আমরা খুব দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, আমাদের প্রিয় ব্লগার সামির আহমেদ আনন্দ যিনি মুক্তমনায় ঈশ্বরহীন নামে লিখতেন, তিনি হঠাৎ করেই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। আমরা তার খুব ঘনিষ্ঠ একজন বন্ধুর (আনিস রায়হান) কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই শোক সংবাদ আপনাদের জানাচ্ছি। আমরা আগামী দিনগুলোতে এ নিয়ে তার পরিচিত সদস্যদের কাছ থেকে এ নিয়ে আপডেট আশা করছি।
আমরা আনিস রায়হানের ইমেইলটি এবং তার পাঠানো এটাচমেন্টে পাওয়া সামির আহমেদের কিছু আলোকচিত্র হুবহু প্রকাশ করছি –
:line:
From:: Anis Raihan”
To: mukto-mona
Subject: Very Very Important
সামির আহমেদ আনন্দ। মুক্তমনার একজন ব্লগার। গতকাল তিনি মারা গেছেন। অ্যাটাচমেন্ট থেকে সব জানতে পারবেন। আপনাদের কিছু করার থাকলে করেন।
ধন্যবাদ।
আনিস রায়হান
নিজস্ব প্রতিবেদক
সাপ্তাহিক
www.shaptahik.com
০১৭৩২৭২৯০২৭
:line:
মুক্তমনার সদস্যদের মধ্যে কেউ সামির আহমেদ এর পরিচিত থেকে থাকলে এ বিষয়ে আমাদের জানাতে অনুরোধ করছি।
আমরা সামিরের বন্ধু বান্ধব এবং পরিবারের জন্য মুক্তমনার পক্ষ থেকে সমবেদনা প্রকাশ করছি।
:candle:
সামির উদ্দেশে নিবেদিত অনিন্দসুন্দর ব্যানারটির জন্য মুক্তমনাকে ধন্যবাদ।
খুব খারাপ লাগলো খবরটা শুনে।
:candle:
প্রিয় মুক্তমনা পাঠক বৃন্দ,
-অ ট। আপনারা খেয়াল করেছেন কিনা জানিনা, আমি অনেক – অনেক দিন যাবত মুক্তমনায় অনুপস্থিত। কারনও কেউ জানে কেউ জানেনা। যারা ঘনিষ্ট ২/১ জন জানেন। আমাদের সবার ছোট বোন আজ দুর্দান্ত অসুস্থ্য। অনেক জটিল অপারেশন হয়েছে। বাইওপ্সি রিপোর্ট ভালো না। তবু কি জানি অবুঝ মন আশা নিয়ে আছি। হাসপাতাল আর বাসা এই করছি তার মাঝে আমার মেয়ের এইচ,এস,সি পরীক্ষা।
আমার প্রবাসী ভাইকে মেইল দিতে এসে আজ হঠাত মুক্তমনায় উকি দিলাম। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম। এমন কেন হয়?
আমার ছোট বোন এর এ দিকে সামি। ওদের সাথে ভাগ্য কেনো এমন করবে?
তীব্র অভিমান, তীব্র বুকে জ্বালা জানিয়ে গেলাম। সহানুভূতি জানাতে পারিনা যে আমি। এটা আমার অক্ষমতা। আমায় ক্ষমা করুন। কেননা এমন সময়
ভাষা আমার রুদ্ধ থাকে। কি বলবো- কাকে কী জানাবো জানিনা যে- ।
@আফরোজা আলম,
চারিদিকে এতো খারাপ খবর! আপনার ছোট বোনের কথা শুনে খুব খারাপ লাগছে। কামনা করি যেন উনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠেন।
@আফরোজা আলম,
মুক্তমনায় আপনার অনুপস্থিতি চোখে পড়েছে। সবকিছু শুনে খারাপ লাগছে।
কিছু বলার ভাষা নেই।
সামিরের জন্য শ্রদ্ধাঞ্জলী। (F)
সামি, তুমি ভীষণ কষ্ট দায়ক এক অনুভূতির জন্ম দিয়ে গেলে। অসম্ভব ও অসহ্য কষ্টের মধ্যে মাকে ফেলে যাওয়া কোন ঈশ্বরহীনের কাজ হওয়া উচিত ছিল না। সামি একটি নিষ্ঠুরতর ও নিকৃষ্ঠতম কাজ করে গেলে। যুক্তিবাদী মানুষ হয়ে একটি অযৌক্তিক কাজ করে গেলে। এত বুদ্ধিদীপ্ত চেহারার ছেলেটি যে কেন এবং কীভাবে এত বোকামি করলে?
