শতাব্দী, সহস্রাব্দী ধরে আমার তরে
মানুষ করিছে রক্তপাত, করিছে সংঘাত
কেউ আমার জন্য বাঁচে
কেউ আমার জন্য মরে
কেউ আমার জন্য নাচে
কেউ আমার জন্য গায়
কেউ আমার মাঝে হারায়।
কিন্তু আমি কোথায়?
কেউ কি কখনো আমায় খুঁজে পায়?
পাবে কীভাবে আমিই যে নাই!
আমার তরে এতযে ঘাত-প্রতিঘাত
এতযে সংঘাত,
আমি সব দেখে-শুনে চুপ ক’রে রই
কভু কোন কথা না কই।
সবকিছুতেই সর্বদা আমার নীরবতা,
আমি কী করে কইবো কথা
আমার কি আছে সেই ক্ষমতা?
এ পৃথিবীময়
আমার সংখ্যা তো নেহাৎ কম নয়।
আমি কখনো নর, কখনো নারী
কখনোবা ক্লীব।
কখনো জড়, কখনোবা জীব,
ভিন্ন জনের মনে আমার ভিন্ন ভিন্ন রূপ।
আমি কখনো স্বাকার
কখনো বা নিরাকার
বিভিন্ন জনের কাছে আমি বিভিন্ন প্রকার।
নিজের মনের ভয়, কল্পনা ও মাধুরী মিশিয়ে
ওরা সৃষ্টি করেছে আমায়,
এতে কী দোষ আমার?
আমি বাস করি বিশ্বাসীদের মনে
সেথায় ঘাপটি মেরে বসে থাকি সংগোপনে
নিজেরে প্রকাশ করিনা কোনখানে,
কীকরে করবো প্রকাশ
আমি কি আছি নিখিল ভুবনে?
আজকাল বিশ্বাসীরা অজ্ঞানে
খোঁজে আমায় বিজ্ঞানে।
আমি কি আছি সেখানে?
আমি কি আছি কোনখানে,
আমি তো আছি শুধু তাদের মনে,
ভয় আমার বিজ্ঞানে
ভয় আমার প্রমাণে,
সদা ভয় পাই মনে মনে
‘আমি নাই’ তা যদি
প্রমাণ হয়ে যায় সবার সামনে!
কেন যে তারা হাতে ধরে আমার মরণ ডেকে আনে!
বিশ্বাসীরা সবকিছুতেই আমায় টানে
কী তার মানে!
কেন তারা বোঝেনা
আমি আসলে কিছুই না?
কী করে তাদের বোঝায়
আমি নাই, আমি নাই!
অবিশ্বাসীর দল বড় নাছোড়
তারা সবকিছুতেই যুক্তি খোঁজে, প্রমাণ খোঁজে
কোনকিছুই নেয় না মেনে চক্ষু বুজে।
তারা যদি বলে ‘আমায়’ প্রমাণ করতে
তখন বিশ্বাসীরা করবে কী উপায়,
তারা আমায় পাবে কোথায়?
কোথা হতে তারা আনবে আমায় টেনে
কাকে আনবে টেনে?
আমি তো অনেক, আমি কি একটা
ঠিক কত যেন সংখ্যাটা?
আমি সর্বদা লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকি
রহস্যের ধোঁয়ার আড়ালে নিজেকে ঢাকি
কভু ভুলেও প্রকাশিনা নিজেরে
প্রকাশিবো কীকরে
আমি আছি নাকি রে?
কেউ আমার বেঁধেছে ঘর সুউচ্চ গগনে
বিজ্ঞান কয় গগন ব’লে নেই কোন কিছু কোন খানে
মহাগগন নাকি মহাশূন্য!
আমিও শূন্য, গগনও শূন্য
তবে শূন্যকে শূন্যের উপরে স্থাপনের কী মানে?
যারা বলে আমি থাকি গগনে
তারা আমায় খোঁজে কেন কাবা ঘরের প্রাঙ্গণে?
আমি যদি থাকি ঊর্ধ্বগগনে
তবে তারা কাবা মুখী হয়ে
আমায় সেজদা করে কী কারণে?
যারা বলে অসীম ক্ষমতা আমার
আমি একই সাথে মিশে আছি
মহাবিশ্বে হয়ে একাকার,
স্রষ্টা আমি, তাই আছি
সকল সৃষ্টির মাঝে, সকলের অন্তরে,
তারা তীর্থযাত্রা করে কীসের তরে
অন্তর ছেড়ে কেন আমায়
খোঁজে তারা বাহিরে বাহিরে,
নিজের হৃদয় রেখে
কেন তারা খোঁজে আমায় বহুদূরে
তাদেরই তৈরী কোন ঘরে?
পৃথিবীর যত অন্যায়-অবিচার, অভাব-অভিযোগ
মৃত্যু-দুঃখ-ব্যথা, শোক-রোগ
আমি কিছু দেখেও দেখিনা, শুনেও শুনিনা।
আমি কারো সুখে হাসিনা
কারো দুঃখে কাঁদিনা
দেখবো-শুনবো-হাসবো-কাঁদবো কীকরে
আমার কি চোখ-কান-ঠোঁট আছে?
পৃথিবীতে যত হোক অন্যায়-অত্যাচার
আমার কাছে তার নাই কোন বিচার
কীকরে থাকবে বিচার
কোন অস্তিত্ব আছে নাকি আমার?
অবিশ্বাসীরা বলে আমি নেই
ওরা আমায় স্বীকার করেনা কিছুতেই
প্রমাণ ওদের লাগবেই।
আমি কিকরে তাদের
নিজের প্রমাণ দেই হায়
যা নেই তা কি কখনো প্রমাণ করা যায়?
