(সবগুলো বৈশাখ আমার হাত থেকে চঞ্চল ছোট পাখী হয়ে উড়ে পালায়। এই প্রথমবার একটু সময়ের জন্যে ওকে ধরে রাখলাম আমার নিজের আর আপনাদের সবার জন্য)
প্যাঁ পোঁ ড্যাবা ড্যাব ড্যাব ড্যাব শব্দ শুনলেই বুঝে যেতাম মেলার জন্য মাঠ সেজে গেছে। পেটের ভেতর প্রজাপতির ফড়ফড় আর শিশুপ্রানের ছটফটানি দুটার প্রবল তোড়ে চড়ুই পাখী হয়ে দু তিন ছুটে পৌঁছে যেতাম মাঠে। বিশাল ধুপখোলা মাঠ। মাঠে বসেছে মেলা। দূর দুরান্ত থেকে গ্রাম নদী পার হয়ে আসা অচেনা সব মানুষগুলো হরেক রকম অস্থায়ী দোকান রকমারি জিনিষপত্রে ভরতি করে বসেছে। কোনো কোনো দোকানে খুঁটি গেড়ে রোদ ঠেকাতে চাঁদোয়ার মত টাঙানো। কোনোটায় শুধু চিকন দড়ি দিয়ে সীমানা টানা, কোনোটা আবার ধুলায় দাগ টেনেই একদিনের দখলে। সবগুলো মিলে যে কত খেলনা, কত রঙের পুতুল, বাঁশের বাঁশি, টিনের বাঁশি, স্প্রিং লাগানো ঘাড় দোলানো হুক্কা বুড়া, ড্যাব ড্যাবা গাড়ী, মাটির ঘর, কাঠের ঘোড়া, টিনের ব্যাঙ, মাটির পাখি, মাটির মাছ, কেরসিনের ভটভটি বোট, গুলতি, মেয়েদের জোলাবাতি খেলার মাটির ছোট্ট চুলা, থালা, বাটি, জগ, হাঁড়ি পাতিল, ঝুনঝুনি; দোকান ভরতি, মন প্রান চোখ ভরতি, আনন্দ আর আনন্দ। মজা আর মজা। ভরপুর আনন্দসকাল শুরু হোত এমনি করে ফি বছর। শুরু হোত মেলা। এখন যা বৈশাখী মেলা হয়েছে তা আগে ছিল শুধুই মেলা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগের অ্যাঁর পরের কয়েকটা বছর মেলার এই ছিল চিত্র। পয়লা বৈশাখে মেলার সকাল এইরকমই ছিল পুরনো ঢাকার পূর্বপ্রান্ত গেন্ডারিয়ায়।
ছোটরা মানে আমরা, সকাল বেলার প্রথম চক্করে পুরো মাঠের মেলা আয়োজন মনে গেঁথে ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে ফিরে যেতাম যার যার ঘরে। এরপর শুরু হোত প্রথম দফার ফান্ড কালেকশনের কসরত। বিরক্তিকর ঘন্টা খানেকের অনবরত প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে পিচ্চিদের কপালে জুটত দুই, পাঁচ বা দশ টাকা। অনেক, অন-নেক টাকা তখন ওটা। প্রচুর কিনেও শেষ হতনা। ভালছেলে ভালছেলে ভাব ধরে হঠাৎ ঘর থেকে ফুড়ুৎ অদৃশ্য, পলক পড়ার আগেই মেলা মাঠে হাজির। অল্প কিছু পকেটে রেখে না রেখে দ্রুতবেগে সবচেয়ে প্রিয় খেলনাগুলো কেনা শেষ করেই ঘরে এসে এবার কষ্টের দ্বিতীয় দফার ফান্ড জোগাড়ের ব্যাবস্থা। মাটির ব্যাংক আর কালেকশন, মিলে ঝুলে হয়ত আবার অনূর্ধ্ব দশ। খাবার সময় নাই। এদিক সেদিক তাকাবার সময় নাই। সন্ধ্যা লাগলেই ছুটির ঘণ্টা। এক দিনের পূর্ণ স্বাধীনতা শেষ। মেলা শেষ হয়ে যাবে অন্ধকার হলে। ছোটদের অন্ধকারে বেরোবার অনুমতি নাই। কাজেই, সময় নাই, একটুখানি সময়ও নাই। দ্রুত টাকা জোগাড়ে অনর্গল ঘ্যানঘ্যানানি নামক ব্রহ্মাস্ত্রের অপার ব্যাবহার এবং ফললাভ; মানে ধনলাভ। পয়সা হলেই আবার দৌড়। যাবার পথে পডুয়া ভ্যান্দা ফয়েয, সেলিম বা মহসিনের কি কিনলি, কেমন মজা হচ্ছে ইত্যাদির উত্তর দিতে দিতে দ্রুতছুট মাঠের দিকে। বাসার কড়াকড়িতে ফয়েযরা যেতে পারত না। শুধু পড়াই ছিল ওদের কাজ। দ্রুতছুট, বন্ধুরা অপেক্ষায়। দেরী হলে এসু, টাকিবাবু, বাঙ্গি শহীদ, কালাবাবলা, সামুন, বাবুসোনা, ছটা, অপু, খোকন, কাজল, বলদাবাবু, আনোয়ার, আলী, শামিম, শাহীন, গৌতম, গান্ধীখোকন, আসলাম, মাহবুব, সবার কাছে জবাব দিতে হবে, সুতরাং দেরী চলবে না, দৌড় দৌড় ছুট। এবার টার্গেট নাগরদোলা, রিং ছোড়া, এয়ারগানে বেলুন ফাটানো, লটারি ধরনের নিষিদ্ধ সব খেলাগুলো খেলা, বিকালের দিকে ক্যানভাসার যাদুকরের যাদু বা ম্যাজিক দেখা, বানর নাচ, মোরগ ফাইট, সাপ খেলা, আহ সময় কই, সময় নাই, চলো চলো, তাড়াতাড়ি, তাড়াতাড়ি। হাত ছিলেছে, পা কেটেছে, বোতাম ছিঁড়েছে, ধাক্কা লেগেছে, তাকাবার সময় তো নাই, অন্ধকারের আগে এত কাজ, এত মজা; উফ, তাকাবার সময় যে নাই।
খাবার দোকানগুলো ছিল দারুণ মজার। মুড়ি মুড়কি, খৈ, বরফি, মিষ্টি মুড়কি, নিমকি, মিঠা খৈ, শুখনা পিঠা, রোদে শুখানো চালের পিঠা, ছোট বড় বাতাসা, বস্তা বস্তায়, সাদা, জাফরান, লাল কত রঙে যে থরে থরে সাজিয়ে বিক্রি হত তার কোন শেষ নাই। ঝাল, মিষ্টি, নোনতা কি চাই। খাবার যায়গায় ছোটরা যেত কম, ওখানেই শুধু গম্ভীর বড়রা কিনতে যেত। মেলায় বড়দের প্রতীকী উপস্থিতি। সংস্কৃতির টানে কম বয়েসিদের আনন্দানুষ্ঠানে বড়দের সক্রিয় অংশগ্রহণ আর মৌন সমর্থন।
নাগর দোলার তীব্র চ্যাঁ চ্যাঁ চ্যাঁও শব্দ আর ওটার উঠা নামার সময়কার তলপেট খালি হয়ে যাবার তীব্র আনন্দনুভুতি স্বাদ না নিলে অপেক্ষা করতে হত শীতের সার্কাসের সময় পর্যন্ত। অনেক দূর সময়। আমাদের সব রোমাঞ্চ এখনি চাই। সময় নাই। তাড়াতাড়ি তাড়াতাড়ি। মজা ছাড়ার উপায় যে নাই। সন্ধ্যা হলেই সব শেষ। তাকাবার সময় যে নাই।
মেয়েদের খেলার জিনিষেরও কোন অন্ত নাই। আলতা, চিরুনি, পুঁতির মালা, আয়না, জরি, মাটির হাঁড়িপাতিল, কাঠের চামচ, পুঁতি আর প্লাস্টিকের নানান রঙিন গহনা, পুতুল আরও যে কত কি মাথা খারাপ করা সব জিনিষ তার কোন ইয়ত্তা নাই। লীনা, বুড়ী, অতসী, লাকি, বেলা, শিরীন, পারভিন, রোখসানাদের; শিউলি, মুকুল, ফানি আর মিতাদের প্রিয় আইটেম ছিল ওগুলো। মেয়েদের সাথে আমাদের সারাক্ষন ঝগড়া। ওরা আমাদের খেলায় নিত না; ওদের খেলনা ভাঙ্গার অপরাধে। আমরাও নিতাম না ওদের নানান বারনের ঝক্কির কারনে। তবে মাঝে সাঝে ওদের মাটির হাঁড়িপাতিলে যখন মেয়েরা খেলনা খাবার রাঁধতো, তখন আবার আমাদের না হলে চলত না। রান্না চেখে রায় দিতে ওরা আমাদেরকে ব্যাবহার করত, নিজেদের রায় মানত না। মেলায় ওদের বিচ্ছিন্ন ভাবে বাবা কিংবা গোমড়ামুখো বড় ভাইদের সাথে দেখা যেত। আমরা ভেংচি কাটলে ওরা চিমটি কাটতো। আহা কি মধুর সেই ছোট্ট বেলা। কি রঙিন সুন্দর।
মেলা শেষ হবার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যেত সন্ধ্যা থেকেই। হ্যাজাকবাতি জ্বেলে খাবার দোকানগুলো খোলা থাকলেও মজার সব দোকান বন্ধ হওয়া শুরু হয়ে যেত। বড় রাস্তাগুলো ধরে সবাই ফিরত ঘরে। বিচিত্র সব ট্যাঁ পোঁ ভ্যা ভোঁ ভট ভট ঢ্যাপ ঢ্যাপ শব্দে মুখর হয়ে যেত রাস্তাগুলো। আস্তে আস্তে কমে আসতো ঐ সব মধুর রোমাঞ্চকর উত্তেজনাময় শব্দগুলো, মন খারাপ হয়ে পড়ত। মেলা শেষ হয়ে যেত অন্ধকারে। তারপর অধীর আগ্রহে আরও একটা বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা।
কেন যেন মনে হচ্ছে লেখক আর আমার বয়স প্রায় এক। একটিই কারণ- স্মৃতিগুলো প্রায় মিলে যায়। বাংলার যে জেলায়ই জন্ম হোক, এই ঘটনাগুলো প্র্রায় সবারই এক। এসব ঘটনার সমসাময়িকতাই আমাদেরকে বন্ধু করে তুলে, এবং স্বদেশ সংস্কৃতি রক্ষায় একাত্ম করে তুলে। এবং এমন বন্ধুই পারে সময়ের বিপ্লবকে এগিয়ে নিতে। সময়ের বিপ্লব কী? সাংস্কৃতিক মেরুকরণকে রুখে দেওয়া।
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
অল্প সময়ে দ্রুত বদলে যাবার উল্লেখযোগ্য কথাগুলো আপনিও লিখুন।
ভালো থাকুন।
গেন্ডারিয়ায় বড় হয়েছি। হাইস্কুলের পিছে,দীন নাথ সেন রোডে বাড়ি। জিবনের তিরিশটা বছড় গেন্ডারিয়ায় কাটিয়েছি। অনেক সৃতি আছে গেন্ডারিয়াকে জড়িয়ে, ধুপখোলার মেলাকে জড়িয়ে।
@কাজী রহমান ,আপনার লেখাটি পড়ে ভাললাগল। আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর লেখাটির জন্য।
@Mr. G,
গেণ্ডারিয়ার কাউকে পেলে ভীষণ ভালো লাগে। প্রতিটা অলিগলিতে হেঁটেছি, অসংখ্য বাড়ির গাছে কিংবা ছাদে উঠেছি ঘুড্ডি পাড়তে কিংবা শুধু শুধু। সবার ছোট বেলার স্মৃতিই মধুময় নয়, তবে আমারটাতে কোন সন্দেহ নেই। আগে গেণ্ডারিয়ায় প্রায় সবাই সবাইকে চিনত। জিজ্ঞেস করত কোন বাড়ির ছেলে কিংবা মেয়ে। হয়ত আরও দু একটা মামুলি প্রশ্ন, ব্যাস চেনা হয়ে গেল। এখন তা হবার নয়, অগনিত মানুষের ভিড়ে তা হবার নয়।
ভালো লাগা জানাবার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন। 🙂
@কাজী রহমান,
চমৎকার সাবলীল লেখা। শৈশবের সোনালী রোদ্দুর কি আনায়াসেই না অক্ষরে ফুঁটিয়ে তুলেছেন! শাব্বাশ! (Y)
—
ও মা! পিচ্চি গ্রুপ দেখি রীতিমতো সন্ত্রাসী বাহিনী! :lotpot:
@বিপ্লব রহমান,
বেশীর ভাগ পিচ্চিদেরই টাইটেল ছিল। এখনো নাম মনে না থাকলে টাইটেল বললেই চিনে ফেলা যায়। হ্যাঁ গ্রুপটা বেশ বড় ছিল। কোন এক অদৃশ্য সংকেতে যে কোন বড় ঘটনায় সবাই একসাথে জড় হয়ে যেত। বড়দের ক্ষেত্রও এমনি হত। মুক্তিযুদ্ধের সময় বড়রা রাস্তার মোড়ে মোড়ে জমায়েত হোতো কার্ফু বিরতিতে।
আপনার মন্তব্য দেখে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ। :))
লেখাটা পড়ে মন খুব আচ্ছন্ন হয়ে গেল। ধূপখোলার মাঠে বৈশাখী মেলায় যাওয়ার উত্তেজনা, এখনো, এত বছর পর চোখ বন্ধ করলেই চোখের ভেতরে ভেসে ওঠে।
গেন্ডারিয়া স্কুলের মোড় থেকে দীননাথ সেন রোড, রিকসা চলছে না, পায়ে হেঁটে যেতে হচ্ছে, সেই পায়ে হেঁটে যাওয়ার সুখটাও যেন ছিল দুর্লভ।
মুক্তিসন? বুঝিনি।
সেলিম? দীননাথ সেন রোডে থাকতো কি? কিছু মনে করবেন না। এ নামে কত মানুষই তো আছে। তবুও………….
@স্বপন মাঝি,
মুক্তিসন স্বাধীনতার বছর। এই সার্চ লিঙ্কটা গুগুল করে দেখুনঃ
আপনি কি গেন্ডারিয়ার?
@কাজী রহমান,
আপনি তো খুব খারাপ মানুষ। আমার কথার জবাব তো দিলেনই না উল্টা প্রশ্ন কইরা বইলেন। যাউক, আমার প্রশ্নের উত্তর পাইলে, আপনের কথার জবাব দিমু।
ছোট্ট একখান কথাঃ লেখাটা আবারো পড্লাম, পড়তে পড়তে কত কিছু যে চোখের সমুদ্রে ভেসে এলো।
কাঠের পুলটা আর নেই।
দয়াগঞ্জের বাঁশের সেই সাঁকো আর নেই।
কত কিছু নেই।
কত কিছু এসে গেছে।
ভাল আর মন্দের পার্থক্যও যেন ইদানিং আর বুঝতে পারিনা।
@স্বপন মাঝি,
@স্বপন মাঝি,
সেলিম দীননাথ সেন রোডেরই ছেলে। স্বাধীনতার পরে দয়াগঞ্জের বাঁশের সাঁকো ছিল ঐ সিমেন্টের সাঁকো তৈরির সময়কার বিকল্প। ওখানে আগে ছিল আজকের ফুলবাড়িয়া টার্মিনাল যাবার রেললাইন। দয়াগঞ্জ রেললাইনের সমান্তরাল অন্য রেলসেতুটি এখনও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেললাইন। ৭১রে ঐ দুই সেতুর নিচে ধোলাই খালে মানুষের লাশ ভাসতে ভাসতে বুড়িগঙ্গায় গিয়ে পড়ত। কাঠের পুলও নাই, লোহার পুল নাই, ধোলাই খালও নাই। অনেক কিছুই নাই, আছে শুধু স্মৃতি।
ভাল লাগল!
গ্রামের একটা মেলার কথা মনে আছে।
নাপাই চন্ডির মেলা!
আব্বা আর বোনের সাথে গিয়েছিলাম।
অল্প অল্প মনে পরে, বাতাসা আর গুড়ের হাতী ঘোড়ার কথা!
নাগরদোলা এখনও আমার প্রিয়!
মেয়েবেলার কথা মনে করিয়ে দিলেন!:-)
@লাইজু নাহার,
এইতো আমারো চিনির ঘোড়া, চিনির কুমির, চিনির ডিম ছাতা পাঁচকোনাই তারা আর যেন কি কি সব মনে করিয়ে দিলেন। ওগুলোতে আবার লাল গোলাপি নানা রঙের পোঁচ দেয়া থাকতো। মেলায় উঠতো।
কাজী রহমান,
ধুলো-মাটির ছোট্টবেলাটা মনে করিয়ে দিলেনতো! কিন্তু উপায় কি, ওখানে তো আর ফেরার পথ নেই! ইচ্ছে যখন প্রবল হয় তখন ঐ শৈশবের মতোই একছুটে চলেযেতে ইচ্ছে করে, কিন্তু পেছনটা টেনে ধরে আমার নতুন প্রজন্মের শৈশব! এরা খুব গম্ভীর! এরা অন্তর্জালে অন্তরীক্ষে ছুটে বেড়ায় এতোটুকু ধুলোর স্পর্শ ছাড়াই! ভয়পাই, পাছে আমার আদিখ্যাতায় মুখ টিপে যদি হাসে!
@কেশব অধিকারী,
হাসুক ওরা, হাসুক না। আমাদের ছোটবেলা কেমন ছিল ওরা জানুক না। আমাদের ছানাপোনাদের তো অনেকটা জোর করেই ওসব গল্প শোনাই। মাঝে মাঝে খুব মনযোগ দিয়ে শোনে, প্রশ্ন করে; খুব ভালো লাগে তখন। মাঝে মাঝে পাত্তাই দেয় না। কি আর করা।
বৈশাখী মেলা আবারও সমাগত। এ সব লোকমেলায় এখনও আমি সুযোগ পেলেই ঘুরে বেড়াই। মাটির, বাঁশের খেলনা কিনি। তবে
@গীতা দাস,
পেছন ফিরে তাকালে এমনটাই মনে হয় যে। নস্টালজিয়া দিদি নস্টালজিয়া।