এ কী ঐশ্বরিক শান্তির চিত্র,
অলৌকিক শান্তির বাণী
আমরা চোখে দেখি কানে শুনি?

প্রকাশ্য দিবালোকে
জনগণ জড়ো ক’রে তাদের সমুখে
তরবারির নৃশংস আঘাতে
এক মানুষ কেটে নেয়
অন্য মানুষের মাথা!
বর্বর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা।
এ তো শান্তিরই কথা!
এ তো শান্তিরই কথা!

মাথা কাটার আগে ধর্মের
পবিত্র বাণী পাঠ করা হয়।
মরুভূমির রুক্ষ, তৃষিত, তপ্ত বালুকায়
মানব-মানবীর তাজা রক্তের বন্যা বয়ে যায়।
দেহ হতে এক কোপে মাথা
পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করা হয়।
এক দিকে মানুষের মাথাবিহীন দেহ
অন্য দিকে কর্তিত মাথা প’ড়ে রয়।
ছিন্নমুন্ড আর ছিন্নদেহ
ছটফট করে দুই জায়গায়।

সে মনোরম শান্তির দৃশ্য
শতশত দর্শক দাঁড়িয়ে দেখে।
অনুপম দৃশ্য দেখে নিজচোখে
কারো লাগে বিবমিষা
কেউ হারায় জ্ঞান-দিশা,
কেউ অভ্রভেদী চিৎকার করে,
কেউ সেই কর্তিতের মত ধড়ফড় করে,
কারো উবে যায় বেঁচে থাকার তৃষা।

কে করিল রক্তস্রোতে দণ্ডের বিধান?
এত নররক্ত কে করিতে চাহে পান,
এত কালের রক্তেও
সারা হলনা কার রক্তস্নান?
তিনি আল্লাহ সর্বশক্তিমান।

সর্বশক্তিমান আল্লাহর আইন
কে করিবে খণ্ডন?
নবীর প্রচারিত কথার উপর কথা বলার
কার আছে হিম্মত?
যে বলিবে কথা
যে করিবে অলৌকিকতার সামান্যতম বিরোধীতা
আল্লাহর নামে যাইবে তার মাথা।
করিতে আল্লাহপাকের আইন কার্যকর
আছে তৈয়ার,
হাতে লইয়া নূরানী হাতিয়ার
অগণিত আল্লাহর বান্দা, রাসুলের উম্মত।

পবিত্র ভূমিতে,
আল্লাহর প্রবর্তিত আইনের আঘাতে
মরতে পারা তো কম সৌভাগ্যের কথা নয়
এমন ঈর্ষনীয় ভাগ্য ক’জনার হয়?
এই শান্তির বিধান
কেন ছড়িয়ে পড়েনা জগতময়!
আল্লাহপাক আসলেই পরম করুণাময়।

সেই দণ্ডপ্রাপ্তরা কত পুণ্য করেছিল কি জানি!
তাই জুটেছে তাদের কপালে
পবিত্র-আইনে, পবিত্র ভূমিতে
মরবার সৌভাগ্যখানি।

এই পবিত্র-বর্বরতা বন্ধ করা তো আমার সাধ্য নয়
এই নৃশংসতা দেখেও পৃথিবীর উচ্চ ক্ষমতাশালীরা
কীভাবে নীরব রয়
তা আমার বোধগম্য নয়।

আমি এক তুচ্ছ নারী।
এই আসমানী নিষ্ঠুরতার প্রতি
হৃদয় নিঙড়ানো ,তীব্র ঘৃণা জ্ঞাপন ছাড়া
আর কী-ইবা করতে পারি?