[ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, আমার ইউনিকোডে কিছু সমস্যা হবার কারণে বেশ কিছু শব্দ ভেঙ্গে যেতে পারে এবং বানানে কিছু ভুল থেকে যেতে পারে…]
প্রথমে ভেবেছিলাম লেখাটিতে কোন কমেন্ট করবো না। কারণ এই বিষয়গুলো নতুন কিছু না। আবার আমি যে মন্তব্য করবো সেটাও হয়ত নতুন কিছু হবে না। এটা নিয়ে আগেই অনেকে লিখেছেন এবং বেশির ভাগ মানুষই তা আমলে আনেন নি। কারণ, রবীন্দ্রনাথের গান-কবিতা যার ভালো লাগে, সে রবীন্দ্রনাথকে ঐ গান এবং ঐ কবিতার মধ্য দিয়েই আবিষ্কার করতে চায়। রবীন্দ্রনাথ কেমন মানুষ ছিলেন, বিয়ে কয়টা করেছেন, সুদ খেতেন কি-না – এসব গবেষকদের বিষয়। রবীন্দ্রনাথের গান ভাল কিনা মন্দ তা নির্ণয় করার জন্য তা্ঁর ব্যক্তি জীবন প্রয়োজন হয় না। তবে এটা যে জানার প্রয়োজন নেই সে কথা আমি বলছি না। একটা মানুষ আমার আদর্শ হতে পারে কিনা সেটা নির্ণয় করার জন্য এটা অতীব জরুরী। এই প্রবন্ধটা সেই প্রয়াস থেকে দেখতে গেলে বলতে হয় এখানে মানুষ রবীন্দ্রনাথের শুধু নেগেটিভ দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং, সম্পূর্ণ আলোচনা না এটি।
এই লেখায় নতুন কথা আমি প্রায় একটিও পাইনি বলা যায়। ফরহাদ মাযহার এ নিয়ে লিখে বেশ আলোচিত ও পরিচিত হয়েছেন। আর এখানে তো আহমদ শরীফ এবং নীরদ চৌধুরীর প্রবন্ধ তুলেই দেওয়া হয়েছে। ঐগুলো আমি আগেই পড়েছিলাম। বোঝা যাচ্ছে, লেখকরা এই বইগুলো পড়েছেন এবং অতি গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন। তা্ঁদের উচিত আরও সময় নিয়ে রবীন্দ্রনাথকে পড়ে ও জেনে এ ধরনের লেখায় হাত দেওয়া। এবং নতুন কিছু বলার না থাকলে লেখার প্রয়োজন কি? তবে হ্যা্ঁ, এই ধরনের লেখা লিখে যে তাড়াতাড়ি পরিচিত হওয়া যায়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। রবীন্দ্রনাথকে অন্যের গান চুরির যে অপবাদ দেওয়া হয়েছে, তা সাহিত্যে ও শিল্পে নতুন কিছু না। এটাকে চুরি বলা সঙ্গত নয় বলে আমি মনে করি। কারণ সাহিত্য মানেই তো কপি করা, সেটা জীবনকে হতে পারে, প্রকৃতিকে হতে পারে। গল্পের চরিত্রগুলো তো সমাজ থেকেই নেয়া। তার মানে কি এটা নকল? সাহিত্য তো বিজ্ঞান না যে গবেষণা করে নতুন কিছু আবিষ্কার করা যাবে। শেক্সপিয়র-এর ৩৭ টা নাটকের মধ্যে ৩৬ টাই বিভিন্ন জায়গা থেকে গল্প নিয়ে লেখা। তাতে কি শেক্সপিয়র ছোট হয়ে গিয়েছেন? এটা এক ধরনের অনুবাদও বটে। এবং সাহিত্য তো অনুবাদ ছাড়া আর কিছু না। লেখকরা কখনও জীবনকে অনুবাদ করেন কখনও একটি ধারাকে অনুবাদ করেন। রবীন্দ্রনাথ সেটা করে আরও ভালো করেছেন। তার মানে তিনি একজন ভালো অনুবাদকও ছিলেন। আমরা তার মধ্যে দিয়ে অনেক কিছু পেয়েছি। এজন্য বরং তা্ঁকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আর একটি কথা আছে, nothing is new under the sun, সে অর্থে, আলোচকদ্বয় শ্রদ্ধেয় ফরিদ আহমেদ এবং অভিজিৎ যে কথাগুলো লিখেছেন তা মৌলিক নয়। তা্রা যে বিবর্তন নিয়ে লেখেন তা তো এক ধরনের অনুবাদই, চুরি করা বলতে আমি নারাজ।
আর, রবীন্দ্রনাথ সাধারণ মানুষদের জন্য কতটুকু করতে পেরেছেন জানি না, তবে চেষ্টা করেছিলেন। যে চেষ্টা খুব কম মানুষই করেছেন। চেষ্টা করেছিলেন বলেই, ইংল্যান্ড ও কলকাতার আয়েশী জীবন ছেড়ে কুষ্টিয়ার ভড় গ্রামে বাস করেছেন। শিলাইদহ অঞ্চলে আমার বাড়ি, আমি জানি সেখানে বাস করা কত কঠিন। আমাদের অনেকেই সেখানে একটি দিনও যাপন করতে পারবেন কি-না সন্দেহ আছে। এখন যদি কেউ বলেন, রবীন্দ্রনাথ টাকা কামানোর জন্য সেথানে ছিলেন, আমাদেরকেও পর্যাপ্ত টাকা দিলে পরিবার নিয়ে থাকতে পারবো, তাহলে ভিন্ন কথা। রবীন্দ্রনাথ কিছু করতে চেয়েছেন বলেই তো ঐ চাষা মানুষদের সাথে থেকেছেন। কাদা-মাটি আর মশা-মাছিতে ভরা অঞ্চলে স্বপ্নের বীজ বপন করেছেন। উনার কি কলকাতা থাকলে ভাতের অভাব হতো। তিনি সাহিত্যিক ছিলেন, সাহিত্যিক তো আরো ছিলেন, ও আছেন। তার কি দরকার ছিল ঐ কৃষি উন্নয়ন নিয়ে কাজ করার, পল্লী উন্নয়ন নিয়ে চিন্তা করার? কি প্রয়োজন ছিল, ব্যাংক খুলে নোবেল থেকে প্রাপ্ত সমস্ত অর্থ বিলিয়ে দেওয়ার? কি দরকার ছিল স্কুল প্রতিষ্ঠা করার? ছেলেকে ও জামাইকে এতো দামি দামি বিষয় থাকতে কৃষি নিয়ে পড়াশুনার জন্য বিলেতে পাঠানোর? আমরা পারবো আমাদের সন্তানদের ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিবিএ না পড়িয়ে কৃষি বিষয়ে পড়ানোর কথা ভাবতে? আদৌ ভাবছি কি আমরা? তার মত গ্রাম-উন্নয়নের চিন্তা কি অন্য কেউ করেছেন? তিনি কলকাতার হিন্দু পাড়ার মানুষ, তা্ঁর কি দরকার ছিল পূর্ববঙ্গের মুসলমান পাড়ার মানুষদের নিয়ে এতো সব ভাবনা করার?? রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, গ্রামগুলো মরে গেছে, তিনি গ্রামগুলোকে বাচাতে চেষ্টা করেছেন। গ্রাম্য মেলার আয়োজন করা তার সেই প্রচেষ্টার্ই অংশ মাত্র। তিনি যখন স্ত্রী হারিয়েছিলেন তখনও তা্ঁর বয়স ছিল দ্বিতীয় বিবাহ করার মত। চাইলেই কয়েকটি বিবাহ করে আয়েশ করে জীবন কাটিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তা তিনি করেন নি। নাকি এখানেও না করার পেছনে তার কোনও কু-মতলব ছিল? স্ত্রী, কন্যা, ছেলে হারিয়েও তিনি সৃষ্টিকর্ম চালিয়ে গেছেন। এর জন্য কি আমরা বলবো যে তিনি তা্ঁর স্ত্রী, সন্তানদের ভালোবাসতেন না ?
আবুল আহসান চৌধুরীর কয়েকটা মন্তব্য শাশ্বতিকীর প্রকাশিতব্য রবীন্দ্র সংখ্যা থেকে এখানে উঠিয়ে দেয়ার প্রয়োজন মনে করছি—
[]একজন মুসলমান প্রজা রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন এই রকম যে আমাদের অনেক মহামানুষকেই আমরা দেখিনি কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে দেখলে তেমন মনে হয়। এইরকম একটা মন্তব্য করেছিলেন আর কি। বিষয়টি একটু বিতর্কিত হতে পারে। তিনি সবেচেয়ে বড় যে কথাটি বলেছিলেন- আমি সাহাদের হাত থেকে শেখদের রক্ষা করার জন্য এসেছি জমিদারি দায়িত্বে।
[]মুসলিম লেখকদের তিনি যেভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন, যেভাবে তাঁদের সমাদর করেছেন, যেভাবে তাঁদের তুলে ধরেছেন, তাঁদের বিখ্যাত হওয়ার পথে এগিয়ে দিয়েছেন তা আর কেউ করেননি। সেই সব ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের সময়ে আরও যারা বিখ্যাত অমুসলিম লেখক ছিলেন তাঁরা নীরব ভূমিকা পালন করেছেন অথবা বিদ্বেষ পোষণ করেছেন।
[]সেই হাছন রাজার গান রবীন্দ্রনাথের হাতে যখন পড়লো তখন তিনি এতটাই মুগ্ধ হলেন যে তিনি ভারতীয় দর্শন মহাসমাবেশের অধিবেশনে যে ভাষণ দিলেন তাতে হাছন রাজার গানের কথা উল্লেখ করলেন। আবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন হিবার্ট লেকচার দিলেন ‘The religion of man’ নামে সেখানেও তিনি হাছন রাজার গানের উল্লেখ করলেন ‘‘মম অাঁখি হইতে পয়দা আসমান ও জমিন’’ এই গানটি রবীন্দ্রনাথ উল্লেখ করেছেন এবং রবীন্দ্রনাথ ভারী চমৎকার-দার্শনিক ব্যাখ্যা করেছেন।
[] তিনি লালনের গান সংগ্রহ করেছেন। লালনের গান তিনি প্রকাশ করেছেন। ‘হারামনি’ বলে একটি বিভাগ প্রবর্তিত হল ‘প্রবাসী’ পত্রিকায়, সেখানে তিনি গগণ হরকরার ‘আমি কোথায় পাবো তারে’ এই গানটি ছাপলেন একে একে লালনের কুড়িটি গান তিনি প্রকাশ করেছিলেন চার কিসিত্মতে। লালনের গানের দুটি খাতা তিনি ছেউড়িয়া থেকে সংগ্রহ করেছিলেন এবং সেটি এখন বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনে সংগৃহিত আছে।
আমার একটি প্রশ্নের চমতকার ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। তার কিছু অংশ এখানে তুলে দেওয়া হল-
••মোজাফ্ফর : তিনি তাঁর মেয়ের বাল্য বিবাহ দিচ্ছেন। আবার তাঁর পরিবারে বিধবা ছিল, তিনি তাদের বিয়ের ব্যাপারে অনুৎসাহ প্রকাশ করছেন। এটা একধরনের স্ববিরোধীতা হয়ে গেল না ?
•আবুল আহসান চৌধুরী : মহৎ মানুষ এবং মহৎ শিল্পীর ভিতরেই স্ববিরোধীতা থাকে। তুমি বাইরের দিকে তাকাও- টলসত্ময়-এর লেখায় আমরা রাশিয়ার জীবনের অমত্মরঙ্গ চিত্র খুঁজে পাই, তাঁর লেখা প্রগতিশীলতার দিকে আলো নিক্ষেপ করে। টলসত্ময় সম্পর্কে খুব চমৎকার মূল্যায়ন করেছেন লেলিন, যে যাজকতন্ত্রের ও সমাজতন্ত্রের প্রতি একটা মোহ বা দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও টলসত্ময় রাশিয়ার মহান সমত্মান। এই রকম একটা কথা বলেছেন। রবীন্দ্রনাথের স্ববিরোধীতার কথা অনেক আছে। তুমি তো কেবল একটা বললে যে রবীন্দ্রনাথ নারীর বিকাশের কথা বলে বেড়ালেও তাঁর মেয়েদের কাউকে তিনি লেখাপড়া শেখাননি। পাশাপাশি তাঁর ভাইয়ের মেয়েরা রীতিমত বাইরে গিয়ে লেখাপড়া করছে। সবচেয়ে বড় অভিযোগ যেটা আসে, তিনি এত নারী মুক্তির কথা বলেছেন অথচ তিনি নিজে বাল্য বিবাহ করেছেন। সেটি অনুমোদন করা যায় এই কারণে যে সেই সময়টা ছিল উনিশ শতক। কিন্তু সমাজ যখন অনেকদূর এগিয়ে গেছে সেই সময়ে এসে তিনি সবকটি মেয়ের বাল্য বিবাহ দিয়েছেন। এছাড়াও রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তি জীবনে অনেক স্ববিরোধীতা ছিল। সেগুলো আমরা কখনই বড় করে দেখবো না। কিন্তু এও আমরা চাইবো না যে রবীন্দ্র স্ত্ততিকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে যা দেখে রবীন্দ্রনাথ নিজেই বিব্রত হোন। অতিস্ত্ততি সবসময় ভুল পথে নিয়ে চলে বা বিতর্কিত করে তোলে। রবীন্দ্রনাথ কখনো কখনো এর শিকার হয়েছিলেন। নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর শামিত্মনিকেতনে তাঁকে যে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়, সেখানে তাঁর বক্তব্য শুনে সকলে ক্ষুব্ধ হয়ে না খেয়ে কলকাতায় ফিরে যান। এই ব্যাপারগুলোর মধ্য দিয়ে আমরা বুঝতে পারি যে তিনি কখনো কখনো অসহিষ্ণু হয়েছিলেন। যদিও রবীন্দ্রনাথ অনেক আঘাত পেয়েছেন বাঙালী সমাজের কাছ থেকে যে কারণে তারা যখন সম্মান দিতে যাচ্ছেন তখন তাঁর ভিতরে একটা প্রতিক্রিয়া জেগেছে। কিন্তু সেই প্রতিক্রিয়াটা শোভন ছিল না। যাই হোক, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সাথে প্রথম দিকে তাঁর সম্পর্ক খুব মধুর ছিল কিন্তু পরে নানা কারণে এই সম্পর্ক এতটাই খারাপ হয়ে পড়লো যে (তার দায়ভার দ্বিজন্দ্রেলাল রায়েরই বেশি) তিনি কোন কোন লেখায় রবীন্দ্রনাথের গান সম্পর্কে এমন মমত্মব্য করলেন যে, যেমন, ‘কেন যামিনী না যেতে জাগালেনা, বেলা হলো মোর লাজে..’ ডি.এল.রায় এই গানটি সম্পর্কে মমত্মব্য বললেন যে এটি একটি লাম্পট্যগীতি। তারপরে একেবারে শেষ জীবনে তিনি রবীন্দ্রনাথকে নগ্নভাবে আক্রমন করে ‘আনন্দ বিদায়’ লিখলেন, সেটি যখন মঞ্চস্থ হচ্ছিলো দর্শকরা তখন তা বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই ডি.এল.রায় যখন অল্প বয়সে মারা গেলেন(১৯১৩) তখন কৃষ্ণনগরে একটা শোক সভার আয়োজন করা হয়। কবি বিজয়লাল চট্টোপাধ্যায় যিনি সে কালের নামকরা রাজনীতিবিদ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বন্ধু হেমমত্ম কুমার সরকারের শিষ্য ছিলেন, রবীন্দ্রনাথের কাছে চিঠি লেখেন শোক অনুষ্ঠানে পাঠ করার জন্য বা স্মরণিকায় ছাপা হয় এইরকম মমত্মব্য চেয়ে। তো রবীন্দ্রনাথ নাকি এই রকম জবাব দিয়েছিলেন, যে সারা জীবন ধরে আমাকে অবমাননার ভেতর ফেলেছেন, আমাকে অপমান করেছেন তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করার মত উদারতা আমার নেই। এতে অনেকে ক্ষুব্ধ হোন এবং বিজয়লাল ক্ষুব্ধ হয়ে এ কথা বলেন যে যদি তিনি কোন লেখা না পাঠান তাহলে এটিই ছেপে দেবেন। পরে অবশ্য রবীন্দ্রনাথ কয়েক ছত্র লিখে পাঠিয়েছিলেন। ভাবতে হবে যে রবীন্দ্রনাথও একজন মানুষ। তিনি ডি.এল. রায়ের কাছ থেকে যে আঘাত পেয়েছিলেন সেই আঘাত সহ্য করে তাঁর সম্পর্কে ভালো কথা বলা ভারী কঠিন। তবে প্রত্যাশাতো রবীন্দ্রনাথের কাছে একটু বেশিই থাকবে, এটিই স্বাভাবিক। সুতরাং রবীন্দ্রনাথ যা, তা আমাদের বলা উচিৎ বা তুলে ধরা উচিৎ। ভাল-মন্দ মিলিয়ে মানুষ। আমরা রবীন্দ্রনাথকে মানুষ হিসেবে দেখতে চাই।
আমার মনে হয় এটুকুই যথেষ্ট। আমি চাইলে রবীন্দ্রনাথের ভালো কর্মের উদাহরণ, তার সপক্ষের যুক্তি ও অন্যদের মন্তব্য দিয়ে পুরো মুক্তমনা ভরে দিতে পারি। কিন্তু সেটা করে আমি পাঠকদের ধৈর্য ও সময় নষ্ট করছি না।
আলোচ্য প্রবেন্ধ বলা হয়েছে, রবীন্দ্রসাহিত্যে সাধারণ মানুষের কথা আসেনি। আমি তো বলবো রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য জুড়েই মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তদের কথা। প্রায় প্রতিটা গল্প-উপন্যাস ধরে ধরে সেটা দেখিয়ে দেওয়া যায়। আর তা্ঁর গান শুনে কেউ যদি সুখ পায়, তাহলে দোষের কি। এমনিতে আমাদের বাঙালিদের অনেক দু:খ, অনেক কষ্ট, অনেক হাহাকার, রবীন্দ্রনাথের গান যদি তাদের এই বেহাল দশাকে সাময়িকভাবে দমিয়ে রাখতে পারে, জীবনের স্বাদ এনে দেয় তাহলে তো দোষের কিছু দেখি না। তা্ঁর গান ভালোলাগাটা একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। যার ভালো লাগে না, সে শুনবে না—ব্যাস, চুটে গেল ঝামেলা। তবে এটা ঠিক, রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে অনেক কথা হয়েছে, কিন্তু তাতে তার জনপ্রিয়তার কোন হেরফের হয়নি। আজ তা্ঁর জন্মের ১৫০ বছর পার হয়ে গেলেও কিন্তু তা্ঁর জনপ্রিয়তার কোন হেরফের হয়নি। এখনও তা্ঁর বই সব থেকে বেশি বিক্রি হয়। প্রশ্ন তোলা হয়েছে তা্ঁর স্থায়িত্ব নিয়ে। হোমার, ভার্জিল কি মরে গেছেন? ‘বেউল্ফ’ তো আমরা এখনো পড়ি। রবীন্দ্রনাথ থাকবেন কি না, এটা সময়ের ওপর ছেড়ে দিলে ভালো হয়্ না?
এই লেখাটি নিয়ে আমার কোনও আপত্তি নেই। রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে যে সমালোচনা সেটা আরেকবার- বার বার, বাজিয়ে দেখা যেতেই পারে, এতে আমি দোষের কিছু দেখি না। কিন্তু এই লেখাটি পড়লে, ভাষার টন দেখেই বোঝা যায় রবীন্দ্রনাথকে ছোট করে দেখাটাই এই লেখার উদ্দেশ্য। মনে হচ্ছে লেখাটি তাদের উপর ক্ষোভ থেকে লেখা যারা রবীন্দ্রনাথকে শুধুমাত্র ভগবান হিসেবে মনে করেন। যেহেতু মুক্তমনায় গড বা আল্লাহর বিরুদ্ধে লেখা হয়, তাই রবীন্দ্রনাথকে গড বানালে তা্ঁর বিরুদ্ধেও মুক্তমনায় মাতামাতি শুরু হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। যদি তাই হয়, এই মাতামাতিকে আমি দোষের কিছু দেখি না। কিন্তু গড এর জায়গায় রবীন্দ্রনাথকে কেউ বসান নি। তা্ঁর কাছে কেউ স্বর্গ লাভের জন্য প্রার্থনা করে না। তা্ঁর নামে কোনও মাজার প্রতিষ্ঠিত করা হয়নি। আমি দেখেছি, লালনের মাজারে মানুষ গডকে পেতে যায়, কিন্তু রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়িতে সবাই যায় রবীন্দ্রনাথের অস্তিত্বকে অনুধাবন করতে। তার গান গেয়ে পূজা করা হয়, কিন্তু সেই পূজা অন্য ভগবানকে উদ্দেশ্য করে। রবীন্দ্রনাথ কারও ঈশ্বর নয়, একথা জোর দিয়েই বলা যায়। তবে হ্যা্ঁ, তা্ঁকে মহামানব মনে করেন অনেকেই। তিনি তো সাধারণ মানুষ নন। সব মানুষ যদি একই কাতার ভুক্ত না হয়, তাহলে তা্ঁকে মহামানব বলা যেতেই পারে। মহামানব বলা মানে তো আর মানবিক অবস্থা থেকে তা্ঁর নাম খারিজ করে দেওয়া নই? তিনি মানুষ কিন্তু মহান, ব্যাপারটা এই রকম। তাই যদি হয়, তাহলে এই লেখাটির অর্থ কি, মানে নতুন করে এর কি এমন গুরুত্ব তৈরি হলো? যারা রবীন্দ্রনাথের মানবিক দোষগুলো সম্পর্কে অবগত হয়ে তা্ঁর সৃষ্টিকর্মকে ছুড়ে ফেলে দিবে, তা্ঁদের জন্য আমার করুণা হয়।
এই লেখাটি শুধুই রবীন্দ্রনাথের নেগেটিভিটি নিয়ে লেখা। এ জাতিয় লেখা মুক্তমনায় একেবারে বেমানান বলে আমি মনে করি। যদি তা্ঁর ভালো দিকগুলোও অনুসন্ধান করার চেষ্টা করা হতো তাহলে এটি নিয়ে আর কোন কথা বলার থাকতো না। রবীন্দ্রনাথের ভালো দিকগুলো এই লেখায় আলোকপাত করা হয়নি। ইভেন লেখাটি পড়তে পড়তে একবারও মনে হয়নি যে রবীন্দ্রনাথের ভালো কোনও দিক থাকতে পারে।
লেখাটি পড়লে বোঝা যায়– রবীন্দ্রনাথ ভালো লিখতেন, তবে নকল কিংবা চুরি করে। তিনি গান লিখতেন অন্যের সুর নকল করে। তিনি শিলাইদহর মত বিশুদ্ধ গ্রামে গিয়েছিলেন কৃষকদের যতটা সম্ভব হাতিয়ে নিতে। তিনি অনেক লিখেছেন কারণ তিনি দীর্ঘদিন জীবিত ছিলেন। তিনি লেখালেখি করেছেন কারণ তাকে ভাত নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি। এই মানুষের আবার ভালো দিক থাকতে পারে???
