এ লেখাটি মূলত মাসিক শিক্ষাবার্তা এপ্রিল-২০১১ সংখ্যায় প্রকাশিত জনাব জাহাঙ্গীর হোসেন-এর “প্রসঙ্গ ২০১১’র বাংলাঃ একটি আধুনিক নিজস্ব ব্যাকরণ ও ভাষা সংস্কার অত্যাবশ্যক” শীর্ষক প্রবন্ধের পেক্ষাপটে লেখা। লেখকের সাথে অনেক বিষয়ে একমত হলেও কিছু বিষয়ে আমার দ্বিমত রয়েছে। লেখাটির মূল বিষয়গুলো তুলে ধরে আমার দ্বিমতের কারণগুলো নিচে তুলে ধরা হলো। মূল লেখাটি পড়তে উপরোক্ত পত্রিকাটি পড়তে পারেন।
প্রথমেই দেখে নিই লেখাটিতে যেসব বিষয়গুলোতে আলোকপাত করা হয়েছে এবং ভাষা সংস্কারের পক্ষে তাঁর উপস্থাপিত কারণগুলোঃ-
বাংলা ভাষার নিজস্ব কোন আধুনিক ব্যাকরণ নেই। আমাদের বর্তমান যে বাংলা ভাষার ব্যাকরণ রয়েছে তা মূলত সংস্কৃত ব্যাকরণ এবং কিছুটা ইংরেজী ব্যাকরণের ছোঁয়াও রয়েছে তাতে। এর প্রধান কারণ হল প্রথম দিককার যেসব বাংলা ব্যাকরণগুলো রচিত হয়েছে তার কোনটিই বাঙালির লিখিত ছিল না। রচয়িতাগণ পাণিনীয় ব্যাকরণিক ধারাকে গ্রহণ করেই বাংলা ভাষার ব্যাকরণ প্রণয়ন করেন যা বাংলা ভাষার জন্মের অনেক আগে রচিত। সুনীতিকুমার কিংবা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহও এ বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। সংস্কৃত বৈদিক ভাষা থেকে উদ্ভুত কিন্তু বাংলা ভাষা কোন সংস্কৃত ভাষা নয়; সংস্কৃতের মত এর প্রতিটি বর্ণের উচ্চারণও স্পষ্ট নয়। সংস্কৃত লিপি থেকেও বাংলা লিপির রয়েছে বেশ পার্থক্য। সুতরাং সংস্কৃত ব্যাকরণকে বাংলার উপর চাপিয়ে দেয়ায় উচ্চারণসহ বেশ কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে।
আমাদের ণ-ত্ব/ষ-ত্ব বিধান থেকে শুরু করে ক্রিয়ামূল-ধাতু, সমাস ইত্যাদি হুবহু সংস্কৃত ব্যাকরণের ন্যায় হওয়ায় আমাদের শিক্ষার্থীদের মুখস্ত করা ছাড়া উপায় থাকে না।
বাংলা ব্যাকরণের রূপতত্ত্ব ও বাক্য তত্ত্বকে সময়োপযোগী ও কম্পিউটার-ইন্টারনেটের ব্যবহার উপযোগী করার জন্যে বাংলা বর্ণগুলোকে ল্যাটিন-ইংরেজী হরফে ব্যবহারের চিন্তা করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে তিনি মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন।
তিনি বাংলা বর্ণমালার অনুচ্চারিত ধ্বনিবিশিষ্ট বর্ণগুলোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বর্ণগুলো হল-ণ, ঞ, ষ, শ, ঈ, ঊ, ড়, ঢ়, ঋ, য, ঁ। এছাড়াও ঘ, ঢ, ধ, ভ বর্ণগুলোর অপ্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি দাবী করেছেন।
বাংলা সংখ্যাগুলোর অনেকগুলো (২-2, ৪-8, ৭-9) ইংরেজী-ল্যাটিন সংখ্যার মতই দেখতে তাই অনেক সময়ই সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়া ৫ এবং ৬ হাতে লিখলে অনেক সময়ই একইরকম হয়ে যায়। তাই এগুলোর পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছেন।
এছাড়া যুক্তবর্ণগুলোকে তুলে দিয়ে তার পরিবর্তে বর্ণগুলোকে উচ্চারণ অনুযায়ী ভেঙে লেখার পক্ষে মত দিয়েছেন।
বাংলা ভাষা সংস্কারের দাবি তুলে তার লেখাটিতে অনেক ক্ষেত্রেই বেশ যুক্তিসংগত কারণ তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু বাংলা ভাষার বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার দাবীগুলো কতখানি যৌক্তিক তা বিচার করে দেখা যাক।
বর্তমানে বাংলা ভাষায় রচিত ও প্রকাশিত বই-পত্রিকা-ম্যাগাজিন ইত্যাদির রয়েছে এক সুবিশাল ভাণ্ডার, যার বেশিরভাগই নতুন করে মুদ্রণ একেবারেই অসম্ভব একটি কাজ। একথা লেখকও নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন। লেখকের উপস্থাপিত কারণসমূহের মধ্যে অন্যতম একটি কারণ ছিল যে কোমলমতি শিশু থেকে সবারই বেশ কিছু ব্যাকরণ নীতি, বানানরীতি ইত্যাদি হুবহু মুখস্থ করতে হচ্ছে যা বর্তমান সময়ের শিক্ষানীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কিন্তু লেখকের দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী ভাষা সংস্কার করলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম পূর্ব প্রকাশিত বইগুলো কিভাবে পড়তে শিখবে? পড়তে হলে তাদেরকে বর্তমান ভাষারীতি তো শিখতেই হবে সাথে পূর্বটাও শিখতে হবে। ধরে নিলাম যে বর্তমান ভাষারীতিটি শিশুদের সহজাতভাবেই আয়ত্তে আসবে, তাহলেও পূর্ব ভাষারীতি, বানাননীতি তাদেরকে মুখস্থ করতে হবে। তা না হলে তারা সে জ্ঞান থেকে একেবারেই বঞ্চিত হবে।
এটা ঠিক যে আমরা মুদ্রা থেকে ণ কিংবা তালু থেকে শ উচ্চারণ করতে পারি না, ড়, ঢ় ইত্যাদি বর্নগুলোর ধ্বণিগুলোও আমরা সঠিকভাবে উচ্চারণ করতে পারি না, তাই বলে যে আমরা ঘ, ঢ, ধ, ভ এগুলোও উচ্চারণ করতে পারি না এমন নয়। আমরা ধানকে দান বলি না, ভাতকে বাত বলিনা, ঘরকে গর বলি না। সুতরাং একেবারেই কম প্রচলিত বর্ণগুলো যেমন ঈ, ঊ, ঞ, ঋ, ড়, ঢ়, ঁ ব্যবহার তুলে দিলেও দেয়া যেতে পারে বলে মনে করি কিন্তু ঘ, ঢ, ধ, ভ বর্ণুগলো তুলে দেয়ার চিন্তাকে অযৌক্তিক বলতে হয়। প্রথমোক্ত কারণেই ঈ, ঊ, ঋ, ঞ, ড়, ঢ়, ঁ বর্ণগুলো বর্ণমালা থেকে তোলা সম্ভব নয়, কেবল নতুন করে ব্যবহার বন্ধ করা যেতে পারে। ণ, শ, ষ এর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম চালু করা যেতে পারে বলে মনে করছি।
বাংলা বর্ণমালাকে ল্যাটিন-ইংরেজী হরফে লেখার ক্ষেত্রে তার যুক্তিটি বেশ অদ্ভুত লেগেছে। বর্তমানে বাংলা ইউনিকোডে লেখা যায় এবং ট্রান্সলিটারেশন দিয়ে অন্য ভাষা থেকে বাংলায় অনুবাদ করা যায়। বর্তমানে ইন্টারনেটে বাংলার ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং দিন দিন ক্রমশ বাড়ছে। বাংলা ভাষায় ব্যবহারোপযোগী সফটওয়্যারও তৈরি হচ্ছে। সুতরাং তার এই যুক্তিটিও মেনে নেয়া যায় না।
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত বেশকিছু যুক্তবর্ণের ব্যবহার বেশ ঝামেলাপূর্ণই বটে। ক্ষ কখনো খ-এর মত কখনো খ্খ-এর মত উচ্চারিত হয়। এছাড়া ক্ষ, ক্ষ্ম ও হ্ম যুক্তবর্ণগুলো দেখতে প্রায়ই একইরকম। এরকম আরো কিছু বর্ণ রয়েছে। তাই এগুলোসহ অন্য যুক্তবর্ণগুলোরও সংস্কার আবশ্যক। কিন্তু সংস্কারের পূর্বে ভেবে দেখতে হবে যে এতে ঝামেলা কমবে নাকি বাড়বে ?
সংখ্যার সংস্কার করাটা খুবই যুক্তিসংগত। মোবাইল ব্যবহারের বদৌলতে বর্তমানে শিক্ষিত অশিক্ষিত প্রায় সবাইই ইংরেজী-ল্যাটিন হরফের সংখ্যাগুলো চিনতে পারে। বাংলা সংখ্যাগুলোকে ইংরেজী-ল্যাটিন হরফ দিয়ে লেখার ব্যবস্থা করলে কারো সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। চীনসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই এ ব্যবস্থা চালু আছে।
সর্বোপরি আমাদের যেটা ভাবতে হবে আমরা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছি। আমাদের রয়েছে একটি ভাষাগত জাতিসত্তা। সংস্কারের ফলে আমাদের ভাষাটির যে পরিবর্তন হবে তার সাথে আমরা কতখানি খাপ খাইয়ে নিতে পারব। আমাদের দেশটা খুব ছোট হলেও এখানে বাংলা ভাষার বেশ কয়েকটি কথ্য রূপ রয়েছে। শুনতে খারাপ লাগলেও এটা সত্যি যে আমরা যে বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিলাম তা আসলে বাংলার একটি প্রমিত রূপই, কোন কথ্যরূপ নয় এবং তখনকার সময়ে যে প্রমিত রূপটি ছিল সেটা থেকে অনেক বেশি বিচ্যুতি আমাদের ভাষাগত ঐতিহ্যকে হুমকির মুখে ফেলবে কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। যেহেতু বর্তমানে আমাদের ভাষার এই রূপটি একটি সুবিশাল ব্যাপ্তি নিয়ে বিস্তৃত, তাই বাংলা ভাষার উৎসগত রূপ তথা উচ্চারণগত রূপ যাই হোক না কেন তার আমূল সংস্করণ ভাষাটির সৌন্দর্য বিনষ্ট করতে পারে। এ ছাড়াও একই সাথে যদি পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষার সংস্কার না হয় তা দুই দেশের সংস্কৃতিতে আরো বেশি দূরত্ব তৈরি করবে। ইতোমধ্যেই দুই দেশে দুটি বানানরীতি চালু রয়েছে, রয়েছে বাংলা ক্যালেন্ডারের পার্থক্যও; যা আমাদের দুই দেশের সাংস্কৃতিক দূরত্ব বাড়িয়ে তুলছে। সুতরাং লেখকের সাথে সুর মিলিয়েই বলছি বাংলা ভাষার যে কোন সংস্কার করা হলে তা দু’দেশ মিলিত হয়েই করতে হবে। তা না হলে বাংলা ভাষার দুটো মেরুকরণ সৃষ্টি ভাষাটির আরো বিস্তৃতি রোধ করবে যা বাঙালি হিসেবে আমরা মোটেই চাই না।
@লেখক,
কাঠুরে হয়ে ভাষাতত্বের পিছনে লাগার ব্যাপারটা আমার ভালো ঠেকছে না। আর জাহাঙ্গীর হোসেনের মত অযৌক্তিক কথা আগেও অনেকেই বলেছেন। আমার মনে হয়, মানুষ ভাষার কিছুটা সমৃদ্ধি করতে পারে, কিন্তু সংস্কার করতে পারেনা। এটা নিয়ন্ত্রনের বিষয় নয়। একটা ভাষার দূর্বল দিক থাকতে পারে, কিন্তু তার শক্তির দিকটি অনেক বিশাল…
@ভৈরবানন্দ,
সুন্দর বলেছেন ৷ (Y)
@শুভ্র, ধন্যবাদ।
দেখুন চিন্তা ক’রে, কয়েক শতাব্দী আগে ‘ক’ কিন্তু এখনকার ‘ক’ এর মতো ছিলনা, তবু আপনি দেখলেই বুঝতে পারবেন, হ্যা এটা ‘ক’ই ছিল। তাই ব’লে ‘ক’ কে ‘K’ বানাবেন কিভাবে? নিজেকে হারিয়ে যে আধুনিকতা তা হলো ভন্ডামি। আমরা অবশ্য জাতিগতভাবেই অনেক পুরাতন ভন্ড, আর তাই বুদ্ধের দর্শন ছেড়ে দলে দলে বখতিয়ার খিলজি হয়েছিলাম। আমাদের বোঝা উচিৎ যে, ‘MM Dut’ এর থেকে ‘জীবনানন্দ’ অনেক বেশী আধুনিক, তা প্রমানের জন্যে জীবনানন্দকে ইংরেজী বর্ণ ব্যবহার করতে হয়নি…
শিক্ষাবার্তার মূল প্রবন্ধকারের চিন্তাপদ্ধতিতে কিছু ত্রুটি আছে সেকথা আমি বলবো না। বরং তিনি কোন বিশেষ মহলের পক্ষাবলম্বন করে মহান বাংলা ভাষার অঙ্গহানির চেষ্টা করছেন কি না তাই খুঁজে দেখতে চাই (তার রাজনৈতিক পরিচয়)।
বাংলা লিপির কোন সংস্কার কাম্য নয়। ব্যাকরণে সংস্কার করা উচিত। কিন্তু লিপি সংস্কার? না! এটা মেনে নেয়া যায় না। ৯ (লি) কে বাদ দেয়া হয়েছে, সেরকম কোন অজুহাতে ঋ, ঢ প্রভৃতি বাদ দিতে হবে? তাহলে ঋতু, ঋষি, ঋণ, ঋদ্ধ হবে কিভাবে? ঢাক, ঢেকি, ঢেঁড়শ লিখব কিভাবে? আষাঢ় মাসকে কি তাহলে ‘আসার’ লিখতে হবে? ধান, ভাত, ঘুম কিভাবে লিখব? বারি এবং বাড়ি তো আলাদা জিনিস। ‘সান্তি’ লিখে কি শান্তি পাওয়া যাবে?
ইংরেজিতে লিখতে লিখতে বাংলা সংখ্যার রূপ ভুলে যেতে বসেছিলেন, বহুদিন বাংলায় সংখ্যা লেখা হয়না, সেজন্যই ক্যাশিয়ার ভুল করেছে। নিজ ভাষা ভোলার শাস্তি সে পেয়েছে আর দোষ হল বাংলা ভাষার? আশ্চর্য! আমারও তো ইংরেজী হাতের লেখায় 4 এর সাথে 9, 1 আর 7 এবং 5 ও 6 নিয়ে সমস্যা হয়। সেজন্য এখনও 7 লিখে পেট কেটে দেই।
মালয়েশিয়া (নাকি ইন্দোনেশিয়া?) তাদের নিজস্ব লিপিকে বিসর্জন দিয়েছে বাণিজ্যে সাফল্য পাবার লোভে। তারা হয়ত সফল হয়েছে, কারণ তাদের ভাষা নিয়ে কোন রক্তিম ইতিহাস নেই। আমরা কি অর্থনীতির কাছে তাদের মত আত্মসমর্পন করবো? যদি করতে হয়, তাহলে তো অন্য কথা। তবে তার পায়তারা বোধহয় চলছে। পাকিস্তানীদের অসমাপ্ত কাজ আমরাই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। তারই বোধহয় চিহ্ন দেখা যাচ্ছে এফএম রেডিও টিভিতে। পতন থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে কি?
@মুক্তি রানী,
তার লেখাটি নিয়ে যে বিতর্ক হতে পারে সেটা শিক্ষাবার্তা কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারছিলেন, তাই সেখানে লেখকের ইমেইল দেয়া ছিল। এবং কর্তৃপক্ষ নিচে লিকে দিয়েছেন-
‘এই লেখার প্রতি ভিন্নমত বা সহমত পোষণ করে কেউ লেখা পাঠালে আমরা তা প্রকাশ করবো। লেখকের বিভিন্ন রকম মত প্রকাশের স্বাধীনতায় আমরা বিশ্বাসী।’
আপনারা কেউ একজন একটা প্রবন্ধ লিখে শিক্ষাবার্তায় পাঠিয়ে দিন। সময় সংকটের জন্য আমি লিখতে পারছি না। তবে এই লেখাটির লিংক লেখককে মেইল করে দিয়েছি।
ব্যাংকারদের সমস্যাটা ঠিক এরকম নয়। ব্যাংকারদের এত ব্যস্ততার মধ্যে কাজ করতে হয় তা ব্যাংকে চাকুরী না করলে বুঝবেন না। তৃতীয়/চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকে ঢুকেও তা বুঝবেন না কারণ এসব ব্যাংকে ঢুকলে সবাই খুব শৃঙ্খলা মেনে চলে কিন্তু ১ম প্রজন্মের ব্যাংকে ঢুকে কোন গ্রাহকই শৃঙ্খলা মেনে চলতে চায় না। আপনি স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড বা এইচ.এস.বি.সি তে ঢুকলে মোবাইল বন্ধ রাখবেন অথবা গার্ডের কাছে জমা দিবেন কিন্তু উত্তরা, পূবালী, সোনালীতে ঢুকে মানুষ চেচিয়ে চেচিয়ে মোবাইলে কথা বলে। এটা খুব বেশি সত্যি।
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
@মুক্তি রানী,
চমৎকার বলেছেন।
ভাষা নিয়ে বা ভাষার সরলিকরন নিয়ে অনেকদিন থেকেই অনেক কথা শুনে আসছি ৷ সব সময়ই মনে হয়েছে শুধু লিখে দৃষ্টি আকর্ষন করা ছাড়া আর কোন উদ্দেশ্য নেই এসবের পেছনে ৷
এই ব্যাপারটা জনাব জাহাঙ্গীর হোসেন আমলেই নেননি ৷ সন্ন্যাসী, আমি আপনার সাথে একমত ৷ আপনার যুক্তিগুলোও সুন্দর ৷ তবে আসল কথা হলো জাহাঙ্গীর সাহেবের মত যত বড় পন্ডিতই হোকনা কেন ভাষার সংস্কার সাধন অতখানি সহজ বোধহয় নয় ৷ ভাষা মানুষের মুখ থেকে লেখায় যায়, উল্টোটা নয় ৷
বাংলা ভাষাকে বিজ্ঞান চর্চার আরো বেশি উপযোগী করে তোলার দিকেই মনে হয় দৃষ্টি দেওয়ার দরকার ৷
@শুভ্র,
আপনার সাথে একমত। লেখককে এই লেখাটার লিংকটা মেইল করে দিচ্ছি। দেখি তিনি কী বলেন।
সন্ন্যাসী,
আমার মনে হয় ডঃ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ উত্তর বাংলা ভাষার রূপটি যথাযথ।
কথিত ঈ, ঊ, ঞ, ঋ, ড় এবং ঢ় তুলে দিলে বাংলা ভাষার প্রভূত অঙ্গহানী সহ বিকৃতি এবং বানান রীতির ক্ষেত্রে নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে বলে মনে করি। ণ, শ, ষ এর ক্ষেত্রেও আমার মতামত অনুরূপ।
আমি দক্ষিন কোরিয়াতে এসে দেখি, এদের নিজস্ব ভাষা-সংখ্যা থাকা সত্ত্বেও কেবল মাত্র সংখ্যা প্রকাশের কোন চিহ্ন না থাকায় ল্যাটিন-ইংরেজী রীতিতে সংখ্যা প্রকাশ করে থাকে। অথচ আমাদের বাংলার নিজস্ব সংখ্যা-চিহ্ন আমাদের ভাষার মৌলিকত্বকেই ধারন করে। এটি আমাদের গর্বেরও কারণ। আমার যতদূর মনে পড়ে (ভুল হলে দয়াকরে সংশোধন কাম্য) আর্যভট্টের সময় ভারতীয় সংখ্যারীতির উদ্ভব। উত্তর ভারতীয় সংস্কৃত তৎসম থেকে তৎভব, পরে বাংলার উদ্ভব বলে ভাষাতত্ত্ববিদদের ধারনা। সেই হিসেবে সংস্কৃত এর সাথে আমাদের বাংলা হরফের সাদৃশ্য এবং বৈসাদৃশ্য উভয়ই বিদ্যমান। প্রাচীন ভারতের গনিত-শাস্ত্র অনেক শক্তিশালী ছিলো বলেই জানতাম। সেই ক্ষেত্রে অন্য-বহুল প্রচলিত ভাষার সাথে চেহাড়ায় সাংঘর্ষিক বিধায় আমাদের অংক-চিহ্নকে বিসর্জন দিতে হবে যুক্তিটি একেবারেই অনভিপ্রেত নয়কি? ৫ এবং ৬ তো আমার কাছে মনে হয় চিহ্নের ধারাবিবর্তন!
যুক্তাক্ষরের ক্ষেত্রেও আমার মতামত ভিন্ন, তবে হ্যাঁ ইউনিকোডে পরিবর্তন সম্ভব নয় এমন যুক্তাক্ষর গুলোকে দুইবাংলার বিশেষজ্ঞের যুক্ত প্যানেলে যৌক্তিক বিন্যাসে সরলীকৃত করা যায়কিনা দেখা যেতে পারে।
সব শেষে, ল্যাটিন-ইংরেজী হরফে বাংলা?! এ বাংলার বিরুদ্ধে আগ্রাসী মনোভাবেরই প্রতিফলন। যেভাষার জন্যে রাজপথ রক্ত-রঞ্জিত হয়েছে, সভ্যতার ইতিহাসে যে ঘটনা বিরল, যা আমাদের জাতিগত পরিচয়ের স্বাক্ষর স্বরূপ, ভাবাই যায় না।
@কেশব অধিকারী,
আপনার মন্তব্য খুব ভাল লেগেছে। মন্তব্যটা যদি সম্পাদনা করে দেয়া যায় তো খুব ভাল হয়। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন।
বিশ্বায়ণের সুশীতল বায়ু প্রবাহিত হচ্ছে, বাংলাদেশের বেতার-টিভি থেকে প্রচারিত হচ্ছে বাংলিশ। গত কয়েকদিন আগে দৈনিক জনকন্ঠে এ নিয়ে একটা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, তাতে দেখানো হয়, কোন কোন টিভি এবং রেডিও থেকে বাঙলা ইংরেজি মিলিয়ে “এনিকিছু” শুরু হয়ে গেছে।
এ মন্তব্য কারো চোখে পড়লে অনুরোধ থাকলো, দৈনিক জনকন্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি পড়ার জন্যঃ http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=15&dd=2011-05-29&ni=60096
উক্ত পত্রিকা থেকে ‘এন্ড দিস ইজ আর জে অপু চলছে ঢাকা কলিং ঘড়িতে সময় একজ্যাকটলি ৫টা ৪৮ মিনিট এন্ড ইটস টাইম ফর ওয়েদার আপডেট।’
সুতরাং ল্যাটিন-ইংরেজী হরফে বাংলা না লিখে সরাসরি ইংরেজী চালু করে দিলেই ভাষাগত সব সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু ‘T’ কখন ‘ট’ অথবা ‘চ’ হবে , একচুলি এইডা কুনো প্রব্লেম না।
@স্বপন মাঝি,
এসব শুনলে মনে হয় এদেরকে ধরে বাংলিশ গুলে খাইয়ে দিই। ‘এনিকিছু’ পড়ে হাসি চেপে রাখতে পারলাম না।
@স্বপন মাঝি,
কিভাবে যেনো ব্যপারটি ঘটেছে! আমি চেষ্টা করলাম কিন্তু মন্তব্য সংশোধনের কোন উপায় পেলাম না। আ্যডমিনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। দয়া করে একটু সাহায্য করুন!
@কেশব অধিকারী,
আপনার মন্তব্য ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।
@মুক্তমনা এডমিন,
ধন্যবাদ মুক্তমনা আ্যডমিন। তবে মন্তব্যের শেষের এই অংশটুকু মুছে দিলে ভারি কৃতার্থ হতাম :
“রীতিতে সংখ্যা প্রকাশ করে থাকে। অথচ আমাদের বাংলার নিজস্ব সংখ্যা-চিহ্ন আমাদের ভাষার মৌলিকত্বকেই ধারন করে। এটি আমাদের গর্বেরও কারণ। আমার যতদূর মনে পড়ে (ভুল হলে দয়াকরে সংশোধন কাম্য) আর্যভট্টের সময় ভারতীয় সংখ্যারীতির উদ্ভব। উত্তর ভারতীয় সংস্কৃত তৎসম থেকে তৎভব, পরে বাংলার উদ্ভব বলে ভাষাতত্ত্ববিদদের ধারনা। সেই হিসেবে সংস্কৃত এর সাথে আমাদের বাংলা হরফের সাদৃশ্য এবং বৈসাদৃশ্য উভয়ই বিদ্যমান। প্রাচীন ভারতের গনিত-শাস্ত্র অনেক শক্তিশালী ছিলো বলেই জানতাম। সেই ক্ষেত্রে অন্য-বহুল প্রচলিত ভাষার সাথে চেহাড়ায় সাংঘর্ষিক বিধায় আমাদের অংক-চিহ্নকে বিসর্জন দিতে হবে যুক্তিটি একেবারেই অনভিপ্রেত নয়কি? ৫ এবং ৬ তো আমার কাছে মনে হয় চিহ্নের ধারাবিবর্তন!”
