আমি যেটা লিখতে যাচ্ছি-সেটাকে ব্লগ হিসাবে না দেখে আলোচনা হিসাবে দেখুক সবাই। আমি এখানে বারো জনকে নিয়ে আলোচনা করব, যাদের জীবন এবং দর্শন আমার চিন্তাকে সব থেকে বেশী প্রভাবিত করেছে। আমি চাইব, বাকীরাও লিখুক কিভাবে তারা প্রভাবিত হয়েছে। শুধু বারোজনের মধ্যেই চিন্তা ধারাকে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে, তারও কোন মানে নেই।
স্যার কার্ল পপারঃ সত্যি কথা হচ্ছে, স্যার পপারের লেখাগুলো পড়া এবং বোঝার আগে, দর্শন নিয়ে আমি পড়েইছি শুধু। বুঝেছি অল্প। স্যার পপারের বিজ্ঞানের দর্শন গভীরে জানার পর, দর্শনের দরজা প্রথম চওড়া হয়ে খুলে যায় আমার মনে। বিজ্ঞানের দর্শন বা ফলসিফিকেশনের পেছনে কাজ করে “ইনডাকশনিজমের” সীমাবদ্ধতা। যা ঢাকতে ফলসিফিকেশন দর্শনের জন্ম। শুধু এই শেষের দুটিবাক্য গভীরে বুঝলেই বাজারে চালু সব দর্শনকে অতি দ্রুত বোঝা সম্ভব। এবং সেই ফলসিফিকেশন ফিল্টার দিয়ে তাকালে বাম, ডান, মৌলবাদি, কমিনিউস্ট, প্রগতিশীল, ধার্মিক-সবার সীমাবদ্ধতা এবং গন্ডী একদম পরিষ্কার ভাবে প্রতিভাত। তাই আমার জীবনে দুটো অধ্যায়-প্রিপপারিয়ান, যেখানে পড়েইছি শুধু, বুঝেছি কম। এবং পোষ্ট পপারিয়ান-যেখানে প্রচলিত দর্শনগুলি জলভাতের মতন সোজা হয়ে গেছে।
মোহন দাস গান্ধীঃ গান্ধীর সাথে পরিচিতি অতুল্য ঘোষের গান্ধীর জীবনী দিয়ে। খুব ছোট বেলায়। তখন খুব প্রভাবিত হয়েছিলাম তা না। কারন অধিকাংশ বামপন্থী পরিবারেই একটা গান্ধীবিরোধি এন্টাগনিজম কাজ করে। গান্ধীবিরোধিতা অনেক বাম-বাঙালী বালখিল্যতার অন্যতম আরেকটি। কোন সন্দেহ নেই গান্ধী চূড়ান্ত ভাববাদি-কিন্ত নিজের জীবনে গান্ধীবাদ অভ্যেস না করলে গান্ধীকে বোঝা মুশকিল। শত্রুকে হিংসা করা খুব কঠিন কাজ কি? শত্রুকে ভালবাসতে কজন পারে? গান্ধীর ধারাপাত পড়ে বা বলে কিছু হয় না। নিজের জীবন দিয়ে, নিজের জীবনে প্রয়োগ করে বুঝতে হয়। তবেই বোঝা যায়, শত্রুকে জয় করার কত সহজ পথ গান্ধী দিয়ে গেছেন। গোটা পৃথিবীতে যখনই কোন বিদেশীর সাথে দেখা হয়, তারাও গান্ধীকে নিয়ে উদ্বেলিত। হয়ত আমরা সবাই আশাবাদি। তাই সারভাইভাল স্ট্রাটেজিতে আলটুইজম প্রাণী জগতে আখছার দেখা গেলেও, যুদ্ধ বিদ্ধস্ত মানব সমাজের সামনে, গান্ধী চিরকাল পথ দেখাবেন।
লালন ফকিরঃ আউল, বাউলের দেশ এই বাংলা। বাউল সঙ্গীত ছোট বেলায় যে বুঝতাম- তা না। বাউল দর্শন ও না। সোরেন কিয়ার্ডগার্ডের অস্তিত্ববাদ পড়ার পর এবং নানান অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে বুঝতে পারি, আসলে মানুষের ওপর কোন দর্শন নেই। মানুষ হচ্ছে সব দর্শনের সিঙ্গুলার পয়েন্ট। কমিনিউজম, ইসলাম বা হিন্দুত্ববাদের পতন এবং পচনের একটাই কারন- এরা বোঝে না-এ সব কিছুই মানুষের জন্যে। তাই মানবতাকে দমন করে, মানবতার শবের ওপর যখন কমিনিউজম, ইসলাম বা হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলে, তার থেকে মৃতদেহের পচা গন্ধ বেড়োয়। মানুষ যে সব দর্শনের সিঙ্গুলার পয়েন্ট-এটাই বাউল কথা। এই অন্তর্মুখী দর্শনই পারে আমাদের এই সব ভুলভাল কমিনিউজম, হিন্দুত্ববাদ, ইসলাম থেকে মুক্তি দিতে।
কার্ল মার্ক্সঃ এটা আমার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য যে মার্ক্সবাদ বুঝেছি পপার পড়ার পর। তাই লেনিনবাদি মুর্খদের কবলে পড়তে হয় নি। সমাজ বিবর্তনের যে রূপরেখা মার্ক্স দিয়েছিলেন, সেটাকে আমি সঠিক বলেই মনে করি। কিন্ত লেনিনবাদিরা তার যে ব্যাখ্যা দিচ্ছে সেটা ভুল। মার্ক্সবাদে কোন বিপ্লব নেই-সবটাই সামাজিক বিবর্তনের সায়েন্স ফিকশন। মার্ক্স যেভাবে ধনতন্ত্র থেকে সমাজতন্ত্র এবং তার থেকে কমিনিউজম আসবে বলে হিস্টরিসিজম করেছিলেন, সেটাকে আমি ঠিক বলেই মনে করি। স্যার পপার এই ধরনের হিস্টরিসিজমকে অবাস্তব বলেছেন। সেটাও ঠিক হতেই পারে-কারন কমপ্লেক্স সিস্টেমে ডেটারমিনিজম না থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্ত তবুও মানুষের নির্মান শুধু বিজ্ঞানভিত্তিক না। কিছু বিশ্বাস, তা ক্ষীণ হলেও থাকতেই পারে। সমাজতন্ত্রের পতনের ফলে অনেকেই মার্ক্সবাদ সঠিক কি না, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন-কিন্ত বাস্তবত এটাই যে পৃথিবীতে যেসব সমাজতান্ত্রিক দেশগুলি প্রতিষ্ঠা হয়েছে-সেগুলোতো আসলেই ফ্যাসিস্ট ন্যাতসি রাষ্ট্র। মার্ক্সীয় সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্যে আন্তর্জাতিকতা বাধ্যতামূলক। আরো একটা ব্যাপার লেনিনবাদিরা সম্পূর্ন গুলিয়েছে। সেটা হচ্ছে মার্ক্স খুব পরিস্কার ভাবে লিখে গিয়েছিলেন, উৎপাদন ব্যাবস্থার উন্নতি বা উন্নত উৎপাদন ব্যাবস্থায় ধনতন্ত্রের মাধ্যমে না পৌঁছালে, সমাজতন্ত্রের আগমন সম্ভব না। এখন কতটা উন্নতি বা কি ধরনের উন্নতি দরকার বা ধনতন্ত্রের কি ধরনের সংকট দরকার, যা সমাজতান্ত্রিক বিবর্তন সূচিত করবে, সেই ব্যাপারে তার বক্তব্য বা তত্ত্ব ভুল ছিল। ধনতন্ত্র সমস্ত সংকট কাটিয়েছে উন্নত আবিস্কারের মাধ্যমে। এখন আস্তে আস্তে সেই আবিস্কার করাটাও একটা বিশাল জটিল পদ্ধতি হয়ে যাচ্ছে। আগে দু একজন মিলে আবিস্কার করতে পারত-এখন আস্ত কয়েক বিলিয়ান ডলারের কোম্পানী গুলোও আবিস্কার করতে পারছে না-কারন প্রযুক্তি আরো জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। অর্থাৎ আবিস্কার করার ক্ষমতা ধনতন্ত্র হারাচ্ছে। আমার মতে এটাই আসল সংকট। মন্দা সাময়িক-একটা সার্কলে আসে যায়। কিন্ত আবিস্কারের পদ্ধতি বন্ধ হয়ে গেলে ধনতান্ত্রিক ব্যাবস্থা মুখ ধুবরে পড়বে। এবং আস্তে আস্তে সেই দিকেই আমরা এগোচ্ছি, যা সমাজতন্ত্রের সহজাত বিবর্তন ত্বরান্বিত করবে। কোন বিপ্লবী তত্ত্ব না -এই গণতান্ত্রিক ক্রমবিবর্তনই মার্ক্সবাদ! বাকীটা বিকৃতি!
ফ্রেডরিক নিৎসেঃ যদি আমাদের জীবনের সমস্ত অতীত সিদ্ধান্তকে বিশ্লেষন করি কি দেখব? প্রতিটা সিদ্ধান্তের পেছনে “ভয়” এর দীর্ঘ করাল ছায়া। কতকিছুর ভয়! সামাজিক মর্যাদা, ক্ষমতা হারানোর ভয়, অর্থনাশের ভয়, চাকরি হারানো অনিশ্চিত জীবনের ভয়- ভয়ের সুদীর্ঘ লিস্টের সমষ্টি আমরা। শুধু ধর্মভীরুদের দোষ দিয়ে কি হবে? ঈশ্বরকে ভয় না করলে কি হবে, বাকী হাজার হাজার জিনিস হারানোর ভয় আমার মতন নাস্তিকদের। আমি লেখক না হয়ে ইঞ্জিনিয়ার কেন? ইঞ্জিনিয়ারিং এর থেকে লিখতে আমার একশোগুন ভাল লাগে। তবুও আমি লেখক নই, ইঞ্জিনিয়ার। কারন দারিদ্র্যের ভয়। তাই নিৎসে বলছেন, প্রতিটা মানুষ তার নিজের কাছে একটা বিরাট “এমব্যারাসমেন্ট”। ভয়ের চোটে মানুষ বাধ্য হয় নানান কম্প্রোমাইজ করে-যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিজেকে অপমান করা। এটা প্রতিটি মানুষের জীবনে একটা সাশ্বত সত্য। নিৎসের নিহিলিস্ট দর্শন বা মরালিটির ভক্ত আমি না। কিন্ত ভয়কে জয় করতে পারলে, আরো উন্নত মানুষ হওয়া সম্ভব। ভয় আমার সিদ্ধান্তকে কতটা প্রভাবিত করছে-এটা বুঝতে নিৎসে ছারা উপায় নেই।
মেঘনাদ সাহাঃ বিজ্ঞানী হয়ে সমাজের জন্যে কি করা উচিত? এই ব্যাপারে নানা মুনির নানা মত। থাকতেই পারে। তবে বিজ্ঞানীকুলে এই ব্যাপারে মেঘনাদ সাহা আমার প্রথম পছন্দ। বাল্যের সুকঠিন দারিদ্রই তাকে বাধ্য করেছিল সমাজ সচেতন হতে। তার নাম নোবেল প্রাইজের জন্যে ৬ বার বিবেচিত হয়েছে-স্যার রমনের আগেই তার নাম দুবার নোবেলের জন্যে উঠেছে। উনি নোবেল প্রাইজ পান নি। তাতে কি? ভারত যাতে বিজ্ঞানযজ্ঞে পিছিয়ে না পড়ে তার জন্যে নিজে হাওড়ার ওয়ার্কশপ থেকে এশিয়ার প্রথম সাইক্লোট্রন বানিয়েছেন। যেখানেই ছিলেন, নিজেই ছুতোরের কাজ করে যন্ত্র বানাতেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, ভারতের নদীপরিকল্পনাও তার কীর্তি। ধর্মের বিরুদ্ধে ছিলেন আকুতোভয়। উনার লেখা বাংলা বই ছোট বেলায় পড়েছি। ত্রিকোনিমিতি উনার বই পড়ে শেখা-এবং সেটাও অদ্ভুত ছিল। এমন সমাজ সচেতন বিজ্ঞানী বিরল।
এন্টন চেকভঃ চেকভের ছোট গল্প প্রিয় বলে, চেকভকে এই লিস্টে রাখি নি। আর কোন সাহিত্যিকের সাথে আমার নাড়ির যোগ এত তীব্র না। যে শ্লেষ এবং মাইক্রোস্কোপ দিয়ে চেকভ আমাদের খুঁটিনাটি দেখেছেন-প্রতিটা সম্পর্কই আমার কত চেনা।
আমার চেনা জানা পৃথিবী, বাস্তবতা একটা পেঁয়াজের মতন। যত ছাড়াবে, তত ঝাঁজ। প্রতিদিনের সম্পর্ক কত সার্বজনীন, কত অসাধরন সুন্দর হতে পারে, সেই ছোট ছোট অনুভুতির মণিমুক্তগুলো চেকভ থেকেই কুড়িয়েছি।
রবীন্দ্রনাথঃ রবীন্দ্রনাথ কেন? অনেক বাঙালী আমার লিস্টে ১-১০ সবকটাতেই রবীন্দ্রনাথ বসাতে পারলে খুশী হবেন। আমি অবশ্য সেই কারনে রবীন্দ্র প্রভাবিত না। রাশেলের মতন আমিও রবীন্দ্রদর্শনে নতুন কিছু পাই নি। সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ মহৎ-কিন্ত অমন সাহিত্যিক বাংলায় না আসলেও বিশ্বে অনেকেই আছেন। আমি রবীন্দ্রপ্রেমী শুধু দুটো কারনে- গান আর তার ভাষাকৌশল। গান নিয়ে কিছু বলার নেই। আমার কাছে রবীন্দ্র সংগীত ভাষা, সুর এবং ছন্দে বিশ্বশ্রেষ্ঠ। সেটা অবশ্য আমার অভিমত। তবে রবীন্দ্রনাথের ভাষা নিয়ে আমার বলার আছে অনেক কিছু। ভাষার শৈল্পিক প্রয়োগ সব সাহিত্যকর্মীর প্রাথমিক কর্ম হতে পারে-তবে রবীন্দ্রনাথের হাতে তা যে পর্যায়ে উন্নিত হয়েছে-সেখান থেকে ভাবপ্রকাশের সময় একটা বিশ্বাস মনে সব সময় কাজ করে। ভাষাই আসল ভাবব্রহ্ম!
