টেক্সাসের গরম শুরু হয়ে গেছে। কলেজ স্টেশনে আজই এ বছরের প্রথম ১০০ ডিগ্রী তাপমাত্রা। ছোট্ট পাখি। দেখতে ঘুঘু পাখির মত। আকারে তার চেয়েও ছোট। কিন্তু বেজায় দুষ্ট। পেছনের দরজা খুলে বাইরে এলেই আমার টাকু মাথায় চাটি মেরে দিয়ে যায়। ব্যাটাদের মাথায় ঘিলু কম। চাটি মেরে আমাকে ভয় ভয় দেখাতে এসে ওরা ওদের আসল মতলবটাই ফাস করে দেয়। আমার লাউ গাছের জাংলায় বাসা বেঁধেছে। ডিম থেকে বাচ্ছা বেরিয়েছে। কাজেই সাবধান। আমি খুজে বের করি বাচ্চা। ওরা আরো বেশী চেচামেচি করে।
প্রচন্ড গরম। জাংলার তলায় পাতা চেয়ারে বসি। গাছের ছায়া এবং মৃদু বাতাস উপভোগ করি। বাংলাদেশের কথা মনে পড়ে। পাখিদের কিচির মিচির শুনি আর গাছেদের কান্ড কারখানা দেখি। ডারউইনের বিবর্তনের ধারায় সৃষ্ট প্রজাতি মনুষ্যকূল শুধু বুদ্ধিমানই নয়। এরা চালাক, ধূর্ত, ঠগ, বিভৎস এবং ভয়ংকর। কিন্তু গাছেরা বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু বুদ্ধি হলে চলে শুধুমাত্র অতটুকুই বুদ্ধিমান। লাউ গাছের লাউ এবং পাতার শাক খাবেন। কষ্ট হলেও লাউ গাছ মুখ বুজে সহ্য করবে। কিন্তু গোলআলু গাছ তা সহ্য করবে না। যদি আলু খেতে চান তো পাতায় হাত দিবেন না। আর পাতায় হাত দিলে আলুর খাতা একেবারে শূন্য। এদের পাতায় হাত পড়লে গাছ ক্ষেপে উঠে। তখন প্রতিরোধক হিসেবে টক্সিক কেমিকেল তৈরী হয়। ফলে ক্ষেপা ষাঁড়ের মত এদের আচরণ হয়। গাছের আকার দ্রুতবৃদ্ধি পায়। নতুন পাতাও তাড়াতাড়ি দেখা দেয়। কিন্তু এই শাক খেলে বিষাক্ত স্বাদ সহজেই উপলব্ধি করতে পারবেন। আত্মরক্ষার জন্য দেহরক্ষাই আলু গাছের প্রধান ব্রত হয়ে দাঁড়ায়। ফলে বিন্দুমাত্র শক্তিও এরা নতুন প্রজন্মের জন্য রাখতে পারে না। বয়সের ভারে গাছ শুকিয়ে যায়। আপনি ভাববেন এবারে আলু তোলার সময় হয়েছে। মাটি আলগা করুন। দেখবেন একটাও নতুন আলু নেই।
দেখুন আত্মরক্ষার জন্য গাছেরা কী রকম বেপরোয়া।
(মাত্র তিন মিনিট)
আপনি হয়ত খুশী হবেন গাছে অনেক লাঊএর কড়া এসেছে। এবং পরাগায়নও হয়েছে অনেক। সবগুলোই বড় হচ্ছে। আপনি খুব খুশী। কিন্তু গাছেদের এবার সিদ্ধান্ত নেবার পালা। গাছ তার নিজের শরীরের আয়তন এবং মাটি এবং সূর্য রশ্মি থেকে প্রাপ্ত পুষ্টির একটা হিসাব করবে। দেখবে কয়টি শিশুকে বড় করতে পারবে। হিসাব থেকে চিহ্নিত করবে কাকে রাখবে, কাকে ছাড়বে। বাড়তি লাঊয়ের কড়াকে একফোটা পুষ্টি সরবরাহ করবে না। চিহ্নিত মাত্র কয়েকটি লাউই বড় হবে। বাকী গুলো পুষ্টির অভাবে এক ইঞ্চিও বড় হবে না। তারপর একদিন অনাদরে অবহেলায় মারা যাবে। আর এই সময় পুষ্টি পাওয়া লাউগুলো যতদিন গাছে থাকবে নতুন কড়া একটিও আর আসবে না। কী আসাধারণ বুদ্ধি এদের। নিজের কোন ডালে কোন কোনায় শিশু লাউ বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। তার একটা হিসেব হবে। চিহ্নিত করবে কে পুষ্টি পাবে আর কে পাবে না। তার পর যে পুষ্টি সরবরাহ পাবে না, তার পথে রোধক বসাতে হবে। এ এক জটিল ব্যাপার – স্নায়বিক, গানিতিক, জৈবিক, বৈষয়িক এবং প্রায়োগিক। এদের বুদ্ধি কোথায় থাকে? এত কিছু কে নিয়ন্ত্রন করে? কী ভাবে, কোন পথে? গাছেদের কি মস্তিষ্ক আছে? কোথায় এই মস্তিষ্ক?
