স্বাধীনতার ৪০ বছর পরেও বাংলাদেশে ভাষাগত সংখ্যালঘু ক্ষুদ্র জাতিসত্তাসমহ তথা আদিবাসীদের নিজ নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের দাবি উপেক্ষিত হয়েই আসছে। ফলে দেশের ৪৫টি আদিবাসী গোষ্ঠির ২০ লাখেরও বেশী মানুষ বংশপরম্পরায় ভুলতে বসেছেন নিজেস্ব ভাষার ঐতিহ্য, লোককথা, প্রবাদ-প্রবচন, সাহিত্যকীর্তি। এমন কি আদিবাসী শিশুর নিজ মাতৃভাষায় অক্ষরজ্ঞান না থাকায় তাদের সংস্কৃতিও হচ্ছে মারাত্নক ক্ষতিগ্রস্থ।
প্রয়োগিক ভাষা হিসেবে বাংলা ও ইংরেজী ভাষার আগ্রাসী থাবায় ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে আদিবাসীর নিজ নিজ ভাষার গৌরব।
দীর্ঘদিন পাহাড়ে, বনে-বাদাড়ে, আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলো ঘুরে জেনেছি, এ দেশে সাধারণভাবে শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে থাকা হত-দরিদ্র প্রধান প্রধান আদিবাসী গোষ্ঠিগুলোর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, রাখাইন, মনিপুরী, গারো, সাঁওতাল ও খাসিয়া) প্রত্যেকেই নিজেস্ব ভাষা ও নিজ ভাষার বর্ণলিপি অনেক সমৃদ্ধ । আবার কয়েকটি আদিবাসী গোষ্ঠির নিজেস্ব বর্ণমালা না থাকলেও তাদের রয়েছে রোমান বর্ণমালায় ভাষা চর্চার ঐতিহ্য। কিন্তু চর্চার অভাবে এ সব বর্ণমালার সবই এখন বিলুপ্ত প্রায়।
এরফলে নতুন প্রজন্মের আদিবাসীরা নিজ ভাষায় কথা বলতে পারলেও নিজেস্ব ভাষায় তারা একেবারে প্রায় অজ্ঞ। অথচ মাত্র চার দশক আগেও পরিস্থিতি এতোটা বিপন্ন ছিলো না। তখন নিজ মাতৃভাষা লিখিত চর্চার পাশাপাশি নিজস্ব উদ্যোগে শিশুশিক্ষায় ভাষাটির বর্ণপরচিয়ও চলতো।
চাকমা রাজা ব্যরিস্টার দেবাশীষ রায় আলাপকালে বলেন, অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, সারাদেশের শিশু শিক্ষার ক্ষেত্রে আদিবাসী শিশুর ঝরে পড়ার হার অনেক বেশী। এর একটি কারণ– ভাষাগত বাধা। আদিবাসী শিশু বাসায় যে ভাষায় কথা বলছে, স্কুলে সে ভাষায় লেখাপড়া করছে না। বাংলা বুঝতে না পারার কারণে শিশুমনে পাঠ্যবই কোনো দাগ কাটছে না, স্কুলের পাঠ গ্রহণ করাও তার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। …তাই আমরা অন্তত প্রাথমিক শিক্ষায় আদিবাসী শিশুর মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের দাবি জানিয়ে আসছি। আমরা চাই, মাতৃভাষায় বর্ণপরিচয়, ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট-খাট অংক, নিজ জাতির ও বাংলাদেশের ইতিহাস শিক্ষার পাশাপাশি যেনো আদিবাসী শিশু বাংলাতেও অন্যান্য পাঠগ্রহণ করতে পারে। এটি শিশুর মনোস্তাত্ত্বিক বিকাশের জন্যও জরুরি।
দেবাশীষ রায় খানিকটা দুঃখ করেই বলেন, চার-পাঁচ দশক আগেও আদিবাসী ভাষা চর্চার এতোটা বেহাল দশা ছিলো না।…আমি ছোট-বেলায় দেখেছি, পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক গুরুজনই চাকমা ভাষায় নিজেদের মধ্যে চিঠিপত্র লেখালেখি করতেন। মারমা ভাষাতেও সে সময় লিখিতভাবে ব্যক্তিগত ভাববিনিময় ও লেখালেখি চলতো। কিন্তু প্রতিযোগিতার যুগে এখন ওই চর্চাটুকুর সবই হারিয়ে গেছে।…
বলা ভালো, আদিবাসীদের মধ্যে চাকমারা একটি বড় অংশ। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, তিন পার্বত্য জেলায় প্রায় সাড়ে চার লাখ চাকমা বাস করে। চাকমাদের মধ্যে শিক্ষিত শ্রেণীর মানুষ নিজেদের ভাষা ও বর্ণমালা তেমন একটা ব্যবহার করেন না। এমনকি চাকমা ভাষায় যারা সাহিত্য চর্চা করেন, তারাও চাকমা বর্ণমালা ব্যবহার না করে কবিতা, প্রবন্ধ, নাটক বাংলা বর্ণে লেখেন।…
পাহাড়ে চাকমা ভাষায় দুটি পত্রিকা বের হয়। একটি মাসিক, নাম আবাংপাঙ। মাঝেমধ্যে জুনিপহ্র নামে একটি সাহিত্য পত্রিকাও বের হয়। কিন্তু পত্রিকা দুটি বাংলা বর্ণমালায় ছাপা হয়। আবাংপাঙ-এর সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা বলেন, চাকমা বর্ণমালায় পত্রিকা বের করলে পড়ার কেউ নেই।