গৌতম বুদ্ধঃ আমার পিএইচডি থিসিস গৌতম বুদ্ধকে সমর্পিত। জীবনে ওঠা নামা থাকে। পাওয়া না পাওয়ার অসংখ্য বেদনার বলয়ের বৃত্তে আমাদের কিৎ কিৎ খেলা। আমার জীবনে আনন্দ এবং দুঃখ দুটোই কম। প্রথম কারন, প্রত্যাশা নেই। দ্বিতীয় কারন জেন দর্শন। সব কিছুরই দুটোদিক দেখতে পাই। জীবনের ব্যালান্স শিটে নিট লাভ বা নিট লোকসান বলে কিছু নেই। কিছু পেলে, কিছু হারাতে হয়। আমি আমেরিকাতে বসে “উন্নত” জীবনে উনুনের শিক কাবাব হচ্ছি না শিক কাবাব খাচ্ছি-সবটাই জীবনের দিকে কিভাবে তাকাচ্ছি, তার ওপর নির্ভরশীল। যদি ভাবি ভাল ভাল খাচ্ছি, ঘুরছি-তাহলে লাভে আছি। আবার যখন দেখি চারিদিকে শুধুই “আমি”-ছোটবেলার মাঠ, নদী, বন্ধু, তুতো আত্মীয়রা হারিয়ে গেছে-“আমি” নামে এক তালগাছ তেপান্তরের মাঠে এক পায়ে দাঁড়িয়ে-তখন কিছুটা বেদনা হয় । হারানোর চাপ। এই উভচর পৃথিবীকে বুঝতে জেন দর্শনই শ্রেষ্ঠ।
জালালুদ্দিন রুমিঃ লালন ফকিরের পূর্বসূরী রুমি। মানবতার দর্শনের শ্রেষ্ঠ প্রচারক কে জানতে চাইলে, আমি একবাক্যে রুমিকেই বেছে নেব। প্রেমিকের কোন ধর্ম নেই-প্রেমই তার একমাত্র ধর্ম অথবা, আমি পূবের না, পশ্চিমের না, ইসলামের না, খ্রীষ্ঠের না— জাতি ধর্ম ভুলে যে মানব ধর্মের সাধনার ডাক, তার পথিকৃত তিনিই। পরবর্ত্তীকালে শ্রী চৈতন্য, রামকৃষ্ণ, ররীন্দ্রনাথ বা লালনের মধ্যেও রুমির বাণীই আমরা একাধিবার শুনবো। জাতিশুন্য, ধর্মীয় পরিচয়শুন্য যে ভবিষ্যতের পৃথিবীর স্বপ্ন আমি দেখি, রুমি সেই স্বপ্নের প্রথম এবং প্রধান কান্ডারী।
স্বামী বিবেকানন্দঃ ক্লাস সেভেনে বিবেকানন্দ রচনাবলীর সাথে আমার পরিচয়। প্রাচ্যের দর্শন জানতে হলে বিবেকানন্দ রচনাবলীর বিকল্প নেই। কিন্ত প্রশ্ন উঠবে প্রাচ্য দর্শন কেন? সম্প্রতি স্টিফেন হকিংস বলেছেন, দর্শনের মৃত্যু হয়েছে-বিজ্ঞান তার স্থলাভিষিক্ত। কথাটি যতটা সত্য, ততটাই ভুল। সত্য এই জন্যে যে জ্ঞানের প্রতিটি আনাচে কোনাচে বিজ্ঞান যেভাবে হানা দিয়েছে, তাতে জ্ঞান ভিত্তিক যেকোন এম্পিরিক্যাল দর্শনের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে। কিন্ত পরিপূর্ন জ্ঞান বা বিজ্ঞানের সাহায্যেও কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব না। এমন একটি প্রশ্ন -জীবনের উদ্দেশ্য কি ? বিন্দু হতে এই মহাবিশ্বের উৎপত্তি, আবার বিন্দুতেই মহাবিশ্বের মৃত্যু হবে। এটাই বৈজ্ঞানিক সত্য যে এই সভ্যতা, মহাবিশ্বের মৃত্যু হবেই। এর মধ্যে খানে আমরা যাই কিছু করি না কেন-কিছু যায় আসে না। সবার পরিণতি সেই বিন্দুতেই শেষ। তাহলে কোন জীবন দর্শন ঠিক-কোনটা বেঠিক আমরা কি করে বলবো? সেই উত্তর বিজ্ঞান দিতে পারে না। এখান থেকেই দর্শনের শুরু। ইসলাম বা একেশ্বরবাদি ধর্ম গুলো আমি এই জন্যেই পছন্দ করি না-এদের অজ্ঞতা এদের বুঝতে দিচ্ছে না, কোন জীবন দর্শন ঠিক , আর কোনটা বেঠিক, এটা বইভিত্তিক, বা জ্ঞান ভিত্তিক হতে পারে না। ভারতীয় দর্শন এটাই শিক্ষা দিয়েছে, জীবন দর্শন আত্মোপলদ্ধি বা রিয়ালাইজেশন থেকে আসে। নিজের প্রতি ডিসিপ্লিনড অনুসন্ধানই, জীবন দর্শনের জন্ম দেয়। এবং সেই জন্যে প্রত্যেকের আলাদা জীবনদর্শন থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। তাই আমরা বলি যতমত, তত পথ। নিজের জীবনদর্শন খোঁজার এই স্বাধীনতা শুধু ভারতীয় দর্শনেই দেয়। প্রতিটা একেশ্বরবাদি ধর্মের কি করিতে হইবে টাইপের জীবনদর্শন, আদিমকালের ছেলেমানুষ দর্শন এবং সমাজে সাম্প্রদায়িকতার জন্ম দেয়। তবে ভারতীয় দর্শনেও কি করিতে হইবে টাইপের ঢাউস বই আছে-সেগুলো একেশ্বরবাদি ধর্মগুলোর মতন বিপজ্জ্বনক। ভারতে হিন্দুত্ববাদের উত্থানকে “ইসলামাইজেশন অব হিন্দুজিম” বলে ভাবা যেতে পারে। ভারতীয় দর্শনের সাধনায় রুলবুকের স্থান নেই-তা স্থান কাল নিরেপেক্ষ আত্মোপলদ্ধির জগৎ।
ভ্লাদিমির লেনিনঃ আমি ঘোর লেনিন বিরোধি। ১৯১৮-১৯২১ পর্যন্ত লাল সন্ত্রাসের মাধ্যমে লেনিন যত কৃষক শ্রমিক এবং রাজনৈতিক কর্মী খুন করেছেন, তার প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা থাকাও অসম্ভব। তার লেখাও আহামরি কিছু না-পান্ডিত্যের বদলে নির্বুদ্ধিতা এবং ওপর চালাকি আমার বেশী চোখে পড়ে। কিন্ত তবুও সমাজ বদলের জন্যে রাজনৈতিক সংগঠন করতে গেলে, লেনিনের জীবন এবং কর্মের দিকে বারবার তাকাতে হবে। ১৯১৭ সালের এপ্রিল মাসে বলশেভিক পার্টি যখন সম্পূর্ন ধ্বংশ, তখন শুধু মাত্র জনরোষকে কাজে লাগিয়ে মাত্র ছমাসের মধ্যে রাশিয়া দখল করে নিলেন। তার সাথে কিছুই ছিল না। শুন্য থেকেই ম্যাজিক দেখিয়েছিলেন। কি করে সম্ভব হল? একটা ছোট ঘটনা। তখন বলশেভিক মুখপত্র প্রাভদাতে প্রবন্ধ বেশী ছাপা হত না।শ্রমিকরা নিজেদের দুর্দশার কথা চিঠি লিখে জানাত। এক অর্থে সেটাই পৃথিবীর প্রথম স্যোশাল মিডিয়া।
আজকের ভারতে মিডিয়ার এত চাকচিক্য-অথচ অসংগঠিত ক্ষেত্রের প্রান্ত্রিক শ্রমিক কৃষকদের অবরুদ্ধ কথাকে জন সমকক্ষে আনার জন্যে কোন মিডিয়া নেই। লেনিন যেটা ১৯১৭ সালে পেরেছিলেন, আমাদের দেশ তা আজও পারে নি। রাজনৈতিক নেতৃত্বে সফল হতে গেলে লেনিনের জীবনকে ভালভাবে জানা জরুরী।
মিখাইল বাকুনীনঃ ধনতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্রের অমানবিক দিক গুলো দেখলে প্রথমেই যার কথা মনে পড়ে তিনি বাকুনীন। স্টালিন এবং ধনতন্ত্রের অত্যাচারের একটাই যোগসূত্র। সেটা ক্ষমতা। স্টালিন তখন ও জন্মান নি-কিন্ত বাকুনীন বলে গিয়েছিলেন কোন মহান বিপ্লবী যদি অত্যাচারী জ়ারের সিংহাসনে বসে, সে এক বছরের মধ্যে জারের চেয়েও শতগুন অত্যচারী হবে।স্টালিন তার বিশুদ্ধ প্রমান। জারের আমলে স্টালিন রাজনৈতিক কর্মের জন্যে তিনবার সাইবেরিয়ায় নির্বাসিত হন। একবার গৃহকত্রীর পেট করে দিয়ে আসেন। পরের বার এক ত্রয়োদশী কন্যাকে বিয়ে করেন। আর স্টালিনের আমলে, বলশেভিক বিপ্লবের অন্যতম উজ্জ্বল নেতাদের সবাইকে খুন করা হয়েছে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক মতাদর্শের বিরোধিতার কারনে। শুধু স্টালিন কেন, বাকুনীনের বক্তব্য ছিল অর্থ এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা মানুষের মন এবং হৃদয়কে বিকৃত করে। ধনতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্রের পচনের কারন এই ক্ষমতা-তার উৎস অর্থ বা রাজনীতি যাই হোক না কেন। পশ্চিম বঙ্গের মানুষ বাকুনীনকে চেনে না। তারা দেখেছে খালি পায়ে হাঁটা সত্তর দশকের কমরেডরা আজ গাড়ি হাঁকিয়ে ঘোরে। ঠিকাদারিতে আঘাত করলে মানুষ খুন করে। বাকুনীনের কথা জানলে, তারা বুঝত, এটা বাকুনীন অনেক দিন আগেই বলে গিয়েছিলেন। সুতরাং ক্ষমতার প্রকৃত বিকেন্দ্রীকরন ছারা যে কোন সিস্টেমই অমানবিক বা অত্যচারী হতে বাধ্য।
চে গুয়েভেরাঃ চে কে কি আমি কমিনিউস্ট বলবো? আমি নিজে ১০০% কমিনিউস্ট বিরোধি। তবুও কেন চে? কারন সাধারন এবং অত্যচারিত মানুষের প্রতি “আজন্ম” এবং অকৃত্রিম ভালবাসাতে চে অদ্বিতীয়। গান্ধীও ক্ষমতার প্রতি লালায়িত ছিলেন-চে ছিলেন না। চে কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল-এক জন আদর্শ বিপ্লবী কে? চে জানিয়েছিলেন, যে মানুষকে ভালবাসতে পারে। চে বলেন নি পার্টির প্রতি আনুগত্যের কথা। বলেন নি নন্দীগ্রামে যখন মানুষকে খুন বা ধর্ষন করছে ভারতীয় কমিনিউস্ট পার্টির লোকেরা, শুধু সেই পার্টির লোক বলে, আনুগত্যের কারনে, সেই অমানবিক ঘটনা সমর্থন করতে হবে। মানুষের প্রতি ভালোবাসাই একজন বিপ্লবীর প্রথম এবং প্রধান পরিচয়। অনেকেই হয়ত সেটা বলে। তারপর লেনিন, স্টালিন, মাওদের মতন অত্যচারী শাসকে পরিণত হয়। চে কিন্ত কিউবার ক্ষমতার ক্ষীর খেলেন না। আফ্রিকাতে গেলেন বিপ্লব করতে। সেখান থেকে বলিভিয়াতে। সোভিয়েত সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেন যখন কাস্ত্রো সোভিয়েত প্রভুদের বুট চাটতে ব্যাস্ত ছিলেন। এমন অকৃত্রিম মানব প্রেমিক বিশ্বইতিহাসে বিরল।
আমি বাকীদের ও অনুরোধ করব, তারাও তাদের জীবনের অনুপ্রেরণাদের নিয়ে লিখুন। আমরা তাদের দেখেও অণুপ্রাণিত হই।
অনেক লেখাই পড়া হয়, কিন্তু মন্তব্য করা হয় না। এটা বেশ লাগলো। তাছাড়া, সচলায়তনে নিৎসেসাবরে নিয়ে লিখতে গিয়া হেভি ধরা খাইসিলাম। সুতরাং এখানে দেখে বেশ ভাল লাগলো। সব মানছে কেউ তো কখনো এমন বলছেও না! 🙂
আমি এক এক সময় ভিন্ন ভিন্ন মনীষীদের প্রতি আকর্ষিত হয়েছি। আর এসব আকর্ষনের পিছনে কারণ ছিল তাদের জীবনী বা লেখা গ্রন্থ পড়ে। উপরো্ক্ত ১২ জন তালিকার মধ্যেও দুএকজন আছেন যাদের কর্মকাণ্ড আমাকে প্রভাবিত করেছে। তবে বাংলাদেশের দুজন লেখক দ্বারা আমি ভীষণভাবেই প্রভাবিত হয়েছি- ১) হুমায়ুন আজাদ ২) আহমদ শরীফ।
বর্তমানে যাদের লেখা আমাকে প্রভাবিত করছে, তাদের মধ্যে ১) অভিজিৎ ২) বন্যা আহমেদ ৩) ফরিদ ৪) বিপ্লব পাল ৫) আকাশ মালিক
এমন একদিন আসবে যেদিন বিপ্লব পালের মতই কেউ হয়তো এমন তালিকা তৈরী করবেন।
@মাহফুজ, :yes:
যথার্থ বলেছেন।
“এমন একদিন বলতে “খুব দুরে মনে হয়। আসলে কি এটা এত বেশি দূরে?
জেন দর্শন সম্পর্কে জানতাম চাই।
ডার্ক নাইট মুভির সেই ডায়ালগটা মনে পড়ে গেল “you either die a hero or live long enough to see yourself become a villain” এই কথাটা মুজীব, কাস্ত্রো এদের ক্ষেত্রে খুব ভালোভাবেই খাটে।
আপনার পোস্ট পড়ে খুব ভালো লাগলো, আমার জ্ঞান দর্শনের ব্যাপারে অনেক কম, অনেক কিছু জানতে পারলাম। গোতম বুদ্ধ সম্পর্কে আরো জানার আগ্রহ আছে। রেফারেন্সে দিলে উপকৃত হতাম।
@শোয়েব, নিচের লিংকগুলো পড়ে দেখেন, ভালো লাগতে পারে । ঈশ্বরনিহীন আত্মবিশ্বাস যোগাতে পারবেন। নিজেকে নিয়ে সুন্দরভাবে ভাবতে পারবেন। আমি অবসরে সেসব পড়গুলো পড়ি। প্রকৃতির সাথে নিজেকে আবদ্ধ করতে পারি, আর সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখতে হয় না। আজকাল বেশিরভাগ লোকই আবেগের বসে নাস্তিক, মুক্তমনা এবং সুশীল বলে পরিচয় দিচ্ছেন। ধর্মের প্রকৃত সংজ্ঞাকে ভুল বুঝতেছেন, অন্যদিকে বিজ্ঞানে বিষয়ে বলা হচ্ছে প্রতিটি পর্দাথের নিজস্ব ধর্ম বিদ্যমান। এই ধর্মকে ইংরেজিতে বলা হয় ‘ল’, ঠিক তেমনিভাবে বুদ্ধ দর্শনেও ধর্ম বলতে মানুষের যে প্রকৃতিজাতস্বভাব তাকে বুঝানো হয়েছে।
http://quangduc.com/English/basic/68whatbuddhataught.html
http://www.what-buddha-taught.net
@শুভাচার,
এই এক বিষয়টাকে নিয়ে পড়েছেন আপনি। একই অর্থের প্রয়োগভেদে ভিন্ন অর্থ থাকতে পারে না?
@রৌরব,
“একই শব্দের প্রয়োগভেদে ভিন্ন অর্থ থাকতে পারে না?” বলতে চেয়েছিলাম।
লেখাটি ভাল লেগেছে। কিছু বিখ্যাত লোকের জীবন এবং দর্শন সর্ম্পকে জানা গেল। সবচেয়ে ভাল লেগেছে গৌতম বুদ্ধকে নিয়ে আলোচনাটুকু।
:yes:
ইংরেজী শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ নিয়ে অনেকেই বলেছেন, কিছু ক্ষেত্রে বিজ্ঞান কিংবা দর্শনের মত বিষয়ে সঠিক বাংলা প্রতিশব্দ না পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে মার্জিনে মন্তব্য জাতীয় দু-একটি সরল নিদর্শন দেয়া যেতে পারে আমার মত বোকা পাঠকদের – এখানে আমার ‘বোকা*..*’ শব্দটা ব্যবহার করতে ইচ্ছে হয়েছিল, কিন্তু আপনারা আশালীন ভেবে বসবেন সেই ভয় থেকে ব্যবহার করিনি, অর্থাৎ ফিড্ররিশ নীৎসের সেই ভয়কে অতিক্রম করতে পারলাম না – জন্যে, তাহলে বোধের অবরুদ্ধতাহেতু পাঠ আস্বাদনে অন্তরায় হতো না। এতো গেলো বাংলা প্রতিশব্দের দৈন্য নিয়ে পাঠ অনুধাবনের সমস্যা, তবে আমাকে যেটা সবচেয়ে বেশী পীড়িত করে তা হচ্ছে এ জাতীয় চিন্তাশীল রচনায় প্রমিত বাংলা বানানের প্রতি পন্ডিত এবং গুণী লেখকদের কালোপাহাড়ীসুলভ ঔদাসীন্য। আশাকরি, বানানের বিষয়ে একটু পরিশ্রমী হলে আমাদের মত বোকা পাঠকবৃন্দ বানান-বিভ্রাটের শিকার কম হবে। :rose2:
লেখাটি আগেই পড়েছি, মন্তব্য করা হয়নি। আমার নিজের দর্শনে সেভাবে কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির প্রভাব নেই। আমি একটু ভিন্ন পন্থা নিয়েছি। আমি সুনির্দিষ্ট কারোর লেখা না পড়ে মূলত সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের উপর নানান লেখকের বই পড়ি। তাই সুনির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির দর্শনের প্রভাব আমার উপর নেই। তাই আপনার উল্লেখিত বেশিরভাগ ব্যক্তির লেখাই পড়া নেই। আমি মূলত ইতিহাসের বই, দর্শনের ইতিহাস, বিভিন্ন দার্শনিকদের জীবনি, বিবর্তনের উপর নানান বই, ধর্মগ্রন্থ, বিজ্ঞানের উপর লেখা বই, রাজনৈতিক দর্শনের বই, অর্থনীতির বই, এভাবে যখন যেটা সামনে এসেছে পড়ি। অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম সেগুলো নিয়ে একটি লেখা দিবো। আপনার লেখাটা পড়ে উৎসাহ পেলাম।
@স্বপন মাঝি,
উনি নেতাজিকে ভালবাসতেন না এই তথ্যের উৎস কি? নেতাজির কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট পদে জেতাকে মেনে নিতে পারেন নি? সেত রাজনৈতিক মত পার্থক্য। উনি বারবার বলতেন “হামারা সুভাষ”। এটাও বলেছিলেন,
আমার হাতে ত বৃটিশদের মত অস্ত্র নেই-থাকলে সুভাষকেই সমর্থন করতাম। মনে রাখতে হবে, গান্ধীর পথ হচ্ছে নৈতিকতাকে সম্বল করে সবলের বিরুদ্ধে দুর্বলের লড়াই।
এটা সরলীকরন। আমি কাউকে ছোট করছি না। কিন্ত চিন্তার মৌলিকত্ব , কর্মের সাথে যোগ না হলে, এই জনপ্রিয়তা আসে না।
সাহিত্য আপেক্ষিক ব্যাপার। তাই বিতর্ক অনর্থক। বানান ভুল-ব্যাপারটা সত্য। সময়ের অভাব।
যদিও মার্ক্সবাদিরা তাই মনে করেন যে সম্ভব না-বাস্তব হচ্ছে সেটা মেনে নিলেও কোন তত্ত্ব বা মতবাদই মানবিকতাকে লঙ্ঘন করে সম্ভব না।
@বিপ্লব পাল,
দেশনায়ক সুভাসচন্দ্র, লেখক ঋষি দাস, দে’জ পাবলিশিং, প্রকাশকালঃ জানুয়ারি ১৯৯৯
অসংখ্য ঘটনার মধ্যে একটা দৃষ্টান্তঃ
রবীন্দ্রনাথ কলকাতা থেকে তাঁকে ( সুভাষচন্দ্র) একটি পত্র লিখেছিলেনঃ
“কয়েকদিন কলকাতায় এসে দেশের লোকের মনোভাব ভাল করে জানবার সুযোগ পেয়েছি। সমস্ত দেশ তোমার প্রত্যাশায় আছে। …….
