এত শুভেচ্ছা, ম্যাসেজ, এত ফোন। কিন্তু আনন্দতো দূরের কথা,ঈদের কোনো অনুভূতি-ই হচ্ছে না। এরকমতো কখনো হয় না। তাহলে, সমস্যাটা কি?…অবশেষে আবিষ্কার করলাম। যেই না শুনলাম, “ও মোর রমজানের ঐ রোযার শেষে, এলো খুশীর ঈদ”–আর ঠেকায় কে, আনন্দের বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ার। ঈদ মোবারক!!! সবার কাছেই হয়তো আছে গানটা, তারপরও এই লিঙ্কে ক্লিক করলে আবারো শুনতে পারবেন। ক্লিক করে দেখুন, যতই শুনতে মন না চায় না কেন, বাজী ধরে বলতে পারি, ভালো লাগবে। আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে গানটা।
এত এত অমিল, এত এত মতানৈক্যের আমাদের এই দেশে ঈদ-পূজো-বৈশাখ এই দিন গুলোতে সবাই একসাথে একই উদ্দেশ্যে ছুটে যায়, ভালো লাগে। দেখতে ভালো লাগে, শুনতে ভালো লাগে, অংশগ্রহণ করতে ভালো লাগে। কারণ-অকারণ যাই থাকুক, যাই না থাকুক, সে দিকে যেতে চাইনা, সেটা বলতে চাইনা, শুধু বলতে চাই ঈদ মোবারক। জাতি ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে।
এত এত পরিশ্রম করে মুক্তমনা সাইটটি যারা চালিয়ে নিচ্ছেন; পাঠক, লেখক, আলোচনা-সমালোচনাকারী, মডারেটর, পৃষ্ঠপোষক, ডিজাইনার এবং অন্যান্য সকল ব্লগের সবাইকেও ঈদের শুভেচ্ছা।
মইনুল রাজু (ওয়েবসাইট)
[email protected]
দুর্গাপূজার ঢোল আর ঈদুল ফিতরের নজরুলের গান- ট্রেডমার্ক।
কেন দিদি? এখানে মডারেটরের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রয়োজনটা কী?
আমি ব্যক্তিগতভাবে টেকি সাফি যে দৃষ্টিভঙ্গিটার উল্লেখ করেছে সেটারই পক্ষে। ঈদ আমার কাছে সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা এখন আমাদের সংস্কৃতিরই অংশ হয়ে গিয়েছে। ঈদে নিজের বাসায় কোনো আয়োজন থাকে না। কিন্তু মুসলমান বন্ধুদের বাড়িতে গিয়ে পোলাও কোর্মা সাবাড় করতে খারাপ লাগে না মোটেও। তাঁদের আনন্দের অংশীদার হয়ে ভালই লাগে। আমি নাস্তিক জানার পরেও তাঁরা কিন্তু বাদ দিচ্ছে না আমাকে তাঁদের আনন্দময় অনুষ্ঠান থেকে।
ঈদে মুসলমান কাউকে ঈদ মোবারক জানানো, পূজোয় হিন্দু কাউকে শুভেচ্ছা জানানো বা ক্রিসমাসে খ্রিস্টান কাউকে মেরি ক্রিসমাস বলাটা আমার কাছে সামাজিকতারই অংশ, এর বেশি কিছু নয়।
@ফরিদ আহমেদ,
আমি বুঝতে পারছিনা, এখানে বিশেষভাবে মডারেটরের প্রতিক্রিয়া কেন লাগবে। এখনজন লেখক কিংবা পাঠক হিসেবে গীতাদি’র নিজের প্রতিক্রিয়াই কি যথেষ্ট নয়?
নিঃসন্দেহে সামাজিকতাই এ-ধরণের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মূল উদ্দেশ্য। আরেকটা ভালো দিক হচ্ছে,কোনো ধরণের বাধ্যবাধকতা নেই, কেউ কাউকে বাধ্য করে না,সবাই স্বঃতস্ফুর্তভাবেই অংশ নেয় এই সমস্ত উৎসবে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
@মইনুল রাজু,
মডারেটরদের কথা আসল এজন্য যে, মুক্ত-মনা কি সর্বধর্মীয় ধারণার প্রতি মহানুভব হয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করার প্ল্যাট ফর্ম হয়ে উঠল কি না! এবং………………………
এবং ধর্মভিত্তিক সংস্কৃতির অনুশীলনকে টিকিয়ে রাখতে ঈদ শুভেচ্ছা, শারদীয়া শুভেচ্ছা, খ্রীসমাস ডে শুভেচ্ছার রেওয়াজ শুরু করছে কি না।
এ সবার দলে কি ……………????????????