তোমার ছবিট দেখে আমি সহ্য করতে পারছি না। আবেগে মথিত হচ্ছি। অস্বস্তি বোধ করছি।
ঈশ্বরহীন কেন পরাজিত হলে! আনন্দ কেন সবাইকে নিরানন্দ করলে?
কেউ কি আরেকটু বিস্তারিত তার সম্পর্কে জানাবেন দয়া করে!
বিপ্লব পালের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে কিছু করা উচিত। তা না হলে আরও কাউকে হারাতে হবে বলে আমি ভয় পাচ্ছি।
গীতা দিদি, নিষ্ঠুরতর, নিকৃষ্ঠতম কথাগুলো না বললে হতো হয়তো। অনেক কষ্ট নিয়ে লিখেছেন নিশ্চয়ই, তবুও বলব। সামিরকে আমি চিনি না। সে যদি কিছু না করতে পারার কষ্ট নিয়ে চলে গিয়ে থাকে, তার কাছে কথাগুলোর মনে হয় বেশি মূল্য থাকত না। মা কষ্ট পাবে, বোন কষ্ট পাবে, কিন্তু পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, কষ্ট পেয়ে বেঁচে থাকছে বা মরে যাচ্ছে। সবার কাছে আপন জনের কষ্টের priority এক থাকে না। সবার নিজের কষ্টের priority-ও এক না। সামিরের ভিতরের কষ্টগুলো কি আমরা অনুভব করতে পারি? কষ্টের কারনগুলো হয়তো কল্পনা করতে পারি, নিজেদেরকে সেই অবস্থানে বসিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করতে পারি। সবার কষ্ট এক না, সবার কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা এক না। সবার যুদ্ধ করার ইচ্ছা এক না, যুদ্ধ করার ক্ষমতা এক না। পরাজয় মেনে নেয়ার ক্ষমতা এক না, জয়ের মূল্য এক না।
সামিরকে হারিয়ে আমাদের কষ্ট থাকুক, অভিমান থাকুক, সামিরের মতন আর কাউকে না হারাবার স্বপ্ন থাকুক। কিন্তু, সামিরকে আমরা না judge করি।
@জয়,
একমত। লেখার সময়ও ভেবেছি শব্দ দুটো লিখব না। দুই বার মুছেও ছিলাম। পরে আবার লিখলাম। কেউ যদি আমার শব্দ দুটো পড়ে সামির মত “জঘন্য “সিদ্ধান্ত থেকে পিছ পা হয়।
এখন ব্যানারে তার ছবিটা দেখলে আমার দুর্বল মন ছ্যাৎ ছ্যাৎ করে উঠে। যাক, সামিকে স্নেহ ভরে স্মরণ করছি। তার মা বাবার সাথে ভাগ করে নিতে চাই তাদের কষ্ট, যদিও তা সম্ভব নয়। ভাল থাকুন সবাই যার যার আদর্শবোধ নিয়ে।
মানুষের ধর্মই এমন, জীবিত থাকতে কখনো এত মুল্যায়ন করতে পারিনি। আজ উনি নেই, এখন সবাই চিনেছি উনাকে।
সমাজের বড় অদ্ভুত সূত্র!
হয়ত উনাকে আগেও চিনতাম কিন্তু হয়ত উনি কখনো জানতে পারেননি অথবা জানাতে পারিনি। আজকে সকলে মিলে জানানোর শত চেষ্টা করেও কিছুই করতে পারবো না।
দীর্ঘনিঃশাস আর কেবল মনে হয় সমাজের এ বড় অদ্ভুত সূত্র!
