সতর্কবার্তাঃ লেখাটি নিজ দায়িত্বে পড়ুন। লেখাটি পড়ার পর আপনার মস্তিষ্ক একটি ভাল/খারাপ মিম দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। উক্ত মিম আপনার জীবনের গতিপথ বদলে দিতে পারে যেটা আপনার জন্য ভাল/খারাপ হতে পারে। যদি ভালো হয় তার কৃতিত্ব যেমন আপনার, কারণ মিমটি আপনি গ্রহন করেছেন, তেমনি খারাপ হলেও দায়িত্ব আপনার। লেখকের এখানে কোন দায় নেই।
অমরত্বের ইচ্ছে মানুষের সব সময়। মানুষ কোন না কোন ভাবে চায় নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে। এই সেদিন আমার পাঁচ বছরের ছোট্ট মেয়েটি হু হু করে কাঁদছিলো মৃত্যু ভয়ে। সে মরতে চায় না। এই বয়সেই তার মাঝে মৃত্যু ভয় চলে এসেছে। আমি জানতে চাইলাম কেন তুমি এতো ভয় পাচ্ছো? ভয়টা কিসের? সে জবাব দিল, মারা গেল তার ঘুম আর ভাঙ্গবে না, সে আর কোন দিন খেলা করতে পারবে না, সে আর কোন বন্ধুর সাথে কথা বলতে পারবে না, এটা সে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না। একটু ভাল ভাবে খেয়াল করে দেখুন এখানে কিন্তু নরকের কোন ভয় নেই। তাহলে দেখতে পারছেন যে কোন প্রকার নরক নামক বস্তুর ভয় ব্যতীতও একজন স্বাভাবিক মানুষের মনে মৃত্যু ভয় চলে আসতে পারে। তারজন্য ধর্ম পর্যন্ত যেতে হয় না। এরকম মৃত্যু ভয়ই হতে পারে একজন দয়ালু ঈশ্বর নামক চিন্তার শুরু।
যা হোক, দু’ভাবে মানুষ নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে। একঃ তাঁর নিজের জিনের প্রতিলিপি তৈরীর মাধ্যমে, দুইঃ তার নিজের বিশ্বাস/আদর্শ/সংস্কৃতি/ভাষা/ ইত্যাদী মিমের প্রতিলিপ তৈরীর মাধ্যমে। জিনের প্রতিলিপ সম্ভব সেক্সের মাধ্যমে অথবা ক্লোনিং এর মাধ্যমে আর মিমের প্রতিলিপ সম্ভব মস্তিষ্কের মাধ্যমে। জিন এবং মিম এই দু’টোর প্রতিলিপি তৈরির মাধ্যমেই কেবলমাত্র নিশ্চিত করা যায় যে একজন মানুষের সম্পূর্ণ প্রতিলিপি তৈরী হয়েছে। তাহলে বুঝা যাচ্ছে যে কোন ভাবেই একজন মানুষ তার সম্পূর্ণ প্রতিলিপি রেখে যেতে পারে না। ক্লোনিং এর ফলে জিনের সম্পূর্ণ প্রতিলিপি সম্ভব হলেও যে মিমের প্রতিলিপি একই হবে তার নিশ্চয়তা নেই। যে কারণে টুইন বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জেনেটিক বৈশিষ্ট একই থাকলেও তাঁদের চরিত্র ভিন্ন হতে পারে। আবার সেক্সের ফলে জিনের যে প্রতিলিপ তৈরী হয় সেখানে কখনই বাবা/মার একশত ভাগ প্রতিলিপি আসে না।
আমরা যদি ক্লোনিং এর প্রসঙ্গকে আপাতত বাহিরে রাখি, তবে সেক্সই কেমাত্র উপায় জিনের প্রতিলিপি জন্য। তেমনি মিমও কেবলমাত্র প্রতিলিপি তৈরী করতে পারে যদি সে কোন মস্তিষ্কের সংস্পর্শে আসে। যেমন আপনি যদি নির্দিষ্ট কোন সংস্কৃতি/ভাষা/বিশ্বাস এর কথা কোনদিন নাই শুনেন তবে সেই মিমটি সম্পর্কে কোন ধারনাই আপনার মস্তিষ্কে থাকবে না। একটি মিম মস্তিষ্কে তার প্রতিলিপ তৈরী করতে পারে আমাদের ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে। চোখ, কান, ত্বক, ঘ্রাণ, এগুলোর মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানকেই তাহলে আমরা মিম হিসেবে সংঙায়িত করতে পারি। যিনি বর্ণান্ধ তার মস্তিষ্কে রঙের কোন ভিন্নতা নেই। তাই মস্তিষ্ক নির্দিষ্ট কোন মিমের সংস্পর্শে না আসলে মস্তিষ্কে সেই মিমের প্রতিলিপি তৈরী হয় না। মিমের সংস্পর্শে আমরা প্রতিনিয়তই আসছি। এই যে লেখাটি পড়ছেন, আপনি একটি মিম পাচ্ছেন। একটি বই পড়ছেন, মুভি দেখছেন, টিভি/রেডিও দেখছেন/শুনছেন প্রতিনিয়ত মিমের সংস্পর্শে আসছেন। বাবা-মা সন্তাদের সব সময় কোন না কোন মিম দিচ্ছেন। আপনার বন্ধু/বান্ধব, স্কুল/কলেজ, অফিস/আদালত সব কিছু হতে আপনি মিম পাচ্ছেন।
