বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে খুব জোরালোভাবে যে-সমস্ত ‘ক্যাম্পাস ওয়ার্ড’ শুনতে হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি শব্দ হচ্ছেঃ ‘ইজম্’ এবং ‘লবিং’। জন্মসূত্রে আমি সুবিখ্যাত নোয়াখালীর বাসিন্দা হবার কারণে সংগঠন’ কিংবা ‘ইজম্’ শব্দগুলো না চাইলেও আমার পরমাত্মীয় শ্রেণীর, এগুলো থেকে বের হয়ে আসাটা আমার জন্য দুরূহ ব্যাপার। ঢাকার বাইরের জেলা থেকে যে-সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসে, তাদের প্রায় সবারই নিজ এলাকার কোন না কোন ছাত্রকল্যাণ সংগঠন আছে। অমুক জেলা সমিতি কিংবা তমুক থানা সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে দেখি নিজের পরিচয়ের প্রথমে জেলার নাম ‘নোয়াখালী’ বলতেই কেউ-না কেউ হাসছে, কেউ-বা টিপ্পনি কাটছে, কেউ-বা আবার বাঁকা কথা বলছে। এলাকার সিনিয়রদের জিজ্ঞেস করলে বলছে, ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগেই কেউ যদি বুঝে ফেলে তাদের জিতবার সম্ভাবনা নেই, তাহলে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছেড়ে নিন্দায় লিপ্ত হবে, সেটাই স্বাভাবিক।’ অন্য জেলার লোকজনের আচরণ কিংবা আমার নিজ জেলার লোকজনের ব্যাখ্যা, কোনোটাই আমার গ্রহণযোগ্য মনে হচ্ছে না, বরং হাস্যকর মনে হচ্ছে।
অবধারিতভাবে আমার নিজ থানার বুয়েট, ঢাকা মেডিকেল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টদের নিয়ে গঠিত একটি ছাত্রকল্যাণ সংগঠন আছে। না-থাকলেই বরং সেটা নোয়াখালীর ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করে ফেলবার মত ব্যাপার হতো। অনার্স ফাইনাল কিংবা মাস্টার্সের স্টুডেন্টদের পাশ কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়ণরত অবস্থায় সেই সংগঠনের সেক্রেটারী পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে একই সঙ্গে আমি নন্দিত এবং নিন্দিত হবার সৌভাগ্য ও দূর্ভাগ্য অর্জন করলাম। সিনিয়রদের টেক্কা (ক্যাম্পাস ওয়ার্ড) দিয়ে উপদেষ্টাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মত কুবুদ্ধি দেখানো আমার ঠিক হয়নি বলে বুদ্ধিমানরা তাদের মানসম্পন্ন বাণী প্রদান করতে লাগলো। কিন্তু বাংলায় একজন ‘কামিনী রায়’ থাকলে আর কোনো নতুন বুদ্ধিজীবীর দরকার পড়ে না, সেটা আমি ভালো করেই জানি। তিনি বহু আগেই কবিতা পড়িয়ে গেছেন, ‘করিতে পারি না কাজ, সদা ভয় সদা লাজ, সংশয়ে সংকল্প সদা টলে, পাছে লোকে কিছু বলে।’ অতএব, সমালোচনায় ভেঙ্গে পড়ার মানুষ আমি নই। তবে বুয়েট, ঢাকা মেডিকেল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টরা যদি সমালোচনার ঝড় তুলে এবং তার উপর তারা যদি হয় নোয়াখালী জেলা থেকে আগত, তাহলে দায়িত্ব পালন করার জন্য দ্বিতীয় বর্ষের এই নবীন আমাকে কতটুকু চাপ নিতে হচ্ছে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আর চার পাঁচটা সংগঠনের মত এই সংগঠনেরও হাতি-ঘোড়া, রাজা-বাদশা জাতীয় বহু উদ্দেশ্য আছে এবং সংগঠনের ব্যাপারে ভিআইপি, সিআইপি (কমার্শিয়াল ইম্পর্টেন্ট পার্সন), সাবেক কিংবা বর্তমান আমলা কারোরই আগ্রহের কমতি নেই। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের বিখ্যাত ব্যারিস্টার, যিনি প্রায় সব সরকারের আমলে মন্ত্রী থাকবার মত বিরল রেকর্ডের অধিকারী এবং আমার থানার কখনো অতীতের, কখনো বর্তমানের, হয়তো-বা ভবিষ্যতেরও এমপি- তিনি আমাদেরকে বললেন, ‘তোমরা আমার এলাকার ছেলে, তোমাদেরকে সবসময় স্বাগত জানাই, তোমাদের সাথে আমি দ্রুত বসতে চাই, তোমাদের জন্য আমার কোন ব্যস্ততা নেই, দুই সপ্তাহ পরে অমুক দিন আমার অফিসে চলে আস।’ আমরাও যথারীতি চলে গেলাম। পরিচয়ের পর বিভিন্ন কথাবার্তার শেষে তিনি মিটিমিটি করে বলতে শুরু করলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মামলাটা আমি নিলাম, ভাবলাম যদি বিনা বিচারে এই লোকটার সাজা হয়ে যায়, তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম অর্থ্যাৎ তোমাদের কাছে আমি কি জবাব দেব? তোমরা যখন জিজ্ঞেস করবে, আপনারা থাকতে লোকটার সাজা হয়ে গেলো-তখন আমি কি বলবো তোমাদেরকে?’ আমি মনে মনে ভাবলাম, হায়রে রাজনীতিবিদ! চব্বিশ ঘন্টা রাজনীতি না করলে তোমাদের বুঝি শান্তি হয় না। ভাবতে ভাবতে সে-দিনের জন্য সেখান থেকে বিদায় নিয়ে নিলাম। পরবর্তীতে বাসায় আয়োজন করে উনি এবং উনার স্ত্রী, বাংলার বিখ্যাত কবির কন্যা, সবাইকে সানন্দে বাসার ভিতরে বেড়ে উঠা আমগাছের আম কেটে খাওয়ান। হবার মধ্যে যা হলো, আরো একবার প্রমাণিত হলো, উদ্ভিদেরও প্রাণ আছে। বুঝা গেলো, বাংলার সাধারণ একটা আম গাছও ভিআইপি চেনে, তা না-হলে এমপি’র গাছের আম এত মিষ্টি হবে কেন।
ঠিক একইভাবে অন্য রাজনৈতিক দলের এমপি, যিনি মিন্টু রোডের সরকারি বাসায় থাকেন, কাটখোট্টা মেজাজ নিয়ে বলেন, ‘আমি প্রচন্ড ব্যস্ত, আগামী পরশুর আগে দেখা করতে পারবো না।’ এখানেই মনে হয় রাজনৈতিক আচরণের পার্থক্য বা একজনকে ফেলে আরেকজনের এগিয়ে যাওয়া। একজন বলেছেন, তোমাদের জন্য আমার কোন ব্যস্ততা নেই, দু’সপ্তাহ পরই চলে আস; আরেকজন বললেন পরশু দিন চলে আসতে, অথচ অযথাই প্রচন্ড ব্যস্ত থাকার অজুহাত যোগ করলেন। উনার বাসায় গিয়ে দেখা গেল, এলাকার মানুষ তাদের মুরগী চুরি থেকে শুরু করে প্রাইমারী স্কুলের পিয়নের চাকুরীর সুপারিশ, সবকিছুর জন্য এমপি’র কাছে চলে এসেছেন। এই এমপি-জাতীয় গো-বেচারা লোকগুলো কি করে যে মেজাজ ঠিক রাখেন এবং মুরগী চুরির বিচার করেন, সেটাই আসলে একটা বিরাট প্রশ্ন।
এবার আমার এলাকার কোটিপতিদের কথা বলা যাক। বিখ্যাত গ্রুপের চেয়ারম্যান। এই গ্রুপের ফুড্ নাকি, গুড্ ফুড্; টেলিভিশানে অন্তত সেরকমটাই বলে। তিঁনি আমাদেরকে গল্প বলেন। তাঁর গুলশানের পাঁচকোটি টাকার বাড়ীতে বসিয়ে সে-বাড়ীর গল্প বলেন; তাঁর বাসায় থাকা ১২টা গাড়ীর কথা বলেন; সৌদি আরব, লন্ডনে তাঁর ব্যবসার কথা বলেন। লোকটাকে অহংকারী মনে হয়নি, সাদামাটা আচরণ। কিন্তু তাই বলে চারপাশের লোকজনতো আর বসে থাকবে না। কথিত আছে যে, তাঁর এক নিকটাত্মীয় এলাকায় দু’দিনের জন্য বেড়াতে গেলে, থানা সদরের সবগুলো মিনারেল ওয়াটারের বোতল কিনে নিয়ে যান, তারপর সেটা দিয়ে তিনি গোসল করেন। তবে কথিত কথায় কান না দেওয়াই ভালো, কারণ এমন এক জায়গার কথা বলছি, যেখানে শুধু তিলকে তাল বানানো হয় না, তেলকে চাল, তালকে ডালও বানানো হয়। সে-যাই হোক ভদ্রলোক আমাদের একটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবার আগ্রহ দেখালেন। কিন্তু, যেহেতু তিনি এসি রুমের বাইরে পাঁচ মিনিটও সহ্য করতে পারেন না, তাই অনুষ্ঠানের জন্য পুরো এসি রুম ভাড়া করার ব্যবস্থা করলেন। আরো কিছুক্ষণ কেন তিনি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত সেটা ব্যাখ্যা করলেন অকপটে। অবশেষে, কিভাবে কোনো ধরণের ভিসা ছাড়া লণ্ডন যাবার বিমানে উঠে গেলেন, সেই ‘এয়ারপোর্ট রজনীর কিস্সা’ আমাদেরকে তর্জমা করে শোনাতে লাগলেন। এ-এক গল্পকার ব্যবসায়ী। অবশ্য উনার মিষ্টিকুমড়ার ব্যবসার কথা কিছুই বললেন না। দুষ্টু লোকেরা বলে, মিষ্টি কুমড়ার ভেতরে পাউডার ঢুকিয়ে বিদেশে পাঠালে সে-কুমড়ার পুষ্টিগুণ যে কয়েকগুণ বেড়ে যায় এবং তার কারণে বাজারদরও বেড়ে যায়, এটা না-কি এই কোম্পানীর লোকজনই প্রথম আবিষ্কার করে। তবে সত্যি বলতে কি, খুব বেশি রকমের ভুল করে না থাকলে, এই ভদ্রলোকের আচরণ দেখে এবং কথা বলে আমার মনে হয়েছে, তাঁর মধ্যে সততা আছে। বাকীটা আমার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার দূর্বলতাও হতে পারে।
এই পর্যায়ে বলে রাখা ভালো, ব্যবসায়ী মহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মানেই চাঁদাবাজ; এরা টাকার জন্য আসে। চরম সত্য কথা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদেরতো এই একটা জিনিসই নেই, যেটা ব্যবসায়ীদের কাছে আছে। ব্যবসায়ীদের কাছেতো ছাত্ররা আর নিউটনের তৃতীয় সূত্র শিখতে যাবে না। টর্কিড প্লাজা, ডেট্রো শপিং মল সহ আরো কি কি সব ইসলামী এবং ইমানদারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক, আমার এলাকার এই ব্যবসায়ী তাঁর অফিস রুমে বসিয়ে রাখলেন অনেকক্ষণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একজন স্টুডেন্টের কিছু আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। খুব অবাস্তব মনে হলেও আমি নিজের চোখেই দেখছি, শুধু ভর্তি হবার প্রাথমিক খরচ যোগাতে না-পারার কারণে, ঢাকা শহর ছেড়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে দেশের বাড়ীতে ফিরে যায় অনেক ছাত্র। এই ব্যবসায়ী ভদ্রলোক প্রথমে জেলা, তারপর থানা, তারপর ইউনিয়ন পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ফোন করে জানতে চাইলেই, এই স্টুডেন্ট তাদের মতধারার ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের কর্মী কি-না। আমি শুধু নির্বাক হয়ে তাকিয়ে দেখলাম, কতটুকু নিচে নামতে পারে একজন লোক। প্রতিটা লেভেলে ফোন করে সে জানিয়ে দিচ্ছে, দলের জন্য সে টাকা খরচ করছে। একটা স্টুডেন্টকে হেল্প করবে, সেখানেও দলের ঊর্ধ্বে উঠতে পারছেন না। সবকিছু করার পর, তিনি যে অর্থ দিতে চাইলেন, সেটা দিয়ে ভর্তির বিশ ভাগ খরচও মেটানো সম্ভব না। কিন্তু যত প্রত্যুত্তরই মাথায় আসুক, যত গ্লানিকরই হোক না কেন, সংগঠনের দায়িত্বশীল পদে থাকার কারণে বিতর্ক করার কোন সুযোগই আমার নেই, এর থেকে বাংলা সিনেমার নায়ক হলেও মুখের উপর দু’একটা কথা শুনিয়ে দিতে পারতাম। শুধু মনে মনে বললাম, ‘একদিন এই ছেলের যেখানে যাওয়ার সুযোগ আছে, সেখানে হয়তো আপনাকে টিকেট কেটে ঢুকতে হতে পারে।’
