আমি রহিম রহমান
তাই এই পাক-কালাম
নিজের নামেই নিজে শুরু করিলাম।

আমি নিজেই করি নিজের এবাদত
নিজের কাছে নিজেই পাতি সাহায্যের হাত।
জগতের সমুদয় প্রশংসার দাবীদার তিনি
নিজেকেই নিজে ধন্যবাদ দেন যিনি।

আলিফ-লাম-মীম
আমি রহমানুর রহীম।
আমি আদম সৃজিয়াছি মৃত্তিকার
তার মূর্তির মাঝে দিয়াছি এক ফুঁৎকার
তাতেই হয়ে গেছে তার প্রাণ সঞ্চার।
কী চমৎকার!
এমন সাধ্য আছে কার?
তার পরেও তোমরা গুণগান করিবেনা আমার!

আদমকে সৃজিয়া বলিলাম ফেরেস্তাদিগকে ,
“সেজদা কর ওকে “
সকলেই করিল ইবলীস ছাড়া।
সেজদা করিবনা বলিয়া সে রহিল খাড়া।
আমায় কহিল , ‘তুমি আমার একমাত্র প্রভু
তাই তোমা ছাড়া অন্য কাউকে সেজদা করিবনা কভু
তুমি বলিয়াছ তবুও।
আদম আমার কনিষ্ট ভাই
তাকে সেজদা করা কী আমার শোভা পায়?’
কত সাহস তার, আমাকে শেখায়!

আমার আদেশ অমান্য করিয়া
সে করিল মহাপাপ।
তাই দিলাম তাকে অভিশাপ।
করিলাম তাকে আসমান ছাড়া
বলিলাম তাকে,’তুই ত বড় সৃষ্টিছাড়া
বড়ই বেড়েছিস বাড়া
আসমান থেকে বেরিয়ে যা
দুনিয়ায় গিয়ে দাঁড়া
সেথায় তোর ইচ্ছামত শয়তানী করিয়া বেড়া’

আদম ছিল একা একা তার দুঃখ যাচ্ছিলোনা সওয়া,
তাই আদমের পাজরের বাঁকা হাড় দিয়ে বানায়েছি হাওয়া।
বলেছিলাম তাদের,’স্বর্গে কর সুখে বাস
মনের আনন্দে কর খাওয়া দাওয়া
শুধু মানা আছে গন্দম ফলের কাছে যাওয়া
গন্দম তোমাদের তরে নিষিদ্ধ বারোমাস।‘
কিন্তু সে বাঁকা নারী করিল সর্বনাশ।
সে হইল আমার অবাধ্য
নিষিদ্ধ ফল করিল সে ভক্ষণ
আদমকেও করাইল তেমন
আমার রাগ সপ্তমে চ’ড়ে গেল তখন।
করিলাম তাদের সাথে সাথেই
স্বর্গ হতে নিষ্ক্রান্ত।
এই হল আমার শাস্তির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
পান হইতে খসিলে চুন
মারিয়া করিবো খুন।

এই কিতাব শুধু মুত্তাকীদের তরে
যারা বিনা প্রশ্নে বিশ্বাস করে আমার পরে।
আমি অবিশ্বাসীদের হৃদয়ে , কর্ণে ও চোখে মারিয়াছি তালা
তাই তারা বোবা কানা ও কালা।
যতই শোনাও তাদের গায়েবের বাণী
যতই কর খুনাখুনী
তাদের বধির-মনে লাগিবেনা দোলা।
তাদের অন্তরে মেরেছি সীল মোহর
তাই তুমি যতই করনা চিৎকার
এই কিতাবে বিশ্বাস করে
সেই ক্ষমতা নাই তাদের।