কল্পনা চাকমা– এই নামটি মনে করার সঙ্গে সঙ্গে বেদনায় মন ভাড়ি হয়ে আসে। বুকের মধ্যে দেড় দশক আগে বিঁধে যাওয়া কাঁটার রক্তক্ষরণ হতে থাকে, হতে থাকে।… মনে পড়ে হারিয়ে যাওয়া পাহাড়ি মেয়েটির কথা। মনে পড়ে আজও এই অপহরণের সুবিচার হয়নি। বাংলাদেশ নামক কথিত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এতো বড় একটি মানববাধিকার লংঘনের দায় দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বহন করছে। আর একই সঙ্গে ওই কন্টক-ক্ষত বয়ে চলেছি আমরা, কল্পনার সতীর্থ পাহাড়ি-বাঙালিরা, ওই ১৫ বছর ধরেই।…
তথ্য সাংবাদিকতার যোগসূত্রে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে জানাই, পার্বত্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের মাত্র বছর খানেক আগে, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন রাঙামাটির দুর্গম বাঘাইছড়ির নিউ ল্যাইল্যাঘোনা গ্রাম থেকে সেনা কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট ফেরদৌস অস্ত্রের মুখে অপহরণ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন নেত্রী কল্পনা চাকমাকে। থানা সে সময় কল্পনা চাকমার অপহরণের মামলা গ্রহণ করলেও পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন থেকে কৌশলে বাদ দেওয়া হয় সেনা কর্মকর্তা ও তার সহযোগিদের নাম।
কল্পনাকে উদ্ধারের দাবিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল ইউমেন্স ফেডারেশন রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান — এই তিন পার্বত্য জেলায় হরতাল আহ্বান করে। ওই হরতালের পিকেটিং-এ হামলা চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালিয়ে খুন করে চারজন ছাত্রকর্মীকে। উত্তাল পাহাড়ের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে সমতলেও।
১৯৯৬ সালের জুন-জুলাইয়ে আমরা অল্প কয়েকজন সাংবাদিক সে সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কল্পনা চাকমা অপহরণের খবরটি সংবাদপত্রে ফাঁস করি। তৈরি করি একেবার পর এক সরেজমিন প্রতিবেদন। এর পর কল্পনা চাকমা অপহরণকে কেন্দ্র করে ঝাঁপিয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, দেশী-বিদেশী নারী সংগঠন তথা মানবাধিকার সংস্থা কাম এনজিও, দেশ জুড়ে শুরু হয় হইচই। কল্পনা চাকমা পরিনত হন পাহাড়ের মানবাধিকার লংঘনের জ্বলন্ত প্রতীক হিসেবে।…
সে আওয়ামী লীগ সরকার বাধ্য হয়ে বিচারপতি আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে লোক দেখানো একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই কমিটি রাঙামাটি শহর ও ঢাকায় দপ্তর খুলে তদন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করে। এর তদন্ত রিপোর্টও এখন হিমাগারের কৃষ্ণবিবরে। সে সেনা বাহিনীর ২৪ ডিভিশন (পদাতিক) এক বিবৃতিতে এই অপহরণের সঙ্গে সেনা বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে। ইনিয়ে-বিনিয়ে তার এর দায় চাপায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধিন গেরিলা দল শান্তিবাহিনীর ওপর! আবার সে সময় সেনাবাহিনীর ২৪ ডিভিশন কল্পনা চাকমার সন্ধানদাতার জন্য ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে পাহাড়ে লিফলেটও বিলি করে। …
আগুনে ঘি ঢেলে দিতে সেনা সমর্থনে অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ (আন্তর্জাতিক সর্ম্পক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দিগন্ত টিভির টক-শো’র নিয়মিত বক্তা) এবং সেটেলার বাঙালি নেতা সাইফুল ইসলাম দিলদার সে সময় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক হাওয়াই মানবাধিকার সংস্তার ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, তারা অনুসন্ধানে জেনেছেন, কল্পনা চাকমাকে নাকি আদৌ অপহরণ করা হয়নি! তার মা বাঁধুনি চাকমাসহ গ্রামবাসীরা নাকি তাদের জানিয়েছেন, শান্তিবাহিনীর সমঝোতায় কল্পনা চাকমাকে নাকি ভারতের ত্রিপুরায় শরণার্থী শিবিরে পাঠিয়ে দিয়ে শান্তিবাহিনীই নাকি এই অপহরণ নাটক সৃষ্টি করেছে!
ধোঁয়াশার ধুম্র জাল ছিন্ন করতে সে সময় আমার পাহাড়ি বন্ধুরা কল্পনা চাকমার বৃদ্ধ মা বাঁধুনি চাকমাকে ঢাকায় নিয়ে এসে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন। বৃদ্ধ মা কলিমুল্লাহ-দিলদারদের বয়ান অস্বীকার করে বার বার চোখ মুছে চাকমা ভাষায় একটি কথাই শুধু বার বার বলেছিলেন: মিছে খদা, সব মিছে খদা! …
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পরে সাবেক গেরিলা নেতা সন্তু লারমা আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ গ্রহণ করেন। ১৯৯৮ সালে রাঙামাটিতে আঞ্চলিক পরিষদের জমকালো অভিষেক অনুষ্ঠানের শুরুতেই বক্তব্যে প্রথমেই তিনি সরকারের কাছে জানতে চান, কোথায় এখন কল্পনা চাকমা?…
এরপর কাপ্তাই, কর্ণফূলি, কাচালং, মাইনি, চেঙ্গী, মাতামুহুরি, শঙ্খ নদীতে অনেক জল গড়িয়েছে।…হয়েছে অনেক পাহাড় ধ্বস। হাসিনা, তত্ত্ববাধায়ক-খালেদা-সেনা সমর্থিত অস্বাভাবিক তত্ত্বাবধায়ক হয়ে আবারো হাসিনা সরকার ক্ষমতায় এসেছে। আর আস্তে আস্তে কল্পনা উদ্ধারের দাবিটিও হয়েছে স্তিমিত। …তার মামলাটিও চলে গেছে অতল গহব্বরে।
জাতি সংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সেনা বাহিনী অংশ নিয়ে বিশ্ব শান্তি রক্ষায় সুনাম কুড়িয়ে দেশের মুখ উজ্বল করেছে। ওদিকে প্রত্যক্ষ সেনা মদদে বাঘাইছড়ি, রামগড়, মহালছড়ি, মাইচ্ছড়ি, শুবলং, ন্যান্যাচরে একের পর এক ঘটেছে পাহাড়ি জনপদে সহিংস হামলার ঘটনা। জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে রক্ত ঝরেই চলেছে পাহাড়ে।…
সবশেষ খবরে প্রকাশ, গত বছর কল্পনা চাকমা অপহরণের ১৪ বছর পর পুলিশ এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দাখিল করে। বাঘাইছড়ি থানার পুলিশের প্রতিবেদনে কল্পনা চাকমা অপহরণের জন্য ‘একদল বন্দুকধারী’ সন্ত্রাসীকে দায়ী করা হলেও তারা কারা, সে বিষয়ে উল্লেখ করা হয়নি।
পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে বাঘাইছড়ি থানার ওসি নাঈম উদ্দীন জানিয়েছিলেন, কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য ২১ মে (২০১০) রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। ওই মামলায় সুনির্দিষ্ট আসামিদের বিরুদ্ধে কেন অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়া হয়নি, তা জানতে চাইলে ওসি নাঈম উদ্দীন বলেন, ‘১৯৯৬ সালে কল্পনা চাকমার অপহরণের পর বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন হয়। তারা অপহৃতার কোনো সন্ধান পায়নি। এমনকি কে বা কারা তাঁকে অপহরণ করেছে, কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে তাও উল্লেখ করা হয়নি। এ কারণে আমরা এ মামলার চার্জশিট দিতে পারিনি। মামলাটির নিষ্পত্তি চেয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছি।’
এ ঘটনায় কল্পনা চাকমার বড় ভাই ও মামলার বাদী কালিন্দী কুমার চাকমা অপহরণের জন্য একটি বিশেষ মহলকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, মামলায় সুনির্দিষ্টভাবে সন্ত্রাসীদের নাম উল্লেখ রয়েছে। এতে আসামিদের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। সে সময় বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে দেওয়া অভিযোগপত্রেও একই কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ আসামিদের রক্ষা করার জন্য তাদের নাম বাদ দিয়েই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। [লিংক]
এরপর আদালত এই অপহরণ মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ বিভাগকে (সিআইডি) দায়িত্ব দেয়। তারা গত এক বছর ধরে কি দায়িত্ব পালন করে চলেছে, তা সহজেই অনুমেয়।
স্মৃতি-বিস্তৃতির দোলাচল এবং বিভ্রান্তির দীর্ঘতর নানান কূটকৌশল স্বত্ত্বেও কল্পনার সতীর্থরা আজও তাকে ভোলেননি। পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রীরা অধিকার আদায়ের আন্দোলনে শ্লোগানে শ্লোগানে বরাবরই দাবি জানান কল্পনা চাকমা অপহরণের সুবিচারের। তার অপহরণ দিবসে প্রতিবছরই ঢাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। তবু বাংলাদেশ নামক বাংলা ভাষাভাষির কর্তৃত্বপরায়ন রাষ্ট্র কল্পনা চাকমা অপহরণের দায় বহন করেই চলে।…
—
ছবি: কল্পনা চাকমা, আরিফ হক।
—
আরো পড়ুন: কল্পনা চাকমা এখন কোথায়? [লিংক]
I wish to contribute here in Bangla, but unfortunately I can’t type Bangla. I enjoyed a lots the discussion of Faridbhai and Dipenda. Here I am sharing some thoughts where the views are mostly come from one of prominent respected person. I am not mentioning his name for some reasons. Here is the points;
1. ‘Upajati’ (literally ‘sub-nation’ or ‘sub-ethnic group’) is probably a direct, and yet etymologically flawed, translation of the English term ‘tribe’/’tribal’, many feel that the former has more racist, derogatory and disparaging connotations than the latter. A respected Garo leader – Rev. Subhash Chandra Sangma – had once questioned at a small gathering in Dhaka in 1993, if his people, the Garo or Mandi, were to be regarded as an “upajati”, literally ‘sub-nation”, he would question which people or jati his people or jati (the Garo) were a ‘sub’ of, i.e., from which jati or people the Garo or Mandi had originated from? Nobody present responded. Perhaps because there was no logical answer to be given to the question!
2. People who now identify themselves as Bangali then lived in other parts of Bangladesh, or elsewhere, but not in the places where the adibashis had settled. Bengali settlement in such areas was to happen much later, with accelerated pace, from the 1790s (e.g., in the Chittagong plains) to the 1950s (e.g., in the Madhupur tract). There is no historical evidence of indigenous peoples having forcibly occupied these territories by ejecting Bangali people (as Bangalis were not there then!). For example, Khumi and Chak peoples claim indigenousness to Bandarban district, not to elsewhere in the country. Likewise, the Munda and Oraon claim indigenousness to Northwest Bangladesh in the Barind tract (“Borendro Bhumi”) within Rajshahi division. In these areas the aforesaid peoples were the ‘first settlers’ (prior to the arrival of Bangali people).