আলোচকরা বলেছেন, “একদল যেমন ভক্তিরসে ভরপুর হয়ে তাকে পূজা করে ছাড়ছে, অন্য দল তেমনি তার বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিষোদগার বর্ষণ করে চলেছে, মূলত: সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে” এখন প্রশ্ন হচ্ছে তা্ঁরা কোন দলে? অন্তত এই প্রবন্ধ দিয়ে নিরপেক্ষ বা মাঝামাঝি পর্যায়ে দাবি করা সম্ভব না। তবে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চাই, একজন শিল্পীকে তা্ঁর শিল্প দিয়েই বিচার করা হোক। আমরা যেহেতু প্রতিটা মানুষই ভুলে ভরা। সুতরাং অন্যের ভুল নিয়ে এতো মাতামাতি করার কোনও প্রয়োজন দেখি না, আর মানুষটি মৃত হলে তো আর কোনও প্রশ্নই আসে না। আর একটা মানুষকে পূজা করা তো আমি গণ্ড মূর্খের কাজ বলে মনে করি।
আলোচকরা বলছেন- […] …যেখানে কবি সাহিত্যিকদের বেশিরভাগেরই প্রতিষ্ঠা আসে জীবনের প্রথম চল্লিশ বছরের মধ্যে, তারপর তাদের মোটামুটি বন্ধ্যাত্ব নেমে আসে। সেখানে রবীন্দ্রনাথ আমৃত্যু লিখে গিয়েছেন অকাতরে। শুধু লিখে গিয়েছেন বললে ভুল হবে, উৎকর্ষের দিক দিয়ে বরং শেষের লেখাগুলো ছাড়িয়ে গিয়াছে আগের রবীন্দ্রনাথকে। এ বিষয়ে নীরদ চৌধুরী লিখেছেন: ওয়ার্ডসওয়ার্থ, টেনিসন, ব্রাউনিং কেহই পরবর্তী জীবনে আগের রচনার তুলনায় উৎকৃষ্টতর কবিতা লেখেন নাই- ইহাদের কবিকীর্তি চল্লিশ বতসরের আগে রচিত কাব্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত।” তার মানে তা্ঁরা বোঝাতে চাচ্ছেন, রবীন্দ্রনাথ এক্ষেত্রে দুই নাম্বারি করে চালিয়ে গেছেন, নইলে তা্ঁরও ওয়ার্ডসওয়ার্থ, টেনিসন, ব্রাউনিং-এর দশা হতো। এক্ষেত্রেও তা্ঁরা নীরদচন্দ্র চৌধুরীর মন্ত্র পাঠ করেছেন। (আমি আগেই বলেছি, নীরদচন্দ্র চৌধুরীর অনেক কথা প্রামাণ্য হিসেবে ধরা যাবে না, কারণ সেগুলোর কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। কথাটা শঙ্খ ঘোষের) কিন্তু তা্ঁরা বিজ্ঞান মনষ্কা মানুষ হওয়া স্বত্বেও নীরদচন্দ্র্রের কুসংস্কারকে কেন প্রাধান্য দিলেন তা বোঝা বেশ কষ্ট সাধ্য। রবীন্দ্রনাথ কিন্তু বিশ বছরের আগেই লেখালেখি করে নাম কামিয়েছেন, অনুবাদ করেছেন শেক্সপিয়র। সুতরাং তিনি যে ওয়ার্ডসওয়ার্থ, টেনিসন, ব্রাউনিং নন, তা নিশ্চয় বলা যায়?
‘তার দীর্ঘায়ু তাকে এ সুযোগ-সৌভাগ্য দিয়েছে।” এবং ‘সচ্ছল পরিবারে জন্ম হওয়ার কারেণ তাকে জীবিকা নিয়ে তেমন করে ভাবতে হয়িন কখনো। ফলে আমৃত্যু তিনি সার্বক্ষণিক সাহিত্য সৃষ্টির জন্য অফুরান সময় পেয়েছেন।”– এ কথা বার বার বলে তা্ঁর সমস্ত সৃষ্টিকর্মকে হেয় করার একটা প্রচেষ্টা এই লেখাটিতে করা হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথের গানকে নতুন ভাবে পরিবেশনের পক্ষে এখানে বলা হয়েছে। আমি তার বিরোধিতা করছি না। তবে শ্রোতারা যদি সত্যিই তা চান, তাহলে নিয়ম করে তা ঠেকাতে পারবে না কেউ। আমার মনে হয় শ্রোতারা এখনো সেটা চাইতে শুরু করেনি।
আসলেই কি তাই?ফরিদ আহমেদ এবং অভিজিৎ–কে অনুরোধ করে বলবো, নীরদচন্দ্র, আহমদ শরীফ, ও ফরহাদ মাযহারের মত মানুষের লেখাগুলো মগজ থেকে বের করে একটু মুক্তচিন্তা করে দেখার জন্য। রবীন্দ্রনাথের জীবনী ও সাহিত্যকর্মগুলোকে আরও একবার পড়ে নিজ মেধায় গবেষণা করার জন্য, আমার মনে হয় তিনি রবীন্দ্রনাথের এতো এতো পটজিটিভ দিক পাবেন যে তা লিখতে গেলে মুক্তমনার ধার্য ক্ষমতা ছাড়িয়ে যাবে। তখন রবীন্দ্রনাথের মানুষ হিসেবে যে সীমাবদ্ধতা আছে তা তা্ঁরা এতো গুরুত্ব দিয়ে আমলে আনবেন না। এটা আমার বিশ্বাস আর কি। নির্ভর করছে গ্রহীতার ওপর। ফুলে যতই মধু থাক না কেন ভ্রমর সেখান থেকে বিষই নেবে, আর মৌমাছি মধু। এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তবে আমরা চাই দুই যায়গা থেকেই ফুলকে বিশ্লেষণ করতে।
আমি রবীন্দ্র মৌলবাদ নই, কিন্তু তা্ঁর ভুলগুলো গ্রহণ করেও আমি তা্ঁকে মহামানব বলে স্বীকার করি, মানে সাধারণ মানুষ নন বলে মান্য করি। আলোচ্য প্রবন্ধটি পড়ে তার কোনও হেরফের হয়নি। আর তা্ঁকে নবী বা ভগবানের আসনে বসানোর প্রশ্ন তখনই আসে যখন আমি এই দুটোকে বিশ্বাস করবো। সুতরাং এ প্রশ্ন আমার ক্ষেত্রে বাতিল বলে ধরে নিচ্ছি। তবে তা্ঁকে বাঙালির ভগবান বা নবী (ভিন্ন অর্থে) হিসেবে মনে করাকে আমি অন্যায় মনে করি না।
তবে হ্যা্ঁ, আমি ফরিদ আহমেদ এবং অভিজিৎ- কে ধন্যবাদ জানাই যে তা্ঁরা আমাদের সাহিত্য নিয়েও ভাবছেন। একজন শিক্ষিত মানুষের তা্ঁর দেশের বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য, কৃষি, সমাজ ব্যবস্থাসহ আরো আরো অনেক বিষয় নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার দরকার আছে। এটা হলেই আমাদের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে impersonal হওয়াটা খুব জরুরি। আর রবীন্দ্রনাথ বা্ঁচবেন কি মরবেন সেটা বরং আমরা সময়ের উপরেই ছেড়ে দিই। মাতামাতি তো আর কম হলো না, আসুন আমরা অন্যদের নিয়েও ভাবি।
কেউ মনে করতে পারেন, মুক্তমনায় বসে মুক্তমনার এডমিনদের লেখা নিয়ে আমি সমালোচনা করছি। আমার মত পুঁচকে ইঁদুরের সাহস তো কম না ?!? কিন্তু এটা “মুক্তমনা”। এখানে সবই সম্ভব। আশা করি, মুক্তমনায় রবীন্দ্রনাথের মত নিচু মানসিকতার এমন কেউ নেই যার লেখার সমালোচনা করলে ক্ষেপে যাবেন এবং স্বনামে কিংবা ছদ্মনামে তার প্রতিবাদ করবেন !!
সুতরাং আমি নির্ভয়ে থাকতে পারি?
আ
যারা এই পোস্টটি পড়েছেন ও মন্তব্য করেছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ ও শুভকামনা।
একটি গান শুনুন–
গানটি গিরিজা দেবীর গাওয়া ঠুমরী মিশ্র সুর
রচনা : সনদ পিয়া
এই ঠুমরীর সুর অবলম্বনে রবীন্দ্রনাথ করেছেন তাঁর গান–
গানটি শুনতে ক্লক করুন–লিংক
লিংকটিতে প্রথমে গিরিজা দেবীর ঠুমরীটি পাবেন। তারপরেই নীলিমা সেনের সেনের খেলার সাথী গানটি পাবেন।
রবীন্দ্রনাথ সনদ পিয়ার ঠুমরীটি ভেঙে যখন খেলার সাথী গানটি করলেন, তখন কিন্তু বাঙালি ঠুমরীর আস্বাদটি নিজের করে পেল। ঠুমরীতো এক সময় দরবারী সঙ্গীত ছিল। সেখানে বাঙালির পরিচয় খুব বেশী ছিল না। রবীন্দ্রনাথ যখন এই ঠুমরীর সুরে বানী বসালেন–দেখেন কী বিষাদ আর হাহাকার আমাদের মনে পৌঁছে দিলেন। ঠুমরীর দরবার মনের প্রান্তরে ছড়িয়ে পড়ল।
কিন্তু সনদ পিয়ার ঠুমরীটি কি তাদের নিজের রচনা? তার রচনা নয়। তিনিও নিয়েছেন তাঁর পূর্বসূরী দক্ষিণী সুর-রচনাকারের কাছ থেকে। নিয়ে সনদ পিয়া রচনা করছেন এই ঠুমরী। কিন্তু তা মিশ্র সুরে। তার মানে? তিনি অনেকগুলো সুর থেকে সুর মিশিয়ে করেছেন এই ঠুমরীটি। তাই এ্কে মিশ্র সুরের বলা হয়েছে।
এইভাবেই সুর রূপান্তরিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। বহুজনের সৃষ্টিতে পরিণত হয়। এটা গান রচনার একটি পদ্ধতি। অনুসন্ধিৎসুগণ চেষ্টা করলেই এরকম বহু উদাহরণ পাবেন। তখন চোর বলা মুশকিল হয়ে পড়বে।
@কুলদা রায়,
আপনার যুক্তিগুলো ভাল লেগেছে। (Y)
মহাপুরুষ বা মহামানব বলতে কিছু নেই ।মহাপুরুষ একটা মাপকাঠি। যে মাপকাঠিতে সাধারন মানুষ অন্য মানুষ কে মাপে ।তাই রবীন্দ্রনাথ ,মহাম্মদ,মুজিব,মহাত্তা কেউ ই মহাপুরুষ নন।তারা ওই কল্পিত মাপকাঠিতে একটু উপরে অবস্থান করেন হয়ত। এর বেশী কিছু নয় ।তাদের গুনাবলি যেমন আছে ,দোষ ত্রুটি ও আছে ।
প্রবন্ধটি এই দৃষ্টি কোন থেকে পড়েছি বলে ,আমার মনে হয়নি লেখকদ্বয় রবীন্দ্রনাথ কে ছোট করেছেন ।বরংচ গগন হরকরার স্বীকৃতির জন্য তাগিদ অনুভব করছি।কেননা গানটি আমাদের জাতীয় সঙ্গিত, এটা নিয়ে আমাদের সঠিক তথ্য জানা উচিত ।
@আসিফ রুমি, মহাপুরুষ বা মহামানব বলতে আপনার আপত্তি থাকতে পারে। মনে হতে পারে নবী বা প্রেরিত মানব। তার চেয়ে বলা যেতে পারে-রবীন্দ্রনাথ বহুমুখী কর্মী মানুষ। এটাতে কি আপত্তি আছে আপনার?
২. রবীন্দ্রনাথ প্রমথনাথের প্রথম পর্বটা পড়ে বুঝলেন–প্রথমনাথ লেখক হিসাবে দুর্বল। তখন তিনি কিভাবে লিখতে হবে সেটা বলে দিলেন। সেটা অনুসরণ করেও যখন লেখাটি রবীন্দ্রনাথের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী পাণ্ডুলিপি হচ্ছে না তখন তাকে রবীন্দ্রনাথ লেখা বন্ধ করে দিতে বলতে পারতেন। সেটা করেননি। তিনি তাকে লিখে যেতে বললেন। ধীরে ধীরে প্রমথনাথ লেখায় উন্নতি করলেও তা রবীন্দ্রনাথের নিজের ফিলসফির মত হয়ে ওঠে নি। সেজন্য রবীন্দ্রনাথই নিজের মত করে বইটি আবার লেখেছেন।
তাহলে তিনি প্রমথনাথকে লেখা বন্ধ করতে বললেন কেন? তাকে দিয়ে লেখালেন কেন? এটা কোটি টাকার প্রশ্ন।
কোটি টাকার উত্তর–রবীন্দ্রনাথ চেয়েছেন প্রমথনাথ পুরোটা লিখতে লিখতে লেখা শিখুক। শিখে তার অধিত জ্ঞানকে ভাষায় প্রকাশের দক্ষতা অর্জন করুক। সেজন্যই তিনি তাকে দিয়ে লিখিয়েছেন। তার পাণ্ডুলিপি কেটেছেটে দেখিয়ে দিয়েছেন–লেখার সমস্যাটি কোথায়। কিভাবে লেখার সহজবোধ্য ভাষাটি হতে পারে।
এই হাতে কলমে ট্রেনিংটা কিন্তু প্রমথনাথের কাজে লেগেছিল। তিনি লেখায় উন্নতি করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ তাকে দিয়ে আরেক বই লিখিয়ে সেটা প্রমথনাথের নিজের নামেই প্রকাশ করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণাতেই সেটা তিনি লিখেছেন। আনন্দরূপম বইটির ভাষাটি খেয়াল করলেই সেটা বুঝবেন।
দেখুন, হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে রবীন্দ্রনাথ কাঁচারিবাড়ি থেকে শান্তি নিকেতনে শিক্ষক হিসাবে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় অভিজ্ঞ ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ হরিচরণকে দায়িত্ব দিলেন বঙ্গীয় শব্দকোষ সঙ্কলন করতে। হরিচরণ ৩০ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে দুখণ্ডে শব্দকোষটি লেখা শেষ করেন। রবীন্দ্রনাথ কিন্তু বইটি নিজের নামে নেননি। কারণ হরিচরণের হাতে তথ্য এবং ভাষা–দুটোই ছিল। রবীন্দ্রনাথ বইটিতে তার পরিকল্পনারই স্বার্থক রূপায়ন দেখতে পেয়েছিলেন। তাকে নতুন করে লিখতে হয়নি। ঘটনাচক্রে এই অধম হরিচরণের বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ বার্যকাল থেকেই ব্যবহার করে আসছে।
এই গগন হরকরা এবং বিশ্বপরিচয়ের চুরি রাহাজানির রহস্য ভেদের পরে অভিজিৎ ও ফরিদ আহমেদের অন্যান্য অভিযোগ বিষয়ে আলোচনা করার ইচ্ছে আছে। যারা কোনটা তথ্য আর কোনটা গপ্প–এই পার্থক্য না বুঝেই চাঙ্গে উঠে বসেছেন, তাদেরকে তথ্যসহযোগে মাটিতে নামানোর চেষ্টা করা হবে, যদি মহাত্মা লালন ফকির আজ্ঞা করেন। আমীন।
আশা করছি অচিরেই প্রথমনাথের পাণ্ডুলিপিটা ফরিদ আহমেদ আমাদের উদ্দেশ্যে পেশ করবেন। না হলে তো জনগণ আছেই–সেটা পেশ করার জন্য। পৃথিবীতে তথ্য পাওয়ার সুযোগ এখন অনেক বেড়েছে।
@কুলদা রায়,
কি সাংঘাতিক অবস্থা। আপনার দেয়া তত্ব দূর্দান্ত- (Y)
@আফরোজা আলম, (Y)
চিনে রাখুন। কারো কারো হাতে বাঁশ বাঁশি হয়ে বাজে। কারো কারো হাতে লাঠি হয়ে ওঠে।
[img]http://a3.sphotos.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-ash4/s720x720/321366_2196056432296_1573787229_32236193_5186754_n.jpg[/img]
একটা জিনিস বোঝা গেল, বিশ্বপরিচয় থেকে যা তথ্য এই নোটে ফরিদ আহমেদ দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের রবীন্দ্রনাথ ও বিজ্ঞান বই থেকে বেছে বেছে তার যতটুকু দরকার সেটুকু নিয়ে টুকে দিয়েছেন। আগ্রহী পাঠকগণ চাইলে আমি এখানে পুরোটার পিডিএফ তুলে দিতে পারি।
বিশ্বপরিচয় বইটি বিশেষজ্ঞদের জন্য লেখা হয়নি। এমন কি বিজ্ঞানের ছাত্রদের জন্যও নয়। বইটি লেখা হয়েছিল লোকশিক্ষার উদ্দেশ্যে। লেখার উদ্দেশ্য বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ বলছেন–
১. বইটির রচনার ভাষাকে হতে হবে সহজ সরল।
২. যথাসম্ভব পরিভাষা বর্জিত।
৩.অথচ তার মধ্যে বিষয়বস্তুর দৈন্য থাকবে না।
৪. এই রচনা শিক্ষণীয় নানা বিষয়কে বাংলাদেশর সর্বসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার মত হতে হবে।
প্রমথনাথ সেনগুপ্ত তাঁর আনন্দরূপমে লিখেছেন, রবীন্দ্রনাথ বলেন–‘গল্প এবং কবিতা বাংলাভাষাকে অবলম্বন করে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে অশিক্ষিত ও অল্পশিক্ষিত মনে মননশক্তির দুর্বলতা এবং চারিত্রিক শৈথিল্য ঘটবার আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে।
এর প্রতিকারের জন্য সর্বাঙ্গীন শিক্ষা অচিরাৎ আবশ্যক। বুদ্ধিকে মোহমুক্ত ও সতর্ক করবার জন্য প্রধান প্রয়োজন বিজ্ঞানচর্চার। লোকশিক্ষা গ্রন্থ প্রকাশে তার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে।’
এ ভাবনা থেকেই রবীন্দ্রনাথ লোকশিক্ষা গ্রন্থমালা প্রকাশের ব্যবস্থা করেন।
রবীন্দ্রনাথ প্রমথনাথকে বলেন, সাধারণ জ্ঞানের সহজবোধ্য ভূমিকা করে দেওয়াই হবে তোমার কাজের উদ্দেশ্য। তাই, জ্ঞানের এই পরিবেশকার্যে পাণ্ডিত্য যথাসাধ্য বর্জন করতে হবে।
রবীন্দ্রনাথ বিজ্ঞান বিয়য়ক রচনাকে জনপ্রিয় করার জন্য ভাষাকে এবং সাহিত্যকেও গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই বিজ্ঞান বিষয়টি কোনো বিশেষজ্ঞকে দেখানো আগে এমন একজনকে পড়তে দিতে হবে, যিনি বিজ্ঞানের কিছুই জানেন না। তিনি এজন্য বাংলা ও সংস্কৃত ভাষার অধ্যাপক গোঁসাইজীর নাম করেন। গোঁসাইজী যদি খসড়া রচনা পড়ে বিষয়টি বুঝতে পারেন তবে–সেটা গ্রহণীয় হবে।
পরমাণুলোক অধ্যায় কিভাবে লিখতে হবে তার ভাষার সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা রবীন্দ্রনাথ প্রমথনাথের কিছু অংশ লিখিত পাণ্ডলিপির গায়ে লিখে দেন।
[img]http://a1.sphotos.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-ash4/s720x720/310236_2195923548974_1573787229_32236095_1008432_n.jpg[/img]
পড়ে দেখুন–প্রমথনাথ আর রবীন্দ্রনাথের লেখাটা কি এক?
দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলছেন, আসলে রবীন্দ্রনাথ চেয়েছেন বস্তুজগতের গড়ন সম্বন্ধে আধুনিক বিজ্ঞানের বিস্ময়কর চিন্তাভাবনার সঙ্গে পাঠকের পরিচয় করিয়ে দিতে। আজকাল যাকে মৌল গবেষণা বলা হয়, বিশ্বপরিচয়কে তো তারই সর্বোজনবোধ্য বিবরণ করে তুলতে চেয়েছেন। প্রমথনাথের লেখা অই অনুচ্ছেদে তার আভাস পাওয়া যায় না।
বিশ্বপরিচয় বইটি লিখতে প্রমথনাথকে রবীন্দ্রনাথ পড়তে দেন–
১. জিনস-এর থ্রু স্পেস এনড টাইম
২. এডিংটনের জ্যোতির্বিজ্ঞানের একটি বই।
এবং লেখার শুরুতেই নক্ষত্রলোক নিয়ে একটি মনোজ্ঞ আলোচনা করেন।
এসব আলোচনায় ক্ষিতিমোহন সেন এবং বিধুশেখর শাস্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সে সময় জর্জ গ্রের নিউ ওয়ার্ল্ড বইটির সাহায্য নিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ।
বিশ্বপরিচয় প্রথম প্রকাশিত হয় ১৩৪৪ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে। পঞ্চম সংস্করণ হয় পৌষ ১৩৪৬ এ। বইটি লিখতে রবীন্দ্রনাথের চার বছর সময় নিয়েছিলেন। অন্তত ছয় বছর রবীন্দ্রনাথ এই কাজে জড়িত ছিলন।
এ সময় আরও কয়েকটি বই পড়েন তিনি–
১. দি ইউনিভার্সেস সার্ভেয়ড
২. নারায়ণস ডায়েরি–রাধারমণ ব্যানার্জি
এই সব বই সংগ্রহ করেছেন প্রথম প্রকাশের পর। অন্যান্য সংস্করণে সেগুলো থেকে তথ্য নিয়ে রবীন্দ্রনাথ পরিমার্জন, সংযোজন করেছেন বিশ্বপরিচয়কে।
—————————————————-
(এই মন্তব্যের সকল তথ্যই বিজ্ঞান ও রবীন্দ্রনাথ গ্রন্থ থেকে কুলদা রায় চুরি ও রাহাজানি এখানে টুকে দিয়েছেন)।
@কুলদা রায়,
“বিশ্বপরিচয় থেকে যা তথ্য এই নোটে ফরিদ আহমেদ দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের রবীন্দ্রনাথ ও বিজ্ঞান বই থেকে বেছে বেছে তার যতটুকু দরকার সেটুকু নিয়ে টুকে দিয়েছেন। আগ্রহী পাঠকগণ চাইলে আমি এখানে পুরোটার পিডিএফ তুলে দিতে পারি।”
খুব এ ভাল হয় দাদা
“এই মন্তব্যের সকল তথ্যই বিজ্ঞান ও রবীন্দ্রনাথ গ্রন্থ থেকে কুলদা রায় চুরি ও রাহাজানি এখানে টুকে দিয়েছেন)।”
এটা আবার কোণটা ? …খোলাসা করুন রে দাদা খলাসা করুন:-Y ।
@সপ্তক,
দীপঙ্কর বাবুর বই থেকে তা তুলে ধরে সেটি দিয়েছি। তাদেরতো আর রাহাজানকারী বলা যায় না। সে রুচিটা আমার নেই। নিজেকেই তাই ঠাট্টা করে বলছি–“এই মন্তব্যের সকল তথ্যই বিজ্ঞান ও রবীন্দ্রনাথ গ্রন্থ থেকে কুলদা রায় চুরি ও রাহাজানি এখানে টুকে দিয়েছেন)।”
@কুলদা রায়,
এর ঠিক আগের পাতাটি স্ক্যান করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
@যাত্রী, কাল সকালে পুরোটাই স্ক্যান করে দেব।
আমি একটা ব্যপার পরিষ্কার করতে চাইছি।
অনেকেই লিখছেন কেন করা যাবে না রবীন্দ্রনাথের সমলোচনা?
নিশ্চয় যাবে। রবীন্দ্রনাথের সময় থেকেই রবীন্দ্রবিরোধিতা কম হয় নি। সেসব নিয়ে সমস্যা নেই। কিন্ত রবীন্দ্রনাথ নিয়ে গভীরে না জেনে, এই রকম ওপর ওপর বিদ্যায় রবীন্দ্রবধ করতে এলে, লেখকরা কটূ কথা শুনতে বাধ্য।
কিছু কিছু লোক জন্মেছেন এমন গভীরতা নিয়ে, তাদের বধ করতে এলে আগে তাদেরকে গভীরে বুঝতে হবে, গভীরে জানতে হবে। এমন লোক হচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ, কার্লমার্কস , নিৎসে , ডস্টভয়েস্কি—আবার কিছু কিছু লোক আছে, যাদের চিন্তার গভীরতা খুব বেশী ছিল না-কিন্ত তারা ভাল সংগঠক ছিলেন এবং সেই সংগঠন এবং ত্যাগের ক্ষমতার জোরে উচ্চাসনে আছেন-যেমন লেনিন, বিবেকানন্দ , গান্ধী, নেতাজি। এই দ্বিতীয় শ্রেনীকে চ্যালেঞ্জ করা সহজ-কারন তাদের লেখার এবং চিন্তার ডিফেন্স বেশ দুর্বল। কিন্ত প্রথম শ্রেনীটিকে বধ করতে হলে, অনেক অনেক বেশী পড়াশোনা এবং গভীরতা দরকার। মুড়ি মিছরির একদড় করতে গেলে বিপদ ত হবেই।
@বিপ্লব পাল,
“কিছু কিছু লোক জন্মেছেন এমন গভীরতা নিয়ে, তাদের বধ করতে এলে আগে তাদেরকে গভীরে বুঝতে হবে, গভীরে জানতে হবে। এমন লোক হচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ, কার্লমার্কস , নিৎসে , ডস্টভয়েস্কি—….”
