এ বি এম সালেহ উদ্দীনের স্মৃতিতে আহমদ ছফা

এক:

“চুলের ডগা থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত হচ্ছে একজন সত্যিকার সাহিত্যিকের।“ খানিকটা দূর থেকে মাথার নিচে বই দিয়ে বেঞ্চে শুয়ে থাকা আহমদ ছফাকে দেখিয়ে নিজের ছেলেকে এমনটি বলেছিলেন জনপ্রিয় লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। আহমদ ছফা মারা যাওয়ার কিছুদিন পরে ছফাকে নিয়ে হৃদয় স্পর্শী স্মৃতিচারণমূলক একটি লেখায় জাফর ইকবাল সেটি উল্লেখ করেছিলেন।

‘সত্যিকার সাহিত্যিক’-এর সংজ্ঞা নিয়ে অধ্যাপক জাফর ইকবালের সাথে অনেকে একমত পোষণ না ও করতে পারেন কেননা আমরা জানি, সাহিত্য-দর্শন-রাজনীতির আড্ডায় বা বিতর্কে শেষ মত বলে কিছু নেই। আমেরিকান বিট জেনারেশনের বিখ্যাত কবি এলেন গিন্সবার্গ কবি-সাহিত্যিকদের চাকুরী করার ঘোর বিরোধী ছিলেন। সাহিত্য হচ্ছে টুয়েন্টি ফোর বাই সেভেন জব, এলেন নাকি হরহামেশা বলতেন (রেফারেন্স: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়)। অনেকে নিশ্চয় ভ্রূ কুঁচকবেন এমন কথায়।

কাজেই ‘সত্যিকারের’ সাহিত্য বা সাহিত্যিকের সংজ্ঞা নিয়ে কূটতর্কে না গিয়ে ও এতটুকু অন্তত বলা যাবে, লেখক আহমদ ছফাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের সৃজনশীল সাহিত্য বা সাহিত্যিক সম্পৃক্ত কোন আলোচনা পূর্ণতা পাবে না। প্রফেশনাল সাহিত্যিক কিংবা এমেচার, ছফার পক্ষের কিংবা বিপক্ষের, বাংলাদেশের সাহিত্য, লেখক-বুদ্ধিজীবীদের (intelligentsia) ইতিহাসে আহমদ ছফা গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায়।

দুই:

আমি বরাবর বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম। সাহিত্য-দর্শন নিয়ে মাঝে মাঝে নাড়াচাড়া করতে ভাল লাগে। আহমদ ছফার মত মহীরুহ নিয়ে পূর্নাংগ আলোচনা আমার সাধ্যের বাইরে। তারপর ও প্রকাশক-লেখক এ বি এম সালেহ উদ্দীনকে(আমাদের সালেহ ভাই) আমি, বন্ধু হীরক, জাফর ঘরোয়া আড্ডায় বেশ কয়েকবার বলেছিলাম, আহমদ ছফাকে নিয়ে তাঁর স্মৃতিচারণমূলক কিছু লেখা উচিৎ। সালেহ ভাই উত্তরে বলেছিলেন, সেরকম কিছু ঘটলে আমাদের জানাবেন।

আহমদ ছফা সম্পর্কে আমি কৌতূহলী হয়ে উঠি তাঁর মৃত্যুর পর। ছফার ‘বাঙ্গালী মুসলমানের মন’ বইটি পাঠ করে আমি মুগ্ধ হই। সরল ভাষায় বাঙালী মুসলমানের মানস জগত, হীনমন্যতা-বোধ এবং সেটির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ছফা যে ভাবে বিশ্লেষণ করেছেন তা আমার মন কাড়ে। এরপর আমি ছফার লেখা অন্যান্য প্রবন্ধ, উপন্যাস, সাক্ষাতকার এবং তাঁর উপর অন্যান্যদের লেখা প্রবন্ধ-স্মৃতিচারণ যেখানে যেভাবে সম্ভব সংগ্রহ করে পড়েছি; এখন ও পড়ি ।
২০০৭ সালে জনপ্রিয় মুক্তমনা হিউম্যানিস্ট ওয়েবসাইট আহমদ ছফার ষষ্ঠ মৃত্যু বার্ষিকী পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। ‘এ ট্রিবিয়ুট টু আহমদ ছফা’ (‘A Tribute to Ahmed Sofa’) টাইটেলে মুক্তমনা ছফা স্মরণে বিশেষ ওয়েব এডিশন প্রকাশ করে আমার সম্পাদনায় আর সাংবাদিক নুরুজ্জামান মাণিকের সহযোগিতায়।

সালেহ ভাই নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ‘এখন সময়’ পত্রিকায় আহমদ ছফাকে নিয়ে ধারাবাহিক লেখা শুরু করেন। সে লেখাগুলি এবার বইয়ের আকারে বের করেছেন। আমাকে এক কপি বই হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, একটা রিভিউ লিখো।

