ছুটির দিনে
ঘুম থেকে ওঠে মহা ফাঁপরে পড়ে গেলো রাজিব ।
কতকিছুই না সে ভেবে রেখেছিলো। দু’সপ্তাহ পর একটা দিন ছুটি। কি করবে – ভেবে পেলো না। রুমমেটরা সব ঘুমে। হাত-মুখ ধুয়ে জল খাবাররে পর, তার মনে হলো, আর কিছু করার নেই। বৈঠকঘরে বসে ভাবছিলো কিন্তু কিছুই সে মনে করতে পারলো না। তার নিঃসঙ্গ বোধ হতে লাগলো। সে জানে এভাবে দীর্ঘসময় বসে থাকলে নিঃসঙ্গবোধ আরো তীব্র হয়ে উঠবে। তখন ঘুমের বড়ি খেয়ে আবারো ঘুম। ঘুম থেকে ওঠে আবার মনমরা হয়ে পড়ে থাকা।
তার চেয়ে রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করা অনেক ভালো। মানুষজনের মুখ দেখলে নিঃসঙ্গবোধ অনেকটা কেটে যাবে। না -হোক পরিচিত, মানুষ তো – এই ভেবে সে নেমে এলো রাস্তায়।
আধ ঘণ্টার মত রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করেও কারো দেখা পেলো না। এ জন্যই কি এর নাম বোকা র্যাটন? অবসর প্রাপ্ত বুড়ো ধনীগুলো কি কুকুর আর টেলিভিশন নিয়েই সারাজীবন ঘরে কাটাবে? অনেকটা ক্লান্ত হয়ে সে তার চোখ ফেরালো চলন্ত গাড়ি গুলোর দিকে। গাড়ি যায়, গাড়ি আসে। সে হাঁটতে থাকে।
খুব দ্রুত চলে যাচ্ছে এক একটা গাড়ি। কাঁচের জানালাগুলো বন্ধ, বাইরের ভুবনের সাথে কোন যোগাযোগ নেই। পাশ দিয়ে চলে যাবার সময়ও ভালো করে দেখা যাচ্ছে না তাদের মুখ। রাজিব আরো কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলো, তারপর অনেকটা অসহায়ের মত রাস্তায় দাঁড়িয়ে আকাশ দেখলো, গাছপালা দেখলো। রাস্তার দু‘পাশের গাছ-গাছালি দেখে তার মন খারাপ হয়ে গেলো। গাছগুলোকে কেটেছেটে এমন আকার দেয়া হয়েছে, মনে হয় কৃত্রিম, প্রাণহীন। একটু বেড়ে উঠলেই আবার কাটছাট শুরু হয়ে যায়। কোনভাবেই যেন ওরা ওদের ইচ্ছেমত বাড়তে না পারে । মনে হলো, তাদের রঙটাই কেবল সবুজ। রাজিব হাঁটতে হাঁটতে ভাবে, এ রঙটাও হয়তো থাকতো না, যদি না প্রতিদিন একবার করে জল ছিটানো হতো। সে আবারো তাকায়, দূরে, যদি দৈবাৎ কাউকে দেখা যায়। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ তার মনে হলো, গোটা ব্যাপারটাই একধরণের পাগলামি। ভালো মন্দ বাছ বিছার নয়, শিশু বা বৃদ্ধ, সাদা বা কালো, যা হোক শুধু মানুষের মুখ দেখবে বলে রাস্তায় এভাবে হাঁটাহাঁটি করার কোন মানে হয় না।
প্লাজার সামনে এসে সে থমকে দাঁড়ালো। অনেকগুলো দালান নিয়ে এই প্লাজা। চারদিক প্রাচীর ঘেরা। প্রতিটি দালানে অনেকগুলো আ্যপার্টম্যান্ট, প্রতিটি আ্যপার্টম্যান্টে ২ বা ৩টা করে কুঠুরী। তারই একটিতে রাজবিরে বাস। প্রাচীরের ভেতরটা যেন ছোটখাটো একটা নগরী। অথচ প্রাচীরের বাইর থেকে দেখে, তা বুঝার উপায় নেই। এরই মধ্যে কয়েকটা গাড়ি হর্ন দিয়ে চলে গেলে সে চকিতে চোখ তুলে তাকালো। গাড়িগুলো কি হর্ন দিয়ে তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে গেলো, রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করা নিরাপদ নয়? নাকি এটা গেয়ো আচরণ? তার মনে পড়ে, ছোট বেলায় – রূপকথার গল্প। এ যেন সেই রূপকথার রাক্ষসপুরী। সেখানে রাজকন্যাকে সোনার কাঠির স্পর্শে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়। আর এখানে রাজকন্যার পরিবর্তে সবাইকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে মিডিয়ার স্পর্শে। রাজবি তার শূন্য হাতটার দিকে তাকিয়ে দেখলো, তার কাছে সোনার কাঠিনেই, রূপার কাঠি নেই ।
