গত পর্বে আমরা আলোচনা করেছিলাম এসপেক্ট ও তার দলের আবিস্কার নিয়ে – “নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে সাব-এটমিক পার্টিকেল , যেমন ইলেক্ট্রন একে অন্যের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করে/রাখে , তা একে অন্যের থেকে যত দুরে বা নিকটে থাকুক না কেন।” এবং শেষ করেছিলাম বোহমের এই বক্তব্য দিয়ে – “আমরা সাব-এটমিক কণিকাগুলোকে একে অন্যের থেকে পৃথক ভাবি , কারন আমরা তাদের বাস্তবতার একটি অংশই কেবল দেখতে পাই।”
বোহমের মতে এই কনিকাগুলোর স্বতন্ত্র কোন অস্তিত্ব নেই , এরা বৃহৎ কোন এককের এক একটি অংশ , হলোগ্রাফিক গোলাপের মতোই অবিভাজ্য। যেহেতু আমাদের এই মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুই এই জাদুর কণিকা দিয়ে তৈরি , সেকারনে আমরা এই উপসংহারে আসতে পারি , এই মহাবিশ্ব হলোগ্রাম/ছায়া/মায়া ছাড়া আর কিছু নয়।
মহাবিশ্বের এই ছায়াপ্রকৃতি আরো অনেক অভূতপূর্ব বৈশিষ্ঠের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। কণিকাগুলোর এই আপাতদৃষ্টে ভিন্ন অবস্থান যদি মায়া হয় , এর অর্থ দাড়ায় বাস্তবতার আরো গভিরতর লেভেলে কণিকাগুলো একে অন্যের সাথে কোন না কোন ভাবে জড়িত। মানুষের ব্রেনের একটি কার্বন অনুর ইলেক্ট্রন , সাতরে বেড়ানো সকল সালমান মাছের ব্রেনের বা সকল জীবিত প্রাণীর বা আকাশে যত তারা আছে , তাদের প্রত্যেকের সাব-এটমিক কণিকার সাথে যোগাযোগ রক্ষার মধ্য দিয়ে জড়িত। এই মহাবিশ্বের সকলকিছুই একে অন্যের সাথে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত , এরা একটি তারবিহীন জালের অংশ। এদের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ঠ খোজা অর্থহীন।
এই হলোগ্রাম বা ছায়া বিশ্বে সময় ও স্থান বা স্পেস বলে কিছু নেই। কারন মহাবিশ্বের কোনকিছুই যখন কোনকিছুর থেকে পৃথক নয় , তখন অবস্থানের ধারনাই বাতিল হয়ে যায়। একারনেই মনে হয় স্পেসকে মহাশুন্য বলে।
গভিরতর লেভেলে বাস্তবতা হলো একটি সুপার হলোগ্রাম , যেখানে অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যত একসাথে অবস্থান করে। ধারনা করতে দোষ নেই , ভবিষ্যতে সঠিক প্রযুক্তির উদ্ভব হলে , সুপার হলোগ্রাম লেভেলের বাস্তবতায় যেয়ে সুদুর অতীতের ভুলে যাওয়া কোন দৃশ্য তুলে এনে সকলের সামনে দৃশ্যমান করা সম্ভব হবে। তাহলে আমরা নিশ্চিতভাবে জানতে পারব এই পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভব কিভাবে হয়েছিল , মানুষ কিভাবে ধাপে ধাপে জীবের বিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছিল , কোন বিতর্ক বা অবিশ্বাসের অবকাশ আর থাকবে না।
বোহম-ই একমাত্র গবেষক নন যিনি ‘আমাদের এই মহাবিশ্ব যে একটা হলোগ্রাম’ তার স্বপক্ষে যুক্তি প্রমান হাজির করার চেষ্টা করেছেন। ব্রেন নিয়ে গবেষনা করতে যেয়ে স্টানফোর্ড নেউরোফিজিওলোজিস্ট কার্ল পিরিব্রাম স্বাধীনভাবে এই হলোগ্রাম লেভেলের বাস্তবতার মুখোমুখি হন। ব্রেনের ঠিক কোন অংশে স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে , এটার গবেষনা করতে যেয়ে গবেষকগণ আশ্চর্য হয়ে দেখেন ব্রেনের কোন একটি বিশেষ অংশে স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে না , বরং সম্পুর্ণ ব্রেনটাতেই স্মৃতি ছড়িয়ে থাকে। ১৯২০ সালে ব্রেন বিজ্ঞানী কার্ল ল্যাশলী দেখেন যে , ইদুরের ব্রেনের যে কোন অংশই অস্ত্রোপচার করে বাদ দেন না কেন , ইদুরটি অস্ত্রোপচারের পূর্বে শেখানো জটিল কিছু কাজের অভ্যাস ভুলছে না। সমস্যা দেখা দিল ব্রেনের ‘প্রতিটি অংশে সম্পুর্ন’ স্মৃতি সংরক্ষনের এই বিষয়টি ব্যাখ্যা সে সময়ে কারো জানা ছিল না।
১৯৬০ সালে কার্ল পিরিব্রাম হলোগ্রামের ধারনার সাথে পরিচিত হয়ে উপলব্ধি করলেন, ব্রেন বিজ্ঞানীরা এতদিন যে সমস্যার জবাব খুজে পাচ্ছিলেন না , তার জবাব লুকিয়ে আছে হলোগ্রামের ভিতরে , অর্থাৎ পুরো ব্রেনটাই একটা হলোগ্রাম। পুরো ব্রেন কিভাবে স্মৃতি সংরক্ষন করে তা লিখে পাঠকের ধৈর্যচ্যুতি না ঘটিয়ে এটুকু বলা যায় যে , আমাদের পঞ্চেন্দ্রীয় বাহ্যিক বাস্তবতার যে ইলেক্ট্রিক্যাল সিগনাল পাঠায় , তা আমাদের ব্রেন যাচাই বাছাই করে একটি প্যাটার্ন হিসাবে সমগ্র ব্রেনে সংরক্ষিত রাখে , গোলাপফুলের যে হলোগ্রামের কথা লিখেছিলাম গত পর্বে , সেটার মতো। আমরা সহ আমাদের চারিপাশের এই মহাবিশ্বের বাস্তবতা আমাদের ব্রেনে ধারনকৃত ইলেক্ট্রিক্যাল সিগনাল ছাড়া আর কিছু নয় এবং এরা সকলেই একে অন্যের সাথে সবসময় কোন না কোন ভাবে যোগাযোগ রেখে চলেছে। এর ভিতরেই হয়তোবা প্যারানর্মাল কার্যকলাপ বা কোইন্সিডেন্সের (আকস্মিক যোগাযোগ বা ঘটনা) রহস্য লুকিয়ে আছে।
যারা আরো বিস্তারিত জানতে চান , তারা মাইকেল ট্যালবটের Spirituality and Science: The Holographic Universe পড়ে দেখতে পারেন।
@ফারুক,
এই কথাটা যাতে না বলতে পারেন , সেকারনেই বিভাগের ঘরে লিখেছি ‘কল্পবিজ্ঞান’।
আপনার গবেষণালদ্ব মন্তব্যগুলোও কি কল্পবিজ্ঞান?
তবে বেয়াপক মজাদার।
@হেলাল,আপনাকে মজা দিতে পেরেছি জেনে , আমি বেয়াপক উৎফুল্লিত। :lotpot:
@হেলাল,
তিনি আপনাকে বিনোদন দিতে পেরে বেয়াপক উৎফুল্লিত। এবার বুঝেন। :hahahee:
১.এখন মনে হয় হয়তোবা ব্রেনের কনিকার সাথে যেহেতু চামচ বা ছুরির কনিকার যোগাযোগ আছে , সেকারনেই কোন না কোন ভাবে ব্রেনের নির্দেশ মেনে চামচ , ছুরি এগুলো সব বেঁকে যাচ্ছে বা স্থানচ্যুত হচ্ছ।
২.স্যামনকে অনুবাদ করে সালমান করায় বুঝতে কি খুব অসুবিধা হচ্ছে?
এ বলে কি? :hahahee: :hahahee:
লেখককে বানানগুলো ঠিক করে দিতে অনুরোধ করছি। লেখাটার বিষয়বস্তুর কথা যদি বাদও দেই, শুধু বানান ভুলের আধিক্যের কারণেই লেখাটা পড়তে বিরক্ত লাগছে।
@ফাহিম রেজা,অনুরোধ করে লাভ নেই , কারন বানান ভুল ঠিক করার কোন অপশন আমাকে দেয়া হয় নি। ভুল বানানগুলো দেখিয়ে দিলে , ভবিষ্যতে ঠিক করে লিখতে সুবিধা হতো। আশা করি এই উপকারটুকু করবেন। ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য এবং দুঃখিত বিরক্ত করার জন্য।
লেখাটির প্রতিটা লাইনে লাইনেই ভুলে ভরা। এটা না বিজ্ঞানের লেখা না রূপকথা। এটিকে মুক্তমনায় পোস্ট করার যোগ্য বলে মনে করিনা।
(N)
@হেলাল,
এই কথাটা যাতে না বলতে পারেন , সেকারনেই বিভাগের ঘরে লিখেছি ‘কল্পবিজ্ঞান’। দেখা যাচ্ছে তাতে লাভ হয় নি কিছুই।
সালমান মাছ কোন ধরণের মাছ । কী আজব! কোন জায়গায় থাকে? স্যামন মাছের কথা বলছেন না তো?
এ থেকে আমরা কি সিদ্ধান্তে যেতে পারি?
এই ছায়া/মায়া কথাগুলো একটু ব্যাখ্যা করেন।
আমি এমনিতেই শুধু বর্ণনামূলক এরকম বিজ্ঞান লেখা পড়তে উৎসাহ পাই না, কারণ তাতে মূল বিজ্ঞানী কিভাবে, কী ভেবেছেন তা অনুধাবন করা যায় না।
আচ্ছা, আমি যদি জানতে পারি আসলে সব কিছু মায়া তাহলে কি খাওয়া-দাওয়া বাদ দিয়ে দেব? নাস্তিকরা জীবনের কোনো পরম অর্থ নাই বলেই কি আত্মহত্যা করে বসছে? আমাদের উচিত হল, বর্তমানের উপর আস্থা রাখা। বর্তমানে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে যাচাই-বাছাই, গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে সিন্ধান্ত নেয়া। এখন, মহাবিশ্বের সব কিছু যদি তথাকথিত মায়া বলে প্রতীয়মানও হয় তবে তাও আমাদের বাস্তবতার সাথে সাংঘর্ষিক হয় না। আমাদের ‘বাস্তবতা’ এক জিনিস আর মহাবিশ্বের মায়া হওয়া আরেক জিনিস।
এই বাক্যের আরো ব্যাখ্যা চাই, আপনি কিভাবে এই সিদ্ধান্তে পৌছলেন? –
@সৈকত চৌধুরী,
(Y)
@সৈকত চৌধুরী,
3-D ছবি কখনো দেখেছেন? তাহলে হলোগ্রান কেন ছায়া/মায়া তা আর বুঝিয়ে বলা লাগত না। যদি এখনো না দেখে থাকেন , তাহলে কোন সিনেমা হলে গিয়ে চোখে চশমা লাগিয়ে দেখে ফেলুন।
হলোগ্রাম নিয়ে একটি ভিডিও দেখুন আপাতত।
httpv://www.youtube.com/watch?v=fLTPPZvb2ho&NR=1
আমি কিন্তু কোন স্বীদ্ধান্ত দেই নি , ‘হয়তোবা’ শব্দটির প্রতি খেয়াল করুন। একটি আইডিয়া ভাসিয়ে দিয়েছি।
টিভিতে হয়তোবা দেখে থাকবেন , শুধু মাত্র চোখের দৃষ্টি দিয়ে কেউ কেউ ইস্পাতের চামচ , ছুরি এই সব বাকিয়ে ফেলছে বা স্থানচ্যুত করে ফেলছে। এতদিন মনে হোত এগুলো ম্যাজিক , এখন মনে হয় হয়তোবা ব্রেনের কনিকার সাথে যেহেতু চামচ বা ছুরির কনিকার যোগাযোগ আছে , সেকারনেই কোন না কোন ভাবে ব্রেনের নির্দেশ মেনে চামচ , ছুরি এগুলো সব বেঁকে যাচ্ছে বা স্থানচ্যুত হচ্ছ।
স্যামনকে অনুবাদ করে সালমান করায় বুঝতে কি খুব অসুবিধা হচ্ছে? মনে হয় না। আপনি তো ঠিকি বুঝে ফেলেছেন , কোন মাছের কথা বলছি। 🙂
@ফারুক,
হয়তোবার ভিত্তিতে তো বিজ্ঞান চলে না। বিজ্ঞানে তত্ত্ব যাচাই করা যায়। আপনাকে পরামর্শ দিলাম মেটা-ব্যাখ্যার যাচাই করার উপায় দেখাতে না পারলে সেটা পরিহার করতে। আপনি দেখি কান দিচ্ছেন না। বরং বলছেন বিজ্ঞানেও নাকি হুজুরতন্ত্র চলবে।
একটা পরীক্ষা বলুন, যেখানে আপনি বর্ণনা করতে পারবেন যে অমুক ঘটলে তার মানে হল আপনার ওই হয়তোবা তত্ত্বটা সঠিক, আর তমুক ঘটলে ভুল। তারপর পরীক্ষাটা করে দেখান যে অমুকটা ঘটছে, তমুকটা না। এর আগে হয়তোবা বলে লাভ নেই। হয়তো বা ছুরিটি লজ্জা পেয়ে বেঁকে যাচ্ছে। হয়তো বা, যিশুর আত্মা এসে ওটা বাঁকিয়ে দিচ্ছে। হয়তো বা ক্যামেরায় এই বাঁকানোর প্রক্রিয়াটা পুরোপুরি দেখাচ্ছে না। এতো এতো হয়তোবার মধ্যে আপনার হয়তোবার বিশেষত্ব যদি না বলতে পারেন, তাহলে ওটা বলা অবান্তর।
@ফারুক,
এগুলো নেহায়েতই ম্যাজিক। দুটো ভিন্ন ধাতু দিয়ে বানানো চামচ। প্রসারন ক্ষমতা ধাতু ভেদে বিভিন্ন তাপমাত্রায় বিভিন্ন হওয়ার জন্য বেঁকে যায়।
@সাইফুল ইসলাম,
ঠিক কথা। ইউরি গেলার নামে এক তথাকথিত সাইকিক এই বুজরুকি চালু করেছিলেন চোখের দৃষ্টিতে নাকি চামচ বাঁকিয়ে ফেলছেন। অনেক ঝানু বিজ্ঞানীরাও তার পেছনের কারসাজি ধরতে পারেননি। কিন্তু ম্যাজিশিয়ান এবং সংশয়বাদী জেমস র্যান্ডির ঝানু চোখকে তিনি ফাঁকি দিতে পারেননি। ঠিকি ধরে ফেলেছিলেন চালাকি –
httpv://www.youtube.com/watch?v=M9w7jHYriFo
ফারুক সাহেবকে বলব, দয়া করে পুরো ভিডিওটি দেখুন। কিভাবে সংশয়বাদী ম্যাজিশিয়ান গেলারের নিজের চামচ নয়, নিরপেক্ষ চামচ গেলারকে বাঁকাতে দিয়েছিলেন – কিভাবে তিনি ধরাশায়ী হয়েছিলেন।
ফারুক সাহেব সাইকিক অনুষ্ঠান দেখেন ভাল কথা, কিন্তু সেসমত বুজরুকি সংশয়বাদীরা যখন স্রেফ লৌকিক কৌশলে ঘটিয়ে দেখান, সেগুলো কি তখন দাবীর সারবত্তা তুলে ধরে?
জেমস র্যান্ডি কিংবা প্রবীর ঘোষের ‘অলৌকিক নয়, লৌকিক’ বইয়ে অনেক সাইকিক কাজের লৌকিক ব্যাখ্যা দেয়া আছে। তাদের মিলিয়ন ডলারের চ্যালেঞ্জও আছে যে, কেউ তাদের সামনে চোখের দৃষ্টিতে চামচ বাঁকানো সহ অলৌকিক কর্মকান্ড ঘটিয়ে দেখাতে পারলে তারা মিলিয়ন ডলার পাবেন। এখনো কেউ সেটা অর্জন করতে পারেন নি, বরং ধরাশায়ী হয়েছেন বহু সাইকিক বাবাই। ফারুক সাহেব সেগুলো জানেন নিশ্চয়।
@অভিজিৎ,ধন্যবাদ। পুরো ভিডিওটি দেখলাম।
@সাইফুল ইসলাম,
httpv://www.youtube.com/watch?v=ffMZ7NSvpjQ
httpv://www.youtube.com/watch?v=afkDRq8UHeE
🙁
পর্যবেক্ষণ থেকে উপসংহারের এই হাইপারডাইভগুলোতে প্যারানরমাল কার্যকলাপ নয় ভাই, সাধারণত ছদ্মবিজ্ঞান লুকিয়ে থাকে। বিজ্ঞান লেখায় এই সতর্কতার অভাবের নজির অবশ্য আরো অনেক আগে থেকেই দেখে আসছি। আরো সতর্ক দৃষ্টিতে দেখা প্রয়োজন। ইনফারেন্সগুলো এখানে খুবই অস্পষ্ট আর নড়বড়ে। হয়তো ট্যালবটেরটাই হুবহু বলেছেন। কিন্তু ট্যালবটের লেখাতেও যদি একই অস্পষ্টতা থাকে, তাহলে বরং তার লেখার সমালোচনা করুন। সেটা আরো অনেক বেশি কাজের হবে। অন্যের অস্পষ্ট দুর্বল যুক্তি মেনে নেবেন কেনো?
@রূপম (ধ্রুব),
ঠিক তাই। (Y)
আমি কিছু দুর্বলতার প্রতি ইঙ্গিত করে আগের পর্বে একট মন্তব্য করেছিলাম এখানে।
আসলে ফারুক সাহেব অন্যান্য ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের সিদ্ধান্তকে যেভাবে উপরে ‘অন্ধের হাতি দেখার’ সাথে তুলনা করেছিলেন, সেটি কিন্তু ট্যালবটের প্রবন্ধের ক্ষেত্রেও খাটে। এমন তো নয় যে, ট্যালবটই চক্ষুষ্মান, বাকি সব গবেষক অন্ধ!
আরো একটা ব্যাপার, উনি প্রথম পর্বে ট্যালবটের প্রবন্ধটির উল্লেখও করেননি, দেখে মনে হচ্ছিলো যেন ফারুক সাহেব নিজেই লিখেছেন প্রবন্ধটি। আসলে পড়লেই বুঝবেন সেটি ট্যালবটের প্রবন্ধেরই বাংলাকরণ বলা যায়। এখন অবশ্য এই পর্বে এসে ট্যালবটের মূল প্রবন্ধের লিঙ্ক দিয়েছেন তিনি। সেটার জন্য ধন্যবাদ। বলাবাহুল্য ট্যালবটের এই হলোগ্রাফিক প্রিন্সিপাল দিয়ে প্যারানরমাল নানা পদের ব্যাপারকে জাস্টিফাই করার ব্যাপারটি বৈজ্ঞানিক মহলে সমালোচিত এবং প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বহুভাবেই। আর এই সব – “সাতরে বেড়ানো সকল সালমান মাছের ব্রেনের বা সকল জীবিত প্রাণীর বা আকাশে যত তারা আছে , তাদের প্রত্যেকের সাব-এটমিক কণিকার সাথে যোগাযোগ রক্ষার মধ্য দিয়ে জড়িত” – এই ধরনের ভাববাদী ‘ইন্টারপ্রিটেশন’ অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অমিত গোস্বামীর মত কিছু স্পিরিচুয়ালিস্ট বাতিল পদার্থবিদ এটিকে পুঁজি করে বই লিখছেন আর দীপক চোপড়ার মত কিছু কয়েকার পদার্থবিজ্ঞান না বুঝেই আত্মা, চিন্তাচেতনা প্রভৃতি সবকিছুকেই কোয়ান্টাম ফিজিক্সের আলোয় ‘নন লোকাল’ আখ্যা দিয়ে সোরগোল তুলছেন। অধিকাংশ পদার্থবিদই এগুলোর সাথে একমত নন। এমনকি দীপক চপড়ারা কি বলতে চান তাই স্পষ্ট নয় পদার্থবিজ্ঞানীদের কাছে। লিওলার্ড ম্লোডিনো সেটা বলেছিলেন এখানে –
httpv://www.youtube.com/watch?v=-y5D7q1O1Uk
পদার্থবিজ্ঞানীরা আরো মনে করেন বোহমের এই ‘নন লোকাল’ ধানাই পানাই আসলে আইনস্টাইনের রিলেটিভিটিকে ভায়োলেট করে, এবং ফান্ডামেন্টালি flawed। এ নিয়ে ভাল আলোচনা আছে ভিক্টর স্টেংগরের “কোয়ান্টাম গডস” বইয়ে।
@অভিজিৎ,স্যালুট।
কোথায় আপনি , আর কোথায় আমি!! এপর্যন্ত আপনার লেখা কয়েকটি মৌলিক বই বেরিয়ে গেছে , আর আমি ব্লগে ব্লগে মূলত অনুবাদ এবং অন্যের লেখার সিন্থেসিস করে পোস্ট দিয়ে থাকি। আমাকে প্রতিপক্ষ না ভেবে , আপনার গবেষনার গিনিপিগ বানাতে পারেন। তাহলে হয়তো বা জানতে পারবেন , কেন আমার মতো অল্প জানা আস্তিকেরা বা সকল বিজ্ঞানী নাস্তিক হয়ে যাচ্ছে না। এতে আখেরে আপনারি লাভ হবে , সকলকে কন্ভিন্স করতে সুবিধা হবে।
এমন দাবী কিন্তু প্রবন্ধের কোথাও করা হয় নি বা কোন গবেষককে অন্ধ ও বলা হয় নি। বরং অন্যান্য গবেষকদের গবেষনালব্ধ ফলকেই স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। সন্দেহ নেই , ট্যালবট এবং সেই সাথে আমি ও অন্য আর সকলের মতৈ হাতির একটি অংশই দেখেছি , পুরোটা নয়। অমিত গোস্বামী , দীপক চোপড়া ও আর সকলের ক্ষেত্রেও একি কথা প্রযোজ্য।
@অভিজিৎ,
ওয়াও! এটা কি দেখলাম? কমেডিয়ান নাকি?
ওকে ফলসিফায়েবিলিটির কথা জিগায় না ক্যান কেউ? নাকি ও তখন তৎক্ষণাৎ উত্তর দিবে, ক্যান ইউ ফলসিফাই ইওরসেল্ফ?
বা লোকটাকে বলা যেতে পারে, আপনে হচ্ছেন রাবণের দশম অবতার, প্রিটেন্ডিং টু বি দীপক চোপড়া ইন এ লার্জার কনটেক্সট।
আমার এক বন্ধু আমাকে একবার এরকম ডুয়াল রিয়েলিটি খাওয়াতে চেষ্টা করেছিল। রিপিটেড অবজার্ভেশনাল ভ্যালিডেশান সমেত ফেরত আসার কথা বলার পর ওই প্রসঙ্গ আর তুলে নি। যাচাইযোগ্যতার প্রশ্ন তোলাটা খুব কাজের কিন্তু!
@রূপম (ধ্রুব),ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
অবশ্যই মানব না, মানার প্রশ্নই ওঠেনা। মুশকিল হলো , কোথায় যে অস্পস্টতা সেটাই তো বুঝতে পারি না। যখন হালের বিজ্ঞানীদের মুখে Quantum entanglement এর কথা শুনি , তখন এসপেক্ট ও তার দলের আবিস্কারকে – “নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে সাব-এটমিক পার্টিকেল , যেমন ইলেক্ট্রন একে অন্যের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করে/রাখে , তা একে অন্যের থেকে যত দুরে বা নিকটে থাকুক না কেন।” – আর অস্পষ্ট মনে হয় না। মনে হয় “মানুষের ব্রেনের একটি কার্বন অনুর ইলেক্ট্রন , সাতরে বেড়ানো সকল সালমান মাছের ব্রেনের বা সকল জীবিত প্রাণীর বা আকাশে যত তারা আছে , তাদের প্রত্যেকের সাব-এটমিক কণিকার সাথে যোগাযোগ রক্ষার মধ্য দিয়ে জড়িত” আর অসম্ভব কিছু না।
Quantum entanglement নিয়ে আলোচনা পাবেন এখানে-
httpv://www.youtube.com/watch?v=0Eeuqh9QfNI
@ফারুক,
আমি কিছু কথা বলি কোয়ান্টাম এন্ট্যাঙ্গেলমেন্ট নিয়ে। কোয়ান্টাম ফিজিক্স কিভাবে কাজ করে এটা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্ক আছে। তবে সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য এবং যেটা অধিকাংশ বিজ্ঞানীরাই সমর্থন করেন তা হচ্ছে কোপেনহেগেনীয় ইন্টারপ্রিটেশন। একসময় আইনস্টাইন এবং নীলস বোর তর্ক করেছিলেন এ নিয়ে। যদিও আমজনতার কাছে এই তর্ক অমীমাংসীতই ছিলো বলা যায়, কিন্তু পরবর্তীতে অধিকাংশ বিজ্ঞানীরাই মনে করেছেন যে বোরের কোয়ান্টাম ইন্টারপ্রিটেশনটাই অধিকতর সঠিক দিকে রয়েছে।
এই কোপেনহেগেনীয় ইন্টারপ্রিটেশনের বাইরে আছে ডেভিড বোহমের ‘হিডেন ভ্যারিয়েবল’ এবং হিউ এভারেটএর ‘মেনি ওয়ার্লড’ ইন্টারপ্রিটেশন।
হিডেন ভ্যারিয়েবলের কোন পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ পাওয়া যায় নি, বরং জন বেলের তত্ত্ব এবং যে অ্যালেন অ্যাসপেক্টের কথা আপনি প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন তাদের পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে বোহমের হিডেন ভ্যারিয়েবল থাকার ব্যাপারটি ভ্রান্ত। অর্থাৎ অ্যালেন অ্যাসপেক্টের পরীক্ষা সাবকোয়ান্তাম লেভেলে কোন ধরনের লোকাল হিডেন ভ্যারিয়েবল থাকার সম্ভাবনাকে বাতিল করে দিয়েছে।
অবশ্য তাতে বোহমের সমর্থকরা দমেননি। তারা এর পরে ধারনা নিয়ে আসলেন পুরো ব্যাপারটি তাহলে নন লোকাল। আর মেনি ওয়ার্ল্ড ইন্টারপ্রেটেশনকে তারা নিজেদের বিশ্বাসের মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরলেন। তাতেও যে সমস্যা মিটেছে তা নয়। এন্টাংগেলমেন্টের মাধ্যমে কোন কিছু স্থানান্তরিত হলে হলে তা আলোর গতির চেয়ে বেশি বেগে যেতে হবে, এবং সেই সূত্রে তা হবে আইনস্টাইনের রিলেটিভিটির লংঘন। বিজ্ঞানীরা এখনো এমন কিছু খুঁজে পাননি যা আলোর চেয়ে বেশি বেগে চলতে পারে। অথচ, সেটাই কোয়ান্টাম এন্টাংগেলমেন্টের তত্ত্বের ভিত্তি। আর মেনি ওয়ার্ল্ডেকে ‘মেনি মাইন্ড’ বানিয়ে স্পিরিচুয়ালিস্টরা যেভাবে সবকিছুকেই একসূত্রে গেঁথে ‘হোলিস্টিক ইউনিভার্সের’ কল্পনা করছেন সেটাও কেবল ফ্যান্টাসিই, বাস্তবতা নয়। আমি পদার্থবিদ ভিক্টর স্টেঙ্গরের বই থেকে তুলে দেই –
Bohm’s theory is incapable of dealing with relativistic particles… This is rather ironic since Bohm’s theory claims to describe connections that move faster than light but it can’t handle particles moving at 90 percent speed of light. … No one has ever seen a particle moving faster than light nor transmitted information from one point to another superluminically. Furthermore we have seem the attempt to develop a holistic theory of particle physics has failed, while traditional reductionist model of elementary constituents of matter has enjoyed continued success. Given all this, I think we can safely discard quantum spiritualist notion of a holistic universe. (page 207)
@অভিজিৎ,
আপনার কি মনে হয় না , এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমরা বিজ্ঞান ও ধর্মকে এক কাতারে ফেলছি!! প্রমান বাদ দিয়ে বহুমত কেই গুরুত্ব দিচ্ছি। বৈজ্ঞানিক সত্য অধিকাংশ বিজ্ঞানীর সমর্থনের উপর তো নির্ভর করা উচিৎ নয়। পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে , এই বৈজ্ঞানিক সত্য সকল বিজ্ঞানীই সমর্থন করে , কারন এটা প্রমানিত। ৮০ বছর হয়ে গেল বোর ও হেইসেনবার্গ কোপেনহেগেনীয় ইন্টারপ্রিটেশন দিলেন, তার পরে এত বছর হয়ে গেল , সকল বিজ্ঞানী এব্যাপারে একমত হতে পারল না।
Asher Peres remarked that very different, sometimes opposite, views are presented as “the Copenhagen interpretation” by different authors.
http://en.wikipedia.org/wiki/Copenhagen_interpretation
তাহলে কিভাবে আমরা জোর গলায় দাবী করতে পারি , অমুকেরটা ফ্যান্টাসি/অপবিজ্ঞান/ছদ্মবিজ্ঞান ?
@ফারুক,
আমার তা মনে হয় না। ‘ক’ এবং ‘খ’ এর মধ্যে কোন বৈজ্ঞানিক বিতর্ক হলে এমন ভাবার কোন কারণ নেই ‘গ’ সঠিক। বিজ্ঞানের কোন ইন্টারপ্রিটেশন নিয়ে বিতর্ক হলে বিজ্ঞানীরাই সেটা সমাধান করবেন, সেজন্য বিজ্ঞান ধর্ম হয়ে যায় না, কিংবা ধর্মও বিজ্ঞান হয়ে যায় না। এটা একটা যৌক্তিক ফ্যালাসি।
কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা বহু আগেই প্রমাণিত। কোয়ান্টাম টানেলিং মাইক্রোস্কোপ, লেসার, মাইক্রোপ্রোসেসর তৈরি করা হয় কোয়ান্টাম তত্ত্বের উপর নির্ভর করেই। কোয়ান্টাম বলবিদ্যা প্রমাণিত না হলে সেই সেই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে আধুনিক যন্ত্রপাতিগুলো বানানো হয়তো সম্ভব হত না কখনোই। কোয়ান্টাম বলবিদ্যার বিতর্ক যে জায়গায় আছে তা ইণ্টারপ্রিটেশন নিয়ে। এধরণের বিতর্ক তো বিজ্ঞানের অনেক শাখাতেই আছে। কারণ বিজ্ঞান কোন স্থবির বিষয় নয়। সেজন্যই তো বিজ্ঞান ডগমা নয়।
আর, আগেই বলেছি বিজ্ঞানীদের মধ্যকার বিতর্ক হলে সেজন্য ধর্ম বা স্পিরিচুয়ালিজম সত্য হয়ে যায় না। স্টিফেন জ়ে গুল্ড এবং ডকিন্সের মধ্যেও বিবর্তনের ইণ্টারপ্রিটেশন নিয়ে বিতর্ক ছিলো যেমনি বিতর্ক ছিলো আইনস্টাইন আর বোরের মধ্যে। কিন্তু সেজন্য বিবর্তনবাদ কিংবা কোয়ান্টাম বলবিদ্যা কোনটাই মিথ্যা হয়ে ধর্মকে সত্য বানিয়ে দেয় না কিন্তু। ধর্মকে সত্য হতে হলে তার নিজস্ব ক্রাইটেরিয়াতেই সত্য হতে হবে, বিজ্ঞানের কোন শাখায় কীধরণের বিতর্ক আছে তার ভিত্ততে নয়।
@অভিজিৎ,
একমত।
@ফারুক,
বলেন কি? সতর্ক থাকলে অধিকাংশ কথাই অস্পষ্ট লাগার কথা। এত বড় বিজ্ঞানের কথা বার্তা, এত সহজে স্পষ্ট হয়ে যায়?
সতর্ক থাকার এক নম্বর উপায় হল, মেটা-ব্যাখ্যা পরিহার করা। যদি দুটো ইলেক্ট্রনের মধ্যে সাদৃশ্য দেখা যায়, তার মানে ওইটুকুই। এর থেকে যদি বলতে হয়, “যেহেতু আমাদের এই মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুই এই জাদুর কণিকা দিয়ে তৈরি , সেকারনে আমরা এই উপসংহারে আসতে পারি , এই মহাবিশ্ব হলোগ্রাম/ছায়া/মায়া ছাড়া আর কিছু নয়”, তাহলে তার জন্যে আরো জোরালো যুক্তি আর এভিডেন্স প্রয়োজন। কারণ এটা যেভাবে বলে ফেললেন, সেরকম অভিয়াস না। হলোগ্রামের সংজ্ঞার সাথে কিছু একটা মিলে গেলেই সেটা হলোগ্রাম হবে, এমন উপসংহারে আমরা আসতে পারি না। মায়া কথাটা আসলো কিভাবে সেটাও আপনি ব্যাখ্যা করেন নি।
দ্বিতীয় উপায়, না পারতে একটা মেটা-ব্যাখ্যা যদি দিয়েই ফেলেন, তাহলে সেটার যাচাইযোগ্যতা উল্লেখ করতে হবে আপনাকে। একটা আদর্শিক পরীক্ষা বর্ণনা করবেন, যেটাতে ঠিক কি পর্যবেক্ষণ করা গেলে আপনার মেটা ব্যাখ্যাটা আর ধোপে টিকবে না, সেটা উল্লেখ করতে হবে। এরকম কিছু করা না গেলে আপনার মেটা-উপসংহারটা বৈজ্ঞানিকভাবে ভ্যালিড না।
উপসংহার কঠিন ব্যাপার রে ভাই।
সকল বৈজ্ঞানিক প্রকল্পের ক্ষেত্রে এগুলো প্রযোজ্য। যখন তথাকথিত ‘বিজ্ঞানের’ লেখা পড়বেন, তখন লেখকের পদমর্যাদাও দেখা লাগবে না আপনার। সে যেই লেখকই হোক, তার এভিডেন্স আর ক্লেইমের যোগসূত্রগুলো খুব সতর্কতার সাথে দেখবেন আপনি। উপসংহারের মেটা-ক্লেইমগুলোর যাচাইযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করবেন। এই প্রশ্ন আপনি সরাসরি চাই কি স্টিফেন হকিংয়ের মুখের উপরও করতে পারেন। বলতে পারেন, আপনার অমুক ক্লেইমটার যাচাইযোগ্যতা কি? স্টিফেন হকিং বলে তিনি পার পেয়ে যাবেন না। বিজ্ঞানে হুজুরতন্ত্র নেই। এখানে নামের জোরে কেউ কিছু ক্লেইম করতে পারে না। নগদ প্রমাণ চাই!
@রূপম (ধ্রুব),
তাই কি? ামার তা মনে হয় না।
@ফারুক,
কেন মনে হয় না? নামের জোরে রকেট বানানে যায় নাকি ভাই?
আর আপনি আমার উপদেশগুলো একটু শোনার চেষ্টা করছেন কি? বললাম তত্ত্ব দিলে ফলসিফিকেশনের (যাচাইযোগ্যতার) উপায়ও সাথে দিতে। কিন্তু আপনি কোন ভিত্তি ছাড়া চামচ বাঁকিয়ে ফেলছেন।
@রূপম (ধ্রুব),
মহাবিশ্বের সৃষ্টিতে ঈশ্বরের কোন ভূমিকা নেই , এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি না হওয়ার চেয়ে এমনি এমনি সৃষ্টি হওয়াটাই বেশি যুক্তিযুক্ত , স্টিফেন হকিংয়ের এই মেটা-ক্লেইমগুলোর যাচাইযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন কি? মাল্টিভার্সের আর কয়টা ভার্সের নগদ প্রমান এ পর্যন্ত পেয়েছেন? স্টিফেন হকিংকে বর্তমানে বিজ্ঞানহুজুর বল্লে অসুবিধা কোথায়?
@ফারুক,
এই সকল ক্লেইমকেও যাচাইযোগ্যতার মুখোমুখি অবশ্যই হতে হবে। স্টিফেন হকিংয়ের ক্লেইমগুলো নিয়ে সমালোচনা নেই ভাবলে হবে না। বিপ্লব পাল সে নিয়ে তো বিস্তর আলাপ মুক্তমনাতেই করেছেন। সেটাই প্রমাণ করে যে যাচাই ছাড়া একতরফা বক্তব্য দিয়ে গেলে যে সমালোচনা তৈরি হবেই। 🙂
বিজ্ঞানীর মধ্যে অথরিটির প্রশ্ন কোথা থেকে আসবে যেখানে তত্ত্ব আর তার পর্যবেক্ষণ নৈর্ব্যক্তিক? কারও মুখের কথায় যদি রকেট বানানো যায়, মহাশূন্যে যাওয়া যায়, তবে তাকে হুজুর বলা চলে। নগদ প্রমাণ ছাড়া বিজ্ঞানের আলাপ চলে কি ভাই?
এখন আবার বলে বসবেন না, অমুকে তো করেছে, আমি করলে দোষ কি। সেটার অর্থ হল সেই অমুককে আপনি বিজ্ঞানের হুজুর মানছেন। বিজ্ঞানের হুজুর যেহেতু নেই, ফলে অমুকের কথা বলেও লাভ নেই। আপনার উদ্দেশ্য যদি হয় বিজ্ঞান বোঝা আর অপরকে বোঝানো, সেক্ষত্রপ অমুক তমুককে নিয়ে না পড়ে থেকে আপনি ঠিক কাজটি করুন। যে ক্লেইমের যাচাই সম্ভব হচ্ছে না, সেটার আলাপ অবান্তর।
@ফারুক,
ঈশ্বরের ভূমিকা আছে বা ঈশ্বর আছে, এটা মূল ক্লেইম। যে এটা ক্লেইম করবে তাকে সেটার যাচাইযোগ্যতা, পর্যবেক্ষণের উপর পূর্বাভাসযোগ্যতা দেখাতে হবে।
প্রমাণ ছাড়া সেই ক্লেইমের বিন্দুমাত্র বৈজ্ঞানিক ভিত্তি থাকবে না। এটা তখন কেবল বিশ্বাস। অবৈজ্ঞানিক ব্যাপার বিশ্বাস করুন, কেউ মানা করছে না। অবৈজ্ঞানিক জিনিসকে বৈজ্ঞানিক দেখিয়ে বিশ্বাসের ভিত্তি বাড়ানোর চেষ্টা করা যাবে না।
আর যতক্ষণ পর্যন্ত ঈশ্বরের অস্তিত্বের দাবীদার কোন যাচাইযোগ্য পরীক্ষা প্রস্তাব না করছে, ততক্ষণ আমার কিসে মাথা ব্যাথা যে দেখাতে যাব ঈশ্বর নেই? ঈশ্বরের প্রস্তাবের দাবীদার তো আমি না।
আমি তো প্রস্তাব করিনি যে আকাশে একটা সাদা ঘোড়া আছে, তার ডান পায়ের উপরে একটা লাল তিল আছে যে দেখাতে যাব সেটা সত্য নয়।
ঈশ্বরের সংজ্ঞাই তো আমার জানা নেই। কখনো একটা উদাহরণও দেখা যায় নি যে তুলনা করে ব্যাপারটা বুঝে নিব। দাবী যার, সে এর সংজ্ঞা দেবে, সে প্রমাণ করে দেখাবে। আমার এ নিয়ে ক্লেইম সাদা ঘোড়ার মতই Null।
আগ্রহ নিয়েই পড়ছি। যদিও আপনার স্টাইলটি কিছুটা সেনসেশনালিস্ট। মস্তিষ্কের স্মৃতি সংরক্ষণের ব্যাপারটিই ধরুন। ও কাজটিকে আরো মেঠো, অনাধাত্মিক ভাষায় আরো পরিষ্কার ভাবেই উপস্থাপন করা যায়। এধরণের বহুস্তরীয় রিডানডেন্সি ইন্টারনেটে বা বড় বড় ডাটা কোম্পানীগুলোতেও লভ্য, মস্তিষ্কের মত জটিলতায় এখনও না হলেও।
@রৌরব,আপনি আগ্রহ নিয়ে পড়ছেন জেনে আনন্দিত হলাম। আমি আধ্যাত্মিক মানুষতো , তাই লিখতে গেলে ভাষাটাও কেমনে কেমনে জানি আধ্যাত্মিক হয়ে যায়। এটাই স্বাভাবিক , নয় কি?
শুধু বিবৃতি না দিয়ে , এগুলো কেন বাহুল্য/প্রয়োজনাতিরিক্ত , সেটা সংক্ষেপে দুই চার কথায় বা সময় থাকলে বিস্তারিত জানালে আমার মতো কিছু পাঠক উপকৃত হতো।
@ফারুক,
সমস্যাটি ভাষাগত। রূপম নিচে ভাল বলেছেন। মস্তিষ্কের গঠন আমাদের প্রাথমিক inutition এর সাথে মেলেনি, সেখান থেকে প্যারানর্মাল অ্যাকটিভিটিতে কিভাবে পৌঁচাচ্ছেন স্পষ্ট হচ্ছে না।
আরও দেখুন…
কেন? “পৃথক নয়” মানে কি? পরস্পর-যুক্ত মানেই কি “পৃথক নয়”? অবস্থানের ধারণা, অন্য সব ধারণার মতই, টিকে থাকে যদি তার ব্যবহার সুফলদায়ী হয়। সেটি কেন একেবারে বাতিল হয়ে যাবে, পরিবর্তিত না হয়ে? “দার্শনিক” পরিভাষায় কিছু অাপাত অর্থপূর্ণ শব্দ ব্যবহৃত হয়ে থাকে যার মানে বোঝা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়ায় ঠিক মত বুঝতে চাইলে।
Redundancy-র ব্যাপারটা অল্প কথায় বলি। যখনই কোন তথ্য ধারণকারী সিস্টেমকে আপনি আঘাত, দুর্ঘটনা, বা random তথ্য নষ্টের হাত থেকে রক্ষা করতে চাইবেন, তখনই সিস্টেমটির ডিজাইন অনেকটা মস্তিষ্কের মতই হবে। খুব আবছা ভাবে বলছি, কিন্তু এটাকে প্রায় একধরণের গাণিতিক নিশ্চয়তা বলা চলে। ইনফরমেশন তত্ব, কোডিং তত্ব, noisy চ্যানেল তত্ব সব জায়গাতেই এই ধারণাগুলি দেখা যায়। ধারণাগুলি চমকপ্রদ ও গভীর অবশ্যই, এবং মস্তিষ্ক এর এমন একটি উদাহরণ যার নাগাল আমরা এখনও পাই নি। কিন্তু এসব কিছুই আর পাঁচটা গাণিতিক-বৈজ্ঞানিক তথ্যের মতই, খুব আলাদা কিছু নয়।
@ফারুক,
আধ্যাত্মিক বলতে আপনি কী বুঝাতে চেয়েছেন, দয়া করে একটু ব্যাখ্য করবেন ?
চিন্তা উদ্রেক কারী লেখা।
একটু ব্যাখ্যা চাই। সব কিছু সব জায়গাতে (সমগ্র ব্রেনে)? তারমানে সব কিছু অভারল্যাপ করে থাকে? আমার ধারণা ছিল একেক জায়গায় এক এক জিনিষ। ইঁদুরের উদাহরণ সব উল্টে পাল্টে দিল।
@নৃপেন্দ্র সরকার, ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
না, সব কিছু অভারল্যাপ করে থাকে না। এর মানে হলো হলো , ব্রেনের প্রতিটি অংশে সমগ্র স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে। ফলে ব্রেন থেকে যত ইচ্ছা কেটে বাদ দেয়ার পরেও , বেচে থাকার জন্য অবশিষ্ঠ ব্রেন থেকে অতীতের পুরো স্মৃতিই ফিরে পাওয়া সম্ভব।
গত পর্বে দেয়া গোলাপের উদাহরনটা দিলাম বোঝার সুবিধার জন্য।
‘প্রতিটি অংশে সম্পুর্ন’ (“whole in every part) এটাই হলোগ্রামের প্রকৃতি।
`একমত। কে জানে হয়ত একদিন জানা যাবে, এই যে ইলেকট্রন, প্রোটন বলে আমরা ভিন্ন ভিন্ন কণার কথা ভাবি, তা হয়ত একই কণাকে ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষিতে আমাদের চিহ্ণিত করার ফল। এক অখন্ডকে নানা দিক থেকে ভিন্ন ভিন্ন মনে হতে পারে, যেহেতু সবটা আমরা একসঙ্গে দেখতে পাচ্ছি না। অখণ্ড সর্বব্যাপ্ত হলে – হতে পারে অথবা না পারে একই সঙ্গে সত্য। কে জানে শ্রুডিংগারের বিড়াল এভাবেই বেঁচে বা মরে থাকার সম্ভাবনার উভয়কে একসঙ্গে মান্যতা দেবে কিনা।
@ভাস্কর,ধন্যবাদ , একমত হওয়ার জন্য।
ঠিক বলেছেন। আমাদের অবস্থা , অন্ধের হাতি দেখার মতৈ। যে যেটুকু হাতিয়ে অনুভব করছি , তাই নিয়েই নাচ্ছি।