আসলে আমি বুঝতে পারছি না।
@গীতা দাস,
মুক্তমনা কি তাদের নীতিমালার কোথাও লিখে রেখেছে, এখানে ধর্মীয় শুভেচ্ছা বিনিময় নিষিদ্ধ? সেটা যদি আমার চোখ এডিয়ে থাকে, তাহলে আমি নিশ্চয় এ-জাতীয় লেখা থেকে বিরত থাকবো।
আউট অফ দ্যা ট্র্যাক-এ গিয়ে যদি লেখক কিছু লিখে সেই দায়ভার লেখকের,মডারেটরের নয়। মডারেটর সেখানে কি করতে পারে?
ওয়েল, আপনার মনোভাব আমি এখনো বুঝতে পারছিনা। আর শব্দ না লিখে ডট ডট লিখলে একটু বুঝা কষ্টকরই।
আপনি মডারেটর হলে কি পদক্ষেপ নিতেন,সম্ভবত সেটা বলে মডারেটরদের সাহায্য করতে পারেন।
@মইনুল রাজু,
একটূ ভুল হলো। মডারেটর নয়। আপনি মডারেটর হলে কি পদক্ষেপ নিতেন, সম্ভবত সেটা বলে আমাকে বুঝতে একটু সাহায্য করতে পারেন।
@মইনুল রাজু,
ডট তো দেই নিজে যখন মনের ভাব প্রকাশ করার আর ভাষা খুঁজে পাই না।
আমি মডারেটর হলে ? আমার মনোভাব হল—-
ধর্মভিত্তিক শুভেচ্ছা বিনিময় সামাজিক জীবনে চলতেই পারে। আমিও এখনও এ বলয় থেকে বের হতে পারিনি।
কিন্তু মুক্ত-মনার বৈশিষ্ট্যের সাথে ধর্মভিত্তিক শুভেচ্ছা বিনিময়ের মত পোস্ট মিলাতে পারিনি।
@গীতা দাস,
গীতা’দি,
আপনার পয়েন্টটা বুঝতে পারছি। আপনার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, মুক্তমনার অনেক লেখার সাথে আমি নিজেও একমত না, কিংবা মাঝে মাঝে ভাবী কি করে এধরণের লেখা মুক্ত-মনায় ছাপা হলো। কিন্তু তাতে করে যদি মডারেটরের প্রতিক্রিয়া বা হস্তক্ষেপ চাই, তাহলেতো আমি শুধু আমার মতকেই দাম দিলাম, অন্যদেরটার জন্য মডারেশান দাবী করলাম। সেজন্য আমি একটু অবাক হলাম।
তবে অবশ্যই, পরবর্তীতে লেখার সময় আমি দু’বার চিন্তা করবো। ভালো থাকবেন।
@গীতা দাস
কিন্তু মুক্ত-মনার বৈশিষ্ট্যের সাথে ধর্মভিত্তিক শুভেচ্ছা বিনিময়ের মত পোস্ট মিলাতে পারিনি।সম্পুর্ন একমত (Y)
@ফরিদ আহমেদ,
টেকি নাফি বলেছেন,
@গীতা দাস,
গীতা’দি,
সংস্কৃতি একটি প্রবাহমান ধারা। বিভন্ন সময় বিভিন্ন সংস্কৃতি এসে অন্য সংস্কৃতিতে মেশে। সেখান থেকে কিছু গৃহীত হয়, কিছু বর্জিত হয়। আর নতুন দেশে এসে সংস্কৃতিত অর্থেও ব্যাপক পরিবর্তন হয়ে যায়।
একটা উদাহরণ দিতে চেষ্টা করি, আমরা আমাদের দেশে সালাম দিয়ে সাধারণত শ্রদ্ধা প্রকাশ করে থাকি। এখন যদি বলা হয় নাস্তিকরা সালাম দেয়, মানে তারা মুসলিম সংস্কৃতি চর্চা করছে, তাহলেতো মুশকিল। এটা যতটা না মুসলিম বুঝানোর জন্য তার থেকে অনেক বেশি শ্রদ্ধা প্রকাশের জন্য। যেটা আমরা আমাদের বাবা-মা থেকে শুরু করে গুরুজন, শিক্ষক সবাইকে দিয়ে থাকি। এটা সংস্কৃতির অংশ, আস্তিক-নাস্তিক ব্যাপার না। আমি এভাবেই চিন্তা করি। কিন্তু, অবশ্যই, সবাই নিজের নিজের ব্যাখ্যা নিজেরাই দাঁড় করাবে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
