা গহন বৃন্দাবনের পাশে অতি সুন্দর করে একটি বাঁদর এঁকে দিলেন। এরপর বিদায়ের পালা। দুদিন বাদেই যা হবার তাই হল। প্রেয়সী পতিতা হলেন অন্তর্যামী নিজামী মামার বাহুডোরে এবং বেকায়দা মামার শ্মশ্রু-ঘর্ষণে ঐ হংস-বিম্ব অজান্তেই বিলকুল বিলুপ্তি পেল। ধূর্ত নিজামী কাজ সেরে মুছে যাওয়া হাসটাকে আবার এঁকে দিয়ে খুশি মনে বাড়ি ফিরলেন। ওদিকে লুলসাহেবও বিদেশ-বিভূঁই-এ হালি কয়েক বিদেশিনী “ঝিকঝিক” নিয়ে পূর্ণ করলেন বাসনা । তিনিও মুছে যাওয়া বাঁদরটিকে নতুন করে এঁকে নিলেন। তবে অতি-অত্যাচারে ন্যাতানো বৃক্ষের পাদদেশে সুবিধা করতে না পেরে তাড়াহুড়ায় বাঁদর আঁকলেন বৃক্ষের মাথায়। এরপর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং চোখে মুখে “ধোয়া তুলসীপাতা” ভাব ধরে চোর-খুঁতখুঁতে মনে দুজনের মিলন-পূনর্মিলনী। প্রেয়সী লুল-প্রেমিকের বাঁদরের দিকে একনজর তাকিয়েই হাঁফ ছেড়ে মুচকি হাসলেন। লুল কিন্তু হংস দর্শনে অগ্নিশর্মা। হাসটা কি করে বাম পাশ থেকে ডান দিকে চলে গিয়েছে। তাই দেখে প্রেয়সীর প্রত্যুৎপন্নমতি প্রশ্ন: প্রিয়ে,
” বাঁদর যদি পারে লম্ফে গাছেতে চড়িতে,
কি দোষ হংসের, সাঁতরায়ে এই খাল পাড়ি দিতে?”
@কিশোর, :lotpot: কৌতুকের ভাষাটি বেশ চমৎকার। (Y)
@ব্রাইট স্মাইল্,
ধন্যবাদ, প্রথমদিকে ভয়ে ছিলাম অশ্লীলতার দায়ে চটকৌটি “সেন্সর” হয়ে যায় কিনা :-s
@কিশোর,
:hahahee: :hahahee: :hahahee:
@কিশোর,
আপনার লেখার মত আপনার মন্তব্যও দারুন আকর্ষনীয়। মুক্তমনায় আপনার নিয়মিত অংশগ্রহণ কামনা করছি।
বাই দ্য ওয়ে, মডারেটরের পক্ষ থেকে সম্ভবতঃ আপনাকে লগ ইন তথ্য পাঠানো হয়েছে আপনার ইমেইল একাউন্টে। লগ ইন করে মন্তব্য করতে পারেন।
@অভিজিৎ,
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আসলে সেই ২০০১ সাল থেকেই আমি মুক্তমনার নিয়মিত পাঠক। এতদিন লেখার সাহস ও সময় করে উঠতে পারি নি। তবে আমার ব্যক্তিগত জীবনে এই সাইট-টির প্রভাব খুব গভীর। সত্যি বলতে কি, আপনার একটা লেখা পড়েই আমি জীবনে প্রথম গোমাংসের স্বাদ নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে সমর্থ হই। হাহাহা। যাহোক, আমার প্রিয় এই সাইটে ব্যবহারকারী হিসাবে গুপ্ত নম্বর পেয়ে সত্যি সম্মানিত বোধ করছি। এখন থেকে নিয়মিত লেখার চেষ্টা করব।
@কিশোর, খুব মজাদার গল্পটি। ধন্যবাদ।
@মাসুদ রানা,
🙂
@মাসুদ রানা,
:))
@কিশোর, হা হা হা … আপনার চটকৌটি খুবই চমৎকার। ভাবছি আপনার চটকৌ’র মত করে মেয়েরা ছেলেদেরটা যদি সেলাই করে দিত তাহলে কেমন হত?
