লিখেছেনঃ মিলন আহমেদ
ভাষার ক্ষেত্রে অভিধানের গুরুত্ব অপরিসীম। কোনো শব্দের অর্থ নির্ণয় করতে আমরা অবশ্যই অভিধানের উপর নির্ভরশীল হব। শব্দার্থের জন্য অভিধান হল মাপণকাঠি। একেকজন একেকভাবে কোন শব্দের যেন বিকৃত অর্থ না করতে পারে তার জন্যই অভিধান। আর বাঙ্গালী জাতির সাংস্কৃতিকমান উন্নয়ণের কাজে নিয়োজিত বাংলা একাডেমী। ‘ব্যবহারিক বাংলা অভিধান’ বাংলা একাডেমীর একটি মোটাসোটা বড় পুস্তক। ২০১০ সালের জানুয়ারী মাসে প্রকাশিত হয়েছে অভিধানটির দ্বাদশ পুনর্মুদ্রণ। অত্যন্ত আধুনিক সময়ে প্রকাশিত ওই অভিধান অনুযায়ী ‘পুরুষ’ শব্দের অর্থ নর, মানুষ, মনুষ্য, আত্মা, ঈশ্বর, পরমেশ্বর, পরব্রহ্ম ইত্যাদি। কাজেই পুরুষরা মানুষ, তাদের মনুষ্যত্ব আছে। পুরুষরা ঈশ্বর বা পরমেশ্বর এবং তাদের আত্মা আছে। পাশাপাশি ওই অভিধানে ‘মহিলা’ শব্দের অর্থও উল্লেখ রয়েছে। সেখানে যেগুলো আছে তা হল ঃ সম্ভ্রান্ত নারী, যে কোন নারী বা স্ত্রীলোক। কাজেই আমরা ধরে নিতে পারি ‘পুরুষ’ শব্দের ঠিক বিপরীত লিঙ্গ ‘মহিলা’ নয়। কারণ পুরুষদের মত মহিলারা মানুষ নয়, তাদের মনুষ্যত্ব নেই। মহিলারা ঈশ্বর বা পরমেশ্বর হওয়ায় যোগ্যতা রাখে না এবং তাদের আত্মা নেই। বাংলা একাডেমীর অভিধান অনুযায়ী মানুষ, মনুষ্য, আত্মা, ঈশ্বর, পরমেশ্বর সব পুরুষদের একচ্ছত্র ব্যাপার। মোটকথা মহিলারা মানুষ নয়। বাংলা একাডেমীর কাছে আমার বিনীত প্রশ্ন, আপনাদের ওই ব্যাখ্যা কি শুধু আমাদের মা, চাচি, খালা, ফুফু, বোন, ভাবি, স্ত্রী এদের বেলায় প্রযোজ্য? না কি প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য মহিলা-মন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেত্রীর জন্যও প্রযোজ্য। অনুগ্রহ করে জবাবটি দিবেন কি? কারণ সরকারের সর্বোচ্চ দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা মানুষ না হলে আমরা কেহই মানুষ হতে পারি না। কিন্তু বাংলা একাডেমী আমাকে মানুষের কাতারে ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই যেখানে মানুষ নয় সেখানে আমি অন্তত মানুষ হওয়ায় স্পর্ধা দেখাতে পারি না। আমি মানুষ হতে চাই না।
বাংলাদেশের জাতীয় আয়ের বড় একটি অংশ আসে তৈরি-পোশাক থেকে। এই সেক্টরটার প্রায় পুরোটাই দাঁড়িয়ে আছে হৃতদরিদ্র মহিলাদের ঘামেভেজা পরিশ্রমের উপর ভিত্তি করে। সেখান থেকে আয় করা টাকা দিয়ে সকল সরকারী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। ঢাকা শহরের বড় বড় বিল্ডিংগুলোর অধিকাংশই পোশাক-শ্রমিকদের টাকায় তৈরি। দামী গাড়িগুলোর প্রায় সবই তাদের টাকায় কেনা। বাংলা একাডেমী মানুষের (পুরুষের) টাকায় পরিচালিত হচ্ছে, না-কি অমানুষদের (মহিলাদের) টাকায় পরিচালিত হচ্ছে সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। কারণ বস্ত্র-বালিকারা কেহই বাংলা একাডেমীর দৃষ্টিতে মানুষ নয়। শুধূ ‘পুরুষ’ এবং ‘মহিলা’ শব্দের অর্থ দিয়েই বাংলা একাডেমী তা প্রমাণ করেনি। সেখানে ‘ মানুষ’ শব্দের অর্থ খুজলে পাওয়া যাবে মানব, মনুষ্য, লোক, জন, নৃ, নর। এতে আমরা কি দেখলাম? ‘মানুষ’ শব্দের অর্থের মধ্যে ‘নর’ বিদ্যমান কিন্তু ‘নারী’ অনুপস্থিত। একইভাবে ‘ মানব’ শব্দের অর্থ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে মানুষ, মনুষ্য, নৃ, নর। এখানেও ‘নারী’ শব্দটি নেই কিন্তু ‘নর’ শব্দটি ঠিকই উপস্থিত। একদিকে ইভটিজিং বিরোধী আইন হচ্ছে অন্যদিকে বাংলা একাডেমী মেয়েদের মানুষই বলছে না। কি সুন্দর বৈপরিত্য!
