আমার এখনকার জীবনটা সুমনের এই গানগুলোর লাইনের মতো হয়ে উঠেছে ক্রমশ, জীবন যেন আমাকে নিয়ে মুচকি হাসছে, অর্থপূর্ণ হাসি –
কখনো সময় আসে, জীবন মুচকি হাসে
ঠিক যেন পড়ে পাওয়া চৌদ্দ আনা।
অনেক দিনের পর মিলে যাবে অবসর
আশা রাখি পেয়ে যাব বাকি দু’আনা।আশা নিয়ে ঘর করি, আশায় পকেট ভরি
পড়ে গেছে কোন ফাঁকে চেনা আধুলি-
হিসেব মেলানো ভার আয় ব্যয় একাকার
চলে গেল সারাদিন এলো গোধূলি
সন্ধ্যে নেবে লুটে অনেকটা চেটেপুটে
অন্ধকারের তবু আছে সীমানা
সীমানা পেরোতে চাই জীবনের গান গাই
আশা রাখি পেয়ে যাব বাকি দু’আনা…
আসলে খুব বিচ্ছিরি একটা সময় যাচ্ছে আমার। জীবনে এমন কিছু সময় আসে একসময় – যখন কোন কিছুই পরিকল্পণা মতো হয় না, সব জায়গাতেই লেগে যায় কিছু না কিছু ভ্যাজাল আর বিপত্তি। একদিক ঠিক হয় তো আরেকদিক হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। এদিক গুছিয়ে নেই তো আরেকদিক এলোমেলো হয় যায়। আমার এখনকার সময়গুলো এরকমের।
বেশ কিছুদিন হল বন্যার ক্যান্সার ধরা পড়েছে। আমার খুব নিকটাত্মীয় আর আমার ঘনিষ্ট কয়েকজন বন্ধু বান্ধব ছাড়া ব্যাপারটা কেউ জানে না, অন্ততঃ এই লেখাটার আগে কেউই সেভাবে জানতো না। আমরাও কি ছাই জানতাম? ব্যাপারটা অপ্রত্যাশিত ছিলো আমাদের দু’জনের কাছেই। অন্ততঃ মাসখানেক আগেও। বন্যার ঘারের কাছে ব্যাথা হত, মেরুদন্ডের হাড়ের ডিজেনারেশনের জন্য ঘাড়ের মাংশপেশীগুলো একটু শক্ত হয়ে যেত (মেয়েদের এই সমস্যাটা খুবই সাধারণ, অন্ততঃ একটা নির্দিষ্ট বয়সের পরে), তার জন্য কিছু এমআরআই করা হয়েছিলো। সেটা দেখতে গিয়েই ডাক্তার সাহেবের খটকা। বললেন, ডিজেনারেশনের চিকিৎসা পরে হবে, আপনার গলার কাছে একটা গ্ল্যান্ডের হাল হকিকত ভাল ঠেকছে না। থাইরয়েডের কিছু জায়গায় ‘এবনরমাল গ্রোথ’ দেখা যাচ্ছে। আপনি এক কাজ করেন ইএনটি স্পেশালিস্টকে আগে দেখান।
স্পেশালিস্ট দেখানোর পালা। আমি আর বন্যা গেলাম নর্থ ফুলটন হাসপাতালে। ডাক্তার তার ল্যাবে বন্যার গলায় কিছুক্ষণ গুতাগুতি করে বললেন মনে হয় না চিন্তার কিছু আছে। আপনারা যে দেশ থেকে এসেছেন সেখানে আয়োডিন ডেফিসিয়েন্সি খুব সাধারণ। ওখানে অনেকেরই গ্ল্যান্ড এমনিতেই ফোলা থাকে একটু। আমার মনে পড়লো বিগত নব্বইয়ের দশকে এজন্যই আয়োডিনযুক্ত লবন বাজারে চালু করা হয়েছিলো। আর বন্যারও ছোটবেলা থেকেই থায়রয়েডে কিছু সমস্যা ছিলো সেটাও আমি জানি, যদিও সেটার সাথে ক্যান্সারের কোন সম্পর্ক নেই। তারপরেও নিশ্চিত হবার জন্য বায়োপ্সি করার নির্দেশ দিলেন।
বায়োপ্সি করার দিন চলে আসলো হঠাৎ করেই। বায়োপ্সির পদ্ধতিটা শুনতে কিছুটা আদিম মনে হবে। গলায় সন্দেহ জনক জায়গায় সুঁই ঢুকিয়ে টিস্যু নিয়ে কালচার করা হয়। টিস্যুর সাথে অনেক চাক চাক রক্ত বের হয় চোখের সামনেই। অবশ্য সুঁই ঢুকানোর আগে লোকাল এনেস্থিশিয়া দিয়ে গলার আশে পাশের জায়গাগুলো অবশ করে নেয়া হয়। কোন কোন জায়গায় সুই ঢুকানো হবে সেটা আবার আল্ট্রাসাউণ্ড করে দেখে নেয়া হয়। এটাকে বলে ফাইন নিডল এসপিরেশন বায়োপ্সি। আরো ভালভাবে বললে ‘আল্ট্রাসাউন্ড গাইডেড ফাইন নিডল এস্পিরেশন (Ultrasound-Guided FNA)। সে দিনটা একটা ঘটনাবহুল দিন। আমার অফিসে একটা জরুরী মিটিং ছিলো সকালে। আমি সেটা বাতিল করে বন্যাকে নিয়ে ল্যাবে যাব ঠিক করছি। বন্যা বললো তোমার যাবার দরকার কী! আমি নিজেই যেতে পারব। সামান্য একটা বায়োপ্সি, সার্জারি তো নয়। তো আমাকে ছাড়াই বন্যা নিজে ড্রাইভ করে বায়োপ্সি করতে চলে গেল। এটা বন্যার মজ্জাগত স্বভাব। পারতপক্ষে কারো সাহায্য দরকার না পড়লে সবকিছু নিজেই করে ফেলে। কেউ তাকে ড্রাইভ করে হাসপাতালে নিয়ে যাবে, আর সে রোগীর মত পাশের সিটে মুখ পাংশু করে বসে থাকবে – এটা তার ধাতে সইবে না। একাই চলে যেতো, কিন্তু আমাদের মেয়ে তৃষা মহা নাছোড়বান্দা হয়ে বসে রইলো, মার সাথে সে যাবেই, দরকার হলে স্কুল বাদ দিয়ে হলেও। কী আর করা, তৃষাকে স্কুল থেকে তুলে বায়োপ্সি করতে চলে গেল বন্যা।
ভেবেছিলাম ঘন্টাখানেকের মধ্যেই বন্যা ফিরে আসবে। দুই ঘন্টা হয়ে যাবার পরও বন্যা ফিরছে না দেখে ফোন করলাম। সেল ফোন বন্ধ। সেটা হবারই কথা। বায়োপ্সি করার সময় তো আর সেলফোন খোলা থাকবে না। কিন্তু এত সময় লাগছে কেন? দুই ঘন্টা পেরিয়ে তিন ঘন্টা হয়ে গেল – তাও বন্যা ফিরছে না। আমি এদিকে বন্যাকে সেল এ ম্যাসেজ রেখে যাচ্ছি। তৃষাকেও ফোনে পাচ্ছি না। অস্থির সময় ক্রমশঃ বুকে পাথরের মত ভারী হয়ে আসছে। ভাবছি হাসপাতালের ল্যাবের ফোন নম্বর খুঁজে নিয়ে সরাসরি ফোন করব কিনা … ঠিক এই সময় বন্যার ফেন পেলাম। চার/ সাড়ে চার ঘন্টা পরে। বন্যার গলায় বারোটা জায়গায় সুঁই ঢুকাতে হয়েছে, একগাদা টিস্যুতে খোঁচাখুঁচি করতে হয়েছে। আমাদের মেয়ে খুব সাহস করে পুরো প্রক্রিয়াটা নিজের চোখে দেখবে বলে ডাক্তারের পাশে দাঁড়িয়ে থেকেছে প্রথম থেকেই। পুরোটা সময় ভালই ছিলো। কিন্তু শেষ সুঁইটা গলায় ঢোকানোর সময়ই তার কেমন যেন ‘মাথা ঘুরে উঠল’, তারপর আর তার কিছু মনে নেই – হরাম করে মাটিতে পড়ে গেল। তখন ডাক্তারদের আবার তাকে নিয়ে শুরু হল টানাটানি। ডাক্তার অবশ্য এর আগে সাবধান করে দিয়েছিল – এ রকম কিন্তু হতে পারে, কাজেই তুমি বাইরে অপেক্ষা করে থাকবে নাকি ঠিক করো। কিন্তু আমার অসম সাহসী মেয়ে এগুলোতে কান না দিয়ে মার পাশে থাকবে বলে ঠিক করেছিল। আর এই হল সাহসের প্রতিফল। অবশ্য মাটিতে পড়ে যাবার সাথে সাথেই আরেক ডাক্তার পাঁজাকোলা করে তাকে অন্য ঘরে নিয়ে যায় ; তৃষার জ্ঞান অবশ্য সাথে সাথেই ফিরে আসে খুব প্রায় সাথে সাথেই।
আমি বন্যাকে জিজ্ঞেস করলাম – তুমি কি বুঝেছিলে, তৃষা পড়ে গেছে?
– আরে না, আমার গলায় তো সুঁই ঢুকছে আর বেরুচ্ছে। হঠাৎ শুনলাম পাশে ঝুপ করে শব্দ, আর একজন ডাক্তার দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেল। আমি তো আর বুঝিনি যে তৃষা পড়ে গেছে।
-তারপর?
-আমার সব কিছু শেষ হবার পর তৃষা এসে বলে মা জান, শেষ দিকে আমি ‘পাস আউট’ করেছিলাম। যেভাবে দাঁত কেলিয়ে বলল, তাতে মনে হল আমার বায়োপ্সি না, তার পাস আউটের অভিজ্ঞতাটাই গুরুত্বপূর্ণ!