@মইনুল রাজু,
এখানে দ্বিমত নেই।
শ্রদ্ধা বা শুভেচ্ছা জানানোর রেওয়াজ বিভিন্ন দেশে— বিভিন্ন সংস্কৃতিতে ভিন্ন রকম। আমাদের দেশে নমস্কার বা সালাম। অন্যদেশে দেখা হলে হাত মেলাচ্ছে, কোলাকলি করছে বা চুমু দিচ্ছে। ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমি শুধু একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মুক্ত-মনায় শুভেচ্ছা বিনিময় করাকে মিলাতে পারছিলাম না।
দিদি,
বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতি বলতে আসলে কিছু নেই। সবই বাইরের সংস্কৃতি থেকে গ্রহণ করা থেকে এসেছে। কাজেই, এখন যদি আমরা মুসলিম সংস্কৃতি বা হিন্দু সংস্কৃতিকে বাদ দিতে চাই তাহলে এর আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। ধর্মীয় বিষয়টা আমি বুঝতে পারছি, কিন্তু এখানে যাঁরা শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন, তাঁরা কেউ-ই ধর্মীয় কারণে করছেন না, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কারণে করছেন।
নাহ, সব মুসলিম সংস্কৃতি নয়, যে মুসলিম সংস্কৃতি বাংলাদেশে এসে বাঙালিত্বের পোশাক পরে ফেলেছে তাকে ছাড়ার প্রয়োজনবোধ করি না আমি।
@ফরিদ আহমেদ,
দ্বিমত নেই। তাছাড়া, মুসলিম সংস্কৃতির কিছু আচার হিন্দু সংস্কৃতিতে এবং হিন্দু সংস্কৃতির কিছু আচার কিন্তু মুসলিম সংস্কৃতিতে মাখামাখি। যেমনঃ বিয়ের আগে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান।
তবে, টেকি নাফি কি এ অর্থে বলেছিলেন?
@গীতা দাস,
গীতা’দি, টেকি সাফি, নাফি না। 🙂
@মইনুল রাজু,
সাফির নামটি ঠিক করে দেওয়ার জন্য রাজুকে ধন্যবাদ আর টেকি সাফির কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি তার নামটা অসাবধানতাবশত ভুল করার জন্য।
এর ব্যাখ্যা সাফি-ই দিতে পারবে। তবে, আমার কাছে ও রকমই মনে হয়েছে। আমি ভুলও হতে পারি। সাফিকে বাদ দিন। আমি যা বললাম এতক্ষণ, ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কে আমি আসলে ওভাবেই দেখি।
রাজু প্রচণ্ড রকমের রসবোধসম্পন্ন একটা ছেলে। এই লেখার সূক্ষ্ণ হিউমারটাকে হয়তো অনেকেই খেয়াল করেন নি। ঈদের শুভেচ্ছাটাই মূখ্য হয়ে উঠেছে।
আপনাকে মডারেটর বানিয়ে দিচ্ছি, এই রসিক ছেলেটার আপত্তিকর লেখাটাকে ট্রাশ বিনে ফেলার মধ্য দিয়েই কাজ শুরু করে দেন দিদি। সব কিছু নিয়ে যে ফাজলেমি করতে হয় না, সেটা হাড়ে হাড়ে বুঝুক সে। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