একজন বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক বলেছেন একটি মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করতে যা প্রয়োজন তা হলো বেশি বেশি প্রচার, বারবার পুনরাবৃত্তি। বাংলা একাডেমীও একই কৌশল অবলম্বন করেছেন কি না জানি না, তবে শুধু বাংলা থেকে বাংলা অভিধানের মাধ্যমেই মহিলাদের অমানুষ বানিয়ে ক্ষান্ত হয়নি বরং ইংরেজী থেকে বাংলা অভিধানেও তা অত্যন্ত সুনিপূণভাবে প্রমান করার চেষ্টা করেছে। ২০১০ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত হয়েছে বাংলা একাডেমীর ইংলিশ-বাংলা ডিক্শনারীর রিভাইজ্ড এন্ড এনলার্জড সেকেন্ড এডিশন এর ফার্স্ট রিপ্রিন্ট। হাজার হাজার ইংরেজি শব্দকে সেখানে বাংলা করা হয়েছে। যথারীতি ‘ম্যান’ এবং ‘উইমেন’ এর অর্থও সেখানে রয়েছে। ‘ম্যান’ এর অর্থ লেখা রয়েছে পুরুষমানুষ, মানুষ, মানবজাতি। কিন্তু ‘উইমেন’ শব্দের বাংলা অর্থ করা হয়েছে নারী, নারীকূল, নারীজাতি, নারীসত্তা ইত্যাদি। ‘মানুষ’ কথাটি ‘ম্যান’ এর প্রতিশব্দ হিসেবে উল্লেখ থাকলেও ‘উইমেন’ এর ক্ষেত্রে তা নেই। কাজেই আমরা বলতে পারি, বাংলা একাডেমি সুন্দরভাবেই প্রমাণ করেছে নারীরা কোনোমতেই মানুষ নয়। আর দেশের এতবড় একটি প্রতিষ্ঠান যখন প্রমাণ করেছে তখন আমাদের তা মানতেই হবে। তবে বাংলা একাডেমীর কাছে আমার আর একটি প্রশ্ন, তাহলোঃ নারীরা কোন্ প্রজাতির? তারা কি মানুষের স্পার্ম থেকে তৈরি নয়? অনুগ্রহ করে জবাব দিবেন কি?