আমি বিশ্বাসীদের মনে ও মগজে থাকি
তারা আমার জন্যে কেঁদে কেঁদে
ভেজায় তাদের আঁখি,
তবুও আমি চুপটি ক’রে থাকি
আমি তাদেরও দেই ফাঁকি।
দেবোনাই বা কেন
আমি আছি নাকি?
:good:
@তামান্না ঝুমু,
বরাবরের মতই দারুন। আমি আপনার লিখার ভক্ত হয়ে গিয়েছি।
লিখতে থাকুন।
@গোলাপ,অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আমিও আপনার মন্তব্যের ভক্ত। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে আপনার মন্তব্যে। আপনিও অবিলম্বে লিখা শুরু করুন।
আপনার কবিতাটা তো বেশ ভালই লাগল।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
@আঃ হাকিম চাকলাদার,ধন্যবাদ।
তামান্না ঝুমু সত্যি আপনি অনেক সুন্দর কবিতা লেখেন। শুধু সুন্দর বললে ভুল হবে বলা যায় অনেকটা ধর্ম বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে তীক্ষ্ণ বাণ । আপনাকে আভিনন্দন চালিয়ে যান । 🙁 🙁 :))
@মাসুদ রানা, ধন্যবাদ।
আসলেই আপনার কবিতা অসাধারণ। এবারে সত্যই কবিতার একটি বই বের করে ফেলার সময় এসেছে!
@অভিজিৎ, বই বের করার নিয়ম কানুন কিছুই যে জানিনা।
ঈশ্বর তো তার কবিতা দিয়েই যাত্রা শুরু করেছিলেন। সেই কবিতাগুলোর ফাঁক-ফোকর ভাঙ্গতে কত প্রবন্ধ, কত কলাম রচনা হচ্ছে। তবুও ঈশ্বরের কবিতা-র পাহাড় ভাঙ্গছে না।
এবার সে পাহাড় ভাঙ্গতে ঈশ্বরের রচিত কবিতার বিরুদ্ধে আপনিও কবিতা লিখে যাচ্ছেন, জানিনা আপনার কপালে কি আছে?
@স্বপন মাঝি,
কপালের লেখন তো ঈশ্বর সাহেব লিখে দিয়েছেন। তার বিরোধীদেরকে বানর, শুকর ব’লে গালি দিয়েছেন । তাদের গর্দানে আঘাত করতে, হাত পা কেটে দিতে বলেছেন, হত্যা করতে বলেছেন। জানিনা আমার কপালে তিনি কি লিখেছেন।
যথারীতি আরেকটি চমৎকার কবিতা। বেশ ভাল লাগল। ফরিদ ভাইয়ের সাথে একমত। বই বের করে ফেলুন। (F)
@রাজেশ তালুকদার, অনেক ধন্যবাদ।
@রাজেশ তালুকদার,ধন্যবাদ।
আপনি চমৎকার কবিতা লেখেন। একটা কবিতার বই বের করে ফেলতে পারেন আগামী বইমেলায়।
@ফরিদ আহমেদ
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। কিভাবে প্রকাশকের সাথা যোগাযোগ করতে হয়, দেশের বাইরে থেকে কিভাবে কি করতে হয় কিছুই জানিনা। একটু জানাবেন কি অনুগ্রহ পূর্বক।
@তামান্না ঝুমু,
ভালো লোককেই ধরেছেন। আমি নিজেই চারটা বইয়ের পাণ্ডুলিপি নিয়ে প্রকাশক খুঁজে বেড়াচ্ছি। পাচ্ছি না। তারপরেও যা যা তথ্য জানি জানাবো আপনাকে।
এই কবিতাটাও ভাল লাগল
দ্বিমত পোষণ করলাম। এটা এভাবে লেখা যায়
মাথায় আছে গোবর যাদের
তাদের মনেতে থাকি
গোবর না থাইকা মগজ থাকলে
কই নিজেরে রাখি?
:rotfl: :lotpot:
@অভীক,
চমৎকার কথা বলেছেন। :lotpot:
আছে আবার নেই, এরই মাঝ হতে জন্মেছিল এ ধরণী
প্রস্ফুটিত হয়েছিল প্রাণ আর প্রাণী
কোথা হতে এলাম কোথায়ই বা যাব জিজ্ঞেসেছিল আদিবাসি।
উত্তর দেয় নি কো কেউ
শক্তিকে মেনেছিল দেবতা , পশু শক্তি হতে সৌর শক্তি
হেসেছিল মনের দেবতা।
শক্তির সংঘর্ষ হতে জন্ম নেয়া এ মহাবিশ্বের সৃষ্ট মানব
নিজের অজান্তেই হয়েছিল শক্তির পূজারী।
আজানা ,অচেনা , অদেখা কোন এক শক্তি ্নিরাকার যার অস্তিত্ব খোজা বেকার ;
প্রশ্ন কোরো না কো প্রশ্ন করার নেই কোন তোমার অধিকার
তুমি তুছহ মানব,নিরাকারের প্রমাণ চাওয়া তোমার ধৃষ্টতা
তোমার আত্মায় নিরাকারের বসবাস,খুজো তাকে ধ্যানে,প্রনামে পার্থনায়।
এ অমোঘ বানিকে শিরোধার্য করেনি কিছু প্রানী
মহাবিশ্ব তারা চষেছে নিরাকার ঈশ্বরের খোজে,কিছু কি মিলেছে?
যা মিলেছে তা বলা হয়নি,বলা যায়নি,খরগ হস্ত হয়েছে সব মানুষ নামের প্রানী
@সপ্তক, ঈশ্বর বিরোধীদের জন্য খড়গ প্রস্তুত।