আমি মনে মনে বলি, হুমম। ঘোর কলিকাল। কী করবা – আজকের জামানার পোলাপাইন…
বায়োপ্সির রিপোর্ট পাওয়া গেল কিছুদিন পর। বন্যার সবগুলো গ্রোথই নন-ম্যালিগনেন্ট, কাজেই চিন্তা করার কিছু নেই – কেবল একটি খুব ছোট জায়গা ছাড়া। জায়গাটা আকারে এতই ছোট যে ডাক্তারেরা প্রথমে ঐ জায়গাতে বায়োপ্সিও করতে চায়নি। সাধারণতঃ এক মিলিমিটারের কম জায়গার গ্রোথে ডাক্তারেরা বায়োপ্সি করে না। কিন্তু সে সময়ই আল্ট্রাসাউন্ডে গ্রোথ একটু ‘এনক্রাস্টেড’ দেখে বায়োপ্সি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ডাক্তারেরা। সেটাতেই পাওয়া গেল গড়বড়। যদিও রিপোর্টে একশতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলা হয়নি এটা ক্যান্সারই, কিন্তু অস্বাভাবিকতার উল্লেখ ছিলো এতে।
বন্যার মন স্বভাবতই খারাপ। অফিস থেকে আমাকে ফোন করে অনেকক্ষণ চুপ করে বসে রইলো। আমি বললাম চিয়ার আপ! রিপোর্টে তো পরিস্কার করে বলে নাই ক্যান্সার। অন্য হাসপাতালে ভাল ডাক্তার দেখাই, চল। আটলান্টাতেই ক্যান্সারের জন্য খুব বড় হাসপাতাল আছে – এমোরি হেলথ কেয়ার। ক্যান্সারের রিসার্চের জন্য বিখ্যাত। থাইরয়েড ক্যান্সারের জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্টই আছে তাদের। চিকিৎসাও খুব আধুনিক। সেখানকার দু’জন ডাক্তারের সাথে বেশ কয়েকবার দেখা করলাম আমি আর বন্যা গিয়ে। তারাও রিপোর্ট দেখলেন নিজেরাও বেশ কিছু পরীক্ষা করলেন। শেষ পর্যন্ত আমাদের নিশ্চিত করেন – হ্যা এটা ক্যান্সারই। মেডিকেলের ভাষায় ‘প্যাপিলারি কারসিনোমা’।
ক্যান্সার বললাম বটে, বন্যাকে দেখে কিছু বুঝবার উপায় নেই এমনিতেই। অফিস করছে, বাসায় এসে ঘরের কাজকর্ম করছে, মাঝে মধ্যে হই হুল্লোড় করে বাইরে বেরিয়ে যাওয়া, এক্সোটিক রেস্তোরা খুঁজে খেতে ঢুকে যাওয়া সবই চলছে। ইদানিং আমাদের শখ হয়েছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা করার। দু’জনেই লাইব্রেরি থেকে একগাদা বই যোগাড় করছি। এর মধ্যে পিয়ার্স ব্রেন্ডন, নিয়াল ফার্গুসন, লরেন্স জেমস, পি. জে. কেইন -এর বেশ ভাল কিছু বই আছে। পশ্চিমে দাস ব্যবস্থার বিলোপ কি মানবিক কারণেই হয়েছিলো নাকি শিল্পবিপ্লবের পর যান্ত্রিক সভ্যতার বিকাশের অবশ্যাম্ভাবী ফল হিসেবে করতে বাধ্য হয়েছিল – সেটা নিয়ে তর্ক বিতর্ক হয়। আলোচনা হয়, সে সময় উৎপাদনে শিল্পভিত্তিক পুঁজিতন্ত্রের বিনিয়োগের পদ্ধতি নিয়ে – কিভাবে পুঁজির যোগান এসেছিলো সতেরো শতকের বণিকদের বিপুল মুনাফা থেকে, যে মুনাফা তারা অর্জন করেছিলো নতুন আবিস্কৃত দেশগুলোর খনি আর বাগিচা থেকে এবং হাজার হাজার ক্রীতদাসদের খাটিয়ে; এবং অন্যদিকে ভারতবর্ষকে লুণ্ঠন করে, সেই ইতিহাস আরেকবার ঝালাই করে নেই দু’জনেই। বন্যা আমাকে পিয়ার্স ব্রেণ্ডনের ‘দ্য ডিক্লাইন এণ্ড ফল অব ব্রিটিশ এম্পায়ার’ থেকে পড়ে শোনায় – অস্ট্রেলিয়ায় প্রথমবারের খুঁটি গাড়তে এসে ব্রিটিশরা কোয়ালা এমু, প্লাটিপাস, ক্যাঙ্গারু – এই সব কিম্ভুতকিমাকার অস্ট্রেলিয়ান জীব দেখে কিরকম হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল, তারা ডায়রিতে লিখে রেখেছিল – ‘এই দেশে এসে দেখি সব কিছুই উলটা। এখানে বড় বড় পাখিরা হেটে বেড়ায় (এমু), আর ম্যামলেরা (পর্কুপাইন এন্টইটার, প্লাটিপাস) ডিম পাড়ে। শীতের সময় গরম, আর গরমের সময় শীত। এখানে পৃথিবীটাই যেন আপসাইড ডাউন!’। বেদনার্ত হয়ে বন্যার কাছ থেকে আরো জেনে নেই – কীভাবে ক্যাপ্টেন কুকের দলবল এবোরোজিনদের উপর, যারা কেবল ‘ওয়ারা ওয়ারা ওয়ারা’ (‘go away’) বলা ছাড়া ব্রিটিশদের সাথে কোন সঙ্ঘাতে যায়নি – তাদের উপর লাগাতার খুন ধর্ষণ আর নির্যাতনের রাজত্ব কায়েম করে নিঃশেষ করে দিয়েছিলো তাদের জাতিসত্ত্বাকে। তাদের ট্রাইবের কোন কোন উদ্ধত স্বামীর মুণ্ডু কেটে নাকি স্ত্রীর গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হত, আর বাধ্য করা হত ‘নেকলেস’ হিসেবে গলায় পরে থাকতে। কী বিভৎস ব্যাপার! এগুলো শুনতে শুনতেই আমার মনে পড়লো – ছোটবেলাকার বইগুলোতে (এমনকি কোন কোনটা স্কুলের পাঠ্যসূচীরও অংশ ছিলো) ডেভিড কুক, কলম্বাস আর ভাস্কো ডা গামার মতো দ্বিগবিজয়ী বীরদের নিয়ে কত রোমাঞ্চর বিরত্বের কাহিনী পড়তাম। কিন্তু এখন জানি – এরা তো আসলে বহিরাগত লুন্ঠণকারী, এবং চরম অত্যাচারী, নিপীড়ক জলদস্যু ছাড়া কিছুই ছিলো না। কিন্তু ভাস্কোডা গামা কিংবা কলম্বাস – এগুলো কোনটাই আমার মধ্যে আর রেখাপাত করে না। আমি বরং বন্যার বলে যাওয়া ইতিহাস শুনতে শুনতে তন্ময় হয়ে ভাবি – বন্যার গলার স্বর, বাচনভঙ্গি, হাত নেড়ে কথা বলা – সবকিছুই কী অসহ্য সুন্দর! আগে কেন ব্যাপারটা চোখে পড়ে নি! উদাস হয়ে যাই। বন্যা আমার উদাস ভাবলেশহীন মুখ দেখে পড়া থামিয়ে বিরক্ত চোখে বলে – ‘মনে তো হচ্ছে না তুমি কিছু শুনছ’! হাতের বই পাশে সরিয়ে রাখে।
এর মধ্যে একদিন ঠিক করলাম ‘অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট’ মুভমেন্টে যোগ দিব। আমেরিকার নিউইয়র্কে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ক্রমশঃ জোরদার হয়ে সাড়া পৃথিবীতেই ছড়িয়ে পড়েছে। এর ঢেউ আটলান্টাতেও লেগেছে পুরোদমে। সমাবেশ করতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছে অনেকেই। এই মুভমেন্ট-এর সময়কার মানুষ হয়ে সেটার সাথে একাত্ম হব না তা হয় নাকি! সব মিলিয়ে সব কিছুই চলছে আগের মতই। আর এমনিতেও আমরা খুব ফুর্তিবাজ মানুষ। আমরা জীবন নিয়ে দুঃখ প্রকাশের চেয়ে জীবন উপভোগ করতেই পছন্দ করি। দুঃখের মধ্যেও হাসি তামাসা বাদ যায় না আমাদের। তামাসা করি মৃত্যু নিয়েও। হয়তো বিপদ ভুলে থাকতেই। বন্যাকে বলি – ‘আরে ডায়রিয়ায় মরার চেয়ে ক্যান্সারে মরা তো ভাল। ডায়রিয়ায় মরলে পাবলিকেই বা কি কইবো, আর তুমিই বা হাশরের ময়দানে কী জবাব দিবা’!
বন্যা সেটা আবার তার অফিসে গিয়ে তার বসকে বলে – ‘কোথায় আমার হাসবেণ্ড একটু সহানুভূতিশীল হবে, তা নয় – আমাকে শুনিয়ে বলে ডায়রিয়ায় মরার চেয়ে নাকি ক্যান্সারে মরা ভাল’।
বন্যার বস আবার এক কাঠি সরস। বলে, ‘আই অ্যাম শিওর – সার্জারির পরে তোমার ভোকাল কর্ড ঠিক থাকবে না। তাই সার্জারির আগে ভয়েস রেকর্ড করে রাখ’।
অনেকের কাছেই মৃত্যু কিংবা শারীরিক অসঙ্গতির আশঙ্কা নিয়ে এভাবে কথা বলাটা খুব বিভৎস মনে হবে হয়তো। বন্যার অফিসে তার অধীনে এক ভারতীয় ডেভেলপার কাজ করে, এগুলো শুনলেই তার চোখ ছল ছল করে উঠে। মিন মিন করে বলে – এগুলো এভাবে বলা উচিৎ না। বন্যা আবার তখন তাকে সান্ত্বনা দেয়, আরে তুমি কি ভাবছ যারা এগুলো বলছে তারা আমার অমঙ্গল চায়! এরা কেবল সিরিয়াস ব্যাপারটাকে হাল্কা করার জন্য রসিকতা করছে।
রসিকতা করলেও আমি জানি আশঙ্কাগুলো কোনটাই মিথ্যে নয়। প্যাপিলারি কারসিনোমা সার্জারির সময় একটু গোলমাল হলেই গলার স্নায়ুতে আঘাত লাগতে পারে – আর তার ফলাফল হিসেবে পরবর্তীতে ভোকাল কর্ডে নানা সমস্যা হয়। অনেকের স্পিচ থেরাপি টেরাপি লাগে। এটা যে হবেই তা নয়, সবার ক্ষেত্রে তা হয়ও না, তবে হওয়ার চান্স আছে সেটা কম হলেও। বন্যার অফিসে তার বসের কথা মেনেই কিনা কে জানে, একদিন দেখি তৃষা তার কম্পিউটারে তার মাকে ডেকে নিয়ে ভিডিও করতে বসে গেছে। আমাকেও ঘর থেকে ডেকে নিয়ে আসে। উদ্দেশ্য মার কথা রেকর্ড করে রাখা। কিন্তু দেখা গেল মার কথা রেকর্ড বাদ দিয়ে ভিডিওর সামনে বসে আমি আর আমার মেয়ে মিলে নানা ধরণের মুখভঙ্গি করতে লেগে গেছি। বন্যা কড়া চোখে আমাদের দিকে তাকায়। তাতে অবশ্য লাভ হয় না, আমরা মুখভঙ্গি করেই যাই। আর আমাদের মেয়ে মহা উৎসাহে সেই ভিডিওগুলো রেকর্ড করে যায়।
এর মাঝে হঠাৎ একদিন মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে দেখি বন্যা তার কম্পিউটারে বসে ‘উইল’ করছে। ঠিক ‘কৃষ্ণকান্তের উইলের’ মতন ‘বন্যার উইল’ জাতীয় কিছু নয়, সে যদি মারা যায় তাহলে তৃষার জন্য কি কি করণীয় তার একটা তালিকা করে রাখছে। ব্যাপারটা আমার কাছে নতুন। এগুলো যে আমাদের কখনো করতে হবে তাই ভাবিনি। তৃষাটার কলেজের জন্য যেন পর্যাপ্ত টাকা আমরা রেখে যেতে পারি সেটা নিয়ে আমাদের চিন্তা হয়, আমরা সেটা নিয়ে আমরা কথাও বলতাম, কিন্তু দাপ্তরিকভাবে কিছু কখনো করতে হবে বলে ভাবিনি। আর তৃষা এমনিতেই পড়াশুনায় খুব ভাল। তার এখন যা রেজাল্ট, জর্জিয়া টেক এ পড়লে ফুল স্কলারশিপ পাওয়ার কথা। কিন্তু জর্জিয়া টেক এ না পড়ে “আইভি লীগ”-এর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেলে পয়সার জন্য যেন তাকে থেমে যেতে না হয় সেটা নিশ্চিত করা অন্ততঃ আমাদের দায়িত্ব। বন্যার উইল করা দেখে হঠাৎ করেই যেন বাস্তবে ফিরলাম। রূঢ কঠিন বাস্তবতা -‘যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়’! জীবনের হিসেব নিকেশগুলো বড্ড তাড়াতাড়ি শুরু করে দিতে হল।
বন্যার উইলের নীচের দিকে এসে চোখটা আটকে গেল। বন্যা পরিস্কার ইংরেজীতে লিখে রেখেছে –
* Donate my organs.
* Do not do any religious funeral for me after my death.
* Do not keep me in life support in case I enter persistent vegetative state.