ডানে-উপরের কড়াটি এবং বাঁয়ের দুটো লাউএর বয়স একই। গাছটি ছোটটিকে হিসেবের বাইরে ফেলে দেওয়ায় এই দশা। পুষ্টিহীনতায় আর বড় হতে পারেনি। দিন তিনেক পরেই এটির মৃত্যু ঘটে।
উপরে নীচে একই লাইনে তিনটি লাউ। একই দিন কোন এক বিকেলে তিনটিরই পরাগায়ন হয়েছে। কিন্তু গাছ ছোটটিকে পুষ্টি থেকে বঞ্চিত করেছে। ছোট হলুদ বর্ণ ধারণ করল। শুধু শুধু বেঁচে থাকার জন্য যে নূন্যতম পুষ্টি দরকার গাছ এটিকে তাও দিচ্ছে না। দিন দুইএর মধ্যে ছোটটি ঝরে পড়ল।
পিয়ার্স গাছ। শীতের শেষে সাদা ফুলে ভর্তি। ভাবলাম পিয়ার্স বড় হলে সব গুলো ডালই ভেঙ্গে পড়বে। গাছের মাথায় বুঝি কোন ভূত চাপল। ফুল উধাও। কচি পাতায় গাছ ছেয়ে গেল। এখানেই শেষ নয়। বিশেষ কয়েকটি ডালের উপরেও গাছটি নাখোশ হল। তার প্রত্যেকটি পাতাকে যেন রাতারাতি গলাটিপে মেরে ফেলল।
স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর লেখাতেই প্রথম জেনেছি। গাছেরও প্রাণ আছে। নিজের যন্ত্রপাতি দিয়ে পরীক্ষা করে দেখিয়েছেন। আঘাত পেলে এরা কাঁদে, খুশীতে আনন্দ করে। প্রাণ থাকলে আমাদের মত মস্তিষ্কও নিশ্চয় আছে। যেখানে মনের কথা লুকিয়ে থাকে। সমগ্র অংগ-প্রত্যংগ পরিচালনার জন্য নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (ব্রেইন) আছে। একটি ডালা বা পাতা ছিড়লে জীব-জন্তুর রক্তের মত কষ্ বের হয়। জলের পাইপ অজৈব বস্তু। ফেটে বা কেটে গেলে একজন কারিগর মেরামত না করলে জল পড়তেই থাকে। কিন্তু জীব-জন্তুদের মস্তিষ্ক আছে। মস্তিষ্ক রক্তপড়া বন্ধের জন্য ততপর হয়ে উঠে। রক্ত জমাট বাঁধে। পড়া বন্ধ হয় আপনা থেকেই। গাছেদেরও কষ্ পড়া নিজ থেকেই বন্ধের ব্যাপার আছে। কে করে এই কাজটি? কোথায় থাকে গাছেদের মস্তিষ্ক?
চার্লস ডারউইন[1] গাছের অংগ-প্রতংগের নড়াচড়া পর্যবেক্ষণ পূর্বক ১৮৮০ সালে “The Power of Movements in Plants” নামে একটি বই বের করেন। বলেন, বীজ থেকে প্রথমেই যে অংশটি (root-tip) বেরোয় সেটি নিম্ন শ্রেনীর প্রাণিদের ব্রেইনের মতই কাজ করে। ব্রেইনটি বেরোনো অংশের শীর্ষস্থানেই অবস্থান করে। জগদীশ চন্দ্র বসু[2, 3] পরীক্ষা (১৯০০) করে বলেন, প্রতিটি গাছ এবং প্রতিটি অংগেই যেন একটি স্নায়ুতন্ত্র আছে। ক্লেভ ব্যাক্সটার [4,5] (১৯৬৬) মনে করেন গাছ অন্যান্য প্রাণীকুলের সাথেও যোগাযোগ করতে পারে।
লতানো গাছগুলোর বেড়ে উঠার জন্য অবলম্বন দরকার। যাকে তাকে এরা অবলম্বন করবে না। Lowe’s or Home Depot থেকে কৃত্রিম সহায়ক নিয়ে আসুন। পাতি গুলো চ্যাপ্টা হলে গাছের এন্টিনা গুলো ওদিকে তাকাবেই না। তিন হাত দূরে যদি কোন কঞ্চি থাকে তবে তার জন্যই আতি-পাতি করবে। খ্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটরের সংবাদ দাতা প্যাট্রিক জনসন [৬] বলেছেন – ক্ষুদে পরগাছা স্ট্র্যাংগলউইড ধারে কাছে শত্রু বা মিত্র আছে কিনা তা বুঝতে পারে। বন্ধু হলে কাছে আসবে। নতুবা মুখ ঘুরিয়ে থাকবে।
আপনি হয়ত বুদ্ধি করে দুটো জাংলা বানিয়েছেন। একটাতে লাউ করবেন আর একটাতে ছিম। মাঝখানে চার ফুট ব্যবধান রেখেছেন। আপনি আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করবেন। লাউ গাছ আপনার দেওয়া জায়গার গোটাটা দখল না করেই লুল পুরুষের মত ছিম গাছের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে ওটিও দখল করতে। কারণ সে জানে আপনি যতটুকু ব্যবস্থা লাউএর জন্য করেছেন তা ভবিষ্যতে যথেষ্ঠ হবে না।
খৃষ্টের জন্মেরও ২৮০ বছর আগে এরিষ্টটল গাছের বুদ্ধিবৃত্তি দর্শনে মুগ্ধ হয়ে বিশ্বাস করেছিলেন গাছের আত্মা আছে, আছে সংবেদনশীলতা। ছেলে ফ্র্যান্সিসের লেখা বইতে ডারউইন লিখলেন, বীচি থেকে প্রথম যে শিকড়টি বের হয় তারই ডগায় থাকে গাছের বিস্তৃত মস্তিষ্ক। এই মস্তিষ্কই বিভিন্ন অংগ থেকে অনুভূতি একত্রিত করে এবং সীমিত নড়াচড়া নিয়ন্ত্রন করে। এই ধারায় neurobiological গবেষনা চলে Bose [7], Simons [8], Roshchina [9]। কিন্তু Frantisek, Stefano, and Dieter [10] বিষয়টি ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখছেন। এঁরা বলেন, শিকড়ের ডগায় (root apex or tip) বিশেষ ধরণের একগুচ্ছ কোষ থাকে যার হাতেই থাকে মস্তিষ্ক সদৃশ যত গুনাবলী। আজকাল বিজ্ঞানী মহলে স্বীকৃত যে, গাছেরা পরিবেশ থেকে নানাবিধ সংকেত আহরণ করতে এবং ত্বড়িত বিশ্লেষণ করতে সক্ষম। এমন কি কোন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে সে বিষয়ে পূর্বেই পরিকল্পনা করতে পারে। আশ্চর্যের বিষয় যে ভুল-ভ্রান্তি বিশ্লেষণ এবং মেমরি ব্যবস্থাপনা বিষয়েও নাকি গাছেরা সম্যক জ্ঞান রাখে।
[1] http://en.wikipedia.org/wiki/Plant_intelligence#Senses_in_plants
[2] ^ Bose, J.C., The Nervous Mechanisms of Plants, Longmans, Green and Co., London. 1926
[4]^ “The Nervous Mechanism of Plants”. Nature 118 (2975): 654–655. 1926. Bibcode 1926Natur.118..654.. doi:10.1038/118654a0.
[৪]^ C Backster. Evidence of a primary perception in plant life. International Journal of Parapsychology, 1968
[৫] ^ Horowitz, K. A.; Lewis, D. C.; Gasteiger, E. L. (1975). “Plant “Primary Perception”: Electrophysiological Unresponsiveness to Brine Shrimp Killing”. Science 189 (4201): 478. Bibcode 1975Sci…189..478H. doi:10.1126/science.189.4201.478. PMID 17781887
[৬] http://www.csmonitor.com/2005/0303/p01s03-usgn.html
[7] BOSE, J. C. 1926. The nervous mechanism of plants. Langmans, Green and Company, London, New
York.
[8] SIMONS, P. 1992. The action plant. Blackwell Publishers, Oxford, England
[9] ROSHCHINA, V. V. 2001. Neurotransmitters in plant life. Enfield, Science Publishers Inc.
[10] František Baluška, Stefano Mancuso, Dieter Volkmann & Peter Barlow. Root apices as plant command centres: the unique
‘brain-like’ status of the root apex transition zone. Biologia, Bratislava, 59/Suppl. 13: 1—, 2004
(http://ds9.botanik.uni-bonn.de/zellbio/AG-Baluska-Volkmann/plantneuro/pdf/NeuroPlantTZ-Biologia.pdf)
নৃপেন্দ্র নাথ সরকার
টেক্সাস, ২ জুন ২০১১
নৃপেনদা, চমৎকার একটি পোস্ট পড়লাম। অনেক ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
আসলে মুক্তমনাদের কারও কাছ থেকে বিস্তারিত একটা লেখা বের করার জন্য একটা মুসাবিদা মাত্র। ধন্যবাদ।
পুরো প্রবন্ধটিই ভালো লাগলো।
আরো ভালো লাগলো নিচের কথাগুলো:
সেজন্যেই বুঝি এমন গানের সৃষ্টি হয়েছে: ‘সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী, লাউয়ের আগা খাইলাম, ডোগা খাইলাম, লাউ দি বানাইলাম ডুগডুগি।
প্লান্ট আমি খুবই পছন্দ করি। আমার একাধিকবার সৌভাগ্য হয়েছে কিউ বোটানিকাল গার্ডেন ভ্রমন করার যেটাকে কিনা বলা হয় ‘প্লান্ট এন্থুসিয়াস্টদের মক্কা’। বলাই বাহুল্য কিউ একদিনে পরিভ্রমন করে শেষ করা অসম্ভব, একমাসে ভ্রমন করেও শেষ করা সম্ভব নয়। এই সামারেও যাবো কিউতে। প্লান্ট চরম চরম সাকসেসফুল একদল জীব, মেরু ছাড়া এরা পৃথিবীর আর সব যায়গাতেই রয়েছে, ঠিক মানুষের মতো। মানুষ টিকে আছে মাত্র ২০০,০০০ বছর, অথচ প্লান্ট টিকেছে বিলিয়ন বছর! স্যার ডেইভিড এটেনব্রার প্রাইভেট লাইফ অফ প্লান্টস দেখেছি আমি, ইউটিউবে আছে। সেখানে দেখিয়েছে যে প্লান্ট মানুষের আগেও আবিষ্কার করে এরোপ্লেন এবং হেলিকপ্টার!!! স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু গাছের প্রাণ আছে এটা বোধহয় আবিষ্কার করেনি, গাছ যে বংশবৃদ্ধি করে এটাতো মানুষ হাজার হাজার বছর ধরেই জানে। স্যার বসু সম্ভবর একটি এক্সপেরিমেন্ট করেছিলেন গাছ মেকানিকাল স্টিমুলিতে রিএক্ট করে কিনা দেখার জন্য, এবং দেখা গিয়েছে যে হ্যা করে, এইটাই কিন্তু স্বাভাবিক ভার্চুয়ালি এমন কোন জীবই কিন্তু নেই যেটা মেকানিকাল স্টিমুলিতে রিএক্ট করে না। আর বাংলাদেশে হলেও বাদবাকী পৃথিবীতে কিন্তু প্লান্ট বায়োলজি নিয়ে গবেষণার জন্য স্যার বসু বিখ্যাত না, বিখ্যাত তিনি রেডিওওয়েভ নিয়ে গবেষণার জন্য। প্লান্টের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম যতোটুকু জানি নেই, এইটা অনেক বড় একটা ক্লেইম, এটা এস্টাব্লিশ করতে প্রচুর প্রচুর এভিডেন্স দরকার। তবে গাছ ইলেক্ট্রিক পটেনশিয়াল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে প্রোটন পাম্প ব্যাবহার করে এটা জানি, মেটাযোয়ান যেমন আমরা যেটা কিনা করি সোডিয়াম পটাসিয়াম পাম্প ব্যাবহার করে। অস্মোটিক প্রেসার ব্যাবহার করে নড়াচড়াও করতে পারে এবং শিকার ধরতে পারে, লেনিঙ্গার বায়োকেমিস্ট্রিতে একটি সাইডনোটে এইব্যাপারে সুন্দর ব্যাখ্যা আছে লিঙ্ক করতে পারছি না আমার ফ্লিকারে আপলোড করে দিলামhttp://www.flickr.com/photos/49962850@N08/5797591930/in/photostream/। ধরা শিকার হজমও করতে পারে ব্যাক্টেরিয়ার সহায়তায়। আমাদের ইকোলজির কেন্দ্রীয় চরিত্রইতো প্লান্টেরা, প্লান্টেরা কার্বন ফিক্স করে, নাইট্রোজেন ফিক্স করে, অক্সিজেন উতপাদন করে আমাদের জন্য! পোস্ট খুবই ভালো লাগলো!
