:: নিউ ইয়র্ক (প্রথমার্ধ) :: নিউ ইয়র্ক (দ্বিতীয়ার্ধ) :: পোর্টল্যান্ড (ওরিগন) ::ওয়াশিংটন ডিসি :: ডেট্রয়েট (মিশিগান) ::
জানুয়ারী ২৪, ১৮৪৮। অ্যামেরিকান রিভার এর তীরে কাজ করতে থাকা করাতকলের কর্মী স্যামুয়েল রজারস্ সোনালী রঙের উজ্জ্বল কিছু একটা পেয়ে সেটা নিয়ে যায় তার মালিকের কাছে। যাচাই-বাছাই এর পর মালিক বুঝতে পারে উজ্জ্বল সোনালী এই বস্তু গোল্ড ছাড়া আর কিছুই নয়। এ-খবর ছড়িয়ে পড়লে নিজের ব্যবসার বারোটা বাজবে বুঝতে পেরে মালিক নির্দেশ দিলেন কোঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করতে। কিন্তু বেণিয়ার দেশে কে শোনে সে কথা! সান ফ্রান্সিসকোর এক পত্রিকা প্রকাশক স্যামুয়েল ব্রানান ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আগেভাগেই স্বর্ণের দোকান খুলে বসলেন। তারপর, প্রতিদিন সান ফ্রান্সিসকোর রাস্তায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে করে জানান দিতে থাকলেন, গোল্ড, গোল্ড, গোল্ড ফ্রম অ্যামেরিকান রিভার! এই না হলে জাত ব্যবসায়ী। বাতাসের বেগে খবর ছড়িয়ে পড়ল গোটা অ্যামেরিকায়। দূর-দূরান্ত থেকে দলে দলে লোকজন ছুটে আসতে থাকে অ্যামেরিকান রিভার তীরবর্তী ক্যালিফোর্নিয়া অঞ্চলে। ইতিহাসের পাতায় এই ছুটে আসার ঘটনার স্থান হয়েছে গোল্ড রাশ নামে। শুধু অ্যামেরিকা নয়, আশপাশের বিভিন্ন দেশ এবং গোটা বিশ্ব থেকে ভাগ্যান্বেষী মানুষেরা এসে ভীড় করতে থাকে ক্যালিফোর্নিয়ায়। ১৮৪৯ (এইটিন্ ফোরটি নাইন) সালের দিকে ক্যালিফোর্নিয়ায় এসে জড়ো হতে থাকা এই সমস্ত মানুষদের দুই শব্দে ডাকা হয়ে থাকে ফোরটি নাইনার্স নামে।
এই ক্যালিফোর্নিয়ান গোল্ড রাশ্ এর সময় অন্য আর সবার সাথে ব্যবসার নিমিত্তে ছুটে এসেছিলেন নিউইয়র্ক প্রবাসী এক বড় ব্যবসায়ী। পরবর্তীতে ব্যবসার সাথে সাথে রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে ১৮৬১ সালে যিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর। লিল্যান্ড স্ট্যানফোর্ড। ক্যালফোর্নিয়ায় ভালোই সময় কাটছিলো তার। কিন্তু, ১৮৮৪ সালে এই ধনবান ব্যবসায়ীর ১৫ বছর বয়সী একমাত্র সন্তান হঠাৎ করে টাইফয়েডে মারা যায় । শোকে বিহবল লিল্যান্ড স্ট্যানফোর্ড এবং তার স্ত্রী জেন একমাত্র ছেলের মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ পর সান্ত্বনার ভাবনা নিয়ে ভাবতে থাকেন – তাঁদের সন্তান আজ হয়তো বেঁচে নেই, তাতে কি, ক্যালিফোর্নিয়ার সব সন্তানই এখন তাঁদের সন্তান। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন- যেহেতু নিজের সন্তানের জন্য তাঁরা চাইলেও আর কিছুই করতে পারবেন না, অতএব অন্য সন্তানদের জন্য এমন কিছু করবেন, যাতে সেটা করার মধ্য দিয়ে নিজের সন্তানের নামও পৃথিবীতে টিকে থাকে। তাঁদের সে-দিনের সেই সিদ্ধন্তের ফলস্বরূপ জগতের বুকে জন্ম নেয় জগদ্বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
- ছবিঃ হাফ মুন বে হয়ে স্ট্যান্ফোর্ড যাওয়ার পথে