যার বাংলা করলে দাঁড়ায় –
– আমার দেহের অঙ্গপ্রত্যংগ দান করে দেয়া হোক।
– আমার মৃত্যুর পর যেন কোন ধর্মীয় রীতি-নীতি মোতাবেক কোন কিছু না করা হয়।
– পারসিসটেন্ট ভেজিটেটিভ স্টেট বা স্থায়ী নিষ্ক্রিয় দশায় চলে গেলে কোন লাইফ সাপোর্ট দেয়ার দরকার নেই।
সহজ সরল তিনটা বাক্য। কিন্তু বাক্য তিনটা পড়ে আমার মতো পাষাণহৃদয় নাস্তিকের চোখের কোনাও চিক চিক করে উঠলো। চোখের জলের হয়না কোন রঙ, তবু কত রঙের ছবি আছে আঁকা …। কে বলে ‘There are no atheists in foxholes” ? আমার ইচ্ছে হয় যারা বলে বিপদে পড়লেই নাকি নাস্তিকেরা ঠাকুর জপ আর আল্লাহ বিল্লা করতে বাধ্য হয় – তাদের ডেকে এনে বন্যাকে দেখাই আর বলি – দেখো – পৃথিবীতে অনেক নাস্তিকই আছে যারা মৃত্যুকালেও ঈশ্বর নিয়ে চিন্তিত হয় না, বরং মারা যাবার পরেও নিজের দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দান করে দিয়ে যায় মানব কল্যাণে। মনে মনে আবৃত্তি করি নির্মলেন্দু গুণের ‘নাস্তিক’ কবিতার চরণগুলো –
নেই স্বর্গলোভ কিংবা কল্প-নরকের ভয়,
অলীক সাফল্যমুক্ত কর্মময় পৃথিবী আমার৷…
সেই শ্রেষ্ঠ মানব-সন্তান, যার মন মুক্ত ভগবান৷
আমার মস্তক নিত্য নত সেই নাস্তিকের তরে৷
‘এথিস্টস্ ইন ফক্স-হোল’-এর উদাহরণ তো আমাদের চারিদিকে অজস্র! আমরা কী দেখিনি – দুরারোগ্য ‘মোটর নিউরণ ডিজিজ’ এ আক্রান্ত হয়েও হকিং কীভাবে মৃত্যুকে জয় করেছেন? ঈশ্বর নাম জপায় নিজেকে নিয়োজিত না রেখে কিভাবে মহাবিশ্বের অন্তিম সব রহস্য সমাধানে ব্রতী হয়েছেন, ‘গ্র্যাণ্ড ডিজাইন’-এর মতো বই লিখেছেন, অস্বীকার করেছেন মহাবিশ্বের উৎপত্তি আর নিয়ন্ত্রণে ঈশ্বরের ভূমিকা; স্পষ্ট কন্ঠেই সাম্প্রতিক একটা সাক্ষাৎকারে বলছেন বেহেস্ত-দোজখের কাহিনি সব রূপকথা। হকিং এর মতো ক্রিস্টোফার হিচেন্সের কথাও জানেন অনেকেই। এসোফেগাস ক্যান্সার আক্রান্ত হিচেন্স ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। সিএনএন এর এণ্ডারসন কুপারের সাথে তার সাক্ষাৎকারের কথা মনে পড়ে গেল, যে সাক্ষাৎকারে হিচেন্স পরিস্কার ভাবেই বলছেন – ক্যান্সারে মৃত্যু হবে জেনেও তিনি প্রার্থনা টার্থনা করার কথা কখনোই ভাবেন না, বরং জীবনকে পরিচালিত করেন মানবিকতা আর মুক্তবুদ্ধির পথে –
httpv://www.youtube.com/watch?v=l6XncYCZTc4
আসলে আমি জানি – বন্যার জীবনটা বিদ্রোহের, আমার মতোন মধ্যবিত্তসুলভ ম্যারম্যারা প্যানপ্যানানি মার্কা নিস্তরঙ্গ জীবন ছিলো না তার কখনোই। একসময় ঢাকা শহরের সেরা ছাত্রী ছিলো সে, ঢাকা মেডিকেলে পড়তে পড়তেই ঠিক করেছিলো গতানুগতিকভাবে লেখা পড়া নয় – মানুষের জন্য কাজ করবে। মেডিকেল ছেড়ে চলে গিয়েছিলো উত্তরবঙ্গের সুদূর সাঁওতাল পল্লীতে। পরে গার্মেন্টস শিল্পীদের সাথে মিলে সেলাই সেখার এবং তাদের সাথে মেস ভাড়া করে বাংলাদেশের প্রায় বস্তিসম পরিবেশে থাকার বিরল সব অভিজ্ঞতা আছে তার ঝুঁলিতে, যে অভিজ্ঞতাগুলো আমার মত নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত হওয়া মিডিওকার মানুষের কখনোই হয়নি। সে বরাবরই দুরন্ত, উচ্ছ্বল, জীবন নিয়ে নানা বাজি ধরতে ওস্তাদ। এমনকি আমেরিকায় এসেও পড়াশুনা শেষ করে চাকরী জীবনে সাফল্য পেয়েছে, কর্পোরেট দুনিয়ার সিঁড়ি ভেঙ্গে উঠে গেছে এমন এক পর্যায়ে, যে জায়গাটাতে খুব কম দেশী অভিবাসীরাই পৌঁছুতে পারে। আমি কী তার ঘটনাবহুল জীবন নিয়ে ঈর্ষান্বিত? কিছুটা তো বটেই। খুব ইচ্ছে করে তার জীবনের এই বিরল অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে লেখার, কিন্তু বন্যার চোখ রাঙানির ভয়ে থেমে যেতে হয় সব সময়ই। তার শক্তি অসীম, অফুরন্ত। আমাকে থামানোর, এমনকি ক্যান্সারের মত রোগকেও। আমি অবাক হয়ে ভাবি -নিজের ক্যান্সারকে থোরাই কেয়ার করে ‘অকুপাই ওয়ালস্ট্রিট’ মুভমেন্টে জড়িত হবার তাগিদ আর শক্তি এই মেয়েটা কোথা থেকে পায়? হয়তো শক্তি পায় সে বন্যা বলেই; জাহানারা ঈমাম কী এভাবেই শক্তি পেয়েছিলেন নিজের ক্যান্সার বুকে নিয়ে একটা সময় ঘাতক দালালদের বিরুদ্ধে অবিরাম যুদ্ধ করে যাওয়ার? হয়তো।
বন্যা এখন অফিসে। সে ঠিক করেছে সার্জারির আগের দিনও স্বাভাবিকভাবেই অফিস করবে। সার্জারির সময় যে কটা দিন অফিসে আসতে পারবে না – তার দায়িত্বগুলো সে বুঝিয়ে দিচ্ছে তার অধীনস্থদের। আর আমি চুপি চুপি এই লেখাটা মুক্তমনায় দিচ্ছি। তার চোখে পড়ার আগেই লেখাটা মুক্তমনার পাঠকদের চোখে পড়ে যাবে। এই লেখাটা লেখার জন্য আমার কপালে বিরাট ঝামেলা অপেক্ষা করছে, জানি। বন্যা তাকে নিয়ে, তার ব্যক্তিগত বিষয় আশয়, রোগ শোক নিয়ে লেখালিখি করা একদমই পছন্দ করে না। এমনকি শুনেছি, অফিসেও তাকে ভয়ে নাকি কেউ ক্যান্সারের কথা জিজ্ঞাসা করে না। রোগ নিয়ে সহানুভূতি দেখানো, মেকি কর্পোরেট চোখের পানি ফেলা, কার্ড পাঠিয়ে ‘গেট ওয়েল সুন’ জাতীয় ম্যাসেজ বন্যার ধাতে সয় না। বন্যা এমনই।
আর চারদিন পরেই বন্যার সার্জারি। মন জুরে ভীড় করে নানা শঙ্কা, দুর্ভাবনা। কিন্তু আমি জানি এগুলো বন্যার জন্য অমূলক। সে সব বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে আগের মত সুস্থ সবল হয়ে ফিরে আসবে। আসতে তাকে হবেই। আজীবনের সংগ্রামী মেয়ে সে। এর চেয়েও বড় বড় বিপদ সে পাড়ি দিয়ে এসেছে নির্ভয়েই। মামুলি থায়রয়েড সার্জারি তো তার কাছে নস্যি। মুক্তমনার অসংখ্য পাঠক লেখকের ভালবাসাকে মূল্য দিয়ে সে ফিরবে। মুক্তমনায় লেখা শুরু করবে আবার, নতুন উৎসাহে। ‘বিবর্তনের পথ ধরে’ বইটার পর মানুষের বিবর্তন নিয়ে যে বইটা লেখার কাজ শুরু করেছিলো, সেটা সে শেষ করবে। আর, আমরা এমনিভাবে দুজনে হাতে হাত রেখে হেটে যাব আরো অনেকটা দূর ।
সীমানা পেরুতে চাই, জীবনের গান গাই,
আশা রাখি পেয়ে যাব বাকি দু’ আনা …
নভেম্বর ৫, ২০১১
আপডেট (নভেম্বর ১০, ২০১১):
আমার এই পোস্টটির পরে অনেক পাঠকই দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে আমাদের ইমেইল করেছেন, অনেকেই ব্যক্তিগত ভাবে টেক্সট করেছেন, ফোনও করেছেন ব্যক্তিগতভাবে । সবার প্রশ্নের উত্তর দেয়া কিংবা কলব্যাক করে আপডেট জানানো সম্ভব হয়নি। আশা করছি – এই আপডেটটির পর তাদের দুঃশ্চিন্তা কমবে সামান্য হলেও। হ্যা, বন্যার সার্জারি হয়ে গেছে (মেডিকেলের ভাষায় একে বলে টোটাল থাইরোডিকটমি)। হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। সামান্য কিছু শারিরীক দুর্বলতা এবং সার্জারি সংক্রান্ত ব্যাথা বেদনা ছাড়া মোটামুটি সুস্থ আছে … (বিস্তারিত এখানে) ।
আপডেট (ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১২):
এবারে বন্ধুদের জন্য আরেকটি আপডেট। এর আগের আপডেট যখন দিয়েছিলাম, তখন বন্যার সার্জারি হয়েছিল। তার সপ্তাহ খানেক পর শুরু হয়েছিলো রেডিও এক্টিভ আয়োডিন ট্রিটমেন্ট। সেটি শেষ হবার পর গতকাল ফুল বডি স্ক্যান করে ক্যান্সারের কোন মার্ক আর পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ বন্যা এখন পরিপূর্ণ ক্যান্সার-মুক্ত (বিস্তারিত এখানে)। যদিও ছয় মাস পর পর চেক-আপ চালিয়ে যেতে হবে, থাকতে হবে ডাক্তারদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে, কিন্তু আপাততঃ আশঙ্কা করার মত কিছু নেই। এ কটা মাস আমাদের খুব পরিশ্রান্ত করে দিয়েছিল, শারীরিক এবং মানসিক দুভাবেই। আজ যেন প্রবল প্রশান্তির ছায়া। জীবনানন্দ দাসের কবিতাটা মনে পড়ছে খুব –
চারিদিকে শান্ত বাতি-ভিজে গন্ধ-মৃদু কলরব;
খেয়ানৌকাগুলো এসে লেগেছে চরের খুব কাছে;
পৃথিবীর এইসব গল্প বেঁচে রবে চিরকাল;-এশিরিয়া ধুলো আজ-বেবিলন ছাই হয়ে আছে…
মুক্তমনার সকল শুভান্যুধায়ীদের পাশে থাকার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
এতকিছু ঘটে গেল অথচ আমি কিছুই জানি না। সত্যিই ভীষণ খারাপ লাগছে।
যাহোক আমাদের প্রিয় বন্যা সুস্থ হয়ে উঠেছেন; সেজন্য ভালো লাগছে।
আসলে মুক্তমনা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলে, অনেক কিছু জানা থেকেও বঞ্চিত হতে হয়।
মানুষ মরে যাবে, মরে যায়। শিবলি কাইয়ুম মরে গেল, অথচ মরার মত বয়স তার হয়নি। মুক্তমনার অনেকে তাকেঁ চিনবে না, জানবেও না যে এই শিবলি ও তার দু’জন সহযোদ্ধা এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রথম কারাগারের অতিথি। আর গঠিত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সমাবেশে তাদেরই মুক্তি দাবি। কামরুদ্দীন আফসার ভাই ভাল গাইতেন, মুনাফার জন্য নয়, মানুষের জন্য, সেও এখন মৃত্যু শয্যায়।
আপনাকে জানি না চিনি না, যতটুকু আচঁ,তাও মুক্তমনায়, যে-সব লেখার মাধ্যমে আপনাকে জানা, অনেক কিছুই আমি বুঝি না, পড়ি। এতটুকু বুঝি মানুষের কল্যাণ, আপনার কাম্য।
আর এতটুকু বুঝি, খুব জোরে মৃত্যুর বিপরীতে একটা চিৎকার দিতে হয়। ভাল থাকবেন।
এই ব্লগটা লেখার জন্য অভিকে এখনো ক্ষমা করে উঠতে পারিনি (শইলে শক্তি নাই দেখে ঝগড়াটাও করতে পারিনিঃ)) কিন্তু মুক্তমনার এত পাঠক এবং ব্লগার যেভাবে ইমেইল করেছেন, নিয়মিত খবরাখবর নিয়েছেন, কুশল জানতে চেয়েছেন তাতে আমার মত খ্যাচড়া টাইপের একটা মানুষেরও আপ্লুত না হয়ে উপায় থাকেনি। আমি সাধারণত ধন্যবাদ দেওয়ার বা ফরমাল কথাবার্তা বলার সময় ভাষা খুঁজে পাইনা, আজকেও পাচ্ছিনা, কিন্তু সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই সময়টাতে সাথে থাকার জন্য। কারও ব্যক্তিগত ইমেইলের উত্তর না দিয়ে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। গত সাতটা মাস যে কীভাবে গেছে তা ভাষায় প্রকাশ করে বোঝানো যাবে কি না জানিনা তবে এ নিয়ে অচিরেই একটা ব্লগ লেখার ইচ্ছে রইলো। জীবনের কিছু ঘটনা জীবনটাকে ধোপার পাটায় ফেলে (এই কথাটার সত্তাধিকার কিন্তু মনিজার, আমার না) আছড়ে আছড়ে আবার নতুন করে ভাবতে শেখায়, এটা বোধ হয় সেরকম একটা ঘটনার মধ্যেই পড়ে, হয়তো আরও অনেক বড় বড় ঘটনা দাঁত কেলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সামনে, হয়তো নেই, কিন্তু আপাতত এটার সাথে আর কিছুর তুলনা করতে পারছি না। এই মুহুর্তে শুধু এটুকু জানি, জীবন আবার কানটা ধরে চটাস করে কষে একটা থাপ্পড় না লাগানো পর্যন্ত এ নিয়ে তেমন কিছু আর ভাবছি না…… ছ’মাস পরপর হাসপাতালে যাবো মাথাটা ব্লন্ড-খালি করে, না ভাবতে ভাবতে, আর থাপ্পড় খেয়ে পড়ে গেলে কাঁদতে কাঁদতে আবার হাত পা ছড়িয়ে চিন্তা করতে বসবো, না হলে কালকের মত হেসে বেড়িয়ে আসবো, এ পর্যন্তই………
@বন্যা আহমেদ,
আপনার মনোবল দেখে আমরাও অনেক সাহস পাই। আমি ভাল করেই জানি সবাই হারতে জানেনা। আপনি জয়ি হবেন এমন একটা আত্নবিশ্বাস আমার ছিল। আপনি আমার আস্থা কে আবার জয়ী করলেন।
অ.ট: গত কয়েক দিন আগে “সেমন”নামের একজন আপনি বর্তমানে কি অবস্থায় আছেন জানতে চাইল। সে জানতো আমি ব্লগের কল্যানে আপনার খুঁজ খবর পাই।
আপনার কমেন্ট টা আজই তাকে ম্যাসেজ করে পাঠিয়ে দেব।
ইশ্বর-আল্লাহ-ভগবানে বিশ্বাস-টিশ্বাস নেই, তবে এটাই চাই যে, চমৎকার মানুষগুলি কিছুটা সময় বেশি বেঁচে থাকুক।
এবারে বন্ধুদের জন্য আরেকটি আপডেট। এর আগের আপডেট যখন দিয়েছিলাম, তখন বন্যার সার্জারি হয়েছিল। বলেছিলাম যে সার্জারি ভাল হয়েছে। তবে এটাও বলেছিলাম যে, এটাই চিকিৎসার শেষ নয়। এর পরে রেডিও এক্টিভ আয়োডিন ট্রিটমেন্ট করতে হবে সপ্তাহ-খানেক পর। এর মাধ্যমে শরীরে আর কোন ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ থেকে থাকলে তা নির্মূল করে ফেলা হবে। পাশাপাশি থাইরয়েড হরমোন পিল সংক্রান্ত চিকিৎসা চলবে দীর্ঘদিন ধরে।
সেই রেডিও এক্টিভ আয়োডিন ট্রিটমেন্ট শেষ হল, যেটাকে চলতি ভাষায় বলে Radioactive Iodine (RAI) ট্রিটমেন্ট। এই ট্রিটমেন্ট-এ দুই সপ্তাহ ধরে আয়োডিন ছাড়া খাবার খেতে হয়। তারপর রেডিও এক্টিভ আয়োডিন পিল খেতে হয় (এটা কেমোথেরাপির মত কিছু একটা ভাবা যেতে পারে, কিন্তু এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব কম,। চুল টুল কিছু পরে যায় না, কেবল ৫-৭ দিন আইসোলেটেড থাকতে হয়)। তার পর ‘ফুল বডি স্ক্যান’ করে জানা জায় যে, ক্যান্সারের অবশেষ দেহে রয়ে গেছে কিনা।
সেটাই করা হল গতকাল। ফুল বডি স্ক্যান করে ক্যান্সারের কোন মার্ক পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ বন্যা এখন পরিপূর্ণ ক্যান্সার-মুক্ত। যদিও ছয় মাস পর পর চেকাপ চালিয়ে যেতে হবে, থাকতে হবে ডাক্তারদের পর্যবেক্ষণে, কিন্তু আপাততঃ আশঙ্কা করার মত কিছু নেই। এ কটা মাস আমাদের খুব পরিশ্রান্ত করে দিয়েছিল, শারীরিক এবং মানসিক দুভাবেই। আজ যেন প্রবল প্রশান্তির ছায়া। জীবনানন্দ দাসের কবিতাটা মনে পড়ছে খুব –
চারিদিকে শান্ত বাতি-ভিজে গন্ধ-মৃদু কলরব;
খেয়ানৌকাগুলো এসে লেগেছে চরের খুব কাছে;
পৃথিবীর এইসব গল্প বেঁচে রবে চিরকাল;-এশিরিয়া ধুলো আজ-বেবিলন ছাই হয়ে আছে…
মুক্তমনার সকল শুভান্যুধায়ীদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি পাশে থাকার জন্য।
@অভিজিৎ,
ভাল লাগলো। 🙂
শুভসংবাদ দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ। (F)
বন্যা আহমেদের সুস্থতা, আমাদের স্বস্তি।
আশা করি সুস্থ হয়ে তার সত্যান্বেষী লেখনিতে আবার আরও বেশি করে মুখর করে তুলবেন দশদিক।
@অভিজিৎ,
নতুন জীবনপর্ব খুব আনন্দময় আর সুন্দর হোক (F)
@অভিজিৎদা,
এত্ত ভালো লাগছে খবরটা শুনে!
@অভিজিৎদা,
ভীষন আনন্দিত হয়েছি। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছি।
আমার ভীষন প্রিয় এই লাইনগুলো! বলতে পারেন আমার জীবন-দর্শন। আমার বিশ্বাস!
অনেক দেরি হয়ে গেছে এই পোষ্ট দেখতে। মুক্তমনায় নিয়মিত না আসার কারনে।
অভিজিত আপনরা উন্নত দেশে আছেন -সেই হিসাবে আমি ১০০ ভাগ আশাবাদী।
আর আমাদের পরিবারেও এমনভাবেই ক্যান্সারে ভুগছে আমাদের ছোট বোন। তবু হাল ছাড়িনি। ওরটা আরো জটিল।
দুঃখের ঘড়ি বড্ড দীর্ঘ। তবু আশাবাদী বন্যাভাবী শিঘ্র ভালো হয়ে উঠবেন। নিশ্চয় ভালো হয়ে উঠবেন।
অনেকদিন ধরে বলবো বলবো ভাবছিলাম, বন্যাপার লেখা কমেন্ট দেখি না কেনো। অসুস্থতার কথা জেনে খুব চিন্তিত হলাম। উনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন। প্লিজ আপডেট জানাবেন।
বন্যা আহমেদ এর জন্য অনেক শুভকামনা।
অভিজিৎদা,
বন্যা আপুর সুস্থতা কামনা করি। পোস্টের শুরুটা পড়ে চিন্তায় পড়ে গেলেও আপনার কমেন্টের আপডেট পেয়ে আশ্বস্ত হলাম। আশা করি ক্যান্সারের দানোকে বিজ্ঞানের মাধ্যমে, অজেয় মনোবলে জয় করবেন বন্যা আপু। আর আপনি ও তৃষাও ভালো থাকুন।
অনেক ধন্যবাদ আপডেটটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
বন্যা অচিরেই আবার আগের মত সুস্থ্য ও সবল হয়ে আমাদের মাঝে ফেরত আসবে
এ আশাই রলো এবং সাথে অনেক অনেক গোলাফ ফুলের (F) (F) (F) (F) (F) শুভেচ্ছা থাকল।
খু্বই ভাল লাগছে। বন্যাপার অসুস্থতার খবরটা না শুনলে তার জন্য এত ভালবাসা জমা আছে বুঝতাম না।
তার এ সংবাদ শুনার পর বিবর্তনের পথ ধরে বইটা আবার পড়া শুরু করেছি।
পথ চেয়ে বসে আছি কখন মানুষের বিবর্তনের বইটা হাতে আসবে।
খুব ব্যস্ততার কারনে মুক্তমনায় নিয়মিত নই। একটু সময় পেলেই আসি আমার প্রিয় মুক্তমনায়, শুধু চোখ বুলিয়ে যাই, কমেন্ট করা হয়ে উঠেনা। কিন্তু এই লেখাটা দেখার পর কমেন্ট না করে থাকতে পারলামনা। আমার প্রিয় বন্যাদির ক্যান্সার! দিদি কোন কথা নয়, তুমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ফিরে এসো আমাদের মাঝে, তোমার পুরনো দাপটে। বেস্ট অব উইশেস ফর ইউ…
জেনে অনেক ভালো লাগছে। দ্রুত আরোগ্যলাভ কামনা করছি।
প্রথমেই থমকে তাকিয়েছিলাম পোস্টটি প্রকাশ হবার তারিখের দিকে, খানিকটা অপরাধবোধই হয়েছিলো লেখাটা এতোদিন পর দৃষ্টিগোচর হবার জন্যে। তবে কোন কনসোলেশন বা সাপোর্ট থাকছে না আমার পক্ষ হতে, কেননা এইটুকু আস্থা রাখি আপনাদের উপর যে- আমার কিংবা যে কারো কনসোলেশনের চেয়ে আপনাদের আস্থা স্থাপিত হবে বেশী ইম্পেরিকাল এভিডেন্স এবং হার্ডওয়্যার্ড স্ট্যাটিস্টিক্সের দিকেই; কেননা কনসোলেশনও ছলনা করতে জানে, স্ট্যাটিস্টিক্সের সেই ক্ষমতা নেই! এবং এই হার্ডওয়্যার্ড স্ট্যাটিস্টিক্সের দিকে দৃষ্টিক্ষেপণ যদি করে থাকেন, তাহলে সম্ভবত ইতিমধ্যেই আপনি জেনে গিয়েছেন যে- থাইরয়েড ক্যান্সার ইজ এ পিস কেইক, তুড়ি মেরে এই কন্ডিশন নির্মুল করা সম্ভব, অবশ্যই আধুনিক চিকিতসা বিজ্ঞানের আশীর্বাদে। উলটো খানিকোটা বেশী পজিটিভিস্ট হয়ে ব্যাপারটাকে একটা সত্যিকার আশীর্বাদ হিসেবেই গন্য করা যায়, কেননা স্টিফেন জেই গুল্ডের মতো দুর্ভাগ্যবান না হয়ে থাকলে একজন ব্যক্তির এক জীবনে দু দুটো ভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশ কম। ফলে আমরা এইটাকে একটা সুসংবাদ হিসেবেই গন্য করতে পারি যে- এইটা ছিলো থাইরয়েড ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার কিংবা ওভারিয়ান ক্যান্সার না যেই রোগদুটো ডায়াগ্নোসড হওয়া একজন নারীর জন্য অনেকটাই মৃত্যুদন্ডেরই শামিল। এছাড়াও যদ্দুর জানি থাইরয়েড ক্যান্সারের রিকারেন্স রেইটও অনেক অনেক কম, যেখানে ব্রেস্ট ক্যান্সার কিনা রিকার করতে পারে এমনকি প্রথম বার আরোগ্য লাভের ২০ বছর পরও!
যদিও আমাদের উভয় পক্ষেরই এম্বারাসমেন্ট এড়ানোর লক্ষ্যে অন্য কোন সময় এই কথাটা এতোটা পাবলিকলি আমি বলতাম না, তারপরও বলছি বন্যা আহমেদের সবসময়ই রয়েছে আমার কাছে একটি স্পেশাল পজিশন, বস্তুত সকল প্রোসায়েন্স মানুষদেরই রয়েছে, কেননা আমিও ঠিক একই দলে পড়ি। এবং আমাকে কখনও উইল লিখতে হলে আমিও ঠিক এই একই কথাগুলো লিখবো, এবং এই কথাগুলো লিখতে কিছুটা শক্তিতো থাকা চাই-ই। জানলাম, সাথে আছি সবসময়ই, সব ঠিক হয়ে যাবে।।
বাংলাদেশ থেকে সিংগাপুরে আসি শিপইয়ারডে কাজ করার জন্য তারপরও সাথে নিয়ে আসি হেলাল হাফিজ এর
“যে জলে আগুন জ্বলে”আর বন্যাদির “বিবর্তনের পথ ধরে” ইচ্ছে ছিল পরের বার দেশে গেলে উনার পরবরতি বইটা নিয়ে আসব।
“বিবর্তনের পথ ধরে”এর পরের বইটা দিতেই হবে আর এর জন্য হলেও বন্যাদি সুস্থ হয়ে উঠুক তারাতারি এই কামনা করি।
লেখাটি পড়ে মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল। আমি মুক্তমনার একজন নগন্য পাঠকমাত্র, অনেক ভাল লাগে এ ব্লগের অভিজিৎ, বন্যা সহ অনেক লেখকের লেখা, জানার ও শেখার আছে যে অনেক কিছু! কিন্তু এ লেখাটি চোখে পড়তে এত দেরি হয়েছে দেখে নিজেকে অপরাধিই মনে হচ্ছে। প্রিয় অভিজিৎ তার এই লেখাটি খুব কমই শেয়ার করেছেন অন্যান্য জায়গায়। বুঝতে পারি কারণটা, তিনি কিংবা বন্যাদি কেউ চাননা তাদের ব্যক্তিগত শোকের কথা সাধারণ পাঠককে জানিয়ে বিব্রত করতে। কিন্তু সবার আছে যে অধিকার সহমর্মিতা জানানোর! বন্যাদি সুস্থ হয়ে উঠুক, এবং তার কর্মময় জীবন, লেখালেখি ও মুক্তচিন্তার সংগ্রাম আরও অনেক দূর চলবে- এই কামনাই করি। তার সুস্থ্য হয়ে বেঁচে থাকার আছে যে অনেক কারণ- অভয় বাজুক হ্রদয় মাঝে!
