সভ্যতা বিকাশের একটা পর্যায়ে উপজাত হিসেবে কোন গোষ্ঠীর অব্যাখ্যাত ও অবদমিত কামনা বাসনার স্ফূরণ ঘটেছিল মিথ গুলোতে।ফলে মিথগুলো কাজ করতো এক ধরণের উদ্দীপক রূপে।মিথ গুলোর বস্তুতান্ত্রিক ব্যাখ্যা আছে;এগুলো নির্দেশিত হয় নি কোন আসমানি পরাশক্তির কাছ থেকে।মিথের রূপ অনেক।গবেষকরা এদেরকে নানা ভাগে ভাগ করেছেন।আস্তিক্যবাদী বহু ও এক ঈশ্বরবাদী মিথগুলো নিয়েই আমি বলব। জামার্ন ভাষাবিজ্ঞানী ও প্রাচ্যতত্ত্ববিদ ম্যাক্সমুলার বলেন যে মিথ হচ্ছে ‘ভাষার রোগ’ অর্থ্যাৎ ভাষার কোন বিশেষ ধরণের অপরিপূণর্তা জন্ম দেয় মিথের।কী সেই অপরিপূণর্তা যার ফলে উদ্ভব হয় মিথের?ম্যাক্সমুলারের মতে গুণবাচক বিশেষ্য বা এবস্ট্রাক্ট নাউনের অভাবে কোন ভাষায় জন্ম নিতে পারে মিথের। ম্যাক্সমুলার বলছেন গুণবাচক বিশেষ্যের এই অভাব মেটানোর জন্য প্রাচীন মানবগোষ্ঠী কোন মূর্ত সত্ত্বার আশ্রয় নিত অর্থ্যাৎ গুণ সমূহকে আরোপিত করতো কোন দৈহিক আঁধারে।ফলে তৈরী হত মিথ। যেমন গ্রীক দেবী আগ্লিয়া (Aglaea)মানে হচ্ছে মহিমা;কিংবা সোফিয়া(Sophia) দেবীর আক্ষরিক মানে হল জ্ঞান।আবার ঈজিপশিয়ান ধর্মে দেখা যায় ‘মাত’-এর মতো দেবী যার মানে হল ন্যায় বা সত্য।(দ্রঃমোজেস ও একেশ্বরবাদ;লেখক-সিগমুন্ড ফ্রয়েড)।মজার ব্যাপার হল বিভিন্ন মিথে ভাষা নিয়েও বেশ কথা-বার্তা আছে। মুসলিম মিথে বলা আছে আল্লাহপাক আদমকে সমস্ত বস্তুর নাম শিখিয়েছেন।(সূরা বাকারাহঃ৩১)।আবার তৈত্তরীয় উপনিষদ বলছে যে প্রজাপতির ধ্যানরত অবস্থায় প্রাপ্ত তিনটি শব্দের মধ্য দিয়ে ভাষার যাত্রা শুরু।তবে ভাষা নিয়ে সবচেয়ে অসাধারণ কথা আছে পূব আফ্রিকান মিথে।ওয়াসানিয়া নামক জনগোষ্ঠীর মাঝে এ কথা চালু আছে যে ভাষার বৈচিত্র্য হয়েছে মানব গোষ্ঠীর একে অপরের কাছ থেকে,কোন এক বন্যার ফলে,দূরে সরে যাবার কারণে।(উইকিপিডিয়া)।আফ্রিকার এই মিথটি সত্যের বেশ কাছাকাছি অবস্থান করছে।
ব্রিটিশ নৃতাত্ত্বিক জেমস ফ্রেজার তাঁর ‘দ্যা গোল্ডেন বাউ’ গ্রন্থে বলছেন যে যাদুপ্রক্রিয়ার ভুল ব্যাখ্যা থেকে উৎপত্তি হয় মিথের।কেননা প্রাচীন যাদুবিদ্যার উদ্ভব হয়েছিল প্রকৃতির আইনকে ভালভাবে না বুঝার ফলে।যাদুপ্রক্রিয়া প্রাকৃতিক অবস্থাকে পরিবর্তন করতে চরমভাবে ব্যার্থ হতে থাকলে প্রাচীন মানুষ প্রাকৃতিক নিয়মকেও আর সঠিক মনে করল না;বরং তারা প্রাকৃতিক নিয়মের ব্যাখ্যা খুঁজতে থাকল অপ্রাকৃত বিষয়াদিতে-মিথ তৈরী করে।এরকমটি হওয়ার সম্ভাবনাও খুব প্রচুর।যতদূর জানা যায় মনা বা টোটেম সংস্কৃতির বিকাশের মধ্য দিয়ে বহু-ঈশ্বরবাদী মিথের উদ্ভব হয়েছে।যদি ঈজিপ্টকে ধরে আগাই তবে দেখতে পাবো যে কৃষি সভ্যতার চূড়ান্ত বিকাশের সময় একেশ্বরবাদী মিথের উদ্ভব।কেননা সমাজে তখন স্থায়ী আসন গেড়ে বসেছে ফারাওরা।সম্রাট একজন মানে হল ঈশ্বরও একজন থাকবেন।ফারাওরাও তাই করলেন;কেননা,তা না হলে শোষিত অত্যাচারিত জনগন বেঁকে বসতে পারে।তার জন্য চাই মগজ ধোলাই।তো আনুমানিক ১৩৫৭ খ্রিঃপূবে রাজা আমেন হোটেপ ইতিহাসের প্রথম প্রচেষ্টা হিসেবে সমগ্র মিশরে চালু করলেন একেশ্বরবাদী প্রচারণা(ফ্রয়েডঃমোজেস ও একেশ্বরবাদ)।যদিও আমেন হোটেপের মৃত্যুর পর ঠেংগিয়ে বিদায় করা হয় একেশ্বরবাদকে কিন্তু কিছু বছর বাদেই তা আবার সম্মান পেতে থাকে বিভিন্ন গোত্রের কাছে।মূসার সময়ে দেখা দেয় এক অদ্ভূত প্রচেষ্টা। একেশ্বরবাদী চেতনা কাজ করতে থাকে সমাজের একদম নিচুস্তরে-খেটে খাওয়া শোষিত,বঞ্চিত শ্রমিকদের মাঝে এবং তা বিকশিত হতে থাকে চরম বৈপ্লবিক পরিস্থিতির মধ্যে।মূসার পলায়নের মধ্য দিয়ে দেখা যায় ধীরে ধীরে বিমূর্ত একেশ্বরবাদ জায়গা করে নিচ্ছে মূর্ত একেশ্বরবাদের স্থানে।
এই বিমূর্ত একেশ্বরবাদ আর্থ-সামাজিক পটভূমির কারণেই বেড়ে উঠার জায়গা পেল পৃথিবীর যেকোন স্থানে।যেখানেই সামন্ততন্রের উদ্ভব ঘটেছে,সামন্তীয় রাজারা শুরু করেছে সাম্রাজ্য বিস্তার, সেখানেই দেখা দিয়েছে বিমূর্ত একেশ্বরবাদ।কেননা রাজ্যের বিস্তারের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের ক্ষমতাও বেড়ে গেছে ততদিনে।ফলে ঈশ্বরকেও নিতে হয়েছে অসীমতার ধারণা;ফলে ঈশ্বর হয়ে গেছেন বিমূর্ত।এবং ততদিনে গৃহে বন্দী হয়ে গেছে নারী।কৃষি জমির বিকাশের ফলে খাবারের প্রাচুর্য ঘটতে থাকে এবং কৃষি জমির কাজ থেকে সরে যেতে হয় নারীকেই,যদিও নারীই প্রথম এর গোড়াপত্তন করেছিল।নারীর সরে যেতে হয় কারণ শিকারী পুরুষ ততদিনে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে।তার কাজের ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়ায় কৃষি জমি।নারী,প্রাকৃতিক কারণে সন্তান ধারণ করতে গিয়ে,হেরে যায় বন্ধ্যা পুরুষের কাছে।নারীকে হারানো হয়।দ্বিতীয় যে কারণ বলা হয় তা হচ্ছে যুদ্ধ্ব ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণে বাঁধা সৃষ্টি করা হয় প্রথমে।