ফরিদ ভাই, ঈদ মোবারক! :))
ঈদ-পূজো-বৈশাখ তিনটা শব্দকে এক করেও বাঁচতে পারছি না। বড় বিপদে আছি। 🙂
আসো কোলাকুলি করি। আমিও বড় বিপদে আছি। সাধারণ মুসলমানদের প্রতি আমার সহানুভূতির কারণে আমারেও খাঁটি নাস্তিক হিসাবে অনেকেই বিবেচনা করে না। 🙁
@ফরিদ আহমেদ,
:lotpot:
@ফরিদ আহমেদ ও রাজু,
দুজনের কাছ থেকে এত সহিষ্ণু মন্তব্য পেয়ে দুজনেরই ঝলমল করা মুক্ত- মনের ছোঁয়া পেলাম। খুবই Impresive মানসিকতা।
@গীতা দাস,
আমারটা ঠিক আছে দিদি, কিন্তু রাজুরটা ঠিক নেই। সবাইতো ওর ঈদ মোবারকের পিছনে লাগলো, কিন্তু আসল জিনিসটাই কেউ খেয়াল করে নাই। ওতো আমাদের জাতীয় কবির বিখ্যাত গানটারে নিয়ে বিদ্রুপ করেছে। আমরা রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে একটু বলাতে সবাই ক্ষেপে উঠলো, আর রাজুর এই জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথাই বললো না। 🙁
এসো হে বৈশাখের বিকল্প পাওয়া গেছে, এখন নজরুলের এই স্থূল গানটার বিকল্প খুঁজে বের করার সময় এসে গেছে।
@ফরিদ আহমেদ,
সবাই জানে,মাফিয়াদের সাথে আমার উঠা-বসা, ব্যবসা-বাণিজ্য। :))-রাজু করলিয়ন।
@মইনুল রাজু,
আমার হাতেও সলোজো দ্য টার্ক আছে। 😉
@ফরিদ আহমেদ,
সেজন্যইতো আমরা কোলাকুলি করার কথা ভাবছি। মাফিয়া মাফিয়া মাসতুতো ভাই।:))
@ফরিদ আহমেদ,
ঠিকই আছে। এবং আমারও অবস্থা আপনার মত। ঈদের দিনও আস্তিক বন্ধুদের সাথে আকাশ-পাতাল ভেঙ্গে ভার্বাল মিসাইল :guli: চালাচালি চলে আবার একটু পরই গিটার নিয়ে বসে শুরু হয়ে যায় ছোটখাট কনসার্ট (8) (8) …এই অভিজ্ঞতা থেকেই বলছিলাম এটা সের্ফ ধর্মীয় সিলেব্রেশান হলে ইস্লামিস্ট ব্রাদারগন (তাও আবার ঈদের দিন) সবচাইতে সেনসেটিভ স্থানগুলোতে মিসাইল খেয়ে ভুপাতিত হয়েও বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যেত না।
আমি প্রকাশ্য নাস্তিক। এমনকি আত্মীয়-স্বজনরাও জানে আমি নাস্তিক এবং আমি বিন্দুমাত্র কাউকে ছাড় দিইনা ধর্মীয় ভন্ডামি দেখলে তাই আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবীরাও আমার সামনে “ধর্ম” শব্দটাও উচ্চারণ করে খুব কম। কিন্তু আবার এই আমাকেই ঈদের দিনে হাজার শুভেচ্ছা পাঠানো হয়…আমি সামাজিকতা একটু কম বুঝি তাই কাউকে ঈদ মুবারক জানাতে যাইনা (বিরোধিতা ভিন্ন কথা), এইসব আজাইরা ফর্মালিটি খুব বাজে লাগে তাই সেদিন ফোনও অফ করে রাখি পারলে। আর এইজন্য আমার দাদু, এক চাচী, চাচাত ভাইরা আর এক বান্ধবী প্রকাশ্যে আমাকে রাগ দেখাইলো…
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখলে এগুলোর ব্যাখ্যা কী?
আর এই এইটা সৌদি সংস্কৃতি, এইটা হিন্দু, এইটা মুসলমান, এইটা বাঙ্গালি, এইটা অবাঙ্গালী ইত্যাদিতে ভাগ করাটা আমার কাছে কেন জানি নিজেকে বাক্সবন্দি করে দেয়া মনে হয়। আমি অনেক বাঙ্গালি সংস্কৃতিকেও রিজেক্ট করি, আমার কাছে সংস্কৃতির গ্রহনযোগ্যতার মাপকাঠি একটাই… আমার ইচ্ছা। তবে ভয় নেই আমার নর হত্যা করে পুজো করার ইচ্চা হবেনা কারণ বিবর্তন আমাকে ইয়াবড় একটা ব্রেন এমনি এমনি দেয়নি।
@ফরিদ আহমেদ,
(Y)
ঈদে বাসায় কোন আয়োজন থাকলেও ত নাস্তিকতা থেকে কেও খারিজ করে দেবে না ভাই । কারণ নাস্তিকদের মোল্লা নাই । আমার বাল্যকাল থেকে ই আগ্রহ ছিল হিন্দু বন্ধুদের বাসার পূজার প্রাসাদ আর হিন্দু বন্ধুদের আগ্রহ ছিল কোরবানির ঈদে আমাদের বাসার গরুর মাংস ।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা (পকৃতির ডাকে সাড়া দেয়া সহ) করা থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত সবই আমাদের সংস্কৃতি । বছরে ২ বার ঈদের নামাজ পড়াও (!!), অবশ্য এবার নামাজ মিস করেছি,ঘুম থেকে উঠতে পারি নাই ।
আমার বাবার ১৯৯৫ এ স্ট্রোক করেছিল । আমি ২০০০ পর্যন্ত দেশে ছিলাম । বাবা হাটতে বসতে পারতেন । শুয়ে বসে নামাজ পরতেন । আমি ত ছোট বেলা থেকেই নামাজ কালাম এ ছিলাম না । কিন্তু ইদের দিন ভাইয়েরা নামাজ পরতে যখন মাঠে চলে যেত আমি বাবার সাথে বাসায় ইদের নামাজ পরতাম । ভাইয়েরা বলেছিল ,বাসায় এভাবে ঈদের নামাজ পরলে বাবার কিছুই হবে না , কিন্তু আমার নাকি মহাগুনা হবে। আমি বলেছিলাম,যদি তোমাদের আল্লাহ সত্যি সত্যি থেকে থাকে তবে আমি সারা জীবনে শুধুমাত্র আব্বার সাথে বছরে ২ বার ঈদের নামাজ বাসায় পরার জন্য বেহেস্তে যাব। কোন উত্তর অবশ্য ভায়েরা দিতে পারে নাই বা দেয় নাই। আব্বার সাথে বছরে ২ বার আমার এ নামাজ পরা ছিল একজন মানসিক ভাবে অসহায় শারীরিক ভাবে পঙ্গু মানুষ কে সাইকো থেরাপি দেয়া বা সঙ্গ দেয়া । এতে যদি আমার নাস্তিকতা একটু খাটো হয় হোক না !!
হাসব ? কাঁদব? ক্ষেপব? জানি না। এক কথায় কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
উপরের পোস্ট ও মন্তব্য নিয়ে মুক্ত-মনার মডারেটরদের কোন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া না পেয়েও আমি হতাশ।
রবীন্দ্রনাথ নিয়ে বিতর্কের পর ( রমজানের এই রোজার শেষে) এলো আনন্দের পোস্ট।
( এলো খুশির ঈদ)
:-Y
@আফরোজা আলম,
আপনার সাথে একদম একমত।
@মইনুল রাজু,
ভাইয়া, আজ রিকশায় করে ঢাকা শহর অনেকক্ষণ ঘুরে বেড়ালাম। কত কিছু যে চোখে পড়ল! দেখলাম, একটা বাচ্চা মেয়ে, বয়স ৮-৯ দশ বছরের বেশি নয়, নীল রংয়ের সলওয়ার, কামিজ, ওড়না, স্যান্ডেল, টিপ (একেবারে পারফেক্ট ম্যাচ যাকে বলে) পরে মহানন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আরো দেখলাম, ৫-৬ বছরের কিছু বাচ্চা ছেলে জিন্সের প্যান্ট, গেঞ্জি, রঙ্গিন চশমা পরে বাড়ির সামনের আঙ্গিনায় লম্ফ-ঝম্প করছে! মাঝে-মাঝেই বাইকে চড়া কিশোরদের উল্লাস-চিৎকার কানে ভেসে আসছিল। আর পাড়ার দোকানে দল বেঁধে বিড়ি ফুঁকার দৃশ্য তো রয়েছেই। হঠাৎই চোখে পড়ল, নতুন পোশাক পড়া একটি শিশুকে তার মা জানালা দিয়ে কি যেন দেখাচ্ছে(সাত সমুদ্র তের নদী পারের কোন রাজ্য হবে হয়তো)। চোখে পড়ল, মিনা বাজার, মেলা, নাগরদোলা ইত্যাদি। দেখলাম, একটা কিশোরী সমাজ-বিধিনিষেধ ভুলে রাস্তায় কয়েক গজ দৌড়ে তার বান্ধবীকে আলিঙ্গন করছে। একটা সিনেমা হলের সামনে উৎসবমুখর অনেক মানুষ দেখলাম। সবাই হাসছে, সবার ভিতরেই ভালবাসা জেগে উঠেছে! কেউ কাউকে কটু কথা বলতে গিয়েও পারছে না (মনের ভিতর থেকে কেউ যেন বাঁধা দিয়ে বলছে, ঈদের দিন তো, আজ এসব থাক!)। কত কোলাকুলি, সালামি, শুভেচ্ছা বিনিময়! ঈদের দিন যেন, ‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে’! পূজার সময়ও যখন আমাদের পাড়ার মন্দিরে যেই, ভিড়ে ঠাসা মানুষের মাঝে প্রচণ্ড উষ্ণতা টের পাই! সারা বছর ধরে পার্থিব স্বার্থ ও সাংসারিক দ্বন্দ্বে আমরা হৃদয়কে শুকিয়ে কাঠ করে ফেলি; উৎসবের দিনগুলোতে আমাদের মধ্যে যেন অপার্থিব মাহাত্ম্য ভর করে; প্রেম-রসে সিক্ত হয়ে হৃদয় কিছুটা স্বাভাবিক-ত্ব ফিরে পায়। আর এভাবেই টিকে থাকে আমাদের প্রাণপ্রিয় পৃথিবী!