3. Indigenous peoples historically had their own states and quasi states (empires, kingdoms, chiefdoms, principalities, headships and “tribal” (sic!) confederacies with collective leadership) such as in the Americas, Indo-China and South Asia. However, by the time the European powers had carved out most parts of the world into their empires, from the sixteenth to the eighteenth centuries, the indigenous peoples within these areas had either chosen to stay outside such state systems or were forcibly ejected from their territories or otherwise excluded from modern state building and the development process in those empires and their successor nation states. Therefore, the most important criterion that nowadays sets indigenous peoples apart from other peoples is the former’s status as ‘excluded peoples’.
4. Sometimes distinctions are drawn between the indigenous peoples of the Americas (and Australia and New Zealand, except for the Torres Straits Islanders) with those in Asia and Africa. This is generally done on the basis of the longer history of indigenous settlements in the former, wherein colonizers came from across the seas, and whose ethnic origins do not show traces of indigenous ancestry. In the case of Asia and Africa, whilst some of the colonizers did come from across the seas, some came from the same continent or sub-continent, and occasionally had ancestry that was related to the colonized indigenous peoples. Whilst these distinctions may be pertinent in some spheres and contexts, when looked at from the perspective of the colonized, the excluded and the conquered, such differences are relegated to the realm of mundane historical details. Colonization hurt the excluded peoples in Asia (and Africa) no less than those in the Americas (and Australia and New Zealand).
5. Given that, the definition of indigenous peoples by UN Special Rapporteur Jose Martinez Cobo in his monumental Study of the Problem of Discrimination against Indigenous Peoples, is more than applicable for the indigenous peoples of Bangladesh. Cobo includes the following criteria to identify indigenous peoples: (i) continuity with pre-invasion and pre-colonial societies; (ii) comprising non-dominant sectors of society; and (iii) determination to preserve, develop and transmit to future generations their ancestral territories and ethnic identity “in accordance with their cultural patterns, social institutions and legal systems”.
6. If we summarize the above criteria, the following may emerge as the most crucial ones: (a) exclusion from (or only marginal inclusion in) the modern state-building and formal development processes; (b) continuing nondominance (or marginalization) in major decision-making processes; (c) presence of customary law and traditional governance institutions; (d) close attachment to an ancestral or historical territory; and (e) geographic concentration in those territories. All of these criteria are applicable to the indigenous peoples in the CHT, and in the plains of Bangladesh.
@Dhamai,
চমৎকার! কিচ্ছু বলার নেই। :clap
@ বিপ্লব রহমান,
পাহাড়ে যেহেতু পাহাড়ি স্যাটেলারের সংখ্যা এখন প্রায় সমান, তাই স্যাটেলারদেরকে তো মনে হয় ফেরত আনা আর সম্ভব না। কাপ্তাই বাধও বন্ধ করা সম্ভব না, আর আর্মিদের ফেরত আনা যায়। পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি ফিরিয়ে আনতে কি কি করা যায় এ ব্যাপারে সংক্ষেপে কি একটু ধারনা দিবেন?
@হেলাল,
এসব বিষয় বিস্তারিত আলোচনার দাবি রাখে। কারণ, দু-তিন বাক্যে/অল্প কথায় বিষয়গুলো পরিস্কার করা সম্ভব নয়। এছাড়া এতে ভুল বোঝার/ বোঝানোর বিপদও আছে বৈকি।
এ বিষয়ে অনেক আগে মুক্তমনায় একটি দীর্ঘ লেখা লিখেছিলাম। আশাকরি সেখানে আপনার প্রশ্নের জবাব পাবেন। লেখাটি হচ্ছে: পাহাড়ে কেনো এতো সহিংসতা? [লিংক]
আপনার আগ্রহকে সাধুবাদ জানাই। (Y)
@ফরিদ ভাই,
আমার ধারণা যদি ভুল প্রমাণিত হয়, নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, সানন্দচিত্তে আপনার দেওয়া ব্যাখ্যাটা গ্রহণ করে নেবো আমি।
আহ! আমাদের সরকারের মনোভাব যদি এমন হতো, তবে কত ভাল কাজই না হতো আমাদের দেশে।
@হেলাল,
(Y)
ফরিদ আহমেদ আর বিপ্লব রহমানের সুন্দর আলোচনার প্রেক্ষিতে দুটো কথা যোগ করতে চাইঃ
আদিবাসী আলোচনার প্রেক্ষিতটি ভারতীয় উপমহাদেশের পটভূমিতে দেখলে সাঁওতাল, মুণ্ডা, ওরাওন, ইরুলা ইত্যাদি জনগোষ্ঠীর মূল অস্ট্রো-এসিয়াটিক, প্রায় ৩০,০০০ বছর আগে ফিরে যেতে হবে। দ্রাবিড় ও আর্য আগমন এর অনেক পরে। অন্যদিকে ভারতে তিব্বতি-বারমান জনগোষ্ঠীর আগমন পরে হলেও তাদেরকে আদিবাসী গণ্য করা হয়। এর মূল কারণ যে সমস্ত জায়গায় তারা বসতি করেছে সেখানে ভারতের বৃহত্তর আর্য-দ্রাবিড় গোষ্ঠী আস্তানা গাড়ে নি। তাই নাগা, আপতানি ও খাসিদেরও আদিবাসী বলে গণ্য করা হয়। চাকমারাও তিব্বতি-বারমান। পূর্ব পাকিস্তান সৃষ্টির আগে বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় বাঙ্গালীদের বাস ছিল না, সেই অর্থে ঐ পাহাড়ি অঞ্চল কখনই বাংলার অংশ ছিল না। এই জন্য সুন্দরবনের দ্বীপে কোন নতুন জনগোষ্ঠীর নতুন দাবি ও পার্বত্য অঞ্চলের লোকের দাবি এক নয়।
কিন্তু আমার মনে হয় আসল সমস্যা সেখানে নয়। আমি যেটা বুঝছি সেটা হল বাংলাদেশের একটা বিশাল সংখ্যক শিক্ষিত মানুষ হঠাৎ করে একটা দার্শনিক সমস্যার সামনে পড়েছে। তারা অন্য কাউকে আদিবাসী সংজ্ঞা দিতে নারাজ। কেন আমি এটাতে react করছি না, আর তারা করছে সেটার মধ্যে হয়ত অনেক উত্তর নিহিত আছে।
এর একটা কারণ আমি অনেক কিছুতে ইতিমধ্যে ছাড় দিয়েছি। যেমন বাংলাদেশের সংবিধান। এই সংবিধান শুরু হয়েছে এই ভাবেঃ
বিসমিল্লাহির-রহমানির রাহিম
দয়াময়, পরম দয়ালু, আল্লাহর নামে
তার দ্বিতীয় লাইনটি হচ্ছেঃ
আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল সর্বশক্তিমান আল্লাহের উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্র অর্থাৎ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিচারের সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে।
এই সংবিধান কি আমার জন্য প্রযোজ্য? আমি কি নাগরিক? না কি এটা নেহাৎই কথার কথা? মনে মনে বলি ছেড়ে দে…..আরো কত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আছে। এটাই যদি ছেড়ে দিই, “আদিবাসী” title-এর দাবি তো তুচ্ছ একটা ব্যাপার।
@দীপেন ভট্টাচার্য,
অসংখ্য ধন্যবাদ দীপেনদা। আলোচনায় একটা নতুন দিক এবং ভিন্ন মাত্রা নিয়ে এলেন আপনি। এই দিকটা আসলে খেয়াল করা হয় নি আমার। আমি একটা অঞ্চলের চেয়ে সামগ্রিক দেশ হিসাবে পুরো বিষয়টাকে দেখছিলাম। শুধু একটা জিনিস আমাকে নিশ্চিত করুন। ভারতে সাইনো-টিবেটিয়ান জনগোষ্ঠীকে কি সাংবিধানিকভাবেই আদিবাসী স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে? সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের আপত্তি থাকার কোনো কারণ দেখি না।
সংবিধান নিয়ে আপনি যা বলেছেন তার সাথে পুরো একমত আমি। এই সংবিধান মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সংবিধান। মুসলমান বাদে বাকিদেরকে নাগরিক হিসাবে স্বীকার করে না এই সংবিধান। তাদের প্রতি সামান্যতম শ্রদ্ধাবোধের নিদর্শন নেই এখানে, অধিকারতো অনেক দূরের ব্যাপার।
@ফরিদ আহমেদ, আপনার কথা পড়ে খুশী হলাম। আপনাকে উত্তরটা ঠিকমত দিতে পারব কিনা জানি না, যতটুকু বুঝছি তাতে ভারতীয় সংবিধানে আদিবাসী বলতে scheduled tribe বলা হয়েছে। কিন্তু scheduled tribeদের চলতি ভাষায় আদিবাসীই বলা হয়। এই সংজ্ঞায় ঝাড়খণ্ডের সাঁওতালরা যেমন ট্রাইবাল, মেঘালয়ের খাসি ও গারোরাও ট্রাইবাল। সংবিধানে scheduled tribeদের বিশেষ অধিকার দেয়া সত্ত্বেও আমার মনে হয় ভারতে বিহার, মধ্যপ্রদেশ ইত্যাদি এলাকার আদিবাসীরা নানা ভাবে বঞ্চিত হয়েছে এবং বর্তমানে সেখানে মাওবাদী হিংসাত্মক আন্দোলন এরই একটা প্রতিফলন। অন্যদিকে উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেক রাজ্যে (সব রাজ্যে নয়) ট্রাইবালরা সংখ্যগরিষ্ঠ হওয়ায় সমতলের আদিবাসীদের মত তাদের জমি হারাতে হয় নি, কিন্তু সেখানে গত ৬০ বছরে ট্রাইবের সাথে সরকার, এক ট্রাইবের সাথে আর এক ট্রাইব, ট্রাইবের সাথে নন-ট্রাইব ও ট্রাইবের ও নন-ট্রাইবের সাথে অভিবাসী লোকের সংঘর্ষে হাজার হাজার লোক মারা গেছে।
ধান ভানতে শিবের গীত গাইলাম, কিন্তু আমার বক্তব্য হচ্ছে শান্তি রাখতে, একটা দেশের proud নাগরিক হিসেবে তাদেরকে ভাবতে দিতে, তাদের অধিকারের mechanismকে শক্তিশালী করতে পাহাড়িদের আদিবাসী বলার মধ্যে আমি কোন ক্ষতি দেখি না। নইলে বাংলাদেশের ভবিষ্যত এক ভাষা ও এক ধর্মের monochrome-এ উজ্জ্বল হবে 🙂
@দীপেন ভট্টাচার্য,
‘আদিবাসী’র ‘দার্শনিক’ সমস্যটি মূর্ত করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। 🙂
মুক্তমনার চলতি এই বিতকর্টি পড়ে মনিপুরি বুদ্ধিজীবী কুঙ্গ থাঙ ফেসবুকে আমাকে বলেছেন:
🙁
@বিপ্লব রহমান,
খুবই আপত্তি জানালাম। এতক্ষণ যে টোনে বিতর্কটা চলছিল সেখান থেকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে ভিন্নদিকে মোড় নিল। কুঙ থাঙের অযথা ফোঁড়ন এখানে পোস্ট করাটাকে খুব ভালভাবে নিলাম না আমি। এই বিতর্কে মূলত আমিই অংশ নিয়েছি, কাজেই ফোঁড়নটা আমার উদ্দেশ্যেই বলেই ধরে নিচ্ছি। তাঁকে অন্য কোথাও ফোঁড়ন না কেটে, এখানে এসে যুক্তি দিতে বলুন। মুক্তমনা তাঁর অপরিচিত জায়গা নয়। কাজেই এখানে কেউ-ই যে বাঙালি জাত্যাভিমান বা বাঙালিদের প্রতি অহেতুক পক্ষপাত নিয়ে বসে নেই, সেটা তাঁর জানার কথা।
না, কোনো তালগাছ বগলে নিয়ে আমি বিতর্কে নামি নি। বিতর্কে নেমেছিলাম নৃতাত্ত্বিক ইতিহাস, জাতিসংঘের সংজ্ঞা এবং সেই সংজ্ঞার আলোকে বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন দেশে আদিবাসী বলে কারা স্বীকৃত সেই দৃষ্টিকোণ থেকে । সেই দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী তালগাছ যদি বাঙালিদের হয়, তবে তালগাছ তারাই পাবে, আর যদি পাহাড়িদের হয় তবে তারাই নিতে পুরো তালগাছটি। এ বিষয়ে আমার আপত্তি বা অনাপত্তি কোনোটাই নেই।
আদিবাসী বিষয়ে মিথুশিলাক মুরমু বা আপনার দেওয়া যুক্তিতে আমি মোটেও কনভিন্স নই। তারপরেও আমি যথেষ্ট কোমলভাবে বিষয়টার বিরোধিতা করেছি, শুধু এই কারণে যে পাহাড়িদের সেন্টিমেন্ট যাতে কোনোভাবেই আহত না হয়। মিথুশিলাক মুরমুর যুক্তিগুলোকে অনায়াসে উড়িয়ে দেওয়া যায়। তাঁর দেওয়া যুক্তিগুলো আসলে তাঁর স্বপক্ষেতো যায়-ই না, বরং বিপক্ষেই যায়। তিনি জাতিসংঘের সংজ্ঞা এনেছেন, আই-এল-ওর সংজ্ঞা এনেছেন, নিজেদের আদিবাসী প্রমাণ করতে। অথচ ওই সংজ্ঞাগুলোতে কী আছে, বা ওগুলো তাঁর বিপক্ষে যায় কি না সে বিষয়টাকে বিন্দুমাত্রও খেয়াল করেন নি। কোনো একটা বিষয় নিয়ে দাবী দাওয়া আদায় করতে গেলে আগে সেই বিষয়টা নিয়ে নিজেদের চিন্তা-ভাবনাটাই পরিষ্কার থাকা প্রয়োজন।
বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, মিথুশিলাক মুরমুর যুক্তিতে নয়, বরং দীপেন্দ্র ভট্টাচার্য নামের একজন বাঙালির যুক্তিতেই আমি অনেক বেশি কনভিন্সড।
পাহাড়িদের মধ্যে অনেকেই মুক্তমনা পড়েন। আমি খুবই খুশি হবো, যদি তাঁরা তাঁদের যুক্তিগুলোকে এখানে তুলে ধরেন। মনে রাখতে হবে যে, এখানে বিতর্কটা তাঁদের বিপক্ষে হচ্ছে না, বরং জরুরী একটা অমিমাংসিত বিষয়কে মিমাংসা করার প্রয়োজনেই হচ্ছে।
@ফরিদ আহমেদ,
কুঙ্গ থাঙ যে কারণেই ওই মন্তব্যটি করুন না কেনো, তা এখানে বহন করে নিয়ে আসাটা আমারই ভুল হয়েছে। এ জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও লজ্জিত। তবে আমি এতোটা সাত-পাঁচ ভেবে তার মন্তব্যটি এখানে পোস্ট করিনি। তাই বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার বিনীত অনুরোধ।
আপনার শান্ত আলোচনার জন্য ধন্যবাদ। চলুক। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
কোনো ব্যাপার না। এখানে যে আলোচনাই হোক না কেন, পাহাড়ে পাহাড়িদের আত্ম-নিয়ন্ত্রণ, আত্ম-অধিকারের প্রশ্নে আপনি, আমি, আমরা সবাই-ই একমতের অনুসারী। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নয়, সমান মর্যাদা নিয়ে বাংলাদেশের আর দশটা নাগরিকের মত মাথা উঁচু করে চলুক, এটাই আমাদের কাম্য।
আপনি বা কুঙ থাঙের কাছ থেকে একটা লেখা পেলে খুব ভাল হতো। মিথুশিলাক মুরমুকেও আমাদের তরফ থেকে অনুরোধ করতে পারেন মুক্তমনায় লেখার জন্য।
@ফরিদ আহমেদ,
কুঙ্গ থাঙ ও মিথুশিলাক মুরমু’দার সঙ্গে কথা হয়েছে। খুব শিগগিরই লেখা পেয়ে যাবেন।
এছাড়া আমাদের ‘আদিবাসী বাংলা ব্লগ’ এর প্রধান সঞ্চালক সমর মাইকেল সরেণ এবং পাহাড়ের ছোট কাগজ মাওরুম-এর সম্পাদক দীপায়ন খীসাকেও অনুরোধ করা হয়েছে মুক্তমনায় লেখার জন্য। আশাকরি তারাও খুব দ্রুত সাড়া দেবেন।
আদিবাসী সমস্যা নিয়ে আদিবাসীরাই লিখলে দাবিনামার কণ্ঠ অনেক উচ্চ হয় বলেই আমার ধারণা। তাই আপনার আগ্রহটিকে শ্রদ্ধা জানাই। …
যে কোনো প্রয়োজনে আমাকে ই-বার্তায় একটি টোকা দিলেই চলবে। অনেক ধন্যবাদ। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
অসংখ্য ধন্যবাদ পাঁচুদা। এঁরা সবাই যদি মুক্তমনায় লিখেন, তাহলে মুক্তমনা একটা ভিন্নমাত্রা পাবে নিঃসন্দেহে।
@ফরিদ আহমেদ,
(Y) (Y)
@ফরিদ আহমেদ ভাইয়া, কুঙ থাঙকে ব্লগে এবং ফেইসবুকে পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে বুঝেছি তিনি একজন অমিশ্রীত মুক্তমণা এবং সত্যিকার মানবতাবাদী। তিনি উক্তিটি খুব সম্ভবঃত ভিন্ন প্রেক্ষিতে করেছিলেন যা আপনাকে উদ্দেশ্য করে কখনো সম্ভব নয় । হয়ত তিনি সরকারের কার্যকলাপের উপর মন্তব্য করেছেন নতুবা কয়েকজনের উগ্র জাতিবাদের উপর প্রতিবাদ করেছেন । সেজন্য তাকে ভুল বুঝার কোন দরকার নেই ।
@অমিত হিল,
খামোখা লজ্জা দিচ্ছেন আমাকে। এ বিষয়টা চুকেবুকে গিয়েছে।
কুঙ থাঙ এর বিষয়ে আমার নিজেরও অত্যন্ত উচ্চ ধারণা রয়েছে। স্মৃতি যদি প্রতারণা না করে, তবে তিনি এক সময় মুক্তমনাতেও লিখতেন।
পার্বত্য সমস্যা নিয়ে লেখার লোক খুঁজে বেড়াচ্ছি আমি। আপনার অনুপস্থিতিতে আপনার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। 🙁 এবার পেয়েছি যখন, একটা লেখা লিখবার জন্য অনুরোধ রইলো।
@ফরিদ আহমেদ ভাইয়া, খুব শ্রীঘ্রই আসছি । ধন্যবাদ স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য ।
@ফরিদ আহমেদ ভাইয়া এবং বিপ্লব রহমান দাদা,
প্রথমে একটা কথা আমার হৃদয় অন্তস্থল থেকে পরিষ্কার করতে চাই যে, আমি আসলে বিপ্লব দাদার লেখাতে কোনরকম যুক্তি তর্কে যেতে দ্বিধাগ্রস্থ এবং ভীত কারণ প্রশ্নেরপ্রেক্ষিতে অনেক কিছু উঠে আসে যা ভাষাগত জটিলতার কারণে অনেকসময় ব্যক্তির ভাষ্যকে বোল্ড করতে গিয়ে ব্যক্তির নামটি স্মরণ করতে হয় । সেক্ষেত্রে, গালাগাল খেতে হয় ভয়ে মন্তব্য করিনা । আমি আবার নীরবে কোনকিছু “হ্যাঁ” বা “না” করে ও মন্তব্য করতে পারি না । কারণ জটিল বিষয়গুলো অবশ্যই আলোচনার দাবী রাখে ।
“আদিবাসী -উপজাতি-ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী” এসব অভিধা আমার যুক্তিতে নেই । কঠিনভাবে আমাদের মানতে হবে যে বড়-ছোট যতগুলো জনজাতির অস্তিত্ব পৃথিবীতে আছে বা রয়েছে সবাই এক-এক জাতিগোষ্ঠী । নিজের সুবিধার্থে প্রথম ব্রিটিশরা এসব ‘জাতি-উপজাতি’ নিয়ে বড় ধরণের প্রচারণা করেছিল নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার সুবিধার্তে যা ছিল ঔপনিবেশীক মানসিকতার প্রতিফলন । ব্রিটিশ শাসনের পতন হয়েছিল ঠিকই কিন্তু তবু ও বীজ ধ্বংস হয়ে যায়নি, এর ধারাবাহিকতা আমরা অন্যদেশের প্রেক্ষাপথ বাদ দিয়ে বাংলাদেশেই এর প্রভাব দেখতে পাই ।
“আদিবাসী-জাতি-উপজাতি” নিয়ে অনেক আলোচনা সমালোচনা উপভোগ করেছি । যতই আলোচনা হচ্ছে দেখছি ততই নিজের আইডেন্টি নিয়ে আমি হতাশ এবং দ্বিধাবিভক্ত । আমি সরল মনে যা মনেকরি বাংলাদেশের সংবিধানে সোজাভাবে “সকল জাতিস্বত্তাদের অধিকারকে যারযার পরিচয়ে স্বীকৃতি দেয়া সমানভাবে সে ছোট হোক আর বড় হোক, যেমন ধরুণ -চাকমা, মারমা, গারো, সাঁওতাল, ত্রিপুরা, মুনিপুরি এবং ইত্যাদি । “আদিবাসী” শব্দটি যেহেতু বিশেষণ সেহেতু এর মধ্যে সবসময় পজেটিভ এবং নেগেটিভ মনোভাব থাকবে, কারণ বিশেষণ কখনো একটিমাত্র শব্দে সীমাবদ্ধ নয় । সকল জাতিসম্প্রদায়দের সমানভাবে ভাষা, সংষ্কৃতি, অর্থনীতিক এবং রাজনীতির অধিকার নিশ্চিত করলে সব সমাধান সম্ভব হবে, এর আগে “আদিবাসী -উপজাতি -ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী” কোন অভিধা নিয়ে সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয় । এর পরবর্তীতে যাদের -যাদের ইচ্ছা তারা যেভাবেই সম্বোধন করুক আমার কোন দ্বিধা নেই । আগে যা মনে করি তা হচ্ছে সমান অধিকার “জাতিসত্ত্বার পরিচয়ে” ।
কেউ যুক্তিকভাবে আলোচনায় অংশ নিলে আমি অবশ্যই আলোচনা করতে প্রস্তুত । পৃথিবীতে সকল দেশের সংবিধান এক নয় কিন্তু মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষদের অধিকারকে সম্মূনত রাখা উচিত আর ভৌগলিক এবং সমাজিকতাভেদে আমাদের সমস্যার ধরণ ও ভিন্নমাত্রিক হয়ে থাকে সেহেতু আমেরিকা একজনের ব্যাখ্যার সাথে বাংলাদেশের একজনের ব্যাখ্যা হয়ত না ও মিলতে পারে কিন্তু অধিকারের ক্ষেত্রে আমাদের মানবিক গুণ থাকা উচিত ।
“মানবতা জয় হোক” !!! (L)
@অমিত হিল,
এ ক ম ত। কোনো জাতির, তা যতোই ক্ষুদ্র হোক না কেনো, এমন কি যদি ওই জাতিগোষ্ঠির একজনও সেদেশে থাকেন, তাহলে তার অধিকার রয়েছে সমস্ত মৌলিক মানবিক অধিকার তথা সাংবিধানিক স্বীকৃতি ভোগ করার।
আদিবাসীর সাংবিধানিক স্বীকৃতির প্রশ্নে আপনি অবশ্য নতুন কথা কিছু বলেননি। যারা এ নিয়ে গত ৪০ বছর ধরে আন্দোলন করছে, তারাও একই কথা বলছেন। হয় সরকার আদিবাসী হিসেবে ভাষাগত সংখ্যালঘু জনজাতিকে স্বীকৃতি দিক, আর না হয় বাঙালি জাতির পাশাপাশি অপরাপর প্রত্যেক জাতিকে নিজ নিজ নামে স্বীকৃতি দিক। (Y)
@বিপ্লব রহমান দাদা, নতুন কিজন্য বলতে হবে ? আমিতো সবসময় জাতির স্বীকৃতি চাই । সেই স্কুল, কলেজে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার চাওয়ার কোন পরিবর্তন হয়নি ।
মানুষের চেয়ে মানুষের সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে গিয়ে, আমরা মূল আলোচনা থেকে অনেক অনেক দূরে সরে যাই। এক একটি শব্দ নিয়ে লড়াই, এ শুধু আমাদের দেশে নয়, এখানেও শুনেছি। তাই বলি, মানুষ ও প্রকৃতি মরে যাক, লড়াকু সৈনিকদের কাংক্ষিত শব্দগুলো বেঁচে থাকুক।
@স্বপন মাঝি, (Y)
বিপ্লব ভাই,আমি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই এই কারণে যে, আপনি মুক্তমনে এই সহজ সরল, অসহায়, নিপীড়িত পাহাড়ী মানুষদের অধিকার প্রচেষ্টায় কাজ করে চলেছেন। আপনার এই নিস্বার্থ প্রচেষ্টার সফলতা আমি সব সময় কামনা করি।
@সুমিত দেবনাথ, (Y)
@ ফরিদ ভাই,
আদিবাসী লেখক মিথুশিলাক মুরমু মনে করেন:
পড়ুন: সাংবিধানিক স্বীকৃতিতে আদিবাসীদের অবিশ্বাস [লিংক]
অন্যদিকে আপনি যে আদিবাসীর সঙ্গা দাঁড় করাচ্ছেন :
…এটি আদিবাসী সর্ম্পকে তো বটেই, এমন কি বাঙালিদের সর্ম্পকেও ভুল ব্যাখা। কিছু মনে করবেন না, আপনার ব্যাখাটি কিভাবে যেনো সরকারেরর বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।
পড়ুন :‘বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই!’[লিংক]
বিতর্ক আশা করছি। অনেক ধন্যবাদ। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
আমি আমার আগের মন্তব্যেই বলেছি যে, সরকারের যুক্তিটা আমি জানি না। তাঁদের ব্যাখ্যাটা পড়ি নি আমি। আমি আমার যুক্তি দিয়েছি। এটা সরকারের বক্তব্যের সাথে মিলে গেলে আমার কিছু করার নেই। এতে লজ্জিতও নই আমি। সরকার সবসময় ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, এই ধারণাটা একটা স্টেরিওটাইপ ধারণা।
আদিবাসী এবং বাঙালিদের সম্পর্কে আমার ব্যাখ্যাটা কী কারণে ভুল, সেটা জানার প্রবল কৌতুহল অনুভব করছি। আশা করছি শুধু ভুল বলে চলে যাবেন না। কেন ভুল সেটাও বলে যাবেন। আমার ধারণা যদি ভুল প্রমাণিত হয়, নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, সানন্দচিত্তে আপনার দেওয়া ব্যাখ্যাটা গ্রহণ করে নেবো আমি।
@ফরিদ আহমেদ, আদিবাসী বললে এনজিওগুলো ইচ্ছেমত ব্যাবসা করতে পারে আর কী!পার্বত্য চট্রগ্রামে গেলে দেখবেন এনজিওর আড্ডখানা ওটা।
@ইমরান মাহমুদ ডালিম,
দু:খিত। আপনি ইতিপূর্বে অহেতুক অপ্রাসাঙ্গিক ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে যথেষ্ট বিরোক্তি সৃষ্টি করেছেন। আপনার প্রতি বিনীত অনুরোধ, দয়া করে আপনি আর আমার লেখায় মন্তব্য করবেন না। ধন্যবাদ। (W)
@ফরিদ ভাই,
আশাকরি মিথুশিলাক মুরমু’র আদিবাসী বিষয়ক দীর্ঘ সঙ্গা আপনাকে সন্তুষ্ট করবে। তার দীর্ঘ লেখাটির যে অংশটি উদ্ধৃত করা হয়েছে, তার মোটা হরফের এবং শেষ প্যারাটি লক্ষ্যনীয়। অনুগ্রহ করে এই চুম্বক অংশটি আরেকবার পড়বেন?
ফরিদ ভাই, আপনি বলছেন:
এ কে বা রে ই ন য়।
এই বঙ্গীয় ভূখণ্ডে বসবাসকারী আদিবাসী অনার্য, দ্রাবিড় ও নানান জাতির সংমিশ্রনে বাঙালি জাতির সৃষ্টি। ড. মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ‘বাঙালি জাতির ইতিহাস’ রচনায় যেমন বলেন, পঞ্চজাতির সমাবেশে বাঙালির সৃষ্টি। সংশ্লিষ্ট বইটি হাতের কাছে না থাকায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে পারছি না। বাংলা একাডেমী থেকে বেশ কয়েক বছর আগে প্রকাশিত রিজিয়া রহমানের ‘বং থেকে বাংলা’ নামক গ্রন্থেও একই মতের সমর্থন মিলবে।
এ ক ম ত। সরকারি মতের সঙ্গে মিলে গেছে বলেই আপনার মতটি ভুল বা সরকার সব সময় ভুল সিদ্ধান্ত নেয়– আমিও তা বলছি না।
তবে…[তোরা সব বাঙালি হইয়া যা, বাঙালিরাই এদেশের আদিবাসীঁ, উপজাতীরা বহিরাগত, এদেশে কোনো আদিবাসী নেই এবং ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠি]।…ইত্যাদি বক্তব্যে দেশের সরকারগুলো বহু বছর ধরে উগ্র জাত্যাভিমান প্রদর্শন করে আসছে। আমার আপত্তির ফোকাস পয়েন্ট সেখানে।
অনেক ধন্যবাদ। (Y)
@পাঁচুদা,
মিথুশিলাকের দীর্ঘ লেখাটি আকর্ষনীয় এবং তথ্যবহুল, এটা অনস্বীকার্য। কিন্তু পরিপূর্ণভাবে সন্তুষ্ট করতে পেরেছে, এই কথাটা বলতে পারছি না বলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
এই বৈশিষ্ট্য চারটির মধ্যে শেষ তিনটি নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই। আপত্তি ওই প্রথমটিকে নিয়েই। পাহাড়ি জনগোষ্ঠী বাংলাদেশ ভূখণ্ডে অন্যান্য জনগোষ্ঠীর আগে বসতিস্থাপন করেছে, এটা কী করে বিশ্বাসযোগ্য করবেন? এক্ষেত্রে যদি শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিবেচনায় ধরেন আর বলেন যে ওখানেতো তারাই সবচেয়ে আগে বসতিস্থাপন করেছে, সেক্ষেত্রে বলবো যে, এই যুক্তিটি ভুল। কারণ, আদিবাসী বলতে একটা দেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠী বোঝায়, একটা নির্দিষ্ট ছোট্ট অঞ্চলের জনগোষ্ঠি নয়। আজকে যদি আমরা এটাকে মেনে নেই, আর কালকেই যদি সুন্দরবন অঞ্চলের কোনো বিরান দ্বীপে বার্মা থেকে নিজস্ব ভাষাসমৃদ্ধ এবং স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কোনো ছোট্ট জাতিগোষ্ঠীর লোকেরা নৌকায় করে এসে বসতিস্থাপন করে এবং দাবী করে যে, তারা ওই দ্বীপের আদিবাসী, সেক্ষেত্রে তাদেরকেও আদিবাসী হিসাবে গণ্য করতে হবে আমাদের। গণ্য না করার মত কোনো শক্তিশালী যুক্তিী থাকবে না আমাদের হাতে। কারণ, এরাওতো আধিপত্য বিস্তারকারী গোষ্ঠী নয়। এদের নিজস্ব ভাষা আছে, নিজস্ব স্বতন্ত্র সংস্কৃতি আছে, এবং নিজেদেরকে আদিবাসী পরিচয়ে পরিচিত করানোর জন্য আগ্রহেরও ঘাটতি নেই। এখন বলুন যে, এই জনগোষ্ঠী কি উপরের বৈশিষ্ট্যগুলোর ভিত্তিতে আদিবাসীর দাবীদার নয়?
বাঙালি জাতি অমিশ্র জাতি, একথা আমি বলি নি। বাঙালি একটা সংকর জাতি। বাঙালির সংকরায়ন চলছে তিন হাজারেরও বেশি সময় ধরে। কিন্তু এই সংকরায়ন বাংলার মাটিতেই ঘটেছে। নেগ্রিটো, আদি-অষ্ট্রেলীয়, মঙ্গোলীয় এবং অন্যান্য অনেক নরগোষ্ঠীর রক্ত এসে মিশেছে বাঙালির রক্তে। বাঙালির বাঙালি নাম তখন হয়তো ছিল না। কিন্তু এই জনপদে বসবাসকারী সেই লোকেরা যে আমাদেরই পূর্বপুরুষ ছিল একথা নিশ্চয় অস্বীকার করবেন না। সেই কোন সুদূর সময়ের চর্যাপদেও বঙ্গজকে বাঙ্গালী বলা হয়েছে। সেখানে বলা আছে – আজ ভুসুক বঙ্গালি ভইলি। নিয় ঘরনী চণ্ডালী লেলি। আলেকজান্ডার যে, গঙ্গারিডই জাতির ভয়ে পূর্ব দিকে অগ্রসর হন নি, সেই জাতিটাও এই ভূমিতে বসবাসকারী আমাদেরই পূর্বপুরুষ। কাজেই, এই ভূখণ্ডে বাঙালির দীর্ঘ নৃতাত্ত্বিক ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং উত্তরাধিকারকে অস্বীকার করা যায় না।
উগ্র বাঙালি জাত্যাভিমানের বিষয়ে আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত। সরকারের মত আমিও পাহাড়িদের আদিবাসী বলাতে আপত্তি জানাচ্ছি, কিন্তু আপনি খুব ভাল করেই জানেন যে, এখানে কোনো জাত্যাভিমান নেই। নৃতাত্ত্বিক ইতিহাসের সঠিকতাই আমার কাছে মূখ্য বিষয়। পাহাড়িদের প্রতি আবেগের বশবর্তী হয়ে আমরা যেন এই জনপদের নৃতাত্ত্বিক ইতিহাসকে বিকৃত না করি, সেটাই আমার মূল প্রত্যাশা।
@ফরিদ আহমেদ,
এই চলমান বিতর্কে ৪ নম্বর পয়েন্টটির দিকে আরেকবার নজর দেওয়ার বিনীত অনুরোধ জানাই। দেখুন, অন্য সব বিতর্কের বাইরে একটি জাতিগোষ্ঠি যদি নিজেদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে পরিচিত করতে চায়– কোনো দেশ, সরকার বা সংখ্যাগুরু জাতিগোষ্ঠির কী অধিকার আছে তাদের উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠি বা অন্যকোনো অভিধায় চিহ্নিত করার। …
এই অবস্থানের বাইরে আমি বরং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, সান্তাল…ইত্যাদি ক্ষুদ্র জনজাতিকে কোনো অভিধার বাইরে নিজ নিজ জাতির নামেই পরিচিতি দিতে রাজি। তবে শেষ পর্যন্ত আদিবাসী/অ-আদিবাসী বিতর্কটি থেকেই যাচ্ছে। …ইচ্ছে রাখি, এ নিয়ে মুক্তমনায় একটি পৃথক পোস্ট দেওয়ার।
আপনার অন্যান্য বক্তব্যের সঙ্গে আমার মত পার্থক্য খুব নেই। আবারো অনেক ধন্যবাদ। চলুক। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
কোনো একটা জনগোষ্ঠী কী নামে পরিচিত হবে, এটা অবশ্যই তাদের সিদ্ধান্ত। আজকে বাংলাদেশের বাঙালিরা যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে তাদের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় হবে বাঙাল বা সমতটী বা রাঢ়ী তাহলে কার কী বলার আছে। তেমনি চাকমারাও যদি বলে যে, তারা চাকমার বদলে চাংমা বা পাহাড়ি হিসাবে পরিচিত হতে চায় তাহলে সেটাই হবে। রাষ্ট্রের আসলেই কোনো অধিকার নেই কারো নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ে হস্তক্ষেপ করা যতক্ষণ না সেটা রাষ্ট্রের মূল নীতির সাথে সাংঘর্ষিক হচ্ছে বা নৃতাত্ত্বিক ইতিহাসকে বিকৃত করছে। বাংলাদেশ সরকারের সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীগুলিকে তাদের অমতে উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী হিসাবে নামকরণের বিরোধী আমি। তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে তাদের সম্মতিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত তাদেরকে কী নামে ডাকা হবে বা তারা কী নামে পরিচিত হতে চায়।
তবে আদিবাসী ডাকার ক্ষেত্রে আপত্তিটা অন্য জায়গায়। যে কেউ ইচ্ছা করলেই নিজেদের আদিবাসী ডাকতে পারে না। এটা শুধু একটা নাম নয়, এর তাৎপর্য ভিন্ন জায়গায়। আমি যদি ভুল না করে থাকি, তবে বলা যেতে পারে যে, তারা নিজেদেরকে আদিবাসী দাবী করছে জাতিসংঘের দেওয়া সংজ্ঞার আলোকেই। এই সংজ্ঞার আলোকে আদিবাসীর আদর্শ উদাহরণ আমাদের চোখের সামনেই আছে, যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে। আজকে যদি পাহাড়িদেরকে বাংলাদেশে আদিবাসী হিসাবে মেনে নেওয়া হয়, তবে প্রকারান্তরে এটাই মেনে নেওয়া হবে যে, তারাই এই দেশে শুরু থেকে বসবাস করতো। বাঙালিরা বহিরাগত ঔপনিবেশিক এবং তাদের কারণেই পাহাড়িদের এই প্রান্তিক অবস্থান। আমাদের দেশের নৃতাত্ত্বিক ইতিহাসের সাথে এটি কোনোভাবেই যায় না। পুরোপুরি সাংঘর্ষিক এটি।
আমিও তাদেরকে নিজ নিজ নামেই প্রতিষ্ঠিত দেখতে চাই। আপনার পরবরতী লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
ছোট্ট একটা জিজ্ঞাসা আছে। পাহাড়িরা নিজেদেরকে আদিবাসী পরিচয় দিতে ইচ্ছুক কেন? এতে তাদের লাভটা কী?
@ফরিদ আহমেদ,
প্রচণ্ড দ্বিমত।
১৮৫৬ সালের সিঁধু-কানহুর নেত্বাধীন সশস্ত্র আন্দোলনকে নিখিল ভারত কমিউনিস্ট পার্টি প্রথম ‘আদিবাসী বিদ্রোহ’ হিসেবে উল্লেখ করে এবং ‘আদিবাসী’ কথাটি পরিচিতি পায়। [লিংক]
ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে অসংখ্য আইন ও দলিলপত্রে ‘ইন্ডিজিনাস’ এবং ‘ট্রাইবেল’ কথাটি ব্যবহৃত হয়, যা ‘আদিবাসী’ কথার সমর্থক। ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধিতেও একাধিকবার ‘ইন্ডিজিনাস’ কথাটি ব্যবহৃত হয়েছে। [লিংক]
তাই ‘আদিবাসী’র বিষয়টি একই সঙ্গে ভৌগলিক, রাজনৈতিক ও দেশীয়। তবে সঙ্গা ও অধিকার সংরক্ষণের প্রশ্নে জাতিসংঘ-আইএলও’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রসঙ্গ এসে যায়। এই প্রসঙ্গটি জোরদার হয়েছে মাত্র এক দশকে। [লিংক]
অন্যদিকে আদিবাসীর সাংবিধানিক স্বীকৃতির (দ্র. মিথুশিলাক মুরমু’র লেখা) প্রসঙ্গটি চলছে চার দশক জুড়ে। ১৯৭২ সালের সংবিধান রচনার সময়ই এমএন লারমা সংসদের এই দাবি উত্থাপন করেন। তবে সে সময়ের প্রেক্ষাপটে তিনি ভাষাগত ক্ষুদ্র জনজাতিগুলোকে ‘উপজাতি’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন–যা মুজিব সরকার মোটেই আমলে নেয়নি; এর পরিনতিতে প্রায় আড়াই দশক ধরে শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র সংগ্রাম চলে। …
পাহাড়িদের এই ইচ্ছার বিষয়টি সেখানের ভূমি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত। জাতিসংঘের সদর দফতর থেকে রপ্তানীকৃত নয়। [ণিংক] বরং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো চলমান বিতর্কে হালে যুক্ত হয়েছে মাত্র।
আপনার অন্যসব বক্তব্যের সঙ্গে আমার খুব বেশী মতবিরোধ নেই।
আবারো আপনাকে ধন্যবাদ। (Y)
এসব নিয়ে কথা বলতেই ইচ্ছে করে না। মানবাধিকার সম্পর্কে এমনিতেই আমাদের দেশের লোকের ধারনা শিক্ষিত অশিক্ষিত নির্বিশেষে খুবই দূর্বল। লিমন কাহিনী নিয়ে যা হল এবং আম জনতা নির্বিকার চিত্তে মেনে নিল তাতে আবারো সেটাই প্রমান হয়। বিপুল ভোটে নির্বাচিত একটি গনতান্ত্রিক সরকার যে দেশে কয়েকজন উর্দিধারী লোককে ইমিউনিটি দিতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজ করে তো সে দেশে কিসের মানবাধিকার কায়েম হবে। দেশ আসলে কারা চালায় সে প্রশ্নও সংগত কারনেই এসে যায়।
অত্যাচারিত গ্রুপ যদি কোন বিশেষ সংখ্যালঘু গ্রুপ হয় এবং ধর্মীয়ভাবে কোন কালার না করা যায় তো সেই উদাসীনতার মাত্রা বেড়ে যায় বহুগুন। পাহাড়ীরা হিন্দু ধর্মের হলেও দেখা যেত অনেককে সক্রিয়ভাবে মাঠে নেমে গেছেন। তার পালটা আরেক গ্রুপ আবার ষড়যন্ত্র তত্ত্ব নিয়ে কাউন্টার দিচ্ছেন।
পাহাড়িরা সমতলে এসে থানা গাড়তে পারলে সমতলের লোকে কেন পাহাড়ে বসতি স্থাপন করতে পারবে না যারা বলছেন তাদের বলি যে আইনত এতে কোন মানা নেই। একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় সেটা অবশ্যই গ্রহনযোগ্য। তবে বিশ্বের সব দেশের সরকার ও জনগন এই জাতীয় বিশেষ এথনিক গ্রুপ যাতে বানের জলে হারিয়ে না যায় তার ব্যাবস্থা নেয়। সেজন্য তাদের এলাকায় বসতি স্থাপনের মাত্রা নির্ধারন করে দেওয়া হয়, তাদের জন্য রিজার্ভ এলাকা গঠন করা হয়। পাহাড়ে বাংগালী পাহাড়ি লোকের অনুপাতের যে চিত্র কিছুদিন আগে দেখেছি তাতে এটা পরিষ্কার যে তাদের পুরোপুরি গায়েব হয়ে যাওয়া মোটেও আর বেশী সময়ের ব্যাপার নয়।
দেশের স্বার্থেই ব্যাপারটির গুরুত্ব দেওয়া খুবই প্রয়োযন, প্রয়োযন কিছু রিজার্ভ এলাকা গঠন করা। আর অন্যায়ভাবে দখলকৃত পাহাড়িদের জমি যায়গা ফেরত দানের ব্যাবস্থা নেওয়া (যদিও দূরাশা মাত্র)। আশার কথা একমাত্র দেখি যে আজকাল কিছুটা হলেও জনমত জাগ্রত হচ্ছে, তবে উগ্র জাতীয়তাবাদ নিয়েও উল্টোদিকে আরেক দল হাজির হচ্ছে।
@আদিল মাহমুদ,
(Y) (Y)
বিপ্লব রহমানকে তাঁর কাজের জন্য ধন্যবাদ।
এবার কাউকে আদিবাসী বলে ডাকা হবে না, সরকারের এই নতুন নীতির পরিপ্রেক্ষিতে বাঙ্গালীদের যেন নতুন করে চিনলাম। আর আমি ভুলে যাই যে পাকিস্তানীরা (সরকার কি জনগণ) এখনও বাঙ্গালীদের কাছে ক্ষমা চায় নি।
@দীপেন ভট্টাচার্য,
তাঁদেরকে আদিবাসী কেন ডাকা হবে? যুক্তিটা কোথায়? এ বিষয়টা কি একটু ব্যাখ্যা করা যায় দীপেনদা? ঐতিহাসিক কারণেই পাহাড়ের নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলোকে আদিবাসী বলার ক্ষেত্রে আমার নিজেরও কিন্তু ঘোরতর আপত্তি এবং প্রবল অনীহা রয়েছে।
কল্পনা চাকমার ঘটনাটা বাংলাদেশি বাঙালিদের জন্য আজীবন কলংক হয়ে থাকবে। পাহাড়িদের কাছে নতজানু হয়ে ক্ষমা ভিক্ষা করলেও ক্ষমা পাওয়া উচিত না আমাদের।
বিপ্লব রহমানকে অসংখ্য ধন্যবাদ বিষয়টাকে আবারো আমাদের সামনে নিয়ে আসার জন্য।
@ফরিদ আহমেদ, আসলে আমি ঐতিহাসিক ভাবে তারা আদিবাসী কিনা সেই ধরণের আইনের আওতায় মন্তব্যটা করি নি। ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি এরা আদিবাসী, এমন কি সিলেটের চা-বাগানে ভারতের বিভিন্ন অংশ থেকে ইংরেজদের আনা আদিবাসী কর্মীরা আদিবাসী হিসেবেই পরিচিত ছিল যদিও সিলেটে তারা আদিবাসী নয়। কিন্তু যে জিনিসটা ওপরের বিভিন্ন মন্তব্যকারীর বক্তব্যের মধ্যেও বেড়িয়ে এসেছে সেটা হল, ছোট নৃ-গোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার একটা mechanism থাকতে হবে। সেই mechanismটা যে বাংলাদেশে কাজ করছে না তার সঙ্গে তো আপনি ও আমি একমত, নাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামে ১০% বাঙ্গালীর বদলে ২০ বছরের মধ্যে (জিয়াউর রহমানের বদৌলতে) এখন ৫০% এর ওপর বাঙ্গালী কেন হবে? পাহাড়িরা যে শুধু উৎখাত হচ্ছে তাই নয়, এই নতুন বাসিন্দারা পাহাড়ের ecology সম্পর্কে অবগত নয়, তাই গাছ ফেলা, পাহাড় কাটা এখন এই এলাকার পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
অনেকে মন্তব্য করছেন, বাংলাদেশ সবার জন্য, পাহাড়িরা যেমন দেশের সর্বত্র বসাবস করতে পারে, বাঙ্গালীদেরও তেমনি সেখানে বসবাসের অধিকার আছে। এই ধরণের symmetryর উদাহরণটা ঠিক নয়। ১৯৪৭এর দেশ ভাগের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীরা পাকিস্তানে অন্তর্ভূক্ত হতে চায় নি, প্রায় ১০০% অমুসলমান ও অবাঙ্গালী জনগোষ্ঠী কেন পাকিস্তানের অংশ হবে যেখানে ভারতের পূর্বাঞ্চলের প্রায় সবাই তাদের মতই বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠী ও বিভিন্ন ধরণের ধর্মের অনুসারী। এই diversity ছেড়ে তারা কেন পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হবে? এর মধ্যে অনেক জল গড়িয়েছে, কথা হচ্ছে বাংলাদেশের কোন ideology তাদের জন্য আজ প্রযোজ্য হবে? কেন তারা এই দেশকে নিজেদের মনে করবে? তাদেরকে বাদবাকি বাঙ্গালী সংখ্যাগুরুরা কি দিতে পারে – তাদের জমি কেড়ে নেয়া ব্যতিরেকে? ঐতিহাসিকভাবে এই গোষ্ঠীর জনসংখ্যা বাঙ্গালীদের মত বাড়ে না। তাই দেশব্যাপী বসবাসের symmetryটা আমার মতে ঠিক নয়। বাংলাদেশের চালনায় তাদের কোন অধিকার নেই, ভবিষ্যতেও হবে না – রাষ্ট্রপতি বা প্রধান মন্ত্রী তারা হবে না। তাই বৃহত্তর সমাজ যদি দেশে তাদের ideological ও জমির অধিকার একটি সামান্য gestureএর বিনিময়ে নিশ্চয় করতে পারে তাহলে ক্ষতি কি? নাকি?
@দীপেন ভট্টাচার্য,
দুর্দান্ত দীপেনদা! সম্পূর্ণ একমত আপনার সাথে।
পাহাড়িরা সমতলে জমি কিনতে পারলে, সমতলবাসীরা কেন সেখানে জমি কিনে বসবাস করতে পারবে না, এই যুক্তিটা আসলে কোনো কাজের যুক্তি নয়। পাহাড়ের বিশেষত্বটা সকলের অনুধাবন করা প্রয়োজন। পাহাড়ি এলাকা এবং জনগোষ্ঠীর এই বিশেষত্বটা ব্রিটিশরাও জানতো। সে কারণেই এই অঞ্চলকে আলাদা মর্যাদা দিয়ে শাসন করেছে তারা।
@ফরিদ আহমেদ, save না করে আপনার জন্য একটা বড় উত্তর লিখলাম, সেটা যে কোথায় হাওয়া হয়ে গেল। আরো একবার —
আমি ঐতিহাসিক ভাবে কে আসলেই আদিবাসী কে নয় সেই আইনের আলোকে জিনিসটা দেখছি না। বরং “আদিবাসী” titleটা একটা অধিকার রক্ষার mechanism হিসেবে দেখছি। ছোট নৃ-গোষ্ঠীর অধিকার যে ঠিকমত রক্ষা হচ্ছে না তাতে আপনি ও আমি বোধহয় একমত, নইলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙ্গালী সংখ্যা ২০ বছরের মধ্যে কেমন করে ১০% থেকে ৫০% হয়? পাহাড়ের ecology সম্পর্কে নতুন বাঙ্গালী অভিবাসীদের ধারণা না থাকায় এখন বন-উচ্ছেদ ও পাহাড়-কাটা চলছে অনেক। একই ব্যাপার eco-tourismএর নামে গারো বা অন্যান্য আদিবাসীদের উচ্ছেদ করার বিভিন্ন প্রকল্পে। অনেক ক্ষেত্রেই এই সমস্ত সমাজে জমি collective হিসেবে থেকে যায়, দলিল থাকে না, সেই সব ক্ষেত্রে ধূর্ত লোকেরা খুব সহজেই জমির মালিকানা দাবি করতে পারে, এমনই চলে এসেছে শত শত বছর। আমার ধারণা “আদিবাসী” স্বীকৃতির সাথে ঐ সব জমির ওপর তার ন্যায্য অধিকার আদালতে বহাল হবে।
এখানে অনেকেই বলেছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় যেমন পাহাড়িদের বসবাসের সুযোগ আছে, তেমনই বাঙ্গালীদের পাহাড়ে থাকার অধিকার আছে, দেশ তো সবারই। symmetryটা আমার মতে ঠিক নয়। ১৯৪৭এর দেশ বিভাগের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় ১০০% জনসংখ্যা অমুসলিম ও অবাঙ্গালী, তারা পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হতে চায় নি। ভারতের পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ভাবে diverse অঞ্চলগুলোর সাথেই তাদের স্বাভাবিক সংযুক্তি হবার কথা। যাইহোক জল অনেক গড়িয়েছে, আজ কথা হল বাংলাদেশের কোন ideologyতে তারা নিজেদের বাংলাদেশী বলে ভাববে? নেহাৎ ঐতিহাসিক ভাবে বড় বড় জনগোষ্ঠীর ইচ্ছায় সীমানার বাধনে তাদেরকে নতুন করে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে পরিচিতি দিতে বৃহত্তর সমাজ তাদের জন্য কি দিতে পারে (জমি কেড়ে নেয়া ছাড়া)? তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারও বাঙ্গালীদের থেকে কম। তারা তো কোনদিন এই রাষ্ট্র চালাবে না। সেক্ষেত্রে তাদেরকে আদিবাসী বলাটা বাঙ্গালীদের জন্য একটা সামান্য gesture। এটা শুধু তাদের ideological ও জমির অধিকারই দেবে না, বাঙ্গালীরাও জাতি হিসেবে নিজেদের কি ভাবে তারও একটা পরীক্ষা হবে। নাকি?
ওপরের মন্তব্যকে ignore করুন। 🙂
@দীপেন ভট্টাচার্য,
আমার পর্যবেক্ষণ বলছে আদিবাসি কথাটা ইদানিং কালেই মাত্র ব্যাবহার করা শুরু হয়েছে, তাও আবার সচেতন মহলে। সাধারন মানুষ নিরীহ এই পাহাড়িদের বহুকাল ধরেই উপজাতি বলে ডেকেছে, বেশীর ভাগ আজো তাই ডাকে। বিপ্লব রহমানের মত আরো কিছু মানবতাবাদী দরদী মানুষ ক্রমাগত পাহাড়িদের উপর ব্যাপক অত্যাচারের প্রকাশ করতে থাকায় আমরা পাহাড়িদের কষ্টের সাথে মোটামুটি এক হতে পেরেছি। দুর্বলের শক্তি যোগাবার জনমত দ্রুত যত বেশী তৈরী করা ততই ভালো। এই ধরনের লেখাগুলিতে তা ই হচ্ছে। মন্তব্যগুলিও তথ্যবহুল হচ্ছে। এগুলো দেখে আশাও শক্তিশালী হচ্ছে। আমাদের আশেপাশের মানুষদের সাথেও পাহাড়িদের কষ্ট নিয়ে কথা বলা যাচ্ছে।
আরো লেখা আসুক।
@ দীপেন ভট্টাচার্য, @ ফরিদ আহমেদ, @কাজী রহমান,
লেখাটিকে সমৃদ্ধ করার জন্য আপনাদের সবিশেষ ধন্যবাদ।
আদিবাসী লেখক মিথুশিলাক মুরমু মনে করেন:
@ দীপেন ভট্টাচার্য, @ ফরিদ আহমেদ, @কাজী রহমান,
(Y)
@বিপ্লব রহমান,
মিথুশিলাক মুরমুর ব্যাখ্যাকে সঠিক ধরে নিলে তাঁকেই আর আদিবাসী বলা সম্ভবপর নয়। ফার্স্ট নেশন বা আদিবাসী বলতে আমেরিকা, ক্যানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডে যা বোঝায় বাংলাদেশের পাহাড়ি জনগোষ্ঠী বা সমতলের অন্য কোনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী তার আওতায় পড়ে না। আরাকান রাজার কাছে পরাজিত হয়ে চাকমারা বাংলাদেশ ভূখন্ডে এসেছে মাত্র চারশ’ বছর আগে। সেই তুলনায় বাঙালিদের পূর্বপুরুষের বসবাস এখানে কয়েক হাজার বছর ধরে। হয়তো বাঙালি নামে নয়, ভিন্ন নামে। তবে তারা নিশ্চিতভাবেই বাঙালিদের পূর্বপুরুষ। সেই হিসাবে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের প্রকৃত আদিবাসী আসলে বাঙালিরাই।
বাঙালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে বর্তমানে পাহাড়িদের উপরে অত্যাচার-নির্যাতন করছে। এ কারণে সচেতন এবং মানবিক মানুষ হিসাবে আমাদের পূর্ণ সহানুভূতি এবং আবেগগত সমর্থন রয়েছে তাঁদের প্রতি। কিন্তু, এই আবেগে ভেসে গিয়ে তাঁদেরকে বাংলাদেশের আদিবাসী হিসাবে স্বীকার করে নেওয়াটা বড় ধরনের ঐতিহাসিক ভুল হবে।
পাহাড়িদেরকে আদিবাসী না বলার পিছনে বাংলাদেশ সরকারের পুরো যুক্তিটা জানি না, তবে সিদ্ধান্তটাকে সঠিক বলেই মনে করি আমি। আদিবাসী না বলেও সংখ্যালঘিষ্ঠ জাতিসত্ত্বাগুলোর স্বাতন্ত্র্য এবং মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখা সম্ভবপর।
@ফরিদ ভাই,
দুঃখিত। মিথু দা’র মন্তব্যটি পুরোপুরি আসেনি। এ জন্য ‘আদিবাসী’ (এমন কী আক্ষরিক অর্থেও) সঙ্গা সর্ম্পকে আপনার ভুল ধারণা থেকেই যাচ্ছে। … 😕
নীচে আলাদা করে আবার মন্তব্যটি দিচ্ছি। দেখুন তো…মতৈক্যে আসা যায় কী না?
লক্ষ্যনীয়, আমরা তাদের অধিকারের প্রশ্নে বিতর্ক করছি না। এটি বিতর্কের বিষয়ও নয়। আমাদের বিতর্ক শুধু সঙ্গাটুকু নিয়ে। ধন্যবাদ।
আদিবাসী কন্যার আবার বিচার!!!তাও আবার এই দেশে!!!
আমরা হলাম ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা।মাইর খাবো আর এভাবেই বিচারের দাবি নিয়ে কেঁদে যাবো।
আপনার জন্য বিপ্লব দা।সত্য ঘটনা প্রকাশ করার সাহস যেনো সবসময় আপনার থাকে।
শুভকামনা।
@রাহনুমা রাখী,
আপনার শুভ কামনা আমার জন্য প্রেরণা হয়ে থাকবে। অনেক ধন্যবাদ। (Y)
(Y)
@স্বাধীন,
(Y)
পাহাড়ী বোন, তুমি কাঁদছো?
পৃথিবীতো সবলের জলসাঘর
শহরে বাতি জ্বলে,
পাখা ঘোরে,
পথে পথে জ্বলে সোডিয়াম চাঁদ
পাহাড়ে সন্ধা থাকে প্রতিদিনই,
চোখের পাতাকে চেপে ধরে আজ একটু ঘুমাও
—— ও পাহাড়ী কবিতার কয়েকটি লাইন (লিখেছেন: সোজা কথা)
@হোরাস,
গুগল করে আপনার সংকোলিত সোজাকথার তিনি কবিতা পেলান। [লিংক]
খুবই চমৎকার লেখা। এই কবিতা তিনটি আমাদের ফেসবুক গ্রুপ ‘পাহাড়ের রূদ্ধকণ্ঠ CHT Voice ‘ শেয়ার করেছি। [লিংক]
চলুক। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
দায়িত্ব তো অনেকেরই থাকে । কয় জন তা পালন করে বলুন? তবে আপনি আর ঐ সেনা কর্মকর্তা ঠিকই দ্বায়িত্ব পালন করেছেন । পার্থক্য এই যে আপনি সাংবাদিক অথবা একজন মানুষের দায়িত্ব পালন করেছেন, অপরদিকে সে করেছে মানুষরূপী পশুর দায়িত্ব পালন ।
অনেক ধন্যবাদ …………….
@ছদ্মবেশী, 🙁
“১৯৯৮ সালে রাঙামাটিতে আঞ্চলিক পরিষদের জমকালো অভিষেক অনুষ্ঠানের শুরুতেই বক্তব্যে প্রথমেই তিনি সরকারের কাছে জানতে চান, কোথায় এখন কল্পনা চাকমা?…
এরপর কাপ্তাই, কর্ণফূলি, কাচালং, মাইনি, চেঙ্গী, মাতামুহুরি, শঙ্খ নদীতে অনেক জল গড়িয়েছে।…হয়েছে অনেক পাহাড় ধ্বস। হাসিনা, তত্ত্ববাধায়ক-খালেদা-সেনা সমর্থিত অস্বাভাব
@লিসেনিং পোস্ট, (U)
কেউ তো একজন বলেন পাহাড়ীদের পথের পাঁচালি সেই জন বিপ্লব রহমান।
@সেন্টু টিকাদার,
অ্যাঁ!! 😕
(Y)
@অরূপ,
জানিনা আপনি অরূপ কথার রূপকথা কী না। এই নামে একজন সহব্লগারকে আমি খুব মিস করি। ধন্যবাদ। (Y)
পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আরো বেশী বেশী লেখা চাই। সবাই বুঝুক পার্বত্য চট্টগ্রামে কি সমস্যা।
@অরূপ,
অবশ্যই। (Y)
(Y)
পাহাড়িদের প্রতি এত দরদ নিয়ে কে লেখতে পারে প্রিয় বিপ্লব রহমান ছাড়া। তার প্রতি কৃতজ্ঞ।
চালিয়ে যান।
@সৈকত চৌধুরী,
ভ্রাতা, বিনয়ের সঙ্গে বলি, এখানে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কিছু নেই। আমি শুধু আমার দায়িত্বটুকু পালনের চেষ্টা করছি মাত্র। … আগামীদিনেও সঙ্গে থাকার অনুরোধ রইলো। চলুক। (Y)
সামাজিক জীবনের নানা অস্থিরতার ভীড়ে চাপা পড়ে যাওয়া-প্রায় ভুলে যেতে বসা বিষয়টি আবার সামনে নিয়ে আসার জন্য (Y)
@নিটোল, (Y)
আসলে অনেক বাঙ্গালিই পাহাড়িদের সমস্যাটি আসলে জানেনা। তাছাড়া আমাদের জলপাই বাহিনীও যে পাক বাহিনীর মত বর্বর হতে পারে ,এটা মানতে চায়না। তাছাড়া মিডিয়াগুলোও এ বিষয়টাকে এড়িয়ে যায়, অবশ্য দু-একটা পত্রিকা বাদে। বিপ্লব রহমানকে ধন্যবাদ পাহাড়িদের দুঃখ দুর্দশা গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। সেই সাথে দাবি জানাচ্ছি, পাহাড় থেকে জলপাই বাহিনী সরিয়ে নেয়া হোক।
@হেলাল,
এ ক ম ত। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। (Y)
লেখাটা পড়ে মন খারাপ, মন খারাপের পাহাড় দিন দিন বেড়েই চলেছে, চলবে। মানবিক মানুষগুলোর অনৈক্য এক্ষেত্রে শাসক-শ্রেণীর জন্য আর্শীবাদ।
ভ্রম সংশোধনঃ বাংলাদেশ নামক বাংলিশ ভাষাভাষির কর্তৃত্বপরায়ণ রাষ্ট্র কল্পনা চাকমা অপহরণের দায় বহন করেই চলে।
বোধের জগতটাকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে একটুখানি নাড়া দেয়ার জন্য, সাধুবাদ।
@স্বপন দা,
আবারো সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা। (Y)
আপনার জন্য থাকলো সশ্রদ্ধ সালাম। সবসময়ই সাথে আছি। এতো অনিয়মিত লেখা দিলে হবে?
@আল্লাচালাইনা,
ব্যস্ততার কারণে আগের মতো ব্লগে আসার সময় পাই না। আবার অনেক সময় মোবাইল ফোন চিপে মুক্তমনার কিছু কিছু লেখা পড়লেও প্রযুক্তিগত কারণে সেখান থেকে মন্তব্য বা পোস্ট লেখা খুব কষ্টকর। তবে চেষ্টা করবো আবারো নিয়মিত হতে। আপনাকে ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা। (Y)
কিছু বলার নেই। কেবল জানতে ইচ্ছে করে ফেরদৌস নামের প্রাণিটি আয়নায় নিজের মুখ দেখে কিভাবে! কিভাবে সে নিজের মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়!
[ব্যক্তিগত ব্লগে আপনার এই লেখাটি শেয়ার করেছি বিপ্লব’দা।]
@অনার্য সঙ্গীত, (Y)
(Y)
@আসরাফ,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। (Y)
কল্পনা চাকমার অপহরণকারীদের চরম শাস্তি হওয়া উচিত।তবে আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে আপনি পাহাড়ীদের প্রতি খুব সহানুভূতিশীল;এতটাই সহানুভূতিশীল যে পাহাড়ী ছাত্রদের কিছু অযৌক্তিক দাবিকে আপনি তাদের অধিকার আদায়ের লড়াই হিসেবে অভিহিত করছেন।পাহাড়ী আর বাংগালী ভিন্ন কেউ নয়-দুজনই মানুষ।আমাদের এখানে প্রচুর গরীব লোক আছে;দুঃস্থ আছে-পাহাড়ীদের মাঝেও একই অবস্থা।ওখানে শাসক শ্রেণী অদ্ভূতভাবে সামন্তবাদী;এরা চায় না ওখানে ব্যক্তি পর্যায়ের লোকজন স্বচ্ছল হোক।ফলে সরকারী জুজুর ভয় দেখিয়ে পাহাড়ী শাসক শ্রেণী ওখানকার পাহাড়ী জনগণের মাঝে বাংগালী বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে।ভারতের স্বার্থও আমরা জানি।আর সবচেয়ে বড় স্বার্থ হচ্ছে বাংগালী সেনাবাহিনীর।পাহাড়ে যাওয়ার কয়েক বছরের মাঝেই একেকজন অফিসার টাকার কুমির হয়ে যায়।ফলে কেউ চায় না এই সমস্যার সমাধান হোক।তার মানে কিন্তু এই না যে এটা পাহাড়ী আর বাংগালীর সমস্যা।এই জাতিভিত্তিক রেসিজম মারাত্নক বিপর্যয় ডেকে আনে।পাহাড়ী আর বাঙ্গালী খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক-এটা আমরা চাই।কিন্তু দয়া করে জাতিদ্বেষ ছড়াবেন না।
@ইমরান মাহমুদ ডালিম,
প্রচন্ত দ্বি-মত।
পার্বত্য সমস্যাটির একটি প্রধান সমস্যা সেনা কর্তৃত্ব। তবে এর প্রতিবাদ বা কল্পনা চাকমার বিচারের দাবি তোলাই যথেষ্ট নয়। কারণ, পার্বত্য সমস্যাটির আরেক একটি প্রধান সমস্যা সেটেলার বাঙালি, যারা আবার সেনা সমর্থিত। এ কারণে পার্বত্য সমস্যাটির একটি প্রধান সমস্যা পাহাড়ি-বাঙালির (সেটেলার) জাতিগত সহাবস্থানের সমস্যা, যার বিরোধের সূত্রপাত জমির মালিকানা নিয়ে। তবে সেখানে বসবাসরত সাধারণ বাঙালিদের সঙ্গে এর কোনো সর্ম্পক নেই।
— পার্বত্য সমস্যার এই অ-আ-ক-খ’র বাইরে বিতর্ক চালানো বেশ কঠিন। তবু বলি, লেখার কোথাও জাতিগত বিদ্বেষ ছড়ানো হয়নি, তেমন অভিপ্রায় বা দূরাভিসন্ধীর আভাষ দেওয়াটাই বেশ কৌতুককর। 😛
আপনাকে ধন্যবাদ। (Y)
@ইমরান মাহমুদ ডালিম,
দয়া করে একটু পরিস্কার করবেন কি ভাই?
পাহাড়ীদের শান্তিতে থাকে দেন। তাঁদের গ্রামগুলি আশান্তিময় করে তুলেছে বাংগালী সেটেলাররা।
বাংলাদেশের বাংগালী হিন্দুরা প্রায়ই পশ্চিমবংগ পলায়ন করে। বেশীর ভাগ সময়েই সামাজিক ও রাজনীতির চাপে। তাঁদের একটা পলায়নের জায়গা তো আছে (পশ্চিমবংগ )।
কিন্তু পাহাড়ীদের কোন পলায়নের জায়গা নাই। থাকলে তারা সেখানেই পলায়ন করত। আর তাদের জায়গা জমি সম্পত্তি আপনারা মনের আনন্দে ভোগ দখল করতে পারতেন। কি তাই না?
পাহাড়ীরা পাহাড়েই থাকতে বাধ্য। তাঁদের সাথে সমব্যথি হন।
@সেন্টু টিকাদার, (Y) (Y)
@সেন্টু টিকাদার,
যদি বাংলাদেশ কোন রাষ্ট্র হয়ে থাকে তবে এখানে বসবাসরত সবাই সব জায়গায় থাকাতে পারবে।সব জায়গায় এই রাষ্ট্রের সব নাগরিকের থাকার অধিকার আছে।পাহাড়ীদের যেমন সমতলে থাকার অধিকার আছে,তেমনি সমতলবাসীদেরও অধিকার আছে পাহাড়ে থাকার।ভাই এই দেশে আপনাদের মহান চিন্তা-ভাবনার কারণে মেধার মূল্যায়নও হয় না।এখানে বাংগালীর জন্য কোন সু্যোগ নেই-চাকরি,বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি থেকে শুরু করে অন্যান্য সব জায়গায় নানারকম কোটার সাথে সংযুক্ত আছে পাহাড়ী বা আদিবাসী কোটা।এটা কী সামানাধিকার দেয়ার চিত্র?নারী অধিকারের নামে যদি বাসে ড্রাইভারের পাশে কোটাযুক্ত সিটের ব্যবস্থা করা হয় তবে কী রকম সাম্য আসে তা তো দেখতে পাচ্ছি।আবেগ ঝেড়ে দু পক্ষের গরীব লোকের যাতে ভাল হয় চলুন সে ব্যবস্থার কথা চিন্তা করি।বাংগালী শোষক আর পাহাড়ী শোষকের মাঝে কোন পার্থক্য নেই।
আপনার কথাগুলো প্রচন্ড মাত্রার রেসিস্ট কথাবার্তা।পাহাড়িরা পাহাড়ে থাকতে বাধ্য-এটা কেমন কথা!!!!!
আমি সমস্ত দুঃস্থদের পক্ষে।সেটা পাহাড়ী হোক আর বাংগালী হোক।আপনারা কিছু এনজিওর প্রচারণায় ভুলে যান যে পাহাড়ীরা এখানকার আদিবাসী নয়।এদের অতীত-ইতিহাসটা জেনে নেবেন দয়া করে।আমি কিন্তু এ কথার মাধ্যমে এটা বুঝাতে চাইছি না যে পাহাড়িদের নিপীড়ন করা উচিৎ।আমি শুধু এতটুকু বলবো যে আপনার পাহাড়ীদের নিয়ে যত চেঁচান,সমতলের সত্যিকারের আদিবাসীদের নিয়ে অত কথা বলেন না।সমতলের সাঁওতাল,মুন্ডী ইত্যাদি ইত্যাদি জনগোষ্টীর কথা আপনাদের প্রচারণায় খুব কম আসে।
আর একটি কথা।আশা করি খোঁজ নিলে জানতে পারবেন যে পাহাড়ে চাকমা জনগোষ্ঠী অন্যান্য পাহাড়ী ছোট ছোট জনগোষ্ঠীর উপর কী রকম অত্যাচার চালায়।চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র বলি।এখানে আমি দেখেছি চাকমা আর অন্যান্য পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা একে অন্যের বিরূদ্ধে কী রকম বিষেদাগার করে থাকে।
@ইমরান মাহমুদ ডালিম,
কয়েকদিন আগে ফেসবুকে লিখেছিলাম:
সেন্টু সিকদারের উদ্দেশ্যে বেশ খানিকটা ব্যক্তিগত আক্রমনসহ আপনার বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যে ওই কথাটিই মনে পড়ে গেলো। তাই আপনার সঙ্গে তর্ক করা বৃথা। (N)
@বিপ্লব রহমান, আমার কথায় ব্যাক্তিগপত আক্রমণ ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য থাকলে দুঃখিত।আমাকেও সম্ভবত ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়েছে।তবে আপনাদের যদি মনে হয় আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয় নাই,তাহলে আপনাদের কথাই সঠিক।এ ক্ষেত্রে আমার অভিযোগ ধর্তব্যের মধ্যে আবার নিতে যাবেন না।
@ইমরান মাহমুদ ডালিম,
ভাইরে দোয়াও চাই; মাফও চাই। 😛
@ইমরান মাহমুদ ডালিম, পাহাড়ী শব্দ টা আপত্তিজনক।একটু চিন্তা করে দেখুন।পাহাড়িরা চট্টগ্রাম অঞ্চলের আদিবাসী। চট্টগ্রাম অঞ্চলের বাঙ্গালিদের চেহারাতেও মঙ্গোলয়েড প্রভাব বিদ্যমান।চট্টগ্রামের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাই এই অঞ্চল অধিকাংশ সময় আরাকানিজদের শাসনে ছিল।
@মন্টি ব্যারেট, আমার বরং “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং উপজাতিতে” বেশি আপত্তি আছে, দুটিই ভীষণভাবে আপত্তিজনক -সেক্ষেত্রে পাহাড়ী শব্দটি যথেষ্ট মূল্যবান । যেকোন দেশে ভূমিকে দুইভাবে ভাগ করা হয় “পাহাড়ী এলাকা এবং সমতল এলাকা” । পার্বত্যবাসী যেহেতু পাহাড়ে বসবাস করছে পাহাড়ের লোক বললে কোন জাতিবিদ্বেষ আছে না কিন্তু “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং উপজাতিতে” ভীষণ জাতিবিদ্বেষ এবং হীনমন্যতা বিদ্যমান ।
@ইমরান মাহমুদ ডালিম,
আপনার ‘অযৌক্তিক দাবীকে’ বলাতে আমার দ্বিমত আছে । আপনি যেকোন দাবীকে খুব সহজে অযৌক্তিক বলে উড়িয়ে দিতে পারেন না । আপনাকে দাবীটি কি অবশ্যই খটিয়ে দেখতে হবে এটা কতটা যৌক্তিক অথবা অযৌক্তিক ? বাংলাদেশের সাধারণ আইনে ও কিন্তু অপহরণকারী যেই হোক না কেন তদন্তের নিরপেক্ষতা এবং যথাযত শাস্তির ব্যবস্থার কথা উল্লেখ আছে । তার চেয়ে বর কথা হচ্ছে কল্পনা চাকমা ছিলেন একজন মুক্তিকামী নারীনেত্রী । কল্পনা চাকমাকে অপহরণ করার সময় তার ভাইগুলোকে ও একত্রে অপহরণ করা হয় । সাক্ষ্য এবং প্রমাণ এর চেয়ে আর বেশি কি আশা করার আছে ? এটা অধিকার আদায়ের অবশ্যই মূলপ্রেক্ষাপথ নয় কিন্তু লেখক হয়ত ভিন্নমাত্রায় অনেক কিছু লিখে ফেলেছেন যা আলোচনার আসল বিষয়বস্তুকে হালকা করে দিয়েছে । তবু ও লেখক যে সচেতনা সৃষ্টি করছেন তারজন্য লেখককে অবশ্যই ধন্যবাদ ।
প্রচন্ডভাবে একমত । তাই মানুষ হিসেবে দেখতে হবে পাহাড়ীদের কোন অধিকারগুলো খর্ব হচ্ছে ?
অবশ্যই এটা কখনো পাহাড়ী-বাঙালীর সমস্যা হতে পারে না । এটা বরং শাসকশ্রেণী এবং নির্যাযিত জনগোষ্ঠীর সমস্যা ।
এক্ষেত্রে আমি ও একই মনোভাব পোষণ করি । আমি চাই না জাতিবিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ুক । সেজন্য জাতিবিদ্বেষ না ছড়াতে সংখ্যালঘুদের অধিকারকে মূল্যায়ন করা উচিত । মানুষ হিসেবে তারা ও সমান অধিকারের প্রাপ্য ।
(Y)
@স্বাক্ষর শতাব্দ,
অনেক ধন্যবাদ। (Y)