হে দয়াময়,
তুমি বসে আছ সাতটি আকাশের উপরে,
নিশ্চিন্তে, নিরাপদে।
পৃথিবী দাঁড়িয়ে আছে আজ রক্ত-সমুদ্র পারে
মানুষের রক্তে আজ মানুষ করছে সন্তরণ
রক্তপিপাসু মানুষ তাদের পিপাসা মিটাচ্ছে
মানুষের রক্ত পানে।
এ নিষ্ঠুর খেলা তুমি দেখতে পাওনা?

হে পরম করুণাময়,
তুমি বসে আছ সুউচ্চে সুরক্ষিত আসনে,
অভাব অনটনহীন প্রশান্ত মনে।
অনশনক্লিষ্ট, জীবনের অনলে বিদগ্ধ
মানুষের কান্না তুমি শুনতে কী পাওনা,
বস্ত্রহীন নারীর লজ্জা তুমি কী দেখছনা?
সুনামিতে ভাসে যাওয়া বাবা-মায়ের-
অবুঝ,এতিম শিশুর বুকফাটা আর্তনাদে
তোমার অন্তর কী কাঁপেনা,
দুগ্ধপোষ্য শিশুর খাদ্যাভাবে নির্মম মৃত্যুতে
তোমার হৃদয় কী দোলেনা?
হাড়কাঁপানো শীতে, শীতবস্ত্রের অভাবে;
অগণিত মানুষ যখন ঠকঠক করে কাঁপে,
তখন তোমার নিশ্ছিদ্র আসমানগুলো কী কঁপেনা?

হে প্রতিপালক, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের পরমপিতা,
তুমি বসে আছ অমূল্য পদার্থে তৈরি,
ঝকঝকে তকতকে পরিচ্ছন্ন আসনে।
কর্দমাক্ত,ধূলিধূসরিত,কণ্টকাকীর্ণ এই ধরণী,
তোমার প্রিয়তম সন্তানদের বাসস্থান।
এখানে একটিবার পদার্পণ করতে
তোমার মন কী চায়না?
এখানে প্রতি মুহূর্তে তোমার অসংখ্য সন্তান মরছে
না খেয়ে ,খুধার জ্বালায় ধুকে ধুকে।
বুভুক্ষু সন্তানের কাছে তুমি কীভাবে কর তোষামোদ কামনা?

হে ন্যায় বিচারক,
তুমি কী দেখছনা ক্যান্সার আক্রান্ত
প্রান্তিক শিশুদের মরণ-যন্ত্রণা,
নিষ্পাপ শিশুরা কী করেছে অপরাধ
তোমার নির্মম পদপ্রান্তে?
তাদের বাবা-মায়ের অভ্রভেদী প্রার্থনায়
তোমার আরশ কী কাঁপেনা?
গৃহহীন,খাদ্যহীন,বস্ত্রহীন মানুষের মর্মবেদনা
তুমি বুঝতে কী পারনা?
পৃথিবীর পথে পথে কঙ্কালসার
মানুষের শোভাযাত্রা তুমি দেখতে কী পাওনা?