@কেশব অধিকারী,
মুছে দেওয়া হলো শেষ অংশটুকু।
@স্বপন মাঝি,
জনকন্ঠের এই প্রতিবেদনটি পড়েছি, খুব কষ্ট পেয়েছি। সাথে সাথে মনে হয়েছে এ-কেমন চেতনা নিয়ে এগিয়ে আসছে আমাদের আগামী প্রজন্ম! ভাষা তার সব বৈশিষ্ট নিয়ে হয়তো স্থির নয়, তাই বলে এ কেমন অনুশীলন? এ কি দেশ, জাতি, ভাষা, সংস্কৃতির প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন নয়? রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিৎ বিষয় গুলো যথাযথ পর্যবেক্ষনে আনা এবং ব্যবস্থা গ্রহনকরা। কারন ভবিষ্যত প্রজন্ম এসব মিডিয়ার ইচরেপাকামোতে (তাদের ভাষায় smartness) অভ্যস্ত হলে আমাদের গৌরবের আর কিছুই থাকবে না।
@কেশব অধিকারী,
আপনার মন্তব্যটিতে পোস্টটি পূর্ণতা পেল। একই কথা কয়েকবার পোস্ট হয়ে গিয়েছে আশা করি মডারেটরগণ ঠিক করে দিবেন। তবে বাংলা এবং ইংরেজীর প্রায় একই রকম সংখ্যা প্রায়শই ঝামেলার সৃষ্টি করে। ব্যাংকিং চাকুরীজীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি ৪ ও ৮ এবং ৭ ও ৯ ব্যাংকারদেরকে বেশ কঠিন বিপদেই ফেলে। একবার আমার শাখার ক্যাশিয়ার ৭০০০০ এ ৯০০০০ পেমেন্ট দিয়ে ফেলেছিল যা আর পাওয়া যায়নি। বেচারীকে ২০০০০ টাকা মাশুল দিতে হয়েছিল যদিও তা প্রায়ই তার এক মাসের বেতন। ৪ লাখে ৮ লাখ হলে কী হবে ভেবে দেখুনতো!
এজন্য আমি সংখ্যা সংস্কারে সহমত পোষণ করছি।
@সন্ন্যাসী,
আমি এই মাত্র আপনাদের পরামর্শক্রমে আ্যডমিনের সাহায্য চেয়েছি। ঠিক হয়ে যাবে আশা করছি।
ব্যংকিং এর ক্ষেত্রে যে সমস্যার কথাটা বলেছেন, এটি সত্যি, এবং শুধু ব্যংকিএই নয় অন্যান্য ক্ষেত্রেও এই সমস্যা রয়েছে। যেমন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাটা লিখতে, কিংবা ক্রমিক সংখ্যা বসাতে প্রায়ই এই বিভ্রান্তি চোখে পড়ে। তাই বলেতো ভাষার মৌলিকত্ত্বকে বিসর্জন দেওয়া যায়না। সেক্ষেত্রে সতর্কতাই একমাত্র উপায়। তবে ব্যংক গুলো তাদের নথিতে বাংলা এবং ইংরেজী উভয় ভাষার জন্যে নির্ধারিত জায়গা করে দিতে পারে। তাতে দ্বিধা (confusion) অনেকটা দুর করা সম্ভব। আমার তাই মনে হয়।
@কেশব অধিকারী,
গ্রাহকদের যদি বাংলা বা ইংরেজী যেকোন একটি ভাষা ব্যবহার করাতে বাধ্য করানো যেত তাহলেই কেবল এ সমস্যার সমাধান হত। কিন্তু তা একেবারেই অসম্ভব।
@সন্ন্যাসী,
ব্যাংকারদের উচিত কর্মজীবন শুরু করার আগে বেশকিছুদিন নিয়মিত চিত্র-প্রদর্শনীতে উপস্থিত হয়ে সেগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা। তা না হলে এ ভূল 4 আর 9, 1 আর 7 এবং 5 আর 6 নিয়েও হতে পারে।
সারাদিন কাজ করে এখন রাতের ঘুম শেষ। কিছুতেই মাথায় ঢুকছে না ৪ ও ৮ এবং ৭ ও ৯ দেখতে একরকম মনে হয় কেন? আমার তো ইংরেজীর 4 আর 9, 1 আর 7 এবং 5 আর 6 নিয়ে ঘোরতর বিভ্রান্তি হ্য়, তবে ছাপার অক্ষরে নয়, হাতের লেখায়।
@স্বপন মাঝি,
হাতের লেখার ক্ষেত্রে এ সমস্যা বোধ হয় সবারই হয়। তাই বলে ঘুম শেষ করেছেন! বাংলাদেশে ব্যাংকগুলোয় সমস্যা হল কেউ বাংলায় চেক লিখেন কেউ লেখেন ইংরেজীতে আবার কেউ কেউ দুটোই ব্যবহার করে ফেলেন। গ্রাহককে কিছু বলাও যায় না।
“Customer is the second god to the bankers.” This is the principle of banking.
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে লিখেছেন।(ন, ণ);(স,শ ,ষ) তিনটা ‘শ’ ।(ই ,ঈ )দুইটা ই।ং,ঙ; য ফলা এবং য ফলা আকার অনেক সময় একই রকম উচ্চারিত হয়।তাই লিখার সময় বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়।
@তামান্না ঝুমু,
এরকম বিভ্রান্তি আসলে সব ভাষাতেই আছে। situation শব্দটাকে দেখেন। একটা T-ও T-এর মত উচ্চারিত হয়নি। ইংরেজীতো প্রায় সব ভাষাকেই নিজের পেটের ভিতর গ্রোগাসে গিলে ফেলে ফেলে ফুলে-ফেপে মোটা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এবং ইংরেজী ব্যাকরণ বা বানানরীতি দিয়ে অনেক সময়ই আপনি সঠিক উচ্চারণটি ধরতে পারবেন না।
“আমরা যে বাংলা ভাষার জন্যে প্রাণ দিয়েছিলাম তা আসলে বাংলার একটি প্রমিত রূপই”
একমত হতে পারলাম না । আমাদের ভাষা আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল আমাদের মায়ের ভাষাকে রক্ষা করা । হোক তা প্রমিত অথবা কথ্য রূপ । ভাষার একটা নিজস্ব গতি আছে । তার এ গতিপথে বাঁধার সৃষ্টি করা অনুচিত বলেই মনে করি ।
যদি প্রমিত রূপের জন্যই কেবল ভাষা আন্দোলন হয়ে থাকে, তাহোলে নিচের বাক্যটিকে কি ভাবে ব্যাখ্যা করবেন ?
“ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চাই”
@ছদ্মবেশী,
লেখকের সঙ্গে এখানে দ্বিমত করার খুব বেশী অবকাশ নেই। কারণ ‘৫২ র ভাষা আন্দোলনটি ছিলো রাষ্ট্র ভাষা বাংলাকে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। আর তার প্রতিষ্ঠানিক রূপ প্রমিত-ই, কথ্য নয়।
—
@ সন্ন্যাসী, ছোট্ট, কিন্তু সহজভাবে উপস্থাপিত চিন্তাশীল লেখার জন্য ধন্যবাদ। চলুক। (Y)
@ছদ্মবেশী,
বিপ্লব রহমান যা বলেছেন আমিও তাইই বুঝাতে চেয়েছিলাম।
@ বিপ্লব রহমান,
ধন্যবাদ। আমি বড় করে লিখতে পারি না। এটা আমার ছাত্রজীবনের রোগ। পরীক্ষার খাতায় লুজশীট 🙂 নেয়ার অভিজ্ঞতা ছিল না। :))
@সন্ন্যাসী, @সন্ন্যাসী,
ধন্যবাদ ।
কিন্তু বিপ্লব রহমান যা বুঝিয়েছেন আমি ঠিক তা ইঙ্গিত করি নি । আমি বলতে চেয়েছিলাম যে ভাষা আন্দোলন রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে হয়েছিল সত্যি । তাই বলে কি আমরা ভাষার কথ্য রূপকে রক্ষা করব না ? এটা আমাদের ভাষা সংস্কৃতির অংশ নয় কি ?
এবার বাংলা ভাষার সংস্কার প্রসঙ্গ আসি । এ ব্যাপারে প্রপঞ্চ বিস্তারিত বলেছেন । আমি শুধু দুইটা কথা বলব ।
১.আমরা বীরের জাতি বলে নিজেদের দাবি করি । কিন্তু অন্য ভাষার জন্য আমাদের নিজস্ব ভাষার সংখ্যাবাচক শব্দ গুলোতে খরগাঘাত কর অপমানজনক বলেই মনে করি । বাংলা চার এবং ইংরেজী আট একক ভাবে অবস্থান করলে কিছুটা সমস্যা হয় ঠিকই, কিন্তু অন্য সংখ্যাগুলোর ক্ষেত্রে দেওয়া যুক্তিগুলো ভাত্তিহীন মনে হয়েছে । একটু সাবধান হলেই আমরা সমস্যাগুলোকে অতিক্রম করতে পারব ।
২. অনেক বাংলা বর্ণকে অপ্রয়োজনীয় মনে হলেও মোটেও সেগুলো অপ্রয়োজনীয় নয় । উচ্চারনে সেগুলো ব্যাপক ভূমিকা রাখে । “উষা” এবং “ঊষা” শব্দদুটি লক্ষ্য করলেই তা বোঝা যায়।
জাহাঙ্গীর হোসেন সাহেবের প্রস্তাবগুলোর বেশিভাগই বাস্তবায়ন অসম্ভব আমার ধারণা।
ভাই, আপনার লেখায় আমি একমত, বাট
বাংলা বর্ণমালাকে ল্যাটিন-ইংরেজী হরফে লেখার ক্ষেত্রে তার যুক্তিটি বেশ অদ্ভুত লেগেছে। বর্তমানে বাংলা ইউনিকোডে লেখা যায় এবং ট্রান্সলিটারেশন দিয়ে অন্য ভাষা থেকে বাংলায় অনুবাদ করা যায়। বর্তমানে ইন্টারনেটে বাংলার ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং দিন দিন ক্রমশ বাড়ছে। বাংলা ভাষায় ব্যবহারোপযোগী সফটওয়্যারও তৈরি হচ্ছে। সুতরাং তার এই যুক্তিটিও মেনে নেয়া যায় না।