এখন কে বেশি শক্তিশালী তাহলে? জিন নাকি মিম? প্রশ্নটির জবাব পেতে হলে আমাদেরকে দেখতে হচ্ছে কার প্রতিলিপি তাহলে বেশি তৈরি হচ্ছে? কে বেশি ছড়িয়ে দিতে পারছে নিজেকে? সেক্সের দ্বারা আপনি আপনার নিজের জিনের কতগুলো প্রতিলিপি তৈরি করতে পারছেন? চেঙ্গিস খানের মত হলেও এক জীবন বেশি হলে একশত সন্তান রেখে যেতে পারলেন একাধিক স্ত্রীর ঘরে। তারপরেও কথা থাকে – জিনের প্রতিলিপি কখনই নিজের একশত ভাগ হয় না এবং জিনের প্রতিলিপি হলেই মিমের প্রতিলিপি তৈরি হয় না। অন্যদিকে মিমের প্রতিলিপি আপনি যে কারোর মাঝেই ছড়িয়ে দিতে পারেন, তার জন্য নিজের জেনেটিক প্রতিলিপির দরকার নেই। যে কারণে খুব সহজেই একটি মিম কোটি কোটি মানুষের মস্তিষ্কে ছড়িয়ে যেতে পারে।
তাহলে বুঝতেই পারছেন কেন মানুষ আজ এগিয়ে গিয়েছে অন্য জীবের তুলনায়। অন্যান্য প্রাণী গোষ্ঠী যেখানে কেবলমাত্র জিনের প্রতিলিপি তৈরি করে সেখানে মানুষ জিনের প্রতিলিপির সাথে মিমেরও প্রতিলিপি তৈরি করে। জিনের মিউটেশান যেখানে খুব ধীর গতির, মিমের মিউটেশান সেখানে দ্রুত গতির। যে কারণেই বিবর্তনের এক দম শেষ দিবসে এসে আধুনিক মানুষের উদ্ভব হলেও খুব সহজেই মানুষ অন্যান্য জীব গোষ্ঠি্কে পেছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে হুর হুর করে, এবং এ সম্ভব হয়েছে মস্তিষ্কের এই মিমের প্রতিলিপির ফলেই। মানুষ তার পূর্ব-অভিজ্ঞতায় অর্জিত জ্ঞান তার পরবর্তী জেনেরাশানে ছড়িয়ে দিতে পেরেছে, এবং ছড়িয়ে দিতে পেরেছে অন্যান্য মানুষের মাঝেও।
মিমের বিবর্তন দ্রুত গতির হলেও, সেটিও প্রাকৃতিক নির্বাচনের বাহিরে নয় মোটেই। যে মিমগুলো সময়ের প্রেক্ষিতে টিকে থাকায় সহায়তা করেছে তারাই নির্বাচিত হয়েছে এবং মানুষের মাঝে ছড়িয়ে গিয়েছে। ধর্ম, নৈতিকতা, গণতন্ত্র, সাম্যবাদ, জাতীয়তাবাদ, মানবতাবাদ সহ যে কোন মিমকেই এই প্রাকৃতিক নির্বাচনের দৃষ্টিতে দেখা সম্ভব। প্রতিটি মিমের কাজ হচ্ছে নিজেকে ছড়িয়ে দেওয়া, নিজের প্রতিলিপি তৈরি করা। মানুষের মস্তিষ্কই এই মিমগুলো ধারণ করে আবার বর্জন করে। সময়ের প্রয়োজনেই ধর্মগুলো এসেছিলো, আবার তাঁদের কার্যকারিতা না থাকলে সময়ের প্রয়োজনেই সেগুলো বিবর্তিত হবে অথবা হারিয়ে যাবে।
জিনপুলে যেমন পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে যাওয়ার আগে ড়্যান্ডম মিউটেশান ঘটে তেমনি মিমের ক্ষেত্রেও ঘটে। এক বাংলা ভাষাই যদি দেখেন তবে দেখবেন যে আজকে আমরা যে ভাষায় কথা বলি সে ভাষাতেই কি আমাদের কয়েক পূর্বপুরুষ আগের মানুষেরা কথা বলতো। সামনের দিকে ভাষার মাঝে আরো পরিবর্তন আসবে, এবং সেটাই স্বাভাবিক। এখন যখন কোন মিম নিজেকে অবিকৃত রেখে ছড়াতে চায় তখনই কনফ্লিক্ট শুরু হয়। ধর্ম যদি নিজেকে বিবর্তিত করতে পারতো তাহলে কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু ধর্ম যখন নিজেকে ঈশ্বরের বাণী বলে অবিকৃত থাকতে যায়, তখনই সে অন্যান্য মিউটেডেট মিমের সাথে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে।