- ছবিঃ স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্যবসায়ীদের দেশ। যেখানে সম্ভাবনা দেখেছে সেখানেই ছুটে গেছে বেণিয়ার দল। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য প্রয়োজন টাকা। টাকা আছে ব্যবসায়ীদের কাছে। টাকাওয়ালা ব্যবসায়ীদের প্রয়োজন আরো টাকা। পরিকল্পনা চলতে থাকে ইন্ডাস্ট্রি করবার। ১৯৫১ সালে ভ্যারিয়ান অ্যাসোসিয়েটস নামক কোম্পানির স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি লিজ্ নেয়ার মধ্যদিয়ে শুরু হয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গঠনের উদ্যোগ। সেই যে শুরু, আর থামতে হয়নি। একে একে আসতে থাকে হিউলেট প্যাকার্ড (এইচপি) থেকে শুরু করে নামী দামী সব কোম্পানি। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম করা গবেষকদের কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় বাণিজ্য, এগিয়ে যায় সভ্যতা। আস্তে আস্তে এটি হয়ে উঠে সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে কাজ করা কোম্পানিগুলোর তীর্থস্থান। কম্পিউটারের সিপিইউ থেকে শুরু করে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ তৈরী করে থাকে এই কোম্পানিগুলো। এই সেমিকন্ডাক্টর তৈরী করার জন্য যে পদার্থটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে তার নাম সিলিকন।সেই সিলিকনের নাম থেকেই সান ফ্রান্সিসকো আর সান হোসে শহরের মধ্যবর্তী জায়গায় অবস্থিত, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিকে কেন্দ্র করে কয়েক মাইল জুড়ে গড়ে উঠা, ছোট ছোট পাহাড়ে ঘেরা উপত্যকার নাম হয়ে যায় সিলিকন উপত্যকা বা সিলিকন ভ্যালি।
আকাশ থেকে সিলিকন ভ্যালি দেখতে দেখতে নেমে এসে, সান হোসে বিমান বন্দর থেকে বের হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। দশ মিনিটের মধ্যে অনিকের চলে আসার কথা। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সাথে পড়াশোনা করেছিলাম। দেখা হওয়ার সাথে সাথে তার প্রথম কথা, বাসায়তো খাবার নাই। ফাহিমা বাংলাদেশে গেছে, অতএব ওর বাসায় খাবার থাকার কোনো কারণও নেই। এই ছেলেটা একটু ব্যতিক্রম ধরণের। জিআরই, টোফেল, এসএসসি, এইচএসসি থেকে শুরু করে জীবনের বেশিরভাগ পরীক্ষায় নাইন্টি পারসেন্ট এর উপর স্কোর করা। অনিক আর ফাহিমা দুজনেই ডেট্রয়েটে পিএইচডি করছে। সামারে ইন্টার্নশিপ করার জন্য এখন সিলিকন ভ্যালিতে। সমস্য হচ্ছে ওকে দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছাড়া বেশি কিছু মনে হয় না। বাংলাদেশে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার থাকার সময়, শিক্ষকদের গাড়ীতে ছাত্র উঠা নিষেধ বলে, অনেক দিন দারোয়ান এসে তাকে গাড়ী থেকে নামিয়ে দিয়েছে। মস্তবড় দারোয়ানের কাছে ভয়ে ভয়ে ব্যাখ্যা করতে হয়েছে সে ছাত্র না, শিক্ষক। ওর ক্লাস চলার মাঝখানে সিনিয়র শিক্ষক এসে বলেছে, কী ব্যাপার তুমি স্টেইজে দাঁড়িয়ে কি করো, তোমাদের শিক্ষক কোথায়? কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ছেলেটারই এখন একটা ফুটফুটে ছেলে সন্তান আছে। ফারিস। বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট বাচ্চাদের দেখেছি, বাবা-মায়ের কাছে তাদের অনেক অনেক আবদার। কিন্তু, এই ছোট্ট ফারিসের তার বাবা-মায়ের কাছে