তথ্য-প্রযুক্তি সর্ম্পকে যারা ওয়াকিবহাল, তারা এরই মধ্যে জেনে গেছেন, জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়েচে ভেলের সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন ভাষার ব্লগ সাইটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তিনটি বিভাগে বাংলাদেশের তিনজন ব্লগার বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া আরো তিনটি বিভাগে দেশের আরো তিনজন বাংলাব্লগ দ্বিতীয় স্থান জয় করেছেন। তাই এ বিজয় শুধু ব্লগারদের একক বিজয় নয়, এটি একই সঙ্গে বাংলা ব্লগেরও বিজয় বটে।
সে প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে এক নজরে জেনে নেওয়া যাক, ব্লগ বিষয়টি আসলে কী?
এক সময় মানুষ যখন লিখতে শেখেনি, তখন ছবি এঁকে সে মনের ভাব প্রকাশ করতো। গুহাচিত্রে এর অসংখ্য নজির রয়েছে। বিবর্তনের ধারায় ভাষা ও অরের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে লেখার উপকরণের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। মানুষ পাথর, পোড়া মাটির ফলক, চামড়া, গাছের ছাল, পাতা, কাপড় এবং সবশেষে প্যাপিরাস ও কাগজে লিখে মনের ভাব প্রকাশ করতে থাকে; লেখা-পড়া, শিক্ষা-দীক্ষা ও দাপ্তরিক কাজ তো বটেই।
আরো পরে প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে টাইপরাইটার হয়ে চলে আসে কম্পিউটার, লেখা হতে থাকে ভার্চুয়াল জগতে– আন্তর্জালে, মুঠোফোনের সংপ্তি বার্তা, এসএমএস-এও। মূল বিষয়টি কিন্তু একই থেকে যায়– ভাব প্রকাশ। আমি যা ভাবছি, তা অন্যকে জানানো, অন্যের ভাবনা জানা, মতামত, বিশ্লেষণ, যুক্তি-তর্ক। এটি যেনো অনেকটা সেই লিটল ম্যাগাজিনেরই ভার্চুয়াল সংস্করণ। প্রথাবিরোধী লেখা-লেখির এক নতুন মাধ্যম; কেউ বলেন– বিকল্প গণমাধ্যম।
প্রিন্ট মিডিয়ার সঙ্গে ব্লগ সাইটে লেখালেখির আরেকটি প্রধান পার্থক্য হচ্ছে, ব্লগে লেখা প্রকাশের পর পরই মন্তব্যর ঘরে পাঠক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। সেখানেও চলে তর্ক-বিতর্ক, প্রসংশা, এমনকি লেখার তুমুল সমালোচনা ও নিন্দাও। আবার একটি লেখার বিতর্ক জন্ম দেয় আরো অনেক চিন্তাশীল লেখা।
‘ওয়েব-লগ’ কথাটি থেকে ‘ব্লগ’ কথাটির জন্ম, এর প্রথম সূচনা জর্ন বার্গার নামে একজন আমেরিকানের হাত ধরে ১৯৯৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর। তিনিই প্রথম ‘ওয়েবলগ’ কথাটি ব্যবহার করেন, আদি ব্লগারদের তিনি একজন, প্রথম দিকের ব্লগ সাইটের উদ্যোক্তা তো বটেই। ১৯৯৯ সালের এপ্রিল-মের দিকে পিটার নামে জনৈক ‘ওয়েবলগ’ কথাটিকে আরো সহজ করে ‘উই ব্লগ’ কথাটি ব্যবহার করেন। ক্রমে ‘উই ব্লগ’, পরে শুধু ‘ব্লগ’ কথাটিই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মনের ভাব প্রকাশ, সৃজনশীল লেখালেখি, সামাজিক যোগাযোগ ও তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বিস্তৃত করে। ব্লগ ধারণাটি প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত বাড়তে থাকে এর লেখক-পাঠক সংখ্যা। যারা জীবনে কখনো পরীক্ষার খাতা, চাকরি জীবন বা চিঠি-পত্রের বাইরে কোনো রকম লেখালেখি করেননি, অধিকাংশ এমন মানুষও ব্লগ পড়তে পড়তে এর ভক্ত হয়ে ওঠেন, তিনি নিজেই এক সময় লিখতে শুরু করেন। পেশাদার লেখকরা তো ব্লগে আছেনই। ব্লগের এই ধারাবাহিক অগ্রগতি এখনো চলছেই।
তথ্য-প্রযুক্তিতে আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে, ব্লগের ধারণাটিও আমাদের জন্য প্রায় নতুন, তাই বাংলা ব্লগ সাইটও অনেক পিছিয়ে থাকবে, এটিই যেনো ছিলো স্বাভাবিক। কিন্তু এর পরেও মাত্র চার বছরের পথ পরিক্রমায় বাংলা ভাষার সংকেতায়ন বা ইউনিকোড উদ্ভাবনের পর বাংলা ব্লগের অর্জন নেহাত সামান্য নয়।
‘বাঁধ ভাঙার আওয়াজ’ শ্লোগান নিয়ে ২০০৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রথম যাত্রা শুরু করে বাংলা ব্লগ সামহোয়ার ইনব্লগ ডটনেট। এখনো এটিই সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলা ব্লগ সাইট। এর নিবন্ধিত সদস্য এখন আটত্রিশ হাজার। বাংলা ভাষাভাষী অধিকাংশ ব্লগারই এর সদস্য। এরপর তৈরি হয়েছে সচলায়তন, আমার ব্লগ, মুক্তমনা, পেঁচালী, নির্মানব্লগ, নাগরিকব্লগ, প্রজন্ম ফোরাম। দৈনিক পত্রিকাগুলোও ব্লগ সাইট চালু করেছে। ব্লগ সাইট নির্মাণে এ দেশের আদিবাসীরাও পিছিয়ে নেই।
‘কথা হোক ইচ্ছে মত’ শ্লোগান নিয়ে মডারেশন বিহীন ব্লগ সাইট আমারব্লগ ডটকম যাত্রা শুরুর মাত্র তিন বছরেই প্রায় ১৫ হাজার সদস্য সংগ্রহ করেছে। তারাই প্রথম ব্লগ সাইটে মুক্তি দিয়েছে ‘হিল্লা’ নামক একটি স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র। চলতি বছর ফেব্র“য়ারিতে এর উদ্যোক্তারা প্রতিষ্ঠা করেছেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণা সংস্থা আমারব্লগ রিসার্চ ফাউন্ডেশন। এই ব্লগ সাইটটিসহ সচলায়তন ডটকম, মুক্তমনা ডটকম এরই মধ্যে ব্লগারদের একাধিক ইলেক্ট্রনিক বই বা ই-বুক প্রকাশ করেছে। যুক্তি, বিজ্ঞান, দর্শন, মুক্তচিন্তা, ব্লগাড্ডা — কী নেই মুক্তমনায়? মুক্তমনা মনে করে– যুক্তি আনে চেতনা, চেতনা আনে সমাজ পরিবর্তন।
আদিবাসী বাংলা ব্লগ ডাব্লিউফোর স্টাডি ডটকম ই-বুক প্রকাশের পাশাপাশি আদিবাসীদের অধিকার, সংস্কৃতি, ভাষা ও ইতিহাসের ওপর নানা লেখা প্রকাশ করে চলেছে। এখন তারা কাজ করছে আদিবাসী তথ্যকোষ ও সার্চ ইঞ্জিন নিয়ে।
আন্তর্জালের সঙ্গে পরিচিত নন, এমন পাঠককে ব্লগারদের লেখার সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়ে দিতে ব্লগগুলো গত তিনবছর ধরে একুশে বই মেলায় নির্বাচিত লেখা নিয়ে বই প্রকাশ করছে। বিভিন্ন জাতীয় দুর্যোগ, এমন কী অসহায় মানুষের পাশে আর্থিক সাহায্য নিয়েও দাঁড়াচ্ছেন ব্লগাররা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ব্লগাররা অনলাইন ও অফলাইনে যোগাড় করেন লাখ লাখ গণস্বার। এছাড়া তারা আয়োজন করেন নিয়মিত আড্ডা, পিকনিক ও ব্লগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস. একুশে ফেব্রয়ারিতে বন্ধু-বান্ধবসহ ব্লগাররা সপরিবারে মিলিত হন। পরিচিত হন একে অপরের সঙ্গে। মেতে ওঠেন আনন্দ-হাসি-গানে।
এ সবই হচ্ছে একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা বোধ এবং একটি অন্য রকম যুথবদ্ধতা– যা আগে কখনোই এ ভাবে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজে দেখা যায়নি। প্রবাসী বাঙালিরা তো অনেকই দেশচিন্তা ও একান্ত নিজস্ব ভাবনা প্রকাশের প্রধান মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন ব্লগকেই। কম্পিউটারে বিজয় সফটওয়্যারের পর অভ্র সফটওয়্যার এবং ইউনিকোডে বাংলা প্রকাশ হওয়ার পর ব্লগেও ঘটে গেছে এমনই সব বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
এরই পথ ধরে এ বছর বাংলা ব্লগ ছিনিয়ে এনেছে ডয়েচে ভেলের সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতায় তিন-তিনটি পুরস্কার।
আমারব্লগ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অন্যতম উদ্যোক্তা ও ব্লগার মাহমুদুল হাসান রুবেল জানান, ডয়েচে ভেলের ব্লগ প্রতিযোগিতায় সামাজিক কর্মকাণ্ড বিভাগে সাংবাদিক ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক অমি রহমান পিয়াল এবং সেরা বাংলা ব্লগ বিভাগে সাংবাদিক ও ব্লগার আরিফ জেবতিক জয়ী হয়েছেন। তারা দুজনই আমারব্লগ ডটকম-এর নিয়মিত লেখক। তিনি বলেন, প্রযুক্তি ও বাংলা ভাষার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে চলেছে বাংলা ব্লগ। বাংলা ভাষায় ব্লগ সাইটগুলো ক্রমেই বিকল্প গণমাধ্যম হয়ে উঠছে।
মানবাধিকার বিভাগে সেরা ব্লগ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে আদিবাসী বাংলা ব্লগ। এর নির্মাতা ও প্রধান সঞ্চালক সান্তাল আদিবাসী ছাত্র সমর মাইকেল সরেণ বলেন, আদিবাসী বাংলা ব্লগ যে বিপুল পরিমাণ ভোটে জয় লাভ করেছে, তাতে প্রমাণিত হয়েছে, বাংলাদেশ তথা বিশ্বের বাংলা প্রিয়রা আদিবাসীদের পাশে আছেন। তারা আমাদের অন্তরের কান্নাটি শুনতে পান। আরও প্রমাণিত হয়েছে, আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি পূরণ বাংলাদেশের সচেতন নাগরিকরা সকলেই চান। এ বিজয় বাংলাদেশের, এ বিজয় আদিবাসীদের। আমি স্বপ্ন দেখি, এ রকম আরও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আদিবাসীরা বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে দেশের গৌরব ছিনিয়ে নিয়ে আসবে। সমর সরেণ, আদিবাসীদের ‘উপজাতি’ বা ‘ক্ষুদ্র নৃ জাতিগোষ্ঠি’ বা অন্যকোনো অভিধায় নয়, ‘আদিবাসী’ হিসেবেই সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাবি করেন।
মুক্তমনা ডটকমসহ আরো কয়েকটি ব্লগে নিয়মিত লেখেন রণোদীপম বসু। তার মতে, ডয়েচে ভেলের এই পুরস্কার সাধারণ লেখক-পাঠক সবাইকে বিভিন্ন ব্লগ সর্ম্পকে আগ্রহী করে তুলবে। তিনি বলেন, এটি আসলে বাংলা ভাষার ব্যবহারিক দিকেরই অগ্রযাত্রা। আমরা যারা অনলাইনে ব্লগিং করি, তারা পত্রিকায় লেখার চেয়ে খুব সহজেই ব্লগেই নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা ছড়িয়ে দিতে পারছি। মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্যে দেশের ও প্রবাসের ব্লগারের সঙ্গে ভাব-বিনিময় হচ্ছে। এটি পত্র-পত্রিকায় লিখে সে ভাবে সম্ভব ছিলো না। রণোদীপম বসু মনে করেন, বাংলা ব্লগ এখন এতোই শক্তিশালী একটি মাধ্যম যে পত্র-পত্রিকাতে এর প্রভাব পড়ছে। অনেক লেখাই লেখকের অনুমতিক্রমে প্রকাশিত হচ্ছে সংবাদপত্রের পাতায়। আবার পত্র-পত্রিকাগুলো ব্লগ থেকে বিভিন্ন তথ্য ও লেখার প্রেরণাও পাচ্ছে।
প্রতিযোগিতায় সেরা ব্লগ বিভাগে দ্বিতীয় হয়েছেন সাবরিনা সুলতানা। চট্টগ্রামের মেয়ে সাবরিনা কৈশর থেকে মাসকিউলার ডিসট্রফি নামক দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছেন। এতে তার দুই হাতের দশটি আঙুল বাদে পুরো শরীর অবশ হয়ে গেছে। শাররীক এই প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করেই দিনের পর দিন তিনি কি-বোর্ড চেপে লিখে যাচ্ছেন প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার আদায় সম্পর্কিত অসংখ্য ব্লগ। তৈরি করছেন জনসচেতনতা।
এই লেখকের সঙ্গে আলাপকালে সাবরিনা সুলতানা বলেন, আমাকে যারা ভোট করেছেন, তারা প্রতিবন্ধী মানুষের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে ভোট করেছেন।
ডয়েচে ভেলের ব্লগ প্রতিযোগিতায় তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগে অভ্র সফটওয়্যারের প্রধান নির্মাতা মেহেদী হাসান খান এবং রিপোর্টার্স ইউদাউট বর্ডারস বিভাগে আবু সুফিয়ান দ্বিতীয় হয়েছেন। ব্লগার মেহেদী সচলায়তন ডটকম-এর পুরনো ব্লগার। পাশাপাশি তার নিজস্ব ব্লগ সাইটও রয়েছে। তথ্য-সংবাদ তথা গণমাধ্যম নিয়ে ব্লগ স্পটে অনেক দিন ধরেই ব্লগ লিখে সচেতনতা তৈরি করছেন আবু সুফিয়ান।
এই তিন জন বিজয়ী ব্লগার পিয়াল, আরিফ ও সমর এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকারী সাবরিনা, মেহেদী ও সুফিয়ানকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। জয় হোক মুক্তচিন্তার, জয় হোক বাংলা ব্লগের!
—
স্ক্রিন শট: ডয়েচে ভেলের সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতা– ববস অ্যাওয়ার্ড, মুক্তমনা ডটকম, আদিবাসী বাংলা ব্লগ, লেখক।
আপডেট:
[লিংক]
@ অ্যাডমিন, লেখাটি কোনোভাবেই শুধুমাত্র নিজস্ব ব্লগে দিতে পারছি না। প্লিজ হেল্প। 🙁
—
কোনো কারণে অ্যাডমিন দ্রুত সাড়া না দিলে, এই লেখাটি কাল সকালে মুছে ফেলবো। ধন্যবাদ।
@বিপ্লব রহমান,
আপনার অনুরোধে লেখাটিকে আপনার নিজস্ব ব্লগপাতায় সরিয়ে দেয়া হল।
@মুক্তমনা এডমিন,
অনেক ধন্যবাদ। (Y)
জনাব বিপ্লব রহমান,
আপনিই কি এই লেখাটি দৈনিক কালের কন্ঠে “বাঁধ ভেঙেছে বাংলা ব্লগে” শিরোনামে দিয়েছেন? আপনিই যদি সেই ব্যক্তি হয়ে থাকেন, তবে দুটো কথা আছে।
আপনার এই রিপোর্টটির ডয়েচে ভেলের সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতা নিয়ে লেখা অংশটি ভূলে ভরা।
যেমন:
** আপনি বলেছেন — প্রতিযোগিতায় সেরা ব্লগ বিভাগে জয়ী হয়েছেন সাবরিনা সুলতানা।
এটা সম্পূর্ণ ভূল তথ্য। এই বিভাগে সাধারণ ব্যবহারকারীদের ভোটে জয়ী হয়েছেন Vahid Nikgoo নামে একজন PERSIAN ব্লগার। সাবরিনা সুলতানা রয়েছেন ২য় অবস্থানে।এই লিংকে দেখুন।
** আপনি বলেছেন –…ডয়েচে ভেলের ব্লগ প্রতিযোগিতায় তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগে অভ্র সফটওয়্যারের প্রধান নির্মাতা মেহেদী হাসান খান এবং রিপোর্টার্স ইউদাউট বর্ডারস বিভাগে আবু সুফিয়ান জয়ী হয়েছে।…
এই তথ্যগুলো আপনি কই পেলেন? প্রকৃত তথ্য হল নিম্নরূপ–
Reporters Without Borders Award ক্যাটাগরীতে ব্যবহারকারীদের ভোটে জয় পেয়েছেন Блог “Новой газеты” নামে একটা রাশিয়ান ব্লগ। আবু সুফিয়ান রয়েছেন দ্বিতীয় পর্যায়ে।
Best Use of Technology for Social Good ক্যাটাগরীতে পেয়েছেন Роспил RospilLANGUAGE: RUSSIAN নামে একটা রাশিয়ান ব্লগ। মেহেদী হাসান খান রয়েছেন ২য় স্থানে।
তথ্যগুলোর সাথে সংযুক্ত লিংকে গেলে বিষয়টি ভাল ভাবে বুঝতে পারবেন।
এই ভূলগুলো নিয়ে ব্লগার আলী মাহমেদ জয় হোক হলুদ সাংবাদিকতার! নামে একটি ব্লগ লিখেছেন।
কোন একটি বিষয়ে পুরোপুরি না জেনে ভূলভাল তথ্য পত্রিকায় প্রকাশ করা কতটুকু যুক্তি সঙ্গত কাজ হয়েছে? একটি জাতীয় দৈনিকে এ ধরনের লোক হাসানোর কাজ করার কোন অর্থ হয় কিনা একটু ভেবে দেখবেন দয়া করে।
@সাদাচোখ,
সঠিক তথ্যগুলোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি কোথায় যেন শুনেছিলাম সাবরিনা পরাজিত হয়েছেন (সম্ভবতঃ আরিফ জেবতিকের কোন একটা লেখায়), কিন্তু বিপ্লব যখন তার ব্লগে লিখেছেন সাবরিনা জয়ী হয়েছেন, তখন অবাকই হয়েছিলাম কিছুটা। যা হোক আমি সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতা নিয়ে এতটা মাথা ঘামাইনা কিংবা জানাশোনা নেই বলে হয়তো ভেবেছিলাম আমি ভুলও হতে পারি।
যাকগে, ডয়েচে ভেলে থেকে নাকি বছর কয়েক ধরেই সেরা ব্লগ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। অমি রহমান পিয়াল, আরিফ জেবতিক – এরা নাকি পুরস্কার বিজয়ী হয়েছেন (জানিনা, এটিও সঠিক তথ্য কিনা)। বলে রাখছি – এদের দুজনের লেখাই আমার খুব ভাল লাগে, হয়তো ইন্টারনেটে অনেকেরই খুব প্রিয় লেখক, কিন্তু তারপরেও বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, ভোটের মাধ্যমে হয়তো এমপি বা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করা যায়, সেরা লেখক নির্বাচিত করা যায় কি? এনিওয়ে, হয়তো আমারই বোঝার দুর্বলতা, কিংবা হয়তো ‘আঙ্গুর ফল টক’ সিণ্ড্রোমও ভাবতে পারেব কেউ কেউ, কিন্তু কিছু জিনিস আমি সত্যই বুঝতে অক্ষম!
আশা করব বিপ্লব তার লেখায় তথ্যের ব্যাপারে আরেকটু যত্নবান হবেন ভবিষ্যতে।
@অভিজিৎ দা,
ব্লগ প্রতিযোগিতায় কে জয়ী, আর কে পরাজিত হল, সেটা নিয়ে আমার বিন্দু মাত্র আগ্রহ নেই। এমন কি লেখক যদি এই লেখাটি শুধুমাত্র ব্লগে দিতেন, তাহলেও বিষয়টা নিয়ে আমি উচ্যবাচ্য করতাম না। কিন্তু কথা হল তিনি লিখেছেন একটি জাতীয় দৈনিকে। একজন সাংবাদিক হিসেবে তার কাছে খানিকটা দায়িত্ববোধ আমরা আশা করতেই পারি।
আর অমি ভাই এবং জেবতিক ভাই হলেন কিংবদন্তিতূল্য ব্লগার। তাদেরকে চেনেনা এমন মানুষ ব্লগ কমিউনিটিতে কমই আছে। তাদের বিষয়ে প্রশ্ন তোলার মত যোগ্যতা আমার নেই।
সবশেষে আমিও আশা করি বিপ্লব রহমান সংবাদিক হিসেবে আরও দায়িত্ববান হবেন এবং ঐ দৈনিকে এই ভূলটির সংশোধনী ছাপাবার ব্যবস্থা করবেন।
@সাদাচোখ,
অবশ্যই। ভুলটুকু ধরিয়ে দেওয়ার কৃতীত্ব আপনারই। (Y)
এমন কি আপনার সরবরাহকৃত আলী মাহমুদের ব্লগে তার নিজের মন্তব্য আপনার দেওয়া লিংক সূত্রেই পাওয়া:
😕
@অভিজিৎ,
ভোটাভোটির ব্যপারটা বরাবরই আমার কাছে বিরক্ত লাগে। বিপ্লব রহমানের অাগের একটি লেখায় তা উল্লেখ করেছিলাম।
আপনার মতামতের সাথে আমার মতামতের মিল হওয়ায় আনন্দ লাগছে। :rotfl:
@আসরাফ, 😀
@সাদাচোখ,
আপনার সংশোধনীর জন্য অনেক ধন্যবাদ। দৈনিক কালের কণ্ঠের ওই রিপোর্টটি আমারই লেখা। সেটি যখন লেখা হয়েছিল– তখন পাঠক ভোটে ওই ছয়জনই এগিয়ে ছিলেন। মুক্তমনার এই লেখাটিও একইসময় ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেই লেখা। স্বীকার করছি, তথ্যের বিষয়ে আমার উচিত ছিলো আরেকটু আপডেট থাকা। (Y)
কিন্তু আপনার বক্তব্যর উপস্থাপনার ধরণটি আমার ভালো লাগেনি। বিশেষ করে ‘জয় হোক হলুদ সাংবাদিকতার!’ ব্লগ লিংকটি একেবারে অপ্রয়োজনীয়। আপনার প্রোফাইল ছবির চোখদুটিও কেমন যেনো লালচে দেখাচ্ছে! (W)
—
অভিজিৎ দা,
এ ক ম ত। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করতে গিয়ে দু-এক সময় যে কোনো সাংবাদিকেরই ‘স্লিপ অব পেন’ হতে পারে। তবু শেষ পর্যন্ত এর দায়ভার আমারই। …
লেখায় সংশোধনী দিয়ে এটি প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে নিচ্ছি। যারা এই লেখার ভিত্তিতে ‘ব্লগ বিজয়ী’ হিসেবে ওই ছয়জনকে অভিন্দন জানিয়ে মন্তব্য করেছেন–তাদের কাছেও দু:খ প্রকাশ করছি। এ জন্য আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। …
@বিপ্লব রহমান,
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আশাকরি এখন একজন দায়িত্ববান সাংবাদিক হিসেবে ঐ দৈনিকে এই ভূলটির সংশোধনী ছাপাবার ব্যবস্থা করবেন।
(পূর্বের মন্তব্য যদি আপনার কাছে কর্কশ মনে হয়ে থাকে, তবে সেটা আমারই ভাষাগত দূর্বলতা। আশা করি কিছু মনে নেবেন না।)
ভাল থাকুন।
@সাদাচোখ,কিপিটাপ! 😉
*******এই ছয় বিজয়ী ব্লগার সাবরিনা, সমর, পিয়াল, আরিফ, মেহেদী ও সুফিয়ানকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। জয় হোক মুক্তচিন্তার, জয় হোক বাংলা ব্লগের!******
(F) (F) (F) (F) (F)
@লীনা রহমান,
(Y)
আমার মনে হয় আধুনিক বাংলা এবং ব্লগে ও সাধারণ বাংলা (সহজে এবং স্বচ্ছন্দে) অভ্র বাংলা ভাষায় এক বিপ্লব এনে দিয়েছে। এর জন্য সমস্ত বাংলা ভাষাভাষি অভ্রের নির্মাতাদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে।
এই সব নির্মাতারা অনলস বিনামূল্যে পরিশ্রম করে গেছেন বাংলা ভাষাকে সর্বাধুনিক পর্যায়ে উপনীত করতে। মেহদী হাসান সহ এই সব তরুণ বাংগালিদের নাম বাংলা ভাষার ইতিহাসে চিরকাল লিখিত থাকবে–যেমনভাবে আছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সহ অন্যান্যরা।
@আবুল কাশেম,
হ্যাঁ অভ্রকে এই লগ্নে কৃতজ্ঞতা না জানিয়ে ভুল করেছি। বাংলায় টাইপ করতে হবে এই ভয়ে অনেক বছর লিখতে তেমন উৎসাহ বোধ করিনি। শুধুই পড়েছি মাত্র।
অভ্র তোমাকে কৃতজ্ঞতা আর শুভেচ্ছার পুষ্প (F)
@আবুল কাশেম, @ কাজী রহমান,
জয়তু মুক্তচিন্তা! জয়তু অভ্র! জয়তু বাংলা ব্লগ! (Y)
@আবুল কাশেম,
অভ্র না হলে অন্য কোন কিবোর্ডে আমার কোনদিনই অনলাইনে বাংলা লেখা হতোনা। অভ্র যাঁদের অমূল্য অবদান তাঁদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা :guru:
@তামান্না ঝুমু,
(Y) (Y)
জয়তু বাংলা ভাষা,জয়তু বাংলা ব্লগ,জতু বাংলার ব্লগার…………… (F) (F) (F)
@দীপ্র,
(Y)
@বিপ্লব রহমান,
বিজয়ী ব্লগারদের আন্তরিক অভিনন্দন। বিপ্লব রহমান, সাধুবাদ আপনার লেখাটির জন্য।
@কাজী রহমান, (Y)
আসলেই তথ্য-প্রযুত্তিতে এক নীরব বিপ্লব সাধিত হয়েছে,যার কারনে বাংগালিরা এখন পৃথিবীর যেকোন যায়গা থেকে বসে বাংলা ভাষায় ব্লগিং থেকে শুরু করে ই-মেইলে,ফেইসবুকে এখন খুব সহজভাবে নিজের মনের ভাব আরামে আয়েশে প্রকাশ করতে পারছে।অথচ মাত্র ৩-৪ বছর আগেও এমনটি ভাবা ছিল কল্পনাতীত।
ছয় বিজয়ী ব্লগারদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।(F)
জয় হোক মুক্তচিন্তার, জয় হোক বাংলা ব্লগের! (Y)
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
(Y)
সহমত (Y)
কয়েক টি ব্লগ সম্পর্কে ধারনা থাকলেও বাংলা ব্লগ সম্পর্কে এত বিশাল তথ্য আমার পূর্বে জানা ছিল না। বিশেষ করে আদিবাসি ব্লগ নিয়ে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ বাংলা ব্লগের তথ্য ভান্ডার উন্মুক্ত করার জন্য।
@রাজেশ তালুকদার,
আপনার আগ্রহকে সাধুবাদ জানাই। চলুক। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
বাংলা ব্লগের জয়যাত্রা নিয়ে আপনার ব্লগাড্ডাটির মাধ্যমে অনেক তথ্য জানালেন। ‘বিকল্প এ গণমাধ্যম” ( আপনার লেখা থেকেই শব্দটি শেখা) নিয়ে পৃথিবীব্যাপী এ তোলপাড় আমাদের সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য অনেকেই ( সরকার, বেসরকারী সংস্থা, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান) কার্যক্রম গ্রহণ করছে। প্রত্যাশা করছি শীঘ্রই তা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে।
নতুন নতুন সংবাদ ভিত্তিক লেখা অব্যাহত থাকুক।
@গীতা দি,
অনেক ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা। (Y)