একটা কথা,
বাংলায় কোন ট্রান্সলিটারে্ট আছে। আমাকে একটু লিঙ্ক টা দিবেন প্লিজ।
@hridoyshiplu,
লেখকের দেয়া ট্রান্সলিটারেশনের তথ্যটা সম্ভবত সঠিক নয়। ইংরেজি থেকে বাংলা ট্রানলেশন এখনো বেশ দূর্বল পর্যায়ে আছে। http://bengalinux.sourceforge.net/cgi-bin/anubadok/index.pl এই লিংকটি দেখতে পারেন। মোটামুটি কাজ চললেও এটাকে স্ট্যান্ডার্ড বলা যাবেনা। এ ক্ষেত্রটিতে আমাদের এখনো অনেক কাজ বাকি।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ধন্যবাদ। ফেসবুকে শিপলু হৃদয়কে আমিও এই লিংকটাই দিয়েছিলাম। এটিকে আসলে স্ট্যান্ডার্ড বলা যায় না, আপনাদের প্রচেষ্টায় ট্রান্সলিটারেশনের কাজটা আরো সহজ ও সুন্দর হবে বলে মনে করি। অবশ্য প্রবন্ধটিতে লেখক যা বলতে চেয়েছেন তার কাজটা অভ্রই সারতে পারে বলে মনে করি।
অতি অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ, অনেক ধন্যবাদ সন্ন্যাসী। মাসিক শিক্ষাবার্তা এপ্রিল-২০১১ কি অনলাইনে পাওয়া যায়? গেলে প্লিস লিঙ্ক দিন।
আমার তীব্র মত-বিরোধ আছে আপনার (মূলগতভাবে জাহাঙ্গীরবাবুর) মতের সাথে। মূল লেখাটি না পড়ে মন্তব্য করা ঝুঁকিপূর্ণ। তবে জাহাঙ্গীর বাবু যেহেতু যুক্তাক্ষর তুলে দিতে চান তাই সে-প্রসঙ্গে একটি কথা বলে যাই।
জাহাঙ্গীরবাবুর সম্ভবত জানা নেই যুক্তাক্ষর বাংলা ভাষার কতবড় একটি সম্পদ ও শক্তি। একটি উদাহরণ দিইঃ ইংরেজি school শব্দটিকে আমরা বাংলায় সহজেই উচ্চারণ করতে পারি স্কুল বলে। কিন্তু শুনলে আশ্চর্য হবেন, এমন ভাষাও আছে যাদের যুক্তাক্ষর না থাকার কারণে তারা স্কুল বা স্ক্রু ইত্যাদি শব্দ উচ্চারণ করতে পারে না, তাদেরকে বলতে হয় সকুল, সকরু!
প্রথমেই বলে নিই বিষয়টির অহেতুক উপস্থাপন করা হয়েছে। আপনাদের বাংলা ব্যাকরণ- ন্যূনতম দশম শ্রেণি পর্যন্ত যা পড়ানো হয় তাই ভালো করে পড়েন নি। তাই এ ধরণের কথা বলছেন। যদি পড়তেন তা হলে এ ধরণের বিষয় নিয়ে কথা না বলে অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতেন। আপনার ব্যাকরণ জ্ঞানের ছোট্ট উদাহরণ দিই, কয়েক শব্দের প্রবন্ধে আপনি যা করেছেন-
১. : এবং ঃ চিহ্ণ দুটির পার্থক্য আছে।
২. লিখেছেন ‘যেসব …গুলোতে’। মারাত্মক ভুল।
৩. শুধুমাত্র সম্মানিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ’তাঁর’ হয়। সাধারণের ক্ষেত্রে ‘তার’।
৪. ‘থেকে’ কোনো শব্দ না, বিভক্তি। তাই কখনো এককভাবে বসে না।
৫. ই-কার, ঈ-কার, উ-কার, ঊ-কারগুলো দেখে নিবেন।
৬. বানানের সমস্যা হয়তো বলবেন, টাইপকরতেগিয়ে ভুল হয়েছে। ইংরেজি এরকম ভুল করলে আপনাকে কিন্তু কেউ ছাড় দিবে না। বাংলায় এ অজুহাতে আপনারা পার পেয়ে যান।
…
@প্রপঞ্চ,
আমি মোটেও কোন ব্যাকরণবিদ নই। সত্যি বলতে গেলে আমি একজন কাঠুরে। আমি ভাষা সংস্কার বিষয়ক একটা প্রবন্ধের আলোচনা/সমালোচনা করেছি। পক্ষে বিপক্ষে কিঞ্চিত মতও প্রকাশ করেছি, তবে তা আমার ব্যক্তিজীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে। আপনার আক্রমণাত্মক হবার কারণ বুঝলাম না।
বাংলায় : ঃ এরকম দুটো বর্ণ আছে কি? কীজানি, থাকতেও তো পারে! আমার কাঠুরে জ্ঞানে আমি তা পাইনি।
@সন্ন্যাসী,
আমার মনে হয় প্রপঞ্চ ‘এবং’ শব্দের সাথে ‘এবঃ’ এর পাথক্য দেখিয়ে পোষ্টে আলোচিত বর্ণগুলোর প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে চেয়েছেন।