একটাই ছোট আবদার- একটু বাসার বাইরে যাবে, দরজার বাইরে করিডোরে যাবে। ঠিকমতো কথা বলতে পারে না, মায়ের হাত ধরে দরজার দিকে দেখিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ফারিস অবশ্য এখানে এখন নেই। তার মায়ের সাথে বাংলাদেশে। অনিক বলে, আমি শুধু অপেক্ষায় আছি, বিমানবন্দরে আমার ছেলে আমাকে দেখলে কখন ঝাঁপিয়ে পড়বে আমার কোলে। পরে অবশ্য বন্ধুমহলে খোঁজ নিয়ে জেনেছিলাম, বাংলাদেশ থেকে আসার পর প্রথম তিন সপ্তাহ ফারিস তার বাবাকে চিনতেই পারেনি।
পরবর্তী দিন। সানফ্রান্সিসকো দেখার পালা। পাতাল ট্রেন থেকে বের হতেই দেখি, বাংলাদেশের মত এক দল আফ্রিকান অ্যামেরিকান পোস্টার, ব্যানার ধরে দাঁড়িয়ে আছে। অ্যাপল এর সিইও স্টিভ্ জবস্ আর চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করছে। তাদের দাবী, অ্যামেরিকানদের নিজেদেরই চাকুরী নেই, অথচ স্টিভ কি-না অন্য দেশ থেকে অভিবাসী ডেকে এনে চাকুরী দিচ্ছে। সমস্যটা হচ্ছে, এরা বড় জোর যোগ, বিয়োগ পারে; কষ্টে-সৃষ্টে গুণ অংকটা করতে পারলেও ভাগটা করার আগে বার্গার খাওয়ার জন্য ম্যাকডোনাল্ডস্এ চলে যায়। তাদের এই বিদ্যা দিয়ে যে অ্যাপল এর মত কোম্পানি চলবে না, সেটুকু তারা বুঝতে চায় না। উল্লেখ্য, ইউএসএ-তে কোনো কোম্পানি যদি বাইরের দেশ থেকে কাউকে কাজ করার জন্য আনতে চায় (এইচওয়ান ভিসা), তাহলে একটু-আধটু এদিক-সেদিক হলেও মূল নিয়িমটা হচ্ছে, ওই কোম্পানিকে দেখাতে হয় যে, নিজেদের দেশে (ইউএসএ) সেই কাজ করার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে যোগ্য লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, কোম্পানি বাধ্য হয়ে বাইরের দেশ থেকে লোক আনছে।
যাই হোক, এদের ভীড় পার হয়ে শহরের দিকে এগিয়ে গেলাম। এবার শুধু মুগ্ধ হবার পালা। প্রশান্ত মহাসগরের তীরে উপদ্বীপের মত জায়গায় বেড়ে উঠা এই শহরটা একদমই অন্যরকম। মনে হলো, কতগুলো ছোট ছোট পাহাড়কে পুরো ইট পাথরের চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে। সোজা প্রশস্থ রাস্তাগুলো পাহাড়ের নীচ থেকে ধাপে ধাপে উঠে গেছে একেবারে চূড়ায়, সেখান থেকে আবার ধাপে ধাপে নেমে গেছে নীচে। রাস্তার মাঝখানে চলতে থাকা অসংখ্য গাড়ীর সাথে সাথে চলছে বহু দিনের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী ক্যাবল কার। একটি নির্দিষ্ট গতিতে ক্রমাগত চলতে থাকা শক্ত ক্যাবল দিয়ে, সবলে টেনে এই বাহনটিকে চালানো হয়ে থাকে। সারা বিশ্বে একমাত্র এই সান ফ্রান্সিসকোতেই হস্তনিয়ন্ত্রিত এই ক্যাবল কার এখনো নিয়মিত চলে।
- ছবিঃ ক্যাবল কার থেকে তোলা রাস্তা আর অন্য ক্যাবল কার এর ছবি
শহরের গা বেয়ে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে উঠে গেলে একসময় থমকে যায় চোখ। চোখে পড়ে ইটপাথরের ঢাকা শহরের পাশেই প্রশান্ত মহাসাগরের বিপুল নীল জলরাশি, একটু দূরেই দেখা যায় আলকাতরাজ আইল্যান্ড, প্রতিবছর যেখানে ভীড় করে ১৫ লক্ষ পর্যটক। চোখে পড়ে সারা বিশ্বে এক নামে পরিচিত গোল্ডেন গেট ব্রিজ। একদা গোল্ড রাশ এর কারণে সারা বিশ্ব থেকে এই অঞ্চলে ছুটে এসেছিলো সহস্র মানুষ, অতএব, সেখানকার একটা ব্রিজ এর