আরেকটি ছোট আপডেট দিচ্ছি বন্ধুদের । আমার এই পোস্টটির পরে অনেক পাঠকই দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে আমাদের ইমেইল করেছেন, অনেকেই ব্যক্তিগত ভাবে টেক্সট করেছেন, ফোনও করেছেন ব্যক্তিগতভাবে । সবার প্রশ্নের উত্তর দেয়া কিংবা কলব্যাক করে আপডেট জানানো সম্ভব হয়নি। আশা করছি – এই আপডেটটির পর তাদের দুঃশ্চিন্তা কমবে সামান্য হলেও।
হ্যা, বন্যার সার্জারি হয়ে গেছে (মেডিকেলের ভাষায় একে বলে টোটাল থাইরোডিকটমি)। হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। সামান্য কিছু শারিরীক দুর্বলতা এবং সার্জারি সংক্রান্ত ব্যাথা বেদনা ছাড়া মোটামুটি সুস্থ আছে। এখন কথাবার্তা, হাটা চলা করতে পারছে। খাওয়া দাওয়াও করতে পারছে স্বাভাবিকভাবে। সময়ের সাথে সাথে শারীরিক শক্তি ফিরে পাবে এবং ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে আশা করছি।
এই সার্জারি প্যাপিলারি কারসিনোমা ক্যান্সার থেকে মুক্তির প্রাথমিক ধাপ। এর মাধ্যমে ক্যান্সার আক্রান্ত থায়রয়েড সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে এটাই চিকিৎসার শেষ নয়। এর পরে রেডিও এক্টিভ আয়োডিন ট্রিটমেন্ট করতে হবে সপ্তাহকানেক পর। এর মাধ্যমে শরীরে আর কোন ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ থেকে থাকলে তা নির্মূল করে ফেলা হবে। পাশাপাশি থাইরয়েড হরমোন পিল সংক্রান্ত চিকিৎসা চলবে দীর্ঘদিন ধরে।
যদি কোন কারণে ক্যান্সার আবার ফিরে না আসে (ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকলেও খুব কম বলেই আমরা মনে করছি) তবে রোগ থেকে সম্পূর্ণ আরোগ্যলাভ করতে খুব বেশি সময় লাগবে না।
যারা এ নিয়ে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ ছিলেন, কিংবা সহমর্মিতা দেখিয়েছেন তাদের সবাইকে আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
@অভিজিৎ,
সূখী হলাম জেনে। শুভেচ্ছা (F)
সংবাদটা শুনে খুব খুশি হয়েছি, অভিজিৎ-দা! আশা করি অচিরেই আপনাকে এবং অদূর ভবিষ্যতে বন্যাদিকেও মুক্তমনায় নিয়মিত দেখতে পাব।
@অভিজিৎ,
আপডেটটা গতকালই আশা করছিলাম। আজ পেয়ে ভাল লাগল।
@অভিজিৎ,
শুভ কামনা রইল ।
(F)
@অভিজিৎ,
শুনে স্বস্থি লাগছে। এই খুশির দিনে বন্যা’পুর জন্যে একটি লেখা… পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া। লেখাটি অবশ্য সচলায়তনে লেখা 🙁 ।
@এডমিন,
লেখাটি নীড় পাতায় দেখতে পাচ্ছিনা । সরিয়ে ফেলা হয়েছে কি? তাহলে ত অনেক নতুন পাঠকই পড়তে পারবেনা।
@তামান্না ঝুমু,
সরি তামান্না, পাঠকেরা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাগ্রন্থ হয়ে পড়ায় লেখাটা নীড় পাতা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল, মন্তব্য করার অপশনও বন্ধ করে রেখেছিলাম কয়েকদিন। এখন আবার খুলে দেয়া হয়েছে। সার্জারির পর বন্যা ভাল আছে। আমার আপডেটেড নোট দেখেছেন বোধ হয়।
ভাল থাকুন।
@অভিজিৎ,
কী- যে খুশি লাগছে খবরটা জেনে!মনে হচ্ছে অনেকদিন পরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম।
ব্লগটাই দেখি বিষন্ন হয়ে গেছে এই পোস্টের পর। আমি পোস্টটি প্রথম পাতা থেকে আমার ব্যক্তিগত ব্লগে সরিয়ে নিচ্ছি। বন্যারও সেটাই ইচ্ছে।
জীবন নিয়ে এত হতাশ হবার কিছু নেই। সব ঠিক হয়ে যাবে। প্যাপিলারি থাইরয়েড ক্যান্সার সবচেয়ে কিউরেবল ক্যান্সার। এর সার্ভাইভিলিটি প্রায় শতভাগ। যিনি বন্যার সার্জারি করবেন, তিনি আমেরিকার খুব বড় সার্জন। আশা করছি সব ঠিক হয়ে যাবে।
সবাইকে বিনীত অনুরোধ করিছি এই পোস্টটি নিয়ে পড়ে না থেকে অন্য লেখায় কন্সেন্ট্রেট করুন।
যারা শুভকামনা এবং সুপরামর্শ দিয়েছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমি বিশ্বাসী , আপনাদের সাথে আমার মতের অমিল আছে,কিন্তু আমরা হয়ত পরস্পর শত্রু না… এটা বলেই শুরু করছি… প্রার্থনা করি উনি ভাল হয়ে যাবেন।দয়া করে এটাকে আমার ব্যক্তিগত শুভকামনা হিসেবে নিলে খুশি হব।
বন্যাদির দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
…… সুস্থ তাকে হতেই হবে
আমার মৃত্যু হলে পুরো দেহটা মানব কল্যানে কাজে লাগানোর জন্য আমি ১২ বছর আগে
উইল করে রেখে দিয়েছি।
মানুষের মানবতার জয় হউক।
….সব ঠিক হয়ে যাবে…এই কামনা রইল….
ধাক্কা খেয়েছি!
খবরটা ভীষণই অপ্রত্যাশিত।
ভালো থাকবেন। মনে সাহস অনেক আছে,বুঝতে পারি,কিন্তু সাহস ছাড়াও মনে আনন্দ রাখার জন্য চেষ্টা করবেন। কঠিন,কিন্তু করবেন।
ক্যান্সার সম্পর্কে খুব তথ্যবহুল একটা পোস্ট লিখুন। মৃত্যুর ভয় কী ভীষণ ভয়ঙ্কর তাই ভাবছি!
কিন্তু থাইরয়েডের ক্যান্সারে এত আর্লি স্টেজে,এতো টা ভয় ধরানো নয়। আমার দুই খালার ক্যান্সার, আমার খালাতো দুই বোনের ক্যান্সার ধরা পড়ে চার বছর পর সম্পূর্ণ সুস্থ এখন।
ক্যান্সার ডাজ হ্যাভ এন অ্যান্সার,এতো ঘাবড়ে যাবেন না। আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী-আমরা সবাই তো তাইনা? ঘাবড়ে গেলে চলে?
বন্যার জন্য বন্যার তোড়ে শুভেচ্ছা আসছে মন্তব্যে। আমিও যুক্ত হলাম। সাহস রাখুন।
@সেঁজুতি,
আচ্ছা, একটি প্রশ্ন,
“সেঁজুতি ফেরানো গেল না “ এটা কি সে-ই সেঁজুতি ???
“বিবর্তনের পথ ধরে” বইটার মাধ্যমে বন্যা আপু আমার বিবর্তন বিষয়ক শিক্ষার গুরু হয়ে গেছিলেন। এই বইমেলায় আপনাদের দুজনের সাথে দেখা হবার বেশ একটা ইচ্ছে ছিল যদি দেশে আসতেন। এই বইমেলা না হোক কোন এক বইমেলায় আমার গুরুর সাথে দেখা হবে এই অপেক্ষায় আছি। স্নিগ্ধা আপুর সাথে একমত। ক্যান্সারের বাপেরও ক্ষমতা নাই বন্যাপুর মন ভেঙে দেয়। অভিদা, শক্ত হোন। নিয়মিত আপডেট জানার অপেক্ষায় আছি।
(বিঃ দ্রঃ এই পোস্ট পড়ে নিশ্চিত হলাম পৃথিবীতে যে কয়জন মানুষের কিছু বৈশিষ্ট্য নিজের মাঝে আনার প্রাণপন চেষ্টা করব তার মাঝে একজন বন্যা আপু )
মন খারাপ করা খবর!
তবে চারদিকে অনেক মানুষ ভাল হয়ে গেছে।
বন্যা আপার সুস্থতাই এখন চাওয়া!
কিচ্ছু হবে না, সব ঠিক হয়ে যাবে। মানুষের ভালোবাসা, চাওয়া-পাওয়ার একটা বিরাট প্রভাব আছে- সেটারই প্রতিফলন এখানে দেখা যাবে। আমি নিশ্চিত।
বন্যাদির সাথে দেখা হবে আমার। হতেই হবে। হয়তো আরো ৫০ বছর পর। সো, চিন্তা কইরেন না।
বছর সাতেক আগে আমাদের এক বন্ধুর ঠিক এই পর্যায়ে থাইরয়েড ক্যান্সার ধরা পড়ার পর এক ডাক্তার বলেছিলেন, তুমি অন্য রোগে অদূর ভবিষ্যতে মারা যাবে কিনা বলতে পারবো না,কিন্তু থাইরয়েড ক্যান্সারে যে মরছো না,সে ব্যাপারে আমি এক শতভাগ নিশ্চিত। আমাদের সে বন্ধুর স্বামী আর অতি কাছের দু’একজন ছাড়া অন্য কেউ জানেন-ই না যে সাত বছর আগে তার ক্যান্সার ধরা পড়েছিলো। বন্যার প্রতিও রইলো শুভ কামনা।
বন্যাপুর কিচ্ছু হবে না।যে মানুষ এতকিছু ঠেকিয়ে দিয়েছে ক্যান্সার তার কাছে কিচ্ছু না।
উনি নিশ্চিত সুস্থ হয়ে যাবেন।দেশে আমরা অপেক্ষা করছি কখন আপনারা আসবেন।
শুভ কামনা।
অভি – বহুদিন ব্লগ জগতের বাইরে তুমি তো জানোই, আজকে ফেসবুকে একজন এই লেখাটা শেয়ার করাতে জানলাম এই পোস্টের কথা। উফফফফ, এটা পড়ে মন খারাপ হবে কী, তোমার কপালে কী আছে এটা ভেবেই আনন্দে আমার ………… 😀
এতো কিছু পারে যে তুমি মনে করো ক্যান্সারের কান ধরে কষে একটা চড় লাগাতে সে পারবে না! সব ঠিক হয়ে যাবে। রাফিদা এবং আমি আবার তোমাকে নিয়ে খ্যাক খ্যাক করে হাসবো। সব কিছু ঠিক থাকবে। থাকবেই।
জোকস এ্যাপার্ট – কেন এই পোস্ট সেটা বুঝতেসি ……
গতকাল এক বন্ধুর বাসায় দাওয়াত খেয়ে এসে রাত ১২ টার সময় নেটে বসে প্রথমে অভিজিৎ ও অনন্ত কে মেইল করে জানাই যে তাদের নিয়ে বাংলা বিডি নিউজে ”বিজ্ঞান শিক্ষায় পিছিয়ে থাকার কারন” এ কিছু উদাহরন ছিল বিধায় ঐটার লিংক দিয়ে মেইল করি।করার পরই “মুক্তমনা” ওপেন করি,করেই দেখি অভির লেখা।প্রথমেই মনে করেছিলাম যাক তাহলে সে সুস্থ্য আছে,কারন গত কয়দিন আগে তাকে আমি একটি মেইল পাঠিয়েছিলাম,কিন্তু কোন উত্তর নেই এবং এ রকম দেরী আগে কখনই দেখি নাই।কিন্তু বিধি বাম,লেখা পড়ে এ কি নিউজ পেলাম!!! মাথায় হাত দিয়ে টাব্বস খেয়ে কয়েক মিনিট বসেছিলাম। পরে একটি অনেক বড় মন্ত্যব্য করে যখন পাঠাব তখনই আমার এক আঙলের চাপ কিবোর্ডে পড়লে পুরা লেখাই ডিলিট হয়ে যায়।মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়।খারাপ মন নিয়ে ঘুমাতে যাই।
মাস খানেক আগে অজয় স্যারের সাথে ফোনে কথা বলার সময় প্রথম জানতে পারি যে বন্যার অসুস্থ্যতার কথা। জানার সাথে সাথেই বন্যাকে ফোন করি,বললাম যে আপনার নাকি অসুখ,প্রশ্ন করল কে বলেছে,বললাম স্যার বলেছে,কিছু চিন্তা না করেই বলল,ও,আচ্ছা বলেই আমাকে বলল মামুন ভাই,আপনি কি আমাকে দশ মিনিট পর ফোন করতে পারবেন,কারন আমার বাসায় কিছু মেহমান আছে।আমি বললাম কোন অসুবিধা নাই,আমি আপনাকে আধা ঘন্টা পর ফোন করব।যথারীতি ফোন করি,ফোন ধরে অভি,তার সাথে ২০-২৫ মিনিট কথা বলি,বন্যার অসুখের কথা জিজ্ঞাসা করলে বলে ও কিছু না,ঠিক হয়ে যাবে।যা অভির চিরাচরিত স্বভাব।প্রশ্ন করলাম,বন্যা কই,তার সাথে কি একটু কথা বলতে পারি? উত্তরে বলে,দুঃখিত সে মেহমানদের সাথে একটু বাইরে গেছে।
এরপরে আর বন্যার সাথে আমার কথা হয় নি। সারাক্ষন বন্যার অসুস্থ্যতা নিয়ে ভাবি,কারন ঘাড়ের ব্যাথা,স্পাইনের ব্যাথা সহ আর নানাহ অসুখ নিয়ে আমিও যে দারুন ভুক্তভোগী।
গত ৫-৬ বছর বন্যার সাথে ফোনে অনেক অনেক কথা হয়েছে।শেষ আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল সে সুইডেনে বেড়াতে আসবে।সুইডেন বিশেষ করে স্ক্যান্ডিনিভিয়ান দেশ গুলো ভ্রমন করার স্বাদ তার অনেকদিনের।আশা করি আমাদের প্রিয় বন্যা অতি শীঘ্রই সুইডেনে বেড়াতে আসবে।
প্রাকৃতিক দূর্যোগ বন্যা হলে যেমন আমাদের সব কিছু ভাসাইয়া নিয়ে যায় তেমনি আমাদের প্রিয় বন্যা আহমেদ তার বজ্র কঠিন, ইস্পাত লৌহ মনোবল দিয়ে তুচ্ছ ক্যান্সারের গালে একটা চটোপাঘাত করে (একটা হেস্কি টান দিয়ে মহাসাগরের স্রোতে নিক্ষেপ করে) আবার আমাদের মাঝে সদা প্রস্ফটিত গোলাফের মতো হাজির হবে এ আশা ও প্রত্যাশা দুটোই আমরা করি।
জয় হউক জীবনের ক্ষয় ও ধবংশ হউক ক্যান্সারের জীবানু।
আমার অত্যন্ত প্রিয় মানুষ বন্যা আহমেদের সুস্থতা কামনা করি; সুস্থ হয়ে আবার লিখতে শুরু করুন এই কামনা রইলো, শুভেচ্ছা জানাবেন।
[রোগ নিয়ে সহানুভূতি দেখানো, মেকি কর্পোরেট চোখের পানি ফেলা, কার্ড পাঠিয়ে ‘গেট ওয়েল সুন’ জাতীয় ম্যাসেজ বন্যার ধাতে সয় না। বন্যা এমনই।]
ধন্যবাদ বন্যাদি। বন্যা তো এমনই শক্তিশালী হয়, দুঃখ-ব্যাথা, রোগ-শোক সব ভাসিয়ে নিয়ে যায় ওর আপন মহিমায়। থোরাই কেয়ার!