কেননা নারী যদি যুদ্ধে মারা যায় তবে ঐ গোষ্ঠীর এমন কেউ মারা গেল যে কিনা আরেকজন যোদ্ধার জন্ম দিতে পারত।ফলে ক্রমাগত নারী স্থান করে নেয় গৃহে এবং গৃহই হয়ে দাঁড়ায় তার আরাধ্য স্থল।একটি লিংক সংযুক্ত করে দিলামঃ http://www.csulb.edu/~rodrigue/aag87.html এবং মিথ তৈরী হতে থাকে যে নারী ধ্বংস করেছে পুরুষকে।ক্ষমতা চলে যায় পুরুষের কাছে।সন্তান উৎপাদনকে আর সামাজিক কাজ হিসেবে গণ্য করা হল না।নারীর এই অবদমনের চিত্র পাওয়া যায় বহু ও একেশ্বরবাদী মিথগুলোতে।বহুশ্বরবাদী মিথগুলো নারীকে দেখায় প্রচন্ড লোভী ও সুবিধাবাদী প্রবঞ্চক হিসেবে;অন্যদিকে একেশ্বরবাদী মিথগুলো নারীকে দেখায় শয়তানের প্রবেশদ্বার হিসেবে।নারীর এই বন্দীদশা আর কাটে নি।অর্থনৈতিক মুক্তির মধ্য দিয়ে মিথের অবদমন ও পরাজয় ঘটলেই কেবলমাত্র নারীর স্বাধীনতা সম্ভব।
আধুনিক মিথে দুটো ব্যাপার জড়িয়ে আছে।নিখাদ আনন্দের জন্য সৃষ্ট মিথ গুলো নিয়ে কিছু বলার নেই।হলিউডি মুভির অধিকাংশই তো আধুনিক মিথের উপর দাঁড়িয়ে আছে।একটা উদাহরণ দেয়া যায়-আমেরিকান লেখক এডগার রাইস বারো ১৯১২ সালে টারজান নামক যে মিথ সৃষ্টি করেছিলেন তা আধুনিক মিথের একটি দারুণ উদাহরণ।তারপর সুপারম্যান,ব্যাটম্যান নামক অতি মানবীয় সৃষ্টি গুলো আধুনিক যুগের আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক একটা চরিত্র।এগুলো আমাদের কোন কিছুতে বিশ্বাস করতে জোরাজুরি করে না;বলে না যে ওদেরকে বিশ্বাস না করলে আমরা অ-প্রগতিশীল বা রক্ষণশীল হয়ে যাবো।কিন্তু আমাদের ক্ষতি করে সে সমস্ত মিথ যেগুলো জোর করে আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়।আমরা এখনো মিথের জগতে বাস করি।মিথের মধ্যে থেকেও আমরা নিজেদের ভাবি প্রগতিশীল,আধুনিক।আসলে আমরা যে কত অনাধুনিক তা আমাদের তথাকথিত স্ব-ঘোষিত ও স্ব-উচ্চারিত প্রগতিশীলদের কর্মকান্ড দেখলে বুঝা যায়।আমাদের সন্রাসবাদী সংগঠনগুলো ভাবে তারা প্রগতিশীল;আবেগে ভারাক্রান্ত কিন্তু ততটাই অযোগ্য নারীবাদি সংগঠনগুলো ভাবে তারা প্রগতিশীল;বিজ্ঞানে অগাধ জ্ঞান কিন্তু সমস্ত বিজ্ঞানের বিকাশ বুঝতে নারাজ ব্যাক্তিটিও নিজেকে ভাবে প্রগতিশীল।এরা সবাইকে বকা ঝকা করে;প্রচুর জ্ঞান দেয় এবং তৈরী করে কিছু চেলা এবং সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করে সমাজের ও দেশের।এরা নিজেদের চারপাশে ছড়িয়ে রাখে অসাধারণ কিছু মিথের আবরণ।এই আবরণ ছিড়তে গেলে চিৎকার করে উঠে চারপাশ;সে চিৎকার মৌলবাদিদের মতোই ভয়ানক।
আগেই বলেছি মিথ হল সমাজের বাস্তবিক ব্যবস্থারই উপজাত কাল্পনিক জগৎ।সুতরাং বাস্তবিক অবস্থা পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই কেবলমাত্র আমরা মুক্ত হতে পারি মিথের রাজ্য থেকে।নিখাদ সুন্দরের কল্পনা আমাদের কাম্য;বিকৃত কল্পনা নয়।
লেখা ভালো লাগছিল, শেষ দুই প্যারায় এসে হারিয়ে ফেলেছি, ধন্যবাদ
@স্বাক্ষর শতাব্দ, ধন্যবাদ।আসলে আমার পড়াশোনা কম ছিল এ বিষয়ে।তাই শেষ দিকে এসে হুট করে উপসংহার টেনে ফেলেছি।আরো বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে।
ভাল লেগেছে লেখাটি।মনে হয় প্রচলিত মিথগুলোর আবরণ সবার কাছে পুরোপুরি উন্মোচিত হতে হতে পৃথিবীর আয়ু শেষ হয়ে যাবে।
@তামান্না ঝুমু, মানবজাতি ততোদিনে অন্য কোথাও আবাস গড়ে নেবে।এবং সম্ভবত পৃথিবী ধ্বংস হওয়া নিয়ে অন্য কোন নতুন মিথ তৈরী হবে!!! 🙁
@ইমরান মাহমুদ ডালিম,
পৃথিবী ধ্বংস হওয়া নিয়ে বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন মিথ অলরেডি তৈরি আছে আল্লাহর রহমতে।
@তামান্না ঝুমু, তাতো আছেই।তারপর হয়ত আবার অন্য কোন ছদ্ম-বৈজ্ঞানিক মিথ তৈরী হতে পারে।তবে আশা করা যায় মানুষ-অধিকাংশ মানুষ- ততদিনে যৌক্তিক হয়ে উঠবে।
ভালো লাগলো লেখাটি (Y) । এ ধরণের লেখা লিখে চলুন নিয়মিত।
@স্বাধীন, উৎসাহ দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
(Y) (F)
একই বিষয়ে আরো লেখা চাই।
@হেলাল, ধন্যবাদ।পড়াশুনা করছি।দেখি আরেকটু ভালভাবে পড়াশুনা করে লিখব।
লেখাটা ভাল লাগল। তবে মুসা এবং তার এক্সোডাসের কাহিনী যেহেতু নিজেই একটি মিথ, তাই ওই গল্পটিকে আপনি সিরিয়াসলি নিচ্ছেন দেখে একটু অবাক হলাম।
@রৌরব, ধন্যবাদ।আসলে ‘মূসা ও তার বহিনিষ্ক্রমণ’-এ বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক আছে।এ রকম কোন ঐতিহাসিক চরিত্র ছিল কিনা তা নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নেই।তবে মিশরে একেশ্বরবাদ যে আমেন হোটেপ-৪ এর সময়ে উদ্ভূত হয়েছিল তা প্রায় নিশ্চিত।আমেন হোটেপ-৪ এর অন্য নাম ইখনাটন।ধারণা করা হয় ইখনাটন একেশ্বরবাদের ধারণা পেয়েছিলেন কোন এশিয়ান সূত্র থেকে।
ঠিক কি বোঝাতে চাইলেন
@সীমান্ত ঈগল, বিশ্বাসের মিথ!! 🙂
ভাল লাগল লেখাটা।
তবে একটু বেশি ছোট হয়ে গেল। লেখাটা মনে হয় আরও বড় করা যেতে পারত।
সত্যি কথা বলতে কি, প্রাচীনকালের মিথগুলিকে আসলে একেবারে উড়িয়ে দেয়া উচিত না।
কারন এখনকার মিথগুলো(বিশেষত সায়েন্স ফিকশনগুলো) যেমন এখনকার বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলশ্রুতি , তেমনি প্রাচীনকালের মিথগুলোও সেসময়কার ঘটনাবলী এবং আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির ফলশ্রুতি।
যেমন অধিকাংশ মিথেই দৈত্য-দানো, রাক্ষস, ড্রাগনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
আমারতো মনে হয় ওগুলো প্রাচীনকালে ডায়নোসারদের ফসিল পাবার ফলে সৃষ্টি হয়েছে।
কে জানে হয়ত সেসময় আমাদের পূর্বপুরুষদের সাথে জীবিত কিছু ডায়নোসারদের দেখাও হয়ে যেতে পারে।
@রনবীর সরকার, ধন্যবাদ।সত্যি কথা বলতে কি, প্রাচীনকালের মিথগুলিকে আসলে একেবারে উড়িয়ে দেয়া উচিত না।
একেবারে একমত।
এটা ঠিক সম্ভব না।একমত নই।
@ইমরান মাহমুদ ডালিম,
আমিও আসলে জানি এটা ঠিক সম্ভব না। কিন্তু এখনকার দিনের পাখিরা তো আসলে ডাইনোসারেরই বিবর্তিত রূপ। তাই কে জানে তখন ডাইনোসারের কোন বিবর্তিত রূপ যা অনেক বৃহৎ, তাদের সাথে আমাদের পূর্বপুরুষদের দেখা হয়েছিল কিনা।
আসলে বিবর্তন নিয়ে পড়াশুনা অনেক কম।
তাই হয়তে কিছু উদ্ভট কথাবার্তা বলে ফেললাম আরকি। 🙂
@রনবীর সরকার, মুক্তমনার বিবর্তন বিষয়ক আর্কাইভে বেশ সমৃদ্ধ লেখা আছে এ বিষয়ে।
@রনবীর সরকার,
এটা আপনার বক্তব্য ছিল।ভুলে আমার মন্তব্যের ওখানে উদ্ধৃতি চিহ্ন দেয়া হয় নি।
চমৎকার লেখা একটা। সময়কাল বা টাইম লাইন উল্লেখ করে খুব জরুরী কাজটা এখানে করবার জন্য বিষয়টার সাথে বর্তমানের সংযোগ ঘটেছে। সময় এবং আরো দু চারটা ঘটনা উল্লেখ থাকলে হয়তো বেশী আকর্ষণীয় হত। কাজের লেখা।
@কাজী রহমান, ধন্যবাদ মিথ নিয়ে আমার অত পড়াশোনা নেই।তবে পড়ছি।যতটুকু পড়ছি ততটুকু লিখছি।লিখব।
অনুপ্রেরণার জন্য ধন্যবাদ
ভালো লাগল।
প্রচলিত মিথ সম্পর্কে আরো কিছু ধারনা দিলে ভালো লাগত।অনেক পুরনো ও অস্বাভাবিক মিথ প্রচলিত ছিল।সেই ব্যপারে কিছু উদাহরন দিলে আকর্ষনীয় হত।
আমাদের দেশেও কিন্তু কম মিথ চালু নেই!
এর মানে কি?দুরুত্ব বাড়ার ফলে ইশারায় কাজ চলছিল না।সেখান থেকে ধ্বনির প্রয়োজনীয়তা অনুভব ও উৎপত্তি!!!
@রাহনুমা রাখী, ধন্যবাদ আরো বিস্তারিত লেখার ইচ্ছে আছে।আমাদের দেশের মিথ বিশেষ করে ফোকলোর সাহিত্যে যে মিথগুলো কাজ করছে সেগুলো নিয়ে লিখব।
না না।বিষয়টি সেরকম নয়।ভাষা ঐ জনগোষ্ঠীর মাঝে আগে থেকেই ছিল।কিন্তু এক গোত্র থেকে আরেক গোত্রের স্থানিক দূরত্ব বাড়তে থাকলে ভাষায়ও বৈচিত্র্য চলে আসে।আমাদের দেশ আর পশ্চিমবংগের ভাষিক পার্থক্যটুকু দেখুন না-ওরা যেভাবে উচ্চারণ করে আমরা কিন্তু ঠিক সেভাবে উচ্চারণ করিনা।ওদের বেশ কিছু প্রচলিত শব্দ আমাদের এখানে অপ্রচলিত।আমাদের আঞ্চলিক ভাষাগুলোতেও একই অবস্থা বিরাজ করে।যেমন ধরূণ কানাডার ফরাসী আর ফ্রান্সের ফরাসীর মাঝে দারূণ কিছু স্বতন্র বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাবেন।একই অবস্থা তো ইংরেজির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।এখন তো ইংল্যান্ডের ইংরেজি,আমেরিকান ইংরেজি,অস্ট্রেলীয়ান ইংরেজি আর হাল আমলের ভারতীয় ইংরেজির পার্থক্য নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে।এগুলো মাইনর অবস্থা।ভাষা-পরিবারের দিকে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে কীভাবে শুধুমাত্র স্থানিক দূরত্বের ফলে ভাষা পরিবর্তিত হয়ে গেছে।ধন্যবাদ
একটা বই পরছিলাম ‘দেবতারা কি তবে গ্রহান্তরের মানুষ ‘ (অনুবাদ)… আর কিছু মনে নাই এই বই সম্পর্কিত । সে বই এ লেখক মিথ সম্পর্কে বিভিন্ন যুক্তি প্রমান দিয়েছেন । লেখার অনেকগুলো যুক্তি ্মেনে নিতে ইচ্ছা হয় ।লেখকের লেখা অতি শক্তিশালী । পড়ার আমন্ত্রন রইল ।
@রুদ্র বাদল, ধন্যবাদ পড়ে দেখবো।তবে দেবতারা অন্য গ্রহের মানুষ নয়।এগুলো নিয়ে প্রচুর বই লেখা হয়েছে।এই লিংকটিতেও এ রকমই কিছু কথাবার্তা পাওয়া যায়ঃhttp://www.halexandria.org/dward371.htmতবে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশের পথের বস্তুতান্ত্রিক ব্যাখ্যাই এ বিষয়ে সঠিক তথ্য দিয়েছে এ পর্যন্ত।সুতরাং অন্য কোন সত্ত্বাকে স্বীকার করতে পারছি না।
ভাল লাগল লেখাটা! আরেকটু বিস্তারিত ও উদাহরণ দিলে আরও প্রানবন্ত হত!
আগ্রহের সাথে একমত!
@লাইজু নাহার, ধন্যবাদ।আসলে এই বিষয় নিয়ে আমার আগ্রহ ঠিক যতখানি আছে পড়াশুনা ঠিক ঐ পরিমাণে নেই।তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও বেশী লিখতে পারলাম না।।
সুপারম্যান, ব্যাটম্যান এরা সুপারহিরো জেনরিরে পড়ে। তাই বলার তেমন কিছু নেই তবে সায়েন্স ফিকশনাল ক্যারেক্টারগুলো নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?
@টেকি সাফি, মিথের উদ্ভব হয় কোন একটি সমাজের নির্দিষ্ট বাস্তবিক অবস্থার সাপেক্ষে।মিথ সংস্কৃতির-ই একটি বিশেষ শাখা।সুতরাং সংস্কৃতির মতো করেই মিথের বিবর্তন হতে থাকে;কখনো সোজা,কখনো সর্পিলাকারে।ফোকলোর নিয়ে গবেষণায় এমনটি দেখা যায়।অনেকগুলো তত্ত্বের বিকাশ ঘটেছে এ গুলোকে ব্যাখ্যা করার জন্য।যেমন-Theory of Monogenesis,Broken Down Myth Theory বা Indo-European Theory,Theory of Polygenesis,Theory of Survival,Diffusionism ও আরো অন্যান্য।সায়েন্স ফিকশন এ যুগের জ্ঞান-বিজ্ঞানের মিথোলজিকাল প্রতিফলন।তবে প্রথাগত মিথের সাথে এর পার্থক্য হল-প্রথাগত মিথ যেখানে সৃষ্টিতত্ত্ব,নারী-পুরুষ,পাপ পূণ্য ইত্যাদি নিয়ে কথা বলে,সায়েন্স ফিকশন সেখানে ভবিষ্যতের কথা বলে।তাই বলে এ রকম প্রচেষ্টাকে একেবারে মৌলিক কোন কিছু বলা যাবে না।কেননা বহুশ্বরবাদী সমাজ ব্যবস্থায়ও মৃত্যুর পরের জীবন নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে;বিকশিত একেশ্বরবাদে ভবিষ্যতে ইহলোকে কী হবে তার প্রচ্ছন্ন একটা নির্দেশ দেয়া আছে।আর বিজ্ঞানের যুগে,যেখানে বিজ্ঞানের চরম গবেষণাগুলো হচ্ছে,সেখানে তো ভবিষ্যতের এক ধরণের রূপকল্প মানুষের চেতনায় কাজ করতে থাকবেই।এগুলোকে সচেতন ভাবে সৃষ্ট এক ধরণের মিথই বলা চলে।
@ইমরান মাহমুদ ডালিম,
এটুকু আগেই ধারণা করতে পারছিলাম, আমি ঠিক এটা জিজ্ঞেস করিনি। আমি বলছিলাম এই মিথের (সায়েন্স ফিকশন) নেগেটিভ/পজেটিভ ইফেক্ট গুলো নিয়ে আপনার ভাষ্য কী?
দেখুন নেগেটিভ কিংবা পজিটিভ ইফেক্ট বলতে আমরা কী বুঝি?যদি আমরা নিখাদ কলাকৈবল্যবাদী হই অর্থ্যাৎ শিল্পের জন্য শিল্প এই দৃষ্টিভংগী নিয়ে যদি সায়েন্স ফিকশনকে ব্যাখ্যা করি তবে সম্ভবত সায়েন্স ফিকশনের কোন নেগেটিভ ইম্পেক্ট পাওয়ার কথা নয়।আর যদি সামাজিক-অর্থনীতিক সংক্রান্ত যে বিপ্লবী দৃষ্টিভংগী আছে তা ব্যবহার করি তবে সায়েন্স ফিকশনের একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়,যেখানে এর নেতিবাচক ভূমিকাই প্রবল হয়ে উঠবে।পশ্চিম গত কয়েকশো বছরের পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে।এবং পশ্চিমে শুরু হয়ে গেছে নানারকম অস্থিরতা।নানারকম বিকৃতি দেখা দিয়েছে এখন গোটা ইউরোপে;বলা যায় ইউরোপ প্রবেশ করেছে তার শক্তিমত্ততার শেষ সীমায়।ফলে অবক্ষয় চলে এসেছে ইউরোপে।এই অবক্ষয়ের ছাপ তাদের সব রকম শিল্পকেও জরাগ্রস্থ করছে।তবে মুশকিলের ব্যাপার হল শিল্প কতখানি সীমা মেনে চলবে তা বুঝা যায় না।অর্থ্যাৎ শিল্পকে বাঁধা যায় না কোন মাপকাঠিতে।কিন্তু যদি দেখা যায় মানুষের বিকাশের পর্যায়ে-এই বাস্তবতা ও সময়ে-কোন শিল্প ক্ষতি করছে বিকাশের তবে ঐ শিল্পের চর্চা বন্ধ করা উচিৎ।এখন পাশ্চাত্য কেন শুধু সায়েন্স ফিকশন ধর্মী মুভি বানাচ্ছে?এগুলো ব্যবসা করছে ব্যাপকভাবে এবং ক্ষতি করছে স্বাভাবিক মানুষের।ব্যাবসা পাশ্চাত্যের মূল কথা।ব্যাবসাই হচ্ছে।আর সামাজিক ইফেক্টের কথা যদি আপনি বলেন তবে আমি বলব এগুলো এক ধরণের ভাববাদ যা ক্ষতি করে বস্তুতান্ত্রিক চেতনার;ফলে স্তব্দ হতে থাকে চেতনার বিকাশ।তবে মাঝে মাঝে বেশ ভালোই লাগে 🙁 😛