একমত । আবার এটাও ঠিক বড় কোন সৃষ্টি কর্তা যদি ছোট কোন সৃষ্টি করতাকে হজম করে ফেলতে চান তাও সমর্থনযোগ্য নয় । তবে এক্ষেত্রে যুক্তি , তথ্য হতে হবে অকাট্য এবং বিশেষজ্ঞ পর্যায় তা গৃহীত ও হতে হবে বৈকি । ফরিদ/অভজিত এর লিখাটি বিশ্বভারতী , বাংলা একাডেমী সহ সংশ্লিষ্ট যারা রবিন্দ্র বিশয়ে গবেষণা করেন তাদের কাছে পাঠানো উচিৎ এবং বাংলাদেশ / ভারত এর প্রিন্টিং মিডিয়া সহ ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া গুলোতে প্রকাশ এবং উন্মুখত আলোচনা / বিতর্কের সূচনা করা জরুরী । বিতর্ক যখন উঠেছেই তার একটা সিধান্ত হওয়া জরুরী । শুধুমাত্র তাদের এই প্রবন্ধ পরে আমরা যখন জাতীও সংগীত শুনবো তখন ই আমাদের বুকের মাঝে গগন বাবু খোঁচা মারবেন তা কেন ? , বা এই প্রবন্ধের মাধ্যমে পাঠক এর ঘাড়ে সিধান্ত নেবার দায়িত্ব চাপান কি ঠিক হবে? । যদিও এখানে অনেক যুক্তিতর্ক হয়েছে…তারপরেও চূড়ান্ত সিধান্ত চাই… বুকের খচখচ নিয়ে আমরা চলব কেন ?। জাতীও এবং আন্তর্জাতিক ভাবে আমরা সিধান্ত চাই আমাদের জাতীও সংগীত এর কৃতিত্ব কার কতটুকু । বিতর্কের ওপর অনেকিছুই থাকতে পারে , কিন্তু জাতিয় সংগীত কেন ?
@বিপ্লব পাল,
আপনার মন্তব্যের প্রতি আমি সহানুভূতিশীল। যদিও আপনার বক্তব্য পুরোপুরি বুঝলাম এ দাবি করব না, তবে মনে হচ্ছে আপনার দাবি সমগ্রতার দাবি। অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের মত মহা প্রতিভার সাইকো-বায়োগ্রাফির প্রেক্ষিতে সাত-পাঁচ বিবেচনা করে অনেকটা adhoc ভাবে আমাদের তাঁকে বিচার করা উচিত।
ফাইন।
কিন্তু সমালোচনাকারীদের উপর আপনি বড় বেশি দায়িত্ব দিয়ে ফেলছেন। অভিজিৎ বা ফরিদ আহমেদ তো দাবি করেননি, তারা রবীন্দ্রনাথের একটি সমগ্র, বা “গড়” রূপ তুলে ধরেছেন। তাঁদের এই লেখা একটি data point, এটাকে সেভাবই নিন না।
@রৌরব,
বেশ বলেছেন। আসেন প্রার্থনা করি প্রভু যীশু, তুমি উহাদের ক্ষমা করিয়া দাও। উহারা জানে না–উহারা কী করিতেছে।
সিদ্ধান্ত কি হল?…।কার পক্ষে গেল ? । গগন নাকি রবিন্দ্রনাথ ? 😉 । নাকি এখানে কন পক্ষ নেই ? :lotpot: !!
@ফরিদ,
“সুর নেওয়াটা রাহাজানি হয়েছে এই কারণে যে আমার সোনার বাংলা সুরকার হিসাবে রবীন্দ্রনাথের নামই আছে, গগন হরকরার নয়।”
আপনি কি বলতে চাচ্ছেন যে acknowledge করে সুর নেয়াটাও রাহাজানি কারণ এখন বেশির ভাগ মানুষ সুরকার হিসেবে তাঁর নামই জানে ?
আরেকটি ব্যাপার হচ্ছে এখানে নেয়া বলতে আমরা কি বুঝি ? জাতীয় সঙ্গীত এর সুর কি গগন হরকরার সুরের adopt করা version ? নাকি দুটি সুর সম্পূর্ণ একই ? যদি adopt করা হয় তাহলে সুরকার হিসেবে রবীন্দ্রনাথ এর নামই বলতে হবে. আর যদি একই হয়, তাহলে সুরকার রবীন্দ্রনাথ নয় — হয় গগন হরকরা অথবা অন্য অজ্ঞাত কেউ.
এখন প্রশ্ন হচ্ছে দুটি musical piece এর মধ্যে কতটুকু অন্তত পার্থক্য থাকলে একটিকে আরেকটির adopt করা বলা যাবে? যদি গগন হরকরার original সুর পাওয়া যায়, তাহলে দুটিকে মিলিয়ে দেখতে হবে. নয়তো দুটি সুরই শুনেছেন এমন কারো বক্তব্য নিতে হবে.
আমি যতটা বাউল গান শুনেছি তাতে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, দুটোর মধ্যে মেজাজের কিছুটা পার্থক্য থাকাটা খুব স্বাভাবিক.
যিনি সাধারনভাবে বিশেষ স্বীকৃত এবং যাকে নিয়ে প্রচুর গবেষণা করা হয়েছে তাঁর ক্ষেত্রে রাহাজানি বা কুম্ভিলকবৃত্তি’র মত শব্দ confidently ব্যবহারের আগে এতটুকু সতর্কতার প্রয়োজন আছে মনে করি. সবচেয়ে বড় কথা যার লেখা ও জীবন কয়েক প্রজন্মের মানুষকে মানবতাবোধে এবং শিল্পবোধে উদ্দীপ্ত করেছে (অন্ততপক্ষে সত্যজিত রায়, মুজতবা আলী’র কথা এক্ষেত্রে বলতে পারি ) সেই একই লোকের ক্ষেত্রে শব্দ দুটি প্রয়োগ করার আগে সর্বোচ্চ সতর্কতার অবশ্যই প্রয়োজন.
@অভিজিত
আপনি লিখেছেন,
“গগন হরকরাকে সরলা দেবী কিংবা রবীন্দ্রগবেষকেরা কোথায় পরিচিত করছেন কি করেননি সেটা এখানে বিবেচ্য বিষয় নয়।”
আমার ধারণা আপনারাই বিবেচনা করেছেন. উদাহরণস্বরূপ আপনাদের লেখার এই অংশটি,
” যোগাযোগের অপ্রতুলতা এবং এখনকার মত তথ্যের অবাধ প্রবাহ সেই সময়ে না থাকার কারণে কারো পক্ষেই এত বড় একটা চুরি ধরা সম্ভবপর হয় নি। পরে যখন বিষয়টা জানা গেছে, তখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যেই রবীন্দ্রনাথ পরিণত হয়ে গিয়েছেন মহাকাশস্পর্শী এক মহীরুহে। তাঁর বিশাল এক স্তাবকবাহিনী তৈরি হয়ে গিয়েছে। এই স্তাবকবাহিনী তাঁদের পূজনীয় ঠাকুরকে বাঁচানোর জন্য গালভরা এক শব্দ ‘অনুপ্রেরণা’কে বেছে নিয়েছেন, ভাঙা গানের ভরাট ঢালের আড়ালে অত্যন্ত সুকৌশলে নিয়ে গিয়েছেন শতাব্দীর সেরা চৌর্যবৃত্তিকে।”
আপনি লিখেছেন,
রবীন্দ্রনাথ কোথাওই সরাসরি প্রকাশ করেননি যে গানটার সুরকার গগন হরকরা ছিলো
তাহলে সাময়িক পত্রে রবীন্দ্রনাথ আসলে কি প্রকাশ করেছিলেন? হতে পারে উনি শুধু গানের কথাগুলোই প্রকাশ করেছিলেন . কিন্তু এত গান থাকতে এই গানটিই কেন প্রকাশ করতে গেলেন, যদি সুর নেওয়ার কথাটি লুকানোর ইচ্ছা থাকত . সরলা দেবীই বা কিভাবে জানলেন এই তথ্যটি. রবীন্দ্রনাথেরই নিযুক্ত শান্তিনিকেতন এর শিক্ষক বিখ্যাত শান্তিদেব ঘোষ রবীন্দ্র সংগীতের সংকলনে সুর নেওয়ার কথা প্রকাশ করেছিলেন. উনি ই বা কিভাবে জানলেন, রবীন্দ্রনাথ ই বা কেন তার প্রতিবাদ করলেন না. মোটকথা, আমরা যে আজকে সুর নেওয়ার এই তথ্যটি জানি, তার refererence trace back করলে কি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ কেই পাওয়া যায় না?
আপনাদের উপরে বর্ণিত তথ্য লুকোনোর চেষ্টা এবং ধরা পরে বাঁচার চেষ্টার এই গল্পটির ভিত্তি বা উত্স কি?
@পথিক,
শুধুমাত্র acknowledge করেই কি আপনি কারো সুর নিজের নামে করে নিতে পারবেন? আইনি ঝামেলায় পড়বেন না? কয়েক বছর আগে বিবিসির শ্রেষ্ঠ বাংলা গানের শ্রোতা জরিপ হয়েছিল। সেই জরিপে ষষ্ঠ স্থান পেয়েছিল মাহমুদুজ্জামান বাবুর গাওয়া গান আমি বাংলায় গান গাই। এই গানটির রচয়িতা এবং সুরকার হচ্ছেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবু সুর বিকৃতি ঘটান নি, কিংবা কোথাও বলেন নি যে এই গানটির সুরকার তিনি। প্রতুল মুখোপাধ্যায় এর নাম ব্যবহার করে এসেছিলেন তিনি সবসময়। তারপরেও বাবুর অবস্থা কেরোসিন করে ছেড়েছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়, শুধু এই কারণে যে বাবু তাঁর কাছ থেকে অনুমতি নেয় নি গানটি গাইবার জন্য। এখন রবীন্দ্রনাথ যে কাজটি করেছেন সেটিকে এর সঙ্গে মিলিয়ে দেখুন। আপনার উত্তর পেয়ে যাবেন। রাহাজানি শব্দে আপনার আপত্তি থাকলে চুরি শব্দটাকে ব্যবহার করতে পারেন। আমার কোনো আপত্তি নেই ওতে।
কোনো একজন সুরকার জীবিত থাকা অবস্থায় তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর সুরকে এডাপ্ট করা যায় কি না সেটা আগে আমাকে বলুন। আপনি কি পারবেন স্বীকৃতি দিয়েও ফিডব্যাকের মেলায় যাইরে গানটার সুরের সামান্য হেরফের করে নিজের নামে চালিয়ে দিতে? ফিডব্যাক এই অপরাধে আপনাকে নিশ্চয়ই আদালতে তুলে ছাড়বে। রবি ঠাকুরের এডাপটেশনের গল্প বলে আপনি কি তখন পার পাবেন? পাবেন না নিশ্চয়ই। গগন হরকরা হতদরিদ্র একজন ব্যক্তি এবং রাজধানী কোলকাতা থেকে বহু দূরপ্রান্তের যোগাযোগবিহীন একটা প্রত্যন্ত এলাকায় থাকতেন বলেই সে না রবীন্দ্রনাথের পক্ষে ওই এডাপ্ট করা সম্ভব হয়েছিল। তিনি যদি কোলকাতার ডাকাবুকো কোনো পরিবারের আরেকজন জমিদারবাবু হতেন তাহলে এই এডাপ্ট করার মজাটা রবীন্দ্রনাথকে হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে ছাড়তেন।
@ফরিদ আহমেদ,
তখনকার সময়ে এটা হত এবং কুলাদা রায় তার অজস্র উদাহরন দিয়েছেন-এগুলোকে তখন কেও দোষনীয় ভাবত না-সেগুলোও চিঠিপত্র ঘাঁটলেই বোঝা যায়। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে ফরিদ ভাই কুলাদা রায়ের উত্তরগুলিও পড়েন নি বা বোঝেন নি।
তুমি পড়লে এবং বুঝলেই হবে। আমি যে বুঝবো না এটাতো জানা কথাই। তোমার কুলদা রায়তো আমাকে মহামূর্খ বলে ঘোষণাই দিয়ে দিয়েছেন।
@ফরিদ আহমেদ, ভুল বললেন, আপনাকে মহাজ্ঞানী বলেছিলাম। আমার নিজেকে মুর্খ বলেছিলাম। আর ফরিদ আহমেদকে আমার চেয়েও মুর্খ বলেছিলাম। আপনাকে মহামুর্খ বলিনি। যদি আপনি নিজেকে সেটা মনে করেন–সে করতে পারেন। মানুষতো এক সময় তার নিজেকে সত্যি সত্যি উপলদ্ধি করতে পারেন–তাই না।
ও হ্যা, সত্যি সত্যি আপনি গান শুনে দেখতে পারেন। আমার মনে হয়েছে–গান শোনার অভিজ্ঞতা আমার চেয়ে আপনার বেশ কিছুটা কম আছে। আমিও বিশেষ কিছু শুনিনি। গরীব মানুষ। চেয়ে চিন্তে শোনা। শুনে আনন্দ পাওয়া।
গান মানুষকে নির্মল করে। আর পড়াশুনাটাও সত্যি সত্যি বেশ উপকারি। অনেক সর্পের দর্প ভেঙে দেয়।
প্রমথনাথ সেনগুপ্তর বইটি বোধ হয় আপনি সত্যি সত্যি নিজের চোখে দেখেননি। পড়েনও নি। পারলে বইটি জোগাড় করে এখানে লিংক দেনতো। আপনি দিতে পারবেন না–সেটা আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি।
@ফরিদ আহমেদ,
তাহলে acknowledge করা হয়নি থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি পর্যন্ত এসেছে.
আমার মনে হয় উনার একটি স্টাম্প paper এ অনুমতি ও স্বাক্ষর নিয়ে রাখা দরকার ছিল. অথবা কোনো copyright office এ গিয়ে কাগজে কলমে করে আসা উচিত ছিল. ওই সময়ে এরকম কিছু প্রচলিত থাকুক বা না থাকুক.
অসুবিধা কী? অনুমতি যে নেওয়া হয় নি এটাতো সত্যিই। একজনের সৃষ্টকর্মকে অনুমতি ছাড়া আরেকজন তার নিজের নামে করে নেওয়াটাকে কি আপনার কাছে অনুচিত কাজ বলে মনে হয় না?
ওই সময় কপিরাইট ছিল কি না এই সংশয় তৈরি হলো কেন? আজকের ভারতে যে কপিরাইট আইন রয়েছে সেরকম করে হয়তো ছিল না, কিন্তু এর আদি ফর্মে অবশ্যই ছিল। সেই আদি ফর্মটাই বিভিন্ন সময়ে মডিফিকেশন হতে হতে আজকের রূপে দাঁড়িয়েছে। মেধাসত্ব সংরক্ষণের জন্য ভিক্টর হুগোর উদ্যোগে ১৮৮৬ সালে বার্ন কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। এর পূর্ণ নাম ছিল বার্ন কনভেনশন ফর দ্য প্রটেকশন অব লিটারারি এন্ড আর্টিস্টিক ওয়ার্ক। এই কনভেনশনের সদস্য ছিল ভারত। ভারতে কপিরাইট আইন চালু হয়েছে অবশ্য আরো আগেই। সেই আইন চালু করেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোমাপানি ১৮৪৭ সালে। নাম ছিল ইন্ডিয়ান কপিরাইট এ্যাক্ট ১৮৪৭।
তারপরেও কথা হচ্ছে যে, কপিরাইট আইন থাকুক বা না থাকুক, মানুষের নৈতিকতাতো ছিল। একজনের বই আরেকজন ছিনিয়ে নেওয়া বা একজনের সুর আরেকজন তাঁর বলে দাবি করা, এগুলো নিশ্চয়ই তখনও সেই সমাজের প্রেক্ষিতেও নৈতিকভাবে গর্হিত কাজ বলেই বিবেচিত হতো। তাই নয় কি?
@ফরিদ আহমেদ,
এর জবাব কিভাবে দেব বুঝতে পারছি না. একই সাথে বলছেন যে রবীন্দ্রনাথ acknowledge করেছিলেন গগন হরকরাকে (যেটা এখন বলছেন, কিন্তু প্রথমে উল্টোটাই বলেছেন), আবার বলছেন যে উনি দাবি করেছেন সুর তারই . আর কতবার আর কত সূত্র তুলে ধরলে বোঝানো যাবে যে রবীন্দ্রনাথ এর জন্যই আমরা আজকে জানি যে সেই সুরটি তাঁর মৌলিক সৃষ্টি নয়, গগন হরকরার ওই গান থেকে নেওয়া. রবীন্দ্রনাথ না জানালে আজকে আমরা হয়ত জানতেও পারতাম না.
তখন কোন copyright আইন ছিল, তার কতটুকু in practice ছিল, সেই আইনের এর কোন অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন হযেছিল সেইসব বিচার না করে তো কোনো কিছুই বলা উচিত নয়. সেই সময়ে এই অঞ্চলে copyright নিবন্ধন বা অনুমতি নেওয়ার উদাহরণ ই বা কয়টা ছিল. তাছাড়া copyright অনুমতি কি সেই জিনিসেরই নিতে হয় না, যা copyrighted করা আছে?(আমার ভুল হতে পারে, হলে জানাবেন ) এবং গগন হরকরার সেই সুর যে copyrighted ছিল না তা বলাই বাহুল্য . সেই সুর copyrighted করা আদৌ সম্ভব ছিল কিনা সেটাও যথেষ্ট সংশয়পূর্ণ , কারণ কুলদা রায়ের লেখায় দেখতে পাচ্ছি, সেই সুর সম্ভবত জনে জনে প্রবাহিত একটি সাধারণ বাউল সুর ছিল. —— যা হোক এই সমস্ত বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে যে , আইন নিয়ে কথা বলার জায়গা এটা নয়. আন্দাজে কথা বলে আইনি বিষয় সমাধান করা যায় না.
আপনার কথা ঠিক, আমরা নৈতিকতা নিয়ে বলতে পারি.——- এবং এক্ষেত্রে কিছুই বলতে পারি না, যেহেতে রবীন্দ্রনাথ ব্যাপারটা স্বীকার করে গিয়েছেন , সংরক্ষণ করে গিয়েছেন, এমনকি তাঁকে কলকাতায় ও বিদেশে project করেছেন . মজার ব্যাপার হচ্ছে, রবীন্দ্রনাথ না জানালে আপনি বিষয়টা জানতেও পারতেন না, এ নিয়ে কথাও বলতে পারতেন না.
যদি copyright লঙ্ঘন করে থাকেন ( যা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে ), সেটা শুধুমাত্র আইনি ভুল. তাঁর intention এ কোনো ভুল এক্ষেত্রে অন্তত ছিল না. গগন হরকরা এবং রবীন্দ্রনাথের মধ্যে দুই শিল্পীর মধ্যকার শ্রদ্ধাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল. সেখানে তাদের মধ্যে মৌখিক অনুমতি নেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল কিনা , সে প্রশ্ন তোলা অবান্তর —- তা এখন জানা সম্ভব ও নয়, যদি এ সম্পর্কিত কোনো লেখা কেউ লিখে না থাকে.
বাংলার এক প্রান্তে কোনো এক বাউলের সুরে মুগ্ধ হয়ে কোনো এক কবি সেই সুরে একটা গান লিখলেন, সেই গান মানুষকে মুগ্ধ করলো , আলোড়িত করলো —— এরকম মানবিকতার প্রতি উদ্ভট প্রশ্ন তুললে একে মুক্ত মনা না বলে মত্ত মনা বলা যায়.
@কুলদ রায়,
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার অসাধারণ reference গুলোর জন্য.
@পথিক, গগন হরকরা বিষয়ে আরও কিছু তথ্য হাজির করা যাবে।
@পথিক,
সোনার বাংলা গানের সুরকার কি গগন হরকরা ছিলেন? আমি তো বুঝলাম গগন হরকরার অন্য একটি গানের সুর রবি ঠাকুর সোনার বাংলায় ব্যবহার করেছেন।
@পথিক, (Y)
গগন হরকরার সুর নেওয়াকে রাহাজানি বলা হয়েছে, রবীন্দ্র প্রেমীদের পুজারী বলা হয়েছে । এর বিপক্ষে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে বেশ কয়েকজন দেখিয়েছেন যে, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ, তার কাছের লোকজন এবং বিখ্যাত রবীন্দ্র গবেষকগণ যারা কিনা রবীন্দ্র বিরোধী ছিলেন না তারাই এই তথ্য প্রকাশ ও সংরক্ষণ করেছিলেন। এর বিপরীতে কোনো মন্তব্য লেখক দুইজনকে এখন পর্যন্ত করতে দেখিনি — কিভাবে এখনো একে রাহাজানি বলা যায়। যদিও কথার পিঠে “যুক্তি পূর্ণ ” কথা হয়েই চলেছে।
@পথিক,
সুর নেওয়াটা রাহাজানি হয়েছে এই কারণে যে আমার সোনার বাংলা সুরকার হিসাবে রবীন্দ্রনাথের নামই আছে, গগন হরকরার নয়। আপনার লেখা বই কেউ যখন ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে তার নামে ছাপিয়ে দেবে, তারপর ভূমিকায় লিখবে যে, এই লেখা পথিকের লেখার অনুপ্রেরণায় লেখা হয়েছে, তখন আপনি বুঝবেন একে কীভাবে রাহাজানি বলে, তার আগে নয়।
@ফরিদ আহমেদ,
এই মহান আবিস্কারটির কার??? কবি গেয়েছিলেন, ইন্দিরা দেবী নোট টা টুকে ছাপিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ কোথায় দাবী করেছিলেন, তিনি এই গানের সুরকার? বরং কুলাদা রায় থেকে আরো অনেকেই দেখিয়েছেন, আমিও দেখিয়েছি-রবীন্দ্রনাথ সর্বত্র এই গানের সুরের জন্যে বাউলদের কৃতিত্ব এবং কৃতজ্ঞতা দিয়েছেন।
ফরিদ ভাই ত দেখছি এখন গোয়েবেলিয়া পথে হাঁটছেন-বারবার বলে যাচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ হচ্ছে সোনার বাংলার সুরকার!
এবার ফরিদ আহমেদ দেখাক কোথায় রবীন্দ্রনাথ দাবী করেছেন তিনি এই গানের সুরকার-বা তার সুর মৌলিক সৃষ্টি? আমরা এর বিপক্ষে অনেক প্রমান দিয়েছি। আর ফরিদ ভাই যুক্তি প্রমান ছারা সেই একই ভাঙা হারমোনিয়াম বাজাচ্ছেন-রবীন্দ্রনাথ এই গানের সুরকার 😀
বারবার একই কথা বললেও তা সত্য হবে না ফরিদ ভাই! কথাটার পেছনে প্রমান চাই :guru:
@বিপ্লব পাল,
দাদা, আপনার কথা শুনেতো এখন আমার আকাশ থেকে পড়ার দশা। ছোটো বেলা থেকে সপ্তাহে ছয়দিন এই গান গেয়েছি, শত শতবার রেডিও টেলিভিশনে শুনেছি। এর গীতিকার এবং সুরকার হিসাবে বইপত্র, রেডিও টেলিভিশন সব জায়গাতেই রবীন্দ্রনাথ দেখে দেখে বুড়ো হতে চললাম। এখন শুনছি এর সুরকার তিনি নন। কই যাই! উইকিপিডিয়াও দেখলাম আমার মতই ভুল জানে। সেখানেও গীতিকার এবং সুরকার হিসাবে রবীন্দ্রনাথেরই নাম আছে।
আমার সোনার বাংলা গানটি ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। এ গানের রচয়িতা ও সুরকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
গোয়েবলস দেখছি একা শুধু আমি নই, সবাই-ই।
@ফরিদ আহমেদ,
কিন্তু এগুলো নিশ্চয়ই রবীন্দ্রনাথের দোষ নয়। বক্তব্যটা আরো মেথডিকাল হত যদি ওই যুগে acknowledgement-এর সামাজিক বা আইনী নিয়ম থেকে রবীন্দ্রনাথ কিভাবে বিচ্যুত হয়েছিলেন সেটা দেখাতে পারতেন।
@ফরিদ আহমেদ,
জনগণ রবীন্দ্রনাথকে এই গানের সুরকার বানিয়েছে। তিনি বানান নি। তাহলে দোষটা জনগণকে দিলেই হয়-রবীন্দ্রনাথ কেন দোষী হবেন? তোমাকে অন্তত একটা ইতিহাস ত দেখাতে হবে, যেখানে রবীন্দ্রনাথ নিজে এই গানের সুরকার হিসাবে কৃতিত্ব নিয়েছেন-কারন এখানে প্রমাণ করা হয়েছে তিনি এই কৃতিত্ব বাউলদের দিয়েছেন। এরপরে তর্ক করার কি বাকী থাকে?
তুমি গগন হরকরাকে সন্মান দিতে চাও, এই গানের সুরকার বানাও-মনে হয় না -আমাদের আপত্তি আছে বা কবিগুরুর ও থাকত। কিন্ত সেটা করা আর কবিকে রাহাজানির দোষের অভিযুক্ত করার মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য।
@বিপ্লব পাল,
এইতো ল্যাঠা চুকে গেল। রবীন্দ্রনাথকে ঋষি মানুষ হিসাবে স্বীকৃত দিচ্ছি আমি, রাহাজানির কলংকটা না হয় জনগণের ঘাড়েই চাপিয়ে দিলাম। এবার খুশি?
