চিন্তা করে দেখলাম, দুনিয়াবি হাবি-জাবি নানা কাজে আমার সর্বক্ষণ বিজি থাকার কথা থাকলেও আমি মোটামুটিভাবে দুইটা কাজে সারাদিন বিজি থাকি। চা এবং সিগ্রেট খাওয়া। দুইটা খ্রাপ কাজ মানি, এও মানি যে চা খেলে মানুষ কালো হয়ে যায়। তো মাঝেই মাঝেই যখন শুদ্ধস্বরে যাই, এক কাপ চা নিয়ে শুদ্ধস্বরের টুটুল ভাইয়ের সামনে বসে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ পাড়ি। টুটুল ভাই এখন খ্যাতনামা প্রকাশক, প্রতিদিন পেপারে বইমেলা নিয়ে তিনি কী ভাবছেন তা নিয়ে জ্ঞানগর্ভ লেখা বের হয়, মেলায় প্রতিদিন নিয়ম করে তিনি পাঁচটা সাক্ষাৎকার দেন টিভি ক্যামেরার সামনে। আমাদের মতো চুনোপুঁটিদের তার পাত্তা দেবার কোনো কারণ নেই, কিন্তু তিনি দেন। এমন কী তার বদ্ধরুমে ভস ভস করে ধুয়া ছাড়লেও মাইণ্ড করেননা।

ধূর! আমার অভ্যাস খ্রাপ হয়ে যাচ্ছে। ডকিন্সের মতো এক কথা পাড়তে যেয়ে হাজারটা কথা বলে পাঠকের তার ছিঁড়া দেই। যাই হোক, বলছিলাম শুদ্ধস্বরের দোকানে টুটুল ভাইয়ের সামনে বসে চা খাওয়ার কথা। তো জানুয়ারির দশ তারিখে এমন চা খাওয়ার সময় হঠাৎ টুটুল ভাইয়ের কাছে ফোন আসলো একটা, তিনি ফোনে কথা বলে বিমর্ষ হয়ে তার ডান হাত পিয়াস ভাইয়ে ডেকে এনে শুধালেন, ওহে পিয়াস! ইয়ে তো স্টল করতে পারবেনা। 

আমি কান খাড়া করে রাখলাম। ইয়ে স্টল করতে না পারলে তো খুবই ভালো কথা। সামিয়া হোসেন পারবে। তিনি আবার আমাকে ম্যানেজার বানাইছেন, আমিও কর্মঠ ম্যানেজারের মতো ক্লায়েন্টকে কাজ জোগাড়ের ধান্ধায় টুটুল ভাইকে বললাম, সামিয়া হোসেন তো আছে। ওই করে দিবে। টুটুল ভাইয়ের এই পর্যায়ে এসে বলার কথা ছিলো, “ও! তাহলে ওর সিভি আর পোর্টফোলিও নিয়ে আসতে বলেন একদিন। কথা বলে দেখি”। 

উনি সেটা করেন নাই। কারণ তিনি সামিয়া হোসের প্রচ্ছদ দেখে মুগ্ধ, এবং পুরাতন সেই প্রবাদের সাথেও পরিচিত। যে প্রচ্ছদ রাঁধে সে স্টলও বাধে। তাই বাংলা একাডেমী সাতাশে জানুয়ারি মেলা প্রাঙ্গণ উন্মুক্ত করে দেবার পর থেকেই শুরু হলো আমাদের বইমেলা। সামিয়া হোসেন দিন রাত সটান হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে স্টল তৈরি করছে কিন্তু এখন তাকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে গেলে মহা বিপদ। বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে ‘আপা, আপা’ বলে ডাক আসে। তারপর প্রকাশকরা সামিয়াকে বলেন, ‘আপা আপনার বিক্রি কেমন হচ্ছে? জায়গা তো এইবার ভালোই পাইছেন, স্টলটাও সবচেয়ে সুন্দর’। এনারা নাকি সব সামিয়া হোসেনের বন্ধু। মহা বিপদ। কোথায় জগতের অমোঘ নিয়মানুসারে স্ত্রী, স্বামীর পরিচয়ে পরিচিত হবে, আর আমাকে কিনা বলতে হয় আমি সামিয়া হোসেনের ইয়ে! যত্তোসব! 

প্রথমদিন বইমেলায় যাওয়া বিপদ। সেদিন এদেশের সূর্যসন্তান এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক ছাত্রলীগরা পুরো ময়দান দখল করে রাখি, আমি তাই বরাবরের মতো এইবারও প্রথমদিন বাসায় চলে আসছি। টুটুল ভাই আমাকে ধারণা দিসিলেন, বই ছাপা হয়ে গেছে, শুধু বাইন্ডিং বাকি আছে। বেহায়ার মতো শোনাবে বলে, ঠিক কবে আসবে আমিও আর আগ বাড়ায়ে জিজ্ঞেস করিনাই! কিন্তু আসলে প্রথম বই প্রকাশের একটু হলেও উত্তেজনা বিরাজ করছিলো অন্তরে। আমি রাতের বেলা টুটুল ভাইকে এসএমএসের মাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে জানতে চাইলাম বই কবে নাগাদ আসতে পারবে? 

টুটুল ভাই এক ঘন্টা পরে জানান দিলেন, আপনার বই তো চলে আসছে। কস্কি মমিন! মেলায় বই আসলো আমি আমি বাসায়। তাইতো কবি বলেছিলেন, রায়হান যেদিকে চায়, সাগর সেদিকেই শুকায় 🙁 

কী আর করা যাবে। পরের দিন দুপুর হতেই মন আর ল্যাবে থাকতে চায় না। স্যারকে ভুং ভাং দিয়ে বেরুলোম বইমেলার উদ্দেশ্যে। এবারের বই মেলার প্রধান বৈশিষ্ট্য মেলা প্রথম থেকেই ব্যপক জমজমাট। আর দ্বিতীয় দিনে আমাদের প্রধান অতিথি ছিলেন গ্রান্ড ডিজাইন খ্যাত তানভীরুল ইসলাম। উনি সিংগাপুর থেকে দুই তারিখ সাড়ে বারোটায় ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরনের বিকালেই চলে আসেন বইমেলায়। উদ্দেশ্য তার “দামী ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা”। 

তানভীর ভাইয়ের থেকে আমি গত তিন দিনের ছবি সংগ্রহ করেছিলাম মুক্তমনায় আপের আশায়। আজকে দেড়শর বেশি ছবি প্রসেস করে সেগুলো পিকাসাতে আপ করে রেখেছিলাম রাতে পোস্টে দেবো এই উছিলাম। এখন বাসায় ফিরে মরার পিকাসাতেই ঢুকতে পারতেছিনা। কী আর করা। প্রসেস করা ফাইল ল্যাবে রেখে আসায় এখন আবার কয়েকটা প্রসেস করে একটা একটা করে আপ করলাম। কালকে সকালে বাকি সকল ছবির লিংক দেবো, আগ্রহীরা দেখে নিতে পারবেন। 

ছবিতে ক্লিক করলে বড় হপে। 

মেলায় এবার ব্যপক ভীড় -১ 

 মেলায় এবার ব্যপক ভীড় -২  

   

অজয় রায় স্যার

গতকালের (৪ঠা ফেব্রুয়ারি) বইমেলায় বাংলা একাডেমী আয়োজিত আলোচনা সভার বিষয়বস্তু ছিলো, রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান ভাবনা। সেখানে সভাপতি ছিলেন শ্রদ্ধেয় অজয় রায় স্যার।   

   

মামুন ভাই এবার এতো এতো অবিশ্বাসের দর্শন কিনছেন যে ...... 😀

   

মিথুন ও লীন্মিয়া 😀

   

আমার পায়ের নীচে যার বেহেশত 😀

   

গত তিন চার বছর ধরে এই বংশীবাদক মেলার অন্যতম সেলিব্রেটি

   

ভুং ভাং ১

   

ভুং ভাং ২

   

ভুং ভাং ২

   

   

ডিজিটাল বাংলাদেশ ১। এই জিনিস টিপাইতে যাইয়া আমি ঝাড়ি খাইছিলাম 🙁

   

ডিজিটাল বাংলাদেশ ২

ডিজিটাল বাংলাদেশ ২   

   

   

সবশেষে দাজ্জাল