আবি সিনা জাতীয় আরেকটি ফার্মাসিউটিক্যালস্ও একই কাজ করলো। সেখানকার চেয়ারম্যান সবাইকে দিয়ে নামাজ পড়ালো, কেউ অযু করলো কিনা সে-খবর অবশ্য উনার রাখার কথা নয়। এই সওয়াবের কারবারীরা আবার সওয়াবের মধ্যেও কারবার দেখে, ব্যাবসা দেখে। কাউকে দিয়ে নামাজ পড়িয়ে নিতে পারলেই লাভ, নিজেরও লাভ, অন্যেরও লাভ। নামাজ পরবর্তী উনার নূরানী চেহারা দেখে যেই না একটু আতরের খুশ্বু আশা করলাম, অমনিই দেখি অগ্নিপুরুষের চোখে আগুন। সবার সাথে বাংলায় কথা বললেও যে স্টুডেন্ট এর জন্য যাওয়া, তার সাথে উচ্চস্বরে ইংলিশ বলে উনার রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন। এই লোকগুলোর প্রবলেম হচ্ছে, এরা সত্য বলতে ভয় পায়। বললেই পারে কোম্পানীর পলিসিতে না থাকায় হেল্প করা যাচ্ছে না। সেটা খুবই ভদ্রোচিত যুক্তিসঙ্গত আচরণ হয়। কিন্তু সেটা তারা কখনোই করবেন না। তাদের ধারণা সেটা করলে নিজ এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় কমিউনিটি তাঁদের উপর ক্ষেপে যাবে। যে-কোন কারণেই হোক না কেন, যেমন করেই হোক-না কেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যলায়কে কেউ ক্ষেপাতে চায় না, দরকার হলে হাস্যকরভাবে নিজে ক্ষেপে যাবে।
মানবসম্পদের ব্যবসায়ীর কাহিনী বলি খানিকটা। খলনায়কের মত হাসি হেঁসে উনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, হু-হু-হা-হা-হা, কি হবা তোমরা? ম্যাজিস্ট্রেট হবা? মু-হু-হু-হা-হা-হা, কয় টাকা বেতন পাবা? আমার একাউন্টেন্ট কত বেতন পায় জানো?’ আমি মনে মনে বলি, সেটা জানতে হবে না, তবে এটা জানি, যাই হই না কেন আমরা ‘হবো’ আর আপনি ‘হাবা’। পার্থক্য ‘আ-কার’ আর ‘ও-কার এর, কিন্তু বিশাল পার্থক্য’। তারপর তিনি বললেন, আমি নতুন গার্মেন্টস্ ব্যবসা করছি, নিয়ে যাও সবাই একটা করে শার্ট। শুনেই, আমরা যত দ্রুত সম্ভব খলনায়কের বাগানবাড়ী(অফিস) ত্যাগ করলাম।
অবসরপ্রাপ্ত সচিব সাহেবের কথা একটু না বললে অন্যায় হয়ে যায়। উনি হলেন সংগঠনের উপদেষ্টা। উনার বড় ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন এবং ছোট ছেলে বিসিএস পরীক্ষায় সারা বাংলাদেশে প্রথম স্থান অধিকার করেন। বিসিএসের ভাইভা বোর্ডে কিভাবে যেতে হবে সেটা নিয়ে সচিব সাহেব বছরে কমপক্ষে একবার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের জন্য সাভারে উনার বাগানবাড়ীতে কর্মশালার আয়জন করেন এবং সেই সাথে আমাদেরকে দিয়ে উনার বাগানবাড়ীর কাঁঠালগুলোর একটা সদ্গতি করেন। মনে হয়না সে-ই বাগানবাড়ীতে আমরা আর উনি ছাড়া সারা বছরে কেউ যায়। তার কর্মশালার প্রধান আকর্ষণ হলো ‘সালাম’, সবাইকে শেখানো হয় কিভাবে ‘সালাম’ দিতে হয়। বিসিএস ভাইভা বোর্ডে ভালো করার একটাই উপায়, সুন্দর করে ‘সালাম’ দিতে পারা। সে-দিন বুঝা যায়, কত রকমের সালাম যে আছে দুনিয়াতে, স্লামালেকুম, স্লামালাইকুম, স্লামাইলাইকুম, সেলামুয়ালাইকুম। নাহ্! এ-সবে হবেনা, এই সালামে চাকুরী হবেনা। সচিব সাহেব শিখিয়ে দেন, ভাইভা বোর্ডে গিয়ে যথার্থ সুন্দর করে বলতে হবে, আস্সালাআআমুআঃলাইকুউউম। বিশ্ববিদ্যলায়ের দুষ্টু ছেলেরা সমস্বরে প্রাইমারি স্কুলের মত কলরব তুলে সচিব সাহেবকে নকল করে, দিতে থাকে সেই সালাম, তাদের সালামে সালামে মুখরিত হয়ে উঠে সচিব সাহেবের বাগানবাড়ী।
(চলবে…)
[email protected]
December 13, 2010
:hahahee: :hahahee: :hahahee:
দারুনস্।
@Atiqur Rahman Sumon,
ধন্যবাদস্! 🙂
খুব সুন্দর করে লিখেছেন।নোয়াখালীর সাংগঠনিক ঐতিহ্য বেশ সমৃদ্ধ।শুনেছিলাম নোয়াখালী সমিতি দেশের সর্বপ্রাচীন।আঞ্চলিকতার ধারনাটা সমর্থন না করলেও আমি দেখেছি নোয়াখালী জেলার সাংগঠনিক শক্তি খুব ভাল এবং এটা খুবই গুরুত্বপুর্ন।সফলতাপ্রবন একটি জেলা আপনাদের।শিক্ষনীয় অবশ্যই।
ভাল থাকবেন।
@অসামাজিক,
নোয়াখালীর সাংগঠনিক ঐতিহ্য আসলেই অনেক সমৃদ্ধ। নীরব হোটেলে যাওয়ার সময় একটা সাইনবোর্ড দেখি, “নোয়াখালী সমিতি, স্থাপিতঃ ১৯১২”। একই সালে ‘টাইটানিক’ ডুবে গেলেও, নোয়াখালী সমিতির সাইনবোর্ড এখনো ভেসে আছে।
আঞ্চলিকতা জিনিসটার অনেক সহায়ক, লাইফ সহজ করে দেয়, সম্প্রীতি বাড়ে অনেকাংশে। তবে সত্যি কথা হচ্ছে, সম্প্রীতি বজায় রাখতে গিয়ে যদি অন্যের প্রতি অবিচার করা হয় বা অন্যায় করা হয়, সেটা কোন অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
ভালো থাকবেন। 🙂
@মইনুল রাজু, ভাইয়া ওই বিল্ডিং এর পিছনে ৫/৬ বিল্ডিং নোয়াখালি বাসি মানুষদের যারা এখানে ১০০ বছর ধরে আছে। যদিও তাদের ভাষা এখন এলাকার ভাষা অপভংশিত উর্দু 😉
আরেকটা দারুন পর্ব। :rose2:
এই লাইনটা ভয়াবহ লাগল।আমি জানি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন কত ছোটবেলা থেকে দেখে মানুষ।সেখানে চান্স না পেয়েও ভর্তি হওয়ার কথা আমি ভাবতেও পারিনা।আমি যদি এমন কোন ঘটনা শুনি নিজের শেষ পয়সাটা দিয়েও সাহায্য করব, ধার করে হলেও তাকে ভর্তি করাব।
@লীনা রহমান,
এ-ধরণের সুযোগ পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার। আপনার হলেই খুঁজে দেখেন, ঠিক এরকম না হলে অন্যরকম অনেক কিছুই পাবেন, যেখানে আপনি ধার করে হলেও হেল্প করতে চাইবেন।
ধন্যবাদ। 🙂
@মইনুল রাজু,
হুম। এক নিঃশ্বাসে পড়লাম ।
রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি আর সচিব পেলাম। অন্যান্য পেশাও কি পরের পর্বে আসবে? আপনার অঞ্চলের বুদ্ধিজীবী?
@গীতা দাস,
গীতা’দি, ঐ অঞ্চলে সবাই বুদ্ধিজীবী। 😛
@মইনুল রাজু,
এবারের পর্বটিও চমৎকার। শাবাশ! :yes:
@বিপ্লব রহমান,
অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। 🙂
আসলেই একটা ফাটাফাটি সিরিজ হচ্ছে এটা 🙂 । তবে সিএসই ডিপার্টমেন্টের কথা এ পর্বে আসেনি দেখি একটু হতাশ।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
অনেক ধন্যবাদ। শুধু সিএসই’র কথা লিখলে অন্যদের উপর অন্যায় হয়ে যায়তো :-)। তবে পরের পর্বগুলোতে কোনো না কোনোভাবে আসবেই। কারণ, আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জীবন সিএসই কে ঘিরেই আবর্তিত।