মিউটেশন অবশ্যই নন-মিউটেশানের তুলনায় উন্নত হবে। মিউটেশানের ফলে জিনপুলে, মিমপুলে অনেক বৈচিত্র থাকে। যার ফলে যে কোন প্রতিকূল পরিবেশে এই বৈচিত্রের মধ্য হতে কারোর না কারোর টিকে থাকার সম্ভাবনা থাকবে এবং তারাই পরবর্তীতে বংশবৃদ্ধি করবে। কিন্তু সবাই একই রকমের হলে পুরো মানবকূল ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। যে কারণে আমার ব্যক্তিগত অভিমত মানব ক্লোনিং যদি কোন দিন বৈধ হয়ও, সেক্সের ফলে সৃষ্ট মানব জাতিই টিকে থাকবে, ক্লোনিং মানব জাতি নয়। এ কারণেই আমি মনে করি ঐশ্বরিক ধর্মের মিমগুলো যদি সময়ের সাথে নিজেদেরকে বিবর্তিত না করে তবে তারা অন্যান্য প্রগতিশীল মিমগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে এবং হারিয়ে যাবে মানুষের মস্তিষ্কে থেকে যেভাবে হারিয়ে গিয়েছে পৃথিবী হতে বহু ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, রীতি-নীতি। ধর্মে বিশ্বাসীরা এই বাস্তবতা যত তাড়াতাড়ি উপলব্ধি করবে ততই সভ্যতার জন্য মঙ্গল হবে।
নোটঃ উপরের সতর্কবার্তাটির ধারণাটি “Virus of the mind : the new science of the meme / Richard Brodie ” বইয়ের সূচনা থেকে ধার করা। মিম নিয়ে নিজেও মাত্রই জানছি। তাই স্বতস্ফুর্ত আলোচনা হোক এটাই কামনা করি। আর আমি ঠিক করেছি এখন থেকে কোন বিষয় নিয়ে লিখলে লেখার সাথে চেষ্টা করবো একটি হলেও মূল বই সংযুক্ত করে দিতে যেন আগ্রহী পাঠকেরা চাইলে মূল বই থেকে আরো বেশি জানতে পারে। শুধু লেখার উদ্দেশ্য এবং নিজের আনন্দের জন্যই আমার কোন লেখা নয়। লিখি যেন নিজের চিন্তাগুলো অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারি। তাই অনুরোধ থাকবে মূল বইগুলো পড়ুন। নিজেও জানুন এবং অন্যের মাঝেও ছড়িয়ে দিন। এভাবেই একমাত্র সম্ভব সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর মিমগুলোকে আউট নাম্বার করা।
আজ মিম নিয়ে একটি বই দিচ্ছি যেটি আমার ইস্নিপ্স ফোল্ডার থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন Darwinizing culture : the status of memetics as a science / edited by Robert Aunger ; with a foreword by Daniel Dennett. । বইটি্র সফট কপি জোগাড় করে দেওয়ার জন্য সচলায়তন সদস্য শুভাশীষকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।
মিমের ধারনা ঠিকই আছে। মূল কথা হল মানুষ কল্পনার জগতে যা ধারন করে এবং বাস্তব আচরনে তার প্রতিফলন ঘটে তাই মিম।
এই লেখাটাও আলোচনায় আসা উচিত।
ধরুন আমি একজন খুনি, অনেক খুন করেছি, আমার পূর্ববর্তী তিন পুরুষও একই কাজ করেছে। আমার সন্তানকে আমি এগুলো কিছুই শিখাই নি, এবং সে খুব সৎ পরিবেশে বড় হয়েছে, ফলতঃ সৎ হয়েছে। এবং এটা অবশ্যই সম্ভব হয়েছে মেমেটিক প্রক্রিয়ায়।
একটা মানুষের চরিত্রের পাকাপাকি একটা রকম তৈরি হয় ত্রিশ বছর বয়সে গিয়ে। এখন, ধরুন আমার সন্তানের বয়স এখন ত্রিশ, এবং সততার আদর্শ। এখন তাকে যদি কেবল এক বছরের জন্য খুন খারাপির মধ্যে রাখা হয়, সে আমার মতই একজন দুর্ধর্ষ খুনি তৈরি হবে, তার ত্রিশ বছরের সৎ থাকার সাধনা মিথ্যে হয়ে যাবে। এর কারণ, মেমেটিক প্রতিলিপি হল পেনড্রাইভে থাকা ফাইল, আর জেনেটিক প্রতিলিপি হল হার্ডড্রাইভে থাকা একটা ফাইল।
তবে আমার পূর্বপুরুষ যদি ভাল-মন্দে মেশানো সাধারণ মানুষ হয়, এবং কেবল আমি-ই যদি খুনি হই, সেক্ষেত্রে আমার সন্তান কি রকম হবে তারবেলায় অন্য হিসাব করতে হবে।
আমাদের দেশে একসময় রক, পপ গান খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, এটা সম্ভব হয়েছিল মেমেটিক প্রতিলিপির কারণে। আর এখন যে আবার লালনগীতি, নজরুল সঙ্গীত, রবীন্দ্র সঙ্গীত ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, সেটা জেনেটিক প্রতিলিপির কারণে। অবশ্য এখানে ‘পছন্দের চাক্রিক পরিবর্তন’-ও একটা ভূমিকা রাখছে, তবে সেটা গৌণ।
(অফ টপিক// মন্তব্য করার সময় অনেকেই পটভূমির রঙ ‘পেস্ট’ (paste colour) ব্যাবহার করছেন। এটা কিভাবে করা যায়?)