আনন্দ, আমার কিছু বলার নাই…
@আনিস রায়হান,
মূল পোস্টে যে আনিস রায়হানের কথা বলা হয়েছে তিনি আর আপনি কি একই ব্যক্তি? যদি তাই হন, তাহলে আপনি সামির আহমেদ আনন্দের খুব ঘনিষ্ট বন্ধু। এখানে মন্তব্যগুলো দেখে আমাদের কষ্টটুকু বোধ হয় আপনি বুঝতে পারছেন। আপনার কাছ থেকে সামির সম্বন্ধে অনেক কিছু জানতে চাই। জানতে চাই তার ছেলেবেলার কথা, কেমন ছিলেন, কী করতেন। জানি আপনার জন্য এগুলো বলা এখন খুব কষ্টকর হবে, তবুও একটু লিখুন না সামিরের স্মৃতিটাকে বাঁচিয়ে রাখতে।
আর যদি আপনি সেই একই আনিস রায়হান না হন, তবে মন্তব্যের জন্য দুঃখিত।
@ফাহিম রেজা, আসলে আমি চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখনো কিছু লিখত পারছি না। হয়তো পারবো।
@ফাহিম রেজা, আর হ্যাঁ, আমিই সেই।
খুবই দুঃখজনক। অন্য কাকে আর সমবেদনা জানাবো! যা ক্ষতি হবার তাতো হয়েই গেছে। শুধু বলতে চাই, এটা সমাধানের কোনো পথ নয়। এধরণের দুঃসাহসী বোকামি করা মানায় না। জীবন অনেক মূল্যবান একটা জিনিস। সামিরের মত মানুষদের জীবনতো শুধুই মূল্যবানই নয়, প্রয়োজনীয়তাও বটে।
আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, মানুষ তার কর্মের স্বীকৃতি চায়। তাই মৃত্যুর পরে নয়, বরং আগেই তার প্রয়োজনীয়তার কথা, গুরুত্বের কথা তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়া উচিৎ। আমরা যদি বলতে পারতাম, তাঁর গুরুত্ব আমাদের কাছে, সমাজের কাছে কত বেশি, তাহলে হয়তো তিঁনি দ্বিতীয়বার চিন্তা করতেন, জীবনকে অন্যভাবেও দেখতে পারতেন।
খুবই মর্মাহত হয়েছি। তাঁর প্রতি, তাঁর লেখনী শক্তি এবং মুক্ত চিন্তার ক্ষমতার প্রতি সন্মান জানাই।
মনে রবে কিনা রবে আমারে … সামির আপনি জানতেই পারলেন না কতো জনকে কতো হৃদয়কে ভেঙ্গে চুরে,চুরে ক্ষত-বিক্ষত করে দিয়ে গেলেন । কী কষ্ট ছিল , কী ব্যাথা তা আজ জানারও সুযোগ নাই, সব কিছুর ঊর্ধ্বে আপনি । সবাই এখন উপরে উঠার তালে, আপনিও ? এইভাবে ! এইভাবে আপনি উপরে উঠবেন আমরা কল্পনাও করতে পারি নাই । এইভাবে কেউ উঠেনা, কেউ না … কেউ না । জানেন … আমি আপনার কোনও লেখাই পড়িনি, দেখা তো দুরের কথা, সেই আমিও কীনা… আরে ভাই মরবো আমরা সবাই ই তাই বলে এতো কম বয়সে ?উফ! যে ফুল ফুঁটিতে না ফুঁটিতেই ঝরে গেলো ! সামির আমরা সবাই জনমল্লিকার মালা হাতে নিয়া দাঁড়িয়ে আছি … আসেন প্লিজ আসেন ।
:candle:
খুব দুঃখ পেলাম। জীবনের এমন অপচয়…
উনি ঈশ্বরহীন ছাড়াও খুব সম্ভবত সামির মানবতাবাদী নাম নিয়েও লেখালেখি করতেন বলে মনে পড়ছে।
বিপ্লবের কথাগুলি চিন্তা করার মত।
When we get more young men like Iswarhin. I salute his courage and crystal clear power of thinking. It’s our loss to lose him so soon. I wish there were more youth like him around us and I am sure there will be. We will bear his fire inside us all life.
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/plugins/smilies-themer/kopete/candle.gif[/img]
সামিরের কষ্টগুলো, অনুভূতিগুলো আমরা সবাই যেন অনুভব করতে পারি, এই আশাই রাখি।
খুব খারাপ লাগলো জেনে
সামীরের জন্য শ্রদ্ধাঞ্জলী।
মর্মান্তিক খবর। সবার মন্তব্য পড়লাম। ভিন্ন দৃষ্টিকোণের হলেও সবার সাথে একমত। বেদনা অনুভব করছি সবাই সমান। আনন্দ চলে গেছে। সে আমাদের মন্তব্য পড়বে না। কিন্তু যে তরুন যুক্তিবাদীরা আছে তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটা হল যে পালানোতে বিজয় হয় প্রতিপক্ষের। যুক্তিহীনদের জন্য কোন যুক্তিবাদীর প্রস্থান তাদের জন্য বিজয়। আর কেউ যেন এই সহজ বিজয় তাদের হাতে তুলে না দেয়। আরজ আলী মাতুব্বরের কথা স্মরণীয়। যুক্তিহীনতা তাকে কম পীড়া দেয়নি। কিন্তু শত বাধার মধ্যেও জীবন থেকে পালাবার কথা ভাবেননি। যুক্তিবাদীদের জন্য এক জীবনই যথেষ্ট নয়। যুক্তিবাদের ধারণা সর্বাধিক মানুষের কাছে এবং নিজের বংশাণুর দ্মধ্যে ছড়ান যুক্তিবাদীদের জন্য খুবই জরুরী। ইশ্বরহীনের লেখা আগামীদের জন্য প্রেরণার উৎস হয়ে থাকুক এই কামনা করছি।
খুব বেদনাজনক।
তাঁর বিদেহি আত্মার শান্তি কামনা করি।
@সেন্টু টিকাদার,
nastik der bidehi atma bole kisu ase naki!!!
@o.t,
কঠিন প্রশ্ন ভাইটি।
আমার মনে হয় আমি এখনও মাঝা মাঝি পথে বিচরন করছি আত্মার অস্তিতের ব্যাপারে । তবে ঈশ্বরের অস্তিতে বিশ্বাস নাই।
আমার মনে হয় ঈশ্বর ও আত্মা একই বস্তু না। আত্মায় বিশ্বাস করা মানে ঈশ্বরে বিশ্বাস না। এই সম্বন্ধে গবেষণার দরকার। যদি আমারা এই প্রচলিত ধারনা, যা হয়ত ঈশ্বর ও আত্মার অবিচ্ছেদতার কথা বলে, বদলাতে পারি তাহলে দেখবেন বহু ঈশ্বর বিশ্বাসিরা অবিশ্বাসি হবেন (মানে গতানুগতিক ধর্মে আর বিশ্বাস রাখবেন না, মারা মারি কাটা কাটি কম হবে ) ও আত্মায় বিশ্বাস করবেন। আর আত্মার কোন জাত পাত নাই, ধর্ম নাই। আমার এই পথ টা মাঝা মাঝি মানে কট্টর আস্তিক ও কট্টর নাস্তিকের মাঝা মাঝি একটা মত।
@o.t,
এ নিয়ে আপনি আলাদা একটা পোষ্ট দিয়ে দিন, আলোচনা করতে সুবিধে হবে। এমনিতেই মনটা খুব খারাপ, তার মৃত্যু এক দুঃসপ্ন হয়ে তাড়া করছে সর্বক্ষণ, এর মাঝে আপনি কাটা গায়ে নুন না ছিটালে হয় না?
:candle: :candle: :candle:
খুব কষ্ট লাগে যখন শুনি একজন ভাল মানুষ চলে গেছেন।
কোন এক সময় আমি সিধান্ত নিয়েছিলাম, আমি চলে যাব। কিন্তু নিজের ভুল বুজতে পেয়ে সে পথ থেকে ফিরে এসেছি। এভাবে জীবন নষ্ঠ করা বোকামি ছাড়া কিছু না।
চিন্তাশীল, মননশীল মানুষেরা অনেকসময় একাকী হয়। আমরা মানি আর না মানি এই পৃথিবীতে কদর্যতা বেশি, অনেক একাকী নিভৃতচারী মানুষ এই কদর্যতার সাথে নিজেকে ঠিক খাপ খাওয়াতে পারেন না। (জাকির নায়েকের অর্থহীন জনপ্রিয়তা সামিরকে ভীষনভাবে বিচলিত করেছিল।) সামিরও মনে হয় পারেন নি। নীরবেই চলে গেলেন। না গেলেই পারতেন। সামিরের মতো মানসিকতার মানুষ খুব একটা বেশি নেই। একজন কমে গেলেও মুক্তমনাদের বিরাট ক্ষতি। সামিরের লেখা পড়ে হয়তো আরো অনেকের বোধোদয় হবে, আরো অনেকেই মুক্তমনা হওয়ার অনুপ্রেরণা পাবেন, এই আশা রাখি।
