আমরা বিজ্ঞানকে বুঝতে পেরে তার সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছি মনে হয় গত তিনশ বছর ধরে।এর আগেও আমরা বুঝতাম যে বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টার একটা কার্যকরী দিক আছে;কিন্তু যাকে বলে বিজ্ঞানের অভ্রান্ত তেজ,-তার সাথে আমরা খুব ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হয়েছি মাত্র কয়েক শতাব্দী হল।এখানে ‘আমরা’ শব্দটি ভুলভাবে উদ্বৃত্ত হল।কেননা বাংগালী এখনো বিজ্ঞান বুঝে না-তবে বিজ্ঞানের সুফল ভোগ করতে চায়।অর্থ্যাৎ বাংগালী ভোগ করতে চায় নিখাদ প্রযুক্তিকে।বাংগালীর এই পেটি বুর্জোয়া স্বভাবের জন্য বাংগালী এখনো বুঝে উঠতে পারে নি বিজ্ঞানকে;ফলে তৈরী হয়নি কোন বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্মের।আমাদের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রমাগত মুখস্থ নির্ভর বিজ্ঞান পাঠ অন্ধ করে দিয়েছে বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের।তারা বড় বড় সুত্র শিখে বুলি ঝাড়ে এবং আযানের সময় হলে দৌড়ে ঢুকে পবিত্র গৃহে।
বিজ্ঞানের একটি দর্শন আছে।বিজ্ঞানে অন্ধ বিশ্বাসের কোন জায়গা নেই।প্রতিটি বিষয়কে বিজ্ঞানের কঠোর পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়।এবং বিজ্ঞান স্বপ্নযোগে পাওয়া কোন সমাধানের ধার ধারে না।কিন্তু বাংগালী বোধহয় প্রচন্ড শাসন ও শোষণে থাকতে ভালবাসে।তাই বাংগালীর কাছে যুক্তি মানেই ভীতিকর কোন কিছু।আমরা চাপিয়ে দেয়া বিশ্বাস লালন করতেই স্বস্তি বোধ করি। এবং আমাদের কৃতিত্ত্বও যে ভাববাদের মধ্যে পোক্ত তা দেখা যায় রবী ঠাকুরের ভাববাদী গীতাঞ্জুলীর নোবেল পাওয়ার মধ্য দিয়ে।অথচ এরকমটি ছিল না ভারতবর্ষে-এখানে বিকশিত হয়েছিল কমপক্ষে চারটি নাস্তিক্যবাদী বা জড়বাদী দর্শন শুধুমাত্র এক ভাববাদী দর্শনের ভিত্তিভুমি বেদ-কে ধসিয়ে দিতে।কিন্তু এই যে পার্থিব ধারার চারটি জড়বাদী দর্শন কেন জন্ম দিল না আরো শক্তিশালী জড়বাদী দর্শনের?এটা কী এ জন্য যে ভারতীয়রা খুব ভাববাদী?তা বোধ হয় নয়।কেননা ভারতীয়রা অথবা বাংগালীরা প্রযুক্তির সুযোগ সুবিধা পেলে কখনো হাতছাড়া করতে চেয়েছে-এ রকম খবর আমার জানা নেই।অবশ্য নব্বই এর দশকে খালেদ জিয়ার মূর্খ সরকার যে দেশকে সাইবার কেবলের সাথে যুক্ত করার সুযোগ পেয়েও আগ্রহ দেখায়নি সেটা কেবল মাত্র ঐ প্রযুক্তি সম্বন্ধে জ্ঞান না থাকার ফল।কিন্ত যে প্রযুক্তি বাংগালীর কাজে লাগবে সে সম্বন্ধে জেনে বুঝেও বাংগালী ওটা হাতছাড়া করবে ইতিহাসে এরকম নজির নেই।তাহলে বুঝা যাচ্ছে বাংগালী ভাববাদী নয়।বাংগালী চরম বস্তুবাদী এবং একই সাথে চরম সুবিধাবাদী।সুবিধাবাদ বাংগালীর জীবনের অনন্য বৈশিষ্ট্য কেন?বাংগালী কী ত্যাগ স্বীকার করে না?বাংগালীর কী ত্যাগ স্বীকার করার নজির নেই?ইতিহাসের দিকে তাকালেই দেখা যায় ইতিহাস ভরে আছে বাংগালীর রক্তে।তাহলে এই ত্যাগ স্বীকার ও রক্ত দান আজকের এই শতাব্দীর জন্য কী বয়ে নিয়ে এসেছে?বাংগালী কেন শুধু প্রযুক্তি বুঝে?কেন বুঝে না বিজ্ঞান?অথবা কোন সেই কারণ যার কারণে বাংগালীর ভেতর ঢুকে গেছে বিজ্ঞানের প্রতি চরম অনাগ্রহ?এখানে চরম মৌলবাদীও ইলেক্টিকের মাইক,যা কি-না ইহুদি নাসারাদের তৈরী,ব্যাবহার করে ইহুদি নাসারাদের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধারে ব্যস্ত থাকে।তাহলে এটা বুঝা যাচ্ছে যে আজকের বাংগালী সমাজ পুরোটাই ভোগবাদী দর্শনে ডুবে আছে।এরা প্রযুক্তির পুজো করে-বিজ্ঞান বুঝেও না,বুঝার চেষ্টাও করে না;ফলে প্রযুক্তিও বুঝে উঠে না ঠিকমত।এই ভোগবাদী-প্রযুক্তিবাদী সমাজ তৈরী করছে ঐ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যারা উঠতে বসতে পুজি আর লাভের কথা ভাবতে থাকে।পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এই দেশে ২০২০ সালের মধ্যে মানবিক শাখা বিলুপ্তির প্রেসক্রিপশন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।আমাদের আমলারাও ওদের পা চাটতে চাটতে এটা মেনে নিয়েছে।এগুলো হল বিজ্ঞানমনস্ক না হওয়ার ফল।মানবিক শাখার গুরুত্ব বিজ্ঞানমনস্ক জাতির পক্ষেই বুঝা সম্ভব।আমরা বিজ্ঞানমনস্ক নই-ফলে আমরা জাতি হিসেবে চরমভাবে ব্যর্থ।
বাংগালীর এই লুম্পেন চরিত্রে আজকাল জোকার নায়েক ও তার চেলারা বেশ সার ও পানি ঢালছেন।ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে গ্রামের সাধারণ মানুষ পর্যন্ত মেনে নিয়েছে তাদের ভাগ্য।ভাগ্যের লিখন না যায় খন্ডন-এটা এখন বাংগালী জাতির প্রধান আপ্তবাক্য।বাংগালী এখন নামায পড়ে, পতিতালয়ে যায়, সাররাত তসবি জপে,সারারাত ন্যুড ফিল্মে মজে থাকে,ওরছে যায়,ওয়াজ করে,চুরি করে,বাটপারি করে;আবার রোযা রাখে,হজ্জ্বে যায়,নামায পড়ে,চুরি করে——–এটা বাংগালীর এখনকার প্রথাগত রুটিন ।
এই কথা গুলোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু পেলাম আপনার নিবন্ধের বাইরে মন্তব্যের ভেতর ৷ এই কথাগুলোর মাধ্যমে আপনার লেখাটা শুরু হলে আমরা কিছু মূল্যবান দিক নির্দেশনা পেতে পারতাম ৷ আপনার মন্তব্যের ভেতর যত চিন্তার খোরাক পাচ্ছি লেখাটা কিন্তু সে তুলনায় সাদামাটা ৷
@শুভ্র, ধন্যবাদ কষ্ট করে লেখাটি পড়ার জন্য।আসলে কী করে শুরু করবো তা বুঝে উঠতে না উঠতে লেখাটি শেষ করে ফেলেছি।দ্রুত লেখার এই সমস্যা!