ছোটবেলায় লিঙ্গান্তর পড়তে গিয়ে দেখেছি ‘কবি’ শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ ‘মহিলা-কবি’। ‘পুরুষ-কবি’ বলে কোনো শব্দ আছে বলে আমার জানা নেই। তারমানে ‘কবি’ শব্দটি পুরুষের একার। মহিলারা কেহ ‘কবি’ হতে পারবে না, তারা হবে ‘মহিলা-কবি’। এসব নিয়ে ছোটবেলাতেই ভেবেছি, কোনো উত্তর পাইনি। এখন বুঝি, বাংলা শব্দ-ভান্ডার এর রক্ষক যে প্রতিষ্ঠান, সেই বাংলা একাডেমী মহিলাদের কবি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়াতো দুরের কথা মানুষ হিসেবেই আজো মেনে নেয়নি। এসবের কারণ অনুসন্ধানে দেখা যাবে প্রকৃত ঘটনাটি অন্য। দখল এবং বেদখলের ঘটনা। বাংলা একাডেমী পুরোটাই পুরুষের দখলে। শুধু বাংলা একাডেমী নয় সমাজ,রাষ্ট্র সবই পুরুষতন্ত্রের দখলে। অনেকেই বলেন মহিলারা অনেক বড় বড় পদে আছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাঁদের অধিকাংশই পুরুষতন্ত্রের ধারক, বাহক এবং পাহারাদার হিসেবে বড় বড় পদে রয়েছেন। বাংলা একাডেমীর এই পুরুষতান্ত্রিক স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ ক’জন মহিলা করেছে? মহিলারা যতদিন নিজেদেরকে মানুষ মনে করবে না, যতদিন প্রতিবাদ করবে না, যতদিন প্রতিরোধ গড়ে তুলবে না ততদিন বাংলা একাডেমী, সমাজ, রাষ্ট্র সবই তাদের অমানুষ বানিয়েই রাখবে। পুরুষতন্ত্রের হাত কত যে শক্তিশালী তাও নারীদের উপলদ্ধি করতে হবে। দুইজন মেয়ে সমান একজন ছেলে, এই কুরুচিপূর্ণ পারিবারিক আইন এদেশে এখনও বহাল তবিয়তে চালু রয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আপনি পুরস্কৃত হয়েছেন। গত ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আপনি অফিসিয়াল কাগজপত্রে পিতার নামের সাথে মায়ের নাম উল্লেখ করার নিয়ম চালু করেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ। কিন্তু কাগজপত্রের অনেক জায়গায় দেখি আপনি আওয়ামী লীগের সভাপতি। কিন্তু ‘পতি’ শব্দটি কোনোমতেই মহিলাদের জন্য নয়, বা তা মোটেই লিঙ্গ-নিরপেক্ষ নয়। আপনার যত কাছের লোকজনই আপনাকে ‘সভাপতি’ শব্দটি ব্যবহার করতে সুপারিশ করুক না কেন, নিশ্চিত আপনাকে বিভ্রান্ত করছে। তাঁরা হয়ত বলবেন ‘সভাপতি’ নেহাতই একটি পদের নাম, নারী বা পুরুষ যে কেহ উক্ত পদে আসীন হতে পারেন। তাঁদেরকে আমি বলব ‘সভাপতি’ একটি পদের নাম বটে, তবে তা পুরুষদের পদের নাম। মাননীয় জননেত্রী, আপনার জায়গায় কোনো পুরুষ থাকলে তিনি কি কখনও ‘সভানেত্রী’ শব্দটি ব্যবহার করতেন? অনুগ্রহ করে ভাষাবিজ্ঞানীদের দায়িত্ব দিন, তাঁরা লিঙ্গ-নিরপেক্ষ শব্দ আবিস্কার করে আপনাকে দিক। বিশ্বের সভ্য দেশগুলো মহিলাদের মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে এবং তারা ভাষাতেও পরিবর্তন আনা শুরু করেছে। ইংরেজি ভাষাকে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ করার কাজ শুরু হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে। যেমন ক্যামেরাম্যান এর স্থানে ফটোগ্রাফার, ফোরম্যান এর স্থানে সুপারভাইজার, গানম্যান এর স্থানে শুটার ইত্যাদি। আমরা কতটা অসভ্য যে কিছু বিশ্রী স্ত্রী-বাচক শব্দকে এখনও লালন করছি, যেগুলোর কোনো পুরুষ-বাচক শব্দ নেই। যেমনঃ গণিকা, বেশ্যা, রক্ষিতা, পতিতা ইত্যাদি। এইসব শব্দের পুরুষ-বাচক শব্দ আবিস্কার করতে হবে নতুবা সেগুলোকে শব্দ-ভান্ডার থেকে বাদ দিতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা করা হোক এই দাবী জানাতে চাই। কারণ নারীকে মানুষ হিসেবে মর্যাদা না দিলে এবং পুরুষের সাথে সমহারে ক্ষমতায়িত না করলে আমরা আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে পারব না। পুরুষতান্ত্রিক কুপমন্ডুকতা শুধু নারীকে নয় বরং গোটা জাতিকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করবে।
___________________________
লেখকঃ নারীবাদী কলামিস্ট, ঈশ্বরদী, বাংলাদেশ
লেখা বেশ ভালো হয়েছে এবং অবশ্যই ভাষার ক্ষেত্রেও সমতা বিধান হওয়া উচিত কিন্তু তার আগে আমাদের আরো অনেক কিছুতে পরিবর্তন আনতে হবে এবং সমতার বিধান করতে হবে।
পতিতা শব্দটি বাদে অন্য শব্দগুলো বিশ্রী হবে কেনো? সময়ের প্রয়োজনেই পুরুষ বাচক শব্দ ব্যবহৃত হবে; নইলে নয়। অযথা পুরুষ-বাচক শব্দগুলো শব্দ-ভান্ডার থেকে বাদ দেওয়া খুব কাজের কথা নয়। :deadrose:
লেখাটি আরেকটু গুছানো হলে ভালো হতো। চলুক। :rose:
এটা মনে হয় নজরুলের জানা ছিল না। নইলে “অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর” লাইনটা হয়তো আমরা অন্য ভাবে পেতাম!
“বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে আমরা রয়েছি বসে
বিবি তালাকের ফতয়া খুজচ্ছি হাদিস কুরআন চটে”
মিলন সাহেব আপনার চিন্তা এখন যুগের চাহিদা কিন্তু পৃথীবির পরিবর্তন একদিনে সম্ভব হয়নি।সুতারং আমরা যারা আপনার মতের সাথে একমত তাদের উচিত এক হওয়া।তার পরে পরিবর্তন এর দিকে এগিয়ে যাওয়া।
হিন্দু ধর্মে ব্রম্ভ লিঙ্গ নিরপেক্ষ ও নিরাকার। দেব, দেবীরা – ভাবনার প্রাথমিক স্তর। প্রতিমা কথাটা এসেছে ‘ প্রতিম’ থেকে। মানে অনুরূপ। সাধকের চিত্তে নিজ ভাবনা অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে যে ভাব অনুভূত হয়, তারই পার্থিব রুপ হল প্রতিমা।
ভারতে সভাপতি, রাষ্ট্রপতি, সভাধিপতি, সম্পাদক- শব্দগুলো যে কোন লিঙ্গে এখন ব্যবহার হচ্ছে।
অভিধান ভাষার সব সময় ভালো করে, এমন নয়। বাংলা ওয়ার্ড সফটওয়ারে লিখতে পারি। জানিনা, তাতে লিখলে লেখা প্রকাশ হয় কিনা? হলে, এ নিয়ে আমার ভাবনা জানাতাম। অভ্রে সড়্গড় হলে লেখার ইচ্ছে রইল।
:-Y :-Y :-Y
এটা আসলেই দরকার।
আর আপনার লেখার শিরোনামটা ভাল লেগেছে যেখানে সমাজের কাছে “মানুষ” এর একপেশে সংজ্ঞাকে আপনি অস্বীকার করতে চেয়েছেন। মুক্তমনায় স্বাগতম।
ভাষার পুরুষতান্ত্রিক কাঠামো বহু আলোচিত একটা ব্যাপার, কিন্তু আপনার লেখাটা বড়ই খেলো হল। ভাষার কাঠামোগত পরিবর্তনের দায় বাংলা একাডেমীর নয়, জনগণের। “পুরুষ”-এর একটি অর্থ ঈশ্বর তার কারণ ঋগ্বেদের পুরুষসুক্ত, এটা বাংলা একাডেমীর পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের পরিচয় নয়। তাদের দায়িত্ব এই অর্থ বহন করে চলা, যতক্ষণ না এই অর্থে তার ব্যবহার বিলুপ্ত হচ্ছে।
এর মধ্যে “পতিতা” শব্দটি ছাড়া বাকি শব্দগুলি “বিশ্রী” কেন? আমার তো বেশ চমৎকার মনে হচ্ছে শব্দগুলিকে। পুরুষবাচক শব্দ আবিষ্কার ও ব্যবহার শুরু হোক আমিও চাই, কিন্তু সেটা না করলে এই শব্দগুলি বাদ দিতে হবে এই দাবী অদ্ভুত। শব্দগুলি আছে কারণ তাদের ব্যবহারের প্রয়োজন আছে।
আর, হ্যাঁ…
আপনার প্রবন্ধের টোনের আলোকে এই বাক্যাংশের আইরনি ধরবার দায় আপনার ও পাঠকের উপর ছেড়ে দিলাম।