চমৎকার। আসো এখন থেকে জনগণকে এটা আমরা বোঝানোর চেষ্টা করি।
@বিপ্লব পাল,
“জনগণ রবীন্দ্রনাথকে এই গানের সুরকার বানিয়েছে। ”
এই এই কথার অর্থ কি ? জনগন আবার কিভাবে সুরকার কিভাবে বানায় ? , একটু ব্যাখ্যা করেন ত ভাই …।
@বিপ্লব পাল,
হা হা- চালিয়ে যান আমরা আছি, মনের কথা গুলো সুন্দর করে বলছেন যুক্তি দিয়ে- 🙂
@বিপ্লব পাল,
বিপ্লব, ছোট্ট একটা বিষয়ে তোমাকে সতর্ক করে দিয়ে যাই। তোমার সাথে আমরা দীর্ঘদিন এই প্লাটফর্মে আছি। বহু তর্ক-বিতর্ক করেছি আমরা, আবার পরস্পরের প্রয়োজনে পাশেও এসে দাঁড়িয়েছি। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধটা আমরা জানি। কিন্তু সেই শ্রদ্ধাবোধের জায়গাটাতে হোঁচট খায় যখন তুমি আমাকে গোয়েবেলিয়া পথে হাঁটছেন বলো, বা অভিকে বলো যে, আবার সেই নির্লজ্জ গোয়েবেলিয় প্রচেষ্টা। তুমি যে কারণে আমাকে গোয়েবেলিয়া পথে হাঁটি বলেছো সেটা রেফারেন্স দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি যে আমি সঠিক পথেই আছি। তুমি-ই বরং ভুল। তারপরেও আমি কিন্তু বলি নাই যে বিপ্লবের আরেকটি নির্লজ্জ গোয়েবলিয় প্রচেষ্টা। আশা করছি বিষয়টির গুরুত্ব তুমি অনুধাবন করবে।
@ফরিদ আহমেদ,
” গোয়েবেলিয় প্রচেষ্টা” মানে একই কথা বার বার বলে সেটাকে সত্য প্রমানের চেষ্টা। এই ভাষা ব্যবহারে কি অসুবিধা? কারন তোমরা একই কথা বলে যাচ্ছে এবং নতুন কোন প্রমাণ ছারা!
গোয়েবলিয় প্রচেষ্টা মানেই একই কথা বার বার বলে সত্য প্রমাণের চেষ্টা নয়, একই মিথ্যা কথা বার বার বলে সত্য প্রমাণের চেষ্টা করা। এটা একটা বাচ্চা ছেলেও জানে। আমার আপত্তি ওই জায়গাতে। আশা করি বুঝতে পেরেছো।
নতুন কোনো কথা আমাদের বলার প্রয়োজন নেইতো। এই লেখা এবং আমাদের লেখা দুটোই এখন বৃত্তাকার যুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। সে কারণে আমার অংশগ্রহণ অনেক কম ছিল। তুমিই বরং অনেক বেশি সক্রিয় ছিলে, একই কথা বলে চলেছো ক্লান্তিহীন। গতরাতেও আমি কোনো মন্তব্য করতাম না যদি না পথিক এসে ঐ ধরনের একটা মন্তব্য করতো যে লেখক দুজনকে আর কোনো মন্তব্য করতে দেখি নি। ভাবটা এমন যেন সবার যুক্তির কাছে পরাস্ত হয়ে লেখকদ্বয় নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছেন। পথিকের এই মন্তব্য থেকেও কিন্তু বোঝা যায় যে আমরা একই কথা বার বার বলা থেকে বিরত থেকেছি। এখন কি আমি তোমাকে গোয়েবলিয় পথে হাঁটছো, এটা বলবো?
@পথিক,
লেখকদের বক্তব্য দেখেননি, কারণ লেখকদের আর নতুন কোন বক্তব্য নেই। রবীন্দ্রনাথ কোথাওই সরাসরি প্রকাশ করেননি যে গানটার সুরকার গগন হরকরা ছিলো। গগন হরকরাকে সরলা দেবী কিংবা রবীন্দ্রগবেষকেরা কোথায় পরিচিত করছেন কি করেননি সেটা এখানে বিবেচ্য বিষয় নয়।
আর প্রমথনাথের ব্যাপারটা যত কম আলোচনায় আনা যায় ততই ভাল। বিশ্বপরিচয়ের পুরো বইয়ের পাণ্ডুলিপি তারই লেখা ছিলো। প্রথম থেকে উপসংহার পর্যন্ত। তাকে যেভাবে লেখকের পদ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে, এমনকি সহলেখকও রাখা হয়নি, তা দুর্ভাগ্যজনক। কেবল রবীন্দ্রনাথ বলেই সবকিছু চোখবুজে ডিফেণ্ড করার মতো কিছু পাইনি।
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
আবার সেই নির্লজ্জ গোয়েবেলিয় প্রচেষ্টা :lotpot:
এর থেকে প্রমথনাথের পান্ডুলিপি কোথায় পাওয়া যায় সেটা বরং খোঁজ-তাতে তোমাদের কাজ কিছু এগোবে। শুধু প্রমথ নাথের অভিযোগের ভিত্তিতে কবিকে ( যেখানে কবির বক্তব্য আলাদা এবং বিশ্বপরিচয়ে ভাষার বিশ্লেষণের পরিপেক্ষিতে অনেক বেশী বিশ্বাসযোগ্য) ভিলেন বানানো গোয়েবেলও পারতেন না :-s
@বিপ্লব পাল, প্রমথনাথ এর পাণ্ডুলিপি আর বিশ্বপরিচয় এর ভাষা যে এক নয় এত মূল লেখাতেই বলা আছে। তাই না? আর বিশ্বপরিচয় এর তথ্যের পিছনে অবদান প্রমথনাথ এর এটি স্বয়ং রবিঠাকুরও অস্বীকার করেননি। তাহলে বইটিতে সরাসরি সহলেখক হিসেবে বা তথ্যসূত্রে প্রমথনাথ এর নাম উল্লেখে বাঁধা কোথায় ছিল স্বাভাবিক ভাবেই মনে প্রশ্ন জাগে।
আজ আপনার পুরনো লিখাগুলো পড়ছিলাম(এই ব্লগ এর সাথে আমার পরিচয় বহুদিন এর নয়)। দেখলাম আপনার একটি লেখা আপনার অনুমতি না নিয়ে অন্য ব্লগ এ দেয়া হয়েছে বলে আপনি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন যদিও সেই ব্লগার নিচে স্পষ্টাক্ষরে আপনার নাম উল্লেখ করেছে। এখন নাম উল্লেখের পরেও অনুমতি না নেয়াটা যদি আপনার কাছে অসঙ্গত হয় (এবং এটা আপনার অধিকার) তবে এখানে আপনার চিন্তা ভিন্ন কেন হবে ?
আমি আপনার লেখা মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়ি।দয়া করে ভাব্বেন না ছোট করার চেষ্টা করছি। আলোচনার অংশ হিসেবেই এই মন্তব্য।
“পূজারি”,”মহামানব” শব্দগুলো যতই আপত্তিকর হোক আমি রবিঠাকুর এর পূজারি,তিনি আমার কাছে মহামানব। শুধু জানলাম মহামানব ও মানবীয় গুণাবলীর ঊরধে নন।
@একটি শিশিরবিন্দু এবং রৌরব
রবীন্দ্রনাথ অন্য অনেক ব্যাপারেই উদার ছিলেন-কিন্ত নিজের সাহিত্যকীর্তির স্বীকৃতির ব্যাপারে বেশ কড়া ছিলেন।
আমি মনে করি দুটো কারনে তিনি এটা করেন নি
(১) বিশ্বপরিচয়ের সব তথ্য প্রমথ নাথের না-অন্তত কবির বক্তব্য আরো অনেকের কাছ থেকেই তিনি তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
(২) সুতরাং অভিজিত যেটা বার বার বলছে বইটির খসড়া লিখেছেন প্রমথনাথ- এই ব্যাপারটাই ভুল রটনা। কারন কবি নিজে বলছেন, তিনি দীর্ঘদিন তার বন্ধুদের কাছ থেকে এই গ্রন্থের জন্যে তথ্যভিক্ষা করেছেন। তার বন্ধু সার্কলে জগদীশ বোস থেকে আরো অনেক বিজ্ঞানীই ছিল।
(৩) রবীন্দ্রনাথের বক্তব্য এবং প্রমথনাথের বক্তব্য একসাথে করে + বিশ্বপরিচয়ের ভাষা ঘেঁটে- যেটা ঘটেছিল “মনে হয়” ( ধরে নিয়ে দুজনেই সত্য বলছেন)
বিশ্বপরিচয় বই এর পরিকল্পনা রবীন্দ্রনাথ এবং এর একটি প্রাথমিক খসড়া তিনি লিখেছিলেন।
বই টি আগাগোড়া তিনিই লিখেছেন এবং যেহেতু তিনি বিজ্ঞানী না, একেকটি চ্যাপ্টার লেখার পর তিনি তা প্রমথনাথের কাছে পাঠাতেন তথ্য বা বক্তব্য ঠিক আছে দেখার জন্যে। প্রমথনাথ লেখাটি পরিমার্জনা করে পাঠালে কবি আবার সেটির ভাষা ঠিক করতেন।
অর্থাৎ প্রমথনাথের ভূমিকা তথ্য ঠিক করার বেশী না। একজন নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক, যাকে তাকে ত আর সহলেখক করতে পারেন না।
@বিপ্লব পাল, (Y)
@বিপ্লব পাল,
প্রমথনাথ কি যে সে ছিলেন, অন্তত বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে? যে সে হয়ে থাকলে কবি তাঁকে বিজ্ঞানের বই লেখার ভার দিয়েছিলেন কেন?
@বিপ্লব পাল,
রবি ঠাকুর যে লিখেছেন “তোমাকে আর স্থান দিতে পারলুম না” ইত্যাদি, এ ব্যাপারে আপনার মত কি? স্থান দেয়ার কোন একটা কারণ ছিল বলেই নিশ্চয়ই এটা তাঁকে লিখতে হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ তার কর্তৃত্বের আসন থেকে কোন ধরণের আলোচনার অবকাশ না রেখে একলাইনে প্রমথনাথকে নস্যাৎ করে দিলেন, একে অশ্লীল রকম স্বৈরাচারী মনে হয়নি আপনার?
@রৌরব, স্থান দেওয়া ব্যাপারটা দীপঙ্কর বাবুর বইতেই ক্লিয়ার করে বলা আছে। নোটদাতাদের বলুন–সেটা তুলে ধরতে। অথবা আমি স্ক্যান করে দিয়ে দেব।
লেখক বলেছেনঃ
তারমানে আপনি মানছেন রবীন্দ্রনাথের কিছু হলেও নেগেটিভ দিক আছে। এখন আমাকে বলেন সেগুলো কী কী?
আপনি যেহেতু মেনেই নিচ্ছেন রবীন্দ্রনাথের কিছু হলেও নেগেটিভ দিক আছে তাহলে সেই নেগেটিভ দিক নিয়ে লিখলে আপনার আপত্তির জায়গাটা ঠিক কোথায়?
ধরেন আমি রবীন্দ্রভাবে গদগদ একটা লেখা লিখলাম। সেখানে তার বিভিন্ন ভালো ভালো দিকও উল্লেখ করলাম, তখনও কি আপনি অভিদা আর ফরিদ ভাই-এর লেখায় যেভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ঠিক সেভাবেই আমার লেখাতেও জানাতেন কেন আমি তার নেগেটিভ দিক নিয়ে কথা বলিনি?
অনেকের মুখেই শুনেছি, আপনিও বলেছেন যে, লেখককে বিচার করতে হবে তার লেখা দিয়ে, কোনভাবেই তার ব্যক্তিগত দিক দিয়ে বিচার করে নয়। এবং আমি আপনার সাথে একমত। কিন্তু সমস্যা জাগে তখন, যখন আপনারা রবীন্দ্রনাথের লেখা টেখার সাথে সে প্রজাদের কেমন ভাবে ভালোবাসত, সে শিক্ষার জন্য কতটা উদার ছিল, সে কৃষি শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য তার জামাইকে বিলেতে পাঠিয়েছিলেন এগুলো উল্লেখ করেন। যদি আপনারা মনেই করেন যে লেখকের লেখনী ক্ষমতার সাথে এগুলো উল্লেখ করতে হবে তাহলে তার লেখনীর সাথে কেন তার খারাপ দিকগুলো উল্লেখ করা যাবে না?
আর জামাইএর ব্যাপারটা আমি যতটুকু জানি, জামাই তার মেয়েকে বিয়ে করার আগে দাবী করেছিল তাকে যাতে বিলেতে পড়তে পাঠানো হয়। না হলে সে এবং তার পরিবার বিয়ে করতে রাজী ছিল না। এবং তার সেই জামাই সম্ভবত একটু “ভাদাইম্মা” ছিল।যার জন্য কবিকে বহু হ্যাপা পোহাতে হয়েছে কালে কালে। আমার মনে হয় আমার দেওয়া তথ্যটা ভুল নয়। যদি ভুল হয় তাহলে আমাকে ঠিক করে দেবেন।
আমি বলতে বাধ্য, হয় আপনি ফরিদ ভাই আর অভিদার লেখাটা ঠিকভাবে পড়েন নি অথবা রবীন্দ্র প্রেমে এতই দিশেহারা যে অত্যন্ত যৌক্তিক একটি আলোচনাকে আপনার কাছে অসম্পূর্ণ মনে হচ্ছে। লেখকরা বেশ ভালো ভাবেই বলে নিয়েছেন যে, রবীন্দ্রনাথ বাঙলা সাহিত্যের একজন শ্রেষ্ট লেখক। তার অপরিসীম মেধা সম্পর্কে তাদের কোন সন্দেহ নেই। আর এখানে তো রবীন্দ্র জীবনী লেখা হচ্ছে না! এখানে রবীন্দ্রনাথের প্রোফাইলিক জীবনে যে কিছু কালিমা আছে সেটাই দেখানো হচ্ছে এবং সেই কন্টেক্সটে এলেখার মত খুব বেশী সম্পূর্ণ রবীন্দ্র সমালোচনা আপনি আর পড়েছেন?
তারা কোনখানে, কোথাও তাদের লেখা মৌলিক বলে দাবী করেছে বলে দেখাতে পারবেন? বরঞ্চ তাদের বইয়ে দেয়া প্রত্যেকটি তথ্যের জন্যেই একাধিক রেফারন্স দেয়া থাকে।
তারমানে কি অনুবাদ মানে চুরি? নাহলে নারাজ হবার প্রশ্ন কেন আসছে? অনুবাদ আবার চুরি হল কবে থেকে?
বিশ্বাস করুন আমার কাছে মোটেও একথা মনে হয় নি। কারন আমি বুঝি কোনটা সমালোচনা আর কোনটা কুৎসা। এটা আপনি না বুঝতে পারলে তো সমস্যা।
আবারও বলছি আমার কাছে মোটেও একথা মনে হয় নি। আপনার কাছে কেন মনে হয়েছে তাই ভাবছি। 😕
একটাই অনুভুতিঃ :-X আমার কেন আপনার মত মনে হচ্ছে না????????
আরেকটা ব্যাপার আমি বুঝতে পারছি না, যারা রবীন্দ্রনাথের জমিদারীর মধ্যে কোন সমস্যা দেখতে পাচ্ছেন না তার আসলে জমিদারী জিনিসটাই বোঝে কিনা। রবীন্দ্র হৃদয়ে যদি এতই ভালোবাসা থেকে থাকত তার প্রজাদের জন্য, তাহলে কেন তাদের জমি তাদের মধ্যে বন্টন করে দিল না? তার বিলাসিতায় টান পরে যাবে বলে?
এত আলোচনা সমালোচনা পড়ে আমার উপলব্ধি একটাই আমরা বাঙালিরা এখনও সমালোচনা সাহিত্যের সাথে পরিচিত নই। আমরা এখন প্রকৃত যুক্তিবাদীই হতে পারলাম না। রবীন্দ্রনাথের জায়গায় কৃষ্ণ কিংবা মোহাম্মদকে বসিয়ে দিলেই এই সম্পূর্ন আলোচনাটা একটা হিন্দু বা মুসলমানদের আলোচনা হয়ে যাবে, যেখানে একদল লোক বোঝানোর চেষ্টা করছে মোহাম্মদও মানুষ আর আরেক দল প্রতিবাদ করে বলছে না সে মহামানুষ/মানব।
আমরা কেন একজনের সমালোচনা সহ্য করতে পারি না? কারন আমরা কারো সমালোচনা শুনলে তাকে আর সহ্য করতে পারি না। যেজন্য আপনারা রবীন্দ্র প্রেমিরা ধরেই নিচ্ছেন এই আলোচনা কেউ দেখলে রবীন্দ্রনাথের যে পবিত্র ইমেজটা আছে সেটা ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু আপনাদের এটা বুঝতে হবে একজন মানুষের ভালো মন্দ দুটো দিককেই সভ্যতার স্বার্থে লাইম লাইটে নিয়ে আসতে হবে। নিয়ে আসতে হবে এগিয়ে যাবার জন্য। আজকে হুমায়ুন আহমেদের ২য় বিয়ে করার জন্য অনেককেই নাক সিটকোতে দেখছি, কিন্তু বই মেলায় তার বইই সবচেয়ে বেশী বিক্রী হয়। কারন মানুষ জানে লেখক বেঁচে থাকবে তার লেখার জন্যেই, সে কয়টা বিয়ে করেছে, সে কি চুরি করেছে কিনা সেকারনে নয়।
ধন্যবাদ।
@সাইফুল ইসলাম,
(Y)
আপনার কথাটাই আমি আরেকটু পরিস্কার করে বলতে চাই, আচ্ছা ঠিক আছে ফরিদ ভাই, অভিজিৎ ভাইয়ের লেখা বাদ দিলাম, এইবার ইনাদের কাছে আমার ছোট্ট একটা প্রশ্ন, রবীন্দ্রনাথ অবশ্যই ভুলের উর্ধ্বে নন ঠিক? যদি বলেন ভুলের উর্ধ্বে তাহলেতো দেবতাই হয়ে গেল..আর যদি মানেন তারও কিছু নেগেটিভ দিক আছে তাহলে আপনাদের মুখ থেকেই সেগুলো শুনি কী বলেন? অবশ্য ফেসবুকে এক রবীন্দ্রভক্তকে একই প্রশ্ন করাতে সে কোন দোষ খুজে পায়নি 😛
আর আরেকজন এটার উত্তরই দেন নি :))
@টেকি সাফি, হা হা হা। গ্রেট যুক্তবাদি উত্তর। ঘোড়াও হাসবে।
@কুলদা রায়,
বলারতো দরকার ছিল না, আপনাকে দেখেই বুঝতে পেরেছি।
লেখাটি ফেসবুকে লিংক করার ব্যবস্থা তুলে নিয়েছেন কেন, মডারেশনগণ। তাহলে কি অবাধ প্রকাশের দরোজাটি আপনারা বন্ধু রাখতে আগ্রহী?
@কুলদা রায়,
কে বলেছে ফেসবুক লিঙ্ক ব্যবস্থা তুলে দেয়া হয়েছে? ফেসবুকে লিঙ্ক ব্যবস্থা চলে একটি প্লাগইন্স- এর মাধ্যমে। সব পোস্টের জন্যও যা, এই পোস্টের জন্যও তাই। আলাদা ভাবে কোন কিছুই কোন পোস্টের জন্য করা হয় না করা যায় না। আমি তো দেখতে পাচ্ছি লেখার নীচে ফেসবুকের সিম্বলটি জ্বলজ্বল করছে। সেটাতে ক্লিক করেই তো পোস্ট করতে পারার কথা। অথবা লিঙ্ক নিয়ে সরাসরি পোস্ট করতে পারেন।
আপনার কী ধারণা, আমাদের লেখাটির এত বিশাল সমালোচনা হয়েছে এখানে যে আমরা লজ্জায় শেয়ার বন্ধ করেছি! হায়রে কুলদা রায়!
@অভিজিৎ, ধারণাটা সঠিক।
@কুলদা রায়,
:hahahee: :hahahee: ভাই ফেসবুকের উপর মডারেশন করার সাধ্য কার বাপের?
খুব বেশি হলে প্লাগিন টা ডিজ্যাবল করা যায়। যদিও শেয়ারের অপশন আমি দেখতে পাচ্ছি তবু সেটা না থাকলেও ফেসবুকে শেয়ার করার আমি এক মিলিয়ন উপায় এখানে লিখে দিতে পারবো এবং মানুষ নেট ব্যবহার করে অথচ ইউআরএল টা কপি-পেষ্ট করে শেয়ার করতে জানে না বিশ্বাস করতে খানিক কষ্টই হয়। 😉
@টেকি সাফি,
উনারা ‘শুইন্যা মুসলমান’ টাইপ আর কি ! উপ্রে শান্তনু সাব এক লাইন কইছে, ওইটাই কুলদাও রিপিট করতেছে। ফেসবুকে লিঙ্ক শেয়ার আমি বন্ধ করমু ক্যামনে, ফেসবুক কি আমার বাপের সম্পত্তি নাকি? লিঙ্ক কপি কইরা দিয়া দিলেই হয়। তুমি টেকি পার্সন তুমি বুঝছ ঠিকি। কুলদা বাবুরে বুঝানোর সাধ্য আমার নাই।
@অভিজিৎ,
“ফেসবুকে লিঙ্ক শেয়ার আমি বন্ধ করমু ক্যামনে, ফেসবুক কি আমার বাপের সম্পত্তি নাকি? লিঙ্ক কপি কইরা দিয়া দিলেই হয়।”
আমার ঠিক জানা নেই, আপনার বাপের সম্পত্তি কী কী? জানালে বাধিত হবো এবং সেগুলি নিয়ে কোন প্রশ্ন করবো না। আমি গতকাল থেকে কয়েক মিনিট পূর্ব পর্যন্ত প্লাগিন এবং লিঙ্ক কপি করে এটা শেয়ার করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারিনি। তাই জানতে চেয়েছি কেন এই লেখাটা শেয়ার করা যাচ্ছে না।
আপনার এবং ফরিদ আহমদের লেখা শেয়ার করার সময় আমার এমন আসুবিধা হয়নি। আপনার ‘শুইন্যা মুসলমান’ টাইপ উত্তরটা শুনে আমার মনে হচ্ছে “ঠাকুর ঘরে কে? আমি কলা খাই না।” আমার নামের পরেও দেখছি একখান শব্দ বসিয়ে দিয়েছেন। যদিও বুঝতে পারছি না এইটা কোন ভাষার শব্দ। আশাকরি বুঝিয়ে দিবেন।
@শান্তনু,
আপনাকে কিছু বলিনি। কুলদা রায় আপনার দেখাদেখি তোতাপাখির মত একই জিনিস আউরে গেলেন বলে বলেছিলাম ‘শুইনা মুসলমান’। আসলে কাউকেই ফেসবুকে লিঙ্ক শেয়ার থেকে বিরত রাখা যায় না, একথা বলার পরও উনার ধারনা ছিলো যে সমালোচনা সহ্য করতে না পেরেই বোধ হয় আমরা তা করছি! কি করব বলুন! যা হোক, ভুল বঝাবুঝির জন্য দুঃখিত। সরাসরি লিঙ্ক ফেসবুকে দিয়ে দিলেই শেয়ার হবার কথা। করে দেখতে পারেন।
@শান্তনু,
আপনি কি The message could not be posted to this Wall. জাতীয় অ্যালার্ট পাচ্ছেন? এটা কমবেশি সবাই পায়…এই দেখুন আমিও পাই, http://awesomescreenshot.com/0c9j8eob1 পোষ্ট করার সময় লিঙ্কের বদলে স্ট্যাটাস হিসেবে ক্লিক করে শেয়ার করুন, কী বলছি না বুঝতে পারলে এই স্ক্রিনশটটা দেখতে পারেন, http://awesomescreenshot.com/085j8ejf2
সিউর নই তবে ধারণা করি এটা ইউনিকোডেড হেডারের কারনে হতে পারে…আমি আমার নিজের লেখার লিঙ্ক কোনদিনই কোন গ্রুপ বা পেজে শেয়ার করতে পারিনি। এইটা ফেসবুকের একটা কমন বাগ। আবার হুট করেই ঠিক হয়ে যায় মাঝে মাঝে :-X
এখন কথা হচ্ছে এটার জন্য মুক্তমনাকে দায়ী করা (আপনি নন, কুলদা রায় করছিল) খুবই হাস্যকর। কম বেশি অনেকেই এই প্রব্লেমটা জানেন কিন্তু উনি যেই সুযোগ পেয়েছেন, আন্দাজে ধারণা করে নিলেন এইটা মডারেটরদের কীর্তি আর দিলেন মডারেটরগনকে খোচা মেরে :lotpot:
মজা পাইতেছি আলোচনায়। :))
ধর্ম নিয়া লেখা শুরু করলে শুনতে হয় ভালোমতো মন দিয়া কুরান পড়ুন, এক জীবন দিয়ে গবেষণা করলেও নবীকে জানা সম্ভব নয়। তারপর যখন মার্ক্স নিয়ে লেখলাম, একই বাণী। এক জীবন দিয়েও মার্ক্সের লেখা বুঝে শেষ করা যাবে না। এখন যখন রবীন্দ্রনাথ সামনে আসলো, সেই একই বাণী।
আমাদের জীবন তো মাত্র একটা। চিন্তা করুন পৃথিবীর সবাই যদি একেক মহামানবকে শুধু বুঝতে/জানতেই ব্যয় করে তবে সভ্যতা এগুবে কিভাবে? এই আধুনিক সভ্যতা বিবর্তনের তুলনায় কতটুকু? আজ থেকে পঞ্চাশ হাজার বছর আগেরকার পূর্বপুরুষদের কথা চিন্তা করুন। তখন কোথায় ছিল মুহাম্মদ, মার্ক্স, রবীন্দ্রনাথ, আইন্সটাইন, শেক্সপিয়ার, কিংবা হকিং। এরা কেউই মহামানবদেরকে ফলো করে মহামানব হয়নি। তারা তাঁদের নিজদের কর্ম দিয়েই মহামানব হয়েছে (যদিও আমি আলাদা করে মহামানব হিসেবে দেখি না)। এই মহামানবদের থেকে জ্ঞান লাভ করুন, ঠিকাছে, কিন্তু পুঁজো করার প্রয়োজন দেখি না। মানুষ মাত্রেই দোষগুণে মানুষ। আমার চোখে তাই কেউ মহামানব নয়।
@স্বাধীন,
খুবই ভুল মন্তব্য।
কারন মার্কসবাদি বা ধর্মবাদিরা গালাগাল ছারা আসল বিরোধি যুক্তি কিছুই দিতে পারে না। এখানে উলটোটা হয়েছে, লেখকরা অভিযোগ করেছেন কিন্ত সাথে প্রমাণ বা যুক্তি প্রায় কিছুই নেই-শুধু কিছু ক্রস রেফারেন্স।
তাছারা মার্কসবাদের নামে লেনিনবাদ বা ইসলাম বা হিন্দুত্ব আমাদের সমাজ এবং রাজনীতিকে ধ্বংস করেছে-সেখানে রবীন্দ্রনাথ বাঙালীর সত্ত্বাকে গড়েছেন, বাঙালীর পরিচয়কে প্রতিষ্ঠা দিয়েছেন। ইসলাম, লেনিনবাদ, হিন্দুত্ব-বাঙালীর বাঙালীত্ব ছিনিয়ে নিয়েছে শুধু। বাঙালী বোকা-তাই বোকা বানিয়েছে।
সুতরাং স্বাধীনের এই মন্তব্যের পেছনে কোন চিন্তা নেই-যুক্তি নেই।
@বিপ্লব পাল,
বিপ্লব’দা
যুক্তি আপনার উপরের মন্তব্যে কি আছে? না নেই, আছে দৃঢ় বিশ্বাস। কি সেই বিশ্বাস? রবিন্দ্রনাথ বাঙালীত্ব দিয়েছে, এজ ইফ, একজন মানুষের কাছে বাঙালিত্বটাই বড় বিষয় যেমনটা একজন মুসলিমের কাছে মুসলামনত্বটাই বড় বিষয়। আমার কাছে এগুলো বড় পরিচয় নয়। আমার সমস্যা অন্য জায়গায়। রবীন্দ্রনাথ বাঙালীত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে মানলাম, সো হোয়াট? মুহাম্মদ ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছে, সো হোয়াট? Dড: ইউনুস ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠা করেছে, নোবেল পেয়েছে, সো হোয়াট? তার মানে কি তাদের যদি কোন ভুল থাকে সেটার সমালোচনা করা যাবে না? আমি সেই মানসিকতার সমালোচনা করছি। লেখকদ্বয় প্রমান/যুক্তি/রেফারেন্স দেননি তা কি সঠিক? দিয়েছেন যেটা হয়তো আপনাদের জন্যে এনাফ নয়। এরকম হাজারো যুক্তি দিলেও অনেক ধার্মিকদের জন্যে এনাফ হবে না। বালিতে মুখ গুঁজে থাকবেই। একই দৃঢ় বিশ্বাস যখন মুক্তমনাদের মাঝেও দেখি তখন অবাক হতে হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সবারই মনের গভীরে একেকটি বিশ্বাস রয়েছে, শুধু জায়গা মত আঘাত লাগলেই সে সেই বিশ্বাসকে ডিফেন্ড করা শুরু করে। আর জগতে সবাই বোকা, আর নিজে একমাত্র চালাক সেরকম বিশ্বাসে মজে থাকাটাও বিশেষ সুবিধের লক্ষণ নয়। 🙁
@স্বাধীন,
না-ভুল। আমি অনেক লেখা এবং যুক্তি তুলে দেখিয়েছি-লেনিনবাদ, হিন্দুত্ববাদ এবং ইসলামের ত্রুটি। বিশ্বাস কোথায়??
এই সব ভুল আদর্শবাদের বিরুদ্ধে প্রায় ২০০-৩০০ লেখা এবং অজস্র তথ্য দিয়েছি। এটাকে বিশ্বাস বললে বিশ্বাসের সংজ্ঞা বাংলা ভাষাতে বদলাতে হবে।
কে বলেছে করা যাবে না?
আমি নিজেই ব্লগ লিখেছি জিন্না রবীন্দ্রনাথের থেকে বেশী প্রগতিশীল ছিলেন। কারন সলিড প্র্মান আছে। রবীন্দ্রনাথ ৭০ বছর বয়সে যুবতী ভিক্টরিয়া ওকাম্পোর স্তন নিয়ে খেলা করেছেন, সেই তথ্যের বিস্তারিতও দিয়েছি।
কিন্ত লেখকরা রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ এনেছেন, তা রবীন্দ্রনাথ নিয়ে লেখকদের অজ্ঞতা ছারা কিছুই প্রমাণ করে না। লেখার বিরুদ্ধে মন্তব্য গুলো পড়লে যেকোন সাধারন বুদ্ধির পাঠকের কাছে এইটুকু এতক্ষনে পরিষ্কার হওয়ার কথা-কারন বিরুদ্ধে প্রমান বা যুক্তি, পক্ষের যুক্তির থেকে বেশীই দেওয়া হয়েছে।
অবশ্য অনেকেরই পায়খানা পরিষ্কার হয় না, কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন এবং সেই ক্ষেত্রে ভু্ল কিছু খেয়ে ফেললে, বাওল ক্লিন হওয়ার সম্ভাবনা কম। আমরা অনেক কিছুই খায়, তার সবটাত আর পুষ্টিতে লাগে না-রেচন ক্রিয়া করে বর্জন করতেও শিখতে হয়।
@স্বাধীন,
এটা যদি সকল পূজারীরা বুঝত , তাহলে মনে হয় কোন ক্যাচাল বা মানুষে মানুষে দ্বন্দ , বিদ্বেষ , লাঠালাঠি মারামারি থাকত না। :clap
@স্বাধীন,
এখানে তাও রিলিভ্যান্ট কথা বলছেন! আর আমার ফেসবুক অভিজ্ঞতা শুনুন, শুধু একটাই অভিযোগ করেছিলাম রবীন্দ্রনাথ অ্যাডাপশন করতে পারলে আমরা কেন তার গান ফিউশন করতে পারব না? যদি সেটা বাজে হবে কী হবেনা সেটা শ্রোতার উপর ছেড়ে দিতে এত ভয় কেন? ব্যাপারটা আমার কাছে কেমন কেমন মনে হয়। এক রবীন্দ্রভক্ত চিল্লায়া বলে আপনি কিছুই বুঝেন না…আপনি সুর তাল লয় বুঝেন? সপ্তক সুর কাকে বলে আপনি জানেন?
ব্যাপারটা এমন, আমি সাধারণ এক্সপেরিয়ান্স থেকে বললাম উইন্ডোজের মার্কেটিং পলিসি বাজে আর আমাকে বলা হচ্ছে আপনি কিছুই বুঝেন না, উইন্ডোজের কার্নেল মেমরির কাকে বলে জানেন? কার্নেল মেমরির কাজ কী বলুন…উইন্ডোজের বুটিং প্রসেসের বর্ননা দেন 😀
@টেকি সাফি, (Y)
মুক্তমনার সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা! (F)
মোকাফফর হোসেনকে সাধুবাদ জানাই একটি আলাদা পোষ্ট দেওয়ার জন্য – “রবীন্দ্রনাথ মানবই ছিলেন, তবে মহামানব!! “রবি ঠাকুর, রাহাজানি এবং রবীন্দ্র পূজারীবৃন্দ” – প্রবন্ধের পাঠ প্রতিক্রিয়া” ”
মূল প্রবন্ধের উপর আমার প্রতিক্রিয়ার পুরোটাই যেন প্রতিফলিত হয়েছে মোজাফফর হোসেনের লেখায়। “রাহাজানি” শব্দটি ততটা নয় কিন্তু “পূজারীবৃন্দ” শব্দটি আমার কাছে আপত্তিকর মনে হয়েছে। কাজী নজরুল (বানানটা ঠিক টাইপ করতে পারলাম না) ইসলাম যেমন বলেছেন – “মাথার উপর জ্বলিছেন রবি …”, রবি ঠাকুরের অবস্থান আমারও মাথার উপরে। কাজেই আমাকেও যদি “পূজারী” হিসেবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয় তাহলে আমার ভাল লাগবে না। আমার মনে হয় না কোন রবীন্দ্রভক্ত রবি ঠাকুরকে মুহম্মদ বা কৃষ্ণের মত ভগবান মনে করে। অনেক মন্তব্যকারী এর মধ্যেই বলেছেন – কোন রবীন্দ্রভক্ত ভক্তি গদগদ হয়ে মন্দির মসজিদ বানায় নি, কিম্বা সন্ত্রসীগিরি করতে যায়নি। আভিজিত নিজেও তাঁর একটি বইয়ের নাম রেখেছেন, “আলো হাতে আঁধারের যাত্রী”। এতে তিনি পূজারী হননি। রবীন্দ্রনাথের সঙ্কলন এত বিশাল এবং কাব্যময় যে, মনের প্রকৃতভাব প্রকাশ করতে আমরা হামেশাই তাঁর পংক্তিই ব্যবহার করি। এই ব্যবহার বা তাঁর কবিতা, গান ভাল লাগা নিয়ে বিদ্রুপ করার অর্থ খুঁজে পাই না। শিরোনামটি আক্রমনাত্মক। রবীন্দ্রনাথকে আক্রমন করতে গিয়ে অগনিত বাংগালীকেও আঘাত করা হয়েছে। শিরোনামটি আরও মার্জিত হতে পারত, যেমন – “রবীন্দ্র ব্যক্তিত্বে দুটো কালো দাগ”; কালো দাগ বা অধ্যায়, ইত্যাদি।
কথা হচ্ছে, চোরকে চোর বললে দোষ কোথায়? যদু-মধুকে চোর বললে দোষ নেই, রবি ঠাকুরকে বললে এত গাত্রদাহ কেন, ইত্যাকার। কারণ আছে। একটা গল্প দিয়ে বলি। তেইশ বছর আগে প্রয়াত আমার হেড মাষ্টার সাহেবকে স্মরণ করতে হচ্ছে। তিনি গল্পটি প্রায়ই বলতেন। এক রাজার ছেলে, তার মন্ত্রীর ছেলে এবং প্রজার ছেলে তিন জন ঘনিষ্ট বন্ধু। তারা তিন জন মিলেঝিলে একটি অপরাধ করল। কাজী সাহেবের কাছে বিচার আসল। তিনি বিজ্ঞ লোক। একই অপরাধে তিন জনকে ভিন্ন সাজা দিলেন। প্রজার ছেলের শাস্তি – মাথা মুড়িয়ে ঘোল ঢালা হল। মন্ত্রীর ছেলেকে এক সাথে বেঁধে সারা শহর প্রদক্ষিন করানো হল। এর পর রাজার ছেলের পালা।
কাজী সাহেব বললেন, “তুমিও এই কাজে জড়িত?”
শাস্তির ফল দাঁড়াল এর রকম। প্রজার ছেলে দিব্যি সমাজে থেকে গেল। মন্ত্রীর ছেলে লজ্জায় ঘর থেকে বেরোল না। এবং রাজার ছেলে দেশ ছেড়েই চলে গেল।
আমার মনে হয় জিনিষটি বুঝাতে পেরেছি।
দ্বিজেন্দ্র লালকে নিয়ে রবি ঠাকুরের আহাম্মকির কথা মোজাফফর হোসেন সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। আমি একজন নগন্য এবং সাধারণ মানুষ। আমিও এই আহাম্মকি করতাম না। কিন্তু যাঁর স্থান আমাদের মাথার উপর তিনিই এই কাজটি করে বসে আছেন! লজ্জায় মাথা হেট হয়। এই জন্যই একটি প্রবাদের সৃষ্টি হয়েছে – “হাতীরও পিছলায় পা”
গগন হরকরার সুরের ব্যাপারটি নিয়ে বিপ্লব পালের ব্যাখ্যা আমার মনপুত হয়েছে। বাউল সুর। আঞ্চলিক সুর। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সুর। কে প্রথম করেছে, নাকি কালের প্রক্রিয়ার একদিন একটি নির্দিষ্ট রূপ পেয়েছে। কাজেই গগন হরকরাই যে আদি সুর রচয়িতা তারই প্রমাণ আছে কি? রবি ঠাকুর যদি বলে থাকেন, বিভিন্ন বাউল সুর থেকে সুর নেওয়া। তাহলে তো ল্যাঠা চুকেই গেল।
বিশ্বপরিচয়-প্রমথনাথ ব্যাপারটি নিয়ে অভিজিত মাস ছয়েক আগেও আলোকপাত করেছিলেন। আমি মন্তব্য করেছিলাম এ রকম – ‘ছি ছি ছি। তাঁর নিজেই কথাতেই বলতে হচ্ছে – এ জগতে হায়, সেই বেশী চায়, আছে যার ভূঁড়ি ভূঁড়ি।’
এবারে অনুভুতি একটু ভিন্ন। ফরিদ আহমেদ তথ্য সমৃদ্ধ, চিন্তা জাগানিয়া বলিষ্ঠ একজন লেখক। অভিজিৎ রায়ও তাই। তাঁর বিজ্ঞান ভিত্তিক যে কোন একটি লেখাই “বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান” শাখায় তাঁকে স্মরণীয় করে রাখবে। দুজনেরই লেখার হাত অসাধারণ। তাই জুটি বেঁধে লেখা তাঁদেরই সাজে। মুক্তমনা পরিবৃত্তে এঁরা দুজন উচু আসনে উপবিষ্ট। এঁরা আমার চেয়ে বয়সে নবীণ কিন্তু আমি বিজ্ঞজনের মর্যাদা দিয়ে মাথায় রাখি। বলতে পারেন আমিও এঁদের একজন পূজারী। এঁরা কোন রকম ভুল করলে আমি আহত অনুভব করি। মুক্তমনায় আমার মত এরকম প্রচুর পাঠক আছে। আমার কাছে মনে হয়েছে এঁরা এভাবে না লিখলেও পারতেন। শিরোনামটি আরও মার্জিত হতে পারত। “রবি বুড়ো” শব্দদ্বয় যেমন দৃষ্টিকটু এবং প্রবন্ধের মান হানিকর, শিরোনামটিও তেমনি মনে হয়েছে। এঁদের লেখার ক্রেডিট অনেক বড়। কিন্তু লেখাটি এই বড় ক্রেডিটে নতুন বেশী কিছু যোগ করেনি বলে মনে হয়েছে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আপনার সাথে আমার সহমত|রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লেখা যাবে না বিষয়টা সেভাবে দেখা ঠিক না|কিন্তু প্রবন্ধটি খুব চটুল এবং অপ্রয়োজনীয় বির্তক উস্কে দেয়|তাছাড়া আমি আগেও বলেছি,আহমদ শরীফের প্রবন্ধটি পড়লে এটার গুরুত্বহীনতা এবং প্রয়োজনহীনতা প্রকটভাবে ধরা পড়ে| সমালোচনার সমালোচনা পড়ে আসল লেখককে খোঁজার চেষ্টা কোন কাজের কাজ না বলেই আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি|ফরিদ আহমেদ আর অভিজিৎ রায়-এর কাছ থেকে আমি এতটা কাট-পেষ্ট মার্কা প্রবন্ধ আশা করি নি|তাছাড়া যারা ইন্টারনেট থেকে বিষয়ভিত্তিক অধিকাংশ কাট-পেষ্ট নিয়ে প্রবন্ধ লেখেন আমি নিজে সে ধরনের প্রবন্ধ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি|কারন, ইন্টারনেট-এর সার্চ ইঞ্জিনের চেয়ে (গুগলের চেয়ে তো নয়ই) কোন লেখককে আমি খোঁজাখুঁজিতে বেশী পারদর্শী মনে করি না|ইংরেজি জানা থাকলে কোন ব্যক্তির খোঁজাখুঁজি আর অনুবাদের উপর নির্ভর না করে সরাসরি খুঁজে নিলেই তো পড়া যায়! যারা পড়ার ক্ষেত্রে শুধু বাংলাকে মাধ্যম হিসেবে পেতে চান,তাদের কথা আলাদা|
আমার এই অযাচিত মন্তব্যে কেউ দুঃখ পেয়ে থাকলে আমি করজোড়ে ক্ষমাপ্রার্থী|
@ভজন সরকার,
প্রবন্ধটি কেন খুব চটুল সেতা আপনার কাছে জানতে চাইবো না। পাঠক হিসাবে এর মূল্যায়নের পূর্ণ স্বাধীনতা আপনার রয়েছে। কিন্তু অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক উস্কে দিতে চেয়েছি আপনার এই ধারণাটার সাথে দ্বিমত পোষণ করছি। বিতর্কটি আমাদের কাছে প্রয়োজনীয়ই মনে হয়েছে। শুধু আমাদের কাছে নয়, কে জানে হয়তো অনেক পাঠকের কাছেও এটিকে প্রয়োজনীয়ই মনে হয়েছে।
আহমদ শরীফ কী তাঁর প্রবন্ধে বিশ্বপরিচয় এবং গগন হরকরাকে নিয়ে আলোচনা করেছেন? যদি না করে থাকেন, তাহলে কোন কারণে আপনি আমাদের প্রবন্ধটিকে প্রকটভাবে গুরুত্বহীন এবং প্রয়োজনহীন বলে মনে করছেন? নাকি আপনার ধারণা যে এই প্রবন্ধটি হুবহু আহমদ শরীফের প্রবন্ধেরই অনুরূপ?
কারো লেখার উদ্ধৃতি দেওয়াটা কী কাট-পেস্ট? তাহলে হুমায়ুন আজাদের নারীও কিন্তু কাট-পেস্টেই ভর্তি। আহমদ শরীফের রচনাসমূহেরও একই দশা।
বিপ্লব ধরে নিয়েছিলো যে এই লেখাটি ইন্টারনেট থেকে কাট-পেস্ট করে লেখা হয়েছিল। তখন তাঁকে আমি বলেছিলাম যে, আমাদের প্রবন্ধটাতে শুধুমাত্র গানগুলো ছাড়া আর কোনো কিছুই ইন্টারনেট থেকে আসে নি। কোন কোন বই বা প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে তার সবই রেফারেন্স হিসাবে দেওয়া আছে। ইন্টারনেট থেকে কাট-পেস্ট করা প্রবন্ধ থেকে আপনি দূরে থাকেন জানার পরে আশ্বস্ত হলাম এই ভেবে যে আমাদের লেখাটিকে আপনি অন্তত সেরকম ভাবেন নি। কারণ আমাদের লেখা থেকে আপনি দূরেতো থাকেন নি, বরং বেশ জমে গিয়েছেন, সেটা আপনার মন্তব্য পড়েই জেনেছি।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
ইসলাম বিরোধিতার সময় , এ মানসিকতা আপনার থাকে কী?
@ফারুক,
দুঃখিত। আমি এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া থেকে বিরত থাকতে চাই। আল্লাহ এবং রবি ঠাকুরকে কি একই মাপকাঠি দিয়ে মাপা যায়?
আপনি যা ইচ্ছা বলুন, আমি আপনার মন্তব্যের উত্তর না দেওয়ার চেষ্টা করব।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
তা কী আর যায় নাকি। রবি ঠাকুরতো আল্লাহ-রসুলের চেয়েও উপরে। তিনি হবেন সকল সমালোচনার উর্ধ্বে। তা না হলে অগনিত বাঙালিকে আহত করা হবে যে।
@ফরিদ আহমেদ,
এই ধরনের হাস্যকর মন্তব্য তোমাদের চিন্তার এবং চেতনার অগভীরতাকেই প্রমান করে। মনে রাখবে এই আল্লার জন্যে বাঙালী বিভাজিত, হাজার হাজার দাঙ্গা হয়েছে-বাঙালী সংস্কৃতির সব থেকে বড় শত্রু হিন্দু এবং ইসলাম ধর্মে বাঙালীর বিভাজন। সেখানে রবীন্দ্র আল্লা বাঙালীর মিলন সেতু, বাঙালীর হৃদয় এবং ক্ষত স্থানে প্রলেপ ও। হিটলার ও জননেতা ছিলেন, নেহেরুও ছিলেন- মুজিবরও ছিলেন। তাই সবাই সমান?
দেশ বা জাতির মধ্যে যুক্তির থেকে আবেগ থাকে বেশী। কোন দেশের অস্তিত্বের সপক্ষে যুক্তি পেশ করা সম্ভব না-সেখানে যুক্তি একটাই- জাতীয় আবেগ যা সংস্কৃতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। নইলে বাজার দাবি করে দেশ উড়ে যাক-তাতেই সবার আর্থিক মঙ্গল।
সুতরাং সাংস্কৃতি প্রাঙ্গনে ও ভাবে যুক্তি খোঁজা যায় না। তোমাদের রবীন্দ্রনাথ নিয়ে একটা পজিশন আছে-ফাইন! কিন্ত সেটা বিজ্ঞানের মতন যুক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠা করার মতন বিষয় না-আশা করি তোমাদের এই প্রবন্ধের এই সমালোচনা থেকে বোঝা উচিত।
@বিপ্লব পাল,
তোমার কাছে নৃপেন্দ্রনাথ সরকারের মন্তব্যটাকে হাস্যকর মনে না হয়ে আমারটাকে যে মনে হলো, সেটাও কম হাস্যকর নয়। বাঙালির মিলন সেতু হলেই কারো সমালোচনা করা যাবে না, এ ধরনের কথা কতটা যে হাস্যকর সেটা বোঝার ক্ষমতা তোমার অন্তত নেই।
@বিপ্লব পাল, (Y) (F)
@নৃপেন্দ্র সরকার,
রবীন্দ্রনাথকে মাথার উপরে রাখলেই তাঁকে পূজারী মনে করা হচ্ছে এমন অহেতুক ভাবার কারণ কী? পূজারী হচ্ছে তারাই যারা তাঁদের পরম পূজনীয় ব্যক্তিকে রাখেন সকল সমালোচনার উর্ধ্বে। আপনিতো আর তা নন। রবীন্দ্রনাথের বিশ্বপরিচয় চুরির ঘটনা শুনে এই আপনি না ঘৃণায় ছি ছি করে উঠেছিলেন। তাহলে খামোখা নিজের ঘাড়ে পূজারী ট্যাগ টেনে নিয়ে নিজেকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে এমনতর ভাবনা ভাবছেন কেন?
আপনিতো অহেতুক সন্দেহ রোগে ভুগেই চলেছেন। রবীন্দ্রভক্ত হওয়াতেতো দোষের কিছু নেই। তিনি আমাদের সাহিত্য জগতের শ্রেষ্ঠ পুরুষ। তাঁর অগনিত ভক্ত থাকতেই পারে। কথা হচ্ছে পূজারীদের নিয়ে। পূজারীরা মন্দির মসজিদ বানিয়েছে বা সন্ত্রাসগীরি করেছে এমন কথা আমরাতো বলি নাই। কিন্তু আমরা বলেছিলাম যে রবীন্দ্র সমালোচনা করলে তাঁরা উন্মাতাল আচরণ করেন। এই পোস্ট এবং আমাদের পোস্ট দেখলে সেটার কী প্রমাণ পাওয়া যায় না?