আপনাদের কাউকে আমি চিনি না, জানি না, মুক্তমনায় আমি একেবারে নতুন, তাছাড়া সময় অভাবে সবার লেখা পড়াও হয় না। নাস্তিক বলে বন্ধুহীন আমি, তাই কেন জানি আপনাদের খুব কাছের লোক বলে নিজেকে ধন্য মনে করি। নিশ্চয়ই, দিদির মনোবলই তাকে সারিয়ে তুলবে। এর চেয়ে বড় ওষুধ আর যে নাই। দিদিসহ আপনাদের পরিবারের সকলের শুভ কামানায়, কফিল কাঙ্গাল।
খবরটা জানার পর থেকেই কেমন আস্থির লাগছে। কাল সারা রাত একটু পর পর ঘুম ভেঙে গিয়েছে। কেন এমন হয়, আমাদের ছোট্ট জীবন কেন এত দুঃখ-দুর্দশায় ভরা? আজ ছুটির দিনেও ভোরে উঠে সবার মন্তব্যগুলো পড়লাম। আমাদের সবার এত দূর থেকে এত খারাপ লাগছে, আর অভিদা ত বন্যাদির জীববসঙ্গী। তার কেমন লাগছে, তৃষার কেমন লাগছে তার মায়ের জন্যে;সেটা চিন্তাও করতে পারছিনা। জীবন যতদিন থাকে ততদিন আমাদের আশা থাকে। আমরা আশা নিয়ে বেঁচে থাকি। অভিদাকে কখনো কোন ব্যাপারে নিরাশ হতে দেখিনি। তাই উনাকে বলছি, আশা রাখুন। জানি এটা আপনার জীবনের কঠিনতম সময়। তবুও বলছি নিরাশ হবেন না। আমরা ত আপানার কাছেই শিখেছি, আশা নিয়ে লড়তে, আশা নিয়ে বাঁচতে।
অভিজিৎদা , বন্যা আপু আপনাদের অনেক ভালোবাসি । আমার চিন্তা চেতনায় আলোর স্পর্শ যাদের মাধ্যমে , তাঁদের একজন বন্যা আপু । তাঁকে সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে আসতেই হবে, এই আমার দাবি 🙂
মন খারাপ করা খবর। কি লিখে মনের ভাবনা প্রকাশ করবো, বুঝতে পারছি না!…. দিদি, আপনি ভালো হয়ে উঠবেন নিশ্চিৎ! চিন্তা করবেন না মোটেও।
নাম উনার বণ্যা যাকে দমিয়ে রাখা যাই না, যাবেও না । আমাদের প্রতি,জ্ঞ্যান এর প্রতি যার অগাধ ভালবাসা, তাঁর সুস্হ হয়ে আসতেই হবে। সেই দিনের ও শুভক্ষনের প্রতীক্ষায় আমরা মুক্তমনা পরিবার।
আরো গোটাবিশেক বিজ্ঞানের বই না লিখে বন্যাদির নড়াচড়ার সুযোগ নেই! সার্জারির ক’টা দিন বিরতি, তারপর বন্যাদির লেখা শুরু।
বন্যাদির জন্য শুভকামনা।
নিজেকে যতটা আবেগমুক্ত শক্ত মনের মানুষ বলে ভেবেছিলাম – এখন দেখছি আমি তা নই। বন্যাদি’র অসুখের খবর পেয়ে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো। আমি জানি বন্যাদি সুস্থ হয়ে উঠবেন যথাশীঘ্র।
বন্যাপার জন্যে শুভকামনা। আশা করি উনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
সত্যি কথা বলতে , অনেক অনেকদিন ব্লগে বন্যাকে অনুপস্থিত দেখে মনে একটা ক্ষীন প্রশ্ন জেগেছিল , বন্যা আবার আস্তিক হয়ে গেল কি না?
হা হতোশিঃ। তার বদলে এই খবর দিলেন। কিন্ত বন্যার কপাল দেখে আমার তো আবার নাস্তিক হতে মন চাচ্ছে। এত early stage এ অনেক কট্টর আস্তিকেরো ক্যান্সার ধরা পড়ে না। Cheer up man , অন্ধকার এখনো বহু দুরে। বর্তমানের বিজ্ঞানের উপরে ভরসা রেখে বলা যায় , অপারেশনের পরে বন্যার শরীরে ক্যান্সারের ছিটেফোটাও থাকবে না। ও আরো বহু বহু দিন বাচবে। আর সার্জন যদি আনাড়ি না হয় , তাহলে ভোকাল কর্ড ও intact থাকবে।
আপনারা ভাল থাকুন , এই কামনা করি।
অনেক কিছু লিখে টিখেও মুছে দিলাম। খবরটা শুনে ভয়াবহ রকমের খারাপ লাগলো। তবে আশার কথা এইটাই যে এইটা এখন একটা মামুলি রোগ আর আমেরিকার মতো দেশে এইসব ট্রিটমেন্ট নিশ্চয়ই এখন দুধভাত।
আমিও নিশ্চিত বন্যা আপু একদম ১০০% সুস্থ হয়ে যাবেন। আমার মনে কোন সন্দেহই নাই 🙂
অভিজিৎ-দা,
আপনার ‘মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে’ ও বন্যাদির ‘বিবর্তনের হাত ধরে’ বই দুটি একসাথে কিনেছিলাম। আপনার বইটিই প্রথম পড়ি । বন্যাদির বইটি পড়তে যেয়ে শুরুতে কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলাম; কারণ আপনার বইয়ের মুগ্ধতায় তখনও আবিষ্ট ছিলাম। কিন্তু বন্যাদির সাবলীল লেখা সত্যি অন্য এক জগতে নিয়ে গেল। অসাধারণ সুখপাঠ্য ও তথ্যভাণ্ডারে সমৃদ্ধ। বিবর্তনকে চিনলাম নতুন করে। বাংলা ভাষায় এই বিষয়ে এত ভাল বই আর লেখা হয়নি বলে আমার ধারনা। সেই বন্যাদির এমন খবরে আমি প্রচন্ড হতাশ। তবে বন্যাদির স্পিরিট আমাকে মুগ্ধ করেছে। বন্যাদি বাংলাদেশের এক আলোকোজ্জ্বল নারী। তিনি সুস্থ হয়ে আপনার বিজ্ঞান আন্দোলনে আবার সরব সহযাত্রী হবেন, এই প্রত্যাশা থাকল।
বণ্যা শীঘ্র সুস্হ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক – এই কামনাই করি সর্বদা ।
মনটাই খারাপ হয়ে গেল। ভালো মানুষগুলোর সাথেই কেন সবসময় এমনটা হয়?
বন্যাপুর জন্য শুভকামনা। আমি নিশ্চিত তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে আবার আসবেন মুক্তমনায়। আবার উপহার দেবেন ‘বিবর্তনের পথ ধরে’র মতো অসাধারণ কোনো বই। (F)
বন্যাপা আমার জীবনের একটা অনুপ্রেরণার নাম। আমি নিশ্চিত উনি একেবারে সুস্থ হয়ে উঠবেন।
অভিদা, তৃষা অনেক দূর থেকে হলেও পাশেই আছি। একটু চিন্তা হচ্ছে, একটু মন খারাপ হচ্ছে, তবে সব ঠিক হয়ে যাবে। ঢাকায় আবার বুর্জোয়া, পুঁজিবাদী অভিদার উদ্দেশ্য বন্যাপার গালাগালি শোনার অপেক্ষায় আছি।
রামগড়ুড়ের ছানাের ফেসবুকে শেয়ার দেখেই অনেকদিন পর ব্লগে আসলাম। ব্লগে এখন একদম আসা হয় না, আসলেও শুধু পড়েই চলে যাই। কিছু লিখতে বা মন্তব্য করা ঠিক হয়ে ওঠে না। কেন যেন মনে হয় হঠাৎ করে উড়ে এসে মন্তব্য করাটা অনভিপ্রেত হয়ে যাবে।
গুছায়ে এখনো কিছুই লিখতে পারতেসি না। কখনোই পারি নাই…। তবুও আপুর কথা পড়ে কেন যেন কিছু একটা লিখতে ইচ্ছা করল। আপুর সাথে দেখা হয় নাই, ফোনে কথাও হয় নাই। ব্লগ আর মেইলেই যা কথা বার্তা। কিন্তু আপুকে অনেক কাছের মনে হয় কেন জানি! আসলে একজন মানুষ বিরক্ত না হয়ে আমার আজেবাজে লেখাকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন, আমার আজেবাজে প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন দেখতেই মনটা ভালো হয়ে ওঠে। কাছের মানুষকে কথা দিয়ে কথা না রাখতে পারলে যেমন ঐ মানুষটার সামনে আসতে লজ্জা লাগে, তেমনি আপুর সামনে পরতেও আমার লজ্জা করত (আমার লেখা আপুর চোখে পড়া আর আমি নিজে আপুর সামনে গিয়ে পরা আমার জন্য একই কথা)।
আজকে আবার এত দিন পরে আজকে আপুকে নিয়ে লেখা দেখে কিছু লিখতে ইচ্ছা হল।
তুমি ভালো হয়ে যাও আপু। তোমার পরের বইয়ের অপেক্ষায় যেন আর বেশি দিন বসে থাকতে না হয়।
আপনার লেখা তাও আবার ব্লগাড্ডা দেখে ঢুকলাম, আর কি খবরটাই না দিলেন। আপনার লেখাটা পড়ার আগেই মনে হচ্ছিল বন্যা’পার লেখা তো দেখি না, কমেন্টও দেখি না অনেক দিন ধরে। নিজের উপর রাগ হচ্ছে কেন আরো অনেক আগেই উনার কথা জিজ্ঞেস করিনি কখনো। এখন লেখাটা পড়ে চোখ ঝাপসা হয়ে এলো। খুব কম সময়ের মধ্যে যে কয়েকজন মানুষ বেশ আপন হয়ে উঠেছে তার মধ্যে বন্যা’পা একজন। এইটা অবশ্য আমার কারণে নয়, উনার নিজের গুণেই। মনে আছে – আমার বিবর্তনের একটি প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্যে উনি আমাকে ফোনই করলেন। তারপর ফোনে আধাঘন্টা ধরে সুন্দর ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিলেন। আমি নিশ্চিত বিগ সি এতো সহজে উনাকে পরাজিত করতে পারবেন না। উনি দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুক এই কামনা করি। উনাকে আমার শুভেচ্ছাটুকু পৌছে দিবেন। (F)
ক্যান্সার নিয়ে আতংকের তেমন মোটেই কিছু নেই যদি তা প্রাথমিক স্তরে থাকে। এক সময় বলা হতো- যার হয় যক্ষ্মা তার নাই রক্ষা। এখন যক্ষ্মা হলো একটা মামুলি রোগ। ক্যন্সারও যদি প্রাথমিক স্তরে ধরা পড়ে যক্ষ্মার মতই একটা মামুলি রোগ এখন। আপনার নিবন্ধ পড়ে বোঝা গেল আপনার স্ত্রীর ক্যন্সার নিতান্তই প্রাথমিক পর্যায়ে। একটা ভাল সার্জারি করে ফেললে ওটা সম্পূর্নই ভাল হয়ে যাবে। এমন কি কোন কেমোথেরাপী লাগবে বলেও আমার মনে হয় না। ক্যন্সারদূষ্ট কোষ এখনও চারপাশে ছড়ায় নি। তাই যে ছোট অংশে ক্যন্সার কোষ গুলো আবদ্ধ আছে সার্জারি করে সেগুলো সব ফেলে দিলেই ওটা নিয়ে আর আতংকের কিছু নেই। ক্যন্সার মারাত্মক ও প্রাণঘাতী হয় যখন তা তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরে চলে যায় ও চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। তাই আমি প্রায় নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আমেরিকার মত একটা দেশে সার্জারিটা ভাল হবে ও অন্য কোন সমস্যা না থাকলে বন্যা সম্পূর্ন সুস্থ হয়ে যাবে।
বন্যাতো বেশ ইন্সপায়ারি ব্যাক্তত্ব। স্যালুট তাকে।
কিছুক্ষন আগে ফেসবুকে ঢুকে প্রথম পোষ্টই দেখি শাফায়াতের। দেখেই একটা ধাক্কামতন খেলাম। অভিজিত দা, বন্যা আপু, ফরিদ ভাই ছাড়াও অন্যান্য সবার সাথে আসলে যেভাবে মিশে গেছি এটা হয়ত আপুর এই খারাপ সংবাদটা না শুনলে জানতেই পারতাম না। আমি জানি এমন শক্ত মনের মানুষের এত ছোটখাটো রোগে কিছুই হবে না। কিন্তু ভালোলাগার মানুষের গায়ে আচড় লাগলেও আঘাতটা আমাদের বুকেই লাগে। কিছুই বলতে পারছি না। বেদনার্ত অনুভুতিতে জড়িয়ে যাচ্ছি।
অভি দা, আপডেটটা একটু জানাবেন প্লিজ। বুঝতে পারছি সময় করতে হয়ত কষ্ট হয়ে যাবে, তারপরেও জানবেন আমাদের সবার মনই উদ্বিগ্ন হয়ে আছে এখানে।
–
বছর সাতেক আগে আমরাও একটা উইলে ঐ কথায়ই লিখেছি।
এটা নাস্তিকতার জন্য নয়–এটা করেছি ধর্ম থেকে সম্পূর্ণ সম্পর্কচ্ছেদ করার জন্য। মৃত্যুতেও যেন ধর্ম আমাদের ছুঁতে না পায় তার জন্য।
আমাদের এই উইল আস্ট্রেলিয়ান সরকারের পাব্লিক ট্রাস্টি ইকজিকিউটার–তাই আমাদের কোন সন্দেহই নাই যা আমাদের মৃতদেহের ঐভাবেই অধর্মীয় বা নিরপেক্ষ কোন ভুমিতে ঢুকিয়ে দিবে। এখন চিন্তা করছি হয়ত মরদেহ গবেষণার জন্য দিয়ে দিতে বলব উইলে। এই মর্মে সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকাল ফ্যাকাল্টি থেকে কিছু কাগজপত্রও এনেছি।
এটাও নাস্তিকতার জন্য নয়–যদি আমার মরদেহ মানবতার কোন উপকারে আসে তার জন্য।
একজন মানুষকে অনুপ্রাণীত করতে পারা যেকোন মানুষের জন্যই তার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন, কিন্তু ভয়ানক মেধাবী হওয়া সত্তেও কয়জনই বা এই কাজ করতে পারে? বন্যাপু “বিবর্তনের পথ ধরে” বইটির মাধ্যমে আমার জীবনদর্শন তথা আমার গোটা জীবনটাই বদলে দিয়েছেন। ভাল হয়ে উঠুন আপু, ব্লগে এসে আপনি নিজেই আমাদের জানিয়ে যান যে আপনি ভাল আছেন- একান্ত চিত্তে আমি এই কামনা করি।
“আমি নিতে দেব না , সময়কে এক মুঠো ভরা জোছনা
চাঁদটা যতোই দূরের হোক না , ছুতে আমি চাইনা ।
……………………………………………….