@ক্রান্তিলগ্ন, আপনি যদি কোন উদ্ধৃতি দিতে চান তাহলে মন্তব্য উইন্ডোর উপরে ‘উদ্ধৃতি’ অপশনে ক্লিক করুন, তারপর আপনার কথাটি লিখুন বা পেস্ট করুন যা আপনি দিতে চান। এরপর আবার ‘উদ্ধৃতি’ অপশনে ক্লিক করুন।তাহলেই ঐ অংশটুকু পেস্ট ব্যাকগ্রাউন্ডে চলে আসবে
@লীনা রহমান/ ধন্যবাদ।
@স্বাধীন,
আমার মনে হয় , সবার আগে বিজ্ঞানের মৌলিক স্তম্ভ গুলো নিয়ে লেখালেখি করা দরকার। বিজ্ঞান যে আসলে ‘কি এবং কি নয়’ , তা সম্পর্কে পাঠকদের স্বচ্ছ ধারনা দেয়া একান্ত অপরিহার্য। আমি লক্ষ্য করেছি যে বেশীরভাগ মানুষই বিজ্ঞানের আসল পরিচয় সম্পর্কে অবগত নন। এখানে লেখা দেয়ার পর , ‘কিউয়ে’ দুদিন ধরে আটকে থাকে কেন বুঝলাম না। টেকনিকাল কারন হয়তো।
@সংশপ্তক,
আপনার কোন লেখা কিন্তু কিউ-এ দেখছি না। আপনি যদি লেখা দিয়ে থাকেন তবে আবার প্রেরণ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
@মুক্তমনা এডমিন,
সংশপ্তকের লেখা আটকে আছে? আমার প্রশ্ন হল, হিন্দিতে: কিঁউ?
লেকঝার বিষয়বস্তু ইন্টারেস্টিং। এজন্যই মনে হচ্ছে লেখাটা আরো বিস্তারিত ও গভীর হলে ভাল লাগত। আশা করছি খুব তাড়াতাড়িই বিস্তারিত লেখা পাবো। 🙂
মিম বিষয়ে লেখাটা দেওয়ার জন্যে ধন্যবাদ। মিমের সাথে একটু পরিচয় করিয়ে দিলে ভালো হত। যেমন, সংজ্ঞা।
আপাতত যা বুঝলাম, আমি এর ঘোর বিপক্ষে, হার্ড লাইনে গেলাম। আমার আপত্তিগুলো সংশপ্তক প্রায় সবই বলে দিয়েছেন। এমনটাই উনি বলবেন আসলে আশাও করছিলাম। এই ধারণাটা সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণসাধ্য বা পূর্বাভাসযোগ্য বৈজ্ঞানিক অনুকল্পের অস্তিত্ব বা সম্ভাব্যতা নিয়ে ভীষণ সন্দিহান হলাম। 🙁
আরেকটু ব্যাখ্যা নিয়ে লেখা কি আসবে?
@ধ্রুব,
পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত মন্তব্যের ব্যাখ্যা কিছুটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি উপরে বন্যা’পা এবং সংসপ্তক ভাইয়ের মন্তব্যের জবাবে। আমার মতামত হলো সব কিছুই কি সরাসরি মাপার যোগ্য? কিন্তু সরাসরি মাপা না গেলেও আমরা ভিন্নভাবে পর্যবেক্ষন করি। যেমন শক্তি, স্পেস, টাইম। তুমি কি সরাসরি আমাকে দেখাতে পারবে দিস ইজ স্পেস অর টাইম। কিন্তু আমরা সেটাকে ডিফাইন করে নিয়েছি, লাইক এনি আদ্যার আইডিয়া। তাই আমরা যখন কোন বস্তু উপর থেকে নিচে পরে, তখন আমরা ধরে নেই এর পেছনে কোন বল কাজ করছে এবং আমরা সেটাকে তখন ক্যালকুলেট করি।
এই ক্ষেত্রেও মিমকেও আমরা সেভাবেই পর্যবেক্ষণ করতে পারি। মানুষের মস্তিষ্কে অবস্থিত প্রতিটি জ্ঞানই সে ক্ষেত্রে মিম। এটাকে জ্ঞান (knowledge) বলতে পারো কিংবা মিমও বলতে পারো। জ্ঞান কি মাপা যায়? কিন্তু একজন মানুষের জ্ঞান আছে সেটা কি পর্যবেক্ষনযোগ্য? অবশ্যই যোগ্য, তাই না। এখন বলতে পারো মস্তিষ্কে সেটা কিভাবে রক্ষিত হচ্ছে বা কিভাবে কাজ করছে? সেটা নিউরোলজিতে যারা কাজ করছে তারা একদিন জানতে পারবে। আমি সে জবার দেওয়ার মত অবস্থায় নেই। আর এই বিষয়টাও একদম নুতন। আর পর্যবেক্ষণযোগ্য না হলে যে কোন অনুকল্পই বাতিল হয়ে যাবে, সেটা সবাই জানে। এই বিষয়ে যার কাজ করছে তারাও সেটা ভালো করেই জানে 😀 । আমি আশাবাদী আগামী কয়েক দশকে হয়তো এই বিষয়ে রিসার্চ আরো এগিয়ে যাবে, তখন হয়তো অনেক প্রশ্নের জবাবই পাওয়া যাবে। মন্তব্যের জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।
স্বাধীন, বলতে বাধ্য হলাম খুবই হাল্কা লেখা হয়েছে। মিম কীভাবে কাজ করে পুরো প্রক্রিয়া বিস্তারিত ভাবে না বলতে পারলে সঠিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ হয় না।
আর জিনের সাথে মিমের তুলনাটাও প্রশ্নবিদ্ধ করবেন অনেকে। জিনের ফিজিকাল এনটিটি আছে। মিমের সেটি নেই। এটি এখনো একটি ধারণামাত্র। এমনকি ডকিন্সও এটিকে কেবল ধারণা হিসেবেই প্রস্তাব করেছিলেন, কোন বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসেবে নয়।
তবু এ নিয়ে লেখার উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
আমিও অস্বীকার করবো না। সে জন্যই এটাকে দর্শনের ক্যাটাগরিতেও ট্যাগ করেছি। আমিও এটাকে একটি ধারণা হিসেবেই গ্রহন করছি, কিন্তু আমার কাছে একটি কার্যকরী ধারণাই মনে হয়েছে। হয়তো ভবিষ্যতে আরো জানা যাবে এই বিষয়ে। মানুষ অন্তত জানুক কিছুটা, ক্ষতি তো নেই। আর মূল বইতো রয়েছেই আরো বিস্তারিত জানার জন্যে।
@অভিজিৎ,
আমি কিছু লেখায় মিম শব্দটি দেখেছি। এবার হালকা জানলাম।
কমেন্ট গুলো না পড়লে আমার মধ্যে ভুল ধারনাটা কাটত না।
হা হা হা….
এই জন্যই শুধু পড়ি , লেখার সাহস দেখাই না।
আমি তো বিশেষ কোন পা্র্থক্য দেখতে পাচ্ছি না।অনুকল্প পর্যবেক্ষন যোগ্য (প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ) না হলে তাকে বিজ্ঞান বলা যায় না।
@স্বাধীন,
অনেকদিন পর মুক্তমনায় একটা barbeque -এর আয়োজন দেখা যাচ্ছে। সস টস সব তৈরী রেখেছেন বলে আশা করছি। 🙂
প্রথম প্রশ্ন : বাস্তবতার সাথে সংযোগের ক্ষেত্রে মিম অনুকল্পের সাথে ঈশ্বর অনুকল্পের পার্থক্য কি যেখানে দুটোই অপর্যবেক্ষণযোগ্য অনুকল্পিত ‘বস্তু’ ?
দ্বিতীয় প্রশ্ন: মিমের মডেল সামাজিক বিবর্তনে এমন কি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে যা নৃতত্ত্বের মডেল পারেনা ?
@সংশপ্তক,
barbeque হবার সম্ভাবনা থাকলেও আশা করি বের হবার অনেক পথই রেখেছি 😀 । লেখাতেও বলেছি মিম নিয়ে নিজেও জানছি একই সাথে। হয়তো আপনাদের কাছে থেকেও আরো জানবো। আপনার প্রশ্ন দু’টোর উত্তর দেবার মত ক্ষমতা রাখি না, তারপরেও নিজের বুঝে যা বুঝি বলতে পারি। দ্বিমত থাকলে নিশ্চিন্তে জানাবেন।
মিম সামাজিক বিবর্তনে এবং মনোবিজ্ঞানে কিছু প্রশ্নের জবাব দেয় যেমনঃ বিশ্বাসের ভাইরাস। কেন একজন বাবা/মা নিজের সন্তানকেও মেরে ফেলতে পারে যদি তাঁদের বিশ্বাসে সংঘাত হয়? কেন একজন মানুষ নিজের বিশ্বাস রক্ষার্থে হাজার মানুষকেও মেরে ফেলতে পারে বা নিজেকে উৎসর্গ করতে পারে? এটার ব্যাখ্যা জৈবিক বিবর্তনের আলোকে দেওয়া সম্ভব নয়। আপনি উল্টোটা বলতে পারছেন কেন একটি সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে বাবা/মা নিজের জীবন উৎসর্গ করতে পারে। কিন্তু নিজের অপত্যকে মেরে ফেললে আমরা বলি লোকটি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে, যেটা হতে পারে এই বিশ্বাসের ভাইরাসের কারণে। এই বিশ্বাসের ভাইরাসের ধারণার পেছনে এই মিমের অনুকল্পই মূল।
কিন্তু এটার সাথে ঈশ্বরের অনুকল্পের মিল কোথায় বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছি। মিমকে কেন বস্তু হিসেবে ধরতে হবে? ধারণা কি কোন বস্তু? গণতন্ত্র কি বস্তু? গণতন্ত্র একটি ধারণা। তেমনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করাটাও একটি ধারণা। কিন্তু কেউ যখন বলেন ঈশ্বর আছেন তখন সেটাকে প্রমান করতে হয়। এখানে মিমকে সকল ধারণার একক হিসেবে নেওয়া হয়েছে। যেমন আমরা দৈর্ঘ্য মাপার একক হিসেবে বলি ফুট। এখন হয়তো বলতে পারেন ফুট দিয়ে আমরা কিছু মাপতে পারি। তেমনি আমাদের সংস্কৃতি, ভাষা, প্রতিটি ধারণাকেই বলতে পারি মিম। তাহলে সেভাবে মিমকেও পর্যবেক্ষণ করা যাচ্ছে। কারণ আমরা ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি, ভিন্ন মতবাদ, ধর্ম দেখতে পাই।
আপতত এইটুকুই।
@স্বাধীন,
প্রশ্নটা এখানেই। ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি, ভিন্ন মতবাদ, ধর্ম প্রভৃতি প্রচলিত নৃতত্ত্ব এবং সমাজতত্ত্বের মাধ্যমেও ব্যাখ্যা করা যায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে , ব্যাখ্যাটা এবং অনুকল্পটি কতটুকু বৈজ্ঞানিক । যে কোন বৈজ্ঞানিক অনুকল্প পর্যবেক্ষনযোগ্য হলেই হয় না, পরীক্ষাযোগ্য হতে হয় এবং falsifiable হতে হয় , predictibility থাকতে হয়।
আপনি বলেছেন যে,
জীনের মত মিমের প্রতিলিপিটা কোথায় এবং কিভাবে সনাক্ত করা যায় ?
কোন এককের প্রতিলিপি কিভাবে সম্ভব ? টাইম-স্পেসের সাথে একটা বস্তুর এককের যে সম্পর্ক সেটা এখানে কোথায় ?
@সংশপ্তক,
এবার আমি একটি নবিশ প্রশ্ন করিঃ দুজন আইডেন্টিক্যাল টুইন এর একজন যদি বাংলাদেশে তার বাবার সাথে বড় হয় এবং অন্যজন যদি তার মার সাথে আমেরিকায় বড় হয় তবে তাঁদের জেনেটিক বৈশিষ্ট একই থাকলেও তাঁদের ভাষা/সংস্কৃতি/ধর্ম/ব্যক্তিত্ব/চরিত্র কি ভিন্ন হতে পারে না? যদি ভিন্ন হয় তবে সেটা কেন হয়? এই ব্যাপারে মনোবিজ্ঞান/জীববিজ্ঞান কি বলে?
@স্বাধীন,
আপনাকে একটা উদাহরন দেই, আমি এবং আপনি দুজনই সম্পূর্ন আইডেন্টিক্যাল হার্ডওয়ার দিয়ে বানানো পিসি এই মূহুর্তে ব্যবহার করছি। কিন্তু আমাদের ব্রাউজারে মুক্তমনার লেআউট , সিস্টেম কনফিগারেশন এবং পিসি পারফরমেন্স সম্পূর্ন ভিন্ন। এর কারন বাইনারী কোড গুলো সম্পূর্ন ভিন্ন ভাবে এই দুটি পিসিতে সন্নিবেশিত যা চোখে দেখা সম্ভব এবং পরিবর্তন করা সম্ভব এবং একই ভাবে রেপলিকেইট করা যায়। কোডগুলো দশজন প্রোগ্রামারকে দেখালে দশজনই তা সনাক্ত করতে পারে। মানুষের আচরন নিয়ে যখন বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা দেয়া হবে তখন এরকম স্বচ্ছতা আশা করা হয়।
ভাষা/সংস্কৃতি/ধর্ম/ব্যক্তিত্ব/চরিত্র ভৌতিকভাবে মানুষের ক্রোমোজমে কোডেড করা আছে যার কিছু সে জন্মসূত্রে পায় এবং বাকি গুলো সে নিজে তৈরী করে। এসব কোড এক এক করে পড়া যাচ্ছে এবং আগামীতে আরো যাবে। এটার জন্য কোন অদৃশ্য একক তৈরীর দরকার নেই। এক সময় মানুষ আগুনকেও অদৃশ্য শক্তির প্রভাব মনে করত ।
প্রকৃতিতে অদৃশ্য এককের জন্য কোন জায়গা খালি নেই , অক্ষম মনে হয়তো থাকতে পারে।
@সংশপ্তক,
আপনার প্রায় সব কথাই এখানে কনভিন্সিং মনে হলো, কেবল এটা বুঝলাম না
ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, ব্যক্তিত্ব কি ক্রোমোজমে সত্যি কোডেড করা আছে? আর যদি কোডেড থাকে, তাহলে সেটা নিজে কিভাবে তৈরী করা যায়? খুব অপরিষ্কার লাগলো এই বক্তব্যটি। তবে এই বিষয়ে আমার দখলও কম। আরেকটু আলো আশা করছি।
ধন্যবাদ।
@ধ্রুব,
একটা ডিফল্ট এবং আরেকটা Adapted. আমার দৈনন্দিন ভাষা জার্মান (সম্পূর্ন বাংলাহীন পরিবেশে বসবাস) , আমার প্রধান খাদ্য আলু এবং পাস্তা ( দক্ষিন ফরাসীদের মত), আমি নাস্তিক ইত্যাদি Adapted। কিন্তু মাছের মাথা দিয়ে কচুর শাক , শুটকি মাছ , মুক্তমনায় বাংলা লেখা এসব কিছুই ডিফল্ট। বাজার থেকে ডিফল্ট উইন্ডোজ পিসি কিনে হার্ড ডিস্ক সম্পূর্ন মুছে লিনুক্স ইন্স্টল করা এক ধরনের Adaptation আবার ডুয়াল বুট করা আরেক রকমের।
একটা প্রানী পৃথিবীতে টিকে থাকার সব জেনেটিক কোড নিয়েই পৃথিবীতে আসে যা সে প্রয়োজনে বদল করতে পারে।
@সংশপ্তক,
দুটা প্রশ্ন। যেসব বিষয়ে কোড দেয়া আছে, ঠিক কোন পর্যায় পর্যন্ত তাদের ওভার রাইড করা যায়?
আর কচুর শাক খাওয়ার লেভেলে পর্যন্ত জেনেটিক কোড দেয়া আছে, এটাতে আমি কনভিন্সড না।
@ধ্রুব,
নিচে আমার উত্তর দেখুন।
@সংশপ্তক,
আমার নিজেরও গিট্টু লেগে যাচ্ছে। ধরে নিলাম ডিফল্ট কোড থাকে, পরে সেটাকে ওভার রাইট করা হল। এই ওভার রাইট কিভাবে হয়? কোথায় হয়? ক্রোমোজমে নাকি মস্তিষ্কে?
@স্বাধীন,
ক্রোমোজমে। আর এই ক্রোমোজম রয়েছে শরীরের প্রতিটি কোষে , মস্তিষ্কের কোষও তার ব্যতিক্রম নয়। একটা এক কোষী ব্যকটেরিউমের সার্বিক তৎপরতাকে ৫০ ট্টিলিয়ন দিয়ে গুন করলে মানুষের কার্যক্রমের একটা মোটামুটি ধারনা পাবেন। মানুষ যাই করুক না কেন তাকে প্রতিটা ফাংশনের জন্য ক্রোমোজম পর্যায়ে কোড এক্সিকিউট করতে হয়। কোন কোড না থাকলে বা সিকিউরিটি পারমিশন না থাকলে তা এক্সিকিউট করা যায় না। কোড থাকলে তা হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে বৈকি !
বাঁদুর নিশাচর হলেও তার ভিটামিন ডির তেমন দরকার নেই কারন তার T cell receptor ভিটামিন ডি ছাড়াই কাজ করতে সক্ষম। কেউ বাঁদুরকে এজন্য ন্যাড়া হয়ে দিনে চলাফেরা করতে বলে না। এসবই জেনেটিক Adaptation।
@সংশপ্তক,
গিট্টুর পর গিট্টু। তাহলে কি দাঁড়াচ্ছে জেনেটিক কোড পর্যন্ত বদলে যেতে পারছে ফ্রম এডাপ্টেশান? মোটকথা মানুষের সব কিছুকে তাহলে জেনেটিক ডিটারমিনিজম দিয়ে পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা সম্ভব। নাকি ভুল বুঝলাম।
আপনি কি এই বিষয়ে একটি লেখা দিতে পারবেন? দিলে খুবই ভাল হয়।
@স্বাধীন,
একটা প্রানী যদি পরিবেশ পরিস্হিতি অনুযায়ী তার জেনেটিক কোড বদল না করতে পারে , তাহলে সে ঠিকতে পারে না। কোন প্রানী নড়া চড়া করতে পারে না যদি না তার নড়া চড়া করার ফাংশনের কোড এক্সিকিউট হয়। একটা সময় পরে কোন ব্যকটিরিয়াকেই আর মারা সম্ভব হবে না কারন তারা আমাদের চালাকী ধরে ফেলছে এবং তাদের কোড পরিবর্তন সেভাবে করছে।
@সংশপ্তক,
এটা আবার ল্যামার্কিয় ধারণার মত হয়ে গেল না? আমি তো জানতাম মিউট্যাশন হয় ড়্যান্ডমলি, সেখানে পরিবেশ অনুযায়ী কোড বদলায় না। যে কারণে জিরাফের গলা উচু ঘাস খেতে গিয়ে লম্বা হয় না।
না গিট্টু তো ছুঁটছে না। বরং গিট্টু আরো বারছেই :-Y ।
@স্বাধীন,
আপাতত থামি দু’জন। এভাবে মন্তব্যে আপনার পুরো বক্তব্য আসবে না। আমার অনুরোধ রইল সময় হাতে নিয়ে একটি লেখা দিন। বিশেষ করে কিভাবে ডিফলট কোডকে বদলানো সম্ভব ফ্রম এডাপাটেশান, এই বিষয়ে যদি কোন গবেষণাপত্র হয়ে থাকে এবং আপনার জানা থাকে সে বিষয়ে আমাদেরকে জানান। আমি জানতে আগ্রহী, জানার উদ্দেশ্যেই মূলত এই লেখার অবতারণা।
আমাদের প্রতিটি ফাংশানের পেছনে কোড এক্সিকিউশানের যে কথা বলেছেন সেটিও চমৎকার ধারণা। কিন্তু এর পেছনে বৈজ্ঞানিক গবেষণা কতদূর হয়েছে সেটাও জানতে আগ্রহী। ধন্যাবাদ আপনাকে এই পর্যন্ত মন্তব্য করার জন্য।
@স্বাধীন,
এসব কাটিং এজ জিনিষ ব্লগের সল্প পরিসরে কিংবা এক দুটো রিসার্চ পেপার পড়ে বোঝা সম্ভব নয়। পপুলার বই ছেড়ে শত শত মৌলিক রিসার্চ পেপার পড়া দরকার । আমি শুধু কিছু ভাবনার খোরাক দিলাম।
সংশপ্তক
ভালই বলেছেন। তাহলে তো নিজের প্রকৌশলবিদ্যা ছেড়ে গবেষণার লাইনই বদলাতে হবে। সেটা তো আর সম্ভব হচ্ছে না, তাই পপুলার বইই আপাতত ভরসা। এ কারণেই বলছিলাম আপনারা যারা এই লাইনের উনারা কিছু লিখুন, আমাদেরকে আর লিখতে হয় না। 😥 লিখে ফেলুন, লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
@স্বাধীন,
আপনি বেশ কিছু দিন ধরেই মিমের কথা বলছিলেন, একবার উত্তরও দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু সমায়াভাবে আর হয়ে ওঠেনি। মিম নিয়ে আলোচনা হতেই পারে, প্রায় তিন দশকের বেশী সময় ধরেই হচ্ছে। কিন্তু এটা কখনই কোন বৈজ্ঞানিক কোন তত্ত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি। আপনি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তাতে করে কিন্তু মনে হতে পারে যে জিনের প্রতিলিপি তৈরি এবং মিমের প্রতিলিপি তৈরির ব্যাপারগুলো সমানভাবে তুলনীয় এবং প্রতিষ্ঠিত কোন তত্ত্ব। আপনি যেমন বলেছেন,
বা
আপনি অভিজিতের মন্তব্যের উত্তর দিতে গিয়ে বলেছেন যে আপনি এটাকে শুধু একটা ধারণা হিসেবেই দেখছেন, আপনার মূল লেখা থেকে কিন্তু সেটা বোঝার উপায় নেই।
@বন্যা আহমেদ,
এই মিমটা কী জিনিষ বল তো? আমার ডিকশনারি অনুযায়ী MIM= Middle-aged Immature Men, সেটা ঠিক নাকি ঠিক না, ঠিক করে বল!
@স্বাধীন,
সিরিয়াস লেখায় ফাজলামি করে ফেললাম, কিছু মনে করবেন না। তবে, আমি আসলেই মিম কী সেটা জানি না বলে ভাবছিলাম লেখাটা পড়ে হয়তো বোঝা যাবে … বুঝি নি যদিও … 🙁
@স্নিগ্ধা,
MIM মানে (আমার মতো) মোস্ট ইনোভেটিভ ম্যান হতে পারে আবার অন্য কারো মতো, মধ্যবয়সী ইমম্যাচিউরড মহিলা -ও হতে পারে। 😀
@অভিজিৎ,
আপনি পিঠে বস্তা বাইন্ধা নিছেন তো, এমন মন্তব্য করার আগে 😀 ।
@স্নিগ্ধা, না না তুই যেটা বললি সেটাই ঠিক , তবে ‘মিডল’ শব্দটা বাদ দিলেও হবে :laugh: ।
স্বাধীন, মাফ করে দিয়েন আপনার সিরিয়াস লেখায় এরকম ফাজলামি করার জন্য, তবে আমি কিন্তু শুরু করিনি, স্নিগ্ধা করেছে, এইটুকু মনে রেখেন।)
@স্নিগ্ধা,
স্নিগ্ধা ও বন্যা
দু’জনকেই কইস্যা মাইনাস ফাইজলামি করার জন্য। 😛
@বন্যা আহমেদ,
বন্যা’পা মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনি সময়টুকু উল্লেখ করে ভালো করেছেন। ডারউইনের তত্ব প্রতিষ্ঠা পেতে এই তিন দশকের চেয়েও অনেক বেশি সময় লেগেছে। তারপরেও এখনো অনেক পাঠ্যবইয়ে সেটাকে স্থান করানো যায় নি। সে হিসেবে এই অনুকল্প বলি আর ধারণাই বলি সেটাতো অনেক নুতন। আমি আশাবাদী হয়তো আরো তিনদশক পরে এই তত্বকে বৈজ্ঞানিক পন্থাতেই আরো প্রতিষ্টিত করা যাবে।
আমি যেভাবে লিখেছি সেটা আমার লেখার স্টাইলের ভুল। আমি আসলেই জিনের এবং মিমের তুলনা করে দেখাতে চেয়েছি। উপরের যে দু’টো বাক্য আপনি উদ্ধৃত করেছেন সেই বাক্যটি বৈজ্ঞানিক কোন প্রতিষ্টিত তত্ব না হতে পারে, কিন্তু ফিলোসফিকালি কি ভুল?
ফিলোসফিকালি একজন মানুষ কি চিন্তা করে যেন সে তার নিজের কাজ/লেখা এর মাধ্যমে বেঁচে থাকে অথবা নিজের সন্তানদের মাঝে বেঁচে থাকে। এখানে মিম হিসেবে প্রথম তাড়নাটা এসেছে।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ফলসিফিকাশেনের ব্যাপারটাও আমি মনে করি পর্যবেক্ষণযোগ্য মিমের ক্ষেত্রে। ধরুণ মানব ক্লোনিং বৈধ হলো। এখন আমার যে ক্লোন তৈরি হবে সে কি পুরোপুরি একজন আমি হবে? ফিজিকালি যদিও হয়, কিন্তু মানসিক ভাবে কি দুজন একই ব্যক্তি হবো। যদি না হয় তাহলে কি প্রমান হবে না যে শুধুমাত্র জেনেটিক বৈশিষ্টই দু’জন মানুষে পার্থক্য গড়তে পারে না। সেখানেই তো তাহলে মিম চলে আসবে। আমি জিনিসটাকে এভাবেই দেখছি। হয়তো এই বুঝায় কোন ভুল রয়ে যাচ্ছে যেটা আমার চোখে পড়ছে না।
এখানেও দেখুন আমরা কিন্তু জানি যে মানুষ অন্যান্য প্রাণিদের তুলনায় এগিয়ে গিয়েছে এবং সেটা গিয়েছেও মস্তিষ্কের ব্যবহারের জন্য। গত লেখাতে আমরা ডোমাপিন নিয়ে আলোচনাও করেছি। কিন্তু মস্তিষ্কের কোন ক্ষমতার জন্য আমরা এগিয়ে গিয়েছি অন্যান্যদের তুলনায়। সেটি হচ্ছে যে কোন অভিজ্ঞতা হতে নিজের জ্ঞান অর্জন করা এবং সেটাকে অন্যের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া এবং নিজের পরবর্তী বংশধরের মাঝেও ছড়িয়ে দেওয়া। এই কথাটি কি পর্যবেক্ষণযোগ্য নয়? তাহলে মিমের ক্ষেত্রে ভিন্ন কি বলা হয়েছে? সেই জ্ঞানটুকই শুধুমাত্র নুতন ভাবে ডিফাইন করা হচ্ছে মিম হিসেবে। তখন যে কোন জ্ঞানই, সেটা ভাষা হতে পারে, সংস্কৃতি হতে পারে, আবার প্রযুক্তির জ্ঞান হতে পারে, মিমের আওয়তায় চলে আসছে।
কথা ঠিক মিম তত্ব নুতন কিছু নেই, কিন্তু ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেটাকেই আমার কাছে মনে হয়েছে একটি কার্যকরি মডেল হয়ে উঠবে ভবিষ্যতে। সেই চিন্তা থেকেই লেখা।