@আল্লাচালাইনা, অনেক ইন্টারেস্টিং তথ্য যোগ করেছেন, ধন্যবাদ।
বাঙ্গালী, আপনজন। তাই একটু বেশী পক্ষপাতিত্ব। ছোটবেলা থেকেই জেনে এসেছি – গাছের প্রাণ আছে, তিনিই প্রমান করেছেন।
@আল্লাচালাইনা,
কিউ বোটানিকাল গার্ডেন ভ্রমন করে আসার সময় আমাদের জন্যে কিছু ছবি নিয়ে আসবেন।
যাবার আগে এখানে দেখেন আল্লাহর কিছু কুদরত-
httpv://www.youtube.com/watch?v=ktIGVtKdgwo&feature=relmfu
httpv://www.youtube.com/watch?v=igkjcuw_n_U&feature=relmfu
httpv://www.youtube.com/watch?v=zbQ1jWl3AOM&feature=related
@আকাশ মালিক, ক্লিপগুলো বড্ড ভাল লাগল। শীতকালে আমাদের দেশে একটা ফুল গাছ দেখেছি। সামান্য ছোয়ায় কুঠরী ভেংগে এর বীজগুলোও প্রায় দুফুট দুরে চলে যায়। ১৯৭২ সালে বলদা গার্ডেনে আমাজন লাইলীর পাতা বেরিয়েছিল। পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হয়েছিল। একটা বাচ্চাকে পাতার উপর শুইয়ে রাখা যায় ইত্যাদি। ময়মনসিংহ থেকে দেখতে এসে হতাশ হয়ছিলাম। বাচ্চা শুইয়ে রাখার ব্যাপারটা সাংবাদিকদের একটু বাড়াবাড়ি ছিল।
@আকাশ মালিক, হ্যা আমি এইটার কথাই বলছিলাম, প্রাইভেট লাইফ অফ প্লান্টস। তবে স্যার ডেভিড এটেনব্রা বোধহয় ন্যাচারাল হিস্ট্রিভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মানের একটা বিশাল ক্ষতি করলেন স্যার ডেভিড এটেনব্রা হয়েই। এখন অন্য কারো উপস্থাপিত ন্যাচারাল হিস্ট্রি চলচ্চিত্র দেখতে বসে এই সম্মোহনী কণ্ঠস্বরটি শুনতে না পেলে সেটিকে আর ন্যাচারাল হিস্ট্রির চলচ্চিত্র বলেই মনে হয়না। বুড়ো মানুষ মরে যাবেন আর মাত্র কয়েকটা দিন পর, এরপর কি হবে? স্যার ডেভিড এটেনব্রাকে রিচার্ড ডকিন্স অভিহিত করেছেন ‘এ গ্রেইট ম্যাসেঞ্জার অফ সায়েন্স’ হিসেবে। ওয়াইল্ড লাইফ ডকুমেন্টারির ছলে ভদ্রলোক একেবারে মুভি দেখিয়ে দেন না পুরা, শুরু করলে শেষ না করে উঠা যায়না? সম্পুর্ণ লাইফ আমার কাছে রয়েছে এবং আমি সম্ভবত প্রত্যেকটিই কয়েকশোবার করে দেখে ফেলেছি, যতো দেখি ততোই মুগ্ধ হই! আমার সবচেয়ে পছন্দ লাইফ ইন কোল্ড ব্লাড, এটা রেপ্টিলিয়ানদের সম্পর্কে আমার দৃষ্টিভঙ্গী আগাগোড়া পরিবর্তন করে দিয়েছে, কি অদ্ভুত সুন্দর একদল জীব যে তারা। ম্যাম্যাল ছাড়াও যে পৃথিবীতে আরও বিশাল একদল চমতকার চমতকার জীব রয়েছে এইটা স্যার ডেভিড এটেনব্রা না দেখালে সাধারণ মানুষ বোধহয় জানতেই পেতোনা কষ্মীনকালেও! কেউ স্যার ডেভিড এটেনব্রা সম্পর্কে একটি পোস্ট লিখলে খুব খুশী হবো।
@আল্লাচালাইনা,
এই কাজটি আপনি করতে পারেন বিশদ ভাবে। করুন না।
দারুন ভালো লাগলো, আরো জানতে ইচ্ছা হচ্ছে ৷ আরো লেখা দিন, এ লেখাটাতো তৃষ্ণা বাড়িয়ে দিলো ৷
লাউ গাছের বুদ্বিমত্তায় মুগ্ধ হলাম, তবে এত বুদ্বিমান প্রানীর ছবি দেখে প্রথমেই ভক্ষন চিন্তা মাথায় এসেছিল।
টেক্সাসে পিয়ার্স হয় জানতাম না, আমার ধারনা ছিল যে পিয়ার্সের জন্য আপেলের মত কিছুটা ঠান্ডা লাগে।
সব গাছেরই আগায় আসলেই মস্তিষ্কের মত কিছু সংবেদনশীল নিয়ন্ত্রক থাকে? তাই যদি হয় তবে এটা কি পূণঃ বর্ধনশীল? বহু গাছেরই তো আগা নিয়মিত ছেটে দেওয়া হয়। তার মানে মস্তিষ্কও কাটা পড়ল?
ঠিক কোন অংশটি এই মস্তিষ্ক?
কলেজ ষ্টেশন নামের ছোট শহরটি বেশ ভাল লাগতো।
@আদিল মাহমুদ,
আমরা যদি সীম গাছের কথা বিবেচনায় আনি দেখি এক বছর সীম ধরার পর সম্পূর্ণ গাছিটি যদি কেটে দেয়া হয় বা গাছটি যদি মারা যায় পরের বছর এই গাছের গুড়ি থেকে এই গাছ আবার নতুন করে বেড়ে ওঠে।যদি শুধু গাছের আগায় মস্তিষ্কের মত কোন নিয়ন্ত্রক থেকে থাকে তাহলে গাছ কাটার ফলে বা গাছ শুকিয়ে মারা গেলে মস্তিষ্কের কার্য ক্ষমতা তো ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কথা সে ক্ষেত্রে নতুন করে নিজেকে বিস্তার করার মস্তিষ্ক জাত শক্তি ওরা পায় কোথা থেকে?
তবে মনে হয় কিছু গাছের ঘ্রাণ শক্তি গ্রহন করার ক্ষমতা থাকাটাও বিচিত্র কিছু নয়।
@রাজেশ তালুকদার,
আমারো তো গাছের আগায় মস্তিষ্ক তত্ত্ব শুনে এমন বহু উদাহরন মনে এসেছে। তবে সীম বা লেগুম জাতের গাছ বীচি থেকে হবার সময় বেশ কিছুদিন তাদের আগায় বীচির অংশ বিশেষ থেকে যায় লক্ষ্য করেছি। সেটাই কি সীম মস্তিষ্ক?
ব্যাপারটা বেশ ভাবনার, সারা জীবনই জেনে এসেছি যে গাছেরও অনুভূতি আছে, তার কাছে নাকি গান বাজনা করলে তার শরীর স্বাস্থ্য ভাল হয়……এসবে কিছুটা বাড়াবাড়ি থাকলেও তাদের যে অনুভূতি আছে তাতে তো ভুল নেই। তাহলে সেই অনুভূতি প্রসেস করার জন্য মস্তিষ্ক (হতে পারে খুবই নিম্ন শ্রেনীর) জাতীয় কিছু থাকাটা খুবই স্বাভাবিক।
দেখি নৃপেনদা কি বলেন, উনি তো এই লাইনের লোক।
@আদিল মাহমুদ,
নাহ্ ভাই আমি এ লাইনের লোক নই। কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছি কৃষি ইঞ্জিনীয়ারীংএ। সারাজীবনে প্রাণীবিজ্ঞানে মাত্র একটিই কোর্স নিয়েছিলাম ১৯৬৭এ। plumule, schlerenchyma, chlorenchyma ইত্যাদি সামান্য কয়েকটি শব্দ মনে আছে মাত্র।
@আদিল মাহমুদ,
মাটিতে বুনার পর, বীজ ফেটে যা বের হয় তার একটি অংশ shoot হয়ে উপরের দিকে (plumule) উঠে। আর একটি অংশ শিকড় হিসেবে মাটিতে ঢুকে। দ্বিতীয়টি root tip বা root apex. মস্তিষ্ক এখানেই। দেখুন ডারউইন কী বলেছেন –>
মস্তিষ্ক root apex এ diffused থাকে। এক সময় প্রধান শিকড়টি কেটে দিলেও কিন্তু গাছ তার নিজস্ব ধারায় চলতে থাকে। মনে হ্য় প্রতিটি শিকড়েই মস্তিষ্ক আছে। এ যেন আমাদের distributed memory system.
@নৃপেন্দ্র সরকার,
বেশ ইন্টারেষ্টিং ব্যাপার। এ নিয়ে আরো জানতে আগ্রহ হচ্ছে।
গাছ তো বেশ কিছু ব্যাপারেই অনুভূতি দেখায় আমরা জানি, বেশীরভাগ সময়েই ধীরে বলে হয়ত চোখে পড়ে না। তার মানে তাদের অনুভূতি প্রসেস করার কোন না কোন ব্যাবস্থা নিশ্চয়ই আছে।
এখন কথা হল যে সেটা কি মস্তিষ্কের মত কোন কেন্দ্রীয় অংগে (যা মনে হয় না সত্য), নাকি সাধারন কোষগুলিই এটা নিয়ন্ত্রন করে?