গান্ধীজীকেও আবার তিনি বলেছিলেন, ” আমি আন্তরিকভাবেই আপনাকে আবেদন জানাচ্ছি, অবিলম্বে সুভাষের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে এই শোচনীয় সমস্যা মেটান।” কিন্তু কবিগুরুর এই আবেদনেও গান্ধীজী কর্ণপাত করেন নি।
তাই সুভাষ শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের সভাপতি-পদে ইস্তফা দেওয়াই স্থির করলেন।
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও সুভাষচন্দ্র বসু, লেখক ডঃ শ্যামাপ্রসাদ বসু
এখান থেকেও একটা নমুনাঃ
“১৮২৯ খৃস্টাব্দে গান্ধীজী লাহোর কংগ্রসে “সম্পূর্ণ স্বাধীনতা”র প্রস্তাবটি উত্থাপন করলে সুভাষচন্দ্র “সমান্তরাল সরকার” গঠনের একটি সংশোধনী আনেন। প্রস্তাবটি ভোটে বাতিল হলেও সুভষাচন্দ্র গান্ধীজীর ক্রোধের শিকার হলেন। তিনি ওয়ার্কিং কমিটি থেকে শুধু বাদ পড়লেন না, এ ব্যাপারে কোন রকম পুনর্বিচারেও গান্ধীজী রাজী হলেন না।”
বাংলাদেশে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীও লিখেছেন গান্ধীজীর ভাল-মন্দ নিয়ে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এবার থেকে মন্তব্য করবো খুব সতর্কতার সাথে। কারণ সময় ( সাপ্তাহিক কর্ম-ঘন্টা ৮০-৮৪) দ্বিতীয়ত হাতের কাছে বই বলতে হাতে গোনা, পড়ার সময় নেই। কেউ উৎস চেয়ে বসলে ….
@স্বপন মাঝি,
হ্যা। ১০০% এক।
কারনটা মুক্তমনাতেই লিখেছিলাম একটা ব্লগেঃ
http://www.mukto-mona.com/Articles/biplab_pal/marxbaad_shoshonmukti.htm
এটাও দেখছি সামু ব্লগে একজন ঝেরে দিয়েছেঃ
http://www.somewhereinblog.net/blog/jolpai/28906237
এই ভাবে ব্লগ চুরি চললে-আমার কোন আপত্তি নেই। শুধু নামটা না দিয়ে ওরা নিজেদের নামে চালাতে চাইছে, এটাত ঠিক না।
@বিপ্লব পাল,
আমি কার কার দ্বারা প্রভাবিত তা চিন্তা করে জানাতে হবে। তবে নারীবাদী অনেকেই এখানে স্থান পাবে। একটু আধটু কষ্ট লাগছে আপনার তালিকায় বারজনের জায়গায় চৌদ্দ জনের কথা বললেন অথচ একজনও নারী নেই। আপনার চিন্তা জগৎকে প্রভাবিত করার মত কোন নারীই নেই।
তবুও ভাবনা উদ্রেককারী লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।
@গীতা দাস,
প্রশ্নটা আমি আরো দু জায়গা থেকে পেয়েছি-কেন এই তালিকায় নারী নেই!
আমি নারীবাদিদের লেখা পড়ি-কিন্ত প্রভাবিত হয় নি। কোন বাদি টাইপের লেখাতে প্রভাবিত হওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। একজনই এই তালিকায় আসতে পারত-রোজা লুক্সেমবার্গ-তিনি কিন্ত নারীবাদি নন। একজন কমিনিউস্ট গেরিলা। ভারতে ইন্দিরা গান্ধী , সিস্টার নিবেদিতা বা মাদার টেরেসার প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল-কিন্ত চিন্তাকে ঘুরিয়ে দেওয়ার মতন তারা কিছু রেখে যান নি। তসলীমা বা মেরী উলকনসক্রাফটের লেখা কি অত গভীরে? আমার মনে হয় নি।
আর নারী দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার প্রশ্নটা ভিন্ন। সেই অর্থে আমার মা দ্বারা আমি অনেক ব্যাপারেই প্রভাবিত। যকোন ব্যাক্তির চেয়েই বেশী প্রভাবিত।
@বিপ্লব পাল,
আপনি কি আইন র্যান্ড (Ayn Rand) এর লেখা পড়েছেন? উনাকে আপনার কেমন মনে হয়?
@মোঃ হারুন উজ জামান,
আয়ান রান্ড যখন পড়ি তখন আমার বয়স ২০। উনার লেখা পড়েই কমিনিউজম নিয়ে মোহভঙ্গ হয়। তবে পরে আবিস্কার করলাম উনিও কমিনিউস্টদের মতন এক চক্ষু হরিণ-ক্যাপিটালিজমের খারাপ কিছু দেখতে পান না! একচক্ষু ষাঁঢ়দের আমি এড়িয়ে চলি-একমাত্র লেনিন এখানে সেই লাইনের লোক-কিন্ত তাকে রাখা হয়েছে রাজনৈতিক আন্দোলনে নেতৃত্বের কায়দা আবিস্কারের জন্যে। রায়ান শুধু বই লিখে টাকা কামিয়ে খালাস।
@বিপ্লব পাল,
প্রথমে বলে রাখি আমি আইন র্যান্ড সম্পর্কে আপনার মতামত জানতে চেয়েছি কারণ উনি মহিলা, এবং কোন নারী আপনাকে প্রভাবিত করেছে কিনা সেই নিয়ে কথা হচ্ছিল।
আইন র্যান্ডকে আমি মূলত পূঁজিবাদের প্রতিভূ হিসেবে দেখিনা। তার মূল দর্শন হল ব্যাক্তিবাদ (individualism) যেটাকে উনি সমষ্টিবাদ (collectivism) এর প্রতিপক্ষ হিসেবে দাড় করিয়েছেন। এই দর্শন স্বাভাবিক ভাবেই পূঁজিবাদের পক্ষে এবং যেকোন ধরনের সমাজতন্ত্রের বিপক্ষে। একই কারনে র্যান্ড স্বার্থপরতার (egoism) পক্ষে এবং পরার্থপরতার (altruism) বিপক্ষে ছিলেন। অর্থাৎ মার্ক্স এবং মাদার টেরেসা এদের দুজনের কাউকেই তার খুব একটা পছন্দ হবার কথা নয়। কোন মার্ক্সবাদি কিংবা নিবেদিতপ্রাণ লোকহিতৈষী (যদিও এদের জীবনদর্শন সম্পুর্ণ আলাদা) যে র্যান্ডকে পছন্দ করবেননা সেটা বলাই বাহুল্য।
আমি নিজেও র্যান্ডকে খুব একটা পছন্দ করিনা। শুধুমাত্র একচোখা বলে নয়, সেই চোখটা আবার একটা স্বার্থপরের চোখ সেজন্যও (একচোখা পরার্থপরতায় আমার খুব একটা আপত্তি নেই)। কিন্তু তা সত্বেও র্যান্ড আমাকে প্রভাবিত করেছেন। কারন র্যান্ড আমাকে একটা সমাজে ব্যাক্তির ভূমিকা, মূল্য এবং অধিকার এবং এগুলোর সাথে রাষ্ট্রকাঠামো আর আর্থসামাজিক কাঠামোর সম্পর্ক নিয়ে একটু গভীরভাবে ভাবতে বাধ্য করেছেন।
আমার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী বরাবরই সমাজতান্ত্রিক ছিল। কিন্তু সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামোর দুর্বলতা বিশেষ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে এর নেতিবাচক প্রভাব এখন প্রায় সর্বজনস্বীকৃত। আর তার অন্যতম কারণ হল সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামোতে ব্যাক্তি, তার স্বকীয়তা, সৃজনশীলতা এবং স্বার্থপরতার অনুভুতিকে দারুনভাবে নিষ্পেশন করা হয়। এই কথাটা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে এবং এটা নিয়ে পরিষ্কারভাবে চিন্তা করতে আমাকে সাহায্য করেছেন আইন র্যান্ড।
অন্যদিকে পূঁজিবাদি ব্যাবস্থার শ্রেনী শোষণ, শ্রেনী বিভক্তি এবং কদর্য্য ভোক্তাবাদ অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে তুলে ধরেছেন মার্ক্স । এখন আমার মতে আদর্শ ব্যাবস্থা হল যার পরিকাঠামো হবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র আর বাজার অর্থনীতি, এবং অবকাঠামো হবে সমাজতান্ত্রিক মূল্যবোধে গড়া গণসংস্কৃতি। এই সোনার পাথরবাটি হয়ত জীবদ্দশায় দেখে যেতে পারবনা। কিন্তু স্বপ্ন দেখতে অসুবিধা কোথায়?
র্যান্ড আর মার্ক্স দুজনেই একচোখা। তবে মার্ক্সের সেই চোখ দেখতে পায় অনেক বেশী বিস্তৃতি নিয়ে আর অনেক বেশী গভীরে। আমি দুজনের কাছ থেকেই চোখ ধার নিয়েছি। তাদেরকে একচোখা হওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
@মোঃ হারুন উজ জামান,
মার্কস মোটেও একচক্ষু হরিণ নন। ডায়ালেক্টিক্স মানেই দু চোখ থাকতে হয়। এক চক্ষু হরিণ লেনিন।
রাষ্ট্রএর সুসম উন্নতির জন্যে একই সাথে উৎপাদন, উদ্ভাবন, সাম্য এবং গণতন্ত্রের প্রয়োজন। একটির ওপরে আরেকটিকে স্থান দিলে, সেই সমাজ এগোবে না। বামপন্থীরা শুধু সাম্যকে কেন্দ্র করে, তাদের আন্দোলন করে, তাই তারা চূড়ান্ত ব্যার্থ এক রাজনৈতিক শক্তি।
আমার যদিও আপনার মত সুন্দর করে লেখার হাত্ নেই, বা লিখতে পারিনা, যাইহোক অনেকের বিষয় আপনার কাছ থেকে জানলাম। তবে লালন, রুমী, বুদ্ধ, বিবেকানন্দ সম্পর্কে জানি, মানি। এদের সবার মূল মানুষ। তবে “চে” এর কথাটা আসলেই খুবই ভাল লেগেছে, লাগারই কথা। বিপ্লবী সেই যে মানুষকে ভালবাসতে পারে।
আমিও দেখি, এই সৃষ্টির যত উদয়-বিলয়, উত্থান-পতন, সব কিছুর মূল মানুষ। এই মানুষই স্রষ্টা, এই মানুষই ভোক্তা, বিনাশকারী। সৃষ্টির সেই আদি থেকেই প্রায় এই মানুষই নিজেদের রুপান্তর, বিবর্তন করেই চলছে।
রবীন্দ্রের গান কবিতা গুলোর ভিতরেও আত্নজগতের অনেক ঘ্রান, সস্তি, পাওয়া যায়। তবে আরও স্পষ্ট, সুন্দর, ভাল লাগে নজরুলের বানীগুলো।
আলোচনা করার মত লেখক নই। ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ
বুদ্ধ দর্শনের এক অংশ মাত্রঃ
“আত্ম দ্বীপ হও, আত্ম শরণ হও, অনন্য শরণ হও, শিক্ষাপদ সমূহকে তোমার দ্বীপ করে তোল, শিক্ষাপদ সমূহকে আত্ম শরণ করে তোল, শিক্ষাপদ সমূহকে অনন্য শরণ করে তোল।
কিরুপে আত্মদ্বীপ, আত্ম শরণ ও অনন্য শরণ হয়? কিরুপে শিক্ষাপদ সমূহ তাহার আত্মডীপ, আত্মশরণ ও অনন্য শরণ হয়?
এখানে আনন্দ, যিনি কায়ে কায়ানুদর্শী হয়ে বিহার করে, তিনি উদ্যমশীল, সম্প্রজ্ঞান সম্পন্ন ও স্মৃতিমান হয়ে জাগতি৯ক অভিধ্যা ও দোমনস্ সকে পরিহার করেন (তৃষ্ণা ও মনস্তাপ সমূহকে) বেদনায় বেদনানুদর্শী….চিত্তে….ধর্মে ধর্মানুদর্শী হয়ে বিহার করেন….অভিধ্যা ও দোমনসসকে পরিহার করে বিহার করেন।
এ ভাবেই তিনি আত্মড্বীপ, আট্মশরণ ও অনন্য শরণ হন। এভাবেই তিনি শিক্ষাপদ সমূহকে আত্মদীপ, আত্মশরণ ও অনন্যশরণ করে তোলেন।” [মহাপরিনির্বাণ সূত্র]
চুল, লোম, নখ, দাঁত, চর্ম, মাংস, স্নায়ু, অস্থি, অস্থি-মজ্জা, বৃক্ষ, হৃদয়, যকৃত, ক্লোম, প্লীহা, ফুসফুস, অন্ত্র, ক্ষুদ্রাঅন্ত্র, উদর, বিষ্ঠা, মগজ এবং পিত্ত, শ্লেষ্মা, পূঁজ, রক্ত, স্বেদ, মেদ, অশ্রু, বসা, থুথু, সিকনী, লালা, মূত্র -এই বত্রিশ প্রকার বস্তু একটির পর একটি পৃথকভাবে দেখতে দেখতে মুক্তা, মণি, বদৈর্য্য জাতীয় কোন মহামূল্য রত্ন অথবা অগুরু, কুঙ্কুম, কর্পূ, আস্তুরি বা বাচূর্ণাদি কোন উত্টম-সুগন্ধি চূর্ণ বলতে কিছুই খুঁজে পান না।
বিঃদ্রঃ আপাততঃএই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র।
@শুভাচার, দূঃখিত টাইপিংয়ের সময় বেশ কয়েকটি বানান ভুল হয়েছে। আশা করি পাঠকবৃন্দ ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে পরে নিবেন।
@শুভাচার,
আপনাদের এই ধরনের বৌদ্ধ ধর্মে আমার কোন উৎসাহ নেই। এগুলোও সব অঈ কি কি করিতে হইবে টাইপের ধর্ম। আমি যেটা লিখেছি-জেন বুদ্ধিজম নিয়ে। যেখানে একটি পর্যবেক্ষনকে সামনে এবং উলটিয়ে দেখতে হয়।
@বিপ্লব পাল, ধন্যবাদ আপনার গুরুত্বপূর্ন মন্তব্যর জন্যঃ
আপনি এই কটাক্ষটি করিবেন বলে জানিলে আমি আপনার এখানে নিশ্চয় মন্তব্য করিতে যেতাম না। দর্শনের কথা আলোচনা করিতে গিয়া আপনি যদি এমনিভাবে দর্শনের মূলভাবকে হীয় করিতেই বা চান, তাহলে আলোচনা করিবার বা কি প্রয়োজন রহিয়াছে? সরাসরি আপনাদের ধর্মের কথাটি বলিবার দরকার ছিল বলিয়া আমি মনে করিতে পারিলাম না। আমরা সচরাচর ধর্ম বলিতেই কুসংষ্কার-মিথ্যাদৃষ্টি পরিপূর্ণ পূঁজা-অর্পনাকে বুঝিয়া থাকি, এইটিও কিন্তু এক ধরনের কুসংষ্কার। অতি আধুনিক হইতে গিয়া যদি ধর্মের মূল অর্থ কি তাহা জানিবার একবারও প্রয়োজন পড়ে না, তাহলে মুক্তমনা পরিচয় দিবার কি বা দরকার? মানুষ সত্যিকার অর্থেই দর্শন এবং ধর্মের মূল ভাবার্থগুলোকে ভুল বুঝিয়া থাকে। সেখানেই সমস্যা বাঁধিয়া রাখেন। আমাদের অতীব এক জরুরী প্রয়োজন তা হচ্ছে “ধর্ম” বলিতে আমরা কি বুঝি তাহা নিয়া বিচার-বিশ্লেষন করা, তাহার পরপরই আমাদের ধর্ম নিয়া আলোচনা করিবার যোগ্যতা রাখে। আর আরেকটু ভালোভাবে আমার উপরেলিখিত মন্তব্যটি পড়লে আপনার হৃদয়ক্ষম হবে যে, বত্রিশ প্রকার দেহের অঙ্গের যে বর্ণনা রহিয়াছে, সবই কিন্তু দর্শনেরই অংশ। আপনি যদি সেসবগুলো বিশেষভাবে দর্শন করিতে সক্ষম হন, তারপরই আপনি বিদর্শনে প্রবেশ করিতে পারিবেন। আর জেনের কথা যদি বলেন, সে ক্ষমতা রাখিতে হইলে আপনাকে বহু বছর একাকীত্বে থাকিতে হইবে। জেন হচ্ছে জাপানি শব্দ, চান হচ্ছে চাইনিস শব্দ, ধ্যান হচ্ছে সংষ্কৃত শব্দ, এবজরভশন হচ্ছে ইংরেজী প্রতিশব্দ। এটি হচ্ছে পরম সত্য। যাকে আপনি কোনরকম কথ্য ভাষা দ্বারা ব্যাখ্যা করিতে পারিবেন না, যা শুধুমাত্র অনুধাবনের ব্যাপারই মাত্র। আপনি যদি সত্যিকার দর্শন নিয়া আলোচনা করিতে চান তাহলে আমি আপনার সাথেই থাকিতে রাজী। ধর্ম নিয়া যখনই এতই ভুল বুঝাবুঝি, তাহলে ধর্মের শব্দটি বাদই দিতে হবে ? দর্শন, ফিলোসফি, রিলিজয়ন এবং ধর্মের ভাষাগত-সংজ্ঞাগত পার্থক্য আগে জানিবার প্রয়োজন রহিয়াছে বলে মনেকরি। আমরা খুব সহজেই প্রতিশব্দস্বরুপ ইস্টের একটি শব্দের সাথে ওয়েস্টের অন্য আরেকটি শব্দকে ভালোভাবে কোনরকম বিভেদ ছাড়াই মিলিয়ে নিই, এবং কি দর্শনগত শব্দগুলোকেও। আমার বুদ্ধের দর্শন ভালো লাগিতে পারে, তাই বলিয়া আমি বুদ্ধের অন্ধভক্ত হয়ে গেলাম তাহা আমার পক্ষে হইতে পারিবে না।
আপনার জন্য শুভ কামনা।
@শুভাচার,
মহাশয়
ধর্ম মানেই হচ্ছে কৃসংস্কারের অন্ধকার গর্ত। আপনি যদি বিপরীত মত পোষন করেন তো একটি আর্টিকেল লিখুন না। আমরা পড়ে প্রিত হই।
মানুষ যদি ধর্ম দর্শন ভুল বুঝে থাকে তেব সঠিক বুঝে কারা? জ্বিন,পরী,দানব…..?
আপনি যদি অনুগ্রহ করিয়া বুঝাইয়া বলেন যে বোল্ড করা অংশ গুলি কিভাবে অংগ হয় তাহলে বড়ই উপকৃত হইবো। আমার লেখায় গুরুচন্ডালী আছে কিনা মেহার বানী করিয়অ ধরাইয়া দিবেন।
@শুভাচার,
শুভাচার ভাই, আপনি কোন আচার ফলো করেন লেখার সময়? শুভ না অশুভ, শুদ্ধ না অশুদ্ধ, সংস্কৃত না বাংলা? বাংলা ভাষাটাকে যেভাবে গুলিয়ে লাবড়া বানিয়ে ফেললেন তাতে করে তো কথার মর্মার্থ উদ্ধার করাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে, ধর্ম দর্শনের দিল্লি তো বহুতই দূর। আপনি কি বাংলা ভাষায় কথা বলেন? আপনার এই নতুন জ্বালাময়ী খিচুড়ি ভাষার স্রোতে তো বাংলা ভাষাটা ভষ্ম হতে চললো।
এহে হে, দাদা, এক্কেবারে ভুল জায়গায় এসে পড়েছেন। আপনার জন্য তো দুঃখই হচ্ছে এবার। এরা তো ধর্মের মূল উৎপাটনের জন্য চক্রান্ত করে চলেছে, মুক্তমনার এই গাধাদের আর নতুন করে মূলার্থের মুলা দেখিয়ে কি কোন লাভ হবে? সে মুলা বাসি হয়ে গেছে সেই কবে! নতুন কোন মুলার সন্ধান থাকলে দিয়েন চেখে দেখতে পারি।
@ফাহিম রেজা, & আসরাফ,
ধন্যবাদ আপনাদের কমেন্টের জন্য। আমি স্বীকার করছি যে, আমি সাধু এবং চলিতে মধ্যে গলিয়ে ফেলেছি, যা ছিল সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃত। দেখতে -পড়তে খুব বিশ্রী তাইনা? এবার চিন্তা করতে পারেন, যখন আমাদের পালি কিংবা সংষ্কৃতের এক দার্শনিক শব্দের সাথে যদি ওয়েস্টের অন্য এক শব্দকে গলিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়, তাহলে কেমন লাগতে পারে আপনাদের খেয়াল আছে? দর্শন শাখায়, দ্যা পিলোসফি অফ লেংগুয়েছ & প্রবলেম নামে একটা চ্যপ্টার আছে, যেখানে মূলত ভাষাগত যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। আপনারা রিলিজিয়নের সংজ্ঞা না খুঁজে ধর্মের সংজ্ঞাটা খুঁজে দেখেন না। আর যদি ধর্ম বলতেই কুসংষ্কারকে বুঝেন, তাহলে প্রতিটি পদার্থের ও ধর্ম আছে এটা বিশ্বাস করেন কিভাবে? আমি বৌদ্ধ ধর্মকে যে বড়ভাবে দেখতে প্রমাণ খাতাচ্ছি তা ভাবলে ভুল হবে, সত্যকে জানতে এবং জানাতে আমাদের সত্যিকার মুক্তমনা হতে হবে । ধর্মের মূল সংজ্ঞা জানতেঃ http://en.wikipedia.org/wiki/Dharma_%28Buddhism%29 । আশাকরি ভালোভাবে পড়ে বুঝে নেবেন। আশাকরি আপনাদের ধর্মের সংজ্ঞা নিয়ে ভুল ভেঙ্গে যেতে বাধ্য। ইসলাম এবং খ্রীষ্টানের উদ্ভব হয়েছিল কিন্ত পশ্চিমাবিশ্বে, খেয়াল রাখবেন। তাই সাধু এবং চলিতের যেমন মিশ্রণ ঘটানোকে গুরুচন্ডালি দোষ বলে ধরা হয়, ঠিক অনুরুপভাবে রিলিজিয়ন এবং ধর্মকে একইভাবে গলিয়ে ফেলা একই দোষের দুষ্ট। আবেগের বশে মুক্তমনা হওয়া যায় না। নিচের লিংকগুলো পড়ে নেবেন, এবং বুঝতে চেষ্টা করবেন। তারা আসলেই ধর্ম বলতে কি বুঝে এবং কি করে? ধর্ম মানে কি মুর্তি পূজা, ঈশ্বরের বিশ্বাস? আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে। ভালো থাকবেন।
http://quangduc.com/English/basic/68whatbuddhataught.html
http://www.what-buddha-taught.net
@শুভাচার,
আমি ভাবিয়াছিলাম, আপনাকে এই ছত্রে ভুলিয়া থাকিব-এই পোষ্টের ধাতানি খাইয়া, চুপ করিয়া বসিয়া থাকা অসম্ভব হইল।
