‘স্ত্রীর ভাগ্যে জন
আর স্বামীর ভাগ্যে ধন।’
অর্থাৎ সন্তান জন্মদানের বিষয়টি নারীর ভাগ্যের সাথে, সক্ষমতার সাথে, সম্পর্কিত এবং জড়িত। জনের জন্ম যে স্বামী ও স্ত্রী উভয়েরই সক্ষমতার প্রয়োজন নিরক্ষর জনগোষ্ঠী তা জানে না। জানাতে গেলে মানে না। এ জানানো ও মানানোর দায়িত্ব কার? নাকি এ জানাজানি ও মানামানির চেয়ে নারীর মৃতুই সহজলভ্য!
আবার অনেক সময় অর্থের অভাবের দায় নারীর উপর দেওয়ার জন্য উপরোক্ত প্রবাদটিকে উল্টে বলা হয় —–
‘স্বামীর ভাগ্যে জন
আর স্ত্রীর ভাগ্যে ধন।’
অর্থাৎ সামাজিক মনোভাব, দৃষ্টিভঙ্গি নারীকে আসতেও কাটে যেতেও কাটে। নারীর শাঁখের করাতের মত অবস্থা। প্রবাদ প্রবচন যখন যেভাবে সম্ভব সেভাবে নারীকে আঘাত করে, আক্রমণ করে এবং তা নারীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়।
সবাই জানি যে দাম্পত্য সম্পর্কে সন্তানের প্রত্যাশা মানব জীবনের এক স্বতঃসিদ্ধ বিষয়। আর সামাজিক ইতিহাস বলে — ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠায় নিজের সন্তানকে উত্তারাধিকার বানানোর আকাঙ্ক্ষা থেকে বিয়ে প্রথা চালু করে নারীকে ঘরে বন্দী করার ষড়যন্ত্রের শুরু।
এ সন্তান কখনও কখনও নারীর জন্য বোঝা। সন্তান জন্ম দিয়ে বাবা হাওয়া। লাপাত্তা। মাকে সন্তানের দায়ভার বহন করতে হয়। আবার সন্তান না হলে নারীকে শুনতে হয় অপবাদ। বন্ধ্যা, বাঁজা। আটকুঁড়া। আটকুঁড়া নারীর মুখ দেখলে যাত্রা ভঙ্গ। এ আটকুঁড়া রাণীকে নিয়ে লোক গাঁথাও রয়েছে। আরও কত কি অপরাধে অপরাধী করা হয় বন্ধ্যা নারীকে। জীবনও দিতে হয় সন্তান না হওয়ার তথাকথিত অপরাধে।
যেমন ‘সন্তান না হওয়ায় স্ত্রী হত্যা’ শিরোনামে গত ২৬ অক্টোবর ২০১০ তারিখে দৈনিক মানব জমিন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী সন্তান না হওয়ায় স্ত্রী তাহেরা বেগম তারাকে হত্যা করেছে পটুয়াখানী জেলার বাউফলের দক্ষিণ হোসনাবাদ গ্রামের আবদুর রহমান ওরফে রহমত। ১২ বছর তাদের বিবাহিত জীবন। কিন্তু কোন সন্তান না হওয়ায় সাত আট বছর যাবৎ মারধর চলছিল। এর মধ্যে মেয়েটি নিজে,তার মা বাবা অথবা অন্যান্য পরিবার পরিজন কেউই এর কোন সুরাহা করেনি। সর্বশেষে সন্তান না হওয়ার অপরাধে লাশ হয়েছে।
সন্তান না হওয়ায় ‘খুলনায় স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা’ শিরোনামে গত ২৫ আগষ্ট ২০১০ তারিখে দৈনিক ভোরের কাগজ এর খবর অনুযায়ী খুলনার পাইকগাছের কপিলমুনির রেজাকপুর গ্রামের সোহরাব গাজীর সঙ্গে প্রায় ১৭ বছর আগে বিয়ে হয় একই গ্রামের অরুণা বেগমের। সন্তান না হওয়ায় যৌতুকের দাবিসহ অমানুষিক নির্যাতন করত। বহুবার পারিবারিকভাবে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত স্বামী বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে মেরুদন্ড ভেঙে দিলে খুলনায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে অরুণা মারা যায়।
স্ত্রী দুইজন না হয় নির্যাতনের শিকার হয়েও ঘর করেছে নিজেদের অধঃস্তন আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থানের কারণে। তালাকের মত এমন সহজ পথ থাকতে,ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে বহু বিয়ের সুযোগ থাকতে কেন বাঁজা স্ত্রী নিয়ে এক স্বামী এক যুগ ও অন্যজন প্রায় দেড় যুগ ধরে ঘর করল? কেন দ্বিতীয় বিয়ে করেনি? আর এ সব না করতে পেরে অক্ষমের আক্রোশ ঢেলেছে স্ত্রীদের উপর।
তাছাড়া, সন্তান জন্মদানের যে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তা আমাদের দেশের অগণিত মানুষ জানে না। তাই সন্তান না হলে ডাক্তারী পরীক্ষা ছাড়াই স্ত্রীকে অপবাদ দেওয়া ও স্বামীর একাধিক বিয়ের প্রচলন প্রচলিত। আর ডাক্তারী পরীক্ষায় যদি পুরুষটির কোন সমস্যা থাকে তবে নারীটিকে তা মেনে নেওয়ার মত সামাজিকীকরণ তো হয়েই আছে। সন্তান জন্মদানে অপারগ স্বামীকে তালাক দিয়ে সন্তানের জন্য স্রী অন্যত্র বিয়ে করার উদাহরণ আমি এখন পর্যন্ত আমার আশেপাশে পাইনি, তবে সন্তান জন্মদানে অপারগ স্রীকে তালাক দিয়ে বা রেখে একাধিক বিয়ে করার ঘটনা আমি নাম ঠিকানাসহ ডজন খানেক বলতে পারব। হিন্দু মুসলিম উভয় ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেই এ নিয়ে উদাহরণ আছে।
আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অধিক অর্থ খরচ করে উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করে সন্তান ধারণের ব্যবস্থাকে আমি বিবেচনায় নিচ্ছি না।
জৈবিক মা বাবা না হতে পারলে দত্তক নিয়েও তো মা বাবা হওয়া যায়। যদিও ধর্ম ও আইন এখানে বাঁধ সাধবে।
জৈবিক মা বাবাই যে শুধু মা বাবা নয়,তা সর্বজনগ্রাহ্য ও সর্বজন স্বীকৃত করতে হবে। তাই তো নারীবাদীরা maternal death কে মাতৃ-মৃত্যু না বলে বলে প্রসূতি মৃত্যু। কারণ প্রসব সংক্রান্ত জটিলতায় মৃত্যু। আর সন্তানকে উদরে ধারণ না করেও মা হওয়া যায়। পালক বাবা হওয়া যায়। আর এ মা ও বাবা হওয়ার মত মনোভাব গড়তে হবে। তাহলে তাহেরা আর অরুণাদের মা না হতে পারার জের জীবন দিয়ে শোধ করতে হবে না।
তাছাড়া, মা হওয়া একজন নারীর যেমন আকাঙ্ক্ষা হতে পারে , তেমনি মা হতে না চাওয়াও একজন নারীর ব্যক্তিগত ইচ্ছা- অনিচ্ছা এবং অধিকারও হতে পারে । তাহেরা বা অরুণার ক্ষেত্রে যদিও মা না হওয়ার কোন অনিচ্ছা ছিল না, তবে অন্য যে কোন নারী স্ব- ইচ্ছায় জৈবিক মা বা অন্যভাবেও মা হতে না চাইতেই পারে। সেক্ষেত্রেও অনেক নারী স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়। সেই নারীকে নির্যাতন করার অধিকার স্বামীকে কে দিল ?