নারীবাদীরা কিন্তু নারী শব্দটিই ব্যবহার করে। ফরহাদ মাযহারের কবিতার সেই রমণ করে বলে রমণী আর মহলে থাকে বলে মহিলা শব্দ ব্যবহার করে না। তবে বাংলাদেশে নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নামে কিন্তু নারী নয় — মহিলা। অধিদপ্তরটিও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।
এ নিয়ে কাজ করতে হবে।
আর নারীর প্রতি শব্দগত বৈষম্য নিয়ে আমি নব্বইয়ের দশকে দৈনিক আজকের কাগজে লিখেছিলাম। যেমনঃ নেত্রীত্ব নেতৃত্ব,কর্মকর্তা ইত্যাদি। আরও উল্লেখ করেছিলাম Dacca কে যদি Dhaka করা যায় তবে অন্য শব্দের বেলায়ও পরিবর্তন সম্ভব।
যাহোক, মিলন সাহেবকে মুক্ত-মনায় স্বাগতম। আপনি আমাদের জন্য লিখুন অনেক অনেক লেখা।
িবষয়িট উত্থাপনের জন্য ধন্যবাদ িদয়েই বলিছ, একিট শব্দের বহু অর্থ থাকতে পারে। অনেক দুর্বল ভাষায় এক শব্দের অনেক বেশি ব্যবহার থাকে। বাঙলা ভাষায় িবষয়িট অহরহ, যিদো ভাষাটি সমৃদ্ধ এবং শ্রুতিমধুর। উচ্চারণ আলাদা না করলে সংখ্যাটি আরো বেশিই হবে। পুরুষ শব্দের অর্থ শুধু ম্যান নয়। নারীর অনেকগুলো সমার্থক শব্দ রয়েছে। মিহলা- মহেল থাকেন িযিন। রমনী- যাকে রমন করা যায় ইত্যাদি। ড. হুমায়ুন আজাদ নারী শব্দিট বেছে িনয়ে িতিন একিট বৃহৎ গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন `নারী’ নামে। পুরুষ শব্দের একিট অর্থ ঈশ্বর এটা অবশ্যই ম্যান নয়, গড। আমরা ব্যকরণে একিট পুরুষ পাই: প্রথম পুরুষ, নাম পুরুষ, উত্তম পুরুষ। এখানে পুরুষ িকন্তু নারীকেসহ বুঝাবে। আমরা শব্দ িহসাবে নরের িবপরীতে নারীকেই িনতে পারি, এটাই যুক্তিসংগত। আসুন আমরা মিহলা এবং রমনী শব্দ বাদ িদয়ে নারী শব্দিট বহুল ব্যবহারে সচেষ্ট হই।
:yes:
স্কুলের বাংলা শিক্ষকের কাছে শুনেছিলাম যে “স্বামী’ শব্দটির অর্থ বলে প্রভু জাতীয় কিছু(মূল শব্দটা মনে নেই)। ভাবতে অবাক লাগে যে কত অবলীলায় মানুষ প্রতিদিন এই শব্দটি ব্যবহার করে। আপত্তিকর অর্থ জ্ঞাপন করা সত্তেও দীর্ঘ কাল ধরে ব্যবহারের ফলে মানুষ এখন শব্দটির প্রকৃত অর্থ সম্পর্কে অবগত হলেও এটি আর পরিহার করতে চায় না।
@পৃথিবী, আপনার সাথে সহমত পোষণ করছি। স্বামী কথার অর্থ হল মালিক। মানে কোন নারীর জীবনসঙ্গীটি হল তার মালিক আর নারীটি হল সম্পত্তি। আসলে এই সব শব্দ অবমাননাকর। এবং শব্দগুলি বদলানো ও প্রয়োজন।
:yes:
সেই সাথে লেখকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।
:rose: