আবুল কাশেম
উম হানীর বিবাহ এবং তাঁর স্বামীর পরিচয়
আবু তালেব মুহাম্মদের উম হানীকে বিবাহের প্রস্তাব গ্রহণ করলেন না। মুহাম্মদ আহত হলেন, হয়ত রাগও করেছিলেন তাঁর পিতৃব্যের উপর। তার এক উদাহরণ হল মুহাম্মদ পরে বলেছিলেন যে আবু তালেব নরকে যাবেন এবং তাঁর পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত আগুন থাকবে—আবু তালেবের মগজ সেই আগুনের উত্তাপে টগবগ করে ফুটবে।
দোজখে আবু তালেবের শাস্তি সম্পর্কে একটি হাদিস দেওয়া হল:
আবু সায়ী’দ খুদরী (রাঃ) বর্ণনা করিয়াছেন, একদা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের সম্মুখে তাঁহার চাচা আবু তালেবের বিষয় উল্লেখ করা হইল। হযরত (সঃ) বলিলেন, আশা করি তাহার শাস্তি লাঘব করিতে, কেয়ামতের দিন আমার সুপারিশ সাহায্য করিবে। তাহাতে অল্প পরিমাণ দোযখের আগুনে রাখা হইবে; দোযখের আগুন তাহার পায়ের গিঁট পর্যন্ত থাকিবে, কিন্তু তাহা দ্বারাই তাহার মাথার মগজ পর্যন্ত টগবগ করিতে থাকিবে। (বোখারী শরীফ, খণ্ড ৬, হাদিস ১৬৯১, মাওলানা আজিজুল হক সাহেব, মহাদ্দেছ জামিয়া কোরআনিয়া, লালবাগ ঢাকা কর্তৃক অনুদিত। ইংরাজি ৫.৫৮.২২৪, ২২৫)
বোখারী শরীফে এই ধরণের আরও বেশ কয়েকটি হাদিস আছে।
যাই হোক, আবু তালেব যথা সময়ে উম হানীর বিবাহ ঠিক করলেন এবং পৌত্তলিক কবি হুবায়রার সাথে উম হানীর বিবাহ দিয়ে দিলেন।
মনে হয় আবু তালেবও তাঁর সিদ্ধান্তের জন্য নিজেকে একটু দোষী দোষী ভাবছিলেন। তাই উনি মুহাম্মদকে প্রস্তাব দিলেন খদেজাকে বিবাহের জন্য। মুহাম্মদ এতে রাজী হয়ে গেলেন। তখন মুহাম্মদ ২৫ বছরের এক পরিপূর্ণ যুবক এবং খদেজার ব্যবসায়ের কর্মচারী।
এই ব্যাপারে মার্টিন লিঙ্গস্ লিখেছেন:
কিন্তু মেয়ের (ফাকিতাহ্ বা উম হানী) বিবাহের ব্যাপারে আবু তালেবের অন্য পরিকল্পনা ছিল। আবু তালেবের মা ছিলেন মাখযুমি গোত্রের মহিলা। হুবায়রা ছিলেন আবু তালেবের মায়ের ভাই । তিনিও আবু তালেবের কাছে ফাকিতার (উম হানীর) হাত চেয়েছিলেন। হুবায়রা শুধুমাত্র বিত্তবানই নয় আবু তালেবের মতই প্রতিভাবান কবি ছিলেন। মক্কায় তখন মাখযুমি গোত্রের প্রভাব প্রতিপত্তি ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছিল, আর হাশিমি গোত্রের প্রভাব ক্রমশঃ অধঃপতনের দিকে যাচ্ছিল। ভেবে চিন্তে আবু তালেব শেষ পর্যন্ত হুবায়রার সাথেই তাঁর কন্যা ফাকিতার (উম হানীর) বিবাহ দিয়ে দিলেন। আবু তালেবের ভাতিজা (নবী মুহাম্মদ) এই ব্যাপারে আবু তালেবকে মৃদুভাবে ভর্ৎসনা করলেন, তখন আবু তালেব উত্তর দিলেন: “তারা তাদের মেয়েকে আমাদের গোত্রে বিবাহ দিয়েছে—তাই একজন বদান্য পুরুষের জন্য অবশ্যই বদান্যতা দেখান প্রয়োজন।“ এই বাক্যের দ্বারা নিঃসন্দেহে আবু তালেব তাঁর মায়ের (মাখযুমি গোত্রের) সাথে আবু তালেবের গোত্রের বিবাহের ঘটনা বুঝাচ্ছিলেন। কিন্তু এই ব্যাখ্যা খুব জোরালো ছিল না। কারণ, আবু তালেব যে ঋণের উল্লেখ করেছিলেন তা আবদুল মুত্তালিব পরিশোধ করেছিলেন তাঁর দুই কন্যা আতিকাহ্ এবং বারাহ্ কে মাখযুমি গোত্রের দুই পুরুষের সাথে বিবাহ দিয়ে। নিঃসন্দেহে বলা যায় তাঁর চাচা এই সিদ্ধান্তের দ্বারা সদয় ও ভদ্রভাবে মুহাম্মদকে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন যে মুহাম্মদ তাঁর কন্যার যোগ্য ছিলেন না। যাই হোক, মুহাম্মদ এই পরিস্থিতি মেনে নিলেন। কিন্তু অল্পসময়েই মুহাম্মদের জীবনে পরিবর্তন এসে গেল (খদেজার সাথে মুহাম্মদের বিবাহ) (লিঙ্গস্, পৃঃ ৩৩)
আগেই লিখা হয়েছিল যে কৈশরে নবী মুহাম্মদ বিবি খদেজার বানিজ্যের কর্মচারী নিয়োগ হবার আগে ভেড়ার পালের রাখালের কাজ করতেন, যার জন্য আবু তালেব তাঁর কন্যকে এক রাখালের হাতে তুলে দিতে চাইলেন না। এই ব্যাপারে এখানে একটা হাদিস দেওয়া হল:
আহমদ ইব্ন মুহাম্মদ মক্কী (র.)…আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, নবী (স.) বলেছেন, আল্লাহ্ তা’আলা এমন কোন নবী পাঠাননি, যিনি বকরী চরান নি। তখন তাঁর সাহাবীগণ বলেন, আপনিও? তিনি বললেন, হ্যাঁ; আমি কয়েক কীরাতের বিনিময়ে মক্কাবাসীদের বকরী চরাতাম। (বুখারী শরীফ, ৪র্থ খণ্ড, পৃঃ ১১২, হাদিস নম্বর ২১১৯, ইসলামিক ফাইন্ডেশন বাংলাদেশ)
মার্টিন লিঙ্গস্ আরও লিখেছেন যে উম হানীর সাথে বিবাহের সময় হুবায়রা ছিলেন একজন পৌত্তলিক। (ঐ বই, পৃঃ ২৯৯)
বেঞ্জামিন ওয়াকার লিখেছেন:
মুহাম্মদ আবু তালেবকে প্রস্তাব দিলেন উম হানীকে বিবাহের জন্য। কিন্তু মুহাম্মদের প্রতি আবু তালেবের যথেষ্ট মায়া মমতা থাকে সত্ত্বেও তিনি এই প্রস্তাব নাকচ করে দিলেন যেহেতু মুহাম্মদ ছিলেন দরিদ্র। মুহাম্মদের বয়স যখন পঁচিশ তখন আবু তালেব মুহাম্মদকে প্রস্তাব দিলেন খদেজাকে বিবাহ করার জন্য। খদেজা ছিলেন কুরাইশ গোত্রের এবং খুয়েলিদের কন্যা। ইতিপূর্বে খদিজার দুইবার বিধবা হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন দুই পুত্র এবং এক কন্যার মাতা। এরা সবাই ছিল তাঁর ভূতপূর্ব দুই স্বামীর ঔরসজাত। সেই সময় মুহাম্মদ খদিজার অধীনস্থ কর্মচারী ছিলেন—তাঁর বানিজ্যের দেখাশোনা করতেন। ইতিমধ্যেই খদিজার বাণিজ্যের জন্য মুহাম্মদকে আরবের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং সিরিয়া যেতে হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল দামেস্ক এবং আলেপ্পো শহর গুলিও। বাণিজ্যের উপর মুহাম্মদের প্রখর দক্ষতা খদেজাকে ইতিমধ্যে মুগ্ধ করেছিল। (ওয়াকার, পৃঃ ৯১)
এখন উম হানীর স্বামী হুবায়রা সম্বন্ধে কিছু জানা যাক। যতটুকু বুঝা যায় হুবায়রা উম হানীকে বেশ ভালবাসতেন। আর উম হানী হুবায়রাকে তৎপরিমাণ ভাল না বাসলেও তাঁর প্রতি নিষ্ঠাবান ছিলেন। তাঁদের মিলনে এক পুত্রের (?) জন্ম হয় যার নামা রাখা হয় হানী। ওদিকে উম হানী মুহাম্মদকেও ভুলেন নাই।
ইবনে ইসহাক লিখেছেন:
আবু উসামা মাবিয়া বিন জুহায়ের বিন কায়েস বিন আল হারিস বিন দুবায়াব বিন মাজিন বিন আদিয় বিন জুশাম বিন মাবিয়া ছিলেন মাখযুম গোত্রের এক মিত্র। বদরের যুদ্ধে যখন হুবায়রা বিন আবু ওহব্ তার দলবলসহ পালিয়ে যাচ্ছিল তখন সে তাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। হুবায়রা ক্লান্ত থাকায় যুদ্ধের বর্ম ফেলে দিল। তখন মাবিয়া সেই বর্ম তুলে নিল। সে (অর্থাৎ হুবায়রা) নিচের কবিতা রচনা করল:
যখন আমি দেখলাম সৈন্যদের মাঝে আতঙ্ক,
তারা পালিয়ে যাচ্ছিল প্রাণপণে, উচ্চ গতিতে,
আর তাদের নেতারা মৃত পড়ে রইল,
আমার মনে হচ্ছিল তাদের শ্রেষ্ঠতম,
যেন তারা প্রতিমাদের কাছে উৎসর্গ,
অনেকেই রইল পড়ে, মৃত,
এবং আমাদের ভাগ্যে যা ছিল তাই-ই হল বদরে। (ইবনে ইসহাক, পৃঃ ৩৫৫)
হুবায়রা যে সর্বদায় এক পলাতক সৈনিক ছিলেন তা নয়। তাঁর কিছু বীরত্বের পরিচয় পরিখার বা খন্দকের যুদ্ধে দেখা যায়। ইবনে ইসহাক লিখেছেন:
এই অবরোধ চলতে থাকল, কোন সত্যিকার যুদ্ধ ছাড়াই। কিন্তু কুরায়েশদের কিছু অশ্বারোহী সৈনিক, যথা বানু আমির বিন লুয়ায়ের ভ্রাতা আমর বিন আবদু ওদ বিন আবু কায়েস, দুই জন মাখযুমা গোত্রের ইকরিমা বিন আবু জহল ও হুবায়রা বিন আবু ওহব (উম হানীর স্বামী)। আরও ছিল কবি দিরার বিন আল খাত্তাব, বানু মুহারিব বিন ফিহরের ভাই বিন মিরদাস। এরা সবাই যুদ্ধের বর্ম পরে অশ্বে আরোহণ করে বানু কিনানার স্থানে গেল এবং তাদেরকে বলল, ‘যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাক। আজই তোমরা জেনে যাবে কারা হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ সৈনিক।‘ তারপর তারা দ্রুত অশ্ব ছুটিয়ে পরিখার কিনারায় থামল। পরিখা দেখে তারা বলে উঠল, ‘এই ধরণের ফন্দি আরবেরা কখনই দেখে নাই।‘ (ইবনে ইসহাক, পৃঃ ৪৫৪)
আল ওয়াকেদির লেখা থেকে আমরা জানতে পারি যে বদরের যুদ্ধে হুবায়রা যোগদান করেছিলেন এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন।
তারা বলল সেই সময় আবু বকর ছিলেন ডানে। আর যামা বিন আল আসোয়াদ মূর্তিপূজকদের অশ্বারোহী বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিল। এদিকে ইয়াহিয়া বিন আল মুঘিরা বিন আবদ আল রাহমান তাঁর পিতার থেকে জেনে বললেন যে মূর্তিপূজকদের অশ্বারোহী বাহিনীর নেতৃত্ব দিচ্ছিল আল হারিস বিন হিশাম। আর তার দক্ষিণে ছিল হুবায়রা বিন আবি ওহাব। তার বামে ছিল যামা বিন আল আসোয়াদ। অন্য আরেকজন বলল যে দক্ষিণে ছিল আল হারিস বিন আমির আর বামে ছিল আমির বিন আবদ ওয়াদ। (আল ওয়াকেদী, পৃঃ ৩০)
খন্দকের যুদ্ধে যখন আলী আমরকে হত্যা করেছিলেন তা দেখে হুবায়রার কবি মন উথলে উঠেছিল। আলীর এই নিষ্ঠুরতা সহ্য করতে না পেরে হুবায়রা কেঁদে ফেলেন, যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করেন, এবং এক লম্বা কবিতা লিখেন। এই কবিতায় হুবায়রা আলীর নিষ্ঠুরতা প্রকাশ করেন [পাঠকেরা এই দীর্ঘ কবিতা ইবনে ইসহাকের বইতে পৃঃ ৪৭৮-পড়তে পারেন।]
এটাও একটা কারণ হতে পারে যার জন্য আলী হুবায়রার উপর ভীষণ বিরাগ ছিলেন, এবং হয়ত প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সুযোগ পেলেই তাঁর ভগিনীপতি তথা হুবায়রাকে খুন করতে দ্বিধা করবেন না। এর প্রমাণ আমরা দেখব নিচের অংশে।
হুবায়রা হয়ত জানতেন আলী কোনদিন মক্কায় আসলে তাঁর কপালে কি ঘটবে। তাই নবী এবং আলী যখন মক্কা জয় করে নিলেন তখন হুবায়রা তড়িঘড়ি স্ত্রী (উম হানী), সন্তান এবং ভাইদেরকে চিরদিনের জন্য ছেড়ে মক্কা ত্যাগ করে অন্য কোথাও নির্বাসনে চলে যান—আর তাঁর কোন খবর পাওয়া যায়নি।
ইবনে ইসহাকের বই থেকে:
হুবায়রা বিন আবু ওহব আল মাখযুমি সম্পর্কে বলতে হয় যে সে ঐ স্থানে (অর্থাৎ নির্বাসনের স্থান হয়ত ইয়ামান অথবা নাজরান) আমৃত্যু বাস করেন। হুবায়রা যখন জানতে পারলেন যে তাঁর স্ত্রী উম হানী (ফাকিতাহ্) ইসলাম গ্রহণ করেছেন তখন গভীর আঘাত পেলেন। মনের দুঃখে এক কবিতাও লিখে ফেললেন (ইবনে ইসহাক পৃঃ ৫৫৭)
আবু মুরা ছিল আকিল বিন আবু তালেবের মুক্ত করা দাস। সায়ীদ বিন আবু হিন্দ আবু মুরার থেকে আমাকে বলল যে আবু তালেবের কন্যা উম হানী (উনি ছিলেন হুবায়রা বিন আবু ওহব আল মাখযুমির স্ত্রী) বলেছিলেন: ‘আল্লার রসূল যখন মক্কার উচ্চ প্রান্তে অবস্থান করছিলেন তখন আমার দুই দেবর যারা ছিল বানু মাখযুমি গোত্রের লোক তারা লুকিয়ে আমার গৃহে আসল। সেই সময় আলী আসলেন এবং প্রতিজ্ঞা করলেন যে ঐ দুজনকে খুন করবেন। তাই আমি দুজনকে গৃহে আবদ্ধ করে দরজায় তালা মেরে আল্লার রসূলের কাছে গেলাম। সে সময় নবী এক গামলা থেকে পানি নিয়ে গোসল করছিলেন। ওই গামলায় মাখা ময়দার কিছু তালও দেখা যচ্ছিল। নবীর কন্যা ফাতেমা তাঁকে কাপড় দিয়ে ঘিরে রাখছিলেন। নবী গোসল শেষ করে অঙ্গে কাপড় জড়িয়ে নিলেন। এরপর উনি ভোরের আট রাকাত নামাজ পড়লেন। তারপর নবী আমাকে স্বাগতম জানালেন এবং আমার আগমণের কারণ জানতে চাইলেন। আমি যখন ঐ দুই ব্যক্তির এবং আলীর ব্যাপারে জানালাম তখন নবী বললেন: ‘তুমি যাকে রক্ষা করতে চাও আমরাও তাকে রক্ষা করব। আর তুমি যাকে নিরাপত্তা দিবে আমরাও তাকে রক্ষা করব। আলী তাদেরকে খুন করতে পারবে না।‘ (ইবনে ইসহাক, পৃঃ ৫৫১)
ওয়াকেদির লেখা থেকে জানা যায় যে ওহোদের যুদ্ধের প্রস্তুতিতে কিছু বেদুঈনদের সাথে সমঝোতা আনার জন্য হুবায়রা কুরায়েশদের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন (কিতাব আল মাগহাযি, পৃঃ ১০০), ওহোদের যুদ্ধে গিয়েছিলেন এবং একজন মুসলিম সৈন্যকেও নিহত করেছিলেন (ঐ বই, পৃঃ ১৪৬)।
আল ওয়াকেদি আরও লিখেছেন যে খন্দক বা পরিখার যুদ্ধে হুবায়রা আবু সুফিয়ানের সাথে মুসলিম সৈন্যদের উপর নজর রেখেছিলেন।
তারা বলল যে পৌত্তলিকেরা একের পর এক দৈনিক টহলের ব্যবস্থা করল। আবু সুফিয়ান আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা একদিনের দায়িত্ব নিল। ঐ ভাবে টহল দিলেন হুবায়রা বিন আবি ওহব। (আল ওয়াকেদী, পৃঃ ২২৯)
খন্দকের যুদ্ধে যখন মুসলিমরা কুরায়েশদের আক্রমণ করে তখন হুবায়রাও আক্রান্ত হন।
তাদের নেতারা একযোগে আক্রমণের জন্য পরিখার ধারে সমবেত হল। এই লক্ষ্যে আবু সুফিয়ান বিন হার্ব, ইকরিমা বিন আবু জহল, দিরার বিন খাত্তাব, খালিদ বিন আল ওলিদ, আমর বিন আল আস, হুবায়রা বিন আবি ওহব, নৌফল বিন আবদুল্লাহ আল মাখযুমি, আমর বিন আবদ, নৌফল বিন আবু মাবিয়া আল দিলি ছাড়াও আরও অনেকে এই উদ্দেশ্যে পরিখার তীরে ঘুরা ঘুরি করেত লাগল। (আল ওয়াকেদী, পৃঃ ২৩০)
খন্দকের যুদ্ধে হুবায়রার ঘোড়া আহত হয়, উনার বর্ম খসে যায়, উনি পালিয়ে যান।
ইকরিমা এবং হুবায়রা পালিয়ে গিয়ে আবু সুফিয়ানের সাথে যোগদান করল। আল যুবায়ের হুবায়রাকে আক্রমণ করে এবং তার অশ্বের পিছনে আঘাত করে। ফলে হুবায়রার অশ্বের পেটের নিচের বন্ধনী কেটে যায় এবং অশ্বের পিছনে যে বর্ম বাঁধা ছিল তা পড়ে যায়। আল যুবায়ের বর্মটি কুক্ষিগত করে নিলো। ইকরিমা বর্শা ফেলে চম্পট দিল। (আল ওয়াকেদী, পৃঃ ২৩১)
খন্দকের যুদ্ধে হুবায়রা এক মুসলিম সৈন্যকে হত্যা করেন।
হুবায়রা বিন আবি ওহাব আল মাখযুমি হত্যা করেন সালাবা বিন ঘানামা বিন আদি বিন নাবী (আল ওয়াকেদী, পৃঃ ২৪৩)
এই ব্যাপারে মণ্টগোমারি ওয়াট লিখেছেন:
মুসলিমরা মক্কা দখল করার পর মুহাম্মদ সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলেন, যার ফলে তারা কুরাইশ পৌত্তলিকদের আর তেমন হেনস্থা করল না। এই সময় আবদুল্লাহ বিন আবি রাবিয়া (অথবা যুবায়ের বিন আবদ ঊমাইয়া) এবং আল হারিস বিন হিশাম মাখযুমি গোত্রের এই দুই লোক যারা ইতিপূর্বে মুহাম্মদের খুজাদের উপর আক্রমণের নিন্দা করেছিল, তারা হুবায়রা বিন আবদ ওহবের গৃহে পলায়ন করে। হুবায়রার স্ত্রী ছিলেন আবু তালেবের কন্য। সেই সূত্রে এই মহিলা ছিলেন মুহাম্মদের চাচাত বোন। (ওয়াট, পৃঃ ৬৭)
মুহাম্মদ যে উম হানীর স্বামী হুবায়রাকে তীব্র ঘৃণা করতেন তা আমরা জানতে পারি আল ওয়াকেদির লেখা থেকে। কিতাব আল মাগহাযিতে ওয়াকেদি লিখেছেন যে বদরের যুদ্ধে হুবায়রা আহত হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে পড়ে থাকেন। সে সময় হুবায়রার দুই সঙ্গী হুবায়রাকে তুলে নিয়ে যায়। মুহাম্মদ যখন এই সংবাদ জানলেন তখন ঐ দুজন সঙ্গীকে হুবায়রার দুই কুত্তা বলে গালি দিলেন।
হুবায়রা যখন দেখল যে তার পক্ষের সৈন্যরা পশ্চদাপসারণ করে যাচ্ছে তখন সে অত্যন্ত অসহায় বোধ করল। সেই সময় তার এক মিত্র তার নিজের বর্ম হুবায়রার গায়ে চাপিয়ে দিয়ে তাকে ঘাড়ে নিয়ে চলল। অন্যেরা বলে আবু দাউদ আল মাজনি তার তরবারি দ্বারা হুবায়রাকে আঘাত করে তার বর্ম কেটে ফেলে। হুবায়রা মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে। আবু দাউদ চলে যায়। তখন যুবায়ের আল জুশামির দুই পুত্র যাদের নাম আবু উসামা এবং মালিক তারা হুবায়রাকে চিনতে পারল। তারা ছিল হুবায়রার মিত্র। তারা হুবায়রার জীবন রক্ষা করল। আবু উসামা হুবায়রাকে ঘাড়ে নিয়ে নিলো আর মালিক তাকে প্রতিরোধ করল। নবী বললেন: “হুবায়রার দুই কুত্তা তাকে রক্ষা করল।“ আবু উসামার বন্ধুত্ব ছিল তাল গাছের মতই দৃঢ়। আর এক জন বলল যে হুবায়রাকে যে আঘাত করেছিল তার নাম ছিল আল মুজাস্সার বিন দিয়াদ। (আল ওয়াকেদি, পৃঃ ৪৮)
এই সব দলীল থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে হুবায়রার সাথে উম হানীর বিবাহকে মুহাম্মদ কখনই সহজভাবে নেন নাই। হুবায়রা শুধু ইসলামের শত্রুই ছিলেন না, উনি হয়ে গিয়েছিলেন মুহাম্মদের ব্যক্তিগত এক নম্বর শত্রু। হুবায়রাও এই সত্য ভালভাবেই জানতেন। তাই মক্কা বিজয়ের প্রাক্কালে হুবায়রা উম হানীকে ছেড়ে দেশান্তর হয়ে যান—নিজের প্রাণ রক্ষার জন্য। এই ব্যাপারে আমরা আরও জানব নিচের লেখা হতে।
খদিজা ও আবু তালিবের মৃত্যুর পর
উইলিয়াম মুর (মুর, পৃঃ ১০৫) লিখেছেন যে মুহাম্মদের প্রথম স্ত্রী খদিজা মারা যান ৬১৯ সালে। এর পাঁচ সপ্তাহ পরেই (জানুয়ারি ৬২০) সালে আবু তালেব মারা যান। এই সময়টা ছিল হিজরতের তিন বছর আগে। পর পর এই দুই বিয়োগান্ত ঘটনার ফলে মুহাম্মদ অতিশয় মুষড়ে পড়েন।
এই ব্যাপারে আরও এক প্রখ্যাত জীবনীকার লিখেছেন:
খদেজা এবং আবু তালেব মারা যান কয়েকদিনের ব্যবধানে। এই ঘটনা ঘটে ৬১৯ সালে। এরপর থেকে ধারাবাহিক ঘটনাগুলির সন ও তারিখ বেশ নির্ভরযোগ্য ভাবে গণনা করা যেতে পারে। কোন আরবই তার স্ত্রীর বিয়োগের পর বেশীদিন স্ত্রী ছাড়া থাকে না। আর তাছাড়া যার সন্তান আছে তার জন্যে ত কথাই নাই। কিছু দিন, অথবা সর্বোচ্চ কয়েক সপ্তাহ পরেই স্ত্রী হারা মুহাম্মদ সওদা নামে এক বিধবাকে বিবাহ করেন। পূর্বে মুহাম্মদের এক ভক্ত ছিল এই বিধবার স্বামী। সওদা তাঁর স্বামীর সাথে আবিসিনিয়া গিয়েছিলেন। সেখানে সওদার স্বামী খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেন। সওদা তরুণ বয়সের ছিলেন না এবং বেশ মুটিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সওদা গিন্নি হিসাবে ছিলেন অতি উত্তম। তাই মুহাম্মদের সন্তানদের দেখাশোনার জন্য খুব যোগ্য। এই জন্যই মুহাম্মদ সওদাকে বিবাহ্ করেন। নবীর জীবনে সওদার কোন প্রভাবই ছিল না। নিঃসন্দেহে মুহাম্মদ ছিলেন সওদার প্রভুর মত। সওদা মুহাম্মদকে যৌন তৃপ্তি দিতে সক্ষম ছিলেন না। আর রাজনৈতিক ভাবে নবীর স্থান শক্তিশালী করার জন্য কোন অবদানও সওদার ছিল না। (রডিন্সন, পৃঃ ১৩৪)
মার্টিন লিঙ্গস্ লিখেছেন মৃত্যুকালে খদেজার বয়স ছিল ৬৫ এবং মুহাম্মদের বয়স প্রায় ৫০। (লিঙ্গস্, পৃঃ ৯৬)
খদেজার মৃত্যুর পর মুহাম্মদ ঘন ঘন কাবা শরীফে যাওয়া শুরু করলেন আর সেখানে খুব সম্ভবত: উচ্চৈঃস্বরে কোরান আবৃত্তি করতেন। আমরা আগেই এক হাদিসে দেখেছি যে উম হানীর গৃহ কাবার এত নিকটে ছিল যে উম হানী নবীর কোরান আবৃত্তি শুনতে পেতেন। আমরা ধরে নিতে পারি যে মুহাম্মদ এই সময়ে উম হানীর খুব সান্নিধ্যে আসেন—হয়ত বা তিনি নিয়মিত উম হানীর গৃহে যাতায়াত করতেন—হয়ত বা অনেক রাত্রি দিন উম হানীর গৃহেই কাটাতেন। একবার মুহাম্মদ কোরান আবৃত্তি শেষ করে মাটিতে মাথা ঠেকালেন। এই সময়ই দুষ্ট কিছু কোরায়েশ তাঁর ঘাড়ে ভেড়া (অথবা উটের) নাড়ীভুঁড়ি জড়িয়ে দিল। এই সময় মুহাম্মদ স্ত্রী হারা, নিতান্ত একাকী, অসহায়। শত্রু কোরায়েশদের থেকে একটু শান্তি এবং সহানুভূতির জন্য উম হানীর দ্বারস্থ হচ্ছিলেন। উম হানীই হয়ে উঠলেন নবীর একমাত্র নারী। উম হানীও সাদরে আপ্যায়ন করলেন নবীকে। তাঁদের দুজনের বাল্যপ্রেমের দিনগুলি আবার যেন উদ্ভাসিত হয়ে গেল। এই সব কিছুই কোরায়েশদের দৃষ্টি এড়াল না। তারা হয়ত উৎসুক হয়ে উঠল কিসের আনাগোনা মুহাম্মদের উমর হানীর গৃহে?
এই পরিস্থিতি এড়াতে মুহাম্মদ বোধকরি চিন্তা করলেন: না, এখানে আর নয়। আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে, আমাকে যেতে হবে অন্য কোথায়—অন্য কারও কাছে—যারা আমাকে সামান্য ভাবে হলেও গ্রহণ করবে, একটু ভক্তি শ্রদ্ধা দেখাবে।। এই উদ্দেশ্যে নবী গেলেন তায়েফে। সেখানে থাকত সাকিফ (থাকিফ) লোকেরা। তারা উপাসনা করত দেবী আল লাতের। নবী অনেক চেষ্টা করলেন তাদেরকে ইসলামে দীক্ষিত করতে। কিন্তু তায়েফের লোকেরা তাঁর কথায় কর্ণপাত ত করলই না বরং তাদের বালকদেরকে লেলিয়ে দিল নবীর পেছনে। এই সব বখাটে রাস্তার বালকেরা নবীকে ঢিল মেরে বাধ্য করল তায়েফ ছাড়তে। মোহ-ভগ্ন, ভারাক্রান্ত, শোকা-হত হৃদয়ে মুহাম্মদ আবার ফিরে আসলেন মক্কায়, সেই উম হানীর কাছে। একমাত্র উম হানীর কাছেই নবী মনের কথা খুলে বলতে পারেন।
ইবনে ইসহাক লিখেছেন:
খদিজা এবং আবু তালেব দু’জন একই বৎসরে মারা গেলেন। খদিজার মৃত্যুর সাথেই একের পর এক সমস্যা আসতে লাগল। কারণ খদিজার কাছ থেকেই নবী পেয়েছিলেন ইসলামের সমর্থন। খদিজার কাছে মুহাম্মদ তাঁর সমস্যার কথা আলোচনা করতেন। আবু তালেবের মৃত্যুতে নবী হারালেন তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা আর অন্য গোত্রের হামলা থেকে রক্ষার জামিন কবচ। মদিনায় অভিভাষণের বছর তিনেক আগে আবু তালেব মারা যান। এই সময়েই নবী কোরায়েশদের সাথে প্রতিকুল পরিবেশের সম্মূখীন হতে থাকলেন। আবু তালেবের মৃত্যুর পূর্বে নবী কখনই কোরায়েশদের কাছ হতে এমন শত্রুতামূলক ব্যবহার পান নাই। (ইবনে ইসহাক, পৃঃ ১৯১)
চলবে (৩য় পর্বে)…
নবী মুখ খারাপ করত?
দানব কী ভাবে দেবতা হয় তাই দেখা যায় সবসময়। নবীর সাথে ‘শুভব্রত ও তার সর্ম্পিকত সুসমাচার’ বইয়ের নায়কের বহুমিল পাওয়া যায়।
আপনার লেখা বেশ যুক্তিযুক্ত। আবের লেশমাত্র নেই। :guru: :guru: :guru:
তথ্যবহুল ও প্রামান্য লেখা হলেও সুখপাঠ্য হচ্ছে না! তবে পঠন শৈলী নিয়ন্ত্রন একান্তই লেখকের দর্শন, তবে পাঠক হিসেবে আমি সুখ পাচ্ছি না। বার বার হোঁচট খেতে হচ্ছে, একই কথা বার বার আসছে উদৃতি আকারে, একই বক্তব্যের একাধিক উদৃতি আসছে। লিখার সাবলিলতা বার বার বিঘ্নিত হচ্ছে, অন্তত আমার কাছে। বক্তব্যের বিপরীতে রেফারেন্সগুলো টীকা আকারে পরিশিষ্ঠে যোগ করাটাই বেশী যুক্তিযুক্ত হতো বলে মনে হয়!
@থাবা,
হাঁ, আপনি ঠিক লিখেছেন। আমি এই ব্যাপারে প্রথম পর্বেই লিখেছি। বেশ কিছু পুনরাবৃত্তি হয়েছে– ইসলামী উৎস থেকেই তা হচ্ছে। আমার করার কিছু নাই।
সব সূত্র রচনার শেষে পাবেন। যেহেতু রচনাটি পর্বে বিভক্ত হয়েছে তাই সূত্র নিয়ে একটু অসুবিধা–সূত্র দিলে তা পুনরাবৃত্তিই দেখাবে। তাই সমস্ত সূত্র শেষ পর্বে হবে। আজকাল পাদটীকার ব্যবহার কমে যাচ্ছে। অনেকেই বলেন পাদটিকা পাঠকদের মনযোগ নষ্ট করে। আমি পাদটিকা দিয়ে অনেক রচনা লিখেছি। এখন এই নতুন ব্যবস্তা নিয়েছি। যাইহোক, আপনার পরামর্শ মনে রাখলাম।
আপনার গঠনশীল সমালোচনার জন্য ধন্যবাদ।
@আবুল কাশেম, আপনার লিখাটা যে বাংলা সহজ পাঠ নয় সেটা বোঝা যায়, আপনি এখানে একটা নির্দিষ্ট প্রামান্য লিখা লিখছেন। সেদিক থেকে আপনার লিখাটা ভয়ানক সার্থক।
অসংখ্য ধণ্যবাদ আপনার এ তথ্যবহুল নিবন্ধের জন্য।
একবার আমি এক ইমামকে জিজ্ঞেস করেছিলাম- আচ্ছা হুজুর , ইসলামে লুইচ্চামি কাকে বলে ?
উনি উত্তর দিলেন- কারও যদি স্ত্রী থাকার পরও অন্য নারীর নিকট গমন করে, তার সাথে ব্যভিচার করে সেটাই লুইচ্চামি। অর্থাৎ বিয়ে বহির্ভুত নারী সংসর্গ হলো লুইচ্চামি। তিনি আরও ব্যখ্যা করে বলেন- এ কারনেই ইসলামে বহু বিবাহকে জায়েজ করা হয়েছে যাতে তারা এ ধরণের ব্যভিচার থেকে দুরে থাকতে পারে।
এবার আমি বললাম- আমাদের নবী তো একবার জয়নবকে দেখে তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন, যে ছিল আবার তার পালিত পূত্র জায়েদের বউ। শুধু তাই নয় তার পর নানা কায়দায় ওহী নাজিল করে জয়নাবকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ে করেন। এটাকে কি বলবেন ?
ইমাম সাথে সাথে বলল- ওটার দরকার হয়ে পড়েছিল এটা দেখাতে যে পালিত পূত্র কোন আসল পূত্র না আর তার তালাক দেয়া বধুকে তার শ্বশুর বিয়ে করতে পারে তা দেখাতে।
এবার বললাম- কিন্তু উনি যে একের পর এক বিয়ে করে গেলেন প্রৌঢ় বয়েসে সেটাকে কি বলবেন ?
ওনার উত্তর- উনি তখন বিধবা অসহায় নারীদেরকে সমাজে মর্যাদা দেয়ার জন্য বিয়ে করেন।
– তো ৬ বছরের শিশু আয়শাকেও কি উনি অসহায় ভাবতেন নাকি ?
উনি বললেন – ওটা তো আল্লাহর নির্দেশে সংঘটিত হয়।
পাঠকগণ , খেয়াল করুন যেখানেই মোহাম্মদের কাজের কোন ব্যখ্যা নেই সেখানেই আল্লাহর নির্দেশ। এটাই মোহাম্মদের ইসলাম ও সাধারন মানুষের ইসলাম এর তারতম্য। অর্থাৎ মুমিন বান্দারা সবকিছু জানার পরেও মোহাম্মদের কাজের মধ্যে কোন অসামঞ্জস্যতা দেখতে অক্ষম এতই ভোতা তাদের বোধ বুদ্ধি।
এইটা যে আমাদের গাও গেরামের ছেলে মেয়েগুলার গল্পের মত। ওরা বাঁশঝাড়ের আশে পাশে গিয়ে ম্যাও ম্যাও করে রাত বিরাতে প্রেমিকাকে ডাকে (@), আর প্রেমিকা ‘আমায় এত রাইতে ক্যানে ডাক দিলি’ বলে চান্নিরাইতে ইটিশ পিটিশ করতে বেরিয়ে আসে। (K),
আমাদের পবিত্র নবী তাহলে এই কাম করতো (L) :-s 😀
@কাজী রহমান,
হেঁ, হেঁ। নবীজির আদর্শ—সব মোমিনদের জন্য ফরজ।
@আবুল কাশেম,
ম্যাঁও
@আবুল কাশেম,
আপনার এই সিরিজ টা এক কথায় দারুণ হচ্ছে। (F)
অফটপিকঃ
– এদের নামের মধ্যে “বিন” এর এত প্রাচুর্য্যতার কারণ কি? এই বিন এর উৎস জানানোর জন্য এবং মিঃ বিন এর সাথে লিংক স্হাপনের জোরালো আবেদন জানাচ্ছি। :))
@আমি আমার,
এই ব্যাপারে আমিও অজ্ঞ। আমার ধারণা আরবদের বংশপরিচয় খুব জরুরী। যাকে খান্দান বলা হয়। বাপের পরিচয়েই সব জানা যায়–এই আর কি? এই নিয়ম প্রায় সব মুসলিম দেশে। এমনকি মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াতেও তাই চলছে–যদিও তাদের সংস্কৃতি, লোকাচার এবং ঐতিহ্যের সাথে আরবের লেশ মাত্র নাই। এই দেশগুলো এখনও হিন্দু এবং বৌদ্ধ ধারা দ্বারা প্রভাবিত তথাপিও তারা নামের সাথে বিন ব্যবহার করে বিশেষ করে মালয়েশিয়াতে।
শুনেছি আমাদের দেশেও নাকি এই ধরণের নামকরনের হিড়িক পড়ে গেছে। আমার ক্লাশে দুএকজন বাঙ্গালি ছাত্রের নাম একেবারে আরবদের মত। বিন ব্যবহার করছে।
বিন শুধু মুসলিমদের মধ্যেই নয়। প্রাক ইসলাম থেকেই আরবরা বিন ব্যবহার করছে। যেমন ক্কাব বিন আল-আশরাফ—সে ছিল এক ইহুদী নেতা এবং কবি। মুহাম্মদ তাকে পেশাদার হত্যাকারী দ্বারা হত্যা করেন।
তবে আজকাল মনে হয় মধ্যপ্রাচ্যের খ্রিষ্টান এবং ইহুদীরা বিন ব্যবহার করে না–বোধ করি এরা চাইনা যে তাদের সাথে ইসলামের গন্ধ আছে।
হুদায়রার দুই কুত্তা যখন তাকে রক্ষা করে তখন আল্লাপাকের পাঠানো অদৃশ্য ফেরেস্তারা(কুত্তা) কোথায় ছিল?
মায়ের ভাই মামা হওয়ার কথা না!
নবুয়াত দাবী করার আগে মুহাম্মদ এত খারাপ ছিলনা। কিন্তু নবুয়াত দাবী করার পরে,বিশেষ করে হিযরতের পরে এত হিংস্র হয়ে গিয়েছিল কেন?
@তামান্না ঝুমু,
হাঁ, আমি সংশোধন করলাম। ব্রাকেট বাদ দিলাম।
ধন্যবাদ।
@তামান্না ঝুমু,
মুক্তমনায় এতো লেখা থাকতে আপনার কাছ থেকে এমন প্রশ্ন আশা করিনি। এই লেখাটা একটু সাহায্য করতে পারে-
@আকাশ মালিক,
যৌবনে মুহাম্মদ ঠকবাজ প্রকৃতির ছিলনা। শুধু ক্ষমতার লোভে একজন মানুষ এতটা জঘন্য রূপ ধারন করতে পারে ভাবতে অবাক লাগে। তার সাফল্য দেখে আরো অলৌকিক লাগে। পৃথিবীব্যপী ইসলামের ব্যাপক প্রচার ও প্রসার তার নিজেরও কল্পনার বাইরে ছিল।
@তামান্না ঝুমু,
আমার ধারণা আবু তালেব যদি এক নিরক্ষর, গরীব এবং রাখাল মুহাম্মদের সাথে উম হানীর বিবাহ দিয়ে দিতেন তবে কোন দিনই ইসলামের জন্ম হত না, মুহাম্মদ সুস্থ, সুখী এবং স্বাভাবিক এক আরবি ব্যক্তি থাকতেন।
উম হানী সম্পর্কে যতই জানছি ততই আমার মনে হচ্ছে মুহাম্মদ নবী সাজলেন প্রতিশোধ নেবার জন্য।
উম হানীকে উনি উনার সংসারে ঢুকাতে পারলে সাধারণ মুহাম্মদ থাকতেন, নবী হতে চাইতেন না—আর আজকের বিশ্ব অনেক শান্তিতে থাকত।
@আবুল কাশেম,
এই হাইপোথিসিসটা একেবারে খারাপ বলেন নাই। উম হানীর কাহিনী শুনে তো সেরকমই মনে হচ্ছে।
@আবুল কাশেম,
ঠিকই বলেছেন আমারও অনেকবার তাই মনে হয়েছে। বড়জোর হয়তো হানাফি দলের একজন দেশত্যাগী ভাল মানুষ হতেন, নবী হতেন না। পিতৃহারা মাতৃহারা শিশুকালের অভাব-অনটন, দুঃখ বেদনা, যৌবন কালে প্রেমিকা উম্মে হানিকে না পাওয়ার যাতনা, এ সব মাথায় রেখে, সময় ও পরিস্থিতির সদব্যবহার করে মুহাম্মদ যেহেতু নিজেকে নবী বলে দাবী করেছেন, সেখান থেকে ফিরে আসা তার পক্ষে আর সম্ভব ছিলনা। মুহাম্মদ বদরের যুদ্ধে পরাজিত হলে, আমার মনে হয় চেঙ্গিস খান হতেন। এই পৃথিবীতে বাস্তবে নবী একজনই ছিলেন। জগতের প্রথম ও শেষ নবী, তিনি মুহাম্মদ।
@আকাশ মালিক,
যথার্থ লিখেছেন।
পিতৃব্য আবু তালেব যখন মুহাম্মদের উম হানীকে বিবাহের প্রস্তাব উড়িয়ে দিলেন–তখনই মুহাম্মদ বুঝতে পারলেন–তৎকালীন সমাজে তাঁর স্থান কোথায়। আর তখন থেকেই উনি ভাবুক এবং চিন্তাশীল হলেন। বিবি খদেজাকে তাঁর প্রয়োজন ছিল, ভাত কাপড়ের জন্য। আর সেজন্যই বোধ করি আবু তালেব প্রস্তাব দিলেন বিবি খদেজাকে বিবাহের—যাতে করে তাঁর ঘর থেকে আপদ বিদায় নেয়, উম হানীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হয়।
কিন্তু উম হানীকে মুহাম্মদ কোনদিনই ভুলেন নাই।
তাই মুহাম্মদ দেখলেন তখনকার আরব সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠ করতে হলে নিজেকে নবী বলে দাবী করতেই হবে–এ ছাড়া তাঁর আর কোন বিকল্প ছিল না। মানুষ মুহাম্মদকে অমানুষ নবী হতে হল।
@তামান্না ঝুমু,
ঠিক কথা।মক্কার মুহাম্মদ এত খারাপ ছিলেন না। মদিনায় গিয়ে সেখানকার লোকেদের অন্ধ সমর্থন পেয়েই তার অধোগতির শুরু। মদিনায় হিজরতকে আমার কাছে মুহাম্মদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বলে মনে হয় কারন এই সময়েই ধর্মপ্রচারক মুহাম্মদ আস্তে আস্তে পরিণত হন উগ্র, স্বৈরাচারী শাসকে। আসলে আমার কাছে মুহাম্মদের সবথেকে অগ্রহণযোগ্য আইডিয়া মনে হয় ধর্মকে সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি সবজায়গায় প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছাকে এবং ধর্মকে সাম্রাজ্যবাদ বিস্তারের হাতিয়ার করার ব্যাপারকে। আর তার চেয়েও খারাপ ব্যাপার হল সেগুলিকে চিরকালের জন্য স্থায়ী করে যাওয়া। মুক্তমনা যখন নতুন পড়তাম তখন অবাক হয়ে ভাবতাম কিভাবে একজন ধর্মপ্রচারক ধর্মের নামে গোত্রের পর গোত্র নিধন করতে পারেন, খুন, লুটপাট, ধর্ষণ সমর্থন করতে পারেন। কই যীশু বা বুদ্ধ ত এসব কখনও করেননি। এখন ব্যাপারটা বুঝি যে তারা মুহাম্মদের মত ধর্মের নামে theocracy প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেননি। আর মালিক ভাইকে ধন্যবাদ লিংকটা দেয়ার জন্য। খুব সুন্দর বিশ্লেষণধর্মী লেখা। (F) (F) (F)
আসলে এই প্রথম একটা জায়গা পেলাম যেখানে সবাই সুস্থ আলোচনা করছে। খুব ভালো লাগছে সবার কমেন্ট গুলো পড়তে। অনেক অজানা ইতিহাস জানছি। ধন্যবাদ সবাই কে।
লাইনটা একটু ঠিক করে দেন।সম্ভবত হুবায়রা আবু তালেবের ভাইয়ের ছেলে হবে।
@রাজেশ তালুকদার,
মার্টিন লিঙ্সের ইংরাজি লেখা থেকে আমি যা বুঝেছি তাই বাঙলায় অনুবাদ করেছি। দেখা যাক ইংরাজি ভাষ্য:
Abu Talib also had daughters, and one of these was already of marriageable age. Her name was Fakhitah, but later she was called Umm Hani’ and it is by that name that is always known. A great affection had grown between her and Muhammad, who now asked his uncle to let him marry her. But Abu Talib had other plans for his daughter ; his cousin Hubayrah, the son of his mother’s brother, of the clan of Makhzum. Had likewise asked for the hand of Umm Hani’; and Hubayrah was not only a man of some substance but he was also, like Abu Talib himself a gifted poet (পৃঃ ৩৩)
আপনি দয়া করে এই বাক্য কয়টির বাঙলা অনুবাদ করে দিলে বাধিত হব। আমার লেখায় ভুল থাকলে তাও সংশোধন করে নিব। অন্যান্য পাঠকেরাও অনুবাদ দেখতে পারেন
@আবুল কাশেম,
দুঃখিত কাশেম ভাই আপনাকে ঠিক করতে গিয়ে আমিও টাইপো মিস্টেক করে বসেছি। আমার পুরা লাইনটা হবে “সম্ভবত হুবায়রা আবু তালেবের মায়ের ভাইয়ের ছেলে হবে” আমার “মায়ের” শব্দটা বাদ পড়েগিয়েছিল। আর আপনার বাদ পড়েছিল “ভাইয়ের ছেলে” শব্দটি। আপনি লাইনটা আবার দেখুন-
মায়ের ভাই তো মামা হবে তাই না।
@রাজেশ তালুকদার,
হাঁ, তামান্না ঝুমুও এই ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন।
আপনাদের দু’জনকেই ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমি ভুলটা সংশোধণ করেছি (ব্রাকেট বাদ দিয়েছি)। আবার পড়ে দেখুন–কিছু নতুন হাদিস জুড়ে দিয়েছি–পাঠকদের অনুরোধে।
আমি কাশেম ভাইয়ের বহুবহু ভক্ত পাঠকের একজন। তাঁর লিখায় অনেক অনেক তথ্য থাকে যা বাজারের সহজলভ্য ‘ইসলামী কেতাব’ পড়ে কোন দিনই জানা যায় না। যারা দাবী করেন ইসলামের ‘সাম্য-শান্তির’ বানীতে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তারা যে ইসলামী প্রপাগান্ডার ‘মগজ ধোলাই’ এর শিকার তা যে কেউ ইসলামের আদি-উৎসে গিয়ে খোলা মন নিয়ে একটু পড়াশুনা করলেই জানতে পারবেন।মুসলীম মানসের সর্বজনবিদিত উপলব্ধি (Perception) মুহাম্মাদ ছিলেন ‘সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মানব, মহানুভব, দয়ার সাগর, কমল হৃদয়, নির্মোহ‘ ইত্যাদি ইত্যাদি। মুহাম্মাদের এ খেতাবগুলো যে কি পরিমান অতিরঞ্জিত ও ভ্রান্ত তাও জানা যায় অতি সহজেই। সত্য হচ্ছে মুহাম্মাদ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সফলকাম মানুষদের একজন। পিতৃ-মাতৃহীন একজন মানুষ শুন্য থেকে শুরু করে কিভাবে ১০ বছরে সফলতার শীর্ষে পৌঁছেছিল তার উপাখ্যান হলো ‘কুরান- সীরাত-হাদিস’ – তার বেড়ে উঠার কাব্য-গাঁথা। মুহাম্মাদ যে সবার মতই ভাল-মন্দ ও ভুল-ভ্রান্তি মিশিয়ে একজন রক্ত-মাংশের মানুষ এ সত্যটা মুসল্মনেরা যত তাড়াতাড়ি উপলব্ধি করতে পারবে ততশিঘ্রই তাদের মংগল ও মুক্তি মিলবে।
@গোলাপ,
হাঁ, একেবারে সত্যি কথা।
এই রচনার উদ্দেশ্যই তাই–মুহাম্মদকে আল্লার প্রেরিত পুরুষ না দেখে–সাধারণ পুরুষ হিসাবে দেখতে হবে। আল্লাহ পাক কোনদিনই উনাকে রসুল বানান নাই।
মুহাম্মদ ছিলেন রক্তমাংসের মানুষ—তৎকালীন আরবেরা যা করত মুহাম্মদও তাই করতেন।
অনেক প্রামান্য ঐতিহাসিক দলিল সম্বলিত লেখাটি পড়ে ভাল লাগলো। হুবায়রাহ সম্পর্কে অনেক তথ্য পেলাম। সেই যুগের একটা কবিতাও পড়লাম। আমার ধারনা ইসলাম পূর্ব আরবী সাহিত্য সমৃদ্ধই ছিল।
@শাখা নির্ভানা,
একে বারে খাঁটি কথা। ইবনে ইসহাকের লেখা থেকে পরিষ্কার দেখা যায় প্রাক ইসলামী যুগে আরবেরা কত মানবিক, কবি মনা এবং সাহিত্য মনা ছিল।
@হেলাল,
কাশেম ভাই আর কয়টা নাস্তিক বানালেন ? নাস্তিক বানানোর ক্রেডিট টা যদি কারো পাওনা হয় তাহলে মিঃ লাদেন সাহেবদেরই পাওনা হয়।
লাদেন সাহেবদের ৯/১১এর ঘটনাটা ভাষায় রুপান্তরিত করলে এরুপ বার্তাটা দাড়ায়: “গাধার দলেরা, তোরা ইসলাম ইসলাম করে মাতোয়ারা হয়ে থাকতে চাষ, ইসলামের আসল রুপটা তো এখনো দেখিস নাই, এবার তাহলে ভাল করে একটু দেখে নে।“ নিজেকে ধংশ করে দিয়ে হলেও বিশ্ব বাসীদের মঙ্গলার্থে এ বার্তাটি অন্তত বিশ্ব বাসীদের সময় থাকতে পৌছে দিয়ে গেছেন মিঃ লাদেন।
আর তা ছাড়া তার অনুরাগীদের ও রেখে গেছেনই বার্তাটি বিশ্ববাসীদেরকে প্রতিদিন পৌছে দেওয়ার জন্য এবং তারা তা অত্যন্ত দায়িত্বের সংগে প্রায় প্রতিদিন ই পালন করে যাচ্ছেন।এর পর ও যদি গাধার দলেরা সতর্ক না হয় তা হলে আর কি করা।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
শায়খ লাদেন ইসলামের ধ্বংসের যে বীজ বপন করে গেছেন তার ফল অচিরেই ফুটবে–যখন দেখা যাবে মুসলিমরা নিজেদের ধর্ম (তথা ইসলাম) ঢাকার জন্য কত পন্থায় না অবলম্বন করবে’ এই কিছুক্ষণ আগে আমার এক সহকর্মী আবাক হয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করল–তুমি কি মুসলিম? এতদিন সে বুঝতেই পারেনি যে আমার নামের সাথে ইসলামের কটু গন্ধ আছে। তার বিশ্বাসই হতে চাচ্ছিলনা কেমন করে আমার মত এত উদারমনা লোক ইসলামের বান্দা হতে পারে।
আমাকে বহু কষ্ট করে তাকে বোঝাতে হল যে আমি ইসলাম ছেড়েছি অনেক আগে।
আরও কিছুদিন যাক, দেখবেন কি হারে বিদেশে, অর্থাৎ হারামিদের দেশে যে সব মুসলিম আছে তাদের কি অবস্থা দাঁড়ায়। লজ্জায় ইসলাম পরিচয় দিতে মুখে ফেনা এসে যাবে।
ইসলামের এই করুন অবস্থার জন্য আমি লাদেন এবং অন্যান্য ইসলামিদের ধন্যবাদ জানাই। আমাদের আর তেমন কিছু করার দরকার নাই। এনারাই ইসলাম ধ্বংসের জন্য অগ্রগামী হয়ে গেছেন।
আরও
এই হালার গর্ভেই জন্ম গ্রহণ করেন নবী মুহাম্মদের আরেক চাচা–হামযা। অর্থাৎ হামযা এবং মুহাম্মদ একই বয়সের ছিলেন। শোনা যায় উনাদের দুধ মাতাও একই ছিল।
@ কাশেম ভাই,
তারা উপাসনা করত দেবী আল লাতের।
এক এক গোত্র কি এক এক মেয়ের উপাসনা করত? যেমন তায়েফবাসীরা কি আল্লাপাকের অন্য মেয়েদের এবং স্বয়ং আল্লার উপাসনা করত না?
কিছুটা অফ-টপিক:
মুহাম্মদ যে এতগুলো বিয়ে করেছে এটা কি ঐ যুগে ( নবুয়তের আগে) স্বাভাবিক ছিল? মানে অন্যান্য প্যাগানরা কি বহু বিবাহ করত নাকি মুহাম্মদই বহু বিবাহকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিল?
আপনি যে হারে মানুষকে নাস্তিক বানাচ্ছেন, আর যদি নাস্তিকদের কোন খোদা থাকত তবে আপনার ভাগে যে কত লক্ষ কোটি ল্যাটিনা হুর থাকত! 😀
@হেলাল,
হাঁ, তাই-ই করত। ইবনে ইসহাক, ইবনে সা’দ, আল ওয়াকেদির লেখাতে এর উল্লেখ আছে। আরবের বিভিন্ন গোত্রের বিভিন্ন দেবীদের উপাসনার সবচাইতে নির্ভরযোগ্য সূত্র হচ্ছে ‘কিতাব আল-আসনাম’ যে বইতে প্রতিটি দেবীর নাম উল্লেখ আছে–এবং কোথায় এই সব দেব-দেবীরা প্রতিষ্টিত ছিল এবং কারা তাদের উপাসনা করত তার বিস্তৃত বিবরণ আছে। যারা ইসলামে নিয়ে সিরিয়াস–তাদের উচিত এই বইটি পড়া।
ইসলামের ইতিহাস পড়লে তাই-ই দেখা যায়। আমি প্রথম পর্বে উল্লেখ করেছি যা আবু তালেবের নূন্যতম দুই স্ত্রী ছিল। এ ছাড়াও আবদুল মোত্তালেবের অনেক স্ত্রী ছিল এমনকি নবী মোহাম্মদের পিতা আবদুল্লা যখন আমিনাকে বিবাহ করেন, সে সেই দিনই আবদুল মোত্তালেব বিবাহ করেন এক তরুণী মেয়েকে–হালা যার নাম আর যে ছিল আমিনার নিকট আত্মীয়।
হাতের কাছে সূত্র নাই তাই দীর্ঘ জানাতে পারলাম না। সত্যি বলতে এই ব্যাপারে একটা সম্পূর্ণ ধারাবাহিক রচনা লেখা যেতে পারে।
@হেলাল,
তাই নাকি? আমার ভাগ্যে কি তা জুটবে?
এই রচনার উদ্দেশ্য নাস্তিকের সংখ্যা বাড়ান নয়। আমি নাস্তিকতা নিয়ে আজ পর্য্যন্ত কোন রচনা লিখি নাই–এবং লিখবার কোন স্পৃহাও নাই।
এই রচনার উদ্দেশ্য হচ্ছে–ইসলামের সত্যি রূপ প্রকাশ করা–যা আজও আমাদের কাছে অজানা রয়ে গেছে। ইসলামের যে এক অন্ধকার রূপ আছে তা আমাদের জানা দরকার।
সকালে উঠেই নাস্তা খেতে খেতে আন্তর্জালে ঢুকতেই আপনার রচনাটি পেয়েই এক নাগাড়ে পড়ে ফেল্লাম।
এখানে হাদিছটির উদ্ধৃতিটা দিলে আরো ভালো হতনা ?
আমি ছোট বেলায় একজন মৌলবী সাহেবের মুখে শুনিয়াছিলাম, হাদিছে নাকি আছে যেহেতু আবু তালেব নবীকে সারা জীবন সাহায্য করেছিলেন এর পরেও ইমান না আনিয়া মৃত্যু বরন করেছেন, একারনে দোজখে তার শাস্তি হালকা আকারে হইবে।
এখন মনে হচ্ছে সম্ভবতঃ তিনি এই হাদিছটিকেই অর্থ করেছিলেন।
উম্মে হানির স্বামীর জীবনী সম্পর্কে জানার জন্য যথেষ্ট কৌতুহল থেকে যাচ্ছিল।
ভবঘুরে সাহেবের অসম্পুর্ন কাজটি আপনি অত্যন্ত সুন্দর ভাবেই সমাপ্ত করতে চলেছেন।
এ ছাড়াও নবীর জীবনের অনেক ঘটনা ও তৎকালীন পক্ষ্যপাতদুষ্টহীন ঐতিহাসিক ঘটনাও জানতে পারলাম।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
হাঁ, আপনি ঠিক বলেছেন। কেমন করে আমি তা ভুলে গেছিলাম!
দেখি, সময় পেলে এই হাদিসের সূত্র জুড়ে দিব।
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
মৌলভী সাহেব ঠিকই বলেছেন। এ ব্যাপারে অনেক হাদিস আছে নীচে দুটো হাদিস দিলাম।
Narrated Al-Abbas bin ‘Abdul Muttalib:
That he said to the Prophet “You have not been of any avail to your uncle (Abu Talib) (though) by Allah, he used to protect you and used to become angry on your behalf.” The Prophet said, “He is in a shallow fire, and had It not been for me, he would have been in the bottom of the (Hell) Fire.” (Sahih Bukhari 5.222)
Narrated Abu Said Al-Khudri:
That he heard the Prophet when somebody mentioned his uncle (i.e. Abu Talib), saying, “Perhaps my intercession will be helpful to him on the Day of Resurrection so that he may be put in a shallow fire re aching only up to his ankles. His brain will boil from it.” (Sahih Bukhari 5.224)
মুহাম্মদের পৌত্তলিক চাচাগণ আর দাদা আব্দুল মুত্তালিবের কথা বাদ দেন, কোন মৌলভীর দেখা পেলে জিজ্ঞাসা করে নিবেন, নবিজীর পিতা আব্দুল্লাহ আর মা আমিনা কোন ধর্মানুসারী ছিলেন, আর এখন তারা কোন অবস্থায় আছেন।
@আকাশ মালিক,
আকাশ মালিক,
অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন প্রশ্ন ধরিয়ে দিয়েছেন তো! আগে তো কখনই এতবড় গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন মনে আসে নাই। আপনার e.mail Address টা একটু আমাকে দিবেন ? অনেক সময় আমার নিরপেক্ষ সূত্রের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তাহলে তখন আপনার সরনাপন্ন হতে পারি। আপনি সব ধরনের সূত্র জানেন।
আপনার ই বই “যে সত্য বলা হয়নি” আমি সবটাই অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে পড়ে ফেলেছি। এ ধরনের বইএর এখন অত্যন্ত প্রয়োজন আছে। অন্যথায় জিহাদিদের দাপটে টিকে থাকা ক্রমান্বয়ে এক রকম অসম্ভব হয়ে ঊঠতেছে। বইটি জিহাদীদের হৃৎপিন্ডে আঘাত কারী অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারবে। বাংলাদেশে আমার কিছু পরিচিতদের বইটির কথা জানিয়ে দিয়েছি। তারা অপেক্ষায় রয়েছে প্রকাশিত হওয়ার পরই ক্রয় করিয়া পড়িবে। কবে নাগাদ প্রকাশিত হইবে ?
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
দিয়ে দিলাম
দোজখে আবু তালেবের শাস্তি সম্পর্কে একটি হাদিস দেওয়া হল:
আবু সায়ী’দ খুদরী (রাঃ) বর্ণনা করিয়াছেন, একদা নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামের সম্মুখে তাঁহার চাচা আবু তালেবের বিষয় উল্লেখ করা হইল। হযরত (সঃ) বলিলেন, আশা করি তাহার শাস্তি লাঘব করিতে, কেয়ামতের দিন আমার সুপারিশ সাহায্য করিবে। তাহাতে অল্প পরিমাণ দোযখের আগুনে রাখা হইবে; দোযখের আগুন তাহার পায়ের গিঁট পর্যন্ত থাকিবে, কিন্তু তাহা দ্বারাই তাহার মাথার মগজ পর্যন্ত টগবগ করিতে থাকিবে। (বোখারী শরীফ, খণ্ড ৬, হাদিস ১৬৯১, মাওলানা আজিজুল হক সাহেব, মহাদ্দেছ জামিয়া কোরআনিয়া, লালবাগ ঢাকা কর্তৃক অনুদিত। ইংরাজি ৫.৫৮.২২৪, ২২৫)
বোখারী শরীফে এই ধরণের আরও বেশ কয়েকটি হাদিস আছে।