নীললোহিতের একটি বই ঘটনাক্রমে পড়ছিলাম এই সময়েই, সেখানেও এই ধরনের বেশ কিছু কথা আছে। উদ্ভিদের মৃত্যু ঠিক কখন ঘটে তা কি বলা চলে? মানুষের যেমন হার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়াকে মৃত্যু বলা যায় গাছের ক্ষেত্রে তা কিন্তু বলা যায় না। বেশ কিছু গাছের কাটা অংশ থেকে নুতন গাছ হয়। গাছের প্রানের সংজ্ঞা কি হবে?
@আদিল মাহমুদ,
সত্যি তো। উদ্ভিদের মৃত্যু কীভাবে, কখন হয়? প্রাণের সংজ্ঞা কী?
নিয়ন্ত্রক কোষ প্রতিটি শিকড়ে থাকলে, গাছ ত আমাদের parallel processors এর মত কাজ করে। গাছের যত শিকড় বাড়ছে, প্রসেসরের সংখ্যা তত বাড়ছে। শেষ শিকড়টি মারা গেলেই কি গাছের মৃত্যু হয়? স্বর্ণলতার (অন্যান্য পরগাছা মূল গাছে শিকড় ঢুকিয়ে বেচে থাকে) কোন শিকড় কখনই থাকে না। তাহলে কি ব্রেইন ছাড়া গাছ?
ধান-পাট, বা সীম, করলার বীচির মত গোল আলুর বীচি হয় না। চোখ কেটে মাটি চাপা দিলেই শিকড় বের হয়। নতুন শিকড় বের হলেই কি বলব নতুন একটি মস্তিষ্ক যোগ হল?
নীললোহিতের বই থেকে কিছু তথ্য দিন।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
বইটি নিছকই উপন্যাস, “পাতাপাহাড়ির বনদেবতা” তবে গাছপালার ভূমিকা আছে দেখে বেশ কিছু প্রাসংগিক কথাবার্তা আছে। কিছু আছে শুনলে গালগল্পের মতই লাগে।
বইটা আপনাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি ই-মেল এ। গল্প হিসেবেও চমতকার।
@আদিল মাহমুদ,
হ্যা, চমৎকার। তাঁর নিজের কথাগুলোই মনে হয় গল্পাকারে বলেছেন। ধন্যবাদ।
@আদিল মাহমুদ,
বইটা একটু দয়া করে আমাকেও পাঠিয়ে দিয়েন।
আমার email address [email protected]
@আদিল মাহমুদ,
বইটা আমাকেও পাঠিয়ে দিয়েন, প্লিজ।
@আদিল মাহমুদ, নৃপেন্দ্র সরকার ,
গাছেরা অক্রমাধিকারতন্ত্রী(nonhierarchical) জীব । অন্যদিকে প্রানীরা ক্রমাধিকারতন্ত্রী(hierarchical)) জীব। প্রানীদের সব গুরুত্বপূর্ন ফাংশন কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় যার ক্রমাধিকারতন্ত্রের শীর্ষে অবস্থান করছে মস্তিষ্ক। মস্তিষ্কের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে প্রাণীর মৃত্যু ঘটে । অন্যদিকে, গাছের সব গুরুত্বপূর্ন ফাংশনগুলি বিকেন্দ্রীয় (decentralized) । একটা গাছের বেশীরভাগ অংশের কোষগুলি মরে গেলেও (যা সচররাচর হয়) সম্পূর্ন গাছটার মৃত্যু হয় না। বেশীর ভাগ বয়স্ক গাছের বেশীরভাগ অংশই মৃত । গাছেরা অমর কিনা সেটা এখনও প্রমানিত নয় যদিও , তবে একটা গাছের সম্পূর্ন মৃত্যু হতে হলে অনেক কিছুই ঘটতে হবে।
কিছু গাছের বয়স পাঁচ হাজার (৫,০০০) বছর যেমন , এই ছবিটার Bristlecone :
[img]http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/0/02/Bristlecone_CA.JPG/220px-Bristlecone_CA.JPG[/img]
@সংশপ্তক,
আমরাও গাছের মত এই বিকেন্দ্রিক ব্যাবস্থা পেলে তো ভালই হত। হার্ট ফেল মারলো, বা ব্রেন ড্যামেজ হয়ে গেল; এমন কোন ব্যাপার নয়, বেঁচে থাকলাম ঠিকই।
নিম্ন শ্রেনীর জীব হওয়ার দেখি বেশ কিছু সুবিধেও আছে।
@আদিল মাহমুদ,
আমরাও গাছের মত এই বিকেন্দ্রীকৃত ব্যাবস্থা পেলে কি রকম হতো সেটা আসলে পরীক্ষা না করে বলা মুশকিল । আমরা এখনও আমাদের শরীরের ৯০% জিনের কর্ম ব্যপ্তি সম্পর্কে নিশ্চিত নই। এটা করতে এখনও শত বছর লেগে যেতে পারে।কৃষিক্ষেত্রের সাথে সম্পৃক্ত প্রাণী এবং জীবদের ব্যতীত মাত্র অল্প কিছু প্রাণী এবং জীবের জিনোম সিকোয়েন্স করার জন্য বাজেট বরাদ্দ আছে , ।
তবে , নিম্ন বা উচ্চ শ্রেনীর জীব বলে যে বিন্যাস ‘দার্শনিকেরা’ করেন তা জীব বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে যথার্থ নয় কারন প্রতিটা জীবই অনন্য এবং তাদের সুনির্দিষ্ট নিজস্ব কর্মক্ষেত্র আছে। (&)
@আদিল মাহমুদ,
জীবিতের সংজ্ঞা নির্ধারণ করাটা আসলে জীববিজ্ঞান শাস্ত্রের কাজ না, এটা আইনশাস্ত্রের কাজ যেটা কিনা সম্পুর্ণই সাবজেক্টিভ এবং সময়ের সাথে পরিবর্তনযোগ্য। একসময় আপনার কথাটা ঠিক ছিলো যে হার্ট আর ফুসফুস চলছে না মানেই একজন মানুষ মৃত কেননা তখন বন্ধ হয়ে যাওয়া হার্ট বা ফুসফুস ঠিক করার প্রযুক্তি মানুষের ছিলো না। তবে এখন কিন্তু সেটা নয়, এখন কার্ডিয়াক ও রেস্পিরেটরি এরেস্ট রোগীকে রিসাসিটেট করা যায় এবং করাটা আইনগত দায়িত্ব আনলেস ঐ রোগীর সবেচ্ছামৃত্যু ডিএনআর ফর্ম সাইন করা আছে। আমি যেই দেশে থাকি সেখানে একজন প্যারামেডিক গতবছরে কোন একটা সময়ে ম্যানস্লটার মামলা খেয়েছিলো একজন অজ্ঞান ব্যক্তিকে রিসাসিটেট করার উদ্যোগ না নিয়ে মৃত ঘোষণা করার জন্য! হার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়াকে মৃত্যু বলেনা এখন আর। ক্লিনিকাল মৃত্যুর বর্তমান সংজ্ঞা হচ্ছে ব্রেইনস্টেমে কোন বৈদ্যতিক কার্যক্রমের অনুপস্থিতি। ইলেক্ট্রোএন্সেফালোগ্রাফির মাধ্যমে মস্তিষ্কের বৈদ্যতিক কার্যক্রম মনিটর করা হয়। ব্রেইনস্টেম হচ্ছে অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেমের কেন্দ্র যেটা কিনা জীবন চালায় শ্বসন, রেচন, সংবহন ইত্যাদি নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে। ক্লিনিকালি মৃত মানুষকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হয়। আর ফরেনসিকলি মৃত ঘোষণা করা যায় একজনকে পাঁচটি লক্ষণ দেখে, এই পাঁচটি মৃত্যুর ডিফিনেটিভ ডায়াগ্নস্টিক লক্ষণ- এগুলোর নাম যথাক্রমে এল্গর মোর্টিস, রিগর মোর্টিস, লিভর মোর্টিস এবং বিচ্ছিন্ন স্পাইনাল কোর্ড। উইকি দেখতে পারেন আরও তথ্য পেতে।
অমর জীব অনেকই রয়েছে। যেমন, ব্যাক্টেরিয়া এবং অযৌনপ্রজ অন্যান্য এককোষী জীবেরা। মেকানিকালি না মারলে এরা কখনই মরবে না। বাইনারি ফিশন পদ্ধতিতে দুইটি কোষে বিভাজিত হয়ে যাবে, এবং এই দুইটি কোষের মধ্যকার সম্পর্ক কিন্তু বাবা-মা হবে না বরং হবে ভাই-বোন। মানবকোষেরও অনেকগুলো অমরধারা রয়েছে। আমি আমার আগের কোন একটা পোস্টে হেলা ধারার সম্পর্কে লিখেছিলাম যেটার সেল সাইকেল কখনই এরেস্ট হয় না। এরা একজন সার্ভিকাল ক্যান্সার রোগীর ক্যান্সার কোষের বংশধর যে কিনা ষাটের দশকে মারা যায়। বর্তমানে হেলা কোষকে স্পিসিস স্ট্যাটাস দেওয়ার কথা চলছে। কিন্তু এইখানে একটা সমস্যা আছে। হেলা জিনোমের পর্যায়ক্রম সাদৃশ্য মানবজিনোমের সাথেই সবচেয়ে বেশী হলেও, হেলার মর্ফোলজি মানুষ থেকে সম্পুর্ণই আলাদা, মানুষ বহুকোষী আর হেলা এককোষী, মানুষের ক্রোমোজম ২৪ জোড়া, হেলার ক্রমোজোম ৮৬ জোড়া!!! ফলে হেলাকে স্পিসিস স্ট্যাটাস দিয়ে হোমো জিনাসের অন্তর্ভুক্ত করলে সেটা লঙ্ঘন করবে ফাইলোজেনেটিক্সের মর্ফোলজির নিয়ম, আর অন্য কোন স্বতন্ত্র জিনাস এসাইন করলে হোমো জিনাসটি হবে প্যারাফাইলেটিক! আবার হেলাও স্পিসিস হবার সব ধরণের যোগ্যতাই রাখে। যাই হোক, জীবনের সংজ্ঞা দিতে জীববিজ্ঞান সমর্থ হলেও জীবীতের সংজ্ঞা দিতে এখনও সমর্থ নয়, খুব সম্ভবত কারণ জীবীতের সংজ্ঞা দেওয়াটা জীববিজ্ঞানের কাজই নয় বলে, প্রযুক্তির সাথে সাথে হিদার্টো মৃত পরিগনিতকেওতো জীবীত করে তুলছে বিজ্ঞান।
আর গাছের ব্যাপারটাকে আমি অভিহিত করবো অনেকটা হাইড্রার মতো। গাছের প্রত্যেকটি কোষই টোটিপোটেন্ট, এরা অন্যান্য সকল কোষে ডিফ্রেন্সিয়েট করতে পারে, ফলে গাছের কলম করা যায়। হাইড্রার প্রত্যেকটি কোষও টোটিপোটেন্ট। মানব কোষের টোটিপোটেন্ট কোষ হচ্ছে নিষিক্ত ডিম থেকে শুরু করে এম্ব্রিয়োর যাইগোট স্টেইজ পর্যন্ত কোষগুলো অন্যান্য আর কোন কোষ নয়। ফলে মানুষ বলাই বাহুল্য মরণশীল, তবে গাছ/ হাইড্রা পটেনশিয়ালি মরণশীল হলেও আমি মনে করিনা ব্যাক্টেরিয়ার মতো সত্যিকারের মরণশীল কেননা কলম যদি করা না হয় তাহলেতো গাছটা ঠিকই মরে যাচ্ছে।