পত্রিকায় প্রকাশিত ধারাবাহিকের সবগুলি পড়া হয়ে উঠেনি। পুস্তক আকারে সালেহ ভাইয়ের লেখাগুলি মন দিয়ে পড়লাম। আনন্দিত হয়েছি সালেহ ভাই আমাদের দেয়া কথা রেখেছেন বলে। আবার পুরা বইটি পড়ার ও নেড়েচেড়ে দেখার পরে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হতাশ হয়েছি। সেটি একটু ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন।

সালেহ ভাইয়ের লেখার হাত ভাল। প্রকাশনা ব্যবসায় আসার বহু আগে থেকেই তিনি লেখালেখি, সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার সাথে জড়িত; কবিতা ও লেখেন মাঝে মধ্যে। তাঁকে আমি লেখক হিসেবে দেখি, বই ব্যবসায়ী বা প্রকাশক হিসেবে নয় যদি ও তাঁর বাড প্রকাশনী আহমদ ছফাসহ দেশের বহু প্রথিতযশা কবি-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবীদের একাধিক বই বের করার কৃতিত্বের দাবিদার।

তিন:

বইটি সম্পর্কে আমার আলোচনা দু’ভাগে ভাগ করব। এক: বইয়ের টেকনিক্যাল দিক নিয়ে কয়েকটি কথা, এবং দুই: আহমদ ছফাকে নিয়ে লেখকের প্রবন্ধগুলি বিষয়ে আমার অনুভূতি।

টেকনিক্যাল দিক দিয়ে শুরু করি।

‘আহমদ ছফাঃ ব্যক্তি ও সমাজ’ বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৩৭। বইটিতে চারটি পরিচ্ছদ রয়েছে । প্রথম পরিচ্ছদের বিস্তৃতি পৃষ্ঠা-১৫ থেকে পৃষ্ঠা-১১০ পর্যন্ত। এর মধ্যে শেষ আট পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে আহমদ ছফার আমেরিকান বন্ধু মিসেস মেরী ফ্রান্সেস ডানহামের সাথে লেখক এ বি এম সালেহ উদ্দীনের ই-মেইলের কপি এবং মিসেস ডানহামের আহমদ ছফাকে নিয়ে প্রবন্ধ, দুটোই ইংরেজিতে।

দ্বিতীয় পরিচ্ছদে আছে আহমদ ছফা লিখিত বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত কয়েকটি নামকরা প্রবন্ধ। তৃতীয় পরিচ্ছদে রয়েছে আহমদ ছফাকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত সতীর্থ ও বন্ধু-প্রতিম লেখক-কবি-সাহিত্যিকদের হৃদয়গ্রাহী কয়েকটি স্মৃতিচারণ ও মূল্যায়ন। চতুর্থ পরিচ্ছদে আছে আহমদ ছফার সংক্ষিপ্ত জীবন-পঞ্জি (গ্রন্থনা: শাকিনা হাসীন), প্রকাশকালসহ আহমদ ছফার গ্রন্থ তালিকা, আহমদ ছফার সাথে লেখক এ বি এম সালেহ উদ্দীনের কয়েকটি পত্রের কপি, এবং বিভিন্ন সময়ে লেখক এবং অন্যান্যদের তোলা আহমদ ছফার সাদাকালো কিছু ছবি।

বইয়ের প্রচ্ছদ দেখে বুঝে ওঠা কঠিন – এটি কি আহমদ ছফাকে নিয়ে এ বি এম সালেহ উদ্দীনের নিজের স্মৃতিচারণ, নাকি আহমদ ছফার নিজের লেখা এবং তাঁকে নিয়ে অন্যান্যদের লেখা প্রবন্ধের একটি সংকলন যেহেতু লেখক হিসেবে প্রচ্ছদে কেবলমাত্র এ বি এম সালেহ উদ্দীনের নাম রয়েছে।

প্রথম পরিচ্ছদের শেষে আহমদ ছফা সম্পর্কে মার্কিন নাগরিক মিসেস ফ্রান্সেস ডানহামের স্মৃতিচারণটি ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার, ই-মেইল সমেত ছাপানোর আগে ভদ্রমহিলার অনুমতি নেয়া উচিত ছিল, বিশেষত যেখানে ই-মেইলে মিসেস ডানহাম লেখাটিকে ‘a very rough draft’ উল্লেখ করে অন্য কাউকে লেখাটি না দেখাতে অনুরোধ করেছেন লেখককে।