বোকা একটা ছেলে। জীবনটাকে যে এভাবে খামোখা খরচ করতে নেই, সেই জিনিসটাই সে বুঝলো না। মৃত্যু সবারই হবে, কিন্তু তাকে স্বেচ্ছায় কাছে ডেকে আনাটা কোনো সুবুদ্ধির পরিচয় নয়। এই নিভৃতচারী, অভিমানী ছেলেটা কেন যে এই বিষয়টা বুঝলো না, কে জানে।
এমন তরুণ সজীব মন হঠাৎ করে থেমে গেল। আমি নির্বাক।
তার মধ্যেই মনে হল-নাস্তিকদের কিছু কিছু ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। নাস্তিকরা যেহেতু রূপকথার পরকাল বা পরজন্মে বিশ্বাস করে না-তাদের মধ্যে “পারপাস” বা “জীবনের উদ্দেশ্য” হয়ত ধার্মিকদের মতন অত ঘন না। মৃত্যু এবং জীবনের প্রাচীরটা নাস্তিকদের কাছে একটু পাতলা-কারন একজন ধার্মিক রূপকথায় বিশ্বাস করে যে শক্ত জীবনের উদ্দেশ্যে বিশ্বাস করে-একজন নাস্তিকের পক্ষে তা সম্ভব না। এই ক্ষেত্রে জীবনের একটা ছোট আঘাত-বা কিছুটা পড়তি জীবন, আত্মহত্যার জন্যে প্ররোচনা হতে পারে। নাস্তিক দর্শনের গুরু নিৎসে অনেকবারই আত্মহত্যা করবেন বলে ভেবেছিলেন।
নাস্তিকদের জীবনের প্রতি তীব্র ভালোবাসা নিয়ে বাঁচা উচিত-সেটা তখনই আসবে যখন সে নিজের জীবনটাকে অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়ে-জীবনের একটা শক্ত উদ্দেশ্য খুঁজে পাবে। যারা বাবা বা মা হয়ে গেছে-তাদের নিয়ে সমস্যা নেই-তাদের জীবনে শক্ত খুঁটি আছে। কিন্ত যারা এখনো তরুণ-তাদেরকে সমাজসেবা, ব্যাবসা, শিক্ষকতা, লেখালেখি করা, রাজনীতি করা-কিছু একটা ব্যাপারে তীব্র ভালোবাসা নিয়ে জীবনকে ভালোবাসতে শিখতে হবে। নিজের জীবনের সাথে অন্যের জীবনের যোগ না হলে-এই ধরনের হতাশা খুব দ্রুত চলে আসতে পারে।
এত অল্প বয়সে মুক্ত মনের অধিকারী যুবকের অত্ম হনন খুবি বেদনা দায়ক।
এক জন শঠ, প্রতারক, অত্যাচারী, অহংকারী ব্যক্তি সহজে মরতে চায় না কিন্তু এক জন ভালো, পরোপকারী, মুক্ত মনের অধিকারী ব্যক্তি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে সহজেই।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই এরকম মর্মান্তিক একটা খবর। আমি জানি ন
সকালে ঘুম থেকে উঠেই এরকম মর্মান্তিক একটা খবর। আমি জানি না একজন মানুষের চিরপ্রস্থানের বিপরীতে কী বলা যায় বা বললে সেটা তার কাছের মানুষের জন্য বোধগম্য হবে যে আমরাও ওর প্রস্থানে সমব্যাথী। ঈশ্বরহীন আমাদের মাঝে থাকবে সবসময়। হয়ত শারীরিক উপস্থিতি আমরা পাব না কিন্তু আমাদের মনে যে অবস্থান করেছিল সেটাও তো ভুলব না।
তার প্রিয়জনদের প্রতি সমবেদনা।
কষ্ট হচ্ছে খুব। কেউ এভাবে যেওনা……… :candle:
জীবনে দুঃখ আছে,অসংগতি আছে,অপূর্ণতা আছে,আছে না-পাওয়ার বেদনাও| কিন্তু এসব ছাপিয়েও যে অপার আনন্দ এই বিশ্বে আছে, অনেকেই তাকে ছুঁতে পারেন না |সামির আহমেদ আনন্দ নামের এই ছেলেটিও পারে নাই সে আনন্দকে ছুঁতে | তাই আনন্দ তার আনন্দহীন পথচলা চিরদিনের জন্যে থামিয়ে দিয়েছে নিজেই অবশেষে|
এ রকম ভাবে জীবন থেকে পালিয়ে যাবার যে কোন মানেই নেই, যে ছেলেটি মুক্তমনা-যুক্তিবাদী , সেও হয়ত এটা বুঝতো আমাদের অনেকের মতোই| কিন্তু তবু কেন সে এমন করেই পালিয়ে গেলো, বিস্ময় সেখানেই!
এই পলায়নপরতায় কোন গৌরব নেই,যুক্তিবাদের যে কোন যুক্তিই তুচ্ছ এখানে! আশা করি, আর কোন সামির জীবনের এই অকারণ অপচয়ের পথে পা বাড়াবে না|
সামিরের স্মৃতি আমাদের মধ্যে বেঁচে থাক মুক্তমনায় প্রকাশিত তার লেখার মাধ্যমে। সামিরের পরিবার,বন্ধু-পরিজনের প্রতি রইল আমার গভীর সমবেদনা!
আমি বাকরুদ্ধ। এটা মেনে নিতে, বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে, আমাদের একজন মুক্তমনা সাথী সামির (ঈশ্বরহীন) আমাদের মাঝে আর নেই।
[img]http://i1088.photobucket.com/albums/i332/malik1956/untitled.jpg[/img]
[img]http://i1088.photobucket.com/albums/i332/malik1956/candle9.gif[/img]
একি নিদারুণ সংবাদ পেলাম–আমার এই সংবাদ বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।
এত অল্প বয়সে, এত সুন্দর স্বস্থ্যের অধিকারী এই প্রতিভাবান ছেলেটি কেন সিদ্ধান্ত নিল যে বেঁচা থাকার প্রয়োজন নেই? কি ্ বিষয় তাকে উৎপীড়িত করছিল? এ সব কী কোন`দিন জানা যাবে?
সমীরের স্মৃতিকে জাগরুক রাখার জন্য তার প্রবন্ধগুলো আবার প্রকাশিত করা হউক মুক্তমনায়।
এই প্রসঙ্গে আরও একজনের নাম মনে পড়ে গেল–শ্রদ্ধেয় নারায়ণ গুপ্ত। উনি`ও অনেক দিন মুক্তমনার জন্ম থেকে জড়িত ছিলেন। অনেকদিন দুরন্ত ক্যান্সারে ভুগে শেষে মারা যান–মনে হয় প্রায় সাত আট বছর আগে। উনার স্মৃতি আজও আমি ভুলি নাই–বিশেষ করে সেলুকাস সিরিজের লেখাগুলো।
:candle:
খুবই খারাপ লাগছে। ভীষন দুঃখজনক। এই অকাল প্রয়ান কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না।
মাঝে মাঝে কিছু ঘটনার কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পাইনা!
সবাইকে সমবেদনা!
[img]http://t3.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcREX67QNd3hjj2Bj1DjtuNX3dBFwWwaz7BM_a60XnL3C16c4h4v5g[/img]
কষ্ট পেলাম।
ভীষণ কষ্ট পেয়েছি, ভীষণ।
শোকাহত
ঈশ্বরহীনের স্মৃতি বেঁচে থাকবে আমাদের মাঝে।
সামিরের সাথে আমার খুব বেশি পরিচয় ছিলো না। ২০০৮ সালের ১৪ ই ডিসেম্বর আমি উনার কাছ থেকে প্রথম একটি ইমেইল পাই। তিনি বলেন যে তিনি সাইপ্রাস থেকে লিখছেন। আমার লেখা উনি খুব পছন্দ করেন, এবং মুক্তমনা নিয়মিতভাবে পরিদর্শন করেন। সেই ইমেইলে তিনি একটি ছোট অভিযোগও করেন। আমরা কুখ্যাত জাকির নায়েককে নিয়ে তেমন লিখছি না। যুক্তিবাদীদের উচিৎ তাদের পয়লা নম্বর শত্রু জাকির নায়েককে নিয়ে কিছু লেখা। আজকে আমার পুরোন ইমেইল আর্কাইভ খুঁজে তার পাঠানো প্রথম ইমেইলটি পেলাম –