গাছের বিভিন্নরকম অবিশ্বাস্য কান্ডকারখানা দেখতে Sir David Attinbrough এর Secret Life Of the Plants দেখুন। এটা আমার ওনার Life সিরিজের সবচেয়ে প্রিয় ডকুমেন্টারী।
খুব ভালো লাগলো। বিশেষ ডেডিকেটেড ইনফরমেশন প্রসেসিং কোষ ছাড়াও আরো কতোভাবেই না ইন্টেলিজেন্ট সিস্টেম গড়ে ওঠে। বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর গবেষনা নিয়ে কেউ কি একটু ডিটেল লিখবেন। বলা হয়ে থাকে তিনি গাছের প্রান আছে সেটা আবিষ্কার করেছেন। এব্যপারটা একটু কেমন লাগে, কারন গাছের যে প্রান আছে এটা তো গত কয়েক হাজার বছরে কেউ তো সন্দেহ করেনি।
@সফিক,
এত কাল তাই জেনে এসেছি। দেখুন
@নৃপেন্দ্র সরকার,
অনেকদিন পরে আপনার লেখা পড়ে বড্ড ভালো লাগল।
@আফরোজা আলম,
পড়েছেন জানে ভাল লাগল, ধন্যবাদ।
@সফিক,
জগদীশ বসু আসলে প্রাণ আছে এটা বের করেন নি, কারন এটা বের করার দরকার ছিল না। উনি বের করেছেন, গাছেদের সংবেদনশীলতা। গাছ যে বিভিন্ন স্টিমুলাইতে রিএক্ট করে সেটা উনি বের করেছিলেন।
@সাইফুল ইসলাম,
আসল বোটানিষ্ট পাওয়া গেছে।
গাছের মস্তিষ্ক সম্পর্কিত জ্ঞান চাই।
গাছের ব্রেন দিয়ে কি ব্রেন মাসালা হবে???
@আদিল মাহমুদ,
হেই মিয়া আমি বোটানিষ্ট ক্যাডা কইছে????? নাশকতামূলক ষড়যন্ত্র আমার বিরুদ্দি। এইডা কইলাম ঝাতি মাইন্যা লইব না। :))
তয় আফনের জন্যি খারাপ খবর আছে, হেইডা অইল, গাছের কুনু মস্তিষ্ক নাইক্কা। :rotfl:
দেহি একটু পড়শুনা করন লাগব। একটা পোষ্ট কষ্টমষ্ট কইরা দিতে পারলি দিমু নে। তয় আমারতে এই ফোরামে ম্যালা লোক আছে ভালু ভালু এই পুষ্ট দেওয়া জন্যি।
হেরা কই???? (বিরাট রাগের ইমো)
@সাইফুল ইসলাম,
সাইফুল,আমি কিন্তু তোমারে চিনি…………………………হা হা হা…… :))
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
যদি বলতে চান তাইলে জুলজিষ্ট বলতে পারেন। যদিও লেখা পড়া মাথায় উঠছে আরোও বহুত আগেই। :))
@সাইফুল ইসলাম,
ঐ একই কথা——- মূল তো রসুনের কোয়ার মতই।
কেমন আছ ?
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
এইটা ঠিকই কইছেন। :))
আছি ভালোই। আপনি দেশে কবে আসবেন তাই বলেন। 🙂
@সাইফুল ইসলাম,
এখন তো বাংলাদেশে অনেক রাত।তুমি কি রাতজাগনেওয়ালা না-কি? :-s
দেশে কবে আসতে পারব জানি না।
ভালো আছ জেনে ভাল লাগল। (D)
@সাইফুল ইসলাম,
সাবসিডিয়ারি পাশ কর কেমনে? চোথাবাজি? নাকি সরকার দলীয় রাজনীতি?
@আদিল মাহমুদ,
আগের থেকে কিন্তু এখন ঢাবি বেশ অনেকটাই ভালো হয়েছে। যেমন ধরেন আমাদের কিন্তু সেশনজট হয় নাই। প্রায় সব ডিপার্ট্মেন্টেই মনে হয় একই অবস্থা। যদিও আছে কিছু কিছু খারাপ। আর রাজনীতি তো ধরেন আগের অবস্থায়ই।
আর লেহাপড়া নিয়া আমি কিছু কমু না। (রাগ+মন খারাপ+কিছুই জানি না+ ড্যাম কেয়ারের সম্মিলিত ইমো)
শুধু গাছ কেন ? এসব গাছের দৈনিক কর্মকান্ডের সাথে যারা ওতোপ্রোতভাবে জড়িত এবং এসব গাছের আচরণকে সরাসরি প্রভাবিত করে – সেই এক কোষী ব্যাকটেরিয়াদের বু্দ্ধিবৃত্তিক আচরন আরো রহস্যময় । মস্তিষ্কের বয়স তেমন বেশী নয় যদি প্রানের কোটি কোটি বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করা যায়। বুদ্ধিবৃত্তির জন্য মস্তিষ্ক জরুরী নয়।
@সংশপ্তক,
গাছের ব্যাপার থেকে তাই মনে হয়। তবু যত ক্ষুদ্রই হউক, নির্বাহী কিছু স্পেশাল সেল নিশ্চয় বিবর্তনের পথ ধরেই ডেভেলপ করেছে। (আমার একান্তই নিজস্ব ধারণা)