ধন্যবাদ আবারো
লেখা সুন্দর এবং সময় উপযুগি। কিন্তু বাঙ্গালিকে বিজ্ঞান মনস্ক বানাবার জন্য আমরা কি করতে পারি এবং কি করা প্রয়াজান? আমার বাংলা টাইপ বানান ভুলের জন্য খমা চাএ।
আযিযুল
@আজিজুল মোললা,
ধন্যবাদ। আসলে এ যুগে বিজ্ঞানমনস্কতা সৃষ্টি হয়,ব্যাপকভাবে,ঠিক তখনই যখন ঐ দেশটি ব্যাপকভাবে স্বাধীন ব্যাবসা করতে পারে;অর্থ্যাৎ দেশটি তার পণ্য নিয়ে হাজির হতে পারে বৈদেশিক মার্কেটে।এ কাজটি করতে গেলে আমূল পরিবর্তন করতে হয় দেশের আভ্যন্তরীন বিজ্ঞানশিক্ষার।কেননা পণ্যে নতুনত্ব আনয়ন থেকে শুরু করে মৌলিক গবেষণায় আবিষ্কৃত সমস্ত কিছুই ব্যবসায় একচেটিয়া প্রাধান্য তৈরী করে।ফলে প্রচলিত শিক্ষার আমূল পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় দেশের পুঁজিপতিরা তাদের সরকারী প্রতিনিধির মাধ্যমে।আমরা বিশ্বের ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর দিকে তাকালে এ রকম চিত্র-ই দেখতে পাই।
এখন কথা হল,আমরা চাইলেই কী স্বাধীন পুঁজি সৃষ্টি করতে পারি?সম্ভবত না।কেননা এখানে পুঁজির বিকাশ হওয়ার আগেই তৈরী হয়ে গেছে দালাল ধনবাদীরা যাদের পুঁজির একটা বড় অংশ আসে ঐ সমস্ত ধনবাদী রাষ্ট্রের কাছে;ফলে কেউই চায় না এখানে বিজ্ঞানমনস্কতা তৈরী হোক।কিংবা তৈরী হোক এমন কোন প্রজন্ম যারা অন্তত ভালবাসবে বিজ্ঞানকে।এ অবস্থার পরিবর্তন কেবলমাত্র একটি গণতান্ত্রিক বিপ্লবের মাধ্যমেই সম্ভব,যেখানে দালাল পুঁজিপতি ধ্বংস হয়ে রাষ্ট্রীয় পুঁজি কাজ করতে শুরু করবে।
তবে একটা জিনিস করা যায়-যেটা অবশ্য সমস্যাটির কোন স্থায়ী উপশম করে না-তা হল,গণিত অলিম্পিয়াডের মত আয়োজনগুলো বারবার করা যায়।ফলে একধরণের ছোটখাট সচেতনতা হয়তো সৃষ্টি হতে পারে।
Imran Mahmud Dali্
লেখাটা ভাল লেগেছে!
খুবই সত্যি!
টেকি সাফি,
একমত!
শিক্ষকতা মানে সারজীবন শেখা ও শিখিয়ে যাওয়া।
একথাটা অনেক শিক্ষকই জানেন না!
আসলেই আমাদের দেশে দক্ষ ভাল শিক্ষকের অভাব!
অনেকে টিউশনি করার জন্য ক্লাশে ভাল বোঝান না!
শিক্ষকতা এখন বাণিজ্য!
আসলেই দুঃখ হয় এসব ভেবে!
@লাইজু নাহার, ধন্যবাদ।আসলে আমাদের সার্টিফিকেটধারী কুশিক্ষিত বিশাল জনগোষ্ঠীর কারণে এ রকম হচ্ছে।
আমাদের মধ্যে প্রচন্ড সুবিধাবাদ থাকার ফলে আমরা শুধু কেন্দ্রে থাকতে চাই।কিন্তু কেন্দ্রই সবকিছু নয়।আমাদের রাজনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থা এমন করা হয়েছে যে সবকিছুই ভিত্তিহীনভাবে কেন্দ্রমুখী।তাই আমরা শহর বলতে একটা শহর বুঝি;ধারণাটা এমন যে,পুরো বাংলাদেশে একটা সভ্য জায়গা আছে,আর অন্য সব জায়গায় গেঁযো অর্ধসভ্য মানুষ বাস করে।এই কেন্দ্রমুখীতা আমাদের একটা রোগ।রোগ থেকে একটু সুস্থ হলে আমরা দেখব যে,দেশে সভ্য মানুষ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে,বিশ্ববিদ্যালয়ও একটা নয়,আরো ভালো বিশ্ববিদ্যালয় আছে।
প্রযুক্তি নিয়ে যা বলেছেন তা ভালো লেগেছে।আমি কিন্তু প্রযুক্তির বিরোধীতা করি নি।আমি বলতে চেয়েছি যে যদি বিজ্ঞানমনস্কতা না থাকে তবে প্রযুক্তি আমরা ভুলভাবে ভুল জায়গায় ব্যবহার করবো।সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোর দিকে তাকালেই এটা বুঝা যায়।
আর কেরাণীগিরির কথা যদি বলেন তবে বলতে হয় যে সবাই কেরাণী-বিজ্ঞান জেনে বুঝে আমাদের দেশের সন্তান আতাউর রহমান পুরো ফ্যামিলি সহ আমেরিকাতে যুদ্ধ সরঞ্জামাদি আধুনিকায়নে ব্যস্ত।এই হল বিজ্ঞানে চরম মেধাবীর কৃতিত্ব।সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন না করে জাতিকে কখনোই বিজ্ঞানমনস্ক জাতিতে পরিণত করা যাবে না।
আমাদের বিজ্ঞান নিয়ে ধারণারও ভুল আছে।সমাজ-বিজ্ঞানী, ইতিহাসবিশ্লেষক এদেরকে তো আমরা বিজ্ঞানী হিসেবে কল্পনাই করতে পারি না।এটা হল জাতির সামগ্রীক ব্যর্থতা।
হেঃহেঃ!
একদল আছে ঢাবিতে ভর্তিই হবে না, ক্লাস ৫/৬ থেকে অক্ষর,শব্দ,বাক্য জপার পাশাপাশি জপতে থাকে বুয়েট, বুয়েট,বুয়েট। আর যারা আমার মত একটু ঢাবির ফ্যান তারাও বাইলজীর বদল ফার্মাসিষ্ট হইতে চায়, কম্পু বিজ্ঞানের বদল আইটিতে পড়তে চায়, ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি জাহান্নামে গেল অ্যাপ্লাইড ফিজিক্স,কেমেস্ট্রির জন্য পাগল।
সারাজীবন মুখস্ত করে এসেছি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে আবার রাত দিন জেগে জেগে গবেষনা, থিসিস কত্ত ঝামেলা!! ধুরো বিজ্ঞানের নকশী কাঁথা আর ডালপুরি। অ্যাপ্লাইড কোন সাবজেক্টে ভর্তি হইয়া পাশ করলেই ছেলেদের দেশ-বিদেশে চাকরি আর মেয়েদের হাজব্যান্ড (মেয়েবাদী ছেলেবাদী কেও আঘাত খাইয়েন না আবার, জাস্ট কথার কথা)
আরো একটা কথা হইলো ফিজিক্স, কেমেস্টি পইড়া কি কলেজের মাস্টারি করব? ইহহহ! বাপ কত্ত ট্যাকা পয়সা খরচ করসে ১০ হাজার টাকার মাস্টারির জন্য? বিজ্ঞান বিজ্ঞান খেলা বাদ, ভালো কোন সাবজেক্ট (!) এ ভর্তি হওয়া লাগবে। হুমম!