আমি কি উত্তর দিয়েছিলাম এখন আর মনে নেই। ইমেইল খুঁজে দেখতেও ইচ্ছে করছে না। তবে বছর খানেক পরে জাকির নায়েকের মিথ্যাচার নিয়ে শিক্ষানবিস তার দুর্দান্ত পোস্টটি মুক্তমনায় দেবার পর আমি সেই লিঙ্কটি সামিরকে পাঠিয়েছিলাম মনে আছে। সামির খুব খুশি হয়েছিলেন। মন্তব্যও করেছিলেন সে লেখায়।
পরে একসময় নিজেই ইউনিকোডে লেখা শিখে ব্লগ লিখতে শুরু করেন। ব্লগের নাম নেন ‘ঈশ্বরহীন’। বেশ কিছু ভাল পোস্ট লেখানে তিনি। তার মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় পোস্টটি ছিল এটি –
বোরখা সংক্রান্ত কিছু বেয়াড়া প্রশ্ন
আজকে আবার পড়লাম। অত্যন্ত শক্তিশালী ভাষায় বোরখা যে শালীনতা রক্ষার রক্ষাকবজ বলে ভাবা হয় – সেই মিথটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন। লেখাটি আমার মতে মুক্তমনার অন্যতম সেরা লেখাগুলোর একটি।
দেখলাম, তিনি আমার ফেসবুকের ফ্রেন্ডলিস্টেও ছিলেন। যদিও ফেসবুকে তার সাথে খুব কমই যোগাযোগ হয়েছে। হয়তো খুব নিভৃতচারী ছিলেন বলেই যোগাযোগ করেননি তেমন, কিন্তু যখন দরকার লেগেছে বা কোন ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে তিনি বলেছেন, ব্লগে কিংবা ইমেইলে।
আজ সেই সামির নেই। আমরা নিঃসন্দেহে একজন প্রতিভাময় ব্লগারকে হারালাম। শুধু ব্লগার হিসেবে নয়, তিনি যে এমন চমৎকার একজন আলোকচিত্র শিল্পী ছিলেন সে খবরটাও জানতাম না। অনেক কিছুই জানতাম না এই প্রতিভাধর ছেলেটি সম্পর্কে। এখন হয়ত আমরা ধীরে ধীরে জানব। কিন্তু প্রতিভাধর, উদ্যমী আর সুদর্শন এ ছেলেটিকে আর ফিরিয়ে আনতে পারব না।
সামির বেঁচে থাকুক আমাদের মাঝে চিরদিন।
@অভিজিৎ,
লেখা গুলো কি মুক্তমনায় তাঁর শ্রদ্ধার্থে পূনঃ প্রকাশ করা যায়?
আমি কি বলব, কিভাবে বলবো বুঝে উঠতে পারছি না!
আমার বিশ্বাস করতে প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে সামির নেই। প্লিজ, আমি মনে-প্রাণে চাচ্ছি এ খবরটা যেন মিথ্যে হয়!! সম্পূর্ণ মিথ্যে হয়!!
যতদূর মনে করতে পারছি, তার বাড়ি খুলনার দিকে, কথা প্রসঙ্গে বলেছিল সাইপ্রাসে যাওয়ার কথা আছে। যুক্তি’র দুই নম্বর সংখ্যা প্রকাশের পর থেকে তার সাথে পরিচয় হয়।
যুক্তি থেকেই নাম্বার পেয়ে ফোন দিয়েছিল। কথা হয়েছিল কয়েকবার। সাইপ্রাস গিয়েও ফোন দিয়েছিল দু-একবার। তারপর অনেকদিন ভুলে গিয়েছিলাম তার কথা। কিন্তু হঠাৎ, এই তো কিছুদিন আগে মাত্র ফেসবুকে কেউ একজন নক করলো, জিজ্ঞেস করলো চিনতে পারছি কি-না… মনে মনে ভাবতে লাগলাম, কে হতে পারে। সে পরিচয় দিল। মনে পড়লো, ঐ সামির, যুক্তি’র দুই নম্বর সংখ্যার পড়ার পর মোবাইলে সে কী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিল!! সমাজ বিপ্লব, ধর্মহীন সমাজ, নারী স্বাধীনতা… কত কিছু বলেছিল… তাদের ওখানকার কিছু ছোটকাগজও আমার ঠিকানায় পাঠিয়ে দিয়েছিল আর হ্যাঁ সাথে পাঠিয়েছিল আরেকটা জিনিস। জাকির নায়েকের বিজ্ঞান ও কোরানের ওপর একটা সিডি পাঠিয়ে দিয়েছিল… ওটার একটা কড়া জবাব দেয়ার জন্য যুক্তি ম্যাগাজিনে।