আমি দেবনা পাড়ি, তোমায় নিয়ে নিষ্প্রাণ নদীতে
যে পথ ভুলে পৌঁছে গেছে শুন্য মরুর বুকে … ।।
অভিজিৎদা আশা করছি বন্যাদি সুস্থ্য হবার পর আগের মতোই এই নিয়ে কঠিন একটা রসিকতা করবেন আর খুব শীঘ্রই তার লেখা আমরা দেখতে পাব ।
আভিজিৎ;
তোমাকে একটু আশার কথা শোনাব।
আমার স্ত্রীর ঐ রকমই হয়েছিল। তার দুই থায়রয়েড গ্লান্ডই কেটে ফেলতে হয়েছে। সার্জন বলেছিল এর ফলে তার ভোকাল কর্ড নষ্ট হতে পারে—যার ফলে সে হয়ত ঠিকমত কথা বলতে পারবে না অথবা গলার স্বর পরিবর্তন হবে। তবে এটা একটা সম্ভাবনা–নাও হতে পারে। সবকিছুই নির্ভর করছে সার্জন কত পারদর্শি।
আমার স্ত্রীর ডান দিকের থায়রয়েড কাটা হয় প্রায় ১৮ বছর আগে। তার ভোকাল কর্ড ঠিকই থাকল।
এর পর এই বৎসরই জুন মাসে তার বাম দিকের থায়রয়েড কেটে ফেলা হয়। এখন তার থায়রয়েড গ্লান্ড বলতে কিছু নেই। ভয় ছিল সে তার ভোকাল কর্ড হারাবে। কিন্তু সার্জনের অপরিসীম পারদর্শিতার জন্য তার ভোকাল কর্ড ঠিক আছে–সে স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে পারে।
আর একটা ব্যাপার–দুই থায়রয়েড বাদ দিলে, সাধারণতঃ একটা ঔষধ সারাজীবন খেতে হতে পারে, গলার শব্দ ঠিক রাখার জন্য। কিন্তু আমার স্ত্রীর তাও করতে হচ্ছে না।
মোদ্দা কথা–গত বিশ বছরে থায়রয়েডের অপারেশনের যুগান্তকারী উন্নতি হয়েছে। সার্জন বলেছিলেন–থায়রয়েডের ক্যান্সার হচ্ছে সবচাইতে সহজ ট্রিট্মমেন্ট।
হতাশ হবে না। আমি জোর দিয়ে, আমার স্ত্রীর অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি–সবকিছু ঠিক থাকবে।
এ ছাড়াও গত এপ্রিল মাসে আমার ছোট বোনের প্যনাক্রিয়াটিক ক্যান্সার ধরা পড়েছে। এই ক্যান্সার সবচাইতে জটিল এবং ট্রিটমেন্ট খুব কষ্টসাধ্য এবং ব্যায়বহুল। কিন্তু আমারা হাল ছেড়ে দিচ্ছি না। অপারেশনের পর এখন তার কেমো চলছে। এখনও সে জীবিত আছে। আশা করছি সে আরও উন্নতির দিকে যাবে।
হাঁ, তোমার সাথে একমত–জীবন বড়ই বেদনাদায়ক–কোন কিছুরই স্থিরতা নাই।
বণ্যা শীঘ্র সুস্থ হয়ে উঠুক–এই আমাদের কাম্য। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই সমস্যার মোকাবেলা করেছি, করছি এবং আমি নিশ্চিত তোমরাও তা পারবে।
আমিও বিশ্বাস করি, আজকের বিজ্ঞান তাঁকে সুস্হ করার সামর্থ্য রাখে। তবে আবুল কাশেম স্যারের স্ত্রীর ট্রিটমেন্টের মত ভাল বিশেষজ্ঞ পেলে খুব ভাল হয়।
অভিজিৎদা,
আপনি ভাববেন না। আমরা আছি আপনার পাশে। সব মানুষের জীবনই মূল্যবান। কিন্তু আপনাদেরটা (মুক্ত-মনাদের) একটু বেশীই মূল্যবান। তাই ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তিত আছি। আপডেট জানাবেন।
@আবুল কাশেম,
ভোকাল কর্ড নিয়ে চিন্তার আদৌ কারণ আছে বলে মনে হয় না।
আমার মেয়ের বেলায় সামনে গলায় ছিদ্র করে ইসোফেগাস, ভোকাল কর্ড সব এপাশে-ওপাশে ঠেলে রেখে ঘাড়ের পেছনে যেয়ে অস্ত্রোপচার করা হল। পেছন থেকে করেনি নার্ভের কারণে।
তার গলার স্বর ১০০% ইন্ট্যাক্ট।
বেঁচে থাকার অবিরাম চিৎকার, কখনো কখনো চিকিৎসার সহায়ক। বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রামে সাহসী মানুষ বন্যাকেও বাঁচতে হবে। চিকিৎসার পাশাপাশি তার কন্ঠ থেকে উদ্গত হোক, আমি বাঁচবো, বেঁচে থাকবো, ভাল থাকবো।
বেঁচে থাকার অন্য কারণগুলোর মধ্যে, যারা শুনতে চায়-
শুধু অভিজিৎকে নয়, সেই সব মানুষ, যাদের সবকিছু জানবার উপায় নেই, ক্ষমতা নেই, তাদের জন্যও আপনাকে বাঁচতে হবে। অনেক অনেকদিন।
আমি অপেক্ষায় আছি সেদিনের, যেদিন বন্যাপা অপারেশনের পর সুস্থ হয়ে মুক্তমনায় নিজে লিখে আমাদের জানাবে- সব ঠিক হয়ে গেছে।
আমার মতে যার রোগ হয় তার চেয়ে বেশী মর্মাহত থাকে রোগীর কাছের মানুষ। তাই ভালবাসা ও শুভ কামনাটা তৃষা এবং অভিজিতদার জন্যই বেশী দিলাম।
কষ্ট চাপিয়ে রাখার চেয়ে শেয়ার করলে কষ্টটা কম ফিল হয়। তাই আশা করি আপনাদের অকুপাই ওয়ালস্ট্রিট’ মুভমেন্টে অংশ নেয়ার দিনটি এখন আরো ভাল লাগবে।
আরো আশা করি বন্যাপার মানুষের বিবর্তনের বইটাতে ক্যান্সারের বিবর্তনেরও কিছু তথ্য পাব।
আমরা কিছুদিন আগে নারী সমাচার বা অথঃ নারি নিয়ে খুব তর্কে মেতেছিলাম,নারী কেন ঘরের বাইরে বেরুতে পারে না তা নিয়ে। অভিজিৎ এর লেখাটি পড়ে এটাই মনে হোল প্রয়োজনে নারী পুরুষের চাইতে অনেক অনেক শক্তিশালী হতে পারে। আমার কাছে অভিজিৎ এমনিতেই বেশ কৌতুহোলিদ্দিপক একজন মানুষ , ফলিত বিজ্ঞানের মানুষ হয়ে মৌলিক বিজ্ঞান নিয়ে কিভাবে জটিল লেখাগুলো লিখেন জানি না, বন্যা কি চিকিৎসক তাও জানি না। তবে এটা জানি অভিজিৎ এর বাবা অজয় রায় একজন বিজ্ঞানি,শিক্ষক এবং মৌলবাদী বিরোধি বিপ্লবী মানুষ। নাস্তিকতার একটিই পাওনা , মৃত্যু ভয় কে জয় করা। আমরা মৃত্যু ভয় এ কুঁকড়ে থাকি কারন মৃত্যুর পর অনাদিকাল অনিশ্চিত জীবন এর ভয়, নাস্তিক এটা থেকে মুক্ত। তাই একজন নাস্তিক অনায়াসে দান করেন তার দেহ যা কি না মৃত্যুর পর মানুষের উপকারে আসবে। আস্তিক এটা কোনদিন ই পারবে না। তবে আমরা মানুষ। আমাদের মন সংবেদনশীল, সে যে কারনেই হোক। আমরা ভালবাসি আজীবন, বাবা,মা,স্ত্রি , পুত্র, কন্যা ।।এদের ভালবাসা আমাদের অন্যান্য প্রানী থেকে আলাদা করে।নাস্তিকের আবেগ এ বাড়াবাড়ি থাকে না কিন্তু গভিরতা থাকে । বন্যা ভাল হয়ে উঠবেন। ক্যান্সার এখন ভাল করা না গেলেও ঠেকিয়ে দেয়া যায় অনেক অনেক দিন এর জন্য।প্রকিতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমরা টিকে থাকি,তাই প্রকৃতিও আমাদের বিরুদ্ধে নূতন নূতন অস্র ধারন করে যার মধ্যে ক্যান্সার একটি । কিন্তু মানুষ এর কাজ ই প্রকৃতিকে জয় করা। ক্যান্সার কে মানুষ জয় করবে ই। কিন্তু মরন ঘাতক অন্য কোণ ব্যাধি আসবে।
আমি নিশ্চিত বন্যা আপু সুস্থ হয়ে যাবেন,হতেই হবে,এর বেশি কিছু বলার শক্তি পাচ্ছিনা।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
আমিও তা-ই চাই।
তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন আমাদের মাঝে।
শুধু শুভ কামনা ছাড়া আর কিছুই করার সাধ্য নেই ভেবে কষ্ট পাচ্ছি। আমাদের এ মনোঃকষ্টের সমাপ্তি ঘটবেই — এ প্রত্যাশা রইল। তৃষা তার মায়ের ছায়ায়ই বড় হবে। প্রতিষ্ঠিত হবে। অভিজিৎ রায়ের সাথে বন্যার “আশা রাখি পেয়ে যাব বাকি দু’ আনা …”
আশা করছি খুব শিঘ্রয় বন্যা আপা সম্পূর্ন সুস্থ হয়ে মুক্তমনা পরিবারে ফিরে আসবেন।
আমরা তাঁর আশু রোগ মুক্তির প্রতিক্ষায় আছি।
বন্যার খবর শুনে মনটা স্বভাবতই বিষন্ন উদ্বিগ্ন হয়ে উঠল। বন্যাকে আমিও দেখিনি, কিন্তু ফোনে আলাপ হয়েছে একবার। মিষ্টি গলার আড়ালে এক দৃপ্ত বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব স্পষ্ট। আমিও আর সবার মত আন্তরিকভাবে আশা করি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে প্রগতিশীল চিন্তার আলো ছড়াতে থাকো সকল বাংলাভাষীদের মধ্যে শক্তিশালী লেখার মাধ্যমে।
বন্যাদি আমাকে প্রথম ইমেইল করেন সায়েন্টিফিক আমেরিকানের ২০০৯ সংখ্যাটি দিয়ে। তিনি বলেছিলেন আর কোন সংখ্যা লাগলে যেন উনাকে জানাই। আশা করি ভবিষ্যতে কোন সংখ্যার দরকার হলে ওই মেইলে মেইল করলে তার জবাব পাব।
আমাদের ভাগ্য অনেক ভাল যে উনার ক্যান্সার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে গেছে। আমি নিশ্চিত উনি আমাদের থেকে এত শীঘ্রই চলে যাবেন না। মুক্তমনা আবারো উনার লেখার দ্বারা পরিপুষ্ট হবে এই কামনাই করি।
সব বিষণ্ণতা কেটে যাক, সব কষ্টগুলো দূর হয়ে যাক, সব ভালো হয়ে যাক
আমার বাবা কেন্সারে মারা গেছেন, এই তো মাত্র ৬ মাস হল, বাবার জন্য যখন কিছুই করতে পারতাম না, অসহ্য যন্ত্রণায় কাতর বাবাকে দেখে আমি পাগল হয়ে যেতাম, আস্তিক আমি, আপনার সাথে আগে বেশ কিছু ভাব বিনিময়, কথা কাটাকাটিও হয়েছে, যখন বাবার কষ্ট দেখতাম, আর আপনার বাগাড়ম্বর মার্কা পোস্ট গুলোর কথা মনে হত, মানুষ এই করেছে, সেই করেছে, এই হয়ে গেল ঈশ্বর – টাইপ লেখা গুলোর কথা মনে হত, আপনাকে আমি মনে মনে অনেক গাল দিতাম, সারমর্ম থাকত, “বোকা গাধা অভিজিৎ, তুমি ভাব মানুষ অনেক কিছু আবিস্কার করেছে, অনেক পারে, মানুষ আসলে ছাতার মাথা এখনো অনেক কিছুই পারে না, আর কেন্সার, সত্যি সত্যি এর নেই কোন এন্সার।”
তবে বন্যা আপুর যা হয়েছে, তা নিয়ে বেশী কাতর হওয়ার কিছু নেই। একান্তই ভাগ্য খুব খারাপ না হলে, ১০ বছর পাক্কা বাঁচবেন। এটা কম সময় না, আমি প্রিয় জন হারিয়েছিত মাত্র মাত্র, আমি জানি।
আপনার সাথীরা কেউ তো আর দোয়া করতে পারবে না, কিন্তু আমি পারব, আমি দোয়া করি আপু সুস্থ হয়ে উঠুক, ক্যান্সার খুব খারাপ জিনিস, মানুষ এখনো উল্লেখ যোগ্য কিছুই করতে পারেনি এর বিরুদ্ধে, যা করে মানুষ, তা খালি কষ্টকেই বাড়ায়।