ফলাফলটা শেষে কী? প্রতি বছর গাড়ির গাড়ি দাপ্তরিক কেরানী তৈরী হচ্ছে। কে যেন বলেছিলো না? বাঙ্গালি সারাজীবন অফিসের কেরানীগিরি করে মরে, ঐ অবস্থা।
মজার ব্যাপারটা হইলো এই এক হাজার ইঞ্জিনিয়ার আর দশ হাজার ডাক্তার বাংলাদেশের জন্য যতটা জরুরী তার চেয়ে একজন কৃষিবিজ্ঞানী বেশী জরুরি। নতুন নতুন প্রযুক্তি, বীজ, বালাইনাশক আবিস্কার করে এই ইঞ্জিনিয়ারদের হাতে তুলে না, ১৮ কোটি বাঙ্গালি খাবেটা কি? কিন্তু তারপরও আমরা এর প্রয়োজনীয়তা তেমন অনুভব করিনা, কারন হিসেবে আমার মনে হয় সমাজবিজ্ঞানে এরকম কোন সূত্র টূত্র থাকতে পারে যে মানুষ ধর তক্তা মার পেরেক (ইন্সট্যান্ট রেজাল্ট) যেখানে পায় সেখানেই দৌড়ায়।
আমারো ছোট থেকেই প্রযুক্তিবাদী বিষয়গুলোর বাহ্যিক চাকচিক্যে ভালোই ঘোর লেগেছিল। কলেজে ওঠার পর ঐভূত নেমে গেছে। তবেবেবেবেবে… প্রযুক্তিবাদী বিষয়গুলো নিয়ে পড়া কী পাপ? নাহ! কক্ষনোই নাহ! কেন মুক্তমনার অভিজিৎ মশায়কে দেখেন না? উনিও বুয়েটে মনে হয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিতে পড়েছেন। হ্যা, কারো কোন সাবজেক্টে প্যাশন থাকলে ভর্তি হও অসুবিধা নাই, তবে বিজ্ঞানমনস্কতাকে গলা টিপে কেন বাপু? কী আর বলব দোষ আমাদেরই কম কোথায়? কলেজ লেভেলে অনেক ক্যালকুলাসের জাহাজ (!) কে আস্তে করে যদি জিজ্ঞাসা করি sin(x) এর ব্যবকলনতো সবাই পারি কিন্তু এর মানেটা কী? তাৎপর্যটা কী? উত্তর দিবে কী! প্রশ্নই বুঝাতে পারি না। আমরা এভাবেইতো চালিয়ে আসছি নাকি? (a+b)^2 তো ভালই ছিলো, কমপ্যাক্টও আছে একে কীজন্য a^2+2ab+b^2 করে ভাঙ্গাচুরা করা শিখাইলো সেই ক্লাস সিক্সে? উপযোগিতা কী? এখন ক্লাস টুইলভে পড়ছি, আজ ৬ বছর পড়ার পরও আমি গ্যারান্টি দিতে পারি ৯৫% ছেলে-মেয়েরাই এটা জানে না!! তাহলে গনিত শিখছি কেন? খালি বাজার সদাইয়ের হিসাবের জন্য? এর যদি উপযোগিতা বুঝে নতুন নতুন ক্ষেত্রে ব্যবহার না করতে পারি!? শিক্ষক ভূলেও একবার এসব শিখেয়েছে? এখন কথা হলো শিক্ষকরাই জানেতো? :-s
আমরা সবাই ছাত্র! তথাকথিত ছাত্র মাত্র, আমার সাদিকুল স্যারের সংজ্ঞায় শিক্ষার্থী নই। ছাত্ররা শুধু পড়ে আর শিক্ষার্থীরা শিখে, পড়া একটা মাধ্যম মাত্র।
সৃজনশীল ভাল কাজ করবে বলে চিল্লাচ্ছে, তাদের জন্যও আমি একটা দুঃখজনক খবর দিই, এই সৃজনশীল খাতাকলমে দেখতে,শুনতে খুব সুন্দর কিন্তু বাস্তবে কাজ করবে তো? নাহ করবে না, যতটা আশা করছি ততটা করবে না, কারন কী? ৯০% শিক্ষক সৃজনশীল পদ্ধতির যে সৃজনশীলতা আছে সেটাই বুঝেন না, আর বুঝলেও তেমন সমীহ করেন না। এই আই চালে, বাই চালে চালায় দিলেই হলো। তবে উদ্যোগটা ভালো, এখন দরকার একে ক্রমাগত উন্নয়ন করার প্রচেষ্টা।
লেখাটা ছোট হলেও ভাল লেগেছে যদিও কিছু কিছু জায়গায় আপনার দেখানো সম্পর্কে আমার দ্বিমত আছে।
তারপরেও (Y)
ধন্যবাদ
আপনার এই লেখাটি পড়তে গিয়ে হঠাৎ করেই একটি কমেন্টেস-এর কথা মনে পড়লো। ফরিদ ভাই কোনো এক প্রসঙ্গে বাঙালির চরিত্র সম্পর্কে বলতে গিয়ে হুমায়ুন আজাদের ‘বাঙালিঃ একটি রুগ্ন জনগোষ্ঠী?’ প্রবন্ধটি স্মরণ করেছিলেন। আর সেই প্রবন্ধ থেকে নিচের অংশ তুলে ধরেছিলেন-
বাঙালি, পৃথিবীর সবচেয়ে অহমিকাপরায়ণ জাতিগুলোর একটি, বাস করে পৃথিবীর এককোণে; ছোটো, জুতোর গুহার মতো, ভূভাগে;- খুবই দরিদ্র, এখন পৃথিবীর দরিদ্রতম। …. প্রতিটি বাঙালি ভোগে অহমিকারোগে, নিজেকে বড়ো ভাবার অচিকিৎস্য ব্যধিতে আক্রান্ত বাঙালি।
জাতি হিশেবে বাঙালি বাচাল ও বাকসর্বস্ব; অপ্রয়োজনেও প্রচুর কথা বলে। বাঙালির স্বভাব উঁচু গলায় কথা বলা; সাধারণত শুরুই করে উচ্চকণ্ঠে, বা ক্রমশ তার গলার আওয়াজ চড়তে থাকে। যদি আলাপের বিষয়টি বিতর্কিত হয়, পক্ষবিপক্ষ থাকে, তাহলে অল্প সময়েই তারা প্রচণ্ড আওয়াজ সৃষ্টি করতে থাকে; এবং অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা যদি দুয়ের বেশি হয়, তিন-চার-পাঁচজন হয়, তাহলে আলোচনা পুরোপুরি পণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যে-কোনো আলাপে বাঙালি নিজেই নিজেকে প্রবেশ করিয়ে দেয়, অন্যদের অনুমতির প্রয়োজন বোধ করে না; এমনকি, অনেক সময়, আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে কিছু না জেনেই বাঙালি তীব্র আলোচনায় অংশ নেয়। বাঙালির যুক্তি কণ্ঠের উচ্চতা; যার কণ্ঠ যতো উঁচু, সে নিজেকে ততোটা যুক্তিপরায়ণ ব’লে গণ্য করে; এবং নিজের জয় অবধারিত ব’লে জানে। যুক্তিতে কোনো বাঙালি কখনো পরাজিত হয় নি, হয় না, ভবিষ্যতেও হবে না।
বাঙালি আর কী কী পারে তার একটি তালিকা তৈরি করা যেতে পারে। যেমন: গম চুরি, টিন চুরি করে আবার মসজিদও বানায়। ব্লগের লেখা চুরি করে, আবার ধরা খেয়ে ক্ষমাও চায়। বাঙালি মুসলমান নাকি নামাজও চুরি করে।
বি.দ্র: ফরিদ ভাইয়ের সেই কমেন্টসটি দেখতে চাইলে স্বাধীন ভাইয়ের এলোমেলো চিন্তা:বিবর্তনময় জীবন– ক্লিক করে দেখতে পারেন।
@মাহফুজ, আমি হুমায়ুন আজাদের এই লেখাটার সাথে একমত।তবে এটাও কী ঠিক না যে, অনেকেই আছেন যারা প্রথামাফিক বাংগালীপণা পছন্দ করেন না?-যেমন হুমায়ুন আজাদ নিজেই এর জলজ্যান্ত উদাহরণ।মুক্তমনার অধিকাংশ লেখক ও পাঠক প্রচলিত বাংগালীপণার যে কুসংস্কারগুলো আছে তা থেকে মুক্ত।তবে আমার কেন জানি ইদানীং মনে হচ্ছে শুধু শুধু সমালোচনা আর বকাঝকা করে লাভ কী’-তার চেয়ে বরং এই ব্যবস্থাকে কীভাবে পাল্টানো যায় তার জন্য আমাদের চিন্তা ভাবনা করা উচিত।
সুন্দর বলেছেন ইমরান!!!
আমাদের বাঙ্গালীর অবস্থা এখন এমনই!!!
বাঙ্গালী লেখকদের হাতে লেখা অনার্স লেভেলের পাঠ্যপুস্তক আর একই লেভেলের ইংরেজী লেখকের পুস্তকে বিস্তর পার্থক্য।যেখানে ডিগ্রি নিতে এসেও আমাদের সুত্র ও তার প্রমান মুখস্থ লিখতে হয় পরীক্ষার খাতায় সেখানে তারা ওয়িসব সুত্রের প্রয়োগ করা শিখছে।
আমরা এখনও তত্ত্ব মুখস্থেই আছি ব্যবহারিক প্রয়োগ শিখতেই পারলাম না!!!
আমাদের স্বনামধন্য শিক্ষকেরা প্রফেসর তো হয়ে যায় কিন্তু সেটা পদবি পর্যন্তই আটকে থাকে।
আমি এমন একজন প্রফেসরকেও চিনি যিনি এক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত প্রফেসর।অথচ তার দুই দুইটি যুবতী বউ তাও আবার একই ফ্লোর পাশাপাশি ফ্ল্যাটে রাখা!!!যুবতী বউ লিখেছি তাই ভাববেন না রঙ চঙ লাগিয়ে বলেছি।আসলেই তা!!
একজন শিক্ষিত শিক্ষককে যদি দেখা যায় মধ্যযুগীয় লাইফ স্টাইলে তবে কেমন লাগে!!!
@রাহনুমা রাখী,
যুবতী বউ থাকা কিংবা না-থাকার সাথে মধ্যযুগীয় কোন ব্যাপার জড়িত আছে তা আমি বিশ্বাস করি না;যদি ঐ প্রফেসরের দুই বউ নিজেদের শোষিত মনে না করে এবং বিষয়টি মেনে নেয় এবং এই মেনে নেয়ার মধ্যে যদি কোন অন্ধ বিশ্বাস কাজ না করে তবে আমার এ ব্যাপারে কিছু বলার নেই।
প্রফেসরদের সম্বন্ধে যা বলেছেন তার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।আমাদের দেশে প্রফেসরদের মাঝে এতরকম কুসংস্কার কাজ করে যে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া দূরে থাক পরকালের দৌড়ে কে ফার্স্ট হতে পারে সে প্রতিযোগীতায় দিনরাত ব্যস্ত থাকে।একটা উদাহরণ দেই-আমাদের লেখক হুমায়ুন আহমেদ বিজ্ঞানের প্রফেসর ছিলেন-পলিমার কেমিস্ট্রিতে তার পি এইচ ডি আছে একটা।উনি নাকি ছেলে সন্তান লাভের আশায় সিলেটের শাহ জালালের মাজার পর্যন্ত চষে বেড়িয়েছেন।তার লেখাগুলোতে প্রচন্ড বিজ্ঞান বিরোধী কথাবার্তা পাওয়া যাবে-যেমন,‘আমিই মিছির আলী’নামক বইতে তিনি বলছেন যে সব কিছুই একটা চক্র।একই জিনিস বারবার নাকি ঘুরেফিরে আসে।তিনি বস্তুর বিকাশের ইতিহাস জানেন,কিন্তু সচেতন ভাবে ভাববাদকে ভিত্তি করে ব্যবসা করছেন।
@Imran Mahmud Dalim,
যুবতী বউ থাকাতে আমার আপত্তি নেই।স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যত খুশি তত বয়সের ব্যবধান থাকবে তা একান্তই কারো ব্যক্তিগত ব্যাপার।
কিন্তু একসাথে দুই স্ত্রী রাখা আমার কাছে মধ্যযুগীয় বলেই মনে হয়।তার দোনো বউএর কেউই সাবলম্বী নয়।অবশ্য হলে হয়ত সতীনকে মেনে নিতে পারতেন না।দেখুন আমাদের দেশে বিয়ের উদ্দেশ্য যৌণ সম্পর্ক রাখার।বাচ্চা প্রসব করার চুক্তি।আর সেই ক্ষেত্রে যুবতী দুই বউ রাখা অনেকটা হারেম রাখার মত।
ধন্যবাদ।
@রাহনুমা রাখী,
বিয়ের আর কোন উদ্দেশ্য আছে?বিয়ে মানেই যৌন সম্পর্ক রাখার চুক্তি।আর কেউ যদি বন্ধুত্ব ও সুস্থ যৌন সম্পর্ক রাখতে চায় তবে তার বিয়ে করতে হবে এমন কোন কথা নেই।বিয়ে শব্দটি মারাত্নক অশ্লীল।