আমি বলেছিলাম, যুক্তি’র তিন নম্বর সংখ্যার কাজ চলছে। ওখানে জাকির নায়েক ধরা হয়েছে ভালো ভাবেই জীববিবর্তন নিয়ে। একটু সবুর করুন।
তারপর এটা সেটা নিয়ে অনেক কথা হয়েছিল তার সাথে। বিশেষ করে ইসলামি ক্রিয়েশনিজমের উত্থান নিয়ে তার বেশ শঙ্কা কাজ করতো দেখতাম। এব্যাপারে একটা কড়া জবাবও সে নিজে তৈরি করবে একসময় জানিয়েছিল।
সামীরের পাঠানো জাকির নায়েকের সিডিটি আমার কাছে আছে এখনো, তার পাঠানো ছোট কাগজগুলোও থাকার কথা, দেখতে হবে শেলফের কোথায় আছে…
যুক্তি’র তৃতীয় প্রকাশের আগেই সে বোধহয় সাইপ্রাস চলে যায়। ঠিক মনে করতে পারছি না। ওখান থেকে ফোন দিল একবার দুবার… বললাম যুক্তি বের হওয়ার কথা। বললো ইন্টারনেট থেকে পড়ে নিবে সে।
এর পর আর কথা নেই অনেক দিন। ভুলেই গিয়েছিলাম বোধহয়। মুক্তমনায় সে যে আছে এতোদিন ধরে সত্যি আমি জানতামই না। লেখা দেখেছি, কিন্তু আমি চিনতে পারি নি। ফেসবুকে সে যখন তার পেইজের লিংক দিলো.. তখন তো আমি বেশ অবাক। আমি জানিই না এত কাণ্ড সে করে ফেলেছে!!
আজ সামিরের এ খবর শুনে বিশ্বাস করতে পারছি না। কেন এমন হল, কেউ জানাবেন কি? প্লিজ!!
ব্রাত্য সাজকে নিয়ে ঐ পোস্টটা দিয়েছিলেন অতিথি লেখক হিসাবে আনন্দ।
একজন নয়তো?
@শ্রাবণ আকাশ,
না।
কীভাবে এটা হল? কখন জানতে পারব! তরুণ ঈশ্বরহীনের অনেক কিছুই দেওয়ার ছিল।:candle:
উনার আলোকচিত্রগুলো অসাধারণ।
অনেক খারাপ লাগছে…
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/plugins/smilies-themer/kopete/candle.gif[/img]
:candle:
:candle:
এটা খুব দুঃখজনক ও গভীর বেদনার
তিনি বেঁচে থাকবেন মানুষের যুক্তিবোধে, প্রগতির সংগ্রামে
আমি ভাষাহীন স্তব্ধ। তাঁর কষ্টগুলো আমাদের সাথে ভাগাভাগি না করেই , আমাদের কিছু না বলেই তিনি চলে গেলেন চিরতরে! :candle:
:candle:
He willed something
and he willed that strongly…
শক্ত করে ইচ্ছা করার জন্য যেই মেরুদন্ড লাগে অনেক মানুষেরই সেটা থাকে না- ঈশ্বরহীনের ছিলো, সকল শোককে ছাপিয়ে এটাই খুশীর খবর। ঈশ্বরহীনের স্মৃতি বেঁচে থাকবে আমাদের মাঝে। সংশ্লিষ্টজনকে একটা ব্যানার বানানোর অনুরোধ জানাবো এবং অনুরোধ জানাচ্ছি মুক্তমনার পক্ষ হতে ২৩ এপ্রিল স্মরণে রেখে কোমেমোরেট করার জন্য।
httpv://www.youtube.com/watch?v=AS3p05KX9L0
@আল্লাচালাইনা,
আমিও আপনার সাথে একমত পোষন করছি।
বেঁচে থাকবে আমাদেরই মাঝে।
@আল্লাচালাইনা,
সহমত।
:candle:
:candle:
:candle:
:candle:
(W) (W) (W) (F)