আপু ভাল হয়ে উঠুক, তার মনের সুন্দর আরো সুন্দর হোক, আপু যেন একা হয়ে না যায়, এই দোয়া করি।
আপনাকে কোনদিন দেখিনি বন্যাকে তো নয়, ফোনে কথা হওয়া তো দূরের কথা কোনদিন মেইলও যোগাযোগ হয়নি। দু একটা কমেন্ট ও কিছু লেখা পড়েই কি করে জানি আপনাদের সাথে (অবশ্য মুক্তমনার সবার সাথে) এক অদৃশ্য বন্ধন তৈরী হয়ে গেছে মনের অজান্তে কখনো জানতে পারি নি ।
বন্যা যে আপনার স্ত্রী তা প্রথম জানতে পারি সৈকতের কাছ থেকে। আপনার এই লেখা পড়ে কেমন জানি বিষন্নতা বোধ করছি। তবে আশা রাখছি অচিরেই তিনি সুস্থ হয়ে আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।
এ কী শুনালেন অভিজিৎ দা? আপনাদের নীরবতা দেখে কী ভেবেছিলাম আর কী শুনলাম। না, না, বিষাদের বাঁশী কেউ বাজিওনা, আমরা শুনতে চাইনা। মুক্তমনা পরিবারে আজ হাজার কণ্ঠে একটাই ধ্বনি- বন্যা দি, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসুন।
বন্যা, ভালো হয়ে ফিরে আসো মুক্তমনাদের মাঝে, আমরা অপেক্ষায়।
উন্নত বিশ্বে ক্যন্সার সার্ভাইব করতে পারছে এমন মানুষ দিন দিন বাড়ছে। যেহেতু প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়েছে তাই সুস্থ্য হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী। অন্তর থেকে মিসেস বন্যার রোগ মুক্তি কামনা করছি।
ঈশ্বরের কাছে বন্যার ও আপনাদের পরিবারের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করছি। সফল সার্জারী শেষে আবার আপনারা পূর্ণদ্যমে কাজে ফিরে আসুন এটাই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি।
আধুনিক চিকিৎসার পাশাপাশি তামান্না ঝুমুর দেওয়া চিকিৎসা পদ্ধতিটা আমি সাপোর্ট করি।
আমার বড় ভাইয়ের আজ হতে প্রায় ১৬-১৭ বৎসর পূর্বে Blood Test এ Hepatitis B Virus ধরা পড়েছিল। তখন HB এর কোন ঔষধ বের হয় নাই। আমরা তার এক রকম নিশ্চিত মৃত্যুই ধরে নিয়েছিলাম। কিন্ত তিনি যেখানে যত কবিরাজী ও হেকিমি ঔষধের কথা শুনতে পাইলেন তা ব্যবহার করতে আরম্ভ করলেন। এভাবে চলতে চলতেই তিন চার বছরের মধ্যেই HB এর ঔষধ বাজারে এসে গেল এবং তিনি তা ব্যবহার আরম্ভ করলেন ও চালিয়ে যেতে থাকলেন।
এখন তিন পূর্ন সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
বন্যা’দিকে আমি কখনো দেখিনি। কিন্তু, ফোনে কথা হয়েছিলো বেশ কয়েকবার। যেদিন প্রথম কথা হয়েছিলো, আর যেদিন শেষ কথা হয়েছিলো – এ দু’দিনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। প্রথম বাক্য থেকে এমন করে প্রাণখুলে কথা বলেন, একেবারে যেন অনেকদিনের পরিচিত, অনেক কাছের কোনো পারিবারিক সদস্য। প্রথম দেখায় আপন করে নেবার ক্ষমতা অনেকেরই আছে, কিন্তু প্রথম কথায় আপন করে নেবার মত একটা অদ্ভূত ক্ষমতা আছে তাঁর।
ইউএসএর অনেক স্টেটেই যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। পরবর্তী কোনো একসময় আটলান্টা যাওয়া নিয়ে আমার ওয়াইফের সাথে কথা বলছিলাম। ও আমাকে জিজ্ঞেস করছিলো, ওখানে গেলে পরিচিত কার সাথে দেখা হতে পারে। অভিজিত’দা সহ আমার পরিচিত অনেকেই সেখানে আছেন; কিন্তু কেন জানি প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলাম- বন্যা’দির সাথে দেখা হবে।
নিশ্চয় সেখানে গেলে প্রাণবন্ত,উচ্ছল বন্যা’দির সাথে দেখা হবে। আমাদের পক্ষ থেকে সবটুকু শুভকামনা থাকলো।
আমার বা পায়ের গোড়ালি ব্রিটল হয়ে গেছে বয়স জনিত কারণে। তাই শুধু ডান পায়ে ভর দিয়ে গ্রোসারি স্টোরের মাংসের সাড়ির সামনে দাঁড়িয়েই এক নিঃস্বাসে লেখাটি পড়ে ফেললাম।
বন্যাকে সামনে দেখলাম আর দেখলাম আমার মেয়ের ইয়েনের কষ্টটা। ৮-৫টা একটানা কম্পিউটারের সামনে ঝুকে বসে থাকা চাকুরী। চোখ নষ্ট হওয়ার কথা। তা এখনও হয়নি। হয়েছে অন্য আর একটা। ঘাড়ের একটা ডিস্ক বেরিয়ে এসে পেছনের প্রধান নার্ভের ভেতরে ঢুকে গেছে। স্টুপিড ডাক্তার ভাবেও নাই। শুধু পেইন কিলার দিয়ে গেল দু বছর। ব্যথায় কষ্ট করল মেয়েটা। দুটো বছর সে ঘুমোতে পারেনি ভালভাবে। ডাক্তার বদলানো হল। এমআরাই করাতেই আসল সমস্যাটি দেখা গেল। তিন মাস থেরাপী করা হল। ভালর লক্ষন দেখা গেল না। এক পা আগায় ত দু পা পিছায়। সিদ্ধান্ত হল সার্জারির।
আমি ভেবেছিলাম – বাড়তি ডিস্কটুকু কেটে দেবে। পরে ছবিতে দেখলাম পুরো ডিস্কটা ফেলে একটা পলিমার ঢুকিয়ে দিয়েছে। আর উপরে এবং নীচের দুটো হার স্ক্রু দিয়ে আটকিয়ে দিয়েছে। তার মানে মাথার সমস্ত ভরটি দুটো স্ক্রুর উপর দাঁড়িয়ে আছে। সবে বত্রিশ বছর বয়স। সারাটা জীবন মাথাটি দুটো স্ক্রুর উপর থাকবে! সারাক্ষন দুশ্চিন্তায় থাকি। কোনদিন রাস্তায় কার গাড়ীর সাথে ধাক্কা লাগে আর স্ক্রুটা কবে ছুটে যায়। মেয়েটা তখন আবার যন্ত্রনায় কাতরাতে থাকবে।
বন্যা আমার কেঊ না। কখনও দেখিনি। আমার শুভেচ্ছার যদি কোন মূল্য থাকে আমি সবটুকু দিতে চাই – মেয়েটি সম্পূর্ন সুস্থ হয়ে উঠুক।
লেখাটা দুবার পড়লাম। বহুদিন থেকেই ভাবছিলাম একটা কল করবো তোমাদের-কারন হঠাৎ করে এখান থেকে হারিয়ে গেলে। যাইহোক, আমি নিশ্চিত বন্যার কিছু হবে না। এর বেশী আর লেখার শক্তি নেই এখন-ও সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক। তখন, নিশ্চয় অনেক কথা হবে। এই পেজে, লে্টেস্ট স্টাটাসটা শেয়ার কোরো প্লিজ—
বেশ কিছুদিন ধরে আপনাকে মুক্তমনায় না দেখে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এর আগে এতদিন আপনাকে আলোচনায় অনুপস্থিত দেখিনি। মনে হয়েছিল হয়ত কোন সমস্যা হয়েছে নয়ত ভীষণ ব্যস্ত আছেন। এত বড় বিপদের কথা কল্পনাও করতে পারিনি। এখানে চিকিৎসা আছে। কোন চিন্তা নেই। সার্জারি সফল হউক। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ফিরুন এই কামনা করি। আপনি শক্ত হোন। তৃষা এবং বন্যাকে কৌতুকে, অভিনয়ে হাসি খুশি রাখার চেষ্টা করুন। জানি আপনার জন্যে তা কতোটা কষ্টসাধ্য!
আপনি ইন্ডিয়ান চ্যানেল দেখেন কিনা জানিনা। জি টিভিতে ইয়োগা ফর ইউ নামে একটি হেলথ শো হয় প্রতিদিন নিউ ইয়র্ক সময় সকাল ৯ টায়। এই অনুষ্ঠানে ইয়োগা শিখানো হয় ও আয়ুর্বেদিক হেলথ টিপস দেয়া হয়। আমার কিছু শারীরিক সমস্যা ছিল, দীর্ঘদিন আমেরিকান বিশেষজ্ঞদের চিকিৎসাধীন থাকার পরেও কোন পরিবর্তন হয়নি। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করে আমি সম্পূর্ন সুস্থ হয়ে গিয়েছি। যদি কিছু মনে না করেন আধুনিক চিকিৎসার পাশাপাশি আয়ুর্বেদ চালিয়ে যেতে পারেন। ডক্টর পঙ্কজ নরমের ইমেইল এড্রেস আমার কাছে ছিল। এখন খুঁজে পাচ্ছিনা। Ztv.comএ গিয়ে yoga for you তে খুঁজলে পেয়ে যাবেন। সমস্যার কথা বিস্তারিত লিখে ইমেইল করলে দুই তিন দিন পরে রেমেডি দিয়ে ওরা ইমেইলের উত্তর পাঠায়।
নাস্তিকেরা কি পাষাণহৃদয় হয়? আমার ত মনে হয় নাস্তিকদের হৃদয়ে প্রেম ভালবাসা আস্তিকদের চেয়ে বেশি থাকে। নাস্তিকরা জানে জীবন একটাই। তাই এক জীবনেই যত সম্ভব ভালবাসতে হবে। আস্তিকেরা পরকালের জন্য বেশির ভাগ জমা করে রেখে দেয়। কারণ ওদের কাছে পার্থিব জীবন ক্ষণস্থায়ী।
আপনার লেখা দেখে যথারীতি উৎফুল্ল মনে পড়তে শুরু করেছিলাম। জানতাম না এত বড় একটি মর্মান্তিক সংবাদ অপেক্ষা করছে।
মনটা বিষাদে ভরে গেল। আমি ভাবছিলাম আপনারা হয়তো অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত। আর আপনাকে না আসতে দেখে ভাবছিলাম হয়তো অনেক দীর্ঘ, অনেক উপভোগ্য একটা লেখা নিয়ে অচিরেই হাজির হচ্ছেন। আপনার লেখা তো পেলাম কিন্তু………….
(Y) (Y) (Y)
শুভকামনা রইল আপনাদের পরিবারের জন্য (F)
কোন সন্দেহ নাই, আমরা সবাই জানি বন্যা অবশ্যই সুস্থ হয়ে যাবে আর তাঁর তীর্য্যক, জোরালো, ক্ষুরধার মন্তব্যগুলো দিয়ে মুক্তমনাকে ভরিয়ে দিবে। এই দুঃসময়ে ধৈর্য্য ধরে বিপদের মোকাবিলা করে আবার আপনারা দুজনে হাতে হাত রেখে অনেক… অনেক… দূর হেটে যাবেন অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে এই কামনা করছি।
অনেক দিন ধরেই বন্যার কমেন্ট মিস করছিলাম। বিগ সি এর কথা পড়ে এতো খারাপ লাগছে।
দোয়া করার তো কিছু নেই। বিগ সি কে হারানোর সবচেয়ে ভালো দেশেই আছে বন্যা এখন। এখন সি মানেই অনিবার্য কিছু নয়। অডস মানুষের ফেবারে চলে আসছে দিনের পর দিন। চারপাশে এতো সারভাইভার দেখি এখন বিগ সি কে আর সেরকম বুগি ম্যান মনে হয় না। আমার এক আত্মীয় (৪০/৪৫ হবে), লাং-সি ধরা পরার পরে রেমিশন হয়ে দিব্যি চলছেন ৫/৬ বছর ধরে।
বন্যা এ যুদ্ধে সহজেই জিতে যাবে আশা করি।