ল্যাঠা যে চুকে যায় না, সেটা আপনি রবীন্দ্র ভক্ত বলয় থেকে বের হয়ে আসলেই বুঝতে পারবেন। আপনার বক্তব্য মেনে নিলে সমস্ত বাউল সুরই বেওয়ারিশ মাল হয়ে যায়। সিরাজ সাই, লালন সাই, গগন হরকরা, পূর্ণদাস বাউল, পাগলা কানাই, শাহ আবুদল করিম এই সমস্ত গুণী ব্যক্তিদের অমর সৃষ্টিকে অপমান করা হয়।
রবীন্দ্রনাথ যে কর্ম দুটি করেছেন তা অত্যন্ত অমার্জিত কাজ। কালো দাগ বা কালো অধ্যায়ের মত মার্জিত শব্দ দিয়ে একে ফুটিয়ে তোলা যেতো না। সে কারণেই ওই কঠিন ভাষার ব্যবহার।
রবীন্দ্রনাথের বিষয়ে সত্য প্রকাশ করলে অগনিত বাঙালি আঘাতপ্রাপ্ত কেন হবে? অগনিত মুসলমান মনে আঘাত পাচ্ছে যেনেওতো এখানে ইসলাম এবং মুহাম্মদের কঠোর সমালোচনা করা হচ্ছে প্রায় প্রতিদিনই। তখনতো আপনাকে এই যুক্তি দিতে শুনি নি। তাহলে কী রবীন্দ্রনাথ সমালোচনার উর্ধ্বে? তাঁকে সমালোচনা করলে কোনো না কোনো বাঙালিতো আহত হবেই।
আপনার তাহলে ধারণা যে এই লেখাটা লিখে আমরা ভুল করেছি। বেশ ভাল কথা। এটা আপনার স্বাধীনতা। মুক্তমনায় আপনার মত পাঠক, যাঁরা মনে করেন যে আমরা ভুল করেছি, যেমন আছেন, তেমনি এখানে অনেক পাঠকও আছেন যাঁরা মনে করেন যে, আমরা ভুল করি নি।
আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে এভাবেই লেখা প্রয়োজন। সত্য উদ্ঘাটনে কাউকে না কাউকে দায়িত্ব নিতেই হয়। মান্যবরদের নিয়ে সত্যিকথনে কঠিন বাধা যে আসবে, সেটা জেনেই এই ঝুঁকিটা আমরা নিয়েছি।
আপনার কাছে মনে না হলেও আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে আমরা বিরাট একটা কিছু যোগ করে ফেলেছি। এই প্রবন্ধটি যাঁরা পড়েছেন এবং ভবিষ্যতে পড়বে্ন, তাঁরা যতবারই আমাদের জাতীয় সংগীতটি শুনবেন ততবারই তাঁদের নিজেদের অজান্তেই গগন হরকরার নামটি মনে ভেসে উঠবে। এর থেকে বড় যোগ, বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে বলুন?
@ফরিদ আহমেদ,
আরও পরিষ্কার করে বলি, মোজাফফর হোসেনের লেখা এবং আপনাদের লেখার মধ্যে টোনাল তফাৎ আছে। সেটিই বলেছি আমার মন্তব্যে। কিন্তু মনে হচ্ছে আপনি বিরক্ত হয়েছেন। ভজনের
মত আমিও করজোড়ে ক্ষমাপ্রার্থী।
এই লেখাটা ফেসবুকে শেয়ার করা যাচ্ছে না কেন ?
ডঃ স্বপন বসুর গাওয়া গগন হরকরার কোথায় পাব তারে এবং রবীন্দ্রনাথের আমার সোনার বাংলা গানের লিংক। শুনে এই গায়ক ও গবেষক কী বলেন কী গাচ্ছেন–
দেখুন গগন হরকরার একই গানের বহু ধরনী গায়কী।
আপনারা কেউ কি হুমায়ুন আজাদের “নারী” পড়েননি? হুমায়ুন আজাদ রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে অনেক লিখেছেন, এবং দারুণ লিখেছেন।
অভিজিৎ ভাই আপনিও লিখে চলুন।
@আদনান,
হা বহুবার পড়েছি। তাতে কি? খুব ভালো লিখেছেন। তাই বলে সবটাই গ্রহন করতে হবে এমন বিবেকহীন কি সবাই হবে?
@আফরোজা আলম,
না না, তা হবে কেনো? কিন্তু আপনাকে তো তাঁর যুক্তির ভুলটা দেখাতে হবে। আর যদি না দেখান, তবে আপনার কথা কিন্তু হুমকির মতো শোনাচ্ছে।
তা তাঁর কোন যুক্তির ভুল আপনি ধরেছেন? আমাকে কি জানাবেন? আমি আপনার কাছ থেকে কিছু শিখতে চাই।
অনেকের অভিযোগ বাঙালিরা সমালোচনা সহ্য করতে পারে না। আমার তো মনে হয় বাঙালিদের মত সমালোচনা পটু জাতি দ্বিতীয়টা পাওয়া যাবে না। এত অবসর অন্যদের কোথায়?
আর বলে রাখা ভাল, ভিন্ন মত প্রত্যাশা করেই এই প্রতিক্রিয়াটা আমি লিখেছি। ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়েই তো প্রকৃত সত্য বের হয়ে আসে। তবে দু:খের সাথে জানাতে হচ্ছে যে আমি আর বোধহয় এই আলোচনায় অংশ নিতে পারবো না। কারণ, আজ সকালে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছি। ওখানে নেটওয়ার্ক থাকে না। মুক্তমনাকে ছুটির এই কয়টা দিন খুব মিস করবো। সবাইকে আগাম ঈদের শুভেচ্ছা। (জানিনা, মুক্তমনার সবাই ঈদের শুভেচ্ছাটা সহজভাবে নেবেন কি না!)
@মোজাফফর হোসেন,
(জানিনা, মুক্তমনার সবাই ঈদের শুভেচ্ছাটা সহজভাবে নেবেন কি না
ঈদের ব্যাপারটা আমাদেরে সংস্কৃতির অংশ এখন । এর সাথে ধর্ম কে না জরালেও চলে !!! যদি ধর্মের সবকিছু ই বাদ দিতে হয় তবে নাস্তিকতাও ত মৌলবাদী একটা ধরমেই পরিনত হবে । ঈদের নামাজ না পরেও ঈদ পালন করা জায় , বছরে দুইদিন নামাজ পরলেও কেও ধারমিক হয় না
@মোজাফফর হোসেন,
আমার আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেছ তুমি। ধন্যবাদ জানাই তাই তোমাকে। (F)
বেশী আর কচলাতে ইচ্ছে করছে না। ঈদ এর শুভেচ্ছা নিও আমার দিক থেকে
ধন্যবাদ দেবনা, কেননা তোমার মত তরুন প্রজন্মএর কাজ রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর এর সব চাইতে উল্ল্যেখযোগ্য দিক গুলো উন্মোচিত করা।
আর হ্যা ” গোরা” অনেকেই পড়েনি বলে আমার ধারনা।
এইখানে অভিজিৎ রায় অসত্য এবং কুযুক্তি দিচ্ছেন। নবীন পাঠকদের বিভ্রান্ত করছেন। তারা রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ৫০/৬০ বছর আগে আভিযোগসমূহ নতুন করে উত্থাপন করেছেন। অভিযোগগুলো ৫০/৬০ আগেই খণ্ডণ করা হয়েছিল। শুধু বোতলটা পাল্টেছেন অভিজিৎ রায় এবং ফরিদ আহমেদ। মালটি কিন্তু সেই পুরনো মদ। সেটার পরিবর্তন হয় নাই।
সেই পুরনো অভিযোগগুলোর যখন জবাব দেওয়া হচ্ছে তখন কিন্তু তিনি বলছেন–এগুলো বহুকথনে জীর্ণ। সে গুলোকে পুরনো বলে বাতিল করছেন। কী অদ্ভুদ যুক্তি? অভিযোগের প্রমাণিত জবাবগুলো কি পুরনো হয়? অভিযোগের জবাবগুলিও যখন তাঁদের প্রোপাগাণ্ডাগুলিকে , অভিজিতদের অসৎ উদ্দেশ্যকে ভেঙে দিচ্ছে তখন তিনি সে যুক্তিগুলোকে পুরনো বলে পাশ কাটানোর চেষ্টা করছেন। এটা যুক্তিবাদি পদ্ধতি নয়। এটা কপটতা।
তথ্য কখনো পুরনো হয় না। আর সত্যকে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সততা অনুসরণ করা উচিৎ। এক্ষেত্রে অভিজিৎদের আচরণ অসৎ। তিনি যে জিততে চাচ্ছেন–এই জেতার পদ্ধতিই পীরবাদিতা, প্রতিক্রিয়াশীলতা। তাল গাছটা আমার আদর্শ নিয়ে তো মুক্তবুদ্ধির চর্চার হয় না।
অভিজিৎ মোজাফ্ফরকে বলেছেন,
অভিজিৎ রায়, যারা গগন হরকরার নাম জানেন না, তাদের দোষ দেখি না। অনেক অজানাই রয়ে যায়। এক জীবনে সব জানা যায় না। জানার চেষ্টা করা যেতে পারে। অজানা বিষয়ে যারা জানেন তারা অজানা মানুষদেরকে জানিয়ে দিতে পারেন। এটাই দরকার।
কাদা মাটির মত সহজ সরল সদ্য তরুণদের কাছে আপনি কী বলছেন বুঝতে পারছেন? এরা জানতে চান। এদের অনেক কিছুই অজানা। তাদের সঠিক তথ্যই দিন। না দিয়ে তাদের জানাটাকেই আপনি আপনার তালগাছ জিততে ব্যবহার করছেন। না জানাটা অন্যায় নয়। কিন্তু যারা জানেন না–তাদেরকে এই না জানার সুযোগে বিভ্রান্ত করাটাই অন্যায়। অপরাধ। সেই কাজটিই আপনি করছেন। আপনার অনেক ভাল কাজের প্রতি অন্যায় করছেন।
আপনি বলেছেন,
যারা ফরহাদ মজহারের রক্তের দাগ মুছে রবীন্দ্রপাঠ বইটি পড়েছেন–তারা জানেন, ফরহাদ মজহারের উক্ত সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে পূর্ণ বইটির অনেক তথ্যই আপনারা আপনাদের নোটে ব্যবহার করেছেন। আর আহমেদ শরীফের লেখা থেকেই তো উদ্ধৃতি দিয়েছেন। আপনারা ব্যবহার করেছেন ফরহাদ মজহারের ভাবশিষ্য বিশিষ্ট রবীন্দ্রবিদ্বেশ বিশেষজ্ঞ সাদ কামালীর লেখা থেকে তথ্য। নীরদ রায়ের মতামত ধরনের ভিমরতিপ্রাপ্ত বইয়ের রেফারেন্স ব্যবহার করে বিভ্রান্ত করার চেষ্টার করছেন। রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে আকর গ্রন্থ প্রশান্ত পালের ৯ খণ্ডে প্রকাশিতরবিজীবনী গ্রন্থ যেখানে সন-তারিখ অনুসারে রবীন্দ্রনাথের পক্ষে পাওয়া যায়–তা আপনারা পড়েও দেখেননি।
স্বল্প জ্ঞান নিয়ে তরুণদের বিভ্রান্ত কেন করছেন? যে বিষয়ে আপনাদের ধারণা স্বল্প–সে বিষয় নিয়ে সিদ্দান্তমুলক রচনা করার উদ্দেশ্য কি?
@কুলদা রায়, সংশোধনী–রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে আকর গ্রন্থ প্রশান্ত পালের ৯ খণ্ডে প্রকাশিতরবিজীবনী গ্রন্থ যেখানে সন-তারিখ অনুসারে রবীন্দ্রনাথের পক্ষে বিপক্ষে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়–তা আপনারা পড়েও দেখেননি। এই বইটিরই রেফারেন্স দিয়েছেন সাদ কামালী
@কুলদা রায়,
অভিযোগ যদি ৫০/৬০ বছর আগেই খন্ডন করা হয়ে থাকে তা হলে তো ভালই। মিটে গেল। এত পেরেশান হবার কি আছে? আমাদের মালটি না হয় পুরোন মদ। না চাখলেই হয়। আপনাদের মালটি কত পুরানা তাও আমার অজানা নাই।
মুশকিলটা হল যে কোন সমালোচনাকেই এভাবে উড়িয়ে দেয়া যেতে পারে। ইসলামিস্টরাও মুহম্মদের সমালোচনা করলে বলেন, বহু আগেই সেগুলো খন্ডন করা হয়ে গেছে। হিন্দুত্ববাদীরাও নিজেদের ডগমাটিকে ডিফেন্ড করেন একই কথা বলেই। রবীন্দ্রবাদীরাও এ থেকে ব্যতিক্রম কিছু নন।
না অভিযোগগুলোর জবাব দেয়া হচ্ছে বলে তা পুরোন বলে আমি বাতিল করিনি। মোজাফফর প্রশ্ন করেছিলেন – কেন আমি রবীন্দ্রনাথের নেগেটিভ দিকের পাশাপাশি ‘ভাল দিক’গুলো উল্লেখ করে ‘নিরপেক্ষ’ রচনা লিখলাম না, তাকে এটুকুই বলেছি, যেগুলো ভাল দিক সেগুলো সবাই জানে, ইতোমধ্যেই বহু ব্যবহারে জীর্ণ। সেগুলো ব্যবহার করে ‘নিরপেক্ষ’ লেখা তৈরি করা আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো না। আমাদের উদ্দশ্য ছিল যে ব্যাপারগুলো আধাঁরে রয়ে গেছে সেগুলো তুলে আনা। হুমায়ুন আজাদ যখন নারী বইয়ে রবীন্দ্রনাথের নারীভাবনার সমালোচনা করেছিলেন, তখন রবীন্দ্রনাথ নারীদের কত ভালবাসতেন সেগুলো টেনে এনে ‘নিরপেক্ষ’ রচনা তৈরি করার চেষ্টা করেন নাই। আকিমুন রহমান বেগম রোকেয়াকে নিয়ে সমালোচনামূলক লেখাটা ‘বিবি থেকে বেগম’-এ অন্তর্ভুক্ত করার সময় ফেনিয়ে ফেনিয়ে বলেননি বেগম রোকেয়া কত বড় নারী জাগরণের অগ্রদূত ছিলেন। ক্রিস্টোফার হিচেন্স মাদার টেরেসাকে নিয়ে লেখার সময় ‘নিরপেক্ষ’ বই লেখার চেষ্টা করেননি। সমালোচনামূলক লেখার একটি ধারা থাকে। সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। আমরা সে ধারা থেকেই লিখেছি। রবীন্দ্রনাথের ভাল দিকগুলো আমরা অস্বীকার করিনি। তিনি সাহিত্যের জগতে শ্রেষ্ঠ আসন অধিকার করে আছেন, সেটি মেনে নিয়েই আমরা আমাদের কথা বলেছি। আপনারাই বরং তার সমস্ত অন্ধকার দিকগুলো অস্বীকার করার চেষ্টা করেছেন। কারণ আপনারা তাকে রাখতে চান দেবতা বানিয়ে।
আহা রে! কাদা মাটির মত সহজ সরল সদ্য তরুণদের জন্য দরদ উথলে উঠছে একেবারে। তা আমরা যদি অন্যায় করে থাকি আপনারা তো অন্যায় ধরছেন। তাহলেই তো মিটে গেল।
না, না জানার সুযোগে বিভ্রান্ত করিনি। আমরা প্রকাশ করেছি সে তথ্য গুলোই যেগুলো আপনারা তাদের থেকে গোপন রেখেছেন, সদাই গোপন রাখতে চান। রবীন্দ্রনাথ কি প্রমথনাথকে ব্যবহার করে বিশ্বপরিচয়ের পাণ্ডুলিপি লেখেননি? তিনি কি তাকে লেখক থেকে বাদ দেননি? তিনি কি গগন হরকরার সুর তার গানে হুবহু ব্যবহার করেন নি? তার জমিদারীর আমলে কি খাজনা তিনি বাড়াননি? নতুন জমিদারী ক্রয় করেননি? কাঙাল হরিনাথের উপর তিনি আক্রোশ মিটাননি? কাঙাল হরিনাথের সাথে যোগাযোগ থাকায় তিনি কি নাটোরের জমিদারকে বলে অক্ষয়কমার মিত্রের সাহায্য বরাদ্দ বন্ধ করেন নাই? রায়তেন কথাতে তো নিজেই রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন যে, জমিদারী না থাকলে গ্রামবাসীরা নাকি লাঠালাঠি করে মরবে, তাই জমিদারী ভাল। অমিতাভ চৌধুরীর জমিদার রবীন্দ্রনাথ, প্রমথ চোধুরীর – রায়তের কথা, শচীন্দ্র অধিকারি, শিলাইদহ ও রবীন্দ্রনাথ সহ অনেক বইয়েরই তো রেফারেন্স দেয়া হয়েছে।
কেবল রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে ভাল ভাল কথা বললেই এই স্পেসিফিক অভিযোগগুলো খণ্ডন হয় নাকি? রবীন্দ্রনাথ যে ভাল কাজ করেছিলেন, দরিদ্র প্রজাদের জন্য কৃষিব্যংক খুলেছিলেন, নিজের নোবেলের টাকা দিয়ে হলেও অনেক প্রজার মঙ্গলের চেষ্টা করেছেন, এগুলো তো আমরা জানি। আমি তো ঘূর্নাক্ষরেও সেগুলো অস্বীকার করছি না। কিন্তু তিনি কারো কারো জন্য ভাল কাজ করেছিলেন বলেই যাদের উপর ঠাকুর বাড়ির আক্রোশ ছিল – তাদের উপর কখনোই কোন জবরদস্তি করেননি, এভাবে ভাবা হয় বোকামী, নয় স্তাবকতা। ব্যাপারগুলো মিচুয়ালি এক্সক্লুসিভ নয়। এইখানেই আমাদের আপত্তি।
মোটেই না। ফরহাদ মজহারের রবীন্দ্রনাথ সংক্রান্ত কোন বইই আমি পড়িনি। হ্যা সাদ কামালী এ নিয়ে কিছু লিখেছেন, আর সেটা নেটে আছে, কিন্তু সাদ কামালীর কোন কিছু আমরা এ লেখায় ব্যবহার করিনি। আহমদ শরীফের গবেষণার অনেক কিছু আমরা ব্যবহার করেছি, যেগুলো হয়তো সাদ কামালীও ব্যবহার করেছেন কিছু কিছু তার লেখায়। এতে সমস্যা কি? আমাদের লেখায় পাশাপাশি শচীন্দ্র অধিকারি, প্রমথ চোধুরী,অমিতাভ চৌধুরী সহ অনেকের রেফারেন্সই আছে।
ফরহাদ মজহার গোত্রের সাথে কোঙ্কিছু মিললে কি আর করা? হয়তো তিনি রবীন্দ্রনাথ নিয়ে লিখে থাকতে পারেন। আমি সেটা জানি না। জানার চেষ্টাও করিনি। আমাদের বক্তব্য আমাদের অনুসন্ধিৎসা থেকেই এসেছে। সেটা ফরহাদ মজহারের বক্তব্যের সাথে মিল্লেই সেই কারণে মিথ্যা হয় না, হবে না। লজিকের বেসিক দিকগুলো একটু আগে বুঝুন। Argumentum ad hominem কাকে বলে একটু নেট থেকে দেখে নেন। ফরহাদ মজহার যদি কোথাও বলে থাকেন, দুই যোগ দুই সমান চার হয়, কিংবা সূর্য পূর্ব দিকে উঠে – এটি ফরহাদ মজহার বলেছেন বলেই মিথ্যে হয়ে যাবে না। আর আমরা সেই তথ্য ব্যবহার করলে নিজেরাও ফরহাদ মজহার হয়ে যাব না। তথ্য তার নিজস্ব গুণেই ভাস্বর হবে, ফরহাদ মজহার কোথায় কি বলল তার ভিত্তিতে নয়।
হুমম। বুঝলাম। আমাদের জ্ঞান খুব অল্প। আর আপনার জ্ঞান একেবারে ফেটে বেরুচ্ছে। জ্ঞানী জৈল সিং একেবারে! 🙂
@অভিজিৎ, আমি মোটেই জ্ঞান ফেটে বের হয়নি। হলে আপনার দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হত। একটু রয়ে সয়ে কথা বলুন।
১. আমি আমি গগন হরকরা, রবীন্দ্রনাথের গান, গান রচনা পদ্ধতি নিয়ে কথা বলেছি। কিছু তথ্য নানাজনের কাছ থেকে চুরি চামারি রাহাজানি করে আপনাদের খেদমতে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সেগুলোকে আপনি পাশ কাটিয়েই চলছেন। বারবারই ট্রাকের বাইরে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আপনি আপনার ধারণাকে বাদ দিয়ে সত্যি সত্যি তথ্যগুলোকে নিয়ে কথা বলুন। পাশ কাটাবেন না। আমি বলছি আপনার নোটে উত্থাপিত অভিযোগ অতীতেও করা হয়েছে। অতীতেও জবাব দিয়েছেন নানা ব্যক্তিগণ। এখনও দিচ্ছেন। দেওয়া হবে। কিন্তু আপনি আপনার মূল নোটে বারবারই বলছেন–এইসব যুক্তিগুলো খুবই পুরনো। বহু ব্যবহৃত। এই বলে আপনি আপনি প্রসঙ্গ থেকে কেটে পড়ার সুযোগ নিয়েছেন। আমি বলেছি তথ্য কখনো পুরনো হয় না। আপনি যে অতীতের রবীন্দ্রবিরোধিতাগুলো আবার নতুন করে এনেছেন–সেগুলোর বয়স হিসাবে করে বলেছি যে, এগুলো পুরনো। পুরনো বলে আপনার কথাকে বাতিল করিনি। আপনার বিরোধিতাগুলোকে যুক্তি-তথ্যে খণ্ডণ করার চেষ্টা করেছি।
২. আপনি আপনার নোটের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলছেন–
আধাঁরে কি ছিল? আর কি এনেছেন? আঁধারে কি ছিল রবীন্দ্রনাথ গগন ঠাকুরের গান চুরি করে রাহাজানি করে বাংলাদেশ সরকারকে ধমক ধামকি দিয়ে বাংলাদেশর জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে চালু করা? আঁধারে গগন ঠাকুর বিষয়ে কি ছিল সেটা এখানে আপনার মুল নোটে বলা হয়েছে। আপনি আপনার গান গেয়েই চলেছেন–না না ঠাকুর সুরটি চুরি করেছেন। চুরি-রাহাজানি এবং শিল্প-সাহিত্য কি এক? মোজাফরফর একটি বিষয়ে বলেছিলেন। আপনার চোখ এড়িয়ে গেছে। দেখুন–
অর্থাৎ আপনারা যে বিজ্ঞান বিষয়ে যে বই টই লিখেছেন–বিবর্তবাদ নিয়ে লিখে তরুণদের বিবর্তনবাদি চমকে দিচ্ছেন–এ সবই কিন্তু অন্যের তথ্য-তত্ব। আপনাদের মৌলিক কিছুই নয়। আপনারা তাদের চিন্তাটাই আপনার মাতৃভাষায় লিখেছেন। মোজাফফর খুব বিনয়ী ছেলে। তিনি বিনয় করে আপনাদের মত রায় দিয়ে বসেননি–রবীন্দ্রনাথ যদি গগন হরকরার গানের সুরে গান করে যদি রাহাজানি করে থাকেন-তাহলে আপনারা সেই রাহাজানি করার দোষে দোষী। আপনারা কি রাহাজানির অপরাধে অপরাধী নন আপনাদের সুত্র অনুসারে। রবীন্দ্রনাথ গগন হরকরার বানী নেননি। তার সুরটি নিয়েছেন। গগনও অন্য বাউলদের কাছ থেকে নিয়েছেন। এই কারণেই রবীন্দ্রনাথের এই গানগুলোকে বাউলাঙ্গের গান বলা হয়। রবীন্দ্রনাথ যে গগনের সুরটি নিয়েছেন–সেটি গোপন করেননি। গগনকে ছাপার অক্ষরে প্রকাশ করে গেছেন। তাকে মর্যদা দিয়েছেন।
আর বিশ্বপরিচয় নিয়ে অনেকেই কথা বলেছেন। তাদের কথাকে আমলে নিতে পারেন। তবে সে বিষয়ে আমি এখনো কথা বলিনি। আগে গগনের কোথায় পাওয়া যায়–সে আলাপটা শেষ হোক। তারপর অন্যগুলো।
@কুলদা রায়,
“মূল নোট” থেকে উদ্ধৃতি দিলে বুঝতে সুবিধা হয় কি বলছেন।
@কুলদা রায়,
শোনেন পাশ কাটানোর মত ব্যক্তি যদি কেউ থেকে থাকেন, আপনাকে টেক্কা দেয়া দুঃসাধ্য। আপনার মনে আছে নিশ্চয়, আপনি নাইব উদ্দীনের বীরাঙ্গনার ছবি নিয়ে একটা লেখা লিখলেন, আর ছবির বীরাঙ্গনা মেয়েটিকে যে নাম দিয়েছিলেন, সেটার রেফারেন্স বহুবার চাওয়ার পরেও না দিয়ে গায়েব হয়ে গিয়েছিলেন। আমার একটা ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে প্ল্যানচেট নিয়ে সচলে গিয়ে পোস্টালেন, সেখানে পাঠকেরা প্রশ্ন করলেও আপনাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আবার আমি হিন্দুদের নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দেয়ায় আবারো ক্ষিপ্ত হয়ে সচলে গিয়ে পোস্টাপোস্টি করলেন, সেখানেও বহু সদস্য আপনাকে প্রশ্ন করলেন, এমনকি এও বলেছেন, আমার ফেসবুক থেকে তথ্য নিয়ে কেন ব্লগে লিখলেন, কোন জবাবই আপনি দেননি, বরাবরই পাশ কাটিয়েছেন।
আপনার তথ্য আমি দেখেছি। তারপরেও আমার বক্তব্য পাল্টাচ্ছে না। রবীন্দ্রনাথের সাথে রজনীকান্তের গানের মিল থাকতে পারে, কিন্তু মূল সুরকার একজনই। হয় রবীন্দ্রনাথ নয়, রজনীকান্ত। যদি রবীন্দ্রনাথ থেকে রজনীকান্ত নিয়ে থাকেন, তবে সেটা সেভাবেই বলতে হবে। একই কথা বলা যাবে নজরুল পান্নালাল প্রসঙ্গেও।
‘আমি কোথায় পাব তারে’ গানটির মূল সুর করেছিলেন গগন হরকরা। রবীন্দ্রনাথ সেই সুরটি ব্যবহার করেছিলেন ‘আমার সোনার বাংলা’ গানে। এইটাই সত্য। আমার সোনার বাংলা আমাদের জাতীয় সংগীতের মর্যাদা পেয়েছে। কাজেই গগনের উপযুক্ত স্বীকৃতিটুকু জুটলেই আমরা ধন্য। সরলা দেবী সহ কে কে গগনকে কোথায় পরিচিত করেছেন, সেটি এখানে বিবেচ্য বিষয় নয়। আমার সোনার বাংলা গানের মূল সুরকারের নাম স্পষ্টভাবে বলতে হবে এখন থেকে। ব্যাপারটা আপনিই শুরু করুন না।
মোটেই না। আপনি বিকৃত করছেন। মূল লেখাতে স্পষ্টই বলা হয়েছে – আমরা রবীন্দ্রাকাশে এতোদিন কেবল চাঁদের একটি পিঠই দেখে এসেছি। আজ আমরা মুক্তমনা লেখকেরা চাঁদের উলটো পিঠটাও দেখতে আগ্রহী। মূল লেখা থেকে দেখান কোথায় আমি বলেছি যুক্তি বহু ব্যবহার করা হয়েছে বলে বাদ দিয়েছি? আমার মুখে কথা বসালে তো হবে না।
আমার বইগুলো খুলে দেখুন না। যে তথ্যগুলো যে সায়েন্টিফিক জার্নাল থেকে, কিংবা যে বইপত্র থেকে নেওয়া হয়েছে প্রতিটির রেফারেন্স পুংখানুপুংখভাবে দেয়া হয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ করতে পারি – এত রেফারেন্স এবং ফুটনোট দিয়ে (মানে মূল উৎসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে) বিজ্ঞানের বই বাংলাদেশের খুব কম লেখকই লেখেন। আপনিও তো লেখালিখির সাথে অনেকদিন ধরেই যুক্ত। আপনি যদি রবীন্দ্রনাথকে ডিফেণ্ড করতে গিয়ে লেখার ব্যকরণ ভুলে যান তবে হবে? রবীন্দ্রনাথ বিশ্বপরিচয় লেখার সময় পুরো পাণ্ডুলিপি প্রমথনাথকে দিয়ে লিখিয়ে সবকিছু শেষ করার পরে তাকে লেখক পদ থেকে বাদ দিয়েছিলেন। আমি কি কখনো তা করেছি? যেটা রাহাজানি সেটাকে স্পষ্টভাবে রাহাজানি বলতে শিখুন। রবীন্দ্রনাথ বলেই আগডুম বাগডুম কথামালা সাজিয়ে ডিফেণ্ড করবেন না। এতে কোন লাভ হবেনা।
@অভিজিৎ, নাইবউদ্দিন আহমদের তোলা বীরাঙ্গনা শাহীনের ছবি নিয়ে আমি একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। নাইবউদ্দিন আহমদের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। আমি তাঁর বাসায় থেকেছি ৭ বছর। তাঁর সঙ্গে কাজ করেছি। তখন তাঁর ছবি নিয়ে অনেক কিছু জেনেছি। ইতোমধ্যে তিনি প্রয়াণ করেছেন। আমি তাঁর সেই আলাপের সূত্র ধরে একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। পোস্টে আমি সকল বিষয়েই কথার উত্তর দিচ্ছিলাম। কিন্তু সেখানে ফরিদ আহমেদ দুর্বত্তসুলভ আচরণমুলক মন্তব্য করেছিলেন আমাকে উদ্দেশ্য করে। তখন আমার মনে হয়েছিল–এই লোক মুক্তমনার দ্বার নখ উচিয়ে রক্ষা করতে ব্যস্ত। তার কাছে ভিন্নমত, সুস্থ মত, যুক্তিবোধ কোনোটারই মূল্য নাই। সেকারণে আমি কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি।
এক পর্যায়ে দেখি–ফরিদ আহমদের মত দুর্বত্ত লোকদের নিয়ন্ত্রণে থাকা মুক্তমনায় কোনো পোস্ট থাকা নিরাপদ নয়। তিনি ইচ্ছে করলেই অনেককিছু মুছে দিতে পারেন। বদলে দিতে পারেন। সে কারণে সেখান থেকে আমি আমার সকল পোস্ট মুছে দিয়েছিলাম। আমিও ঘোষণা দিয়ে চলে গিয়েছিলাম।
এখান থেকে অভিজ্ঞতা হল–দ্বারী রক্ষককে দিয়ে দ্বারই রক্ষা করা যেতে পারে–ঘরের কাণ্ডারীর কাজ হতে পারে না।
২. প্লানচেট নিয়ে বহুআগে লিখেছি। সেটা নিয়ে আপনি আপনার মতো করে একচোখা দৈত্যের মত তালগাছটা আমার মত প্রকাশ করে আছেন। এইখানে আপনাদের সঙ্গে আমার ভীন্নমত আছে। থাকবে। আমি কুসংস্কারের বিরোধিতা করি। কিন্তু যে সংস্কৃতি মানুষের মনে শান্তি সম্প্রীতি দেয়–তাকে বাতিল করার বিরুদ্ধে আমি কখনোই নই। আমি সেকারণে পীর-সাধুদের ঘিরে ভণ্ডামোকে পরিহার করার পক্ষে– সাধু সন্ত আউল বাউলদের মানসিক কাউন্সিলিং করার ভূমিকাকে বাতিল করার বিপক্ষে। তাদের এই সামাজিক ভূমিকাকে সম্মান করি। একারণেই লালন ফকিরে আমি আশ্রয় পাই। শের আলী ফকিরের সঙ্গে আমার আমৃত্যু স্নেহপ্রীতির সম্পর্ক ছিল। থাকবে।
৩. ফেসবুকে কেন যেকোনো স্ট্যাটাস বা বক্তব্যকে নিয়ে কথা বলার অধিকার আমার আছে। সে স্ট্যাটাস দিয়ে আমিও আমার নিজের জায়গায় পোস্ট দিতে পারি। সেটা নিয়ে কথা বলতে পারি। এটাকে চুরি করা কেন বলা হচ্ছে? আমার স্ট্যাটাস নিয়ে –ছাতামাতা লেখা নিয়ে কেউ কেউ শেয়ার করেন, স্ট্যাটাস করেন, পোস্ট দেন। আমি তো কখনো চুরি বলিনি।
৪. সচলায়তনে অভিজিৎকে নিয়ে যে আলাপ করেছি–সেখানে অভিজিৎঅনুরক্ত কয়েকজন আভিজিতের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে মনে করে হাউকাউ করে এসেছিল। তাঁদের হাউকাউএর জবাব দেওয়াটা আমার রুচিতে বেঁধেছে। আর সবক্ষেত্রে আমি মন্তব্য করি না। কোনো কোনোটা ইগনোর করাযোগ্য বলেই ইগনোর করি।
৫. রবীন্দ্রনাথের আমি পূজারী নই। রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য আমার ভাল লাগে। মনে আরাম পাই। তার গান আমাকে শান্তি দেয়। অনেকের গানই শান্তি দেয়। আমি একজন গান সংগ্রাহকও বটে। রবীন্দ্রনাথের বহুমুখী কর্মকাণ্ড আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়। আমি এক সময় নিযমিত ময়মনসিংহের খৃষ্টপুরে অবস্থিত চার্চে যেতাম। সেখানে অনেক ধর্মীয় সঙ্গীতের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের গানও গীত হত। তাতে সমস্যা কি? চার্চের লোকজন কি রবীন্দ্রনাথকে খৃষ্টান ধর্মের লোক মনে করে তাঁর গান করে? না, তার গানে তাদের প্রার্থনার মিল খুজে পেয়ে গানকেই ব্যবহার করে? আমি এক পাগলকে দেখেছি–রবীন্দ্রনাথের গান গাইতে। তাহলে ধরে নিতে হবে রবীন্দ্রনাথও পাগল ছিলেন? পাগলের গানটি মনে ধরেছে–তাই সে গাইছে। এর দায়তো রবীন্দ্রনাথের নয়। খুলনার খুনী এরশাদ মরমী গান গাইত জেলখানায়। এই জন্য মরমী গানটির রচয়িতাকেও খুনীর পর্যায়ে নিতে হবে?
রবীন্দ্রনাথকে রাজনৈতিকভাবে বিরোধিতা করা হয়। যারা করেন তার পিছনে পাকিস্তানপন্থা, জামাতি রাজনীতি, মৌলবাদিরা কর্মশীল। এদের উদ্দেশ্যটা অসৎ।
যেমন ধরা যাক তাদের অসৎ প্রচারণার একটি নমুণা–রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন। এটা জামাতি লোকজন কর্তৃক বানানো মিথ্যা তথ্য। কিন্তু পরিস্থিতি এমন সেই মিথ্যা তথ্যটিই বাংলাদেশে হরেদরে ব্যবহৃত হচ্ছে। দৈনিক সংবাদের মত পত্রিকাতেই সেই তথ্য নিয়ে কেউ কেউ লিখছেন। এই মিথ্যে তথ্যটা কাদের উল্টো পিঠ বলবেন অভিজিৎ? রবীন্দ্রনাথের, না, জামাতিদের?
সেরকম গগন হরকরার গানটি নিয়ে ফরিদ আহমদের আবিষ্কারটিকে সে পর্যায়েই পরিবেশন করা হচ্ছে। এটা জামাতিরা ব্যবহার করবে। কিন্তু দেখুন গগন হরকরার গানের সুর নেওয়া বিষয়ে বিপ্লব পালসহ অনেকেই যুক্তিপূর্ণ আলোচনা করেছেন। বলেছেন–ওটাই গানসৃজনের একটি স্বীকৃত পদ্ধতি। আমি কিছু অডিও ভিডিও সহ তার নমুণাও পেশ করেছি। কিন্তু গান বিষয়ে স্বল্পজ্ঞান নিয়ে আপনারা আপনাদের ভাঙ্গা রেকর্ড বাজিয়েই চলছেন। বেটা রবীন্দ্রনাথ চুরি করছেন। রাহাজানি করছেন। শান্তি নিকেতনের শিক্ষক জগদানন্দ রায় বিজ্ঞান বিষয়ে লিখতেন। অভিজিৎ রায়ও বিজ্ঞান নিয়ে নিয়ে লিখছেন। সুতরাং এই লেখার কায়দাটা অভিজিৎ জগদানন্দ রায়ের কাছে থেকে চুরি করে নিয়েছেন। এটা বললে কেমন শোনাবে অভিজিৎ?
আপনি বা ফরিদ আহমদের মত কেই অসৎ উদ্দেশ্য বললেই গগন ঠাকুর বা রবীন্দ্রনাথের কিছু যাবে আসবে না। তারা তাঁদের অবস্থানেই থাকবেন। মাঝখান থেকে আপনাদের আবিষ্কারের বালখিল্যপনা প্রকাশিত হবে। আঠা আবিষ্কার করাটা ভাল। কিন্তু আঠার বদলে পাঠা আবিষ্কার করাটা ভাল কাজ নয়।
৪. একটা দেশী গল্প শোনেন। এক দেশে একজন স্বল্পশিক্ষিত ভণ্ড লোক খুব জ্ঞান ফলাত। একজন শিক্ষিত লোক এলে তিনি বুঝলেন–তার ভণ্ডামো শেষ হতে যাচ্ছে। তাই তাকে তাড়াতে চেষ্টা করলেন। তাকে মুর্খ প্রমাণের চেষ্টা করলেন। লোকের জমায়েত হল। সেখানে বললেন, বলেনতো I do not know–মানে কি? একটু জোরে বলেন।
শিক্ষিত লেকটি বেশ জোরের সঙ্গেই বললেন–আমি জানি না।
তখন ভণ্ড লোকটি সবাইকে বললেন, দেখুন এই লোকটি নিজেই স্বীকার করছেন–তিনি কিছুই জানেন না।
প্রমাণিত হল শিক্সিত লোকটি কিছুই জানেন না।
আপনাদের রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে লেখালেখি সওয়াল জবাব এই স্বল্পশিক্ষিত লোকটির মতই মনে হচ্ছে।
@কুলদা রায়,
না, প্রথমে প্রশ্নের উত্তরই দেন নাই। পরে মূল রেফারেন্ন্স এড়িয়ে গিয়েছিলেন (বলেছিলেন নৃপেনদার অনুরোধে উনার প্রশ্নের জবাব দেন নাই, ইত্যাদি)। পরে এ নিয়ে লিখলেও মূল জায়গাটা রহস্যপূর্ণই রেখেছিলেন। এমনকি এও বলেছিলেন যে আপনি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখতে আসেন নাই, এসেছেন সাহিত্য করতে। সে ঠিক আছে, আপনার ব্যাপার, কিন্তু রাগ থামাতে না পেরে এরপর ফরিদ আহমেদকে রাজাকার বানিয়ে আপনি একটা পোস্ট দিলেন, তাতে বেশিরভাগ সদস্যই আপত্তি জানিয়েছিল, এবং আপনি চলে গিয়েছিলেন সব লেখা মুছে দিয়ে। আপনাকে মন্তব্য করার অধিকার যে কখনোই হরণ করা হয়নি, তা আপনি নিজেও জানেন, না হলে এখনও মন্তব্য করতে পারতেন না, অথচ আরেক জায়গায় গিয়ে মিথ্যে করে বললেন, “সেই যে আমার মন্তব্য করার অধিকার হরণ করে আপনার স্তাবক দিয়ে আমাকে অভিমণ্যু বানিয়েছিলেন”। এটা যে মিথ্যে সেটা আপনিও জানেন।
হাঃ হাঃ, দুর্বৃত্ত বহাল তবিয়তে আছেন জেনেও ফিরে এসেছেন দেখি। মুশকিল হল আপনার সাথে যাদেরই বিরোধিতা হয়, তাকেই ভণ্ড, জামাতি ছাগু, দুর্বৃত্ত, মহামূর্খ এগুলো বলে সম্বধোন করেন। কই আমি তো আপনার নামে কখনো কোন বিশেষণ ব্যবহার করিনি। আমি কেবল লেখায় আমার অভিমত দেয়ার কারণেই আপনি যে ভাষা আর বিশেষণ আমার প্রতি নিক্ষেপ করেছেন সেটা দেখলেই বুঝতে পারা যায় যে, আপনি কীভাবে দেখেন অন্যদের। আমি তো আপনাকে কখনো গালাগাল করিনি, স্ট্যাটাসও দেইনি। আপনার এত রাগ কেন আমার উপর? কেবল ভিন্নমত বলেই?
সচলায়তনে ত আমি লিখি না। আমার ভাবমূর্তি নিয়ে পেরেশান হবে কেন লোকজন ওখানে অযথাই? এমন কি হতে পারে না যে, আমার প্রতি গুণমুগ্ধতার কারণে নয়, আপনার আচরণ এবং লেখার ভঙ্গিটাই ছিলো তাদের প্রতিবাদের মূল কারণ? এরপর থেকে এই ব্যাপারটা একটু মাথায় রেখে লিখলে কেমন হয়?
অসুবিধা নাই। আপনি যেমন রবীন্দ্রসংগীত ভালবাসেন, আমিও। আমাদের বিতর্কটা কিন্তু কারো ভাল লাগা না লাগা নিয়ে ছিলো না কখনোই। রবীন্দ্রনাথের গান কবিতা, গল্প অনেক কিছুই অসাধারণ। গান তো বিশেষ করে বটেই।
অবশ্যই। এই ব্যাপারে আপনি আমার কাছেও সাহায্য চেয়েছিলেন একসময়। আমি যতটুকু জানি করেছি। রবীন্দ্রনাথ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতার ব্যাপারটা সম্পুর্ণ মিথ্যে, এতে কোনই সন্দেহ নেই। এই তথ্যের বিপক্ষে উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে প্রবন্ধ লিখে আপনি একটি অসামান্য কাজ সম্পন্ন করেছেন। সেজন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
এই জায়গাতে আমার একটু আপত্তি আছে। আপনার বক্তব্য আমি বুঝেছি। কিন্তু নেক সময় কেবল জামাতিরা কী ভাবল আর জামাতীরা কী করলো সেগুলো নিয়ে না ভেবেও তো বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা আমরা করতে পারি। সবসময় কেন কেবল রাজনৈনিকভাবেই সবকিছু দেখতে হবে? রবীন্দ্রনাথ আমাদের সম্পদ, অসামান্য ছিলো তার প্রতিভার দ্যুতি। তাকে নিয়ে, কিংবা তার কোন জীবনের দিক নিয়ে আমার বিপরীত কিছু চিন্তা থেকেই থাকে, কেন আমি তা পরিবেশনার সুযোগ পাব না? আপনারা তো আপনাদের অভিমত অহর্নিশি দিয়েই যাচ্ছেন। আপনাদের মতের সাথে ভিন্ন হলেই কী সেটাকে কেবল রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার কথা ভাবতে হবে?
আর আমি এমন কোন বড় কোন লেখক নই। আমার লেখা দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে এক পাও আমি নামাতে পারবো না, সেটা আমি ভাবিওনি। আমি কেবল চেয়েছি কিছু দিক তুলে ধরতে, ভেবেছি হয়তো এ নিয়ে আলোচনা চলতে পারে।
ঠিক আছে। এটাই তো চাইছিলাম। সে নমুনাগুলো পেশ করা হোক। পাঠকেরা সে থেকে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবেন নিশ্চয়।
ভাল নয়। কিন্তু আপনাকে আমি একটি প্রশ্ন করি – কাউকে দিয়ে পুরো পাণ্ডুলিপি লিখিয়ে তাকে বাদ দিয়ে নিজে লেখক হয়ে যাওয়াটাকে কী আপনি ডিফেন্ড করতেন, যদি সে ব্যক্তিটি রবীন্দ্রনাথ না হতেন? এ প্রসংগ কী আপনি তখন তুলতেন? সম্ভবতঃ নয়।
লাইনটা মনে ধরলো। 🙂 যদিও আমি নিশ্চিত নই, পাঠা কিরূপে আবিস্কার করা যায়! জানিনা, রতনে রতন চেনে উপমাটি এখানে প্রযোজ্য হবে কিনা!
শুনলাম। আপনার গল্পটা শুনে আমারও একটা গল্প মনে পড়লো। এক ছাত্রকে শেরশাহকে নিয়ে লিখতে বলা হয়েছিলো। সে খাতায় লিখেছিলো – ‘শেরশাহ ঘোড়ার ডাকের প্রচলন করেন’। এই পর্যন্ত ঠিক ছিলো। এভাবে খাতাটা জমা দিলে পরীক্ষায় একশ তে একশ পেতো। কিন্তু ছাত্রটি বেশি নম্বর পাবে ভেবে কায়দা করে আরো একটি লাইন যোগ করে দেয়।
‘শেরশাহ ঘোড়ার ডাকের প্রচলন করেন’ এর পরেই যোগ করে দেয় –
‘তাহার আগে ঘোড়া ডাকিতো না’
এই অনর্থক লাইনটি যোগ করার ফলে ছাত্রের নম্বর একশ হতে শুন্যে নেমে এলো 🙁
@অভিজিৎ,
“আমার সোনার বাংলা গানের মূল সুরকারের নাম স্পষ্টভাবে বলতে হবে এখন থেকে। ”
যুক্তি তর্কের মাধ্যমে যদি প্রতিষ্টিত করা যায় যে গগন হরকরা …আমার সোনার বাংলার… মুল সুরকার এর দাবিদার তা হলে তা হতে ই হবে এখন তর্ক যখন উঠেছেই কে আসলে মুল সুরকার তা প্রতিষ্ঠা করা জরুরী , কারন এটা আমাদের জাতীও সংগীত এক জামাতি ইসলাম এর লোক কিন্তু আমাকে বলেছিল এই গানটি রবিন্দ্রনাথ এর না নকল । উনি বোঝাতে চেয়েছিলেন লিখা এবং সুর সব ই নকল এখন ত বোঝা যাছেচ শুধু সুর নিএ তর্ক । এর সঠিক সমাধান দরকার । আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সংস্থা গুলো সিধান্ত নিয়েছে এখন থেকে জগদিশ ছন্দ্র বসুকে বেতার আবিস্কারক বলতে হবে । গগন কেন বাদ জাবেন ?
@কুলদা রায়,
(Y)
উপরে সুমনের সাথে সহমত – কাউকে মহামানব হিসেবে পুঁজো করাটাই তো অশ্লীল। যত দিন এই মানব/মহামানবের বিভেদ রয়ে যাবে ততদিন মহামানবের নামে মানবদেরকে শাসনের চেষ্টা চলবে। একজন মুক্তমনা হয়ে এই মহামানব নামক চিন্তা ধারণা থেকে বের হয়ে আসা কি উচিত নয়?
@স্বাধীন, তাহলে একজন খুনী বাংলা ভাই, হিটলার, বা রাজাকার গোলাম আজম এদের সাথে একজন মাদার তেরেসা, একজন মুজিবের পাথর্ক্য করবেন কিভাবে? নাকি সবাইকে এক কাতারে ফেলে বিচার করবেন। সবাই এক, বিভেদহীন কারণ সবাই মানুষ, নাকি ?
@মোজাফফর হোসেন,
আপনার প্রশ্নের জবাব আপনি নিজেই খুঁজে পেতে পারতেন। অবশ্যই সবাই মানুষ। তবে তাদের পার্থক্য হবে তাদের কর্ম দ্বারা। ধর্ম না মানলেও নৈতিকতা/অনৈতিকতার সংজ্ঞা তো বাতিল হয়ে যায় না। কিন্তু তার জন্যে মহামানবের আমার প্রয়োজন পরে না।
পাঠপ্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ। চলুক প্রতিক্রিয়া। কোন অসুবিধা নেই।
কিছু ভুলের উল্লেখ করি।
তাই কি? প্রমথনাথের সাথে বিশ্বপরিচয়ের সম্পৃক্ততা আমি এর আগে এত বিষদভাবে দেখিনি। আমাদের কাছেও অনুসন্ধানের আগে ব্যাপারটা নতুনই ছিলো। আপনি কি উল্লেখ করে দেখাতে পারবেন যে, ফরহাদ মাযহার, নীরদ চৌধুরীরা এ নিয়ে আগে লিখেছেন?
আপনি একটি কথাও নতুন পাননি, অথচ বহু পাঠকই লেখাটিতে মত দিয়েছেন যে অনেক তথ্যই তাদের কাছে নতুন ছিলো। এমনকি লেখাটির আগে গগন হরকরার নামও অনেকে শুনেননি। আপনিও কি সরলীকরণ করছেন না?
একই কথা তো আপনার লেখাটি সম্বন্ধেও বলা যায়। আপনি রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে যে ভাল ভাল কথাগুলো বলতে চান, সেগুলোও আমরা ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি। আমিও তো বলতে পারি – এই লেখায় নতুন কথা আমি প্রায় একটিও পাইনি!
আপনি কি কি করে বুঝলেন যে, শুধু নীরদচন্দ্র, আহমদ শরীফ, ও ফরহাদ মাযহারের লেখা থেকেই আমরা লিখেছি? ইনফ্যাকট ফরহাদ মাযহারের কোন লেখা থেকেই কিছু নেয়া হয়নি। প্রসঙ্গক্রমে নীরদচন্দ্র, আহমদ শরীফ এসেছে বটে, কিন্তু পাশাপাশি অনেক লেখকের বইয়ের রেফারেন্সই এসেছে। প্রমথনাথ সেনগুপ্তের আনন্দরূপম, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের ‘রবীন্দ্রজীবনী ও রবীন্দ্রসাহিত্য-প্রবেশক’, দীপঙ্কর চট্টোপাধায়ের লেখা ‘রবীন্দনাথ ও বিজ্ঞান’, দেবব্রত বিশ্বাসের ব্রাত্যজনের রুদ্ধসংগীত, অমিতাভ চৌধুরীর জমিদার রবীন্দ্রনাথ, প্রমথ চোধুরীর – রায়তের কথা, প্রতাপনারায়ণ বিশ্বাসের রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী : তত্ত্ব ও তথ্য, সুমন চট্টোপাধ্যাইয়ের কোন পথে গেল গান সহ অনেকে বইয়েরই রেফারেন্স আছে। কী কারণে শুধু নীরদচন্দ্র, আহমদ শরীফ, ও ফরহাদ মাযহারের উল্লেখ করলেন? এটাও কী উদ্দেশ্য প্রনোদিত নয়? ফরহাদ মাজহারের সাথে ইচ্ছাকৃত সংশ্রব আরোপ করাটা কী কাকতালীয়?
কিছু মনে করবেন না, আপনার কথাটা অনেকটা ধর্মবাদীদের মতোই শুনাচ্ছে। কোরান বা মুহম্মদের কেউ সমালোচনা করলেই তার বলে উঠে কোরান ঠিকমত পড়ুন। আপনিও কিন্তু তাইই বলছেন আকার ইঙ্গিতে। কিভাবে বোঝা গেল আমরা ‘নিজ মেধায় গবেষণা’ করছি না? কেবল সমালোচনা করা হয়েছে বলেই? আমাদের কথা না হয় বাদ দেন, আহমদ শরীফ আর হুমায়ুন আজাদ তো রবীন্দ্র-পণ্ডিতই ছিলেন। তারাও কি রবীন্দ্রনাথ না পড়েই সমালোচনা করেছিলেন? আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে কেবল প্রশংসাবাণী আউড়ালে কোন সমস্যা হত না। যত সমস্যা হয়েছে সমালোচনা করাতেই।
এটাও আপনার বানানো। রবীন্দ্রনাথের লেখাটিতে দুটো বড় অভিযোগ করা হয়েছে। প্রমথনাথকে দিয়ে পান্ডুলিপি লিখিয়েও তাকে লেখক থেকে বাদ দিয়ে নিজেই লেখক হয়েছেন। গগন হরকরাকেও উপযুক্ত স্বীকৃতি দেননি। আপনার কি মনে হয়, এগুলো কাজ রবীন্দ্রনাথ না হয়ে অন্য কেউ করলে – আপনি সমর্থন করতেন। কেবল রবীন্দ্রনাথ বলেই সেগুলো এড়িয়ে যেতে হবে? আমাদের প্রবন্ধে বার বারই বলা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ অসামান্য প্রতিভা। তার সৃষ্টি আসলেই অনন্য। কখনোই বলা হয়নি তিনি সবকিছুই নকল করে লিখতেন।
হ্যা ভালো দিকগুলো এই লেখায় আলোকপাত করা হয়নি। কারণ সেগুলো বহু ব্যাবহারে জীর্ণ। আপনিও তো একটি লেখা লিখলেন, সেখানে কি রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে একটিও নেগেটিভ কথা আছে? সবই তো ভাল কথা – যেগুলো আমরা বছরের পর বছর শুনে এসেছি। আমি তো বলছি না আপনার লেখাটি মুক্তমনায় একেবারে বেমানান! আমাদের বেলায় শুধু আমাদের মতকেই নয়, পুরো লেখাটিকেই মুক্তমনা থেকে সরিয়ে দিতে চান! কী ঘটনা?
আসলে মুশকিল হল, সমালোচনামূলক সাহিত্য নিয়ে আপনাদের বোধ হয় তেমন ধারনা নেই। আমাদের লেখার টোন আপনার পছন্দ হয়নি। আপনার রবীন্দ্রনাথের প্রতি ‘গলে গলে পড়া’ লেখাও তো অনেকের পছন্দ নাও হতে পারে। সেজন্য কি বলব আপনার লেখা আমাদের এখানে বেমানান?
আগেই বলেছি – মহাপুরুষদের অমহাপুরুষসুলভ বিভিন্ন কাজের সমালোচনা করাটাও কিন্তু মুক্তমনাদের ক্রিটিকাল থিংকিং এর অবিচ্ছেদ্য অংগ। হুমায়ুন আজাদ তার নারী গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথের নারী ভাবনার তীব্র সমালোচনা যে ভাষায় করেছেন, আমাদের লেখাটা সেই টোনের চেয়ে অনেক শান্তই বলা যায়। আকিমুন রহমান তার ‘বিবি থেকে বেগম’ গ্রন্থে তো বেগম রোকেয়াকে একেবারে ধুয়ে দিয়েছেন, দেননি? সেখানে কোথায় নিরপেক্ষতা? আহমদ শরীফ তার বইয়ে জমিদার রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন অত্যাচারের বিবরণ উল্লেখ করেছেন। উৎস মানুষ থেকে একটা বই বেরিয়েছিলো ‘স্বামী বিবেকানন্দ – অন্য চোখে’। সেখানে তারা মূলতঃ স্বামীজীর অযৌক্তিক এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধারণা নিয়েই কথা বলেছিলেন, মানুষ পেয়েছিলো ভিন্ন তথ্যের সন্ধান। প্রবীর ঘোষ তার অলৌকিক নয়, লৌকিক গ্রন্থে স্বামী বিবেকানন্দ থেকে শুরু করে অনুকূল চন্দ্র সহ ভারত বর্ষের সব সম্মানিত পুরুষদের অযৌক্তিক ধ্যান ধারনার উল্লেখ করেছেন। ক্রিস্টোফার হিচেন্স মাদার টেরেসার অন্ধকার দিকগুলো নিয়ে বই লিখেছেন। তারা সেগুলো করেছেন তাদের মুক্তবুদ্ধির প্রতি দায়িত্ব থেকেই। কিন্তু তারপরেও রবীন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথের জায়গাতেই আছেন, মাদার তেরেসা তার জায়গায়। এ সব সমালোচনা থেকেই কিন্তু পাঠকেরা খুঁজে পেয়েছেন সাহিত্যের আর শিল্পের নতুন মাত্রা। অন্ধ স্তাবকতায় আটকে থাকলে আর যাই হোক সামনে এগুনো যায় না। মুক্তমনায় সমালোচনা কেবল ধর্মগুরুদের ব্যাপারেই হবে, আর অন্য কিছুকে রাখতে হবে সমালোচনার উর্ধে – এই ব্যাপারটা আমি অন্ততঃ সঠিক মনে করি না।
তারপরেও ভাল লাগলো আপনার পাঠপ্রতিক্রিয়া। আরো লিখুন।
@অভিজিৎ, আমার লেখায় যে নতুন কিছু থাকবে না, সেটা আমি শুরুতেই বলে নিয়েছি। আর গগণ হরকরার কথা আবুল আহসান চৌধুরী বিস্তারিত লিখেছেন। এখন আবুল আবুল আহসান চৌধুরীর রবীন্দ্র বিষয়ক বই না পড়ে কেউ যদি রবীন্দ্রনাথকে জানার জন্য কোনও ব্লগের আশায় বসে থাকেন তাহলে আমার কিছু বলার নেই। আর আমি ‘প্রায়’ শব্দটি ব্যবহার করেছি, তার মানে দু-একটি বিষয় আমি অবশ্যই নতুন করে জানতে পেরেছি।
ফরহাদ মাযহারের নাম নেননি, বটেই। তার চিন্তার সাথে অনেকটাই মিলে যায় বলে নামটা এসেছে। এটি আমার ভুল হতে পারে তবে উদ্দেশ্য প্রনোদিত নয় কখনই।
ধন্যবাদ আপনাকে।
@মোজাফফর হোসেন, ফরহাদ মজহারের ভাবশিষ্য সাদ কামালীর সঙ্গে অভিজিৎ রায়ের একটি আসমানদারী ব্যবসা আছে। তারা দুজনে মিলে একটি সম্পাদনা করে বের করেছেন। এই তথ্যটি জানা দরকার।
@কুলদা রায়, ফরহাদ মজহারের ভাবশিষ্য সাদ কামালীর সঙ্গে অভিজিৎ রায়ের একটি আসমানদারী ব্যবসা আছে। তারা দুজনে মিলে একটি গ্রন্থ সম্পাদনা করে বের করেছেন। এই তথ্যটি জানা দরকার।
@কুলদা রায়,
অনেক তো হল। ফেসবুক কখনো আমাকে ভণ্ড, কখনো জামাতী ছাগু প্রমাণের চেষ্টা করলেন। এখন আবার সাদ কামালীকে জোড়া দিয়ে আমাকে ফরহাদ মজহারের ভাবশিষ্য বানাচ্ছেন। সাদ কামালীর সাথে আমি একটা বই লিখেছি, তা বলে আমি ফরহাদ মজহারের ভাবশিষ্য হব কোন দুঃখে। শোনেন ইন্টারনেটে আপনি নতুন ফাল পাড়তেছেন তো, জানেন না কিছু, ফরহাদ মাজহারের দার্শনিক সমালোচনা করার প্রেক্ষাপট আমিই শুরু করছিলাম, এরে তারে জামাতি ছাগু ডাইকা দায়িত্ব সারি নাই। এই নীচের লেখাটা ভোরের কাগজে ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০০৫ এ প্রকাশিত হইছিল। মুক্তমনাতেও আছে। হুবহু তুলে দিচ্ছি –
আপনেরে জিগাই, ফেসবুকে লাইক বাটন চাপা আর তাফালিং গিরি করা ছাড়া ফরহাদ মাজহারের বিরুদ্ধে আপ্নে কি করছেন? আমার ফরহাদ মজহারের সাথে আমদানীর ব্যবসা আছে – প্রমাণ করেন না। আপনারে যদি কই আপনার আদভানী আর বাজপেয়ীর লগে আমদানীর ব্যাবসা আছে, হইব? আপনাকে যখনই চ্যালেঞ্জ করা হয় তখনই বালিতে মুখ লুকান। এবারো এর পরিবর্তন হবে না আশা করি।
@অভিজিৎ, আসমানদারী আর আমদানীর অর্থ বোঝেন? দেখুন আমার মন্তব্য–
আসমানদারী রবীন্দ্রনাথের ব্যবহার করা শব্দ। তিনি নিজেকে আসমানদারী করছেন বলতেন। বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চাকে বোঝাতেন। আপনার সঙ্গে সাদ কামালীর এই বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পর্কটাকেই আমি বুঝিয়েছি। আপনি উল্টো বুঝলি রামে গেছেন। হা হা হা।
আমি তো আপনার লেখালেখিকে ভালই বলেছি। কখনো খারাপ বলেছি বলে তো মনে হয় না। এমনকি আপনার মালিকানায় সৃষ্ট মুক্তমনার যুক্তিবাদি ভূমিকাকে প্রশংসাই করেছি। আমি শুধু আপনাদের গোষ্ঠীবাদ ও ব্যক্তিবাদের অহংকারী ভূমিকাকে সমালোচনা করেছি এবং করব।
আর ফরহাদ মজহারের ভণ্ডামো নিয়ে আমি বহু লেখা লিখেছি। তাঁর কৃষি গবেষণার ভণ্ডামিও নিয়েও বেশ কয়েকটা নোট লিখেছি। আর আমিতো মুর্খ মানুষ। জ্ঞানী নই। সুতরাং আপনার মত জ্ঞানগর্ভ রচনা লিখব কিভাবে?
@কুলদা রায়,
আপনার লেখনিতে আবার দেখতে চাই রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের অসাধারণ কর্মকান্ড
গর্জে উঠুক। এই আশা কী পূরণ করবে না? আমাদের অনেকের দাবী।
@কুলদা রায়,
আপনি মূর্খ মানুষ না জ্ঞানী মানুষ তা নিয়ে তো কথা হচ্ছিল না। এর আগে নিজেকে মূর্খ বলে আবার ফরিদ আহমেদকে বানালেন মহামূর্খ। এখন আবার আমাকে জ্ঞানী বলছেন। এগুলো করে কি লাভ বলুন তো? আমাকে ফরহাদ ঠারে ঠোরে মজহারের ভাবশিষ্য বানাতে চাচ্ছিলেন, তাই এই কথাগুলো বলা, নিজেকে জ্ঞানী বা মূর্খ প্রমাণ করার জন্য নয়। ফরহাদ মজহারের প্রতি আপনার যে কারণে ঘৃণা, আমার সমালোচনাও ঠিক একই জায়গা থেকেই।
@অভিজিৎ, উপরের বক্তব্য থেকে বোঝা গেল ফেসবুকে ফরহাদের ভণ্ডামোর বিরুদ্ধে আমি শুধু লাইক বাটনে সীমাবদ্ধ থাকি না। কিছু করিও বটে। তাহলে কি আপনি অভিযোগটি তুলে নিচ্ছেন–
২. আমার বলা আসমানদারীকে আমদানী হিসাবে অবিহিত করাটাকে আপনার একটি ভুল বলে স্বীকার করছেন তাহলে?
৩. এবং আপনিও যে ভুল করতে পারেন–এই সত্যটাকে তাহলে মেনে নিচ্ছেন?
@কুলদা রায়,
আমার ভুল হবে না কেন? মানুষমাত্রই ভুল হয়। ভুল স্বীকার করতে আমার কোন কার্পণ্যও নেই। আপনাকেই বরং খুব কমই দেখা গেছে ভুল স্বীকার করতে। চেপে ধরার পরও অনেকক্ষেত্রে জবাব না দিয়ে সরে পড়েছেন।
আসমানদারী ব্যবসা রবীন্দ্রনাথ ব্যবহার করলেও এটা এখন কোন বহুল প্রচলিত শব্দ নয়। ব্যবসার সাথে আমদানী রপ্তানীই যায় ভাল, কী করব 🙂 । দ্রুত পড়তে গিয়ে ভুল করে ‘আমদানী’ ভেবেছিলাম। কিন্তু আমদানী হোক আর আসমানদারী হোক, কোন ব্যবসার মাধ্যমেই আমার ফরহাদ মজহারের সাথে যে সম্পর্ক নেই সেটুকু বোধ হয় আপনি বুঝেছেন।
@অভিজিৎ,একটা ব্যা পারে আমার মনে হয় সবাই একমত যে মানুষ মাত্রই দোষেগুনে,আর পৃথিবীতে কোনও superman বা মহামানব নেই ছিলও না ।কারোও কিছু ভাল গুন প্রবল,বা কারোও কোন দোষ প্রবল
“মুক্ত করো ভয়, আপনও মাঝে শক্তি ধর-
নিজেরো কর জয়”।
রবীন্দ্রনাথের কবিতা যে জীবনের কত সময়ে প্রয়োজন তা
বুঝি, বোধ করি অনেকেই!
খুবই সত্যি!
ইউরোপ, আমেরিকার লোকরাতো শেক্সপিয়ারের জন্মভূমিকে রীতিমত তীর্থস্থান বানিয়েছে!
এমনকি তার “রোমিও-জুলিয়েটের” কাহিনীর উৎস ইটালীর ভেরোনাও এরা ঘটা করে দেখতে যায়!
এরকম লেখাও লিখবেন মাঝে মাঝে!
@লাইজু নাহার, ধন্যবাদ। আপনার মন্তব্য পড়ে সাহস পেলাম। হাহা ! ভালো থাকবেন।
@লাইজু নাহার,
একদম ঠিক কথা (Y)
তবে হ্যা্ঁ, এই ধরনের লেখা লিখে যে তাড়াতাড়ি পরিচিত হওয়া যায়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
সাহিত্য তো বিজ্ঞান না যে গবেষণা করে নতুন কিছু আবিষ্কার করা যাবে। শেক্সপিয়র-এর ৩৭ টা নাটকের মধ্যে ৩৬ টাই বিভিন্ন জায়গা থেকে গল্প নিয়ে লেখা।
রবীন্দ্রনাথ সাধারণ মানুষদের জন্য কতটুকু করতে পেরেছেন জানি না, তবে চেষ্টা করেছিলেন। যে চেষ্টা খুব কম মানুষই করেছেন। চেষ্টা করেছিলেন বলেই, ইংল্যান্ড ও কলকাতার আয়েশী জীবন ছেড়ে কুষ্টিয়ার ভড় গ্রামে বাস করেছেন। শিলাইদহ অঞ্চলে আমার বাড়ি, আমি জানি সেখানে বাস করা কত কঠিন।
আমি রবীন্দ্র মৌলবাদ নই, কিন্তু তা্ঁর ভুলগুলো গ্রহণ করেও আমি তা্ঁকে মহামানব বলে স্বীকার করি, মানে সাধারণ মানুষ নন বলে মান্য করি। আলোচ্য প্রবন্ধটি পড়ে তার কোনও হেরফের হয়নি। আর তা্ঁকে নবী বা ভগবানের আসনে বসানোর প্রশ্ন তখনই আসে যখন আমি এই দুটোকে বিশ্বাস করবো। সুতরাং এ প্রশ্ন আমার ক্ষেত্রে বাতিল বলে ধরে নিচ্ছি। তবে তা্ঁকে বাঙালির ভগবান বা নবী (ভিন্ন অর্থে) হিসেবে মনে করাকে আমি অন্যায় মনে করি না।
তবে হ্যা্ঁ, আমি ফরিদ আহমেদ এবং অভিজিৎ- কে ধন্যবাদ জানাই যে তা্ঁরা আমাদের সাহিত্য নিয়েও ভাবছেন। একজন শিক্ষিত মানুষের তা্ঁর দেশের বিজ্ঞান, শিল্প, সাহিত্য, কৃষি, সমাজ ব্যবস্থাসহ আরো আরো অনেক বিষয় নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার দরকার আছে। এটা হলেই আমাদের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে impersonal হওয়াটা খুব জরুরি। আর রবীন্দ্রনাথ বা্ঁচবেন কি মরবেন সেটা বরং আমরা সময়ের উপরেই ছেড়ে দিই। মাতামাতি তো আর কম হলো না, আসুন আমরা অন্যদের নিয়েও ভাবি।
এই লেখাটি পড়লে, ভাষার টন দেখেই বোঝা যায় রবীন্দ্রনাথকে ছোট করে দেখাটাই এই লেখার উদ্দেশ্য।
মোটামুটি সম্পূর্ণ একমত । (Y) । রবিন্দ্রনাথ কে এভাবে কাটাছেরা করার সময় বোধহয় এখনো আসেনি , যখন আমরা মৌলবাদী দের হাতে ক্রমেই জিম্মি হয়ে পরছি । একটু রাজনৈতিক মাত্রা দিলাম ( বাঙালি ত ! )। রবিন্দ্রনাথ কে নিয়ে আমদের গর্ব যেমন আছে , অনেক বিরাম্বনাও আছে !… আমি কানাডাতে সামান্য কিছু পরাশুনা করেছিলাম , আমার TOEFL score এ সন্তুষ্ট ণা হয়ে আমাকে কীছূ ইংরেজি ও পোড়তে বাধ্য করেছিলো করতিপক্ষ । এঈ সুযোগে আমী একটা পেপার নিয়েছিলাম এশিয়ান লিটারেচার । টেক্সট বই এ বাংলা লেখকদের একটা ই গল্প ছিল যা রবিন্দ্রনাথ এর । শিক্ষি কা যেদিন ওটা পড়ালেন রবিন্দ্রনাথ এর অনেক প্রশিস্ত করার পর আমাকে দেখিয়ে বল্লেন,তুমি ত রবিন্দ্রনাথ এর দেশের মানুষ তুমি কিছু বল । আমি সম্যাসয় পরলাম উনি আগাগোড়া রবিন্দ্রনাথ কে বাংলাদেশ এর বলে চালিয়ে দিলেন , ঘুণাক্ষরেও ভারতের কথা বললেন না । আমার মাথায় মহুরতের জন্নে হলেও খেলে গেল রবিন্দ্রনাথ ত বাংলাদেশে জন্মান ই নাই , রবিন্দ্রনাথ কি বাংলাদেশি , আবার একথাও মনে হল রবিন্দ্রনাথ অনেক সময় ই অভিবক্ত বাংলা কে ত বাংলাদেশ ই বলতেন । এমনকি বঙ্গভঙ্গ বহাল হবার পরেও । আমি সবার সামনে দাড়িয়ে শুধু এতটুকু ই বলতে পেরেছিলাম যে,” তিনি তার জিবনের বড় একটা সময় আমার দেশে কাটিয়েছিলেন এবং সেই সময়কালে তার অনেক বিখ্যাত রচনা সম্পপন্ন করেছিলেন ।” তিনি কোথায় জন্মেছিলেন বা বিবাহ করেছিলেন ইছহে করে ই মনে হয় এড়িয়ে গেছিলাম ,সবার সামনে ফোলান বুকটা চুপসে জাবার ভয়য়ে । রবিন্দ্রনাথ আমদের বোঝাও বৈকি !!কাজি নজ্রুল ইসলাম এর কথা আসলে যে কি হবে তা ভেবে প্রমাদ গুনছি , বেটা ত জাতিও কবি, এ দেশে না জন্মেই । … তবে রবিন্দ্রনাথ এর গান এবং ছোটোগল্প ছাড়া তার অন্য সাহিত্য সৃস্টি আমাকে টানে না । তার বর গল্প বা উপন্যাস আমার কাছে ধান ভাংতে শিবের গীত এর মত ই মনে হয় । এখন থেকে রবিন্দ্রনাথ কে ভালবেসে ই বলব , বেটা বুড়ো একটু আধটু চুরিও করেছিল না কি ? …।!!!! :lotpot:
@সপ্তক, গোরা উপন্যাস আর একবার পড়ে দেখতে পারেন। ধন্যবাদ।
১। মহামানব শব্দটাই অশ্লীল।
২। চুরি রবীন্দ্রনাথ করলেও সেটা চুরি। কারো সুর অনুমতি ছাড়া নকল করা কেমন? আমি যদি রবি বাবুর একটা গানের সুর চুরি করে বলি সেটা এক মহান কবির সুর আর তার নাম স্বীকার না করেই তা ইচ্ছেমত ব্যবহার করি তবে কেমন হয়? বাউল সুর বলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না।
৩। আরেকজন লেখকের বই যেভাবে নিজের করে নিলেন রবিবাবু তাকে গর্হিত অপরাধ ছাড়া আর কিছু বলার নেই।
৪। জমিদারী একটা গর্হিত পেশা। প্রজা শোষণ ছাড়া জমিদারী হয় না। কেউ জমিদার অথচ প্রজার জন্য তার প্রাণ যায় যায় অবস্থা তা বিশ্বাস করতে হলে হয় মৌলবাদী অথবা শিশু হতে হবে।
একজন লেখকের দ্বিচারিতা থাকতে পারে আর একে তুলে ধরেই তাকে মূল্যায়ন করতে হবে। অপরাধ অপরাধই। একটি অপরাধ করে শত ভাল কাজ করলেও অপরাধ তার নিজের জায়গায়ই থাকে।
বাঙালীর সমালচনার অভ্যাস এখনো গড়ে উঠে নি। দাসত্বের অভ্যাস একদিনে ছাড়ার কথাও না। কারো সমালোচনা করলে তারা ভাবতে থাকে এই বুঝি তাকে শেষ করে দেয়া হল। কিন্তু সমালোচনা করলেই কাউকে নীচে নামানো হয় না, বরং তার জন্য উপযুক্ত স্থান দেয়ার পন্থা উন্মুক্ত হয়।
রবীন্দ্রনাথের প্রভাব বাঙালীর উপর ধর্মের চেয়ে খুব একটা কম না। রবীন্দ্রনাথের ভক্তকূল রবি নাম জপ করে সাধুসন্তের ভাব নিচ্ছেন যা দুশ্চিন্তার বিষয়। আমরা মন মানসিকতায় এত ছোট হলাম কিভাবে? আমাদের মহান কারো অতিশয় অভাব বলেই?
সারা দেশে রবি ঠাকুরের প্রশংসার জোয়ার চললেও তার সমালোচনাকে সামনে নিয়ে আসার উদ্যোগ যেখানে অতি বিরল সেখানে একটি কঠিন সমালোচনার প্রয়োজন ছিল। কেন কারো সমালোচনা করলে তাকে ব্যলেন্স করতে গিয়ে প্রশংসা করতে হবে?
@সুমন, হুম। বটেই। ধন্যবাদ।
@সুমন,
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সপর্কে এতো কম জ্ঞ্যান ভান্ডার নিয়ে আলোচনায় না আসাই শ্রেয়। আপনাকে বলছিনা- অনেককেই বলছি।
রবীন্দ্রনাথের প্রভাব বাঙালীর উপর ধর্মের চেয়ে খুব একটা কম না। রবীন্দ্রনাথের ভক্তকূল রবি নাম জপ করে সাধুসন্তের ভাব নিচ্ছেন যা দুশ্চিন্তার বিষয়। আমরা মন মানসিকতায় এত ছোট হলাম কিভাবে? আমাদের মহান কারো অতিশয় অভাব বলেই?
মহান মানুষের এতো অভাব বোধ করলে কাউকে মহামানব বানিয়ে নিলেই ল্যাঠা চুকে যায়। সব ফেলে এই মানুষকে গালা-গাল দিলেও রবীন্দ্র নাথের জনপ্রিয়তার কেশাগ্র কেউ স্পর্শ করতে পারবে না। ধন্যবাদ। মুক্তনায় মুক্ত ভাব ধারার কথাই বললাম।