নামে গোল্ড দিয়ে হবে, সেটাইতো স্বাভাবিক। অন্য আরেকটি ব্রিজটি চলে গেছে ওকল্যান্ড-এ, যেখানে অবস্থিত বিশ্বের আরেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে। তবে সমস্ত শহরটা দু’চোখ ভরে দেখতে হলে সবচাইতে যুতসই জায়গা হচ্ছে, টুইন পিকস্, একসাথে দুইটা পাহাড়ের চূড়া। এখান থেকে শহরটাকে দেখে নিজেকে অলিম্পাসের চূড়ায় বসে থাকা জিউস মনে হয়, মনে হয় সমস্ত শহরটাকে এখানে বসেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
- ছবিঃ বিখ্যাত গোল্ডেন গেইট ব্রিজ
- ছবিঃ টুইন পিকস্ থেকে তোলা শহরের ছবি
গুলিস্তানের রাস্তায় রাস্তায় বই বক্রি করতে করতে বিক্রেতা যখন বলতে থাকে, এই বইটি পড়লে জানতে পারবেন- বিশ্বের কোন শহরে আকাশ থেকে আঁকাবাঁকা পথ ধরে মাটিতে গাড়ী নেমে আসে- তখন কিন্তু অবাক হবেন না। সানফ্রান্সিসকোর লম্বার্ড স্ট্রিট এতটাই ঢালু যে, মনে হয়ে বুঝি কোনো উঁচু বিল্ডিং এর ছাদ থেকে রাস্তাটা মাটিতে নেমে এসেছে। আঁকাবাঁকা, খাড়া এই স্বল্পদৈর্ঘ্য রাস্তাটিতে গাড়ী চালিয়ে উপর থেকে নীচে নামার জন্য মোটামুটি ভীড় লেগেই থাকে।
- ছবিঃ বিখ্যাত লম্বার্ড স্ট্রিট
সেদিনের মত শহর থেকে কিছুটা দূরে রেডউড সিটিতে থাকা অনিকের বাসায় ফিরে আসি। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওর বাসার বারান্দায় তাকিয়ে দেখি, মেঘগুলো এসে জড় হয়ে আছে সিলিকন ভ্যালির পাহাড়ের গায়ে। এখানে বৃষ্টি হয় না বললেই চলে, পাহাড়ের কারণে মেঘ আসতে পারে না। ওর বাসাটা যেখানে অর্থ্যাৎ রেডউড সিটি, এই জায়গাটার নাম হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত রেড উড্ এর নামে। রেড উড্ পৃথিবীর সবাচাইতে উঁচু প্রজাতির গাছ। লম্বায় একেকটা হয়ে থাকে ১০০ মিটারেরও উপরে। পরবর্তী দিন অনিকের সাথে ঘুরে ওরাকল, রিম, নিন্টেন্ডো আরো সব বিখ্যাত আইটি কোম্পানির অফিস আর ক্যাম্পাস দেখে ফেললাম। এরা চারপাশটা এবং কাজের পরিবেশ এত সুন্দর করে রাখে যে, অফিস ছেড়ে বাসায় ফিরে যেতেই কষ্ট লাগে।
- ছবিঃ ওরাকল্ ক্যাম্পাস
পরবর্তীতে, একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগে পড়া, আমার জুনিয়র আরিফের আমন্ত্রণে গিয়েছিলাম গুগোল এর ক্যাম্পাসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন চাকুরী করছে গুগোল । এই কিছুদিন আগেও একুশে হলের পানির ট্যাঙ্ক এর উপর বসে আরিফের সাথে দুই টাকা দামের চা খেয়েছি। আজ দুনিয়ার আরেক প্রান্তে এতদূর এসে দেখা হয়েও সেই একই রকম ভালো লাগে, পুরোনো দিনের আলাপে ফিরে যেতে পারি আমরা। আরিফ এখানে উঁচু বেতনে, সন্মানজনক একটা চাকুরী করছে। গোটা ইউএসএ-তে কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য গুগোলে কাজ করা স্বপ্নের মত একটা ব্যাপার। তার কাছ থেকে বিদায় নেবার সময় জিজ্ঞেস করলাম, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? কোনো ধরণের সিদ্ধান্তহীণতায় ভোগা ছাড়াই সরাসরি উত্তর, আর অল্প কয়েকটা বছর চাকুরী করবো, তারপরই ফিরে যাবে দেশে। হঠাৎ করে আমার ভিতরে প্রতিধ্বণিত হলো, জন্ম আমার ধন্য হলো মা’গো, এমন করে আকুল হয়ে আমায় তুমি ডাকো। আমরা যারা বাইরে আছি, দেশ মাতৃকার ডাক উপেক্ষা করা আমাদের জন্য খুব কষ্টকর।