ঘরে ঢুকলো খুব সাবধানে। পাছে ওদের ঘুম ভেঙে যায়। বেলা সবে ৯টা। ওদের ঘুম থেকে উঠতে উঠতে দুপুর গড়িয়ে যাবে। সারারাত কাজ করে সকালে এসে ঘুম দিয়েছে। কি করবে রাজীব, ভেবে পেলো না। আশে পাশে তার পরিচিত এমন কেউ নেই, যেখানে সে সাইকেল চালিয়ে চলে যেতে পারে। দু’সপ্তাহ পর একটা দিন ছুটি যা মিললো, তা যেন আনন্দের না হয়ে বোঝা হয়ে উঠলো। আর সে বোঝা কাঁধ থেকে নামাতে গিয়ে নিঃশব্দে টেলিভিশনের সামনে বসলো, বহু পুরনো বাংলা নাটক চালু করে দিলো,শব্দহীন। দেখা নাটক। তার উপর বস্তা পঁচা কাহনিী। হায়, দেশে থাকতে এসব গু-গুবর জোর করেও তাকে দেখানো যেতো না। একবার তার এক বন্ধু ১০০ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করেছিলো, সিনেমা হলে বসে ধুম ধারাক্কা ছবি দেখার শর্তে। আজ সে বন্ধু তাকে দেখলে সত্যিই অবাক হতো ।
পর্দায় নায়কের সদর্প চলাচল। আমেরিকা থেকে আগত। তার চালচলন, ভাব-ভঙ্গিতে রূপকথার রাজপুত্রের উপস্থিতি। পাত্রীরা সব হুড়মুড়িয়ে হাঁটু ভেঙে গড়িয়ে পড়ছে নায়কের পদতলে। দূর থেকে ভেসে আসছে রবীন্দ্র সঙ্গীত।
টেলিভিশন থেকে নায়ক চলে যায় বাথরুমে। নিজেকে দেখে। বারবার দেখে, টেলিভিশনের নায়কের সাথে কিছুতে মিলে না। ঘরে উঁকি দেয়, দু’জন বিছানায়, তিনজন ফ্লোরে। সে টেলিভিশনের নায়কের ছায়া কোথাও দেখতে পেলো না। সে ঝুল বারান্দায় চলে এলো। একটা সিগারেট ধরিয়ে তাকালো সামনের দিকে, চারজন কক্ষ-সঙ্গীর মধ্যে গাড়ি আছে দু’জনের। সেগুলো আবার দেখতে টেলিভিশনের নায়কদের মত নয়। টেলিভিশনের নায়কদের গাড়িগুলো দেখলেও চোখ জুড়িয়ে যায়। আর এগাড়িগুলো দেখলে মনে কেমন করুণা জাগে। নিজের সাইকেলটা দেখলো। একটা শিকল দিয়ে গাছের সাথে বাধাঁ।
সময় কাটে না।
সে আবার টেলিভিশন চালু করে দেয়। টেলিভিশনের নায়ক দুর্বার গতিতে গাড়ি হাঁকিয়ে চলেছে, চোখে রোদ চশমা। ভাবখানা তার হলিউডের নায়ক।
তার আর সহ্য হলো না। টেলিভিশন বন্ধ করে দিয়ে সোফার উপর শুয়ে পড়লো। কি করবে ভাবছিলো। মনে হলো ,চা বানিয়ে খায়। কিন্তু চায়ে সে স্বাদ নেই। কেমন পানসে। হঠাৎ চাচার কথা মনে পড়লো। যাবে কি যাবে না – এই নিয়ে দু’টানায় পড়ে গেলো । প্রতিদিন সেখানে কাজ করে, দেখতে হয়, এক-ই মুখ। বড় একঘেয়ে লাগে । আজ ছুটির দিনেও সেখানে যাবে? কয়েক মুহূর্ত ভাবলো, তারপর মনে হলো এ ছাড়া তার আর কিছু করার নেই।
সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লো সে। সাইকেল চালাতে চালাতে তার মন কিছুটা হালকা হয়ে গেলো। শিল্প নয়, সাহিত্য নয়, একটুখানি কথা বলা-র নেশায় ছুটে যাচ্ছে। সে যেন আজ কথা-র ভিক্ষুকে পরিণত হয়েছে। সে হয়তো সামান্য কথা, কিন্তু তার মনে অসামান্য আনন্দ।
স্টোরের সামনে ভিড়। সাইকেলটা তালাবদ্ধ করে তাকিয়ে দেখে, কয়েকজন মহিলা কি যেন বিলি করছে। অধিকাংশ কাস্টমার মেক্সিকোর। আর তাদেরকে ঘিরে চলছে মহিলাদের অভিযান। একবার কৌতুহল হলো, গিয়ে দেখে, কি হচ্ছে। পরক্ষণে মনে হলো বিদেশের বাড়ি, শেষে কোন ঝামেলায় পড়ে-এই ভয়ে আর পা বাড়ালো না। এমন সময় ভিড়ের ভেতর থেকে কে একজন চেঁচিয়ে উঠলো, অ্যামিগো বলে। চেয়ে দেখে, তার পরিচিত এক কাস্টমার, মেক্সিকোর। প্রতিদিন সকালে দল বেঁধে কাজে যাবার আগে এ দোকানে এসে, বড় এক কাপ কফি, গোটা কয়েক বুরিডো আর এক গ্যালন জল কিনে নিয়ে যায়। যখনই সে আসে দেখলেই চিৎকার করে বলে উঠবে, অ্যামিগো !
তারা সবাই নির্মাণ শ্রমিক।
সেও তার দিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে বলে উঠলো, অ্যামিগো !
লোকটি তার দিকে এগিয়ে এসে বললো, আজ কাজ নেই?
রাজিব বললো, না।
সে বললো, খুব ভালো। খুব ভালো।
রাজিব তার দিকে তাকিয়ে দেখলো, চোখে মুখে বিষাদের ছায়া, হাসিও ম্লান। সারাদিন রোদে পুড়ে কাজ করবে রাস্তায়। তারপর সন্ধ্যায় বিয়ারের বোতল নিয়ে বসে, ফেলে আসা পরিবার পরিজনের জন্য আক্ষেপ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়বে।
রাজিব তাকে জিজ্ঞেস করলো, কি হচ্ছে ওখানে?
উত্তরে সে কাঁধ ঝাঁকালো। রাজিবের মনে পড়লো, ওর ইংরেজী তার চেয়েও খারাপ। সুতরাং আর কিছু জিজ্ঞেস না করাই ভালো।
স্টোরে ঢুকতেই চাচার সাথে তার চোখাচোখি হয়ে গেলো। চাচা রেজিস্টার চালাচেছ। রেজিস্টারের সামনে কাস্টমারদের দীর্ঘ লাইন। ইশারায় বললো, কফি পান করবো।
চাচা বেশ উচ্চ কন্ঠে বললো, যাও, যা মন চায় খায়া লও।
রাজিব বললো, শুধু কফি।
কাস্টমারদের কেউ কেউ তার দিকে চোখ ফিরালো। আমাদের কথা বুঝতে না পেরে কেউ কাঁধ ঝাঁকালো, কেউ মুখ ফিরিয়ে নিলো অন্যদিকে। পেছন থেকে একজন বলে উঠলো, তুমি কি আমাদের নিয়ে কথা বলছো?
রাজিব মাথা নেড়ে বললো, না। সে ভেবেছিলো তার এই সংক্ষিপ্ত উত্তর শুনে আর কেউ কোন প্রশ্ন করবে না।
আরেকজন কাস্টমার বলে উঠলো, কি বলছো, এই নরককুন্ডে?
ব্যাপারটাকে আমল না দিয়ে কফি বানাবার জন্য, সে চলে গেলো কফি কাউন্টারে।
রাজিব সাধারণত কাস্টমারদের সামনে বাংলায় কথা বলে না। অবশ্য এ শিক্ষা পেয়েছে একটা মুদির দোকানে কাজ নেয়ার কিছুদিন পর, সহকর্মীর সাথে বাংলায় কথা বলার অপরাধে মালিকের বকুনি খেয়ে । সে প্রথম মনে করেছিলো, হয়তো সহকর্মীই বলে দিয়েছে। সে কারণে তার সাথে কথা বলাও কমিয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু দোকানের মালিক কয়েকদিন পর তাকে একা পেয়ে একটু অন্তরঙ্গ হয়েই বলছেলিো, বাংলায় কথা কইলে ওরা খুব মন খারাপ করে, মনে করে ওদের নিয়ে কথা হচ্ছে। এতে কাস্টমার হারাতে হয়, তাই কাস্টমারদরে সামনে বাংলায় কথা কইবনে না।
সে মনে মনে ভাবলো, মানুষ কি এতই ছাগল? কেউ তার নিজ ভাষায় কথা বললে অন্যে তা দেখে মন খারাপ করবে? তারপর থেকে দোকানে কাস্টমার থাকলে সে আর বাংলায় কথা বলতো না।
কিন্তু চাচার পাল্লায় পড়ে ব্যতিক্রম ঘটতে শুরু করলো। অবশ্য এই স্টোরের অধিকাংশ কাস্টমার পরিচিত , তেমন কিছু মনে করে বলে তার মনে হয় না।
কফি নিয়ে সে স্টোরের বাইরে চলে এলো। তখনো সেই মহিলারা প্রচারপত্র জাতীয় একটা কিছু বিলি করছে বলে মনে হলো । সে এবার প্রচন্ড কৌতুহলে কিছুটা এগিয়ে গেলো। কিছুটা কাছাকাছি যেতেই ওদের একজন এগিয়ে এলো তার কাছে। একগাল হেসে বললো, কেমন আছো? এখানে হাসি মানে দন্ত প্রদর্শন।
সেও তার দাঁত প্রদর্শন করে বললো, ভালো। তুমি কেমন আছো?
ভালো। তারপর আরো ঘনিষ্ট হয়ে বললো, তুমি কি চার্চে যাও?
কথা নেই বার্তা নেই, চিনা নেই জানা নেই – চার্চে যাও? এটা কোন ধরণের ভদ্রতা? প্রশ্নের ধরণে প্রথম কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেলেও, পরমুহূর্তে সামলে নিয়ে বললো, না। তার বলতে ইচ্ছে করছিলো, কেন যাবো? কিন্তু সব সময় তার মনে জেগে থাকে “বিদেশের বাড়ি”, – শুধু ঐ একটি কারণে বলা হয় না। তার সংগে যে কথা বলছিলো তার বয়স আনুমানিক ২২ বা ২৩ হবে। সে তার দিকে তাকিয়ে ভাবছিলো, মেয়েমানুষ ধার্মিক হলে পুরুষমানুষের খুব মজা। আর সে জন্য প্রগতিশীল পুরুষমানুষও জীবনসঙ্গী হিসাবে চায় ধার্মিক মেয়েমানুষ। এমন সময় দলের মধ্য বয়সী একজন এগিয়ে এলো, বললো, কেমন আছো?
আমি ভালো। তুমি?
প্রভু যিশুর কৃপায় ভালো। সে কতগুলো প্রচারপত্র তার হাতে তুলে দিল।
রাজিব বললো, এগুলো কি?
সে বললো, পড়লে বুঝতে পারবে।
রাজিব এড়িয়ে যাবার জন্য বললো, আমি ইংরেজী পড়তে পারি না।
এতে সে দমে না গিয়ে বললো, কোন ভাষায় কথা বলো?
উদাসভাবে জবাব দিলো, বাংলায়।
সে তার থলে থেকে আরেকটি পুস্তিকা বের করে এক একটা ভাষার নমুনা দেখিয়ে বলে চললো, এটা?
রাজিব বললো, না
এটা?
না।
এটা?
না।
রাজিব ভেবেছিলো হয়তো মহিলা এবার দমে যাবে। কিন্তু সে দমলো না। অবশেষে রাজিব যখন তার ভাষাটি সনাক্ত করলো, সে উৎফুল্ল হয়ে বললো, এ ভাষাতেও আমাদের পুস্তিকা আছে। তুমি তোমার ঠিকানা দিয়ে গেলে আমরা যথা সময়ে আমাদের বই পাঠিয়ে দেবো।
তাদের কথাবার্তার ধরণে রাজিবের কেবলি মনে হচ্ছিলো ,সে যেন মানবিক গুণবর্জিত প্রাণীমাত্র, তার নিজস্ব ধর্ম বা বোধ বলে কিছুই নেই। তাই তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে তাকে মানুষ করার জন্য। আবার এমনও হতে পারে, নির্যাতিত দেশ থেকে আগত বলে তারা ধরে নেয়, এদের শিকার করা সহজ। স্টোরে প্রবেশ করার সময়ই রাজিব লক্ষ্য করেছিলো, তারা কথা বলছিলো মেক্সিকানদের সাথে, যারা মূলত কাজ করে এখানকার ক্ষেতে খামারে বা দালান কোঠা, রা¯াঘাট নির্মাণে। হয়তো তার পোশাক আশাক আর সাইকেলে আসতে দেখে, মনে করেছে নির্বোধ । সুতরাং বোধ-বুদ্ধি, নৈতিকতা, মূল্যবোধ বলে তার কিছু নেই। রাজিবের আত্মসম¥ানে খুব লাগলো, এই প্রথম সে বলে উঠলো, আমি কি তোমার সাহায্য চেয়েছি?
মহিলা একগাল হেসে বললো, মহাপ্রভু তোমার সহায় হোন।
রাজিব ২ মাস হলো এ দোকানে কাজ করছে অথচ একদিনের জন্যও এদের দেখেনি। এটা কেমন করে সম্ভব ভেবে পেলো না। কথাটা চাচাকে জিজ্ঞেস করবে বলে, স্টোরের ভেতর গিয়ে দেখে চাচা কফি বানাচ্ছে। তাকে দেখে বলে উঠলো, কি ভাতিজা পছন্দ হয়?
তার মানে চাচা এতক্ষণ তাকে লক্ষ্য করছিলো। রাজিব সে প্রসঙ্গে না গিয়ে বললো, এদের তো কোনদিন দেখিনি।
চাচা বললো, দেখবা কেমনে, দেখার মত চোখ থাকলে তো দেখবা।
চাচার এই এক সমস্যা, সব কথাতেই রস। রাজিব বার দুই জিজ্ঞেস করতেই বললো, তুমি তো আর শনিবার রাতে কাজ করো না, তাই দেখতেও পাও না। শনিবার রাতে কাম নাও, তাইলে প্রত্যেক রবিবার সকালে দেখতে পাইবা।
চাচার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রাজিব বাসায় চলে এলো । রুমমেটরা কেউ নেই। তার মানে দুপুর গড়িয়ে বিকাল। সবাই চলে গেছে কাজে। এবার সত্যি সত্যি ঘরটাকে মনে হলো, শূন্য। ওরা ঘুমিয়ে থাকলেও তাদের উপস্থিতি একধরণের সঙ্গ দিয়েছিলো। এখন এ আশাটুকুও নেই। টেলিভিশন চালু করে দিয়ে নাটক নিয়ে বসলো। কিšু কিছুক্ষণের মধ্যেই তার সব কিছু কেমন ফাঁকা ফাঁকা মনে হতে লাগলো। নাটকও ভালো লাগলো না। আসলে সে যা কছিুই করুক না কেন, কারো সাথে শেয়ার করতে না পারলে সবকিছু কেমন অর্থহীন মনে হয়। নাটক বন্ধ করে দিয়ে খেতে গিয়ে দেখে যা ছিলো – সাবার। রাগে দুঃখে তার কান্না পাচ্ছিলো। একবার মনে হলো ,না খেয়েই শুয়ে থাকে। কিšু ক্ষুধার কাছে সব তুচ্ছ। সে ২টা ডিম ভেজে, ভাত রেঁধে খেয়ে শুয়ে পড়লো। মনে হয়েছিলো শু‘লেই ঘুমিয়ে পড়বে। কিšু ঘুম এলো না। একটা উপন্যাস নিয়ে পড়তে শুরু করলো, যাতে করে, পড়তে পড়তে ঘুম আসে। কথাটা মনে হতেই হাসি পেলো। ঘুমের জন্য বই? অথচ দেশে থাকতে ঘুমের বিরুদ্ধে একরকম যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলো। রাত জেগে বই পড়ার জন্য ফ্লাস্ক ভর্তি চা নিয়ে বসতো। আর এখন বই পড়ছে ঘুমাবার জন্য।
টেলিফোনের একটানা শব্দে ঘুম ভাঙলো। কতক্ষণ ঘুমিয়েছিল, প্রথম ঠাওর করতে পারলো না। আধো অন্ধকারে হাতড়ে টেলিফোনের রিসিভার তুলে নিতেই ওপার থেকে ভেসে এলো তাজিমের গলা। চেঁিচয়ে বললো, এক জায়গায় যামু, যাবি?
মাত্র কয়েকদিনের পরিচয়। এরই মধ্যে আপনি থেকে তুমি, তুমি থেকে তুই। রাজিবের দিক থেকে সময় লাগলেও ওর দিক থেকে সময় লাগলো না। খুব দ্রুত সে রাজিবকে আপন করে নিয়েছিলো।
রাজিবের সাড়া না পেয়ে আবারো বললো, কিরে যাবি? গেলে রেডি হয়া যা।
রাজিব ততক্ষণে ঘুমের ঘোর থেকে জেগে উঠেছে, বললো, যাবো। তারপর বিছানা ছেড়ে দাঁড়াতেই হঠাৎ তার মনে হলো, স¡র্গ থেকে যেন আহবাণ এসেছে তাকে এই নিঃসঙ্গ নরক থেকে উদ্ধার করার । সে দ্রুত হাত মুখ ধুয়ে কাপড় চোপড় পড়ে, একটা চেয়ার নিয়ে দরজা খুলে রা¯ার দিকে মুখ করে বসে রইলো। তাজিম চলে এলো আধঘণ্টার মধ্যে। তাকে দেখে রাজিব এমনভাবে ছুটে গেলো যেন হঠাৎ সে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছে। তাজিমকে বললো, অনেক ধন্যবাদ। খুব অসহ্য লাগছিলো সবকিছু, মনে হচ্ছিলো পাগল হয়ে যাবো।
তাজিম বললো, আমারে ফোন করলেই পারতি।
তাজিমের কথা যে তার মনেই ছিলো না, সে কথা না বলে বললো, টেলিফোন না¤¦ারটা হারিয়ে ফেলেছি।
বাসায় ফেরার সময় মনে কইরা আবার না¤¦ার নিয়া নিস।
আচ্ছা।
তাজিম বললো, কোথায় যাচ্ছি, জানিস?
না।
নাইটক্লাবে।
শুনে একটু ভড়কে গেলো রাজিব । কখনো নাইটক্লাবে যায়নি সে। তাজিমকে তার অনভিজ্ঞতার কথা বলতেই সে অনেকটা অভিজ্ঞ লোকের মত হেসে বললো, অভিজ্ঞতা নিয়া কেউ দুনিয়ায় আহে না।
রাজিব বললো, আমি তো নিয়ম কানুন কিছুই জানি না।
তাজিম বললো, আমাকে অনুসরণ করলে কোন সমস্যা হবে না।
রাজিব মনে মনে ভাবছিলো, কি হয় নাইটক্লাবে আজ সে রহস্যের উম্মোচন হবে। এতদিন শুধু শুনেছে, আজ সচক্ষে তা দেখবে।
নাইটক্লাবে ঢোকার পথে ছোটখাটো লাইন। লাইনে দাঁড়িয়ে তাজিম বললো, সঙ্গে পরিচয়পত্র আনছস তো?
হ্যাঁ, কিšু পরিচয়পত্র কেন?
একুশ বছর বয়সের নিচে কাউকে ঢুকতে দেয় না।
রাজিব বললো, আমি মনে করেছিলাম, মদ বিয়ার আর সিগারেট কিনতেই বুঝি পরিচয়পত্র লাগে।
তাজিম বললো, পরিচয়পত্র ছাড়া কোথাও যাবি না।
কেন?
তাজিমের কাছ থেকে উত্তর পাবার আগেই তারা দোরগোড়ায় চলে এলো। পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভিতরে ঢুকতেই রাজিবের কানের তালা ফেঁটে যাবার উপক্রম হলো। সে দু’হাতে কান চেপে ধরতেই তাজিম চাপা গলায় বললো, কি ছাগলামি শুরু করলি। ওরা কি ভাববে? সোজা হয়ে চল।
রাজিব কান থেকে হাত সরিয়ে দাঁতে দাঁত লাগিয়ে সোজা হয়ে চলতে শুরু করলো। তাতে মনে হচ্ছিলো, যে কোন মুহূর্তে তার কানের পর্দা ফেটে যাবে।
তাজিম বারের কাছে গিয়ে বললো, কি খাবি?
রাজিব কি বলবে, ভেবে পেলো না। কারণ একমাত্র জনি ওয়াকার ব্ল্যাক লেভেল ছাড়া আর কোন মদের নাম সে জানে না। তাজিমকে তার অজ্ঞতার কথা বলতেই, সে মাথা ঝাঁকিয়ে বললো, ঘাবড়াবি না। আমি তো আছি। হুইস্কি সাওয়ার চলবে?
সে এমনভাবে বললো যেন রাজিব এইসব নামের সাথে খুব পরিচত। রাজিব বললো, আমি তো কখনো পান করিনি। তুই যা বলবি, তাই।
তোর ভালো লাগবে। যদি না লাগে তো অন্য একটা নিবি, কোন সমস্যা নেই।
রাজিবের চোখ চলে গেলো নাচের ফ্লোরে। একদল তরুণ তরুণী অত্যন্ত অশ্লীলভাবে নর্তন কুর্দন করছে। তার মনে পড়ে গেলো স¯া বাংলা ছায়াছবির কথা । তাজিম তাকে লক্ষ্য করছিলো কিনা সে খেয়াল করেনি, তার কানে এলো, কেমন লাগছে দো¯?
রাজিব বললো, ঠিক বুঝতে পারছি না।
সে বললো, গ্লাসটা শেষ কর, দেখবি সবকিছু খুব ভালো লাগতাছে।
গ্লাস শেষ করার আগেই রাজিবের নেশা ধরে গেলো। তাজিম মুচকি হেসে বললো, চল।
কোথায়?
ফ্লোরে নাচবি।
রাজিব জড়িত কণ্ঠে বললো, আমি নাচতে জানি না।
তাজিম বললো, জানতে হবে না। যারা নাচতাছে, তারা কি নাচ শিইখ্যা আইছে?
ফোরে গিয়ে তাজিম চাপা গলায় বললো, আমাকে লক্ষ্য রাখিস, তা না হলে হারিয়ে যাবি। আর হারিয়ে গেলে রাইড পাবি না।
আচছা।
রাজিব লক্ষ্য করলো, তাজিম খুব অনায়সে ভিড়ের মধ্যে নাচতে শুরু করে দিয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে সেও নাচতে শুরু করে দিলো। কিšু কয়েক পাক নাচতে না নাচতে তার শরীর ঘৃণায় সংকুচিত হয়ে এলো। তার মনে হলো, সেখান থেকে সে বেরিয়ে আসে। আর সে- মুহর্তে নর্তনরত এক তরুণী, এমন অশ্লীল এক ভঙ্গি করলো, রাজিবের মনে হলো, কি আর আছে, যা হবার হবে, তার চেয়ে জীবনকে ভোগ করাই শ্রেয়। এ ভাবনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠবার আগেই তার চোখে পড়লো, ফ্লোররে অপর পাশে চারজনের একটি দল শরীর ঘিরে, কার্তিক মাসের কুকুরের মত মহড়া দিয়ে চলেছে । তার মনে হলো কেউ তাকে জড়িয়ে ধরুক। তাকে নিয়ে যাক শয্যায়। তাকে পাশে শুইয়ে রাখুক সারারাত । কিšু কেউ এলো না। শরীর আবার গুলিয়ে উঠলো। মনে হলো, বমি করে দেবে। কিšু বমি হলো না। আবার তার মনে হলো , কাউকে একটুখানি ছুঁইয়ে দেয়। কিšু সাহস হলো না। হঠাৎ নিজেকে খুব ছোট মনে হলো। মনে হলো সে খুব দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে। নামতে নামতে একদা যা তীব্র ঘৃণা করতো, আজ সেখানেই সে তলিয়ে যাচ্ছে। উঠে দাঁড়ালো রাজিব। চারদিকে তাকালো। তাজিম ওদের সাথে মিশে গেছে। নর্তন করে যাচ্ছে একমনে। হঠাৎ তার চোখ আটকে গেলো ফোরের যে পাশ ঘেঁষে বার তার ডানদিকে সরু এক টেবিলের উপর। এক তরুণী চিৎ হয়ে শুয়ে বুক নাড়াচাড়া করছে , আর তাকে ঘিরে আছে সাত আটজন পুরুষ। সে নিজেও এগিয়ে গেলো। কাছে গিয়ে চক্ষু স্থির। ২০-২২ বছর বয়সের এক তরুণী খুব ধীরে ধীরে তার বুকের কাপড় খুলে আবার পর মুহূর্তে তা ঢেকে ফেলছে। মুহূর্তের জন্য সব ভুলে গিয়ে একদৃষ্টে তার দিকে তাকিয়ে রইলো রাজিব। পেছন থেকে কে যেন মৃদু ধাক্কা দিলো। ঘাড় ফিরিয়ে তাকিয়ে দেখে তাজিম। চোখাচোখি হতেই সে মুচকি হেসে বললো, কেমন লাগছে বন্ধু?
চমৎকার ! বলে রাজিব আবার ঘাড় ফিরালো সেদিকে। দর্শকদের কেউ কেউ বখশিস দেবার উসিলায় একটুখানি ছুঁয়ে দিচ্ছে বুকের ¯ন। কিছুক্ষণ পর পর মেয়েটি ব্রা-র নিচে সঞ্চিত বখশিসের টাকাগুলো সরিয়ে নিচ্ছে খুব সাবধানে। এরি মধ্যে কোথা থেকে এক বুড়ো এসে ঝটপট পকেট থেকে ১০ ডলারের একটা নোট বাড়িয়ে দিলো। আর মেয়েটি তার বিনিময়ে বুকের উপর থেকে তার কাপড় সরিয়ে নিলো। আর সেই অবসরে বুড়ো তার বুকের উপর একটা চুমো দিয়ে দিলো। চারদিকে হাততালি। মেয়েটিও উত্তেজিতভাবে ক্রমাগত তার বুকের কাপড় নিয়ে খেলছে। টানছে দর্শকদের।
আবার সব উলটপালট হয়ে গেলো রাজিবের। দ্রুত চারদিকে চোখ বুলালো সে। তাজিম তখন অন্য প্রান্তে। তার কাছে গিয়ে বললো, বাথরুম কোথায়?
তাজিম নিজেও জানে না। বললো, বারের কাউকে গিয়ে জিজ্ঞেস কর, দেখিয়ে দেবে।
বাথরুম থেকে যখন বেরিয়ে এলো, শরীর অনেকটা হালকা। তাজিম তাকে দেখে বললো, ঠিক আছো তো বন্ধু?
রাজিব নিজে এখনো মাতাল কিনা বুঝতে পারলো না। বললো, চল।
কি ছিলো তার কণ্ঠে রাজিব নিজেও জানে না। তাজিম বেশ রস করে বললো, তাই হোক।
ক্লাব থেকে বেরিয়ে এসে তাজিম রাজিবের দিকে এমনভাবে তাকালো যেন সে তাকে এক নতূন জীবন দিয়েছে, বললো, আবার কবে আসবা বন্ধূ ?
আর না।
কেন ভাল লাগেনি ?
রাজিব বিড়বিড় করে বললো, হয় চার্চে যাও অথবা মাতাল হয়ে, পড়ে থাকো নাইট ক্লাবে। এই তো জীবন। কেমন আর লাগবে ?
কি কস বিড়বিড় কইর্যা, জোরে ক‘।
১২/৯৯
অসাধারণ ভাষা আর অনুভূতি আর গল্পের প্লট।
এখানে মানুষের চাইতে কাপড় আর গাড়ির দাম বেশি। এখানে মানুষের সঙ্গের চাইতেও সবার বেশি কাম্য কোন কুকুর অথবা বেড়ালের সঙ্গ। আমরা যারা অভ্যস্ত নই এতে তাদের অবস্থা রাজীবের মতনই হয়।
দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। যে চার বছরের বাচ্চাকে জানতাম চমৎকার একটি প্রাণবন্ত শিশু সন্তান হিসেবে, এক বছর স্কুলে গিয়ে তার আগের সত্যিকারের হাসির জায়গায় স্থান নিয়েছে শুধুই দন্ত প্রদর্শন। অন্য সব কিছুর মতন এটা যেন অন্তত আমাদের দেশে যেন ছড়িয়ে না পড়ে।
বিভিন্ন সময়ে খুব কম দিনের জন্য বিদেশে গিয়েও প্রথম দুয়েকটা ছুটি ঘুরে ফিরে কাটালেও পরে আর কাটতে চাইত না।
ভাল লেগেছে জীবন থেকে নেওয়া কাহিনী । তবে
এ লাইনে আমাদের শব্দটি বোধ হয় ভুলে লেখা হয়েছে।
@গীতা দাস,
এখানে মূলতঃ আমার আর চাচার কথা বুঝানো হয়েছে। হয়তো কথোপকথন বললে ভুল বুঝার অবকাশ কম হতো।
মন দিয়ে পড়ে, মন্তব্য করলে কার না ভাল লাগে?
ভাল থাকবেন।
রাজবিরে বাস নাকি রাজিবের বাস? :-s
চমৎকার (Y) ।
চমৎকার (Y) আরও চমৎকার (Y)
বিদেশ বিভূঁইয়ে বসবাস_
নেই যেন কষ্টের অবকাশ
@অরণ্য,
ভুল ধরিয়ে দিলে একটুখানি ভাল লাগে আর প্রশংসা শুনলে অনেক। কিন্তু কখনো কখনো ধরিয়ে দে’য়া ভুলগুলোর আনন্দ, প্রশংসার আনন্দকেও ছাড়িয়ে যায়।
পোস্ট এর ঘর ফাঁকা রেখে, মন্তব্যে ঘরে যে হারে কবিতা বিলিয়ে যাচ্ছেন, তাতে কিন্তু অনেক পাঠক আপনার কবিতার রস থেকে বঞ্ছিত।
একটুখানি ভেবে দেখবেন।
ভাল থাকবেন।
@স্বপন মাঝি,
ভুল করে যদি ভুল ধরাই
জোড় হাতে তব ক্ষমা চাই (E)
পোস্ট এর কোন ঘরই যে আমার নাই
ফাঁকা রাখার প্রশ্ন অপ্রাসঙ্গিক তাই 😛
প্রথমত এগুলি মোটেই কবিতার পর্যায়ে পরে না। তবে আমি কবিতা পড়তে পারতে চাই। ছন্দের খোঁজে তাই খসড়া লাইন সাঁজাই।
দ্বিতীয়ত আমার কবিতার(?) তিক্ত রসে পাঠকদের বিরক্ত করার চেয়ে বঞ্চিত করাই অধিক নিরাপদ মনে করি :))
তৃতীয়ত আমি পাঠক মাত্র। লেখক নই।
সুতরাং…
ভেবে দেখার নাই কোন অবকাশ
অনধিকারে কবিতা পায় না প্রকাশ
বেয়ে চলুন! (8)
ছোট গল্পটা ভাল লাগল।
গল্পের পটভূমি মনে হচ্ছে আমেরিকার এমন স্থানে যেখানে অনেক মেক্সিকান থাকে–তাই না? এই স্থানের নামটা কী–রোকা বেটন?
@আবুল কাশেম,
স্থান আমেরিকা বটে, কর্মস্থলের আশেপাশে অনেক মেক্সিকান বাস করতো তবে জায়গার নাম ‘রোকা বেটন’ নয় ‘বোকা রেটন’।
লেখা পাঠ করার জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।
কতিপয় খ্রিস্টানধর্ম প্রচারকারীর খপ্পরে আমিও পড়েছিলাম। ওরা বাংলা বলতে এবং পড়তে পারে। বাংলা বাইবেল নিয়ে আমার বাসায় নিয়মিত তিন চার জন এসে আমাকে বাইবেলীয় উৎপাত করতো। আমার কোন প্রশ্নের সদোত্তরই তারা দিতে পারতোনা। আমি একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘গডের সাথে কি মেরীর বিয়ে হয়েছিল’। তারা বললো,” না।” আমি বলেছিলাম,’তাহলে ত ধর্মীয় বিধি মোতাবেক যিশু গডের জারজপুত্র।’ বাঁচা গেছে এর পর থেকে আসা বন্ধ করেছে।
@তামান্না ঝুমু,
লড়াকু মানুষ হলে যা হয়। সামান্য বাতাসে বুকে কাঁপণ ওটে। সব জায়গায় মুখের উপর একটা উত্তর ক’জন দিতে পারে?
ধন্যবাদ।
মন্দ নয় , আজ একটু পরেই ফ্লোরিডার মেঘলা ছুটির দিনে আপনার সাথে সামনা সামনি দেখা হচ্ছে ভেবে
আরোও ভালো লাগছে। (D)
@সংশপ্তক,
তাই না-কি !!
আমি তো মনে করতাম আপনি ইউরোপে থাকেন।
আপনাদের শুভকামনায় (F) শুভেচ্ছা।
বিদেশে টিকে থাকার যুদ্ধে সামিল মানুষদের জীবন নিয়ে গল্পটা খুব ভাল লাগলো।
@শাখা নির্ভানা,
এইটুকুতে খুশি আমার মন। ধন্যবাদ।
পরবাসের একঘেয়েমী ঘেঁসা জীবনের চিত্র জীবন্তভাবে ফুঁটে উঠেছে। ওইরকম জীবনের ভিতর দিয়ে মনে হয় সকল পরবাসী কম-বেশী জীবনযুদ্ধ করে করে জীবনের তরীতে নাও ভাসাইয়া জীবনসাগর পাড়ি দেয়।
দারুন লেগেছে গল্পটি।
(F)
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
আপনার ভাল লেগেছে, জেনে ভাল লাগলো। ভাল থাকবেন।
স্বপন মাঝি, আপনার লেখাটা খুব ভাল লেগেছে। আর ভাল লাগার কারন হচ্ছে, আমরা যারা দেশ ছেড়ে প্রবাসে থাকি তাদের প্রত্যেকের জীবনেই এমন সময়গুলো আসে যখন নিঃসঙ্গতা, একঘেয়েমী, একাকীত্বয় পেয়ে বসে। তখন মনে হয় ছুটি নয় কাজ’ই ভাল। তবে ইন্টারনেটের বদৌলতে এখন আর ছুটির দিনে নিজেকে একা মনে হয়না… :)) :)) :))
@জিল্লুর রহমান,
চমৎকার বলেছেন।
@জিল্লুর রহমান,
😀 😀 😀 কামের কাম করছেন। কামে আল্লাহ আপনার হেদায়েত করুন 😀