(রুমানার জন্যে)

কাকে তুমি বেসেছিলে ভালো
কাকে দিয়েছিলে মন,
সেই পিশাচকে!
যে তোমার জীবন করতে চেয়েছিল হরণ?

যাকে তুমি যুগ যুগ ভালবাসা দিয়েছ
যার পানে তুমি অপলকে
চেয়ে থেকেছ বছরের পর বছর
আর মনে মনে ভেবেছ
“পৃথিবীর সব রূপ, সব সৌন্দর্য এই মুখমণ্ডলে”
প্রেমিক রূপী সেই পাষাণই
কেড়ে নিল তোমার দৃষ্টি!
এই কী ছিল তার মনে, তোমার জন্যে?

যেই নাকে তুমি সে পাষণ্ডের
গায়ের ঘ্রাণ নিয়েছ সহস্র বার,
যে গন্ধে তুমি খুঁজে পেয়েছিলে
প্রেমের ঘ্রাণ;
আর ভেবেছিলে “পৃথিবীর তামাম সৌরভ এইখানে।”
কিন্তু তুমি পারনি বুঝতে,
তার হৃদয়ে ছিল পুঞ্জিভূত দুর্গন্ধ।
সেই দুর্গন্ধময় হৃদয়ের অধিকারীই
হায়েনার মত বিষাক্ত কামড়ে
ছিঁড়ে নিল তোমার ঘ্রাণ-ইন্দ্রিয়।

চেয়ে যার পানে
খুঁজে পেয়েছিলে তুমি জীবনের মানে
সে-ই চিরস্থায়ী অন্ধকার এনে দিল
তোমার ভুবনে।

যাকে তুমি ভেবেছিলে সুন্দরতম
সে-ই, ঘৃণ্য-ছোবলে
তোমার মধুর মুখচ্ছবিখানি
ক’রে দিল বীভৎস।

যাকে তুমি বেসেছিলে ভালো
যার জীবনে তুমি জ্বেলেছিলে ভালোবাসার আলো
সে-ই কেড়ে নিল তোমার পৃথিবীর আলো!

যে চোখে বহুবছর তাকে দেখেও
তোমার মিটেনিকো তৃষা,
সে চোখেই ,সে পাষাণ এনে দিল
চিরকালের অন্ধকার-অমানিশা।

যাকে তুমি বছরের পর বছর
দিয়েছ মধুময় ভালবাসা;
যাকে নিয়ে ক’রে সুখের আশা
বেঁধেছিলে একটি প্রেমের বাসা;
যাকে দিয়েছিলে তনু-মন
সেই নিষ্ঠুরই তোমায় দিল
সুদীর্ঘ ভালবাসার চমৎকার উপহার
দুঃসহ কষ্টের, নিঃসীম যাতনার
দৃষ্টিহীন, আঁধার-জীবন।

যাকে তুমি ভালবেসেছিলে
যার সাথে করেছিলে সুদীর্ঘ বছর বাস,
যাকে দিয়েছিলে হৃদয় নিঙড়ানো নির্যাস
সে-ই কেড়ে নিল তোমার বেঁচে থাকের আশ।

যে চোখের ইশারাতে
তুমি কথা বলেছিলে তার সাথে,
যে চোখের তারায়
তুমি গেঁথে রেখেছিলে তাকে;
মাঝে মাঝে হাসি আর কান্নার
অশ্রু ঝরতো যে চোখ হ’তে
সে চোখে আর কখনো
খেলবেনা খুশী-আনন্দ,
সে চোখ হ’তে
আর কখনো ঝরবেনা অশ্রুবিন্দু।

যাকে তুমি ভেবেছিলে
তোমার প্রিয়তম, প্রাণেশ্বর
যাকে তুমি ভালবেসেছিলে
যাকে দিয়েছিলে অজস্র সুধাময় প্রহর
কখনো কি দেখনি তুমি
এক নিকৃষ্টতম জন্তু বাস করে তার ভেতর?