- ছবিঃ গুগল ক্যাম্পাস
এবার একটা মানুষের কথা বলি। এই মানুষটা সম্পর্কে কিছু না বললেই নয়। মুনিরুল ইসলাম শরীফ। বাংলাদেশের কম্পিউটার বিজ্ঞানের ইতিহাস যদি লেখা হয় তাহলে এই লোকটার নাম প্রথম দিকে আসবে। চেরেনোবিল কম্পিউটার ভাইরাসের সাথে সবারই হয়তো কম-বেশি পরিচয় আছে। ১৯৯৯ সালের দিকে প্রথম ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসটি ডিজিটাল প্রযুক্তির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিসাধন করা ভাইরাসগুলোর মধ্যে একটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের ছাত্র থাকা অবস্থায় মুনির ভাই সেই সময় এর প্রতিকার তৈরী করেন। সিএনএন, নিউজউইকসহ বিশ্বের নামী দামী সব সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিলেন তিঁনি। অনেক মিডিয়া – অ্যা ইয়ং কিড্ ফ্রম বাংলাদেশ– বলে তুলে ধরেছিলেন মুনির ভাইয়ের কথা, সাথে সাথে বাংলাদেশের কথা। পরবর্তীতে চেরেনোবিল ভাইরাসের অনেক উন্নত এন্টিভাইরাস তৈরী হয়ে থাকলেও সে সময়ের তৎক্ষণাত সমাধানের জন্য অনেকেই ব্যবহার করেছেন মুনির ভাইয়ের প্রোগ্রামটি। বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠান সরাসরি যোগাযোগ করে সমাধান নিয়েছেন তাঁর কাছ থেকে।
কিন্তু এন্টিভাইরাস তৈরী করার থেকেও বড় যে কাজটা তিঁনি করেছেন, সেটা হলোও আত্ববিশ্বাস তৈরী করে দেয়া। সে-সময় তুলনামূলক নতুন বিষয় কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের তিঁনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, আমরাও পারি সবার উপরে থাকতে, আমরাও পারি অন্য আর সব দেশকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে। বাংলাদেশে প্রথম অনুষ্ঠিত হওয়া ন্যাশনাল কম্পিউটার প্রোগ্রামিং কনটেস্ট-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুনির ভাইদের দল সারা বাংলাদেশে প্রথম স্থান অর্জন করে, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে। (সর্বশেষ ২০১১ সালের ন্যাশনাল কম্পিউটার প্রোগ্রামিং কনটেস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে। ২০১১ সালেই প্রথম সন্মিলিত প্রতিযোগিতার পাশাপাশি মেয়েদের জন্য আলাদা করেও ন্যাশনাল কম্পিউটার প্রোগ্রামিং কনটেস্ট আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের একটি দল এতে প্রথম স্থান অর্জন করে।) মুনির ভাইদের দল যেবার প্রথম স্থান অর্জন করে, সে-বার কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের নবীণ বরণ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্জনের জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সবাইকে পুরস্কার দেয়া হচ্ছিলো আর দর্শকরা সবাই করতালি দিয়ে তাদেরকে অভিনন্দিত করছিলেন। মুনির ভাই যখন পুরস্কার নিতে গেলো, পুরো টিএসসি কাঁপিয়ে সেই যে করতালি শুরু হলো ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যানকে বলতে গেলে অনুরোধ করে সেই করতালি থামাতে হলো। সেই মুনির ভাই ইউএসএ তে পিএইচডি করছেন। এ-সময়টাতে তিনি কাজ করছেন গুগোল-এ। ইচ্ছে ছিলো আমাদের সময়ের নায়ক এই মানুষটার সাথে দেখা করবার, কিন্তু কিছুটা দূরের একটা বিল্ডিং-এ থাকার কারণে সময়ের অভাবে সেটা আর হয়ে উঠেনি।
পরবর্তী দিন চলে গেলাম হাইওয়ে ওয়ান। চলে যাওয়া মানে ড্রাইভ করে যাওয়া। এরা সুদীর্ঘ প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল ধরে তৈরী করে রেখেছে সুপ্রশস্থ রাস্তা। এই পথ ধরে চলে যাওয়া যায় লসএঞ্জেলস থেকে শুরু করে ক্যালিফোর্নিয়ার অন্যসব গুরুত্বপূর্ণ শহরেও। কিন্তু যত প্রশস্থই হোক না কেন, দক্ষ কেউ ছাড়া ড্রাইভ করা ঝুঁকিপূর্ণ। চারপাশে এত সৌন্দর্য যে, ড্রাইভ করতে যেয়ে মনোযোগ হারিয়ে ফেলাটা খুব অন্যায় কিছু হবে না। কিন্তু আমাদের সাথে ছিলো সাফি। সাফি সিলিকনভ্যালিতে একটা সফট্ওয়্যার কোম্পানিতে চাকুরী করছে। ইউএসএর সব ধরণের গাড়ির মডেল এবং সেগুলোর সাত জমের ইতিহাস তার মুখস্থ। খুব স্বাভাবিকভাবেই ড্রাইভ করে অসাধারণ। আমার ধারণা, ঢাকার রাস্তায় সিএনজিকেও সে লিমুজিনের মত করে চালাতে পারবে। তার আরো একটা গুণের কথা বলতেই হয়। সারা অ্যামেরিকার সবচেয়ে সেরা কাচ্চি বিরিয়ানী রান্না করে সাফি। কয়েক বছর পর যদি গুলশানে সাফি মিয়ার বিরিয়ানি বের হয়, তাহলে নিশ্চিত করে সেই সাফি হবে ক্যালিফোর্নিয়ার সাফি।
- ছবিঃ হাইওয়ে ওয়ানের একেবারে কাছে চলে আসা প্রশান্ত মহাসাগরের নীল জলরাশি
এবার ফেরার পালা। হাফমুন বে, ফিশারম্যানস্ ওয়ার্ফ সহ আরো বেশ কিছু জায়গায় গিয়েছি, কিন্তু এই পরিসরে হয়তো সব বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, সর্বশেষ একটা কথা না বলে আর হচ্ছেই না। এই ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের রাজধানী কোনটা? সানফ্রান্সিসকো! না। কি ভাবছেন? লস এঞ্জেলেস্। তাও না। তাহলে কোনটা? দয়া করে, গুগল সার্চ করে দেখুন। গুগোলে গেস্ট হয়ে ওদের সুস্বাদু ফ্রি লাঞ্চ খেলাম; এবার না-হয় গুগল এর সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করিয়ে সে ঋণ কিছুটা শোধ করার চেষ্টা করি।
:: পোর্টল্যান্ড (ওরিগন) :: সিলিকন ভ্যালি (ক্যালিফোর্নিয়া) :: ওয়াশিংটন ডিসি ::
মইনুল রাজু (ওয়েবসাইট)
[email protected]
লেখা ভাল হয়েছে। তবে দুইবার স্ট্যানফোর্ডকে স্ট্যামফোর্ড লেখায় একটু চোখে লেগেছে।
@রাইসুল ইসলাম,
ঠিক করে দিলাম। ধন্যবাদ। 🙂
Would you please correct “১৯৫১ সালে ভ্যারিয়ান অ্যাসোসিয়েটস নামক কোম্পানির স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি লিজ্ নেয়ার মধ্যদিয়ে শুরু হয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক গঠনের উদ্যোগ। সেই যে শুরু, আর থামতে হয়নি। একে একে আসতে থাকে হিউলেট প্যাকার্ড (এইচপি) থেকে শুরু করে নামী দামী সব কোম্পানি। স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম করা গবেষকদের কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় বাণিজ্য, এগিয়ে যায় সভ্যতা। আস্তে আস্তে এটি হয়ে উঠে সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে কাজ করা কোম্পানিগুলোর তীর্থস্থান।” it should be Stanford University not Stamford.