১৯৯৭ সালে সরকারের সঙ্গে পার্বত্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে জনসংহতি সমিতি। আঞ্চলিক দলটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক মঙ্গল কুমার চাকমা বলেন, ব্যবহারিক ক্ষেত্র যদি তৈরি করা না যায়, তাহলে সে ভাষা মানুষ শিখবে কেন? এর জন্য দরকার সরকারি উদ্যোগে আদিবাসীদের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা।…
এ অবস্থায় আদিবাসীরা বিপন্ন নিজ মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার স্বার্থে নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে দেশের আনাচে-কানাচে গড়ে তুলেছেন বর্ণমালা শিক্ষার স্কুল। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের এ সব স্কুলে আদিবাসী ভাষার সঙ্গে পরিচিতি দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেস্ব সংস্কৃতি ও জীবনাচারও শিক্ষা দেওয়া হয়।
আদিবাসী নেতা রবীন্দ্রনাথ সরেণ জানান, উত্তরবঙ্গে সাঁওতালরা বছর দশেক আগে কয়েকটি বেসরকারি সাহায্য সংস্থার উদ্যোগে নিজেরাই খুলেছেন পাঁচটি ভাষা শিক্ষার স্কুল। কোনোরকম সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই এসব স্কুলে তারা তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত সাঁওতাল ভাষায় পাঠদান করেন। রাজশাহীর পবা ও তানোরে শিক্ষিত সাঁওতাল যুবকরা নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমে প্রথমে খোলেন এ রকম দুটি স্কুল। বই-পত্রের অভাবে তারা নিজেরাই লেখেন বর্নপরিচয় মূলক পাঠ্যবই। …পরে কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা– এনজিও এই কাজে তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে।
পাহাড়ের ছোট কাগজ ‘মাওরুম’ এর সম্পাদক দীপায়ন খীসা জানান, ১৩ টি পাহাড়ি জাতিসত্তার নিস্বর্গভূমি পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটিসহ কয়েকটি অঞ্চলেও রয়েছে এ রকম বেসরকারি উদ্যোগ। সেখানে অবশ্য বৌদ্ধ মন্দিরে (কিয়াং) বৌদ্ধ পুরহিতরাই (ভান্তে) নিজ উদ্যোগে প্রধাণত চাকমা ও মারমা বর্ণমালা শিক্ষা দিয়ে থাকেন। তবে বর্ণমালার বইয়ের দুস্প্রাপ্যতা¯এ ক্ষেত্রে একটি প্রধান বাধা।
এই বাধা কাটিয়ে উঠতে কিছুদিন আগে ‘শিপচরণ সাহিত্য কেন্দ্র’ প্রকাশ করেছে চাকমা বর্ণমালার বই ‘ফুজি পর’ বা ভোরের আলো। এই বইয়ে পাহাড়ের প্রকৃতি ও পাহাড়িদের জীবনযাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত রঙিন হাতে আঁকা ছবি এবং বর্ণমালা সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি খাগড়াছড়ির দিঘীনালার আমতলীর শান্তিপ্রিয় দেওয়ানসহ আরো কয়েকজনের উদ্যোগে প্রকাশিত হয়েছে চাকমা ভাষার বর্ণমালার পরিচিতিমূলক পোস্টারও প্রকাশিত হয়েছে। সীমিত আকারে হলেও উন্নয়ন সংস্থা ‘ব্রাক’ আদিবাসীদের প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি আদিবাসীদের মাতৃভাষায় শিশু শিক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে। ব্রাকের প্রতিষ্ঠিত স্কুলে তাদের লেখা আদিবাসী বর্ণপরিচয়ের বইপত্র পড়ানো হচ্ছে।
পাহাড়িদের চৈত্র সংক্রান্তি এবং বর্ষবরণ উৎসব বৈসুক, সাংগ্রাই, বিঝু ও বিষুর আগে প্রতিবছর জুম এস্থেটিক কাউন্সিল– জাকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অনেক বছর ধরে সংকলন, সাময়ীকি, ক্যালেন্ডার ইত্যাদি প্রকাশ করে আসছে। এসব প্রকাশনায় আদিবাসী বর্ণমালা ঠাঁই না পেলেও বাংলা বর্ণমালাতেই চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা ভাষার সাহিত্য স্থান করে নেয়।
অন্যদিকে রাখাইন স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন অব বাংলাদেশ– আরএসওবি’র সাবেক সভানেত্রী কচিন ঠে জানান, আটের দশকে সরকারি উদ্যোগে কক্সবাজার, বরিশাল, পটুয়াখালি ও বরগুনার রাখাইন অধ্যুষিত অঞ্চলে ১৭ টি রাখাইন ভাষা শিক্ষার প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা হলেও এখন মাত্র ছয়-সাতটি বিদ্যালয় কোনো রকমে টিকে আছে।
তিনি জানান, সে সব বিদ্যালয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত রাখাইন ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষাদান ও শিক্ষকের বেতন দেয়ার ব্যবস্থা করা হলেও অল্প কয়েক বছরের মধ্যে সরকারি উদাসীনতায় পুরো উদ্যোগটিই প্রায় ভেস্তে যায়।…