@কাজি মামুন,
এটাই সবচেয়ে বেশি আনন্দের। খুব সুন্দর বলেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
ঈদ আমার কাছে সব সময় আনন্দের বার্তা বয়ে আনে। মনে আছে ছোট বেলায় ঈদ নিয়ে নতুন কাপড় নিয়ে কী দারূণ উত্তেজনা- কি আনন্দ, ঈদের দিন বন্ধু-বান্ধব মিলে লাগামহীন ঘুরে বেড়ান। আহা — কি মধুর দিন গুলো ছিলো-
ঈদ মানেই আনন্দ। যার যার ধর্ম সে করুক অসুবিধে কোথায়? আমি তো পূজোতেও আনন্দ পাই। এই সমস্ত আয়োজন না থাকলে আনন্দ কী তা কি করে বুঝবে মানুষ ? একটা উপলক্ষ্য করেই না হয় আনন্দ হল। এতে ধর্মকে গালাগাল না দিলেই মনে হয় শ্রেয় হয়।
তাই মুক্তমনার সকল সদস্যকে ঈদ-মুবারক জানাই (F)
@আফরোজা আলম,
মুক্তমনার সবাইকে আবারও ঈদ মোবারক!
আফরোজা আপনার সব কথাই আমারও মনের কথা।
পৃথিবীটা এমনিই কোলাহলে মগ্ন, এই আনন্দের দিলগুলিতেই আমরা ভালবাসা, সৌহার্দে সিক্ত হই।
এসবে কারও বাধা না দেয়াই উচিত বলে মনে হয় আমার!(F)
আজীব!! ঈদ কার বাপের কী দেখার নাই আমার…ঈদ না আসলে কী ফিতরার টাকা মেরে দিয়ে মিরিন্ডা খাওয়া হইতো?? :lotpot: আমারে দিসে ফিতরার টাকা…দেখলাম ফকির টকির আসেনা…ধুররর দিলাম মেরে 😛 তারপর বন্ধুরা মিলে খাইতেসি, যখন বলসি এই কাহিনী, দুইজন পারলে বমি করে পেট থেকে বাইর কইর্যা দেয়…আর আরেকজন ছিলো নাস্তিক…একজন ছিলো হিন্দু আমরা হাসতে হাসতে মরি।
আর ঈদকে ধর্মীয় অনুষ্ঠান ধরে বসে থাকলে চলবে না, তার মোক্ষম প্রমাণ ও মোর রমজানের ঐ রোযার শেষে, এলো খুশীর ঈদ গানটার এই রিমিক্স ভার্শনটা :)) মডেলগুলা এক্কেবারে এহেম :))
মঙ্গল শোভাযাত্রা মঙ্গলের উদ্দেশ্যে হলে এর গুষ্টিও কিলাই না কিন্তু রঙ মাখামাখি করে নাচন কুদ্দোন হলে একশবার রাজি। ঈদকে পুরা মাস সিয়ামের পর সিলেব্রেশান ভেবে যে সিলেব্রেট করছে তার সাথে আমার সম্পর্ক নাই। ঈদ এখন কয়জনই বা ধর্মীয় নিয়ম পালনের উদ্দেশ্যে সিলেব্রেট করে আমার সন্দেহ আছে…এইটা এখন ট্রেডিশন হয়ে গেছে। গ্যারান্টি দিতে পারি, দেশের ৬০% লোক নাস্তিক হয়ে গেলেও ঈদে নাচন কুদ্দোন করতে কেউ ছাড়বে না। ছাড়ার দরকারও আমি খুব দেখিনা যদিনা মুসলিম সংস্কৃতি মানেই অচ্ছুৎ ভাবা হয় 🙂
@টেকি সাফি,
ধর্মহীনদের একেক জনের কাছে ধর্মীয় উৎসবগুলো একেকরকম। অনেকে মনে করে নাস্তিকেরা একটা সুবিধা পায়, যেটা হল তারা সবগুলো ধর্মীয় উৎসবকেই উপভোগ করতে পারে। আবার অনেকের কাছে একেকটা ধর্মীয় উৎসব একেকটা মূর্তিমান যন্ত্রণা। আপনি ফেসবুকেও দেখেছেন ঈদ নিয়ে নাস্তিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
ঈদের গানটি আমার কাছে সবসময় চরম বিরক্তিকর লাগলেও বলতে হবে ভিডিওটা আসলেই…
বড় বাঁচা বেঁচে গেলাম। ভাগ্যিস বাজীর দরটা বলিনি। 🙂
@মইনুল রাজু,
আমার মনে হয় চরম নাস্তিকতাও একধরনের মৌলবাদ।
তাই যার যা ভালো লাগে তাই করবে। কারো ক্ষতি না করে।
@আফরোজা আলম,
ঠিকই বলেছেন। অযৌক্তিভাবে কোনো কিছুতে স্ট্রিক্ট হয়ে থাকার মানে নেই, সেটা আস্তিকতা হোক, আর নাস্তিকতা হোক।
ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
কাজী সবাইকে ঈদ মোবারক
ক্লিক করলাম, বরাবরের মত আবারও সেই মেজাজ বিগড়ানো মিউজিক আর গান। ঈদের দিনে মুক্তমনায় এসেও যদি এই গান শুনা লাগে তাইলে আর কই যাওয়ার থাকে??? :-Y
:-Y
বুঝলাম। এখন তাহলে আমাকে সংস্কৃতিবিমুখ হতে হবে। (W)
আশা করি আপনার ঈদ ভাল কাটবে (F)
@অভীক,
আপনার সাথে একমত। চারপাশে ধর্মের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মুক্তমনায় এসে একটু শান্তি ও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলি। এখানেও দেখছি ধর্মীয় শুভেচ্ছা বিনিময় হচ্ছে!!
@তামান্না ঝুমু,
অবশেষে নিঃশ্বাসটা কি ফেলতে পেরেছেন, না-কি এখনো দম বন্ধ করে আছেন? 🙂
@মইনুল রাজু,
নিশ্বাস তো ফেলতে হয়েছে অবশেষে জীবন রক্ষার জন্যে কিন্তু সেটা স্বস্তির নয়। মুক্তমনায়ও যদি অবশেষে ধর্মের উপদ্রব শুরু হয় তবে যাবো কোথায়?:-?
@তামান্না ঝুমু,
একটা শুভেচ্ছা বাণীকে উপদ্রব না ভাবলে, আপনার যাওয়ার একটা জায়গা অন্তত থাকতো। অবশ্যধর্ম বিষয়ক যেকোনো কিছু শুনতেই বা দেখতেই যদি আপনার অস্থির, অস্বস্তি লাগে, তাহলে আপনার জন্য সেটা উপদ্রবই বটে।
@মইনুল রাজু,
একদম ঠিক বলেছেন (Y)
@অভীক,
কোনটা আমার সংস্কৃতি :-X :-s
হাঁ , এটা সংস্কৃতির অংশ। আমাদের ঈদ ,খাবার দাবার,পুজা পরবন , নবান্ন,শহিদ দিবস… এগুলো আমাদের সংস্কৃতির অংশ । নামাজ না পড়লেও । মিলন মেলাতে যুক্তি অচল । পুজার প্রাসাদ … আহা কি মজা… যেমন ঈদ এ মা এর পায়েস।
@সপ্তক,
মিলন মেলাতে যুক্তি অচল, ভালো বলেছেন। অবশ্য অন্যভাবেও বলা যায়, মিলন মেলাতে সকলের যে সন্মিলন, সেটাই বড় যুক্তি।
ধন্যবাদ আপনাকে।