@হোরাস,
:)) ছেলেদেরটা সেলাই করলে কাজের কাজ কি কিছু হবে? আবার সব ছেলেদেরকেই বা কিভাবে সেলাই করা যাবে? :-s ব্যাপারটা কৌশলগত ভাবে একটু জটিল, তবে মাথা খাটালে কী না হয়? 😀
@কিশোর, (Y) :lotpot:
বিবাহ বহির্ভূত সম্পরক-শিরনাম দেখে ভাবলাম পরকিয়া, পড়ে দেখি নারী নির্যাতন । শিরোনাম মনে হয় “যুগে যুগে নারী নির্যাতন এর স্বরূপ ” হলে ভাল হত। যেখানে নারীকে গরু ছাগলের মত হাযার হাযার একসাথে রাখা হয় সেখানে সম্পর্ক কথায়?।এ ত ভয়াবহ নারী নির্যাতনের ইতিহাস!!। কত টি গরু , কতটি ছাগল আর কতটি নারী, এই ছিল বাহাদুরের বাহাদুরি। এধরনের বাহাদুরদের কি এসব নারির সাথে কোণ সম্পর্ক ছিল নাকি?।থুক্কু যৌন সম্পর্ক ছিল!!এর জন্যেই কি শিরোনাম ” বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক”!!! সম্পর্ক শব্দটার অপমান করা হোল না?
@সপ্তক, পোস্টের শিরোনাম নিয়ে আমিও বেশ দ্বিধাদ্বন্দে ছিলাম। আসলে পোস্টে নারী নির্যাতনের মাত্র একটি দিক নিয়ে আলোকপাত করেছি বলে শিরোনামে এই কথাগুলো দিতে চাইনি। তবে আপনার সাথে আমিও একমত ওটাই হয়ত আরও ভাল শিরোনাম হত। ভাবছি এখন পরিবর্তন করে দেব কিনা!!
@হোরাস,
”বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক এবং পুরুষ আধিপত্যবাদ” শিরোণামটিতে পুরুষ আধিপত্যবাদ শব্দদ্বয় পড়েই মনে হয়েছে নারী নির্যাতন থাকবেই। কাজেই নামটি পরিবর্তন নিয়ে না ভাবলেও চলবে, তবে এর আর সম্প্রসারিত লেখা চাই। অর্থাৎ লেখাটি ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাবার অনুরোধ করছি। বিভাগে নারীবাদ উল্লেখ করার অনুরোধ রইল।
@গীতা দাস,
“বিভাগে নারীবাদ উল্লেখ করার অনুরোধ রইল।”
দিদি নারীবাদ বা নারীবাদী শব্দগুলো আমরা কেন ব্যভহার করব?।নারী কি অন্যরকম মানুষ?। নারীবাদ বা নারীবাদী এসব শব্দ ব্যভহার করে আমরা কি নারীকে মানুষ বানাতে চাই?, নাকি নারী জন্মগত ভাবেই মানুষ?। এমনিতেই ত অনেক শব্দ আছে যা আমরা আজও অভিধান থেকে মুছে ফেলতে পারি নাই , যেমন জারজ,বিধবা,পতিতা… ইত্যাদী। বোঝা আর কত বাড়াব আমরা?,শুধু নারী শব্দটিই থাক না আমাদের জন্য।
@গীতা দাস, ধন্যবাদ আপনার ইনপুটের জন্য। শিরোনাম বদলানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করলাম।
@ হোরাস,
মেয়েদের খৎনা এবং সেলাই করে যৌনাঙ্গ বন্ধ করে দেয়ার এই প্রচলন এখনও আফ্রিকা, সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়া সহ পৃথিবীর ২৩টি দেশের অনেক গোত্রের মাঝে চালু আছে।
ভয়াবহ! এখনও যে এই প্রথা চালু আছে, এটার কি আর কোন রেফারেন্স আছে?
চমৎকার একটি লেখা।
@হেলাল, মেয়েদের খৎনার ব্যাপারটা আয়ান হিরসী আলীর নিজের জীবনেই ঘটেছে। তিনি এটা তার ইনফিডেল বইতে লিখেছেন।
এখানে একটা লিস্ট দিলামঃ
A one sheet handout consisting of a world map and list of countries where FGM is allegedly practiced:
“AFRICA: Algeria, Benin, Burkina Faso, Central African Republic, Chad, Djibouti, Egypt, Eritrea, Ethiopia, Gambia, Ghana, Guinea, Guinea Bissau, Ivory Coast, Kenya, Niger, Nigeria, Mali, Mauritania, Senegal, Sierra Leone, Somalia, Sudan, Togo, Tanzania, Uganda and Zaire; (27 countries).”
“ASIA: Indonesia, Malaysia, Philippines, Sri Lanka, the Bohra Muslims of India and the Muslims in Thailand; (7 countries).”
“MIDDLE EAST: Muslims From Iraq, Jordan, Oman, Yemen, Parts of Saudi Arabia, Syria, and the United Arab Emirates; (7 countries).”
“CENTRAL AND SOUTH AMERICA: Some regions of Brazil, Eastern Mexico and Peru; (3 countries).”
সূত্রঃ Canada: Female Genital Mutilation — Workshop Manual
ঊইকির এই লিঙ্কে উভয় পদ্ধতি সম্পর্কে তথ্য জানতে পারবেনঃ http://en.wikipedia.org/wiki/Female_genital_mutilation
@হোরাস,কতগুলো দেশের জনগোষ্ঠি’কে মুসলিম বলে সম্বোধন করা হয়েছে। কিন্তু এই ভয়াবহ রীতি’র সাথে যদি ধর্মের কোন কানেকশন থেকেই থাকে তবে Burkina Faso, Central African Republic, Gambia, Ghana, Guinea, Guinea Bissau, Ivory Coast, Kenya, Niger, Mali, Mauritania, Senegal, Sierra Leone, Togo, Tanzania, Uganda and Zaire, Philippines,
Brazil, Eastern Mexico and Peru এইসব দেশের জনসংখ্যার সাথে খ্রিস্টান বা অন্য কোন ধর্মাবলম্বীদের নাম উল্লেখ করা হলো না কেন? এটা কোন ধরনের ফ্যাব্রিকেশন?
কতটুকু শিক্ষিত হলে মানুষ সাম্প্রদায়িক ঘৃণামুক্ত হতে পারে?
@প্রজন্ম৮৬,
ASIA: Indonesia, Malaysia, Philippines, Sri Lanka, the Bohra Muslims of India and the Muslims in Thailand; (7 countries)
এই লাইনটা পড়ে আমি যা বুঝলাম, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া মুস্লিম দেশ হওয়া সত্বেও তাদের আগে মুসলিম যোগ করা হয়নি কারণ সম্ভবতঃ মুসলিম ছাড়াও অন্য সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝেও এই প্রাক্টিস দেখা যায়। অন্যদিকে ইন্ডিয়ার শুধু বোহরা মুসলিমস এবং থাইল্যান্ডের শুধু মুসলিমদের মাঝে হয়ত এই প্রাক্টিস প্রচলিত। আমি লেখা পড়ে যা বুঝলাম তাই বললাম।
আর মিডলইস্টের দেশগুলোর শুধুমাত্র মুসলিম গোত্রের মানুষের মাঝেই হয়ত এটা সীমাবদ্ধ। আমি জানিনা। আপনি যে দেশগুলোর কথা বলছেন হয়ত সেসব দেশে কোন নির্দিষ্ট একটি ধর্মীয় বা জাতি গোষ্ঠির মধ্যে এটা সীমাবদ্ধ নয়।
আপনার জানা থাকলে রেফারেন্স সহ সংশোধন করে দিতে পারেন। আমি চেষ্টা করব কানেডিয়ান প্রতিষ্ঠানকে এটলিস্ট একটা ইমেল পাঠাতে যাতে তারা তাদের তথ্য সংশোধন করে।
বিবর্তন আর মানুষেট সজ্ঞানে তৈরি লক্ষ্যের পার্থক্যটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে
কথাটার ট্রুথ স্ট্যাটাস নিয়ে সন্দেহ আছে। যোগসংযোগটা ঠিক পরিষ্কার না।
@রূপম (ধ্রুব), যে পুরুষটি এই কুকর্মটি করছে তার পারস্পেক্টিভ থেকে এটা লাভজনক । সে নিশ্চিত করে যে সে ছাড়া আর কারও উত্তরসূরী যেন জন্মাতে না পারে। ব্যাপারটা আরেকটু পরিষ্কার করে বলা দরকার ছিলো বুঝতে পারছি।