[পুনর্লিখিত]
—
ছবি: ১। চাকমা বর্ণমালা, লেখক, ইউকিপিডিয়া।
২। পাহাড়ে আদিবাসী স্কুল, মেঘনা গুহ ঠাকুরতা।
—
আরো পড়ুন: ফেসবুক গ্রুপ ‘পাহাড়ের রূদ্ধকণ্ঠ CHT Voice’ এর নোটসমূহ।
সব শেষে আমি এলাম। বড্ড দেরী করে কেননা বইমেলায় বিল্পব রহমানের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে :)) পা ব্যথা হয়ে গেলো উনি এলেন না। অগত্যা 🙁
এই লেখা নিয়ে অনেক কিছু বলার ছিল। কেবল বলছি বাংলাদেশেও চলছে পাকিস্তানি ‘হিটলারি”
এই হচ্ছে মুক্ত দেশ আমাদের বাংলাদেশ। বা ! (&) এরা অনেক ভালো প্রজাতি।
তবু লিখে যান যদি কারো বোধোদয় হয়। আপনাকে (C) (F)
@আফরোজা আলম,
ব্রেকিং নিউজ: কাজের চাপে পিষ্ট হয়ে সাংবাদিক নিহত। 😉
—
সঙ্গে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ। চলুক। 🙂
আপনার লেখা ডিঙিয়ে মন্তব্যের উত্তর করেছি দেখে পাছে ভুল না বুঝেন, আমি কিন্তু আপনার লেখাটি পড়েছি, শেয়ারও করেছি। গর্ব করে বলি, ওই দেখেন সবাই যখন আত্মগরিমায় ব্যস্ত, মুক্তমনা ঠিকই নিপীড়িতের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা লেখাটার জন্যে।
@রূপম (ধ্রুব),
কস্কী মমিন? 😛
একদিকে চলছে মহান “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” উৎসব। উৎসবের প্রবল স্রোতে ভেসে যাচ্ছে দেশপ্রেমিক-ভাষাপ্রেমিক বাঙালী সম্প্রদায়। আর ঠিক সে সময় মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার দাবিতে আন্দোলনরত পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে গ্রেফতার করা হয়েছে সাধারণ ছাত্রদের।
http://www.amadershomoy1.com/content/2011/02/21/news0038.htm
এ হলো নিজ দেশে অন্যান্য ভাষা-ভাষী জনগোষ্ঠীর জন্য একুশে-র উপহার।
এমন একটা উৎসবের দিনে বিপ্লব কি-না দুধের হাড়িতে…..।
এ ধরণের লেখা, মতামত চলুক, চলতে থাকুক…..
@স্বপন মাঝি,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। (Y)
মাতৃভাষা অর্জনের জন্য আমাদের “আদিবাসী” -“উপজাতি’- ক্ষুদ্রনৃ-গোষ্ঠীর মতো ট্যাগগুলোর বিরুদ্ধে আগে সংগ্রাম করতে হবে । আমরা বিশেষক্ষেত্রে আদিবাসী -বিশ্ব পরিসরে আমরা যারযার জাতি পরিচয়ে স্বীকৃত হতে চায় । আমি জাতিতে ‘চাকমা” -আমি কেন “আদিবাসী” কিংবা “উপজাতি” পরিচয় দিতে যাবো ? আমরা সংখ্যায় কম হতে পারি কিন্তু আমাদের স্বঃস্বঃ আলাদা বৈচিত্র্য যা একজাতিতে বিদ্যমান তাই আছে । তাহলে, আমি কেন জাতি পরিচয়ে স্বীকৃতি পাবো না ? আমাদেরকে কৌশলে ট্যাগ লাগানো হচ্ছে -কখনো “উপজাতি”, কখনো “আদিবাসী” আবার কখনো “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী” যা কিনা এক ঔপনিবেশীক চক্রান্তের হস্তক্ষেপ ।
“উপজাতি”র ট্যাগে বলা হয় –উপজাতিদের আবার কিসের অধিকার ? “আদিবাসী”র ট্যাগে বলা হয় -যারা চোর, সন্ত্রাসী, যাযাবর তারা আবার আদিবাসী হয় কিভাবে (?) বরং উপজাতি বলাই শ্রেয় । আবার সরকারের নির্দেশ “আদিবাসী” কিংবা “উপজাতি” বলা যাবে না -বলতে হবে “ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী” যা নাকি নৃ-বিজ্ঞানের মতে যথার্থ । এসব ট্যাগ সবই ঔপনিবেশীক শাসকদের ষড়ষন্ত্রমূলক চক্রান্ত যাতে করে নিপীড়ন-নির্যাতন এবং এথনিক ক্লেন্সিং বাস্তবায়ন করা সহজ হয় । আমাদের নেতাদের এসব বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত । আমরা জাতির পরিচয়ে “মাতৃভাষার অধিকার” পেতে চায় ।
সবাইকে আমার আন্তরিক সংগ্রামী শুভেচ্ছা এবং কৃতজ্ঞতা । ভালো থাকবেন । আসুন সকলেই এই সংগ্রামে সামিল হই যে যেভাবে পারি । ধন্যবাদ ।
@অমিত হিল, সঙ্গে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা। (Y)
@অমিত হিল,
পুনশ্চ: বিনীতভাবে বলছি, আমার মনে হয়, আদিবাসী বিষয়ক আপনার ধারণা বেশ অষ্পষ্ট এবং বিভ্রান্তিকর।
[লিংক]
@ সবাই, পাঠ ও প্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ, কৃতঞ্ঝতা।!
—
সকল মাতৃভাষার জয় হোক! (Y)
কয়েকটি মতাদর্শের জন্য যদিও বিপ্লব দাদা’র সঙ্গে মিলে না তবু ও সামগ্রিক মুক্তিকামী মানুষদের স্বার্থে আমি পাশেই আসি । বিপ্লব দাদাকে ধন্যবাদ জানাই এমন এক সময়োপযোগী লেখা লেখার জন্য । আমি ধন্যবাদ জানাই সকল মন্তব্যকারিদের যারা ও আমার মতো করে ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তাদের মুক্তির স্বপ্ন দেখে থাকেন । আসলে মুক্তিকামী সকল মানুষেরা প্রায়ই আবেগের মধ্যে দিয়ে আনন্দ, আক্ষেপ এবং ক্রোধের সহীত সংগ্রামের ভাষা প্রকাশ করে যেমনটা ঘটেছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধে । আদৌ মুক্তিযুদ্ধের কথা কিংবা ভাষা আন্দোলনের কথা শুনলে মনের আবেগ এমনিতে বেড়ে যায় । অবহেলিত সেইসব জাতিস্বত্তাদের কেন বা হবে না যাদের নিজস্ব মাতৃভাষা থাকা স্বত্তেও পাঠ্য বইয়ে পড়তে হচ্ছে “বাঙালী আমার মাতৃভাষা” । তবু মাইকেল মধুসূদনের কবিতার বাণীর মতো করে পথ চলে স্বপ্ন দেখা ;
আনন্দ, আক্ষেপ, ক্রোধ যার আজ্ঞা মানে
অরণ্যে কুসুম ফোটে যার ইচ্ছা বলে :
নন্দন-কানন হতে যে সুজন আনে
পারিজাত কুসুমের রম্য পরিমলে :
@জয়েন্টু,
সঙ্গে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা। (Y)
খুব ভা্ল পোস্ট। অনেক নতুন তথ্য জানলাম।
আমি ভাবতেই পারিনা যে পাকিস্তানিরা আমাদের উপর যা করেছিল, আমরা তাই করছি আমাদে্র নিজেদের দেশের সংখ্যালঘুদের উপর।
মনে হচ্ছে জর্জ ওরওয়েল ঠিক লিখেছেন।
@আবুল কাশেম, (Y)
যার যার মায়ের ভাষা তার তার প্রাণের ভাষা।মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে চমৎকার একটি লেখা।ধন্যবাদ।
@তামান্না ঝুমু,
(Y)
সুমনের একটা গানের কথা মনে পড়ে গেলো …।
httpv://www.youtube.com/watch?v=Z6UJvlNezfM
আমি চাই
আমি চাই সাঁওতাল তার ভাষায় বলবে রাষ্ট্রপঞ্জি
আমি চাইব হুল ফুটবে সৌখিনতার গোলাপপুঞ্জে
আমি চাই নেপালি ছেলেটা গিটার হাতে
আমি চাই তার ভাষাতেই গাইতে আসবে কলকাতাতে
আমি চাই ঝাড়খন্ডের তীর ধনুকে
আমি চাই ঝুমুর বাজবে ঝুমুর বাজবে তোমার বুকে…।
@অভিজিৎ,
(Y) “বকুল ফুটবে” না?
@রৌরব,
হ্যা, ভুল হইসে –
আমি চাই বকুল ফুটবে সৌখিনতার গোলাপকুঞ্জে
ধন্যবাদ!
গানটা আবার শুনার পর অবশ্য বকুল এর বদলে চাইবো হুলই মনে হচ্ছে 🙁
কোনটা ঠিক কে জানে!
@অভিজিৎ,
আপনি ঠিকই শুনেছেন । ত্রিপুরার ভাষায় ‘হুল’ অর্থ ফুল। মুঘল ফার্সীতে যাকে ‘গুল'(আসল ফার্সী ‘গোল’) বলে। এই শব্দটার মূল প্রোটো ইন্দো-ইউরোপীয় বলে মনে করা হয়।
@অভিজিৎ,
আমি চাই সাঁওতাল তার ভাষায় বলবে রাষ্ট্রপুঞ্জে
আমি চাই মহুল ফুটবে শৌখিনতার গোলাপকুঞ্জে
আমি চাই নেপালি ছেলেটা গিটার হাতে
আমি চাই তার ভাষাতেই গাইতে আসবে কলকাতাতে
আমি চাই ঝাড়খন্ডির তীর-ধনুকে —
আমি চাই ঝুমুর বাজবে ঝুমুর বাজবে তোমার বুকে
আমি চাই গাছ কাটা হলে শোকসভা হবে বিধানসভায়
আমি চাই প্রতিবাদ হবে রক্তপলাশে রক্তজবায়
আমি চাই পুকুর বোজালে আকাশ ভাসবে চোখের জলে
আমি চাই সব্বাই যেন দিন বদলের গল্প বলে
আমি চাই মন্ত্রীরা প্রেম করুন সকলে নিয়ম করে
আমি চাই বক্তৃতা নয় কবিতা পড়ুন কন্ঠ ভরে
আমি চাই কাশ্মীরে আর শুনবে না কেউ গুলির শব্দ
আমি চাই মানুষের হাতে রাজনীতি হবে ভীষণ জব্দ
আমি চাই হিন্দু নেতার সালমা খাতুন পুত্রবধূ
আমি চাই ধর্ম বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু
যদি বল চাইছি নেহাত , চাইছি নে হাত স্বর্গরাজ্য
আমি চাই একদিন হবে , একদিন হবে এটাই গ্রাহ্য ।।
[img]http://i573.photobucket.com/albums/ss177/hemzy_m/7bhaba4.jpg[/img]
মহুল ফুল-
@আকাশ মালিক,
মনে হচ্ছে আপনিই ঠিক। মহুল ফুল বলে যে কিছু আছে, তাই জানা ছিলো না। অনেক অনেক ধন্যবাদ!
@আকাশ মালিক,
এটাকে তো মনে হয় বাংলায় ‘মহুয়া ফুল (Madhuca Longifolia ) বা মউল ফুল’ বলে যা দিয়ে সাঁওতালী উৎসবের সময় এক ধরনের সাঁওতালী মদ বানানো হয় ।
[img]http://www1.sulekha.com/mstore/sangeetadeepak/albums/default/new Pictures 047.jpg [/img]
[img]http://wowsumitra.com/blog/wp-content/uploads/2009/03/bandavgarh_mahuakothi_015-edtd.jpg [/img]
@সংশপ্তক,
মহুয়ার গান নামে ১৫ টি গানে সমৃদ্ধ নজরুলগীতির গ্রন্থে বোধ হয় একটি গান আছে-
মহুল গাছে ফুল ফুটেছে—
সম্ভবত সুন্দরবনের বুড়িগোয়ালিনী এলাকায় মহুল ফুলের গাছ পাওয়া যায়।
চৈতী হাওয়া- (নজরুল ইসলাম)
বইছে আবার চৈতী হাওয়া / গুমরে ওঠে মন
পেয়েছিলাম এমনি হাওয়ায় / তোমার পরশন।
তেমনি আবার মহুয়া-মৌ
মৌ্মাছিদের কৃষ্ণা-বউ
পান করে ঐ ঢুলছে নেশায় / দুলছে মহুল বন
ফুল-সৌ্খিন দখিন হাওয়ায় কানন উচাটন।
@ অভিজিৎ দা, @ সংশপ্তক @আকাশ মালিক,
সুমনের গানসহ ছবিগুলো ফেসবুকে শেয়ার করলাম। অনেক কৃতজ্ঞতা। (Y)
আপনার পোষ্ট পড়ে শুধু একটাই প্রশ্ন জাগে ২১শে ফেব্রুয়ারী রাত ১২:১টায় যারা সবার আগে শহীদ মিনারে ফুলের তোড়া প্রদান করে তাঁরা(সরকারের উচু মহল) কি ভাষাকেই শ্রদ্ধা করার নিমিত্তে নাকি জনগনকে দেখাতে?প্রথমটি হলে হয়ত এই হ্মুদ্র ভাষাভাষী মানুষের দাবীটুকু পূরন হত।
@বালির বাধ,
এ জন্য হয়তো আরো অনেক একুশ সৃষ্টি করতে হবে। …আশাকরি, সেই আন্দোলনে আপনিও সঙ্গী হবেন। অনেক ধন্যবাদ। (Y)
এই পোষ্টটা ২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে স্টিকি করে দেওয়া হোক।
অসাধারণ একটা পোস্ট। বিষয়টি নিয়ে আসলে অনেক বেশি ভাবা উচিত আমাদের। একটা জিনিস আমার মাথায় ঢোকে না, যারা বাঙালি জাতীয়তাবাদ নিয়ে কথা বলে, বাংলাদেশের সকল মানুষকে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তা গ্রহন করতে বলে, তারা কী একবারও আদিবাসীদের কথা চিন্তা করে না? একজন চাকমা অথবা মারমা কী করে বাঙালি জাতীয়তাবাদ গ্রহন করবে? একজন বাঙালি কী মুরং জাতীয়তাবাদ গ্রহন করবে? আবার বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের কথা বললে নাক সিটকায় এটা জিয়াউর রহমানের তত্ত্ব বলে! মুজিব অথবা জিয়া বুঝি না, বুঝি জাতীয়তাবাদ হতে হবে এমন যেখানে সকল জাতির সম্মিলিত কন্ঠস্বর থাকবে, অস্তিত্বের আত্মপ্রকাশ থাকবে, কাউকেই অপরেরটা বহন করতে হবে না। তাই জাতীয়তাবাদের প্রশ্নে আমি সবসময়ই রাষ্ট্রভিত্তিক জাতীয়তাবাদের পক্ষে। যদিও ব্যক্তিগত জীবন দর্শনে আমি জাতীয়তাবাদী না, বরং আন্তর্জাতিকতাবাদে আস্থাশীল।
আর গত দুইদিন যাবত মেজাজ খুব খারাপ। সময়ের অভাবে একটা পোস্ট দিতে পারছি না। এই ভাষার মাসেও চলছে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার উপর আগ্রাসন, অত্যাচার। নিচের লিঙ্কগুলো দেখুন-
উত্তপ্ত রাঙামাটি লংগদু, আদিবাসী গ্রামে আগুণ, জ্বলছে রাঙিপাড়া
লংগদুতে পাহাড়ি-বাঙালি সহিংসতা, ১৫টি বাড়িতে আগুন
আর কতদিন চলবে এসব, তাও এই ভাষা আন্দোলনের মাসে এগুলো শুনতে হচ্ছে। একজন বাঙালি হিসেবে লজ্জায় কুঁকড়ে যাওয়া ছাড়া তখন আর কিছুই করার থাকে না।
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী শেষে কুঙ্গ থাঙ নামের (ছদ্মনাম, তিনি একজন বাঙালি) ফেসবুকের একজন বন্ধুর স্ট্যাটাস ছিলো নিম্নরূপ-
“আজ রাষ্ট্র যে আদিবাসীদের নৃত্যগীতকে নিজের ‘বৈচিত্রময় সংস্কৃতি’র অংশ বলে প্রচার করলো, কালই হয়তো তাদের বসবাস ও চাষাবাসের জমি কেড়ে নেয়া হবে, ভিটাবাড়ি জুমক্ষেত পুড়িয়ে দেয়া হবে… জাতীয়তাবাদ আর ভুগোলের মালিকানার জোরে। জলপাই তত্ত্বাবধানে সাধিত এসব অসভ্য কাজকে নীরবে সমর্থন দিয়ে যায় সংখ্যাগুরু সংকীর্ন বাঙালি মনন, যা আধিপত্যবাদী সীমানার চৌহদ্দি পাড়ি দিতে চায় না বা পারে না “
ভাষা আন্দোলন নিয়ে আমার এই পোস্টটিতে আরো কিছু সংকীর্ণতার পরিচয় তুলে ধরা আছে, যা এই ফেব্রুয়ারির শুরুতে মুক্তমনায় পোস্ট হিসেবে দিয়েছিলাম।
@নিঃসঙ্গ বায়স,
কথাগুলোর প্রত্যেকটা কী যে অবিশ্বাস্যরকমের সত্যি! আমরা নিজেরা মুখে যে আদর্শের কথা বলি, যার জন্য জীবন দিতে দ্বিধা করিনা, অন্যদের ক্ষেত্রে ঠিক তার উল্টোটা করতে আমাদের একটুও লজ্জা লাগে না। এই দ্বিচারিতার শেষ কোথায় কে জানে!
@বন্যা দি, আবারো আপনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। 🙂
@নিঃসঙ্গ বায়স,
আপনার পাঠ প্রতিক্রিয়া পেয়ে ভালো লাগলো।
তবে কুঙ্গো থাঙ সম্পর্কিত আপনার তথ্য সঠিক নয়। তিনি একজন বিষ্ণুপ্রিয়া মনিপুরি, ক্ষুদ্রজাতিস্বত্ত্বার অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার, মনিপুরি পত্রিকা ‘ইথাক’ এর সম্পাদক। তিনি আমাদের ফেসবুক গ্রুপ পাহাড়ের রূদ্ধকণ্ঠ CHT Voice — এর নিয়মিত লেখক।
অনেক ধন্যবাদ। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
আসলে আমি তাকে অনুমান করেছিলাম। তাঁর একটা লেখা পড়ে আমার মনে হয়েছিলো তিনি বোধহয় পাভেল ভাই। কারণ, আমার একটা লেখায় আমি পাভেল ভাইয়ের বিষ্ণুপ্রিয়া মনিপুরি ভাষার আন্দোলন নিয়ে একটা লেখার থেকে অনেক তথ্য নিয়ে নিয়েছিলাম, যেটা সরাসরি সামু তে কুঙ্গ থাঙ এর ব্লগে পাইছি। এছাড়াও আরো কিছু বিষয় মিলিয়ে আমি মোটামুটি নিশ্চিত ছিলাম তিনি পাভেল ভাই হবে হয়তো। পাভেল পার্থ কেও আমি সরাসরি চিনি না, শুধুমাত্র ছাত্র ইউনিয়নের কারণে তাঁর কিছু লেখার সাথে পরিচয় হওয়ার সুযোগ হয়। আমার ভুল হতেও পারে। ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
@নিঃসঙ্গ বায়স, (Y)
কি ভয়ানক ব্যাপার! ৫২ এর ভাষা আন্দোলন নিয়ে আমাদের গর্বের কথা বলে কি লাভ, ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাত্রিক মাতৃভাষা করে কি লাভ যদি আমাদের দেশেই ওরা মাতৃভাষায় শিক্ষা না পেতে পারে?
ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এবং বেসরকারিভাবে হয়ত কাজ হচ্ছে কিন্তু সরকারের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা মনে হচ্ছে খুবই দরকার।
আমি নিজেকে ওদের অবস্থায় কল্পনা করে দেখলাম…ব্যাপারটা চিন্তা করেই দম আটকে আসছে আমার।
@লীনা রহমান, (Y)
এখন আমি ‘এনিমেল ফার্ম’ বইটা পড়ছি। অর্ধেকের বেশি পড়া শেষ। আপনার লেখাটা পড়ে আবার সেই ‘এনিমেল ফার্ম’ এর কথাই মনে আসল।
মানুষ সম অধিকারের আশায় যুদ্ধ করে, আর শান্তির সময় নিজেই অন্যের অধিকার মেরে খায়!!
“তোরা সব বাঙালি হইয়া যা” !!!
@তানভী, (Y)
সকল বাঙালী প্রোগ্রেসিভ সমাজের যারা বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তাদের অধিকারের জন্য লড়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি সম্মান রেখে আমার কিছু কথাঃ
এক মানব জীবন ফেলাম যার মধ্যে দিয়ে দূঃখ-সুখ সবকিছু উপভোগ করতে পারলাম । দূঃখ করে আর কি লাভ; বিলাপ বা কিজন্য করবো ? তবু ও মাঝেমাঝে মানুষ হিসেবে আবেগের জোড়ে দৌঁড়াতে হয় -এতে করে হয়ত কেউ ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে পিছন আঘাত করতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন, এবং পিছন আঘাত করেন ও; আর আমাকে অনেক সময় নিজের মনের হাসপাতালে ঠান্ডা অনুভুতির চিকিৎসা দিতে হয় । সরকার উদ্যেগ নেবে বলে আশা করা যাচ্ছে না, বরং বারবার ঠকানো হচ্ছে, যার মধ্যে দিয়ে পাহাড়ী জনসাধারণের বিশ্বাসগুলোকে আঘাতে জর্জরিত করা হচ্ছে । পাহাড়ের সবচেয়ে বড় বাজেট হচ্ছে সেনাবাহিনীর উত্তরণ এবং সমৃদ্ধকরণে; যাদের পদতলে দিশেহারা অসহায় পার্বত্যবাসীর পাহাড়ী জনসমাজ শিশু-কিশোর থেকে আবাল-বৃদ্ধ । বিচার কার কাছে চাওয়ার আছে ? আধিবাসী –উপজাতি –ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী -এসব ব্যবহারিক শব্দগুলো নিয়ে একটু অপরিষ্কার হয়ে আছি । সন্দেহ হচ্ছে এসব ব্যবহারির অর্থের মধ্যে কি কোন হীনমন্যতা লুকিয়ে আসে কিনা ?
@জয়েন্টু, আপনাকে কী বলবো বুঝতে পারছিনা। আমি লজ্জিত, আমি দুঃখিত, আমাদের দ্বিচারিতার কোন সীমা পরিসীমা নেই। এত দূরে বসে দুচারটা মুখের কথা হয়তো বলা যায়, কিন্তু আপনার যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন সে কথা ভাবলে জাতি হিসেবে মাথা নত হয়ে আসে।
তবে একটা কথা জিজ্ঞেস করি, আশা করি কিছু মনে করবেন না। ‘আদিবাসী’ কথাটা কী এতটাই আপত্তিকর? ‘উপজাতি’ কথাটা অত্যন্ত আপত্তিজনক, কিন্তু আদিবাসী কথাটাও কী ঠিক ততটাই আপত্তিকর? সারা পৃথিবীতেই তো কোন দেশের আদি নিবাসীদের বোঝাতে ‘আদিবাসী’ বা ‘নেটিভ’ কথা অত্যন্ত সম্মানজনকভাবে ব্যবহার করা হয়।
@ বন্যা দি, @ জয়েন্টু,
আপনাদের প্রতিক্রিয়া পেয়ে ভালো লাগলো। বাংলাদেশের ভাষাগত সংখ্যালঘুরা ‘উপজাতি’, ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি’, ‘ক্ষুদ্র জাতিস্বত্ত্বা’ ইত্যাদি অভিধা বর্জন করে অনেক আগেই নিজেদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে; এমনকি আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলনও গড়ে উঠেছে, আক্ষরিক অর্থেও আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে ভাষাগত সংখ্যালঘু প্রান্তিক জনগোষ্ঠিরাই আদি বাসিন্দা; তারাই সেখানে প্রথম বসতিস্থাপনকারী ভূমিজ সন্তান।
ইতিহাস স্বাক্ষী, প্রায় দেড়শ বছর আগের সাঁওতাল বিদ্রোহ, নাচোলের তেভাগা আন্দোলন, কোচ-মুণ্ডা বিদ্রোহ– ইত্যাদি রক্তক্ষয়ী আন্দোলনকে নিখিল ভারত কমিউনিস্ট পার্টি প্রথম ‘আদিবাসী বিদ্রোহ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে; সেই থেকে ভাষাগত সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠিসমূহ ‘আদিবাসী’ অভিধা জনপ্রিয়তা লাভ করে।
আদিবাসী বা ইন্ডিজেনাস -এর সঙ্গা ইউকিপিডিয়াতে এভাবে বলা হয়েছে:
[লিংক] (Y)
মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকারের মধ্যে যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্যই নিহিত তা ই তো আমরা অনেকে অনুধাবন করি না।
অনেকে বুঝি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস মানে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি।
ধন্যবাদ দিনোপযোগী ও মাসোপযোগী লেখাটির জন্য।
@গীতা দাস,
দারুণ একটা মন্তব্য করেছেন। গা জ্বলে যায় আমার। মাঝে মাঝে মনে হয় ভাষা আন্দোলনটা ব্যর্থ হয়েছে। অথবা গোড়ায় গলদ ছিল — আমাদের উদ্দেশ্য ছিল শুধু নিজেদের ভাষার প্রাপ্য সম্মান আদায় করা, উদ্দেশ্যের মধ্যে কোন আন্তর্জাতিকতা, কোন ব্যাপকতা ছিল না।
@রৌরব, (L) (Y) (L) (F)
@রৌরব, গীতাদি এ নিয়ে একটা স্লোগান জাতীয় লাইন দিন তো, একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে আরেকটা ব্যানার করা যায় কিনা দেখি। এই ব্যানারটাতে অ আ ক খ লিখে এখন রীতিমত খারাপ লাগছে, বেগার খেটে ব্যানারও বানাবো তারপর খারাপও লাগবে, এটা ঠিক না, সবই বিপ্লবের দোষ :)) ।
@বন্যা আহমেদ,
“আমার ভাষা, আমার মত, আমার স্বাধীনতা” অথবা
“ভাষায় স্বাধীনতার প্রকাশ”
আপাতত এ দুটো মাথায় আসল।
গত বছরের একুশের প্রথম পোস্ট আমার ছিল! এবারও একটা দেয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আগে থেকেই বেহুদা পোস্ট দিয়া ভেজাল করে রাখসি!! 🙁
@তানভী, পোষ্ট দিলে দাও না, দরকার হলে আগেরটা সরিয়ে দেওয়া যায় তোমার নিজস্ব পাতায়। আর প্রথম পাতায় দুটো পোষ্ট পর্যন্ত তো দেওয়াই যায়।
@বন্যা আহমেদ,
তাইলে সকাল ছাড়া গতি নেই। এখন আর সম্ভব হবে নাহ্।
@বন্যা আহমেদ,
উহু! একটা ব্যনার করার চেষ্টা করছিলাম!! কিন্তু আমার ভাইয়ের এই পিসিতে কাজ করার মত এক পেইন্ট ছাড়া আর কাজের কোন সফটয়্যার নাই! 🙁
পেইন্টেই শুরু করসি। কিন্তু দেখে মজা পাচ্ছি না। আরো সময় লাগবে। শেষ পর্যন্ত মনে হয় দিবই না! দেখা যাক, সকালে কোন কাজের কিছু বের হয় কিনা। আপাতত ঘুমাতে যাওয়া ছাড়া উপায় নাই।মাথা কাজ করছে না। সকালে দুটো কাজই করা যায় কিনা দেখি।
@বন্যা আহমেদ,
বন্যার এ আহ্বানে খুশী হয়ে কয়েকটি লাইন।
১।মাতৃভাষায় লেখাপড়া করা অথবা শিক্ষা আমার অধিকার।(সাথে বাংলাসহ কিছু অবহেলিত ভাষার বর্ণমালা দেওয়া যায়।)
২।শিক্ষায় মাতৃভাষার চর্চা আমার অধিকার।
৩।নিজ ভাষার চর্চা প্রত্যেক মানষের মৌলিক অধিকার।
৪।।ভিন ভাষার দুঃখিনী বর্ণমালার খুঁজে ( কবি শামসুর রাহমান থেকে দুঃখিনী বর্ণমালা শব্দদ্বয় ধার করে বলছি)
৫। অথবা বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা ( সরাসরি শামসুর রাহমান )
নিশ্চয়ই একটাও মনঃপুত হয়নি। এ মুহূর্তে আর কিছু যে আসছে না!
@বন্যা দি, @ গীতা দি,
দেখুন তো এটি চলবে কী না?
”সকল মাতৃভাষার জয় হোক!”
—
@ সবাই, পাঠ ও প্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ, কৃতঞ্ঝতা।! (Y)
@রৌরব & গীতা,
(Y)
আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও এ ধরনের মায়োপিক আদর্শ তৈরি হয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ হয়ে উঠেছে পাকিস্তানি ও পাকিস্তানিপন্থীদের বিরোধিতা এবং বড়জোর ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু দেশের এখনও বিদ্যমান নিপীড়িত মানুষের মুক্তির আদর্শ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কোন আদর্শকে ব্যবহার করতে পারতে কাউকে দেখা যায় না। অথচ আমরা পারতাম মুক্তিযুদ্ধকে মানুষের অবিরাম মুক্তিরসংগ্রামের একটা সূচনা হিসেবে দেখতে। কিন্তু তা না হয়ে মুক্তিযুদ্ধটা আদর্শ-মৌলবাদীদের অধিকারে চলে গেছে। তারা একটা আদর্শকে মূল হিসেবে প্রতিষ্ঠা ক’রে সেই আদর্শেরই প্রগতিতে বাঁধা দেয়। এটা দেখলে মনে হয়, হয়ত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শেও গোঁড়াতেই গলদ ছিল।
@রূপম (ধ্রুব),
এ ক ম ত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা– এখন একটি বুলিতে পরিনত হয়েছে। 🙁
@রৌরব,
ভাষা তথা জাতীয়তাবাদের এমন আগ্রাসী রূপ সত্যিই খুব পীড়াদায়ক। 🙁
আদিবাসীরা সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য সাংগঠনিকভাবে কী কোন উদ্যোগ নিয়েছে? এর জন্য তো বেশ ভালো সাইজের সরকারী ফান্ডিং দরকার হবে।
@বন্যা আপা, পার্বত্য অঞ্চলের ভ্রাতৃ সংঘাত চলছে আজ এক যুগের ও বেশি হচ্ছে -এতে হতাহতের সংখ্যা অনেক হয়েছে । সাংগঠনিক যে ভিট সেগুলো প্রায়ই নড়েবড়ে -সেজন্য সবকিছুর আগে পার্বত্য মানুষের মনের যে ক্ষতের সৃষ্টি দিনদিন বেড়ে যাচ্ছে সেজন্য বাড়তে না দিয়ে ছাড়িয়ে তোলা উচিত । সবক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতা বিদ্যমান এবং আন্তরিকতা অনুপস্থিত । আর সেনাবাহীনিরাতো কিভাবে পার্বত্য মানুষদের ভেদভেদ করে রাখা যায় এরজন্য নতুন-নতুন পন্থা নিয়ে থাকেন । পাকি’দের মতো করে একের পর এক রাজাকারের দল গড়ে দিচ্ছে শুধু পাহাড়ীর মারার প্রত্যয়ে । এরমধ্যে “এস্পাই-গুগ্গুরুক বাহিনী -মুকোশ বাহিনী -বর্কা বাহিনী” ইত্যাদি বাহিনী সেনাবাহিনীর সৃষ্টি । সেনাবাহিনী অনেকটা সফল ও হচ্ছেন ।
@বন্যা আহমেদ,
খবরটা আজকের পত্রিকাতেই প্রকাশ, দৈনিক আমাদের সময়ঃ
মাতৃভাষায় শিক্ষার দাবিতে পাহাড়ি ছাত্রদের ক্লাশ বর্জন, গ্রেফতার
৮
@স্বপন মাঝি,
ঘুম ঘুম চোখে পড়তে আর মন্তব্য করতে গিয়ে, লিঙ্ক দিতে ভুলে গিয়েছিলাম।
http://www.amadershomoy1.com/content/2011/02/21/news0038.htm
ধন্যবাদ
@স্বপন মাঝি, (Y)