আপনি ঠিকই বলিয়াছেন-ধর্মের অর্থ ধৃ+অনট- অর্থাৎযাহা আমাদের ধারন করিয়া থাকে। সোজা কথায় মনুষ্যধর্ম। ইহা যদিও সত্য বলিয়া ধরিয়া লই, বৌদ্ধ ধর্ম মহান হইতে পারে, কিন্ত ইহার নানা বিধ দুর্বলতা বিদ্যমান।
প্রথমেই বলিয়া লই বৌদ্ধ ধর্মের প্রধান দুর্বলতা সামাজিক মানুষের নির্মানে। মানুষ হইয়া জন্মাইলে যুদ্ধ করিতে জানিতে হইবে, ভালবাসিতেও জানিতে হইবে। ইসলাম বা হিন্দু ধর্ম এই অর্থে আমার নিকট অধিক অর্থবহ এই কারনে যা তাহারা ধর্মে যুদ্ধকে যথাযথ মর্যাদা প্রদান করিয়াছে। তাহারা সাংসারিক কর্তব্য এবং যৌনতাকেও সন্মান দিয়াছে। ইহা একটি সমাজের সারভাইভাল ফিটনেসের জন্যে সেকালে জরুরী ছিল। আজ এই উন্নত বিজ্ঞানের দিনে, সেই নারী বিরোধি, যুদ্ধাশ্রইয়ী ইসলাম বা হিন্দু ধর্মের প্রয়োজনীয়তা শেষ হইয়াছে, তাহা মানিতেছি। এবং সেই কারনেই বৌদ্ধ ধর্মের বাজার দর উঠিতেছে-ইহাও ঠিক। তদুপরি-ইহাতে বৌদ্ধ ধর্মের ফাঁক ফোকর ভরাট হয় না। বৌদ্ধ ধর্মের ওপর আমার একটি লম্বা সমালোচনা আছে- পড়িয়া লইলে বাধিত হই।
http://biplabspiritualism.blogspot.com/2007/09/absurdity-of-buddhist-philosophy.html
@বিপ্লব পাল,
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যর জন্য। ভুল বুঝাবুঝি যাহাতে না হয়, সেজন্য ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে সতর্ক থাকা উচিত। এতসবের কারণ আপনি হয়ত আপনার প্রথম মন্তব্য ধরতে পেয়েছেন। যাহোক, আপনার লেখাটি পড়েছি -যতথা লম্বা সমালোচনা বলেছেন, আমি ততোথা সমালোচনা দেখতে পেলাম না -বরং আপনি আপনার স্বাধীন মতামত দিয়েছেন, যা সমাজের জন্য অতীব জরুরী এবং যুক্তিক সচেতনতা বাড়াতে সক্ষম । মানুষ অনেকক্ষেত্রে অন্ধবিশ্বাসের উপর হাঁটতে গিয়ে অন্ধপ্রেমিক- অন্ধভক্ত হয়ে যায়। একজন মুক্তচিন্তাকারীর জন্য তা কখনো যুক্তিযুক্ত নয়। ধরুন যদি আমাকে এক মেয়ে খুব ভালোবাসে, যেখানে সেখানে আমার প্রশংসা করে, বাহব্বা জানিয়ে মানুষদের কাছে আমার কথা বলে, যা এক কথায় অন্ধপ্রেমিক। আমিও তাকে হারানোর ভয়ে কিছু বলতাম না। কোন একসময় দেখা গেল মেয়েটি হঠাৎ করে খোঁচট খেয়ে আমাকে অপমান করতে শুরু করলো, যা ও আবার জনসমক্ষে। আমি বিচলিত হলাম, রাগে রাগন্বিত। এখন আমার সম্মান বাঁচাতে আমি মেয়েটির বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো শুরু করলাম, সব দোষের ভার মেয়েটির উপর দিয়ে দিলাম। তারপর ও সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে নিজেকে একজন মুক্ত এবং যুক্তিক চিন্তাকারী হিসেবে তুলে ধরতে গেলাম। আমার দোষগুলো সব ভালোতে ফুঁটে উঠলো। প্রমাণ করে ছাড়লাম মেয়েটিরই সব দোষই ছিল। ঠিক সেসময় যখন মেয়েটির সাথে ভুল বুঝাবুঝি হচ্ছিল আমি যদি সত্যিকার একজন জ্ঞানী, মুক্তচিন্তাবিদ হতাম আমার দুর্বলতাগুলো আমি অবশ্যই মেয়েটিকে সব বলে দিতাম। মেয়েটিকে ও আমার দুর্বলতাগুলো জেনে আমার সব জায়গাতে বিশ্বাসের উপর ভর করতে হতো না, এবং আমি ভুল করলে সে শুধরিয়ে দিতো। কিন্তু আমি সেসময় সত্যিকার মুক্তমনা ছিলাম না, আমার ভয় ছিল, লোভ ছিল, হিংসা ছিল, এক কথায় তীব্র আকাংখা আমাকে ঘিরে বসেছিল। তাই আমার দুর্বলতাগুলো আমি যথাসম্ভবভাবে লুকিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সত্য একদিন ধরা দেয়, আমি ধরা খেলাম। আর সে ভুল বুঝলো। তাহলে আসলে কার দোষ ছিল? সেখানে কারোর কিন্তু দোষ ছিল না, দোষ ছিল অপরিপক্কতার। বুঝার-চিন্তা-চেতনার ক্ষমতাগুলো পাকাপক্ত হয়নি। এখনতো আমি অনেক চিন্তা করতে পারি, আমার কি মানায় কারোকে অন্ধভাবে ভাবিয়ে তুলতে? আমার উপর বিশ্বাসস্থাপন করতে? দেখুন না জাফর স্যারে অন্ধভক্তদের কি হাল, না পড়ে না বুঝে স্যারের বিরুদ্ধে কিছু একটা বললে গালিগালাস শুরু হয়ে যায়। http://www.somewhereinblog.net/blog/jiban1983/29286631
এখানেই আমাদের দুর্বলতা। আমরা মানুষদের ভাবাতে জানি না। সরাসরি আক্রমণ করে পরাজিত করতে চাই। এর ব্যবহার মুহাম্মদ (সাঃ) কিন্তু ভালোভাবে সুযোগ নিয়েছিলেন। বুদ্ধের কাছ হতে একটা জিনিস খুব ভালোভাবে শেখার আছে, তা হচ্ছে তিনি সবসময় বলতেন আমাকে বিশ্বাস-ভক্তি-পূঁজা-প্রশংসা করে আপনার কোন লাভ হবে না। আমি আপনাকে মুক্তি করাতে পারবো না। নিজের পথ নিজেই খুঁজে নাও। আমার আবিষ্কৃত মানবসত্য গুলোকে তোমার নিজের করে জানতে-বুঝতে চেষ্টা করো। গঠনগত সমালোচনার কোন বাঁধা দেননি তিনি। বুদ্ধের শিক্ষার আবেদন কখনো কমতি ছিল না। শুধু এ যুগে কেন? একসময় সারাভারত বর্ষ পেরিয়ে মধ্যেপ্রাচ্যসহ চীন দেশে ও প্রচার হয়ে যায়।
আমাদের উচিত রোগের কারণকে খুঁজে দেখা, শুধু রোগের লক্ষণকে নয়। যতদিন রোগের কারণ না জেনে শুধু রোগের লক্ষণকে নিয়ে চিকিৎসা করা হবে, রোগকে নির্মূল করা কখনো সম্ভবপর হবে না। বিশ্বাস হচ্ছে আমাদের রোগের কারণ আর ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস হচ্ছে রোগের লক্ষণ। আমরা রোগের লক্ষণের উপর জোড় দিয়ে রোগের কারণের উপর খেয়াল রাখছি না। তাইতো বারবার একই জায়গায় এসে গালাগালি-হুমকি-ধুমকি দিচ্ছি, যা ভালোগুণ নয়। আরেকটি কথা, একজন মানুষ যেমন কোন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের উপর নির্ভর না করে যেমন সারাজীবন বাঁচতে পারে ঠিক তেমনি একমানুষ বৌদ্ধ ধর্মের উপর কোনরকম বিশ্বাস না করে বাঁচতে পারে। তাই বলে বিজ্ঞান কিংবা ধর্ম যে নেই তা কখনো অস্বীকার করা যাবে না। আমরা দূঃখে সবসময় জর্জরিত হচ্ছি, কখনো অচেতনভাবে আবার কখনো সচেতনভাবে। কিন্তু আমাদের যতার্থ দূখের কারণ এবং উৎপত্তি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান না থাকার কারণে নানাবিধ চলচাতুরি করে দূঃখ থেকে পালিয়ে থাকতে চেষ্টা করছি। এসব হচ্ছে মূলত অজ্ঞানতার কারণে, আমরা সবসময় লোভ-লালসার জর্জরিত হয়ে ইগো সৃষ্টি করে চলেছি। এসবের জন্য দরকার দার্শনিক বিশ্লেষণ, দর্শনতত্ত্ব সম্পর্কে ভালো জ্ঞান। আরজ আলী মাতুব্বর ও তো একই কথা বলেছিলেন। মনুষ্যধর্মতো সেটাই হওয়া উচিত, যা মানবদর্শন তাই ও মনুষ্যধর্ম।
যারা আবেগের বশে নাস্তিক, মুক্তমনা……….বলে বলে ইসলামের-হিন্দুর বিরোধীতা করছে, অর্থাৎ অন্ধভক্ত; আপনার -আমার দ্বায়িত্ব তাদেরকে সচেতন করা, বুঝিয়ে দেয়া…..আবেগে দ্বারা কেউ নিজেকে ঈশ্বরহীন ভাবতে পারেন না। একবার হোঁচট খেলে সব চলে যাবে। দুর্নাম হবে তা বড় কথা নয়, বড় কথা হচ্ছে মানুষ তালগাছের মতো করে ঈশ্বরের বিশ্বাসকে আগলিয়ে থাকতে, আর উদাহরণ দিব দেখো অমুকে কী হাল। যৌবন বয়সে ঈশ্বরের বিশ্বাস করেনি, এখন বুড়োকালে ধর্মধর্ম করে মরছে। যারপরিপ্রেক্ষিতে এক সমাজের লোকও ভাবিয়ে উঠতে পারে। আর সবকিছুর পরও যদি ব্যক্তি স্বাধীনতাকে জোড় দেওয়া হয়, তাহলে এসবের দরকার কিছে শুধু শুধু অন্যর উপর আঘাত দেয়া? তবে মনে রাখবেন অন্ধবিশ্বাসের গোঁড়ামি-কুসংষ্কার যতদিন থাকবে ততদিন সমাজের মুক্তি সম্ভব হবে না। গুটি কয়েক এগিয়ে এলে ও অভারঅল সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটবে বলে মনে করা যায় না।
তাই শুধু ঈশ্বরের উপর বিশ্বাসকে নয়, সব ধরণের বিশ্বাসকে প্রশ্নাতীত করে সমাধানের পথ খুঁজে দেয়াই হবে সত্যিকার পাওয়া। ভালো থাকবেন। রাগ করবেন না।
@শুভাচার, আপনার লেখা পড়ে খুব ভাল লাগলো চালিয়ে যান। ধন্যবাদ।
@বিপ্লব পাল,
দারুণ :yes:
@শুভাচার,
নতুন করিয়া ধর্মের মূল জানিবার কোনো প্রয়োজনই অন্তঃকরণে অনুভব করিতেছি না। কেননা, বহু দিবস এবং রজনী পূর্বেই জানিয়া গিয়াছি যে এর মূল অর্থ শুধুই অনর্থ সৃষ্টিকরণ।
@ফরিদ আহমেদ, :rotfl: হা হা হা হা হা হা হা হা !!!!
দুর্বলতাতো এখানে। ধর্মের সংজ্ঞা না জেনে ধর্মকে নিয়ে টানাটানি। ডাক্তারের মর্ম না বুঝে যে জন, সেই জন বলে সে ডাক্তারি পাশ। প্রশ্ন থাকে, পর্দাথে নিজস্ব ধর্ম থাকতে পারে কিভাবে? যেখানে আমরা (ভারত বর্ষীয় লোকেরা) ধর্ম বলতে কুসংষ্কারকে বুঝি? বিজ্ঞানতো আবার ধর্ম বিরোধী, তাহলে সমস্যা কী আমাদের নাকি বিজ্ঞানের? বিজ্ঞানের সংজ্ঞা এক এবং অভিন্ন হতে পারে, কারণ এর পর্যবেক্ষন-পরীক্ষণ সবই ডাটা নির্ভরশীল। কিন্তু দর্শনের ক্ষেত্রে তা খাটে না। দর্শন এবং পিলোসফি দুটি শব্দ সমার্থক হতে পারে, কিন্তু গলিয়ে ফেলা যায় না। সব দার্শনিকের দর্শনবিদ্যা কিন্তু এক কিংবা অভিন্ন নয়। পশ্চিমাবিশ্বের দার্শনিকরা অনেকক্ষেত্রে বস্তুবাদের বিশ্বাসী, যেখানে পূর্ববিশ্বের দার্শনিকদের ভাববাদী, সংশয়বাদী, অজ্ঞেয়বাদী এবং কখনো বা বস্তুবাদী হতে দেখা গিয়েছে। আমরা যদি ভারত বর্ষের দশর্নকে নিয়ে আলোচনা করি অথোম্যাটিক্যলি ধর্মের কথা চলে আসবে, কেননা দর্শনতত্ত্বগুলো ধর্মের সাথে গলিয়ে গেছে।
ছোট্ট একটা গোপন তথ্য দেই আপনাকে কানে কানে। বাংলায় মন্তব্য না করলে মডারেটররা আপনার মন্তব্যগুলো নাও ছাড়তে পারে। 🙂
@শুভাচার,
আপনার সকল কথা পুরোপুরি না বুঝলেও এই কথাটা ভালই বুঝেছি।
আসলেই সমস্যা বিজ্ঞানের। দেখেন না তারা পদার্থ বিজ্ঞান পড়েন সত্য কিন্তু পদার্থের ধর্ম সম্মন্ধে তাদের জ্ঞান একেবারেই শুণ্য। তাই তারা আপনার এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন কি না সন্দেহ হয়।
আরি বাপ্রে বাপ! এইখানেতো দেখি সব দার্শনিক আঁতেলদের রাজত্ব চলছে। ভুল করে ঢুকে পড়েছি। পালাই, পালাই। পালানোর আগে অবশ্য একটা বিষয় খুব ভয়ে ভয়ে জানতে চাচ্ছিলাম। আমার জীবন আর দর্শনে যে, শুধু কাজী আনোয়ার হোসেন আর মাসুদ রানার মূল ভূমিকা রয়েছে, এই সত্যকথনটা কি এইখানে বলা যাবে?
@ফরিদ আহমেদ/
:-/
@ফরিদ আহমেদ,
জীবন যা থেকে সংশ্লেষিত তাই জীবন দর্শন। আপনি লিখুন। আমরা জানার জন্যে উদগ্রীব।
@ফরিদ আহমেদ,
বুঝছি আপনার সাথেই আমার মিলবে। আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব রাফ এন্ড টাফ জসিম। বনিবনা না হলেই ঢুসুমঢাসুম শব্দের তালে তালে লাগা মাইর। জসিমের কাছ থেকে জীবনের মূলমন্ত্র শিখছি, মাইরের চেয়ে বড় ওষুধ আর নাই আর তার সাথে কিছু সস্তা এবং ফেক সাউন্ড বাইট থাকলে তো ষোল আনাই পূর্ণ।
@ফাহিম রেজা,
ভূড়ি বাগাইয়া যত খুশি ঢিশুম ঢাশুম করেন আর শাবানা, রোজিনারে নিয়া নাচানাচি করেন, আমার কোনো আপত্তি নাই। খালি আমার অলিভিয়ার দিকে নজর দিয়েন না কইলাম। 😛
যারা কমিউনিজমের প্রেমে পড়েছেন তাদের প্রতিঃ
কমিউনিস্ট কোনো দেশে যদি থাকতেন তবে হয়তো এইযে যে কম্পিউটারটা দিয়ে মুক্তমনাতে লিখছেন তা আর সম্ভব হতোনা। হয়তো একটা কম্পিউটার কোথাও রাখা থাকতো, তার পিছনে ছয় মাইল লম্বা একটা লাইন থাকতো, আর আপনি থাকতেন ঐ লাইনটির সবচেয়ে শেষে। হয়তো ছয় মাস পরে আপনার সময় আসতো, আর কয়েক শত পাহারাদার থাকতো যারা আপনাকে বলে দিতো আপনি কি পড়তে বা লিখতে পারবেন বা পারবেন না।
আর আপনি যদি মুক্তমনা ওয়েবসাইটে যেতে চেতেন, তবে হয়তো ঐ লাইনেরই আশেপাশে থাকতো আপনাকে প্রশ্ন করার জন্য একটা দপ্তর, আর তার থেকে কিছু দূরে আপনার জন্য একটা জেল, বা আপনাকে গুলি করে মারার জন্য একটা দেওয়াল।
আদনান লেরমন্তভ
@আদনান,
লোকে কমিনিউজম বলতে যা বোঝে তাতে এটাই হবে।
কিন্ত তার বাইরেও অনেক কমিনিউজম আসতে পারে। উৎপাদন ব্যাবস্থার একদম শীর্ষে পৌছেও কমিনিউজম আসতে পারে-যেখানে উৎপাদনের এবং বন্টনের উৎকর্ষতার জন্যেই কমিনিউজম আছে।
আমার এই গল্পে সেই ভবিষত্যত কমিনিউজম সমাজের একটা ছবি আছে।
http://blog.mukto-mona.com/?p=4032
খুব উন্নত বৈজ্ঞানিক উৎপাদন ব্যাবস্থা ছারা কমিনিউজম আসতে পারে না।
@ বিপ্লব পাল
আমি ছোটোবেলার থেকেই চের ভক্ত ছিলাম। তাকে নিয়ে কিছু পড়াশুনাও করেছি। কিছুদিন আগে তো চে মুভিটা দেখে আমি দু’রাত কেঁদেছি। বাড়ির লোকে আমাকে উন্মাদ ভেবেছে।
চে সারাজীবন শুধু বিপ্লবের পর বিপ্লব-ই করে যেতে চেয়েছিলেন, কোনো ক্ষমতা ধরে রেখে নষ্ট হতে চাননি।
আদনান লেরমন্তভ
যাদের নাম লিখলেন তাদের অনেকের সাথেই আমার সম্যক পরিচয় নেই। উদাহরণস্বরূপ, রুমী সম্বন্ধে আমি প্রায় কিছুই জানিনা। যাহোক, আলোচনা যেহেতু আমন্ত্রণ করেছেন, যাদের সম্বন্ধে মতামত আছে তাদের নিয়ে দুচার কথা বলি।
চেকভ, রবীন্দ্রনাথ: পুরোপুরি একমত। রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পকেও অবশ্য উচ্চাসন দেব আমি।
পপার: আমার মতে পপার যা বলে গেছেন সেটা বিজ্ঞানের চর্চার মধ্যে আসলে বিধৃত আছে, ওভাবে একেবারে পরিষ্কার ভাবে না থাকলেও। আমার সন্দেহ, theoreizing কে অপ্রয়োজনীয় গুরুত্ব দেয়া হয়। যেমন, আগেই বানানো কম্পিউটারের গঠনকে গুছিয়ে একটা theory-র রূপ দেয়ায় কম্পিউটারের গঠনের যাবতীয় কৃতিত্ব পেয়ে গেলেন ফন নয়মান। এই কারণে সাধারণ ভাবে দর্শন বিদ্যাটার প্রতি আমার শ্রদ্ধা কম।
বাউল: আমি একটু বিভ্রান্ত এ ব্যপারটায়, এবং এই বিভ্রান্তির কারণ প্রকাশ্য আপনার “অন্তর্মুখী” কথাটায়। আধুনিক পাশ্চাত্য মানবতাবাদ তো অন্তর্মুখী নয়, “মনের মানুষ”-টানুষের ব্যাপার নয় — কিন্তু মানবমুক্তির জন্য এই বহির্মুখী, সামাজিক মানবতাবাদ কি অপরিহার্য নয়? বাউল মত কি সেটিকে ধারণ করে?
আপাতত এটুকু।
@রৌরব,
ব্যাপারটা অত সহজ না। কি বিজ্ঞান আর বিজ্ঞান না, সেটার কোন নির্নায়ক পপারের আগে ছিল না-কারন বিজ্ঞানের দর্শন ও ইনডাকশন এবং পর্যবেক্ষন নির্ভর ছিল। সব পর্যবেক্ষন ভিত্তিক সিদ্ধান্তই কি তাহলে বিজ্ঞান? এই কঠিন সমস্যার সমাধানের কৃতিত্ব তার।
বস্তবাদি উন্নতি অবশ্যই দরকার। সাথে সাথে এটা মানুষকে বাদ দিয়ে হতে পারে না।
@বিপ্লব,একজন স্বস্বীকৃত কমিউনিস্ট বিরোধী হিসেবে মুক্তবাজার মতের মহারথী কেউ আপনার লিস্টে নেই দেখে একটু আশ্চর্য হলাম। হায়েক, ফ্রাইডম্যান (মিল্টন, থমাস নয়!!), কিংবা (তওবা, তওবা) আইন র্যান্ড। আমি বলছি না যে এরা প্রতিদিনের প্রাত:স্মরনীয়। আমি শুধু কমিউনিজম সম্পর্কে আপনার চিন্তার বিবর্তন সম্পর্কে তীব্র আগ্রহ বোধ করছি। এসম্পর্কে আপনার আগের লেখা থাকলে লিংক দিলেই হবে। মার্ক্স ছাড়া আর কেউকে কি আপনি সমাজ-ইতিহাস বিবর্তন গবেষনার দিকপাল মনে করেন?
@shafiq,
আমি মুক্ত বাজার অর্থনীতিকে সমর্থন করি এটা কোথায় পেলেন? আমি ত কিছুদিন আগেও মন্দাকাহন লিখেছি আমেরিকান ধনতন্ত্রকে আক্রমন করে?
আপনার বক্তব্য থেকে দুটি ব্যাপার প্রমানিত
১] আপনি আমার লেখার সাথে পরিচিত নন
২) বাজারে চলতি কমিনিউজম এবং বাজার অর্থনীতি-এই দুইপোলের বাইরে আপনি কিছু ভাবতে পারেন না। এটা আপনার চিন্তার সীমাবদ্ধতা। এর বাইরেও বিরাট পৃথিবী আছে।
আয়ান র্যাণ্ড পড়েই আমার কমিনিউস্ট বিরোধিতার শুরু হলেও, তার চিন্তাতেও অনেক অনেক ভুল আছে। র্যান্ডের দর্শন জ্ঞান এমন কিছু গভীরে না।
@বিপ্লব, আসলে আমার প্রশ্নটি ছিল কিছুটা cheek in tongue। আমি আপনাকে নিশ্চয়তা দিতে পারি যে বাজার কিংবা প্রলেতারিয়েত, কোনো ঈশ্বরেই আমি পূর্ন বিশ্বাসীদের একজন নই। আমি আপনার লেখা থেকে এইজন্যেই মন্তব্যটি করেছি যে আমি আগ্রহ বোধ করেছি যে আপনার মনোজগতের বিবর্তনে কেমন করে এই পয়েন্টে এলেন যে আ্পনি ‘আমি নিজে ১০০% কমিনিউস্ট বিরোধি’। এটা শুধু কৌতুহলের কারনেই বলছি কারন ১ আপনি একজন শিক্ষিত পশ্চিম বাংলার সন্তান এবং ২ আপনার লিস্ট থেকেই বোঝা যাচ্ছে কমিউনিজমের উপরে অনেক পড়াশোনা রয়েছে। প্লিজ আমার প্রশ্নে এমন কিছু ধরেন না যেটা সেখানে নেই।
@Shafiq,
আমার এই ব্লগে
http://blog.mukto-mona.com/?p=3648
সেই উত্তর পাবেন
আরেকটা কথা। আরেকজন ব্লগার আমার এই লেখাটাকে সামু ব্লগে
১০০% ঝেরে দিয়েছে। এই ধরনের চৌর্য বৃত্তি কি করে আটকানো যায়?
http://www.somewhereinblog.net/blog/amisottobadi/29056799
@বিপ্লব পাল,
দাদা, নিচে অবশ্য বিপ্লব পাল, মুক্তমনা কথাটা উল্লেখ করেছে…. :-Y
@বিপ্লব পাল,
somewherein কে ইমেইল করে দেখতে পারেন।
@বিপ্লব পাল,
আমি অভিযোগ করেছি, আর ঐ লেখার কমেন্ট সেকশনে আপনার মূল লেখা এবং আপনার অভিযোগের লিংক দিয়ে এসেছি। আপনি আবার ঐ লেখায় ক্লিক করেন, তাহলে নিচে আমার মন্তব্য পাবেন।
@বিপ্লব পাল,
চোর সাহেব দেখি আবার নাম নিয়েছেন “আমি সত্যবাদী” :laugh: ।
এর দার্শনিক কারন অনুসন্ধান খুবই জরুরী।
@বিপ্লব পাল,
এই ধরনের চৌর্যবৃত্তি আটকানোর কোন উপায় আমার জানা নাই। আমরা খালি সচেতন হইতে পারি এবং প্রতিবাদ করতে পারি।
@shafiq,
হায়েক কে বেশ লাইক করি 😛
ভালো লাগলো লেখা। :yes:
@ বিপ্লব পাল, আপনার দর্শনপ্রীতি/ অপ্রীতির সঙ্গে বেশ অমিল থাকলেও গৌতম বুদ্ধ সম্পর্কে আপনার ভাবনাটুকু ভাল লাগলো।
গৌতম বুদ্ধ’কেই উদ্ধৃত করে বলি, আমাদের চিন্তনই আমাদের আগামী! :rose:
@বিপ্লব রহমান,
অথবা মন হচ্ছে গাড়ীর চালক। তাই মনকে গাড়ির পেছনে জুরতে নেই!