@anika,
লেখার মধ্যে অনেকবার স্ট্যানফোর্ড লিখলেও কিভাবে যেন এই প্যারাটাতে দুইবার স্ট্যামফোর্ড লিখে ফেলেছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে ভুলগুলো ধরিয়ে দেবার জন্য। 🙂
এই চমৎকার ও বিখ্যাত জায়গাগুলো আপনার চোখ দিয়েই দেখে নিলাম ! সাথে আপনার কলমের কৃতিত্ব দারুণ আকর্ষণীয় করে তুলেছে লেখাটাকে !
আমাদের যাদের উড়ে গিয়ে দেখার উপায় নেই, তাদের জন্য আপনার চোখ আর কলমকে নির্ভরযোগ্য ভাবতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করছি।
@রণদীপম বসু,
অনেকের লেখায় বিদেশ তথা পশ্চিমা বিশ্ব নিয়ে বাড়িয়ে বলার প্রবণতা দেখি, জানি না আমার লেখায়ও সেটা চলে আসে কি-না। কিন্তু আমি চেষ্টা করি সঠিক তথ্যটা তুলে ধরতে। আর নির্ভরযোগ্য তথ্য দেয়াটা একজন লেখকের সততা কিংবা দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক, অনেক পাঠক হয়তো যাচাই না করে, বিশ্বাস করে যাবে। তাই আমি নিজেই সব তথ্য যাচাই করে নিয়ে লিখতে চেষ্টা করি।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকবেন। 🙂
সানফ্রান্সিসকো শহরটা আমার দেখা অন্যতম সুন্দর একটা শহর। উঁচু নিচু রাস্তাঘাটগুলো দেখে খুব ভালো লেগেছিলো। তবে সিলিকন ভ্যালীতে সময়ের অভাবে যাওয়া হয়নি। আমেরিকান ফুটবল পছন্দ করি আর সে কারণে ফরটি নাইনার্সদের ইতিহাসটা জানা ছিলো।
সব মিলিয়ে চমৎকার বর্ননা করেছেন। (Y) (Y)
@হোরাস,
একবার আমার ক্লাশে আমেরিকান একটা মেয়ে বলেছিলো, “শিকাগো আমার ভালো লাগে না। আমার নিজের শহর সানফ্রান্সিসকো এত সুন্দর যে শিকাগো কিছুই না।” সে-সময় ভেবেছিলাম বেশি ভাব নিতে গিয়ে হয়তো এমনটা বলছে । কিন্তু, এখন জানি, নিজের শহর নিয়ে তার উচ্চ ধারণা পোষণ করবার জন্য কিছুটা হলেও কারণ ছিলো।
আমি আসলে আমেরিকান ফুটবল ফলো করি না। তাই জানতাম না ফরটি নাইনার্সদের ব্যাপারে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। 🙂
আহ, আপনার বেড়ানোর জায়গাগুলো দেখে স্মৃতি মনে পড়ে গেলো। ২০০৭ এর সামারে গুগলে ইন্টার্নশীপ করেছিলাম, আপনার ছবিতে দেখানো কয়েকটা ভবনের পাশেই আমার অফিস ছিলো। তখন গুগলে বাংলাদেশী ছিলো একজনই, শিশির (জানিনা, দেখা হয়েছে কি না ওর সাথে)।
গুগলের ক্যাফেতে খেয়েছেন? না খেলে পস্তাবেন। আর ডাইনোসর স্ট্যান কি এখনো সদর্পে গুগলের প্রধান ভবনের পাশে আছে?