সম্পূর্ন ভুল । ছেলে মেয়ে ্দুজনের পরীক্ষা নিলে তবেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। কারন সেক্ষেত্রে বন্ধাত্ব জনিত সমস্যা আসবেই না। যারা কোন বন্ধা নারী বা পুরুষকে বিয়ে করবে জেনে করবে।
শুধু বন্ধাত্ব না, রক্ত, ড্রাগ সব কিছুই বিয়ের আগে পরীক্ষা করা উচিত। এইচ আই ভি যাদের আছে, তাদের বিয়ে দেওয়ার কি দরকার? এগুলো মোটেই ব্যাক্তি স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ না। কারন এগুলো টেস্ট না করলে অন্য কারুর ক্ষতি হতে পারে।
যদি কেও বিয়ে বা বাচ্চা না করে তাহলে এসব টেস্ট করার প্রশ্ন নেই। কিন্ত কেও বাচ্চা করতে চাইলে এসব টেস্ট করা উচিত এবং তা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। কারন তা না হলে অন্যের ক্ষতি করা হয়।
আমি যদি বাড়িতে মদ খেয়ে বসে থাকি, যতই মদ খায় না কেন, পুলিশ আমার ্নিশ্বাস টেস্ট করতে পারে না। সেখানে ব্যাক্তি স্বাধীনতা স্বীকৃত। কিন্ত যখন ড্রাইভ করছি, তখন যেকোন মুহুর্তে পুলিশ আমার ব্লাড বা নিশ্বাস টেস্ট করতে পারে। এটাকে কেও ব্যাক্তিস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ বলে না। কারন অন্যর ক্ষতি করার স্বাধীনতা কারুর থাকা উচিত না।
ইয়ে একটা বোকা প্রশ্ন করি, মনে করেন আমি সন্তান নিতে চাই (বায়োলজিকাল সন্তান) কিন্তু আমার স্ত্রী চান না (হতেই পারে)। সে ক্ষেত্রে সমাধান কী?
@তানভীরুল ইসলাম,
ভালো সমাধান আছে। আপনার এবং আপনার স্ত্রীর দ্বারা তৈরী এমব্রীয় কোন হোস্ট মাতৃগর্ভে স্হাপিত এবং ডেভেলপড হয়ে সেখান থেকে শিশুটি জন্ম নেবে। শিশুটি আপনাদেরই জেনেটিক সিগন্যাচার বহন করবে। এক্ষেত্রে আপনারা একজন সারোগেট (surrogate) মাতা যোগার করবেন। পশ্চিমের বাবা মারা ভারতে এসে এটা করছেন , অবশ্যই অর্থের বিনিময়ে। অনেক সময় আত্মীয়রাও এটা করতে পারবে। ভারতের মতই বাংলাদেশের আইনেও এ ব্যপারে কিছু বলা না থাকলেও কোন সমস্যা নেই। আপনি চাইলে এর ব্যবস্হা আমি করে দিতে পারবো।
@সংশপ্তক, আমার মনে হয. উনি সন্তান লালন-পালনের কথা বলছেন। সন্তান উতপাদনের প্রক্রিয়াটা বিজ্ঞান সহজ করে ফেললেও সন্তান বড় করার প্রক্রিয়াটা আগের মতই কঠিন রয়ে গিয়েছে।
@পৃথিবী,
সংশপ্তক ঠিকই ধরেছেন বলে আমার ধারণা। তবে তানভীরুল ইসলামই ভাল বলতে পারবেন —- উনি কি জানতে চেয়েছিলান।
@সংশপ্তক,
কিন্তু ইনভিট্রো ক্ষেত্রে ছেলেদের জন্য স্পার্ম জোগান যেওয়া যেমন সহজ, মেয়েদের জন্য কি সেটা তেমন সহজ? (আমি আসলেই জানি না) আর ‘মা হতে চাইবে’ সে এই ঝামেলা খুব বাধ্য না হলে (দুজনের কারো সেমি-ইনফার্টালিটি) নেবে না মনে হচ্ছে। তার মানে দাড়াচ্ছে সে আসলে ‘মা হতে চাচ্ছে না’। তখন হাসবেন্ডের করণীয় কী হতে পারে?
“আজ দুজনার দুটি পথ দুটি দিকে…” টাইপের কিছু? :-/
@তানভীরুল ইসলাম,
নারীদের ডিম্ব সংগ্রহ প্রক্রিয়া একটু জটিল তো বটেই। লং বা শর্ট কোর্স যেটাই বলুন, সম্পন্ন হতে দু সপ্তাহ পর্যন্ত লেগে যায়। এছাড়াও এটা করতে হয় , কঠোর নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে , মা না হতে চাওয়ার মূল কারনটা কি ? শুধুমাত্র স্বাভাবিক গর্ভবতী হওযার দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া একমাত্র কারন হলে , ইনভিট্রো একটা বিকল্প। কিন্তু ইনভিট্রোতেও আপত্তি থাকলে , অন্য নারীর দান করা ডিম্ব ব্যবহার করা যেতে পারে। সেখানেও আপত্তি থাকলে দত্তক নেয়া যায় যেটা আবার আপনার জীন বহন করে না। এটা যদি আবার আপনি না চান তবে সেই পরিস্হিতিকে ডেডলক বলা যায় , কারন তখন কেবল মাত্র দুটো সমাধান থাকে:
ক) আপনার সন্তান লাভের দাবী পরিত্যাগ
খ) দাবীতে বহাল থাকা
ক বেছে নিলে সমস্যার ওখানেই সমাপ্তি এবং সেই সাথে ভবিষ্যতে আপনার স্ত্রীর মনোভাব পরিবর্তনের সম্ভাবনা সব সময়ই থাকছে কারন বিবর্তনের নিয়মানুযায়ী একটা পর্যায়ে সকল প্রাণীই তার জীন ছড়িয়ে দিতে চায়। তবে আপনার স্ত্রী হয়তো মা হতে চায় কিন্তু আপনার জীনকে তার জন্য উপযুক্ত মনে করছে না এটাও হতে পারে এবং তখন নীচের সমাধান খ প্রযোজ্য।
খ বেছে নিলে আপনাকে ডাক্তারের বদলে একজন উকিলের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
এভাবে আপনি একটা যৌক্তিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করলেন যার জন্য কেউ আপনাকে দোষারোপ করতে পারবেনা।
@সংশপ্তক,
ব্যাপারটি জানার একটু কৌতুহল হচ্ছে। কারো জীন কেউ বহন করছেনা এর মানে কি হতে পারে অর্থাৎ দুইজন পুরুষ মানুষের মধ্যে জীনের কি পার্থক্য থাকতে পারে? প্রানীদের মধ্যে যারা পুরুষ মানুষ তারাতো একই শ্রেনীতে পরে এবং তাদের সবার জীনতো বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ভিন্ন ভিন্ন হওয়া ছাড়া সবই এক। এখন কোন সন্তান যখন বাবার জীন পায় সেই একই জীনতো একজাক্ট একই বৈশিষ্ট্য নিয়ে পৃথিবীর অন্য হাজার হাজার মানুষের মধ্যে বিরাজ করতে পারে। আর তা ছাড়া বাবা ও সন্তানের বৈশিষ্ট্যগুলিতো আর একজাক্ট একই রকম হয়না। এমনও হতে পারে বাবার সাথে সন্তানের জীনের মিলের থেকে অন্য একজনের জীনের মিল বেশী হতে পারে। তাহলে কেঊ যদি মনে করে তার জীনটাই পৃথিবীতে ইউনিক অর্থাৎ পৃথিবীর অন্য কেউ সেই জীন ধারন করছেনা এটা কি ঠিক? আমি জানিনা বুঝাতে পারলাম কিনা।
ক্ষমা করবেন, এই সম্পর্কে আমার ধারনা কম। এই সম্পর্কে আলোচনার কোন লিংক যদি জানা থাকে তা দিলেও চলবে। সময়ের জন্য ধন্যবাদ।
@ব্রাইট স্মাইল্,
Gene School – এ একটু ঢু মেরে দেখতে পারেন। এর পর দরকার হলে ডোজ বাড়িয়ে দেয়া যাবে। 🙂
@তানভীরুল ইসলাম,
আপনার বোকার ভান করে বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের উত্তর সংশপ্তক সংক্ষেপে চমৎকারভাবে দিয়েছেন। তবে Surrogate motherhood ব্যবসায়িক ভিত্তিতে শুক্রাণু,ডিম্বাণু ও ভ্রুণের লেনদেন হয় বলে অনেক দেশ নিষিদ্ধ করেছে। যেমন, অস্ট্রিয়ায়।
@গীতা দাস,
জোরপূর্বক না হয়ে ব্যাবসায়ীক ভিত্তিতে হলে কী সমস্যা বুঝতে পারছি না। 😕 (এটাও বোকার প্রশ্ন)
@তানভীরুল ইসলাম,
জোরপূর্বক বলতে আপনি কি বুঝিয়েছে তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। তবে, ব্যবসায়িক শব্দটি ব্যবহার করলে নৈতিকতার প্রশ্নে আপেক্ষিকতার প্রসঙ্গটি তুলে ব্যাবসায়ীক ভিত্তিতে শুক্রাণু, ডিম্বাণু ও ভ্রুণের লেনদেন কোন সমস্যা নয় বলে বিতর্ক চলতে পারে অনায়াসে।
ধন্যবাদ বোকা প্রশ্নটি করে আরেকটি ধারাবাহিক জবাব দেওয়া নেওয়ার মত পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য।
খুব ভালো লাগলো গীতাদির সুন্দর লেখা।মুক্তমনায় এসেই এই লেখাটা পড়ে মন ভালো হয়ে গেলো।
এই বিষয় নিয়ে আমি একটা গল্প লিখেছিলাম মুক্তমনায়।যদিও গল্পের পাঠক হয়তো কম ছিল। কিন্তু বিষয় বস্তু অনেকটা একরকম।@ গীতাদি আপনি দেখতে পারেন “স্বপ্নের শিশু” গল্পটার নাম।যদি সময় পান। অবশেষে নববর্ষের শুভেচ্ছা :rose:
@আফরোজা আলম,
আপনার লেখা ‘স্বপ্নের শিশু”পড়লাম।
এই তো নারীর জীবন যাপন।
গল্প তো বাস্তব থেকেই উপাত্ত সংগ্রহ করে। আর আপনার গল্পও এর ব্যতিক্রম নয়।
আপনাকেও নববর্ষের শুভেচ্ছা। ভাল থাকবেন আর আমাদের কবিতা উপহার দেবেন।
@আফরোজা আলম,
আপনার সেই “স্বপ্নের শিশু” গল্পটি আমার কাছে ভালো লেগেছিল। পাঠকরা যাতে সেটি সহজে পেতে পারে সেজন্য এখানে লিংকটা দিয়ে দিলাম।
আমাদের সমাজের উল্লেখযোগ্য সমস্যাটি নিয়ে লেখায় আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।পৃথিবী জুড়েই এ সমস্যা বিদ্যমান।
এই কথাটির সাথে একমত কারন মানুষের ব্যক্তিগত ইচ্ছার উপর অন্য কারো হস্তক্ষেপের অধিকার নেই।তা যদি হয় মাতৃত্বের মত একজন নারী’র একান্ত ব্যক্তিগত স্বাস্থজনিত ব্যপার তবে আরো সিরিয়াস হওয়া চাই।কারন নারীদের অধিকার আজ পর্যন্ত বিশ্বের অধিকাংশ দেশে নিশ্চিত নয়। আর অধিকার আদায়ের প্রথম শর্তই আলোচনা।
তাই আলোচনায় মনে করতে চাই যে শুধু নারীই নয় সকলের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে তাই নারী ও পুরুষ বিয়ের বা সম্পর্ক স্থাপনের পুর্বেই “সন্তান” জন্মের ব্যপারে ভিন্নমত থাকলে তা নিজেদের মাঝে পরিষ্কার ভাবে আলোচনা করে নেয়া দরকার।
এর ফলে সঙ্গী পুরুষটির পিতৃত্ব গ্রহনের ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছা’র অধিকার সুনিশ্চিত হবে।
সেই সাথে ভ্রুণ হত্যা যা জনক-জননীদের দ্বারা সংগঠিত “মানব হত্যা” রোধ করবে এবং শিশুটির ও “বাঁচার অধিকার” নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
তার জন্য পুরুষ ও নারী উভয়কেই সম্পর্কের শুরুতেই নিজেদের ব্যক্তিগত মতামত,আর ভিন্নমত থাকলে অবশ্যই তা আলোচনা করতে হবে।
@অসামাজিক,
আমাদের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে এই মূহুর্তে তা কি করা সম্ভব?
@গীতা দাস,
আমাদের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে এই মূহুর্তে সন্তান ধারনে নারী’র অনীহা থাকাও সম্ভব নয়।
যেহেতু সন্তানে অনীহা একটি “স্পেশাল” ইচ্ছা, তাই সঙ্গী’র সাথে আলোচনা ছাড়া এই ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে গেলে অন্যকারো অধিকার ক্ষুন্ন হতে পারে।
একজন নারী সম্পর্ক বা বিয়ের পরে তার সন্তান ধারনে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে আহেতুক ঝামেলা-কোন্দল সৃষ্ঠি হবে এবং পরিবার-পরিজন তার প্রতি বিরুপ মনোভাব পোষন করে তাকে নির্যাতন করার সম্ভবনা সৃষ্ঠি হবে।
যেহেতু বর্তমান অবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যেই নারী জাগরন হচ্ছে সুতরাং সন্তান ধারনে অনিচ্ছুক নারীদের বিয়ে বা সম্পর্কের আগেই এ ব্যপারটি পরিষ্কার করে নিতে হবে নইলে, নিগৃহীত হবার সম্ভাবনা প্রবল।
@অসামাজিক,
অন্য কে?
তাহলে কি বিয়ের আগে উভয় পক্ষের এ নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে বিয়ে ঠিক হবে কি হবেনা?
একমত হতে পারলাম না। আজ যদি আমার মেয়ের জন্যে কেউ বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে আর সঙ্গে শর্ত জুড়ে দেয় যে তারা বিয়ের আগে মেয়ের বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষার সার্টিফিকেট দেখতে চায়, কিংবা মেয়েকে জিজ্ঞেস করতে চায় সে সন্তান নিতে রাজী কি না, ব্যাপারটা কেমন হবে? কয়জন মা-বাবা এই শর্তগুলো মেনে নিতে রাজী আছেন? খদ্দের গরুর হাটে বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করতে পারে- গাভী দুধাল কি না, কিন্তু বিয়ে?
এই সন্তান নেয়া আর না নেয়া বা পছন্দ অপছন্দের ব্যাপারটাও তো আপেক্ষিক। স্বামী স্ত্রী উভয়েই যা আজ চায়, কাল নাও চাইতে পারে, অথবা আজ যা চায়না কাল চাইতেও পারে।
নারীর ইচ্ছে সন্তান নিবে মা হবে পুরুষ চায়না, কিংবা পুরুষের ইচ্ছে বাবা হবে কিন্তু নারী চায়না, এরকম লিভিং টুগেদার বা অবিবাহিত শতশত কেইস দেখেছি, সন্তান নেয়া বা না নেয়ার কারণে তারা ঘর ভাঙ্গেনি।
ভালবাসাকে স্বার্থের পদতলে জলাঞ্জলি দিলে সেখানে সুখপাখি কোনদিনই আসবেনা।
@আকাশ মালিক,ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। বিষয়টি সংবেদনশীল তাই সেটি মাথায় রেখেই মন্তব্য করেছি আমি। আপনার প্রশ্নের জবাবগুলো পয়েন্ট অনুসারে দিচ্ছি,
এই “অন্য কেউ” হল নারী’র সঙ্গীটি। স্বাভাবিক ভাবে কোন সন্তানকামী পুরুষই হতে পারে।বিয়ের পর যদি তার স্ত্রী বলে আমি সন্তান চাই না, আর স্বামী যদি বলে আমি সন্তান চাই, তাহলে যে কলহের সম্ভাবনা সেটা এড়ানোর জন্যই “সন্তান ধারনে” অনাগ্রহী নারী-পুরুষের উচিত তার সঙ্গীকে নিজস্ব মত ব্যক্ত করা।
অবশ্যই আলোচনায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে নইলে স্বাভাবিক “Social Norms” অনুযায়ী কেউই সন্তান ধারনে অপারগতা মেনে নিবে না। এবং এর ফলে সমাজিক বিশৃংখলার সম্ভাবনা বাড়ে।
বুঝতে পারছি ব্যপারটা আপনার কাছে আনন্দের হবে না। তবে বিয়ের আগে প্রত্যেক নারী’র বন্ধ্যাত্ব এবং পুরুষের প্রজননক্ষমতা এবং H.I.V পরীক্ষা করে দেখা উচিত।সম্পর্ক স্থাপনের আগে নারী-পুরুষ উভয়েরই একে অপরের শারীরিক সুস্থতা অবস্থা জানার অধিকার রয়েছে। আর ব্যাপারটি কেমন হবে? এটিই তো তথ্যসমৃদ্ধ মুক্তসমাজ গড়বে।সচ্ছতা পরিবার থেকেই শুরু হবে।
কয়জন বাবা-মা এরকম শর্ত মেনে নিতে রাজী আছেন?
নেই বলেই তো বিয়ের পর নানান শারীরিক সমস্যা আবিষ্কার হবার পর শুরু হয় অমানবিক অত্যাচার অথবা নারী-পুরুষ বন্চিত হয় যৌন অধিকার থেকে এবং ফলাফল বিশৃংখল পরিবার,polygamy!
মানুষের সমস্যাগুলো পশুপ্রাণীর চেয়ে বহুমাত্রায় তীব্র তাই আমাদের দরকার আরো সচ্ছ তথ্যভিত্তিক সামাজিক সম্পর্ক।আর আমরা তো সাহিত্যের বা ধর্মের কল্পিত সমাজ চাই না বলেই তো তথ্য অধিকার,সততা ও জবাবদিহীতা এবং বিজ্ঞানের ব্যবহার মানুষের কল্যাণে ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
আপেক্ষিকতার উপর ছেড়ে দিলে তো মানবাধিকার নিশ্চিত হবে না! যেসকল নারী-পুরুষ নিজ অধিকারের ব্যাপারে সচেতন তাদের এবং মুলত যেসকল নারী সন্তান গর্ভধারন করতে রাজী নয় তাদের এ ব্যাপারে পরিষ্কার মনোভাব গঠন করে মতামত প্রকাশ করতে হবে নইলে অধিকার সংরক্ষিত হবে না।
এটাই চির সত্যকথা, সুখপাখি দেখতে চাইলে। নারী বা পুরুষ যদি ভালবাসার স্বার্থে পরিবার গঠন না করে তবে সেখানে শুধু মানবাধিকার নয় পুরো মানবতাই ক্ষুন্ন হয়।
@অসামাজিক,
এখন ব্যাপারটা একটু জটিল দিকে মোড় নিচ্ছে, অর্থাৎ জীববিবর্তনের ব্যাখ্যার প্রয়োজন হবে। আপনার প্রশ্নটা সমকামিতার বিরোধীদের প্রশ্নের মত মনে হলো, যারা বলেন- মানুষ যদি সমকামী হয়ে যায় তাহলে দুনিয়ায় মানুষ আর জন্মাবেনা বা রি-প্রোডাকশন বাড়বেনা। দেখি বিষয়টা অভিজিৎ দা’র নজরে পড়ে কি না। তবে আমি কিন্তু পরিবার গঠন করা না করা বুঝাইনি, কারণ একসাথে জগতের সকল মানুষ বন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছেনা, বা সকলেই সন্তান গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করছেনা।
@আকাশ মালিক ভাই, জটিল না ভাই! 😛 অভিজিৎ দা’র হস্তক্ষেপে দেয়ার মত গুরুত্বও নেই। আমি বিজ্ঞান জানি না ভাই ঐ লাইনে কিছু উদ্দেশ্য করি নাই।
মানবতাক্ষুন্ন হয় বলতে আসলে, পারিবারিক কলহ,পারিবারের অন্যান্য সদস্যদের অস্বস্তিপুর্ন জীবন,দাম্পত্য কলহের মাঝে অসহায় অবস্থায় হাজার হাজার শিশু’র জীবনের জড়িয়ে যাওয়া এবং এসব কারনে সেসব মানুষের জীবনের দুঃখ যন্ত্রনা হওয়া বুঝিয়েছি।
আমি ভাই সমকামী বিরোধি না।তবে ব্যক্তিগত ভাবে এটা উৎসাহিত করি না তারপরেও ২ বন্ধু আছে আমার যারা সমকামী ও বিয়ে করেছেন আর ২ জনের সম্পর্ক সুতোয় ঝুলে আছে এবং কথা হলে উভয়কেই বলি যে, সম্পর্কের জোয়ার-ভাটা স্বীকার করে নাও এবং সুন্দর অভিজ্ঞতাগুলো বেশি বেশি মনে করে ঝগড়া মিটাও।
@অসামাজিক,
কেনো ব্রাদার? আর কি কি উতসাহীত করেন না আপনি? হিন্দু হওয়া উতসাহিত করেন, কিংবা নারী হওয়া বা হিজড়া হওয়া? আমি কোন এক জাগায় বলেছিলাম আমি চাই রিটার্ডেন্ট বাঙ্গালী ভ্যালু বাংলার প্রত্যেকটি কোন থেকে সমূলে উতপাটিত হোক। এবং এটা হচ্ছে এর একটা কারণ। এইটা একজন আপাত ভাল মানুষকেও একটি প্লজিবল সাউন্ডিং নির্দয় পশুতে পরিনত করে। আমিতো মনে করি প্রত্যেকটি বাঙ্গালেরই সমকামী হয়ে যাওয়া উচিত। বিষমকমী হয়ে হাঁসের মতো সঙ্গম করে করে পই পই করে কচিকাচা পয়দা করে তারা জনসংখ্যা বানিয়েছে ষোল কোটি!!! পরবর্তী প্রজন্ম কোথায় থাকবে কি করবে বা খাবে এর কোন ভাবনা নেই, সঙ্গম আমার চাই-ই। আমি মনে করি রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে গেই জিন আবিষ্কার করে এবং আবিষ্কার করে মানব ট্রান্সফেকশনের জন্য উপযুক্ত একটি ভেক্টর, প্রত্যেকটি বাঙ্গালকে বাধ্যতামূলকভাবে ট্রান্সফেক্ট করে গেই বানিয়ে দেওয়া উচিত :laugh: ।
@আল্লাচালাইনা,
:laugh: :laugh: :thunder:
আপনার মন্তব্য আসলেই ক্লিক করি এধরণের কিছু একটা পড়ার আশা নিয়ে। :guru:
@আল্লাচালাইনা,
ভাই, হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরে যাচ্ছে। :laugh:
@আল্লাচালাইনা,একটা সিঙ্গেল ক্লোজআপ শটে ছায়াছবি’র পাকা পরিচালকের মত পুরো “পরিচয়” পর্ব তুলে আনার জন্য ধন্যবাদ।
বিপ্লব পাল বিভিন্ন জায়গায় খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছিল যে কেন সমকামিতা উৎসাহিত করার প্রয়োজন নেই। সমাজ আর রাষ্ট্রে’র বিষয়ের প্রতি আমার দৃষ্টিভংগী গত পার্থক্যের কারনেই আমিও উৎসাহিত করি না।
মানবতাবিরোধীতা,সমাজবিরোধীতা,ব্যক্তি স্বাধীনতা বিরোধীতা সহ আরো অনেক কিছু উৎসাহিত করি না আমি। এরকম ভাবে যোগাযোগ থাকলে সবই জানবেন।
তবে জেনে রাখুন আপনার সাথে আমার একটি মতের মিল,
আমি যখন দেখি স্ব-ঘোষিত প্রগতিশীল কেউ বলে উঠে যে,[…] প্রত্যেকটি বাঙ্গালকে বাধ্যতামূলকভাবে ট্রান্সফেক্ট করে গেই বানিয়ে দেওয়া উচিত।
তখন আমারো ইচ্ছা করে কিছু কিছু বাঙ্গালের চিন্তাধারা সমুলে উৎপাটন করে ছুড়ে ফেলা দরকার কারন […] এইটা একজন আপাত ভাল মানুষকেও একটি ‘এরোগেন্ট’ সাউন্ডিং নির্দয় পশুতে পরিনত করেই থামে না একজন সমাজবিরোধী ও মানবতাবিরোধী পশুতে পরিনত করে।
Sexual Orientation গড়ে উঠে যে বয়সে, সে সময় কোন সমকামী’র সান্যিধ্য বা পরশ না পেলে বোধহয় সমকামিতার সন্জীবনি সুধা পান করার ইচ্ছা সবার মাঝে জাগে না।তবে স্পেশাল কেস থাকতে পারে ‘যারা জোর করে পান করে’ সেক্ষেত্রেও উনাদের জন্য আমার কোন স্পেশাল নেতিবাচক ধারনা নেই বরং আছে স্পেশাল সহমর্মীতা।
@অসামাজিক,
সামাজিক গবেষনাতে এটাই বেশী সত্য বলে প্রমানিত। কিন্ত পলিটিক্যাল কারেক্ট নেসের জন্যে অনেকেই স্বীকার করতে চাইছে না। বহুদিন আগেই প্রমানিত কেও সমকামী হয়ে জন্মায় না। তাই তাদে্রকে সংখ্যালঘুদের সাথে তুলনাটাও বেশ হাস্যকর লাগে বিশেষত যখন এটাও প্রমানিত সমকামীদের থেকে উভকামীদের সংখ্যা বেশী।
তবে গবেষনার মাধ্যমেই এইসব মিথগুলো কেটে যাবে। বিজ্ঞানের গবেষনার পথেই সত্যের উন্মোচন হবে।
@বিপ্লব পাল,আধুনিক ও সচেতন মহলে জন্ম নেয়া এসব ‘মিথ’ যত শীঘ্র কাটবে সাধারন নাগরিকদের জন্য ততই ভাল।
পথ যারা দেখাবে তাদের তো এগিয়ে থাকতেই হবে!
নিশ্চয়ই, কথাটুকু অনেক ভালো লাগলো। একমত।
@ব্রাইট স্মাইল্, :rose2:
নারীর প্রতি এসমস্ত অপবাদ অত্যাচার পুরুষতন্ত্রের অহংবোধ (যা ধর্ম বা সমাজ থেকে আসে) দায়ী। পুরুষ বা নারীর দৈহিক বিচ্যুতির কারণে বন্ধ্যা বা বন্ধ্য হতে পারে। কিন্তু এর দায়ভার নারীকেই বেশি বহন করতে হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে এককভাবে নারীকে বন্ধ্যা বলার ভাবনাটা মাঠে মারা গেছে। পিতৃতন্ত্রের শাস্ত্রীয় বিধিবিধান যেদিন দূর হবে, নারী পাবে সবক্ষেত্রে সমান অধিকার। সেদিনই নারী সমস্ত অত্যাচার থেকে মুক্তি পাবে।
@মাহফুজ,
কোথায় যেন পড়েছি— রাত যত গভীর , ভোর তত কাছে। কাজেই নারী মুক্তি পাবেই।
বিয়ের জন্য মেয়ে দেখা হচ্ছে। একটা মেয়ে দেখে পছন্দ হয়েছে। পরে শুনলো যে মেয়ের ফ্যামিলিতে কিছু এবনরমালিটি আছে। তো আমি বললাম- বাচ্চাকাচ্চা না নিলে বা না হলে সমস্যা কি? মা’র ঝাড়ি- আমি নাকি বোকার মত একটা কথা বললাম! ঝাড়িটা খেলাম এই গতকাল। ভাবছিলাম- বাবা না হয় এমন বলতে পারে। কিন্তু মা এমনটা বলে কি করে! স্বার্থের সময় মনুষত্বগুলো কি এভাবেই হারায়!
আচ্ছা বিয়ে-শাদী কি শুধু সন্তান উৎপাদনের একটা লাইসেন্স ছাড়া আর কিছু নয়?
@শ্রাবণ আকাশ,
ইয়ে মানে, কথাটা শুনতে একটু কেমন যেন খারাপ শোনালো না? আপনি এখানে একদিকে বাবা মাকে দিয়ে মেয়ে দেখিয়ে এবং ‘একটা’ মেয়ের চেহারা দেখে পছন্দ করে অ্যরেঞ্জ বিয়ে করার মত ট্রেডিশানাল কথা বলছেন আবার অন্যদিকে সন্তান উৎপাদনের মত বেসিক ট্রেডিশানকে প্রশ্ন করছেন। কথা দুটো আমার কাছে বেশ কন্ট্রাডিকটরি শোনালো কিন্তু :-/ । আপনি যদি সন্তান উৎপাদনের রাষ্ট্রীয় লাইসেন্স না চেয়ে একটা দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব, নির্ভরশীলতা, বা পার্টনারশিপের কথা চিন্তা করেন তাহলে কী সম্পর্কটা একটু অন্যভাবে করা উচিত না?
@শ্রাবণ আকাশ,
মেয়েদেরকে যদি মুক্ত-মনার লোকজন পণ্য হিসেবে দেখে তখন হতাশ হওয়া ছাড়া আর গত্যন্তর নেই।
@গীতা দাস,মাফ করবেন অনধিকার প্রবেশের জন্য। আপনার মন্তব্য পড়ে একটু রসিকতা করতে চাইছি, ছোট ভাইয়ের মত। 🙂
শ্রাবণ আকাশের বলা, “বিয়ের জন্য মেয়ে দেখা হচ্ছে। একটা মেয়ে দেখে পছন্দ হয়েছে”। কথাটা দেখে হতাশ হয়েছেন মেয়েদের পণ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে, কিন্তু আমি বেশ অনেকক্ষন হাসলাম ভেবে যে, শ্রাবণ আকাশ ভদ্রলোক, যার ছবি দেখে বেশ পড়ুয়া এবং কথাবার্তায় বেশ পরিবার কেন্দ্রীক মনে হল তিনি বেচারা কি বলে অন্যায়টা করলো??
পারিবারিক মত অনুযায়ী বিয়ের জন্য অন্যকিছু তো নয়, উনারা মেয়েই দেখছে 😀 ।যেহেতু প্রেম করে বিয়ে করছে না তাই কাউকে বিয়ে করার আগে দেখতে তো হবে অন্তত 😛
আর, যেহেতু বিয়ের জন্য পাত্রী দেখছে সুতরাং পছন্দ হওয়াটাই দরকার, তো পছন্দও একজন কেই করেছে,একাধিক করলে কি যে হত :laugh: ??
আমি আসলে পরিষ্কার ভাবে লিখতে পারি না,ভুল হলে ‘ক্ষমা’।
শ্রদ্ধা রইলো।
@অসামাজিক,
পারিবারিক মত অনুযায়ী বিয়ের জন্য অন্যকিছু তো নয়, উনারা মেয়েই দেখছে Grin ।যেহেতু প্রেম করে বিয়ে করছে না তাই কাউকে বিয়ে করার আগে দেখতে তো হবে অন্তত Razz
আর, যেহেতু বিয়ের জন্য পাত্রী দেখছে সুতরাং
, তো পছন্দও একজন কেই করেছে,একাধিক করলে কি যে হত Laugh ??
ছোট ভাইয়ের যুক্তির কাছে আমার :thunder: হওয়া ছাড়া আর কি করার আছে?
@গীতা দাস, দিদি এতো কালো মেঘ!!!! 🙁 …… আমি কিন্তু সুপ্রভাতের প্রস্ফুটিত গোলাপ হবেন আশা করেছিলাম। তবে ছোটভাই স্বীকৃতি পেয়ে আপনাকে, :rose2:
@বন্যা আহমেদ, @গীতা দাস,
মনে হয় এমন একটা ‘বাঁশ”ই দরকার ছিল। একেবারে জায়গামত দিয়েছেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ। মাঝে মাঝে এরকম ধাক্কা না খেলে ঘুমিয়ে পড়া মনটা জাগে না।
জানেনই তো আমাদের প্রেক্ষাপটে এসব ব্যাপারগুলো অনেক জটিল হয়। আমার মনে হয় এত অল্পতে বলা ঠিক হয় নি, কেননা এত অল্প কথায় সব বুঝিয়ে বলার মত লেখনী ক্ষমতা আমার নেই। একটা পোস্ট দিলেই হয়তো ভালো হত।
“মুক্ত-মনা” হতে পারলে তো বেঁচে যেতাম। কিন্তু মুক্তি মেলানো কি এতই সহজ! আপনাদের মন্তব্যেই টের পেলাম এখনো অনেক অনেক পথ বাকী।
তবু একটু একটু করে নিজের কথা বলি-
দেশ থেকে নতুন পরিবেশে এসে মানিয়ে নিতে অনেকটা সময় লাগল। পড়াশুনা, তারপর কাজ- অনেকটা সময় নিয়ে নিল জীবন থেকে। অন্যদিকে তাকাতে না তাকাতেই দেখলাম বয়স অনেকটাই পার হয়ে গেছে (বয়সের ব্যাপারটাও এভাবে বলা মনে হয় এক ধরনের সুবিধাবাদী কথা)। এর পর একজনের সাথে অনেকটা পথ হাঁটার পরে হঠাৎ বলতে শুরু করল বিয়ে করতে। তাকে নয়; অন্য কাউকে, কেননা আমাদের “ধর্ম” ভিন্ন! জীবনে প্যাচটা এখানেই লাগল।
তবুও জীবনতো থেমে থাকে না। বেল তলায় না যেতে পারলেও, মনটা তাল তলায় ঠিকই হাজির হয় একসময়। কিন্তু জীবনটা আর শুধু আমাদের নয়, সাথে আরো অনেকে জড়িত। আমার দিকে না হোক, তার দিকেও তো আছে। সবাই তো আর “মুক্ত-মনা” নয়, বা এর কিঞ্চিত পরিমান ধারণাও আছে বলে মনে হয় না। তাই চাই বিয়ে নামক লাইসেন্স।
পরিচয়, ভালোলাগার এক পর্যায়ে পরিবারকে জানানো… এর পর বাকী গাতানুগতিক ডাল-পালাগুলো বুঝতে সমস্যা হবার কথা না।
তারপর ঐ প্রথম মন্তব্য।
এখন তাদের সাথে এ নিয়ে কথা হয় না; হয় তর্ক। আর যুক্তিতে না পারলে বাবার গালাগালি হুমকি-ধামকি আর মায়ের কান্না।
@বন্যা আহমেদ, আপনাদের ব্যাপারটা এই দুইদিন আগে জানলাম একটা পুরোনো লেখায়। কেমন যেন একটা অনুভূতি হয়েছিল। খুব দেখতে ইচ্ছে করছিল আপনাদের দুজনকে।
@শ্রাবণ আকাশ,
আপনার অবস্থা ও অবস্থান বুঝতে পারছি।
রাষ্ট্র বিয়ের আগে বন্ধাত্য চেক করা বাধ্যতা মূলক করু্ক। তারপর লোকে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে যে তারা পালিত সন্তানে খুশী থা্কবে না বন্ধাত্যের চিকিৎসা করাবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের গুনে বন্ধাত্য শব্দটা ঐতিহাসিক হতে চলেছে।
@বিপ্লব পাল, হা হা বিপ্লব, তোমার আরেকটা ক্লাসিক মন্তব্য। রাষ্ট্রের এর ভিতরে হান্দানোর দরকারটা কী? প্রয়োজন মনে করলে, যে যার নিজের মত করে নিজের বা পার্টনারের ফার্টিলিটি টেস্ট করিয়ে নিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়। গীতাদি এখানে যাদের কথা বলছেন তাদের ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা এ ধরণের অন্যান্য আধুনিক চিকিৎসাগুলোর সুযোগ নেওয়ার মত ক্ষমতা বা সামর্থ্য নেই।
@বন্যা আহমেদ,
:rose2:
@বন্যা আহমেদ,
রাষ্ট্রএর জন্যে নতুন সবল সন্তানের সুপরিমিত জন্ম সব থেকে গুরুত্বপূর্ন বিষয়-রাষ্ট্র যদি জন্ম নিয়ন্ত্রনে মাথা ঘামায়-এ ব্যাপারেও মাথা ঘামাতেই পারে। বন্ধ্যাত্বের টেস্টিং হাসপাতালেই করাতে পারে।
নতুন নাগরিক গড়ে তোলা রাষ্ট্রএর সব থেকে বড় কাজ। যারা এই ব্যাপারটাই গুরুত্ব দেয়-তারাই সব থেকে বেশী এগোবে। চীন রাষ্ট্র থেকে এটা করে, তাই সব থেকে বেশী এগোচ্ছে। ভারতে এই উদ্যোগটা প্রাইভেট-তাই কিছুটা এগোচ্ছে।
@বিপ্লব পাল,
যুগের সেরা মন্তব্য করেছেন দাদা! এ যুগে এসেও আল্লায় এমন কথা শুনালো?
@আকাশ মালিক,
যে দেশে যাদের রোগ ব্যাধিতে চিকিৎসা নেওয়ার সামর্থ নেই সেখানে বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা করা! হ্যাঁ , যুগের সেরা মন্তব্যই বটে!
@বিপ্লব পাল,
বন্যার এ মন্তব্যের পর আমার আর বলার কিছু নেই।
@বিপ্লব পাল,
মানুষ যেখানে ধীরে ধীরে মিনিমাম রাষ্ট্রের পর্যায়ে যেতে চাচ্ছে, ব্যক্তি স্বাধীনতাকে বেশি প্রাধান্য দিতে চাচ্ছে সেখানে আপনি উলটো রথে চড়তে চাচ্ছেন কেন বুঝতে পারছি না। মানুষের প্রতিটি বিষয়েই কেন রাষ্ট্রকে নাক গলাতে হবে? এটা তো সেই মধ্যযুগে ফিরে যাওয়ার মতই অবস্থা। কে সমকামি হবে, না কে বন্ধাত্য চেক করাবে, এই সবও এখন রাষ্ট্র ঠিক করে দিবে? আপানার উপর আবার কমিউনিজমের ভুত ভর করেছে কি? না হলে আপনি এখনো চীনের রাষ্ট্রীয় মডেলকেও ভাল পাচ্ছেন। আপনি সত্যিই অবাক করছেন।
@স্বাধীন,
১। ব্যাক্তিস্বাধীনতা শিল্প বিপ্লবের ফল-এবং শিল্প বিপ্লবের কারনে এসেছে। এগুলিকে পৃথ্ক কোন দার্শনিক কারন হিসাবে ভাবলে ভুল হবে
২| রাষ্ট্রও সংক্ষিপ্ত হবে প্রযুক্তির জন্যে। কিন্ত রাষ্ট্রকে কিছু কাঠামো এবং আইন রাখতেই হবে ভবিষয়ত প্রজন্মের জন্যে। আমেরিকাতে মেডিকেয়ারে [ বুড়োদের চিকিৎসা] কেও হাত দিতে পারবে না-এদিকে বাচ্চাদের শিক্ষাখাতে ছাঁটাই চলছে। এই যদি রাষ্ট্র হয়- সেই রাষ্ট্রর হাল কি হবে, আমেরিকাতে সক্ষাত সলিলে বুঝছি।
৩| কমিনিউস্টরা শিক্ষা এবং চিকিৎসা খাতে সফল হয়েছিল। রাষ্ট্র , উদ্ভাবন এবং উৎপাদনে তারা ব্যার্থ হয়। তাহলে শিক্ষা এবং চিকিৎসার জন্যে সমাজ্তান্ত্রিক মডেলই আমি নেব-কারন শিক্ষা এবং চিকিৎসার জন্যে ধনতান্ত্রিক সব মডেল ব্যার্থ।
এখানে কোন শীর্ষ অধ্যাপক কে জিজ্ঞেস কর সেরা ছাত্র কারা
প্রথমে চীন
দ্বিতীয় ওতেই চীন
তৃতীয়তে ভারতীয়রা আসলে আসতে পারে।
চীন কিভাবে এগোচ্ছে কারুর কোন ধারনা নেই। আমার মতন যাদেরকে চীনাদের সাথে ওঠ বস করতে হয় প্রতিদিন-তারাই সেই আঁচটা পাচ্ছি।
ভেবে দেখ। তোমার দেশটা ৪০ বছর স্বা্ধীন হয়েছে- সেই ৪০ বছরে বাংলাদেশ কি করেছে? আর চীন সেই ৪০ বছরে কি করেছে?? ভারত গত ২০ বছর একটু পেছন পেছন হাঁটছে মাত্র। চীনকে কটাক্ষ করা কোন বাংলাদেশী ( যে রাষ্ট্র প্রায় সব ব্যাপারে ব্যার্থ) এবং কোন ভারতীয়দের ও ( যে দেশে সব থেকে বেশী নিরক্ষর আর বুভুক্ষ বাস করে) মানায় না। বরং ওদের দেখে শেখা উচিত। চীনের মানবাধিকার নিয়ে সমালোচনা আমিও ক রি। সেটাই উচিত। কিন্ত ওদের প্লানিং এর সাফল্য থেকে শিখব না কেন?
@বিপ্লব পাল,
এখন রাষ্ট্র যদি কাউকে বাধ্য করে বিয়ের আগে বন্ধাত্ব পরীক্ষা করাতে এবং কেউ যদি সেটা করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং রাষ্ট্র তাকে জেলে পুরে, সে ক্ষেত্রে কি সেটা মানবাধিকার লঙ্ঘণে পরবে না? একবার বলছেন রাষ্ট্রকে মিনিমাম লেভেলের কথা আবার বলছেন বন্ধাত্ব, সমাকামিতা, কিংবা বিয়ের মত ব্যক্তিগত বিষয়ে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের কথা। আমার কাছে পরষ্পরবিরোধী বক্তব্য মনে হচ্ছে। রাষ্ট্রের পরিচালনায় কারা আসবে সেটাই তো মিমাংসিত নয়, সেখানে রাষ্ট্র আমার উপর কিছু জোর করে চাপিয়ে দিবে সেটার বিরোধীতা না করে পারছি না। যা হোক, এটা নিয়ে পরে বিতর্ক করা যাবে। গীতা’দির ব্লগে আর আলোচনা না করি এটা নিয়ে।
@স্বাধীন,
আইন যদি গনতান্ত্রিক ভাবে পাশ হয়, তাহলে কেন সেটা চাপানো হবে?
আজ ভারতে দুই সন্তানের আইন দরকার। সেটা ত গণতান্ত্রিক ভাবেই পাশ করাতে পারে। আবার সডোমিকে আইন সিদ্ধ করা হল। সেটাও গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত।
আইন গণতান্ত্রিক হলে সংখ্যাগরিষ্ঠদের আইন না মেনে উপায় কি? সেই আইনের বিরোধিতা চালাতে পার রাজনৈতিক পদ্ধতি মেনে। চীন সেটাই করতে দিচ্ছে না। সেটা ভুল। কিন্ত গণতান্ত্রিক ভাবে একটা আইন পাশ হলে-সেটাকে না মানলে রাষ্ট্রই টিকবে না।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বেসিকগুলো আগে ক্লিয়ার কর!
@বিপ্লব পাল,
ভালই বলেছেন। তবে আমার অবস্থা যা ভেবেছেন তার চেয়েও ভয়াবহ বলেই মনে করি। কোনটা যে বেসিক আর কোনটা যে বেসিক না সেটাই তো বুঝি না। আগে তো সেটা বুঝি তারপর না হয় বেসিক ক্লিয়ার করা যাবে :-Y ।
গণতান্ত্রিক ভাবে আইন পাশ হলে আমি মানতে বাধ্য সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতই যে সব সময় শুদ্ধ তা তো নয়। সে হিসেবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্ধারিত আইন মানেই তো আদর্শ নয় যে সেটাকে মানতে বাধ্য করা উচিত। এখন বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই ধর্মে বিশ্বাসী, কিন্তু তাই বলে কেউ যদি আমাকে আইন করে ধর্মে বিশ্বাসী হতে বলে সেটা কি ঠিক হবে? তাই আমি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকেও সব কিছুর উর্ধ্বে দেখতে রাজী নই। এখানেই আপনার সাথে আমার দৃষ্টিভঙ্গীর পার্থক্য। আপনার সমস্যা হচ্ছে আপনি যা বুঝেছেন সেটাকেই আদর্শ ধরে নিয়ে সেটাকে সকলের উপরে চাপিয়ে দিতে দ্বিধা করছেন না। সেটা এক প্রকার প্রফেসি।
গণতান্ত্রিক ভাবে কোন আইন পাশ হলেও সেই আইনও এক প্রকার সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত সংখ্যালঘুর উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। আপনি এটা বলতে পারেন যে কোন বিষয়ে সবাই একমত হবে সেটা বাস্তবে হবে না। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতই মানতে বাধ্য। এই ধারণা আমার কাছে গ্রহনযোগ্য নয়। আমি মনে করি না যে সংখ্যালঘু সব সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত মেনে চলতে বাধ্য সেরকম আইন কোন সভ্য আইন নয়, সেটা মধ্যযুগীয় আইন। সেটাও এক প্রকার গায়ের জোর বা সংখ্যার জোর। বরং আমার কাছে প্রকৃত আইন হবে যে আইনে সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং সংখ্যালঘু দু’জনেরই মতামত থাকবে এবং যেটাতে দু’দলই সহমত প্রকাশ করবে।
@স্বাধীন,
এ্টা ্তোমার মন্তব্য।
এবার আমি ্কি লিখেছিলাম দেখঃ
তাহলে কি দাঁড়াল। আমি লিখলাম, সেটা না বু্ঝে হাও মাও কাও শুরু করে দিলে। কোরানে কোন এক আয়াতে পড়েছিলাম, তর্কের ক্ষেত্রে আগে ধৈর্য্য ধরে বিরোধি পক্ষের বক্তব্য শুনতে হয়। :lotpot:
@বিপ্লব পাল,
চাপড় দিতে দিতে হাত ব্যাথা করে ফেইলেন না, অন্য সময়ের জন্যেও রাখুন কিছু 🙂 ।
আমার বক্তব্য ছিল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন এবং সংখ্যালঘুর উপর বল প্রয়োগ নিয়ে। আর চীনে তো গণতন্ত্রই নেই। সেই হিসেবে চীনে হচ্ছে সংখ্যালঘুর শাসন এবং বল প্রয়োগ সংখ্যাগুরুর উপর। এখন চীন কিভাবে আমার বক্তব্যের সাথে সামঞ্জস্যে আসে আমার মাথায় আসছে না। আমি আপনার এই চীনের উদাহরণের বিরোধীতাই শুরু থেকে করে আসছি।
যা হোক, এই ব্লগে আর আলোচনা করবো না বলেও বহু কথা বলে ফেলেছি। এর পরের মন্তব্যের জবাব নিতান্ত বাধ্য না হলে দিবো না। যদি আলোচনা করতেই হয় নুতন ব্লগ নামিয়ে সেখানে আলোচনা করা যাবে। ভাল থাকুন।
@স্বাধীন,
এই বিতর্ক বেশি চালিয়ে লাভ নেই। সব কিছুর মধ্যে রাষ্ট্রকে নিয়ে আসলে বিপত্তি বাড়ে বই কমে না। কেউ নিজের বা পার্টনারের ফার্টিলিটি টেস্ট করালে রাষ্ট্র কখনোই বাধা দেয় না। কিন্তু কখনো ‘বাধ্যতামূলক’ ভাবে টেস্ট করানোর চেষ্টা করলে অবশ্যই নানা জটিলতার জন্ম দিবে। বিপ্লব ভাবছে রাস্ট্র বাধ্যতামূলকভাবে বন্ধাত্য চেক করলেই বোধ হয় সবাই চীনের মত হয়ে যাবে। খুবই সরলীকরণ। চীনের সাফল্যের পেছনে বাধ্যতামূলকভাবে বন্ধাত্য চেক করানো বা না করানোর মত কিছু নেই এর পেছনে রয়েছে তাদের সুদৃঢ় অর্থনৈতিক স্ট্র্যাটিজি।
আর বন্যার উত্তরে বিপ্লবের হাস্যকরভাবে ‘নতুন সবল সন্তানের সুপরিমিত জন্ম’ দানের প্রক্রিয়াকে রাস্ট্রের দায়িত্ব হিসেবে দেখানোর চেষ্টাটাও ভুল মনে হল। কোন রাস্ট্রবিজ্ঞানের কোন পুস্তকেই ‘সবল সন্তানের জন্মকে’ রাস্ট্রিয় দায়িত্ব হিসেবে দেখানো হয়নি। জোর করে কোন কিছু করার ফল কখনোই ভাল হয় না (অবশ্য বিপ্লব প্রথমে বাধ্যতামূলক বলে শুরু করলেও এখন আবার দেখছি ‘গণতান্ত্রিক’ভাবে প্রয়োগ করার কথা বলছে, কোনটা ঠিক কে জানে?) বিপ্লব ভুলে গেছে রাস্ট্রীয়ভাবে হিটলার দুর্বল জীনকে মেরে সবল জিনকে টিকিয়ে রাখার জন্য সব ‘দুর্বল’ বলে কথিত মানুষকে কিভাবে হেনস্থা করেছিল। এ ধরনের বিভ্রান্তকারী দর্শনের ফলশ্রুতিতেই পরবর্তীতে বিভিন্ন শাষকগোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে ঔপনিবেশিকতাবাদ, জাতিভেদ, বর্ণবৈষম্যকে বৈধতা দান করতে সচেষ্ট হয়েছিলেন বিভিন্ন সময়। হিটলার তার নাৎসীবাদের সমর্থনে ইউজেনিক্স নাম দিয়ে একে ব্যবহার করেছিলো। ১৯৩০ সালে আমেরিকার ২৪ টি রাষ্ট্রে ‘বন্ধ্যাকরণ আইন’ পাশ করা হয়, উদ্দেশ্য ছিল জনপুঞ্জে ‘অনাকাঙ্খিত’ এবং ‘অনুপযুক্ত’ দুর্বল পিতামাতার জিনের অনুপ্রবেশ বন্ধ করা। এগুলো কিন্তু বিপ্লব কথিত সবল ‘সন্তানের সুপরিমিত জন্ম’ দেয়ারই একধরণের হঠকারি রাস্ট্রীয় প্রচেষ্টা ছিলো। আর এগুলোর ফলাফল হয়েছিলো ভয়াবহ।
বিপ্লবের যে এগুলো অজানা তা নয়। তারপরেও মাঝে মধ্যেই দেখি বিজ্ঞান নিয়ে লিখতে লিখতে কিংবা ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা বলতে বলতেই হঠাৎ করে আবার রাস্ট্রকে নিয়ে আসে ‘সমাধান’ হিসবে। কখনো বলে রাস্ট্রের উচিৎ সমকামীদের নিরুৎসাহিত করা, কখনো আবার বলে রাস্ট্রের বাধ্যতামূলকভাবে ‘বাধ্যতামূলক’ ভাবে ফার্টিলিটি টেস্ট করানো উচিৎ ইত্যাদি। সেই ইউজিনিক্সের ভুত মনে হয় মাথা থেকে এখনো যায়নি। 🙂
@অভিজিৎ,
এটা আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা হল। ইউজেনিক্স কেও করতে বলছে না। এখানে ডেমোগ্রাফ্রিক প্লানিং এর প্রশ্ন উঠছে। রাষ্ট্র যদি শিশুদের নিয়ে চিন্তিত না হয়, তাহলে শিশুর পুষ্টির সাথে মায়ের পুষ্টি এবং শিক্ষা নিয়েও চিন্তা করার দরকার নেই। দরকার নেই শিশুরা ড্রাগ এডিক্ত হল কি না দেখার।
ব্যাক্তি স্বাধীনতার চূড়ান্ত এবং রাষ্ট্রীয় কতৃত্বের চূড়ান্ত দুটোই খারাপ। একটার বিপক্ষে বলা মানে অন্যটার পক্ষে বলা এই ধরনের সরলীকরন মূর্খতা এবং মূ্ঢ়তা। রাশিয়াতে যখন ফার্টিলিটি রেট ১ এ নেমে এসেছিল, রাষ্ট্র মা হওয়ার জন্যে গাড়ি বাড়ি পুরস্কার দিয়েছে। সুতরাং পুরস্কার দিয়েও সামাজিক উন্নতি বা শিশুদের ঊন্নতি গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্যেই সম্ভব। আজকের ইউরোপের অভিবাসন সমস্যার মূলে তাদের লো ফার্টিলিটি রেট। সুতরাং সেখানে রাষ্ট্র অধিক সন্তানের জন্যে পুরস্কার দিচ্ছে। আইন ছারাও পুরস্কার দিয়েও এসব করা যায়।
@বিপ্লব,
ফার্টিলিটি কমে গেলে অধিক সন্তান নেয়ার জন্য পুরস্কার দেয়া এক কথা আর বাধ্যতামূলকভাবে সব মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব চেক করার জন্য রাস্ট্রিয় আইন সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রথমটি কেবল সরকারীভাবে উৎসাহ দেয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, আর দ্বিতীয়টি জোর করে সব মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব চেক করার জন্য ঠেলে পাঠানো এবং ব্যক্তিগত পছন্দের উপর অনধিকার হস্তক্ষেপ। এমনিতেই বন্ধ্যাত্বের জন্য বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে সর্বত্রই কেবল মেয়েদেরই দোষারোপ করা হয়। আর জোর করে বন্ধ্যাত্ব টেস্টের জন্য পাঠালে সেই ফলাফল হবে আরো ভয়াবহ। সামাজিক সিস্টেমের উন্নয়ন ছাড়া কেবল হুট করে কোন কিছু প্রয়োগ করলেই ভাল ফলাফল নিয়ে আসবে মনে করলে বিরাট ভুল হবে।
@অভিজিৎ, এইটা কিন্তু ঠিক না যে ইউজেনিক্সকে সবাই বিজ্ঞানের একটা অভিশাপ হিসেবে দেখে। হার্ডি-ভেইনবার্গ প্রিন্সিপাল প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০৮ সালে আর ইউজেনিক্স মুভমেন্ট শুরু হয় উনিশ দশকে হলেও, পর্যাপ্ত জনপ্রিয়তা লাভ করতে অপেক্ষা করতে হয় একে আরও ২০ বছর। ইতিমধ্যেই তখন আমরা জেনে গেছি যে জিনপুলে একটি জিনের সবগুলো অ্যালিলের ফ্রিকোয়েন্সির যোগফল ১ (p+q=1), হোমোযাইগোট জিনোটাইপ ফ্রিকোয়েন্সি অ্যালিল ফ্রিকোয়েন্সির বর্গের সমান( f(pp)=p^2) আর আর হেটেরোযাইগোট জিনোটাইপ ফ্রিকোয়েন্সি অ্যালিলদের গুনফলের সমান (f(pq)=pq). অর্থাৎ হাদাখাদা বাচ্চা জন্ম দেওয়ার জন্য দায়ী একটি অ্যালিল প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই থাকবে হেটেরোযাইগোট জিনোটাইপে, যেহেতু এটা হাদাখাদা বাচ্চা জন্ম দেয় তাই এর হোমোযাইগোট হবার সম্ভাবনা খুবই কম। এইরকম কয়েকটা হোমোযাইগোট ধরে ইউজেনিক্স করে মেরে ফেললেও ওই অ্যালিল মোটেও বিলুপ্ত হবে না বরং হেটেরোযাইগোট রূপে সদম্ভে থেকে যাবে জিনপুলে। বৈজ্ঞানিক সমাজ কখনই ইউজেনিক্স সমর্থন করেনি কেননা তারা জানে জেনেটিক্স কিভাবে কাজ করে। ইউজেনিক্স করিয়েছে কয়েকটি বিজ্ঞান অশিক্ষিত নিন্মজীবি পাগল-ছাগল! যেই সময় ইউজেনিক্স শুরু হয় সেই সময় আমরা খুব ভালো করেই জানি যে কেনো এটা কাজ করতে যাচ্ছে না। আর বর্তমানে এটা আবিষ্কার হবার পর যে ডিএনএ পলিমারেজের এরর রেইট প্রতি দশ মিলিয়নে ১ নিউক্লিওটাইড, এখন আমরা জানি প্রত্যেকটি নিষিক্ত ডিম (অর্থাৎ আমরা প্রত্যেকেই) অন্ততপক্ষে চারটি ডিলিট্রিয়াস রিসেসিভ অ্যালিলের ক্যারিয়ার, তবে ওই অ্যালিলগুলো রয়েছে আমাদের হেটেরোযাইগোট লোসাইতে যেইকরণে আমরা ডিলিট্রিয়াস ফিনোটাইপ প্রদর্শন করছি না। ইউজনিক্সের জন্য বিজ্ঞান দায়ী নয় কোনভাবেই। যদিও আপনি এমন কিছু বলেননি, তারপরও অনেকের মনে এই ভুল ধারনাটা থেকে যেতে পারে তাই এটা বলা।
@আল্লাচালাইনা,
ইউজিনিক্স বিজ্ঞানের যত না ভুল ছিলো তার চেয়ে বেশি ছিলো ব্যক্তি স্বাধীনতার উপর রাস্ট্রীয় হস্তক্ষেপের ফসল। এই থ্রেডে বন্ধ্যাত্ব চেক করার জন্য রাস্ট্রিয় পায়তারা দেখে ইউজিনিক্সের কথা মনে পড়ে গেলো। ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পাবেই… 🙂
@অভিজিৎ, অন্য কেউ হলে হয়তো আমি অপরিনত ও বাতুল লোকজন নিয়ে সমারোহ করতে নিরুতসাহীতই করতাম, কিন্তু আপনাকে করি কিভাবে,সর্বোপরি কতোটুকু পাগলামি-ছাগলামি মুক্তমনায় চলতে পারে সেটা নির্ধারণ করা যতোটুকু না আমার কনসার্ন তার চেয়ে অনেক অনেক বেশী আপনার কনসার্ন। তবে আমি মুক্তমনাকে ইম্যাচিউর্ড ইম্প্র্যাক্টিকাল পাগল-ছাগলের আড্ডাখানা হিসেবে দেখতে চাই না এতোটুকুই বলবো। তর্কজীবি মানুষ যারা কিনা সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে মাঝে মাঝে ইনফ্লামেটোরি কথা বলে মানুষ এঙ্গেইজ করে ফেলে একের পর এক মন্তব্য প্রতিমন্তব্য করে চিত্তবিনোদন লাভ করে চলে তাদেরকে ইগ্নোর করাই বোধহয় সবচেয়ে ভালো, মানে দশ জনের মধ্যে একজন একটা ধমক দিয়ে বাকী নয় জনের উচিত ইগ্নোর করা। ক লিখতে তেত্রিশ কলম ভাঙ্গা ফাউচুকি লোকজনের বেলায় আমি ইগ্নোরকারী দ্বিতীয় দলেই থাকবো, তবে পাগলামি-ছাগলামি একটা টেশহোল্ড অতিক্রম করলে পরে যেই ভিটামিন ধমকের ঘাটতি দেখা দেয় তা পুরণ করাও তো একটা সামাজিক দায়িত্ব, সেই পরিস্থিতি আসলে খুব সম্ভবত I would be more than happy to do that! :laugh:
@বিপ্লব পাল,
মানবাধিকার গুলে খেয়েই যদি প্লান বের করতে হয়- তবে তো মুশকিল!
@স্বাধীন,
:yes: এজন্যেই তো নারীবাদীরা বলে — শরীর আমার সিদ্ধান্ত আমার। অথচ রাষ্ট আমাদের উপর অহেতুক চড়াও হয়।
:yes:
@রৌরব,
:rose2:
যাদের কাছে বিজ্ঞানের আলো আজও পৌঁছায় নি। যাদের কাছে ভূত-ভগবান-শয়তান আজও প্রভূত্ব করে। তাদের বিজ্ঞানের সাহায্য নেওয়া কতটুকু শোভা পায়?
যে নারী এই পরিস্থিতে পড়ে সেই বোঝে। শুধু পুরুষ কেন? অন্য একজন নারীও সেক্ষেত্রে বলবে ঐ মেয়েটি অলুক্ষুণে ভাল হয়েছে ও মরেছে।
বিভিন্ন গ্রামে এই চিত্র দেখছি। যা আমাকে ভাবিয়েছে, কাঁদিয়েছে। তাই বললাম। জানি না আর মানুষ কতদিন অন্ধকারে থাকবে? আর কত দিন অন্ধকারের রাজত্বে নির্যাতন চলবে?
@সুমিত দেবনাথ,
প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ যখন শুরু হয়েছে তখন নির্যাতন একেবারে নির্মূল না হলেও কমবেই।