ফ্রেডরিক নিৎসেঃ সম্পর্কে এই প্রথম জানলাম।বাংলাতে কি ফ্রেডরিক নিৎসেঃ এর কোন বই আছে? সহজ ভাবে বুঝত গেলে কোন বই পড়া যেতে পারে?
অ.ট: আপনার অনেক পুরনো লেখাগুলো পড়লাম কয়েক দিন ধরে। এসব ব্যাপার নিয়ে আপনাকে মেইল করলে আপনার দেখার সময় হবে কি?
@আসরাফ,
নিশ্চয়-কিছু প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই লিখবে। বাংলাতে ফ্রেডরিক নিৎসে নিয়ে কি বই আছে জানি না-কিন্ত ইন্টারনেটে অনেক রিসোর্স পাবে। তিনি একজন প্রথম শ্রেনীর দার্শনিক-তাকে নিয়ে লাখে লাখে লেখা, নেটে আছে।
@আসরাফ, ফ্রেডরিক নিৎসের বই বাংলায় পাওয়া যায়,আপনি যদি ঢাকায় থাকেন তাহলে আজিজ সুপার মার্কেটের বই পাড়ায় খোজ করলেই পাবেন,তার চিন্তা-ভাবনা অসাধারন।
@রনি,
না আমি ঢাকায় থাকিনা,সুদুর মৌলভীবাজার।
এমাসে একবার ঢাকায় আসব। আবশ্যই অাজিজ সুপার মার্কেট ঘুরে যাব।
লেখাটি চিন্তাজাগানিয়া। তবে সম্পূর্ণটা পড়ার আগেই একটা জিনিষ চোখে লাগল। সংজ্ঞার্থক শব্দগুলোর আপনি ইংরেজী পরিভাষা ব্যবহার করেছেন, যা বুঝতে আমার একটু অসুবিধা হচ্ছে। সব লেখকদের কাছেই আমার একটা অনুরোধ থাকে, আর তা হল নিতান্ত দায় না ঠেকলে ইংরেজী পরিভাষা ত্যাগ করা। ইংরেজীর পরিবর্তে বাংলা পরিভাষা ব্যাবহার করলে তা অনেক বেশী হৃদয় গ্রাহ্য হয় বলে আমার অভিজ্ঞতা আর অনুমান। লেখাটি যেহেতু বাংলায় লিখছেন আর যেহেতু এটা একটা উন্মুক্ত মাধ্যম সেহেতু অনেক ইংরেজী-কাঁচা লোক লেখাটা পড়বে(তাদের পড়ার অধিকার আছে বৈকি); এসকল লোকের কাছে এ পরিভাষা গুলো বোঝা ছাড়া কিছুই না। আর যে ভাষাটা ব্যবহার করছেন তা পুরোপুরি ব্যবহারের অভ্যেস তৈরী করুন, আপনার মত প্রবাসীরা যেটাতে বেশী অনভ্যস্ত। আর ইংরেজী ব্যবহার করলে গোটা প্রবন্ধতেই তা ব্যবহার করুন, এটাই নিয়ম হওয়া উচিত নয় কি? আর লেখাটা পুরো পড়ে কিছু বলার থাকলে বলব।
ধন্যবাদ আপনাকে।
@মুহাইমীন,
আপনার সাথে একমত।
এখানে তেমন চোখে পড়ার মতো কোন জটিল শব্দ পাইনি।
যা হোক। যখন বিজ্ঞান বা দর্শন নিয়ে লিখে তখন ত্রাহি ত্রাহি দশা হয়।
বিশেষ করে, অভিজিৎ দা,বন্যা আহম্মদ,এবং বিপ্লব পাল।
@আসরাফ,
ধন্যবাদ প্রতিত্তুরের জন্য।
হ্যা, তবে যত কম ভিনদেশী পরিভাষাই হোক না কেন, লেখাটা সর্বজনপাঠ্য করার জন্য ভিনদেশী পরিভাষা ত্যাগ করা কর্তব্য মনেকরি।
ভাল থাকবেন।
@আসরাফ,
ভাই, কার ‘ত্রাহি ত্রাই দশা’র কথা বললেন, লেখকের না পাঠকের? আমার যে লিখতে গিয়ে ‘ত্রাহি ত্রাহি দশা’ হয় তা নিয়ে কিন্তু সন্দেহের কোন অবকাশ নেই 🙂 ।
@বন্যা আহমেদ,
হুম!
দিদি
আমাদেরও কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু এত সব কষ্টতো কেবল আমাদের মতো সাধারনের জন্য। আমরা যদি পড়ে বুঝতেই পাড়ি তাহলে লেখকের স্বার্থকতা বৃদ্ধি পায় নাকি? আর আমাদের দাবিটাতো খুব সামন্য কঠিন বিদেশি শব্দ ব্যবহার করার সময় আমাদের মতো সাধারনকে একটু স্বরণ করা, এই আরকি। যারা অার একটু এগিয়ে থাকা তাদের কোন সমস্যা হয়না।
তবে লেখা চাই। আমাদের স্বারণ না রেখে হলেও লেখাচাই। :-X
@আসরাফ,
তোমার বক্তব্য ঠিক। আরো ভাল বাংলাতে লেখা যায়। তাহলে আবার আমার বন্ধুদের অনেকেই বুঝতে পারবে না। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য-কারন আমি সজ্ঞানে ইংরাজি চালায়, যার বাংলা প্রতিশব্দ আমার ভালোই জানা আছে। এবং তা পাঠকের জন্যেই করি। তবে অভিজিত বা বন্যা কিন্ত ভালো বাংলা ব্যাবহার করে। ওদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ফ্যাকচুয়াল বা সারসমর্থিত না।
@বিপ্লব পাল,
এই তো সহজে বুঝে গেলাম। :rotfl:
এটাও সমর্থন করি। আমার অভিযোগ শুধু বিজ্ঞান বা দর্শন এর ক্ষেত্রে। এমনিতে বিজ্ঞানের শব্দগুলো সহজ বাংলা নাও থাকতে পারে। আবার যেগুলোর আছে তাও অব্যবহৃত বলে ইংরেজির চেয়ে কঠিন মনে হতে পারে।
@আসরাফ, ধন্যবাদ আপনার সমালোচনার জন্য। সমালোচনাটাকে গ্রহণ করেই কয়েকটা কথা বলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। আমি সাধারণত আপ্রাণ চেষ্টা করি বিদেশী শব্দ ব্যবহার না করতে, বাংলা ডিকশানারি দেখতে দেখতেই প্রচুর সময় চলে যায় আমার, অনেক সময় এ জন্য লেখাই আগাতে চায় না। তবে কিছু শব্দ ইংরেজিতে রাখি ইচ্ছে করেই, যেমন ধরুন, জিন, মিউটেশনের মত শব্দগুলোর ক্ষেত্রে আমি বাংলা অনুবাদ ব্যবহার করতে বেশী পছন্দ করি না। এগুলোকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বৈজ্ঞানিক পরিভাষা বলেই মনে হয়, এই শব্দগুলোকে বাংলায় গ্রহণ করে নেওয়ার মাধ্যমে আমরা ভাষাগতভাবে আরও শক্তিশালী হতে পারি বলে মনে করি আমি। কিন্তু এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে ইংরেজি পরিহার করতে যাথাসাধ্য চেষ্টা করি ( তবে এটা ঠিক যে, মন্তব্য করার সময় প্রায়ই ইংরেজি শব্দ চলে আসে, সময়াভাবেই সেটা হয়) বলেই তো মনে হয়, ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে অবশ্যই আরও সাবধান হওয়ার চেষ্টা করবো 🙁 ।
@বন্যা ,
ক্যেমতি আচ?
তুমি বাংলায় লিখ কবে থেকে? আমি তো সাধারণতঃ ফরাসীতে আর উড়িয়াতে লিখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। সেজন্যই মাঝে সাঝে বিদেশি ভাষা চলে আসে আমার লেখায়। আমার সম্বন্ধে আসরাফ সাহেব যা বলেছেন ঠিকি বলুচ্ছন্তি।
ও রেহ ভোওয়্যা … [ Au revoir ]…
@অভিজিৎ, :lotpot:
@অভিজিৎ,
🙂
@অভিজিৎ,
দাদা
আপনি এত সিরিয়াসছি নেবেন ভাবতে পারিনি। এখন থেক আপনার অথবা ব্লগে কমেন্ট করার ক্ষেত্রে আরো সংযত হব।
@আসরাফ,
আর একটা কথা।
যাদের লেখা বেশি পড়া হয়, কমেন্ট করতে হলে তারা বেশি এসেই যায়। 🙁
@আসরাফ,
আরে (সিরিয়াসলি বলছি) -আমি একদমই সিরিয়াসলি নেইনি। 🙂
রেগে নয়, ঠাট্টা করেই উত্তর দিয়েছি, স্রেফ মজা করার জন্য। মাঝে মধ্যে মজা না হলে সব নিরস হয়ে যায়। কী বলেন?
@বন্যা আহমেদ,
সাবধান হওয়ার কোন প্রয়োজন দেখছিনা। এ ব্যপারে এতটা গুরুত্ব দেয়া অপ্রয়োজনীয় কারন সাহিত্য চর্চা এবং বিজ্ঞান চর্চার মধ্য বড় রকমের পার্থক্য আছে যা সম্পর্কে অনেক পাঠকেই অবগত নন বলেই পরিলক্ষিত হয়। বিজ্ঞান সম্পর্কে প্রথম পাঠই হলো যে বিজ্ঞান সাহিত্য কিংবা কলা নয়। ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত অনুভব নিয়ে কাজ করা সাহিত্যের বিষয় হলেও বিজ্ঞানের কাজ তা নয় বরং পর্যবেক্ষক নিরপেক্ষতা বিজ্ঞানের অন্যতম ভিত্তি। বিজ্ঞানের নিজস্ব ভাষা রয়েছে যাকে কখনও সাহিত্যের মাপকাঠিতে মাপা সম্ভব নয় এবং সেটাকে সেভাবেই গ্রহন করতে হবে। একজন সাহিত্যিক একইসাথে বিজ্ঞানী হতে পারেন কিন্তু একজন বিজ্ঞানীর সাহিত্যিক হওয়া নিষ্প্রয়োজন। বিজ্ঞানের কোন গুরুত্বপূর্ন শব্দ যাতে ‘অনুবাদে নিখোঁজ’ না হয় তা ভাষাতাত্ত্বিক শুদ্ধতার চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ন।
@বন্যা আহমেদ,
মেনে নিচ্ছি যে এই শব্দগুলো এরকমই ভাল।
এই ব্যাপারে ১০০০% একমত।
বিজ্ঞানের যে শব্দগুলি বুঝতে সমস্যা হয় তা পাঠকের নিজের সমস্যা।
@আসরাফ/
:lotpot:
:coffee:
@মুহাইমীন/
অনুমানটাকে নদীতে ফেলে দিন! কারণ এটা সত্য! 🙂
:coffee: