আবুল কাশেম
এপ্রিল ১৪, ২০১১
৬ষ্ঠ পর্বের পর
[আপডেট: Umdat al-salik থেকে শরীয়া আইনগুলোর স্ক্যান করা পৃষ্ঠা সরাসরি ডাউনলোড করতে পারবেন এই লিংক থেকে: https://mm-cdn.azureedge.net/bnblog/wp-content/uploads/umdatalsalik.zip](৩.২ মেগাবাইট)
হিল্লা বিবাহ
এবার আমরা দৃষ্টি দিব ইসলামের আরও একটি বর্বর বিবাহ নিয়মের উপর। অনেকেই হয়ত এ ব্যাপারে কিছু না কিছু জেনে থাকবেন—কারণ গ্রাম বাংলায় এই নির্মম ইসলামী প্রথাটি এখনও এই একবিংশ শতাব্দীতেও বহাল তবিয়তে আছে এবং অনেক পরিবারে অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যাপারটা হচ্ছে এই প্রকার:
যখন স্বামী তার স্ত্রীকে ইসলামী পন্থায় স্থায়ী (অর্থাৎ তিন তালাক) দিয়ে দিলো তারপর সেই স্ত্রী তার ভূতপূর্ব স্বামীর জন্য সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যাবে। স্বামী আর কিছুতেই সেই স্ত্রীর সাথে পুনরায় স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না এমনকি সেই স্ত্রীকে বিবাহও করতে পারবে না। তবে এর মাঝে হেরফের আছে। তা হচ্ছে এই যে ঐ তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে অন্য কোন পুরুষের সাথে বিবাহে বসতে হবে। তারপর তাদের মাঝে যৌন সঙ্গম হতে হবে। এরপর এই দ্বিতীয় অস্থায়ী স্বামী মহিলাটিকে তিন তালাক দিবে। মহিলাটি তিন মাসের ইদ্দত করবে এবং যদি সে গর্ভবতী না হয় তখনই তার ভূতপূর্ব স্বামী তাকে আবার বিবাহ করতে পারবে। যদি মহিলাটি অস্থায়ী স্বামী দ্বারা গর্ভবতী হয়ে পড়ে তবে এব্যাপারে ইসলামী কায়দা পালন করতে হবে—যা আগেই লিখা হয়েছে। অনেক ইসলামীই এ ব্যাপারে খুব উৎফুল্লতা প্রকাশ করেন এই বলে যে: দেখুন ইসলাম কতনা ন্যায় বিচার করছে: এই হিল্লা প্রথা মহিলাকে আরও একটি সুযোগ দিল অন্য স্বামীর ঘর করার। ইসলামীরা এও বলেন যে এই হিল্লা প্রথার জন্যই পুরুষেরা যত্রতত্র তালাক দেওয়া থেকে বিরত থাকবে।
কিন্তু ইসলামীদের এই সব আবোল তাবোল কতই না হাস্যকর। স্বামী দিল স্ত্রীকে তালাক, কিন্তু তার ভুক্তভোগী স্ত্রীকে কেন আবার বিবাহ করতে হবে এক বেগানা পুরুষকে যদি তার ভূতপূর্ব স্বামী চায় তার পূর্বের স্ত্রীর সাথে একটা সমঝোতা করে নিতে? কিসের বাধা এতে? কেনই বা ভূতপূর্ব স্ত্রীকে আবার যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে অন্য এক পুরুষের সাথে? এটা কি স্ত্রীকে সাজা দেওয়া হল না? এই সাজা তো স্বামীরই পাওয়া উচিত ছিল—কারণ সেই তো তালাক দিয়েছিল।
যাই হোক, আমরা এখন দেখব কোরান ও হাদিস কি বলছে হিল্লা বিবাহ সম্পর্কে।
কোরান সুরা বাকারা আয়াত ২৩০ (২:২৩০):
তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয় বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করতে কোন পাপ নেই, যদি আল্লাহ্র হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হল আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা, যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়।
এখানে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল যে হিল্লা বিবাহে অস্থায়ী স্বামীর সাথে মহিলাকে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হতেই হবে। তা না হলে এই হিল্লা বিবাহ সহিহ হবে না। যদি নামকা ওয়াস্তে এই হিল্লা বিবাহ, যা সাধারণত: মসজিদের ইমাম অথবা কর্মচারীর সাথে হয়ে থাকে—তবে তা মোটেই সিদ্ধ হবে না। এই আইন যেহেতু কোরানে লিখিত তাই বিশ্বের কারও সাধ্যি নাই যে এই আইনের রদ বদল করে। এর রদের জন্য দুনিয়ার সমগ্র মুসলিম নারীরা জীবন দিয়ে ফেললেও কারও কিছু করার নেই। এটা হচ্ছে এমনই পরিস্থিতি যেমন হচ্ছে ইসলামী উত্তরাধিকারী আইন—যথা মেয়ে পাবে ছেলের অর্ধেক। এই আইনও চিরকালের—বিশ্বের কোন শক্তি নেই আল্লাহ্র এই আইনের পরিবর্তন করতে পারে।
হিল্লা বিবাহের ব্যাপারে দেখা যাক একটি হাদিস।
মালিকের মুয়াত্তা: হাদিস ২৮. ৭. ১৮
ইয়াহিয়া—মালিক—ইয়াহিয়া ইবনে সাইদ—আল কাশিম ইবনে মুহাম্মদ থেকে। ইয়াহিয়া বললেন রসুলুল্লাহর স্ত্রী আয়েশা (রঃ) কে বলা হল: এক স্বামী তার স্ত্রীকে স্থায়ীভাবে তালাক দিয়েছে। সেই স্ত্রী অন্য এক পুরুষকে বিবাহ করল। সেই পুরুষ মহিলাকে তালাক দিয়ে দিল। মহিলাটির আগের স্বামী তার তালাক দেওয়া স্ত্রীকে পুনরায় বিবাহ করতে পারবে কি না? বিবি আয়েশা উত্তর দিলেন ততক্ষণ হবে না যতক্ষণ না সে মহিলাটি ঐ পুরুষটির সাথে যৌন সঙ্গমের মিষ্টি স্বাদ উপভোগ করেছে।
এই হচ্ছে হিল্লা বিবাহের মর্মকথা।
মুসলিম নারীদের যৌন সঙ্গম উপভোগ করার অধিকার আছে কি?
আশ্চর্যের ব্যাপার হল ইসলাম স্বীকার করে নিয়েছে যে অন্যান্য নারীদের মত মুসলিম নারীদেরও যৌন ক্ষুধা রয়েছে এবং সেই ক্ষুধার নিবৃত্তির প্রয়োজন। কিন্তু এ ব্যাপারে আল্লাহ্ বড়ই সজাগ এবং অতিশয় কৃপণ। ইসলাম কোনমতেই চায় না যে মুসলিম নারীদের দমিত রাখা যৌন ক্ষুধা বিস্ফোরিত হউক। তাই না মুসলিম নারীদের যৌনাঙ্গ ও শরীরের প্রতি এত তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিতে হচ্ছে। এই জন্যই মুসলিম নারীর যৌনতার ব্যাপারে এত ঢাক ঢাক গুঢ় গুঢ়—যেন কোন ক্রমেই একজন মুসলিম নারী তার ইচ্ছেমত তার যৌনতা উপভোগ করতে না পারে। সেই জন্যেই না করা হয়েছে কত অমানুষিক বর্বর শারিয়া আইন কানুন, যার একমাত্র কারণ—যেমন করেই হউক নারীর এই দুর্নিবার ক্ষুধাকে চেপে রাখতেই হবে।
কিন্তু অন্যায় যে আরও ব্যাপক। আমরা দেখেছি শারিয়া আইন বলছে চাহিবা মাত্র স্ত্রীকে তার দেহদান করতে হবে স্বামীকে। কিন্তু এই নিয়মটা স্ত্রীর উপর প্রযোজ্য নয়। একজন মুসলিম স্ত্রীকে অপেক্ষা করতে হবে কখন তার স্বামী তার (স্ত্রীর) যৌন ক্ষুধা মিটাতে প্রস্তুত—অর্থাৎ স্ত্রী চাইলেই স্বামীর কাছে যৌন সঙ্গম আশা করতে পারবে না। স্ত্রীর তীব্র যৌন-ক্ষুধা জাগলেও সে তা মুখ ফুটে স্বামীকে জানাতে পারবে না। যৌন উপভোগের একমাত্র নায়ক ও পরিচালক হচ্ছে স্বামী। স্ত্রী হচ্ছে মেঝেতে পড়ে থাকা চাটাই। স্বামী সেই চাটাইয়ে বীর্যপাত করলেই যৌন সঙ্গম সমাপ্ত হয়ে গেল। মোটামুটি এই ই হল ইসলামী যৌন সঙ্গম। এখানে নারীর ভূমিকা নিতান্তই নগণ্য—একেবারেই নাই বলা চলে। যেখানে স্বামীকে যৌন সঙ্গমের কত ব্যবস্থাই ইসলাম দিয়েছে, যথা এক সাথে চার স্ত্রী, অসংখ্য যৌন দাসী, অগণিত যুদ্ধ বন্দিনী…ইত্যাদি; সেখানে স্ত্রীকে সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করতে হচ্ছে মাত্র একজন পুরুষের উপর—তার স্বামী—আর কেউ নয়। কোন মুসলিম নারীর কি এমন বুকের পাটা আছে যে শারীয়া আইন অমান্য করে তার ইচ্ছামত যৌন ক্ষুধা মিটাবে? এই কাজ করলে যে তাকে পাথর মেরে হত্যা করা হবে।
আসুন আমরা এখন দেখি শারিয়া আইন কি বলছে মুসলিম নারীদের যৌন ক্ষুধা নিয়ে।
শারিয়া আইন এম ৫.২ (উমদাত আল সালিক, পৃঃ ৫২৫, ইমাম গাজ্জালী হতে):
স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সংগম করবে চার রাতে এক বার। কেননা স্বামীর হয়ত চার বিবি থাকতে পারে। স্ত্রীকে এর জন্য এই দীর্ঘ অপেক্ষা করতেই হবে। যদি সম্ভব হয় তবে স্বামী এর চাইতে অধিক অথবা কম সঙ্গমও করতে পারে। এমন ভাবে স্ত্রীর সঙ্গমের চাহিদা মিটাতে হবে যেন স্ত্রী চরিত্রবতী থাকে, তার যৌন ক্ষুধা আর না জাগে। এর কারণ এই যে স্বামীর জন্য এটা বাধ্যতামূলক যে তার স্ত্রী যেন সর্বদা চরিত্রাবতী থাকে।
মুসলিম নারীরা কি স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করতে পারবে?
বিশ্বের প্রতিটি জীবের স্বাধীনভাবে যত্রতত্র চলার অধিকার রয়েছে। জন্ম থেকেই আমরা সেই স্বাধীনতা ভোগ করে আসছি—ব্যতিক্রম শুধু মুসলিম নারীরা। বিশ্বাস না হলে ঘুরে আসুন কোন এক ইসলামী স্বর্গ থেকে—যেমন সৌদি আরব, ইরান, আজকের ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান…এই সব দেশ। আপনি দেখবেন আমরা যে অধিকারকে জন্ম অধিকার হিসেবে মনে করি, এই সব ইসলামী স্বর্গ গুলোতে বসবাসকারী মহিলাদের এই নূন্যতম অধিকারটুকুও নেই। এ কি বর্বরতা! আল্লাহ্ কেন এত নিষ্ঠুর ভাবে তারই সৃষ্ট নারীদের বন্দি করে রেখেছেন চার দেওয়ালের মাঝে? আল্লাহ্ কেন এই সব বিদঘুটে নিয়ম কানুন পুরুষদের বেলায় প্রযোজ্য করেন নাই? দুঃখের বিষয় হচ্ছে সমস্ত মুসলিম বিশ্ব এই বর্বরতা নীরবে মেনে নিচ্ছে—এর বিরুদ্ধে কোন টুঁ শব্দটি আমরা শুনি না। আরও অবাকের ব্যাপার হচ্ছে মুসলিম নারীরা এই সব অসভ্য, বেদুঈন, বর্বরতাকে জোরদার সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে। কি পরিহাস! মুসলিম নারীরাই এই জংলী সভ্যতার ভুক্তভোগী, অথচ তারাই নীরবে এই বর্বরতা স্বাছন্দে মেনে নিয়ে দিব্যি ঘুমিয়ে আছে। এইই যদি চলে তবে কেমন করে একজন মুসলিম নারী পেশাদার কিছু হতে পারবে? ইসলাম যে তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে, পায়ে বেড়ি লাগিয়ে, সমস্ত শরীরকে কারাগারে পুরে, এবং তার নারীত্বের সমস্ত মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করে।
ইসলামী জ্ঞানীগুণীরা অনেক যুক্তি দেখান এই বর্বরতার—যেমন এ সবই করা হচ্ছে মুসলিম নারীদের মর্যাদা, সম্মান ও নিরাপত্তার জন্য। এই প্রসঙ্গে সর্বদায় বলা হয়ে থাকে—দেখুন পাশ্চাত্ত্যের নারীরা কি রকম অসভ্য, বেলেল্লাপনা করে বেড়াচ্ছে। তাদের পরনে নামে মাত্র পোশাক, তাদের যৌনাঙ্গ প্রায় উন্মুক্ত। এই সব পাশ্চাত্য বেশ্যাদের তুলনায় আমাদের ইসলামী নারীরা অনেক সুখী, সৌভাগ্যবতী, এবং ধর্মানুরাগী। এইসব শারিয়া আইন করা হয়েছে মেয়েদের নিরাপত্তার জন্য। এই সব শারিয়া আইন প্রমাণ করে ইসলাম নারীদের কত মর্যাদা দেয়, কত মূল্যবান মনে করে মুসলিম নারীদের। এই সব কত গালভরা কথাই না আমরা অহরহ শুনছি। কি উত্তর দেওয়া যায় ঐ সব অযুক্তি ও কুযুক্তির?
দেখা যাক নারীর প্রতি ইসলামের মর্যাদা দেখানোর কিছু নমুনা।
ইবনে ওয়ারাকের, আমি কেন মুসলিম নই বই, পৃঃ ৩২১:
১৯৯০ সালে পাকিস্তানী এক নারীকে হোটেলের চাকুরী থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় যেহেতু মহিলাটি এক পুরুষের সাথে করমর্দন করেছিল। তারপর পাকিস্তানী মহিলাটি বললেন:
“পাকিস্তানে নারী হয়ে বাস করা খুবই বিপদজনক”।
এখন আমরা দেখি কোরান ও হাদিস কি বলছে এই প্রসঙ্গে।
কোরান সূরা আন নুর, আয়াত ৩১ (২৪: ৩১):
ইমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাজত করে। তারা যেন যা সাধারণত: প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষদেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নি-পুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদি, যৌনকামমুক্ত পুরুষ ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগন, তোমরা সবাই আল্লাহ্র সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
কোরান সূরা আল আহযাব, আয়াত ৩৩ (৩৩:৩৩)
তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে—মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ্ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত পবিত্র রাখতে।
সহিহ মুসলিম, বই ৭ হাদিস ৩১০৫:
আবু হুরায়রা বললেন: “রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে নারী আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস করে সে কখনই তার মাহরাম ছাড়া এক দিনের ভ্রমণে যাবে না”।
মালিকের মুয়াত্তা, হাদিস ৫৪.১৪.৩৭:
মালিক—সাইদ ইবনে আবি সাইদ আল মাকবুরি—আবু হুরায়রা থেকে। মালিক বললেন: আল্লাহ্র রসুল (সাঃ) বলেছেন: যে নারী আল্লাহ ও আখেরতে বিশ্বাস করে তার জন্যে তার পুরুষ মাহরাম ছাড়া একদিনের রাস্তা ভ্রমণ করা হালাল নয়।
ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, এমন কি বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মহিলা শ্রমিক বিভিন্ন কল কারখানায় প্রতিদিন কাজ করতে যায়। এ না করলে তাদের সংসার চলবে না। আমরা ইসলামীদের প্রশ্ন করব কি হবে ঐ সব মহিলা শ্রমিকদের যদি তারা শারিয়া আইন বলবত করে? অনেক মহিলা শ্রমিক রাত্রের বেলাতেও ফ্যাক্টরিতে কাজ করে। তাদের কি হবে–ইসলামী আইন চালু হলে? শারিয়া আইনের ফলে এই সব মহিলা শ্রমিক ও তাদের পরিবার যে অনাহারে থাকবে তা আর বুঝার অপেক্ষা থাকে না। আমরা কি চিন্তা করতে পারি শারিয়া আইনের ফলে কেমন করে মেঘবতী সুকার্ণপুত্রী (ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি), বেগম খালেদা জিয়া কেমন করে বিদেশে যেতে পারবেন এবং বিদেশের পুরুষ রাষ্ট্রনায়কদের সাথে এক সাথে বসে আলাপ আলোচনা করবেন? সৌজন্য স্বরূপ পুরুষ রাষ্ট্রনায়কদের সাথে করমর্দনের কোন কথাই উঠতে পারে না। ইসলামে তা একেবারেই হারাম—ঐ দেখুন উপরে—এক পাকিস্তানী মহিলার ভাগ্যে কি জুটেছিল। আজকের দিনে আমরা এই বিশুদ্ধ ইসলামী আইনের ব্যবহার দেখতে পাচ্ছি তালিবানি শাসিত আফগানিস্তানে, উত্তর সুদানে ও নাইজেরিয়ার কিছু প্রদেশে।
একবার ইসলামী আইন চালু হলে মুসলিম নারীদের কপালে যে কি আছে তা আর বিশেষভাবে লিখার দরকার পড়েনা। শারিয়া আইন নারীদেরকে বেঁধে ফেলবে চতুর্দিক থেকে। মোল্লা, ইমাম, মৌলানা, ইসলামী মাদ্রাসার ছাত্ররা ঝাঁপিয়ে পড়বে হিংস্র, খ্যাপা কুকুরের মত। দলিত মথিত করে, জবাই করে, টুকরো টুকরো করে এরা খাবে আমাদের মাতা, ভগ্নি, স্ত্রী, প্রেয়সীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। পাথর ছুড়ে এই সব পাগলা কুকুর গুলো হত্যা করবে আমাদের নারী স্বাধীনতার অগ্রগামীদেরকে। তাকিয়ে দেখুন কি হচ্ছে আজ ইরানে, ইসলাম শাসিত সুদানে, আফগানিস্তানে, নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ও অন্যান্য শারিয়া শাসিত ইসলামী স্বর্গ গুলিতে।
এখন শুনুন এক পাকিস্তানী মোল্লা কি বলছে রাওয়ালপিন্ডির মহিলা নেতাদের প্রতি।
ইবনে ওয়ারাকের বই, আমি কেন মুসলিম নই, পৃঃ ৩২১:
আমরা এই সব মহিলাদেরকে সাবধান করে দিচ্ছি। আমরা তাদেরকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলব। আমরা ওদেরকে এমন সাজা দিব যে কস্মিনকালে ওরা ইসলামের বিদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করতে পারবে না।
বেশ কিছু শিক্ষিত ইসলামী প্রায়শ: বলে থাকেন যে ইসলাম নাকি মহিলাদেরকে উচ্চশিক্ষার জন্য আহবান জানায়। ইসলামের লজ্জা ঢাকার জন্যই যে এই সব শিক্ষিত মুসলিম পুরুষেরা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁদের মিথ্যার মুখোশ উন্মোচনের জন্যে আমরা দেখব কিছু শারিয়া আইন। কি বলছে শারিয়া মুসলিম নারীদের শিক্ষার ব্যাপারে?
শারিয়া সাফ সাফ বলছে যে মহিলাদের জন্য একমাত্র শিক্ষা হচ্ছে ধর্মীয়, তথা ইসলামী দীনিয়াত।
শারিয়া আইন এম ১০.৩ (উমদাত আল সালিক, পৃঃ ৫৩৮):
স্বামী তার স্ত্রীকে পবিত্র আইন শিক্ষার জন্য গৃহের বাইরে যাবার অনুমতি দিতে পারবে। সেটা এই কারণে যে যাতে করে স্ত্রী জিকির করতে পারে এবং আল্লাহ্র বন্দনা করতে পারে। এই সব ধর্মীয় শিক্ষা লাভের জন্য স্ত্রী প্রয়োজনে তার বান্ধবীর গৃহে অথবা শহরের অন্য স্থানে যেতে পারে। এ ছাড়া স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রী কোন ক্রমেই তার মাহরাম (যে পুরুষের সাথে তার বিবাহ সম্ভব নয়, যেমন পিতা, ভ্রাতা, ছেলে…ইত্যাদি) ছাড়া গৃহের বাইরে পা রাখতে পারবে না। শুধু ব্যতিক্রম হবে হজ্জের ক্ষেত্রে, যেখানে এই ভ্রমণ বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া অন্য কোন প্রকার ভ্রমণ স্ত্রীর জন্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং স্বামীও অনুমতি দিতে পারবে না। হানাফি আইন অনুযায়ী স্ত্রী স্বামী অথবা তার মাহরাম ছাড়া শহরের বাইরে যেতে পারবে যতক্ষণ না এই দূরত্ব ৭৭ কি: মিঃ (৪৮ মাইল) এর অধিক না হয়।
শারিয়া আইন এম ১০.৪ (ঐ বই, পৃঃ ৫৩৮):
স্ত্রীর ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা।
স্বামীর কর্তব্য হবে স্ত্রীকে গৃহের বাইরে পা না দেবার আদেশ দেওয়া। (O. কারণ হচ্ছে বাইহাকি এক হাদিসে দেখিয়েছেন যে নবী (সাঃ) বলেছেন:
যে মহিলা আল্লাহ্ ও কিয়ামতে বিশ্বাস করে সে পারবেনা কোন ব্যক্তিকে গৃহে ঢোকার যদি তার স্বামী সেই ব্যক্তির উপর নারাজ থাকে। আর স্বামী না চাইলে স্ত্রী গৃহের বাইরে যেতে পারবে না।)কিন্তু স্ত্রীর কোন আত্মীয় মারা গেলে স্বামী স্ত্রীকে অনুমতি দিতে পারে গৃহের বাইরে যাবার।
নারীদের উপাসনা করা ও নিজের শ্রী বৃদ্ধির এবং শোক-বিলাপের কতটুকু অধিকার আছে?
পাশ্চাত্ত্যে অবস্থানরত, পাশ্চাত্ত্যে শিক্ষিত কিছু ইসলামী পণ্ডিত আমাদেরকে সর্বদা শোনাচ্ছেন যে মুসলিম নারীরা মসজিদে স্বাগতম। উপরে উপরে মনে হবে এ তো খুব চমৎকার—ইসলাম কতই না মহৎ নারীদের প্রতি। যে কথাটি এই সব পাশ্চাত্য শিক্ষিত ইসলামীরা চেপে যান তা হচ্ছে যে ইসলাম সব মুসলিম নারীকেই মসজিদে স্বাগতম জানায় না। এব্যাপারে কিছু শারিয়া আইন দেখা যাক।
শারিয়া আইন এফ ১২.৪ (ঐ বই, পৃঃ ১৭১):
…নারীদের জন্যে গৃহে উপাসনা (অর্থাৎ নামাজ) করাই উত্তম। (A. তারা তরুণীই অথবা বৃদ্ধাই হউক)। একজন তরুণী, সুন্দরী, আকর্ষণীয় মহিলার মসজিদে পা রাখা অপরাধমূলক।(O এমনকি তার স্বামী অনুমতি দিলেও)। যদি তরুণীটি আকর্ষণীয় না হয় তবে তার মসজিদে আসা অন্যায় হবে না। আসল কথা হল তরুণী যেন মসজিদের নামাযীদের দৃষ্টি আকর্ষণ না করে। এই জন্যেই আয়েশা (রঃ) বলেছেন: “নবী (সাঃ) যদি দেখে যেতেন আজকালকার মহিলারা কি সব কার্যকলাপ করে তবে উনি নিশ্চয়ই মহিলাদের মসজিদে আসা নিষিদ্ধ করে দিতেন; যেমন করা হয়েছিল বনী ইসরাইলের মহিলাদের।“ এই হাদিসটা বোখারী ও মুসলিম দিয়েছেন।
শারিয়া আইন এফ ২০.৩ (ঐ বই পৃঃ ২১৪):
গ্রহণের সময় নামায। এই সময় নামাযটা দলবদ্ধভাবে মসজিদে পড়া উচিত। যেসব মহিলাদের দেহ আকর্ষণীয় নয় অথবা যারা বৃদ্ধা সেইসব মহিলারাও মসজিদে এই নামায পড়তে পারে। আকর্ষণীয় দেহের মহিলাদের উচিত গৃহের ভিতরে নামায পড়া।
শারিয়া আইন পি ৪২.২ (৩) (ঐ বই পৃঃ ৬৮২):
আল্লাহ ঐ মহিলার প্রতি নযর দিবেন না।
নবী (সাঃ) বলেছেন যে মহিলার স্বামী গৃহে বর্তমান তার অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর উপবাস (রোজা) রাখা বে আইনি। স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রী কোন ব্যক্তিকে গৃহে ঢুকতে দিতে পারবে না।
এই প্রসঙ্গে মাওলানা আজিজুল হক সাহেব আনুবাদিত বোখারী শরীফে যে মন্তব্য করেছেন তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। উনি বাংলা বোখারী হাদিস নম্বর ৪৮৯ (খণ্ড ১) সম্পর্কে লিখেছেন:
ব্যাখাঃ এই হাদীছ দ্বারা ইমাম বোখারী (রঃ) ইহাও প্রমাণ করিয়াছেন যে, নারীদের জন্য মসজিদে যাইতেও স্বামীর অনুমতি গ্রহণ আবশ্যক ছিল।
মাওলানা আজিজুল হক সাহেবের আরও একটি ব্যাখা হাদিস নম্বর ৪৯০ প্রসঙ্গে:
ব্যাখ্যাঃ এই হাদিছ দৃষ্টে বোখারী (রঃ) বলিয়াছেন, নারীদের জন্য মসজিদে অবস্থান সংক্ষিপ্ত করার এবং নামায হইতে দ্রুত বাড়ী প্রত্যাবর্তন করার আদেশ ছিল। এই হাদীছে ইহাও সুস্পষ্ট যে, শুধু মাত্র মসজিদ সংলগ্ন বাড়ী ঘরের নারীরাই মসজিদে আসিত।
সুন্দরী, তরুণীদের মসজিদে ঢোকা উচিত নয়—মেনে নিলাম এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে অন্যান্য নামাযীদের মনোযোগ নষ্ট না করার জন্য। অন্যায়টা হচ্ছে–এই আইন কেন প্রযোজ্য হবে না সুদর্শন দেহের তরুণদের উপরে? এই সুদর্শন পুরুষদের প্রতি মহিলারাও যে আকর্ষিত হয়ে পড়তে পারে। এর কারণ কি এই নয় যে আল্লাহ্ সর্বদাই পুরুষ পছন্দ করেন—কারণ তিনিও যে পুরুষ!
সত্যি কথা হচ্ছে মোহাম্মদ নিজেই ছিলেন অত্যন্ত লিঙ্গ-কাতর মানুষ (sexist) যা হয়ত তখনকার আরব সমাজে বিদ্যমান ছিল। যদিও উনি চাইছিলেন তৎকালীন আরব মহিলাদের ভাগ্যের কিছুটা উন্নতি হউক, তথাপি খুব সতর্ক ছিলেন যাতে আরব সমাজের পুরুষতান্ত্রিকতায় তেমন বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন না আনেন। তাই উনি কোনক্রমেই পুরুষ ও মহিলাদের সমান অধিকারের পক্ষপাতী ছিলেন না। আল্লাহ্ পাকও এ ব্যাপারে তেমন কিছু বলেন নাই। যত বড় বড় কথাই নবীজি বলুন না কেন উনার মনের গভীরে বাস করত এক অশিক্ষিত, অমার্জিত, বর্বর বেদুঈন আরব। এবং উনি ভালভাবেই জানতেন বেদুঈন সমাজে মহিলাদের কি ভাবে দেখা হয়। বেদুঈনদের কাছে নারীরা হচ্ছে ‘মাল’ অথবা যৌন সম্ভোগের উপকরণ মাত্র। আমরা এই মনোভাবেরই প্রতিফলন দেখি শারিয়া আইনগুলিতে। নবীজি চাইলেও পারতেন না বেদুঈনদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে। আমরা বিভিন্ন হাদিসে দেখি যে যখনই পুরুষ এবং মহিলার ব্যাপারে নবীজিকে সিদ্ধান্ত দিতে হয়েছে—তিনি প্রায় সর্বদায় পুরুষের পক্ষে রায় দিয়েছেন। এটাই তাঁর বেদুঈন মনের পরিচয়। কারণ মরুভূমির বেদুঈনদের কাছে পুরুষই হচ্ছে সবার উপরে। নবীজি তার ব্যতিক্রম হলেন না।
এখানে আরও কিছু হাদিস উদ্ধৃতি দেওয়া হল যা থেকে আমরা দেখতে পাব একজন বেদুঈন পুরুষকে তৃপ্ত করতে একজন মহিলার কতদূর পর্যন্ত যেতে হবে।
সহিহ বোখারী, ভলুম ৭, বই ৬২, হাদিস ১৭৩:
জাবির বিন আবদুল্লাহ বর্ণনা করেছেন, নবী (সাঃ) বলেছেন—যদি তুমি রাত্রে বাড়ী পৌঁছ তবে তৎক্ষণাৎ স্ত্রীর নিকট চলে যাবে না। যাবত না সে যৌনাঙ্গের কেশে ক্ষুর ব্যাবহারে পরিচ্ছন্ন হয় এবং মাথার কেশ বিন্যাস করে নেয়। নবী (সাঃ) আরও বললেন: “হে জাবির সন্তান উৎপাদন কর, সন্তান উৎপাদন কর!”
মুসলিম নারীদের জন্য প্রসাধন সামগ্রী ব্যাবহার করা, তথা তাদের মুখমণ্ডল সুশ্রী করা একেবারেই হারাম। সত্যি বলতে যে সব মুসলিম মহিলাগণ নিজেদের সৌন্দর্য বিকাশে ব্যস্ত তাঁদেরকে মুসলিম নারী বলা যাবেনা। তাই বলা যায় যেসব মুসলিমাহ্ ঠোঁটে লিপস্টিক মেখে, চক্ষুতে মাসকারা দিয়ে, গালে কুমকুম…ইত্যাদি লাগিয়ে গৃহের বাইরে যান তাঁদের উচিত হবে ঐ সব হারাম প্রসাধন সামগ্রী ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া। তা না করলে এই সব মুসলিমরা যে ইসলামী নরকের আগুনে চিরকাল পুড়তে থাকবেন।
এই ব্যাপারে কিছু হাদিস দেখা যাক।
সহিহ মুসলিম, বই ১, হাদিস ১৮৭:
আবু বুরদা বলেছেন যে আবু মুসা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর স্ত্রী তাঁর কাছে আসলো ও উচ্চরবে বিলাপ আরম্ভ করল। যখন আবু মুসা ধাতস্থ হলেন তখন বললেন: তুমি কি জান না? আমি হলপ করে বলছি যে রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: “যে কেউ কারও অসুস্থতায় মস্তক মুণ্ডন করবে, উচ্চরবে কান্নাকাটি করবে ও পোশাক ছিঁড়ে ফেলবে তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই।“
সুনান আবু দাঊদ, বই ১, হাদিস ০১৮৮:
আবু হুরায়রা বর্ণনা করলেন:
আল্লাহর সৃষ্ট মহিলাদেরকে মসজিদ যেতে বাধা দিবে না। তবে তাদেরকে মসজিদে যেতে হবে সুগন্ধি না মেখে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে নবীজি পুরুষদেরকে সুপারিশ করেছেন তারা মসজিদে যাবার সময় যেন সুগন্ধি মেখে নেয়। দেখা যাচ্ছে একজন সুন্দরী তরুণী যার আছে আকর্ষণীয় দেহ সে ইসলামে এক বিষম বিড়ম্বনার পাত্র। তাকে নিয়ে কি করা? মহিলা যদি বৃদ্ধা, অসুন্দর, ও কুৎসিত দেহের অধিকারী হয় তবে ইসলামে তার স্থান অনেক উঁচুতে।
দেখা যাক আরও দুই একটি হাদিস।
মালিকের মুয়াত্তা, হাদিস ৫৩.১.২:
ইয়াহিয়া—মালিক—ওহাব ইবনে কায়সান থেকে। ইয়াহিয়া বর্ণনা করলেন:
মোহাম্মদ ইবনে আমর বলেছেন: “আমি আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসের সাথে বসেছিলাম। এক ইয়ামানি ব্যক্তি এসে গেল। সে বলল: ‘ আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু। এরপর ব্যক্তিটি আরও কিছু বলল। ইবনে আব্বাস (তখন তিনি অন্ধ ছিলেন) জিজ্ঞাসা করলেন: “ব্যক্তিটি কে?” উপস্থিত যারা ছিল তারা বলল: “এ হচ্ছে এক ইয়ামানি ব্যক্তি”। এরপর তারা তার পরিচয় জানিয়ে দিল। ইবনে আব্বাস বললেন: শুভেচ্ছার শেষ শব্দ হচ্ছে—আশীর্বাদ”।ইয়াহিয়া তখন মালিককে জিজ্ঞাসা করলেন: “আমরা কি মহিলাদেরকে শুভেচ্ছা বা সম্ভাষণ জানাতে পারি?” তিনি উত্তর দিলেন: “এক বৃদ্ধাকে শুভেচ্ছা জানাতে অসুবিধা নাই। তবে এক তরুণীকে আমি শুভেচ্ছা জানাই না।“
চলবে (৮ম পর্বে)।
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—১)
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—২)
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—৩)
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—৪)
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—৫)
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—৬)
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—৭)
ইসলামী জ্ঞানীগুণীরা যে নারীদের নিরাপত্তার জন্য ইসলামী আইনগুলোকে যথাযথ মনে করছেন, ভাল কথা। কিন্তু নারীদের এই নিরাপত্তাটা কাদের কাছ থেকে? ভাবা হচ্ছে, ঘর বা পর্দার বাহিরে নারীরা নিরাপদ নয় পুরুষদের কাছ থেকে। মুলতঃ নারী অনিরাপত্তার মূল কারণ এই পুরুষ। শরিয়া আইন হওয়া উচিত ছিল এই বর্বর পুরুষদের জন্য যাদের কারনে নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অথচ শরীয়া আইন করে নারীদের অধিকারকে খর্ব করে, একটার পর একটা বিধি-নিষেধ আরোপ করে ইসলাম নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। যেন মনে হচ্ছে, নারীরা উন্মুক্ত চলাফেরা করলে তাদেরকে যৌন হয়রানী বা অশ্লীলতা করা পুরুষদের এক প্রকার অধিকার। যদি পুরুষদের সভ্য হওয়ার প্রেষনা শরীয়া আইন যদি দিয়ে থাকে তাহলে নারীদের উপর এরকম বিধি-নিষেধের খড়গ চাপিয়ে দেয়ার দরকার কি?
ইসলামের দৃষ্টিতে বেশ্যা, সৌভাগ্যবতী, নারীর মর্যাদা এসবের ব্যাখ্যা পুরুষদের সুবিধার্থেই ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও আমাদের মুসলিম নারীরা নিজেদেরকে খুবই সৌভাগ্যবতী, মর্যাদাবান ভাবছেন। যেভাবে শেখানো হয়েছে আর কি।
@বাদল চৌধুরী,
ঠিক লিখেছেন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় আমাদের দেশের নারীদের ‘নারী স্বাধীনতা’ বলতে শুধু ‘কাপড় চোপড়’ পরাই মনে করে। অন্যান্য বিষয় যেমন কর্মক্ষত্রে স্বাধীনতা, বেতনের অসমানতা, শিশু ভার বহনের, বিবাহ বিচ্ছেদের, যৌনতার ব্যাপারে নিজস্ব মত….ইত্যদি অনেক কিছুই জানেন না।
কাপড় চোপড় পরা অথবা দেহ প্রদর্শনের চাইতে ঐ সব বিষয়গুলো যে অধিক গুরুত্বপুর্ণ তা জানা দরকার।
লেখাটি আমার গানের পরিসীমা কে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে . আর কাসেম লিখা আমার কাছে অতুলনীয়. এ যেন এক নিষিদ্ধ নেশা. এখান থেকে মুক্তিই নেই . আমার বিপ্লবী সালাম রইলো.
যদি পারেন পূর্বের ২ থকে ৫ পর্যন্ত লিখার লিঙ্ক তা সাথে দিয়েন. ভিসিওন উপকৃত হব. তা না হলে আমার পড়া অপুর্ন্ন থকে যাবে ধন্যবাদ.
শাওন
@শাওন,
তাহলে মুক্তমনায় একজন সঙ্গীত শিল্পীও আছে! 😀
@আসরাফ,
আমাকে মাফ করবেন. আমি কোনো গানের শিল্পী নই . তাড়াহুড়া করে লিখার সময় ভুলে জ্ঞানের পরিবর্তে গানের শব্দ লিখা হইছিলো.
ধন্যবাদ
শাওন
@শাওন,
পূর্বের সব পর্বগুলোর লিংক দিয়েছেন ভাই আকাশ মালিক।
আপনি দেখুন লেখার শেষে।
আপনাকে প্রচুর ধন্যবাদ এই অধমের লেখার পছন্দের জন্য।
খুব বেশি ভাল লেগে কি বলা যায়, ভেবে পাচ্ছি না।
এই বুদ্ধিটি পয়গাম্বর সাহেবের মাথায় আসেনি নাহলে তিনি তাই করতেন। হিল্লা বিবাহ পুরুষকে করতে বলতেন। আর সেটা হত তার অনুসারী পুরুষদের জন্য মহা আনন্দের ব্যাপার, তারা নতুন নতুন হিল্লা-বৌয়ের স্বাদ পাওয়ার জন্য প্রতিদিনই একটা করে বৌ তালাক দিত।
@তামান্না ঝুমু,
স্বামীদের হিল্লা বিবাহের কোন প্রয়োজন নাই। এক সাথে তারা চারজন স্ত্রীর সাথে যৌন সংগম করতে পারে। শুধু তাই নয়–প্রয়োজনে একই রাত্রে অথবা দিনে দুপুরে চার বিবির সাথে সহবাস করতে পারে। আরা তাছাড়া ত অগুনতি যৌন দাসী এবং যুদ্ধবন্দিনীদের কথা নাই বা বললাম।
হাদিস বলছে নবীজি এক রাত্রে নয়জন বিবির সাথে সহবাস করতেন।
আরও চিন্তা করুন–ইসলামি নিয়মে এক রাত্রে চারজন নারীকে বিবাহ করে, তাদের সাথে সহবাস করে ভোরবেলা তদেরকে ঘত থেকে বের করে দেওয়া একেবারেই সঙ্গত বিধান।
আমাদের নবীজির নাতিরা তাই-ই করে গেছেন।
ইসলামের ব্যর্থতা হল ব্যাবহারিক জীবনে।জাকির নায়েক গং রা যতই যুক্তি খন্ডন করুক না কেন যতই ভাল হাদিস দেখাক না কেন বাস্তবে ইসলামি শাসন কায়েম করা হলে নারী মহাবিপদে পড়বেই।কেন তা ব্যাখ্যা করলে একটা পোষ্ট দিতে হবে।তবে এটুকু বলতে চাই শুধু ইসলাম ধর্ম ই বোধহয় নারীকে ধর্ষনের অনুমতি দিয়েছে্।নারীকে উট ঘোড়া টাকা পয়সার মত গনীমতে মাল বিবেচনা করেছে(হাদীস নং ২০৭৪ বুখারী ২য় খন্ড)।
@ইললু ঝিললু,
তুলনামুলক বিবেচনায় আমার মনে হয় হিন্দু ধর্ম জগতের সব চেয়ে বেশী কুৎসিত, অশ্লীল, নোংরা, জঘণ্য ধর্ম।
@আকাশ মালিক,
হিন্দু ধর্মে আমার জ্ঞান তেমন গভীর নয়।
তবুও যতটুকু পড়েছি তা থেকেম আমি আকাশ মালিকের সাথে একমত।
@আকাশ মালিক,
যুক্তির চেয়ে হিন্দুবিদ্বেষ বেশী দৃশ্যমান। হিন্দু “ধর্ম” না বলে “মনু সংহিতা” জগতের সব… বলে কথাটায় যুক্তি থাকত। ধর্ম শব্দটা খুব ব্যাপক অর্থের বিশেষ করে হিন্দু ধর্মের বেলায়। হিন্দু ধর্ম কোন বিশেষ বইএর দ্বারা সংজ্ঞায়িত নয়। ইসলাম যেমন কুরাণ ও সুন্নাহ (শারীয়া) এর সাথে সমার্থক, হিন্দু ধর্ম সেরকম নয়। চার্বাক (নাস্তিক) বিশ্বাস ও হিন্দু ধর্মের অংশ। ইসলামের মত কোন হিন্দু ধর্মগ্রন্থে বলা নেই যে মনু সংহিতার সব বিধান মেনে না চললে সে হিন্দু কাফির (বা নরকে যাবে) বা তাকে মেরে ফেলতে হবে ইত্যাদি। হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বই গীতায় কোন কুৎসিত, অশ্লীল, নোংরা, জঘণ্য অধ্যায় নেই বলেই জানি।
কুরাণ ও শারীয়া ভিত্তিক ইসলাম যে সব চেয়ে বর্বর ধর্ম সে ব্যাপারে দ্বিমত আছে জেনে আমি বিস্মিত।
@যাযাবর,
সঠিক নয়। তবে আপনি কেন মনে করেছেন তার যৌক্তিক কারণ আছে। ভুলটা আমারই হয়েছে, স্যরি। মন্তব্য বোটনে ক্লিক করার পরপরই চোখে ধরা পড়েছে ‘ধর্ম’ লেখাটা আমার উচিৎ হয়নি। আপনার ব্যাখ্যার জন্যে ধন্যবাদ-(Y)
তবে এখানেও কিছুটা তর্কের অবকাশ রয়ে যায়, যেমন আপনি বলেছেন- কুরাণ ও শারীয়া ভিত্তিক ইসলাম যে সব চেয়ে বর্বর ধর্ম –
সিদ্ধান্ত দেয়াটা হয়তো কঠিন হবে, তুলনামূলক আলোচনার জন্যে আমি বলবো হিন্দুধর্মের এই বইগুলো পড়ে নিতে-
ঋগে¦দ, সামবেদ, অথর্ববেদ ও যজুর্বেদ, কৃষ্ণযজুর্বেদ বা তৈত্তরীয় সংহিতা শুক্লযজুর্বেদ; শতপথ ব্রাহ্মণ এবং বৃহদারণ্যকোপনিষদ।
ধর্মের তুলনামূলক আলোচনা এখানে কিছুটা করেছি, যদিও লেখাটি আপডেইটেড পুরনো লেখা।
১ম পর্ব-
২য় পর্ব-
@আকাশ মালিক,
দুনিয়াতে কেওই নিজের ধর্ম খারাপ মানতে চাই না।
এর কারন নিয়ে একটা সিরিয়াস পোষ্ট ফেলার ইচ্ছা আছে। ব্যাপারটার গভীরে ঢোকার দরকার।
মুসলিমরা হিন্দু ধর্মের বাজে জিনিসগুলো দেখতে পায়-নিজেদের বাজে কিছু পায় না!
হিন্দুদের ক্ষেত্রেও একই কথা সত্য-তারা ইসলামকে নরক মনে করে-অথচ হিন্দু ধর্মে নরক পায় না।
ব্যাপারটা অদ্ভুত। ধর্মের বাজে জিনিস গুলো দেখার ক্ষমতা তাহলে এদের আছে অথচ নিজেদের বাজেটা দেখতে পায় না।
@বিপ্লব পাল,
অভিজি’ৎদা আর অনন্তের বিভিন্ন মন্তব্যের মাধ্যমে মুক্তমনায় হিন্দু ধর্মের বর্বরতা নিয়ে বেশ কিছু জেনেছিলাম, খুঁজে বের করতে হবে।
দেন দাদা, সিরিয়াস পোষ্টটা লিখে ফেলেন। বানান-ব্যাকরণ ঠিক-টাক করে দিবেন যাতে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করতে পারি।
@আকাশ মালিক,
অভিজিৎ, অনন্ত, এবং রনদীপম বসু ছাড়া মুক্তমনায় কেউ তেমন হিন্দু ধর্ম ‘ব্যাশিং’ করেন নাই।
এরা আজকাল চুপ চাপ। মনে হচ্ছে হিন্দু মৌলবাদীদের দাপটে।
তাই আমরা বিপ্লব পালের হিন্দু ‘ব্যাশিং’ পড়ার আগ্রহে থাকলাম।
@আবুল কাশেম,
কোন ধর্মকে ব্যাশিং করার ব্যাপারে আমি নাই ;-(
বিশ্লেষনে আছি। কোনকিছুই ইতিহাস আর সমাজবিজ্ঞান বিচ্ছিন্ন হতে পারে না।
আরেকটা ব্যাপার অনেকদিন ধরে ভাবার চেষ্টা করছি। ইসলামে এই যে মামাতো, পিসতুতো ভাই বোনেদের মধ্যে বিয়ে হয়-এটা কোত্থেকে এল? এটা দক্ষিন ভারতের হিন্দুদের মধ্যেও আছে।
কেন প্রশ্নটা তুলছি জানেন? প্রাইমেট থেকে মানুষদের বিবর্তন নিয়ে যদ্দুর জানা যায় -মানুষ বা প্রাইমেটদের গোষ্ঠিবদ্ধ জীবনের শুরুতেও এটা তারা নিজেদের অভিজ্ঞতায় বুঝেছিল নিজেদের গোষ্ঠির মধ্যে বিয়ে করলে দুর্বল সন্তানের জন্ম হয়। তাই যে কোন গোষ্ঠিতে মেয়েরা বড় হলেই, অন্য গোষ্ঠির পুরুষের খোঁজে চলে যেত। এটা শুধু মানুষ না প্রাইমেটরাও জানে।
শুধু ইসলাম এবং হিন্দুদের কিছু কিছু সেক্ট এখনো জানে না! বৃটেনের ৫৯% জেনেটিক ডিফেক্টেড সন্তান মুসলিমদের মধ্যে।
যে জিনিস প্রাইমেটরা বা বানর গোষ্ঠির আদিম লোকেরাও জানত-পরম করুণাময় আল্লার সৃষ্টি কোরানে সে জ্ঞানটুকুও নেই???
আল্লা এই গুরুত্বপূর্ন ব্যাপারটা যা মানুষের বিবর্তনের ইতিহাসের আদিলগ্ন থেকে জানা- সেটা কেন মিস করে গেলেন বলে আপনার মনে হয়??
@বিপ্লব পাল,
ব্যাশিং শব্দটি আমি উদ্ধৃতির মাঝে দিয়েছি। কাজেই আশা করি আপনি বুঝতে পারবেন আমি বলেছি।
আপনি মুসলিমদের মাঝে নিকট আত্মীয়দের সাথে বিবাহের কুফল সম্পর্কে যা লিখেছেন তা সত্য। এই ব্যাপারে আমি incest in Islam নামে প্রবন্ধ লিখেছিলাম কিছু দিন আগে।
হিন্দুদের মাঝে যে এই ব্যবস্থা বর্তমান তা আমি একটু একটু জেনেছিলেম আমার অনেক হিন্দু বন্ধুদের কাছ থেকে। তবে এই ব্যাপারে বেশ কিছু আলোকপাত করেছেন আকাশ মালিক তাঁর ‘যে সত্য বলা হয় নি গ্রন্থে’। আমি এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ নই—তাই বেশী কিছু বলা সঙ্গত মনে করছি না।
তা, আপনি এই ব্যাপারে আমাদেরকে খুঁটিনাটি জানালে ভাল হবে।
@আবুল কাশেম,
মনে হচ্ছে না।
একজন মুসলমানের প্রথম পরিচয় মুসলমান, হিন্দুর কিন্তু নয়। আমেরিকাতেই দেখুন। বাংলাদেশ থেকে এসেছি শুনে আলাপের প্রথম মিনিটেই অনেকবার একটি সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে, আমি মুসলমান কিনা। হিন্দু ধর্ম আসলে কোন ধর্মই নয়। যেটুকু ছিল সেটুকুও সৌভাগ্য বশতঃ নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে। এখন যা আছে তা সামাজিক আচারাদি। সবটাই আনন্দ উৎসবে সীমিত যেমন পহেলা বৈশাখের আনন্দোতসব।
আর হিন্দু মৌলবাদ? কোথায়, কয়টি, কতজন নিয়ে গঠিত? খুবই সীমাবদ্ধ – শুধু ভারতেই।
হিন্দু ব্যাশিং করার থাকলে করুন। কেউ নেবে না। কেউ আপনার বিরুদ্ধে তেড়ে আসবে না। ফলে ব্যাশিং নিস্ফল হবে। কোন মজা পাবেন না।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
ব্যাশিং শব্দটা কাশেম ভাই ব্যবহার করেছেন অন্য কারণে। আমরা যখনই কোরান হাদিসের সমালোচনা করেছি, মুসলমানগন আমাদেরকে অকারণে ইসলাম ব্যাশার মুসলমান ব্যাশার আখ্যা দিয়েছেন।
আপনার কথাটা ঠিক। আমি নিজেই পরীক্ষা করে দেখেছি। বিভিন্ন ব্লগে লেখায়, সরাসরি যিশুকে মেরির জারজ সন্তান বলেছি, হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ, ভগবান, দেব-দেবীকে নিয়ে কটাক্ষ উপহাস করেছি কোন লাভ হয়না। অনেক দেরীতে হলেও আমি আশা করি মুসলমানরাও একসময় তাদের দৃষ্টিভিঙ্গী পাল্টাবে। ইতিমধ্যে অনেকেই তাদের আগের মৌলিক অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।
@আকাশ মালিক,
আপনার পর্যবেক্ষণের সাথে একমত। হাতের কাছের একটা উদাহরণ, তা নাহলে এবার বইমেলার অনেক বই নিয়েই তুলকালাম কান্ড হত। আমার ত মনে হয়, তসলিমা নাসরিণের দেশে ফেরার সময় হয়ে এল বলে।
@আকাশ মালিক,
আধুনক চিকিৎসা বিজ্ঞানের যুগে মেরিকে যিশুর সরোগেট মা এবং ঈশ্বরকে যিশুর সরোগেট বাবা বলা যায়। ঈশ্বর বাইবেলের মাধ্যমে এবং আল্লাহ কোরানের মাধ্যমে মানুষকে ব্যভিচার করতে মানা করেছেন। আর তারাই মেরির(মরিয়ম) সাথে নিঃসংকোচে ব্যভিচার করেছেন।এবং ধর্মীয় দৃষ্টিতে জারজ পুত্র জন্ম দিয়েছেন।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আপনার সাথে একমত।
ইসলাম এখন বিশ্বের সমস্যা।
@বিপ্লব পাল,
বিষয়টা আমার মাথাতেও কিছুদিন ঘুরপাক খাচ্ছিল। স্থূলভাবে বলতে গেলে, আমাদের মৃত্যুভয়,লালসা আর প্রশংসাপ্রাপ্তির প্রবল আকাঙ্খাই কি এর মূল কারণ নয়?
প্রথমে ধরা যাক “প্রশংসা-বাসনার” ব্যাপারটা। “আমি আসলে খারাপ নই; আমি অন্যদের থেকে কোন না কোন ভাবে আলাদা; আমার ভাবনাগুলোই বোধহয় সঠিক”–মনের গভীরে আমরা হয়ত এই “আমিত্তের” ধারনাগুলো নিয়ে বেঁচে থাকি। কারণ “আমি” যা করি বা ভাবি তার সব ভুল হলে “আমার” বেঁচে থাকাই দায় হতো। আর আমিত্ত থেকেই আসে “আমাদের” গোষ্টীগত ধারনা। “আমাদের গোষ্টী ভাল, আমি তাদের একজন ভাল বংশধর”–উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত এই সস্তা প্রশংসাটুকুর প্রতি আমাদের বড়ই লোভ! বিশেষ করে যাদের ব্যাক্তিগত সাফল্য তথা যোগ্য প্রশংসা প্রাপ্তির সুযোগ কম তাদের মাঝেই গোত্র সাফল্যের মহিমায় নিজেকেও মহিমাণ্বিত ভাবার তীব্র আকাঙ্খা লক্ষ্য করা যায়। এই গোত্র হতে পারে “ধর্মীয়”,”রাষ্ট্রীয়”, “জাতিগত” কিংবা “সাংষ্কৃতিক”। তবে প্রশংসার আত্মতৃপ্তি চাই-ই-চাই।
এখন এই প্রশংসা-লোভের সাথে ধর্মের মারাত্মক ভয়ভীতিগুলো একসাথে জড় হলে আমরা নিজ নিজ ধর্মে খারাপ কিছু দেখতে পাই না। আর দেখতে পেলেও মনে মনে কোন একটা যুক্তি/কুযুক্তি দাঁড় করিয়ে , পারলে অন্য ধর্মের খারাপ দিকগুলোর সাথে নিজ ধর্মের “আপাতঃ ভাল” দিকটুকুর তুলনা করে সন্তুষ্ট থাকতে চাই। মানে,”আমার ক্যান্সার হয়েছে তো কী হয়েছে? তোমার মতো এইড্স তো আর হয়নি! অতএব, আমি তোমা হতে শ্রেষ্ঠ!”
আবার বৃক্ষের মতই আমাদের লতাপাতা বা শাখায় আঘাত সহ্য হলেও মূলের গভীরে তা একেবারেই অসহনীয়। “আমি না হয় কম বুঝি, কোনদিকে খারাপও হতে পারি, তাই বলে আমার বাপ, দাদা, তস্যদাদা, চৌদ্দগুষ্ঠির সবার আজন্ম লালিত বিশ্বাস,আচারগুলো নিকৃষ্ট,বর্বর, অশ্লীল ছিল”–এটা মন থেকে সহজে মেনে নিতে সাধারনের কষ্ট হয় বৈকি? এর পেছনে বিবর্তনীয় কোন কারণ হয়ত থাকতে পারে।
তাছাড়া ধর্মবিশ্বাসের সাথে শুধু নিজের মৃত্যুভয়ই নয়, আপনজনের পারলৌকিক
সুখ শান্তির কাল্পনিক ধ্যান ধারনাগুলোও জড়িত। আত্মীয়-পরিজন নিয়ে কেউই “মরিতে চাহিনা এই সুন্দর ভূবনে”। তবে না চাইলেও “আপাততঃ” কিছু করার নাই। তাই বলে এই সুন্দর ভূবনের বাইরে আরও ভূবনের কল্পনায় মাতাল হতে তো আর পয়সা লাগছে না! আমাদের দূর্বল, সুবিধাবাদি মন তাই কোথায় একটা আশা,লালসাকে বাচিয়ে রাখতে চায়। “কি হবে সত্যিই যদি মৃত্যুর পরে কিছু থেকে থাকে?! আমার এই অযৌক্তিক বিশ্বাসগুলোই আখেরে যদি লাইগ্যা যায়?” অতএব, “তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার স্বর্গে যাওয়া চাই”। নিদেনপক্ষে নরকে তো নাই-ই। যেহেতু পরধর্মে অবিশ্বাসে নরকে পোড়ার ঝুকি নেই, অন্যের বিশ্বাসের সাথে নিজের বা স্বগোত্রের সামাজিক, পারলৌকিক স্বার্থগত কোন সম্পর্ক থাকে না সেহেতু আমরা জগতের তাবত ভিনধর্মের আবর্জনাগুলো খালি চোখেই দেখতে পাই। নিজ ধর্মের মতো সেখানে কোনও “soft corner” জন্মায় না।
@যাযাবর,
হিন্দু আইনের উৎস কোনটা? মনুসংহিতা। (তবে শুধুমাত্র মনুসংহিতা নয়। সাথে আরো আগড়ুম-বাগড়ুম আছে বৈকি।)
তো এই মানব দরদী মনুসংহিতা গ্রন্থে হিন্দুদের জন্য কি কি বিধান উল্লেখ আছে, আপনি জানেন নিশ্চয়ই। সামান্য কয়েকটি চম্বকঅংশ কি দিতে পারি?
মনুসংহিতায় (১:৯১) ঈশ্বর কৃর্তক নির্দেশিত শূদ্রের একটি মাত্র কর্মের কথা বলা হয়েছে, সেটা হল বাকি তিন বর্ণের অসূয়াহীন সেবা।
তিন বর্ণের কাজের মধ্যে ব্রাহ্মণের কাজ অধ্যাপনা-যাজন-যজন-দান-প্রতিগ্রহ, ক্ষত্রিয়ের কাজ লোকরক্ষা-দান-অধ্যয়ন-যজ্ঞ, বৈশ্যের কাজ পশুপালন-দান-অধ্যয়ন-কৃষি ইত্যাদি (১:৮৮-৯০)।
মনুসংহিতার ২:৩১ শ্লোকে বলা হয়েছে, ব্রাহ্মণের নাম শুভসূচক, ক্ষত্রিয়ের নাম বলবাচক, বৈশ্যের নাম ধনবাচক আর শূদ্রের নাম হবে নিন্দাবাচক!
১০:৩১নং শ্লোকে বলা হয়েছে শূদ্র সক্ষম হলেও ধন সঞ্চয় করতে পারবে না! শূদ্রের দাসত্ব থেকে কোনো মুক্তি নেই, বরং সে ব্রাহ্মণের দাসত্বের জন্যই ব্রহ্মা কর্তৃক সৃষ্টি হয়েছে (৮:৪১৩-৪১৪)!
৮:২৮১নং শ্লোকে আছে শূদ্র যদি কখনো ব্রাহ্মণের সঙ্গে একাসনে বসে তবে শূদ্রের কটিদেশে গরম লোহার ছ্যাঁকা দিয়ে নির্বাসন দেয়া হবে!
শূদ্র ব্রাহ্মণপত্নীগমন করলে শাস্তি ছিল মৃত্যু (৮:৩৩৬); পক্ষান্তরে ব্রাহ্মণ শূদ্রাণীকে বলৎকার করলে শাস্তি অর্থদণ্ড (৮:৩৮৫)।
ব্রাহ্মণকে চোর বলে গালি দিলে শূদ্রের শাস্তি প্রাণদণ্ড, ব্রাহ্মণের ক্ষেত্রে অর্থদণ্ড (৮:৬৭-৬৮)!
তাতে কি-বা হল? হিন্দু ধর্মের অংশ তো অনেক কিছুই। হাজার হাজার বছর ধরে এই ধর্মের ব্রাহ্মণ পাণ্ডারা তো ভারতবর্ষকে গিলে খেয়েছে। গৌতম বুদ্ধকেও তারা বিষ্ণুর অবতার বানিয়েছে।
তাহলে ভাই, আপনার জানার মধ্যে ঘাটতি আছে মনে হচ্ছে। জানার আগ্রহ থাকলে এবারের বইমেলায় প্রকাশিত আমাদের পার্থিব বইটি পড়ে নিতে পারেন অথবা, মুক্তমনার ই-বুক সংকলন বিজ্ঞান ও ধর্ম : সংঘাত নাকি সমন্বয় থেকে আমার লেখা ‘ভগবদ্গীতায় বিজ্ঞান অন্বেষণ এবং অন্যান্য’ প্রবন্ধখানি পড়ে নিতে পারেন।
@আকাশ মালিক,
মালিক ভাই, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। (F) অনেক ভদ্রভাষায় বলে দিলেন। (D) (C)
হিন্দুদের ধর্মাচরণ তো বর্বরতার প্রতীক আজকের এই সভ্য জগতে। কোন বিচারে একে অন্য ধর্মের গ্রন্থের সাথে তুলনা করবে? এর বহুত্ববাদিতা, বৈচিত্র্যময়তা? তাতে কিবা আসে যায়? তাতে কি হিন্দু ধর্মের বর্বরতা কমে যায়? জাতিভেদের নর্দমার কাদাগুলি দূর হয়ে যায়? সতীদাহের কালিমা মুছে যায়?
হিন্দু ধর্মের গ্রন্থগুলিতে এত অশ্লীল ভাষায় ইনসেস্ট আর সেক্সের রসালো বর্ণন রয়েছে, তা দেখে মনে হয় রসময় দাসগুপ্তরাও লজ্জা পায়!
পুরাণের পাতা থেকে ‘এসো নিজেরা করি’ শিখে থাকতে পারে রসময় দাদাবাবুরা।
আপনি হিন্দুদের সম্পর্কে যে বই পড়েছেন সেই বইয়ের লেখক হিন্দু ছিলেন না।
আগের পরের পর্বগুলির লিঙ্ক দিয়ে দিন তলায়।
@জুজ,
খুব ভাল প্রস্তাব।
আচ্ছা, লিঙ্ক কেমন করে দিতে হয় একটু জানাবেন কী?
@আবুল কাশেম,
আপাতত লিংকগুলো দিয়ে দেই, একসাথে ডাউনলোড করে নিতে সুবিধে হবে। পরে বলবো কীভাবে দিতে হয়-
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—১)
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—২)
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—৩)
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—৪)
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—৫)
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—৬)
ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—৭)
@আকাশ মালিক,
লিংকগুলো মূল লেখায় যোগ করে দিলাম। ধন্যবাদ সবগুলো একজায়গায় করে কাজটি সহজ করে দেয়ার জন্য।
শারিয়া আইনগুলির বিস্তারিত ক্রমশঃ জানা যাচ্ছে। সমস্ত কিছু জেনে শুনেও কেউ যখন শারিয়া আইনের পক্ষ অবলম্বন করে তখন ব্যাপারটা খুবই দুঃখজনক হয়। আচ্ছা শারিয়া আইনগুলো কি শুধু মেয়েদেরকে লক্ষ্য করে প্রনয়ন করা হয়েছিল? পৃথিবীতে এত হাজার ধরনের সমস্যা থাকতে শুধু মহিলাদের ব্যাপারে ইসলামের এত অবসেশন কেন? পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়….
@ব্রাইট স্মাইল্,
না, শারিয়া আইন কর করা হয়েছে পুরুষদের স্বার্থে। শারিয়া আইনে মেয়েদেরকে দাসী এবং জন্তুতে পরিনত করার এক বিশাল অস্ত্র।
ইসলাম নারীদের সবচেয়ে বেশি অপমান করে।
শরীয়া আইনগুলির মূল পৃষ্ঠা স্ক্যান করে দিতে পারলে ভাল হয়।
@আদিল মাহমুদ,
scan করে এই ফাইলের সাথে জুড়ে দেওয়া কষ্টসাধ্য। কেমন করে তা করতে হয় মুক্তমনা word press দিয়ে তা আমি জানিনা। তবে English transacript কেউ চাইলে দেওয়া যেতে পারে।
উমদাত আল সালিক কিনতে পারা যায়। আমি কিনেছিলাম Amazon থেকে। বইটার দাম বেশ উঁচু। তবে যে কেউ ইসলামের গভীরে যেতে চান তার জন্য এই বই অপরিহার্য্য।
দেখুন:
al-Misri, Ahmed ibn Naqib. Reliance of the Traveller (‘Umdat al-Salik), revised edition. Translated by Nuh Ha Mim Keller. Amana Publications, Bettsville, Maryland, 1999.
হানাফি হেদায়েত বইটা দিল্লির কিতাব ভবন থেকে কেনা যেতে পারে।
দেখুনঃ
Hamilton, Charles. Hedaya. Translated in English in 1870 from the Persian version. Reprinted by Kitab Bhavan, 1784 Kalan Mahal, Daraya Ganj, New Delhi, 1994.
আর মালিকের মুয়াত্তা অন লাইন পড়া যেতে পারে।
এই রচনার শেষ পর্বে সমস্ত রেফারেন্স দেওয়া হবে। একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে।
@আবুল কাশেম,
ব্যাপারটি আসলে বেশ সহজ। যেখান থেকে লেখা পোস্ট করেন সেখানে ছবি যোগ করার অপশন আছে। তাও সমস্যা হলে আপনি ছবিগুলো মেইল করে দিতে পারেন,লেখায় যোগ করে দেয়া হবে।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ঠিক আছে ।
আপনি আমাকে আপনার ই-মেল দিন; আমি scan করা কপি আপনাকে মেইল করে দিব। তারপর আপনি তা জুড়ে দিতে পারবেন।
আধুনিক কম্পুটারে আমার জ্ঞান প্রায় শুণ্যের কোঠায়। সে জন্য আমি লজ্জিত। যে সব কাজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্ররা পারে আমি তা পারি না–এ কি লজ্জার কথা!
@আবুল কাশেম,
[email protected] এই ঠিকানায় মেইল করে দিন।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
পাঠিয়ে দিলাম।
@আবুল কাশেম,
আপনার পাঠানো ছবিগুলো মুক্তমনার সার্ভারে আপলোড করে দিলাম। আকার কিছুটা বড় বলে পোস্টের সাথে ছবি দিলামনা। লেখার একদম শুরুতে ডাউনলোড লিংক দিয়ে দিয়েছি। একটু চেক করে বলেন ঠিক আছে নাকি। যদি বলেন লেখার অন্য কোথাও যোগ করলে ভালো হয়,সেটাই হবে।
@আদিল মাহমুদ,
Scan করা উমাদাত আল সালিকের সংশ্লিষ্ঠ পৃঃ গুলোর কপির লিংক দেওয়া হয়েছে রচনার উপরে। আপনি ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
মাঝে মাঝে খবরের কাগজে দেখি একসাথে অনেক মুসলিম মহিলা রাস্তায় সমাবেশ করছেন। সেটা দেখে খুব ভাললাগে, কিন্তু তাদের হাতে ধরা ব্যানারে যখন দেখি লেখা আছে হিজাব ইস মাই চয়েস, ইত্যাদি তখন ভাবি ধুর!………