তবে স্বীকার করতে হয়, প্রবন্ধটি পড়ার সুযোগ না পেলে বাংলাদেশের মানুষ, সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং লেখক আহমদ ছফা বিষয়ে একজন বাংলাদেশপ্রেমী, বিদুষী, এবং সুরুচিসম্পন্ন বিদেশীর অসাধারণ অভিজ্ঞতার বিবরণ অজানা থেকে যেত।

আহমদ ছফার সাথে নিজের আলাপচারিতার অভিজ্ঞতা মিসেস ডানহাম তুলে ধরেছেন এ ভাবে, “Hours can slip by, hours that are lost if you already have business elsewhere, but hours gained if you are a lover of knowledge and poetry.” ( “ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে যাবে আপনি টের ও পাবেন না। বহু ঘণ্টা হারিয়ে যাবে যদি আপনার অন্য কোন কাজ থাকে, কিন্তু আপনার সঞ্চয়ের খাতায় বহু ঘণ্টা জমা হবে যদি তত্ত্ব, কবিতায় আপনার সত্যিকারের আগ্রহ থাকে।“)

দ্বিতীয় পরিচ্ছদের কয়েক জায়গায় আহমদ ছফার লেখা প্রবন্ধের শেষে লেখকের নিজের মন্তব্য (আমার ধারণা ব্যাপারটা অনিচ্ছাকৃত)এমনভাবে জুড়ে দেয়া হয়েছে, কিংবা ছাপার ভুলে এসে গেছে যে বুঝে ওঠা কঠিন ঠিক কোথায় আহমদ ছফার নিজের বক্তব্য শেষ হয়েছে আর এ বি এম সালেহ উদ্দীনের নিজস্ব বক্তব্য শুরু হয়েছে (উদাহরনঃ পৃষ্ঠা ১৩২-১৩৯, ১৫৭)। তৃতীয় পরিচ্ছদের ১৭২ পৃষ্ঠায় আহমদ ছফার উপন্যাস সম্পর্কে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধ শেষে হঠাৎ করে দেখা যায় এ বি এম সালেহ উদ্দীনের বক্তব্য চলে এসেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি বিষয়ে: মাদ্রাসা শিক্ষার সংস্কার সম্পর্কে আহমদ ছফার চিন্তাভাবনা।

তৃতীয় পরিচ্ছদে আহমদ ছফা সম্পর্কে অন্যান্যদের লেখা স্মৃতিচারণমূলক প্রবন্ধের শুরুতে গ্রন্থ লেখক সালেহ উদ্দীনের জুড়ে দেয়া ভূমিকা বাহুল্য মনে হয়েছে; উদাহরণ-২০৯ পৃষ্ঠায় আহমদ ছফাকে নিয়ে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা প্রবন্ধের শুরুতে জুড়ে দেয়া ভূমিকা।

বইটিতে বানান ত্রুটির বিস্তৃতি দৃষ্টিকটু মনে হয়েছে। বলে রাখি, আমি নিজে লিখতে গেলে অনেক সহজ বাংলা বানানে ও তালগোল পাকিয়ে ফেলি; তবে একটা বইয়ে প্রকাশিত একাধিক প্রবন্ধের টাইটেলে স্পষ্ট বানান ত্রুটির দায়ভাগ কিছুটা লেখকের উপর ও বর্তায়। দ্বিতীয় পরিচ্ছদে ১৬১ পৃষ্ঠাতে জুড়ে দেয়া আহমদ ছফার প্রবন্ধটির নাম দেয়া হয়েছে ‘উদ্ধত আহমদ ছফা’(?)। তেমনিভাবে তৃতীয় পরিচ্ছদের ১৯৯ পৃষ্ঠায় ‘আমার অনুভূতিতে ছফার প্রতিবিম্ব’ প্রবন্ধটির লেখক শিবনারায়ণ দাশকে পশ্চিম বংগের বিখ্যাত মানবতাবাদী দার্শনিক-লেখক, ‘জিজ্ঞাসা’ সম্পাদক, প্রয়াত শিবনারায়ণ রায় ভেবে ভুল করা হয়েছে।

এবার আহমদ ছফাকে নিয়ে এ বি এম সালেহ উদ্দীনের স্মৃতিচারণ এবং মূল্যায়ন প্রসঙ্গ।

প্রথম পরিচ্ছদে আহমদ ছফাকে নিয়ে এ বি এম সালেহ উদ্দীনের মোট সাতটি লেখা রয়েছে- ব্যক্তি আহমদ ছফাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ, লেখক আহমদ ছফাকে বিভিন্ন আঙ্গিকে মূল্যায়ন।

আহমদ ছফার সততা, উদারতা, এবং মানবতাবাদী মনের বিবরণ দিতে গিয়ে কিছু জায়গায় লেখকের মন্তব্যকে স্পষ্ট চিন্তা-ভাবনার ফসল বলা কঠিন হয়ে যায়। আহমদ ছফাকে “সকল মানুষের গ্রহণীয় একজন সাদামাটা মানুষ” (পৃষ্ঠা ২১) বললে ছফা চরিত্রের অনেক উজ্জ্বল দিক চাপা পড়ে যায়। কেননা “সকল মানুষের কাছে গ্রহণীয়” হয়ে ওঠার চেষ্টা বা আকাঙ্ক্ষা আহমদ ছফার যদি থাকত, তাহলে আহমদ ছফা আর আহমদ ছফা হয়ে ওঠতেন না। তিনি পরিণত হতেন বড়জোর আপসবাদী, সুযোগসন্ধানী, কিংবা সৌখিন একজন লেখকে।

সেজন্য ছফার শত্রুদের মধ্যে যেমন ছিল মোল্লা, তেমনি ছিলেন প্রগতিশীল ভেক ধারণকারী বহু বুদ্ধিজীবী। লেখক সালেহ উদ্দীন সে কথা আমার চাইতে ভাল জানেন। সেজন্য অন্য জায়গায় তিনি ছফাকে ‘আপসহীন’ বলেছেন; লিখেছেন, “সত্যকে খুঁজে পেতেই তিনি (আহমদ ছফা) সকল প্রকার সমালোচনাকে মাথা পেতে নিয়েছিলেন“ (পৃষ্ঠা ৭৯)।

আহমদ ছফার কথা বলতে গিয়ে কয়েক জায়গায় লেখক পুনরাবৃত্তি করেছেন প্রসঙ্গের কিন্তু বক্তব্যে নতুনত্ব আনতে পারেননি, যেমন: বঙ্কিমচন্দ্র সম্পর্কে ছফার দৃষ্টিভঙ্গি(৫৪, ৭৭, ৮৪), ‘সুলতান পাঠশালা’ প্রসঙ্গ (৩৪, ৪০)।

আহমদ ছফার মননের বিশালত্ব, চিন্তার ব্যাপকতা আমাদেরকে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে- এতে সন্দেহের অবকাশ নেই। তথাপি এগুলি অতিশয় উক্তি যে “আহমদ ছফা-ই একমাত্র” ব্যক্তি বা বুদ্ধিজীবী যিনি ধর্মীয়-সামাজিক-রাজনৈতিক অনাচারের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ছিলেন (পৃষ্ঠা ৬০, ৬১), যিনি কোন লোভ-লালসার কাছে নিজেকে বিকিয়ে দেননি (পৃষ্ঠা ৬৯), কিংবা “একমাত্র সাহসী পুরুষ যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন” (পৃষ্ঠা ৭৪)। আমার ধারণা, লেখাগুলি ধারাবাহিক ভাবে পত্রিকায় প্রকাশ কালীন সময়ে তাড়াহুড়া করে লিখতে গিয়ে এমনটি হয়েছে; বই আকারে লেখাগুলি বের করার আগে এগুলি রিভিউ করা প্রয়োজনীয় ছিল।

তবে ‘নিউ ইয়র্কে আহমদ ছফা’ শিরোনামের লেখাটি পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। আহমদ ছফা নিউ ইয়র্কে অবস্থানকালীন সময়ে লেখক এ বি এম সালেহ উদ্দীনের বাসায় উঠেছিলেন, সেখানে থেকেছেন পুরো সময়। সে সময়ের বহু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের চমৎকার বিবরণ দিয়েছেন লেখক। এ প্রবন্ধটি পুরো বইটির প্রাণ বলব আমি।

তিন:

আহমদ ছফাকে সালেহ ভাই দীর্ঘ সময় ধরে কাছ থেকে দেখেছেন ও জেনেছেন। বইটি পড়ার সময় কখনো মনে হয়েছে, সালেহ ভাই কাজটি আর ও দায়িত্ববোধ সহকারে, আর ও পরিপাটি করে করতে পারতেন। কিছুটা মন খারাপ হয়েছে। সাথে সাথে এ ও মনে হয়েছে, আহমদ ছফাকে নিয়ে যদি সালেহ ভাই কিছুই না লিখতেন, তাহলে সে কাজটি আর ও বেশি অনুচিত হত যেহেতু তিনি নিজে একজন লেখক, আর একজন লেখকের পক্ষে আহমদ ছফার চাইতে বেশি উদ্দীপক বিষয়বস্তু আর কি হতে পারে?

আমার ধারণা, পরবর্তী সংস্করণের আগে উল্লেখিত বিষয়গুলি রিভিউ করে নিয়ে প্রয়োজনীয় পরিমার্জনা, সংশোধন করে নিলে এ বইটি সাহিত্যিক আহমদ ছফার ব্যক্তিগত জীবনদর্শনকে উন্মোচন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বইটি বহু পাঠক দ্বারা সমাদৃত হোক, এই প্রত্যাশা রইলো।