গুগলে ৩ মাস কেটেছিলো এক স্বপ্নে। এক সময় এটা নিয়ে একটা সিরিজ লিখেছিলাম। শেষ পর্বের লিংক এখানে দিলাম। (বাকিগুলার লিংক সেখানেই আছে)।
আর সান ফ্রান্সিস্কো? সে তো আমার সবচেয়ে প্রিয় শহরের একটা।
@রাগিব হাসান,
রাগিব ভাই, আমার বউতো আপনার লেখা গুগল ক্যাম্পাসে চুল কাটার কাহিনী পড়ে হাসতে হাসতে শেষ। পুরো সিরিজটাই খুবই সুন্দর করে লিখেছেন।
আপনার জন্য মূল লেখায় ডাইনোসরের ছবি দিয়ে দিলাম। 🙂 এখন নতুন একটা জিনিস বানাচ্ছে ওরা। স্লাইডিং টানেল; দোতোলা থেকে স্লাইড করে নীচতলায় নেমে যাবেন, সিঁড়ি ডিঙ্গানোর ঝামেলা নেই। আর ক্যাফেতে গিয়েতো অবাক হয়ে গিইয়েছিলাম। ফ্রি খাওয়াবে ভালো কথা, তাই বলে এত বেশি খাবার! জাপানীজ, চাইনীজ, ইন্ডিয়ান, অ্যামিরিকান – কল্পনাও করা যায় না অন্য কোথাও।
আমাদের দেখা হয়েছিলো সাজ্জাদ ভাইয়ের সাথে (৯৭ এইচএসসি ব্যাচ)। বুয়েটের আরেক বিখ্যাত স্টুডেন্ট, খুবই প্রাণবন্ত একটা মানুষ। আমি ৯৮ এইচএসসি ব্যাচ। আমাদের ব্যাচ-এ অনেকে আপনার কাছে ‘সি’ এর অনেক কিছু শিখেছে, তাদের মুখ থেকে শোনা। আমি এখন আপনার ভুট্টা ক্ষেতের পাশেই ইউআইসি’তে আছি। শিকাগোতে আসার জন্য আপনার দাওয়াত রইলো, চলে আসবেন। 🙂
সান ফ্রান্সিসকোর কথা শুধু বলতে পারি, আবার যেতে হবে আমাকে এই শহরে। অন্য রকম, একদমই অন্যরকম সুন্দর একটা শহর।
সিলিকন ভ্যালি, ক্যালিফোর্নিয়া আর পৃথিবীর শীর্ষ আই.টি. কোম্পানীগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। খুব আগ্রহ ছিল জানার।
ক্যালিফোর্নিয়ার অতীত ইতিহাসও যথেষ্টই স্পর্শ করেছে। আরও অবাক লেগেছে এটা জেনে যে, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় একা কিভাবে ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রযুক্তি গবেষণার সূত্রপাত ঘটিয়েছে।
আধুনিক বিশ্বের সব সুযোগ সুবিধা আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সব মিলিয়ে স্যানফ্রান্সিসকো পৃথিবীতে অদ্বিতীয় এক শহর। বর্ণনার সাথে সাথে ছবির সংযুক্তি, মনে একটি পরিপূর্ণ ধারণা তৈরি করেছে। হাইওয়ে ওয়ানের দৃশ্য দেখে অসম্ভব আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
@তুহিন তালুকদার,
পুরো লেখাটাই আসলে একটা সার সংক্ষেপ। শুধু হাইওয়ে ওয়ান নিয়েই একটা গোটা লেখা লেখা যেতো। অসম্ভব সুন্দর একটা ড্রাইভ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
@মইনুল রাজু,
লিখেই ফেলুন না। আগ্রহ নিয়ে পড়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। সেই সাথে যদি সম্ভব হয় তো, আলাদা কিংবা একই পোস্টে আই.টি. জায়েন্টদের আরেকটু বিশদ বর্ণনা।
@তুহিন তালুকদার,
সবচেয়ে বড় আইটি জায়ান্ট গুগল এর সম্পর্কে জানতে নীচের মন্তব্যে রাগিব ভাইয়ের দেয়া লেখাটা পড়তে পারেন।
সুন্দর ঝরঝরে বর্ণনা। সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া নিয়ে অল্প দুচার লাইন লেখা থাকলে ভালো হতো মনে হয়।
@কাজী রহমান,
সাউদার্ন ক্যালফোর্নিয়া নিয়ে আসলে বড় করে লিখতে হবে। এবার শুধু নর্দার্ন পার্টটাতে যেতে পেরেছি, সাউদার্ন পার্ট-এ যাওয়া হয়নি। লস এঞ্জেলেস্, সান ডিয়েগো, হলিউড্ ওগুলো একসাথে কাভার করার ইচ্ছে আছে।
ধন্যবাদ আপনাকে, ভালো থাকবেন। 🙂
খুব ভাল লাগল ! (Y)
@নাসিম মাহমুদ,
অনেক ধন্যবাদ। 🙂