বোন আর ভগ্নিপতি বাসা থেকে বেরিয়ে যেতেই দরজার ছিটিকিনিটা আটকে দেয় রফিক। বিছানার পাশে লাজরাঙা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জুঁই। প্রত্যাশায় উন্মুখ। স্বামী যে দুবাই থেকে তাকে না বলে উড়ে চলে আসবে, সে কথা স্বপ্নেও ভাবে নি সে। ননদ নাইমা মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বলেছিলো যে, রফিক দুবাই থেকে তার জন্য উপহার সামগ্রী পাঠিয়েছে। সেগুলো নিতেই নরসিংদী ছেড়ে ঢাকায় এসেছিলো সে। আসার পরেই অবশ্য ননদ জানায় যে, “ভাইয়া কিছু পাঠায় নি। এমনিতেই আসতে বলেছি তোমাকে।” ননদের প্রতারণা রাগ হয়েছিলো খুব। বাড়ি চলে যেতে চেয়েছিলো জুঁই সাথে সাথেই। সামনে পরীক্ষা। তার প্রস্তুতি নিতে হবে। কিন্তু ননদের স্বামী তার মিলিটারী গোঁফ মোচড়াতে মোচড়াতে অভিযোগের সুরে বলেছিলো, “ভাবিসাব আমগোরে পর ভাবেন। তাই থাকতে চান না।”
এরপর আর সহজে আসা যায় না। থাকতে হয়েছিলো ওখানে। কিন্তু আজ ভোরে হঠাৎ করে সুটকেস হাতে রফিককে ঘরে ঢুকতে দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছে সে। এই চমক দেবার জন্যই ননদ আর তার স্বামী যে মিথ্যা কথা বলে ঢাকা আনিয়েছে বুঝতে অসুবিধা হয় না তার। আনন্দে তরুণী হৃদয় পূর্ণ হয়ে যায় তার। নাইমার প্রতি যে রাগ পুষে রেখেছিলো এ কদিন, তা নিমেষেই ভুলে যায় সে।
রফিক আসার পরেই তড়িঘড়ি করে ননদ আর তার স্বামী বের হয়ে যায় বাড়ি থেকে। ননদের চলে যাওয়াতে একদিকে লজ্জা পায় জুঁই, আবার মনে মনে খুশিও হয়। নাহ, বুদ্ধি আছে দজ্জাল ননদিনীর। দরজার কাছ থেকে জুঁইয়ের দিকে এগিয়ে আসে রফিক। লজ্জায় আরো নত হয়ে যায় জুঁইয়ের মুখ। বুকটা ধড়াস ধড়াস করছে তার। জুঁইয়ের একেবারে কাছে এসে গাঢ়স্বরে রফিক বলে, “তোমাকে একটা সারপ্রাইজ দেবো।”
না বলে দুবাই থেকে রফিকের উড়ে আসাটাই তারজন্য সবচেয়ে বড় সারপ্রাইজ। এটিকেই হজম করতে পারছে না সে। আর কী সারপ্রাইজ রফিক দেবে কে জানে?
“কী সারপ্রাইজ?” অস্ফুটস্বরে জিজ্ঞেস করে সে।
“চোখ বন্ধ করতে হবে আগে। তারপর দেবো।” রফিক বলে।
“ঠিক আছে চোখ বন্ধ করছি। দাও এবার।” সত্যি সত্যিই চোখ বন্ধ করে সে। চোখ বন্ধ করে অবশ্য লাভই হয়। লজ্জায় চোখ খোলা রাখতেই সমস্যা হচ্ছিলো তার এতক্ষণ। নিজের অজান্তেই বুজে যাচ্ছিলো সেগুলো।
“উঁহু, এভাবে হবে না। তুমি চোরা চোখে দেখবা।”
জুঁইয়ের গায়ের আরো কাছে চলে আসে রফিক। ঘন হয়ে নিঃস্বাস পড়ছে। উত্তপ্ত, আগুনের হল্কার মতো। জুঁইয়ের নিজেরও নিঃস্বাস গাঢ় হয়ে আসছে। পা দুটোকে দুর্বল লাগছে। মনে হচ্ছে হাঁটু ভেঙে পড়ে যাবে সে। অপেক্ষা আর সহ্য হচ্ছে না। গলার কাছে রফিকের পুরুষালী হাতের স্পর্শ পায় জুঁই। অজান্তেই কেঁপে উঠে শরীরটা তার। অস্ফুট গোঙানির শব্দ বেরিয়ে আসে কণ্ঠ দিয়ে। গলা থেকে ওড়নাটা খুলে নেয় রফিক। মনে মনে হাসে জুঁই। পুরুষ মানুষ। কী করবে সহজেই অনুমান করা যায়।
ওড়নাটা খুলে নিয়ে জুঁইয়ের চোখ বেঁধে দেয় রফিক।
“উ করে শব্দ করে জুঁই। এতো জোরে বাধছো কেনো? ব্যথা পাচ্ছি যে? ডাকাত নাকি?”
“হু, ডাকাতইতো।” শব্দ করে হাসে রফিক।
“ওরে আমার গব্বার সিং। কী ডাকাতি করবে শুনি। নিজের ঘরে কেউ ডাকাতি করে বুঝি?” ভেংচি কেটে তরল গলায় বলে জুঁই।
“বললাম না সারপ্রাইজ দেবো। বুকের অনাবৃত অংশে রফিকের হাতের স্পর্শ পায় জুঁই। গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে তার। শরীরের সমস্ত পশমগুলো খাড়া হয়ে গিয়েছে। রফিকের কিলবিল করা আঙুলগুলো নীচের দিকে না গিয়ে উপরের দিকে উঠতে থাকে। গলার কাছে এসে শক্ত করে চেপে ধরে। চমকে উঠে জুঁই। এ যে ভালোবাসার নরম হাত নয়। ঘৃণার কর্কশ হাত সেটা বুঝতে বিন্দুমাত্রও অসুবিধা হয় না তার। অজানা আশংকায় কেঁপে উঠে সে। অবোধ্য একটা অর্ধ চীৎকার বেরিয়ে আসে তার গলা দিয়ে।
‘মানা করার পরেও কলেজ ছাড়িস নাই ক্যান মাগি।‘ গলায় চাপ বসিয়েই হিসহিস করে উঠে রফিক।
‘সামনে পরীক্ষা। পরীক্ষাটা দিয়েও ছেড়ে দেবো। এবারের মত মাফ করে দাও।‘ আতংকিত গলায় বলে জুঁই।
‘ক্যান আগে ছাড়তে সমস্যা কী? তুই কী ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হবি? আমি কী কম কামাই করি যে, তোর পড়ালেখা কইরা চাকরি করণ লাগবো?’ জুঁইয়ের চুল মুঠি করে ধরে সজোরে টান দেয় রফিক।
ব্যথায় আর্ত চীৎকার বেরিয়ে আসে জুঁইয়ের গলা থেকে। চীৎকার ঠেকাতে পকেট থেকে রুমাল বের করে রফিক। তারপর সেটা পুরে দেয় জুঁইয়ের মুখে। টেনে হিঁচড়ে তাকে নিয়ে আসে টেবিলের পাশে। জুঁইয়ের ডান হাতটাকে বিছিয়ে দেয় টেবিলের উপর। তারপর আলতো করে হাত বুলায় ওই হাতে।
‘এই হাত দিয়ে লেখাপড়া করো তুমি তাই না? খুবই খারাপ কথা। এই হাতই একদিন তোমারে বেয়াড়া বানাবে। আমার কথা শুনবা না তখন। এখনই শোনো না। আরো বড় বিদ্বান হওয়ার পরতো পাত্তাই দিবা না। তাই না? ক্ষ্যাপার মত হাসে রফিক।
মাইয়া মানুষের এত পড়ালেখা দিয়া কী হইবো? আমিতো ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বিয়া করি নাই। করছি কী? করতে চাইলেতো পারতামই। পারতাম না কও? কত পাবলিকে তাগো ডাক্তারি পড়া মাইয়া লইয়া ঘুরছিলো আমার লগে বিয়া দেওনের লাইগা। করি নাই। বাপের ব্যাটা আমি একখান। লাত্থি দিয়া বাইর কইরা দিছি ওইগুলারে। এখন বিয়া বসবো, কিন্তু পরে আমারে ছোটো চোখে দেখবো। তোমারে বিয়া করছিলাম এই লাইগা যে, তুমি আমার কথা শুনবা। স্কুলে পড়া মাইয়া, ওগো মত পাংখা গজায় না। এখন দেখতাছি তোমারও ডানা গজাইতাছে।‘
মাথা এদিক ওদিক করে কিছু বলতে চায় জুঁই। মুখ বাধা থাকায় শব্দ বের হয় না।
‘একটু আগে না বলছিলা আমি গব্বার সিং কি না? হ, আমি গব্বার সিং। তোমারও হাত কাইটা লমু আমি সিনেমার লাহান।‘ জুঁইয়ের কানের কাছে ফিসফিস করে বলে সে।
‘মুঝে ও হাত দিয়ে দে জুঁই, মুঝে ও হাত দিয়ে দে।‘ গব্বার সিং এর মত নাটকীয় গলায় চেচিয়ে উঠে রফিক। জুঁইয়ের ডান হাতটাকে শক্ত করে চেপে ধরে আছে সে টেবিলের উপরে।
কিছু বুঝে উঠার আগেই ডান হাতে তীব্র ব্যথা অনুভব করে জুঁই। ধারালো ছুরির পোঁচ বসিয়ে দিয়েছে রফিক ওখানে। হাত থেকে কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতেই জ্ঞান তীব্র যন্ত্রণায় জ্ঞান হারায় জুঁই।
এতক্ষণ যা বললাম, তা গল্প নয় সত্যি ঘটনা। হাত কাটার পরে সেই কর্তিত কব্জিকে ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করে রফিক। হাত কাটার পরেই ঘরে ফিরে আসে তার বোন এবং ভগ্নিপতি। রক্তাক্ত জুঁইকে হাসপাতালে নেবার বদলে রক্ত পরিষ্কার করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে তার ননদ। কাতর অনুনয় বিনয়ের পরে কয়েক ঘন্টা পরে মন গলে তাদের। নিয়ে যায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই জুঁই ডাক্তারদের মাধ্যমে খবর পাঠায় তার বাবা-মাকে। তার বাবা, মামা এবং এক মামাতো ভাই ছুটে আসে হাসপাতালে। সেখান থেকে তারা জুইকে নিয়ে যায় পঙ্গু হাসপাতালে। জুঁইয়ের স্বামীও তাদের সঙ্গ নেয়। পঙ্গু হাসপাতালের ডাক্তাররা যখন জিজ্ঞেস করে কী ঘটেছিলো, তখন এই গাড়ল রফিক বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করে। বলে যে, তারা জুঁইয়ের হাত কেটে ফেলেছে। সবাইতো আর রফিকের মত খেঁজুর পাতা খায় না। ডাক্তারদের ধাতানি খাবার পরে অবশেষে সব স্বীকার করে রফিক। ডাক্তাররা তখন কাটা হাত উদ্ধারের জন্য সাহায্য চায় তার। তাকে সহ পঙ্গু হাসপাতালের লোকেরা সন্ধান চালায় সেই ডাস্টবিনে। তবে মাত্র চারটা আঙ্গুল খুঁজে পায় তারা সেখানে। বাকিটা পাওয়া যায় নি। চার আঙুল নিয়ে হাসপাতালে ফিরে আসার পরে অবশ্য ডাক্তাররা কোনো সুখবর দিতে ব্যর্থ হয়। দীর্ঘ সময়ের কারণে জুঁইয়ের কাটা আঙুলগুলোর কোষগুলো মরে গিয়েছে। ওই আঙুলগুলোকে আর জোড়া দেওয়া যাবে না।
বাংলাদেশে হঠাৎ করেই মনে হচ্ছে যেনো নারীর উপর পুরুষের পৈশাচিক আক্রমণ বেড়ে গিয়েছে। মাত্র কিছুদিন আগেই রুমানার নাক কামড়ে ছিড়ে ফেলেছে তার স্বামী সাইদ। আঙুল ঢুকিয়ে গেলে দিয়েছে তার দুই চোখ। ভদ্রমহিলা এখন চির অন্ধ। সেই ঘটনার জের কাটতে না কাটতে আবার জুঁইয়ের ঘটনা। এই সমস্ত ঘটনা কেনো ঘটছে এবং এর পিছনের কারণগুলোকে চিহ্নিত করার সময় এসে গিয়েছে জরুরী ভিত্তিতে। এইভাবে এক বদমাশ পিশাচের কবলে পড়ে সম্ভাবনাময় একেকটা মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। সমাজে যদি চিড়িয়া থাকে, তবে তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের করতে হবে তাদের। তারপর ঘাড়ে ধরে পাঠিয়ে দিতে হবে চিড়িয়াখানায়। সমাজটা মানুষের জন্য, জানোয়ারদের জন্য নয়।
জুঁই জানিয়েছে যে, সে লেখাপড়া ছাড়বে না। বা হাতে লিখতে শিখবে। তারপর পড়াশোনা শেষ করবে। রুমানা ইতোমধ্যেই ব্রেইল শিখতে লেগে গিয়েছেন। এর মাধ্যমেই পিএইচডি শেষ করবেন তিনি। আমি এই সাহসিকতাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু, এই সাহসিকতা আমার কাম্য নয়। আমি চাই মেয়েরা আঘাত পাবার আগেই আঘাত করা শিখুক। কেউ তাদের উপর চীৎকার করলে, দ্বিগুণ শব্দে তারাও চেচাক। ভিড়ের মধ্যে কেউ তাদের কোমল অংশে হাত দিলে, লজ্জা শরমের তোয়াক্কা না করে তারাও সেই লোকের শক্ত জায়গায় মুঠো সবল করে সজোরে আঘাত করুক। ধর্ষণ করতে আসলে ধারালো ব্লেড দিয়ে কেটে নিক ধর্ষণোদ্যত ধ্বজটিকে। কেউ আঙুল দিয়ে চোখ তুলতে আসলে, চুলের কাঁটা খুলে নিয়ে তারাও চোখ খুলে নিক আক্রমণকারীর।
একটা বিষয় আমাদের মেয়েরা খুব সম্ভবত জানে না। অত্যাচারী পুরুষের মত কাপুরুষ পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। দুর্বলের উপর দুঃশাসন চালাতে এদের জুড়ি নেই। এদেরকে শায়েস্তা করতে শুধু দরকার সামান্য একটু সাহসের। ওইটুকু নিয়ে রুখে দাঁড়ান। দেখবেন বঙ্গোপসাগরের বানের জলের সাথে ভেসে যাবে ওইসব বীরপুঙ্গবেরা।
জুঁই এখন বাম হাতে লেখার চেষ্টা করছেন। আর রফিক সাহেব হয়তো শাস্তি পাবেন বড় জোর কয়েক বছরের জেল। তারপর আবার বিয়ে করবেন অন্য কোন জুঁইকে। তিনি যা করেছেন সেটাই ‘পুরুষত্ব’ বলে বিবেচিত হবে কারো কারো কাছে।
(আমার মন্তব্য ছাপা হয় না, মুক্তমনার নীতিমালার সাথে কীভাবে বৈরীভাবাপন্ন-কিছুই বুঝলাম না, ভগ্নহৃদয় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে, তথাপি প্রাণের কথা বলতেই ইচ্ছে করে, ছাপা না হওয়ার সম্ভাবনা সত্ত্বেও)
মেয়েটির করুণ ঘটনাটি সেদিনই পড়েছিলাম পত্রিকাতে, নিদারুণ ক্ষুদ্ধ হয়েছিলাম ঐ সাইদ-রফিকের মত মনুষ্যদেহবিশিষ্ট শয়তানদের উপর, কিন্তু, তারচেয়ে কষ্ট হয়েছিল আরো অনেক বেশি। কারণ, একের পর এক এমন বর্বর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছে, আর আমরা কিছুই করতে পারছি না, শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছি। সাইদ আত্মহত্যা না করলে হয়ত তার বিচার হত, শাস্তি হত- রফিকের হয়ত সাজা হবে বিচারে- কিন্তু, তাতে কী হবে? রুমানা-জুঁইদের শারীরিক পঙ্গুত্ব মানসিক কষ্ট কি মোছা যাবে একটুও? সাইদ-রফিকের কোনো সাজাই রুমানা-জুঁইদের ক্ষতির ক্ষতিপুরণ হতে পারে না।
কিন্তু, ব্যাপারটির সমাধান কি হতে পারে?
অনেকে বলেছেন মেয়েদেরকে পাল্টাঘাত দিতে শিখতে হবে, এবং আরো আজব আজব কিছু অসমাধান সমাধান সাজেস্ট করেছেন।
কিন্তু, এগুলো আদৌ কি বাস্তবসম্মত, নাকি শুধু ব্লগর-ব্লগর?
আবার,
ঠিক, ঐ সমস্ত বর্বর নির্যাতকেরা সত্যিই প্রচন্ড কাপুরুষ। দিনের আলোতে তারা তাদের ঐ সমস্ত কুকাজগুলি করার সাহস পাবে না। বিবেক সম্পন্ন মানুষদের উপস্থিতিতেও নয়। তাই সে নিজের মনের মত পরিবেশের অপেক্ষা বা তৈরি করে, যেখানে তার পশুত্ব কেউ দেখবে না।
কিন্তু, এদেরকে শায়েস্তা করতে শুধু দরকার সামান্য একটু সাহসের। ওইটুকু নিয়ে রুখে দাঁড়ান। দেখবেন বঙ্গোপসাগরের বানের জলের সাথে ভেসে যাবে ওইসব বীরপুঙ্গবেরা।-এটা কি কোন রকম বাস্তবসম্মত সমাধান, নাকি স্রেফ ব্লগর ব্লগর?
জুঁই-এর পরিস্থিতিটাই একটু কল্পনা করুন, কাপুরুষ শয়তানটা মেয়েটাকে ছলনার আশ্রয় নিয়ে দূর্বল করেছে, ফ্ল্যাটটিকে ফাঁকা করেছে-মেয়েটির সাহস থাকলে কি হত? ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারত আরো- এই যা। কোথায় সুযোগ ছিলো তার রুখে দাঁড়াবার? এইভাবে বর্বরেরা সবসময় সু্যোগের অপেক্ষা করতে থাকে বা সু্যোগ তৈরি করে নেয়।
রাস্তার কাপুরুষ ছিন্তাইকারীরা সশস্ত্র কয়েকজনে মিলে তখনই কোনো মানুষকে ধরে যখন ভিক্টিম কোন দিক দিয়ে সাহায্য পাবে না, যতই বডিবিল্ডার-আনআর্মড কম্বেটর হোক না কেন; সে তখন অসহায়। এইসব আপাত ভয়াল-দর্শণ কাপুরুষেরা মানুষের দূর্বলতার সুযোগে দানব হয়ে ওঠে, ত্রাস সৃষ্টি আর হুমকি প্রদর্শণ হয় তাদের একমাত্র অস্ত্র। কিন্তু এদের হাতে মানুষ জিম্মি। এদেরকে মুহুর্তেই চুরিয়ে ফাটিয়ে বঙ্গোপসাগরের বানের জলের সাথে ভাসিয়ে দেওয়ার কল্পনা কেবল ব্লগের পাতাতেই মানায়।
একদম খাঁটি কথা।
কিন্তু,
…কতটুকু সম্ভব? বাস্তবতা চিন্তা না করে ফাঁকা গগনবিদারী চিৎকারের মত লাগছে না কথাগুলো?
মূল ব্যাপারটা অন্যখানে- দূর্বলের উপরে সবলের অত্যাচার- নৃ ইতহাসের আদি সমস্যা। আমরা ‘সভ্যতা’ নামক বাহ্যিক কাভার তৈরি করলেও সমস্যাটি ব্যক্তিভেদে বিভিন্ন ভাবে আছে-ছিল-থাকবে। এ এক বিবর্তনীয় বাস্তবতা। এই নির্যাতন গুলো উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর কোনো কার্যকর উপায় আছে বলে আমি মনে করি না। আইন করে, শাস্তি বিধান করে বা ততক্ষণাৎ ব্লেড দিয়ে পুরুষাংগ কেটে দিয়ে বা অন্ডকোষ চেপে অবস্থার কিছু পরিবর্তন করা যাবে না। তবে নারী এবং যারা অফেন্সের শিকার অধিকার সচেনতার শিক্ষা, সার্বিক মানবাধিকার চর্চার উন্নয়ন, সুস্থ্য নৈতিকতার জ্ঞান চর্চা এ জাতিয় ঘটনার আধিক্য কিছু কমাতে পারে মাত্র। আর উন্নত মূল্যবোধের সমাজের বিবর্তন- সেটা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার, যা সার্বজনীন সুশিক্ষার প্রচলন আর ধর্মকেন্দ্রিক নৈতিকতাজ্ঞানের বিলোপ সাধিত হওয়ার পর আসবে। এর আগে নির্যাতনমুক্ত সমাজ পাওয়া- মনে হয় অসম্ভব।
এই ধরনের পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধে শুধু নারীদের পাল্টা জবাব দিলে হবেনা কারন অনেক সময় নারী পুরুষের সাথে পেরে নাও উঠতে পারে। এই ক্ষেত্রে নারীর আরও বেশী ক্ষতি হতে পারে। তাই আমি মনে করি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধে রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসা জরুরী ।রাষ্ট্র যেই পদক্ষেপগুলো নিতে পারে তা হল ১। স্কুল কলেজের সিলেবাসে পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধের বিষয়ে সচেতনতামুলক পাঠ অন্তর্ভুক্ত করা।
২। পারিবারিক নির্যাতনকারীদের দ্রুত বিচার ও শাস্তির মুখোমুখি করার জন্য বিশেষ আদালত তৈরি করা।
৩। নারীদের প্রতি নির্যাতন কারীদের প্রতিরোধের জন্য প্রতিটি গ্রামে একটি করে কমিটি গঠন এবং এই কমিটিতে কোন ধর্মান্ধ ও অশিক্ষিত মানুষকে স্থান না দেয়া।
৪। প্রত্যেক নারীকে এই ব্যাপারে সচেতন, সাহসী , প্রতিরোধী করে তোলার জন্য বিয়ের সময় কাজীদের বিশেষ দায়িত্ব প্রদান করা। বিয়ের কাবিন নামার সাথে নারী নির্যাতন প্রতিরোধের জন্য কি কি করনীয় তার বর্ণনা সম্বলিত লিফলেট জুড়ে দেওয়া।
আশা করি উপরোক্ত ব্যবস্থা সমুহ গ্রহন করলে ২য় কোন জুই ট্রাজেডি আমাদের পড়তে হবেনা।
খুব সুন্দর একটা লেখা হইছে। এই ধরনের নির্যাতনের শিকার সকল নারীকুলের উদ্দেশে আমি বলব নচিকেতার সেই গানের ভাষায়
“প্রতিবাদ প্রতিরোধে নামায় জীবন
লক্ষে পৌঁছে তবে থামায় জীবন”
ধিক্কার রফিক…
আপনার কর্মকাণ্ডে নিজেকে ‘পুরুষ’ ভাবতেও ঘিন্না করছে…
আপনি আর যাই হোন না কেন ‘মানুষ’ না
জুই…
আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি
@কান্ত পথিক, ওই ব্যাটা রফিক কে আবার “আপনি” বলতে হবে কেন? সে কি “আপনি” শোনার যোগ্য?
@লেখক,
আপনি যেটা তুলে ধরতে চেয়েছেন সেটার প্রথম অংশটা খুব গুরুত্বপূর্ণ… যদিও এমন ঘটনা নতুন নয় আর আসলে আমরা খুব কমই করতে পেরেছি এর প্রতিকারে…
দেখুন, মাথা ব্যথা করলে মাথা কেটে ফেলা সমাধান নয় … তবে কখনো কখনো হাত বা পা-এর কোনো অংশে পচন ধরলে যেন তা অন্য অংশে বিস্তার লাভ করতে না পারে তাই সেটা কেটে ফেলতে হয়..
মূল কথায় আসি… একটি মেয়ে পুরুষ নির্যাতনের নির্মম শিকার হয়েছে … কিন্তু এই লেখা থেকে জানলাম মেয়েটির ননদ -ও কম দোষী নয়… সে কিন্তু পুরুষ নয় .. তারপর-ও সেও এই ঘটনার সাথে জড়িত এবং অপরাধী… তাহলে এটা যতটা পুরুষের দোষ, তার থেকেও বেশি সমাজের দোষ… আমাদের এর প্রতিকার করার জন্য একসাথে কাজ করতে হবে.. তবে তার জন্য দরকার কার্যকর গবেষণা এবং সঠিক বিশ্লেষণ… না হলে এর পার্শপ্রতিক্রিয়া খারাপ হতে পারে…
আমার কাছে এই কাহিনীটা সবচেয়ে নিকৃষ্ট একটি উদাহরণ হলেও আমি একে সমাজের একটি বিশেষ চরিত্রের উদাহরণ মনে করি… আর তা হলো দুর্বলের উপর সবলের শক্তিপ্রয়োগ… ব্যাপারটা একান্তই নারী বনাম পুরুষ নয় (যেমন, আমার ধারণা আপনি একজন পুরুষ, কিন্তু আপনি এর প্রতিবাদ করছেন). এমনকি, ব্যাপারটা ইসলাম ধর্মীয়ও নয়… সব সমাজেই এই ধরনের সমস্যা আছে… অত্যন্ত ধর্মহীন সমাজ, যেমন জাপান -এও এর থেকে খারাপ উদাহরণ আছে (অনেক বেশি)… আমাদের দেশে ধর্মকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করা সহজ এবং সবচেয়ে কার্যকর বলে এর চর্চা টা একটু বেশি…
আমরা তাই একচোখে একটা সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করলে ব্যাপারটা হয়তো একেবারে নির্মূল হবেনা… যেভাবেই হোক, আমাদের শিখতে হবে সবাই একই মানুষ … একজন দুর্বল হতে পারে কিন্তু তাই বলে আমরা কেউ সবল হওয়ার সুযোগ নিলে সেটা হবে সবচেয়ে ঘৃণ্য … এই ঘৃনা অর্জন হবে সামাজিক ভাবেও আবার আইনগত ভাবেও (সঠিক বিচার এবং শাস্তি)…. এই চর্চাটা হলো একটু লম্বা এবং জটিল চিকিত্সা…. কিন্তু কি আর করার … রোগটাও তো অনেক জটিল…
চিন্তা করে দেখুন, কেন এই ব্যক্তি তার স্ত্রী -কে পড়াশুনা করতে নিষেধ করতে পারে? করা তাকে সমর্থন দিতে পারে? … একা একটা মানুষ এমন চিন্তা করতে পারে যদি তার শৈশবে বিশেষ কোনো ঘটনার কারণে সে হালকা মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে থাকে অথবা সে তার পরিবার, আত্বীয়, বা বন্ধুদের দ্বারা উত্সাহিত হয়ে থাকে… এমনটাও হতে পারে, দুবাই-এর পরিবেশ হয়তো এমন… তা যাইই হোক, এটা একটা মানসিক বা সামাজিক ব্যাধি…
মেয়েদের পাল্টা আঘাত করাটা অসমর্থন যোগ্য নয় আবার উত্সাহিত করার মতোও নয়… (তবে আত্মরক্ষা তো সে অবশ্যই করবে… এটা যে কোনো ব্যক্তির সাধারণ অধিকার… ) পাল্টা আঘাত করাটা সমস্যা নয় … সমস্যা হলো পাল্টা আঘাতের ধরন, আর তার প্রতিক্রিয়া, এবং সেটা মোকাবেলা করা … এটা ঠিক আছে সবাইকে সাহসী হতে হবে সে দুর্বল নারী হোক বা দুর্বল পুরুষ… আর আমরা যারা এত কথা বলছি, তাদের উচিত লেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আরো শক্তিশালী সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা…
পুরুষদের শিখতে হবে, স্ত্রী-রাও সম্মান পাবার যোগ্য সমানভাবে… এবং অনেক কিছু… যাই হোক, প্রয়োজন শিক্ষার বিস্তার … নাটক, সিনেমা -তে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যের ভালোবাসার যত উদাহরণ থাকবে, শাশুড়ি-ননদ-বউ -এর যত কোমল সম্পর্কের উদাহরণ থাকবে ততই মানুষরা একটি সুন্দর সম্পর্কের প্রতি আকৃষ্ট হবে… সাথে প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন, শক্ত আইন, এবং তথাকথিত ধর্মের সুষ্ঠু বিশ্লেষণ এবং বিকাশ (লেখক চাইলে এই পয়েন্ট টা আরো ব্যাখ্যা করবো পরে)…
দুখিত অ-সরল (non-linear) লেখার জন্য..
ধন্যবাদ লেখার জন্য… আপনার লেখার মাধ্যমেই এই ঘটনাটা জানতে পারলাম…
@ফয়সল,
আমি আসলে অনাকাঙ্ক্ষিত একটা বিষয়ের দিকে বেশি নজর দিতে গিয়ে এই দিকটা বলারই সুযোগ পাই নি। মাথা কাটাতো অনেক দূরের কথা, মাথা ব্যথার জন্য সামান্য এডভিল ট্যাবলেটেরও সুপারিশ আমি করি নি এই লেখায় । অথচ কেউ কেউ দেখছি আমি নারী নির্যাতন বন্ধের জন্য একটা সংকীর্ণ এবং অবাস্তব সমাধান নিয়ে এসেছি বলে ক্রমাগত বলে যাচ্ছেন। এই বিষয়টা খুবই বিস্ময়কর। আমি শুধুমাত্র মেয়েরা আক্রান্ত হলে ঠিক সেই মুহূর্তে কী করতে পারে সেই বিষয়ে একটা মতামত দিয়েছি। সামগ্রিকভাবে এবং দীর্ঘমেয়াদে নারী নির্যাতন বন্ধ করার কী উপায় হতে পারে সে বিষয়ে বিন্দুমাত্রও আলোকপাত করি নি। করার প্রয়োজনও বোধ করি নাই। বাচ্চা মেয়েটা প্রচণ্ড নির্মমতার শিকার হয়েছে, সেটিকেই শুধু আমি নাটকীয়ভাবে পরিবেশন করেছি পাঠককে বড়সড় একটা ধাক্কা দেবার মানসে। এই সমস্যার সমাধান কী হতে পারে, বা কীভাবে হবে তার কোনো ইঙ্গিতই আমার লেখায় ছিলো না। একটা চড়া দাগের বক্তব্য ছিলো এই বলে যে, এই জানোয়ারদের ধরে ধরে চিড়িয়াখানায় পুরে দিতে হবে। কিন্তু ওটা আসলে আমার ক্ষোভের বহির্প্রকাশ ছিলো, বাস্তবায়নযোগ্য কোনো সমাধান হিসাবে বলা হয় নি কথাটা।
@ফরিদ আহমেদ,
আমি দুঃখিত আপনাকে দুঃখ দেবার জন্য… কারন আমি সেটা চাইনি…
আপনি ক্ষোভ প্রকাশ করতে চেয়েছেন সেটা অবশ্যই ঠিক আছে… ক্ষোভ-এর ভাষা হিসেবে যেভাবে লিখেছেন সেটাও সাধারণ. আমি ভুল বুঝেছি যে আপনি সমাজকে একটি প্রতিকার-এর পথ দেখাতেও চেয়েছেন .. এই ভুল বুঝাটা হয়তো আমার অক্ষমতা…
তবে কি, আসলে আমি আমার মন্তব্যে একটি পথ দেখাতে চেয়েছিলাম .. কারণ আমি মনে করি, সত্যিই যদি এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করা যেত!! তাহলে কতই না ভালো হতো…
ভালো থাকবেন…
@ রণদীপমদা,
একটা বর্বর পুরুষের চিন্তারাজ্যে এই বোধ যদি কাজ করে যে, সে কোন নারীর প্রতি বর্বর আচরণ করলে তাকেও পাল্টা বর্বর আচরণের মুখোমুখি হতে হবে, তাহলে তো সেই পুরুষটির প্রত্যক্ষ বর্বরতা অনেকটা নিয়ন্ত্রিত হয়ে যাবার কথা।
এটাই হল প্রধান সমাধান আমাদের দেশে। সমাজ ও রাষ্ট্র অত্যচারিকে থামাতে প্রায় ব্যর্থ এবং নির্যাতিতাদের করুণা করা ছাড়া খুব একটা কিছু করতে পারেনা।
ঘরে, বাহিরে মেয়েদের জ্বলে উঠার সময় হয়েছে। তারা নিজেরা যখন জ্বলে উঠবে, পুরুষরাও তখন তাদের পাশে দাঁড়াবে।
এ সমাজে তসলিমা নাসরিনের বড়ই অভাব।
(Y)
একটা বর্বর পুরুষের চিন্তারাজ্যে এই বোধ যদি কাজ করে যে, সে কোন নারীর প্রতি বর্বর আচরণ করলে তাকেও পাল্টা বর্বর আচরণের মুখোমুখি হতে হবে, তাহলে তো সেই পুরুষটির প্রত্যক্ষ বর্বরতা অনেকটা নিয়ন্ত্রিত হয়ে যাবার কথা।
আর পরোক্ষ বা অন্তর্জাগতিক বর্বরতা যা তাকে ভেতরে ভেতরে বর্বর বানিয়ে রাখে তা নিরসনের জন্যে অবশ্যই ধর্মীয় পুরুষতান্ত্রিক কুসংস্কার ও কুশাসনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিমনস্কতার থেরাপির বিকল্প নেই বলেই মনে হয়।
(U)
আমি একটা বিষয় খেয়াল করলাম, মুক্তমনায় কিছুদিন পরপর একজন একজন কইরা দার্শনিক আসে। এদের কাম হইল প্রথমে কিছুক্ষন সভ্যতা শিখানো, তারপরে আওয়াজ মারা দেশের জন্য কিছু করছেন নি, দেশ নিয়া কিছু ভাবছেন নি। তারপরে ক্যাক কইরা ধরলে পুতুপুতু কইরা গইলা পড়া।
এইখানে নির্মিতব্য নামের একজনের কথা শুইনা মনে হইতেছে উনি নারী, কেমন জানি পুতুপুতু করা মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত মনে হইতাছে যারা কোন দিন বাসে টাসে ওঠে নাই। হের পরে ফরিদ ভাইর আসল চেহারা দেইখ্যা ঠান্ডা মাইরা আওয়াজ দিল সে নাকি দুই বছর যাবত মুক্তমনা পড়ে। বড় বাহার করছেন দুই বছর যাবত মুক্তমনা পইড়া। ফরিদ ভাই যা কইছে তা ১০০ভাগ সত্য। কোন জাতিরে কোনভাবেই হেপ্ল কইরা জাতে উঠানো যায় না যতদিন না তারা নিজেরা চেষ্টা না করব। চিল্লানো দেবীত্বের পরিচায়ক আর মাইর খাইয়া মাইর দিতে গেলে ঐটা পশুত্ব। সভ্যতার সংজ্ঞা দেয়নের অথরিটি হইছেন উনি।
আমি জানি না বাঙালিরা এত স্পর্শকাতর কেন? এবং এদের স্পর্শকাতরতা এমনই অদ্ভুত যে, মাইর খাইলেও ঐটা অসভ্যতা না হইয়া মাইর দেওয়াটা হইয়া যায় অসভ্যতা।
আর শুনেন আমার কথা শুইন্যা কেউ আমারে প্লিজ জ্ঞ্যান মারবেন না, “দেখুন এইভাবে কথা বলাটা অসভ্যতা।এভাবে আপনি একজনের সাথে কথা বলতে পারেন না”। বাঙালির বহুত সভ্যতা দেখছি। আর দেখাইয়েন না। বাঙালিরে শিখাইতে এখন বাঁশ মারা দরকার। আর কোন পথ নাই।
@সাইফুল ইসলাম,
আপনারা মারামারি করে সব সমস্যা সমাধান করেন, আমি পুতুপুতু করে সব সমস্যা সমাধান করে যাই। লম্বা কথা দিয়ে তো বাঁশ মেরেই যাচ্ছেন। কাজের কাজ কয়জন করে! আমি আপনি দুইজনই পুতুপুতু সমাজের, আপনার খালি গলার জোর বেশী আর একটু বেশী বাসে উঠেন।
@সাইফুল ইসলাম,
“আমি একটা বিষয় খেয়াল করলাম, মুক্তমনায় কিছুদিন পরপর একজন একজন কইরা দার্শনিক আসে। এদের কাম হইল প্রথমে কিছুক্ষন সভ্যতা শিখানো, তারপরে আওয়াজ মারা দেশের জন্য কিছু করছেন নি, দেশ নিয়া কিছু ভাবছেন নি। তারপরে ক্যাক কইরা ধরলে পুতুপুতু কইরা গইলা পড়া।
এইখানে নির্মিতব্য নামের একজনের কথা শুইনা মনে হইতেছে উনি নারী, কেমন জানি পুতুপুতু করা মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত মনে হইতাছে যারা কোন দিন বাসে টাসে ওঠে নাই। হের পরে ফরিদ ভাইর আসল চেহারা দেইখ্যা ঠান্ডা মাইরা আওয়াজ দিল সে নাকি দুই বছর যাবত মুক্তমনা পড়ে। ”
হুম। কিন্তু আকাশ মালিক?। আকাশ মালিক কি ও কি পুতু পুতু কইরা গইলা পড়ব নাকি?। আমি জানি না, এটা জানি যে আকাশ মালিক মুক্তমনার একজন শক্তিশালি লেখক।আকাশ মালিক এর উদ্দেশ্যে ও ত ফারিদ বলেছেন …”দ্বিমত পোষণেরও নির্দিষ্ট নর্ম আছে। দ্বিমত পোষণ মানে এই নয় যে, লেখক যা বলেছেন সেটাকে বিকৃত করে তার সাথে কোমর বেঁধে ঝগড়ায় নামতে হবে। এই আপনি নিজে শুরুতে আপনার মতামত দেন নি। অপেক্ষা করেছেন কখন আপনার মনের ভাবনার সাথে মিল মেশানো মন্তব্য কেউ করবে তখন আপনি তার সাথে যোগ দেবেন। এই দ্বিধা, সংকোচ, আড়ালগুলো কেনো?” । আমার সাথে কারো কোন প্রকার ব্যক্তিগত সম্পরক নেই মুক্তমনার, আমি একজন সাধারন পাঠক মাত্র। কিন্তু মুক্তমনার শক্তিশালি লেখক ব্রিন্দ এক জন অন্যজনের উদ্দেশ্যে অসহনশীল মন্তব্য করলে আমরা সাধারন পাঠক রা বিব্রত বোধ করি বইকি। সাইফুল আবার আমাকে আঁতেল এবং ভুঁইফোঁড় দার্শনিক বলে গাল দিতে পারেন , সে ঝুকি নিয়েই মন্তব্য করলাম।ব্লগে ঝুকি লওয়া টা একটু ইজি আর কি…।। ইজি ম্যান ইজি। :guru:
@সপ্তক,
আমার মন্তব্যে আপনি এবং অন্য যে সমস্ত পাঠক বিব্রত হয়েছেন, তাঁদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করছি। কিন্তু আমি যে মন্তব্য করেছি আকাশ মালিককে তা যতই আপনার কাছে অসহনশীল মনে হোক না কেনো সেটা থেকে সরে আসছি না আমি।
আমার লেখার বক্তব্যের সাথে আকাশ মালিক একমত ছিলেন না। এটা হতেই পারে। আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি যে, প্রতিটা মানুষেরই নিজস্ব মতামত রয়েছে এবং সেই মতামত অন্যের সাথেও নাও মিলতে পারে। এক্ষেত্রেও সেরকমই ছিলো। আকাশ মালিক নির্দ্বিধায় তাঁর দ্বিমতকে জানাতে পারতেন। আমি হয়তো বড়জোর তাঁর দ্বিমতের বিরুদ্ধে পালটা যুক্তি আনতাম। কিন্তু তিনি সিঙ্গল আউট হবার ভয়ে তাঁর মতামত প্রকাশ করেন নি। দীর্ঘ অপেক্ষায় থেকেছেন অন্য কেউ সেই দ্বিমতকে আগে বলার জন্য। তারপর সেই ব্যক্তিকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেছেন তাঁর বক্তব্যকে অনুমোদন করার মাধ্যমে। অন্যের বক্তব্য অনুমোদনেও কোনো সমস্যা নেই। তিনি যদি শুরু করতেন এই বলে যে আমি অপার্থিবের বক্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত, তাহলেও আপনার ভাষার এই অসহনশীল মন্তব্য আমার তরফ থেকে আসতো না। কিন্তু সেটা ঘটে নি। তিনি যে দীর্ঘ অপেক্ষা করেছেন অন্য কারো জন্য, সেটা বের হয়ে এসেছে এমন একটা মন্তব্যের প্রতিক্ষায় ছিলাম এই কথা বলার মাধ্যমে। আমার তীব্র আপত্তির জায়গাটা এখানেই ছিলো এবং এখনও তা রয়েছে। আকাশ মালিকের মানের কারো কাছ থেকে এটা আমি আশা করি নি।
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে বাংলাদেশে ইদানিং মধ্যপ্রাচ্যের কু-বাতাস লাগতেছে। ছোট ছোট স্কুল-কলেজের মেয়েরা বোরকা পড়ছে ( যা আগের তুলনায় অনেক বেশী।), পরিবার গুলোতে নিরাপত্তার জন্য হোক বা ধর্মীয় কারণে হোক মেয়ে সন্তানদের প্রতি বাবা-মায়ের নিয়ন্ত্রণ কঠোর হচ্ছে। ফলে মেয়েদের একটা বড় অংশ নিজেদের অধিকারটা যে কি তা সম্বন্ধেই সচেতন না। হয়তো এখনোও অনেক মেয়ে বিশ্বাস করে বাবা-মার সংসারে থাকা অবস্থায় বাবা-মার এবং স্বামীদের সংসারে থাকা অবস্থায় স্বামীদের চড়-থাপ্পড় দেয়ার অধিকার আছে।
অন্য দিকে ছেলেদের বড় একটা অংশ আমেরিকা বিদ্বেষী হতে যেয়ে মধ্যপ্রাচ্য প্রেমী হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া সমাজের স্বাভাবিক আইন শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়ার হতাশা থেকেও ইসলামি কঠোর আইনের প্রতি ভালবাসা লেগে যেতে পারে।
বাবা-মার সংসার থেকে মেয়েরা প্রতিবাদ না শিখলে, বড় হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সাহস হারিয়ে যায়। তাছাড়া পুলিশি রেন্সপন্সের দুর্বলতা ও অস্বচ্ছতা এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও মেয়েদের প্রতিবাদি হতে বাধা দেয়।
পুরুষতন্ত্র সারাক্ষণ নারীর সতীত্ব নিয়েই চিন্তিতঃ তাই নারীর পড়ালেখার প্রতি পুরুষ সমাজ সব সময় বিমূখ। পুরুষের ধারণা নারী শিক্ষিত হলে সতীত্ব হারাবে এবং পরিবার ধবংস করবে।
আপনার এই লিখাটির জন্য ধন্যবাদ। আজকালকার প্রেক্ষাপটে নারীর বিরুদ্ধে domestic violence নিয়ে আরো লিখা খুবই জরুরী। বিশেষ করে ইদানিং প্রচার মাধ্যমে অনেক খবর আসছে, যেই খবরগুলোতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বাংলা সাধারন নারীদের থেকে একটু বেশি এগিয়ে যাওয়া শিক্ষিত নারীরা। এখনি সময় প্রতিটা মানুষ তাদের ভিতরের পশুত্বের মুখোমুখি হবার। নারীর response হবে vocal, কিন্তু physical না, হবে সভ্য জবাব, অসভ্য জবাব না । এই জন্য আমি-
– এর সাথে একমত নই।
– একমত।
-Molestation এর জবাব Molestation না।
– এরকম বিক্ষিপ্ত ঘটনা নারীর দ্বারাও হয়েছে দেশে বিদেশে। কিন্তু পশুত্ব আমরা নারীর মাঝেও দেখতে চাই না।
নারীকে চিৎকার করেই প্রতিবাদ করতে হবে। সেই জন্য তাদের সাহস যোগাতে হবে আমাদেরই। এখান থেকেই সকল নারীর, বিশেষ করে শিক্ষিত নারীর domestic violence এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী যাত্রা শুরু হতে পারে।
@নির্মিতব্য,
(Y)
আর এই সাহস যোগাতে প্রতিবাদের মিছিলে রাস্থায় নেমে আসুক পুরুষও। অন্যায়ের বিরোদ্ধে নারী-পুরুষের সম্মিলিত চিৎকারে উত্তপ্ত হউক রাজপথ, থরথর করে কেঁপে উঠুক সংসদ। তখনই জেগে উঠতে পারে বিকল চক্ষু-কর্ণের অন্ধ-বধীর প্রশাসন। আর এই ধারাবাহিকতায় একদিন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে নারীর সমানাধিকার, দূর হতে পারে নারীর উপর পাশবিক নির্যাতন।
@নির্মিতব্য,
আত্মরক্ষার্থে পাল্টা আক্রমণকে Molestation বলা যায় না। Molestation শব্দের মধ্যে অশুভ উদ্দেশ্য নিহিত আছে। ধরুন ৭১ যুদ্ধের সময় কো ন পাক সেনা এক নারীকে ধর্ষণ করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার নারীর হাতে তার গোপন অংগটি হারাল। আমরা কি সেই নারীকে বাহবা দিব বা নাকি Molester বলব? আইনের শাসন সব সময়ই প্রথম প্রাধান্য। কিন্তু বাস্তবতা হল আইনের শাসন নেই আমাদের সমাজে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অপরাধী অল্পে পার পেয়ে যায়। তাই অপরাধীর কোন শাস্তি না হওয়ার চেয়ে নির্যাতনের শিকারের দ্বারা এইরকম তাৎক্ষণিক বিচার বেটার অপশান। তারপর যদি আইন আত্মরক্ষার্থে আক্রমণকে শাস্তি ধার্য করে নির্যাতিতকে শাস্তি দেয় তবে তাই হোক।
@অপার্থিব,
-একমত।
– Molestation, বা এই লেখায় উল্লেখ্য অনাকাংখিত স্পর্শ এর উত্তরে আত্মরক্ষার্থে পাল্টা আক্রমণকে Molestation বলা যায় না। কিন্তু লেখাতে পাল্টা আক্রমণ এর বর্ণনা এভাবে “লজ্জা শরমের তোয়াক্কা না করে তারাও সেই লোকের শক্ত জায়গায় মুঠো সবল করে সজোরে আঘাত করুক,” আমার আপত্তি সেটায়। এটা একজন সভ্য মানুষের পাল্টা জবাব হতে পারে না। একজন সাহসী নারীর স্বভাবচিত আচরণ হবে এহেন অসভ্য মানুষকে ধাক্কা দাওয়া, বা ওই নারী যেভাবে সমীচীন মনে করেন সেভাবে প্রতিবাদ জানানো। কিন্তু আক্রমণকারীকে আক্রমণকারীর নোংরা পর্যায়ে এসে জবাব দিতে হবে এটা কেমন কথা!
-বাংলাদেশে, বিশেষ করে মেয়েদের শিশু বয়স থেকেই এসব অযাচিত পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। তাদেরকে আপনি কি করে প্রতিবাদ শিখাবেন? প্রতিবাদের ভাষায়, অবশ্যই আক্রমণাত্বক ভাবে না।
-একজন নারী যদি rape এর শিকার হন তা হলে ঐ পরিস্থিতিতে তিনি আক্রমণ করে হোক আর না করে হোক survive করে আসলেই আমি তাকে বাহবা দিব।
এটা কোনো কথা হলো!!!
@নির্মিতব্য,
কিন্তু, আপনি পরিষ্কারভাবে মলেস্টেশনের কথা বলেছেন এবং অপেক্ষাকাতর আকাশ মালিক সেটাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সমর্থনও করেছেন। তখনও আপনি বলেন নাই যে এটাকে মলেস্টেশন বলে না। এখন কি আপনি এর জন্য ক্ষমা চাইবেন? ক্ষমা চাওয়ার সুসভ্য সংস্কৃতির প্রদর্শন কি দেখতে পাবো আপনার কাছ থেকে?
@ফরিদ আহমেদ,
আমি গত ২ বছর ধরে মুক্তমনার নিয়মিত পাঠক। এখানে বহু লেখায় বহুজনকেই ক্ষমার দাবী করতে দেখেছি। আজকে প্রথম মন্তব্য করতে গিয়েই আমাকে লেখক ক্ষমা চাইতে বললেন। আমি আজকের এবং ভবিষ্যত সকল মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আকাশ মালিক সাহেব যে মুক্তমনাতে আমি প্রথম মন্তব্য করতে না করতেই আমাকে বুড়া আঙ্গুল দেখালো তার জন্যও আমি তার পক্ষ হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমার সম্ভাব্য সকল বানান ভুল এর জন্যও অগ্রিম ক্ষমা চাচ্ছি। না জানি নিজের অজান্তে আরও কত ভুল করে ফেলেছি, তার জন্যও ক্ষমা চাই।
@নির্মিতব্য,
একটু বেশি নাটকীয় হয়ে গেলো, এই যা। :))
যাকগে, কোনো ব্যাপার না। শুনুন, আমাদের লক্ষ্য অভিন্ন। মত এবং পথের হয়তো পার্থক্য আছে। থাকুক না সেটা। এ নিয়ে অহেতুক একে অন্যকে দোষারোপের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। লক্ষ্যটাই যেহেতু এক।
আমি কারো সাথে বিতর্ক করতে গেলে একটু শক্তভাবেই চেপে ধরি। এটা আমার বদ অভ্যাস। আপনি যেহেতু বছর দুয়েক ধরে মুক্তমনায় আছেন, বিষয়টা আপনার চোখে পড়ার কথা। আপনার সাথে যে, কর্কশ আচরণ করেছি তার জন্য আমি নিজেও ক্ষমা চাইছি। এবং সেটা আন্তরিকভাবে, নাটকীয়ভাবে নয়। 🙂
@নির্মিতব্য,
ভাল করেছেন, তবে ভবিষ্যত সকল মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এ সবের দরকার নাই। এতোদিন মুক্তমনায় আছেন কোন লেখা নাই কেন? একটা লেখা ছাড়ুন আমরা পড়ি আপনার সাথে পরিচিত হই।
@আকাশ মালিক,
ক্ষমা চাওয়া, ক্ষমা দেওয়া এগুলো খুব হাস্যকর লাগে আমার। কিন্তু কারো যদি ক্ষমা করতে পেরে ভালো লাগে এবং আমরা আবার constructive আলোচনায় ফেরত আসতে পারি তাইলে ক্ষতি কি। যেহেতু ক্ষমা চাওয়া বা ক্ষমা দেওয়ার, আমার নিজের কাছে কোন দাম নাই তাই এভাবে লিখলাম। এখানে স্রোতের বিপরীতে হয়তো কিচ্ছু comment করছি দেখে একটু কথা শুনছি। এখন সকলে যদি আমার শব্দগুলো নিয়ে খেলা করে দিন শেষে আমার কথাটা শুনেন, তাহলে ভবিষ্যতে অবশ্যই লিখব।
@নির্মিতব্য,
সবাই সব বিষয়ে একমত হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। আপনার দ্বিমতকে আমি শ্রদ্ধা জানাই, কিন্তু ওটাই আমার মত।
আপনি খুব সম্ভবত মলেস্টেশন কী সেটা জানেন না। আকাশ মালিকও না। কারণ, তিনিও দেখলাম আপনার এই বক্তব্যকে বুড়ো আঙুল উঁচিয়ে দিয়ে সমর্থন জানিয়েছেন। একটা মেয়ে ভীড়ের মধ্যে মলেস্টেড হচ্ছে, তার থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসাবে যখন আক্রমণকারী পুরুষের জননাঙ্গে আঘাত করে, সেটা যে আত্মরক্ষা, এই সহজ বিষয়টা আপনিও যেমন বোঝেন নি, তেমনি আকাশ মালিকের মত প্রাজ্ঞ ব্যক্তিও বোঝেন নি। এটা যদি মলেস্টেশন হয় তবে ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য মেয়েরা যখন পুরুষের অণ্ডকোষ চেপে ধরে বা ছুরি, ব্লেড দিয়ে পুরুষাঙ্গে আঘাত হানে, সেটা আরো বেশি মলেস্টেশন এর আওতায় পড়ে। অথচ ধর্ষণ থেকে রক্ষার উপায় হিসাবে পশ্চিমা বিশ্বে পুরুষের এই নাজুক স্থানে আঘাত হানার বুদ্ধিপরামর্শ মেয়েদেরকে দেওয়া হয়ে থাকে।
নারীর পালটা আঘাত যদি পশুত্ব হয়, তাহলে আর আমার বলার কিছু নেই। নারী তার দেবীত্ব নিয়ে থাকতে পারে। পশুরা পশুত্ব করে যাক, আর নারী তার দেবীত্ব নিয়ে সবকিছু চোখ বুঝে সহ্য করুক। অবশ্য চোখ বোজারও আর প্রয়োজন হবে না, চোখইতো ইদানিং তুলে নেওয়া হচ্ছে দেবীদের।
যাক, অন্তত চিৎকারের মধ্যে পশুত্ব খুঁজে পান নি।
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
@ফরিদ আহমেদ,
এখানে প্রয়োজনীয় তাৎক্ষণিক আত্মরক্ষা আর আপনার লিখায় উল্লেখিত “মুঠো সবল করে” সজোরে আঘাত করা এক কথা নয়।
কেউ নারীকে দেবী বলছে না। নারী মানুষ, তাকে মানুষের মত বাঁচতে দিন। আজকাল নারী পড়তে শিখেছে, বলতে শিখেছে, তাই বলে তাকে হাজার বছরের বর্বর পুরুষদের মত হতে, আচরণ করতে শিখাবেন না।
@নির্মিতব্য,
গায়ের জোরে বললেই হয়ে গেলো নাকি। আমি যা লিখেছি এখনও সেটা শোভা পাচ্ছে আমার লেখায়। আপনার সুবিধার্থে এখানে তুলে দিচ্ছি পুরো লাইনটাই। ঠিকমত পড়ে বলেন যে আত্মরক্ষার কারণে এটা করতে বলেছি নাকি, ছেলেদের জননাঙ্গকে দলাইমলাই করে আনন্দ নেবার জন্য বলেছি।
আপনিতো দেখছি আমাকে বিরাট কীর্তিপুরুষ ভেবে বসে আছেন। ইচ্ছা করলেই আমি নারীকে মানুষের মত বাঁচতে না দিতে পারি, ইচ্ছা হলেই তাদের বর্বর পুরুষদের মত আচরণ শেখাতে পারি। নাহ, এই বিশাল ক্ষমতা আমার নেই। থাকলে অবশ্য ঠিকই সব মেয়েকে বর্বর বানিয়ে ছেড়ে দিতাম। তাতে অন্তত মার খাওয়ার হাত থেকে বাঁচতো তারা। শুধু যে বাঁচতো তাই নয়, বরং মার দিতোও। আপনি হয়তো খুশি হতেন না, কিন্তু এই এখানে কয়েকজন মেয়ের মন্তব্য পড়ে আমার ধারণা জন্মেছে যে, মার খেতে তারা একেবারেই নারাজ, বরং মার দিতেই বেশি আগ্রহী। দুর্গা কালিটালিও হতে চায় তারা।
@ফরিদ আহমেদ,
দয়া করে আমি খুশি হতাম কি হতাম না তা নিয়ে মন্তব্য নাই করুন। ইতিমধ্যে “…সহজ বিষয়টা আপনিও যেমন বোঝেন নি…” জাতীয় বক্তব্য দিয়েছেন, আমি কিছু বলি নাই।
আমার বোধ হবার পর থেকে শুধু ঐ সকল মেয়ে এবং নারীকেই আমার অতি আপন করে নিয়েছি যারা রাস্তা ঘাটের অযাচিত হাতাহাতির জবাব চোখের পানি দিয়ে নয়, বরং জোরে একটা চড় কষে দিয়েছে তাদের।
আমি আপনার লিখাটি অনেক সময় উপযোগী মনে করছি, কিন্তু আপনি যেভাবে মেয়েদের প্রতিউত্তর/ প্রতিরোধ করতে বলেছেন তার সাথে সহমত নই। একটি বাস্তব সমস্যার বাস্তববাদী প্রতিরোধ হওয়া উচিত।
@নির্মিতব্য,
দেখুন আপনি এখন যেভাবে দ্বিমতপোষণ করছেন, এটা যদি শুরুতে করতেন তবে কোনো সমস্যাই হতো না। এখানে আমি আমার মতামত দিয়েছি, অন্যেরাও তাদের মতামত দিতে পারে। একজনের সাথে আরেকজনের মত মিলতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু, আপনি আপনার প্রথম মন্তব্যেই আমাকে মেয়েদের পুরুষ মলেস্ট করার উৎসাহ দেবার অভিযোগে অভিযুক্ত করে বসেছেন। ওটা না করলেই পারতেন।
@ফরিদ আহমেদ,
উনি সেটা করেছেন বা করার ইচ্ছে ছিল বলে আমার মনে হয়না। ধর্ষণের বদলে ধর্ষণ, চুরির বদলে চুরি, খুনের বদলে খুন হয়না, এটা বোঝার জন্যে দার্শনিক হওয়া জরুরী নয়। কথা হলো এরকম কিছু আপনার লেখায় যেহেতু নেই সুতরাং কেন বলা হলো? আমি এটাকে সাধারণ উপমা বা উদাহরণ হিসেবে ধরে নিয়েছি। সুক্ষ্ণ একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে যাচ্ছে অকারণেই। আমরা কেউ যদি দ্বিমত পোষণ না করে, বিষয়টাকে ভিন্ন আঙ্গীকে উল্টে-পাল্টে না দেখে, সবাই যদি শুধুই আপনার লেখাটার স্তুতি গেয়ে যেতাম, তর্ক এতদূর গড়াতোনা, ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য বিষয়াদী নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ সৃষ্টি হতোনা। এখানে কেউই সমর্থন করছেন না যে, নারী নীরবে চোখ বুঝে সকল অন্যায় অত্যাচার সহ্য করুক, সবাই চান নারী নিজের পায়ে দাঁড়াক, প্রতিবাদ করুক, আঘাতের প্রতিঘাত করুক। কিন্তু সেটা করবে কী ভাবে, কোন পথে, প্রক্রীয়াটা কী সেটাই আলোচনার বিষয়।
দ্বিমত যদি আমরা সহ্য করতে না পারি, একটুতেই যদি রেগে-মেগে ব্যক্তি আক্রমণ করে বসি (কেউ করেছেন বলছিনা) তাহলে সুষ্ঠ আলোচনা অসম্ভব হয়ে যায়।
আপনার এই তিনটি কথা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ-
এরকম বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার সাক্ষী আমি নিজেই আছি, যদিও ঘটনাক্ষেত্রটা ছিল ইংল্যান্ড। শেষোক্ত দুটো কাজের জন্যে অন্যায়ের প্রতিবাদকারী, নির্যাতিত নিরপরাধ নারী প্রতিকার তো পাবেই না, বরং আইনের চোখে নিজেই অপরাধী হয়ে শাস্তি ভোগ করতে পারে। আপনার উল্লেখিত বাক্যে ঘটনা কিন্তু ঘটেনি, ঘটতে পারতো। কিন্তু নারী ধারালো ব্লেড দিয়ে কেটে নিয়েছে ধর্ষণোদ্যত ধ্বজটিকে কিংবা আঙুল দিয়ে চোখ তুলতে আসা পুরুষের, চুলের কাঁটা খুলে নিয়ে আক্রমণকারীর চোখ খুলে নিয়েছে। সত্যিই যদি এখান থেকে কেউ অনুপ্রাণীত হয়ে এমন ঘটনা ঘটায়, প্রেরণাকারীও আইনের বেড়াজালে জড়িত হয়ে যেতে পারেন। 😕 :-s
প্রথম বাক্যটা নিয়ে অনেক কথা বলা যায়-
তারপর? পরের ঘটনাটা বা প্রতিক্রীয়া কী হতে পারে? আমি বলবোনা আপনিই বলুন। শুধু বলে রাখি, এটা নির্ভর করে পরিবেশ, পরিস্থিতি ও দেশ বা স্থানের উপর।
ফরিদ ভাই আই এম স্যরি, আপনার সকল কথার সাথে একমত হতে পারলাম না, তাই বলে দোহাই লাগে আল্লাহর ওয়াস্তে শাস্তি স্বরূপ আমাকে বিজ্ঞ বলে অপবাদ দিবেন না। :-Y
@আকাশ মালিক,
আপনার মনে হলেতো হবে না। উনি কী করেছেন, সেটা এই লেখায় এখনও ঝুলে আছে। তিনি আমার একটা লাইনকে কোট করে তারপর বলেছেন যে, Molestation এর জবাব Molestation না। অর্থাৎ আমি মলেস্ট করতে বলেছি। সেটাকে আবার আপনি সমর্থন করেছেন। তারপর যখন অপার্থিব এবং জেকে ধরেছি তখন বলেছেন যে, না, একে মলেস্টেশন বলে না। তারমানে কী দাঁড়ালো? তিনি যদি ওটা মনে না করতেন, তবে শুরুতেই বলে দিতে পারতেন যে, আমি আসলে ওভাবে বোঝাই নি। তা কিন্তু তিনি করেন নি। বরং ওটা যে মলেস্টেশন নয়, সেটা স্বীকার করে নিয়েছেন।
ভুল বোঝাবুঝিটা যদি হয়্ সেটার জন্য আপনারাই দায়ী। আমি একটা বাচ্চা মেয়ের হাত কেটে নেবার করুণ কাহিনীকে এখানে বিবৃত করেছি। সেই সাথে আমি কীভাবে মেয়েরা এর প্রতিরোধ করুক তার একটা নিজস্ব ভাবনা দিয়েছি। এই লেখায় তর্ক-বিতর্ক করার বিন্দুমাত্রও কোনো আগ্রহ ছিলো না আমার। সত্যি বলতে কী, এই লেখা যে বিতর্ক তৈরি করতে পারে, সেই ভাবনাটাই আমার মাথায় আসে নি। কিন্তু, আপনারা এসে তার মধ্যে নানান ধরনের কূটতর্ক শুরু করেছেন। আমি ধর্ষণের বদলে ধর্ষণ চাইছি, মলেস্টেশনের বদলে মলেস্টেশন চাইছি, চোখের বদলে চোখ চাইছি, এগুলো নিয়ে এসে বিরাট হল্লাপাল্লা শুরু করে দিয়েছেন। সামান্য এটুকু বোঝেন নি যে, আমি চেয়েছি মেয়েরা তাদের উপর করা অন্যায়গুলোর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করুক। নীরবে পড়ে পড়ে মার না খাক।
দ্বিমত পোষণেরও নির্দিষ্ট নর্ম আছে। দ্বিমত পোষণ মানে এই নয় যে, লেখক যা বলেছেন সেটাকে বিকৃত করে তার সাথে কোমর বেঁধে ঝগড়ায় নামতে হবে। এই আপনি নিজে শুরুতে আপনার মতামত দেন নি। অপেক্ষা করেছেন কখন আপনার মনের ভাবনার সাথে মিল মেশানো মন্তব্য কেউ করবে তখন আপনি তার সাথে যোগ দেবেন। এই দ্বিধা, সংকোচ, আড়ালগুলো কেনো? এটাকে কীভাবে আমি আমার লেখায় আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হিসাবে নেবো? আমরা আমাদের নিজেদের মতামতগুলো বলার বিষয়ে অন্যের অপেক্ষায় থাকি কেনো? এটাতো সৎ কোনো আচরণ নয়, বরং সুযোগসন্ধানী মনোভাব। আপনি এবং নির্মিতব্য দুজনের কেউ-ই সুস্থ আলোচনার জন্য আসেন নি। দুজনেরই আমার বক্তব্য অপছন্দ হয়েছে। সেটাই জানাতে এসেছেন। নির্মিতব্য অকপট, তিনি সরাসরি বলেছেন। আপনি আড়ালের অপেক্ষায় থেকেছেন, অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে শিকার করতে চেয়েছেন।
হু, তাইতো খেয়াল করি নি মেয়েদের এতো বড় বিপদটা। ঠিক আছে, ভিন্নভাবে অনুপ্রাণিত করছি মেয়েদের আমি। এখন থেকে ধর্ষণ করতে এলে মেয়েরা বিনা প্রতিরোধে শুয়ে থাকুক চিৎ হয়ে। কেউ চোখ তুলতে এলে ভুলেও যেনো চুলের কাঁটা খুলে না নেয় পালটা আক্রমণের জন্য। নইলে যে জেলের ভাত খেতে হবে এই অপরাধে। এর চেয়ে অন্ধ হবার পরে ব্রেইল পদ্ধতি শিখে নেওয়াটা অনেক নিরাপদ।
আপনার অবস্থা দেখে খুবই হতাশ হচ্ছি আমি। যাকগে, নারীবাদী মানুষ আপনি। আপনাদের চিন্তাভাবনাই আলাদা। বাসের ভীড়ে মেয়েরা বিনা প্রতিরোধে মলেস্টেড হোক আর অপেক্ষা করুক আপনাদের মতো নারীবাদী পুরুষদের, যারা এসে দল বেধে সম্মিলিত হুংকার দিয়ে তাদের উদ্ধার করবে।
দুঃখিত হবার কিছু নেই। আমার সব কথায় আপনাকে একমত হতে হবে, সে রকম আশা আমি করি না। আমার সমাজকে দেখার চোখ, সমাজের সদস্যদের নিয়ে ভাবনার জায়গাগুলো আপনার চেয়ে অনেক ক্ষেত্রেই ভিন্নতর, সেটা আমি জানি।
@ফরিদ আহমেদ,
আমি নিজেই বলেছি আপনার লেখায় এসবের উল্লেখ নেই। কুটতর্কে হল্লাপাল্লায় আমার মোটেই ইন্টারেষ্ট নেই, তবে আপনাদের মত বিজ্ঞজনদের সাথে আলোচনায় অংশগ্রহন করতে পারলে খুশী হই।
এতো কিছু সহজ সরল ভাবে বলার পরেও এই যদি হয় আপনার ধারণা তাহলে, আমার পক্ষ থেকে স্যরি বলা ছাড়া এ আলোচনার ইতি টানার আর কোন উপায় দেখছিনা। তবে ভবিষ্যতে তর্ক আর আলোচনার ফারাক, দ্বিমত আর সহমত জানানোর পূর্বাপর অবস্থাটা পরখ করার বা বুঝার চেষ্টা অবশ্যই করবো।
@আকাশ মালিক,
এমন একটা মন্তব্যের প্রতিক্ষায় ছিলাম বলে কোনো আলোচনা শুরু করলে তার পরিণতি এরকম হওয়াটাই স্বাভাবিক।
@ফরিদ আহমেদ,
সুস্থ আলোচনাটা আপনার মতে কি একটু বলবেন। আমি ভবিষ্যতে অন্ততঃ আপনার লেখায় সুস্থ মানসিকতা নিয়ে মন্তব্য করব।
আমি বলেছিলাম,
যাই হোক এটা আমার main focus ছিল না। আমিও হয়তো প্রথম comment এ নিজেকে পুরো বুঝাতে পারি নি। কিন্তু পরবর্তী কথার ধারাবাহিকতায় হয়তো আপনারাও বুঝেছেন আমি কি বলতে চেয়েছি। অথবা আমি মুক্তমনাতেই এই বেপারে আরও লিখব ভবিষ্যতে। এই বেপারটা আপাতত pause থাকুক।
আমারও কিন্তু একই উদ্দেশ্য ছিল। আমার আশেপাশে বাংলাদেশের মেয়েদের শেখানো হয় উচ্চস্বরে কথা না বলা, জোরে না হাসা, আর পরিবার বা আশেপাশে থেকে আসা বছরের পর বছর ছোট বড় অত্যাচার সহ্য করা। আপনি direct action এর কথা বলেছেন, আমি অন্যভাবে react করার কথা বলেছি। দেখুন এই দুঃখজনক বীভৎস কাহিনী অন্য blog এও লিখছে, মানুষ জিকির করার মত comment করছে ঐ husband কে খুন করতে, তার অমুক জিনিস ছিড়ে ফেলতে ইত্যাদি ইত্যাদি কথা। আমারও গা ভাসিয়ে এরকম রাগ প্রকাশ করতে ইচ্ছা করে, কিন্তু ভাবি প্রতিবাদ করতে হলেও আমাদের শান্ত ভাবে করতে হবে। আমার নিজস্ব ভাবনা ছিল এরকম টেনে দাও, ছিঁড়ে দাও ঢালাও কথার থেকে এরকম একটা কথা থাকুক, মেয়েরা তার husband এর কাছে প্রথম চড় খাবার পরই নিজেকে এবং সমাজকে বুঝাক এই লোক তার জন্য ক্ষতিকর, এই একটার পর একটা চড় accumulate হতে হতে একদিন এই লোক তার চোখ খুলে নিবে বা হাত কেঁটে দিবে। মেয়েটা আগে বলতে শিখুক, সমাজ আগে শুনতে শিখুক।
@নির্মিতব্য,
নারীকে দমিয়ে রাখার হাতিয়ার হল নারীকে বর্বর পুরুষদের মত হতে, আচরণ করতে শিখাবেন না।।
@গীতা দাস,
আপনি কি বলছেন আমি বুঝতে পারছি। ছেলেবেলা থেকেই মেয়েদের কানের কাছে ভ্যানভ্যান করে, ছেলেদের মত হেঁটো না, হাঃ হাঃ করে হেসো না, ছেলেদের মত চুল ছোট করো না, ছেলেদের মত খেলো না, উফ আরো কত কি। এভাবে মেয়েদের দমিয়ে রেখেও সমাজের ক্ষান্ত হয় নি, ছেলেদের শিখিয়েছে মেয়েদের মত মোচরামোচরি কর না, হেঁসেলে ঢুকো না, মুখে cream লাগিয়ো না, উফ দ্বিগুন উফ। শুধু নীতিমালা পাঠ করার মত গড়গড় করে বলে যায় না, মেয়েদের না করার সময় মুখটা করে রাখে রাগ রাগ, আর ছেলেদের না করার সময় মুখটা করে রাখে তাচ্ছিল্ল ভরে, ছিঃ মেয়েদের মত করো না। এর এগুলো “করো না” list এর সবচেয়ে নিরীহ উদাহরণ। গৎবাঁধা সালেহা-আবুল না হতে চাইলে মাথায় লাগাও একটা inverter!
@নির্মিতব্য,
ভাইজান কি দার্শনিক টাইপের কেউ নাকি ? যে সমাজে নারী নির্যাতন কারী বা নারী হাইজাক কারী পুরুষকে বীর পুরুষ মানা হয়, সেখানে Molestation এর জবাব কি উপদেশ দিয়ে করা যায়? পাগলা কুত্তাকে কি মিষ্টি কথায় ফেরানো যায়? প্রথমে -Molestation এর জবাব Molestation দিয়েই দিতে হবে। অত:পর একটা পর্যায়ে এসে উপদেশ দেয়া যেতে পারে। আপনি এ ধরণের দার্শনিক উপদেশ দিতে পারতেন না যদি আপনার পরিবারের কেউ এ ধরণের শিকার হতো। তাই তো বলে- কি যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে, কভু আশী বিষে, দংশেনি যারে?
@ভবঘুরে,
হাসালেন ভাইজান। হতে পারে আমি, বা আমার পরিবারের কেউই এ ধরণের কিছুর শিকার। অথবা আমিই শিকারী। কিন্তু আপনার কাছে এখনো এতখানি তথ্য নাই যে আপনি এই logical conclusion এ এলেন।
একটা বিষয় আমাদের মেয়েরা খুব সম্ভবত জানে না। অত্যাচারী পুরুষের মত কাপুরুষ পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। দুর্বলের উপর দুঃশাসন চালাতে এদের জুড়ি নেই। এদেরকে শায়েস্তা করতে শুধু দরকার সামান্য একটু সাহসের। ওইটুকু নিয়ে রুখে দাঁড়ান। ………………………
দারুণ…
আর সবার মত আমিও মর্মাহত এই খবর পড়ে। এই রকম ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টিত জন্য খবর ভিত্তিক ব্লগ লেখার জন্য ফরিদ ধন্যবাদার্হ। তবে কিছু মন্তব্য করা প্রয়োজন মনে করছি। পাশবিকতার শিকার মেয়েটিকেই সাহসী হয়ে এই পাশবিকতাকে রুখতে হবে বললে ভুল বার্তা দেয়া হবে বলে আমার মনে হয় । নারী পুরুষ নির্বিশেষে মানুষ সবাই সমান সাহসী বা বেপরোয়া হয় না। এটা প্রকৃতির বা বিবর্তনের বাস্তবতা। পালটা আঘাত হানতে না পারলে ” tough luck, এটা তাদের প্রাপ্য” এই ভুল বার্তাটি প্রচ্ছন্ন আছে শিকারকেই সাহসী হয়ে শিকারীকে রুখতে হবে এই দাবীতে। মানসিকভাবে বা দৈহিকভাবে যারা দুর্বল বা সাহসী নয়, তাদেরকেও রক্ষা করা সমাজের অন্য সদস্যের নৈতিক দায়িত্ব। যার যার আত্মরক্ষা নিজের হাতে ছেড়ে দেয়াটা মানুষ যে সামাজিক জীব সেই ধারণার পরিপন্থী। বন পোড়ান বহ্নিশিখা সমাজের সবার মধ্যেই আসতে হবে যা প্রতিফলিত হবে কঠোর আইনে ও তার বলবৎকরণের মাধ্যমে। আইন নিজের হাতে তুলে নিতে হলেও শুধু শিকারের হাতে তা ছেড়ে দেয়া খুবই বিবেচনাহীন হবে। আমরা দেখি সামান্য পকেটমারার বা খাবার চুরির জন্য অল্প বয়সী বালককে পকেটামারের শিকার নয়, হিংস্র জনতা পিটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দেয়, অনেকেই মারা যায় সেই অবস্থায়। এইরকম সংঘবদ্ধ অপরাধবিরোধী জিঘাংসা তো ধর্ষণকারী বা নারীর পাশবিক নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে দেখা যায় না। এখানেই সমাজের গলদটা দৃশ্যমান। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে নারী বা শিশু ধর্ষক বা ফতোয়াকারীকে জনতা ধরে অক্ষত অবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করে। তারপর সেই পাষন্ড সহজেই বেরিয়ে আসে বিনা শাস্তিতে বা অল্প শাস্তি পেয়ে। যত আক্রোশ সব ছিচকে চোর, পকেটমার বা খাবার চোরদের প্রতি। কোন মেয়ে যদি সাহস করে রুখে দাঁড়ায়ও তাকে সহায়তা দেয়ার জন্য অন্যকে এগিয়ে আসতে হবে। এই নজীর সৃষ্টি করতে পারলেই মেয়েরা সাহসী হবে রুখে দাঁড়াতে। অন্যেরা, বিশেষ করে পুরুষেরা এগিয়ে না আসলে খুব কম মেয়েই একাকী রুখতে সাহসী হবে। এতে ঝুঁকি অনেক। কিন্তু যেটা বলছিলাম সব মেয়েকেই কারাতী উওম্যান হতে হবে এমন আশা করাটা অবাস্তব ও অনুচিত। অন্যায়ের শিকারকে, সে সবল হো বা দুর্বল হোক রক্ষার দায়িত্ব সমাজের সকলের । ইরতিশাদ বলেছেন মেয়েদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। আমি বরং বলব যে পুরুষদের বেশি (নারীকেও) এগিয়ে আসতে হবে। কারণ এই নরপশুরা পুরুষ জাতিকেই কলঙ্কিত করছে। আর নারীরা যদি নিজের থেকেই কারাতী শিখে বা সাহসী হয়ে রুখতে প্রবৃত্ত হয় তাহলে আরও সহজ হবে এই অন্যায় রুখতে। কিন্তু তাদেরকে উপদেশ দিতে হবে কেন, বিশেষ করে পুরুষদের। এই তাগিদ নিজের ভেতর হেকেই আসবে। কে সেরকম সাহসী হবে বা কারাতী শিখবে সেটা ঐচ্ছিক, আর বিবর্তনীয় কারণেই এই তাগিদটা সবার মধ্য সমান হবে না। এটাকে অন্যায় প্রতিরোধের পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয় আমার মতে।
@অপার্থিব,
এমন একটা মন্তব্যের প্রতিক্ষায় ছিলাম। (Y)
সমর্থন জানানো, জাগরণের ডাক, সচেতনতার আহবান প্রশংসনীয়। তবে শিকারীর পাশবিকতা প্রতিরোধ করার, তার বিরোদ্ধে রুখে দাঁড়াবার ক্ষেত্রে শিকারের বা নির্যাতিতের ক্ষমতা-অক্ষমতা, সুযোগ- সুবিধা, এডভান্টেইজ-ডিসএডবান্টেইজ সামনে নিয়ে আসারও প্রয়োজন আছে। এককভাবে প্রতিরোধের ফলাফল, একটি প্রাণের বিনিময়ে সাময়িকভাবে পত্রিকার কোণে স্থান অথবা বড়জোর দেশান্তরী হওয়া যায়।
যথার্তই বলেছেন। আর এখানেই স্পষ্ট দেখা যায় সমাজের দৃষ্টিতে নারীর মূল্যায়ন বা তার আসল অবস্থান। শুধু মনের সাহস সম্বল করে, জন্ম থেকে প্রশিক্ষন নেয়া দক্ষ, গোটা সমাজের সমর্থনপ্রাপ্ত একজন শিকারীকে প্রতিহত করা সহজ ব্যাপার নয়।
@আকাশ মালিক,
এ বিষয়ে আমার একটু দ্বিমত আছে। সমাজে নারীর মূল্যায়নটা গড়ে ওঠে ধর্মীয় দৃষ্টি কোন থেকে। সুতরাং আমি সামাজিক কারনের চেয়ে ধর্মীয় কারনটাকেই বড় মনে করি। ধর্মই আমাদেরকে প্রথমে শেখায় নারীরা নীচু শ্রেনীর প্রানী, ভোগ্য পণ্য, তাদের কোন অধিকার নেই, তাদের কোন স্বাধীনতা নেই। এর ভিত্তিতেই পরবর্তীতে সমাজে মূল্যায়নটা গড়ে ওঠে।
@ভবঘুরে,
খাঁটি কথা। সোজাসাপ্টা আসল কথা। এখন এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে ভাবতে হবে কি ভাবে এই জঘন্য বাস্তব ব্যাপারটা অতিক্রম করে অধিকার আদায় করা যায়।
আমার আগের মন্তব্যতেও
‘কিভাবে’ নিয়ে ভাবতে আর বলতে আহ্বান করেছি। গোঁড়ায় গলদ রেখে বড় কিছু করার চেষ্টা কতটা সফল হবে? কিভাবে?
@ভবঘুরে,
“ধর্মই আমাদেরকে প্রথমে শেখায় নারীরা নীচু শ্রেনীর প্রানী, ভোগ্য পণ্য,তাদের কোন অধিকার নেই, তাদের কোন স্বাধীনতা নেই।”
এই কথাটার সাথে আমি একমত নই।অন্যান্য ধর্মে কি বলে সেটা নিয়ে আমি কিছু বলব না। তবে ইসলাম ধর্ম কি বলে তা নিয়ে আমি একটু বলব।ইসলাম ধর্মে নারী দেরকে সবচেয়ে বেশী মর্যাদা দিয়েছে।রাসুল (সঃ) এর একতি হাদিসঃ
“এক সাহাবী রাসুলুল্লাহর (সঃ) কে জিঞ্জাসা করলেন হে আল্লাহর রাসুল, আল্লাহ ও আপনার পরে কাকে বেশী ভালোবাসাবো? জবাবে রাসুল (সঃ) বললেন তোমার মাকে, সাহাবি আবারো এই প্রশ্ন করলে জবাবে রাসুল (সঃ) আবারো বললেন তোমার মাকে, সাহাবি আবারো একই প্রশ্ন করলে জবাবে রাসুল (সঃ) আবারো বললেন তোমার মাকে, তারপর আবারো প্রশ্ন করলে বললেন তোবার বাবা কে।”
এ থেকে বোঝা যায় ইসলাম নারীকে কি পরিমান সম্মান দিয়েছে। জাহেলিয়াতের যুগে যখন মানুষ মেয়েদের জীবন্ত কবর দিত তখন ইসলাম তাদেরকে এ কাজ থেকে বিরত রেখেছে। একমাত্র ইসলামই নারীদের কে স্বাধীন ভাবে কাজ করার অধিকার দিয়েছে পর্দা করার মাধ্যমে। যাতে তারা মান সম্মানের সাথে পুরুষের পাশাপাশি কাজ করে যেতে পারে এবং স্বাধীন ভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।
@শান্তিময়ভোর,
তাই নাকি ভাইজান ? আপনার প্রথম সমস্যা হচ্ছে আপনি সন্তান ও মা এর সম্পর্কের মধ্যে নারীর মর্যাদাকে টেনে এনে নারীর%
@শান্তিময়ভোর,
দু:খিত আগের মন্তব্যটি কেন ছাপা হলো না বুঝলাম না।
তাই নাকি ভাইজান। তার মানে আপনি কোরান হাদিস আদৌ পড়েন নি। আপনি সন্তানের কাছে মায়ের মর্যাদা এর সাথে ইসলাম ধর্মে নারীর মর্যাদাকে গুলিয়ে ফেলেছেন। মোহাম্মদ সন্তানকে বলেছে মা কে সবচাইতে বেশী ভালবাসতে। সন্তানের কাছে মায়ের মর্যাদা সব ধর্মেই সব সময়ই উচু, এটা শুধুমাত্র ইসলামে নয়। যেমন- হিন্দু ধর্মে সন্তানকে তার মাকে শুধু বেশী ভালবাসাই নয়, দেবী জ্ঞানে পুজো করতে বলা হয়েছে। এটা কি ইসলামের চাইতেও বেশী মর্যাদা দেয়া হলো না ? আসলে নারীর মর্যাদা নির্ধারিত হয় স্বামীর সাথে তার সম্পর্কের ওপর, সন্তানের সাথে সম্পর্কের ওপর নয়। এখানেই আপনার সমস্যাটা হচ্ছে। ইসলামে কত প্রকারে ও কিভাবে নারীকে অপমান ও হীন করা হয়েছে তার ফিরিস্তি পাবেন নিচের লিংকগুলোতে-
ইসলামে নারীর মর্যাদা- ৩
ইসলামে নারীর মর্যাদা- ২
ইসলামে নারীর মর্যাদা-১
এ ছাড়াও আপনি আবুল কাসেম ভাইয়ের নিবন্ধগুলো পড়লে আরও বিশদ জানতে পারবেন।
ধণ্যবাদ।
@শান্তিময়ভোর,
এখানেও দেখতে পারেন যদি মোখতাসার মানে সারসংক্ষেপ পড়তে চান
@ভবঘুরে,
আপনার এই কথাটা বহুলাংশে সত্য হলেও সর্বাংশে নয়। আলোচনা এই লেখাটার সাথে অপ্রাসঙ্গীক হয়ে যাচ্ছে বিধায় সংক্ষেপে আমার ধারণাটুকু ব্যক্ত করবো। ইউরোপ বা আমেরিকায়, চীন অথবা জাপানে, ধর্মহীন সমাজে কিংবা নাস্তিক পরিবারে যদি পুরুষ কর্তৃক নারী এসিডদগ্ধ হওয়ার খবর পত্রিকায় না আসতো, ডিগ্রিধারী ডাক্তার যদি সার্জারির ভোতা ছুরি দিয়ে তার স্ত্রীর গলা না কাটতো, পঞ্চাশোর্ধ সাহিত্যিক যদি তার মেয়ের বয়েসী যুবতীর কাছে প্রেম নিবেদন না করতো, উচ্চশিক্ষিত পুরুষ যদি তার স্ত্রীর নাক চিবিয়ে না খেতো, জীবনের তরে স্ত্রীকে অন্ধ করে না দিতো, আমি সর্বাংশে আপনার সাথে একমত হতে পারতাম।
@আকাশ মালিক,
ধর্মহীন সমাজে পুরুষ কর্তৃক নারী নিগৃহিত হয়, কিন্তু আমাদের সমাজের তুলনায় তা কত % চিন্তা করুন। ধর্মহীন সমাজে এরকমটি হওয়ার পিছনে হয়ত অন্য কোন ফেক্টর কাজ করছে সেটা অন্য আলোচনার বিষয় হতে পারে।
আপনি যে ডিগ্রীধারী বা উচ্চশিক্ষিত বা পঞ্চাশোর্ধ সাহিত্যিকদের কথা উল্লেখ করলেন তারা কি ধর্ম মানেনা বলে আপনি মনে করেন? দেখুন গিয়ে তাদের মধ্যে ধর্মের প্রভাব আরও প্রবল। আমাদের উপমহাদেশে নারীদেরকে কি দৃষ্টিতে দেখা হবে, কি ধরনের আচরনের তারা যোগ্য বা সমাজে তাদের অবস্থান কোথায় ইত্যাদি বেশীরভাগটাই নির্নিত এবং নিয়ন্ত্রিত হয় ধর্মীয় অনুশাসনের মাধ্যমে। ধর্মের কারনেই সমাজে নারীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়াটাকে জনগন (অনেক সময় নারীও বাদ যায়না) জরুরী মনে করেনা, কারন এইসব অত্যাচার তাদের কাছে ধর্মীয় কারনে জাষ্টিফাইড বলে মনে হয়, এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়াটাকে তারা ধর্মের বিরুদ্ধে যাওয়ার সামিল বলে মনে করে। নারীকে একজন পুরুষের অবস্থানে মেনে নিতে ইসলাম, হিন্দু সব ধর্মেই বড় আপত্তি। তাই ভবঘুরে যা বললেন তা আমার কাছে সঠিক বলে মনে হয়।
@ব্রাইট স্মাইল্,
একটা প্রশ্ন করি, সহজভাবে সময় নিয়ে, বুকে হাত দিয়ে চিন্তা করে বলুন তো দেখি, ধর্ম দুনিয়া থেকে উঠে গেলে কি নারীনির্যাতন, ধর্ষন, নারীকে যুদ্ধক্ষেত্রে ভোগ্য সম্পদ মনে করা, বহু বিবাহ, নারীর মুখে এসিড নিক্ষেপ বন্ধ হয়ে যাবে? কেন সকল সমাজে সকল দেশে (পরিসংখ্যানে তারতম্য হতে পারে) নারীকে পুরুষ দূর্বল মনে করে, জীবনের কোন্ সময় থেকে কিসের ভিত্তিতে এই ভাবনার উদ্রেক হয়, কোথায় এর উৎস, নারী কেন সাধারণত পুরুষের মতো হিংস্র হয়না, নারী কি জন্মসুত্রেই ক্ষমাশীল, করুণাময়ী, যত্নবান হয়ে বড় হয় এসব ফ্যাক্টর জানতে গিয়ে দেখবেন একসময় হয়তো আমাদেরকে বিবর্তনবাদের স্বরণাপন্ন হতে হবে।
যাক এসবের দিকে না গিয়ে আমাদেরকে দেখতে হবে এই হাতকাটা মেয়েটার জন্যে, বিজয় দিবস উদযাপন করতে না পারা মহিলার জন্যে আমরা কী করলাম, কী করতে পারি। আমরা বলি- খুবই দুঃখজনক কিন্তু আমার কিছু করার নেই, বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জায়গাও নারীর জন্যে নিরাপধ নয়, নারী তুমি সাবধানে থেকো, আমরা থুথু দেই পুরুষজাতির মুখে, গালি দেই ঘৃণা জানাই নিজেকে, ব্যাস। আমাদের দায়ীত্ব শেষ? আমাদেরকে প্রতিকার প্রতিরোধের উপায় বের করতে হবে। হিউম্যান রাইটস, নারীবাদী আন্দোলন, মহিলা সমিতির নেতৃবর্গ, ইন্টারনেট যুগের সচেতন নাগরিক নতুন প্রজন্ম কোথায়, কোথায় তথাকথিত শিক্ষিত সুশীল সমাজ, তারা কি স্বার্থ ও লোভের কাছে বিবেক বন্ধক দিয়েছেন? এই সোনার বাংলাদেশে মানুষের কি এতোই অভাব পড়েছে যে, অমানুষের অত্যাচরের বিরোদ্ধে রুখে দাঁড়াবার মতো মানুষ বলতে কেউ নেই?
@আকাশ মালিক,
দেখুন, ১০০% পারফেক্ট অবস্থান এই দুনিয়াতে সম্ভব নয় বলেই জানি। তদুপরি সময়, পরিবেশ, পরিস্থিতি, দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি অনেক ব্যাপারে অনেক কিছুই আপেক্ষিক। কিন্তু দুনিয়ায় আজকে যে পরিস্থিতি তাতে একটা সোজা হিসাব করলে বলাটা ভুল হবেনা যে ধর্ম দুনিয়া থেকে উঠে গেলে শুধু নারী নির্যাতন কেন অনেক যুদ্ধ-বিগ্রহ, মারামারি, খুনাখুনী পৃথিবী থেকে কমে যেতে বাধ্য।
বিবর্তনের কারনেই হউক বা অন্য যে কোন কারনের (যেমন সন্তান জন্মদান) জন্যই হউক নারী ও পুরুষের শারীরিক গঠন ভিন্ন প্রকৃতির, আর এটাই হলো পুরুষের মোক্ষম হাতিয়ার যেটা যে কোন সমাজে পুরুষ ক্রমাগত ব্যবহার করে চলেছে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্যকে পাকা-পোক্ত ও অটুট রাখতে। এই হাতিয়ারকে আরো পাকা-পোক্ত ও শানিত করার জন্য ধর্মটি যে অনেক কার্য্যকরি ও শক্তিশালী ভুমিকা রেখে যাচ্ছে এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। পুরুষ হউক, মেয়ে হউক, মানুষ মাত্রই চায়না তার আধিপত্য হারাতে। ইসলাম ধর্মের অনুশাসনগুলো যে নারীকে অবদমিত করা নিয়ে আবর্তিত, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সে যে নারীকেই সব সময় টারগেট করে সেটা আপনার থেকে ভালো আর কে জানে বলুন?
নারী ক্ষমাশীল, করুণাময়ী, যত্নবান ইত্যাদি স্তুতি আউড়ে আধিপত্যবাদকে আরো শক্তিশালী করা বইতো আর কিছু নয় এবং এটাতে এরা বেশ সাক্সেসফুল বলতে হবে, কারন এইসব স্তুতিতে নারীকুল বিগলিত, এসব তাদের আরো করুণাময়ী হতে প্রেরনা যোগায় যেটা আধিপত্যবাদকে আরো জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করে।
আমরা কি করলাম বা আমরা কি করতে পারি এসবই নির্ভর করবে আমাদের দৃষ্টিভংগী আমরা কতটুকু পরিবর্তন করতে পেরেছি, আর দৃষ্টিভংগী, মন-মানসিকতা ইত্যাদি পরিবর্তন হওয়ার উপায়টা হচ্ছে ঘটনাগুলো কেন ঘটে যাচ্ছে কারন অনুসন্ধান এবং অনুধাবন করে রিয়েলাইজেশন করা। তা হলেই কার্য্যকরী পদক্ষেপগুলো সমাজে আপনা থেকেই প্রতিভাত হবে। আর এটা এখনো পর্য্যন্ত হয়নি তা বলাই বাহুল্য, তাই আপনি অতি দুঃখের সাথে বলছেন যে,
বড়ই দুর্ভাগ্য!
@আকাশ মালিক,
কেনো? অপার্থিবের এই মন্তব্য না এলে আপনার মতামত কি আমরা পেতাম না?
@ফরিদ আহমেদ,
মনের কথা বা মতামতটা প্রকাশের জন্যে মনটা যখন উচাটন করে কিন্তু গোছায়ে বলার দক্ষতার অভাবে বলা হয়না, তখন কারো অপেক্ষা ছাড়া আর উপায় কী আছে বলুন। তবে মুক্তমনায় সে আশা পুরণের মানুষের অভাব কোনদিনই হয়নি। প্রায় সময়েই দ্বিধাগ্রস্থ সংকটকালে অপার্থিবকে তাঁর যুক্তিবহুল মূল্যবান মন্তব্য নিয়ে হাজির হতে দেখেছি। অপার্থিব মুক্তমনার গর্ব, তার প্রতি শ্রদ্ধাবনত সালাম।
@আকাশ মালিক,
অপেক্ষা ছাড়াও অনেক জায়গায় মতামত দিতে দেখেছি আপনাকে। তখন মন উচাটন করে, কিন্তু গোছায় বলতে পারেন না, এই যুক্তি শুনি নি অবশ্য।
অপার্থিব মুক্তমনার গর্ব, এতে বিন্দুমাত্রও কোনো অমত নেই আমার। কিন্তু তিনি যে মুক্তমনার দ্বিধাগ্রস্থ সংকটকালের থার্ড আম্পায়ার, সেটা জানা ছিলো না আমার।
লেখাটার শিরোনাম দেখে যখন পড়তে শুরু করলাম তখন ঘুনাক্ষরেও সন্দেহ করিনি এমন পৈশাচিক কিছু জানবো। বাংলাদেশে বোধয় “মানুষ”কম “পুরুষ”বেশি। ইদানিং এই ধরণের “পুরুষিক” অত্যাচার আশংকাজনক ভাবে বেড়ে যাচ্ছে। সবগুলো একসাথে মর্দাঙ্গি দেখাতে উঠে পড়ে লেগেছে। ফরিদ ভাই ঠিকই বলেছেন এরপর ভিড়ের মধ্যে শরীরে হাত দিতে এলে আসল জায়গায় এমন চাপ দিতে হবে যেন রাতে বৌয়ের কাছে যেতেও ভয় পায় আর স্বামীগিরি দেখানোর জন্য গায়ে হাত দিলে তো কথাই নেই উল্টো পিটিয়ে দিতে হবে। আমাদের সমাজে নরমপন্থায় কোন কাজ হয় না। মেয়েদের কঠিন হতে হবে। খুব কঠিন।
@ফরিদ আহমেদ
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। যদি একজন মানুষও সচেতন হয় তবুও লাভ। আর একদিন ভোর হবেই।
বড়ই মর্ম্মস্পর্শী ঘটনা। চোখ ফেটে কান্না নেমে এলো। ভাবলাম- এটি যদি আমার বোনের হতো তাহলে আমি কী করতাম?
এ ধরনের ঘটনা মিডিয়ায় প্রচার হওয়ার পরও অনেক ঘটে নীরবে নিভৃতে; সবগুলো তেমন প্রচার পায় না। পুরুষের পুরুষালী মনোভাব আমূল পরিবর্তন দরকার।
জানতে ইচ্ছে করছে এই পাষণ্ড শয়তানটির (মানুষ বলতে ইচ্ছে করছে না) কোনো শাস্তি হয়েছে কিনা?
শয়তান ,তোদের মতো পিশাচ রা আমাদের পড়াশোনা থামাতে পারবে না । মেয়েরা প্রতি আক্রমণে নামতে শিখছে । প্রয়োজনে দুর্গা কালী যা হতে হয় হব ।
কেবল অত্যাচারী পুরুষ না, যেকোন অত্যাচারীই আসলে মনে প্রাণে কাপুরুষ! মনের ভিতরে ভয় বলেই বাইরে হাকডাক! ভয় দেখিয়ে যারা বাধ্য করতে চায়, তারা ভয়টা দেখিয়েই বীর হতে চাই। ভাবে কে ঠেকাবে আমার বিজয়! দেখে নেব কি করে আমার ইচ্ছার বাইরে যায় ঘটনা। বল্লম হাতে রুখে দাঁড়াও! ঠিকই দেখা যাবে পশুর মুখোশ খুলে পড়ছে, গগনবিদারী চিৎকার করতে পারে, কিন্তু বল্লমে প্রাণ দেবে না। হয় সুযোগের অপেক্ষায় থাকবে, অথবা সহজ শিকারের পিছু নেব। তাই দূর্বল হওয়া মানেই জানোয়ারগুলোর হাতে ধরা দেয়া।
জুঁই জানে এখন, জানোয়ারকে ভালোবাসা যায় না। তবে এভাবে নির্যাতিত হবার আগেই জুঁইদের এর জানা উচিত, এরা প্রতারক, পুরুষ রুপী জানোয়ার। এদের যেন করুণা করেও কেউ ভালো না বাসে। করুণার ও যোগ্য না এরা!
জুইয়ের জন্যে আমরা এখন কি করতে পারি? তাকে কিভাবে সহযোগিতা করতে পারি?
সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে হবেই, কিন্তু তার আগে এসব জুইদের এগিয়ে নেবার পরিকল্পনাও আমাদের করতে হবে।
সাঙ্ঘাতিক শক্তিশালী উপস্থাপনা। দরকার, এই রকম লেখা অনেক বেশি বেশি দরকার, লেখা, প্রকাশ ও প্রচার একসাথে।
মেয়েরা নিজেরা যতক্ষন গর্জে না উঠবে একসাথে ততক্ষন অধিকার আদায়ের গতি থাকবে তুচ্ছ, বলাই বাহুল্য।
জন্ম থেকে মেয়েরা মেয়েদের জন্য যে সমাজ, যে অবস্থান, আত্যাচার নিপীড়ন তাচ্ছিল্যের যে স্বাভাবিকতা দেখছে এবং হজম করে নিচ্ছে, তা থেকে বের হতে বড় ধরনের বিপ্লব লাগবে।
আমাদের সংস্কৃতিতে মেয়েদের হেলা করাটা ধর্মকাঁটা দিয়ে বহুকাল ধরে গভীর থেকে গভীরএ ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। আর এতে সাহাজ্য করছে আমাদের আপন জনেরা।
বৈষম্য এবং তাচ্ছিল্য শিক্ষা শুরু হয় নিজের ঘর থেকে, আরো সুনির্দিষ্ট করে বললে মা বাবা ও পরিবারের থেকে। অর্থাৎ শুরুটা আসে একেবারে অতি বিশ্বস্ত মানুষদের কাছ থেকে। মনের অতি গভীরে প্রোথিত হয়ে থাকা এই ভাবনা অতিক্রম করা মহা কঠিন কাজ। এইটাই করতে হবে মেয়েদের। কিভাবে? এখন সেই পথ দেখানোটাই হোক সবার ভাবনা।
লেখাটা পড়া শুরু করেই আমি একটু শঙ্কিত ছিলাম,ফরিদ ত রগ রগে প্রেমের গল্প ফাঁদার মানুষ নয়। শঙ্কাটা তেমন ভাবে আঘাত করার সুযোগ পায় নাই, কারন আগেই পত্রিকায় পড়েছি। জুঁই এর স্বামী যাদের গোলাম খাটে তাদের দেশে কল্লা কাটা , অনার কিলিং জায়েয। কি ই বা আর বলার আছে…আমি নিজে পুরুষ তাই শুধু মনে হয় এ নৃশংসতার দায়ভার আমার ও , নিজেকে পুরুষ ভাবতে লজ্জা হয় । আমি মানুষ?।।আমি পুরুষ?? … আমি জানোয়ার।। এ দায় আমার!!
লেখাটা যেভাবে শুরু হয়েছিল ভেবেছি ফরিদ ভাই আমাদের কোন মজাদার গল্পে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু একটু পরেই ভুল ভাঙল, এতো দেখি চরম পৈশাচিক হৃদয় বিদারক এক লাঞ্ছিত নারীর করুণ কাহিনি। এই সব ঘটনা ইদানিং আশংজনক ভাবে বেড়ে যাচ্ছে আমাদের দেশে। দিনে দিনে আমরা কেমন যেন এক সন্ত্রাসী রুক্ষ্ম জাতিতে পরিণত হচ্ছি। বিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে চারিদিকে ধর্মীয় ডামাঢোলের মাঝে মানবতা হারিয়ে আমাদের যাত্রা যেন সেই ফেলে আসা মধ্য যুগের পানে। যে সমাজে পুরুষরা কখনো নারীদের ভোগ্য পণ্যের চেয়ে বেশী কিছু ভাবতে শিখে নি। ধিক সেই সব বর্বর পুরুষদের। তবে এই সব জঘন্য কাজে বেশির ভাগ সময় বিশেষ কোন নারীর সহযোগিতা উপেক্ষণীয় নয় মোটেও।
এই অবস্থা থেকে মুক্ত হতে চাই ব্যাপক মিডিয়া প্রচার, গণ সচেতনতা ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি।
অনৈতিক অবক্ষয়যুক্ত সমাজ ব্যাবস্থার চিত্রটি সঠিক সময়ে সামনে আনার জন্য ফরিদ ভাইকে ধন্যবাদ।
@রাজেশ তালুকদার,
মজাদার গল্প আমি করি নি। ঘটনাটা প্রায় এভাবেই ঘটেছে। ডেইলি স্টারে লিখেছে,
He took her into a room in the house and locked her in. He said he had a surprise for her.
Rafiqul covered her eyes with a piece of cloth, taped her mouth shut and cut the hand with a machete.
রফিকের কি বিচার হবে? যে বিচারই হোক না কেন, জুঁই কি তার হাত ফিরে পাবে? তাকে বিকলাঙ্গ ,দুঃসহ জীবন কাটাতে হবে। অনেক সম্ভাবনাময়ী মেয়ের পড়াশোনা বিয়ের পরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে; এ রকম অসংখ্য উদাহরণ আছে আমার কাছে। মাঝপথে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে পরগাছার মত জীবন যাপন করাও ত এক ধরনের বিকলাঙ্গ জীবন।
মিলিয়ন ডলারের বাক্য। প্রয়োজন ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার। পুরুষশাসিত সমাজ আর বিজ্ঞাপণ প্রত্যাশী মিডিয়া সেটা কখনোই করবে না। ব্লগারদের লেখার মাধ্যমেই এই আন্দোলন আর প্রচারণা শুরু হোক।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ লেখা। অনেক ধন্যবাদ ফরিদ ভাই।
ভাবতেই লজ্জ্বা হয়,আমিও সেই পুরুষ গোত্রের একজন!
@নিটোল,
লজ্জার কী আছে? গোত্র এক হলেও পরিবার আলাদা। আমরা ভিন্ন পরিবার। আমি আপনিতো আর এই কাজ করি না যে লজ্জিতবোধ করবো।
@নিটোল, নিজের বিবেক কে প্রশ্ন করে দেখুন আপনি মনে প্রাণে শুদ্ধ কিনা। তা হয়ে থাকলে নিজেকে নিয়ে লজ্জিত না হয়ে স্থির হন। আপনার বন্ধুটি হয়ত মুখোশধারী। আপনার সহপাঠীদের মধ্যে কেউ হয়ত। আপনার সহকর্মীদের মধ্যে কেউ হয়ত, আপনার প্রতিবেশীদের মধ্যে কেউ হয়ত। ওটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে এড়িয়ে না গিয়ে রুখে দাড়ান। আপনার চেনা যে ছেলেটি রাস্তায় দাঁড়িয়ে মেয়েদের দেখে শিষ বাজাচ্ছে, অথবা চায়ের টেবিলে মেয়েদের নিয়ে অসম্মানজনক মন্তব্য করছে, প্রতিবাদ করুন। এটা মোটেও তার ব্যক্তিগত ব্যাপার না। এটা একটা সামাজিক ব্যাপার। বাংলাদেশের ঘরে ঘরে অসংখ্য নারী নীরবে নিভৃতে নির্যাতিত হয়। শারিরীক ভাবে নির্যাতনটা চোখে দেখা যায়। মানসিক নির্যাতনটা দেখা যায় না। কিন্তু হচ্ছে প্রতিদিন। কেউ কাগজে কলমে শিক্ষিত হলেই মানুষ হয় না। সংকীর্ন মানসিকতার, নারীদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করা বা নারীকে অধীন করে রাখার মত মানসিকতা বিশিষ্ট সার্টিফিকেটধারী পুরুষগুলোর মুখে ঘুরে একটা ঘুষি লাগিয়ে দেন।
আমি ফরিদ ভাইয়ের অভিমত মনেপ্রাণে সমর্থন করি। উলটো আঘাত প্রয়োজন। সর্বস্তরে। মুখোশধারী জানোয়ার গুলোকে উপযুক্ত প্রত্যাঘাত করতে হবে।
@নীল রোদ্দুর,
(Y)
আসল কথা হল এটাই। মেয়েরা বহুদিন মার খেয়ে এসেছে। এবার তাদেরও চিৎকার করে নিজের অস্তিত্ব জানান দেবার সময় এসেছে।
এই ধরনের ঘটনা আর শুনতে চাই না। সে জন্য এই ধরনের লেখা আরো দেখতে চাই। মুখ বুঁজে অত্যাচার সহ্য করতে বাধ্য করে যে সমাজ, সেই সমাজই আবার সহানুভূতির জোয়ারে ভাসিয়ে দেয় অত্যাচারিত মেয়েদেরকে। সবকিছু জেনেশুনেও এঁদের পুরুষ আত্মীয়রা থাকে নির্বিকার। মেয়েদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে আজন্মলালিত সংস্কারের গন্ডী থেকে বেরিয়ে সমাজ পরিবর্তনের কাজে। নিজেদের পুরুষ আত্মীয়দের ওপরে প্রভাব বিস্তার করে, চাপ সৃষ্টি করে, প্রয়োজনে তাদের কতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে।
জানি, কথাটা বলা সোজা, করাটা নয়। তবুও বলবো, সমাজ পরিবর্তনের লড়াই কখনো সোজা ছিল না, হয় না।
ফরিদকে ধন্যবাদ এই গুরুত্বপূর্ণ লেখাটার জন্য।
(Y) (Y)
অনেক নারী বলে থাকেন, জনবহুল স্থানে কোনো একটা আক্রমণের শিকার হলে, সেখানে প্রতিবাদ করতে গেলে অন্যদের নিষ্পলক চোখের শিকার হতে হয়, বিব্রতকর পাশমন্তব্যের শিকার হতে হয়। সেটা ঠিক। কিন্তু সেজন্য প্রতিবাদ না করে মুখ বুঁজে থাকলে আসলে পরবর্তীতে অন্য একজন নারীর ওপরও যে একই আক্রমণ চালানো হবে সেটাই কেবল নিশ্চিত করা হয়। প্রতিবাদ করাটা এজন্যই এতোটা প্রয়োজনীয়। আর একটা ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়ে, প্রতিরোধ করে সামগ্রিক লাভটা হবে না। আপনার বান্ধবীকেও প্রতিবাদ করতে শেখান, শেখান আপনার মেয়েটিকে, বোনটিকে, আপনার পরিচিত সব নারীকে। আপনাদের সংখ্যা পুরুষদের সমান। আপনারা উচ্চকন্ঠ হয়ে উঠুন, এই অসুস্থ মর্দামি কমে আসতে বাধ্য। আর একটা জিনিস মনে রাখবেন, পৃথিবীর সব পুরুষ খারাপ নয়। আপনি যদি প্রতিরোধ না করে চুপ করে থাকেন, যে পুরুষ এখনো পশু হয়ে যায়নি, সে আপনার পাশে থেকেই আপনাকে সাহায্য করতে পারবে না। আপনি শব্দ তুলুন, আপনার পাশে মানুষ গিয়ে দাঁড়াবেই।
(Y) ভীষণভাবে সহমত।
(সামান্য কিছু টাইপো আছে, একবার দেখে নেন প্লিজ)
@সৈকত চৌধুরী,
সামান্য না, অনেক আছে জানি। শুধু টাইপো নয়, বাক্য গঠন, শব্দ চয়ন, অনেক কিছুতেই ভুল আছে। সকালে সীমিত একটা সময়ের মধ্যে লেখাটা শেষ করার তাড়া ছিলো। এক টানে লেখা হয়েছে, সংশোধন করার সুযোগ ছিলো না। এখন বসবো ওগুলো ঠিক করতে। ধন্যবাদ তোমাকে।
বারুদ লেখা…. (Y)
একদম ঠিক কথা। ঘটনাগুলো খবরে পড়ি, আর অক্ষম ক্রোধে শুধু তাকিয়ে থাকি।
রুমানা মঞ্জুরের সময়েও দেখেছিলাম নারীর কাছে মেটিং ভ্যালু কমে যাওয়া একজন হীনমন্য ঈর্ষাপরায়ন পুরুষপুরুষালী হিংসা আর ক্রোধ কী ভয়াবহ জিনিস হতে পারে। অথচ, সব কিছু জেনে বুঝেও মেয়েদেরকেই দেয়া হয়েছে ঈর্ষাপরয়ানতা, কুচক্রিতার খেতাব। আয়রনি আর কাকে বলে।
@অভিজিৎ,
অভিজিৎ’দা অথবা মডারেটরবৃন্দ,
লেখাটা কি স্টিকি করা যায়? আমি জানি না, ইতিমধ্যে স্টিকি করা কি-না। আমি একটা লেখা দিতে গিয়েও দিলাম না, মনে হলো এই লেখাটা উপরে থাকা উচিৎ। ধন্যবাদ।
@মইনুল রাজু,
জনস্বার্থে ব্রাক। 🙂
না, লেখাটা স্টিকি করা হয় নি। তুমি পোস্ট দিতে চাইলে দিয়ে ফেলো।
@ফরিদ আহমেদ,
তথাস্তু 🙂 ।
@মইনুল রাজু,
খেয়াল করিনি আপনি এ অনুরোধ করেছিলেন। দেরি হয়ে গেছে যদিও, কিন্তু স্টিকি করে দিচ্ছই এখনই।
@অভিজিৎ,
আমি বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকা পড়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছি বলা চলে। ফেসবুকে মেহুল দিয়েছে এই লিংকটা। আমি ভেবেছি ভারতীয় কোনো নারীর ঘটনা। পুরোটা পড়ে দেখি আমাদেরই ঘরের বিষয়। আমাদেরই বাচ্চা একটা মেয়ে এই ভয়াবহ পৈশাচিকতার শিকার।